Ajker Patrika

যেসব দেশে আফগান শরণার্থীদের গন্তব্য

ফখরুল ইসলাম
যেসব দেশে আফগান শরণার্থীদের গন্তব্য

দুই দশক পর আফগানিস্তানে তালেবানের পুনরুত্থানে দেশটি ছেড়ে দলে দলে পালাচ্ছে সাধারণ মানুষ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে সংবাদমাধ্যম, সর্বত্র চোখে পড়ছে আফগান নাগরিকদের দেশ ছাড়তে চাওয়ার কাকুতিমিনতির চিত্র। তবে কূটনৈতিক যোগাযোগ ছাড়া আফগানিস্তান ছাড়ার সম্ভাবনা সে দেশের সব নাগরিকের জন্যই অত্যন্ত ক্ষীণ। 

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলমান সংঘাত এবং রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে ২২ লাখ শরণার্থী এরাই মধ্যে সীমান্ত দিয়ে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন। দেশটির অভ্যন্তরে গৃহহীন অবস্থায় ‍দিন কাটাচ্ছেন ৩৫ লাখেরও বেশি আফগান নাগরিক। এদের প্রায় প্রত্যেকেরই আপন মাতৃভূমি থেকে পালানো ছাড়া বিকল্প কিছু নেই। 

জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) এর একজন মুখপাত্র বলেন, আফগানদের অধিকাংশই বৈধ উপায়ে দেশ ছাড়তে পারছে না। যারা বিপদে পড়তে পারে তাদের দেশ ত্যাগের স্পষ্ট কোনো উপায় নেই। তালেবান গোষ্ঠীর পুনরুত্থানের আগেই নিরাপত্তার অভাবে ৫ লাখ ৫০ আফগান দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। 

তবে শত বাধা পেরিয়ে কিছু শরণার্থী দেশটি থেকে বেরিয়ে আসার পথ খুঁজে পেয়েছেন। তালেবানদের কাবুল নিয়ন্ত্রণের পরপরই পাকিস্তানে কয়েক হাজার আফগান আশ্রয় নিয়েছেন। আরেক সীমান্তবর্তী দেশ উজবেকিস্তানের তাঁবুতে বসবাস করছেন আরও প্রায় দেড় হাজার সাধারণ মানুষ। পালানোর চেষ্টায় মরিয়া হাজার হাজার মানুষ ছুটেছেন কাবুল বিমানবন্দরের দিকে। 

ন্যাটোর এক কর্মকর্তা জানান, ১৫ আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত ১৮ হাজার সাধারণ মানুষ বিমানযোগে ভিনদেশে পালিয়েছে। কিন্তু তাদের মধ্যে কতজন আফগান নাগরিক তা স্পষ্ট নয়। সব মিলিয়ে বিদেশে আশ্রয় নিতে যাচ্ছেন ৩৫ লাখ আফগান নাগরিক। 

এদিকে, এ বছর তীব্র খরা এবং খাদ্য সংকটের মধ্যে দিয়ে গেছে আফগানিস্তানের বেশির ভাগ অঞ্চল। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) জুন মাসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, দেশটির জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি অর্থাৎ প্রায় এক কোটি ৪০ লাখ মানুষ খাবারের অভাবে দিনযাপন করছেন। 

আফগান শরণার্থীরা যাচ্ছে কোথায়? 

গত বছর সবচেয়ে বেশি শরণার্থী আশ্রয় দিয়েছে প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান এবং ইরান। ইউএনএইচসিআর জানায়, প্রায় ১৫ লাখ আফগান শরণার্থী ২০২০ সালে পাকিস্তানে আশ্রয় নিয়েছেন। এ ছাড়া ইরানে আশ্রয় নিয়েছেন ৭ লাখ ৮০ হাজার শরণার্থী। শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার তালিকায় তৃতীয় স্থানে রয়েছে জার্মানি। দেশটিতে অবস্থান করছেন ১ লাখ ৮১ হাজার শরণার্থী। অপরদিকে ১ লাখ ২৯ হাজার শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছেন তুরস্কে। এ ছাড়া অস্ট্রিয়ায় ৪৬ হাজার ৬০০, ফ্রান্সে ৪৫ হাজার ১০০, গ্রিসে ৪১ হাজার ২০০, সুইডেনে ৩১ হাজার ৩০০, সুইজারল্যান্ডে ১৫ হাজার ৪০০, ভারতে ১৫ হাজার ১০০, ইতালিতে ১৩ হাজার ৪০০, যুক্তরাজ্যে ১২ হাজার ৬০০, অস্ট্রেলিয়ায় ১২ হাজার ৪০০, বেলজিয়ামে ৮ হাজার ৯০০, ইন্দোনেশিয়ায় ৭ হাজার ৬০০ আফগান শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছেন। 

এরাই মধ্যে ২২ লাখ শরণার্থী সীমান্ত দিয়ে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেনযেসব দেশ আফগান শরণার্থীদের শীর্ষ গন্তব্য হতে যাচ্ছে: 

ইরান
আফগানিস্তান থেকে আসা শরণার্থীদের জন্য এরই মধ্যে শিবির নির্মাণ করেছে ইরান কর্তৃপক্ষ। তালেবানের কাবুল দখলের পর থেকেই শরণার্থীদের ঢল নেমেছে ইরানে। এসব শরণার্থীদের আশ্রয় দিতে আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী তিনটি প্রদেশে শিবির নির্মাণ করা হয়েছে। অবশ্য তেহরান জানিয়েছে, অবস্থার উন্নতি হলে তাদের আবার নিজ দেশে ফিরতে হবে। 

পাকিস্তান
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান গত জুনে জানিয়েছিলেন, তালেবান আফগান দখল করে নিলে সীমান্ত বন্ধ করে দেবে পাকিস্তান। তবে পাকিস্তানের একটি সীমান্ত প্রবেশ পথ এখনো খোলা রয়েছে। যদিও ওই প্রবেশ পথে কড়া টহল বসিয়েছে তালেবান। 

তাজিকিস্তান
আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী দেশটিতে এ পর্যন্ত কতজন আফগান প্রবেশ করেছে তার কোনো সঠিক হিসেব নেই। তবে ধারণা করা হচ্ছে কয়েক হাজার শরণার্থী তাজিকিস্তান আশ্রয় নিয়েছেন। দেশটির সরকার জানায়, তাজিকিস্তান ১ লাখ শরণার্থীকে আশ্রয় দিতে প্রস্তুত আছে। 

উজবেকিস্তান
সম্প্রতি উজবেকিস্তানে প্রায় ১৫০০ শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছেন। সেখানে তারা শিবির বানিয়ে থাকছেন। তবে এখন উজবেকিস্তানে প্রবেশ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। ভিসা ছাড়া কাউকেই উজবেকিস্তানে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না তারা। 

যুক্তরাজ্য
ধীরে ধীরে ২০ হাজার আফগান শরণার্থীকে আশ্রয় দেবে যুক্তরাজ্য। দেশটির লক্ষ্য হচ্ছে প্রথম বছরে ৫ হাজার আফগানকে বসতি স্থাপনের অনুমতি দেওয়া। এ প্রকল্পের মাধ্যমে আফগানিস্তানের সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা নারী ও শিশুদের পাশাপাশি ধর্মীয় এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুদের বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে। 

যুক্তরাষ্ট্র
অভিবাসন ভিসার জন্য আবেদনকারী আফগান শরণার্থীদের সহায়তা করতে ৫০০ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দের ঘোষণা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তবে ঠিক কতজন আফগান শরণার্থী আশ্রয় দেবে তা এখনো স্পষ্ট করেনি যুক্তরাষ্ট্র। 

কানাডা
তালেবানদের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্তদের ওপর বিশেষ নজর দেওয়া হবে জানিয়েছে কানাডা। আফগানিস্তানের প্রায় ২০ হাজার নাগরিককে পুনর্বাসন করবে জাস্টিন ট্রুডোর দেশটি। 

দেশটির অভ্যন্তরে গৃহহীন অবস্থায় ‍দিন কাটাচ্ছেন ৩৫ লাখেরও বেশি আফগান নাগরিকঅস্ট্রেলিয়া
এরই মধ্যে আফগানিস্তান থেকে পালানো ৩ হাজার নাগরিককে অভিবাসন ভিসা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। তবে স্কট মরিসন সরকার এ সংখ্যা আর বাড়ানো হবে না বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন। 

ইউরোপীয় ইউনিয়ন
ইউরোপীয় ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি দেশের কর্মকর্তারা বলছেন, তারা ২০১৫ সালের পুনরাবৃত্তি দেখতে চান না। সেসময় বিপুলসংখ্যক শরণার্থীকে ইইউভুক্ত দেশসমূহে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। 

জার্মানি
এরই মধ্যে কিছু আফগান শরণার্থীকে গ্রহণ করবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে জার্মানি। তবে সংখ্যার পরিমাণ উল্লেখ করেনি দেশটি। এর আগে ২০১৫ সালে মধ্যপ্রাচ্যের বহুসংখ্যক শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়ে নিজ দেশে ব্যাপক সমালোচিত হয়েছিলেন চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল। তবে মার্কেল জানিয়েছেন, আফগানিস্তানের প্রতিবেশী দেশগুলোতে শরণার্থীদের নিরাপদ আশ্রয় নিশ্চিত করার চেষ্টা করাই এখন জার্মানির মূল লক্ষ্য। 

ফ্রান্স
প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ জানিয়েছেন, আফগানিস্তানের অবৈধ অভিবাসীদের থেকে ইউরোপকে রক্ষা করতে হবে। তবে আফগানিস্তানে যারা সবচেয়ে বিপদে আছে তাদের আশ্রয় দেবে দেশটি। বর্তমানের এ পরিস্থিতি ইউরোপ একা মোকাবিলা করতে পারবে না বলেও জানান তিনি। 

অস্ট্রিয়া
কোনো আফগান শরণার্থীকে আশ্রয় দিতে চাচ্ছে না অস্ট্রিয়া। তবে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, আফগানিস্তানের পার্শ্ববর্তী দেশগুলিতে শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য তদবির করেছে তার দেশ। 

সুইজারল্যান্ড
সুইজারল্যান্ডও জানিয়েছে যে তারা আফগানিস্তান থেকে আসা শরণার্থীদের আশ্রয় দেবে না। 

তুরস্ক
প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান বলেছেন, আফগানিস্তানকে স্থিতিশীল করতে পাকিস্তানের সঙ্গে কাজ করবে তার সরকার। এর পাশাপাশি শরণার্থীদের ঢল ঠেকাতে ইরানের সঙ্গে মিলে দেয়াল নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। 

উত্তর মেসেডোনিয়া, আলবেনিয়া, কসোভো
এরই মধ্যে অস্থায়ীভাবে ৪৫০ আফগান শরণার্থীকে আশ্রয় দেওয়া হবে জানিয়েছে উত্তর মেসেডোনিয়া। এ ছাড়া আলবেনিয়া জানিয়েছে, তারা ৩০০ শরণার্থীকে আশ্রয় দেবে। আফগান শরণার্থীদের আশ্রয়ের পরিকল্পনা করছে কসোভোও। তবে দেশটি এখনো কোনো সংখ্যা উল্লেখ করেনি। 

উগান্ডা
যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধে ২ হাজার আফগান শরণার্থীকে আশ্রয় দিতে রাজি উগান্ডার সরকার। দেশটি বর্তমানে আফ্রিকার দেশগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক শরণার্থীর আশ্রয়স্থল, বিশ্বে তৃতীয়। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপির জেলা ও নগর আহ্বায়ক দুই মেরুতে

আজকের রাশিফল: ভার্চুয়াল হাতাহাতি থেকে দূরে থাকুন, সিদ্ধান্ত ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিন

মুর্শিদাবাদে ‘বাবরি মসজিদ’: সৌদি আলেমদের আমন্ত্রণ, ৪০ হাজার মানুষের জন্য রান্না হচ্ছে বিরিয়ানি

স্বপ্নের দেশে যাত্রা: এক মাস ধরে যোগাযোগ বন্ধ, অবশেষে বাড়িতে এল নৌকাডুবির খবর

এ বছর জীবনযাত্রার মানে সেরা ১০ দেশের নাম জেনে নিন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাতিল হচ্ছে শত শত ফ্লাইট, তবু চড়ামূল্যে টিকিট বিক্রি করছে ইন্ডিগো

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ৪৬
ভারতের ২০ বছরের পুরোনো বিমান পরিবহন সংস্থা ইন্ডিগোর ফ্লাইট বিপর্যয়। ছবি: পিটিআই
ভারতের ২০ বছরের পুরোনো বিমান পরিবহন সংস্থা ইন্ডিগোর ফ্লাইট বিপর্যয়। ছবি: পিটিআই

ভারতের ২০ বছরের পুরোনো বিমান পরিবহন সংস্থা ইন্ডিগোর শত শত ফ্লাইট বাতিলের কারণে বিপর্যস্ত অবস্থায় পড়েছে হাজারো যাত্রী। দেশটির আকাশপথে দেখা দিয়েছে বড় রকমের শিডিউল বিপর্যয়। এনডিটিভির প্রতিবেদনে জানা গেছে, ক্রু-সংক্রান্ত সমস্যা এবং প্রযুক্তিগত জটিলতাসহ একাধিক পরিচালনাগত ব্যাঘাতের কারণে এত ফ্লাইট বাতিল হয়েছে।

কিন্তু এই বিপর্যয় সত্ত্বেও ইন্ডিগো তাদের পুরো বিমানবহর গ্রাউন্ড করেনি বা প্রতিদিন পরিচালিত ২ হাজার ২০০-এর বেশি অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক সব ফ্লাইট বাতিলও করেনি। ফলে বিলম্ব ও বিঘ্নের কারণে গতকাল শুক্রবার ১ হাজারের বেশি ফ্লাইট বাতিল হয়।

বাতিলের তালিকার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ছিল দিল্লি থেকে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটগুলো। কলকাতা-গুয়াহাটি, চেন্নাই-কোয়েম্বাটুর রুট এবং যেসব রুট নন-মেট্রো শহরগুলোকে যুক্ত করে যেসব ফ্লাইট রুট রয়েছে, সেগুলো চলছে। তবে সেগুলোতে কমেছে ফ্লাইটের সংখ্যা, বেড়েছে বিলম্ব।

এ অবস্থায় প্রশ্ন উঠছে প্রতিদিন এত ফ্লাইট বাতিলের পরও তারা কেন এবং কীভাবে এত টিকিট বিক্রি করছে আর ভাড়াই বা এত বেশি কেন?

সাধারণত এয়ারলাইনসগুলো প্রায় সপ্তাহখানেক আগেই ফ্লাইট বাতিল করে না, যদি না পুরো সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। ইন্ডিগোর ক্ষেত্রে এই বিঘ্নগুলো দৈনন্দিন ভিত্তিতে সামলানো হচ্ছে। অর্থাৎ আজকের ফ্লাইট বাতিল হতে পারে, কিন্তু তিন দিন বা এমনকি দুই দিন পরের ফ্লাইটগুলোর বুকিং খোলা আছে, এই আশায় যে ওই সময়ের মধ্যে কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়ে যাবে।

ইন্ডিগো জানিয়েছে, ফ্লাইটগুলো বাতিল করা ছিল এককালীন ‘সিস্টেম রিবুট’-এর অংশ, যাতে বিমান ও ক্রু পুনর্বিন্যস্ত করা যায় এবং নিয়মিত সময়সূচি পুনরায় চালু করা যায়। তারা আশা করছে, ধাপে ধাপে অপারেশন স্বাভাবিক হবে এবং ১০-১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রায় স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরার লক্ষ্য ধরা হয়েছে।

ভারতের বাণিজ্যিক অভ্যন্তরীণ বিমান পরিবহন বাজারের অর্ধেকের বেশি নিয়ন্ত্রণ করে ইন্ডিগো। কিছু হিসাবে ৬০ শতাংশের বেশি। তাই বিপুলসংখ্যক ফ্লাইট বাতিলের ফলে মুহূর্তেই সব এয়ারলাইনসের মোট আসনের সংখ্যা কমে গেছে। কিন্তু যাত্রীদের চাহিদা একই রয়ে গেছে।

আর চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে এই আকস্মিক ও চরম বৈপরীত্যের কারণে টিকিটের মূল্যও উচ্চ হারে বাড়ছে।

গত ২৪ ঘণ্টায় দিল্লি-মুম্বাই ওয়ান-ওয়ে ভাড়া বেড়ে দাঁড়ায় ৫০ হাজার টাকা আর রিটার্ন ভাড়া ছুঁয়েছে ৬০ হাজার। অন্যদিকে দিল্লি-বেঙ্গালুরু টিকিটের দাম ১ লাখ টাকায় পৌঁছে যায়। বেঙ্গালুরু-মুম্বাই সর্বোচ্চ ভাড়া থাকে প্রায় ৭ হাজার টাকা, যা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৪০ হাজার টাকায়।

এ অবস্থায় অনেকেই বলছেন, এখন মনে হচ্ছে দিল্লি-লন্ডন টিকিটই যেন সস্তা!

নেটিজেনরা প্রশ্ন তুলছেন, সংকট বা জরুরি অবস্থার সময়ে এয়ারলাইন ও সরকার কি এসব অ্যালগরিদম নিষ্ক্রিয় করবে না? যাত্রীদের কাছ থেকে আরও বেশি টাকা আদায় করার বদলে যারা ইতিমধ্যে অর্থ প্রদান করেছেন তাদের পরিস্থিতি বিবেচনা করা কি জরুরি নয়?

বিঘ্নের সময়ে কোনো ফ্লাইটে ক্রু পুনর্বিন্যাস চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত বা বিমান ঘুরে আসার (aircraft rotation) প্রক্রিয়া ব্যর্থ না হওয়া পর্যন্ত এয়ারলাইনস সেই ফ্লাইটের সিট বিক্রি চালিয়ে যেতে পারে। শুধু এসব নিশ্চিত হওয়ার পরই ফ্লাইটটিকে ‘বাতিল’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।

ফলস্বরূপ এয়ারলাইনের সিস্টেম এমনভাবে তৈরি, যদি না পরিচালনা করা যাবে না এমন নিশ্চিত হওয়া যায় ততক্ষণ পর্যন্ত টিকিট বিক্রি চলে। টিকিট বিক্রি বন্ধ করা হবে কেবল তখনই, যদি ইন্ডিগো নিজে বিমান চলাচল বন্ধ করে দেয় বা বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ সম্পূর্ণ সেবা স্থগিতের নির্দেশ দেয়। যার কোনোটিই এখনো ঘটেনি।

ইন্ডিগো জানিয়েছে, শনিবার থেকে পরিস্থিতির উন্নতি আশা করা হচ্ছে, তবে পুরোপুরি স্থিতিশীল হতে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপির জেলা ও নগর আহ্বায়ক দুই মেরুতে

আজকের রাশিফল: ভার্চুয়াল হাতাহাতি থেকে দূরে থাকুন, সিদ্ধান্ত ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিন

মুর্শিদাবাদে ‘বাবরি মসজিদ’: সৌদি আলেমদের আমন্ত্রণ, ৪০ হাজার মানুষের জন্য রান্না হচ্ছে বিরিয়ানি

স্বপ্নের দেশে যাত্রা: এক মাস ধরে যোগাযোগ বন্ধ, অবশেষে বাড়িতে এল নৌকাডুবির খবর

এ বছর জীবনযাত্রার মানে সেরা ১০ দেশের নাম জেনে নিন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মুর্শিদাবাদে ‘বাবরি মসজিদ’: সৌদি আলেমদের আমন্ত্রণ, ৪০ হাজার মানুষের জন্য রান্না হচ্ছে বিরিয়ানি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ৩০
তৃণমূল থেকে বহিষ্কৃত বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের উদ্যোগে এই আয়োজন করা হয়েছে। ছবি: এনডিটিভি
তৃণমূল থেকে বহিষ্কৃত বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের উদ্যোগে এই আয়োজন করা হয়েছে। ছবি: এনডিটিভি

পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় নতুন করে ‘বাবরি মসজিদ’ গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছেন তৃণমূল থেকে বহিষ্কৃত বিধায়ক হুমায়ুন কবির। আজ শনিবার এই মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের কথা রয়েছে। এ আয়োজনে সৌদি আরব থেকে আলেমদের নিমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এ আয়োজনকে ঘিরে ৪০ হাজার মানুষের জন্য রান্না করা হচ্ছে বিরিয়ানি।

এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কংগ্রেস ও বিজেপি ঘুরে তৃণমূলে আসেন মুর্শিদাবাদের প্রভাবশালী নেতা। গত বৃহস্পতিবার দলবিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়। এর মধ্যেই তিনি এই মসজিদ নিয়ে উঠেপড়ে লেগে আছেন। বহিষ্কার নিয়ে রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া বা প্রশাসনের তৎপরতা নিয়ে কোনোভাবেই বিচলিত নন এই নেতা।

হুমায়ুন কবির সাংবাদিকদের জানান, শনিবার মোরাদিঘির কাছে ২৫ বিঘা জায়গাজুড়ে প্রায় ৩ লাখ মানুষ জড়ো হবে। বিভিন্ন রাজ্য থেকে ধর্মীয় নেতারা উপস্থিত হবে এখানে।

হুমায়ুন কবির আরও জানান, সকালে কলকাতা বিমানবন্দর থেকে বিশেষ কনভয়ে করে সৌদি আরব থেকে দুজন আলেম আসবেন।

রাজ্যের একমাত্র উত্তর-দক্ষিণ মহাসড়ক এনএইচ-১২ লাগোয়া বিশাল এক এলাকায় চলছে এই আয়োজন। মুর্শিদাবাদের সাতটি কেটারিং প্রতিষ্ঠানকে শাহি বিরিয়ানি রান্নার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। হুমায়ুন কবিরের এক ঘনিষ্ঠ সহযোগী জানান, অতিথিদের জন্য প্রায় ৪০ হাজার প্যাকেট এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য আরও ২০ হাজার প্যাকেট তৈরি করা হচ্ছে। শুধু খাবারের ব্যয়ই ৩০ লাখ রুপির বেশি হয়ে যাচ্ছে।

সব মিলিয়ে আয়োজনের বাজেট ৬০-৭০ লাখ রুপিতে পৌঁছাবে বলে জানান তিনি।

ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানের জন্য ধানখেতের ওপর ১৫০ ফুট লম্বা ও ৮০ ফুট চওড়া এক বিশাল মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। এ মঞ্চে প্রায় ৪০০ অতিথির বসার ব্যবস্থা থাকবে। এর নির্মাণব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১০ লাখ রুপি।

আয়োজকেরা জানান, প্রায় ৩ হাজার স্বেচ্ছাসেবক দায়িত্ব পালন করবেন। এর মধ্যে ২ হাজার জন শুক্রবার ভোর থেকেই কাজ শুরু করেছেন। তাঁরা এই বড় জনস্রোত নিয়ন্ত্রণ, প্রবেশপথ সুষ্ঠুভাবে ব্যবস্থাপনা ও এনএইচ-১২-তে যাতে জ্যাম না লেগে যায়, সেই বিষয়টি খেয়াল রাখবেন।

হুমায়ুন কবির জানান, সকাল ১০টায় কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হবে। এরপর দুপুর ১২টায় ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠিত হবে।

হুমায়ুন কবির আরও বলেন, ‘আনুষ্ঠানিকতা দুই ঘণ্টা আগে থেকেই শুরু হবে। পুলিশি নির্দেশনা অনুযায়ী বিকেল ৪টার মধ্যে মাঠ খালি করা হবে।’

এদিকে এত বিশাল আয়োজন প্রশাসনের উদ্বেগও বাড়িয়ে দিয়েছে। গতকাল শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশনার পর জেলা পুলিশ হুমায়ুন কবিরের দলের সঙ্গে এক দফা আলোচনায় বসে। জনশৃঙ্খলা বজায় এবং এনএইচ-১২–তে যান চলাচল ঠিক রাখতে বৈঠক করে তারা।

একজন জ্যেষ্ঠ জেলা পুলিশ কর্মকর্তা জানান, বেলডাঙা ও রানীনগর থানার আওতাজুড়ে প্রায় ৩ হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হবে। তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রধান উদ্বেগ হচ্ছে জাতীয় মহাসড়ক সচল রাখা। সদর দপ্তর থেকে অতিরিক্ত ফোর্স এসে গেছে। একাধিক ডাইভারশন পরিকল্পনা প্রস্তুত আছে।’

মুর্শিদাবাদের অন্যতম বড় মহাসড়ক এনএইচ-১২-তে এই বিশাল আয়োজনের কারণে যানজট ও জনজট তৈরি হতে পারে—এ আশঙ্কায় আছেন পুলিশ কর্মকর্তারা।

বলা হচ্ছে, এই মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ তৃণমূল কংগ্রেসের ভেতরে অস্বস্তি তৈরি করছে। হুমায়ুন কবিরের জন্য এই আয়োজন একদিকে যেমন জনসমাবেশ গঠনের পরীক্ষা, তেমনি একপ্রকার প্রতিরোধ প্রদর্শনও।

রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া এবং নিরাপত্তাবলয়ের চিন্তা উড়িয়ে দিয়ে হুমায়ুন কবির বলেন, ‘মানুষ আসবে, কারণ এটি এই এলাকার জন্য ঐতিহাসিক মুহূর্ত।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপির জেলা ও নগর আহ্বায়ক দুই মেরুতে

আজকের রাশিফল: ভার্চুয়াল হাতাহাতি থেকে দূরে থাকুন, সিদ্ধান্ত ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিন

মুর্শিদাবাদে ‘বাবরি মসজিদ’: সৌদি আলেমদের আমন্ত্রণ, ৪০ হাজার মানুষের জন্য রান্না হচ্ছে বিরিয়ানি

স্বপ্নের দেশে যাত্রা: এক মাস ধরে যোগাযোগ বন্ধ, অবশেষে বাড়িতে এল নৌকাডুবির খবর

এ বছর জীবনযাত্রার মানে সেরা ১০ দেশের নাম জেনে নিন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সীমান্তে ফের সংঘাতে জড়াল পাকিস্তান ও আফগান তালেবান, নিহত ৪

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ০০
উত্তর ওয়াজিরিস্তানের গোলাম খান এলাকার সীমান্তে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর টহল। ছবি: এএফপি
উত্তর ওয়াজিরিস্তানের গোলাম খান এলাকার সীমান্তে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর টহল। ছবি: এএফপি

কাতার ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় হওয়া ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের তালেবান বাহিনীর মধ্যে নতুন করে সীমান্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। উভয় পক্ষই এই সংঘর্ষের জন্য একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি ভঙ্গের অভিযোগ তুলেছে।

২ হাজার ৫৭৪ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্তরেখা বরাবর অবস্থিত আফগানিস্তানের শহর স্পিন বোলদাক থেকে বাসিন্দারা সারা রাত ধরে পালিয়ে গেছেন। কান্দাহার শহরের একটি মেডিকেল সূত্র বিবিসি পশতুকে জানিয়েছে, স্থানীয় হাসপাতাল চারজনের মরদেহ গ্রহণ করেছে। অন্যদিকে, পাকিস্তানের দিক থেকে তিনজনের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

উভয় পক্ষই রাতভর চার ঘণ্টার এই সংঘর্ষের কথা নিশ্চিত করেছে। তবে কে প্রথমে গুলি চালায়, তা নিয়ে চলছে পাল্টাপাল্টি দোষারোপ।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের মুখপাত্র মোশাররফ জাইদি তালেবানকে ‘বিনা উসকানিতে গুলিবর্ষণ’-এর জন্য অভিযুক্ত করেছেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘আমাদের সশস্ত্র বাহিনী তাৎক্ষণিক, উপযুক্ত এবং তীব্র জবাব দিয়েছে। পাকিস্তান তার আঞ্চলিক অখণ্ডতা ও নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সম্পূর্ণ সতর্ক ও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

অন্যদিকে, তালেবানের এক মুখপাত্রের দাবি, পাকিস্তান ‘আবারও হামলা শুরু করেছে’ এবং তাঁরা জবাব দিতে বাধ্য হয়েছেন।

সংঘর্ষের পর প্রকাশিত ফুটেজে দেখা গেছে, বিপুলসংখ্যক আফগান নাগরিক হেঁটে ও যানবাহনে করে স্পিন বোলদাক থেকে পালাচ্ছেন। আশপাশের শহরগুলোর বাসিন্দারাও নতুন করে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় এলাকা ছাড়তে শুরু করেছেন।

এই সংঘাত এমন এক সময়ে শুরু হলো, যখন দুই মাসেরও কম সময় আগে কাতার ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় উভয় পক্ষ একটি যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছিল। ২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতায় আসার পর এটি ছিল দুই পক্ষের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ লড়াইয়ের সমাপ্তি, যদিও তারপর থেকে উত্তেজনা চরম পর্যায়ে রয়েছে।

ইসলামাবাদ সরকার দীর্ঘদিন ধরে আফগানিস্তানের শাসক তালেবানের বিরুদ্ধে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ করে আসছে। এই গোষ্ঠীগুলো প্রায়ই পাকিস্তানে হামলা চালায়। তবে আফগানিস্তানের তালেবান সরকার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং ‘নিরাপত্তা নিশ্চিতে নিজস্ব ব্যর্থতার’ জন্য পাকিস্তান অন্যকে দোষারোপ করে বলে অভিযোগ করে এসেছে।

উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে উভয় পক্ষের প্রতিনিধিদল বৃহত্তর বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য সৌদি আরবে চতুর্থ দফা আলোচনায় মিলিত হয়েছিল। যদিও কোনো চুক্তি হয়নি, তবে সূত্র জানায়, উভয় পক্ষ যুদ্ধবিরতি চালিয়ে যেতে রাজি হয়েছে। সেই ঐকমত্য সত্ত্বেও, এই রক্তক্ষয়ী সংঘাত আঞ্চলিক অস্থিরতাকে আরও বাড়িয়ে তুলল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপির জেলা ও নগর আহ্বায়ক দুই মেরুতে

আজকের রাশিফল: ভার্চুয়াল হাতাহাতি থেকে দূরে থাকুন, সিদ্ধান্ত ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিন

মুর্শিদাবাদে ‘বাবরি মসজিদ’: সৌদি আলেমদের আমন্ত্রণ, ৪০ হাজার মানুষের জন্য রান্না হচ্ছে বিরিয়ানি

স্বপ্নের দেশে যাত্রা: এক মাস ধরে যোগাযোগ বন্ধ, অবশেষে বাড়িতে এল নৌকাডুবির খবর

এ বছর জীবনযাত্রার মানে সেরা ১০ দেশের নাম জেনে নিন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শশী থারুর কি কংগ্রেস ছাড়ছেন, জবাবে যা বললেন তিনি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ০০
ভারতের প্রভাবশালী কংগ্রেস নেতা শশী থারুর। ফাইল ছবি
ভারতের প্রভাবশালী কংগ্রেস নেতা শশী থারুর। ফাইল ছবি

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরের সময় গতকাল শুক্রবার রাষ্ট্রপতি ভবনে আয়োজিত উচ্চপর্যায়ের নৈশভোজে একমাত্র কংগ্রেস নেতা হিসেবে শশী থারুর আমন্ত্রণ পেয়েছেন। এতে দলের অভ্যন্তরে এবং রাজনৈতিক মহলে তীব্র জল্পনার সৃষ্টি হয়েছে। লোকসভা ও রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতাদের (রাহুল গান্ধী ও মল্লিকার্জুন খাড়গে) আমন্ত্রণ না জানানোর আবহে শশী থারুরের এই যোগদান নিঃসন্দেহে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। থারুর নিজেই এই নৈশভোজকে ‘চমৎকার’ বলে বর্ণনা করেছেন।

থারুর স্পষ্ট জানিয়েছেন, তাঁর এই আমন্ত্রণের নেপথ্যে কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নেই; বরং তাঁর পদাধিকারের গুরুত্ব রয়েছে। তিনি বর্তমানে বিদেশবিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান। এনডিটিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শশী থারুর বলেন, ‘কিছুদিন পর আবার রাষ্ট্রপতি ভবনে এলাম। আমার মনে হয়, বেশ কিছু বছর ধরে একটি ভিন্ন মনোভাব ছিল, কিন্তু এবার তারা অন্য কণ্ঠস্বরদের জন্য একটু বেশি দরজা খুলে দিতে রাজি হয়েছে। অন্য দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক যেহেতু সংসদীয় স্থায়ী কমিটি দেখভাল করে, তাই আলাপ-আলোচনার পরিবেশ এবং কথোপকথনের কিছু অন্তর্দৃষ্টি পাওয়া সহায়ক। এই কারণেই আমি এখানে এসে খুব খুশি। এর চেয়ে বেশি বা কম কিছু নয়।’

থারুর আরও গর্বের সঙ্গে স্মরণ করেন যে প্রায় ২০ বছর আগে ভূরাজনৈতিক সংহতি নিয়ে তিনি যে শব্দটি তৈরি করেছিলেন, তা আজ আরও বেশি প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে।

তবে বিরোধী দলনেতাদের অনুপস্থিতি নিয়ে দলের নেতা পবন খেড়া এবং জয়রাম রমেশ যে প্রশ্ন তুলেছিলেন, সে প্রসঙ্গে থারুর বলেন, আমন্ত্রণ জানানোর ভিত্তি সম্পর্কে তিনি অবগত নন, কিন্তু আমন্ত্রিত হয়ে তিনি অবশ্যই সম্মানিত।

সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন জাতীয় ইস্যুতে শশী থারুরকে সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা করতে দেখা গেছে। এটি তাঁর নিজ দলের অসন্তোষ বাড়িয়েছে। এই পরিস্থিতিতে থারুর সরকারের সঙ্গে কাজ করার বিষয়ে তাঁর নীতি ব্যাখ্যা করেন। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, নির্বাচনী এলাকার উন্নতির জন্য সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা করা একটি ভিন্ন আলোচনা, যার সঙ্গে রাষ্ট্রপতি ভবনে আমন্ত্রিত হওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই।

শশী থারুর বলেন, ‘সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা করার প্রশ্নে আপনি আপনার বিশ্বাস বা নীতিগুলো বিসর্জন দেন না, বরং আপনি সাধারণ ভিত্তি খুঁজে বের করেন। গণতন্ত্রের একটি অংশ হলো সরকার এবং বিরোধী দলের মধ্যে সাধারণ ভিত্তি খুঁজে নিয়ে কাজ করা। আমরা কিছু বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করি, কিছু বিষয়ে একমত, এবং যেখানে আমরা একমত, সেখানে আমাদের একসঙ্গে কাজ করা উচিত।’

কেন্দ্রীয় সরকারের ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর মতো কূটনৈতিক মিশনে তাঁকে অন্তর্ভুক্ত করার ঘটনা কংগ্রেসের জন্য বারবার অস্বস্তির কারণ হয়েছে। এই আবহে কেরালার তিরুবনন্তপুরমের এই সংসদ সদস্য কি কোনো বড় রাজনৈতিক পদক্ষেপ নিতে চলেছেন?

এই জল্পনার জবাবে থারুর একটি পরিমিত এবং রহস্যময় উত্তর দেন: ‘আমি জানি না কেন এই প্রশ্নটি করতে হবে। আমি কংগ্রেস পার্টির একজন সংসদ সদস্য। আমি নির্বাচিত হওয়ার জন্য যথেষ্ট কষ্ট করেছি। অন্য কিছু হতে গেলে যথেষ্ট চিন্তাভাবনা এবং বিভিন্ন বিষয় বিবেচনা করতে হবে।’

থারুর দৃঢ়ভাবে জানান, ভোটারদের প্রতি তাঁর দায়িত্ব সবার আগে। তিনি বলেন, ‘ভোটারদের এবং আমার নির্বাচনী এলাকার প্রতি আমার বাধ্যবাধকতা পূরণের জন্য আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করছি। এমনকি নৈশভোজের আগে কিছু কথোপকথনেও আমি আমাদের সরকারের কয়েকজন কর্মকর্তার কাছে আমার নির্বাচনী এলাকার জন্য নির্দিষ্ট কিছু বিষয় তুলে ধরার চেষ্টা করছিলাম। জনগণের জন্য কাজ আদায় করার এটাই রাজনৈতিক জীবনের মূল চালিকাশক্তি বা লাইফ ব্লাড।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপির জেলা ও নগর আহ্বায়ক দুই মেরুতে

আজকের রাশিফল: ভার্চুয়াল হাতাহাতি থেকে দূরে থাকুন, সিদ্ধান্ত ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিন

মুর্শিদাবাদে ‘বাবরি মসজিদ’: সৌদি আলেমদের আমন্ত্রণ, ৪০ হাজার মানুষের জন্য রান্না হচ্ছে বিরিয়ানি

স্বপ্নের দেশে যাত্রা: এক মাস ধরে যোগাযোগ বন্ধ, অবশেষে বাড়িতে এল নৌকাডুবির খবর

এ বছর জীবনযাত্রার মানে সেরা ১০ দেশের নাম জেনে নিন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত