Ajker Patrika

তিন সপ্তাহ ধরে ভারতে আটকা ব্রিটিশ যুদ্ধবিমান, বাড়ছে রহস্য ও উদ্বেগ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৪ জুলাই ২০২৫, ১৩: ৪৪
গত ১৪ জুন থেকে কেরালার একটি বিমানবন্দরে আটকা পড়ে আছে ব্রিটিশ যুদ্ধবিমান। ছবি: বিবিসির সৌজন্যে
গত ১৪ জুন থেকে কেরালার একটি বিমানবন্দরে আটকা পড়ে আছে ব্রিটিশ যুদ্ধবিমান। ছবি: বিবিসির সৌজন্যে

ভারতের কেরালা রাজ্যের তিরুঅনন্তপুরম বিমানবন্দরে প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে আটকা পড়ে আছে একটি অত্যাধুনিক ব্রিটিশ যুদ্ধবিমান। এমন আধুনিক একটি বিমান কীভাবে দিনের পর দিন একটি বিদেশি মাটিতে আটকা পড়ে থাকতে পারে, তা নিয়ে কৌতূহল এবং নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

সোশ্যাল মিডিয়াতে এটি নিয়ে নানা কথা চলছে। কেউ কেউ বলছেন, যুদ্ধবিমানটির স্টিলথ প্রযুক্তি ভারতীয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার কাছে ধরাশায়ী হয়েছে। স্যাটেলাইট জ্যামিং প্রযুক্তি এটিকে এত বাজেভাবে অকেজো করে দিয়েছে যে আর সারানো যাচ্ছে না। ভারতীয় কিছু সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছিল, বিমানবাহী রণতরী থেকে উড্ডয়নের পর জ্বালানি শেষ হয়ে যাওয়ায় এটি কেরালায় জরুরি অবতরণ করে। এমন নানা জল্পনার কারণে যুদ্ধবিমানটি নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।

এফ-৩৫বি মডেলের যুদ্ধবিমানটি গত ১৪ জুন থিরুঅনন্তপুরম বিমানবন্দরে অবতরণ করে। যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, রয়্যাল নেভির ফ্ল্যাগশিপ ক্যারিয়ার এইচএমএস প্রিন্স অব ওয়েলসে ফেরার সময় ভারত মহাসাগরে খারাপ আবহাওয়ার কবলে পড়ে এটি দিক পরিবর্তন করে কেরালায় অবতরণ করে। বিমানটি নিরাপদে অবতরণ করলেও, এরপর একটি যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। আর ক্যারিয়ারে ফিরতে পারেনি।

বিমানটি অবতরণের পর থেকে এইচএমএস প্রিন্স অব ওয়েলসের প্রকৌশলীরা এটি পরীক্ষা করেছেন, কিন্তু এখন পর্যন্ত মেরামতের কাজ সম্পন্ন করতে পারেননি।

গতকাল বৃহস্পতিবার ভারতে ব্রিটিশ হাইকমিশন বিবিসিকে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বিমানটিকে বিমানবন্দরের মেইনটেন্যান্স রিপেয়ার অ্যান্ড ওভারহল (এমআরও) সুবিধায় সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব যুক্তরাজ্য গ্রহণ করেছে। ইউকে ইঞ্জিনিয়ারিং টিম বিশেষ সরঞ্জাম নিয়ে পৌঁছানোর পর এটি হ্যাঙ্গারে স্থানান্তর করা হবে, যার ফলে অন্যান্য বিমানের নির্ধারিত রক্ষণাবেক্ষণে খুব একটা ব্যাঘাত ঘটবে না।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, মেরামত ও নিরাপত্তা যাচাই সম্পন্ন হওয়ার পর বিমানটি সক্রিয় সেবায় ফিরে আসবে। ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে গ্রাউন্ড টিম নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

তিরুঅনন্তপুরম বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বিবিসিকে জানিয়েছে, যুক্তরাজ্যের প্রযুক্তিবিদেরা আগামীকাল শনিবার পৌঁছাবেন বলে তাঁরা আশা করছেন।

১১০ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ৮০০ কোটি টাকা) মূল্যের এই যুদ্ধবিমানটি রয়্যাল এয়ার ফোর্সের (আরএএফ) ছয়জন কর্মকর্তা দিনরাত পাহারা দিচ্ছেন।

মুম্বাইয়ের অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের সেন্টার ফর সিকিউরিটি, স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড টেকনোলজির পরিচালক ড. সমীর পাতিল বিবিসিকে বলেন, রয়্যাল নেভির সামনে দুটি পথ খোলা আছে: তারা হয় এটি মেরামত করে ওড়ার উপযোগী করতে পারে অথবা একটি বড় কার্গো বিমানে, যেমন সি-১৭ গ্লোবমাস্টার ট্রান্সপোর্ট এয়ারক্রাফটে করে এটি উড়িয়ে নিয়ে যেতে পারে।

আটকা পড়া এই জেট বিমানের বিষয়টি ব্রিটিশ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সেও উত্থাপিত হয়েছে। গত সোমবার বিরোধী কনজারভেটিভ এমপি বেন ওবেসে-জেকটি সরকারকে প্রশ্ন করেন, এটি সুরক্ষিত রাখতে এবং পরিষেবাতে ফিরিয়ে আনতে কী করা হচ্ছে? ইউকে ডিফেন্স জার্নাল-এর খবর অনুযায়ী, তিনি বলেছেন, ‘বিমানটি পুনরুদ্ধারে সরকার কী পদক্ষেপ নিচ্ছে, এতে আর কত সময় লাগবে এবং হ্যাঙ্গারে থাকা অবস্থায় এর সুরক্ষিত প্রযুক্তির নিরাপত্তা সরকার কীভাবে নিশ্চিত করবে?’

ব্রিটিশ সশস্ত্র বাহিনী মন্ত্রী লুক পোলার্ড নিশ্চিত করেছেন, বিমানটি যুক্তরাজ্যের কঠোর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের ভারতীয় বন্ধুদের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছি, তারা এফ-৩৫বি যুদ্ধবিমান ক্যারিয়ারে ফিরতে না পারায় প্রথম শ্রেণির সহায়তা দিয়েছে। আমি নিশ্চিত যে, রয়্যাল এয়ার ফোর্স ক্রু সব সময় এটির সঙ্গে থাকায় বিমানের নিরাপত্তা ভালো হাতে রয়েছে।’

এফ-৩৫বি অত্যন্ত উন্নত স্টিলথ জেট। এটি তৈরি করেছে মার্কিন কোম্পানি লকহিড মার্টিন। সংক্ষিপ্ত টেক-অফ ও উল্লম্ব অবতরণ সক্ষমতার জন্য এই যুদ্ধবিমান বেশ সুপরিচিত।

এদিকে কেরালার তিরুঅনন্তপুরমের রানওয়েতে মৌসুমি বৃষ্টিতে ভিজতে থাকা এফ-৩৫ বি-এর ছবি সামাজিক মাধ্যমে মিম ও হাস্যরসের জন্ম দিয়েছে।

একটি ভাইরাল পোস্টে মজা করে বলা হয়েছে, জেটটি একটি অনলাইন সাইটে মাত্র ৪ মিলিয়ন ডলারে (প্রায় ৪০ কোটি টাকা) বিক্রির জন্য রাখা হয়েছে! বিজ্ঞাপনে দাবি করা হয়েছে, এতে ‘স্বয়ংক্রিয় পার্কিং, একেবারে নতুন টায়ার, একটি নতুন ব্যাটারি এবং ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের ধ্বংস করার জন্য একটি স্বয়ংক্রিয় বন্দুক’-এর মতো বৈশিষ্ট্য রয়েছে!

এক্স-এর একজন ব্যবহারকারী বলেছেন, জেটটি এত দিন ধরে ভারতে থাকায় এর ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রাপ্য। অন্য একজন পরামর্শ দিয়েছেন, ভারতের এখন ভাড়া নেওয়া শুরু করা উচিত। আর অর্থ পরিশোধের উপযুক্ত মাধ্যম হতে পারে কোহিনূর হিরা।

উল্লেখ্য, কোহিনূর হলো বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ কাটা হিরা, যার ওজন প্রায় ১০৮ দশমিক ৯৩ ক্যারেট। বর্তমানে এটি ব্রিটিশ রাজের মুকুটে শোভা পাচ্ছে। এটি বিভিন্ন রাজা বাদশাহ ও শাসকের হাত ঘুরে এখন স্থান পেয়েছে টাওয়ার অব লন্ডনে।

এর ইতিহাসের সূচনা ১৩০৪ সালে। ষোড়শ শতাব্দীতে কোহিনূর মালওয়ার রাজাদের অধিকারে ছিল এবং পরবর্তীকালে তা মোগল সম্রাটদের হাতে আসে এবং সম্রাট শাহজাহান নির্মিত ময়ূর সিংহাসনের শোভা বর্ধন করে। পরবর্তীতে বিভিন্ন হাত ঘরে এটি ব্রিটিশদের দখলে চলে যায়।

গত বুধবার কেরালা সরকারের পর্যটন বিভাগও এক্স-এ একটি পোস্ট করে ব্রিটিশ যুদ্ধবিমান নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতে চলমান মিম ও কৌতুকে যোগ দিয়েছে। তারা লিখেছে, ‘কেরালা, এমন একটি গন্তব্য যা আপনি কখনো ছাড়তে চাইবেন না।’ পোস্টে এফ-৩৫ বি-এর একটি এআই-জেনারেটেড ছবি দেওয়া হয়েছে। ছবিতে রানওয়েতে পেছনে দিকে নারকেল গাছ দেখা যাচ্ছে। টেক্সটে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, মনোরম সৌন্দর্যের জন্য ‘ঈশ্বরের আপন দেশ’ হিসেবে পরিচিত কেরালায় অধিকাংশ পর্যটকের মতো, এই জেটটিরও চলে যেতে কষ্ট হচ্ছে!

নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ ড. পাতিল বলেন, যত দিন জেটটি আটকা থাকবে, তা এফ-৩৫বি এবং রয়্যাল নেভির ভাবমূর্তিকে বিরূপভাবে প্রভাবিত করবে। তিনি আরও বলেন, ‘ঠাট্টা, মিম, গুজব এবং ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ব্রিটিশ রয়্যাল নেভির ভাবমূর্তি ও বিশ্বাসযোগ্যতাকে প্রভাবিত করছে। যত দিন জেটটি আটকা থাকবে, তত বেশি ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়বে।’

প্রকৌশলগত সমস্যাগুলো ‘প্রকৃত ধারণার চেয়ে অনেক বেশি গুরুতর’ বলে মনে হচ্ছে, যোগ করেন ড. পাতিল। তবে অধিকাংশ সামরিক বাহিনী ‘সর্বোচ্চ খারাপ পরিস্থিতি’র জন্য প্রস্তুতি নেয়–এবং একটি জেট বিদেশি মাটিতে আটকা পড়া এমনই একটি পরিস্থিতি বলে উল্লেখ করেন তিনি।

ড. পাতিল মনে করেন, অধিকাংশ সামরিক বাহিনীর এমন পরিস্থিতিতে কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানাতে হয় তার একটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) থাকে। তাহলে রয়্যাল নেভির কি কোনো এসওপি নেই? এমন প্রশ্ন ওঠা তাদের জন্যই খুবই খারাপ ব্যাপার!

তিনি বলেন, যদি এমন কিছু শত্রুদের এলাকায় ঘটত, তাহলে কি তারা এত সময় নিত? এটি একটি পেশাদার নৌবাহিনীর জন্য খুব খারাপ পিআর (জনসংযোগ)।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

থাই-কম্বোডিয়া সীমান্তে গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো বিষ্ণু মূর্তি, নিন্দা জানাল ভারত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
মূর্তিটি ২০১৪ সালে নির্মিত হয়েছিল। ছবি: সংগৃহীত
মূর্তিটি ২০১৪ সালে নির্মিত হয়েছিল। ছবি: সংগৃহীত

থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া সীমান্তে দুই দেশের মধ্যকার বিরোধপূর্ণ এলাকায় ভগবান বিষ্ণুর একটি মূর্তি ধ্বংসের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করেছে ভারত। আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই ঘটনাকে একটি ‘অসম্মানজনক কাজ’ হিসেবে অভিহিত করেছে এবং সংশ্লিষ্ট দুই দেশকেই আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে আসার আহ্বান জানিয়েছে।

কম্বোডিয়ার প্রিয়া বিহার প্রদেশের কর্মকর্তাদের অভিযোগ, গত সোমবার (২২ ডিসেম্বর) থাই সামরিক বাহিনী একটি এক্সকাভেটর ব্যবহার করে ভগবান বিষ্ণুর মূর্তিটি গুঁড়িয়ে দেয়।

বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মূর্তিটি ২০১৪ সালে নির্মিত হয়েছিল। এটি সীমান্ত থেকে প্রায় ১০০ মিটার ভেতরে কম্বোডিয়ার আন সেস এলাকায় অবস্থিত ছিল।

প্রিয়া বিহারের মুখপাত্র লিম চানপানহা এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেন, ‘বৌদ্ধ ও হিন্দু অনুসারীদের কাছে পূজনীয় প্রাচীন মন্দির ও মূর্তি ধ্বংসের এই ঘটনা আমরা কোনোভাবেই মেনে নেব না।’ তবে থাইল্যান্ডের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে বলেন, সীমান্ত বিরোধের জের ধরে এ ধরনের কাজ অত্যন্ত দুঃখজনক। তিনি বলেন, ‘ভূখণ্ড নিয়ে দাবি যাই থাকুক না কেন, এ ধরনের অসম্মানজনক কাজ বিশ্বজুড়ে হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছে। এমন ঘটনা ঘটা উচিত নয়।’

ভারত আবারও উভয় পক্ষকে শান্তি বজায় রাখতে এবং জানমাল ও ঐতিহ্যের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে সংলাপ ও কূটনীতির পথে ফেরার অনুরোধ জানিয়েছে।

থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে ৮০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত নিয়ে বিরোধ দীর্ঘদিনের। ঔপনিবেশিক আমলের সীমানা নির্ধারণকে কেন্দ্র করে এই বিরোধের শুরু। গত জুলাইয়ে পাঁচ দিনের লড়াইয়ে কয়েক ডজন মানুষ নিহত হয়েছিল। গত ডিসেম্বরে নতুন করে শুরু হওয়া সংঘাতে এ পর্যন্ত ৪০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন এবং প্রায় ১০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।

বুধবার থেকে উভয় দেশের সামরিক কর্মকর্তারা আবারও যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা শুরু করেছেন।

বিষ্ণু মূর্তি ধ্বংসের এই ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর বিশ্বজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। ভারতসহ বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিক মহল আশা করছে, সংঘাতের পরিবর্তে শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমেই এই সংকটের সমাধান হবে। হিন্দু ও বৌদ্ধ দেবতারা এই অঞ্চলের মানুষের কাছে অত্যন্ত শ্রদ্ধার পাত্র এবং এটি আমাদের অভিন্ন সভ্যতা ও ঐতিহ্যের অংশ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গাজায় ধ্বংসস্তূপের মাঝেই বড়দিনের আনন্দ খুঁজছে ক্ষুদ্র খ্রিস্টান সম্প্রদায়

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
গত ২১ ডিসেম্বর গাজা সিটিতে ক্রিসমাস উদযাপনের আগে হলি ফ্যামিলি ক্যাথলিক চার্চের বাইরে গাজার শিশু ও সন্ন্যাসিনীরা। ছবি: এপির সৌজন্যে
গত ২১ ডিসেম্বর গাজা সিটিতে ক্রিসমাস উদযাপনের আগে হলি ফ্যামিলি ক্যাথলিক চার্চের বাইরে গাজার শিশু ও সন্ন্যাসিনীরা। ছবি: এপির সৌজন্যে

গাজা উপত্যকায় গত দুই বছর ধরে চলা ধ্বংসলীলা আর লাশের মিছিলের মাঝেও বড়দিনের আনন্দ ফিরে পাওয়ার এক বিষাদময় চেষ্টা চালাচ্ছে সেখানকার ক্ষুদ্র খ্রিস্টান সম্প্রদায়। একটি নড়বড়ে যুদ্ধবিরতি কিছুটা স্বস্তি দিলেও, ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধের ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি আর বাস্তুচ্যুত মানুষের হাহাকার অনেক ঐতিহ্যবাহী উৎসবকে ম্লান করে দিয়েছে।

৭৬ বছর বয়সী আত্তাল্লাহ তরাজি সম্প্রতি বড়দিনের উপহার হিসেবে এক জোড়া মোজা আর স্কার্ফ পেয়েছেন। গাজার কনকনে শীত থেকে বাঁচতে এগুলোই এখন তাঁর বড় সম্বল। গির্জার অন্যান্য সদস্যদের সাথে তরাজি যখন গাইলেন—‘খ্রিস্টের জন্ম হয়েছে, হালেলুইয়া’ (একটি হিব্রু শব্দ, যার অর্থ প্রভুর প্রশংসা), তখন কিছুক্ষণের জন্য হলেও যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার বিভীষিকা ঢাকা পড়েছিল বিশ্বাসের সুরে।

গাজার সেন্ট্রাল সিটি এলাকার ‘হলি ফ্যামিলি চার্চ’ কম্পাউন্ডে আশ্রয় নেওয়া তরাজি বলেন, ‘আমরা এই পবিত্র মুহূর্তে যুদ্ধ, বিপদ আর বোমাবর্ষণের কথা ভুলে যেতে চাই। খ্রিস্টের জন্মের আনন্দ আমাদের সব তিক্ততাকে ছাপিয়ে যাক।’

তবে সবার জন্য উৎসবের অনুভূতি এক নয়। শাদি আবু দাউদের জন্য এবারের বড়দিনটি অত্যন্ত কষ্টের। গত জুলাই মাসে এই ক্যাথলিক চার্চ কম্পাউন্ডেই ইজরায়েলি হামলায় তাঁর মা নিহত হন ও ছেলে আহত হয়। ইজরায়েল একে ‘দুর্ঘটনা’ বলে দুঃখ প্রকাশ করলেও স্বজন হারানোর ক্ষত এখনও দগদগে। আবু দাউদ বলেন, জখম এখনও কাঁচা। এখানে কোনো উৎসব নেই, আমরা এখনও ‘না যুদ্ধ না শান্তি’র এক অদ্ভুত অবস্থার মধ্যে বাস করছি।

গাজার প্রায় ২০ লাখ বাসিন্দার মধ্যে খ্রিস্টানদের সংখ্যা এখন নগণ্য। যুদ্ধের কারণে অনেক পরিবার দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। ২৩ বছর বয়সী ওয়াফা ইমাদ এলসায়েঘ জানান, বন্ধুবান্ধব আর আত্মীয়রা না থাকায় আগের মতো আমেজ নেই। তিনি বলেন, ‘আমরা পরিবার নিয়ে সাজসজ্জা করছি ঠিকই, কিন্তু যাদের সাথে সব আনন্দ ভাগ করে নিতাম, তারা আজ গাজায় নেই। এই পরিবেশ আগের মতো করে আর ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়।’

৩৫ বছর বয়সী মা এলিনোর আমাশ তাঁর সন্তানদের মুখে হাসি ফোটাতে ঘরে বড়দিনের গাছ (ক্রিসমাস ট্রি) সাজিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমার সন্তানেরা কিছু চকলেট আর মিষ্টি পেয়ে বোমার ভয় ছাড়া শ্বাস নিতে পারছে। কিন্তু তাবুগুলোতে বসবাসকারী মানুষের কষ্ট দেখে চোখে জল আসে।’

গাজার খ্রিস্টানরা মনে করেন, তাঁরা সংখ্যায় যত কমই হোক না কেন, এটি এই ভূমির প্রতি ভালোবাসা এবং বিশ্বাসের এক অটল সাক্ষ্য। আত্তাল্লাহ তরাজি প্রার্থনা করেন যেন তাঁর জাতি শান্তি ও স্বাধীনতা পায়। তিনি বিশ্বাস করেন, এই পরিস্থিতির চেয়েও বড়দিনের আনন্দ এবং তাঁদের বিশ্বাস অনেক বেশি শক্তিশালী।

গত অক্টোবর থেকে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতির পর গাজায় হামলার তীব্রতা কমলেও মাঝেমধ্যেই প্রাণঘাতী আঘাত আসছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইজরায়েলি অভিযানে এ পর্যন্ত প্রায় ৭১ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অর্ধেকই নারী ও শিশু।

অতিবৃষ্টিতে বাস্তুচ্যুত মানুষের তাবুগুলো তলিয়ে গেছে, যা ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলোকে আরও ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মস্কোতে বিস্ফোরণ, দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ নিহত তিন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ৪২
মস্কোর ঘটনাস্থলে পুলিশ। ছবি: বিবিসি
মস্কোর ঘটনাস্থলে পুলিশ। ছবি: বিবিসি

রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে এক বিস্ফোরণে দুজন ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা এবং আরেকজন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। রাশিয়ার তদন্ত সংস্থাগুলোর বরাতে জানা গেছে, দক্ষিণ মস্কোর ইয়েলেতস্কায়া স্ট্রিট এলাকায় এই বিস্ফোরণ ঘটে স্থানীয় সময় বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) ভোরে। ঘটনাস্থলটি সেই জায়গার কাছে, যেখানে চলতি সপ্তাহের শুরুতে এক রুশ জেনারেল গাড়িবোমা হামলায় নিহত হয়েছিলেন।

রাশিয়ার ইনভেস্টিগেটিভ কমিটির বিবৃতির বরাতে আল জাজিরা জানিয়েছে, সন্দেহভাজন এক ব্যক্তিকে আটকের চেষ্টা করার সময় বিস্ফোরণটি ঘটে। পুলিশ কর্মকর্তারা যখন ওই ব্যক্তির কাছে যান, তখনই একটি বিস্ফোরক ডিভাইস সক্রিয় হয়ে যায়। বিস্ফোরণের ফলে ঘটনাস্থলেই দুই পুলিশ কর্মকর্তা প্রাণ হারান। এ সময় তাঁদের পাশে থাকা আরেকজন ব্যক্তিও বিস্ফোরণে নিহত হন।

নিহত দুই পুলিশ কর্মকর্তার বয়স ছিল ২৪ ও ২৫ বছর। আল জাজিরার মস্কো প্রতিনিধি ইউলিয়া শাপোভালোভার তথ্য অনুযায়ী, নিহতদের মধ্যে একজনের স্ত্রী ও সন্তান রয়েছে। তিনি বলেন, ‘এটি তাদের পরিবারের জন্য এক ভয়াবহ ট্র্যাজেডি।’ বিস্ফোরণের প্রকৃত উদ্দেশ্য এখনো স্পষ্ট নয় বলে জানিয়েছে রুশ কর্তৃপক্ষ।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বিস্ফোরণের শব্দ ছিল অত্যন্ত শক্তিশালী। কাছাকাছি বসবাসকারী আলেক্সান্ডার নামের এক ব্যক্তি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘একটা ভয়ংকর শব্দ হয়েছিল, কয়েক দিন আগের গাড়ি বিস্ফোরণের মতোই।’ আরেক বাসিন্দা রোজা জানান, বিস্ফোরণের সময় তাঁদের পুরো ভবনটি কেঁপে ওঠে এবং তিনি ঘুম থেকে জেগে ওঠেন।

বিস্ফোরণের পরপরই এলাকাটি ঘিরে ফেলে পুলিশ বাহিনী। রুশ টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ছবিতে দেখা গেছে, ঘটনাস্থলে ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। তদন্তকারীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এবং বিস্ফোরক পাচারের অভিযোগে একটি মামলা করেছে।

এই বিস্ফোরণ ঘটেছে সেই এলাকার কাছে, যেখানে গত সোমবার রুশ জেনারেল ফানিল সারভারভ গাড়ির নিচে পেতে রাখা বিস্ফোরক ডিভাইসের মাধ্যমে নিহত হন। সারভারভ রুশ জেনারেল স্টাফের অপারেশনাল ট্রেনিং বিভাগের প্রধান ছিলেন এবং ইউক্রেনে চলমান সামরিক অভিযানের জন্য সেনাদের প্রশিক্ষণের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

রাশিয়া জেনারেল সারভারভ হত্যার পেছনে ইউক্রেনের গোয়েন্দা সংস্থার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেছে। তবে ইউক্রেন এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করেনি। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে রাশিয়া ও দখল করা ইউক্রেনীয় অঞ্চলে একাধিক বিস্ফোরণের ঘটনায় রুশ সামরিক কর্মকর্তা এবং এই যুদ্ধের সমর্থক বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শানলিউরফা: নবীদের যে নগরে মিলেছে তিন ধর্মের মানুষ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
তুরস্কের শানলিউরফা শহর। ছবি: সিএনএন
তুরস্কের শানলিউরফা শহর। ছবি: সিএনএন

দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্কের শানলিউরফা শহরকে বলা হয় ‘নবীদের নগরী’। সিরিয়া সীমান্ত থেকে মাত্র ৪০ মাইল উত্তরে অবস্থিত এই শহরটি হাজার বছরের ইতিহাস, ধর্মীয় বিশ্বাস ও সংস্কৃতির এক অনন্য সংযোগস্থল। এখানে ইহুদি, খ্রিষ্টান ও ইসলাম—এই তিন একেশ্বরবাদী ধর্মের কাহিনি এসে মিলেছে।

বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে সিএনএন জানিয়েছে, শানলিউরফার পুরোনো শহরের দেরগাহ মসজিদ কমপ্লেক্সে অবস্থিত নীলাভ পানির ‘বালিক্লিগোল’ বা ‘মাছের হ্রদ’। মূলত এখানে আছে দুটি পুকুর। ধর্মীয় মতে, দুটি পুকুরের বড়টিতে নবী ইব্রাহিম (আ.)-কে আগুনে নিক্ষেপ করেছিলেন মেসোপটেমিয়ার রাজা নমরুদ। আল্লাহ তৎক্ষণাৎ ওই আগুনকে পানি এবং জ্বলন্ত কাঠকে মাছে রূপান্তরিত করেছিলেন। এ ছাড়া ‘আইনজেলিহা’ নামের ছোট পুকুরটির নামকরণ করা হয়েছে নমরুদের কন্যা জেলিহার নামে। ইব্রাহিম নবীর প্রতি বিশ্বাসের কারণে এই পুকুরে আগুনে ঝাঁপ দিয়ে জেলিহা প্রাণ হারিয়েছিলেন বলে বিশ্বাস।

দুটি পুকুরই কালো দাগওয়ালা কার্প মাছে ভরা। এগুলোকে পবিত্র মনে করা হয়। তাই এই মাছগুলোকে ধরা বা এগুলোর ক্ষতি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। এই কারণেই বালিক্লিগোল শুধু একটি পর্যটনস্থল নয়, বরং গভীর ধর্মীয় আবেগ ও ইতিহাসের প্রতীক। মাছের গায়ে থাকা কালো দাগগুলোকে আগুনের ছাইয়ের চিহ্ন হিসেবে ধরে নেওয়া হয়।

বালিক্লিগোলে ভেসে বেড়ায় কালো দাগওয়ালা কার্প মাছ। ছবি: সিএনএন
বালিক্লিগোলে ভেসে বেড়ায় কালো দাগওয়ালা কার্প মাছ। ছবি: সিএনএন

ইতিহাসের বিভিন্ন সময়ে শানলিউরফা নানা নামে পরিচিত ছিল। আরামীয়রা একে ডাকত উরহাই, গ্রিক শাসনামলে নাম ছিল এডেসা, আরব বিজয়ের পর নাম হয় রোহা। অটোমানেরা ১৬০৭ সালে এই নগরীর নাম রাখে উরফা। পরে ১৯৮৪ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রতিরোধের স্বীকৃতি হিসেবে যুক্ত হয় ‘শানলি’, অর্থাৎ ‘গৌরবময়’।

এই শহরটি ইব্রাহিম (আ.), আইয়ুব (আ.), নূহ (আ.) ও জেথ্রোর মতো নবীদের সঙ্গে সম্পর্কিত বলে বিশ্বাস করা হয়। পুরোনো শহরের দেরগাহ মসজিদ কমপ্লেক্সে অবস্থিত বালিক্লিগোল মুসলিম তীর্থযাত্রীদের কাছে অত্যন্ত পবিত্র। এখানেই রয়েছে মেভলিদ-ই-হালিল গুহা। বিশ্বাস করা হয়, এখানেই জন্ম হয়েছিল ইব্রাহিম নবীর। নারীরা সন্তান কামনায় ও আরোগ্য লাভের আশায় এই গুহায় আসেন।

তবে শানলিউরফার ইতিহাস শুধু ধর্মগ্রন্থেই সীমাবদ্ধ নয়। শহরটি থেকে ১৪ মাইল দূরেই আছে পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন ধর্মীয় স্থাপনা বা উপাসনালয় হিসেবে চিহ্নিত ‘গ্যোবেকলি তেপে’। প্রায় ১১-১২ হাজার বছরের পুরোনো এই স্থাপনাটি মানবসভ্যতার ধারণাকেই বদলে দিয়েছে। খ্রিষ্টপূর্ব প্রায় ৯৬০০ সালের এই নিওলিথিক স্থাপনাটি কৃষি ও মৃৎশিল্পের আগেই নির্মিত—যা প্রমাণ করে, ধর্মীয় আচার হয়তো সভ্যতার সূচনাতেও গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এখানে পাওয়া টি-আকৃতির স্তম্ভ ও খোদাই করা পশুর ভাস্কর্য বিশ্বব্যাপী বিস্ময় সৃষ্টি করেছে।

পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন ধর্মীয় স্থাপনা বা উপাসনালয় হিসেবে চিহ্নিত ‘গ্যোবেকলি তেপে’। ছবি: সিএনএন
পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন ধর্মীয় স্থাপনা বা উপাসনালয় হিসেবে চিহ্নিত ‘গ্যোবেকলি তেপে’। ছবি: সিএনএন

শানলিউরফা প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে ১০ হাজারের বেশি নিদর্শন। এর মধ্যে ‘উরফা ম্যান’ নামের ১১ হাজার ৫০০ বছরের পুরোনো মানব মূর্তিটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। পাশেই হালেপলিবাহচে মোজাইক জাদুঘর ও কিজিলকয়ুন নেক্রোপলিস শহরের রোমান যুগের ইতিহাস তুলে ধরে।

ইতিহাস ও ধর্মের পাশাপাশি শানলিউরফা খাবার ও আতিথেয়তার জন্যও বিখ্যাত। উরফা কাবাব, পাটলিজান কাবাব, চি কফতে ও শিল্লিক তাতলিসি এখানকার জনপ্রিয় খাবার। স্থানীয়দের সঙ্গে ধীরে চা পান, পুরোনো বাজারে হাঁটা আর ‘সিরা গেসেসি’ নামের সাংস্কৃতিক আড্ডায় অংশ নিলে বোঝা যায়—এই শহর শুধু দেখার নয়, অনুভব করারও।

শানলিউরফা নগরীতে ‘সিরা গেসেসি’ নামে রাতের আড্ডা। ছবি: সিএনএন
শানলিউরফা নগরীতে ‘সিরা গেসেসি’ নামে রাতের আড্ডা। ছবি: সিএনএন

বলা যায়—শানলিউরফা যেন এক জীবন্ত জাদুঘর; যেখানে ধর্ম, ইতিহাস ও মানবসভ্যতার গল্প একসূত্রে গেঁথে পাশাপাশি হাঁটে অতীত ও বর্তমান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত