Ajker Patrika

যুদ্ধবিরতির পর ইরানে দমন-পীড়নের নতুন ঢেউ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৫ জুন ২০২৫, ১০: ৪০
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধবিরতির পর ইরানে দমন-পীড়নের এক নতুন বাস্তবতা তৈরি হয়েছে। যুদ্ধ সাময়িকভাবে থেমে গেলেও ইসলামিক রিপাবলিক অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে কঠোর অবস্থান নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

বিশ্লেষক ও মানবাধিকারকর্মীরা সতর্ক করেছেন, সামরিক যুদ্ধের পাশাপাশি এখন ইরান অভ্যন্তরীণ ‘নিরাপত্তা শুদ্ধি অভিযানে’ নেমেছে। এরই অংশ হিসেবে কেরমানশাহ প্রদেশে ১১৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

প্রদেশটির প্রধান কৌঁসুলি হামিদরেজা কারিমি জানান, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে এক ইউরোপীয় নাগরিককে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে আটক করা হয়েছে। অল্প কিছু ব্যক্তির বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ আনা হয়েছে, তবে বেশির ভাগের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রবিরোধী প্রচারের অভিযোগ রয়েছে।

সরকারি সূত্র জানিয়েছে, গত কয়েক দিনে অন্তত তিনজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। বিভিন্ন শহরে আরও ডজনখানেক মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যাঁদের অপরাধ হিসেবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কার্যক্রম অথবা সন্দেহজনক যোগাযোগকে দায়ী করা হয়েছে।

‌ইউরোপীয় নাগরিকদের ওপর নজরদারি

অন্তত চারজন ইউরোপীয় নাগরিক গ্রেপ্তারের খবর পাওয়া গেছে। আজ মঙ্গলবার আইআরজিসি-ঘনিষ্ঠ তাসনিম সংবাদ সংস্থা জানায়, হরমোজগান প্রদেশে এক ইউরোপীয় নাগরিককে ‘পর্যটকের ছদ্মবেশে’ গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গতকাল সোমবার ফার্স নিউজ জানায়, হামেদান প্রদেশে আরেক ইউরোপীয় নাগরিককে ইসরায়েলের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে আটক করা হয়েছে। এর আগে, রোববার কেরমানশাহ প্রদেশ থেকে আরও একজন ইউরোপীয়কে একই অভিযোগে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে মেহর নিউজ।

এ ছাড়া ২০ জুন ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, মার্কাজি প্রদেশে এক ‘ইহুদি-জার্মান’ নাগরিককে সেনাবাহিনীর সংবেদনশীল ও পারমাণবিক এলাকাগুলোর তথ্য সংগ্রহের অভিযোগে আটক করা হয়েছে।

মৃত্যুদণ্ড কার্যকর ও আইনি পরিবর্তন

এর মধ্যেই ইরানের পার্লামেন্ট গোয়েন্দা ও অনুপ্রবেশসংশ্লিষ্ট মামলাগুলোতে দ্রুত বিচার ও কঠোর সাজা নিশ্চিত করতে নতুন আইন পাস করেছে। বিচার বিভাগের একজন মুখপাত্র জানান, ‘আগের আইনে অনেক গ্রেপ্তার ব্যক্তিকে বিচার করা সম্ভব হতো না। এখন আমরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে পারব।’

এ ছাড়া, গত কয়েকদিনে অন্তত তিনজনকে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।

কাদের টার্গেট করা হচ্ছে?

গ্রেপ্তারকৃতদের বেশিরভাগের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরকারের বিরুদ্ধে কথাবলার অভিযোগ আনা হয়েছে। অনেককে ‘রাষ্ট্রবিরোধী প্রচারণা’, ‘সামাজিক বিশৃঙ্খলা’ এবং ‘বিদেশি যোগাযোগ’-এর অভিযোগে আটক করা হয়েছে।

‌ভবিষ্যত কী হতে পারে?

বিশ্লেষকদের মতে, ইরানের ভেতরে ইসরায়েলি গুপ্তচরদের অনুপ্রবেশ ইরান সরকারকে অস্থির করে তুলেছে। যুদ্ধ সাময়িকভাবে থামলেও সরকারের নজর এখন দেশের ভেতরের ‘প্রতিপক্ষ’দের ওপর।

দোহা ইন্সটিটিউটের সিকিউরিটি স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক মুহান্নাদ সেলুম বলেন, এই মুহূর্তে ইরান প্রতিক্রিয়াশীল মনোভাব নিচ্ছে। তারা চাচ্ছে নিজেদের ভিতরে শক্তি প্রদর্শন করতে।

আন্তর্জাতিক মহলে ইরানের এই দমন-পীড়নের ঘটনাগুলো নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিলেও, ইরান সরকারের বক্তব্য স্পষ্ট—এই সময়ে রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বজায় রাখাই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।

সর্বপোরি, তেহরানে নিরাপত্তা বাহিনীর ভেতরে ইসরায়েলি অনুপ্রবেশের খবরে শাসকগোষ্ঠীর মধ্যে আতঙ্ক বেড়েছে। যুদ্ধের মাঠে সাময়িক বিরতি মিললেও ইরানের ভেতরে দমন-পীড়ন যেন নতুন মাত্রা পাচ্ছে।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনের মেয়ে কুমিল্লায় আটক

পটিয়ায় আওয়ামী লীগের বিজয় দিবস উদ্‌যাপন, ক্ষুব্ধ জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকারীরা

‘নিরাপত্তার’ কারণে নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা নারায়ণগঞ্জ–৫ আসনের বিএনপি প্রার্থীর

আজকের রাশিফল: বাবা-মা আজ আবদার রাখবেন, সিঙ্গেলরা দ্রুত প্রোফাইল পিক বদলান

ধানমন্ডি ৩২-এ ভাসানী, সিরাজ সিকদার, হাদির ছবি টানালেন জুলাই যোদ্ধারা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

৩০ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন ভারতীয় নারী, গ্রিন কার্ড সাক্ষাৎকারে গিয়ে আটক

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
বাব্বলজিৎ কৌড় ওরফে বাবলি। ছবি: সংগৃহীত
বাব্বলজিৎ কৌড় ওরফে বাবলি। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৩০ বছর বসবাস করেন ৬০ বছর বয়সী ভারতীয় বংশোদ্ভূত নারী বাব্বলজিৎ কৌড় ওরফে বাবলি। তাঁকে গ্রিন কার্ডের শেষ ধাপের সাক্ষাৎকারে আটক করেছেন দেশটির অভিবাসন কর্মকর্তারা।

আজ মঙ্গলবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।

বাবলি কৌড়ের মেয়ে জ্যোতি জানান, গ্রিন কার্ড আবেদন-সংক্রান্ত বায়োমেট্রিক স্ক্যানের জন্য ১ ডিসেম্বর বাবলি যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) কার্যালয়ে গেলে সেখানে ফেডারেল এজেন্টরা তাঁকে আটক করেন।

লং বিচ ওয়াচডগ জানিয়েছে, কৌড়ের আরেক মেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ও তাঁর স্বামী গ্রিন কার্ডধারী। তাঁরা মায়ের পক্ষে গ্রিন কার্ড পিটিশন দাখিল করেছিলেন, যা এরই মধ্যে অনুমোদিত হয়েছে।

জ্যোতি জানান, আইসিই কার্যালয়ের ফ্রন্ট ডেস্কে অপেক্ষার সময় কয়েকজন ফেডারেল এজেন্ট ভবনে প্রবেশ করেন। এরপর কৌড়কে একটি কক্ষে ডাকা হয়, যেখানে তাঁকে জানানো হয় যে, তাঁকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। যদিও তাঁকে আইনজীবীর সঙ্গে ফোনে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল, তবুও তাঁকে আটক রাখা হয়।

পরিবারের সদস্যদের কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত জানানো হয়নি কৌড়কে কোথায় নেওয়া হয়েছে। পরে জানা যায়, তাঁকে রাতারাতি অ্যাডেলান্টোয় স্থানান্তর করা হয়েছে, যা আগে একটি ফেডারেল কারাগার ছিল এবং বর্তমানে আইসিই ডিটেনশন সেন্টার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

দীর্ঘদিনের বসবাস ও পারিবারিক পরিচয়

পরিবারসহ যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমানোর পর কৌড় প্রথমে লাগুনা বিচে বসবাস শুরু করেন। পরে কাজের প্রয়োজনে তাঁরা লং বিচের বেলমন্ট শোর এলাকায় চলে যান। কৌড় ও তাঁর স্বামীর তিন সন্তান রয়েছে। তাঁদের মধ্যে ৩৪ বছর বয়সী জ্যোতি যুক্তরাষ্ট্রের ডিফার্ড অ্যাকশন ফর চাইল্ডহুড অ্যারাইভালস (ডিএসিএ) কর্মসূচির আওতায় বৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন এবং বড় ছেলে ও মেয়ে দুজনেই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, কৌড় ও তাঁর স্বামী দুই দশকের বেশি সময় বেলমন্ট শোরের সেকেন্ড স্ট্রিটে ‘নাটরাজ কুইজিন অব ইন্ডিয়া অ্যান্ড নেপাল’ নামে একটি রেস্তোরাঁ চালান। রেস্তোরাঁটি স্থানীয়দের কাছে বেশ জনপ্রিয়। এ ছাড়া তিনি প্রায় ২৫ বছর বেলমন্ট শোর রাইট এইড ফার্মেসিতে কাজ করেছেন। চলতি বছর প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর তিনি আবার রেস্তোরাঁয় কাজ শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।

মুক্তির দাবি

লং বিচের ডেমোক্র্যাট কংগ্রেসম্যান রবার্ট গার্সিয়া বাবলি কৌড়ের মুক্তির দাবি জানিয়েছেন। তাঁর কার্যালয় জানায়, বিষয়টি নিয়ে তিনি ফেডারেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছেন। কৌড়ের পরিবার আইনিপ্রক্রিয়ার মাধ্যমে জামিনে মুক্তির জন্য অতিরিক্ত আবেদন প্রস্তুত করছে।

পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, অ্যাডেলান্টো ডিটেনশন সেন্টারে কৌড়কে বড় ডরমিটরি ধরনের একটি কক্ষে রাখা হয়েছে, যেখানে আরও বহু বন্দী রয়েছেন। সারারাত আলো জ্বালানো থাকে এবং উচ্চ শব্দের কারণে ঘুমানো কঠিন হয়ে পড়ে।

স্বজনেরা জানিয়েছেন, কৌড়ের সঙ্গে স্বল্প সময়ের সাক্ষাতের সুযোগ পেলেও তাঁর জন্য পুরো দিন অপেক্ষা করতে হচ্ছে পরিবারের সদস্যদের।

মেয়ে জ্যোতি বলেন, ‘এটা এক দুঃস্বপ্ন। আমরা তাঁকে বের করে আনার জন্য সবকিছু করার চেষ্টা করছি। সে এখানে থাকার মতো কেউ নয়। এটা ভীষণ অমানবিক।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনের মেয়ে কুমিল্লায় আটক

পটিয়ায় আওয়ামী লীগের বিজয় দিবস উদ্‌যাপন, ক্ষুব্ধ জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকারীরা

‘নিরাপত্তার’ কারণে নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা নারায়ণগঞ্জ–৫ আসনের বিএনপি প্রার্থীর

আজকের রাশিফল: বাবা-মা আজ আবদার রাখবেন, সিঙ্গেলরা দ্রুত প্রোফাইল পিক বদলান

ধানমন্ডি ৩২-এ ভাসানী, সিরাজ সিকদার, হাদির ছবি টানালেন জুলাই যোদ্ধারা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পাকিস্তানি বলে গুঞ্জন—বন্ডাই বিচের হামলাকারীরা আসলে ভারতীয়

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
অস্ট্রেলিয়ার বন্ডাই বিচে হামলাকারী সাজিদ আকরাম (বায়ে) ও তাঁর ছেলে নাভিদ। ছবি: সংগৃহীত
অস্ট্রেলিয়ার বন্ডাই বিচে হামলাকারী সাজিদ আকরাম (বায়ে) ও তাঁর ছেলে নাভিদ। ছবি: সংগৃহীত

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই বিচে ইহুদি হানুক্কা উৎসব চলাকালে ভয়াবহ গুলিবর্ষণে এক হামলাকারী সহ ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় অভিযুক্ত দুই পিতা-পুত্র কোন দেশ থেকে অভিবাসী হয়েছিলেন, তা এখনো গোপন রেখেছে অস্ট্রেলিয়ার কর্তৃপক্ষ। তবে নামের কারণে শুরুর দিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই সন্দেহ করেন—তাঁরা পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত। অবশেষে মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) ভারতের তেলেঙ্গানা পুলিশের বরাতে এনডিটিভি জানিয়েছে, হামলাকারী সাজিদ আকরাম ও তাঁর পুত্র নাভিদ আকরাম আসলে ভারতের হায়দরাবাদের বাসিন্দা!

হামলার সময় ঘটনাস্থলেই পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারান ৫০ বছর বয়সী সাজিদ আকরাম। আর তাঁর ২৪ বছর বয়সী ছেলে নাভিদ আকরাম গুরুতর আহত অবস্থায় এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

তেলেঙ্গানার পুলিশ মহাপরিচালক জানিয়েছেন, সাজিদ আকরাম হায়দরাবাদের বাসিন্দা ছিলেন এবং ১৯৯৮ সালের নভেম্বরে শিক্ষার্থী ভিসায় অস্ট্রেলিয়ায় গিয়েছিলেন। এর পর গত ২৭ বছর ধরে তিনি সেখানেই বসবাস করেছেন। দীর্ঘ এই সময়ের মধ্যে তিনি ভারতে থাকা তাঁর পরিবারের সঙ্গে খুব কমই যোগাযোগ রাখতেন। পুলিশ দাবি করেছে, সাজিদের কথিত উগ্রবাদী হওয়ার সঙ্গে ভারতের কোনো আদর্শিক বা সাংগঠনিক সংযোগের প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

পুলিশ আরও জানায়, পারিবারিক বিরোধের জেরেই বহু বছর আগে হায়দরাবাদের আত্মীয়দের সঙ্গে সাজিদের সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায়। এমনকি ২০১৭ সালে তাঁর বাবার মৃত্যুর সময়ও তিনি জানাজায় অংশ নেননি। সর্বশেষ তিনি ২০২২ সালে হায়দরাবাদে গিয়েছিলেন।

সাজিদ আকরাম অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে ইউরোপীয় বংশোদ্ভূত ভেনেরা গ্রোসোকে বিয়ে করেন। পরিবারটি স্থায়ীভাবে সেখানেই বসবাস করছিল। তবে সাজিদ ভারতীয় পাসপোর্টই বহাল রেখেছিলেন। আর তাঁর ছেলে-মেয়ে অস্ট্রেলিয়ায় জন্ম নেওয়ায় তাঁরা অস্ট্রেলিয়ার পাসপোর্ট বহন করেন।

বন্ডাই বিচে হামলার ঘটনাটিকে ‘ইসলামিক স্টেট অনুপ্রাণিত সন্ত্রাসী হামলা’ বলে আখ্যা দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার ফেডারেল পুলিশ কমিশনার ক্রিসি ব্যারেট। তিনি বলেন, ‘অভিযুক্তরা বয়স বা শারীরিক সক্ষমতার তোয়াক্কা না করে শুধু মৃত্যুর সংখ্যা বাড়াতে আগ্রহী ছিলেন।’

এদিকে হামলার এক মাস আগে সাজিদ ও তাঁর ছেলে নাভিদ ফিলিপাইনের আইএস অধ্যুষিত একটি অঞ্চলে ভ্রমণ করেছিলেন বলে জানা গেছে। ফিলিপাইনের অভিবাসন দপ্তর জানিয়েছে, তাঁরা গত ১ নভেম্বর দেশটিতে প্রবেশ করে ২৮ নভেম্বর ফিরে যান। অস্ট্রেলীয় কর্তৃপক্ষ এই সফরের উদ্দেশ্য ও গন্তব্য নিয়ে এখন তদন্ত চালাচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনের মেয়ে কুমিল্লায় আটক

পটিয়ায় আওয়ামী লীগের বিজয় দিবস উদ্‌যাপন, ক্ষুব্ধ জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকারীরা

‘নিরাপত্তার’ কারণে নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা নারায়ণগঞ্জ–৫ আসনের বিএনপি প্রার্থীর

আজকের রাশিফল: বাবা-মা আজ আবদার রাখবেন, সিঙ্গেলরা দ্রুত প্রোফাইল পিক বদলান

ধানমন্ডি ৩২-এ ভাসানী, সিরাজ সিকদার, হাদির ছবি টানালেন জুলাই যোদ্ধারা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিশ্বজুড়ে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের বীজ বুনেছেন ট্রাম্প—ইয়েল বিশেষজ্ঞের সতর্কতা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
গত ১৫ আগস্ট রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত
গত ১৫ আগস্ট রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বজুড়ে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আশঙ্কা নতুন করে আলোচনায় এসেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ও বর্তমান পররাষ্ট্রনীতিকে ঘিরে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শীর্ষ ইতিহাসবিদ সতর্ক করেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতি ভবিষ্যতে ভয়াবহ বৈশ্বিক সংঘাতের বীজ বপন করছে।

ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক গ্রেগ গ্র্যান্ডিন বলেন, ট্রাম্প প্রশাসনের আগ্রাসী ও একতরফা পররাষ্ট্রনীতি বিশ্বব্যবস্থাকে বিপজ্জনক প্রতিদ্বন্দ্বিতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তাঁর মতে, এই নীতি শুধু আন্তর্জাতিক সহযোগিতাকে দুর্বল করছে না, বরং বড় ধরনের সামরিক সংঘাতের সম্ভাবনাও বাড়াচ্ছে।

সম্প্রতি হোয়াইট হাউস প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কৌশল প্রতিবেদনের প্রসঙ্গ টেনে গ্র্যান্ডিন বলেন, এতে স্পষ্টভাবে একটি সামরিক ও আধিপত্যবাদী দৃষ্টিভঙ্গি ফুটে উঠেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র আর এমন বৈশ্বিক দায়ভার বহন করবে না, যা সরাসরি তাদের জাতীয় স্বার্থের সঙ্গে যুক্ত নয়। একই সঙ্গে এই প্রতিবেদনে ‘মনরো ডকট্রিন’ আবারও জোরালোভাবে কার্যকর করার অঙ্গীকার করা হয়েছে, যার লক্ষ্য পশ্চিম গোলার্ধে মার্কিন আধিপত্য পুনঃপ্রতিষ্ঠা।

নিউইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত এক প্রবন্ধে অধ্যাপক গ্র্যান্ডিন লিখেছেন—উনিশ শতকে ইউরোপীয় শক্তিগুলোকে লাতিন আমেরিকা থেকে দূরে রাখার উদ্দেশ্যে ঘোষিত ‘মনরো ডকট্রিন’ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হস্তক্ষেপ ও প্রতিবেশী দেশগুলোর ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার হাতিয়ারে পরিণত হয়। লাতিন আমেরিকার বহু দেশ একে সরাসরি মার্কিন হস্তক্ষেপ হিসেবেই দেখেছে।

গ্র্যান্ডিনের মতে, বর্তমান বিশ্বব্যবস্থা যখন বিভিন্ন প্রভাব বলয়ে বিভক্ত হচ্ছে, তখন প্রতিটি আঞ্চলিক শক্তি নিজেদের প্রভাবক্ষেত্র নিয়ন্ত্রণে আনতে চাইছে। উদাহরণস্বরূপ—সাবেক সোভিয়েত আমলের অঞ্চলসমূহকে নিয়ন্ত্রণে আনতে চাইছে, চীন চাইছে দক্ষিণ চীন সাগরসহ আশপাশে, আর যুক্তরাষ্ট্র লাতিন আমেরিকায়। গ্র্যান্ডিন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর বক্তব্য উদ্ধৃত করে বলেন, ‘আমেরিকা ফার্স্ট মানে আগে নিজের গোলার্ধ।’

তিনি অভিযোগ করেন, সাম্প্রতিক সময়ে ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা ও হন্ডুরাসের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে নাক গলাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এ ছাড়া তারা কলম্বিয়া ও মেক্সিকোকে হুমকি দিচ্ছে, কিউবা ও নিকারাগুয়াকে চাপের মধ্যে রাখছে, পানামা খালে প্রভাব বাড়াচ্ছে এবং ভেনেজুয়েলার উপকূলে একটি তেলবাহী জাহাজ জব্দ করেছে।

অধ্যাপক গ্র্যান্ডিন স্মরণ করিয়ে দেন, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর যুক্তরাষ্ট্র লিগ অব নেশনসে যোগ না দিয়ে লাতিন আমেরিকায় অবাধ হস্তক্ষেপের স্বাধীনতা ধরে রাখতে চেয়েছিল। এই ধারণা এতটাই প্রভাবশালী ছিল যে—জাপান, ব্রিটেন এমনকি নাৎসি জার্মানিও নিজেদের সাম্রাজ্য বিস্তারে একই ধরনের পথ বেছে নিয়েছিল।

গ্র্যান্ডিন সতর্ক করে বলেন—আজকের দিনে ট্রাম্প প্রশাসন অতীতের সেই একই বীজ বপন করছে। যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও রাশিয়ার মধ্যে বহুমুখী শক্তির দ্বন্দ্ব, ইউরোপে বিভাজন এবং লাতিন আমেরিকায় হুমকির রাজনীতি শেষ পর্যন্ত আরও সংঘাত, আরও উত্তেজনা এবং সম্ভবত নতুন এক বিশ্বযুদ্ধের দিকে বিশ্বকে ঠেলে দিতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনের মেয়ে কুমিল্লায় আটক

পটিয়ায় আওয়ামী লীগের বিজয় দিবস উদ্‌যাপন, ক্ষুব্ধ জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকারীরা

‘নিরাপত্তার’ কারণে নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা নারায়ণগঞ্জ–৫ আসনের বিএনপি প্রার্থীর

আজকের রাশিফল: বাবা-মা আজ আবদার রাখবেন, সিঙ্গেলরা দ্রুত প্রোফাইল পিক বদলান

ধানমন্ডি ৩২-এ ভাসানী, সিরাজ সিকদার, হাদির ছবি টানালেন জুলাই যোদ্ধারা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ব্রাজিলে ধসে পড়ল ‘স্ট্যাচু অব লিবার্টির’ ১১০ ফুট উঁচু রেপ্লিকা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবিটি ভিডিও থেকে নেওয়া
ছবিটি ভিডিও থেকে নেওয়া

ব্রাজিলের দক্ষিণাঞ্চলীয় একটি শহরে প্রবল ঝোড়ো হাওয়ার আঘাতে ১১০ ফুট উচ্চতার ‘স্ট্যাচু অব লিবার্টির’ একটি প্রতিরূপ ভেঙে পড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) ডেইলি মেইল জানিয়েছে, স্থানীয় সময় সোমবার বিকেল তিনটার দিকে রিও গ্রান্দে দো সুল অঙ্গরাজ্যের গুয়াইবা শহরে ওই ঘটনা ঘটে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, ঝড়ের তীব্রতায় বিশাল আকৃতির মূর্তিটি ধীরে ধীরে একদিকে হেলে পড়তে শুরু করে। কিছুক্ষণের মধ্যেই সেটি পাশের একটি গাড়ি পার্কিং এলাকায় আছড়ে পড়ে এবং কয়েকটি অংশে ভেঙে যায়।

মূর্তিটি পড়ে যাওয়ার মুহূর্তে আশপাশে থাকা গাড়িগুলো দ্রুত সরে যেতে দেখা যায়। সৌভাগ্যক্রমে, এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি বলে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

গুয়াইবা শহরের একটি বড় খুচরা বিক্রয় কেন্দ্রের পার্কিং এলাকায় স্থাপিত ওই প্রতিরূপটির মোট উচ্চতা ছিল প্রায় ১১০ ফুট। তবে দোকান কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মূলত মূর্তির ওপরের অংশটি, যার উচ্চতা ছিল প্রায় ৭৮ ফুট। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে অবস্থিত মূল স্ট্যাচু অব লিবার্টির উচ্চতা প্রায় ৩০৫ ফুট।

দুর্ঘটনার পরপরই নিরাপত্তার স্বার্থে গাড়ি পার্কিং এলাকা ঘিরে ফেলা হয় এবং ক্রেতা ও কর্মীদের সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়। দোকান পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানটি একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, ২০২০ সালে দোকানটি চালু হওয়ার সময় থেকেই এই প্রতিরূপটি সেখানে স্থাপিত ছিল এবং এটি প্রয়োজনীয় সব ধরনের অনুমোদন ও সনদপ্রাপ্ত ছিল। ধ্বংসাবশেষ অপসারণে বিশেষজ্ঞ দল কাজ শুরু করেছে বলেও জানানো হয়।

এদিকে গুয়াইবার মেয়র মার্সেলো মারানাতা ঘটনাস্থলে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, স্থানীয় জরুরি সেবা দল ও অঙ্গরাজ্যের সিভিল ডিফেন্স কর্তৃপক্ষ একসঙ্গে কাজ করে পুরো এলাকা নিরাপদ করেছে, যাতে আশপাশে আর কোনো ক্ষয়ক্ষতি না হয়।

এই ঘটনা এমন এক সময় ঘটল, যখন ব্রাজিলের দক্ষিণাঞ্চলে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৯০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যাচ্ছিল। এর কয়েক ঘণ্টা আগেই কর্তৃপক্ষ প্রবল বাতাস ও ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কতা জারি করেছিল। অঙ্গরাজ্যের অন্যান্য এলাকাতেও বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া, ঘরের ছাদ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া এবং গাছ উপড়ে পড়ার খবর পাওয়া গেছে। পাশাপাশি ভারী বৃষ্টির কারণে পাশের শহর লাজেয়াদোতে আকস্মিক বন্যার পরিস্থিতিও তৈরি হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনের মেয়ে কুমিল্লায় আটক

পটিয়ায় আওয়ামী লীগের বিজয় দিবস উদ্‌যাপন, ক্ষুব্ধ জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকারীরা

‘নিরাপত্তার’ কারণে নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা নারায়ণগঞ্জ–৫ আসনের বিএনপি প্রার্থীর

আজকের রাশিফল: বাবা-মা আজ আবদার রাখবেন, সিঙ্গেলরা দ্রুত প্রোফাইল পিক বদলান

ধানমন্ডি ৩২-এ ভাসানী, সিরাজ সিকদার, হাদির ছবি টানালেন জুলাই যোদ্ধারা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত