Ajker Patrika

যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে গাজায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ২১: ০৮
পশ্চিম তীরের তুবাসে ইসরায়েলি অভিযানের পর ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ির পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন একজন ফিলিস্তিনি। ছবি: রয়টার্সের সৌজন্যে
পশ্চিম তীরের তুবাসে ইসরায়েলি অভিযানের পর ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ির পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন একজন ফিলিস্তিনি। ছবি: রয়টার্সের সৌজন্যে

গাজার দক্ষিণাঞ্চলে রাফা ও খান ইউনিস এলাকায় নতুন করে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। ইসরায়েলি গণমাধ্যম ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছে, এ হামলায় অন্তত দুই ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় করা যুদ্ধবিরতির ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, আজ রোববার (১৯ অক্টোবর) গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফায় একের পর এক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। খান ইউনিসের কাছের আবাসান শহরেও ইসরায়েলি ট্যাংক থেকে ভারী গোলাবর্ষণ করা হয় বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, উত্তর গাজার জাবালিয়া এলাকায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় দুই ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।

ইসরায়েল ও হামাস পরস্পরকে যুদ্ধবিরতি ভঙ্গের দায়ে অভিযুক্ত করছে। ইসরায়েলের সামরিক সূত্র জানায়, আজ গাজার ভেতরে ইসরায়েলি বাহিনীর ওপর রকেটচালিত গ্রেনেড ও স্নাইপার হামলা চালিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের এক সামরিক কর্মকর্তা বলেন, ‘দুটি ঘটনাই আমাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা এলাকায় ঘটেছে, যা যুদ্ধবিরতির স্পষ্ট লঙ্ঘন।’

অন্যদিকে হামাসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ইজ্জাত আল রিশেক দাবি করেছেন, তাঁরা যুদ্ধবিরতিতে অটল রয়েছেন এবং ইসরায়েলই বারবার চুক্তি লঙ্ঘন করছে।

গাজার সরকারি গণমাধ্যম জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে ইসরায়েল অন্তত ৪৭ বার এটি লঙ্ঘন করেছে। এতে ৩৮ জন নিহত ও ১৪৩ জন আহত হয়েছে। গাজার সরকারি গণমাধ্যমের এক বিবৃতিতে বলা হয়, যুদ্ধবিরতির পরেও ইসরায়েলি বাহিনী গাজার বেসামরিক নাগরিদের লক্ষ্য করে গুলি, গোলাবর্ষণ ও আটক অভিযান চালিয়ে গেছে।

এদিকে ইসরায়েল জানিয়েছে, গাজা ও মিসরের মধ্যবর্তী রাফা সীমান্ত ক্রসিং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। উল্লেখ্য, রাফা সীমান্ত ক্রসিং কার্যত ২০২৪ সালের মে মাস থেকে বন্ধ রয়েছে।

যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে গাজায় মানবিক সহায়তা বাড়ানোর কথাও বলা হয়েছিল। কিন্তু এখনো খাদ্যাভাব ও দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে রয়েছে লক্ষাধিক মানুষ। আগস্টে প্রকাশিত বৈশ্বিক ক্ষুধা পর্যবেক্ষণ সংস্থা আইপিসির প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

এ ছাড়া ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে মৃত জিম্মিদের মরদেহ ফেরত নিয়েও বিরোধ চলছে। ইসরায়েল দাবি করেছে, হামাসকে এখনো ২৮ জন নিহত জিম্মির দেহ ফেরত দিতে হবে। হামাস জানিয়েছে, তারা ২০ জন জীবিত ও ১২ জনের মরদেহ ইতিমধ্যে ফিরিয়ে দিয়েছে, তবে অন্য দেহগুলো ধ্বংসস্তূপের নিচে থাকায় উদ্ধার করা কঠিন হচ্ছে।

এমন পরিস্থিতিতে মনে করা হচ্ছে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় যুদ্ধ শেষ করার পরিকল্পনা এখন বড় চ্যালেঞ্জের মুখে। এর পাশাপাশি হামাসের নিরস্ত্রীকরণ, গাজার প্রশাসনিক কাঠামো, সম্ভাব্য আন্তর্জাতিক ‘স্থিতিশীলতা বাহিনী’ এবং ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের বিষয়গুলো এখনো অনির্ধারিত।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেরুজালেমে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস স্টেট ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলে।

এদিকে গাজায় নতুন করে যুদ্ধ শুরু হওয়া ও যুদ্ধবিরতি ভঙ্গের শঙ্কায় আজ তেল আবিবের শেয়ারবাজারে বড় ধস নেমেছে। ইসরায়েলের হামলার পরপরই প্রধান সূচকগুলো প্রায় ২ শতাংশ পর্যন্ত নিচে নেমে যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ