
দুই মাস ধরে টেক মোগল ইলন মাস্ক জার্মানির উগ্র ডানপন্থী দল ‘অলটারনেটিভ ফর জার্মানি’কে (এএফডি) সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়েছেন। তিনি দলটির পক্ষে প্রচারণার জন্য ৭০টির বেশি পোস্ট দিয়েছেন। তাঁর ২১৯ মিলিয়ন ফলোয়ারকে বলেছেন, এই দলই জার্মানির ‘একমাত্র ভরসা’।
রয়টার্সের এক বিশ্লেষণে উঠে এসেছে মাস্কের এই সমর্থন গত ২৩ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে এএফডির দ্বিতীয় স্থান অর্জনে খুব সামান্য ভূমিকা রেখেছে। মাস্কের পোস্ট, জনমত জরিপের তথ্য এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে এই বিশ্লেষণ করে রয়টার্স।
তবে টেসলার সিইও মাস্ককে এতে দমিয়ে রাখা যায়নি। তিনি ইউরোপজুড়ে এখনো ডানপন্থী প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। বিশ্লেষকেরা বলছেন, এর সবচেয়ে দৃশ্যমান প্রভাব সম্ভবত টেসলার ক্ষতি। তবে এর পেছনে মাস্কের ব্যবসায়িক সাম্রাজ্যের দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য থাকতে পারে। যেমন এমন রাজনৈতিক দলগুলোকে সমর্থন করা, যারা ভবিষ্যতে ক্ষমতায় এলে মাস্কের প্রযুক্তি বা উদ্ভাবনের পথে বাধা হবে না।
এই প্রতিবেদন তৈরির সময় ইলন মাস্ক এবং টেসলার কাছে মন্তব্যের অনুরোধ করা হয়েছিল। তবে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
গত জানুয়ারিতে মাস্ক ইউরোপের ‘নিয়মকানুন ও আমলাতন্ত্রের স্তূপ’ নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন। এর আগে গত বছর ইউরোপীয় ইউনিয়নের এক কর্মকর্তা তাঁকে নিষেধাজ্ঞা দিলে মাস্ক এক্সে একটি মিম পোস্ট করে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন। যেখানে ‘ট্রপিক থান্ডার’ সিনেমার একটি উদ্ধৃতি ছিল, ‘টেক আ বিগ স্টেপ ব্যাক অ্যান্ড লিটারেলি, ফাক ইউর ওউন ফেস!’
জার্মানির অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা এরই মধ্যে এএফডিকে একটি সন্দেহভাজন উগ্রবাদী গোষ্ঠী হিসেবে চিহ্নিত করেছে। তা সত্ত্বেও দলটি গত মাসের নির্বাচনে জার্মানির বৃহত্তম বিরোধী দল হিসেবে উঠে এসেছে। জার্মানির নাৎসি অতীতের কারণে উগ্র ডানপন্থার ওপর ঐতিহাসিকভাবে যে কলঙ্ক লেগে আছে, তা সত্ত্বেও এই উত্থান তাৎপর্যপূর্ণ। দলটির একজন জ্যেষ্ঠ রাজনীতিবিদ গত বছর একটি মন্তব্য করে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, নাৎসিদের প্রধান আধা সামরিক বাহিনী এসএস ‘পুরোপুরি অপরাধী ছিল না’।
এদিকে গত ৯ জানুয়ারি ইলন মাস্ক এক্সে এএফডি নেত্রী অ্যালিস ভাইডেলের সাক্ষাৎকার প্রচার করেন।
এএফডির ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তা ইউরোপজুড়ে ছড়িয়ে পড়া একটি ঘটনার দৃষ্টান্ত। যা থেকে বোঝা যায়, জনতুষ্টিবাদী উগ্র ডানপন্থী দলগুলো ইউরোপে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় সাফল্য পাচ্ছে। একসময় রাজনৈতিক প্রান্তিক অবস্থানে থাকা এই দলগুলো এখন ইতালি, নেদারল্যান্ডস, হাঙ্গেরি, স্লোভাকিয়া, ফিনল্যান্ড ও ক্রোয়েশিয়ায় সরকার চালাচ্ছে অথবা সরকার গঠনে অংশীদার হচ্ছে। সুইডেন, অস্ট্রিয়া ও জার্মানির পার্লামেন্টেও তারা বৃহত্তম বা দ্বিতীয় বৃহত্তম দল এবং ফ্রান্সেও জনমত সমীক্ষায় তাদের সমর্থন বাড়ছে। এ ছাড়া রোমানিয়া, বেলজিয়াম, স্পেন ও পর্তুগালেও উগ্র ডানপন্থার সমর্থন বাড়ছে।
উচ্চ অভিবাসন, অর্থনৈতিক স্থবিরতা এবং বাক্স্বাধীনতার ওপর অনুভূত সীমাবদ্ধতা—তাদের জনপ্রিয়তা বাড়াতে সাহায্য করেছে। আর মাস্ক তাঁর ‘এক্সে’ এই বিষয়গুলোকেই বেশি করে তুলে ধরছেন।
রয়টার্স ২০ হাজারের বেশি পোস্ট ও রিপোস্ট পর্যালোচনায় দেখেছে, ইলন মাস্ক ডোনাল্ড ট্রাম্পকে গত নভেম্বরে হোয়াইট হাউসে ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করার পর থেকে ইউরোপীয় রাজনীতিতে বেশি মনোযোগ দিচ্ছেন।
মাস্ক ব্রিটেন, ইতালি ও রোমানিয়ার ডানপন্থী ব্যক্তিত্বদের ‘এক্সে’ প্রচার করেছেন এবং রাজনৈতিক নেতা ও ইইউর সিনিয়র কর্মকর্তাদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করেছেন।
গত বছরের ২০ ডিসেম্বর মাস্ক যখন জার্মানিতে এএফডিকে প্রথম স্পষ্টভাবে সমর্থন করেন, তখন রয়টার্সের জনমত সমীক্ষা অনুসারে দলটির সমর্থন ছিল মাত্র ১৯ দশমিক ৩ শতাংশ। তারা নির্বাচনে ভোট পেয়েছে ২০ দশমিক ৮ শতাংশ।
রয়টার্সের সঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারে তিনজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেছেন, এই সংখ্যাগুলো থেকে বোঝা যায়, মাস্কের সমর্থনে নির্বাচনের ওপর খুব কম প্রভাব পড়েছে। তবে মধ্যপ্রাচ্য ও আফগানিস্তান থেকে আসা সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের দ্বারা জার্মানিতে তিনটি সহিংস হামলার ঘটনাও এএফডিকে সাহায্য করতে পারে, যারা অভিবাসীদের গণবহিষ্কারের আহ্বান জানিয়েছে।
কিন্তু বিশ্লেষকদের মধ্যে দুজন মনে করেন, মাস্ক কিছু ভোটারের মধ্যে—বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের কাছে দলটির আকর্ষণ বাড়িয়েছেন, যা আগামী নির্বাচনে তাদের জন্য ভালো ফল নিয়ে আসতে পারে।
জার্মানির ডব্লিউএইচইউ—অটো বেইশিম স্কুল অব ম্যানেজমেন্টের কৌশল ও মার্কেটিং বিভাগের চেয়ার মার্টিন ফাসনাখট বলেন, ‘তিনি (মাস্ক) এএফডিকে কিছুটা হলেও আকর্ষণীয় ও উদ্ভাবনী দেখাতে সাহায্য করেছেন।’
তবে মাস্কের উগ্র ডানপন্থী দলের প্রতি উৎসাহ সম্ভবত টেসলার জন্য ক্ষতির কারণ হচ্ছে। ইউরোপীয় অটোমোবাইল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের (এসিইএ) তথ্য অনুযায়ী, জানুয়ারিতে ইউরোপে টেসলার বিক্রি আগের বছরের তুলনায় ৪৫ শতাংশ কমে গেছে। অথচ তাদের প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিক্রি ৩৭ শতাংশের বেশি বেড়েছে।
ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে ইউরোপে বিক্রির পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, টেসলার এই পতন অব্যাহত রয়েছে। চারটি করপোরেট-কার ফ্লিট ম্যানেজার রয়টার্সকে জানিয়েছেন, তাদের শোরুমে টেসলার বিক্রি আগের মতোই আছে। কোথাও কমেছে। তবে এই অবস্থা কঠিন সময়ের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
২০২৪ সালের শুরু থেকে এক্সে মাস্কের পোস্ট ও রিপোস্টগুলো পর্যালোচনা করেছে রয়টার্স। এতে দেখা গেছে, নভেম্বরে ট্রাম্পকে হোয়াইট হাউসে ফিরিয়ে আনতে ২৫০ বিলিয়নের বেশি ডলার অনুদান দেওয়ার পর তিনি ইউরোপের দিকে মনোযোগ দিয়েছেন।
তিনি ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সমালোচনা করেছেন। কারাবন্দী এক উগ্র ডানপন্থী কর্মীর মুক্তির আহ্বান জানিয়েছেন এবং ‘রিফর্ম’ নামক একটি ডানপন্থী দলের সমর্থন করেছেন। যাঁরা ট্রাম্পের মতোই অভিবাসন কমানো এবং জলবায়ু পরিবর্তন ব্যয় ত্যাগ করার অঙ্গীকার করেছে।
মাস্ক ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন। তাঁরা উভয়েই অভিবাসন এবং পশ্চিমা দেশগুলোতে কম জন্মহার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। সম্প্রতি মেলোনি ইলন মাস্ককে ‘মূল্যবান জিনিয়াস’ বলে অভিহিত করেছেন।
লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসের মিডিয়া ও কমিউনিকেশনস রেগুলেশন অ্যান্ড পলিসির বিশেষজ্ঞ ড্যামিয়ান টাম্বিনি বলেন, ইউরোপের জনমতকে প্রভাবিত করার ‘অসীম ক্ষমতা’ রয়েছে এক্সের মতো মার্কিন টেক প্ল্যাটফর্মগুলোর।
টাম্বিনি বলেন, ‘এটা অসম্ভব নয় যে তিনি (মাস্ক) যেকোনো দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তন করে দিতে পারেন। এর ফলে ইইউর অভ্যন্তরে ক্ষমতার ভারসাম্যেরও সম্পূর্ণ পরিবর্তন ঘটতে পারে।’
ফরাসি রাজনৈতিক বিশ্লেষক আসমা মহাল্লা বলেন, ইউরোপীয় সরকারগুলো মাস্কের ক্রমবর্ধমান খ্যাতি নিয়ে ‘উদ্বিগ্ন’। তিনি বলেন, ‘মাস্কের লক্ষ্য ইউরোপীয় নীতিকে দুর্বল করা এবং আমেরিকার আধিপত্য বিস্তার করা।’
তবে আমেরিকার ইউরোপ নীতিতে মাস্কের ভূমিকা নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি হোয়াইট হাউস।
ইউরোপের সমালোচনায় মাস্ক প্রায়শই এক্সে যাচাই না করা তথ্য শেয়ার করেন। যার মধ্যে বেনামি অ্যাকাউন্টগুলোও থাকে। যেগুলো তাঁকে ট্যাগ করে এবং তিনি ভুল তথ্য ছড়ানোর জন্য পরিচিত কিছু অ্যাকাউন্ট থেকেও বিভিন্ন তথ্য প্রচার করেন।
রয়টার্সের পর্যালোচনায় দেখা গেছে, মাস্কের বেশির ভাগ পোস্ট গণ-অভিবাসন এবং তথাকথিত বাক্স্বাধীনতার বিরুদ্ধে। তিনি ইউরোপের কম জন্মহার এবং ট্রান্সজেন্ডার নীতি নিয়েও সমালোচনা করেছেন। মাস্ক ঐতিহ্যবাহী মিডিয়া, রাজনীতিবিদ ও শিক্ষাবিদদের পাশ কাটিয়ে বরং কট্টর ডানপন্থী কিছু অ্যাকাউন্টের প্রতি বেশি মনোযোগ দিয়েছেন।
এ ধরনের একটি অ্যাকাউন্ট হলো পিটার সুইডেন-৭। সাংবাদিক ও রাজনৈতিক ভাষ্যকার পিটার ইমানুয়েলসেন এই অ্যাকাউন্ট চালান। এই ইমানুয়েলসেন ২০০১ সালের সেপ্টেম্বরে আমেরিকায় আল-কায়েদার হামলাকে ‘ইনসাইড জব’ এবং চাঁদে অবতরণকে ‘ভুয়া’ বলে অভিহিত করেছিলেন।
মাস্ক অন্তত অর্ধডজন বিভ্রান্তিকর পোস্টে ইমানুয়েলসেনকে প্রচার করেছেন। গত জানুয়ারিতে তিনি ইমানুয়েলসেনের একটি পোস্ট রিপোস্ট করেন। যেখানে বলা হয়েছিল, ফেসবুক পোস্টের জন্য এক ব্যক্তিকে ২০ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অথচ বাস্তবে ওই ব্যক্তি তাঁর পোস্টে উদ্বাস্তুদের আশ্রয় দেওয়া একটি হোটেলে হামলার জন্য লোকজনকে উসকানি দিয়েছিলেন। তাই তাঁকে সাজা দেওয়া হয়। কিন্তু মাস্ক বিষয়টি যাচাই করেননি, এমনকি তাঁর পোস্টে উল্লেখও করেননি।
ইউরোপের বিষয়ে মাস্ক যে অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন, সেটি হলো টমি রবিনসন নামের একজন ডানপন্থী আন্দোলনকারীর। যিনি প্রতারণা ও হামলার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। তাঁর আসল নাম স্টিফেন ইয়াক্সলি-লেনন। লন্ডনের একটি আদালতের আদেশ অমান্য করায় বর্তমানে তিনি কারাগারে বন্দী।
মাস্ক এই রবিনসনের মুক্তির আহ্বান জানিয়েছেন এবং একটি মিথ্যা পোস্ট রিপোস্ট করেছেন। যেখানে রবিনসনকে ‘রাজনৈতিক বন্দী’ বলা হয়েছে। অন্যদিকে রবিনসনের অ্যাকাউন্ট থেকে গত ২০ জানুয়ারির একটি পোস্টে বলা হয়েছিল, বিলিয়নিয়ার মাস্ক তাঁর আইনি খরচের কিছু অংশ পরিশোধ করছেন।
বিষয়টির সত্যতা যাচাই করতে রয়টার্স রবিনসনের আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ করে। তবে তিনি কোনো সাড়া দেননি।
ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক মের্ট ক্যান বায়ার মাস্কের সোশ্যাল মিডিয়া নেটওয়ার্ক নিয়ে গবেষণা করছেন। তিনি বলেন, মাস্কের কাছে এই অ্যাকাউন্টগুলোর মালিকেরা ডানপন্থীদের যুদ্ধের পদাতিক সৈনিক। যেখানে একদিকে আছে সীমাবদ্ধতা আরোপকারী বামপন্থী রাজনীতিবিদ এবং অন্যদিকে বাক্স্বাধীনতার পক্ষে থাকা ডানপন্থীরা।
ইউরোপীয় রাজনীতিতে মাস্কের প্রভাব এখনো অস্পষ্ট। তবে তাঁর সক্রিয়তা টেসলার ক্ষতি করছে বলেই মনে হচ্ছে। ২০২৪ সালে টেসলার বিক্রি কমেছে ১০ দশমিক ৮ শতাংশ। যেখানে সামগ্রিকভাবে গাড়ির বাজার মাত্র ১ দশমিক ৩ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে।
জানুয়ারির শেষের দিকে একটি বৈদ্যুতিক গাড়ি পর্যালোচনা ওয়েবসাইটের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, যুক্তরাজ্যের ৫৯ শতাংশ মানুষ বৈদ্যুতিক গাড়ি কিনতে ইচ্ছুক। তবে তারা মাস্কের কারণে টেসলা কিনবেন না। তারা ‘টেসলাটেকডাউন’ ও ‘স্বস্তিকার’ হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করেও এক্সে টেসলাবিরোধী প্রচার চালাচ্ছেন।
ব্রিটেনের একটি কমিউনিকেশনস ও মার্কেট ইন্টেলিজেন্স ফার্ম চালান বেন কিলবি। তিনি তিন বছর ধরে টেসলার ওয়াই মডেল চালাচ্ছেন। তবে মাস্কের কারণে এখন সেটি বিক্রি করে দিতে চাচ্ছেন। কিলবি বলেন, ‘আমি আমার টেসলাকে ভালোবাসি, এর প্রযুক্তিকে ভালোবাসি। কিন্তু আমি মাস্কের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকতে চাই না।’

দুই মাস ধরে টেক মোগল ইলন মাস্ক জার্মানির উগ্র ডানপন্থী দল ‘অলটারনেটিভ ফর জার্মানি’কে (এএফডি) সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়েছেন। তিনি দলটির পক্ষে প্রচারণার জন্য ৭০টির বেশি পোস্ট দিয়েছেন। তাঁর ২১৯ মিলিয়ন ফলোয়ারকে বলেছেন, এই দলই জার্মানির ‘একমাত্র ভরসা’।
রয়টার্সের এক বিশ্লেষণে উঠে এসেছে মাস্কের এই সমর্থন গত ২৩ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে এএফডির দ্বিতীয় স্থান অর্জনে খুব সামান্য ভূমিকা রেখেছে। মাস্কের পোস্ট, জনমত জরিপের তথ্য এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে এই বিশ্লেষণ করে রয়টার্স।
তবে টেসলার সিইও মাস্ককে এতে দমিয়ে রাখা যায়নি। তিনি ইউরোপজুড়ে এখনো ডানপন্থী প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। বিশ্লেষকেরা বলছেন, এর সবচেয়ে দৃশ্যমান প্রভাব সম্ভবত টেসলার ক্ষতি। তবে এর পেছনে মাস্কের ব্যবসায়িক সাম্রাজ্যের দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য থাকতে পারে। যেমন এমন রাজনৈতিক দলগুলোকে সমর্থন করা, যারা ভবিষ্যতে ক্ষমতায় এলে মাস্কের প্রযুক্তি বা উদ্ভাবনের পথে বাধা হবে না।
এই প্রতিবেদন তৈরির সময় ইলন মাস্ক এবং টেসলার কাছে মন্তব্যের অনুরোধ করা হয়েছিল। তবে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
গত জানুয়ারিতে মাস্ক ইউরোপের ‘নিয়মকানুন ও আমলাতন্ত্রের স্তূপ’ নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন। এর আগে গত বছর ইউরোপীয় ইউনিয়নের এক কর্মকর্তা তাঁকে নিষেধাজ্ঞা দিলে মাস্ক এক্সে একটি মিম পোস্ট করে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন। যেখানে ‘ট্রপিক থান্ডার’ সিনেমার একটি উদ্ধৃতি ছিল, ‘টেক আ বিগ স্টেপ ব্যাক অ্যান্ড লিটারেলি, ফাক ইউর ওউন ফেস!’
জার্মানির অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা এরই মধ্যে এএফডিকে একটি সন্দেহভাজন উগ্রবাদী গোষ্ঠী হিসেবে চিহ্নিত করেছে। তা সত্ত্বেও দলটি গত মাসের নির্বাচনে জার্মানির বৃহত্তম বিরোধী দল হিসেবে উঠে এসেছে। জার্মানির নাৎসি অতীতের কারণে উগ্র ডানপন্থার ওপর ঐতিহাসিকভাবে যে কলঙ্ক লেগে আছে, তা সত্ত্বেও এই উত্থান তাৎপর্যপূর্ণ। দলটির একজন জ্যেষ্ঠ রাজনীতিবিদ গত বছর একটি মন্তব্য করে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, নাৎসিদের প্রধান আধা সামরিক বাহিনী এসএস ‘পুরোপুরি অপরাধী ছিল না’।
এদিকে গত ৯ জানুয়ারি ইলন মাস্ক এক্সে এএফডি নেত্রী অ্যালিস ভাইডেলের সাক্ষাৎকার প্রচার করেন।
এএফডির ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তা ইউরোপজুড়ে ছড়িয়ে পড়া একটি ঘটনার দৃষ্টান্ত। যা থেকে বোঝা যায়, জনতুষ্টিবাদী উগ্র ডানপন্থী দলগুলো ইউরোপে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় সাফল্য পাচ্ছে। একসময় রাজনৈতিক প্রান্তিক অবস্থানে থাকা এই দলগুলো এখন ইতালি, নেদারল্যান্ডস, হাঙ্গেরি, স্লোভাকিয়া, ফিনল্যান্ড ও ক্রোয়েশিয়ায় সরকার চালাচ্ছে অথবা সরকার গঠনে অংশীদার হচ্ছে। সুইডেন, অস্ট্রিয়া ও জার্মানির পার্লামেন্টেও তারা বৃহত্তম বা দ্বিতীয় বৃহত্তম দল এবং ফ্রান্সেও জনমত সমীক্ষায় তাদের সমর্থন বাড়ছে। এ ছাড়া রোমানিয়া, বেলজিয়াম, স্পেন ও পর্তুগালেও উগ্র ডানপন্থার সমর্থন বাড়ছে।
উচ্চ অভিবাসন, অর্থনৈতিক স্থবিরতা এবং বাক্স্বাধীনতার ওপর অনুভূত সীমাবদ্ধতা—তাদের জনপ্রিয়তা বাড়াতে সাহায্য করেছে। আর মাস্ক তাঁর ‘এক্সে’ এই বিষয়গুলোকেই বেশি করে তুলে ধরছেন।
রয়টার্স ২০ হাজারের বেশি পোস্ট ও রিপোস্ট পর্যালোচনায় দেখেছে, ইলন মাস্ক ডোনাল্ড ট্রাম্পকে গত নভেম্বরে হোয়াইট হাউসে ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করার পর থেকে ইউরোপীয় রাজনীতিতে বেশি মনোযোগ দিচ্ছেন।
মাস্ক ব্রিটেন, ইতালি ও রোমানিয়ার ডানপন্থী ব্যক্তিত্বদের ‘এক্সে’ প্রচার করেছেন এবং রাজনৈতিক নেতা ও ইইউর সিনিয়র কর্মকর্তাদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করেছেন।
গত বছরের ২০ ডিসেম্বর মাস্ক যখন জার্মানিতে এএফডিকে প্রথম স্পষ্টভাবে সমর্থন করেন, তখন রয়টার্সের জনমত সমীক্ষা অনুসারে দলটির সমর্থন ছিল মাত্র ১৯ দশমিক ৩ শতাংশ। তারা নির্বাচনে ভোট পেয়েছে ২০ দশমিক ৮ শতাংশ।
রয়টার্সের সঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারে তিনজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেছেন, এই সংখ্যাগুলো থেকে বোঝা যায়, মাস্কের সমর্থনে নির্বাচনের ওপর খুব কম প্রভাব পড়েছে। তবে মধ্যপ্রাচ্য ও আফগানিস্তান থেকে আসা সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের দ্বারা জার্মানিতে তিনটি সহিংস হামলার ঘটনাও এএফডিকে সাহায্য করতে পারে, যারা অভিবাসীদের গণবহিষ্কারের আহ্বান জানিয়েছে।
কিন্তু বিশ্লেষকদের মধ্যে দুজন মনে করেন, মাস্ক কিছু ভোটারের মধ্যে—বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের কাছে দলটির আকর্ষণ বাড়িয়েছেন, যা আগামী নির্বাচনে তাদের জন্য ভালো ফল নিয়ে আসতে পারে।
জার্মানির ডব্লিউএইচইউ—অটো বেইশিম স্কুল অব ম্যানেজমেন্টের কৌশল ও মার্কেটিং বিভাগের চেয়ার মার্টিন ফাসনাখট বলেন, ‘তিনি (মাস্ক) এএফডিকে কিছুটা হলেও আকর্ষণীয় ও উদ্ভাবনী দেখাতে সাহায্য করেছেন।’
তবে মাস্কের উগ্র ডানপন্থী দলের প্রতি উৎসাহ সম্ভবত টেসলার জন্য ক্ষতির কারণ হচ্ছে। ইউরোপীয় অটোমোবাইল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের (এসিইএ) তথ্য অনুযায়ী, জানুয়ারিতে ইউরোপে টেসলার বিক্রি আগের বছরের তুলনায় ৪৫ শতাংশ কমে গেছে। অথচ তাদের প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিক্রি ৩৭ শতাংশের বেশি বেড়েছে।
ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে ইউরোপে বিক্রির পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, টেসলার এই পতন অব্যাহত রয়েছে। চারটি করপোরেট-কার ফ্লিট ম্যানেজার রয়টার্সকে জানিয়েছেন, তাদের শোরুমে টেসলার বিক্রি আগের মতোই আছে। কোথাও কমেছে। তবে এই অবস্থা কঠিন সময়ের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
২০২৪ সালের শুরু থেকে এক্সে মাস্কের পোস্ট ও রিপোস্টগুলো পর্যালোচনা করেছে রয়টার্স। এতে দেখা গেছে, নভেম্বরে ট্রাম্পকে হোয়াইট হাউসে ফিরিয়ে আনতে ২৫০ বিলিয়নের বেশি ডলার অনুদান দেওয়ার পর তিনি ইউরোপের দিকে মনোযোগ দিয়েছেন।
তিনি ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সমালোচনা করেছেন। কারাবন্দী এক উগ্র ডানপন্থী কর্মীর মুক্তির আহ্বান জানিয়েছেন এবং ‘রিফর্ম’ নামক একটি ডানপন্থী দলের সমর্থন করেছেন। যাঁরা ট্রাম্পের মতোই অভিবাসন কমানো এবং জলবায়ু পরিবর্তন ব্যয় ত্যাগ করার অঙ্গীকার করেছে।
মাস্ক ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন। তাঁরা উভয়েই অভিবাসন এবং পশ্চিমা দেশগুলোতে কম জন্মহার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। সম্প্রতি মেলোনি ইলন মাস্ককে ‘মূল্যবান জিনিয়াস’ বলে অভিহিত করেছেন।
লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসের মিডিয়া ও কমিউনিকেশনস রেগুলেশন অ্যান্ড পলিসির বিশেষজ্ঞ ড্যামিয়ান টাম্বিনি বলেন, ইউরোপের জনমতকে প্রভাবিত করার ‘অসীম ক্ষমতা’ রয়েছে এক্সের মতো মার্কিন টেক প্ল্যাটফর্মগুলোর।
টাম্বিনি বলেন, ‘এটা অসম্ভব নয় যে তিনি (মাস্ক) যেকোনো দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তন করে দিতে পারেন। এর ফলে ইইউর অভ্যন্তরে ক্ষমতার ভারসাম্যেরও সম্পূর্ণ পরিবর্তন ঘটতে পারে।’
ফরাসি রাজনৈতিক বিশ্লেষক আসমা মহাল্লা বলেন, ইউরোপীয় সরকারগুলো মাস্কের ক্রমবর্ধমান খ্যাতি নিয়ে ‘উদ্বিগ্ন’। তিনি বলেন, ‘মাস্কের লক্ষ্য ইউরোপীয় নীতিকে দুর্বল করা এবং আমেরিকার আধিপত্য বিস্তার করা।’
তবে আমেরিকার ইউরোপ নীতিতে মাস্কের ভূমিকা নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি হোয়াইট হাউস।
ইউরোপের সমালোচনায় মাস্ক প্রায়শই এক্সে যাচাই না করা তথ্য শেয়ার করেন। যার মধ্যে বেনামি অ্যাকাউন্টগুলোও থাকে। যেগুলো তাঁকে ট্যাগ করে এবং তিনি ভুল তথ্য ছড়ানোর জন্য পরিচিত কিছু অ্যাকাউন্ট থেকেও বিভিন্ন তথ্য প্রচার করেন।
রয়টার্সের পর্যালোচনায় দেখা গেছে, মাস্কের বেশির ভাগ পোস্ট গণ-অভিবাসন এবং তথাকথিত বাক্স্বাধীনতার বিরুদ্ধে। তিনি ইউরোপের কম জন্মহার এবং ট্রান্সজেন্ডার নীতি নিয়েও সমালোচনা করেছেন। মাস্ক ঐতিহ্যবাহী মিডিয়া, রাজনীতিবিদ ও শিক্ষাবিদদের পাশ কাটিয়ে বরং কট্টর ডানপন্থী কিছু অ্যাকাউন্টের প্রতি বেশি মনোযোগ দিয়েছেন।
এ ধরনের একটি অ্যাকাউন্ট হলো পিটার সুইডেন-৭। সাংবাদিক ও রাজনৈতিক ভাষ্যকার পিটার ইমানুয়েলসেন এই অ্যাকাউন্ট চালান। এই ইমানুয়েলসেন ২০০১ সালের সেপ্টেম্বরে আমেরিকায় আল-কায়েদার হামলাকে ‘ইনসাইড জব’ এবং চাঁদে অবতরণকে ‘ভুয়া’ বলে অভিহিত করেছিলেন।
মাস্ক অন্তত অর্ধডজন বিভ্রান্তিকর পোস্টে ইমানুয়েলসেনকে প্রচার করেছেন। গত জানুয়ারিতে তিনি ইমানুয়েলসেনের একটি পোস্ট রিপোস্ট করেন। যেখানে বলা হয়েছিল, ফেসবুক পোস্টের জন্য এক ব্যক্তিকে ২০ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অথচ বাস্তবে ওই ব্যক্তি তাঁর পোস্টে উদ্বাস্তুদের আশ্রয় দেওয়া একটি হোটেলে হামলার জন্য লোকজনকে উসকানি দিয়েছিলেন। তাই তাঁকে সাজা দেওয়া হয়। কিন্তু মাস্ক বিষয়টি যাচাই করেননি, এমনকি তাঁর পোস্টে উল্লেখও করেননি।
ইউরোপের বিষয়ে মাস্ক যে অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন, সেটি হলো টমি রবিনসন নামের একজন ডানপন্থী আন্দোলনকারীর। যিনি প্রতারণা ও হামলার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। তাঁর আসল নাম স্টিফেন ইয়াক্সলি-লেনন। লন্ডনের একটি আদালতের আদেশ অমান্য করায় বর্তমানে তিনি কারাগারে বন্দী।
মাস্ক এই রবিনসনের মুক্তির আহ্বান জানিয়েছেন এবং একটি মিথ্যা পোস্ট রিপোস্ট করেছেন। যেখানে রবিনসনকে ‘রাজনৈতিক বন্দী’ বলা হয়েছে। অন্যদিকে রবিনসনের অ্যাকাউন্ট থেকে গত ২০ জানুয়ারির একটি পোস্টে বলা হয়েছিল, বিলিয়নিয়ার মাস্ক তাঁর আইনি খরচের কিছু অংশ পরিশোধ করছেন।
বিষয়টির সত্যতা যাচাই করতে রয়টার্স রবিনসনের আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ করে। তবে তিনি কোনো সাড়া দেননি।
ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক মের্ট ক্যান বায়ার মাস্কের সোশ্যাল মিডিয়া নেটওয়ার্ক নিয়ে গবেষণা করছেন। তিনি বলেন, মাস্কের কাছে এই অ্যাকাউন্টগুলোর মালিকেরা ডানপন্থীদের যুদ্ধের পদাতিক সৈনিক। যেখানে একদিকে আছে সীমাবদ্ধতা আরোপকারী বামপন্থী রাজনীতিবিদ এবং অন্যদিকে বাক্স্বাধীনতার পক্ষে থাকা ডানপন্থীরা।
ইউরোপীয় রাজনীতিতে মাস্কের প্রভাব এখনো অস্পষ্ট। তবে তাঁর সক্রিয়তা টেসলার ক্ষতি করছে বলেই মনে হচ্ছে। ২০২৪ সালে টেসলার বিক্রি কমেছে ১০ দশমিক ৮ শতাংশ। যেখানে সামগ্রিকভাবে গাড়ির বাজার মাত্র ১ দশমিক ৩ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে।
জানুয়ারির শেষের দিকে একটি বৈদ্যুতিক গাড়ি পর্যালোচনা ওয়েবসাইটের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, যুক্তরাজ্যের ৫৯ শতাংশ মানুষ বৈদ্যুতিক গাড়ি কিনতে ইচ্ছুক। তবে তারা মাস্কের কারণে টেসলা কিনবেন না। তারা ‘টেসলাটেকডাউন’ ও ‘স্বস্তিকার’ হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করেও এক্সে টেসলাবিরোধী প্রচার চালাচ্ছেন।
ব্রিটেনের একটি কমিউনিকেশনস ও মার্কেট ইন্টেলিজেন্স ফার্ম চালান বেন কিলবি। তিনি তিন বছর ধরে টেসলার ওয়াই মডেল চালাচ্ছেন। তবে মাস্কের কারণে এখন সেটি বিক্রি করে দিতে চাচ্ছেন। কিলবি বলেন, ‘আমি আমার টেসলাকে ভালোবাসি, এর প্রযুক্তিকে ভালোবাসি। কিন্তু আমি মাস্কের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকতে চাই না।’

দুই মাস ধরে টেক মোগল ইলন মাস্ক জার্মানির উগ্র ডানপন্থী দল ‘অলটারনেটিভ ফর জার্মানি’কে (এএফডি) সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়েছেন। তিনি দলটির পক্ষে প্রচারণার জন্য ৭০টির বেশি পোস্ট দিয়েছেন। তাঁর ২১৯ মিলিয়ন ফলোয়ারকে বলেছেন, এই দলই জার্মানির ‘একমাত্র ভরসা’।
রয়টার্সের এক বিশ্লেষণে উঠে এসেছে মাস্কের এই সমর্থন গত ২৩ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে এএফডির দ্বিতীয় স্থান অর্জনে খুব সামান্য ভূমিকা রেখেছে। মাস্কের পোস্ট, জনমত জরিপের তথ্য এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে এই বিশ্লেষণ করে রয়টার্স।
তবে টেসলার সিইও মাস্ককে এতে দমিয়ে রাখা যায়নি। তিনি ইউরোপজুড়ে এখনো ডানপন্থী প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। বিশ্লেষকেরা বলছেন, এর সবচেয়ে দৃশ্যমান প্রভাব সম্ভবত টেসলার ক্ষতি। তবে এর পেছনে মাস্কের ব্যবসায়িক সাম্রাজ্যের দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য থাকতে পারে। যেমন এমন রাজনৈতিক দলগুলোকে সমর্থন করা, যারা ভবিষ্যতে ক্ষমতায় এলে মাস্কের প্রযুক্তি বা উদ্ভাবনের পথে বাধা হবে না।
এই প্রতিবেদন তৈরির সময় ইলন মাস্ক এবং টেসলার কাছে মন্তব্যের অনুরোধ করা হয়েছিল। তবে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
গত জানুয়ারিতে মাস্ক ইউরোপের ‘নিয়মকানুন ও আমলাতন্ত্রের স্তূপ’ নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন। এর আগে গত বছর ইউরোপীয় ইউনিয়নের এক কর্মকর্তা তাঁকে নিষেধাজ্ঞা দিলে মাস্ক এক্সে একটি মিম পোস্ট করে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন। যেখানে ‘ট্রপিক থান্ডার’ সিনেমার একটি উদ্ধৃতি ছিল, ‘টেক আ বিগ স্টেপ ব্যাক অ্যান্ড লিটারেলি, ফাক ইউর ওউন ফেস!’
জার্মানির অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা এরই মধ্যে এএফডিকে একটি সন্দেহভাজন উগ্রবাদী গোষ্ঠী হিসেবে চিহ্নিত করেছে। তা সত্ত্বেও দলটি গত মাসের নির্বাচনে জার্মানির বৃহত্তম বিরোধী দল হিসেবে উঠে এসেছে। জার্মানির নাৎসি অতীতের কারণে উগ্র ডানপন্থার ওপর ঐতিহাসিকভাবে যে কলঙ্ক লেগে আছে, তা সত্ত্বেও এই উত্থান তাৎপর্যপূর্ণ। দলটির একজন জ্যেষ্ঠ রাজনীতিবিদ গত বছর একটি মন্তব্য করে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, নাৎসিদের প্রধান আধা সামরিক বাহিনী এসএস ‘পুরোপুরি অপরাধী ছিল না’।
এদিকে গত ৯ জানুয়ারি ইলন মাস্ক এক্সে এএফডি নেত্রী অ্যালিস ভাইডেলের সাক্ষাৎকার প্রচার করেন।
এএফডির ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তা ইউরোপজুড়ে ছড়িয়ে পড়া একটি ঘটনার দৃষ্টান্ত। যা থেকে বোঝা যায়, জনতুষ্টিবাদী উগ্র ডানপন্থী দলগুলো ইউরোপে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় সাফল্য পাচ্ছে। একসময় রাজনৈতিক প্রান্তিক অবস্থানে থাকা এই দলগুলো এখন ইতালি, নেদারল্যান্ডস, হাঙ্গেরি, স্লোভাকিয়া, ফিনল্যান্ড ও ক্রোয়েশিয়ায় সরকার চালাচ্ছে অথবা সরকার গঠনে অংশীদার হচ্ছে। সুইডেন, অস্ট্রিয়া ও জার্মানির পার্লামেন্টেও তারা বৃহত্তম বা দ্বিতীয় বৃহত্তম দল এবং ফ্রান্সেও জনমত সমীক্ষায় তাদের সমর্থন বাড়ছে। এ ছাড়া রোমানিয়া, বেলজিয়াম, স্পেন ও পর্তুগালেও উগ্র ডানপন্থার সমর্থন বাড়ছে।
উচ্চ অভিবাসন, অর্থনৈতিক স্থবিরতা এবং বাক্স্বাধীনতার ওপর অনুভূত সীমাবদ্ধতা—তাদের জনপ্রিয়তা বাড়াতে সাহায্য করেছে। আর মাস্ক তাঁর ‘এক্সে’ এই বিষয়গুলোকেই বেশি করে তুলে ধরছেন।
রয়টার্স ২০ হাজারের বেশি পোস্ট ও রিপোস্ট পর্যালোচনায় দেখেছে, ইলন মাস্ক ডোনাল্ড ট্রাম্পকে গত নভেম্বরে হোয়াইট হাউসে ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করার পর থেকে ইউরোপীয় রাজনীতিতে বেশি মনোযোগ দিচ্ছেন।
মাস্ক ব্রিটেন, ইতালি ও রোমানিয়ার ডানপন্থী ব্যক্তিত্বদের ‘এক্সে’ প্রচার করেছেন এবং রাজনৈতিক নেতা ও ইইউর সিনিয়র কর্মকর্তাদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করেছেন।
গত বছরের ২০ ডিসেম্বর মাস্ক যখন জার্মানিতে এএফডিকে প্রথম স্পষ্টভাবে সমর্থন করেন, তখন রয়টার্সের জনমত সমীক্ষা অনুসারে দলটির সমর্থন ছিল মাত্র ১৯ দশমিক ৩ শতাংশ। তারা নির্বাচনে ভোট পেয়েছে ২০ দশমিক ৮ শতাংশ।
রয়টার্সের সঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারে তিনজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেছেন, এই সংখ্যাগুলো থেকে বোঝা যায়, মাস্কের সমর্থনে নির্বাচনের ওপর খুব কম প্রভাব পড়েছে। তবে মধ্যপ্রাচ্য ও আফগানিস্তান থেকে আসা সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের দ্বারা জার্মানিতে তিনটি সহিংস হামলার ঘটনাও এএফডিকে সাহায্য করতে পারে, যারা অভিবাসীদের গণবহিষ্কারের আহ্বান জানিয়েছে।
কিন্তু বিশ্লেষকদের মধ্যে দুজন মনে করেন, মাস্ক কিছু ভোটারের মধ্যে—বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের কাছে দলটির আকর্ষণ বাড়িয়েছেন, যা আগামী নির্বাচনে তাদের জন্য ভালো ফল নিয়ে আসতে পারে।
জার্মানির ডব্লিউএইচইউ—অটো বেইশিম স্কুল অব ম্যানেজমেন্টের কৌশল ও মার্কেটিং বিভাগের চেয়ার মার্টিন ফাসনাখট বলেন, ‘তিনি (মাস্ক) এএফডিকে কিছুটা হলেও আকর্ষণীয় ও উদ্ভাবনী দেখাতে সাহায্য করেছেন।’
তবে মাস্কের উগ্র ডানপন্থী দলের প্রতি উৎসাহ সম্ভবত টেসলার জন্য ক্ষতির কারণ হচ্ছে। ইউরোপীয় অটোমোবাইল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের (এসিইএ) তথ্য অনুযায়ী, জানুয়ারিতে ইউরোপে টেসলার বিক্রি আগের বছরের তুলনায় ৪৫ শতাংশ কমে গেছে। অথচ তাদের প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিক্রি ৩৭ শতাংশের বেশি বেড়েছে।
ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে ইউরোপে বিক্রির পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, টেসলার এই পতন অব্যাহত রয়েছে। চারটি করপোরেট-কার ফ্লিট ম্যানেজার রয়টার্সকে জানিয়েছেন, তাদের শোরুমে টেসলার বিক্রি আগের মতোই আছে। কোথাও কমেছে। তবে এই অবস্থা কঠিন সময়ের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
২০২৪ সালের শুরু থেকে এক্সে মাস্কের পোস্ট ও রিপোস্টগুলো পর্যালোচনা করেছে রয়টার্স। এতে দেখা গেছে, নভেম্বরে ট্রাম্পকে হোয়াইট হাউসে ফিরিয়ে আনতে ২৫০ বিলিয়নের বেশি ডলার অনুদান দেওয়ার পর তিনি ইউরোপের দিকে মনোযোগ দিয়েছেন।
তিনি ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সমালোচনা করেছেন। কারাবন্দী এক উগ্র ডানপন্থী কর্মীর মুক্তির আহ্বান জানিয়েছেন এবং ‘রিফর্ম’ নামক একটি ডানপন্থী দলের সমর্থন করেছেন। যাঁরা ট্রাম্পের মতোই অভিবাসন কমানো এবং জলবায়ু পরিবর্তন ব্যয় ত্যাগ করার অঙ্গীকার করেছে।
মাস্ক ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন। তাঁরা উভয়েই অভিবাসন এবং পশ্চিমা দেশগুলোতে কম জন্মহার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। সম্প্রতি মেলোনি ইলন মাস্ককে ‘মূল্যবান জিনিয়াস’ বলে অভিহিত করেছেন।
লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসের মিডিয়া ও কমিউনিকেশনস রেগুলেশন অ্যান্ড পলিসির বিশেষজ্ঞ ড্যামিয়ান টাম্বিনি বলেন, ইউরোপের জনমতকে প্রভাবিত করার ‘অসীম ক্ষমতা’ রয়েছে এক্সের মতো মার্কিন টেক প্ল্যাটফর্মগুলোর।
টাম্বিনি বলেন, ‘এটা অসম্ভব নয় যে তিনি (মাস্ক) যেকোনো দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তন করে দিতে পারেন। এর ফলে ইইউর অভ্যন্তরে ক্ষমতার ভারসাম্যেরও সম্পূর্ণ পরিবর্তন ঘটতে পারে।’
ফরাসি রাজনৈতিক বিশ্লেষক আসমা মহাল্লা বলেন, ইউরোপীয় সরকারগুলো মাস্কের ক্রমবর্ধমান খ্যাতি নিয়ে ‘উদ্বিগ্ন’। তিনি বলেন, ‘মাস্কের লক্ষ্য ইউরোপীয় নীতিকে দুর্বল করা এবং আমেরিকার আধিপত্য বিস্তার করা।’
তবে আমেরিকার ইউরোপ নীতিতে মাস্কের ভূমিকা নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি হোয়াইট হাউস।
ইউরোপের সমালোচনায় মাস্ক প্রায়শই এক্সে যাচাই না করা তথ্য শেয়ার করেন। যার মধ্যে বেনামি অ্যাকাউন্টগুলোও থাকে। যেগুলো তাঁকে ট্যাগ করে এবং তিনি ভুল তথ্য ছড়ানোর জন্য পরিচিত কিছু অ্যাকাউন্ট থেকেও বিভিন্ন তথ্য প্রচার করেন।
রয়টার্সের পর্যালোচনায় দেখা গেছে, মাস্কের বেশির ভাগ পোস্ট গণ-অভিবাসন এবং তথাকথিত বাক্স্বাধীনতার বিরুদ্ধে। তিনি ইউরোপের কম জন্মহার এবং ট্রান্সজেন্ডার নীতি নিয়েও সমালোচনা করেছেন। মাস্ক ঐতিহ্যবাহী মিডিয়া, রাজনীতিবিদ ও শিক্ষাবিদদের পাশ কাটিয়ে বরং কট্টর ডানপন্থী কিছু অ্যাকাউন্টের প্রতি বেশি মনোযোগ দিয়েছেন।
এ ধরনের একটি অ্যাকাউন্ট হলো পিটার সুইডেন-৭। সাংবাদিক ও রাজনৈতিক ভাষ্যকার পিটার ইমানুয়েলসেন এই অ্যাকাউন্ট চালান। এই ইমানুয়েলসেন ২০০১ সালের সেপ্টেম্বরে আমেরিকায় আল-কায়েদার হামলাকে ‘ইনসাইড জব’ এবং চাঁদে অবতরণকে ‘ভুয়া’ বলে অভিহিত করেছিলেন।
মাস্ক অন্তত অর্ধডজন বিভ্রান্তিকর পোস্টে ইমানুয়েলসেনকে প্রচার করেছেন। গত জানুয়ারিতে তিনি ইমানুয়েলসেনের একটি পোস্ট রিপোস্ট করেন। যেখানে বলা হয়েছিল, ফেসবুক পোস্টের জন্য এক ব্যক্তিকে ২০ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অথচ বাস্তবে ওই ব্যক্তি তাঁর পোস্টে উদ্বাস্তুদের আশ্রয় দেওয়া একটি হোটেলে হামলার জন্য লোকজনকে উসকানি দিয়েছিলেন। তাই তাঁকে সাজা দেওয়া হয়। কিন্তু মাস্ক বিষয়টি যাচাই করেননি, এমনকি তাঁর পোস্টে উল্লেখও করেননি।
ইউরোপের বিষয়ে মাস্ক যে অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন, সেটি হলো টমি রবিনসন নামের একজন ডানপন্থী আন্দোলনকারীর। যিনি প্রতারণা ও হামলার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। তাঁর আসল নাম স্টিফেন ইয়াক্সলি-লেনন। লন্ডনের একটি আদালতের আদেশ অমান্য করায় বর্তমানে তিনি কারাগারে বন্দী।
মাস্ক এই রবিনসনের মুক্তির আহ্বান জানিয়েছেন এবং একটি মিথ্যা পোস্ট রিপোস্ট করেছেন। যেখানে রবিনসনকে ‘রাজনৈতিক বন্দী’ বলা হয়েছে। অন্যদিকে রবিনসনের অ্যাকাউন্ট থেকে গত ২০ জানুয়ারির একটি পোস্টে বলা হয়েছিল, বিলিয়নিয়ার মাস্ক তাঁর আইনি খরচের কিছু অংশ পরিশোধ করছেন।
বিষয়টির সত্যতা যাচাই করতে রয়টার্স রবিনসনের আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ করে। তবে তিনি কোনো সাড়া দেননি।
ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক মের্ট ক্যান বায়ার মাস্কের সোশ্যাল মিডিয়া নেটওয়ার্ক নিয়ে গবেষণা করছেন। তিনি বলেন, মাস্কের কাছে এই অ্যাকাউন্টগুলোর মালিকেরা ডানপন্থীদের যুদ্ধের পদাতিক সৈনিক। যেখানে একদিকে আছে সীমাবদ্ধতা আরোপকারী বামপন্থী রাজনীতিবিদ এবং অন্যদিকে বাক্স্বাধীনতার পক্ষে থাকা ডানপন্থীরা।
ইউরোপীয় রাজনীতিতে মাস্কের প্রভাব এখনো অস্পষ্ট। তবে তাঁর সক্রিয়তা টেসলার ক্ষতি করছে বলেই মনে হচ্ছে। ২০২৪ সালে টেসলার বিক্রি কমেছে ১০ দশমিক ৮ শতাংশ। যেখানে সামগ্রিকভাবে গাড়ির বাজার মাত্র ১ দশমিক ৩ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে।
জানুয়ারির শেষের দিকে একটি বৈদ্যুতিক গাড়ি পর্যালোচনা ওয়েবসাইটের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, যুক্তরাজ্যের ৫৯ শতাংশ মানুষ বৈদ্যুতিক গাড়ি কিনতে ইচ্ছুক। তবে তারা মাস্কের কারণে টেসলা কিনবেন না। তারা ‘টেসলাটেকডাউন’ ও ‘স্বস্তিকার’ হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করেও এক্সে টেসলাবিরোধী প্রচার চালাচ্ছেন।
ব্রিটেনের একটি কমিউনিকেশনস ও মার্কেট ইন্টেলিজেন্স ফার্ম চালান বেন কিলবি। তিনি তিন বছর ধরে টেসলার ওয়াই মডেল চালাচ্ছেন। তবে মাস্কের কারণে এখন সেটি বিক্রি করে দিতে চাচ্ছেন। কিলবি বলেন, ‘আমি আমার টেসলাকে ভালোবাসি, এর প্রযুক্তিকে ভালোবাসি। কিন্তু আমি মাস্কের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকতে চাই না।’

দুই মাস ধরে টেক মোগল ইলন মাস্ক জার্মানির উগ্র ডানপন্থী দল ‘অলটারনেটিভ ফর জার্মানি’কে (এএফডি) সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়েছেন। তিনি দলটির পক্ষে প্রচারণার জন্য ৭০টির বেশি পোস্ট দিয়েছেন। তাঁর ২১৯ মিলিয়ন ফলোয়ারকে বলেছেন, এই দলই জার্মানির ‘একমাত্র ভরসা’।
রয়টার্সের এক বিশ্লেষণে উঠে এসেছে মাস্কের এই সমর্থন গত ২৩ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে এএফডির দ্বিতীয় স্থান অর্জনে খুব সামান্য ভূমিকা রেখেছে। মাস্কের পোস্ট, জনমত জরিপের তথ্য এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে এই বিশ্লেষণ করে রয়টার্স।
তবে টেসলার সিইও মাস্ককে এতে দমিয়ে রাখা যায়নি। তিনি ইউরোপজুড়ে এখনো ডানপন্থী প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। বিশ্লেষকেরা বলছেন, এর সবচেয়ে দৃশ্যমান প্রভাব সম্ভবত টেসলার ক্ষতি। তবে এর পেছনে মাস্কের ব্যবসায়িক সাম্রাজ্যের দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য থাকতে পারে। যেমন এমন রাজনৈতিক দলগুলোকে সমর্থন করা, যারা ভবিষ্যতে ক্ষমতায় এলে মাস্কের প্রযুক্তি বা উদ্ভাবনের পথে বাধা হবে না।
এই প্রতিবেদন তৈরির সময় ইলন মাস্ক এবং টেসলার কাছে মন্তব্যের অনুরোধ করা হয়েছিল। তবে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
গত জানুয়ারিতে মাস্ক ইউরোপের ‘নিয়মকানুন ও আমলাতন্ত্রের স্তূপ’ নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন। এর আগে গত বছর ইউরোপীয় ইউনিয়নের এক কর্মকর্তা তাঁকে নিষেধাজ্ঞা দিলে মাস্ক এক্সে একটি মিম পোস্ট করে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন। যেখানে ‘ট্রপিক থান্ডার’ সিনেমার একটি উদ্ধৃতি ছিল, ‘টেক আ বিগ স্টেপ ব্যাক অ্যান্ড লিটারেলি, ফাক ইউর ওউন ফেস!’
জার্মানির অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা এরই মধ্যে এএফডিকে একটি সন্দেহভাজন উগ্রবাদী গোষ্ঠী হিসেবে চিহ্নিত করেছে। তা সত্ত্বেও দলটি গত মাসের নির্বাচনে জার্মানির বৃহত্তম বিরোধী দল হিসেবে উঠে এসেছে। জার্মানির নাৎসি অতীতের কারণে উগ্র ডানপন্থার ওপর ঐতিহাসিকভাবে যে কলঙ্ক লেগে আছে, তা সত্ত্বেও এই উত্থান তাৎপর্যপূর্ণ। দলটির একজন জ্যেষ্ঠ রাজনীতিবিদ গত বছর একটি মন্তব্য করে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, নাৎসিদের প্রধান আধা সামরিক বাহিনী এসএস ‘পুরোপুরি অপরাধী ছিল না’।
এদিকে গত ৯ জানুয়ারি ইলন মাস্ক এক্সে এএফডি নেত্রী অ্যালিস ভাইডেলের সাক্ষাৎকার প্রচার করেন।
এএফডির ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তা ইউরোপজুড়ে ছড়িয়ে পড়া একটি ঘটনার দৃষ্টান্ত। যা থেকে বোঝা যায়, জনতুষ্টিবাদী উগ্র ডানপন্থী দলগুলো ইউরোপে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় সাফল্য পাচ্ছে। একসময় রাজনৈতিক প্রান্তিক অবস্থানে থাকা এই দলগুলো এখন ইতালি, নেদারল্যান্ডস, হাঙ্গেরি, স্লোভাকিয়া, ফিনল্যান্ড ও ক্রোয়েশিয়ায় সরকার চালাচ্ছে অথবা সরকার গঠনে অংশীদার হচ্ছে। সুইডেন, অস্ট্রিয়া ও জার্মানির পার্লামেন্টেও তারা বৃহত্তম বা দ্বিতীয় বৃহত্তম দল এবং ফ্রান্সেও জনমত সমীক্ষায় তাদের সমর্থন বাড়ছে। এ ছাড়া রোমানিয়া, বেলজিয়াম, স্পেন ও পর্তুগালেও উগ্র ডানপন্থার সমর্থন বাড়ছে।
উচ্চ অভিবাসন, অর্থনৈতিক স্থবিরতা এবং বাক্স্বাধীনতার ওপর অনুভূত সীমাবদ্ধতা—তাদের জনপ্রিয়তা বাড়াতে সাহায্য করেছে। আর মাস্ক তাঁর ‘এক্সে’ এই বিষয়গুলোকেই বেশি করে তুলে ধরছেন।
রয়টার্স ২০ হাজারের বেশি পোস্ট ও রিপোস্ট পর্যালোচনায় দেখেছে, ইলন মাস্ক ডোনাল্ড ট্রাম্পকে গত নভেম্বরে হোয়াইট হাউসে ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করার পর থেকে ইউরোপীয় রাজনীতিতে বেশি মনোযোগ দিচ্ছেন।
মাস্ক ব্রিটেন, ইতালি ও রোমানিয়ার ডানপন্থী ব্যক্তিত্বদের ‘এক্সে’ প্রচার করেছেন এবং রাজনৈতিক নেতা ও ইইউর সিনিয়র কর্মকর্তাদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করেছেন।
গত বছরের ২০ ডিসেম্বর মাস্ক যখন জার্মানিতে এএফডিকে প্রথম স্পষ্টভাবে সমর্থন করেন, তখন রয়টার্সের জনমত সমীক্ষা অনুসারে দলটির সমর্থন ছিল মাত্র ১৯ দশমিক ৩ শতাংশ। তারা নির্বাচনে ভোট পেয়েছে ২০ দশমিক ৮ শতাংশ।
রয়টার্সের সঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারে তিনজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেছেন, এই সংখ্যাগুলো থেকে বোঝা যায়, মাস্কের সমর্থনে নির্বাচনের ওপর খুব কম প্রভাব পড়েছে। তবে মধ্যপ্রাচ্য ও আফগানিস্তান থেকে আসা সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের দ্বারা জার্মানিতে তিনটি সহিংস হামলার ঘটনাও এএফডিকে সাহায্য করতে পারে, যারা অভিবাসীদের গণবহিষ্কারের আহ্বান জানিয়েছে।
কিন্তু বিশ্লেষকদের মধ্যে দুজন মনে করেন, মাস্ক কিছু ভোটারের মধ্যে—বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের কাছে দলটির আকর্ষণ বাড়িয়েছেন, যা আগামী নির্বাচনে তাদের জন্য ভালো ফল নিয়ে আসতে পারে।
জার্মানির ডব্লিউএইচইউ—অটো বেইশিম স্কুল অব ম্যানেজমেন্টের কৌশল ও মার্কেটিং বিভাগের চেয়ার মার্টিন ফাসনাখট বলেন, ‘তিনি (মাস্ক) এএফডিকে কিছুটা হলেও আকর্ষণীয় ও উদ্ভাবনী দেখাতে সাহায্য করেছেন।’
তবে মাস্কের উগ্র ডানপন্থী দলের প্রতি উৎসাহ সম্ভবত টেসলার জন্য ক্ষতির কারণ হচ্ছে। ইউরোপীয় অটোমোবাইল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের (এসিইএ) তথ্য অনুযায়ী, জানুয়ারিতে ইউরোপে টেসলার বিক্রি আগের বছরের তুলনায় ৪৫ শতাংশ কমে গেছে। অথচ তাদের প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিক্রি ৩৭ শতাংশের বেশি বেড়েছে।
ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে ইউরোপে বিক্রির পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, টেসলার এই পতন অব্যাহত রয়েছে। চারটি করপোরেট-কার ফ্লিট ম্যানেজার রয়টার্সকে জানিয়েছেন, তাদের শোরুমে টেসলার বিক্রি আগের মতোই আছে। কোথাও কমেছে। তবে এই অবস্থা কঠিন সময়ের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
২০২৪ সালের শুরু থেকে এক্সে মাস্কের পোস্ট ও রিপোস্টগুলো পর্যালোচনা করেছে রয়টার্স। এতে দেখা গেছে, নভেম্বরে ট্রাম্পকে হোয়াইট হাউসে ফিরিয়ে আনতে ২৫০ বিলিয়নের বেশি ডলার অনুদান দেওয়ার পর তিনি ইউরোপের দিকে মনোযোগ দিয়েছেন।
তিনি ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সমালোচনা করেছেন। কারাবন্দী এক উগ্র ডানপন্থী কর্মীর মুক্তির আহ্বান জানিয়েছেন এবং ‘রিফর্ম’ নামক একটি ডানপন্থী দলের সমর্থন করেছেন। যাঁরা ট্রাম্পের মতোই অভিবাসন কমানো এবং জলবায়ু পরিবর্তন ব্যয় ত্যাগ করার অঙ্গীকার করেছে।
মাস্ক ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন। তাঁরা উভয়েই অভিবাসন এবং পশ্চিমা দেশগুলোতে কম জন্মহার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। সম্প্রতি মেলোনি ইলন মাস্ককে ‘মূল্যবান জিনিয়াস’ বলে অভিহিত করেছেন।
লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসের মিডিয়া ও কমিউনিকেশনস রেগুলেশন অ্যান্ড পলিসির বিশেষজ্ঞ ড্যামিয়ান টাম্বিনি বলেন, ইউরোপের জনমতকে প্রভাবিত করার ‘অসীম ক্ষমতা’ রয়েছে এক্সের মতো মার্কিন টেক প্ল্যাটফর্মগুলোর।
টাম্বিনি বলেন, ‘এটা অসম্ভব নয় যে তিনি (মাস্ক) যেকোনো দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তন করে দিতে পারেন। এর ফলে ইইউর অভ্যন্তরে ক্ষমতার ভারসাম্যেরও সম্পূর্ণ পরিবর্তন ঘটতে পারে।’
ফরাসি রাজনৈতিক বিশ্লেষক আসমা মহাল্লা বলেন, ইউরোপীয় সরকারগুলো মাস্কের ক্রমবর্ধমান খ্যাতি নিয়ে ‘উদ্বিগ্ন’। তিনি বলেন, ‘মাস্কের লক্ষ্য ইউরোপীয় নীতিকে দুর্বল করা এবং আমেরিকার আধিপত্য বিস্তার করা।’
তবে আমেরিকার ইউরোপ নীতিতে মাস্কের ভূমিকা নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি হোয়াইট হাউস।
ইউরোপের সমালোচনায় মাস্ক প্রায়শই এক্সে যাচাই না করা তথ্য শেয়ার করেন। যার মধ্যে বেনামি অ্যাকাউন্টগুলোও থাকে। যেগুলো তাঁকে ট্যাগ করে এবং তিনি ভুল তথ্য ছড়ানোর জন্য পরিচিত কিছু অ্যাকাউন্ট থেকেও বিভিন্ন তথ্য প্রচার করেন।
রয়টার্সের পর্যালোচনায় দেখা গেছে, মাস্কের বেশির ভাগ পোস্ট গণ-অভিবাসন এবং তথাকথিত বাক্স্বাধীনতার বিরুদ্ধে। তিনি ইউরোপের কম জন্মহার এবং ট্রান্সজেন্ডার নীতি নিয়েও সমালোচনা করেছেন। মাস্ক ঐতিহ্যবাহী মিডিয়া, রাজনীতিবিদ ও শিক্ষাবিদদের পাশ কাটিয়ে বরং কট্টর ডানপন্থী কিছু অ্যাকাউন্টের প্রতি বেশি মনোযোগ দিয়েছেন।
এ ধরনের একটি অ্যাকাউন্ট হলো পিটার সুইডেন-৭। সাংবাদিক ও রাজনৈতিক ভাষ্যকার পিটার ইমানুয়েলসেন এই অ্যাকাউন্ট চালান। এই ইমানুয়েলসেন ২০০১ সালের সেপ্টেম্বরে আমেরিকায় আল-কায়েদার হামলাকে ‘ইনসাইড জব’ এবং চাঁদে অবতরণকে ‘ভুয়া’ বলে অভিহিত করেছিলেন।
মাস্ক অন্তত অর্ধডজন বিভ্রান্তিকর পোস্টে ইমানুয়েলসেনকে প্রচার করেছেন। গত জানুয়ারিতে তিনি ইমানুয়েলসেনের একটি পোস্ট রিপোস্ট করেন। যেখানে বলা হয়েছিল, ফেসবুক পোস্টের জন্য এক ব্যক্তিকে ২০ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অথচ বাস্তবে ওই ব্যক্তি তাঁর পোস্টে উদ্বাস্তুদের আশ্রয় দেওয়া একটি হোটেলে হামলার জন্য লোকজনকে উসকানি দিয়েছিলেন। তাই তাঁকে সাজা দেওয়া হয়। কিন্তু মাস্ক বিষয়টি যাচাই করেননি, এমনকি তাঁর পোস্টে উল্লেখও করেননি।
ইউরোপের বিষয়ে মাস্ক যে অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন, সেটি হলো টমি রবিনসন নামের একজন ডানপন্থী আন্দোলনকারীর। যিনি প্রতারণা ও হামলার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। তাঁর আসল নাম স্টিফেন ইয়াক্সলি-লেনন। লন্ডনের একটি আদালতের আদেশ অমান্য করায় বর্তমানে তিনি কারাগারে বন্দী।
মাস্ক এই রবিনসনের মুক্তির আহ্বান জানিয়েছেন এবং একটি মিথ্যা পোস্ট রিপোস্ট করেছেন। যেখানে রবিনসনকে ‘রাজনৈতিক বন্দী’ বলা হয়েছে। অন্যদিকে রবিনসনের অ্যাকাউন্ট থেকে গত ২০ জানুয়ারির একটি পোস্টে বলা হয়েছিল, বিলিয়নিয়ার মাস্ক তাঁর আইনি খরচের কিছু অংশ পরিশোধ করছেন।
বিষয়টির সত্যতা যাচাই করতে রয়টার্স রবিনসনের আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ করে। তবে তিনি কোনো সাড়া দেননি।
ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক মের্ট ক্যান বায়ার মাস্কের সোশ্যাল মিডিয়া নেটওয়ার্ক নিয়ে গবেষণা করছেন। তিনি বলেন, মাস্কের কাছে এই অ্যাকাউন্টগুলোর মালিকেরা ডানপন্থীদের যুদ্ধের পদাতিক সৈনিক। যেখানে একদিকে আছে সীমাবদ্ধতা আরোপকারী বামপন্থী রাজনীতিবিদ এবং অন্যদিকে বাক্স্বাধীনতার পক্ষে থাকা ডানপন্থীরা।
ইউরোপীয় রাজনীতিতে মাস্কের প্রভাব এখনো অস্পষ্ট। তবে তাঁর সক্রিয়তা টেসলার ক্ষতি করছে বলেই মনে হচ্ছে। ২০২৪ সালে টেসলার বিক্রি কমেছে ১০ দশমিক ৮ শতাংশ। যেখানে সামগ্রিকভাবে গাড়ির বাজার মাত্র ১ দশমিক ৩ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে।
জানুয়ারির শেষের দিকে একটি বৈদ্যুতিক গাড়ি পর্যালোচনা ওয়েবসাইটের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, যুক্তরাজ্যের ৫৯ শতাংশ মানুষ বৈদ্যুতিক গাড়ি কিনতে ইচ্ছুক। তবে তারা মাস্কের কারণে টেসলা কিনবেন না। তারা ‘টেসলাটেকডাউন’ ও ‘স্বস্তিকার’ হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করেও এক্সে টেসলাবিরোধী প্রচার চালাচ্ছেন।
ব্রিটেনের একটি কমিউনিকেশনস ও মার্কেট ইন্টেলিজেন্স ফার্ম চালান বেন কিলবি। তিনি তিন বছর ধরে টেসলার ওয়াই মডেল চালাচ্ছেন। তবে মাস্কের কারণে এখন সেটি বিক্রি করে দিতে চাচ্ছেন। কিলবি বলেন, ‘আমি আমার টেসলাকে ভালোবাসি, এর প্রযুক্তিকে ভালোবাসি। কিন্তু আমি মাস্কের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকতে চাই না।’

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও তাঁর স্ত্রী বুশরা বিবি বর্তমানে কারাগারে। তোশাখানা দুর্নীতির মামলায় তাঁরা দুজনই সাজা খাটছেন। এর মধ্যে ২০ ডিসেম্বর তোশাখানা দুর্নীতির নতুন মামলায় তাঁদের আরও ১৭ বছর করে কারাদণ্ড দেন দেশটির একটি বিশেষ আদালত। এই রায় চ্যালেঞ্জ করে আজ সোমবার (২৯ ডিসেম্বর)
২৫ মিনিট আগে
ইউক্রেনের অন্যতম সর্বোচ্চ সামরিক সম্মানপ্রাপ্ত এক কমান্ডার অভিযোগ করেছেন, শান্তি আলোচনার মধ্যেই রুশ বাহিনী পরিকল্পিতভাবে ইউক্রেনীয় যুদ্ধবন্দীদের হত্যা করছে। ‘হিরো অব ইউক্রেন’ খেতাবে ভূষিত মেজর ওলেহ শিরিয়াইভ বলেছেন, রুশ সেনারা নিয়মিত আত্মসমর্পণ করা ইউক্রেনীয় সৈন্যদের গুলি করে হত্যা করছে এবং এটি এখন এ
১ ঘণ্টা আগে
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, রাশিয়ার সঙ্গে চলমান যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে ১৫ বছরের জন্য ‘শক্তিশালী’ নিরাপত্তা গ্যারান্টি দিতে সম্মত হয়েছে। রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ফ্লোরিডার মার-এ-লাগোয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ২ ঘণ্টার রুদ্ধদ্বার বৈঠক
১ ঘণ্টা আগে
পূর্ব ভূমধ্যসাগরে নিজেদের সামরিক ও কৌশলগত অবস্থান আরও সুসংহত করতে ইসরায়েলের সঙ্গে যৌথ বিমান ও নৌ মহড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে গ্রিস ও সাইপ্রাস। আজ সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) গ্রিসের সামরিক কর্মকর্তা ও নির্ভরযোগ্য একটি সূত্রের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্সসহ বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো
২ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও তাঁর স্ত্রী বুশরা বিবি বর্তমানে কারাগারে। তোশাখানা দুর্নীতির মামলায় তাঁরা দুজনই সাজা খাটছেন। এর মধ্যে ২০ ডিসেম্বর তোশাখানা দুর্নীতির নতুন মামলায় তাঁদের আরও ১৭ বছর করে কারাদণ্ড দেন দেশটির একটি বিশেষ আদালত। এই রায় চ্যালেঞ্জ করে আজ সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) ইসলামাবাদ হাইকোর্টে (আইএইচসি) পৃথক দুটি আপিল করেছেন ইমরান খান ও তাঁর স্ত্রী বুশরা বিবি।
আপিল আবেদনে ইমরান খান ও বুশরা বিবির আইনজীবীরা দাবি করেছেন, এই সাজা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং ইমরান খানকে জাতীয় রাজনীতি থেকে দূরে রাখতেই এ ‘পরিকল্পিত’ রায় দেওয়া হয়েছে। আইনজীবীরা ইমরান খান ও বুশরা বিবির পক্ষে কিছু যুক্তি উত্থাপন করেছেন।
আইনজীবীদের দাবি, ফেডারেল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এফআইএ) কোনো এফআইআর ছাড়াই ইমরান খান ও বুশরা বিবির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে। এর মাত্র দুই দিনের মাথায় তড়িঘড়ি করে চালানো তদন্তের ভিত্তিতে এই মামলা হয়, যা স্বচ্ছ বিচারের পরিপন্থী।
আপিল আবেদনে বলা হয়েছে, তোশাখানাসংক্রান্ত এটি চতুর্থ মামলা। একই বিষয়ে বারবার মামলা করা আইনের লঙ্ঘন এবং এটি উদ্দেশ্যমূলকভাবে করা হয়েছে, যাতে ইমরান খানকে দীর্ঘদিন কারাগারে আটকে রাখা যায়।
আইনজীবীদের দাবি, ২০১৮ সালের তোশাখানা নীতিমালা অনুযায়ী নির্ধারিত মূল্যের ৫০ শতাংশ পরিশোধ করেই উপহারগুলো রাখা হয়েছিল। এখানে কোনো ধরনের বিশ্বাসভঙ্গ বা ‘ক্রিমিনাল ব্রিচ অব ট্রাস্ট’ ঘটেনি।
আপিলে যুক্তি দেওয়া হয়েছে, পাকিস্তান পেনাল কোড অনুযায়ী ইমরান খান ও বুশরা বিবি এই উপহার নেওয়ার সময় প্রচলিত সংজ্ঞায় ‘পাবলিক সার্ভেন্ট’ ছিলেন না। বিশেষ করে, বুশরা বিবি একজন গৃহিণী হিসেবে কোনো সরকারি পদের দায়িত্বে ছিলেন না।
প্রসঙ্গত, তোশাখানা মামলাটি মূলত ২০২১ সালের মে মাসে সৌদি আরব সফরকালে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের দেওয়া একটি দামি বুলগারি জুয়েলারি সেট নিয়ে। প্রায় ৮ কোটি রুপি মূল্যের এই নেকলেস, ব্রেসলেট, আংটি ও কানের দুলের সেটটি ইমরান দম্পতি মাত্র ২৯ লাখ রুপি পরিশোধ করে নিজের কাছে রেখেছিলেন।
এই মামলায় পাকিস্তানের ফেডারেল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সির (এআইএ) বিশেষ আদালতের বিচারক শাহরুখ আরজুমান্দ তাঁদের প্রত্যেককে প্রথমে বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগে ১০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড, এরপর দুর্নীতিবিরোধী আইনের আওতায় সাত বছরের কারাদণ্ড এবং ১ কোটি ৬৪ লাখ রুপি জরিমানা করেছিলেন।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালে সংসদীয় অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিলেন ইমরান খান। এরপর তাঁর বিরুদ্ধে শতাধিক মামলা করা হয়। তিনি ২০২৪ সালের আগস্ট থেকে রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে বন্দী আছেন। বর্তমানে ইমরান খান ১৯ কোটি পাউন্ডের দুর্নীতির মামলায় ১৪ বছরের সাজা খাটছেন। বুশরা বিবিও একই মামলায় সাত বছরের সাজাপ্রাপ্ত।
ইমরানের দল পিটিআইয়ের দাবি, তোশাখানা মামলার বিচারপ্রক্রিয়া ‘ক্যাঙারু কোর্টে’র মতো রুদ্ধদ্বার কক্ষে সম্পন্ন হয়েছে। এটি ন্যায়বিচারের পরিপন্থী।

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও তাঁর স্ত্রী বুশরা বিবি বর্তমানে কারাগারে। তোশাখানা দুর্নীতির মামলায় তাঁরা দুজনই সাজা খাটছেন। এর মধ্যে ২০ ডিসেম্বর তোশাখানা দুর্নীতির নতুন মামলায় তাঁদের আরও ১৭ বছর করে কারাদণ্ড দেন দেশটির একটি বিশেষ আদালত। এই রায় চ্যালেঞ্জ করে আজ সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) ইসলামাবাদ হাইকোর্টে (আইএইচসি) পৃথক দুটি আপিল করেছেন ইমরান খান ও তাঁর স্ত্রী বুশরা বিবি।
আপিল আবেদনে ইমরান খান ও বুশরা বিবির আইনজীবীরা দাবি করেছেন, এই সাজা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং ইমরান খানকে জাতীয় রাজনীতি থেকে দূরে রাখতেই এ ‘পরিকল্পিত’ রায় দেওয়া হয়েছে। আইনজীবীরা ইমরান খান ও বুশরা বিবির পক্ষে কিছু যুক্তি উত্থাপন করেছেন।
আইনজীবীদের দাবি, ফেডারেল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এফআইএ) কোনো এফআইআর ছাড়াই ইমরান খান ও বুশরা বিবির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে। এর মাত্র দুই দিনের মাথায় তড়িঘড়ি করে চালানো তদন্তের ভিত্তিতে এই মামলা হয়, যা স্বচ্ছ বিচারের পরিপন্থী।
আপিল আবেদনে বলা হয়েছে, তোশাখানাসংক্রান্ত এটি চতুর্থ মামলা। একই বিষয়ে বারবার মামলা করা আইনের লঙ্ঘন এবং এটি উদ্দেশ্যমূলকভাবে করা হয়েছে, যাতে ইমরান খানকে দীর্ঘদিন কারাগারে আটকে রাখা যায়।
আইনজীবীদের দাবি, ২০১৮ সালের তোশাখানা নীতিমালা অনুযায়ী নির্ধারিত মূল্যের ৫০ শতাংশ পরিশোধ করেই উপহারগুলো রাখা হয়েছিল। এখানে কোনো ধরনের বিশ্বাসভঙ্গ বা ‘ক্রিমিনাল ব্রিচ অব ট্রাস্ট’ ঘটেনি।
আপিলে যুক্তি দেওয়া হয়েছে, পাকিস্তান পেনাল কোড অনুযায়ী ইমরান খান ও বুশরা বিবি এই উপহার নেওয়ার সময় প্রচলিত সংজ্ঞায় ‘পাবলিক সার্ভেন্ট’ ছিলেন না। বিশেষ করে, বুশরা বিবি একজন গৃহিণী হিসেবে কোনো সরকারি পদের দায়িত্বে ছিলেন না।
প্রসঙ্গত, তোশাখানা মামলাটি মূলত ২০২১ সালের মে মাসে সৌদি আরব সফরকালে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের দেওয়া একটি দামি বুলগারি জুয়েলারি সেট নিয়ে। প্রায় ৮ কোটি রুপি মূল্যের এই নেকলেস, ব্রেসলেট, আংটি ও কানের দুলের সেটটি ইমরান দম্পতি মাত্র ২৯ লাখ রুপি পরিশোধ করে নিজের কাছে রেখেছিলেন।
এই মামলায় পাকিস্তানের ফেডারেল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সির (এআইএ) বিশেষ আদালতের বিচারক শাহরুখ আরজুমান্দ তাঁদের প্রত্যেককে প্রথমে বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগে ১০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড, এরপর দুর্নীতিবিরোধী আইনের আওতায় সাত বছরের কারাদণ্ড এবং ১ কোটি ৬৪ লাখ রুপি জরিমানা করেছিলেন।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালে সংসদীয় অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিলেন ইমরান খান। এরপর তাঁর বিরুদ্ধে শতাধিক মামলা করা হয়। তিনি ২০২৪ সালের আগস্ট থেকে রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে বন্দী আছেন। বর্তমানে ইমরান খান ১৯ কোটি পাউন্ডের দুর্নীতির মামলায় ১৪ বছরের সাজা খাটছেন। বুশরা বিবিও একই মামলায় সাত বছরের সাজাপ্রাপ্ত।
ইমরানের দল পিটিআইয়ের দাবি, তোশাখানা মামলার বিচারপ্রক্রিয়া ‘ক্যাঙারু কোর্টে’র মতো রুদ্ধদ্বার কক্ষে সম্পন্ন হয়েছে। এটি ন্যায়বিচারের পরিপন্থী।

দুই মাস ধরে টেক মোগল ইলন মাস্ক জার্মানির উগ্র ডানপন্থী দল ‘অলটারনেটিভ ফর জার্মানি’কে (এএফডি) সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়েছেন। তিনি দলটির পক্ষে প্রচারণার জন্য ৭০টির বেশি পোস্ট দিয়েছেন। তাঁর ২১৯ মিলিয়ন ফলোয়ারকে বলেছেন, এই দলই জার্মানির ‘একমাত্র ভরসা’।
০৫ মার্চ ২০২৫
ইউক্রেনের অন্যতম সর্বোচ্চ সামরিক সম্মানপ্রাপ্ত এক কমান্ডার অভিযোগ করেছেন, শান্তি আলোচনার মধ্যেই রুশ বাহিনী পরিকল্পিতভাবে ইউক্রেনীয় যুদ্ধবন্দীদের হত্যা করছে। ‘হিরো অব ইউক্রেন’ খেতাবে ভূষিত মেজর ওলেহ শিরিয়াইভ বলেছেন, রুশ সেনারা নিয়মিত আত্মসমর্পণ করা ইউক্রেনীয় সৈন্যদের গুলি করে হত্যা করছে এবং এটি এখন এ
১ ঘণ্টা আগে
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, রাশিয়ার সঙ্গে চলমান যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে ১৫ বছরের জন্য ‘শক্তিশালী’ নিরাপত্তা গ্যারান্টি দিতে সম্মত হয়েছে। রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ফ্লোরিডার মার-এ-লাগোয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ২ ঘণ্টার রুদ্ধদ্বার বৈঠক
১ ঘণ্টা আগে
পূর্ব ভূমধ্যসাগরে নিজেদের সামরিক ও কৌশলগত অবস্থান আরও সুসংহত করতে ইসরায়েলের সঙ্গে যৌথ বিমান ও নৌ মহড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে গ্রিস ও সাইপ্রাস। আজ সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) গ্রিসের সামরিক কর্মকর্তা ও নির্ভরযোগ্য একটি সূত্রের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্সসহ বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো
২ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ইউক্রেনের অন্যতম সর্বোচ্চ সামরিক সম্মানপ্রাপ্ত এক কমান্ডার অভিযোগ করেছেন, শান্তি আলোচনার মধ্যেই রুশ বাহিনী পরিকল্পিতভাবে ইউক্রেনীয় যুদ্ধবন্দীদের হত্যা করছে। ‘হিরো অব ইউক্রেন’ খেতাবে ভূষিত মেজর ওলেহ শিরিয়াইভ বলেছেন, রুশ সেনারা নিয়মিত আত্মসমর্পণ করা ইউক্রেনীয় সৈন্যদের গুলি করে হত্যা করছে এবং এটি এখন একটি পদ্ধতিগত নীতিতে পরিণত হয়েছে।
সম্মুখ সমরের অজ্ঞাত একটি অবস্থান থেকে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শিরিয়াইভ জানান, তারা নিয়মিত এমন রেডিও ও যোগাযোগ বার্তা ধরতে পারছেন, যেখানে রুশ সামরিক নেতৃত্ব সরাসরি আত্মসমর্পণকারী সেনাদের হত্যা করার নির্দেশ দিচ্ছে। তাঁর অভিযোগ, এই প্রথা গত দেড় বছরে একটি নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে যুদ্ধাপরাধের প্রমাণ ভয়াবহভাবে বেড়েছে বলে জানিয়েছেন সামরিক পর্যবেক্ষকরাও। রুশ সেনা বা ইউক্রেনীয় ড্রোনে ধারণ করা ভিডিওতে দেখা গেছে, আত্মসমর্পণের পর নিরস্ত্র সৈন্যদের সারিবদ্ধ করে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র দিয়ে গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে। ১৯ নভেম্বর পোকারোভস্কের কাছে ধারণ করা একটি ড্রোন ভিডিওতে দেখা যায়, এক রুশ সৈন্য মাটিতে উপুড় হয়ে থাকা চারজন নিরস্ত্র ইউক্রেনীয়কে গুলি করে হত্যা করে এবং পালানোর চেষ্টা করা আরেকজনের দিকেও অস্ত্র তাক করে।
ইউক্রেনের প্রসিকিউশন সার্ভিস জানিয়েছে, ২০২২ সালে পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ শুরুর পর থেকে অন্তত ১৪৭ জন ইউক্রেনীয় যুদ্ধবন্দীকে হত্যা করা হয়েছে, যার মধ্যে চলতি বছরেই ১২৭ জন। ইউক্রেনের প্রসিকিউটর জেনারেলের দপ্তরের যুদ্ধাপরাধ বিভাগের প্রধান ইউরি বেলাউসভ বলেন, ‘এই সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। এটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং একটি নীতির স্পষ্ট লক্ষণ।’
জাতিসংঘের মানবাধিকার পর্যবেক্ষকেরাও মধ্য নভেম্বরের পর থেকে রুশ বাহিনীর যুদ্ধাপরাধ বৃদ্ধির তথ্য নথিভুক্ত করেছে। আন্তর্জাতিক মানবিক আইন, বিশেষ করে তৃতীয় জেনেভা কনভেনশন অনুযায়ী, যুদ্ধবন্দীদের হত্যা স্পষ্ট যুদ্ধাপরাধ।
এদিকে, যুদ্ধে সম্মুখ সমরে রুশ বাহিনীর ক্ষয়ক্ষতি ইউক্রেনের তুলনায় অনেক বেশি হচ্ছে বলে দাবি করেছেন শিরিয়াইভ। ইউক্রেনের ২২৫ তম পৃথক অ্যাসল্ট ব্যাটালিয়নের এই কমান্ডার বলেন—শান্তি আলোচনা চললেও রাশিয়া কৌশলগত সুবিধা দেখাতে তাদের হাজার হাজার সৈন্যকে সামান্য ভূমি দখলের জন্য মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে। শিরিয়াইভের দাবি, যুদ্ধে ইউক্রেনের ১টি সেনার বিপরীতে রুশ বাহিনী অন্তত ১০টি সেনা হারাচ্ছে।
অন্যদিকে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বরাবরই দাবি করে আসছেন, রুশ বাহিনী আন্তর্জাতিক আইন মেনেই যুদ্ধবন্দীদের সঙ্গে আচরণ করে। অন্যদিকে ইউক্রেনীয় বাহিনীর বিরুদ্ধেও রুশ বন্দী হত্যার অভিযোগ উঠেছে। তবে সেই সংখ্যাটি তুলনামূলকভাবে অনেক কম।
শান্তি আলোচনার অগ্রগতির কথা বললেও শিরিয়াইভ সতর্ক করে বলেন, ইউক্রেন যদি অবস্থান ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়, তাহলে রুশ আগ্রাসন ইউরোপের অন্যান্য দেশেও ছড়িয়ে পড়তে পারে।

ইউক্রেনের অন্যতম সর্বোচ্চ সামরিক সম্মানপ্রাপ্ত এক কমান্ডার অভিযোগ করেছেন, শান্তি আলোচনার মধ্যেই রুশ বাহিনী পরিকল্পিতভাবে ইউক্রেনীয় যুদ্ধবন্দীদের হত্যা করছে। ‘হিরো অব ইউক্রেন’ খেতাবে ভূষিত মেজর ওলেহ শিরিয়াইভ বলেছেন, রুশ সেনারা নিয়মিত আত্মসমর্পণ করা ইউক্রেনীয় সৈন্যদের গুলি করে হত্যা করছে এবং এটি এখন একটি পদ্ধতিগত নীতিতে পরিণত হয়েছে।
সম্মুখ সমরের অজ্ঞাত একটি অবস্থান থেকে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শিরিয়াইভ জানান, তারা নিয়মিত এমন রেডিও ও যোগাযোগ বার্তা ধরতে পারছেন, যেখানে রুশ সামরিক নেতৃত্ব সরাসরি আত্মসমর্পণকারী সেনাদের হত্যা করার নির্দেশ দিচ্ছে। তাঁর অভিযোগ, এই প্রথা গত দেড় বছরে একটি নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে যুদ্ধাপরাধের প্রমাণ ভয়াবহভাবে বেড়েছে বলে জানিয়েছেন সামরিক পর্যবেক্ষকরাও। রুশ সেনা বা ইউক্রেনীয় ড্রোনে ধারণ করা ভিডিওতে দেখা গেছে, আত্মসমর্পণের পর নিরস্ত্র সৈন্যদের সারিবদ্ধ করে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র দিয়ে গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে। ১৯ নভেম্বর পোকারোভস্কের কাছে ধারণ করা একটি ড্রোন ভিডিওতে দেখা যায়, এক রুশ সৈন্য মাটিতে উপুড় হয়ে থাকা চারজন নিরস্ত্র ইউক্রেনীয়কে গুলি করে হত্যা করে এবং পালানোর চেষ্টা করা আরেকজনের দিকেও অস্ত্র তাক করে।
ইউক্রেনের প্রসিকিউশন সার্ভিস জানিয়েছে, ২০২২ সালে পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ শুরুর পর থেকে অন্তত ১৪৭ জন ইউক্রেনীয় যুদ্ধবন্দীকে হত্যা করা হয়েছে, যার মধ্যে চলতি বছরেই ১২৭ জন। ইউক্রেনের প্রসিকিউটর জেনারেলের দপ্তরের যুদ্ধাপরাধ বিভাগের প্রধান ইউরি বেলাউসভ বলেন, ‘এই সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। এটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং একটি নীতির স্পষ্ট লক্ষণ।’
জাতিসংঘের মানবাধিকার পর্যবেক্ষকেরাও মধ্য নভেম্বরের পর থেকে রুশ বাহিনীর যুদ্ধাপরাধ বৃদ্ধির তথ্য নথিভুক্ত করেছে। আন্তর্জাতিক মানবিক আইন, বিশেষ করে তৃতীয় জেনেভা কনভেনশন অনুযায়ী, যুদ্ধবন্দীদের হত্যা স্পষ্ট যুদ্ধাপরাধ।
এদিকে, যুদ্ধে সম্মুখ সমরে রুশ বাহিনীর ক্ষয়ক্ষতি ইউক্রেনের তুলনায় অনেক বেশি হচ্ছে বলে দাবি করেছেন শিরিয়াইভ। ইউক্রেনের ২২৫ তম পৃথক অ্যাসল্ট ব্যাটালিয়নের এই কমান্ডার বলেন—শান্তি আলোচনা চললেও রাশিয়া কৌশলগত সুবিধা দেখাতে তাদের হাজার হাজার সৈন্যকে সামান্য ভূমি দখলের জন্য মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে। শিরিয়াইভের দাবি, যুদ্ধে ইউক্রেনের ১টি সেনার বিপরীতে রুশ বাহিনী অন্তত ১০টি সেনা হারাচ্ছে।
অন্যদিকে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বরাবরই দাবি করে আসছেন, রুশ বাহিনী আন্তর্জাতিক আইন মেনেই যুদ্ধবন্দীদের সঙ্গে আচরণ করে। অন্যদিকে ইউক্রেনীয় বাহিনীর বিরুদ্ধেও রুশ বন্দী হত্যার অভিযোগ উঠেছে। তবে সেই সংখ্যাটি তুলনামূলকভাবে অনেক কম।
শান্তি আলোচনার অগ্রগতির কথা বললেও শিরিয়াইভ সতর্ক করে বলেন, ইউক্রেন যদি অবস্থান ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়, তাহলে রুশ আগ্রাসন ইউরোপের অন্যান্য দেশেও ছড়িয়ে পড়তে পারে।

দুই মাস ধরে টেক মোগল ইলন মাস্ক জার্মানির উগ্র ডানপন্থী দল ‘অলটারনেটিভ ফর জার্মানি’কে (এএফডি) সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়েছেন। তিনি দলটির পক্ষে প্রচারণার জন্য ৭০টির বেশি পোস্ট দিয়েছেন। তাঁর ২১৯ মিলিয়ন ফলোয়ারকে বলেছেন, এই দলই জার্মানির ‘একমাত্র ভরসা’।
০৫ মার্চ ২০২৫
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও তাঁর স্ত্রী বুশরা বিবি বর্তমানে কারাগারে। তোশাখানা দুর্নীতির মামলায় তাঁরা দুজনই সাজা খাটছেন। এর মধ্যে ২০ ডিসেম্বর তোশাখানা দুর্নীতির নতুন মামলায় তাঁদের আরও ১৭ বছর করে কারাদণ্ড দেন দেশটির একটি বিশেষ আদালত। এই রায় চ্যালেঞ্জ করে আজ সোমবার (২৯ ডিসেম্বর)
২৫ মিনিট আগে
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, রাশিয়ার সঙ্গে চলমান যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে ১৫ বছরের জন্য ‘শক্তিশালী’ নিরাপত্তা গ্যারান্টি দিতে সম্মত হয়েছে। রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ফ্লোরিডার মার-এ-লাগোয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ২ ঘণ্টার রুদ্ধদ্বার বৈঠক
১ ঘণ্টা আগে
পূর্ব ভূমধ্যসাগরে নিজেদের সামরিক ও কৌশলগত অবস্থান আরও সুসংহত করতে ইসরায়েলের সঙ্গে যৌথ বিমান ও নৌ মহড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে গ্রিস ও সাইপ্রাস। আজ সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) গ্রিসের সামরিক কর্মকর্তা ও নির্ভরযোগ্য একটি সূত্রের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্সসহ বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো
২ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, রাশিয়ার সঙ্গে চলমান যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে ১৫ বছরের জন্য ‘শক্তিশালী’ নিরাপত্তা গ্যারান্টি দিতে সম্মত হয়েছে। রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ফ্লোরিডার মার-এ-লাগোয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ২ ঘণ্টার রুদ্ধদ্বার বৈঠক শেষে ইউরোপে ফেরার পথে তিনি এ তথ্য জানান।
তবে এই গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতির মধ্যেও পূর্ব ইউক্রেনের বিতর্কিত দনবাস অঞ্চলের ভবিষ্যৎ নিয়ে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেননি দুই নেতা। ক্রেমলিন সাফ জানিয়ে দিয়েছে, দোনেৎস্ক অঞ্চলের ‘ফোর্ট্রেস বেল্ট’ বা দুর্গ শহরগুলো থেকে ইউক্রেনীয় সেো সরিয়ে না নিলে তারা কোনো চুক্তিতে আসবে না।
জেলেনস্কি জানান, ট্রাম্পের সঙ্গে ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে, যার অন্যতম মূল অংশ হলো মার্কিন নিরাপত্তা গ্যারান্টি। ইউক্রেনীয় পার্লামেন্ট এবং মার্কিন কংগ্রেস যৌথভাবে এ প্রতিশ্রুতির পক্ষে ভোট দেবে। যুক্তরাষ্ট্র ১৫ বছরের গ্যারান্টি দিলেও জেলেনস্কি ট্রাম্পকে অনুরোধ করেছেন এই মেয়াদ ৩০, ৪০ বা ৫০ বছর করার জন্য। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অবশ্য বিষয়টি নিয়ে ভেবে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।
জেলেনস্কি মনে করেন, কোনো শান্তিচুক্তি হলে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের উপস্থিতি হবে নিরাপত্তার সেরা রূপ। তবে ট্রাম্প সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, মার্কিন কোনো শান্তিবাহিনী সেখানে মোতায়েন করা হবে না।
বৈঠকের পর ট্রাম্প দাবি করেছেন, শান্তিচুক্তির ক্ষেত্রে তাঁরা প্রায় ৯৫ শতাংশ সফল। তবে বাস্তব চিত্র ভিন্ন। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ সোমবার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, কিয়েভ দ্রুত চুক্তিতে না এলে আরও ভূখণ্ড হারাবে। রাশিয়া অধিকৃত জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ছাড়ার বিষয়েও কোনো মন্তব্য করেনি তারা।
এদিকে, জেলেনস্কি স্পষ্টভাবে ভূমি ছাড়ার দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি প্রস্তাব দিয়েছেন, বর্তমান ফ্রন্টলাইন বরাবর একটি ‘অসামরিক ও মুক্ত অর্থনৈতিক অঞ্চল’ গড়ে তোলার, যেখান থেকে উভয় পক্ষ তাদের সেনা সরিয়ে নেবে। জেলেনস্কির প্রস্তাবে আরও আছে, চূড়ান্ত শান্তি পরিকল্পনাটি ইউক্রেনের জনগণের সম্মতির জন্য একটি গণভোটে পেশ করা হবে। এই গণভোট আয়োজনের জন্য অন্তত ৬০ দিনের একটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতি প্রয়োজন।
কিন্তু রুশ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা কোনো অস্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে রাজি নয়। ট্রাম্পও ইঙ্গিত দিয়েছেন, পুতিন এই ৬০ দিনের বিরতির প্রস্তাব মেনে নিতে আগ্রহী নন।
এদিকে, জানুয়ারি মাসে ওয়াশিংটনে ইউরোপীয় নেতাদের উপস্থিতিতে ট্রাম্প ও জেলেনস্কির পরবর্তী বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ট্রাম্পের দাবি অনুযায়ী, চুক্তির ৯৫ শতাংশ সম্পন্ন হলেও বাকি ৫ শতাংশ ‘জটিল ইস্যু’ (দনবাস ও ভূখণ্ড) সমাধান করাই হবে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, রাশিয়ার সঙ্গে চলমান যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে ১৫ বছরের জন্য ‘শক্তিশালী’ নিরাপত্তা গ্যারান্টি দিতে সম্মত হয়েছে। রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ফ্লোরিডার মার-এ-লাগোয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ২ ঘণ্টার রুদ্ধদ্বার বৈঠক শেষে ইউরোপে ফেরার পথে তিনি এ তথ্য জানান।
তবে এই গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতির মধ্যেও পূর্ব ইউক্রেনের বিতর্কিত দনবাস অঞ্চলের ভবিষ্যৎ নিয়ে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেননি দুই নেতা। ক্রেমলিন সাফ জানিয়ে দিয়েছে, দোনেৎস্ক অঞ্চলের ‘ফোর্ট্রেস বেল্ট’ বা দুর্গ শহরগুলো থেকে ইউক্রেনীয় সেো সরিয়ে না নিলে তারা কোনো চুক্তিতে আসবে না।
জেলেনস্কি জানান, ট্রাম্পের সঙ্গে ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে, যার অন্যতম মূল অংশ হলো মার্কিন নিরাপত্তা গ্যারান্টি। ইউক্রেনীয় পার্লামেন্ট এবং মার্কিন কংগ্রেস যৌথভাবে এ প্রতিশ্রুতির পক্ষে ভোট দেবে। যুক্তরাষ্ট্র ১৫ বছরের গ্যারান্টি দিলেও জেলেনস্কি ট্রাম্পকে অনুরোধ করেছেন এই মেয়াদ ৩০, ৪০ বা ৫০ বছর করার জন্য। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অবশ্য বিষয়টি নিয়ে ভেবে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।
জেলেনস্কি মনে করেন, কোনো শান্তিচুক্তি হলে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের উপস্থিতি হবে নিরাপত্তার সেরা রূপ। তবে ট্রাম্প সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, মার্কিন কোনো শান্তিবাহিনী সেখানে মোতায়েন করা হবে না।
বৈঠকের পর ট্রাম্প দাবি করেছেন, শান্তিচুক্তির ক্ষেত্রে তাঁরা প্রায় ৯৫ শতাংশ সফল। তবে বাস্তব চিত্র ভিন্ন। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ সোমবার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, কিয়েভ দ্রুত চুক্তিতে না এলে আরও ভূখণ্ড হারাবে। রাশিয়া অধিকৃত জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ছাড়ার বিষয়েও কোনো মন্তব্য করেনি তারা।
এদিকে, জেলেনস্কি স্পষ্টভাবে ভূমি ছাড়ার দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি প্রস্তাব দিয়েছেন, বর্তমান ফ্রন্টলাইন বরাবর একটি ‘অসামরিক ও মুক্ত অর্থনৈতিক অঞ্চল’ গড়ে তোলার, যেখান থেকে উভয় পক্ষ তাদের সেনা সরিয়ে নেবে। জেলেনস্কির প্রস্তাবে আরও আছে, চূড়ান্ত শান্তি পরিকল্পনাটি ইউক্রেনের জনগণের সম্মতির জন্য একটি গণভোটে পেশ করা হবে। এই গণভোট আয়োজনের জন্য অন্তত ৬০ দিনের একটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতি প্রয়োজন।
কিন্তু রুশ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা কোনো অস্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে রাজি নয়। ট্রাম্পও ইঙ্গিত দিয়েছেন, পুতিন এই ৬০ দিনের বিরতির প্রস্তাব মেনে নিতে আগ্রহী নন।
এদিকে, জানুয়ারি মাসে ওয়াশিংটনে ইউরোপীয় নেতাদের উপস্থিতিতে ট্রাম্প ও জেলেনস্কির পরবর্তী বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ট্রাম্পের দাবি অনুযায়ী, চুক্তির ৯৫ শতাংশ সম্পন্ন হলেও বাকি ৫ শতাংশ ‘জটিল ইস্যু’ (দনবাস ও ভূখণ্ড) সমাধান করাই হবে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

দুই মাস ধরে টেক মোগল ইলন মাস্ক জার্মানির উগ্র ডানপন্থী দল ‘অলটারনেটিভ ফর জার্মানি’কে (এএফডি) সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়েছেন। তিনি দলটির পক্ষে প্রচারণার জন্য ৭০টির বেশি পোস্ট দিয়েছেন। তাঁর ২১৯ মিলিয়ন ফলোয়ারকে বলেছেন, এই দলই জার্মানির ‘একমাত্র ভরসা’।
০৫ মার্চ ২০২৫
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও তাঁর স্ত্রী বুশরা বিবি বর্তমানে কারাগারে। তোশাখানা দুর্নীতির মামলায় তাঁরা দুজনই সাজা খাটছেন। এর মধ্যে ২০ ডিসেম্বর তোশাখানা দুর্নীতির নতুন মামলায় তাঁদের আরও ১৭ বছর করে কারাদণ্ড দেন দেশটির একটি বিশেষ আদালত। এই রায় চ্যালেঞ্জ করে আজ সোমবার (২৯ ডিসেম্বর)
২৫ মিনিট আগে
ইউক্রেনের অন্যতম সর্বোচ্চ সামরিক সম্মানপ্রাপ্ত এক কমান্ডার অভিযোগ করেছেন, শান্তি আলোচনার মধ্যেই রুশ বাহিনী পরিকল্পিতভাবে ইউক্রেনীয় যুদ্ধবন্দীদের হত্যা করছে। ‘হিরো অব ইউক্রেন’ খেতাবে ভূষিত মেজর ওলেহ শিরিয়াইভ বলেছেন, রুশ সেনারা নিয়মিত আত্মসমর্পণ করা ইউক্রেনীয় সৈন্যদের গুলি করে হত্যা করছে এবং এটি এখন এ
১ ঘণ্টা আগে
পূর্ব ভূমধ্যসাগরে নিজেদের সামরিক ও কৌশলগত অবস্থান আরও সুসংহত করতে ইসরায়েলের সঙ্গে যৌথ বিমান ও নৌ মহড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে গ্রিস ও সাইপ্রাস। আজ সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) গ্রিসের সামরিক কর্মকর্তা ও নির্ভরযোগ্য একটি সূত্রের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্সসহ বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো
২ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

পূর্ব ভূমধ্যসাগরে নিজেদের সামরিক ও কৌশলগত অবস্থান আরও সুসংহত করতে ইসরায়েলের সঙ্গে যৌথ বিমান ও নৌ মহড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে গ্রিস ও সাইপ্রাস। আজ সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) গ্রিসের সামরিক কর্মকর্তা ও নির্ভরযোগ্য একটি সূত্রের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্সসহ বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৬ সাল থেকে এই তিন দেশ আরও নিবিড় প্রতিরক্ষা সহযোগিতায় লিপ্ত হবে। এ বিষয়টিকে লোহিতসাগর ও পূর্ব ভূমধ্যসাগরে তুরস্কের ক্রমবর্ধমান প্রভাব মোকাবিলায় একটি শক্তিশালী আঞ্চলিক বলয় হিসেবে দেখা হচ্ছে।
এর আগে গত সপ্তাহে সাইপ্রাসে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে তিন দেশের জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তারা ২০২৬ সালের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ সামরিক সহযোগিতা কর্মসূচি স্বাক্ষর করেন। এরপর জেরুজালেমে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, গ্রিক প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিৎসোটাকিস এবং সাইপ্রাসের প্রেসিডেন্ট নিকোস ক্রিস্টোডোলিডেসের শীর্ষ বৈঠকে এই জোটের ভিত্তি স্থাপিত হয়।
জোটে সিদ্ধান্ত হয়, আগামী দিনে ইসরায়েল পরিচালিত ‘নোবেল দিনা’ (Noble Dina) নামক নৌ মহড়ায় বড় আকারে যোগ দেবে গ্রিস ও সাইপ্রাস। এসব মহড়ায় ইসরায়েল তাদের আধুনিক সামরিক প্রযুক্তি ও যুদ্ধকৌশল গ্রিস ও সাইপ্রাসের কাছে তুলে ধরবে। বিশেষ করে সাইবার নিরাপত্তা ও ড্রোন মোকাবিলা করার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য বিনিময় করা হবে।
এমনও গুঞ্জন রয়েছে, এই তিন দেশ মিলে প্রায় ২ হাজার ৫০০ সদস্যের একটি যৌথ ‘র্যাপিড রেসপন্স ফোর্স’ গঠনের পরিকল্পনা করছে, যা ভূমধ্যসাগরের গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি ও অবকাঠামো রক্ষা করবে।
এদিকে গ্রিস তুরস্কের সঙ্গে আকাশপথ ও সমুদ্রসীমা নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধের প্রেক্ষাপটে বিশাল এক প্রতিরক্ষা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। ইসরায়েলের ‘আয়রন ডোম’-এর আদলে গ্রিস ৩.৫ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে একটি বহুমুখী আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা গড়ে তুলছে। এর মাধ্যমে ড্রোন ও ব্যালিস্টিক মিসাইল ঠেকানো সম্ভব হবে।
চলতি মাসেই গ্রিসের পার্লামেন্ট ইসরায়েলের এলবিট সিস্টেমস থেকে ৩৬টি ‘পালস’ রকেট আর্টিলারি সিস্টেম কেনার অনুমোদন দিয়েছে, যার মূল্য প্রায় ৭৫০ মিলিয়ন ডলার। এ ছাড়া গ্রিস তাদের পুরোনো রুশ নির্মিত এস-৩০০ ও টর-এম১ মিসাইল সিস্টেম বদলে ইসরায়েলি প্রযুক্তিতে সজ্জিত হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
তবে ইসরায়েলের সঙ্গে এই গভীর সামরিক সখ্যতা নিয়ে সাইপ্রাসের প্রধান বিরোধী দল (কমিউনিস্ট একেইএল) উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তাদের মতে, ফিলিস্তিন ইস্যু ও আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতার মধ্যে ইসরায়েলের সঙ্গে যুক্ত হওয়া সাইপ্রাসের নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি বয়ে আনতে পারে।
অনেকেই মনে করছেন, এই জোট শুধু সামরিক নয়, বরং ভূমধ্যসাগরের বিশাল গ্যাসক্ষেত্রগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখার এক ভূরাজনৈতিক কৌশল। তুরস্ক এই জোটকে তাদের স্বার্থের পরিপন্থী হিসেবে সতর্ক করেছে, যার ফলে ভবিষ্যতের দিনগুলোতে এই অঞ্চলে সামরিক উত্তেজনা আরও বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে।

পূর্ব ভূমধ্যসাগরে নিজেদের সামরিক ও কৌশলগত অবস্থান আরও সুসংহত করতে ইসরায়েলের সঙ্গে যৌথ বিমান ও নৌ মহড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে গ্রিস ও সাইপ্রাস। আজ সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) গ্রিসের সামরিক কর্মকর্তা ও নির্ভরযোগ্য একটি সূত্রের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্সসহ বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৬ সাল থেকে এই তিন দেশ আরও নিবিড় প্রতিরক্ষা সহযোগিতায় লিপ্ত হবে। এ বিষয়টিকে লোহিতসাগর ও পূর্ব ভূমধ্যসাগরে তুরস্কের ক্রমবর্ধমান প্রভাব মোকাবিলায় একটি শক্তিশালী আঞ্চলিক বলয় হিসেবে দেখা হচ্ছে।
এর আগে গত সপ্তাহে সাইপ্রাসে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে তিন দেশের জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তারা ২০২৬ সালের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ সামরিক সহযোগিতা কর্মসূচি স্বাক্ষর করেন। এরপর জেরুজালেমে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, গ্রিক প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিৎসোটাকিস এবং সাইপ্রাসের প্রেসিডেন্ট নিকোস ক্রিস্টোডোলিডেসের শীর্ষ বৈঠকে এই জোটের ভিত্তি স্থাপিত হয়।
জোটে সিদ্ধান্ত হয়, আগামী দিনে ইসরায়েল পরিচালিত ‘নোবেল দিনা’ (Noble Dina) নামক নৌ মহড়ায় বড় আকারে যোগ দেবে গ্রিস ও সাইপ্রাস। এসব মহড়ায় ইসরায়েল তাদের আধুনিক সামরিক প্রযুক্তি ও যুদ্ধকৌশল গ্রিস ও সাইপ্রাসের কাছে তুলে ধরবে। বিশেষ করে সাইবার নিরাপত্তা ও ড্রোন মোকাবিলা করার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য বিনিময় করা হবে।
এমনও গুঞ্জন রয়েছে, এই তিন দেশ মিলে প্রায় ২ হাজার ৫০০ সদস্যের একটি যৌথ ‘র্যাপিড রেসপন্স ফোর্স’ গঠনের পরিকল্পনা করছে, যা ভূমধ্যসাগরের গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি ও অবকাঠামো রক্ষা করবে।
এদিকে গ্রিস তুরস্কের সঙ্গে আকাশপথ ও সমুদ্রসীমা নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধের প্রেক্ষাপটে বিশাল এক প্রতিরক্ষা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। ইসরায়েলের ‘আয়রন ডোম’-এর আদলে গ্রিস ৩.৫ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে একটি বহুমুখী আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা গড়ে তুলছে। এর মাধ্যমে ড্রোন ও ব্যালিস্টিক মিসাইল ঠেকানো সম্ভব হবে।
চলতি মাসেই গ্রিসের পার্লামেন্ট ইসরায়েলের এলবিট সিস্টেমস থেকে ৩৬টি ‘পালস’ রকেট আর্টিলারি সিস্টেম কেনার অনুমোদন দিয়েছে, যার মূল্য প্রায় ৭৫০ মিলিয়ন ডলার। এ ছাড়া গ্রিস তাদের পুরোনো রুশ নির্মিত এস-৩০০ ও টর-এম১ মিসাইল সিস্টেম বদলে ইসরায়েলি প্রযুক্তিতে সজ্জিত হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
তবে ইসরায়েলের সঙ্গে এই গভীর সামরিক সখ্যতা নিয়ে সাইপ্রাসের প্রধান বিরোধী দল (কমিউনিস্ট একেইএল) উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তাদের মতে, ফিলিস্তিন ইস্যু ও আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতার মধ্যে ইসরায়েলের সঙ্গে যুক্ত হওয়া সাইপ্রাসের নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি বয়ে আনতে পারে।
অনেকেই মনে করছেন, এই জোট শুধু সামরিক নয়, বরং ভূমধ্যসাগরের বিশাল গ্যাসক্ষেত্রগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখার এক ভূরাজনৈতিক কৌশল। তুরস্ক এই জোটকে তাদের স্বার্থের পরিপন্থী হিসেবে সতর্ক করেছে, যার ফলে ভবিষ্যতের দিনগুলোতে এই অঞ্চলে সামরিক উত্তেজনা আরও বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে।

দুই মাস ধরে টেক মোগল ইলন মাস্ক জার্মানির উগ্র ডানপন্থী দল ‘অলটারনেটিভ ফর জার্মানি’কে (এএফডি) সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়েছেন। তিনি দলটির পক্ষে প্রচারণার জন্য ৭০টির বেশি পোস্ট দিয়েছেন। তাঁর ২১৯ মিলিয়ন ফলোয়ারকে বলেছেন, এই দলই জার্মানির ‘একমাত্র ভরসা’।
০৫ মার্চ ২০২৫
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও তাঁর স্ত্রী বুশরা বিবি বর্তমানে কারাগারে। তোশাখানা দুর্নীতির মামলায় তাঁরা দুজনই সাজা খাটছেন। এর মধ্যে ২০ ডিসেম্বর তোশাখানা দুর্নীতির নতুন মামলায় তাঁদের আরও ১৭ বছর করে কারাদণ্ড দেন দেশটির একটি বিশেষ আদালত। এই রায় চ্যালেঞ্জ করে আজ সোমবার (২৯ ডিসেম্বর)
২৫ মিনিট আগে
ইউক্রেনের অন্যতম সর্বোচ্চ সামরিক সম্মানপ্রাপ্ত এক কমান্ডার অভিযোগ করেছেন, শান্তি আলোচনার মধ্যেই রুশ বাহিনী পরিকল্পিতভাবে ইউক্রেনীয় যুদ্ধবন্দীদের হত্যা করছে। ‘হিরো অব ইউক্রেন’ খেতাবে ভূষিত মেজর ওলেহ শিরিয়াইভ বলেছেন, রুশ সেনারা নিয়মিত আত্মসমর্পণ করা ইউক্রেনীয় সৈন্যদের গুলি করে হত্যা করছে এবং এটি এখন এ
১ ঘণ্টা আগে
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, রাশিয়ার সঙ্গে চলমান যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে ১৫ বছরের জন্য ‘শক্তিশালী’ নিরাপত্তা গ্যারান্টি দিতে সম্মত হয়েছে। রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ফ্লোরিডার মার-এ-লাগোয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ২ ঘণ্টার রুদ্ধদ্বার বৈঠক
১ ঘণ্টা আগে