Ajker Patrika

কুকুর ও বিড়ালের মাংস খাওয়া নিষিদ্ধ করল এশিয়ার একটি রাজধানী

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: হিউম্যান ওয়ার্ল্ড ফর অ্যানিমেল
ছবি: হিউম্যান ওয়ার্ল্ড ফর অ্যানিমেল

ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় আনুষ্ঠানিকভাবে নিষিদ্ধ হলো কুকুর, বিড়াল ও বাদুড়ের মাংস বিক্রি ও ভক্ষণ। প্রাণী অধিকারকর্মীদের দীর্ঘ আন্দোলনের প্রেক্ষিতে এই নিষেধাজ্ঞা দেশটির অন্যতম বিস্তৃত জনস্বাস্থ্য-সম্পর্কিত পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। নতুন বিধান অনুযায়ী—জলাতঙ্কে আক্রান্ত হয়, এমন ঝুঁকিপূর্ণ যে কোনো প্রাণীর কেনা-বেচা, জবাই ও মাংস বিক্রি সম্পূর্ণরূপে বন্ধ থাকবে।

বুধবার (২৬ নভেম্বর) যুক্তরাজ্যভিত্তিক ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, গত ২৪ নভেম্বর জাকার্তার গভর্নর প্রামোনো অনুং এই নিষেধাজ্ঞা স্বাক্ষর করেন এবং এটি কার্যকর হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে কর্তৃপক্ষ। বিধানটি শুধু কুকুর-বিড়াল নয়, জলাতঙ্ক সংক্রমণের ঝুঁকিতে থাকা বাঁদর, বাদুড়, সিভেটসহ সব ধরনের প্রাণীকেই খাদ্য হিসেবে বিক্রি ও প্রক্রিয়াজাত করার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।

গত অক্টোবরে প্রাণী অধিকারকর্মীরা গভর্নরের কাছে আবেদন জানানোর পর তিনি দ্রুত এই উদ্যোগ নেন। স্থানীয় গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘প্রাণীপ্রেমীদের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় আমি একটি গভর্নর বিধিমালা জারি করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। তাদের অনুরোধ আমাকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে উৎসাহিত করেছে।’

নতুন নিয়মে কেউ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে ধাপে ধাপে শাস্তির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। প্রথমবার আইন ভঙ্গ করলে ব্যবসায়ীদের লিখিত সতর্কবার্তা দেওয়া হবে এবং সন্দেহজনক প্রাণী বা মাংস জব্দ করে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। দ্বিতীয়বার ধরা পড়লে সব মালামাল বাজেয়াপ্ত হবে। বারবার আইন অমান্য করলে ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়া এবং শেষ পর্যন্ত লাইসেন্স স্থায়ীভাবে বাতিল করার বিধান রয়েছে।

বিধানটি সঙ্গে সঙ্গেই কার্যকর করা হলেও এর জন্য ছয় মাসের একটি ‘গ্রেস পিরিয়ড’ রাখা হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে সক্রিয় কোনো অভিযান পরিচালনা করা হবে না। কর্তৃপক্ষ বলছে, ব্যবসায়ীদের প্রস্তুতি নেওয়ার সুযোগ দেওয়া এবং পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা তৈরির লক্ষ্যে এই সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে।

ইন্দোনেশিয়া এখনো বিশ্বের কয়েকটি দেশের মধ্যে একটি যেখানে কুকুর বা বিড়ালের মাংস কিছু এলাকায় খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। যদিও জনমত ক্রমশ এর বিপক্ষে যাচ্ছে এবং বিভিন্ন পৌরসভা স্থানীয়ভাবে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে। দেশটির প্রধান ধর্ম ইসলাম হওয়ায় কুকুরকে অপবিত্র হিসেবে গণ্য করা হয় এবং সাধারণত পোষা প্রাণী হিসেবে কুকুর-বিড়ালের সংখ্যা খুব কম দেখা যায়। তবুও কিছু অঞ্চলে ঐতিহ্য বা সস্তা প্রোটিনের উৎস হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে এই ধরনের মাংসের চাহিদা ছিল।

প্রাণী অধিকার সংগঠনগুলো এই পদক্ষেপকে বড় বিজয় হিসেবে দেখছে। ‘ডগ মিট ফ্রি ইন্দোনেশিয়া’ জানিয়েছে, এই নীতি দেশের সংবিধানের মানবিক আদর্শের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

ইন্দোনেশিয়ায় জলাতঙ্ক এখনো গুরুতর জনস্বাস্থ্য ঝুঁকি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, প্রতিবছর দেশটিতে কয়েক ডজন মানুষ জলাতঙ্কে মারা যায়। ২০২৫ সালের প্রথম তিন মাসেই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ২৫টি মৃত্যুর তথ্য দিয়েছে।

গভর্নর অনুং আশা প্রকাশ করেছেন, এই সিদ্ধান্ত জাকার্তার জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও রোগ বিস্তারের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা—জনসংখ্যার তীব্র সংকটে ইউক্রেন

বাংলাদেশি ও পাকিস্তানি শিক্ষার্থী ভর্তি স্থগিত করেছে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়

ভোটের মাঠে: টাঙ্গাইলে নির্বাচনী উত্তাপ

গোপালগঞ্জে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ, ছাত্রীর আত্মহত্যা

খালেদা জিয়াকে নিয়ে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স রওনা হবে শুক্রবার দুপুরে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ