Ajker Patrika

কী ঘটেছিল তালেবানদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো সেই নারীদের ভাগ্যে

আপডেট : ১৫ জুন ২০২৪, ১৮: ১৩
কী ঘটেছিল তালেবানদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো সেই নারীদের ভাগ্যে

তালেবানরা আফগানিস্তানের ক্ষমতায় এসে নারীদের ঘরের বাইরে অর্থাৎ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা কর্মক্ষেত্রে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল। এ ধরনের নিয়মের বিরুদ্ধে রাজপথে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন কয়েকজন নারী। কাবুলসহ আফগানিস্তানের বড় শহরগুলোতে যে নারীরা খাদ্য, কর্মসংস্থান ও স্বাধীনতার দাবিতে আন্দোলন করেছিলেন তাঁদের ওপর নেমে আসে তালেবানদের নির্মম অত্যাচার। প্রতিবাদকারী তিন আফগান নারীর কথা বলা হয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে।

কাবুলের রাজপথে প্রতিবাদ
গত ২০২১ সালের ১৫ আগস্ট তালেবান জঙ্গিরা কাবুল দখল করলে জাকিয়ার (ছদ্মনাম) জীবনে নেমে আসে বিপর্যয়। পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী জাকিয়া চাকরি হারান তালেবান ক্ষমতায় আসার পর। এক বছরেরও বেশি সময় পর ২০২২ সালের ডিসেম্বরে বিক্ষোভে অংশ নেন তিনি। কাজ এবং শিক্ষার অধিকার হারানোর পর ক্ষোভ প্রকাশ করার প্রথম সুযোগ ছিল সেটি।

বিক্ষোভকারীরা কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে মিছিল করছিলেন। কিন্তু গন্তব্যে পৌঁছানোর আগেই তাঁদের থামিয়ে দেওয়া হয়। উচ্চ স্বরে স্লোগান দেওয়া জাকিয়াকে আটক করে তালেবান সশস্ত্র পুলিশ।

সেদিনের কথা মনে করে জাকিয়া বলেন, ‘তাদের (তালেবান পুলিশ) মধ্যে একজন তার বন্দুকটি আমার মুখের সামনে তুলে বলেছিল, আমি চুপ না করলে সেখানেই আমাকে মেরে ফেলা হবে।’

জাকিয়া সহকর্মী বিক্ষোভকারীদের একটি গাড়িতে উঠতে দেখেছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমি প্রতিরোধ করেছি। তারা আমার বাহু মুচড়ে দিচ্ছিল। আমাকে তালেবানরা তাদের গাড়িতে ওঠাতে টানছিল। অন্যদিকে, আমার সঙ্গের বিক্ষোভকারীরা আমাকে ধরে রাখার চেষ্টা করছিল।’

শেষ পর্যন্ত জাকিয়া পালাতে সক্ষম হয়েছিলেন। কিন্তু সেদিন তিনি যা দেখেছিল, তা তাঁকে ভবিষ্যতের জন্য আতঙ্কিত করে রেখেছিল। তিনি বলেন, ‘এই সহিংসতা বদ্ধ দরজার আড়ালে হয়নি, হয়েছিল রাজধানী কাবুলের রাস্তায় সবার সামনে।’

গ্রেপ্তার ও অত্যাচার
অনেক আফগান বিক্ষোভকারীর মধ্যে ছিলেন মরিয়ম (ছদ্মনাম) এবং ২৩ বছর বয়সী শিক্ষার্থী পারওয়ানা ইব্রাহিমখাইল নিজরাবি—যাঁদের তালেবানরা আটক করেছিল। বিধবা এবং সন্তানদের জন্য একমাত্র উপার্জনকারী হিসেবে মরিয়মের ভয় ছিল, চাকরি হারালে তাঁর সন্তানদের নিয়ে তিনি কী করবেন।

তিনি ২০২২ সালের ডিসেম্বরে বিক্ষোভে যোগ দেন। সঙ্গের বিক্ষোভকারীদের গ্রেপ্তার হতে দেখে তিনি পালানোর চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু সময়মতো পালিয়ে যেতে পারেননি। মরিয়ম বলেন, ‘আমাকে জোর করে ট্যাক্সি থেকে বের করে এনে তারা আমার ব্যাগ তল্লাশি করে এবং আমার ফোন খুঁজে পেয়েছিল।’

তালেবান কর্মকর্তাদের ফোনের পাসওয়ার্ড দিতে অস্বীকৃতি জানানোয় মারধর করা হয় মরিয়মকে। তাঁকে এতই জোরে মারা হয় যে মরিয়মের মনে হয়েছিল তাঁর কানের পর্দা বুঝি ফেটে গেছে। তালেবানরা তখন তাঁর ফোনে ছবি ও ভিডিও দেখে আরও রেগে যায়।

মরিয়ম বলেন, ‘তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আমার চুল টেনে ধরেছিল। তারা আমার হাত ও পা ধরে আমাকে তাদের রেঞ্জারের পেছনে ফেলে দেয়। আমাকে অপমানজনক ভাষায় ডাকছিল। তারা আমাকে হাতকড়া পরিয়ে দেয় এবং আমার মাথা ঢেকে দেয় একটি কালো ব্যাগ দিয়ে। আমি শ্বাস নিতে পারছিলাম না।’

এক মাস পর পারওয়ানাও তালেবানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সিদ্ধান্ত নেন। শিক্ষার্থীদের একটি দল নিয়ে বেশ কয়েকটি মিছিলের আয়োজন করেন তিনি। এরপর তাঁর ওপরেও নেমে আসে অত্যাচার। পারওয়ানা বলেন, ‘আমাকে গ্রেপ্তার করার পর থেকেই তারা আমাকে নির্যাতন শুরু করে।’

পারওয়ানাকে গাড়িতে তুলে দুই পুরুষ সশস্ত্র প্রহরীর মধ্যে বসানো হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘যখন আমি সেখানে বসতে অস্বীকৃতি জানাই, তারা আমাকে সামনের দিকে নিয়ে যায়, মাথা একটি কম্বলে ঢেকে বন্দুকের ভয় দেখিয়ে নড়াচড়া করতে নিষেধ করে।’

ভারী অস্ত্রধারীদের মধ্যে পারওয়ানা নিজেকে দুর্বল এবং মৃত ভাবতে শুরু করেছিলেন। তিনি বলেন, ‘তারা আমাকে অনেকবার থাপ্পড় মারে। আমার মুখ অসাড় হয়ে গিয়েছিল। খুব ভয় পেয়েছিলাম, আমার সারা শরীর কাঁপছিল।’

জেলজীবন 
তালেবানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের সম্ভাব্য পরিণতি সম্পর্কে পুরোপুরি সচেতন ছিলেন মরিয়ম, পারওয়ানা ও জাকিয়া। পারওয়ানা বলেছেন, তিনি কখনোই আশা করেননি তালেবানরা তাঁর সঙ্গে মানুষের মতো আচরণ করবে। তারপরও জেলে তাঁর প্রতি তালেবানের অপমানজনক আচরণ দেখে হতবাক হয়ে যান।

জেলে প্রথম খাবার তাঁকে বিস্মিত ও ভীত করেছিল। পারওয়ানা বলেন, ‘মুখের ওপর একটি ধারালো জিনিস অনুভব করি। দেখি একটি পেরেক। ছুড়ে ফেলেছিলাম।’

এরপর খাবারের মধ্যে তিনি চুল ও পাথর খুঁজে পান। পাথর ছুড়ে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়েছিল পারওয়ানাকে। এরপর দুঃস্বপ্ন দেখতে থাকেন তিনি। ২৩ বছর বয়সী পারওয়ানার বিরুদ্ধে অনৈতিকতা, পতিতাবৃত্তি এবং পশ্চিমা সংস্কৃতি ছড়ানোর অভিযোগ এনে প্রায় এক মাস জেলে রাখা হয়।

মরিয়মকে একটি নিরাপত্তা ইউনিট জিজ্ঞাসাবাদের সময় কালো ব্যাগ দিয়ে মাথা ঢেকে রেখেছিল। মরিয়ম বলেন, ‘আমি অনেক লোকের কথা শুনতে পাচ্ছিলাম। একজন আমাকে লাথি মেরে জিজ্ঞেস করল, কে আমাকে বিক্ষোভ সংগঠিত করার জন্য অর্থ দিয়েছে। অন্যজন আমাকে ঘুষি মেরে জিজ্ঞেস করল, তুমি কার হয়ে কাজ কর।’

মরিয়ম তখন বলেছিলেন, তিনি একজন বিধবা এবং তাঁর সন্তানদের খাওয়ানোর জন্য কাজের প্রয়োজন। কিন্তু এসব বলে মরিয়মের কপালে জুটেছে আরও মারধর।

স্বীকারোক্তি ও মুক্তি
মানবাধিকার সংস্থা এবং স্থানীয় প্রবীণদের হস্তক্ষেপের পর পারওয়ানা ও মরিয়ম দুজনকেই আলাদাভাবে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। তাঁরা এখন আর আফগানিস্তানে বসবাস করছেন না।

অপরাধ স্বীকার করে স্বীকারোক্তিতে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করা হয়েছিল দুজনকেই। তালেবানের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিবাদে অংশ না নেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিতে হয়েছিল তাঁদের। তাঁদের পুরুষ আত্মীয়রাও সরকারি কাগজপত্রে সই করে অঙ্গীকার করেছিলেন যে নারীরা আর কোনো প্রতিবাদে অংশ নেবে না।

বিবিসি এই অভিযোগগুলো তালেবান সরকারের সিনিয়র মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদের কাছে রেখেছিলেন। তিনি নিশ্চিত করেছেন, নারী বিক্ষোভকারীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কিন্তু তাঁদের সঙ্গে খারাপ আচরণের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন তিনি।

স্বাভাবিক জীবনের প্রত্যাশা
ক্ষমতা দখলের পর তালেবান বলেছিল, আফগান সংস্কৃতি এবং শরিয়া আইনের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ উপায়ে নারীরা কাজ এবং স্কুলে যাওয়া চালিয়ে যেতে পারবেন। তারা বারবার জোর দিয়ে বলেছে, ছয় বছরের বেশি বয়সী মেয়েদের স্কুলে পড়ার নিষেধাজ্ঞা অস্থায়ী। কিন্তু নারীদের মাধ্যমিক বিদ্যালয় পুনরায় চালু করার কোনো দৃঢ় প্রতিশ্রুতি দেয়নি তালেবান সরকার।

আফগানিস্তানে ফিরে জাকিয়া অল্পবয়সী মেয়েদের পড়ালেখা শেখানোর জন্য বাসায় টিউশন সেন্টার চালু করেও ব্যর্থ হন। জাকিয়া বলেন, ‘একদল তরুণী নিয়মিতভাবে এক জায়গায় একত্রিত হওয়ায় হুমকি বোধ করছে তালেবান। তারা যা চেয়েছিল তা করতে পেরেছে। আমি আমার নিজের ঘরে বন্দী।’

এখনো তাঁর সহকর্মীদের সঙ্গে দেখা করেন জাকিয়া। তবে তাঁরা কোনো প্রতিবাদের পরিকল্পনা করেন না। ছদ্মনাম ব্যবহার করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মাঝেমধ্যে বিবৃতি প্রকাশ করেন।

আফগানিস্তানের জন্য তাঁর স্বপ্নের কথা জানতে চাইলে কান্নায় ভেঙে পড়েন জাকিয়া। তিনি বলেন, ‘আমি কিছুই করতে পারি না। আমাদের আর কোনো অস্তিত্ব নেই। নারীদের জনজীবন থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা শুধু আমাদের মৌলিক অধিকার চেয়েছিলাম। এই চাওয়াটা কি খুব বেশি?’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটের দুই কেবিন ক্রুকে প্রত্যাহার

‘আমি তো মামলা করি না, ডাইরেক্ট ওয়ারেন্ট করাই’

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

পত্রিকা অফিসে হামলার গোয়েন্দা তথ্য ছিল, আমলে নেওয়া হয়নি: সালাহউদ্দিন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভেনেজুয়েলায় মার্কিন হস্তক্ষেপ নিয়ে সতর্ক করলেন লুলা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা। ছবি: সংগৃহীত
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা। ছবি: সংগৃহীত

ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমবর্ধমান চাপ ও সম্ভাব্য সামরিক পদক্ষেপ ‘ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়’ ডেকে আনবে বলে সতর্ক করেছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা। তিনি মত দিয়েছেন, ভেনেজুয়েলায় কোনো ধরনের সশস্ত্র হস্তক্ষেপ শুধু ওই দেশের জন্য নয়, বরং পুরো পৃথিবীর জন্যই এক বিপজ্জনক দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।

ব্রাজিলের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর ফোজ দো ইগুয়াসুতে দক্ষিণ আমেরিকার আঞ্চলিক জোট ‘মারকোসুর’-এর শীর্ষ সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে লুলা এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘ভেনেজুয়েলায় সশস্ত্র হস্তক্ষেপ একটি মানবিক বিপর্যয়ে রূপ নেবে। এটি এমন একটি নজির সৃষ্টি করবে, যা বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার জন্য মারাত্মক হুমকি।’

এ বিষয়ে এক প্রতিবেদনে রোববার (২১ ডিসেম্বর) রয়টার্স জানিয়েছে, ভেনেজুয়েলা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উত্তেজনা সম্প্রতি আরও বেড়েছে। গত মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভেনেজুয়েলায় যাতায়াতকারী সব নিষেধাজ্ঞাভুক্ত তেলবাহী জাহাজের ওপর ‘অবরোধ’ আরোপের নির্দেশ দেন। ওয়াশিংটনের এই পদক্ষেপকে নিকোলাস মাদুরো সরকারের ওপর চাপ বাড়ানোর নতুন কৌশল হিসেবে দেখা হচ্ছে। ভেনেজুয়েলার অর্থনীতির প্রধান চালিকাশক্তি তেল খাতকে লক্ষ্য করেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

লুলা স্মরণ করিয়ে দেন, ফকল্যান্ডস যুদ্ধের চার দশকেরও বেশি সময় পর দক্ষিণ আমেরিকা আবারও অন্য মহাদেশীয় কোনো শক্তির সামরিক উপস্থিতির আশঙ্কায় ভুগছে। তিনি বলেন, ‘দক্ষিণ আমেরিকা আবার এমন এক ভূতের ছায়ায় পড়ছে, যেখানে এই অঞ্চলের বাইরে থেকে আসা সামরিক শক্তি আমাদের শান্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।’

চলতি সপ্তাহের শুরুতেই লাতিন আমেরিকার দুই বৃহত্তম অর্থনীতির শীর্ষ নেতা ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দ্য সিলভা এবং মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লাউদিয়া শেইনবাউম ভেনেজুয়েলা পরিস্থিতিতে সংযম দেখানোর আহ্বান জানিয়েছিলেন। তবে গত শনিবারের বক্তব্যে লুলা আরও কঠোর দেখিয়েছেন।

‘মারকোসুর’ সম্মেলন শেষে দেওয়া এক যৌথ ঘোষণায় লাতিন আমেরিকার নেতারা ভেনেজুয়েলায় গণতান্ত্রিক নীতি ও মানবাধিকার রক্ষায় শান্তিপূর্ণ পথেই অগ্রসর হওয়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। এই ঘোষণায় আর্জেন্টিনা, প্যারাগুয়ে ও পানামার প্রেসিডেন্টদের পাশাপাশি বলিভিয়া, ইকুয়েডর ও পেরুর শীর্ষ কর্মকর্তারাও সমর্থন জানান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটের দুই কেবিন ক্রুকে প্রত্যাহার

‘আমি তো মামলা করি না, ডাইরেক্ট ওয়ারেন্ট করাই’

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

পত্রিকা অফিসে হামলার গোয়েন্দা তথ্য ছিল, আমলে নেওয়া হয়নি: সালাহউদ্দিন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ট্রেনের ভাড়া বাড়ছে ভারতেও

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
২৬ ডিসেম্বর থেকে ট্রেনের ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতের রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। ছবি: সংগৃহীত
২৬ ডিসেম্বর থেকে ট্রেনের ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতের রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। ছবি: সংগৃহীত

ভারতেও ট্রেনের ভাড়া বাড়ছে। পকেটে টান পড়তে যাচ্ছে সাধারণ যাত্রীদের। ২৬ ডিসেম্বর থেকে ট্রেনের ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। তবে স্বস্তির খবর হলো, লোকাল ট্রেনের ভাড়া অপরিবর্তিত থাকছে। মূলত দূরপাল্লার যাত্রীদের জন্যই এই বাড়তি ভাড়া কার্যকর হবে।

ভারতের রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের ঘোষণা অনুযায়ী, ভ্রমণের দূরত্ব ও কোচের ধরনভেদে নতুন ভাড়ার হার নির্ধারিত হবে। ২১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত সাধারণ শ্রেণিতে ভাড়ায় কোনো পরিবর্তন নেই। তবে ২১৫ কিলোমিটারের বেশি দূরত্বের ক্ষেত্রে প্রতি কিলোমিটারে এক পয়সা করে ভাড়া বাড়বে।

মেল বা এক্সপ্রেস ট্রেনের (নন-এসি) যাত্রীদের জন্য প্রতি কিলোমিটারে ভাড়া বাড়বে দুই পয়সা। এসি কোচ বা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কোচের ক্ষেত্রেও কিলোমিটার প্রতি দুই পয়সা ভাড়া বাড়ানো হয়েছে।

তবে যদি কোনো যাত্রী নন-এসি কোচে ৫০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেন, নতুন নিয়ম অনুযায়ী তাঁকে আগের চেয়ে ১০ রুপি বেশি ভাড়া দিতে হবে।

কেন এই ভাড়া বৃদ্ধি

রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত এক দশকে রেলপথ সম্প্রসারণের ফলে জনবল এবং অন্যান্য ব্যয় বহুগুণ বেড়েছে। রেলওয়ের বর্তমান জনবল ব্যয় দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১৫ হাজার কোটি রুপিতে এবং পেনশনের পেছনে খরচ হচ্ছে ৬০ হাজার কোটি রুপি। সব মিলিয়ে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মোট পরিচালনা ব্যয় বেড়ে হয়েছে ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি রুপি।

যাত্রীদের ভাড়া ও পণ্য পরিবহনের মাধ্যমে খরচ সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে রেলওয়ে। এর আগে গত জুলাই মাসেও ভাড়া বাড়ানো হয়েছিল (নন-এসিতে এক পয়সা ও এসিতে দুই পয়সা)। তারও আগে ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি বড় ধরনের ভাড়া বৃদ্ধি কার্যকর করা হয়েছিল, যেখানে এসি কোচে ভাড়া বেড়েছিল কিলোমিটার প্রতি চার পয়সা পর্যন্ত।

রেলওয়ে কর্মকর্তাদের মতে, উন্নত সেবা এবং ক্রমবর্ধমান ব্যয় মেটাতে এই সামান্য ভাড়া বৃদ্ধি অপরিহার্য হয়ে পড়েছিল। কর্তৃপক্ষ আশা করছে, এই ভাড়া বৃদ্ধির ফলে রেলওয়ের বার্ষিক আয় প্রায় ৬০০ কোটি রুপি বাড়বে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটের দুই কেবিন ক্রুকে প্রত্যাহার

‘আমি তো মামলা করি না, ডাইরেক্ট ওয়ারেন্ট করাই’

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

পত্রিকা অফিসে হামলার গোয়েন্দা তথ্য ছিল, আমলে নেওয়া হয়নি: সালাহউদ্দিন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পুরো ইউক্রেন দখলের পরিকল্পনা বাদ দেননি পুতিন: মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি: এএফপি
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি: এএফপি

ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় শান্তি আলোচনার তোড়জোড় চললেও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তাঁর মূল লক্ষ্য থেকে একচুলও সরে আসেননি। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে সতর্ক করা হয়েছে, পুতিন এখনো পুরো ইউক্রেন দখল এবং সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত ইউরোপীয় দেশগুলোর নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধারের স্বপ্ন দেখছেন।

গতকাল শনিবার (২০ ডিসেম্বর) মার্কিন গোয়েন্দা তথ্যের সঙ্গে পরিচিত ছয়টি সূত্রের বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর প্রকাশ করেছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তাঁর শান্তি আলোচকেরা বারবার দাবি করছেন, পুতিন এই যুদ্ধ শেষ করতে আগ্রহী। তবে মার্কিন গোয়েন্দা তথ্যে দেখা যাচ্ছে ভিন্ন চিত্র।

গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২২ সালে ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার সামরিক অভিযান শুরু করার সময় পুতিনের যে লক্ষ্য ছিল, তা এখনো অপরিবর্তিত। তিনি কেবল ইউক্রেন নয়, বরং ন্যাটোর জোটভুক্ত বাল্টিক দেশগুলো ও পোল্যান্ডের মতো অঞ্চলের জন্যও হুমকি।

ট্রাম্প প্রশাসন চলমান যুদ্ধের ইতি টানার ব্যাপারে আশাবাদী হলেও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সর্বশেষ প্রতিবেদন (সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ প্রস্তুতকৃত) বলছে, পুতিন দীর্ঘমেয়াদি আগ্রাসনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

এদিকে ট্রাম্পের জামাতা জ্যারেড কুশনার ও বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ বর্তমানে ইউক্রেন, রাশিয়া ও ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে ২০ দফার একটি শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করছেন।

সম্প্রতি বার্লিনে অনুষ্ঠিত আলোচনায় ইউক্রেনকে ন্যাটোর বাইরে কিন্তু ‘আর্টিকেল ৫’-এর মতো শক্তিশালী নিরাপত্তা গ্যারান্টি দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। এর অধীনে ইউক্রেনের সীমান্তে ইউরোপীয় বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করা হতে পারে। পাশাপাশি ইউক্রেনের সেনাবাহিনীতে সেনার সংখ্যা সর্বোচ্চ ৮ লাখে সীমাবদ্ধ রাখার প্রস্তাব রয়েছে, তবে রাশিয়া একে আরও কমানোর দাবি তুলছে।

আলোচনার সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে দখল করা ভূখণ্ড। অভিযোগ উঠেছে যে, ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেনকে দনবাসের অন্য অংশ (দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক) থেকে সেনা সরিয়ে নিতে চাপ দিচ্ছেন।

তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ইউক্রেন কোনোভাবেই তাদের সার্বভৌম ভূখণ্ড রাশিয়ার হাতে তুলে দেবে না। তিনি বলেন, ‘নিরাপত্তা গ্যারান্টি বাস্তবে কতটা কার্যকর হবে, তার উত্তর এখনো আমি পাইনি।’

মার্কিন গোয়েন্দা পরিচালক তুলসি গ্যাবার্ড অবশ্য ভিন্ন কথা বলছেন। তিনি দাবি করেছেন, রাশিয়া ইউরোপের সঙ্গে বড় কোনো যুদ্ধে জড়াতে চায় না এবং বর্তমানে তাদের সেই সক্ষমতাও নেই। তবে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও স্বীকার করেছেন, পুতিন কি সত্যিই চুক্তি করতে চান, না পুরো দেশ দখল করতে চান—তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটের দুই কেবিন ক্রুকে প্রত্যাহার

‘আমি তো মামলা করি না, ডাইরেক্ট ওয়ারেন্ট করাই’

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

পত্রিকা অফিসে হামলার গোয়েন্দা তথ্য ছিল, আমলে নেওয়া হয়নি: সালাহউদ্দিন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ধনী খদ্দেরদের জন্য কিশোরীদের যেভাবে বাছাই করতেন এপস্টেইন—উঠে এল এফবিআইয়ের তদন্তে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
জেফরি এপস্টেইন। ছবি: এএফপি
জেফরি এপস্টেইন। ছবি: এএফপি

যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ গত শুক্রবার যে নথিগুলো প্রকাশ করেছে, তাতে জেফরি এপস্টেইনের যৌন নিপীড়নের জন্য মানুষ পাঠিয়ে কীভাবে অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়ে জোগাড় করতেন, তার বিস্তারিত বিবরণ উঠে এসেছে। তদন্ত নথিগুলো এপস্টেইন ও তাঁর সহযোগীদের কর্মকাণ্ডের এক ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরেছে। বিশেষ করে তরুণী ও অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের তাঁকে সরবরাহ করার প্রক্রিয়া এতে স্পষ্ট হয়েছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়েছে, নথিগুলো যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময়কালে বিচার বিভাগের দীর্ঘদিন ধরে প্রতীক্ষিত প্রকাশনার অংশ। তবে এই প্রকাশনা আংশিক এবং ব্যাপকভাবে সম্পাদিত হওয়ায় সমালোচনার মুখে পড়েছে।

প্রকাশিত নথিগুলোর মধ্যে একটি নথি বিশেষভাবে গুরুত্ব পেয়েছে। নথিটির নম্বর ইএফটিএ–০০০০৪১৭৯। এতে রয়েছে এফবিআইয়ের একটি প্রমাণ-সংক্রান্ত কভার শিট এবং ১৩ পৃষ্ঠার হাতে লেখা তদন্ত নোট। ২০১৯ সালের ২ মে নেওয়া এক সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে এসব নোট তৈরি করা হয়। সাক্ষাৎকারদাতার পরিচয় এবং নথির কিছু অংশ গোপন রাখা হয়েছে।

তবে নোটগুলোতে কয়েকটি বিষয় স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে। এর মধ্যে রয়েছে মেয়েদের নিয়োগ, ‘ম্যাসাজ’-এর আড়ালে যৌন নিপীড়ন এবং বয়স ও গায়ের রং নিয়ে এপস্টেইনের নির্দিষ্ট পছন্দ। নোট অনুযায়ী সাক্ষী বলেন, ‘ (এই অংশ মুছে ফেলা হয়েছে)–এর বন্ধুদের বন্ধু। বড় ব্রাজিলিয়ান গ্রুপ। খুবই মরিয়া সময় যাচ্ছে। মেয়েদের সংখ্যা ফুরিয়ে আসছিল।’ নোটে জেফরি এপস্টেইনকে ‘জেই’ আদ্যক্ষরে উল্লেখ করা হয়েছে।

এই তথাকথিত ‘মরিয়া সময়ে’ একজন ‘বাদামি ত্বকের ডমিনিকান’ মেয়েকে আনা হয়েছিল। কিন্তু নোটে বলা হয়েছে, ‘জেই স্প্যানিশ বা গাঢ় রঙের মেয়ে চায়নি।’ যিনি অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের এপস্টেইনের কাছে নিয়ে আসতেন, তাঁর পরিচয় নথিতে গোপন রাখা হয়েছে। ওই ব্যক্তি এপস্টেইনকে জানান, তিনি তাঁর জন্য ‘তরুণী মেয়েদের’ নিয়ে আসছেন। তবে এপস্টেইন অভিযোগ করেন, ‘হ্যাঁ, কিন্তু বাদামি রঙের না।’

সাক্ষী জানান, তিনি নিশ্চিত নন এপস্টেইন ওই জোগাড়দারকে কোনো অর্থ দিয়েছিলেন কি না। তবে মেয়েটিকে অর্থ দেওয়া হয়েছিল। নোটে আরও উল্লেখ আছে, একটি বাথরুমে ঘটে যাওয়া ঘটনার। সেখানে লেখা হয়েছে, ‘বাথটাবের কাছে স্তন ও যোনি…সে শাওয়ারে ঢুকে পড়ে এবং তাকে বলে, সে যেন এমন মেয়েদের না আনে যাদের সে পছন্দ করে না…তাকে বলে, খুঁজে যেতে।’

আরও বলা হয়, ‘একপর্যায়ে (নাম মুছে ফেলা হয়েছে) তাকে একটি মেয়ের পরিচয়পত্র চাইতে দেখেছে।’ নোট অনুযায়ী, এপস্টেইন নিশ্চিত হতে চেয়েছিলেন মেয়েটি ১৮ বছরের নিচে কি না। কারণ আগে বেশি বয়সী মেয়েদের আনার ঘটনায় তাঁর আস্থা নষ্ট হয়েছিল।

নোটে সাক্ষী যৌন নিপীড়নের বিবরণও দিয়েছেন। সেখানে বলা হয়েছে, এপস্টেইন ‘অদ্ভুত শব্দ করতেন’ এবং ভুক্তভোগীদের ‘রূঢ়ভাবে’ স্পর্শ করতেন। নথিটিতে কয়েকজন মেয়ের ছবি সংযুক্ত রয়েছে। নোট অনুযায়ী, তাদের বয়স ১৪ থেকে ১৭ বছরের মধ্যে। ছবিগুলোতে তাদের শহরের বিভিন্ন জায়গায় এবং সৈকতে বিকিনিতে দেখা যায়। নোটে নিউইয়র্কের একাধিক স্থানের উল্লেখ রয়েছে। এর মধ্যে আছে ম্যানহাটনের ৪১ তম স্ট্রিটের একটি অ্যাপার্টমেন্ট, রচেস্টার, ব্রাইটন বিচ এবং একটি হাইস্কুল প্রম।

সাক্ষীর পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। তবে নোটে থাকা তথ্য এপস্টেইনের ব্রাজিলের শিশুদের প্রতি আগ্রহের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ। ফেডারেল অভিযোগপত্রে ‘মাইনর ভিকটিম–১’ হিসেবে চিহ্নিত ব্রাজিলের অভিবাসী মারিনা লাসেরদা ছিলেন মামলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী। তিনি গত সেপ্টেম্বরে প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে কথা বলেন। তিনি জানান, ১৪ বছর বয়স থেকে এপস্টেইনের হাতে নির্যাতনের শিকার হন। তিনি আরও বলেন, এপস্টেইনের সঙ্গে তিনি একাধিকবার ডোনাল্ড ট্রাম্পকে দেখেছেন। তবে ট্রাম্প এপস্টেইনের কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে জানতেন বলে অস্বীকার করেছেন।

লাসেরদার সাক্ষ্যের ভিত্তিতেই শেষ পর্যন্ত এপস্টেইনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। পরে ২০১৯ সালে নিউইয়র্কের একটি কারাগারে এপস্টেইন আত্মহত্যা করেন। এপস্টেইনের সহযোগী জ্যাঁ-লুক ব্রুনেল, যিনি তাঁর অর্থায়নে একটি মডেলিং এজেন্সি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, ২০২২ সালে ফ্রান্সে গ্রেপ্তার হন। তাঁর বিরুদ্ধে অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের পাচার ও ধর্ষণের অভিযোগ আনা হয়। অভিযোগ অনুযায়ী, তিনি এপস্টেইনের জন্য এক হাজারের বেশি মেয়ে ও তরুণী সরবরাহ করেছিলেন।

২০১৯ সালের এপ্রিলে ব্রুনেল ব্রাজিলের একটি মডেলিং এজেন্সিতে যান, যেটির সঙ্গে তাঁর কোম্পানির আগে কাজ ছিল। যুক্তরাষ্ট্রে নতুন মডেল পাঠানোর উদ্দেশ্যেই এই সফর করা হয় বলে একটি সূত্র জানিয়েছে। এপস্টেইনের মৃত্যুর পর তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও দণ্ডিত ঘিসলেইন ম্যাক্সওয়েলকেও ব্রাজিলের রিভিয়েরা এলাকায় দেখা গেছে বলে জানা যায়। ২০২২ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি প্যারিসের একটি কারাগারে জ্যাঁ-লুক ব্রুনেল আত্মহত্যা করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটের দুই কেবিন ক্রুকে প্রত্যাহার

‘আমি তো মামলা করি না, ডাইরেক্ট ওয়ারেন্ট করাই’

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

পত্রিকা অফিসে হামলার গোয়েন্দা তথ্য ছিল, আমলে নেওয়া হয়নি: সালাহউদ্দিন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত