আজকের পত্রিকা ডেস্ক

যুক্তরাজ্যের অভিবাসন নীতিতে বড় পরিবর্তন আসছে। আজ সোমবার এ সংক্রান্ত একটি পরিকল্পনা প্রকাশের কথা রয়েছে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের। নতুন অভিবাসন নীতি অনুযায়ী—বিদেশি নাগরিকেরা আর ৫ বছর পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে নাগরিকত্ব বা স্থায়ী বসবাসের জন্য আবেদন করতে পারবেন না।
নতুন নীতিতে, এখন থেকে অধিকাংশ অভিবাসীকে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে হলে ১০ বছর অপেক্ষা করতে হবে। তবে, কেউ যদি প্রমাণ করতে পারেন যে তিনি দেশের অর্থনীতি ও সমাজে ‘বাস্তব ও স্থায়ী অবদান’ রেখেছেন, তাহলে তিনি ১০ বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই আবেদন করতে পারবেন। উদাহরণস্বরূপ, যারা নিয়মিত আয়কর দেন, ন্যাশনাল হেলথ সেন্টারে (এনএইচএস) চিকিৎসক, নার্স বা হাসপাতালের কর্মী হিসেবে কাজ করেন, বা ব্যতিক্রমী স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজে যুক্ত আছেন—তাঁদের জন্য এই সুযোগ থাকবে।
স্থায়ী বসবাস বা নাগরিকত্ব পাওয়ার মানে হলো—কল্যাণ ভাতা, বিনা মূল্যে স্বাস্থ্যসেবা, ভোটাধিকার এবং ব্রিটিশ পাসপোর্টের জন্য আবেদন করার সুযোগ পাওয়া। এই নতুন নিয়ম অনেকটা ডেনমার্কের মতো, যেখানে অভিবাসীদের সমাজের সঙ্গে ভালোভাবে মিশে যেতে এবং দায়িত্বশীল নাগরিক হয়ে ওঠার জন্য নানা শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়। ডেনমার্কের নাগরিকত্ব পাওয়ার প্রক্রিয়াটিও বেশ সময়সাপেক্ষ।
ব্রিটেন সরকারের ভাষ্যমতে, নিট অভিবাসনের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতেই এই পদক্ষেপগুলো নেওয়া হচ্ছে। ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত ১২ মাসে নিট অভিবাসনের সংখ্যা ছিল ৭ লাখ ২৮ হাজার। একই সঙ্গে, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে লেবার পার্টিকে চাপে ফেলতে থাকা রিফর্ম ইউকে পার্টির (নাইজেল ফারাজের দল) হুমকিও মোকাবিলা করা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। অন্যদিকে, কনজারভেটিভ পার্টি ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির সমালোচনা করে বলেছে—তারা মোট অভিবাসন সংখ্যা কমাতে কোনো নির্দিষ্ট সীমা (ক্যাপ) নির্ধারণ করেনি। নির্দিষ্ট সীমা নির্ধারণ নিশ্চিত করতে আজ পার্লামেন্টে ভোটাভুটি করবে বলেও জানিয়েছিলেন তাঁরা।
ভিসা পেতে ইংরেজি দক্ষতায় কড়াকড়ি, বাড়ছে শর্ত
যুক্তরাজ্যে ভিসা পেতে হলে এখন থেকে বিদেশি দক্ষ কর্মীদের আরও কঠিন ইংরেজি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। নতুন অভিবাসন নীতিতে বলা হয়েছে, তাঁদের এখন এমন পর্যায়ের ইংরেজি জানতে হবে যা ‘এ’ লেভেল সমমানের—যেখানে তাঁরা স্বতঃস্ফূর্ত ও সাবলীলভাবে সামাজিক, একাডেমিক ও পেশাগত পরিবেশে কথা বলতে পারবেন। এর আগে শুধু জিসিএসই সমমানের ইংরেজি জানলেই চলত, যেখানে শুধু দৈনন্দিন বিষয় বুঝতে পারা এবং ভ্রমণের সময় সম্ভাব্য পরিস্থিতি মোকাবিলার দক্ষতা থাকাই যথেষ্ট বলে বিবেচিত হতো।
এখন থেকে শুধু ভিসার জন্য নয়—যারা স্থায়ীভাবে বসবাস বা নাগরিকত্ব চাচ্ছেন, এমনকি যারা বিদেশি শিক্ষার্থী, তাঁদের ক্ষেত্রেও এই এ-লেভেল মানের ইংরেজি বা বি-২ লেভেলের ইংরেজি জানার শর্ত প্রযোজ্য হবে।
আর প্রথমবারের মতো, যারা সফল ভিসা আবেদনকারীর সঙ্গী, সন্তান বা অভিভাবক হিসেবে যুক্তরাজ্যে যেতে চান, তাঁদেরও এ-১ স্তরের ইংরেজি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে—যেখানে ইংরেজির প্রাথমিক জ্ঞান যাচাই করা হয়। যদি তাঁরা যুক্তরাজ্যে আরও দুই বছর থাকতে চান, তাহলে তাঁদের আরও ভালো ইংরেজি জেনে এ-২ স্তরের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।
বিদেশ থেকে কেয়ার কর্মী নেওয়া বন্ধ, নিয়োগ দিতে হবে দেশের ভেতর থেকেই
এ বছরের শেষ থেকে কেয়ার হোমগুলো আর সরাসরি বিদেশ থেকে কর্মী আনতে পারবে না। এখন থেকে তাদের যুক্তরাজ্যে থাকা বিদেশি নাগরিক বা ব্রিটিশ নাগরিকদের কর্মী নিয়োগ করতে হবে।
গতকাল রোববার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইভেট কুপার এই ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ‘যুক্তরাজ্যে বর্তমানে প্রায় ৪০ হাজারের মতো বিদেশি কর্মী রয়েছেন, যারা কেয়ার ভিসায় এসেছেন, কিন্তু পরে তাঁদের স্পনসরশিপ বাতিল হয়েছে। ওই ৪০ হাজার অভিবাসী থেকেই কর্মী নিয়োগ দিতে পারবে কেয়ার হোমগুলো। তাই আমরা বিদেশ থেকে নতুন নিয়োগ বন্ধ করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই সিদ্ধান্তের পাশাপাশি কেয়ার সেক্টরে কর্মীদের “ন্যায্য মজুরি” নিশ্চিতকরণের বিষয়টি নিয়েও এগোচ্ছি। কেয়ার সেক্টরের মূল সমস্যাগুলো কোনো দিনই ঠিকভাবে সমাধান হয়নি। এবার আমরা সেটাই করব।’
কেয়ার ভিসার পাশাপাশি অন্য ভিসায় আসা অভিবাসীদেরও এই সেক্টরে নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। পাশাপাশি দেশীয় কর্মীদের প্রশিক্ষণের জন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনাও নেওয়া হচ্ছে।
নতুন এই সিদ্ধান্তের পর প্রায় ৫০ হাজার ভিসা কম ইস্যু হবে বলে ধারণা করছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
২০২৪ সালের জানুয়ারিতে যেখানে স্বাস্থ্য ও কেয়ার ভিসার সংখ্যা ছিল প্রায় দেড় লাখ, ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে তা কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ২৮ হাজার ৭০০ এ—এর মধ্যে প্রায় ৭ হাজার জন ছিলেন সামাজিক কেয়ার ওয়ার্কার। কনজারভেটিভ সরকার বিদেশি কেয়ার ওয়ার্কারদের পরিবারের সদস্যদের যুক্তরাজ্যে আনার সুযোগ বন্ধ করে দেওয়ার পর কমে আসে এই সংখ্যা।
লেবার পার্টির নতুন এই সিদ্ধান্তে উদ্বেগ জানিয়েছেন কেয়ার ইংল্যান্ডের প্রধান নির্বাহী মার্টিন গ্রিন। তিনি বলেন, ‘এটা একটা বড় ধাক্কা। এই সেক্টর বহুদিন ধরে বাজেট স্বল্পতা, অতিরিক্ত ব্যয় আর কর্মী সংকটের সঙ্গে লড়াই করে টিকে আছে। বিদেশি কর্মী নিয়োগ যথাযথ সমাধান না হলেও, অনেকটা শেষ সম্বলের মতো ছিল সেটি। কোনো বিকল্প না খুঁজে আগেই সেটি বন্ধ করে দেওয়া হলো—এটা কেবল অদূরদর্শিতা নয়, নিষ্ঠুরতাও।’
অপরাধীদের দেশে ফেরত পাঠানো
যুক্তরাজ্যে বসবাসরত অভিবাসীদের জন্য এবার আসতে চলেছে কঠিন সময়। শ্বেতপত্রে নতুন প্রস্তাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইভেট কুপার জানিয়ে দিয়েছেন, এখন থেকে ছোটখাটো কোনো অপরাধ করেও পার পাবে না কেউ। ছোটখাটো নিয়মভঙ্গের অপরাধ করলেও তা সঙ্গে সঙ্গে জানানো হবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে।
নতুন এই নিয়মের আগ পর্যন্ত শুধু এক বছরের বেশি কারাদণ্ড হলে তবেই স্বরাষ্ট্র দপ্তরে রিপোর্ট করা হতো এবং তাঁকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বহিষ্কারের প্রক্রিয়া শুরু করা যেত। কিন্তু নতুন নিয়মে ছোট অপরাধ করলেও ভিসা বাতিল হয়ে দেশে ফেরত পাঠানোর ঝুঁকি বাড়বে।
এ ছাড়া নতুন এই ব্যবস্থায় যদি কোনো বিদেশি যৌন অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে অপরাধীর তালিকায় ওঠেন, তাহলে তাঁর অপরাধ যত ছোটই হোক, তাঁকে ‘গুরুতর অপরাধী’ হিসেবে বিবেচনা করা হবে। ফলে তিনি আর যুক্তরাজ্যে আশ্রয় চেয়ে সুরক্ষা পাবেন না। এমনকি নিজ দেশে অপরাধ করে তা গোপন রেখে যুক্তরাজ্যে এলে তাঁদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে এই নিয়ম। তাঁর অপরাধ সম্পর্কে জানা মাত্রই দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হবে।
বিদেশি কর্মীদের শিক্ষাগত যোগ্যতার মানদণ্ড বৃদ্ধি
শ্বেতপত্রে বলা হয়েছে, দক্ষ বিদেশি কর্মীদের জন্য যোগ্যতার মানদণ্ড আবারও স্নাতক পর্যায়ে ফিরিয়ে আনা হবে। বরিস জনসনের সময় এই শর্ত বাতিল করে এর পরিবর্তে একটি পয়েন্টভিত্তিক অভিবাসন ব্যবস্থা চালু করা হয়েছিল, যেখানে কেবল এ-লেভেল সমমানের যোগ্যতা এবং বেতনের ভিত্তিতে বিদেশি কর্মীদের ভিসা দেওয়া হতো।
তবে এখনো নিয়োগকর্তারা পয়েন্টভিত্তিক ব্যবস্থার আওতায় অপেক্ষাকৃত কম দক্ষ কর্মীদের নিয়োগ দিতে পারবেন—কিন্তু কেবল সেসব খাতে যেগুলোকে সরকার ‘জরুরি খাত’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে এবং যেখানে জনবল সংকট দেশের অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর হয়ে উঠেছে, যেমন—আইটি, নির্মাণ ও প্রকৌশল।
এই খাতে বিদেশি কর্মী নিয়োগ কেবল ‘অস্থায়ী ও নির্দিষ্ট মেয়াদে’ অনুমোদিত হবে এবং নিয়োগকর্তাদের একটি নতুন সরকারি সংস্থার কাছে প্রমাণ দিতে হবে যে তাঁরা ব্রিটিশ কর্মীদের প্রশিক্ষণের জন্য অ্যাপ্রেনটিসশিপ ও অন্যান্য প্রকল্প চালাচ্ছেন, যাতে ভবিষ্যতে এই ঘাটতি পূরণ করা যায়।
বিদেশি গ্র্যাজুয়েটদের জন্য নতুন বাধা আসছে
শ্বেতপত্রে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, যুক্তরাজ্যে থাকতে চাইলে বিদেশি গ্র্যাজুয়েটদের শুধু ভালো বেতনের চাকরি হলেই হবে না—চাকরিটা হতে হবে অবশ্যই দক্ষতা-ভিত্তিক, গ্র্যাজুয়েট পর্যায়ের। এখন পর্যন্ত নিয়ম ছিল, ডিগ্রি শেষ করার পর বিদেশি শিক্ষার্থীরা দুই বছর (আর পিএইচডি করলে তিন বছর) যুক্তরাজ্যে ‘গ্র্যাজুয়েট ভিসা’ নিয়ে চাকরি খুঁজতে পারবেন। এই সুযোগকে স্থায়ীভাবে যুক্তরাজ্যে থেকে যাওয়ার পথ বা ‘পেছনের দরজা’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তাই নতুন নিয়ম করল যুক্তরাজ্য সরকার।
তবে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইভেট কুপার অভিবাসন কমাতে কোনো নির্দিষ্ট লক্ষ্য বা সংখ্যাগত সীমা নির্ধারণ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা নিট অভিবাসন উল্লেখযোগ্যভাবে কমানোর পরিকল্পনা নিচ্ছি। আপনি জানেন, অতীতে কনজারভেটিভ সরকারগুলো অনেক লক্ষ্য ও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, কিন্তু সেগুলোর কিছুই পূরণ হয়নি। ফলে, এসব লক্ষ্য সরকারের বিশ্বাসযোগ্যতাকেই ক্ষুণ্ন করেছে। এ কারণেই আমরা নির্দিষ্ট সংখ্যা নির্ধারণের পথ অনুসরণ করছি না।’
এদিকে কনজারভেটিভ পার্টি বলছে, তারা অভিবাসনের ওপর বাধ্যতামূলক সীমা (ক্যাপ) চালু করার পক্ষে। পাশাপাশি অভিবাসন ইস্যুতে মানবাধিকার আইনের কিছু দিকও বাতিল চায় তারা। আর এ ইস্যুতে আজ সোমবার পার্লামেন্টে ভোটাভুটি হবে বলেও জানিয়েছে দলটি। ছায়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস ফিলিপ বলেন, ‘স্টারমার একসময় বিপজ্জনক বিদেশি অপরাধীদের ফেরত পাঠানোর বিরোধিতা করেছিলেন। এখন তিনিই অভিবাসন নিয়ে কঠোর হচ্ছেন—এটা হাস্যকর!’
তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন, ‘স্টারমার নিজের দলের এমপিদের দিয়েই ১০ বছর আবাসকাল ও অবদানের শর্তের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন। অথচ এখন সেটিই কার্যকর করতে চলেছেন। কনজারভেটিভদের নেওয়া পদক্ষেপেরই কৃতিত্ব নিতে চাইছেন তিনি।’

যুক্তরাজ্যের অভিবাসন নীতিতে বড় পরিবর্তন আসছে। আজ সোমবার এ সংক্রান্ত একটি পরিকল্পনা প্রকাশের কথা রয়েছে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের। নতুন অভিবাসন নীতি অনুযায়ী—বিদেশি নাগরিকেরা আর ৫ বছর পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে নাগরিকত্ব বা স্থায়ী বসবাসের জন্য আবেদন করতে পারবেন না।
নতুন নীতিতে, এখন থেকে অধিকাংশ অভিবাসীকে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে হলে ১০ বছর অপেক্ষা করতে হবে। তবে, কেউ যদি প্রমাণ করতে পারেন যে তিনি দেশের অর্থনীতি ও সমাজে ‘বাস্তব ও স্থায়ী অবদান’ রেখেছেন, তাহলে তিনি ১০ বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই আবেদন করতে পারবেন। উদাহরণস্বরূপ, যারা নিয়মিত আয়কর দেন, ন্যাশনাল হেলথ সেন্টারে (এনএইচএস) চিকিৎসক, নার্স বা হাসপাতালের কর্মী হিসেবে কাজ করেন, বা ব্যতিক্রমী স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজে যুক্ত আছেন—তাঁদের জন্য এই সুযোগ থাকবে।
স্থায়ী বসবাস বা নাগরিকত্ব পাওয়ার মানে হলো—কল্যাণ ভাতা, বিনা মূল্যে স্বাস্থ্যসেবা, ভোটাধিকার এবং ব্রিটিশ পাসপোর্টের জন্য আবেদন করার সুযোগ পাওয়া। এই নতুন নিয়ম অনেকটা ডেনমার্কের মতো, যেখানে অভিবাসীদের সমাজের সঙ্গে ভালোভাবে মিশে যেতে এবং দায়িত্বশীল নাগরিক হয়ে ওঠার জন্য নানা শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়। ডেনমার্কের নাগরিকত্ব পাওয়ার প্রক্রিয়াটিও বেশ সময়সাপেক্ষ।
ব্রিটেন সরকারের ভাষ্যমতে, নিট অভিবাসনের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতেই এই পদক্ষেপগুলো নেওয়া হচ্ছে। ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত ১২ মাসে নিট অভিবাসনের সংখ্যা ছিল ৭ লাখ ২৮ হাজার। একই সঙ্গে, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে লেবার পার্টিকে চাপে ফেলতে থাকা রিফর্ম ইউকে পার্টির (নাইজেল ফারাজের দল) হুমকিও মোকাবিলা করা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। অন্যদিকে, কনজারভেটিভ পার্টি ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির সমালোচনা করে বলেছে—তারা মোট অভিবাসন সংখ্যা কমাতে কোনো নির্দিষ্ট সীমা (ক্যাপ) নির্ধারণ করেনি। নির্দিষ্ট সীমা নির্ধারণ নিশ্চিত করতে আজ পার্লামেন্টে ভোটাভুটি করবে বলেও জানিয়েছিলেন তাঁরা।
ভিসা পেতে ইংরেজি দক্ষতায় কড়াকড়ি, বাড়ছে শর্ত
যুক্তরাজ্যে ভিসা পেতে হলে এখন থেকে বিদেশি দক্ষ কর্মীদের আরও কঠিন ইংরেজি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। নতুন অভিবাসন নীতিতে বলা হয়েছে, তাঁদের এখন এমন পর্যায়ের ইংরেজি জানতে হবে যা ‘এ’ লেভেল সমমানের—যেখানে তাঁরা স্বতঃস্ফূর্ত ও সাবলীলভাবে সামাজিক, একাডেমিক ও পেশাগত পরিবেশে কথা বলতে পারবেন। এর আগে শুধু জিসিএসই সমমানের ইংরেজি জানলেই চলত, যেখানে শুধু দৈনন্দিন বিষয় বুঝতে পারা এবং ভ্রমণের সময় সম্ভাব্য পরিস্থিতি মোকাবিলার দক্ষতা থাকাই যথেষ্ট বলে বিবেচিত হতো।
এখন থেকে শুধু ভিসার জন্য নয়—যারা স্থায়ীভাবে বসবাস বা নাগরিকত্ব চাচ্ছেন, এমনকি যারা বিদেশি শিক্ষার্থী, তাঁদের ক্ষেত্রেও এই এ-লেভেল মানের ইংরেজি বা বি-২ লেভেলের ইংরেজি জানার শর্ত প্রযোজ্য হবে।
আর প্রথমবারের মতো, যারা সফল ভিসা আবেদনকারীর সঙ্গী, সন্তান বা অভিভাবক হিসেবে যুক্তরাজ্যে যেতে চান, তাঁদেরও এ-১ স্তরের ইংরেজি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে—যেখানে ইংরেজির প্রাথমিক জ্ঞান যাচাই করা হয়। যদি তাঁরা যুক্তরাজ্যে আরও দুই বছর থাকতে চান, তাহলে তাঁদের আরও ভালো ইংরেজি জেনে এ-২ স্তরের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।
বিদেশ থেকে কেয়ার কর্মী নেওয়া বন্ধ, নিয়োগ দিতে হবে দেশের ভেতর থেকেই
এ বছরের শেষ থেকে কেয়ার হোমগুলো আর সরাসরি বিদেশ থেকে কর্মী আনতে পারবে না। এখন থেকে তাদের যুক্তরাজ্যে থাকা বিদেশি নাগরিক বা ব্রিটিশ নাগরিকদের কর্মী নিয়োগ করতে হবে।
গতকাল রোববার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইভেট কুপার এই ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ‘যুক্তরাজ্যে বর্তমানে প্রায় ৪০ হাজারের মতো বিদেশি কর্মী রয়েছেন, যারা কেয়ার ভিসায় এসেছেন, কিন্তু পরে তাঁদের স্পনসরশিপ বাতিল হয়েছে। ওই ৪০ হাজার অভিবাসী থেকেই কর্মী নিয়োগ দিতে পারবে কেয়ার হোমগুলো। তাই আমরা বিদেশ থেকে নতুন নিয়োগ বন্ধ করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই সিদ্ধান্তের পাশাপাশি কেয়ার সেক্টরে কর্মীদের “ন্যায্য মজুরি” নিশ্চিতকরণের বিষয়টি নিয়েও এগোচ্ছি। কেয়ার সেক্টরের মূল সমস্যাগুলো কোনো দিনই ঠিকভাবে সমাধান হয়নি। এবার আমরা সেটাই করব।’
কেয়ার ভিসার পাশাপাশি অন্য ভিসায় আসা অভিবাসীদেরও এই সেক্টরে নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। পাশাপাশি দেশীয় কর্মীদের প্রশিক্ষণের জন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনাও নেওয়া হচ্ছে।
নতুন এই সিদ্ধান্তের পর প্রায় ৫০ হাজার ভিসা কম ইস্যু হবে বলে ধারণা করছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
২০২৪ সালের জানুয়ারিতে যেখানে স্বাস্থ্য ও কেয়ার ভিসার সংখ্যা ছিল প্রায় দেড় লাখ, ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে তা কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ২৮ হাজার ৭০০ এ—এর মধ্যে প্রায় ৭ হাজার জন ছিলেন সামাজিক কেয়ার ওয়ার্কার। কনজারভেটিভ সরকার বিদেশি কেয়ার ওয়ার্কারদের পরিবারের সদস্যদের যুক্তরাজ্যে আনার সুযোগ বন্ধ করে দেওয়ার পর কমে আসে এই সংখ্যা।
লেবার পার্টির নতুন এই সিদ্ধান্তে উদ্বেগ জানিয়েছেন কেয়ার ইংল্যান্ডের প্রধান নির্বাহী মার্টিন গ্রিন। তিনি বলেন, ‘এটা একটা বড় ধাক্কা। এই সেক্টর বহুদিন ধরে বাজেট স্বল্পতা, অতিরিক্ত ব্যয় আর কর্মী সংকটের সঙ্গে লড়াই করে টিকে আছে। বিদেশি কর্মী নিয়োগ যথাযথ সমাধান না হলেও, অনেকটা শেষ সম্বলের মতো ছিল সেটি। কোনো বিকল্প না খুঁজে আগেই সেটি বন্ধ করে দেওয়া হলো—এটা কেবল অদূরদর্শিতা নয়, নিষ্ঠুরতাও।’
অপরাধীদের দেশে ফেরত পাঠানো
যুক্তরাজ্যে বসবাসরত অভিবাসীদের জন্য এবার আসতে চলেছে কঠিন সময়। শ্বেতপত্রে নতুন প্রস্তাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইভেট কুপার জানিয়ে দিয়েছেন, এখন থেকে ছোটখাটো কোনো অপরাধ করেও পার পাবে না কেউ। ছোটখাটো নিয়মভঙ্গের অপরাধ করলেও তা সঙ্গে সঙ্গে জানানো হবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে।
নতুন এই নিয়মের আগ পর্যন্ত শুধু এক বছরের বেশি কারাদণ্ড হলে তবেই স্বরাষ্ট্র দপ্তরে রিপোর্ট করা হতো এবং তাঁকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বহিষ্কারের প্রক্রিয়া শুরু করা যেত। কিন্তু নতুন নিয়মে ছোট অপরাধ করলেও ভিসা বাতিল হয়ে দেশে ফেরত পাঠানোর ঝুঁকি বাড়বে।
এ ছাড়া নতুন এই ব্যবস্থায় যদি কোনো বিদেশি যৌন অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে অপরাধীর তালিকায় ওঠেন, তাহলে তাঁর অপরাধ যত ছোটই হোক, তাঁকে ‘গুরুতর অপরাধী’ হিসেবে বিবেচনা করা হবে। ফলে তিনি আর যুক্তরাজ্যে আশ্রয় চেয়ে সুরক্ষা পাবেন না। এমনকি নিজ দেশে অপরাধ করে তা গোপন রেখে যুক্তরাজ্যে এলে তাঁদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে এই নিয়ম। তাঁর অপরাধ সম্পর্কে জানা মাত্রই দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হবে।
বিদেশি কর্মীদের শিক্ষাগত যোগ্যতার মানদণ্ড বৃদ্ধি
শ্বেতপত্রে বলা হয়েছে, দক্ষ বিদেশি কর্মীদের জন্য যোগ্যতার মানদণ্ড আবারও স্নাতক পর্যায়ে ফিরিয়ে আনা হবে। বরিস জনসনের সময় এই শর্ত বাতিল করে এর পরিবর্তে একটি পয়েন্টভিত্তিক অভিবাসন ব্যবস্থা চালু করা হয়েছিল, যেখানে কেবল এ-লেভেল সমমানের যোগ্যতা এবং বেতনের ভিত্তিতে বিদেশি কর্মীদের ভিসা দেওয়া হতো।
তবে এখনো নিয়োগকর্তারা পয়েন্টভিত্তিক ব্যবস্থার আওতায় অপেক্ষাকৃত কম দক্ষ কর্মীদের নিয়োগ দিতে পারবেন—কিন্তু কেবল সেসব খাতে যেগুলোকে সরকার ‘জরুরি খাত’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে এবং যেখানে জনবল সংকট দেশের অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর হয়ে উঠেছে, যেমন—আইটি, নির্মাণ ও প্রকৌশল।
এই খাতে বিদেশি কর্মী নিয়োগ কেবল ‘অস্থায়ী ও নির্দিষ্ট মেয়াদে’ অনুমোদিত হবে এবং নিয়োগকর্তাদের একটি নতুন সরকারি সংস্থার কাছে প্রমাণ দিতে হবে যে তাঁরা ব্রিটিশ কর্মীদের প্রশিক্ষণের জন্য অ্যাপ্রেনটিসশিপ ও অন্যান্য প্রকল্প চালাচ্ছেন, যাতে ভবিষ্যতে এই ঘাটতি পূরণ করা যায়।
বিদেশি গ্র্যাজুয়েটদের জন্য নতুন বাধা আসছে
শ্বেতপত্রে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, যুক্তরাজ্যে থাকতে চাইলে বিদেশি গ্র্যাজুয়েটদের শুধু ভালো বেতনের চাকরি হলেই হবে না—চাকরিটা হতে হবে অবশ্যই দক্ষতা-ভিত্তিক, গ্র্যাজুয়েট পর্যায়ের। এখন পর্যন্ত নিয়ম ছিল, ডিগ্রি শেষ করার পর বিদেশি শিক্ষার্থীরা দুই বছর (আর পিএইচডি করলে তিন বছর) যুক্তরাজ্যে ‘গ্র্যাজুয়েট ভিসা’ নিয়ে চাকরি খুঁজতে পারবেন। এই সুযোগকে স্থায়ীভাবে যুক্তরাজ্যে থেকে যাওয়ার পথ বা ‘পেছনের দরজা’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তাই নতুন নিয়ম করল যুক্তরাজ্য সরকার।
তবে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইভেট কুপার অভিবাসন কমাতে কোনো নির্দিষ্ট লক্ষ্য বা সংখ্যাগত সীমা নির্ধারণ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা নিট অভিবাসন উল্লেখযোগ্যভাবে কমানোর পরিকল্পনা নিচ্ছি। আপনি জানেন, অতীতে কনজারভেটিভ সরকারগুলো অনেক লক্ষ্য ও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, কিন্তু সেগুলোর কিছুই পূরণ হয়নি। ফলে, এসব লক্ষ্য সরকারের বিশ্বাসযোগ্যতাকেই ক্ষুণ্ন করেছে। এ কারণেই আমরা নির্দিষ্ট সংখ্যা নির্ধারণের পথ অনুসরণ করছি না।’
এদিকে কনজারভেটিভ পার্টি বলছে, তারা অভিবাসনের ওপর বাধ্যতামূলক সীমা (ক্যাপ) চালু করার পক্ষে। পাশাপাশি অভিবাসন ইস্যুতে মানবাধিকার আইনের কিছু দিকও বাতিল চায় তারা। আর এ ইস্যুতে আজ সোমবার পার্লামেন্টে ভোটাভুটি হবে বলেও জানিয়েছে দলটি। ছায়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস ফিলিপ বলেন, ‘স্টারমার একসময় বিপজ্জনক বিদেশি অপরাধীদের ফেরত পাঠানোর বিরোধিতা করেছিলেন। এখন তিনিই অভিবাসন নিয়ে কঠোর হচ্ছেন—এটা হাস্যকর!’
তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন, ‘স্টারমার নিজের দলের এমপিদের দিয়েই ১০ বছর আবাসকাল ও অবদানের শর্তের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন। অথচ এখন সেটিই কার্যকর করতে চলেছেন। কনজারভেটিভদের নেওয়া পদক্ষেপেরই কৃতিত্ব নিতে চাইছেন তিনি।’
আজকের পত্রিকা ডেস্ক

যুক্তরাজ্যের অভিবাসন নীতিতে বড় পরিবর্তন আসছে। আজ সোমবার এ সংক্রান্ত একটি পরিকল্পনা প্রকাশের কথা রয়েছে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের। নতুন অভিবাসন নীতি অনুযায়ী—বিদেশি নাগরিকেরা আর ৫ বছর পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে নাগরিকত্ব বা স্থায়ী বসবাসের জন্য আবেদন করতে পারবেন না।
নতুন নীতিতে, এখন থেকে অধিকাংশ অভিবাসীকে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে হলে ১০ বছর অপেক্ষা করতে হবে। তবে, কেউ যদি প্রমাণ করতে পারেন যে তিনি দেশের অর্থনীতি ও সমাজে ‘বাস্তব ও স্থায়ী অবদান’ রেখেছেন, তাহলে তিনি ১০ বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই আবেদন করতে পারবেন। উদাহরণস্বরূপ, যারা নিয়মিত আয়কর দেন, ন্যাশনাল হেলথ সেন্টারে (এনএইচএস) চিকিৎসক, নার্স বা হাসপাতালের কর্মী হিসেবে কাজ করেন, বা ব্যতিক্রমী স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজে যুক্ত আছেন—তাঁদের জন্য এই সুযোগ থাকবে।
স্থায়ী বসবাস বা নাগরিকত্ব পাওয়ার মানে হলো—কল্যাণ ভাতা, বিনা মূল্যে স্বাস্থ্যসেবা, ভোটাধিকার এবং ব্রিটিশ পাসপোর্টের জন্য আবেদন করার সুযোগ পাওয়া। এই নতুন নিয়ম অনেকটা ডেনমার্কের মতো, যেখানে অভিবাসীদের সমাজের সঙ্গে ভালোভাবে মিশে যেতে এবং দায়িত্বশীল নাগরিক হয়ে ওঠার জন্য নানা শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়। ডেনমার্কের নাগরিকত্ব পাওয়ার প্রক্রিয়াটিও বেশ সময়সাপেক্ষ।
ব্রিটেন সরকারের ভাষ্যমতে, নিট অভিবাসনের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতেই এই পদক্ষেপগুলো নেওয়া হচ্ছে। ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত ১২ মাসে নিট অভিবাসনের সংখ্যা ছিল ৭ লাখ ২৮ হাজার। একই সঙ্গে, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে লেবার পার্টিকে চাপে ফেলতে থাকা রিফর্ম ইউকে পার্টির (নাইজেল ফারাজের দল) হুমকিও মোকাবিলা করা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। অন্যদিকে, কনজারভেটিভ পার্টি ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির সমালোচনা করে বলেছে—তারা মোট অভিবাসন সংখ্যা কমাতে কোনো নির্দিষ্ট সীমা (ক্যাপ) নির্ধারণ করেনি। নির্দিষ্ট সীমা নির্ধারণ নিশ্চিত করতে আজ পার্লামেন্টে ভোটাভুটি করবে বলেও জানিয়েছিলেন তাঁরা।
ভিসা পেতে ইংরেজি দক্ষতায় কড়াকড়ি, বাড়ছে শর্ত
যুক্তরাজ্যে ভিসা পেতে হলে এখন থেকে বিদেশি দক্ষ কর্মীদের আরও কঠিন ইংরেজি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। নতুন অভিবাসন নীতিতে বলা হয়েছে, তাঁদের এখন এমন পর্যায়ের ইংরেজি জানতে হবে যা ‘এ’ লেভেল সমমানের—যেখানে তাঁরা স্বতঃস্ফূর্ত ও সাবলীলভাবে সামাজিক, একাডেমিক ও পেশাগত পরিবেশে কথা বলতে পারবেন। এর আগে শুধু জিসিএসই সমমানের ইংরেজি জানলেই চলত, যেখানে শুধু দৈনন্দিন বিষয় বুঝতে পারা এবং ভ্রমণের সময় সম্ভাব্য পরিস্থিতি মোকাবিলার দক্ষতা থাকাই যথেষ্ট বলে বিবেচিত হতো।
এখন থেকে শুধু ভিসার জন্য নয়—যারা স্থায়ীভাবে বসবাস বা নাগরিকত্ব চাচ্ছেন, এমনকি যারা বিদেশি শিক্ষার্থী, তাঁদের ক্ষেত্রেও এই এ-লেভেল মানের ইংরেজি বা বি-২ লেভেলের ইংরেজি জানার শর্ত প্রযোজ্য হবে।
আর প্রথমবারের মতো, যারা সফল ভিসা আবেদনকারীর সঙ্গী, সন্তান বা অভিভাবক হিসেবে যুক্তরাজ্যে যেতে চান, তাঁদেরও এ-১ স্তরের ইংরেজি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে—যেখানে ইংরেজির প্রাথমিক জ্ঞান যাচাই করা হয়। যদি তাঁরা যুক্তরাজ্যে আরও দুই বছর থাকতে চান, তাহলে তাঁদের আরও ভালো ইংরেজি জেনে এ-২ স্তরের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।
বিদেশ থেকে কেয়ার কর্মী নেওয়া বন্ধ, নিয়োগ দিতে হবে দেশের ভেতর থেকেই
এ বছরের শেষ থেকে কেয়ার হোমগুলো আর সরাসরি বিদেশ থেকে কর্মী আনতে পারবে না। এখন থেকে তাদের যুক্তরাজ্যে থাকা বিদেশি নাগরিক বা ব্রিটিশ নাগরিকদের কর্মী নিয়োগ করতে হবে।
গতকাল রোববার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইভেট কুপার এই ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ‘যুক্তরাজ্যে বর্তমানে প্রায় ৪০ হাজারের মতো বিদেশি কর্মী রয়েছেন, যারা কেয়ার ভিসায় এসেছেন, কিন্তু পরে তাঁদের স্পনসরশিপ বাতিল হয়েছে। ওই ৪০ হাজার অভিবাসী থেকেই কর্মী নিয়োগ দিতে পারবে কেয়ার হোমগুলো। তাই আমরা বিদেশ থেকে নতুন নিয়োগ বন্ধ করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই সিদ্ধান্তের পাশাপাশি কেয়ার সেক্টরে কর্মীদের “ন্যায্য মজুরি” নিশ্চিতকরণের বিষয়টি নিয়েও এগোচ্ছি। কেয়ার সেক্টরের মূল সমস্যাগুলো কোনো দিনই ঠিকভাবে সমাধান হয়নি। এবার আমরা সেটাই করব।’
কেয়ার ভিসার পাশাপাশি অন্য ভিসায় আসা অভিবাসীদেরও এই সেক্টরে নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। পাশাপাশি দেশীয় কর্মীদের প্রশিক্ষণের জন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনাও নেওয়া হচ্ছে।
নতুন এই সিদ্ধান্তের পর প্রায় ৫০ হাজার ভিসা কম ইস্যু হবে বলে ধারণা করছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
২০২৪ সালের জানুয়ারিতে যেখানে স্বাস্থ্য ও কেয়ার ভিসার সংখ্যা ছিল প্রায় দেড় লাখ, ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে তা কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ২৮ হাজার ৭০০ এ—এর মধ্যে প্রায় ৭ হাজার জন ছিলেন সামাজিক কেয়ার ওয়ার্কার। কনজারভেটিভ সরকার বিদেশি কেয়ার ওয়ার্কারদের পরিবারের সদস্যদের যুক্তরাজ্যে আনার সুযোগ বন্ধ করে দেওয়ার পর কমে আসে এই সংখ্যা।
লেবার পার্টির নতুন এই সিদ্ধান্তে উদ্বেগ জানিয়েছেন কেয়ার ইংল্যান্ডের প্রধান নির্বাহী মার্টিন গ্রিন। তিনি বলেন, ‘এটা একটা বড় ধাক্কা। এই সেক্টর বহুদিন ধরে বাজেট স্বল্পতা, অতিরিক্ত ব্যয় আর কর্মী সংকটের সঙ্গে লড়াই করে টিকে আছে। বিদেশি কর্মী নিয়োগ যথাযথ সমাধান না হলেও, অনেকটা শেষ সম্বলের মতো ছিল সেটি। কোনো বিকল্প না খুঁজে আগেই সেটি বন্ধ করে দেওয়া হলো—এটা কেবল অদূরদর্শিতা নয়, নিষ্ঠুরতাও।’
অপরাধীদের দেশে ফেরত পাঠানো
যুক্তরাজ্যে বসবাসরত অভিবাসীদের জন্য এবার আসতে চলেছে কঠিন সময়। শ্বেতপত্রে নতুন প্রস্তাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইভেট কুপার জানিয়ে দিয়েছেন, এখন থেকে ছোটখাটো কোনো অপরাধ করেও পার পাবে না কেউ। ছোটখাটো নিয়মভঙ্গের অপরাধ করলেও তা সঙ্গে সঙ্গে জানানো হবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে।
নতুন এই নিয়মের আগ পর্যন্ত শুধু এক বছরের বেশি কারাদণ্ড হলে তবেই স্বরাষ্ট্র দপ্তরে রিপোর্ট করা হতো এবং তাঁকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বহিষ্কারের প্রক্রিয়া শুরু করা যেত। কিন্তু নতুন নিয়মে ছোট অপরাধ করলেও ভিসা বাতিল হয়ে দেশে ফেরত পাঠানোর ঝুঁকি বাড়বে।
এ ছাড়া নতুন এই ব্যবস্থায় যদি কোনো বিদেশি যৌন অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে অপরাধীর তালিকায় ওঠেন, তাহলে তাঁর অপরাধ যত ছোটই হোক, তাঁকে ‘গুরুতর অপরাধী’ হিসেবে বিবেচনা করা হবে। ফলে তিনি আর যুক্তরাজ্যে আশ্রয় চেয়ে সুরক্ষা পাবেন না। এমনকি নিজ দেশে অপরাধ করে তা গোপন রেখে যুক্তরাজ্যে এলে তাঁদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে এই নিয়ম। তাঁর অপরাধ সম্পর্কে জানা মাত্রই দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হবে।
বিদেশি কর্মীদের শিক্ষাগত যোগ্যতার মানদণ্ড বৃদ্ধি
শ্বেতপত্রে বলা হয়েছে, দক্ষ বিদেশি কর্মীদের জন্য যোগ্যতার মানদণ্ড আবারও স্নাতক পর্যায়ে ফিরিয়ে আনা হবে। বরিস জনসনের সময় এই শর্ত বাতিল করে এর পরিবর্তে একটি পয়েন্টভিত্তিক অভিবাসন ব্যবস্থা চালু করা হয়েছিল, যেখানে কেবল এ-লেভেল সমমানের যোগ্যতা এবং বেতনের ভিত্তিতে বিদেশি কর্মীদের ভিসা দেওয়া হতো।
তবে এখনো নিয়োগকর্তারা পয়েন্টভিত্তিক ব্যবস্থার আওতায় অপেক্ষাকৃত কম দক্ষ কর্মীদের নিয়োগ দিতে পারবেন—কিন্তু কেবল সেসব খাতে যেগুলোকে সরকার ‘জরুরি খাত’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে এবং যেখানে জনবল সংকট দেশের অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর হয়ে উঠেছে, যেমন—আইটি, নির্মাণ ও প্রকৌশল।
এই খাতে বিদেশি কর্মী নিয়োগ কেবল ‘অস্থায়ী ও নির্দিষ্ট মেয়াদে’ অনুমোদিত হবে এবং নিয়োগকর্তাদের একটি নতুন সরকারি সংস্থার কাছে প্রমাণ দিতে হবে যে তাঁরা ব্রিটিশ কর্মীদের প্রশিক্ষণের জন্য অ্যাপ্রেনটিসশিপ ও অন্যান্য প্রকল্প চালাচ্ছেন, যাতে ভবিষ্যতে এই ঘাটতি পূরণ করা যায়।
বিদেশি গ্র্যাজুয়েটদের জন্য নতুন বাধা আসছে
শ্বেতপত্রে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, যুক্তরাজ্যে থাকতে চাইলে বিদেশি গ্র্যাজুয়েটদের শুধু ভালো বেতনের চাকরি হলেই হবে না—চাকরিটা হতে হবে অবশ্যই দক্ষতা-ভিত্তিক, গ্র্যাজুয়েট পর্যায়ের। এখন পর্যন্ত নিয়ম ছিল, ডিগ্রি শেষ করার পর বিদেশি শিক্ষার্থীরা দুই বছর (আর পিএইচডি করলে তিন বছর) যুক্তরাজ্যে ‘গ্র্যাজুয়েট ভিসা’ নিয়ে চাকরি খুঁজতে পারবেন। এই সুযোগকে স্থায়ীভাবে যুক্তরাজ্যে থেকে যাওয়ার পথ বা ‘পেছনের দরজা’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তাই নতুন নিয়ম করল যুক্তরাজ্য সরকার।
তবে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইভেট কুপার অভিবাসন কমাতে কোনো নির্দিষ্ট লক্ষ্য বা সংখ্যাগত সীমা নির্ধারণ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা নিট অভিবাসন উল্লেখযোগ্যভাবে কমানোর পরিকল্পনা নিচ্ছি। আপনি জানেন, অতীতে কনজারভেটিভ সরকারগুলো অনেক লক্ষ্য ও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, কিন্তু সেগুলোর কিছুই পূরণ হয়নি। ফলে, এসব লক্ষ্য সরকারের বিশ্বাসযোগ্যতাকেই ক্ষুণ্ন করেছে। এ কারণেই আমরা নির্দিষ্ট সংখ্যা নির্ধারণের পথ অনুসরণ করছি না।’
এদিকে কনজারভেটিভ পার্টি বলছে, তারা অভিবাসনের ওপর বাধ্যতামূলক সীমা (ক্যাপ) চালু করার পক্ষে। পাশাপাশি অভিবাসন ইস্যুতে মানবাধিকার আইনের কিছু দিকও বাতিল চায় তারা। আর এ ইস্যুতে আজ সোমবার পার্লামেন্টে ভোটাভুটি হবে বলেও জানিয়েছে দলটি। ছায়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস ফিলিপ বলেন, ‘স্টারমার একসময় বিপজ্জনক বিদেশি অপরাধীদের ফেরত পাঠানোর বিরোধিতা করেছিলেন। এখন তিনিই অভিবাসন নিয়ে কঠোর হচ্ছেন—এটা হাস্যকর!’
তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন, ‘স্টারমার নিজের দলের এমপিদের দিয়েই ১০ বছর আবাসকাল ও অবদানের শর্তের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন। অথচ এখন সেটিই কার্যকর করতে চলেছেন। কনজারভেটিভদের নেওয়া পদক্ষেপেরই কৃতিত্ব নিতে চাইছেন তিনি।’

যুক্তরাজ্যের অভিবাসন নীতিতে বড় পরিবর্তন আসছে। আজ সোমবার এ সংক্রান্ত একটি পরিকল্পনা প্রকাশের কথা রয়েছে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের। নতুন অভিবাসন নীতি অনুযায়ী—বিদেশি নাগরিকেরা আর ৫ বছর পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে নাগরিকত্ব বা স্থায়ী বসবাসের জন্য আবেদন করতে পারবেন না।
নতুন নীতিতে, এখন থেকে অধিকাংশ অভিবাসীকে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে হলে ১০ বছর অপেক্ষা করতে হবে। তবে, কেউ যদি প্রমাণ করতে পারেন যে তিনি দেশের অর্থনীতি ও সমাজে ‘বাস্তব ও স্থায়ী অবদান’ রেখেছেন, তাহলে তিনি ১০ বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই আবেদন করতে পারবেন। উদাহরণস্বরূপ, যারা নিয়মিত আয়কর দেন, ন্যাশনাল হেলথ সেন্টারে (এনএইচএস) চিকিৎসক, নার্স বা হাসপাতালের কর্মী হিসেবে কাজ করেন, বা ব্যতিক্রমী স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজে যুক্ত আছেন—তাঁদের জন্য এই সুযোগ থাকবে।
স্থায়ী বসবাস বা নাগরিকত্ব পাওয়ার মানে হলো—কল্যাণ ভাতা, বিনা মূল্যে স্বাস্থ্যসেবা, ভোটাধিকার এবং ব্রিটিশ পাসপোর্টের জন্য আবেদন করার সুযোগ পাওয়া। এই নতুন নিয়ম অনেকটা ডেনমার্কের মতো, যেখানে অভিবাসীদের সমাজের সঙ্গে ভালোভাবে মিশে যেতে এবং দায়িত্বশীল নাগরিক হয়ে ওঠার জন্য নানা শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়। ডেনমার্কের নাগরিকত্ব পাওয়ার প্রক্রিয়াটিও বেশ সময়সাপেক্ষ।
ব্রিটেন সরকারের ভাষ্যমতে, নিট অভিবাসনের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতেই এই পদক্ষেপগুলো নেওয়া হচ্ছে। ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত ১২ মাসে নিট অভিবাসনের সংখ্যা ছিল ৭ লাখ ২৮ হাজার। একই সঙ্গে, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে লেবার পার্টিকে চাপে ফেলতে থাকা রিফর্ম ইউকে পার্টির (নাইজেল ফারাজের দল) হুমকিও মোকাবিলা করা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। অন্যদিকে, কনজারভেটিভ পার্টি ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির সমালোচনা করে বলেছে—তারা মোট অভিবাসন সংখ্যা কমাতে কোনো নির্দিষ্ট সীমা (ক্যাপ) নির্ধারণ করেনি। নির্দিষ্ট সীমা নির্ধারণ নিশ্চিত করতে আজ পার্লামেন্টে ভোটাভুটি করবে বলেও জানিয়েছিলেন তাঁরা।
ভিসা পেতে ইংরেজি দক্ষতায় কড়াকড়ি, বাড়ছে শর্ত
যুক্তরাজ্যে ভিসা পেতে হলে এখন থেকে বিদেশি দক্ষ কর্মীদের আরও কঠিন ইংরেজি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। নতুন অভিবাসন নীতিতে বলা হয়েছে, তাঁদের এখন এমন পর্যায়ের ইংরেজি জানতে হবে যা ‘এ’ লেভেল সমমানের—যেখানে তাঁরা স্বতঃস্ফূর্ত ও সাবলীলভাবে সামাজিক, একাডেমিক ও পেশাগত পরিবেশে কথা বলতে পারবেন। এর আগে শুধু জিসিএসই সমমানের ইংরেজি জানলেই চলত, যেখানে শুধু দৈনন্দিন বিষয় বুঝতে পারা এবং ভ্রমণের সময় সম্ভাব্য পরিস্থিতি মোকাবিলার দক্ষতা থাকাই যথেষ্ট বলে বিবেচিত হতো।
এখন থেকে শুধু ভিসার জন্য নয়—যারা স্থায়ীভাবে বসবাস বা নাগরিকত্ব চাচ্ছেন, এমনকি যারা বিদেশি শিক্ষার্থী, তাঁদের ক্ষেত্রেও এই এ-লেভেল মানের ইংরেজি বা বি-২ লেভেলের ইংরেজি জানার শর্ত প্রযোজ্য হবে।
আর প্রথমবারের মতো, যারা সফল ভিসা আবেদনকারীর সঙ্গী, সন্তান বা অভিভাবক হিসেবে যুক্তরাজ্যে যেতে চান, তাঁদেরও এ-১ স্তরের ইংরেজি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে—যেখানে ইংরেজির প্রাথমিক জ্ঞান যাচাই করা হয়। যদি তাঁরা যুক্তরাজ্যে আরও দুই বছর থাকতে চান, তাহলে তাঁদের আরও ভালো ইংরেজি জেনে এ-২ স্তরের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।
বিদেশ থেকে কেয়ার কর্মী নেওয়া বন্ধ, নিয়োগ দিতে হবে দেশের ভেতর থেকেই
এ বছরের শেষ থেকে কেয়ার হোমগুলো আর সরাসরি বিদেশ থেকে কর্মী আনতে পারবে না। এখন থেকে তাদের যুক্তরাজ্যে থাকা বিদেশি নাগরিক বা ব্রিটিশ নাগরিকদের কর্মী নিয়োগ করতে হবে।
গতকাল রোববার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইভেট কুপার এই ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ‘যুক্তরাজ্যে বর্তমানে প্রায় ৪০ হাজারের মতো বিদেশি কর্মী রয়েছেন, যারা কেয়ার ভিসায় এসেছেন, কিন্তু পরে তাঁদের স্পনসরশিপ বাতিল হয়েছে। ওই ৪০ হাজার অভিবাসী থেকেই কর্মী নিয়োগ দিতে পারবে কেয়ার হোমগুলো। তাই আমরা বিদেশ থেকে নতুন নিয়োগ বন্ধ করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই সিদ্ধান্তের পাশাপাশি কেয়ার সেক্টরে কর্মীদের “ন্যায্য মজুরি” নিশ্চিতকরণের বিষয়টি নিয়েও এগোচ্ছি। কেয়ার সেক্টরের মূল সমস্যাগুলো কোনো দিনই ঠিকভাবে সমাধান হয়নি। এবার আমরা সেটাই করব।’
কেয়ার ভিসার পাশাপাশি অন্য ভিসায় আসা অভিবাসীদেরও এই সেক্টরে নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। পাশাপাশি দেশীয় কর্মীদের প্রশিক্ষণের জন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনাও নেওয়া হচ্ছে।
নতুন এই সিদ্ধান্তের পর প্রায় ৫০ হাজার ভিসা কম ইস্যু হবে বলে ধারণা করছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
২০২৪ সালের জানুয়ারিতে যেখানে স্বাস্থ্য ও কেয়ার ভিসার সংখ্যা ছিল প্রায় দেড় লাখ, ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে তা কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ২৮ হাজার ৭০০ এ—এর মধ্যে প্রায় ৭ হাজার জন ছিলেন সামাজিক কেয়ার ওয়ার্কার। কনজারভেটিভ সরকার বিদেশি কেয়ার ওয়ার্কারদের পরিবারের সদস্যদের যুক্তরাজ্যে আনার সুযোগ বন্ধ করে দেওয়ার পর কমে আসে এই সংখ্যা।
লেবার পার্টির নতুন এই সিদ্ধান্তে উদ্বেগ জানিয়েছেন কেয়ার ইংল্যান্ডের প্রধান নির্বাহী মার্টিন গ্রিন। তিনি বলেন, ‘এটা একটা বড় ধাক্কা। এই সেক্টর বহুদিন ধরে বাজেট স্বল্পতা, অতিরিক্ত ব্যয় আর কর্মী সংকটের সঙ্গে লড়াই করে টিকে আছে। বিদেশি কর্মী নিয়োগ যথাযথ সমাধান না হলেও, অনেকটা শেষ সম্বলের মতো ছিল সেটি। কোনো বিকল্প না খুঁজে আগেই সেটি বন্ধ করে দেওয়া হলো—এটা কেবল অদূরদর্শিতা নয়, নিষ্ঠুরতাও।’
অপরাধীদের দেশে ফেরত পাঠানো
যুক্তরাজ্যে বসবাসরত অভিবাসীদের জন্য এবার আসতে চলেছে কঠিন সময়। শ্বেতপত্রে নতুন প্রস্তাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইভেট কুপার জানিয়ে দিয়েছেন, এখন থেকে ছোটখাটো কোনো অপরাধ করেও পার পাবে না কেউ। ছোটখাটো নিয়মভঙ্গের অপরাধ করলেও তা সঙ্গে সঙ্গে জানানো হবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে।
নতুন এই নিয়মের আগ পর্যন্ত শুধু এক বছরের বেশি কারাদণ্ড হলে তবেই স্বরাষ্ট্র দপ্তরে রিপোর্ট করা হতো এবং তাঁকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বহিষ্কারের প্রক্রিয়া শুরু করা যেত। কিন্তু নতুন নিয়মে ছোট অপরাধ করলেও ভিসা বাতিল হয়ে দেশে ফেরত পাঠানোর ঝুঁকি বাড়বে।
এ ছাড়া নতুন এই ব্যবস্থায় যদি কোনো বিদেশি যৌন অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে অপরাধীর তালিকায় ওঠেন, তাহলে তাঁর অপরাধ যত ছোটই হোক, তাঁকে ‘গুরুতর অপরাধী’ হিসেবে বিবেচনা করা হবে। ফলে তিনি আর যুক্তরাজ্যে আশ্রয় চেয়ে সুরক্ষা পাবেন না। এমনকি নিজ দেশে অপরাধ করে তা গোপন রেখে যুক্তরাজ্যে এলে তাঁদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে এই নিয়ম। তাঁর অপরাধ সম্পর্কে জানা মাত্রই দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হবে।
বিদেশি কর্মীদের শিক্ষাগত যোগ্যতার মানদণ্ড বৃদ্ধি
শ্বেতপত্রে বলা হয়েছে, দক্ষ বিদেশি কর্মীদের জন্য যোগ্যতার মানদণ্ড আবারও স্নাতক পর্যায়ে ফিরিয়ে আনা হবে। বরিস জনসনের সময় এই শর্ত বাতিল করে এর পরিবর্তে একটি পয়েন্টভিত্তিক অভিবাসন ব্যবস্থা চালু করা হয়েছিল, যেখানে কেবল এ-লেভেল সমমানের যোগ্যতা এবং বেতনের ভিত্তিতে বিদেশি কর্মীদের ভিসা দেওয়া হতো।
তবে এখনো নিয়োগকর্তারা পয়েন্টভিত্তিক ব্যবস্থার আওতায় অপেক্ষাকৃত কম দক্ষ কর্মীদের নিয়োগ দিতে পারবেন—কিন্তু কেবল সেসব খাতে যেগুলোকে সরকার ‘জরুরি খাত’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে এবং যেখানে জনবল সংকট দেশের অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর হয়ে উঠেছে, যেমন—আইটি, নির্মাণ ও প্রকৌশল।
এই খাতে বিদেশি কর্মী নিয়োগ কেবল ‘অস্থায়ী ও নির্দিষ্ট মেয়াদে’ অনুমোদিত হবে এবং নিয়োগকর্তাদের একটি নতুন সরকারি সংস্থার কাছে প্রমাণ দিতে হবে যে তাঁরা ব্রিটিশ কর্মীদের প্রশিক্ষণের জন্য অ্যাপ্রেনটিসশিপ ও অন্যান্য প্রকল্প চালাচ্ছেন, যাতে ভবিষ্যতে এই ঘাটতি পূরণ করা যায়।
বিদেশি গ্র্যাজুয়েটদের জন্য নতুন বাধা আসছে
শ্বেতপত্রে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, যুক্তরাজ্যে থাকতে চাইলে বিদেশি গ্র্যাজুয়েটদের শুধু ভালো বেতনের চাকরি হলেই হবে না—চাকরিটা হতে হবে অবশ্যই দক্ষতা-ভিত্তিক, গ্র্যাজুয়েট পর্যায়ের। এখন পর্যন্ত নিয়ম ছিল, ডিগ্রি শেষ করার পর বিদেশি শিক্ষার্থীরা দুই বছর (আর পিএইচডি করলে তিন বছর) যুক্তরাজ্যে ‘গ্র্যাজুয়েট ভিসা’ নিয়ে চাকরি খুঁজতে পারবেন। এই সুযোগকে স্থায়ীভাবে যুক্তরাজ্যে থেকে যাওয়ার পথ বা ‘পেছনের দরজা’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তাই নতুন নিয়ম করল যুক্তরাজ্য সরকার।
তবে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইভেট কুপার অভিবাসন কমাতে কোনো নির্দিষ্ট লক্ষ্য বা সংখ্যাগত সীমা নির্ধারণ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা নিট অভিবাসন উল্লেখযোগ্যভাবে কমানোর পরিকল্পনা নিচ্ছি। আপনি জানেন, অতীতে কনজারভেটিভ সরকারগুলো অনেক লক্ষ্য ও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, কিন্তু সেগুলোর কিছুই পূরণ হয়নি। ফলে, এসব লক্ষ্য সরকারের বিশ্বাসযোগ্যতাকেই ক্ষুণ্ন করেছে। এ কারণেই আমরা নির্দিষ্ট সংখ্যা নির্ধারণের পথ অনুসরণ করছি না।’
এদিকে কনজারভেটিভ পার্টি বলছে, তারা অভিবাসনের ওপর বাধ্যতামূলক সীমা (ক্যাপ) চালু করার পক্ষে। পাশাপাশি অভিবাসন ইস্যুতে মানবাধিকার আইনের কিছু দিকও বাতিল চায় তারা। আর এ ইস্যুতে আজ সোমবার পার্লামেন্টে ভোটাভুটি হবে বলেও জানিয়েছে দলটি। ছায়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস ফিলিপ বলেন, ‘স্টারমার একসময় বিপজ্জনক বিদেশি অপরাধীদের ফেরত পাঠানোর বিরোধিতা করেছিলেন। এখন তিনিই অভিবাসন নিয়ে কঠোর হচ্ছেন—এটা হাস্যকর!’
তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন, ‘স্টারমার নিজের দলের এমপিদের দিয়েই ১০ বছর আবাসকাল ও অবদানের শর্তের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন। অথচ এখন সেটিই কার্যকর করতে চলেছেন। কনজারভেটিভদের নেওয়া পদক্ষেপেরই কৃতিত্ব নিতে চাইছেন তিনি।’

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দায়ের করা মানহানি ও ক্ষতিপূরণ মামলার বিরুদ্ধে আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে প্রভাবশালী ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। ট্রাম্প বিবিসির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন, ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারিতে সংঘটিত ক্যাপিটল দাঙ্গার আগে...
৫ ঘণ্টা আগে
সরকারি এক অনুষ্ঠানে সার্টিফিকেট নিতে আসা এক মুসলিম নারীর মুখ দেখতে তাঁর নেকাব টান দিয়ে সরিয়ে দিয়েছেন ভারতের বিহার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। গতকাল সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) পাটনায় তাঁর এ কাণ্ডে ভারতজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
৬ ঘণ্টা আগে
অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই বিচে সন্ত্রাসী হামলার সময় এক হামলাকারীর কাছ থেকে বন্দুক ছিনিয়ে নিয়ে ‘নায়ক’ বনে গেছেন ৪৩ বছর বয়সী আহমেদ আল-আহমেদ। এবার জানা গেল, এক বৃদ্ধ দম্পতিও হামলাকারীদের থামাতে এগিয়ে গিয়েছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত তাঁদের নির্মম পরিণতি বরণ করতে হয়েছে।
৭ ঘণ্টা আগে
যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৩০ বছর ধরে বসবাস করেন ৬০ বছর বয়সী ভারতীয় বংশোদ্ভূত নারী বাব্বলজিৎ কৌড় ওরফে বাবলি। তাঁকে গ্রিন কার্ডের শেষ ধাপের সাক্ষাৎকারে আটক করেছেন দেশটির অভিবাসন কর্মকর্তারা।
৭ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দায়ের করা মানহানি ও ক্ষতিপূরণ মামলার বিরুদ্ধে আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে প্রভাবশালী ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। ট্রাম্প বিবিসির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন, ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারিতে সংঘটিত ক্যাপিটল দাঙ্গার আগে দেওয়া তাঁর ভাষণ ‘ইচ্ছাকৃতভাবে বিকৃত’ করে প্যানোরামা ডকুমেন্টারিতে সম্প্রচার করা হয়েছে।
ফ্লোরিডার একটি আদালতে দায়ের করা ওই মামলায় ট্রাম্প বিবিসির বিরুদ্ধে মানহানি ও বাণিজ্যিক আচরণবিষয়ক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছেন। ক্ষতিপূরণ দাবির অঙ্ক নিয়ে বিভিন্ন প্রতিবেদনে ভিন্ন তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। বিবিসির এক প্রতিবেদনে এই অঙ্ক ৫ বিলিয়ন ডলার বলা হলেও, ট্রাম্পের আইনজীবীদের সাম্প্রতিক নথি ও ব্রিফিং অনুযায়ী ক্ষতিপূরণের দাবি ১০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার রাতে (১৬ ডিসেম্বর) বিবিসি জানিয়েছে, কথিত প্যানোরামা ডকুমেন্টারিতে ট্রাম্পের ভাষণের দুটি ভিন্ন অংশ সম্পাদনার মাধ্যমে একত্রে দেখানো হয়। সেখানে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘আমরা ক্যাপিটলের দিকে হাঁটব... এবং আমি তোমাদের সঙ্গে থাকব। আমরা লড়াই করব, দারুণভাবে লড়াই করব।’ তবে বাস্তবে এই দুটি বক্তব্য ভাষণের মধ্যে প্রায় ৫০ মিনিটের ব্যবধানে দেওয়া হয়েছিল।
বিবিসি স্বীকার করেছে, এই সম্পাদনার ফলে ভুল ধারণা তৈরি হতে পারে যে, ট্রাম্প সরাসরি সহিংসতার আহ্বান জানিয়েছিলেন। এ জন্য তারা গত মাসে দুঃখ প্রকাশ করলেও ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি প্রত্যাখ্যান করে জানায়, মানহানির অভিযোগের কোনো আইনি ভিত্তি নেই।
বিবিসির এক মুখপাত্র বলেন, ‘আগেও যেমন বলা হয়েছে, আমরা এই মামলার বিরুদ্ধে আত্মপক্ষ সমর্থন করব।’ চলমান আইনি প্রক্রিয়ার কারণে তারা বিস্তারিত মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান।
মামলায় আরও দাবি করা হয়েছে, ডকুমেন্টারিটি যুক্তরাজ্যের বাইরে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্প্রচার না হলেও ভিপিএন বা ব্রিটবক্সের মতো স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্রের, বিশেষ করে ফ্লোরিডার দর্শকেরা এটি দেখতে পারেন। বিবিসি এসব অভিযোগের বিষয়ে এখনো নির্দিষ্ট করে প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
এই বিষয়ে ব্রিটিশ সরকার এক বিবৃতিতে বলেছে, এটি বিবিসির নিজস্ব আইনি বিষয়। একই সঙ্গে তারা একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ গণমাধ্যম হিসেবে বিবিসির ভূমিকার ওপর আস্থার কথাও পুনর্ব্যক্ত করেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রে মানহানির মামলা জেতা কঠিন হলেও এই মামলা বিবিসির সম্পাদকীয় স্বাধীনতা ও বিশ্বাসযোগ্যতার প্রশ্নে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দায়ের করা মানহানি ও ক্ষতিপূরণ মামলার বিরুদ্ধে আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে প্রভাবশালী ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। ট্রাম্প বিবিসির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন, ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারিতে সংঘটিত ক্যাপিটল দাঙ্গার আগে দেওয়া তাঁর ভাষণ ‘ইচ্ছাকৃতভাবে বিকৃত’ করে প্যানোরামা ডকুমেন্টারিতে সম্প্রচার করা হয়েছে।
ফ্লোরিডার একটি আদালতে দায়ের করা ওই মামলায় ট্রাম্প বিবিসির বিরুদ্ধে মানহানি ও বাণিজ্যিক আচরণবিষয়ক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছেন। ক্ষতিপূরণ দাবির অঙ্ক নিয়ে বিভিন্ন প্রতিবেদনে ভিন্ন তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। বিবিসির এক প্রতিবেদনে এই অঙ্ক ৫ বিলিয়ন ডলার বলা হলেও, ট্রাম্পের আইনজীবীদের সাম্প্রতিক নথি ও ব্রিফিং অনুযায়ী ক্ষতিপূরণের দাবি ১০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার রাতে (১৬ ডিসেম্বর) বিবিসি জানিয়েছে, কথিত প্যানোরামা ডকুমেন্টারিতে ট্রাম্পের ভাষণের দুটি ভিন্ন অংশ সম্পাদনার মাধ্যমে একত্রে দেখানো হয়। সেখানে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘আমরা ক্যাপিটলের দিকে হাঁটব... এবং আমি তোমাদের সঙ্গে থাকব। আমরা লড়াই করব, দারুণভাবে লড়াই করব।’ তবে বাস্তবে এই দুটি বক্তব্য ভাষণের মধ্যে প্রায় ৫০ মিনিটের ব্যবধানে দেওয়া হয়েছিল।
বিবিসি স্বীকার করেছে, এই সম্পাদনার ফলে ভুল ধারণা তৈরি হতে পারে যে, ট্রাম্প সরাসরি সহিংসতার আহ্বান জানিয়েছিলেন। এ জন্য তারা গত মাসে দুঃখ প্রকাশ করলেও ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি প্রত্যাখ্যান করে জানায়, মানহানির অভিযোগের কোনো আইনি ভিত্তি নেই।
বিবিসির এক মুখপাত্র বলেন, ‘আগেও যেমন বলা হয়েছে, আমরা এই মামলার বিরুদ্ধে আত্মপক্ষ সমর্থন করব।’ চলমান আইনি প্রক্রিয়ার কারণে তারা বিস্তারিত মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান।
মামলায় আরও দাবি করা হয়েছে, ডকুমেন্টারিটি যুক্তরাজ্যের বাইরে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্প্রচার না হলেও ভিপিএন বা ব্রিটবক্সের মতো স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্রের, বিশেষ করে ফ্লোরিডার দর্শকেরা এটি দেখতে পারেন। বিবিসি এসব অভিযোগের বিষয়ে এখনো নির্দিষ্ট করে প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
এই বিষয়ে ব্রিটিশ সরকার এক বিবৃতিতে বলেছে, এটি বিবিসির নিজস্ব আইনি বিষয়। একই সঙ্গে তারা একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ গণমাধ্যম হিসেবে বিবিসির ভূমিকার ওপর আস্থার কথাও পুনর্ব্যক্ত করেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রে মানহানির মামলা জেতা কঠিন হলেও এই মামলা বিবিসির সম্পাদকীয় স্বাধীনতা ও বিশ্বাসযোগ্যতার প্রশ্নে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

যুক্তরাজ্যে ভিসা পেতে হলে এখন থেকে বিদেশি দক্ষ কর্মীদের আরও কঠিন ইংরেজি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। নতুন অভিবাসন নীতিতে বলা হয়েছে, তাঁদের এখন এমন পর্যায়ের ইংরেজি জানতে হবে যা ‘এ’ লেভেল সমমানের—যেখানে তাঁরা স্বতঃস্ফূর্ত ও সাবলীলভাবে সামাজিক, একাডেমিক ও পেশাগত পরিবেশে কথা বলতে পারবেন।
১২ মে ২০২৫
সরকারি এক অনুষ্ঠানে সার্টিফিকেট নিতে আসা এক মুসলিম নারীর মুখ দেখতে তাঁর নেকাব টান দিয়ে সরিয়ে দিয়েছেন ভারতের বিহার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। গতকাল সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) পাটনায় তাঁর এ কাণ্ডে ভারতজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
৬ ঘণ্টা আগে
অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই বিচে সন্ত্রাসী হামলার সময় এক হামলাকারীর কাছ থেকে বন্দুক ছিনিয়ে নিয়ে ‘নায়ক’ বনে গেছেন ৪৩ বছর বয়সী আহমেদ আল-আহমেদ। এবার জানা গেল, এক বৃদ্ধ দম্পতিও হামলাকারীদের থামাতে এগিয়ে গিয়েছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত তাঁদের নির্মম পরিণতি বরণ করতে হয়েছে।
৭ ঘণ্টা আগে
যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৩০ বছর ধরে বসবাস করেন ৬০ বছর বয়সী ভারতীয় বংশোদ্ভূত নারী বাব্বলজিৎ কৌড় ওরফে বাবলি। তাঁকে গ্রিন কার্ডের শেষ ধাপের সাক্ষাৎকারে আটক করেছেন দেশটির অভিবাসন কর্মকর্তারা।
৭ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

সরকারি এক অনুষ্ঠানে সার্টিফিকেট নিতে আসা এক মুসলিম নারীর মুখ দেখতে তাঁর নিকাব টান দিয়ে সরিয়ে দিয়েছেন ভারতের বিহার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। গতকাল সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) পাটনায় তাঁর এ কাণ্ডে ভারতজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
ঘটনাটির একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা যায়, ৭৪ বছর বয়সী জেডিইউর প্রধান নীতীশ কুমার এক সরকারি অনুষ্ঠানে এক আয়ুষ (আয়ুর্বেদ, যোগ ও ন্যাচারোপ্যাথি, ইউনানি, সিদ্ধা ও হোমিওপ্যাথি) চিকিৎসকের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দিচ্ছিলেন।
সে সময় তিনি ওই নারী চিকিৎসককে ইশারায় নিকাব সরাতে বলেন। নারী চিকিৎসক নিকাব না সরালে নীতীশ নিজেই হাত বাড়িয়ে তাঁর নিকাব নিচের দিকে নামিয়ে দেন, যাতে তাঁর মুখ ও থুতনি দৃশ্যমান হয়।
ভিডিওতে পেছনে উপস্থিত কয়েকজনকে হাসতে দেখা যায়। একই সঙ্গে বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী সম্রাট চৌধুরীকেও নীতীশকে থামানোর চেষ্টা করতে দেখা যায়।
সরকারি অনুষ্ঠানে নারী চিকিৎসকের মুখ থেকে নিকাব টেনে খোলার ঘটনায় বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করছে বিরোধী দলগুলো।
এ ঘটনাকে ‘জঘন্য’ হিসেবে অভিহিত করে কংগ্রেস তাঁর পদত্যাগের দাবি করেছে।
হিন্দুত্ববাদী বিজেপির সঙ্গে জোট গড়ে মুখ্যমন্ত্রী হওয়া নীতীশের কড়া সমালোচনা করে বিরোধী দল আরজেডি এক বিবৃতিতে বলেছে, পর্দা করা মুসলিম নারীর নিকাব খুলে ফেলে জেডিও এবং বিজেপি নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার নামে কী রাজনীতি করছে, সেটি প্রকাশ করে দিয়েছে।
আরজেডি তাদের এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডেলে হিন্দিতে লিখেছে, ‘নীতীশজির কী হয়েছে? তাঁর মানসিক অবস্থা এখন করুণ পর্যায়ে পৌঁছেছে।’
কংগ্রেসও মুখ্যমন্ত্রীর এই আচরণকে ‘লজ্জাজনক’ ও ‘ঘৃণ্য’ বলে নিন্দা করেছে। দলের এক্স হ্যান্ডেলে লেখা হয়, ‘একজন নারী চিকিৎসক নিয়োগপত্র নিতে এসেছিলেন আর নীতীশ কুমার তাঁর নিকাব টেনে নামালেন। বিহারের সর্বোচ্চ পদে থাকা একজন ব্যক্তি প্রকাশ্যে এমন ঘৃণ্য আচরণ করছেন। ভাবুন তো, রাজ্যে নারীরা কতটা নিরাপদ? এই জঘন্য আচরণের জন্য নীতীশ কুমারের অবিলম্বে পদত্যাগ করা উচিত।’
এর আগেও বিতর্কে জড়িয়েছিলেন নীতীশ কুমার। গত নভেম্বরের বিহার বিধানসভা নির্বাচনের কয়েক সপ্তাহ আগে এক জনসভায় এক নারীকে মালা পরানোর ভিডিও ভাইরাল হলে সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। সে সময় এক জেডিইউ সংসদ সদস্য থামানোর চেষ্টা করলে মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে ধমক দেন।

সরকারি এক অনুষ্ঠানে সার্টিফিকেট নিতে আসা এক মুসলিম নারীর মুখ দেখতে তাঁর নিকাব টান দিয়ে সরিয়ে দিয়েছেন ভারতের বিহার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। গতকাল সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) পাটনায় তাঁর এ কাণ্ডে ভারতজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
ঘটনাটির একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা যায়, ৭৪ বছর বয়সী জেডিইউর প্রধান নীতীশ কুমার এক সরকারি অনুষ্ঠানে এক আয়ুষ (আয়ুর্বেদ, যোগ ও ন্যাচারোপ্যাথি, ইউনানি, সিদ্ধা ও হোমিওপ্যাথি) চিকিৎসকের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দিচ্ছিলেন।
সে সময় তিনি ওই নারী চিকিৎসককে ইশারায় নিকাব সরাতে বলেন। নারী চিকিৎসক নিকাব না সরালে নীতীশ নিজেই হাত বাড়িয়ে তাঁর নিকাব নিচের দিকে নামিয়ে দেন, যাতে তাঁর মুখ ও থুতনি দৃশ্যমান হয়।
ভিডিওতে পেছনে উপস্থিত কয়েকজনকে হাসতে দেখা যায়। একই সঙ্গে বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী সম্রাট চৌধুরীকেও নীতীশকে থামানোর চেষ্টা করতে দেখা যায়।
সরকারি অনুষ্ঠানে নারী চিকিৎসকের মুখ থেকে নিকাব টেনে খোলার ঘটনায় বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করছে বিরোধী দলগুলো।
এ ঘটনাকে ‘জঘন্য’ হিসেবে অভিহিত করে কংগ্রেস তাঁর পদত্যাগের দাবি করেছে।
হিন্দুত্ববাদী বিজেপির সঙ্গে জোট গড়ে মুখ্যমন্ত্রী হওয়া নীতীশের কড়া সমালোচনা করে বিরোধী দল আরজেডি এক বিবৃতিতে বলেছে, পর্দা করা মুসলিম নারীর নিকাব খুলে ফেলে জেডিও এবং বিজেপি নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার নামে কী রাজনীতি করছে, সেটি প্রকাশ করে দিয়েছে।
আরজেডি তাদের এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডেলে হিন্দিতে লিখেছে, ‘নীতীশজির কী হয়েছে? তাঁর মানসিক অবস্থা এখন করুণ পর্যায়ে পৌঁছেছে।’
কংগ্রেসও মুখ্যমন্ত্রীর এই আচরণকে ‘লজ্জাজনক’ ও ‘ঘৃণ্য’ বলে নিন্দা করেছে। দলের এক্স হ্যান্ডেলে লেখা হয়, ‘একজন নারী চিকিৎসক নিয়োগপত্র নিতে এসেছিলেন আর নীতীশ কুমার তাঁর নিকাব টেনে নামালেন। বিহারের সর্বোচ্চ পদে থাকা একজন ব্যক্তি প্রকাশ্যে এমন ঘৃণ্য আচরণ করছেন। ভাবুন তো, রাজ্যে নারীরা কতটা নিরাপদ? এই জঘন্য আচরণের জন্য নীতীশ কুমারের অবিলম্বে পদত্যাগ করা উচিত।’
এর আগেও বিতর্কে জড়িয়েছিলেন নীতীশ কুমার। গত নভেম্বরের বিহার বিধানসভা নির্বাচনের কয়েক সপ্তাহ আগে এক জনসভায় এক নারীকে মালা পরানোর ভিডিও ভাইরাল হলে সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। সে সময় এক জেডিইউ সংসদ সদস্য থামানোর চেষ্টা করলে মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে ধমক দেন।

যুক্তরাজ্যে ভিসা পেতে হলে এখন থেকে বিদেশি দক্ষ কর্মীদের আরও কঠিন ইংরেজি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। নতুন অভিবাসন নীতিতে বলা হয়েছে, তাঁদের এখন এমন পর্যায়ের ইংরেজি জানতে হবে যা ‘এ’ লেভেল সমমানের—যেখানে তাঁরা স্বতঃস্ফূর্ত ও সাবলীলভাবে সামাজিক, একাডেমিক ও পেশাগত পরিবেশে কথা বলতে পারবেন।
১২ মে ২০২৫
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দায়ের করা মানহানি ও ক্ষতিপূরণ মামলার বিরুদ্ধে আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে প্রভাবশালী ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। ট্রাম্প বিবিসির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন, ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারিতে সংঘটিত ক্যাপিটল দাঙ্গার আগে...
৫ ঘণ্টা আগে
অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই বিচে সন্ত্রাসী হামলার সময় এক হামলাকারীর কাছ থেকে বন্দুক ছিনিয়ে নিয়ে ‘নায়ক’ বনে গেছেন ৪৩ বছর বয়সী আহমেদ আল-আহমেদ। এবার জানা গেল, এক বৃদ্ধ দম্পতিও হামলাকারীদের থামাতে এগিয়ে গিয়েছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত তাঁদের নির্মম পরিণতি বরণ করতে হয়েছে।
৭ ঘণ্টা আগে
যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৩০ বছর ধরে বসবাস করেন ৬০ বছর বয়সী ভারতীয় বংশোদ্ভূত নারী বাব্বলজিৎ কৌড় ওরফে বাবলি। তাঁকে গ্রিন কার্ডের শেষ ধাপের সাক্ষাৎকারে আটক করেছেন দেশটির অভিবাসন কর্মকর্তারা।
৭ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই বিচে সন্ত্রাসী হামলার সময় এক হামলাকারীর কাছ থেকে বন্দুক ছিনিয়ে নিয়ে ‘নায়ক’ বনে গেছেন ৪৩ বছর বয়সী আহমেদ আল-আহমেদ। এবার জানা গেল, এক বৃদ্ধ দম্পতিও হামলাকারীদের থামাতে এগিয়ে গিয়েছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত তাঁদের নির্মম পরিণতি বরণ করতে হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান জানিয়েছে, হামলাকারীর সঙ্গে লড়াই করে নিহত হয়েছেন এমন এক দম্পতির পরিচয় প্রকাশিত হয়েছে। একটি ড্যাশক্যাম ফুটেজে দেখা গেছে, বন্দুকধারীর সঙ্গে সরাসরি লড়াইয়ে জড়িয়েছেন ৬৯ বছরের বরিস গুরম্যান এবং তাঁর স্ত্রী ৬১ বছরের সোফিয়া গুরম্যান। হামলার শুরুর দিকেই তাঁরা সাহসিকতার সঙ্গে এগিয়ে গিয়ে প্রাণ হারান।
গত ১৪ ডিসেম্বর বন্ডাই বিচের ওই হামলায় এক হামলাকারী সহ ১৬ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে বরিস ও সোফিয়া গুরম্যানও রয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে তাঁদের পরিবার। সিডনি মর্নিং হেরাল্ডকে পরিবারের পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আমাদের প্রিয় বরিস ও সোফিয়াকে হঠাৎ এবং অর্থহীনভাবে হারিয়ে আমরা গভীর শোকাহত।’

জানা গেছে, বরিস ও সোফিয়া গুরম্যান ৩৪ বছর ধরে দাম্পত্য জীবনে ছিলেন এবং জানুয়ারিতেই তাঁরা ৩৫ তম বিবাহবার্ষিকী উদ্যাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। একই সঙ্গে চলতি ডিসেম্বরেই সোফিয়ার ৬২ তম জন্মদিন পালনের কথা ছিল।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ড্যাশক্যাম ফুটেজে দেখা গেছে, ক্যাম্পবেল প্যারেডে নিজের গাড়ি থেকে নেমে বন্দুকধারী সাজিদ আকরামের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন বরিস। বেগুনি রঙের শার্ট পরা বরিস বন্দুকধারীকে রাস্তায় ফেলে দিয়ে বন্দুক ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় তাঁর সহযোগিতায় ধস্তাধস্তিতে এসে যোগ দেন স্ত্রী সোফিয়াও। ঘটনাটি অনিচ্ছাকৃতভাবে স্থানীয় এক বাসিন্দার গাড়ির ক্যামেরায় ধরা পড়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি লিখেছেন, ‘সাধারণ মানুষের এমন বীরত্ব কখনো ভুলে যাওয়া উচিত নয়।’
পরবর্তী সময়ে ড্রোনে ধারণ করা একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, ফুটপাথে পাশাপাশি নিথর হয়ে পড়ে আছেন বরিস ও সোফিয়া। পরিবার জানিয়েছে, বরিস ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত মেকানিক। তিনি উদার, নীরব শক্তির প্রতীক এবং প্রয়োজনে সবার পাশে দাঁড়ানোর মতো মানুষ। সোফিয়া কাজ করতেন অস্ট্রেলিয়া পোস্টে—সহকর্মী ও স্থানীয় কমিউনিটিতে তিনি ছিলেন অত্যন্ত প্রিয়।
পরিবার তাঁদের সাহসিকতার কথাও তুলে ধরে বলেছে, ‘আমরা ফুটেজে দেখেছি, সোফিয়াকে সঙ্গে নিয়ে বরিস অন্যদের রক্ষা করতে হামলাকারীকে নিরস্ত করার চেষ্টা করেছিলেন। এই আত্মত্যাগই তাঁদের প্রকৃত পরিচয়।’
এদিকে হামলাকারীর কাছ থেকে বন্দুক ছিনিয়ে নিয়ে ‘নায়ক’ বনে যাওয়া আহমেদ আল-আহমেদের সাহসের প্রশংসা করেছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বর্তমানে আহমেদ গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ঘটনার সময় হামলাকারী সাজিদ আকরামকে শেষ পর্যন্ত গুলি করে হত্যা করে পুলিশ। অপর হামলাকারী তাঁরই ছেলে নাভিদ আকরাম। গুরুতর আহত অবস্থায় নাভিদ এখন পুলিশ পাহারায় হাসপাতালে রয়েছে।

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই বিচে সন্ত্রাসী হামলার সময় এক হামলাকারীর কাছ থেকে বন্দুক ছিনিয়ে নিয়ে ‘নায়ক’ বনে গেছেন ৪৩ বছর বয়সী আহমেদ আল-আহমেদ। এবার জানা গেল, এক বৃদ্ধ দম্পতিও হামলাকারীদের থামাতে এগিয়ে গিয়েছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত তাঁদের নির্মম পরিণতি বরণ করতে হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান জানিয়েছে, হামলাকারীর সঙ্গে লড়াই করে নিহত হয়েছেন এমন এক দম্পতির পরিচয় প্রকাশিত হয়েছে। একটি ড্যাশক্যাম ফুটেজে দেখা গেছে, বন্দুকধারীর সঙ্গে সরাসরি লড়াইয়ে জড়িয়েছেন ৬৯ বছরের বরিস গুরম্যান এবং তাঁর স্ত্রী ৬১ বছরের সোফিয়া গুরম্যান। হামলার শুরুর দিকেই তাঁরা সাহসিকতার সঙ্গে এগিয়ে গিয়ে প্রাণ হারান।
গত ১৪ ডিসেম্বর বন্ডাই বিচের ওই হামলায় এক হামলাকারী সহ ১৬ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে বরিস ও সোফিয়া গুরম্যানও রয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে তাঁদের পরিবার। সিডনি মর্নিং হেরাল্ডকে পরিবারের পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আমাদের প্রিয় বরিস ও সোফিয়াকে হঠাৎ এবং অর্থহীনভাবে হারিয়ে আমরা গভীর শোকাহত।’

জানা গেছে, বরিস ও সোফিয়া গুরম্যান ৩৪ বছর ধরে দাম্পত্য জীবনে ছিলেন এবং জানুয়ারিতেই তাঁরা ৩৫ তম বিবাহবার্ষিকী উদ্যাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। একই সঙ্গে চলতি ডিসেম্বরেই সোফিয়ার ৬২ তম জন্মদিন পালনের কথা ছিল।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ড্যাশক্যাম ফুটেজে দেখা গেছে, ক্যাম্পবেল প্যারেডে নিজের গাড়ি থেকে নেমে বন্দুকধারী সাজিদ আকরামের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন বরিস। বেগুনি রঙের শার্ট পরা বরিস বন্দুকধারীকে রাস্তায় ফেলে দিয়ে বন্দুক ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় তাঁর সহযোগিতায় ধস্তাধস্তিতে এসে যোগ দেন স্ত্রী সোফিয়াও। ঘটনাটি অনিচ্ছাকৃতভাবে স্থানীয় এক বাসিন্দার গাড়ির ক্যামেরায় ধরা পড়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি লিখেছেন, ‘সাধারণ মানুষের এমন বীরত্ব কখনো ভুলে যাওয়া উচিত নয়।’
পরবর্তী সময়ে ড্রোনে ধারণ করা একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, ফুটপাথে পাশাপাশি নিথর হয়ে পড়ে আছেন বরিস ও সোফিয়া। পরিবার জানিয়েছে, বরিস ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত মেকানিক। তিনি উদার, নীরব শক্তির প্রতীক এবং প্রয়োজনে সবার পাশে দাঁড়ানোর মতো মানুষ। সোফিয়া কাজ করতেন অস্ট্রেলিয়া পোস্টে—সহকর্মী ও স্থানীয় কমিউনিটিতে তিনি ছিলেন অত্যন্ত প্রিয়।
পরিবার তাঁদের সাহসিকতার কথাও তুলে ধরে বলেছে, ‘আমরা ফুটেজে দেখেছি, সোফিয়াকে সঙ্গে নিয়ে বরিস অন্যদের রক্ষা করতে হামলাকারীকে নিরস্ত করার চেষ্টা করেছিলেন। এই আত্মত্যাগই তাঁদের প্রকৃত পরিচয়।’
এদিকে হামলাকারীর কাছ থেকে বন্দুক ছিনিয়ে নিয়ে ‘নায়ক’ বনে যাওয়া আহমেদ আল-আহমেদের সাহসের প্রশংসা করেছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বর্তমানে আহমেদ গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ঘটনার সময় হামলাকারী সাজিদ আকরামকে শেষ পর্যন্ত গুলি করে হত্যা করে পুলিশ। অপর হামলাকারী তাঁরই ছেলে নাভিদ আকরাম। গুরুতর আহত অবস্থায় নাভিদ এখন পুলিশ পাহারায় হাসপাতালে রয়েছে।

যুক্তরাজ্যে ভিসা পেতে হলে এখন থেকে বিদেশি দক্ষ কর্মীদের আরও কঠিন ইংরেজি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। নতুন অভিবাসন নীতিতে বলা হয়েছে, তাঁদের এখন এমন পর্যায়ের ইংরেজি জানতে হবে যা ‘এ’ লেভেল সমমানের—যেখানে তাঁরা স্বতঃস্ফূর্ত ও সাবলীলভাবে সামাজিক, একাডেমিক ও পেশাগত পরিবেশে কথা বলতে পারবেন।
১২ মে ২০২৫
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দায়ের করা মানহানি ও ক্ষতিপূরণ মামলার বিরুদ্ধে আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে প্রভাবশালী ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। ট্রাম্প বিবিসির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন, ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারিতে সংঘটিত ক্যাপিটল দাঙ্গার আগে...
৫ ঘণ্টা আগে
সরকারি এক অনুষ্ঠানে সার্টিফিকেট নিতে আসা এক মুসলিম নারীর মুখ দেখতে তাঁর নেকাব টান দিয়ে সরিয়ে দিয়েছেন ভারতের বিহার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। গতকাল সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) পাটনায় তাঁর এ কাণ্ডে ভারতজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
৬ ঘণ্টা আগে
যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৩০ বছর ধরে বসবাস করেন ৬০ বছর বয়সী ভারতীয় বংশোদ্ভূত নারী বাব্বলজিৎ কৌড় ওরফে বাবলি। তাঁকে গ্রিন কার্ডের শেষ ধাপের সাক্ষাৎকারে আটক করেছেন দেশটির অভিবাসন কর্মকর্তারা।
৭ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৩০ বছর ধরে বসবাস করেন ৬০ বছর বয়সী ভারতীয় বংশোদ্ভূত নারী বাব্বলজিৎ কৌড় ওরফে বাবলি। তাঁকে গ্রিন কার্ডের শেষ ধাপের সাক্ষাৎকারে আটক করেছেন দেশটির অভিবাসন কর্মকর্তারা।
আজ মঙ্গলবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
বাবলি কৌড়ের মেয়ে জ্যোতি জানান, গ্রিন কার্ড আবেদন-সংক্রান্ত বায়োমেট্রিক স্ক্যানের জন্য ১ ডিসেম্বর বাবলি যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) কার্যালয়ে গেলে সেখানে ফেডারেল এজেন্টরা তাঁকে আটক করেন।
লং বিচ ওয়াচডগ জানিয়েছে, কৌড়ের আরেক মেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ও তাঁর স্বামী গ্রিন কার্ডধারী। তাঁরা মায়ের পক্ষে গ্রিন কার্ড পিটিশন দাখিল করেছিলেন, যা এরই মধ্যে অনুমোদিত হয়েছে।
জ্যোতি জানান, আইসিই কার্যালয়ের ফ্রন্ট ডেস্কে অপেক্ষার সময় কয়েকজন ফেডারেল এজেন্ট ভবনে প্রবেশ করেন। এরপর কৌড়কে একটি কক্ষে ডাকা হয়, যেখানে তাঁকে জানানো হয় যে, তাঁকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। যদিও তাঁকে আইনজীবীর সঙ্গে ফোনে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল, তবু তাঁকে আটক রাখা হয়।
পরিবারের সদস্যদের কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত জানানো হয়নি কৌড়কে কোথায় নেওয়া হয়েছে। পরে জানা যায়, তাঁকে রাতারাতি অ্যাডেলান্টোয় স্থানান্তর করা হয়েছে, যা আগে একটি ফেডারেল কারাগার ছিল এবং বর্তমানে আইসিই ডিটেনশন সেন্টার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
দীর্ঘদিনের বসবাস ও পারিবারিক পরিচয়
পরিবারসহ যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমানোর পর কৌড় প্রথমে লাগুনা বিচে বসবাস শুরু করেন। পরে কাজের প্রয়োজনে তাঁরা লং বিচের বেলমন্ট শোর এলাকায় চলে যান। কৌড় ও তাঁর স্বামীর তিন সন্তান রয়েছে। তাঁদের মধ্যে ৩৪ বছর বয়সী জ্যোতি যুক্তরাষ্ট্রের ডিফার্ড অ্যাকশন ফর চাইল্ডহুড অ্যারাইভালস (ডিএসিএ) কর্মসূচির আওতায় বৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন এবং বড় ছেলে ও মেয়ে দুজনেই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, কৌড় ও তাঁর স্বামী দুই দশকের বেশি সময় বেলমন্ট শোরের সেকেন্ড স্ট্রিটে ‘নাটরাজ কুইজিন অব ইন্ডিয়া অ্যান্ড নেপাল’ নামে একটি রেস্তোরাঁ চালান। রেস্তোরাঁটি স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। এ ছাড়া তিনি প্রায় ২৫ বছর বেলমন্ট শোর রাইট এইড ফার্মেসিতে কাজ করেছেন। চলতি বছর প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর তিনি আবার রেস্তোরাঁয় কাজ শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
মুক্তির দাবি
লং বিচের ডেমোক্র্যাট কংগ্রেসম্যান রবার্ট গার্সিয়া বাবলি কৌড়ের মুক্তির দাবি জানিয়েছেন। তাঁর কার্যালয় জানায়, বিষয়টি নিয়ে তিনি ফেডারেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছেন। কৌড়ের পরিবার আইনিপ্রক্রিয়ার মাধ্যমে জামিনে মুক্তির জন্য অতিরিক্ত আবেদন প্রস্তুত করছে।
পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, অ্যাডেলান্টো ডিটেনশন সেন্টারে কৌড়কে বড় ডরমিটরি ধরনের একটি কক্ষে রাখা হয়েছে, যেখানে আরও বহু বন্দী রয়েছেন। সারা রাত আলো জ্বালানো থাকে এবং উচ্চশব্দের কারণে ঘুমানো কঠিন হয়ে পড়ে।
স্বজনেরা জানিয়েছেন, কৌড়ের সঙ্গে স্বল্প সময়ের সাক্ষাতের সুযোগ পেলেও এর জন্য পুরো দিন অপেক্ষা করতে হচ্ছে পরিবারের সদস্যদের।
মেয়ে জ্যোতি বলেন, ‘এটা এক দুঃস্বপ্ন। আমরা তাঁকে বের করে আনার জন্য সবকিছু করার চেষ্টা করছি। তিনি এখানে থাকার মতো কেউ নন। এটা ভীষণ অমানবিক।’

যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৩০ বছর ধরে বসবাস করেন ৬০ বছর বয়সী ভারতীয় বংশোদ্ভূত নারী বাব্বলজিৎ কৌড় ওরফে বাবলি। তাঁকে গ্রিন কার্ডের শেষ ধাপের সাক্ষাৎকারে আটক করেছেন দেশটির অভিবাসন কর্মকর্তারা।
আজ মঙ্গলবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
বাবলি কৌড়ের মেয়ে জ্যোতি জানান, গ্রিন কার্ড আবেদন-সংক্রান্ত বায়োমেট্রিক স্ক্যানের জন্য ১ ডিসেম্বর বাবলি যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) কার্যালয়ে গেলে সেখানে ফেডারেল এজেন্টরা তাঁকে আটক করেন।
লং বিচ ওয়াচডগ জানিয়েছে, কৌড়ের আরেক মেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ও তাঁর স্বামী গ্রিন কার্ডধারী। তাঁরা মায়ের পক্ষে গ্রিন কার্ড পিটিশন দাখিল করেছিলেন, যা এরই মধ্যে অনুমোদিত হয়েছে।
জ্যোতি জানান, আইসিই কার্যালয়ের ফ্রন্ট ডেস্কে অপেক্ষার সময় কয়েকজন ফেডারেল এজেন্ট ভবনে প্রবেশ করেন। এরপর কৌড়কে একটি কক্ষে ডাকা হয়, যেখানে তাঁকে জানানো হয় যে, তাঁকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। যদিও তাঁকে আইনজীবীর সঙ্গে ফোনে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল, তবু তাঁকে আটক রাখা হয়।
পরিবারের সদস্যদের কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত জানানো হয়নি কৌড়কে কোথায় নেওয়া হয়েছে। পরে জানা যায়, তাঁকে রাতারাতি অ্যাডেলান্টোয় স্থানান্তর করা হয়েছে, যা আগে একটি ফেডারেল কারাগার ছিল এবং বর্তমানে আইসিই ডিটেনশন সেন্টার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
দীর্ঘদিনের বসবাস ও পারিবারিক পরিচয়
পরিবারসহ যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমানোর পর কৌড় প্রথমে লাগুনা বিচে বসবাস শুরু করেন। পরে কাজের প্রয়োজনে তাঁরা লং বিচের বেলমন্ট শোর এলাকায় চলে যান। কৌড় ও তাঁর স্বামীর তিন সন্তান রয়েছে। তাঁদের মধ্যে ৩৪ বছর বয়সী জ্যোতি যুক্তরাষ্ট্রের ডিফার্ড অ্যাকশন ফর চাইল্ডহুড অ্যারাইভালস (ডিএসিএ) কর্মসূচির আওতায় বৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন এবং বড় ছেলে ও মেয়ে দুজনেই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, কৌড় ও তাঁর স্বামী দুই দশকের বেশি সময় বেলমন্ট শোরের সেকেন্ড স্ট্রিটে ‘নাটরাজ কুইজিন অব ইন্ডিয়া অ্যান্ড নেপাল’ নামে একটি রেস্তোরাঁ চালান। রেস্তোরাঁটি স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। এ ছাড়া তিনি প্রায় ২৫ বছর বেলমন্ট শোর রাইট এইড ফার্মেসিতে কাজ করেছেন। চলতি বছর প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর তিনি আবার রেস্তোরাঁয় কাজ শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
মুক্তির দাবি
লং বিচের ডেমোক্র্যাট কংগ্রেসম্যান রবার্ট গার্সিয়া বাবলি কৌড়ের মুক্তির দাবি জানিয়েছেন। তাঁর কার্যালয় জানায়, বিষয়টি নিয়ে তিনি ফেডারেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছেন। কৌড়ের পরিবার আইনিপ্রক্রিয়ার মাধ্যমে জামিনে মুক্তির জন্য অতিরিক্ত আবেদন প্রস্তুত করছে।
পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, অ্যাডেলান্টো ডিটেনশন সেন্টারে কৌড়কে বড় ডরমিটরি ধরনের একটি কক্ষে রাখা হয়েছে, যেখানে আরও বহু বন্দী রয়েছেন। সারা রাত আলো জ্বালানো থাকে এবং উচ্চশব্দের কারণে ঘুমানো কঠিন হয়ে পড়ে।
স্বজনেরা জানিয়েছেন, কৌড়ের সঙ্গে স্বল্প সময়ের সাক্ষাতের সুযোগ পেলেও এর জন্য পুরো দিন অপেক্ষা করতে হচ্ছে পরিবারের সদস্যদের।
মেয়ে জ্যোতি বলেন, ‘এটা এক দুঃস্বপ্ন। আমরা তাঁকে বের করে আনার জন্য সবকিছু করার চেষ্টা করছি। তিনি এখানে থাকার মতো কেউ নন। এটা ভীষণ অমানবিক।’

যুক্তরাজ্যে ভিসা পেতে হলে এখন থেকে বিদেশি দক্ষ কর্মীদের আরও কঠিন ইংরেজি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। নতুন অভিবাসন নীতিতে বলা হয়েছে, তাঁদের এখন এমন পর্যায়ের ইংরেজি জানতে হবে যা ‘এ’ লেভেল সমমানের—যেখানে তাঁরা স্বতঃস্ফূর্ত ও সাবলীলভাবে সামাজিক, একাডেমিক ও পেশাগত পরিবেশে কথা বলতে পারবেন।
১২ মে ২০২৫
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দায়ের করা মানহানি ও ক্ষতিপূরণ মামলার বিরুদ্ধে আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে প্রভাবশালী ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। ট্রাম্প বিবিসির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন, ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারিতে সংঘটিত ক্যাপিটল দাঙ্গার আগে...
৫ ঘণ্টা আগে
সরকারি এক অনুষ্ঠানে সার্টিফিকেট নিতে আসা এক মুসলিম নারীর মুখ দেখতে তাঁর নেকাব টান দিয়ে সরিয়ে দিয়েছেন ভারতের বিহার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। গতকাল সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) পাটনায় তাঁর এ কাণ্ডে ভারতজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
৬ ঘণ্টা আগে
অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই বিচে সন্ত্রাসী হামলার সময় এক হামলাকারীর কাছ থেকে বন্দুক ছিনিয়ে নিয়ে ‘নায়ক’ বনে গেছেন ৪৩ বছর বয়সী আহমেদ আল-আহমেদ। এবার জানা গেল, এক বৃদ্ধ দম্পতিও হামলাকারীদের থামাতে এগিয়ে গিয়েছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত তাঁদের নির্মম পরিণতি বরণ করতে হয়েছে।
৭ ঘণ্টা আগে