
যুক্তরাজ্যে বসবাসরত অনেক বাংলাদেশি নারী টিকটকে হয়রানি ও হুমকির শিকার হচ্ছেন। ফ্রান্সেও ঘটছে এমন ঘটনা। এতে তাঁদের কেউ হতাশায় ভুগছেন আবার কেউ আত্মহত্যাপ্রবণ হয়ে উঠছেন। অনেক নারী যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন। অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে জানিয়েছেন।
এরপরেও আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রকারী সংস্থাগুলো যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ তাঁদের। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এমনটি জানিয়েছে।
অনলাইন ট্রল ও বুলিংয়ের শিকার যুক্তরাজ্যে বসবাসকারী সুলতানা (ছদ্মনাম) নামে এক নারী বিবিসিকে বলেন, ‘আমার মনে হচ্ছিল আমার মাথার ওপর আকাশ ভেঙে পড়েছে। আমি প্রতিদিন কাঁদতাম; খেতে পারতাম না, ঘুমাতে পারতাম না। একটা পর্যায়ে আমার মনে হতো যে প্রতিদিন এই যন্ত্রণা সহ্য করার চাইতে মরে যাওয়া ভালো। আমি আত্মহত্যার কথাও চিন্তা করেছিলাম।’
সুলতানা নিজেও টিকটক ব্যবহার করেন। ২০২১ সালে নিজের এক বন্ধুকে অনলাইন ট্রল ও বুলিং থেকে বাঁচাতে গিয়ে হাসান সৈয়দ নামের প্যারিস নিবাসী ওই বাংলাদেশি টিকটকারের ‘টার্গেট’ হয়ে পড়েন তিনি।
তখন থেকে হাসান সৈয়দ নিয়মিত সুলতানাকে লক্ষ্য করে বিদ্রুপ, ঘৃণা ও হুমকিমূলক বিভিন্ন কনটেন্ট পোস্ট করতে থাকেন। তারপর টানা দুই বছর এই যন্ত্রণা সুলতানাকে সহ্য করতে হয়।
সেই অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিতে গিয়ে সুলতানা বলেন, ‘এই দুই বছর আমার ওপর দিয়ে কী গেছে, তা বলে বোঝাতে পারব না। আমাকে লক্ষ্য করে করা পোস্টের কমেন্টে লোকজন হাসাহাসি করত, উসকানিমূলক মন্তব্য ছড়াত। আমি প্রচণ্ড মানসিক যন্ত্রণার মধ্যে থাকতাম এবং একপর্যায়ে মানসিক চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হয় আমাকে। এখনো আমি পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিজঅর্ডারের (পিটিএসডি) মধ্যে রয়েছি।’
যুক্তরাজ্যে বসবাসরত বাংলাদেশিদের মধ্যে টিকটক বেশ জনপ্রিয়। বিশেষ করে নারীদের মধ্যে। অনেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা ইস্যুতে প্রতিবাদ করেন। তবে সেখানকার অধিকাংশ লোকজন ধর্মীয়ভাবে রক্ষণশীল। ফলে নারীরা তাদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হচ্ছেন। ভুক্তভোগী নারীদের অনেকে বলছেন, নারীরা অনলাইনে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলবেন, এটা নিজ সম্প্রদায়ের অনেকেই মানতে পারেন না। তাই তাঁদের চুপ করিয়ে দিতে চান।
আর প্যারিসপ্রবাসী টিকটকার হাসান সৈয়দ বিদ্বেষমূলক নানা কনটেন্ট তৈরি করেন যুক্তরাজ্যে বসবাসরত বাংলাদেশিদের লক্ষ্যবস্তু করে। তাঁর টিকটক অ্যাকাউন্টের ফলোয়ারের সংখ্যা হাজার হাজার।
টিকটকার হাসানের ট্রলিং বা বুলিংয়ের ধরন হলো—তিনি যাদের ‘টার্গেট’ করেন, প্রথমে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে তাঁদের ছবি ও ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করেন। তারপর সেসব ব্যবহার করে ভিকটিমদের বিরুদ্ধে উসকানি-ঘৃণা-বিদ্বেষমূলক ভিডিও বানান।
বিবিসি ই-মেইল পাঠিয়ে ও কল করে একাধিকবার হাসান সৈয়দের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছে। কিন্তু সাড়া দেননি তিনি।
উচ্চশিক্ষার্থী মাসুমাকে অনলাইন হয়রানি
হাসানের আরেক শিকারের নাম মাসুমা। উচ্চশিক্ষার জন্য যুক্তরাজ্যের ওয়েলসে পাড়ি দেওয়া এই নারী স্বামীর সঙ্গে বসবাস করেন। টিকটকে নিয়মিত বিভিন্ন খাবারের রেসিপি শেয়ার করেন তিনি। এ ছাড়া তাঁর নিজের একটি ছোট দোকান রয়েছে। সেই ব্যবসাও তিনি পরিচালনা করেন টিকটকের মাধ্যমে।
২০২২ সালের কোনো এক দিন টিকটকে নিজের রান্নার একটি ভিডিও লাইভ করার সময় হাসান কমেন্ট বক্সে বলেন, তিনি মাসুমার ভিডিও কনটেন্টে অতিথি হিসেবে আসতে চান এবং কবে তাঁর এই চাওয়া পূর্ণ হবে। মাসুমা তাঁর এই ‘চাওয়াকে’ প্রত্যাখ্যান করলে হাসান মাসুমাকে ‘ঝুলিয়ে দেওয়ার’ হুমকি দেন।
তার কিছুদিন পরই একটি কনটেন্ট টিকটকে ঘুরে বেড়াতে দেখেন মাসুমা, যেখানে তাঁর ছবি ও ঠিকানা ব্যবহার করে বলা হয়েছে—মাসুমা একজন যৌনকর্মী। তিনি টিকটকে রিপোর্ট করার পর যদিও সেই ভিডিও নামিয়ে ফেলা হয়েছে, তবে এই ভিডিওর কারণে মাসুমাকে ব্যাপক ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয়েছে যার জের এখনো বয়ে বেড়াতে হচ্ছে তাঁকে।
এ বিষয়ে মাসুমা বলেন, ‘ভিডিও ডিলিটের পরও অনেক দিন আমার ফোনে অপরিচিত বিভিন্ন নাম্বার থেকে ফোন আসত এবং সেসব ফোনে অশ্লীল প্রস্তাব-হুমকি দেওয়া হতো। এই পরিস্থিতি থেকে বাঁচার জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে আমার সব ছবি মুছে ফেলতে হয়েছে, ফোন নম্বর বদলাতে হয়েছে এবং দীর্ঘদিন টিকটক ব্যবহার বন্ধ রাখতে হয়েছে। এখন যদিও আমি ভিডিও শেয়ার করি, তবে আগের তুলনায় অনেক কম।’
তিনি আরও বলেন, হাসানের বিরুদ্ধে ওয়েলস পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েও হতাশ হয়েছেন। কারণ, পুলিশ তাঁর অভিযোগ কানে তোলেনি।
কামরুল-রুখতান দম্পতির ভোগান্তি
তবে টিকটকার হাসান কেবলই যে বাংলাদেশি নারীদের লক্ষ্যবস্তু বানান এমন নয়। কামরুল ইসলাম নামের এক যুক্তরাজ্য প্রবাসী বাংলাদেশিও ব্যাপক হয়রানির শিকার হয়েছেন তাঁর কারণে। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে টিকটকে নিজের স্ত্রীর ছবি সংবলিত একটি সংক্ষিপ্ত ভিডিও ঘুরে বেড়াতে দেখেন কামরুল। সেই ভিডিওতে তাঁর স্ত্রী রুখতানকে ‘পেশাদার যৌনকর্মী’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
নিজের স্ত্রীর এমন আপত্তিকর ভুয়া ভিডিও দেখে হতভম্ব হয়ে পড়েন স্ত্রী-দুই সন্তান নিয়ে যুক্তরাজ্যের স্ট্যাফোর্ডশায়ারে বসবাসকারী কামরুল। অনলাইনে হাসান সৈয়দের সঙ্গে যোগাযোগ করে এসব ভিডিও সরিয়ে দিতে বলেন তিনি।
কিন্তু তাতে ফলাফল হয় উল্টো। হাসান এবং তাঁর ফলোয়াররা কামরুল এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের লক্ষ্য করে একের পর এক অশ্লীল-অপমানজনক কনটেন্ট শেয়ার করা শুরু করেন টিকটকে। এরই মধ্যে বেশ কয়েকবার কামরুল ও তাঁর সন্তানদের হত্যা এবং তাঁর স্ত্রী রুখতান ইসলামকে ধর্ষণের হুমকি দেওয়া হয়েছে।
কামরুলের স্ত্রী রুখতান বলেন, ‘এটি আমাকে মানসিকভাবে ব্যাপকভাবে ভেঙে দিয়েছিল। আমি সারা দিন কাঁদতাম আর ভয়ে থাকতাম।’
কামরুল ইসলাম বলেন, ‘প্রথমে আমি ব্যাপারটিকে গুরুত্ব দিইনি। কিন্তু বাংলাদেশি কমিউনিটির অন্যদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারলাম, হাসান কয়েক বছর ধরে যুক্তরাজ্যে বসবাসরত বাংলাদেশিদের নানাভাবে হয়রানি করছেন। যখন এসব ঘটছে, আমার স্ত্রী তখন সাত মাসের গর্ভবতী। আমার বড় সন্তান স্কুলে যায়। আমি প্রতিদিন তাঁকে স্কুলে পৌঁছে দিই। সারাক্ষণ আমার মধ্যে ভয় কাজ করত—যদি আমার অনুপস্থিতিতে আমার স্ত্রী-সন্তানের ওপর হামলা হয়, তখন কী হবে? এই ভীতির কারণ, যুক্তরাজ্যে হাসানের প্রচুর ফলোয়ার রয়েছে।’
একপর্যায়ে বাধ্য হয়ে টিকটক কর্তৃপক্ষকে হাসানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে মেইল করেন তিনি। পাল্টা মেইলে টিকটক কর্তৃপক্ষ জানায়, হাসান সৈয়দ টিকটকের কমিউনিটি গাইডলাইন ভঙ্গ করার মতো কিছু করেননি।
বিবিসিকে কামরুল জানান, টিকটকের মেইল পাওয়ার পর থেকে দুশ্চিন্তা ও ভীতি থেকে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ছিলেন তিনি। উপায় না দেখে প্যারিসে ব্রিটেনের দূতাবাসের মাধ্যমে ইংরেজি জানেন এমন একজন আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করেন।
সেই অনুরোধে সাড়া দিয়ে ম্যাথিউ কোঁজে নামের এক আইনজীবীর সঙ্গে কামরুলের যোগাযোগ করিয়ে দেয় ব্রিটেনের দূতাবাস। কোঁজের সঙ্গে প্রাথমিক আলাপ-আলোচনার পর প্যারিসের একটি আদালতে হাসান সৈয়দের বিরুদ্ধে মামলা করেন কামরুল ইসলাম।
ফ্রান্সে বিচার পেতে বাধা ইসলামবিদ্বেষ
কিন্তু সেই মামলাতেও দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি হচ্ছিল না। কামরুলের আইনজীবী কোঁজে তাকে জানান, কয়েকটি কারণে মামলার কার্যক্রম এগোচ্ছে না। প্রথমত, যেসব পোস্টকে আপত্তিকর বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে—ফ্রান্সের প্রচলিত আইন ও সংস্কৃতিতে তা আপত্তিকর নয়। কেউ যদি হামলা না করে কেবল হুমকি দেয়—তাহলে তাকে বড় অপরাধ বলে মনে করে না ফ্রান্সের আইন।
দ্বিতীয়ত, ফ্রান্সের বিচার ব্যবস্থার অভ্যন্তরীণ নানা সীমাবদ্ধতা রয়েছে। প্রয়োজনের তুলনায় দেশটির বিচারকের সংখ্যা কম। তৃতীয়ত ফ্রান্সে ইসলামবিদ্বেষ দিন দিন প্রকট হয়ে উঠছে এবং যেহেতু কামরুলের নামের সঙ্গে ‘ইসলাম’ রয়েছে, ফ্রান্সের বর্তমান পরিস্থিতিতে তাঁর জন্য ন্যায়বিচার পাওয়া কঠিন।
এদিকে কামরুল যখন প্যারিসের আদালতে মামলার ব্যস্ততার মধ্যে ছিলেন, তখনও নিয়মিত তিনি ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের লক্ষ্য করে ঘৃণা ও উসকানিমূলক ভিডিও টিকটক, ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করছিলেন তিনি।
হাল না ছাড়া কামরুল ইসলাম শেষ চেষ্টা হিসেবে ব্রিটেনের পার্লামেন্টের অধীন নিয়ন্ত্রক সংস্থা ইনফরমেশন কমিশনার অফিসে (আইসিও) যোগাযোগ করে নিজের অভিযোগ জানান। সেই সঙ্গে টিকটক ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপলোড করা আপত্তিকর ভিডিওগুলোর লিংকও শেয়ার করেন তিনি।
আইসিওতে অভিযোগ দেওয়ার পর কাজ হয়। ভিডিওগুলো দেখার পর আইসিও কর্মকর্তারা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। সেই সঙ্গে ভিডিওগুলো মুছে ফেলা এবং হাসান সৈয়দের যাবতীয় আইডি অকার্যকর করতে টিকটক, ফেসবুক এবং ইউটিউবকে ৭ দিন সময় দেন।
সাত দিন পার হওয়ার আগেই বিবৃতি জারির মাধ্যমে এই তিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম জানায় হাসান সৈয়দের যাবতীয় ভিডিও, পোস্ট ও কনটেন্ট মুছে ফেলা হয়েছে এবং যেসব আইডি তিনি চালাতেন, সবগুলো ব্লক করে দেওয়া হয়েছে।
বিবিসিকে কামরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের এখানকার কমিউনিটি রক্ষণশীল। এখানে সামাজিক সম্মান রক্ষায় নারী নিপীড়ন, নির্যাতন এমনকি অনেক সময় ধর্ষণের মতো বড় অপরাধও চেপে যাওয়া হয়; আর হাসানের মতো দানবরা এই অবস্থার সুযোগ নেয়। আমি যুক্তরাজ্যে নিবাসী আমার সকল বোনকে অনুরোধ করে বলতে চাই, আপনার চুপ থাকবেন না। ঐক্যবদ্ধ হোন, আওয়াজ তুলুন। আপনারা যদি চুপ থাকেন, তাহলে হাসানের মতো অপরাধীরা আসকারা পাবে এবং বারবার এ ধরনের অপরাধ ঘটাতে থাকবে।
ইউটিউবের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ইউটিউবে হয়রানি এবং সাইবার হয়রানির সুযোগ নেই। সৈয়দের ব্যবহৃত চ্যানেলটি পর্যালোচনা করে ‘বাতিল’ করা হয়েছে।
হাসানের ফেসবুক পেজ ডিজএবল ও পোস্ট সরিয়ে নেওয়া হয়েছে জানিয়ে মেটার একজন মুখপাত্র বলেছেন, ‘আমাদের সবকিছু নিখুঁত নয় এবং কখনো কখনো মেশিন এবং মানুষ উভয়ই ভুল করে। এই কারণেই আমরা প্ল্যাটফর্মগুলো থেকে আইন লঙ্ঘনকারী বিষয়বস্তু শনাক্ত এবং অপসারণের সক্ষমতা বাড়াতে কাজ করছি।’
এদিকে কামরুল ইসলাম বসে নেই। তিনি প্রতিনিয়ত টিকটক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন ও হাসানের নতুন আইডি সরিয়ে নিতে আবেদন করছেন। কেননা হাসান এখনো নতুন আইডি খুলে তাঁকে এবং তাঁর পরিবারকে হুমকি দিচ্ছেন।
যুক্তরাজ্য সরকার বহু বছরের বিতর্কের পর শিশুদের জন্য ইন্টারনেটকে নিরাপদ করার লক্ষ্যে ‘অনলাইন সেফটি বিল’ পাস করেছে। গত বছরের ২৬ অক্টোবর দেশটিতে বিলটি আইনে পরিণত হয়েছে।
যুক্তরাজ্যের বিজ্ঞান, উদ্ভাবন এবং প্রযুক্তি বিভাগের একজন মুখপাত্র বলেছেন, সোশ্যাল মিডিয়া সংস্থাগুলো এখন বেআইনি কর্মকাণ্ড মোকাবিলার অভিযুক্তদের বিষয়ে পুলিশকে অবহিত করা উচিত।

যুক্তরাজ্যে বসবাসরত অনেক বাংলাদেশি নারী টিকটকে হয়রানি ও হুমকির শিকার হচ্ছেন। ফ্রান্সেও ঘটছে এমন ঘটনা। এতে তাঁদের কেউ হতাশায় ভুগছেন আবার কেউ আত্মহত্যাপ্রবণ হয়ে উঠছেন। অনেক নারী যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন। অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে জানিয়েছেন।
এরপরেও আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রকারী সংস্থাগুলো যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ তাঁদের। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এমনটি জানিয়েছে।
অনলাইন ট্রল ও বুলিংয়ের শিকার যুক্তরাজ্যে বসবাসকারী সুলতানা (ছদ্মনাম) নামে এক নারী বিবিসিকে বলেন, ‘আমার মনে হচ্ছিল আমার মাথার ওপর আকাশ ভেঙে পড়েছে। আমি প্রতিদিন কাঁদতাম; খেতে পারতাম না, ঘুমাতে পারতাম না। একটা পর্যায়ে আমার মনে হতো যে প্রতিদিন এই যন্ত্রণা সহ্য করার চাইতে মরে যাওয়া ভালো। আমি আত্মহত্যার কথাও চিন্তা করেছিলাম।’
সুলতানা নিজেও টিকটক ব্যবহার করেন। ২০২১ সালে নিজের এক বন্ধুকে অনলাইন ট্রল ও বুলিং থেকে বাঁচাতে গিয়ে হাসান সৈয়দ নামের প্যারিস নিবাসী ওই বাংলাদেশি টিকটকারের ‘টার্গেট’ হয়ে পড়েন তিনি।
তখন থেকে হাসান সৈয়দ নিয়মিত সুলতানাকে লক্ষ্য করে বিদ্রুপ, ঘৃণা ও হুমকিমূলক বিভিন্ন কনটেন্ট পোস্ট করতে থাকেন। তারপর টানা দুই বছর এই যন্ত্রণা সুলতানাকে সহ্য করতে হয়।
সেই অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিতে গিয়ে সুলতানা বলেন, ‘এই দুই বছর আমার ওপর দিয়ে কী গেছে, তা বলে বোঝাতে পারব না। আমাকে লক্ষ্য করে করা পোস্টের কমেন্টে লোকজন হাসাহাসি করত, উসকানিমূলক মন্তব্য ছড়াত। আমি প্রচণ্ড মানসিক যন্ত্রণার মধ্যে থাকতাম এবং একপর্যায়ে মানসিক চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হয় আমাকে। এখনো আমি পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিজঅর্ডারের (পিটিএসডি) মধ্যে রয়েছি।’
যুক্তরাজ্যে বসবাসরত বাংলাদেশিদের মধ্যে টিকটক বেশ জনপ্রিয়। বিশেষ করে নারীদের মধ্যে। অনেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা ইস্যুতে প্রতিবাদ করেন। তবে সেখানকার অধিকাংশ লোকজন ধর্মীয়ভাবে রক্ষণশীল। ফলে নারীরা তাদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হচ্ছেন। ভুক্তভোগী নারীদের অনেকে বলছেন, নারীরা অনলাইনে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলবেন, এটা নিজ সম্প্রদায়ের অনেকেই মানতে পারেন না। তাই তাঁদের চুপ করিয়ে দিতে চান।
আর প্যারিসপ্রবাসী টিকটকার হাসান সৈয়দ বিদ্বেষমূলক নানা কনটেন্ট তৈরি করেন যুক্তরাজ্যে বসবাসরত বাংলাদেশিদের লক্ষ্যবস্তু করে। তাঁর টিকটক অ্যাকাউন্টের ফলোয়ারের সংখ্যা হাজার হাজার।
টিকটকার হাসানের ট্রলিং বা বুলিংয়ের ধরন হলো—তিনি যাদের ‘টার্গেট’ করেন, প্রথমে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে তাঁদের ছবি ও ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করেন। তারপর সেসব ব্যবহার করে ভিকটিমদের বিরুদ্ধে উসকানি-ঘৃণা-বিদ্বেষমূলক ভিডিও বানান।
বিবিসি ই-মেইল পাঠিয়ে ও কল করে একাধিকবার হাসান সৈয়দের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছে। কিন্তু সাড়া দেননি তিনি।
উচ্চশিক্ষার্থী মাসুমাকে অনলাইন হয়রানি
হাসানের আরেক শিকারের নাম মাসুমা। উচ্চশিক্ষার জন্য যুক্তরাজ্যের ওয়েলসে পাড়ি দেওয়া এই নারী স্বামীর সঙ্গে বসবাস করেন। টিকটকে নিয়মিত বিভিন্ন খাবারের রেসিপি শেয়ার করেন তিনি। এ ছাড়া তাঁর নিজের একটি ছোট দোকান রয়েছে। সেই ব্যবসাও তিনি পরিচালনা করেন টিকটকের মাধ্যমে।
২০২২ সালের কোনো এক দিন টিকটকে নিজের রান্নার একটি ভিডিও লাইভ করার সময় হাসান কমেন্ট বক্সে বলেন, তিনি মাসুমার ভিডিও কনটেন্টে অতিথি হিসেবে আসতে চান এবং কবে তাঁর এই চাওয়া পূর্ণ হবে। মাসুমা তাঁর এই ‘চাওয়াকে’ প্রত্যাখ্যান করলে হাসান মাসুমাকে ‘ঝুলিয়ে দেওয়ার’ হুমকি দেন।
তার কিছুদিন পরই একটি কনটেন্ট টিকটকে ঘুরে বেড়াতে দেখেন মাসুমা, যেখানে তাঁর ছবি ও ঠিকানা ব্যবহার করে বলা হয়েছে—মাসুমা একজন যৌনকর্মী। তিনি টিকটকে রিপোর্ট করার পর যদিও সেই ভিডিও নামিয়ে ফেলা হয়েছে, তবে এই ভিডিওর কারণে মাসুমাকে ব্যাপক ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয়েছে যার জের এখনো বয়ে বেড়াতে হচ্ছে তাঁকে।
এ বিষয়ে মাসুমা বলেন, ‘ভিডিও ডিলিটের পরও অনেক দিন আমার ফোনে অপরিচিত বিভিন্ন নাম্বার থেকে ফোন আসত এবং সেসব ফোনে অশ্লীল প্রস্তাব-হুমকি দেওয়া হতো। এই পরিস্থিতি থেকে বাঁচার জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে আমার সব ছবি মুছে ফেলতে হয়েছে, ফোন নম্বর বদলাতে হয়েছে এবং দীর্ঘদিন টিকটক ব্যবহার বন্ধ রাখতে হয়েছে। এখন যদিও আমি ভিডিও শেয়ার করি, তবে আগের তুলনায় অনেক কম।’
তিনি আরও বলেন, হাসানের বিরুদ্ধে ওয়েলস পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েও হতাশ হয়েছেন। কারণ, পুলিশ তাঁর অভিযোগ কানে তোলেনি।
কামরুল-রুখতান দম্পতির ভোগান্তি
তবে টিকটকার হাসান কেবলই যে বাংলাদেশি নারীদের লক্ষ্যবস্তু বানান এমন নয়। কামরুল ইসলাম নামের এক যুক্তরাজ্য প্রবাসী বাংলাদেশিও ব্যাপক হয়রানির শিকার হয়েছেন তাঁর কারণে। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে টিকটকে নিজের স্ত্রীর ছবি সংবলিত একটি সংক্ষিপ্ত ভিডিও ঘুরে বেড়াতে দেখেন কামরুল। সেই ভিডিওতে তাঁর স্ত্রী রুখতানকে ‘পেশাদার যৌনকর্মী’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
নিজের স্ত্রীর এমন আপত্তিকর ভুয়া ভিডিও দেখে হতভম্ব হয়ে পড়েন স্ত্রী-দুই সন্তান নিয়ে যুক্তরাজ্যের স্ট্যাফোর্ডশায়ারে বসবাসকারী কামরুল। অনলাইনে হাসান সৈয়দের সঙ্গে যোগাযোগ করে এসব ভিডিও সরিয়ে দিতে বলেন তিনি।
কিন্তু তাতে ফলাফল হয় উল্টো। হাসান এবং তাঁর ফলোয়াররা কামরুল এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের লক্ষ্য করে একের পর এক অশ্লীল-অপমানজনক কনটেন্ট শেয়ার করা শুরু করেন টিকটকে। এরই মধ্যে বেশ কয়েকবার কামরুল ও তাঁর সন্তানদের হত্যা এবং তাঁর স্ত্রী রুখতান ইসলামকে ধর্ষণের হুমকি দেওয়া হয়েছে।
কামরুলের স্ত্রী রুখতান বলেন, ‘এটি আমাকে মানসিকভাবে ব্যাপকভাবে ভেঙে দিয়েছিল। আমি সারা দিন কাঁদতাম আর ভয়ে থাকতাম।’
কামরুল ইসলাম বলেন, ‘প্রথমে আমি ব্যাপারটিকে গুরুত্ব দিইনি। কিন্তু বাংলাদেশি কমিউনিটির অন্যদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারলাম, হাসান কয়েক বছর ধরে যুক্তরাজ্যে বসবাসরত বাংলাদেশিদের নানাভাবে হয়রানি করছেন। যখন এসব ঘটছে, আমার স্ত্রী তখন সাত মাসের গর্ভবতী। আমার বড় সন্তান স্কুলে যায়। আমি প্রতিদিন তাঁকে স্কুলে পৌঁছে দিই। সারাক্ষণ আমার মধ্যে ভয় কাজ করত—যদি আমার অনুপস্থিতিতে আমার স্ত্রী-সন্তানের ওপর হামলা হয়, তখন কী হবে? এই ভীতির কারণ, যুক্তরাজ্যে হাসানের প্রচুর ফলোয়ার রয়েছে।’
একপর্যায়ে বাধ্য হয়ে টিকটক কর্তৃপক্ষকে হাসানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে মেইল করেন তিনি। পাল্টা মেইলে টিকটক কর্তৃপক্ষ জানায়, হাসান সৈয়দ টিকটকের কমিউনিটি গাইডলাইন ভঙ্গ করার মতো কিছু করেননি।
বিবিসিকে কামরুল জানান, টিকটকের মেইল পাওয়ার পর থেকে দুশ্চিন্তা ও ভীতি থেকে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ছিলেন তিনি। উপায় না দেখে প্যারিসে ব্রিটেনের দূতাবাসের মাধ্যমে ইংরেজি জানেন এমন একজন আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করেন।
সেই অনুরোধে সাড়া দিয়ে ম্যাথিউ কোঁজে নামের এক আইনজীবীর সঙ্গে কামরুলের যোগাযোগ করিয়ে দেয় ব্রিটেনের দূতাবাস। কোঁজের সঙ্গে প্রাথমিক আলাপ-আলোচনার পর প্যারিসের একটি আদালতে হাসান সৈয়দের বিরুদ্ধে মামলা করেন কামরুল ইসলাম।
ফ্রান্সে বিচার পেতে বাধা ইসলামবিদ্বেষ
কিন্তু সেই মামলাতেও দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি হচ্ছিল না। কামরুলের আইনজীবী কোঁজে তাকে জানান, কয়েকটি কারণে মামলার কার্যক্রম এগোচ্ছে না। প্রথমত, যেসব পোস্টকে আপত্তিকর বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে—ফ্রান্সের প্রচলিত আইন ও সংস্কৃতিতে তা আপত্তিকর নয়। কেউ যদি হামলা না করে কেবল হুমকি দেয়—তাহলে তাকে বড় অপরাধ বলে মনে করে না ফ্রান্সের আইন।
দ্বিতীয়ত, ফ্রান্সের বিচার ব্যবস্থার অভ্যন্তরীণ নানা সীমাবদ্ধতা রয়েছে। প্রয়োজনের তুলনায় দেশটির বিচারকের সংখ্যা কম। তৃতীয়ত ফ্রান্সে ইসলামবিদ্বেষ দিন দিন প্রকট হয়ে উঠছে এবং যেহেতু কামরুলের নামের সঙ্গে ‘ইসলাম’ রয়েছে, ফ্রান্সের বর্তমান পরিস্থিতিতে তাঁর জন্য ন্যায়বিচার পাওয়া কঠিন।
এদিকে কামরুল যখন প্যারিসের আদালতে মামলার ব্যস্ততার মধ্যে ছিলেন, তখনও নিয়মিত তিনি ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের লক্ষ্য করে ঘৃণা ও উসকানিমূলক ভিডিও টিকটক, ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করছিলেন তিনি।
হাল না ছাড়া কামরুল ইসলাম শেষ চেষ্টা হিসেবে ব্রিটেনের পার্লামেন্টের অধীন নিয়ন্ত্রক সংস্থা ইনফরমেশন কমিশনার অফিসে (আইসিও) যোগাযোগ করে নিজের অভিযোগ জানান। সেই সঙ্গে টিকটক ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপলোড করা আপত্তিকর ভিডিওগুলোর লিংকও শেয়ার করেন তিনি।
আইসিওতে অভিযোগ দেওয়ার পর কাজ হয়। ভিডিওগুলো দেখার পর আইসিও কর্মকর্তারা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। সেই সঙ্গে ভিডিওগুলো মুছে ফেলা এবং হাসান সৈয়দের যাবতীয় আইডি অকার্যকর করতে টিকটক, ফেসবুক এবং ইউটিউবকে ৭ দিন সময় দেন।
সাত দিন পার হওয়ার আগেই বিবৃতি জারির মাধ্যমে এই তিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম জানায় হাসান সৈয়দের যাবতীয় ভিডিও, পোস্ট ও কনটেন্ট মুছে ফেলা হয়েছে এবং যেসব আইডি তিনি চালাতেন, সবগুলো ব্লক করে দেওয়া হয়েছে।
বিবিসিকে কামরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের এখানকার কমিউনিটি রক্ষণশীল। এখানে সামাজিক সম্মান রক্ষায় নারী নিপীড়ন, নির্যাতন এমনকি অনেক সময় ধর্ষণের মতো বড় অপরাধও চেপে যাওয়া হয়; আর হাসানের মতো দানবরা এই অবস্থার সুযোগ নেয়। আমি যুক্তরাজ্যে নিবাসী আমার সকল বোনকে অনুরোধ করে বলতে চাই, আপনার চুপ থাকবেন না। ঐক্যবদ্ধ হোন, আওয়াজ তুলুন। আপনারা যদি চুপ থাকেন, তাহলে হাসানের মতো অপরাধীরা আসকারা পাবে এবং বারবার এ ধরনের অপরাধ ঘটাতে থাকবে।
ইউটিউবের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ইউটিউবে হয়রানি এবং সাইবার হয়রানির সুযোগ নেই। সৈয়দের ব্যবহৃত চ্যানেলটি পর্যালোচনা করে ‘বাতিল’ করা হয়েছে।
হাসানের ফেসবুক পেজ ডিজএবল ও পোস্ট সরিয়ে নেওয়া হয়েছে জানিয়ে মেটার একজন মুখপাত্র বলেছেন, ‘আমাদের সবকিছু নিখুঁত নয় এবং কখনো কখনো মেশিন এবং মানুষ উভয়ই ভুল করে। এই কারণেই আমরা প্ল্যাটফর্মগুলো থেকে আইন লঙ্ঘনকারী বিষয়বস্তু শনাক্ত এবং অপসারণের সক্ষমতা বাড়াতে কাজ করছি।’
এদিকে কামরুল ইসলাম বসে নেই। তিনি প্রতিনিয়ত টিকটক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন ও হাসানের নতুন আইডি সরিয়ে নিতে আবেদন করছেন। কেননা হাসান এখনো নতুন আইডি খুলে তাঁকে এবং তাঁর পরিবারকে হুমকি দিচ্ছেন।
যুক্তরাজ্য সরকার বহু বছরের বিতর্কের পর শিশুদের জন্য ইন্টারনেটকে নিরাপদ করার লক্ষ্যে ‘অনলাইন সেফটি বিল’ পাস করেছে। গত বছরের ২৬ অক্টোবর দেশটিতে বিলটি আইনে পরিণত হয়েছে।
যুক্তরাজ্যের বিজ্ঞান, উদ্ভাবন এবং প্রযুক্তি বিভাগের একজন মুখপাত্র বলেছেন, সোশ্যাল মিডিয়া সংস্থাগুলো এখন বেআইনি কর্মকাণ্ড মোকাবিলার অভিযুক্তদের বিষয়ে পুলিশকে অবহিত করা উচিত।

ইয়েমেনের দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতে এবার নতুন মাত্রার উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এক সময় একই জোটে থাকা সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) এখন কার্যত বিপরীত অবস্থানে। সাম্প্রতিক বিমান হামলা ও কূটনৈতিক বক্তব্যে এই বিভাজন প্রকাশ্যে এসেছে, যা ওই অঞ্চলের যুদ্ধকে আরও জটিল করে তুলছে।
৩ ঘণ্টা আগে
১৯৯৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি ও সমাজ বাস্তবতা ছিল একেবারেই ভিন্ন। সেই বছর প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন অভিশংসন প্রক্রিয়ার মুখে পড়েছিলেন, অস্কারে রাজত্ব করেছিল টাইটানিক, আর অধিকাংশ আমেরিকানের ঘরে ছিল ল্যান্ডলাইন ফোন। ঠিক সেই সময়েই গ্যালাপ ও ইউএসএ টুডে এক ব্যতিক্রমী জরিপ চালায়।
১ দিন আগে
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বাসভবন লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন—এমন অভিযোগ করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ার এই দাবিকে পুরোপুরি ‘মিথ্যা ও সাজানো’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন।
১ দিন আগে
তাইওয়ানকে ঘিরে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সামরিক মহড়া শুরু করেছে চীন। সোমবার শুরু হওয়া এই মহড়ায় যুদ্ধজাহাজ, যুদ্ধবিমান, ড্রোন ও সরাসরি গোলাবর্ষণও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ‘জাস্টিস মিশন ২০২৫’ নামের এই অভিযানে তাইওয়ানকে চারদিক থেকে ঘিরে সাতটি সামুদ্রিক অঞ্চলে সমন্বিত স্থল, নৌ ও আকাশ মহড়া চালানো হচ্ছে।
১ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ইয়েমেনের দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতে এবার নতুন মাত্রার উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এক সময় একই জোটে থাকা সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) এখন কার্যত বিপরীত অবস্থানে। সাম্প্রতিক বিমান হামলা ও কূটনৈতিক বক্তব্যে এই বিভাজন প্রকাশ্যে এসেছে, যা ওই অঞ্চলের যুদ্ধকে আরও জটিল করে তুলছে।
যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, মঙ্গলবার ভোরে সৌদি আরব ইয়েমেনের দক্ষিণাঞ্চলে বিমান হামলা চালায়। এই হামলার লক্ষ্য ছিল সংযুক্ত আরব আমিরাত–সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী ‘সাউদার্ন ট্রানজিশনাল কাউন্সিল’ (এসটিসি)।
সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের দাবি—হাদরামাউতের বন্দরনগরী মুকাল্লায় এসটিসির জন্য অস্ত্র ও সাঁজোয়া যান নামানো হচ্ছিল, যা তাদের ‘সীমারেখা’ অতিক্রমের সমান। সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, জাহাজগুলোর ট্র্যাকিং সিস্টেম বন্ধ ছিল এবং এসব অস্ত্র তাৎক্ষণিক নিরাপত্তা হুমকি তৈরি করছিল।
অন্যদিকে, এসটিসি এই হামলা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তাদের দাবি, হামলায় হাদরামাউতে মোতায়েন এসটিসির অভিজাত ইউনিটগুলোকে লক্ষ্য করা হয়েছে। যদিও সৌদি কর্তৃপক্ষ বলছে, রাতের আঁধারে হামলা চালানো হয়েছে যাতে বেসামরিক ক্ষয়ক্ষতি না হয়।
এই সংঘর্ষ সৌদি আরব ও ইউএইর মধ্যে বাড়তে থাকা মতবিরোধকে প্রকাশ্যে এনেছে। হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন একসঙ্গে লড়াই করলেও, ইয়েমেনের ভেতরে দুই দেশ ভিন্ন ভিন্ন গোষ্ঠীকে সমর্থন দিয়ে আসছে। সৌদি আরবের অভিযোগ, এসটিসিকে আমিরাতের সমর্থন ইয়েমেন ও পুরো অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক। রিয়াদ একে নিজেদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য সরাসরি হুমকি হিসেবেও উল্লেখ করেছে।
এই উত্তেজনার মধ্যেই ইয়েমেনের আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকারের প্রেসিডেনশিয়াল লিডারশিপ কাউন্সিলের প্রধান রাশাদ আল-আলিমি আরব আমিরাতের সঙ্গে যৌথ প্রতিরক্ষা চুক্তি বাতিল করেন এবং দেশটি থেকে আমিরাতের সেনা প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে তিনি সাময়িক সময়ের জন্য আকাশ ও নৌ অবরোধও ঘোষণা করেন।
বিশ্লেষকদের মতে, দক্ষিণ ইয়েমেনে এসটিসির দ্রুত সম্প্রসারণ দেশটিকে কার্যত বিভক্ত করার ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। দক্ষিণে গুরুত্বপূর্ণ তেলসমৃদ্ধ অঞ্চল ও বন্দর, আর উত্তরে রাজধানী সানাসহ হুতিদের শক্ত ঘাঁটি—এই বাস্তবতায় ইয়েমেন আবারও এক গভীর ও বহুমাত্রিক সংকটের দিকে এগোচ্ছে।

ইয়েমেনের দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতে এবার নতুন মাত্রার উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এক সময় একই জোটে থাকা সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) এখন কার্যত বিপরীত অবস্থানে। সাম্প্রতিক বিমান হামলা ও কূটনৈতিক বক্তব্যে এই বিভাজন প্রকাশ্যে এসেছে, যা ওই অঞ্চলের যুদ্ধকে আরও জটিল করে তুলছে।
যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, মঙ্গলবার ভোরে সৌদি আরব ইয়েমেনের দক্ষিণাঞ্চলে বিমান হামলা চালায়। এই হামলার লক্ষ্য ছিল সংযুক্ত আরব আমিরাত–সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী ‘সাউদার্ন ট্রানজিশনাল কাউন্সিল’ (এসটিসি)।
সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের দাবি—হাদরামাউতের বন্দরনগরী মুকাল্লায় এসটিসির জন্য অস্ত্র ও সাঁজোয়া যান নামানো হচ্ছিল, যা তাদের ‘সীমারেখা’ অতিক্রমের সমান। সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, জাহাজগুলোর ট্র্যাকিং সিস্টেম বন্ধ ছিল এবং এসব অস্ত্র তাৎক্ষণিক নিরাপত্তা হুমকি তৈরি করছিল।
অন্যদিকে, এসটিসি এই হামলা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তাদের দাবি, হামলায় হাদরামাউতে মোতায়েন এসটিসির অভিজাত ইউনিটগুলোকে লক্ষ্য করা হয়েছে। যদিও সৌদি কর্তৃপক্ষ বলছে, রাতের আঁধারে হামলা চালানো হয়েছে যাতে বেসামরিক ক্ষয়ক্ষতি না হয়।
এই সংঘর্ষ সৌদি আরব ও ইউএইর মধ্যে বাড়তে থাকা মতবিরোধকে প্রকাশ্যে এনেছে। হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন একসঙ্গে লড়াই করলেও, ইয়েমেনের ভেতরে দুই দেশ ভিন্ন ভিন্ন গোষ্ঠীকে সমর্থন দিয়ে আসছে। সৌদি আরবের অভিযোগ, এসটিসিকে আমিরাতের সমর্থন ইয়েমেন ও পুরো অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক। রিয়াদ একে নিজেদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য সরাসরি হুমকি হিসেবেও উল্লেখ করেছে।
এই উত্তেজনার মধ্যেই ইয়েমেনের আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকারের প্রেসিডেনশিয়াল লিডারশিপ কাউন্সিলের প্রধান রাশাদ আল-আলিমি আরব আমিরাতের সঙ্গে যৌথ প্রতিরক্ষা চুক্তি বাতিল করেন এবং দেশটি থেকে আমিরাতের সেনা প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে তিনি সাময়িক সময়ের জন্য আকাশ ও নৌ অবরোধও ঘোষণা করেন।
বিশ্লেষকদের মতে, দক্ষিণ ইয়েমেনে এসটিসির দ্রুত সম্প্রসারণ দেশটিকে কার্যত বিভক্ত করার ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। দক্ষিণে গুরুত্বপূর্ণ তেলসমৃদ্ধ অঞ্চল ও বন্দর, আর উত্তরে রাজধানী সানাসহ হুতিদের শক্ত ঘাঁটি—এই বাস্তবতায় ইয়েমেন আবারও এক গভীর ও বহুমাত্রিক সংকটের দিকে এগোচ্ছে।

যুক্তরাজ্যে বসবাসরত অনেক বাংলাদেশি নারী টিকটকে হয়রানি ও হুমকির শিকার হচ্ছেন। ফ্রান্সেও ঘটছে এমন ঘটনা। এতে তাঁদের কেউ হতাশায় ভুগছেন আবার কেউ আত্মহত্যাপ্রবণ হয়ে উঠছেন। অনেক নারী যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন। অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে জানিয়েছেন।
০২ এপ্রিল ২০২৪
১৯৯৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি ও সমাজ বাস্তবতা ছিল একেবারেই ভিন্ন। সেই বছর প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন অভিশংসন প্রক্রিয়ার মুখে পড়েছিলেন, অস্কারে রাজত্ব করেছিল টাইটানিক, আর অধিকাংশ আমেরিকানের ঘরে ছিল ল্যান্ডলাইন ফোন। ঠিক সেই সময়েই গ্যালাপ ও ইউএসএ টুডে এক ব্যতিক্রমী জরিপ চালায়।
১ দিন আগে
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বাসভবন লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন—এমন অভিযোগ করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ার এই দাবিকে পুরোপুরি ‘মিথ্যা ও সাজানো’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন।
১ দিন আগে
তাইওয়ানকে ঘিরে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সামরিক মহড়া শুরু করেছে চীন। সোমবার শুরু হওয়া এই মহড়ায় যুদ্ধজাহাজ, যুদ্ধবিমান, ড্রোন ও সরাসরি গোলাবর্ষণও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ‘জাস্টিস মিশন ২০২৫’ নামের এই অভিযানে তাইওয়ানকে চারদিক থেকে ঘিরে সাতটি সামুদ্রিক অঞ্চলে সমন্বিত স্থল, নৌ ও আকাশ মহড়া চালানো হচ্ছে।
১ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

১৯৯৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি ও সমাজ বাস্তবতা ছিল একেবারেই ভিন্ন। সেই বছর প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন অভিশংসন প্রক্রিয়ার মুখে পড়েছিলেন, অস্কারে রাজত্ব করেছিল টাইটানিক, আর অধিকাংশ আমেরিকানের ঘরে ছিল ল্যান্ডলাইন ফোন। ঠিক সেই সময়েই গ্যালাপ ও ইউএসএ টুডে এক ব্যতিক্রমী জরিপ চালায়। ল্যান্ডলাইন ফোনে ১ হাজার ৫৫ জন আমেরিকানের সঙ্গে কথা বলে জানতে চাওয়া হয়—দূর ভবিষ্যৎ ‘২০২৫ সাল’ কেমন হবে বলে তাঁরা মনে করেন।
সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) সিএনএন জানিয়েছে, ২০২৫ সাল নিয়ে সে সময় মার্কিনরা যে ভবিষ্যদ্বাণীগুলো করেছিল, সেগুলো সংরক্ষিত আছে কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের রোপার সেন্টারের জরিপ আর্কাইভে। ২০২৫ সালের শেষ প্রান্তে এসে এখন দেখা যাচ্ছে—সেই সব অনুমানের কোনোটা মিলেছে, আর কোনোটা মেলেনি।
এ ক্ষেত্রে দেখা গেছে, সেই সময়ের অনেক পূর্বাভাসই ছিল বিস্ময়করভাবে সঠিক। অধিকাংশ আমেরিকান তখনই ধারণা করেছিলেন, আগামী ২৭ বছরে যুক্তরাষ্ট্রে একজন কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন, সমকামী বিবাহ বৈধ ও স্বাভাবিক হয়ে উঠবে এবং একটি ‘মারাত্মক নতুন রোগ’ বিশ্বকে নাড়িয়ে দেবে। বাস্তবে বারাক ওবামার প্রেসিডেন্ট হওয়া, সমকামী বিবাহের আইনি স্বীকৃতি এবং করোনা মহামারি সেই অনুমানগুলোকে সত্য প্রমাণ করেছে।
একইভাবে অনেকেই সেই সময় সঠিকভাবে ধারণা করেছিলেন, সাধারণ মানুষের জন্য মহাকাশ ভ্রমণ খুব সাধারণ বিষয় হয়ে উঠবে না এবং ভিনগ্রহের প্রাণীর সঙ্গে মানুষের সরাসরি যোগাযোগ ঘটবে না।
তবে কিছু ভবিষ্যদ্বাণী বাস্তবতার সঙ্গে মেলেনি। জরিপে অংশ নেওয়া প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ মনে করেছিলেন, ২০২৫ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র একজন নারী প্রেসিডেন্ট পাবে—যা এখনো ঘটেনি। অর্ধেকের বেশি মানুষ আশা করেছিলেন ক্যানসারের নিরাময় আবিষ্কৃত হবে এবং ৬১ শতাংশ মনে করেছিলেন মানুষ নিয়মিতভাবে ১০০ বছর বয়স পর্যন্ত বাঁচবে। বাস্তবে চিকিৎসাবিজ্ঞানে অগ্রগতি হলেও এসব প্রত্যাশা পুরোপুরি পূরণ হয়নি।
জরিপে দেশের সামগ্রিক দিকনির্দেশনা নিয়েও প্রশ্ন ছিল। সেখানে ফুটে উঠেছিল প্রবল হতাশা। ৭০ শতাংশ মনে করেছিলেন ধনীদের জীবনমান উন্নত হবে, কিন্তু মধ্যবিত্তদের ভবিষ্যৎ নিয়ে বিভক্ত মতামত ছিল। দরিদ্রদের জীবন আরও কঠিন হবে—এমনটাই ভাবতেন বেশির ভাগ। প্রায় ৮০ শতাংশ ধারণা করেছিলেন ব্যক্তিগত গোপনীয়তা কমবে, আর ৫৭ শতাংশ মনে করেছিলেন ব্যক্তিগত স্বাধীনতাও হ্রাস পাবে। অপরাধ বৃদ্ধি, পরিবেশের অবনতি এবং নৈতিক মূল্যবোধের পতনের আশঙ্কাও ছিল প্রবল। ৭১ শতাংশ মত দিয়েছিলেন, সন্তানকে ভালো মানুষ হিসেবে বড় করা আরও কঠিন হবে।
তবে কিছু আশাবাদী দিকও ছিল। অধিকাংশ আমেরিকান বিশ্বাস করতেন, জাতিগত সম্পর্কের উন্নতি হবে এবং চিকিৎসাসেবা আরও সহজলভ্য হবে—যদিও তা হবে ব্যয়বহুল।
গ্যালাপ আজও জরিপ চালিয়ে যাচ্ছে, যদিও এখন ল্যান্ডলাইনের ওপর নির্ভরতা কম। এই দীর্ঘ সময়ের ব্যবধানে জনমতও নাটকীয়ভাবে বদলে গেছে। ১৯৯৮ সালে যেখানে প্রায় ৬০ শতাংশ আমেরিকান দেশের গতিপথ নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন, বর্তমানে সেই হার নেমে এসেছে মাত্র ২৪ শতাংশে।

১৯৯৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি ও সমাজ বাস্তবতা ছিল একেবারেই ভিন্ন। সেই বছর প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন অভিশংসন প্রক্রিয়ার মুখে পড়েছিলেন, অস্কারে রাজত্ব করেছিল টাইটানিক, আর অধিকাংশ আমেরিকানের ঘরে ছিল ল্যান্ডলাইন ফোন। ঠিক সেই সময়েই গ্যালাপ ও ইউএসএ টুডে এক ব্যতিক্রমী জরিপ চালায়। ল্যান্ডলাইন ফোনে ১ হাজার ৫৫ জন আমেরিকানের সঙ্গে কথা বলে জানতে চাওয়া হয়—দূর ভবিষ্যৎ ‘২০২৫ সাল’ কেমন হবে বলে তাঁরা মনে করেন।
সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) সিএনএন জানিয়েছে, ২০২৫ সাল নিয়ে সে সময় মার্কিনরা যে ভবিষ্যদ্বাণীগুলো করেছিল, সেগুলো সংরক্ষিত আছে কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের রোপার সেন্টারের জরিপ আর্কাইভে। ২০২৫ সালের শেষ প্রান্তে এসে এখন দেখা যাচ্ছে—সেই সব অনুমানের কোনোটা মিলেছে, আর কোনোটা মেলেনি।
এ ক্ষেত্রে দেখা গেছে, সেই সময়ের অনেক পূর্বাভাসই ছিল বিস্ময়করভাবে সঠিক। অধিকাংশ আমেরিকান তখনই ধারণা করেছিলেন, আগামী ২৭ বছরে যুক্তরাষ্ট্রে একজন কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন, সমকামী বিবাহ বৈধ ও স্বাভাবিক হয়ে উঠবে এবং একটি ‘মারাত্মক নতুন রোগ’ বিশ্বকে নাড়িয়ে দেবে। বাস্তবে বারাক ওবামার প্রেসিডেন্ট হওয়া, সমকামী বিবাহের আইনি স্বীকৃতি এবং করোনা মহামারি সেই অনুমানগুলোকে সত্য প্রমাণ করেছে।
একইভাবে অনেকেই সেই সময় সঠিকভাবে ধারণা করেছিলেন, সাধারণ মানুষের জন্য মহাকাশ ভ্রমণ খুব সাধারণ বিষয় হয়ে উঠবে না এবং ভিনগ্রহের প্রাণীর সঙ্গে মানুষের সরাসরি যোগাযোগ ঘটবে না।
তবে কিছু ভবিষ্যদ্বাণী বাস্তবতার সঙ্গে মেলেনি। জরিপে অংশ নেওয়া প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ মনে করেছিলেন, ২০২৫ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র একজন নারী প্রেসিডেন্ট পাবে—যা এখনো ঘটেনি। অর্ধেকের বেশি মানুষ আশা করেছিলেন ক্যানসারের নিরাময় আবিষ্কৃত হবে এবং ৬১ শতাংশ মনে করেছিলেন মানুষ নিয়মিতভাবে ১০০ বছর বয়স পর্যন্ত বাঁচবে। বাস্তবে চিকিৎসাবিজ্ঞানে অগ্রগতি হলেও এসব প্রত্যাশা পুরোপুরি পূরণ হয়নি।
জরিপে দেশের সামগ্রিক দিকনির্দেশনা নিয়েও প্রশ্ন ছিল। সেখানে ফুটে উঠেছিল প্রবল হতাশা। ৭০ শতাংশ মনে করেছিলেন ধনীদের জীবনমান উন্নত হবে, কিন্তু মধ্যবিত্তদের ভবিষ্যৎ নিয়ে বিভক্ত মতামত ছিল। দরিদ্রদের জীবন আরও কঠিন হবে—এমনটাই ভাবতেন বেশির ভাগ। প্রায় ৮০ শতাংশ ধারণা করেছিলেন ব্যক্তিগত গোপনীয়তা কমবে, আর ৫৭ শতাংশ মনে করেছিলেন ব্যক্তিগত স্বাধীনতাও হ্রাস পাবে। অপরাধ বৃদ্ধি, পরিবেশের অবনতি এবং নৈতিক মূল্যবোধের পতনের আশঙ্কাও ছিল প্রবল। ৭১ শতাংশ মত দিয়েছিলেন, সন্তানকে ভালো মানুষ হিসেবে বড় করা আরও কঠিন হবে।
তবে কিছু আশাবাদী দিকও ছিল। অধিকাংশ আমেরিকান বিশ্বাস করতেন, জাতিগত সম্পর্কের উন্নতি হবে এবং চিকিৎসাসেবা আরও সহজলভ্য হবে—যদিও তা হবে ব্যয়বহুল।
গ্যালাপ আজও জরিপ চালিয়ে যাচ্ছে, যদিও এখন ল্যান্ডলাইনের ওপর নির্ভরতা কম। এই দীর্ঘ সময়ের ব্যবধানে জনমতও নাটকীয়ভাবে বদলে গেছে। ১৯৯৮ সালে যেখানে প্রায় ৬০ শতাংশ আমেরিকান দেশের গতিপথ নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন, বর্তমানে সেই হার নেমে এসেছে মাত্র ২৪ শতাংশে।

যুক্তরাজ্যে বসবাসরত অনেক বাংলাদেশি নারী টিকটকে হয়রানি ও হুমকির শিকার হচ্ছেন। ফ্রান্সেও ঘটছে এমন ঘটনা। এতে তাঁদের কেউ হতাশায় ভুগছেন আবার কেউ আত্মহত্যাপ্রবণ হয়ে উঠছেন। অনেক নারী যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন। অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে জানিয়েছেন।
০২ এপ্রিল ২০২৪
ইয়েমেনের দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতে এবার নতুন মাত্রার উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এক সময় একই জোটে থাকা সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) এখন কার্যত বিপরীত অবস্থানে। সাম্প্রতিক বিমান হামলা ও কূটনৈতিক বক্তব্যে এই বিভাজন প্রকাশ্যে এসেছে, যা ওই অঞ্চলের যুদ্ধকে আরও জটিল করে তুলছে।
৩ ঘণ্টা আগে
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বাসভবন লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন—এমন অভিযোগ করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ার এই দাবিকে পুরোপুরি ‘মিথ্যা ও সাজানো’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন।
১ দিন আগে
তাইওয়ানকে ঘিরে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সামরিক মহড়া শুরু করেছে চীন। সোমবার শুরু হওয়া এই মহড়ায় যুদ্ধজাহাজ, যুদ্ধবিমান, ড্রোন ও সরাসরি গোলাবর্ষণও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ‘জাস্টিস মিশন ২০২৫’ নামের এই অভিযানে তাইওয়ানকে চারদিক থেকে ঘিরে সাতটি সামুদ্রিক অঞ্চলে সমন্বিত স্থল, নৌ ও আকাশ মহড়া চালানো হচ্ছে।
১ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বাসভবন লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন—এমন অভিযোগ করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ার এই দাবিকে পুরোপুরি ‘মিথ্যা ও সাজানো’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন।
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, এই হামলার কারণে চলমান শান্তি আলোচনায় রাশিয়ার অবস্থানের ‘পরিবর্তন বা পুনর্বিবেচনা’ করা হতে পারে। তবে মস্কো এখনই আলোচনা থেকে সরে দাঁড়াচ্ছে না।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন সের্গেই লাভরভের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে, গতকাল রোববার রাত থেকে আজ সোমবার ভোর পর্যন্ত পুতিনের বাসভবন লক্ষ্য করে ৯১টি দূরপাল্লার ড্রোন হামলা চালায় ইউক্রেন। রুশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা সবকটি ড্রোন ভূপাতিত করেছে। তবে এতে কোনো হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটেনি।
লাভরভ হুমকি দিয়ে বলেন, ইউক্রেনের এমন হঠকারী কর্মকাণ্ডের জবাব দেওয়া হবে। রুশ সামরিক বাহিনী ইতিমধ্যে পাল্টা হামলার জন্য লক্ষ্যবস্তু নির্ধারণ করে ফেলেছে। তবে হামলার সময় প্রেসিডেন্ট পুতিন নোভগোরোদের ওই বাসভবনে ছিলেন কি না, তা স্পষ্ট করা হয়নি।
ফ্লোরিডায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক শেষ করে ইউরোপে ফেরার পথে জেলেনস্কি রাশিয়ার এই দাবিকে নাকচ করে দেন। তিনি বলেন, ‘রাশিয়া আবারও ভয়ংকর সব মিথ্যা বিবৃতি দিচ্ছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে আমাদের কূটনৈতিক অগ্রগতির সাফল্য নষ্ট করতেই এমন নাটক সাজানো হচ্ছে। তারা মূলত কিয়েভের সরকারি ভবনগুলোতে বড় ধরনের হামলার ক্ষেত্র তৈরি করার জন্য এই অজুহাত দিচ্ছে।’
জেলেনস্কি জানান, ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনার প্রায় ৯০ শতাংশ বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, যা রাশিয়াকে বিচলিত করে তুলেছে।
এদিকে ক্রেমলিন বলছে, আজ প্রেসিডেন্ট পুতিন টেলিফোনে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে এই ড্রোন হামলার বিষয়টি জানিয়েছেন। পুতিন ট্রাম্পকে বলেছেন, এই হামলার পর রাশিয়া তাদের শান্তি আলোচনার শর্তগুলো পুনরায় খতিয়ে দেখবে।
রুশ গণমাধ্যমগুলো ক্রেমলিনের সহকারী ইউরি উশাকভের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, এই খবর শুনে ট্রাম্প ‘বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ’ হয়েছেন। তবে হোয়াইট হাউস থেকে এই ফোনালাপকে কেবল ‘ইতিবাচক’ বলে বর্ণনা করা হয়েছে, বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বাসভবন লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন—এমন অভিযোগ করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ার এই দাবিকে পুরোপুরি ‘মিথ্যা ও সাজানো’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন।
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, এই হামলার কারণে চলমান শান্তি আলোচনায় রাশিয়ার অবস্থানের ‘পরিবর্তন বা পুনর্বিবেচনা’ করা হতে পারে। তবে মস্কো এখনই আলোচনা থেকে সরে দাঁড়াচ্ছে না।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন সের্গেই লাভরভের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে, গতকাল রোববার রাত থেকে আজ সোমবার ভোর পর্যন্ত পুতিনের বাসভবন লক্ষ্য করে ৯১টি দূরপাল্লার ড্রোন হামলা চালায় ইউক্রেন। রুশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা সবকটি ড্রোন ভূপাতিত করেছে। তবে এতে কোনো হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটেনি।
লাভরভ হুমকি দিয়ে বলেন, ইউক্রেনের এমন হঠকারী কর্মকাণ্ডের জবাব দেওয়া হবে। রুশ সামরিক বাহিনী ইতিমধ্যে পাল্টা হামলার জন্য লক্ষ্যবস্তু নির্ধারণ করে ফেলেছে। তবে হামলার সময় প্রেসিডেন্ট পুতিন নোভগোরোদের ওই বাসভবনে ছিলেন কি না, তা স্পষ্ট করা হয়নি।
ফ্লোরিডায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক শেষ করে ইউরোপে ফেরার পথে জেলেনস্কি রাশিয়ার এই দাবিকে নাকচ করে দেন। তিনি বলেন, ‘রাশিয়া আবারও ভয়ংকর সব মিথ্যা বিবৃতি দিচ্ছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে আমাদের কূটনৈতিক অগ্রগতির সাফল্য নষ্ট করতেই এমন নাটক সাজানো হচ্ছে। তারা মূলত কিয়েভের সরকারি ভবনগুলোতে বড় ধরনের হামলার ক্ষেত্র তৈরি করার জন্য এই অজুহাত দিচ্ছে।’
জেলেনস্কি জানান, ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনার প্রায় ৯০ শতাংশ বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, যা রাশিয়াকে বিচলিত করে তুলেছে।
এদিকে ক্রেমলিন বলছে, আজ প্রেসিডেন্ট পুতিন টেলিফোনে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে এই ড্রোন হামলার বিষয়টি জানিয়েছেন। পুতিন ট্রাম্পকে বলেছেন, এই হামলার পর রাশিয়া তাদের শান্তি আলোচনার শর্তগুলো পুনরায় খতিয়ে দেখবে।
রুশ গণমাধ্যমগুলো ক্রেমলিনের সহকারী ইউরি উশাকভের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, এই খবর শুনে ট্রাম্প ‘বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ’ হয়েছেন। তবে হোয়াইট হাউস থেকে এই ফোনালাপকে কেবল ‘ইতিবাচক’ বলে বর্ণনা করা হয়েছে, বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।

যুক্তরাজ্যে বসবাসরত অনেক বাংলাদেশি নারী টিকটকে হয়রানি ও হুমকির শিকার হচ্ছেন। ফ্রান্সেও ঘটছে এমন ঘটনা। এতে তাঁদের কেউ হতাশায় ভুগছেন আবার কেউ আত্মহত্যাপ্রবণ হয়ে উঠছেন। অনেক নারী যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন। অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে জানিয়েছেন।
০২ এপ্রিল ২০২৪
ইয়েমেনের দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতে এবার নতুন মাত্রার উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এক সময় একই জোটে থাকা সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) এখন কার্যত বিপরীত অবস্থানে। সাম্প্রতিক বিমান হামলা ও কূটনৈতিক বক্তব্যে এই বিভাজন প্রকাশ্যে এসেছে, যা ওই অঞ্চলের যুদ্ধকে আরও জটিল করে তুলছে।
৩ ঘণ্টা আগে
১৯৯৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি ও সমাজ বাস্তবতা ছিল একেবারেই ভিন্ন। সেই বছর প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন অভিশংসন প্রক্রিয়ার মুখে পড়েছিলেন, অস্কারে রাজত্ব করেছিল টাইটানিক, আর অধিকাংশ আমেরিকানের ঘরে ছিল ল্যান্ডলাইন ফোন। ঠিক সেই সময়েই গ্যালাপ ও ইউএসএ টুডে এক ব্যতিক্রমী জরিপ চালায়।
১ দিন আগে
তাইওয়ানকে ঘিরে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সামরিক মহড়া শুরু করেছে চীন। সোমবার শুরু হওয়া এই মহড়ায় যুদ্ধজাহাজ, যুদ্ধবিমান, ড্রোন ও সরাসরি গোলাবর্ষণও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ‘জাস্টিস মিশন ২০২৫’ নামের এই অভিযানে তাইওয়ানকে চারদিক থেকে ঘিরে সাতটি সামুদ্রিক অঞ্চলে সমন্বিত স্থল, নৌ ও আকাশ মহড়া চালানো হচ্ছে।
১ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

তাইওয়ানকে ঘিরে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সামরিক মহড়া শুরু করেছে চীন। সোমবার শুরু হওয়া এই মহড়ায় যুদ্ধজাহাজ, যুদ্ধবিমান, ড্রোন ও সরাসরি গোলাবর্ষণও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ‘জাস্টিস মিশন ২০২৫’ নামের এই অভিযানে তাইওয়ানকে চারদিক থেকে ঘিরে সাতটি সামুদ্রিক অঞ্চলে সমন্বিত স্থল, নৌ ও আকাশ মহড়া চালানো হচ্ছে। বিশ্লেষকদের মতে, এটি এখন পর্যন্ত তাইওয়ানকে লক্ষ্য করে চীনের সর্ববৃহৎ ও সবচেয়ে আক্রমণাত্মক সামরিক প্রদর্শন।
চীনের পূর্বাঞ্চলীয় থিয়েটার কমান্ড জানিয়েছে—মহড়ায় স্থল ও সমুদ্রের লক্ষ্যবস্তুর ওপর সিমুলেটেড হামলা, পাশাপাশি তাইওয়ানের প্রধান বন্দরগুলো অবরোধ করার অনুশীলন করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে তাইওয়ানকে বিচ্ছিন্ন করতে বা চাপের মুখে ফেলতে এই ধরনের অবরোধ ব্যবহৃত হতে পারে বলে মনে করছেন সামরিক বিশ্লেষকেরা। সরাসরি গোলাবর্ষণের মহড়া মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) পর্যন্ত চলবে এবং আগের যে কোনো সময়ের তুলনায় এবার তাইওয়ানের আরও কাছাকাছি ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল ঘোষণা করা হয়েছে।
এই মহড়ার ফলে বেসামরিক বিমান ও নৌ চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। বেশ কয়েকটি এয়ারলাইন তাদের ফ্লাইটের রুট পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছে এবং তাইওয়ানের বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ বিকল্প আকাশপথ ব্যবহারের প্রস্তুতি নিয়েছে। চীনা সামরিক কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, এই মহড়া ‘তাইওয়ানের স্বাধীনতাপন্থী শক্তি’ ও ‘বিদেশি হস্তক্ষেপের’ বিরুদ্ধে কঠোর সতর্কবার্তা।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি তাইওয়ানের কাছে ১১.১ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রির অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যা ইতিহাসে সবচেয়ে বড় প্যাকেজ। এতে রয়েছে ৮২টি হিমার্স রকেট লঞ্চার, ৪২০টি দূরপাল্লার এটিএসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্র, স্বচালিত হাউইটজার, উন্নত ড্রোন ব্যবস্থা ও অ্যান্টি-আর্মার অস্ত্র। বেইজিং এই অস্ত্রচুক্তিকে তীব্রভাবে নিন্দা জানিয়ে বলেছে, এতে তাইওয়ান একটি ‘বারুদের স্তূপে’ পরিণত হচ্ছে।
তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মহড়া চলাকালে তাদের দ্বীপভূমির চারপাশে ৮৯টি চীনা সামরিক বিমান, ১৪টি নৌজাহাজ ও ১৪টি কোস্ট গার্ড জাহাজ শনাক্ত করা হয়েছে। কিছু চীনা জাহাজ তাইওয়ানের উপকূলের খুব কাছাকাছি অবস্থানে এসে চোখ রাঙাচ্ছে। এই প্রেক্ষিতে সেনাবাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রেখেছে তাইওয়ান।
চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম জানিয়েছে, মহড়ার মূল লক্ষ্য তাইওয়ানের গুরুত্বপূর্ণ বন্দর—উত্তরের কিলুং ও দক্ষিণের কাওশিয়ুং বন্ধ করে দেওয়ার সক্ষমতা পরীক্ষা। চীন তাইওয়ানকে নিজের ভূখণ্ড দাবি করলেও তাইওয়ান বলছে, দ্বীপটির ভবিষ্যৎ নির্ধারণের অধিকার শুধু সেখানকার জনগণেরই আছে।

তাইওয়ানকে ঘিরে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সামরিক মহড়া শুরু করেছে চীন। সোমবার শুরু হওয়া এই মহড়ায় যুদ্ধজাহাজ, যুদ্ধবিমান, ড্রোন ও সরাসরি গোলাবর্ষণও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ‘জাস্টিস মিশন ২০২৫’ নামের এই অভিযানে তাইওয়ানকে চারদিক থেকে ঘিরে সাতটি সামুদ্রিক অঞ্চলে সমন্বিত স্থল, নৌ ও আকাশ মহড়া চালানো হচ্ছে। বিশ্লেষকদের মতে, এটি এখন পর্যন্ত তাইওয়ানকে লক্ষ্য করে চীনের সর্ববৃহৎ ও সবচেয়ে আক্রমণাত্মক সামরিক প্রদর্শন।
চীনের পূর্বাঞ্চলীয় থিয়েটার কমান্ড জানিয়েছে—মহড়ায় স্থল ও সমুদ্রের লক্ষ্যবস্তুর ওপর সিমুলেটেড হামলা, পাশাপাশি তাইওয়ানের প্রধান বন্দরগুলো অবরোধ করার অনুশীলন করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে তাইওয়ানকে বিচ্ছিন্ন করতে বা চাপের মুখে ফেলতে এই ধরনের অবরোধ ব্যবহৃত হতে পারে বলে মনে করছেন সামরিক বিশ্লেষকেরা। সরাসরি গোলাবর্ষণের মহড়া মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) পর্যন্ত চলবে এবং আগের যে কোনো সময়ের তুলনায় এবার তাইওয়ানের আরও কাছাকাছি ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল ঘোষণা করা হয়েছে।
এই মহড়ার ফলে বেসামরিক বিমান ও নৌ চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। বেশ কয়েকটি এয়ারলাইন তাদের ফ্লাইটের রুট পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছে এবং তাইওয়ানের বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ বিকল্প আকাশপথ ব্যবহারের প্রস্তুতি নিয়েছে। চীনা সামরিক কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, এই মহড়া ‘তাইওয়ানের স্বাধীনতাপন্থী শক্তি’ ও ‘বিদেশি হস্তক্ষেপের’ বিরুদ্ধে কঠোর সতর্কবার্তা।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি তাইওয়ানের কাছে ১১.১ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রির অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যা ইতিহাসে সবচেয়ে বড় প্যাকেজ। এতে রয়েছে ৮২টি হিমার্স রকেট লঞ্চার, ৪২০টি দূরপাল্লার এটিএসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্র, স্বচালিত হাউইটজার, উন্নত ড্রোন ব্যবস্থা ও অ্যান্টি-আর্মার অস্ত্র। বেইজিং এই অস্ত্রচুক্তিকে তীব্রভাবে নিন্দা জানিয়ে বলেছে, এতে তাইওয়ান একটি ‘বারুদের স্তূপে’ পরিণত হচ্ছে।
তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মহড়া চলাকালে তাদের দ্বীপভূমির চারপাশে ৮৯টি চীনা সামরিক বিমান, ১৪টি নৌজাহাজ ও ১৪টি কোস্ট গার্ড জাহাজ শনাক্ত করা হয়েছে। কিছু চীনা জাহাজ তাইওয়ানের উপকূলের খুব কাছাকাছি অবস্থানে এসে চোখ রাঙাচ্ছে। এই প্রেক্ষিতে সেনাবাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রেখেছে তাইওয়ান।
চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম জানিয়েছে, মহড়ার মূল লক্ষ্য তাইওয়ানের গুরুত্বপূর্ণ বন্দর—উত্তরের কিলুং ও দক্ষিণের কাওশিয়ুং বন্ধ করে দেওয়ার সক্ষমতা পরীক্ষা। চীন তাইওয়ানকে নিজের ভূখণ্ড দাবি করলেও তাইওয়ান বলছে, দ্বীপটির ভবিষ্যৎ নির্ধারণের অধিকার শুধু সেখানকার জনগণেরই আছে।

যুক্তরাজ্যে বসবাসরত অনেক বাংলাদেশি নারী টিকটকে হয়রানি ও হুমকির শিকার হচ্ছেন। ফ্রান্সেও ঘটছে এমন ঘটনা। এতে তাঁদের কেউ হতাশায় ভুগছেন আবার কেউ আত্মহত্যাপ্রবণ হয়ে উঠছেন। অনেক নারী যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন। অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে জানিয়েছেন।
০২ এপ্রিল ২০২৪
ইয়েমেনের দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতে এবার নতুন মাত্রার উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এক সময় একই জোটে থাকা সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) এখন কার্যত বিপরীত অবস্থানে। সাম্প্রতিক বিমান হামলা ও কূটনৈতিক বক্তব্যে এই বিভাজন প্রকাশ্যে এসেছে, যা ওই অঞ্চলের যুদ্ধকে আরও জটিল করে তুলছে।
৩ ঘণ্টা আগে
১৯৯৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি ও সমাজ বাস্তবতা ছিল একেবারেই ভিন্ন। সেই বছর প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন অভিশংসন প্রক্রিয়ার মুখে পড়েছিলেন, অস্কারে রাজত্ব করেছিল টাইটানিক, আর অধিকাংশ আমেরিকানের ঘরে ছিল ল্যান্ডলাইন ফোন। ঠিক সেই সময়েই গ্যালাপ ও ইউএসএ টুডে এক ব্যতিক্রমী জরিপ চালায়।
১ দিন আগে
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বাসভবন লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন—এমন অভিযোগ করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ার এই দাবিকে পুরোপুরি ‘মিথ্যা ও সাজানো’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন।
১ দিন আগে