Ajker Patrika

স্যুটকেসে মিলল রাহুল গান্ধীর সান্নিধ্যে আসা কংগ্রেস তরুণীর মরদেহ

আপডেট : ০২ মার্চ ২০২৫, ২১: ২১
কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর সঙ্গে হিমানি নারওয়াল। ছবি: সংগৃহীত
কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর সঙ্গে হিমানি নারওয়াল। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের রোহতক জেলায় স্যাম্পলা বাসস্ট্যান্ড ফ্লাইওভারের কাছে একটি স্যুটকেস থেকে কংগ্রেসের তরুণ কর্মী হিমানি নারওয়ালের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল শনিবার এই ঘটনা জানাজানি হলে রাজ্যজুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশের ধারণা, শ্বাসরোধে হিমানিকে হত্যা করা হয়েছে এবং হত্যার পর তাঁর মরদেহটি স্যুটকেসে ভরে ফেলে দেওয়া হয়।

রোববার ইকোনমিক টাইমস জানিয়েছে, ২২ বছর বয়সী হিমানি ২০২৩ সালে রাহুল গান্ধীর ‘ভারত জড়ো যাত্রায়’ অংশ নিয়েছিলেন। সেই সময়ের একাধিক ছবি ও ভিডিওতে রাহুলের সঙ্গে তাঁকে হাস্যোজ্জ্বল ও স্বতঃস্ফূর্ত অবস্থায় দেখা গেছে। এ ছাড়া তিনি রাজ্যের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ভূপিন্দর সিং হুডার নির্বাচনী প্রচারে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছিলেন। তাঁর বাড়ি সোনিপাত জেলার রিন্দানা গ্রামে হলেও মৃত্যুর সময় তিনি রোহতকে বসবাস করছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা স্যুটকেসটি দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দিলে স্যাম্পলা থানার কর্মকর্তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছান। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিজেন্দর সিং বলেন, ‘প্রাথমিক তদন্তে এটি পূর্বপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে মনে হচ্ছে। মরদেহ ফেলে রাখা হয়েছে এমন খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই এবং তদন্ত শুরু করি।’

পরে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নিশ্চিত করেন, মৃতদেহটি ২০-২২ বছর বয়সী এক তরুণীর। তাঁর গলায় ওড়না জড়ানো ছিল। হাতে মেহেদির রং থাকায় ধারণা করা হচ্ছে, সম্প্রতি তিনি কোনো অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন। মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য রোহতকের পিজিআইএমএস হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এই হত্যাকাণ্ডকে ‘আইনশৃঙ্খলার চরম ব্যর্থতা’ আখ্যা দিয়ে কংগ্রেস নেতারা কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। হরিয়ানার সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ভূপিন্দর সিং হুডা বলেন, ‘একজন তরুণীকে এভাবে হত্যা করা অত্যন্ত বেদনাদায়ক ও নিন্দনীয়। উচ্চপর্যায়ের একটি নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া প্রয়োজন এবং অপরাধীদের দ্রুত কঠোর শাস্তি দেওয়া উচিত।’

বিজেপি সরকারের সমালোচনা করে ভূপিন্দর বলেন, ‘রাজ্যে এখন কার্যত জঙ্গল-রাজ চলছে, যেখানে আইনশৃঙ্খলা বলে কিছু নেই।’

কংগ্রেস বিধায়ক ভারত ভূষণ বাত্রা হিমানির মরদেহটি শনাক্ত করেন। এ ঘটনায় তিনি একটি বিশেষ তদন্ত দল গঠনের দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। আমি তার আত্মার শান্তি কামনা করছি এবং পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। সে ছিল কংগ্রেসের একজন অত্যন্ত সক্রিয় কর্মী।’

এই হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে কংগ্রেস ও বিজেপির মধ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। কংগ্রেস নেতারা বিজেপি সরকারকে নারীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হওয়ার জন্য দায়ী করছেন।

এখন পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করেনি। তবে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছে, অপরাধীদের শনাক্ত করতে এবং দ্রুত গ্রেপ্তার করতে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

স্বাস্থ্যের ডিজির সঙ্গে তর্কের পর সেই চিকিৎসককে অব্যাহতি ও শোকজ নোটিশ

খালেদা জিয়া এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে লন্ডন যেতে পারেন বুধবার

তুমি কে? নিজেকে কী ভাব—পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর বিবৃতিতে ক্ষুব্ধ ইমরান-সমর্থকদের কড়া প্রতিক্রিয়া

চেরনোবিল পারমাণবিক চুল্লি ক্ষতিগ্রস্ত, তেজস্ক্রিয় বিকিরণের বিষয়ে জাতিসংঘের সতর্কবার্তা

মৃত নবজাতক নিয়ে থানায় হাজির মা-বাবা, হাসপাতালে ভুল চিকিৎসার অভিযোগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গাজা গণহত্যা থেকে মনোযোগ সরাতে আঞ্চলিক উত্তেজনা বাড়াচ্ছে ইসরায়েল: আল–শারা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ইসরায়েলি কূটনীতিক দাবি করেছেন সিরিয়ার আল-শারা তাঁর দেশের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে পারেন। ছবি: সংগৃহীত
ইসরায়েলি কূটনীতিক দাবি করেছেন সিরিয়ার আল-শারা তাঁর দেশের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে পারেন। ছবি: সংগৃহীত

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমদ আল-শারা অভিযোগ করেছেন, ইসরায়েল গাজায় যে ‘ভয়াবহ গণহত্যা’ চালিয়েছে, তা থেকে সবার দৃষ্টি ঘোরাতে আঞ্চলিক উত্তেজনা উসকে দিচ্ছে। গতকাল শনিবার দোহা ফোরামে সিএনএন-এর ক্রিশ্চিয়ান আমানপুরের সঙ্গে ‘নিউজমেকার ইন্টারভিউ’তে আলাপকালে আল-শারা এই কথা বলেন।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, আল–শারার মতে, ইসরায়েলি নেতারা তাদের সামরিক পদক্ষেপের ক্ষেত্র বাড়াতে যখন নিরাপত্তা-সংক্রান্ত অজুহাত তুলে ধরেন, তখনই তাঁরা মূলত ‘অন্য দেশগুলোতে সংকট রপ্তানি করেন।’

তিনি বলেন, ‘তারা (ইসরায়েল) নিজেদের নিরাপত্তা-সংক্রান্ত উদ্বেগের দোহাই দিয়ে সবকিছুকে ন্যায্য বলে প্রমাণ করে, এবং ৭ অক্টোবরের ঘটনাকে টেনে এনে নিজেদের চারপাশের সবকিছুর সঙ্গে তা জুড়ে দেন। ইসরায়েল যেন আজ ভূতের বিরুদ্ধে লড়াই করা এক দেশে পরিণত হয়েছে।’

২০২৪ সালের ডিসেম্বরে বাশার আল-আসাদের রেজিম ভেঙে পড়ার পর থেকে ইসরায়েল সিরিয়াজুড়ে ঘন ঘন বিমান হামলা চালিয়ে শত শত মানুষকে হত্যা করেছে এবং পাশাপাশি দেশটির দক্ষিণে স্থল অভিযানও চালাচ্ছে। গত মাসে ইসরায়েলি বাহিনী দামেস্কের উপকণ্ঠে বেইত জিন শহরে অন্তত ১৩ জনকে হত্যা করে। এ ছাড়াও, তারা সিরিয়ার ভূখণ্ডের আরও ভেতরে প্রবেশ করে বহু সংখ্যক চেকপয়েন্ট বসিয়েছে। তারা বেআইনিভাবে সিরিয়ার নাগরিকদের ধরে নিয়ে ইসরায়েলে আটকে রেখেছে।

আল-শারা বলেন, তিনি ক্ষমতায় আসার পর থেকে তাঁর প্রশাসন ইসরায়েলের সঙ্গে উত্তেজনা কমানোর জন্য কাজ করেছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘আমরা আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য ইতিবাচক বার্তা পাঠিয়েছি।’ তিনি বলেন, ‘আমরা খোলাখুলি বলেছি যে—সিরিয়া হবে স্থিতিশীলতার দেশ, আর আমরা ইসরায়েলসহ অন্য কোথাও সংঘাত রপ্তানি করা দেশ হতে আগ্রহী নই। কিন্তু, এর জবাবে ইসরায়েল আমাদের চরম সহিংসতা দিয়ে বরণ করেছে, আর সিরিয়া আকাশসীমা বিশাল মাত্রায় লঙ্ঘনের শিকার হয়েছে।’

আল-শারা বলেন, আসাদের পতনের আগে ইসরায়েল যেখানে ছিল, তাদের সেখানেই ফিরে যেতে হবে এবং ১৯৭৪ সালের বিচ্ছেদ চুক্তি বজায় রাখতে হবে। ১৯৭৩ সালের অক্টোবর মাসের ইয়ুম কিপ্পুরের যুদ্ধের পরে এই চুক্তিতে যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং ইসরায়েল-দখলকৃত গোলান মালভূমিতে জাতিসংঘ-পর্যবেক্ষিত একটি বাফার জোন তৈরি করা হয়েছিল।

আল-শারা বলেন, ‘এই চুক্তি অর্ধ-শতাব্দীর বেশি সময় ধরে টিকে আছে।’ তিনি হুঁশিয়ারি দেন, এই চুক্তি বদলে দিয়ে নতুন কোনো ব্যবস্থা, যেমন বাফার বা সামরিক-মুক্ত এলাকা তৈরি করার চেষ্টা করলে, তা এই অঞ্চলকে ‘একটি গুরুতর ও বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে’ ঠেলে দিতে পারে। তিনি প্রশ্ন করেন, ‘কে সেই এলাকা সুরক্ষিত রাখবে? ইসরায়েল প্রায়শই বলে যে তারা দক্ষিণ সিরিয়া থেকে হামলার শিকার হওয়ার ভয় পায়, কিন্তু সিরিয়ার বাহিনী যদি সেখানে না থাকে, তবে এই বাফার জোন বা এই সামরিক-মুক্ত এলাকাকে রক্ষা করবে কে?’

দেশে নির্বাচন প্রসঙ্গে আল-শারা জোর দিয়ে বলেন, সিরিয়ার অগ্রগতির পথ হলো—ব্যক্তিগত ক্ষমতাকে সংহত করার চেয়ে প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী করা এবং চলমান রূপান্তরকাল শেষ হওয়ার পরে তিনি নির্বাচন আয়োজনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি বলেন, ‘সিরিয়া কোনো উপজাতি নয়। সিরিয়া একটি দেশ, সমৃদ্ধ ধারণার দেশ...আমি মনে করি না, এখনই আমরা পার্লামেন্ট নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত।’

তা সত্ত্বেও আল-শারা বলেন, অস্থায়ী সাংবিধানিক ঘোষণাপত্র সই হওয়ার পাঁচ বছরের মধ্যে সংসদ নির্বাচন হবে, যা তাঁকে পাঁচ বছরের রূপান্তরকাল ধরে সিরিয়াকে নেতৃত্ব দেওয়ার ম্যান্ডেট দিয়েছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘মানুষের নিজেদের নেতা বেছে নেওয়ার নীতি হলো একটি মৌলিক নীতি...এটি আমাদের ইসলাম ধর্মেও আছে। সঠিকভাবে শাসন করার জন্য শাসকদের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের সন্তুষ্টি অর্জন করতে হয়, তাই আমরা এইটাতেই বিশ্বাস করি, আর আমার মনে হয় সিরিয়ার জন্য এটাই সঠিক পথ।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

স্বাস্থ্যের ডিজির সঙ্গে তর্কের পর সেই চিকিৎসককে অব্যাহতি ও শোকজ নোটিশ

খালেদা জিয়া এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে লন্ডন যেতে পারেন বুধবার

তুমি কে? নিজেকে কী ভাব—পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর বিবৃতিতে ক্ষুব্ধ ইমরান-সমর্থকদের কড়া প্রতিক্রিয়া

চেরনোবিল পারমাণবিক চুল্লি ক্ষতিগ্রস্ত, তেজস্ক্রিয় বিকিরণের বিষয়ে জাতিসংঘের সতর্কবার্তা

মৃত নবজাতক নিয়ে থানায় হাজির মা-বাবা, হাসপাতালে ভুল চিকিৎসার অভিযোগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পাকিস্তানি স্ত্রীকে করাচিতে ফেলে ভারতে দ্বিতীয় বিয়ের প্রস্তুতি, স্বামীর বিচার চেয়ে মোদির কাছে আবেদন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ৩২
নিকিতা। ছবি: সংগৃহীত
নিকিতা। ছবি: সংগৃহীত

এক পাকিস্তানি নারী তাঁর ভারতীয় স্বামীর বিরুদ্ধে তাঁকে করাচিতে ফেলে রেখে গোপনে দিল্লিতে দ্বিতীয় বিয়ের প্রস্তুতি নেওয়ার অভিযোগ এনেছেন। নিকিতা নাগদেব নামে পরিচিত ওই নারী এই বিষয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে বিচার চেয়ে মরিয়া হয়ে একটি ভিডিও আবেদন প্রকাশ করেছেন। এই ভিডিও উভয় দেশের সামাজিক গোষ্ঠী এবং আইনি সংস্থাগুলোর মধ্যে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।

করাচির বাসিন্দা নিকিতা অভিযোগ করেছেন, তিনি ২০২০ সালের ২৬ জানুয়ারি হিন্দু প্রথা মেনে করাচিতে বিক্রম নাগদেবকে বিয়ে করেন। বিক্রম ভারতীয় বংশোদ্ভূত পাকিস্তানি, তবে দীর্ঘমেয়াদি ভিসায় ভারতের ইন্দোরে থাকেন। বিয়ের এক মাস পর, ২৬ ফেব্রুয়ারি বিক্রম তাঁকে ভারতে নিয়ে আসেন। কিন্তু কয়েক মাসের মধ্যেই নিকিতার জীবন পাল্টে যায় বলে তিনি জানান।

২০২০ সালের ৯ জুলাই তাঁকে ‘ভিসার কারিগরি ত্রুটির’ অজুহাতে আটারি সীমান্তে ঠেলে দেওয়া হয় এবং জোর করে পাকিস্তানে ফেরত পাঠানো হয়। নিকিতার দাবি, তারপর থেকে বিক্রম তাঁকে ফিরিয়ে আনার কোনো চেষ্টা করেননি। তাঁর আবেগপূর্ণ ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, ‘আমি তাঁকে বারবার অনুরোধ করেছি। আমাকে ভারতে ডেকে নেওয়ার জন্য, কিন্তু তিনি প্রতিবারই প্রত্যাখ্যান করেছেন।’

করাচি থেকে করা ভিডিওতে নিকিতা বলেন, ‘আজ যদি ন্যায়বিচার না হয়, তবে নারীরা ন্যায়বিচারের প্রতি বিশ্বাস হারাবেন। অনেক মেয়ে তাঁদের শ্বশুরবাড়িতে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হন। আমি সবার কাছে আমার পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ করছি।’

নিকিতা আরও অভিযোগ করেন, বিয়ের পরপরই তিনি তাঁর শ্বশুরবাড়িতে অপ্রত্যাশিত আচরণের শিকার হন। তিনি বলেন, ‘পাকিস্তান থেকে শ্বশুরবাড়িতে ফেরার পর তাঁদের আচরণ সম্পূর্ণ পাল্টে যায়। আমি জানতে পারি, আমার স্বামী আমার এক আত্মীয়ার সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছেন। যখন আমি আমার শ্বশুরকে এ কথা বলি, তিনি বলেন, ছেলেরা তো সম্পর্ক করেই, এতে কিছু করার নেই।’

নিকিতা আরও অভিযোগ করেন, কোভিড-১৯ মহামারির লকডাউনের সময় বিক্রম তাঁকে জোর করে পাকিস্তানে ফেরত পাঠান এবং এখন তাঁকে ভারতে প্রবেশ করতে দিতে অস্বীকার করছেন। তিনি বলেন, ‘ভারতের প্রত্যেক নারীর ন্যায়বিচার প্রাপ্য।’

করাচিতে ফিরে আসার পর নিকিতা জানতে পারেন, বিক্রম দিল্লিতে অন্য এক নারীর সঙ্গে দ্বিতীয় বিয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আইনত বিবাহিত থাকা সত্ত্বেও বিচ্ছেদের আশঙ্কায় বিপর্যস্ত হয়ে নিকিতা চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারি একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

এই মামলাটি মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্ট কর্তৃক অনুমোদিত সিন্ধি পঞ্চ মধ্যস্থতা ও আইনি পরামর্শ কেন্দ্রের (Sindhi Panch Mediation and Legal Counsel Centre) সামনে আসে। বিক্রম এবং তাঁর কথিত বাগ্‌দত্তাকে নোটিশ জারি করা হয় এবং একটি শুনানিও অনুষ্ঠিত হয়। তবে মধ্যস্থতা ব্যর্থ হয়। ২৫ এপ্রিল ওই কাউন্সেল সেন্টারের রিপোর্টে বলা হয়, যেহেতু স্বামী বা স্ত্রী কেউই ভারতীয় নাগরিক নন, তাই বিষয়টি পাকিস্তানের এখতিয়ারভুক্ত এবং তারা বিক্রমকে পাকিস্তানে ফেরত পাঠানোর সুপারিশ করেছে।

এই প্রথম নয় যে মামলাটি ইন্দোরে উঠেছে। চলতি বছরের মে মাসে নিকিতা ইন্দোর সমাজ পঞ্চায়েতের দ্বারস্থ হন, যারা বিক্রমকে নির্বাসনের সুপারিশ করে। কালেক্টর আশীষ সিং নিশ্চিত করেছেন, এই বিষয়ে একটি তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং রিপোর্টের ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

তথ্যসূত্র: এনডিটিভি

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

স্বাস্থ্যের ডিজির সঙ্গে তর্কের পর সেই চিকিৎসককে অব্যাহতি ও শোকজ নোটিশ

খালেদা জিয়া এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে লন্ডন যেতে পারেন বুধবার

তুমি কে? নিজেকে কী ভাব—পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর বিবৃতিতে ক্ষুব্ধ ইমরান-সমর্থকদের কড়া প্রতিক্রিয়া

চেরনোবিল পারমাণবিক চুল্লি ক্ষতিগ্রস্ত, তেজস্ক্রিয় বিকিরণের বিষয়ে জাতিসংঘের সতর্কবার্তা

মৃত নবজাতক নিয়ে থানায় হাজির মা-বাবা, হাসপাতালে ভুল চিকিৎসার অভিযোগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভারতের গোয়ায় নাইটক্লাবে আগুন, নিহত অন্তত ২৩

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ১১
ভারতের গোয়ায় নাইটক্লাবে অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ২৩ জন নিহত হয়েছেন। ছবি: সংগৃহীত
ভারতের গোয়ায় নাইটক্লাবে অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ২৩ জন নিহত হয়েছেন। ছবি: সংগৃহীত

উত্তর গোয়ার আর্পোরায় জনপ্রিয় নাইটক্লাব বার্চ বাই রোমিও লেনে গতকাল গভীর রাতে এক বিধ্বংসী আগুনে ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। কর্মকর্তাদের দেওয়া প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ৫০ জন আহত হয়েছেন এবং বর্তমানে তাঁরা গোয়া মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন।

প্রাথমিক রিপোর্টে জানা গেছে, গতকাল শনিবার দিবাগত রাতে ক্লাবটিতে আগুন ধরে যায়। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে তিন থেকে চারজন পর্যটক এবং ১৯ জন ক্লাবের কর্মী রয়েছেন।

ঘটনাটি রাত আনুমানিক ১টা নাগাদ ঘটে। পুলিশ প্রথমে সন্দেহ করেছিল যে রান্নাঘরের কাছে একটি সিলিন্ডার বিস্ফোরণের কারণে আগুন লেগেছে। তবে এই সম্ভাবনা নাকচ করা হয়েছে। গোয়ার ডিরেক্টর জেনারেল অব পুলিশের (ডিজিপি) মতে, পরিদর্শনের সময় সিলিন্ডারগুলো অক্ষত ছিল।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিস্ফোরণটি এতটা শক্তিশালী ছিল যে আগুন কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে পুরো ভবনটিকে গ্রাস করে ফেলেছিল। ফলে ভেতরে থাকা লোকজনের পালানোর সুযোগ কম ছিল।

নিহত ব্যক্তিদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। আহত ব্যক্তিদের সংখ্যা এবং তাঁদের অবস্থা সম্পর্কে সরকারি বিস্তারিত তথ্যের জন্য এখনো অপেক্ষা করা হচ্ছে।

সারা রাত উদ্ধারকাজ চলে এবং কর্তৃপক্ষ মৃত ব্যক্তিদের পরিচয় শনাক্ত করতে এবং পরিবারকে খবর দিতে কাজ করছে।

গোয়ার ডিরেক্টর জেনারেল অব পুলিশ জানিয়েছেন, ক্লাবের নিরাপত্তাব্যবস্থা, গ্যাস সংযোগ ব্যবস্থা এবং জরুরি বহির্গমন পরিকল্পনায় কোনো নিয়ম লঙ্ঘন হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতেও তদন্ত করা হবে।

একাধিক দমকলের ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং প্রায় দুই ঘণ্টা তীব্র প্রচেষ্টার পর অবশেষে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।

নাইটক্লাবটি আপাতত সিল করে দেওয়া হয়েছে এবং মালিক ও ব্যবস্থাপকদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, ক্লাবটি অগ্নিনিরাপত্তা বিধি মেনে চলেনি।

গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী ডা. প্রমোদ সাওয়ান্ত আর্পোরায় বার্চ বাই রোমিও লেন নাইটক্লাবে এই মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাকে ‘খুবই বেদনাদায়ক’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।

মুখ্যমন্ত্রী সাওয়ান্ত নিশ্চিত করেছেন যে অগ্নিকাণ্ডের সঠিক কারণ জানতে এবং অগ্নিনিরাপত্তা বিধি ও বিল্ডিং নিয়মাবলি অনুসরণ করা হয়েছিল কি না, তা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা করার জন্য তিনি একটি পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

স্বাস্থ্যের ডিজির সঙ্গে তর্কের পর সেই চিকিৎসককে অব্যাহতি ও শোকজ নোটিশ

খালেদা জিয়া এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে লন্ডন যেতে পারেন বুধবার

তুমি কে? নিজেকে কী ভাব—পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর বিবৃতিতে ক্ষুব্ধ ইমরান-সমর্থকদের কড়া প্রতিক্রিয়া

চেরনোবিল পারমাণবিক চুল্লি ক্ষতিগ্রস্ত, তেজস্ক্রিয় বিকিরণের বিষয়ে জাতিসংঘের সতর্কবার্তা

মৃত নবজাতক নিয়ে থানায় হাজির মা-বাবা, হাসপাতালে ভুল চিকিৎসার অভিযোগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

চেরনোবিল পারমাণবিক চুল্লি ক্ষতিগ্রস্ত, তেজস্ক্রিয় বিকিরণের বিষয়ে জাতিসংঘের সতর্কবার্তা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ৩৭
গত ফেব্রুয়ারিতে ড্রোন হামলায় চেরনোবিল পারমাণবিক চুল্লির সুরক্ষা আবরণে একটি ছিদ্র তৈরি হয়। ছবি: এপির সৌজন্যে
গত ফেব্রুয়ারিতে ড্রোন হামলায় চেরনোবিল পারমাণবিক চুল্লির সুরক্ষা আবরণে একটি ছিদ্র তৈরি হয়। ছবি: এপির সৌজন্যে

ইউক্রেনের চেরনোবিল পারমাণবিক চুল্লির ওপর তৈরি একটি সুরক্ষামূলক কাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর ফলে এটি আর তেজস্ক্রিয়তা আটকানোর কাজ করতে পারছে না বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের পরমাণু কর্মসূচিবিষয়ক পর্যবেক্ষক প্রতিষ্ঠান আন্তর্জাতিক পারমাণবিক সংস্থা (আইএইএ)।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ফেব্রুয়ারিতে ড্রোন হামলায় এর একটি অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। ওই হামলায় চেরনোবিল পারমাণবিক চুল্লির সুরক্ষা আবরণে একটি ছিদ্র তৈরি হয়।

এর আগে ১৯৮৬ সালে চেরনোবিলের পারমাণবিক চুল্লিতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের পর তেজস্ক্রিয় বিকিরণ ইউরোপজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছিল। বিস্ফোরণে চুল্লিটির ছাদ উড়ে গিয়েছিল। এ অবস্থায় যেন বিকিরণ না ছড়ায়, সে জন্য চুল্লির ক্ষতিগ্রস্ত অংশটির ওপর কংক্রিট ও স্টিলের তৈরি একটি প্রতিরক্ষা স্তর সংযুক্ত করা হয়েছিল।

তবে গত সপ্তাহে আইএইএর পরিদর্শনে দেখা গেছে, ড্রোনের আঘাতে কংক্রিট ও স্টিলের তৈরি ওই সুরক্ষা কাঠামো দুর্বল হয়ে পড়েছে। আইএইএর মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসি বলেন, ‘আমরা নিশ্চিত হয়েছি, সুরক্ষামূলক কাঠামোটি প্রাথমিক নিরাপত্তা কার্যকারিতা (তেজস্ক্রিয়তা নিয়ন্ত্রণের সক্ষমতা) হারিয়েছে।’ তবে তিনি জানান, এর ভার বহনকারী কাঠামোর তেমন ক্ষতি হয়নি।

গ্রোসি বলেন, সাময়িকভাবে মেরামত করা হয়েছে। তবে দীর্ঘ মেয়াদে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে আরও পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।

গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেন জানায়, বিস্ফোরক বহনকারী একটি ড্রোন চেরনোবিল চুল্লিতে আঘাত হানে, যার ফলে আগুন লাগে এবং চুল্লির চারপাশের প্রতিরক্ষামূলক আচ্ছাদন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ইউক্রেন কর্তৃপক্ষ ড্রোনটি রাশিয়ার বলে দাবি করেছিল। তবে মস্কো প্ল্যান্টে হামলার বিষয়টি অস্বীকার করে।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে আক্রমণের প্রথম কয়েক সপ্তাহ রুশ বাহিনী কিয়েভের দিকে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করলে এক মাসের বেশি সময় চেরনোবিল ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকা দখল করে রেখেছিল।

প্রায় চার দশক আগে (১৯৮৬ সালে) চেরনোবিল দুর্ঘটনায় মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত হিসাব অনুযায়ী, বিস্ফোরণে তৎক্ষণাৎ ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছিল। তবে জাতিসংঘের হিসাব মতে, সরাসরি বিকিরণের কারণে ৫০ জন মারা গিয়েছিলেন। ২০০৫ সালে জাতিসংঘ অনুমান করেছিল, ভবিষ্যতে চেরনোবিলের বিকিরণজনিত কারণে আরও ৪ হাজার মানুষের মৃত্যু হতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

স্বাস্থ্যের ডিজির সঙ্গে তর্কের পর সেই চিকিৎসককে অব্যাহতি ও শোকজ নোটিশ

খালেদা জিয়া এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে লন্ডন যেতে পারেন বুধবার

তুমি কে? নিজেকে কী ভাব—পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর বিবৃতিতে ক্ষুব্ধ ইমরান-সমর্থকদের কড়া প্রতিক্রিয়া

চেরনোবিল পারমাণবিক চুল্লি ক্ষতিগ্রস্ত, তেজস্ক্রিয় বিকিরণের বিষয়ে জাতিসংঘের সতর্কবার্তা

মৃত নবজাতক নিয়ে থানায় হাজির মা-বাবা, হাসপাতালে ভুল চিকিৎসার অভিযোগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত