
গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ পাস নিয়ে ক্যাঁচাল নতুন নয়। এর প্রধান কারণ এ নিয়ে দেশে কোনো আইন নেই। এ ছাড়া সারা বছর যানজটে মানুষের এত কর্মঘণ্টা নষ্ট হওয়ার পরও গণপরিবহন কখনো শৃঙ্খলার মধ্যে আনতে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
কিন্তু বিশ্বের অনেক দেশেই বিশেষ করে স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা আছে। বিনা ভাড়া বা অর্ধেক ভাড়ায় তারা যাতায়াত করতে পারে। অনেক দেশে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য আলাদা রাস্তা পর্যন্ত আছে। আবার শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে গণপরিবহনের বদলে আলাদা পরিবহন ব্যবস্থাও আছে যুক্তরাজ্যের মতো কিছু দেশে। এ ক্ষেত্রে সরকারই এই পরিবহনের ব্যবস্থা করে, অথবা স্কুল কর্তৃপক্ষ অভিভাবকের কাছ থেকে নির্দিষ্ট ফির বিনিময়ে পরিবহন রাখে অথবা স্থানীয় কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান স্পনসর করে।
ইদানীংকালে অবশ্য শিক্ষার্থীদের হেঁটে বা সাইকেল চালিয়ে স্কুলে যাতায়াত করতে উৎসাহিত করা হচ্ছে। যেমন, ব্রিটেনে শিক্ষার্থীকে তার বাড়ির কাছাকাছি স্কুলে ভর্তি হওয়ার সুযোগ দেওয়া হয় এবং হেঁটে যাতায়াত করতে উৎসাহিত করা হয়।
শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য পরিবহন ব্যবস্থাটি দেশ ভেদে বিভিন্ন রকমের। যেমন:
সাধারণ গণপরিবহন
পাবলিক ট্রান্সপোর্ট (সরকারি পরিবহন) ব্যবহার করা কিছু দেশে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য খুবই সাধারণ মাধ্যম। অস্ট্রেলিয়ার মতো কিছু দেশে শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ রুট এবং সময়সূচি রয়েছে। এ সময়টা একচেটিয়াভাবে রুটগুলো শুধু শিক্ষার্থীরা ব্যবহার করে। তবে এখনো পাবলিক ট্রান্সপোর্ট পরিষেবা নিতে হয় তাদের। কখনো অভিভাবক বা শিক্ষার্থীরা গণপরিবহনের টিকিট কেনার সময় টাকা ফেরত পান।
স্কুল বাস
দেশ অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের পরিবহনে বিশেষভাবে ডিজাইন করা স্কুল বাস ব্যবহার করা হয়। কানাডা এবং যুক্তরাষ্ট্রের অনেক কাউন্টিতে বিশেষভাবে নির্মিত এবং সজ্জিত স্কুল বাস ব্যবহার করে। হলুদ রং করা বা বিভিন্ন ধরনের সতর্কবার্তা এবং সুরক্ষা ডিভাইস দিয়ে সজ্জিত থাকে এসব বাস। তবে বিশ্বের অন্যান্য দেশে স্কুল বাসগুলো উত্তর আমেরিকার দেশগুলোর মতো অতটা বিশেষ নয়। এগুলো প্রায় সাধারণ বাসের মতোই হয়।
ব্যক্তিগত গাড়ি
অনেক দেশে পরিবারের প্রাইভেট কারে করে শিক্ষার্থীরা আসা-যাওয়া করে। অভিভাবকেরাই এ কাজটি করেন। তবে গণপরিবহন বা স্কুল বাসের তুলনায় এতে নিরাপত্তা ঝুঁকি বেশি থাকে। কিছু দেশে শিক্ষার্থীরা গাড়ি চালিয়ে স্কুলে যায়। বেশির ভাগ দেশে গাড়ি চালানোর ন্যূনতম বয়স ১৭ বা ১৮। অবশ্য কসোভোতে ১৪ বছর বয়সেই ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া হয়।
হাঁটা
‘ওয়াক টু স্কুল’ ক্যাম্পেইন ইদানীং জনপ্রিয় হচ্ছে। প্রাপ্তবয়স্কদের তত্ত্বাবধানে শিক্ষার্থীদের দল বেঁধে স্কুলে যাতায়াতের ব্যবস্থা করা হয়। এর জন্য আলাদা রুট বা লেন থাকতে পারে।
সাইক্লিং
ইউরোপের অনেক দেশে সাইকেল চালিয়ে স্কুলে যাওয়া বেশ জনপ্রিয়। স্কুলগুলোতে বিশাল বাইক শেড দেখলেই সেটি বোঝা যায়। বাইসাইকেল বা প্যাডেল স্কুটারের মতো মানবচালিত যানবাহনে শিক্ষার্থীরা বড়দের তত্ত্বাবধানে দল বেঁধে যাতায়াত করে থাকে।
শিক্ষার্থীদের স্কুলে যাতায়াত ব্যবস্থার নিরাপত্তা নিয়ে বেশ কিছু জরিপ হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার সড়ক নিরাপত্তা পরিসংখ্যানের ওপর ভিত্তি করে ১৯৯৪ সালের একটি প্রতিবেদনে দেখা গেছে,
বাসে যাতায়াত করলে-
পারিবারিক গাড়িতে যাতায়াতের চেয়ে গুরুতর আঘাত বা মৃত্যুর আশঙ্কা সাত গুণ কম; হাঁটার চেয়ে একই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা ৩১ গুণ কম; সাইকেল চালানোর তুলনায় ২২৮ গুণ কম ঝুঁকি থাকে।
ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ডের (যুক্তরাষ্ট্র) কর্মকর্তারা বলছেন, সিট বেল্ট না লাগানো থাকলেও স্কুল বাসগুলো অন্যান্য গাড়ির চেয়ে বেশি নিরাপদ।
বিভিন্ন দেশে শিক্ষার্থী পরিবহন ব্যবস্থা-
আর্জেন্টিনা
আর্জেন্টিনায় বেশির ভাগ শিক্ষার্থী হয় হেঁটে স্কুলে যায়, নয়তো অভিভাবকের সঙ্গে অথবা নিয়মিত পাবলিক ট্রানজিটে যাতায়াত করে। অনেকে প্রতিটি শহরে সরকার নির্ধারিত বেসরকারি বাসে যাতায়াত করে। এসব বাস সাধারণত সাদা বা কমলা রঙের হয়। অভিভাবকেরা ওই বেসরকারি ভ্যান মালিককে মাসিক একটা ফি দেন। ভ্যানগুলোর সঙ্গে স্কুল কর্তৃপক্ষের কোনো সম্পর্ক নেই। সাধারণত একই রুটে বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীদের বহন করে তারা।
অস্ট্রেলিয়া
অস্ট্রেলিয়ায় শহরতলির বাইরের বা গ্রামাঞ্চলে বসবাসকারী শিক্ষার্থীরা সাধারণত পাবলিক বাস এবং ট্রেন বা বেসরকারি বাস কোম্পানির বিশেষ রুটে যাতায়াত করে। শহরের অভ্যন্তরীণ এলাকার স্কুলছাত্ররা সরকারি মালিকানাধীন রুটের বাসে যাতায়াত করে। ছাত্ররা হয় একটি পাবলিক রুটের বাসে, অথবা একটি ‘স্কুল স্পেশাল’ পরিষেবাতে নেয়। কিছু বেসরকারি স্কুলের নিজস্ব বাস আছে। সাধারণত কোনো স্পনসর না পেলে স্কুল থেকেই এই সেবা দেওয়া হয়।
নিউ সাউথ ওয়েলসে স্কুল বাস পরিবহনকে ট্রেনের পরেই স্থল পরিবহনের মধ্যে সবচেয়ে নিরাপদ বলে ধরা হয়। কিন্ডারগার্টেন-২ গ্রেডের শিক্ষার্থীরা যেখানেই থাকুক না কেন বিনা মূল্যে যাতায়াতের সুবিধা পায়। এরপর ৩-৬ বছরের শিক্ষার্থীরা বিনা মূল্যে ভ্রমণ পায় যদি তারা ১ দশমিক ৬ কিলোমিটার দূরে থাকে। উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিনা মূল্যে ভ্রমণ পায় যদি তারা ২ কিলোমিটার দূরে থাকে।
কানাডা
কানাডার শিক্ষার্থী পরিবহন ব্যবস্থা যুক্তরাষ্ট্রের মতোই। এখানেও তাদের জন্য রয়েছে হলুদ স্কুল বাস। কানাডীয় স্কুল কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থী পরিবহন পরিষেবার জন্য ঠিকাদার নিযুক্ত করে। এর জন্য অভিভাবকদের কোনো পয়সা দিতে হয় না। এখানে স্কুলবাসগুলো দেখতে একই রকম এবং সাধারণত একই কোম্পানির তৈরি।
ফিনল্যান্ড
ফিনল্যান্ডে যে সমস্ত শিক্ষার্থী নিকটতম স্কুল থেকে ৫ কিলোমিটারেরও বেশি দূরে থাকে বা কোনো প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, তারা বিনা ভাড়ায় বাস বা ট্যাক্সিতে যাতায়াত করতে পারে। এসব বাস এবং ট্যাক্সিগুলো সাধারণ পরিবহন হিসেবেই ব্যবহার করা হয়। সাধারণত স্থানীয় কোম্পানি এই পরিবহন পরিচালনা করে। যে বাসগুলো শুধু স্কুল বাসের জন্য সংরক্ষিত সেগুলোর সামনে এবং পেছনে ‘Koulukyyti/Skolskjuts’ চিহ্ন দেওয়া থাকে। শিক্ষার্থী পরিবহনে নিয়োজিত ট্যাক্সিগুলোর ছাদে একটি ত্রিভুজাকার চিহ্ন থাকে। এসব বাসের গতি ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটারের মধ্যে সীমাবদ্ধ।
জার্মানি
কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া জার্মানিতে কোনো বিশেষ স্কুল বাস নেই। পাবলিক ট্রান্সপোর্ট সময়সূচি প্রায়শই মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রয়োজনের সঙ্গে মিলিয়ে রাখা হয়। কিছু জার্মান রাজ্য পাবলিক ট্রান্সপোর্ট টিকিটের জন্য অর্থ ফেরতের ব্যবস্থা রেখেছে।
হংকং
হংকংয়ে শিশু শিক্ষার্থীদের বাড়ি থেকে স্কুলে আনা নেওয়ার জন্য পরিবহন আছে। প্রতিটি পরিবহনে একজন আয়া থাকেন। সরকার-নিয়ন্ত্রিত যানবাহন এই পরিবহনগুলো নির্দিষ্ট রুটে চলে।
নেদারল্যান্ডস
নেদারল্যান্ডসে, বৃহৎ পরিসরে ছাত্র পরিবহনের কোনো সংগঠিত রূপ নেই। শিশুকালে অভিভাবক আর হাইস্কুলে নিজেই বাইক চালিয়ে স্কুলে যায়। তবে কলেজে পড়ার সময় বিনা ভাড়ায় গণপরিবহনে যাতায়াত করতে পারে।
নিউজিল্যান্ড
নিউজিল্যান্ডে ঠিকাদার বা সাধারণ বাস কোম্পানির সঙ্গে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের চুক্তির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পরিবহন ব্যবস্থা করা হয়। স্কুল পরিষেবার জন্য বাস কোম্পানিগুলোতে সাধারণত পুরোনো ট্রানজিট বাস বা কোচের বহর থাকে। সেগুলো বিভিন্ন সংকেত দিয়ে চিহ্নিত করা থাকে। গতি সর্বোচ্চ ৮০ কিলোমিটার।
এ দেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের (৫-১২ বছর বয়সী) জন্য স্কুলের ৩ দশমিক ২ কিলোমিটার এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের (১৩ বছর বয়সী) জন্য স্কুলের ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটারের মধ্যে বসবাস করলে পরিবহন পরিষেবা দেওয়া হয় না। এ দেশে বিনা ভাড়ার স্কুল বাস পরিষেবা ক্রমেই সংকুচিত হয়ে আসছে।
যুক্তরাজ্য
যুক্তরাজ্যে বেশির ভাগ শিক্ষার্থী পরিবহন সাধারণ ট্রানজিট বাসের ওপর নির্ভরশীল। এই বাসগুলো স্কুলে যাতায়াতের জন্য ব্যবহার না করলে অন্য কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে। বেশির ভাগ শিশু স্থানীয় নির্ধারিত গণপরিবহন পরিষেবা ব্যবহার করে। প্রায় সব ক্ষেত্রেই যুক্তরাজ্যে ডেডিকেটেড স্কুল পরিবহন পরিষেবা স্থানীয় বাস কোম্পানিগুলোর সঙ্গে চুক্তির ভিত্তিতে দেওয়া হয়।
লন্ডন
গ্রেটার লন্ডনে অনেক স্কুল শিশু সাধারণ বাস পরিষেবা ব্যবহার করে স্কুলে যাতায়াত করে। অয়েস্টার কার্ড সিস্টেম ব্যবহার করে তারা বিনা মূল্যে ভ্রমণ করতে পারে।
তবে ইদানীং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে অনেকে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। ফলে ক্রমেই শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা পরিবহনের ব্যবস্থা করার দাবি জোরদার হচ্ছে। উত্তর আমেরিকার স্টাইলের ‘হলুদ’ স্কুল বাস ‘ফার্স্ট স্টুডেন্ট ইউকে’ এবং ‘মাই বাস’ পরিষেবা চালু করা হচ্ছে।
হাঁটার পক্ষেও ব্যাপক প্রচারাভিযান চলছে। দাতব্য সংস্থা ‘লিভিং স্ট্রিটস’ এবং ‘ট্রাভেলওয়াইজ’ এই ক্যাম্পেইন জনপ্রিয় করার পেছনে মুখ্য ভূমিকা রাখছে।
যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে ‘স্কুল বাস’ তৈরি করা হয়। প্রায় সব সময় বিনা ভাড়ায় শিক্ষার্থীদের এসব বাসে পরিবহন করা হয়। অভিভাবকদেরও এর জন্য কোনো ফি দিতে হয় না। নিকটতম স্থানীয় স্কুল ছাড়া সব স্কুলে শিক্ষার্থীরাই এই সুবিধা পায়।
এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছর বিশেষ স্কুল বাসগুলোতে প্রায় ১ হাজার কোটি শিক্ষার্থী ভ্রমণ করে। স্কুল বাসগুলো কিছু স্কুল প্রশাসন কেনে অথবা ইজারা নেয়। কিছু প্রশাসন আবার ঠিকাদারদের মাধ্যমে এই পরিষেবা দেয়।
যুক্তরাষ্ট্রের শহরাঞ্চলে সাধারণ পাবলিক ট্রানজিট বাসের ব্যবহার ক্রমেই বাড়ছে। নিউইয়র্ক সিটি গ্রেড লেভেল এবং স্কুল থেকে দূরত্বের ওপর ভিত্তি করে ছাত্রদের ‘হলুদ’ স্কুল বাস পরিষেবা দেয়। তবে যেখানে ডেডিকেটেড স্কুল বাস পরিষেবা নেই সেখানে গ্রেড ৭-১২ এবং আরও কম বয়সী শিক্ষার্থীদের পরিবহনের জন্য পাবলিক নিউইয়র্ক সিটি ট্রানজিট বাস সিস্টেমের ওপর নির্ভর করে কর্তৃপক্ষ। এই উদ্দেশ্যে স্কুল প্রশাসন বিনা মূল্যে বা অর্ধেক মূল্যে ট্রানজিট পাস দেয়।
কিছু পাবলিক ট্রানজিট পরিষেবা স্থানীয় স্কুলগুলোতে পরিষেবা দেওয়ার জন্য বিশেষ ভাবে ডিজাইন করা রুটগুলো ব্যবহার করে। এ ধরনের রুট নির্ধারিত সময়ে শুধু স্কুল পরিবহনের জন্যই ব্যবহার করা হয়। অবশ্য ১৬ বছরের বেশি বয়সী অধিকাংশ শিক্ষার্থী নিজেই গাড়ি চালিয়ে স্কুলে যায়।

গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ পাস নিয়ে ক্যাঁচাল নতুন নয়। এর প্রধান কারণ এ নিয়ে দেশে কোনো আইন নেই। এ ছাড়া সারা বছর যানজটে মানুষের এত কর্মঘণ্টা নষ্ট হওয়ার পরও গণপরিবহন কখনো শৃঙ্খলার মধ্যে আনতে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
কিন্তু বিশ্বের অনেক দেশেই বিশেষ করে স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা আছে। বিনা ভাড়া বা অর্ধেক ভাড়ায় তারা যাতায়াত করতে পারে। অনেক দেশে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য আলাদা রাস্তা পর্যন্ত আছে। আবার শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে গণপরিবহনের বদলে আলাদা পরিবহন ব্যবস্থাও আছে যুক্তরাজ্যের মতো কিছু দেশে। এ ক্ষেত্রে সরকারই এই পরিবহনের ব্যবস্থা করে, অথবা স্কুল কর্তৃপক্ষ অভিভাবকের কাছ থেকে নির্দিষ্ট ফির বিনিময়ে পরিবহন রাখে অথবা স্থানীয় কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান স্পনসর করে।
ইদানীংকালে অবশ্য শিক্ষার্থীদের হেঁটে বা সাইকেল চালিয়ে স্কুলে যাতায়াত করতে উৎসাহিত করা হচ্ছে। যেমন, ব্রিটেনে শিক্ষার্থীকে তার বাড়ির কাছাকাছি স্কুলে ভর্তি হওয়ার সুযোগ দেওয়া হয় এবং হেঁটে যাতায়াত করতে উৎসাহিত করা হয়।
শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য পরিবহন ব্যবস্থাটি দেশ ভেদে বিভিন্ন রকমের। যেমন:
সাধারণ গণপরিবহন
পাবলিক ট্রান্সপোর্ট (সরকারি পরিবহন) ব্যবহার করা কিছু দেশে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য খুবই সাধারণ মাধ্যম। অস্ট্রেলিয়ার মতো কিছু দেশে শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ রুট এবং সময়সূচি রয়েছে। এ সময়টা একচেটিয়াভাবে রুটগুলো শুধু শিক্ষার্থীরা ব্যবহার করে। তবে এখনো পাবলিক ট্রান্সপোর্ট পরিষেবা নিতে হয় তাদের। কখনো অভিভাবক বা শিক্ষার্থীরা গণপরিবহনের টিকিট কেনার সময় টাকা ফেরত পান।
স্কুল বাস
দেশ অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের পরিবহনে বিশেষভাবে ডিজাইন করা স্কুল বাস ব্যবহার করা হয়। কানাডা এবং যুক্তরাষ্ট্রের অনেক কাউন্টিতে বিশেষভাবে নির্মিত এবং সজ্জিত স্কুল বাস ব্যবহার করে। হলুদ রং করা বা বিভিন্ন ধরনের সতর্কবার্তা এবং সুরক্ষা ডিভাইস দিয়ে সজ্জিত থাকে এসব বাস। তবে বিশ্বের অন্যান্য দেশে স্কুল বাসগুলো উত্তর আমেরিকার দেশগুলোর মতো অতটা বিশেষ নয়। এগুলো প্রায় সাধারণ বাসের মতোই হয়।
ব্যক্তিগত গাড়ি
অনেক দেশে পরিবারের প্রাইভেট কারে করে শিক্ষার্থীরা আসা-যাওয়া করে। অভিভাবকেরাই এ কাজটি করেন। তবে গণপরিবহন বা স্কুল বাসের তুলনায় এতে নিরাপত্তা ঝুঁকি বেশি থাকে। কিছু দেশে শিক্ষার্থীরা গাড়ি চালিয়ে স্কুলে যায়। বেশির ভাগ দেশে গাড়ি চালানোর ন্যূনতম বয়স ১৭ বা ১৮। অবশ্য কসোভোতে ১৪ বছর বয়সেই ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া হয়।
হাঁটা
‘ওয়াক টু স্কুল’ ক্যাম্পেইন ইদানীং জনপ্রিয় হচ্ছে। প্রাপ্তবয়স্কদের তত্ত্বাবধানে শিক্ষার্থীদের দল বেঁধে স্কুলে যাতায়াতের ব্যবস্থা করা হয়। এর জন্য আলাদা রুট বা লেন থাকতে পারে।
সাইক্লিং
ইউরোপের অনেক দেশে সাইকেল চালিয়ে স্কুলে যাওয়া বেশ জনপ্রিয়। স্কুলগুলোতে বিশাল বাইক শেড দেখলেই সেটি বোঝা যায়। বাইসাইকেল বা প্যাডেল স্কুটারের মতো মানবচালিত যানবাহনে শিক্ষার্থীরা বড়দের তত্ত্বাবধানে দল বেঁধে যাতায়াত করে থাকে।
শিক্ষার্থীদের স্কুলে যাতায়াত ব্যবস্থার নিরাপত্তা নিয়ে বেশ কিছু জরিপ হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার সড়ক নিরাপত্তা পরিসংখ্যানের ওপর ভিত্তি করে ১৯৯৪ সালের একটি প্রতিবেদনে দেখা গেছে,
বাসে যাতায়াত করলে-
পারিবারিক গাড়িতে যাতায়াতের চেয়ে গুরুতর আঘাত বা মৃত্যুর আশঙ্কা সাত গুণ কম; হাঁটার চেয়ে একই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা ৩১ গুণ কম; সাইকেল চালানোর তুলনায় ২২৮ গুণ কম ঝুঁকি থাকে।
ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ডের (যুক্তরাষ্ট্র) কর্মকর্তারা বলছেন, সিট বেল্ট না লাগানো থাকলেও স্কুল বাসগুলো অন্যান্য গাড়ির চেয়ে বেশি নিরাপদ।
বিভিন্ন দেশে শিক্ষার্থী পরিবহন ব্যবস্থা-
আর্জেন্টিনা
আর্জেন্টিনায় বেশির ভাগ শিক্ষার্থী হয় হেঁটে স্কুলে যায়, নয়তো অভিভাবকের সঙ্গে অথবা নিয়মিত পাবলিক ট্রানজিটে যাতায়াত করে। অনেকে প্রতিটি শহরে সরকার নির্ধারিত বেসরকারি বাসে যাতায়াত করে। এসব বাস সাধারণত সাদা বা কমলা রঙের হয়। অভিভাবকেরা ওই বেসরকারি ভ্যান মালিককে মাসিক একটা ফি দেন। ভ্যানগুলোর সঙ্গে স্কুল কর্তৃপক্ষের কোনো সম্পর্ক নেই। সাধারণত একই রুটে বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীদের বহন করে তারা।
অস্ট্রেলিয়া
অস্ট্রেলিয়ায় শহরতলির বাইরের বা গ্রামাঞ্চলে বসবাসকারী শিক্ষার্থীরা সাধারণত পাবলিক বাস এবং ট্রেন বা বেসরকারি বাস কোম্পানির বিশেষ রুটে যাতায়াত করে। শহরের অভ্যন্তরীণ এলাকার স্কুলছাত্ররা সরকারি মালিকানাধীন রুটের বাসে যাতায়াত করে। ছাত্ররা হয় একটি পাবলিক রুটের বাসে, অথবা একটি ‘স্কুল স্পেশাল’ পরিষেবাতে নেয়। কিছু বেসরকারি স্কুলের নিজস্ব বাস আছে। সাধারণত কোনো স্পনসর না পেলে স্কুল থেকেই এই সেবা দেওয়া হয়।
নিউ সাউথ ওয়েলসে স্কুল বাস পরিবহনকে ট্রেনের পরেই স্থল পরিবহনের মধ্যে সবচেয়ে নিরাপদ বলে ধরা হয়। কিন্ডারগার্টেন-২ গ্রেডের শিক্ষার্থীরা যেখানেই থাকুক না কেন বিনা মূল্যে যাতায়াতের সুবিধা পায়। এরপর ৩-৬ বছরের শিক্ষার্থীরা বিনা মূল্যে ভ্রমণ পায় যদি তারা ১ দশমিক ৬ কিলোমিটার দূরে থাকে। উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিনা মূল্যে ভ্রমণ পায় যদি তারা ২ কিলোমিটার দূরে থাকে।
কানাডা
কানাডার শিক্ষার্থী পরিবহন ব্যবস্থা যুক্তরাষ্ট্রের মতোই। এখানেও তাদের জন্য রয়েছে হলুদ স্কুল বাস। কানাডীয় স্কুল কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থী পরিবহন পরিষেবার জন্য ঠিকাদার নিযুক্ত করে। এর জন্য অভিভাবকদের কোনো পয়সা দিতে হয় না। এখানে স্কুলবাসগুলো দেখতে একই রকম এবং সাধারণত একই কোম্পানির তৈরি।
ফিনল্যান্ড
ফিনল্যান্ডে যে সমস্ত শিক্ষার্থী নিকটতম স্কুল থেকে ৫ কিলোমিটারেরও বেশি দূরে থাকে বা কোনো প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, তারা বিনা ভাড়ায় বাস বা ট্যাক্সিতে যাতায়াত করতে পারে। এসব বাস এবং ট্যাক্সিগুলো সাধারণ পরিবহন হিসেবেই ব্যবহার করা হয়। সাধারণত স্থানীয় কোম্পানি এই পরিবহন পরিচালনা করে। যে বাসগুলো শুধু স্কুল বাসের জন্য সংরক্ষিত সেগুলোর সামনে এবং পেছনে ‘Koulukyyti/Skolskjuts’ চিহ্ন দেওয়া থাকে। শিক্ষার্থী পরিবহনে নিয়োজিত ট্যাক্সিগুলোর ছাদে একটি ত্রিভুজাকার চিহ্ন থাকে। এসব বাসের গতি ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটারের মধ্যে সীমাবদ্ধ।
জার্মানি
কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া জার্মানিতে কোনো বিশেষ স্কুল বাস নেই। পাবলিক ট্রান্সপোর্ট সময়সূচি প্রায়শই মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রয়োজনের সঙ্গে মিলিয়ে রাখা হয়। কিছু জার্মান রাজ্য পাবলিক ট্রান্সপোর্ট টিকিটের জন্য অর্থ ফেরতের ব্যবস্থা রেখেছে।
হংকং
হংকংয়ে শিশু শিক্ষার্থীদের বাড়ি থেকে স্কুলে আনা নেওয়ার জন্য পরিবহন আছে। প্রতিটি পরিবহনে একজন আয়া থাকেন। সরকার-নিয়ন্ত্রিত যানবাহন এই পরিবহনগুলো নির্দিষ্ট রুটে চলে।
নেদারল্যান্ডস
নেদারল্যান্ডসে, বৃহৎ পরিসরে ছাত্র পরিবহনের কোনো সংগঠিত রূপ নেই। শিশুকালে অভিভাবক আর হাইস্কুলে নিজেই বাইক চালিয়ে স্কুলে যায়। তবে কলেজে পড়ার সময় বিনা ভাড়ায় গণপরিবহনে যাতায়াত করতে পারে।
নিউজিল্যান্ড
নিউজিল্যান্ডে ঠিকাদার বা সাধারণ বাস কোম্পানির সঙ্গে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের চুক্তির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পরিবহন ব্যবস্থা করা হয়। স্কুল পরিষেবার জন্য বাস কোম্পানিগুলোতে সাধারণত পুরোনো ট্রানজিট বাস বা কোচের বহর থাকে। সেগুলো বিভিন্ন সংকেত দিয়ে চিহ্নিত করা থাকে। গতি সর্বোচ্চ ৮০ কিলোমিটার।
এ দেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের (৫-১২ বছর বয়সী) জন্য স্কুলের ৩ দশমিক ২ কিলোমিটার এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের (১৩ বছর বয়সী) জন্য স্কুলের ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটারের মধ্যে বসবাস করলে পরিবহন পরিষেবা দেওয়া হয় না। এ দেশে বিনা ভাড়ার স্কুল বাস পরিষেবা ক্রমেই সংকুচিত হয়ে আসছে।
যুক্তরাজ্য
যুক্তরাজ্যে বেশির ভাগ শিক্ষার্থী পরিবহন সাধারণ ট্রানজিট বাসের ওপর নির্ভরশীল। এই বাসগুলো স্কুলে যাতায়াতের জন্য ব্যবহার না করলে অন্য কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে। বেশির ভাগ শিশু স্থানীয় নির্ধারিত গণপরিবহন পরিষেবা ব্যবহার করে। প্রায় সব ক্ষেত্রেই যুক্তরাজ্যে ডেডিকেটেড স্কুল পরিবহন পরিষেবা স্থানীয় বাস কোম্পানিগুলোর সঙ্গে চুক্তির ভিত্তিতে দেওয়া হয়।
লন্ডন
গ্রেটার লন্ডনে অনেক স্কুল শিশু সাধারণ বাস পরিষেবা ব্যবহার করে স্কুলে যাতায়াত করে। অয়েস্টার কার্ড সিস্টেম ব্যবহার করে তারা বিনা মূল্যে ভ্রমণ করতে পারে।
তবে ইদানীং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে অনেকে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। ফলে ক্রমেই শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা পরিবহনের ব্যবস্থা করার দাবি জোরদার হচ্ছে। উত্তর আমেরিকার স্টাইলের ‘হলুদ’ স্কুল বাস ‘ফার্স্ট স্টুডেন্ট ইউকে’ এবং ‘মাই বাস’ পরিষেবা চালু করা হচ্ছে।
হাঁটার পক্ষেও ব্যাপক প্রচারাভিযান চলছে। দাতব্য সংস্থা ‘লিভিং স্ট্রিটস’ এবং ‘ট্রাভেলওয়াইজ’ এই ক্যাম্পেইন জনপ্রিয় করার পেছনে মুখ্য ভূমিকা রাখছে।
যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে ‘স্কুল বাস’ তৈরি করা হয়। প্রায় সব সময় বিনা ভাড়ায় শিক্ষার্থীদের এসব বাসে পরিবহন করা হয়। অভিভাবকদেরও এর জন্য কোনো ফি দিতে হয় না। নিকটতম স্থানীয় স্কুল ছাড়া সব স্কুলে শিক্ষার্থীরাই এই সুবিধা পায়।
এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছর বিশেষ স্কুল বাসগুলোতে প্রায় ১ হাজার কোটি শিক্ষার্থী ভ্রমণ করে। স্কুল বাসগুলো কিছু স্কুল প্রশাসন কেনে অথবা ইজারা নেয়। কিছু প্রশাসন আবার ঠিকাদারদের মাধ্যমে এই পরিষেবা দেয়।
যুক্তরাষ্ট্রের শহরাঞ্চলে সাধারণ পাবলিক ট্রানজিট বাসের ব্যবহার ক্রমেই বাড়ছে। নিউইয়র্ক সিটি গ্রেড লেভেল এবং স্কুল থেকে দূরত্বের ওপর ভিত্তি করে ছাত্রদের ‘হলুদ’ স্কুল বাস পরিষেবা দেয়। তবে যেখানে ডেডিকেটেড স্কুল বাস পরিষেবা নেই সেখানে গ্রেড ৭-১২ এবং আরও কম বয়সী শিক্ষার্থীদের পরিবহনের জন্য পাবলিক নিউইয়র্ক সিটি ট্রানজিট বাস সিস্টেমের ওপর নির্ভর করে কর্তৃপক্ষ। এই উদ্দেশ্যে স্কুল প্রশাসন বিনা মূল্যে বা অর্ধেক মূল্যে ট্রানজিট পাস দেয়।
কিছু পাবলিক ট্রানজিট পরিষেবা স্থানীয় স্কুলগুলোতে পরিষেবা দেওয়ার জন্য বিশেষ ভাবে ডিজাইন করা রুটগুলো ব্যবহার করে। এ ধরনের রুট নির্ধারিত সময়ে শুধু স্কুল পরিবহনের জন্যই ব্যবহার করা হয়। অবশ্য ১৬ বছরের বেশি বয়সী অধিকাংশ শিক্ষার্থী নিজেই গাড়ি চালিয়ে স্কুলে যায়।

গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ পাস নিয়ে ক্যাঁচাল নতুন নয়। এর প্রধান কারণ এ নিয়ে দেশে কোনো আইন নেই। এ ছাড়া সারা বছর যানজটে মানুষের এত কর্মঘণ্টা নষ্ট হওয়ার পরও গণপরিবহন কখনো শৃঙ্খলার মধ্যে আনতে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
কিন্তু বিশ্বের অনেক দেশেই বিশেষ করে স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা আছে। বিনা ভাড়া বা অর্ধেক ভাড়ায় তারা যাতায়াত করতে পারে। অনেক দেশে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য আলাদা রাস্তা পর্যন্ত আছে। আবার শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে গণপরিবহনের বদলে আলাদা পরিবহন ব্যবস্থাও আছে যুক্তরাজ্যের মতো কিছু দেশে। এ ক্ষেত্রে সরকারই এই পরিবহনের ব্যবস্থা করে, অথবা স্কুল কর্তৃপক্ষ অভিভাবকের কাছ থেকে নির্দিষ্ট ফির বিনিময়ে পরিবহন রাখে অথবা স্থানীয় কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান স্পনসর করে।
ইদানীংকালে অবশ্য শিক্ষার্থীদের হেঁটে বা সাইকেল চালিয়ে স্কুলে যাতায়াত করতে উৎসাহিত করা হচ্ছে। যেমন, ব্রিটেনে শিক্ষার্থীকে তার বাড়ির কাছাকাছি স্কুলে ভর্তি হওয়ার সুযোগ দেওয়া হয় এবং হেঁটে যাতায়াত করতে উৎসাহিত করা হয়।
শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য পরিবহন ব্যবস্থাটি দেশ ভেদে বিভিন্ন রকমের। যেমন:
সাধারণ গণপরিবহন
পাবলিক ট্রান্সপোর্ট (সরকারি পরিবহন) ব্যবহার করা কিছু দেশে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য খুবই সাধারণ মাধ্যম। অস্ট্রেলিয়ার মতো কিছু দেশে শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ রুট এবং সময়সূচি রয়েছে। এ সময়টা একচেটিয়াভাবে রুটগুলো শুধু শিক্ষার্থীরা ব্যবহার করে। তবে এখনো পাবলিক ট্রান্সপোর্ট পরিষেবা নিতে হয় তাদের। কখনো অভিভাবক বা শিক্ষার্থীরা গণপরিবহনের টিকিট কেনার সময় টাকা ফেরত পান।
স্কুল বাস
দেশ অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের পরিবহনে বিশেষভাবে ডিজাইন করা স্কুল বাস ব্যবহার করা হয়। কানাডা এবং যুক্তরাষ্ট্রের অনেক কাউন্টিতে বিশেষভাবে নির্মিত এবং সজ্জিত স্কুল বাস ব্যবহার করে। হলুদ রং করা বা বিভিন্ন ধরনের সতর্কবার্তা এবং সুরক্ষা ডিভাইস দিয়ে সজ্জিত থাকে এসব বাস। তবে বিশ্বের অন্যান্য দেশে স্কুল বাসগুলো উত্তর আমেরিকার দেশগুলোর মতো অতটা বিশেষ নয়। এগুলো প্রায় সাধারণ বাসের মতোই হয়।
ব্যক্তিগত গাড়ি
অনেক দেশে পরিবারের প্রাইভেট কারে করে শিক্ষার্থীরা আসা-যাওয়া করে। অভিভাবকেরাই এ কাজটি করেন। তবে গণপরিবহন বা স্কুল বাসের তুলনায় এতে নিরাপত্তা ঝুঁকি বেশি থাকে। কিছু দেশে শিক্ষার্থীরা গাড়ি চালিয়ে স্কুলে যায়। বেশির ভাগ দেশে গাড়ি চালানোর ন্যূনতম বয়স ১৭ বা ১৮। অবশ্য কসোভোতে ১৪ বছর বয়সেই ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া হয়।
হাঁটা
‘ওয়াক টু স্কুল’ ক্যাম্পেইন ইদানীং জনপ্রিয় হচ্ছে। প্রাপ্তবয়স্কদের তত্ত্বাবধানে শিক্ষার্থীদের দল বেঁধে স্কুলে যাতায়াতের ব্যবস্থা করা হয়। এর জন্য আলাদা রুট বা লেন থাকতে পারে।
সাইক্লিং
ইউরোপের অনেক দেশে সাইকেল চালিয়ে স্কুলে যাওয়া বেশ জনপ্রিয়। স্কুলগুলোতে বিশাল বাইক শেড দেখলেই সেটি বোঝা যায়। বাইসাইকেল বা প্যাডেল স্কুটারের মতো মানবচালিত যানবাহনে শিক্ষার্থীরা বড়দের তত্ত্বাবধানে দল বেঁধে যাতায়াত করে থাকে।
শিক্ষার্থীদের স্কুলে যাতায়াত ব্যবস্থার নিরাপত্তা নিয়ে বেশ কিছু জরিপ হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার সড়ক নিরাপত্তা পরিসংখ্যানের ওপর ভিত্তি করে ১৯৯৪ সালের একটি প্রতিবেদনে দেখা গেছে,
বাসে যাতায়াত করলে-
পারিবারিক গাড়িতে যাতায়াতের চেয়ে গুরুতর আঘাত বা মৃত্যুর আশঙ্কা সাত গুণ কম; হাঁটার চেয়ে একই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা ৩১ গুণ কম; সাইকেল চালানোর তুলনায় ২২৮ গুণ কম ঝুঁকি থাকে।
ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ডের (যুক্তরাষ্ট্র) কর্মকর্তারা বলছেন, সিট বেল্ট না লাগানো থাকলেও স্কুল বাসগুলো অন্যান্য গাড়ির চেয়ে বেশি নিরাপদ।
বিভিন্ন দেশে শিক্ষার্থী পরিবহন ব্যবস্থা-
আর্জেন্টিনা
আর্জেন্টিনায় বেশির ভাগ শিক্ষার্থী হয় হেঁটে স্কুলে যায়, নয়তো অভিভাবকের সঙ্গে অথবা নিয়মিত পাবলিক ট্রানজিটে যাতায়াত করে। অনেকে প্রতিটি শহরে সরকার নির্ধারিত বেসরকারি বাসে যাতায়াত করে। এসব বাস সাধারণত সাদা বা কমলা রঙের হয়। অভিভাবকেরা ওই বেসরকারি ভ্যান মালিককে মাসিক একটা ফি দেন। ভ্যানগুলোর সঙ্গে স্কুল কর্তৃপক্ষের কোনো সম্পর্ক নেই। সাধারণত একই রুটে বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীদের বহন করে তারা।
অস্ট্রেলিয়া
অস্ট্রেলিয়ায় শহরতলির বাইরের বা গ্রামাঞ্চলে বসবাসকারী শিক্ষার্থীরা সাধারণত পাবলিক বাস এবং ট্রেন বা বেসরকারি বাস কোম্পানির বিশেষ রুটে যাতায়াত করে। শহরের অভ্যন্তরীণ এলাকার স্কুলছাত্ররা সরকারি মালিকানাধীন রুটের বাসে যাতায়াত করে। ছাত্ররা হয় একটি পাবলিক রুটের বাসে, অথবা একটি ‘স্কুল স্পেশাল’ পরিষেবাতে নেয়। কিছু বেসরকারি স্কুলের নিজস্ব বাস আছে। সাধারণত কোনো স্পনসর না পেলে স্কুল থেকেই এই সেবা দেওয়া হয়।
নিউ সাউথ ওয়েলসে স্কুল বাস পরিবহনকে ট্রেনের পরেই স্থল পরিবহনের মধ্যে সবচেয়ে নিরাপদ বলে ধরা হয়। কিন্ডারগার্টেন-২ গ্রেডের শিক্ষার্থীরা যেখানেই থাকুক না কেন বিনা মূল্যে যাতায়াতের সুবিধা পায়। এরপর ৩-৬ বছরের শিক্ষার্থীরা বিনা মূল্যে ভ্রমণ পায় যদি তারা ১ দশমিক ৬ কিলোমিটার দূরে থাকে। উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিনা মূল্যে ভ্রমণ পায় যদি তারা ২ কিলোমিটার দূরে থাকে।
কানাডা
কানাডার শিক্ষার্থী পরিবহন ব্যবস্থা যুক্তরাষ্ট্রের মতোই। এখানেও তাদের জন্য রয়েছে হলুদ স্কুল বাস। কানাডীয় স্কুল কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থী পরিবহন পরিষেবার জন্য ঠিকাদার নিযুক্ত করে। এর জন্য অভিভাবকদের কোনো পয়সা দিতে হয় না। এখানে স্কুলবাসগুলো দেখতে একই রকম এবং সাধারণত একই কোম্পানির তৈরি।
ফিনল্যান্ড
ফিনল্যান্ডে যে সমস্ত শিক্ষার্থী নিকটতম স্কুল থেকে ৫ কিলোমিটারেরও বেশি দূরে থাকে বা কোনো প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, তারা বিনা ভাড়ায় বাস বা ট্যাক্সিতে যাতায়াত করতে পারে। এসব বাস এবং ট্যাক্সিগুলো সাধারণ পরিবহন হিসেবেই ব্যবহার করা হয়। সাধারণত স্থানীয় কোম্পানি এই পরিবহন পরিচালনা করে। যে বাসগুলো শুধু স্কুল বাসের জন্য সংরক্ষিত সেগুলোর সামনে এবং পেছনে ‘Koulukyyti/Skolskjuts’ চিহ্ন দেওয়া থাকে। শিক্ষার্থী পরিবহনে নিয়োজিত ট্যাক্সিগুলোর ছাদে একটি ত্রিভুজাকার চিহ্ন থাকে। এসব বাসের গতি ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটারের মধ্যে সীমাবদ্ধ।
জার্মানি
কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া জার্মানিতে কোনো বিশেষ স্কুল বাস নেই। পাবলিক ট্রান্সপোর্ট সময়সূচি প্রায়শই মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রয়োজনের সঙ্গে মিলিয়ে রাখা হয়। কিছু জার্মান রাজ্য পাবলিক ট্রান্সপোর্ট টিকিটের জন্য অর্থ ফেরতের ব্যবস্থা রেখেছে।
হংকং
হংকংয়ে শিশু শিক্ষার্থীদের বাড়ি থেকে স্কুলে আনা নেওয়ার জন্য পরিবহন আছে। প্রতিটি পরিবহনে একজন আয়া থাকেন। সরকার-নিয়ন্ত্রিত যানবাহন এই পরিবহনগুলো নির্দিষ্ট রুটে চলে।
নেদারল্যান্ডস
নেদারল্যান্ডসে, বৃহৎ পরিসরে ছাত্র পরিবহনের কোনো সংগঠিত রূপ নেই। শিশুকালে অভিভাবক আর হাইস্কুলে নিজেই বাইক চালিয়ে স্কুলে যায়। তবে কলেজে পড়ার সময় বিনা ভাড়ায় গণপরিবহনে যাতায়াত করতে পারে।
নিউজিল্যান্ড
নিউজিল্যান্ডে ঠিকাদার বা সাধারণ বাস কোম্পানির সঙ্গে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের চুক্তির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পরিবহন ব্যবস্থা করা হয়। স্কুল পরিষেবার জন্য বাস কোম্পানিগুলোতে সাধারণত পুরোনো ট্রানজিট বাস বা কোচের বহর থাকে। সেগুলো বিভিন্ন সংকেত দিয়ে চিহ্নিত করা থাকে। গতি সর্বোচ্চ ৮০ কিলোমিটার।
এ দেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের (৫-১২ বছর বয়সী) জন্য স্কুলের ৩ দশমিক ২ কিলোমিটার এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের (১৩ বছর বয়সী) জন্য স্কুলের ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটারের মধ্যে বসবাস করলে পরিবহন পরিষেবা দেওয়া হয় না। এ দেশে বিনা ভাড়ার স্কুল বাস পরিষেবা ক্রমেই সংকুচিত হয়ে আসছে।
যুক্তরাজ্য
যুক্তরাজ্যে বেশির ভাগ শিক্ষার্থী পরিবহন সাধারণ ট্রানজিট বাসের ওপর নির্ভরশীল। এই বাসগুলো স্কুলে যাতায়াতের জন্য ব্যবহার না করলে অন্য কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে। বেশির ভাগ শিশু স্থানীয় নির্ধারিত গণপরিবহন পরিষেবা ব্যবহার করে। প্রায় সব ক্ষেত্রেই যুক্তরাজ্যে ডেডিকেটেড স্কুল পরিবহন পরিষেবা স্থানীয় বাস কোম্পানিগুলোর সঙ্গে চুক্তির ভিত্তিতে দেওয়া হয়।
লন্ডন
গ্রেটার লন্ডনে অনেক স্কুল শিশু সাধারণ বাস পরিষেবা ব্যবহার করে স্কুলে যাতায়াত করে। অয়েস্টার কার্ড সিস্টেম ব্যবহার করে তারা বিনা মূল্যে ভ্রমণ করতে পারে।
তবে ইদানীং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে অনেকে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। ফলে ক্রমেই শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা পরিবহনের ব্যবস্থা করার দাবি জোরদার হচ্ছে। উত্তর আমেরিকার স্টাইলের ‘হলুদ’ স্কুল বাস ‘ফার্স্ট স্টুডেন্ট ইউকে’ এবং ‘মাই বাস’ পরিষেবা চালু করা হচ্ছে।
হাঁটার পক্ষেও ব্যাপক প্রচারাভিযান চলছে। দাতব্য সংস্থা ‘লিভিং স্ট্রিটস’ এবং ‘ট্রাভেলওয়াইজ’ এই ক্যাম্পেইন জনপ্রিয় করার পেছনে মুখ্য ভূমিকা রাখছে।
যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে ‘স্কুল বাস’ তৈরি করা হয়। প্রায় সব সময় বিনা ভাড়ায় শিক্ষার্থীদের এসব বাসে পরিবহন করা হয়। অভিভাবকদেরও এর জন্য কোনো ফি দিতে হয় না। নিকটতম স্থানীয় স্কুল ছাড়া সব স্কুলে শিক্ষার্থীরাই এই সুবিধা পায়।
এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছর বিশেষ স্কুল বাসগুলোতে প্রায় ১ হাজার কোটি শিক্ষার্থী ভ্রমণ করে। স্কুল বাসগুলো কিছু স্কুল প্রশাসন কেনে অথবা ইজারা নেয়। কিছু প্রশাসন আবার ঠিকাদারদের মাধ্যমে এই পরিষেবা দেয়।
যুক্তরাষ্ট্রের শহরাঞ্চলে সাধারণ পাবলিক ট্রানজিট বাসের ব্যবহার ক্রমেই বাড়ছে। নিউইয়র্ক সিটি গ্রেড লেভেল এবং স্কুল থেকে দূরত্বের ওপর ভিত্তি করে ছাত্রদের ‘হলুদ’ স্কুল বাস পরিষেবা দেয়। তবে যেখানে ডেডিকেটেড স্কুল বাস পরিষেবা নেই সেখানে গ্রেড ৭-১২ এবং আরও কম বয়সী শিক্ষার্থীদের পরিবহনের জন্য পাবলিক নিউইয়র্ক সিটি ট্রানজিট বাস সিস্টেমের ওপর নির্ভর করে কর্তৃপক্ষ। এই উদ্দেশ্যে স্কুল প্রশাসন বিনা মূল্যে বা অর্ধেক মূল্যে ট্রানজিট পাস দেয়।
কিছু পাবলিক ট্রানজিট পরিষেবা স্থানীয় স্কুলগুলোতে পরিষেবা দেওয়ার জন্য বিশেষ ভাবে ডিজাইন করা রুটগুলো ব্যবহার করে। এ ধরনের রুট নির্ধারিত সময়ে শুধু স্কুল পরিবহনের জন্যই ব্যবহার করা হয়। অবশ্য ১৬ বছরের বেশি বয়সী অধিকাংশ শিক্ষার্থী নিজেই গাড়ি চালিয়ে স্কুলে যায়।

গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ পাস নিয়ে ক্যাঁচাল নতুন নয়। এর প্রধান কারণ এ নিয়ে দেশে কোনো আইন নেই। এ ছাড়া সারা বছর যানজটে মানুষের এত কর্মঘণ্টা নষ্ট হওয়ার পরও গণপরিবহন কখনো শৃঙ্খলার মধ্যে আনতে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
কিন্তু বিশ্বের অনেক দেশেই বিশেষ করে স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা আছে। বিনা ভাড়া বা অর্ধেক ভাড়ায় তারা যাতায়াত করতে পারে। অনেক দেশে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য আলাদা রাস্তা পর্যন্ত আছে। আবার শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে গণপরিবহনের বদলে আলাদা পরিবহন ব্যবস্থাও আছে যুক্তরাজ্যের মতো কিছু দেশে। এ ক্ষেত্রে সরকারই এই পরিবহনের ব্যবস্থা করে, অথবা স্কুল কর্তৃপক্ষ অভিভাবকের কাছ থেকে নির্দিষ্ট ফির বিনিময়ে পরিবহন রাখে অথবা স্থানীয় কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান স্পনসর করে।
ইদানীংকালে অবশ্য শিক্ষার্থীদের হেঁটে বা সাইকেল চালিয়ে স্কুলে যাতায়াত করতে উৎসাহিত করা হচ্ছে। যেমন, ব্রিটেনে শিক্ষার্থীকে তার বাড়ির কাছাকাছি স্কুলে ভর্তি হওয়ার সুযোগ দেওয়া হয় এবং হেঁটে যাতায়াত করতে উৎসাহিত করা হয়।
শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য পরিবহন ব্যবস্থাটি দেশ ভেদে বিভিন্ন রকমের। যেমন:
সাধারণ গণপরিবহন
পাবলিক ট্রান্সপোর্ট (সরকারি পরিবহন) ব্যবহার করা কিছু দেশে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য খুবই সাধারণ মাধ্যম। অস্ট্রেলিয়ার মতো কিছু দেশে শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ রুট এবং সময়সূচি রয়েছে। এ সময়টা একচেটিয়াভাবে রুটগুলো শুধু শিক্ষার্থীরা ব্যবহার করে। তবে এখনো পাবলিক ট্রান্সপোর্ট পরিষেবা নিতে হয় তাদের। কখনো অভিভাবক বা শিক্ষার্থীরা গণপরিবহনের টিকিট কেনার সময় টাকা ফেরত পান।
স্কুল বাস
দেশ অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের পরিবহনে বিশেষভাবে ডিজাইন করা স্কুল বাস ব্যবহার করা হয়। কানাডা এবং যুক্তরাষ্ট্রের অনেক কাউন্টিতে বিশেষভাবে নির্মিত এবং সজ্জিত স্কুল বাস ব্যবহার করে। হলুদ রং করা বা বিভিন্ন ধরনের সতর্কবার্তা এবং সুরক্ষা ডিভাইস দিয়ে সজ্জিত থাকে এসব বাস। তবে বিশ্বের অন্যান্য দেশে স্কুল বাসগুলো উত্তর আমেরিকার দেশগুলোর মতো অতটা বিশেষ নয়। এগুলো প্রায় সাধারণ বাসের মতোই হয়।
ব্যক্তিগত গাড়ি
অনেক দেশে পরিবারের প্রাইভেট কারে করে শিক্ষার্থীরা আসা-যাওয়া করে। অভিভাবকেরাই এ কাজটি করেন। তবে গণপরিবহন বা স্কুল বাসের তুলনায় এতে নিরাপত্তা ঝুঁকি বেশি থাকে। কিছু দেশে শিক্ষার্থীরা গাড়ি চালিয়ে স্কুলে যায়। বেশির ভাগ দেশে গাড়ি চালানোর ন্যূনতম বয়স ১৭ বা ১৮। অবশ্য কসোভোতে ১৪ বছর বয়সেই ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া হয়।
হাঁটা
‘ওয়াক টু স্কুল’ ক্যাম্পেইন ইদানীং জনপ্রিয় হচ্ছে। প্রাপ্তবয়স্কদের তত্ত্বাবধানে শিক্ষার্থীদের দল বেঁধে স্কুলে যাতায়াতের ব্যবস্থা করা হয়। এর জন্য আলাদা রুট বা লেন থাকতে পারে।
সাইক্লিং
ইউরোপের অনেক দেশে সাইকেল চালিয়ে স্কুলে যাওয়া বেশ জনপ্রিয়। স্কুলগুলোতে বিশাল বাইক শেড দেখলেই সেটি বোঝা যায়। বাইসাইকেল বা প্যাডেল স্কুটারের মতো মানবচালিত যানবাহনে শিক্ষার্থীরা বড়দের তত্ত্বাবধানে দল বেঁধে যাতায়াত করে থাকে।
শিক্ষার্থীদের স্কুলে যাতায়াত ব্যবস্থার নিরাপত্তা নিয়ে বেশ কিছু জরিপ হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার সড়ক নিরাপত্তা পরিসংখ্যানের ওপর ভিত্তি করে ১৯৯৪ সালের একটি প্রতিবেদনে দেখা গেছে,
বাসে যাতায়াত করলে-
পারিবারিক গাড়িতে যাতায়াতের চেয়ে গুরুতর আঘাত বা মৃত্যুর আশঙ্কা সাত গুণ কম; হাঁটার চেয়ে একই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা ৩১ গুণ কম; সাইকেল চালানোর তুলনায় ২২৮ গুণ কম ঝুঁকি থাকে।
ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ডের (যুক্তরাষ্ট্র) কর্মকর্তারা বলছেন, সিট বেল্ট না লাগানো থাকলেও স্কুল বাসগুলো অন্যান্য গাড়ির চেয়ে বেশি নিরাপদ।
বিভিন্ন দেশে শিক্ষার্থী পরিবহন ব্যবস্থা-
আর্জেন্টিনা
আর্জেন্টিনায় বেশির ভাগ শিক্ষার্থী হয় হেঁটে স্কুলে যায়, নয়তো অভিভাবকের সঙ্গে অথবা নিয়মিত পাবলিক ট্রানজিটে যাতায়াত করে। অনেকে প্রতিটি শহরে সরকার নির্ধারিত বেসরকারি বাসে যাতায়াত করে। এসব বাস সাধারণত সাদা বা কমলা রঙের হয়। অভিভাবকেরা ওই বেসরকারি ভ্যান মালিককে মাসিক একটা ফি দেন। ভ্যানগুলোর সঙ্গে স্কুল কর্তৃপক্ষের কোনো সম্পর্ক নেই। সাধারণত একই রুটে বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীদের বহন করে তারা।
অস্ট্রেলিয়া
অস্ট্রেলিয়ায় শহরতলির বাইরের বা গ্রামাঞ্চলে বসবাসকারী শিক্ষার্থীরা সাধারণত পাবলিক বাস এবং ট্রেন বা বেসরকারি বাস কোম্পানির বিশেষ রুটে যাতায়াত করে। শহরের অভ্যন্তরীণ এলাকার স্কুলছাত্ররা সরকারি মালিকানাধীন রুটের বাসে যাতায়াত করে। ছাত্ররা হয় একটি পাবলিক রুটের বাসে, অথবা একটি ‘স্কুল স্পেশাল’ পরিষেবাতে নেয়। কিছু বেসরকারি স্কুলের নিজস্ব বাস আছে। সাধারণত কোনো স্পনসর না পেলে স্কুল থেকেই এই সেবা দেওয়া হয়।
নিউ সাউথ ওয়েলসে স্কুল বাস পরিবহনকে ট্রেনের পরেই স্থল পরিবহনের মধ্যে সবচেয়ে নিরাপদ বলে ধরা হয়। কিন্ডারগার্টেন-২ গ্রেডের শিক্ষার্থীরা যেখানেই থাকুক না কেন বিনা মূল্যে যাতায়াতের সুবিধা পায়। এরপর ৩-৬ বছরের শিক্ষার্থীরা বিনা মূল্যে ভ্রমণ পায় যদি তারা ১ দশমিক ৬ কিলোমিটার দূরে থাকে। উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিনা মূল্যে ভ্রমণ পায় যদি তারা ২ কিলোমিটার দূরে থাকে।
কানাডা
কানাডার শিক্ষার্থী পরিবহন ব্যবস্থা যুক্তরাষ্ট্রের মতোই। এখানেও তাদের জন্য রয়েছে হলুদ স্কুল বাস। কানাডীয় স্কুল কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থী পরিবহন পরিষেবার জন্য ঠিকাদার নিযুক্ত করে। এর জন্য অভিভাবকদের কোনো পয়সা দিতে হয় না। এখানে স্কুলবাসগুলো দেখতে একই রকম এবং সাধারণত একই কোম্পানির তৈরি।
ফিনল্যান্ড
ফিনল্যান্ডে যে সমস্ত শিক্ষার্থী নিকটতম স্কুল থেকে ৫ কিলোমিটারেরও বেশি দূরে থাকে বা কোনো প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, তারা বিনা ভাড়ায় বাস বা ট্যাক্সিতে যাতায়াত করতে পারে। এসব বাস এবং ট্যাক্সিগুলো সাধারণ পরিবহন হিসেবেই ব্যবহার করা হয়। সাধারণত স্থানীয় কোম্পানি এই পরিবহন পরিচালনা করে। যে বাসগুলো শুধু স্কুল বাসের জন্য সংরক্ষিত সেগুলোর সামনে এবং পেছনে ‘Koulukyyti/Skolskjuts’ চিহ্ন দেওয়া থাকে। শিক্ষার্থী পরিবহনে নিয়োজিত ট্যাক্সিগুলোর ছাদে একটি ত্রিভুজাকার চিহ্ন থাকে। এসব বাসের গতি ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটারের মধ্যে সীমাবদ্ধ।
জার্মানি
কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া জার্মানিতে কোনো বিশেষ স্কুল বাস নেই। পাবলিক ট্রান্সপোর্ট সময়সূচি প্রায়শই মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রয়োজনের সঙ্গে মিলিয়ে রাখা হয়। কিছু জার্মান রাজ্য পাবলিক ট্রান্সপোর্ট টিকিটের জন্য অর্থ ফেরতের ব্যবস্থা রেখেছে।
হংকং
হংকংয়ে শিশু শিক্ষার্থীদের বাড়ি থেকে স্কুলে আনা নেওয়ার জন্য পরিবহন আছে। প্রতিটি পরিবহনে একজন আয়া থাকেন। সরকার-নিয়ন্ত্রিত যানবাহন এই পরিবহনগুলো নির্দিষ্ট রুটে চলে।
নেদারল্যান্ডস
নেদারল্যান্ডসে, বৃহৎ পরিসরে ছাত্র পরিবহনের কোনো সংগঠিত রূপ নেই। শিশুকালে অভিভাবক আর হাইস্কুলে নিজেই বাইক চালিয়ে স্কুলে যায়। তবে কলেজে পড়ার সময় বিনা ভাড়ায় গণপরিবহনে যাতায়াত করতে পারে।
নিউজিল্যান্ড
নিউজিল্যান্ডে ঠিকাদার বা সাধারণ বাস কোম্পানির সঙ্গে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের চুক্তির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পরিবহন ব্যবস্থা করা হয়। স্কুল পরিষেবার জন্য বাস কোম্পানিগুলোতে সাধারণত পুরোনো ট্রানজিট বাস বা কোচের বহর থাকে। সেগুলো বিভিন্ন সংকেত দিয়ে চিহ্নিত করা থাকে। গতি সর্বোচ্চ ৮০ কিলোমিটার।
এ দেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের (৫-১২ বছর বয়সী) জন্য স্কুলের ৩ দশমিক ২ কিলোমিটার এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের (১৩ বছর বয়সী) জন্য স্কুলের ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটারের মধ্যে বসবাস করলে পরিবহন পরিষেবা দেওয়া হয় না। এ দেশে বিনা ভাড়ার স্কুল বাস পরিষেবা ক্রমেই সংকুচিত হয়ে আসছে।
যুক্তরাজ্য
যুক্তরাজ্যে বেশির ভাগ শিক্ষার্থী পরিবহন সাধারণ ট্রানজিট বাসের ওপর নির্ভরশীল। এই বাসগুলো স্কুলে যাতায়াতের জন্য ব্যবহার না করলে অন্য কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে। বেশির ভাগ শিশু স্থানীয় নির্ধারিত গণপরিবহন পরিষেবা ব্যবহার করে। প্রায় সব ক্ষেত্রেই যুক্তরাজ্যে ডেডিকেটেড স্কুল পরিবহন পরিষেবা স্থানীয় বাস কোম্পানিগুলোর সঙ্গে চুক্তির ভিত্তিতে দেওয়া হয়।
লন্ডন
গ্রেটার লন্ডনে অনেক স্কুল শিশু সাধারণ বাস পরিষেবা ব্যবহার করে স্কুলে যাতায়াত করে। অয়েস্টার কার্ড সিস্টেম ব্যবহার করে তারা বিনা মূল্যে ভ্রমণ করতে পারে।
তবে ইদানীং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে অনেকে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। ফলে ক্রমেই শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা পরিবহনের ব্যবস্থা করার দাবি জোরদার হচ্ছে। উত্তর আমেরিকার স্টাইলের ‘হলুদ’ স্কুল বাস ‘ফার্স্ট স্টুডেন্ট ইউকে’ এবং ‘মাই বাস’ পরিষেবা চালু করা হচ্ছে।
হাঁটার পক্ষেও ব্যাপক প্রচারাভিযান চলছে। দাতব্য সংস্থা ‘লিভিং স্ট্রিটস’ এবং ‘ট্রাভেলওয়াইজ’ এই ক্যাম্পেইন জনপ্রিয় করার পেছনে মুখ্য ভূমিকা রাখছে।
যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে ‘স্কুল বাস’ তৈরি করা হয়। প্রায় সব সময় বিনা ভাড়ায় শিক্ষার্থীদের এসব বাসে পরিবহন করা হয়। অভিভাবকদেরও এর জন্য কোনো ফি দিতে হয় না। নিকটতম স্থানীয় স্কুল ছাড়া সব স্কুলে শিক্ষার্থীরাই এই সুবিধা পায়।
এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছর বিশেষ স্কুল বাসগুলোতে প্রায় ১ হাজার কোটি শিক্ষার্থী ভ্রমণ করে। স্কুল বাসগুলো কিছু স্কুল প্রশাসন কেনে অথবা ইজারা নেয়। কিছু প্রশাসন আবার ঠিকাদারদের মাধ্যমে এই পরিষেবা দেয়।
যুক্তরাষ্ট্রের শহরাঞ্চলে সাধারণ পাবলিক ট্রানজিট বাসের ব্যবহার ক্রমেই বাড়ছে। নিউইয়র্ক সিটি গ্রেড লেভেল এবং স্কুল থেকে দূরত্বের ওপর ভিত্তি করে ছাত্রদের ‘হলুদ’ স্কুল বাস পরিষেবা দেয়। তবে যেখানে ডেডিকেটেড স্কুল বাস পরিষেবা নেই সেখানে গ্রেড ৭-১২ এবং আরও কম বয়সী শিক্ষার্থীদের পরিবহনের জন্য পাবলিক নিউইয়র্ক সিটি ট্রানজিট বাস সিস্টেমের ওপর নির্ভর করে কর্তৃপক্ষ। এই উদ্দেশ্যে স্কুল প্রশাসন বিনা মূল্যে বা অর্ধেক মূল্যে ট্রানজিট পাস দেয়।
কিছু পাবলিক ট্রানজিট পরিষেবা স্থানীয় স্কুলগুলোতে পরিষেবা দেওয়ার জন্য বিশেষ ভাবে ডিজাইন করা রুটগুলো ব্যবহার করে। এ ধরনের রুট নির্ধারিত সময়ে শুধু স্কুল পরিবহনের জন্যই ব্যবহার করা হয়। অবশ্য ১৬ বছরের বেশি বয়সী অধিকাংশ শিক্ষার্থী নিজেই গাড়ি চালিয়ে স্কুলে যায়।

কম্বোডিয়ার সীমান্তবর্তী শহর পোইপেতের কাছে একটি রসদ কেন্দ্র লক্ষ্য করে বোমা হামলা চালিয়েছে থাইল্যান্ড। পোইপেত শহরটি থাই-কম্বোডিয়া সীমান্তের সবচেয়ে বড় স্থলবন্দর এবং ক্যাসিনোর জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। সাম্প্রতিক সীমান্ত সংঘর্ষ থামার কোনো লক্ষণ না দেখানোর মধ্যেই এই হামলার ঘটনা ঘটল।
৪ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি ১৯৭১ সালের স্বাধীনতাযুদ্ধের পর ভারতের জন্য ‘সবচেয়ে বড় কৌশলগত চ্যালেঞ্জ’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কংগ্রেস নেতা শশী থারুরের নেতৃত্বে ভারতের একটি সংসদীয় কমিটি সরকারকে দেওয়া এক প্রতিবেদনে এই সতর্কবার্তা দিয়েছে। কমিটি জানিয়েছে, বাংলাদেশে পরিস্থিতি হয়তো ‘বিশৃঙ্খলা...
৫ ঘণ্টা আগে
২০২৫ সালে উত্তর কোরিয়ার হ্যাকাররা রেকর্ড পরিমাণ ক্রিপ্টোকারেন্সি চুরি করেছে। ব্লকচেইন তথ্য বিশ্লেষণ প্ল্যাটফর্ম ‘চেইনঅ্যানালিসিস’-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে—চলতি বছরে দেশটি অন্তত ২ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার মূল্যের ডিজিটাল সম্পদ হাতিয়ে নিয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৫১ শতাংশ বেশি।
৬ ঘণ্টা আগে
অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই বিচে ইহুদি উৎসবকে লক্ষ্য করে ভয়াবহ বন্দুক হামলার পর দেশটিতে ঘৃণামূলক বক্তব্য ও উগ্রবাদ দমনে কঠোর আইন প্রণয়নের ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ। গত ১৪ ডিসেম্বর ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের হানুক্কাহ উৎসবের প্রথম দিন উপলক্ষে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে দুই বন্দুকধারীর গুলিতে
৭ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

কম্বোডিয়ার সীমান্তবর্তী শহর পোইপেতের কাছে একটি রসদ কেন্দ্র লক্ষ্য করে বোমা হামলা চালিয়েছে থাইল্যান্ড। পোইপেত শহরটি থাই-কম্বোডিয়া সীমান্তের সবচেয়ে বড় স্থলবন্দর এবং ক্যাসিনোর জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। সাম্প্রতিক সীমান্ত সংঘর্ষ থামার কোনো লক্ষণ না দেখানোর মধ্যেই এই হামলার ঘটনা ঘটল।
কম্বোডিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) স্থানীয় সময় সকাল ১১টার দিকে পোইপেত পৌর এলাকায় থাই বাহিনী দুটি বোমা ফেলেছে। অন্যদিকে থাইল্যান্ডের বিমানবাহিনীর মুখপাত্র এয়ার মার্শাল জ্যাকক্রিট থাম্মাভিচাই জানিয়েছেন, পোইপেতের বাইরে অবস্থিত একটি স্থাপনায় হামলা চালানো হয়েছে, যেখানে বিএম-২১ রকেট মজুত করা হচ্ছিল। তাঁর দাবি, এই অভিযানে কোনো বেসামরিক নাগরিক ক্ষতিগ্রস্ত হননি।
বিবিসি জানিয়েছে, বিএম-২১ রকেট সাধারণত সাঁজোয়া যান থেকে একযোগে একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপে ব্যবহৃত হয়। পোইপেত শহরে এই ধরনের হামলার ঘটনা চলমান সংঘাতে প্রথম বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই শহরটি থাই জুয়াড়িদের কাছে জনপ্রিয় ক্যাসিনো কেন্দ্র হিসেবেও পরিচিত।
চলতি মাসে নতুন করে শুরু হওয়া সংঘর্ষে থাইল্যান্ডে অন্তত ২১ জন এবং কম্বোডিয়ায় ১৭ জন নিহত হয়েছেন বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। পাশাপাশি প্রায় ৮ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। গত মঙ্গলবার থাইল্যান্ড জানিয়েছিল, কম্বোডিয়া সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়ায় পাঁচ থেকে ছয় হাজার থাই নাগরিক পোইপেতে আটকা পড়েছেন। কম্বোডিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সীমান্ত বন্ধকে বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্য ‘প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ’ বলে উল্লেখ করেছে এবং জানিয়েছে, দেশ ছাড়ার জন্য আকাশপথ খোলা রয়েছে।
থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার শত বছরের পুরোনো সীমান্ত বিরোধ গত ২৪ জুলাই ভয়াবহ আকার ধারণ করে, যখন কম্বোডিয়া থাইল্যান্ডে রকেট হামলা চালায় এবং পাল্টা জবাবে থাইল্যান্ড বিমান হামলা শুরু করে। পাঁচ দিনব্যাপী তীব্র লড়াইয়ের পর মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেওয়া হলেও সেটি গত সপ্তাহে আবার ভেস্তে যায়। সর্বশেষ দফায় উভয় পক্ষই একে অপরকে সংঘর্ষ পুনরায় শুরুর জন্য দায়ী করছে।

কম্বোডিয়ার সীমান্তবর্তী শহর পোইপেতের কাছে একটি রসদ কেন্দ্র লক্ষ্য করে বোমা হামলা চালিয়েছে থাইল্যান্ড। পোইপেত শহরটি থাই-কম্বোডিয়া সীমান্তের সবচেয়ে বড় স্থলবন্দর এবং ক্যাসিনোর জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। সাম্প্রতিক সীমান্ত সংঘর্ষ থামার কোনো লক্ষণ না দেখানোর মধ্যেই এই হামলার ঘটনা ঘটল।
কম্বোডিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) স্থানীয় সময় সকাল ১১টার দিকে পোইপেত পৌর এলাকায় থাই বাহিনী দুটি বোমা ফেলেছে। অন্যদিকে থাইল্যান্ডের বিমানবাহিনীর মুখপাত্র এয়ার মার্শাল জ্যাকক্রিট থাম্মাভিচাই জানিয়েছেন, পোইপেতের বাইরে অবস্থিত একটি স্থাপনায় হামলা চালানো হয়েছে, যেখানে বিএম-২১ রকেট মজুত করা হচ্ছিল। তাঁর দাবি, এই অভিযানে কোনো বেসামরিক নাগরিক ক্ষতিগ্রস্ত হননি।
বিবিসি জানিয়েছে, বিএম-২১ রকেট সাধারণত সাঁজোয়া যান থেকে একযোগে একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপে ব্যবহৃত হয়। পোইপেত শহরে এই ধরনের হামলার ঘটনা চলমান সংঘাতে প্রথম বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই শহরটি থাই জুয়াড়িদের কাছে জনপ্রিয় ক্যাসিনো কেন্দ্র হিসেবেও পরিচিত।
চলতি মাসে নতুন করে শুরু হওয়া সংঘর্ষে থাইল্যান্ডে অন্তত ২১ জন এবং কম্বোডিয়ায় ১৭ জন নিহত হয়েছেন বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। পাশাপাশি প্রায় ৮ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। গত মঙ্গলবার থাইল্যান্ড জানিয়েছিল, কম্বোডিয়া সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়ায় পাঁচ থেকে ছয় হাজার থাই নাগরিক পোইপেতে আটকা পড়েছেন। কম্বোডিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সীমান্ত বন্ধকে বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্য ‘প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ’ বলে উল্লেখ করেছে এবং জানিয়েছে, দেশ ছাড়ার জন্য আকাশপথ খোলা রয়েছে।
থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার শত বছরের পুরোনো সীমান্ত বিরোধ গত ২৪ জুলাই ভয়াবহ আকার ধারণ করে, যখন কম্বোডিয়া থাইল্যান্ডে রকেট হামলা চালায় এবং পাল্টা জবাবে থাইল্যান্ড বিমান হামলা শুরু করে। পাঁচ দিনব্যাপী তীব্র লড়াইয়ের পর মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেওয়া হলেও সেটি গত সপ্তাহে আবার ভেস্তে যায়। সর্বশেষ দফায় উভয় পক্ষই একে অপরকে সংঘর্ষ পুনরায় শুরুর জন্য দায়ী করছে।

বিশ্বের অনেক দেশেই বিশেষ করে স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা আছে। বিনা ভাড়া বা অর্ধেক ভাড়ায় তারা যাতায়াত করতে পারে। অনেক দেশে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য আলাদা রাস্তা পর্যন্ত আছে।
০১ ডিসেম্বর ২০২১
বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি ১৯৭১ সালের স্বাধীনতাযুদ্ধের পর ভারতের জন্য ‘সবচেয়ে বড় কৌশলগত চ্যালেঞ্জ’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কংগ্রেস নেতা শশী থারুরের নেতৃত্বে ভারতের একটি সংসদীয় কমিটি সরকারকে দেওয়া এক প্রতিবেদনে এই সতর্কবার্তা দিয়েছে। কমিটি জানিয়েছে, বাংলাদেশে পরিস্থিতি হয়তো ‘বিশৃঙ্খলা...
৫ ঘণ্টা আগে
২০২৫ সালে উত্তর কোরিয়ার হ্যাকাররা রেকর্ড পরিমাণ ক্রিপ্টোকারেন্সি চুরি করেছে। ব্লকচেইন তথ্য বিশ্লেষণ প্ল্যাটফর্ম ‘চেইনঅ্যানালিসিস’-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে—চলতি বছরে দেশটি অন্তত ২ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার মূল্যের ডিজিটাল সম্পদ হাতিয়ে নিয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৫১ শতাংশ বেশি।
৬ ঘণ্টা আগে
অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই বিচে ইহুদি উৎসবকে লক্ষ্য করে ভয়াবহ বন্দুক হামলার পর দেশটিতে ঘৃণামূলক বক্তব্য ও উগ্রবাদ দমনে কঠোর আইন প্রণয়নের ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ। গত ১৪ ডিসেম্বর ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের হানুক্কাহ উৎসবের প্রথম দিন উপলক্ষে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে দুই বন্দুকধারীর গুলিতে
৭ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি ১৯৭১ সালের স্বাধীনতাযুদ্ধের পর ভারতের জন্য ‘সবচেয়ে বড় কৌশলগত চ্যালেঞ্জ’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কংগ্রেস নেতা শশী থারুরের নেতৃত্বে ভারতের একটি সংসদীয় কমিটি আজ বৃহস্পতিবার সরকারকে দেওয়া এক প্রতিবেদনে এই সতর্কবার্তা দিয়েছে। কমিটি জানিয়েছে, বাংলাদেশে পরিস্থিতি হয়তো ‘বিশৃঙ্খলা বা অরাজকতায় পর্যবসিত হবে না’, তবে ভারতকে এটি মোকাবিলায় অত্যন্ত সতর্ক হতে হবে।
সংসদীয় কমিটি তাদের প্রতিবেদনে ১৯৭১ সালের সংকটের সঙ্গে বর্তমান পরিস্থিতির তুলনা করে বলেছে, ১৯৭১ সালে চ্যালেঞ্জ ছিল অস্তিত্ব রক্ষা, মানবিক সংকট ও একটি নতুন জাতির জন্ম নিয়ে। তবে বর্তমান চ্যালেঞ্জটি আরও গুরুতর এবং এটি একটি ‘প্রজন্মগত বিচ্ছিন্নতা’। রাজনৈতিক ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন এবং ভারতের দিক থেকে সরে যাওয়ার সম্ভাব্য কৌশলগত পুনর্বিন্যাস।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অস্থিরতার পেছনে কয়েকটি কারণ একসঙ্গে কাজ করছে—ইসলামপন্থী চরমপন্থার উত্থান, চীন ও পাকিস্তানের প্রভাব বৃদ্ধি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক আধিপত্যের পতন।
কমিটি সরকারের কাছে একাধিক সুপারিশ জমা দিয়েছে এবং স্পষ্টভাবে বলেছে, ভারত যদি এই মুহূর্তে নিজেকে নতুন করে মানিয়ে নিতে ব্যর্থ হয়, তবে যুদ্ধের কারণে নয়, বরং ‘অপ্রাসঙ্গিক’ হয়ে পড়ার কারণে ঢাকা থেকে কৌশলগত নিয়ন্ত্রণ হারানোর ঝুঁকিতে পড়বে।
কমিটি বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্ক পুনর্গঠন ও চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বিশেষ করে, অবকাঠামো উন্নয়ন, বন্দর সম্প্রসারণ ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতায় চীনের সক্রিয়তার কথা তুলে ধরা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে মোংলা বন্দরের সম্প্রসারণ, লালমনিরহাট বিমানঘাঁটি ও পেকুয়ায় সাবমেরিন ঘাঁটির উদাহরণ দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, পেকুয়ার ওই ঘাঁটিতে আটটি সাবমেরিন রাখার সক্ষমতা রয়েছে, যদিও বাংলাদেশের কাছে বর্তমানে মাত্র দুটি সাবমেরিন আছে।
কমিটির মতে, চীন বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক গোষ্ঠীর সঙ্গেই যোগাযোগ বাড়াচ্ছে, যার মধ্যে জামায়াতে ইসলামীও রয়েছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, এই ইসলামপন্থী দলটির প্রতিনিধিরা সম্প্রতি চীন সফরও করেছেন।
এই প্রেক্ষাপটে কমিটি সুপারিশ করেছে, বাংলাদেশে কোনো বিদেশি শক্তি যাতে সামরিক ঘাঁটি স্থাপন করতে না পারে, সে বিষয়ে কঠোর নজরদারি রাখতে হবে। পাশাপাশি উন্নয়ন, যোগাযোগব্যবস্থা ও বন্দর ব্যবহারের ক্ষেত্রে ঢাকাকে প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা দেওয়ার উদ্যোগ নিতে হবে, যা অন্য কোনো দেশ (যেমন চীন) দিতে পারবে না।
বাংলাদেশে ইসলামপন্থী দলগুলোর প্রভাব বাড়ার বিষয়েও উদ্বেগ জানিয়েছে কমিটি। আগে নিষিদ্ধ থাকা জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন ফিরে পাওয়া এবং নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ তৈরি হওয়াকে কমিটি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে।
অন্যদিকে, ঢাকার অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী লীগের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, যার ফলে দলটি নির্বাচনে অংশ নিতে পারছে না। কমিটি মনে করে, আওয়ামী লীগকে বাইরে রেখে নির্বাচন হলে এর ‘গ্রহণযোগ্যতা’ নিয়ে প্রশ্ন উঠবে।
তথ্যসূত্র: এনডিটিভি

বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি ১৯৭১ সালের স্বাধীনতাযুদ্ধের পর ভারতের জন্য ‘সবচেয়ে বড় কৌশলগত চ্যালেঞ্জ’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কংগ্রেস নেতা শশী থারুরের নেতৃত্বে ভারতের একটি সংসদীয় কমিটি আজ বৃহস্পতিবার সরকারকে দেওয়া এক প্রতিবেদনে এই সতর্কবার্তা দিয়েছে। কমিটি জানিয়েছে, বাংলাদেশে পরিস্থিতি হয়তো ‘বিশৃঙ্খলা বা অরাজকতায় পর্যবসিত হবে না’, তবে ভারতকে এটি মোকাবিলায় অত্যন্ত সতর্ক হতে হবে।
সংসদীয় কমিটি তাদের প্রতিবেদনে ১৯৭১ সালের সংকটের সঙ্গে বর্তমান পরিস্থিতির তুলনা করে বলেছে, ১৯৭১ সালে চ্যালেঞ্জ ছিল অস্তিত্ব রক্ষা, মানবিক সংকট ও একটি নতুন জাতির জন্ম নিয়ে। তবে বর্তমান চ্যালেঞ্জটি আরও গুরুতর এবং এটি একটি ‘প্রজন্মগত বিচ্ছিন্নতা’। রাজনৈতিক ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন এবং ভারতের দিক থেকে সরে যাওয়ার সম্ভাব্য কৌশলগত পুনর্বিন্যাস।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অস্থিরতার পেছনে কয়েকটি কারণ একসঙ্গে কাজ করছে—ইসলামপন্থী চরমপন্থার উত্থান, চীন ও পাকিস্তানের প্রভাব বৃদ্ধি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক আধিপত্যের পতন।
কমিটি সরকারের কাছে একাধিক সুপারিশ জমা দিয়েছে এবং স্পষ্টভাবে বলেছে, ভারত যদি এই মুহূর্তে নিজেকে নতুন করে মানিয়ে নিতে ব্যর্থ হয়, তবে যুদ্ধের কারণে নয়, বরং ‘অপ্রাসঙ্গিক’ হয়ে পড়ার কারণে ঢাকা থেকে কৌশলগত নিয়ন্ত্রণ হারানোর ঝুঁকিতে পড়বে।
কমিটি বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্ক পুনর্গঠন ও চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বিশেষ করে, অবকাঠামো উন্নয়ন, বন্দর সম্প্রসারণ ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতায় চীনের সক্রিয়তার কথা তুলে ধরা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে মোংলা বন্দরের সম্প্রসারণ, লালমনিরহাট বিমানঘাঁটি ও পেকুয়ায় সাবমেরিন ঘাঁটির উদাহরণ দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, পেকুয়ার ওই ঘাঁটিতে আটটি সাবমেরিন রাখার সক্ষমতা রয়েছে, যদিও বাংলাদেশের কাছে বর্তমানে মাত্র দুটি সাবমেরিন আছে।
কমিটির মতে, চীন বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক গোষ্ঠীর সঙ্গেই যোগাযোগ বাড়াচ্ছে, যার মধ্যে জামায়াতে ইসলামীও রয়েছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, এই ইসলামপন্থী দলটির প্রতিনিধিরা সম্প্রতি চীন সফরও করেছেন।
এই প্রেক্ষাপটে কমিটি সুপারিশ করেছে, বাংলাদেশে কোনো বিদেশি শক্তি যাতে সামরিক ঘাঁটি স্থাপন করতে না পারে, সে বিষয়ে কঠোর নজরদারি রাখতে হবে। পাশাপাশি উন্নয়ন, যোগাযোগব্যবস্থা ও বন্দর ব্যবহারের ক্ষেত্রে ঢাকাকে প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা দেওয়ার উদ্যোগ নিতে হবে, যা অন্য কোনো দেশ (যেমন চীন) দিতে পারবে না।
বাংলাদেশে ইসলামপন্থী দলগুলোর প্রভাব বাড়ার বিষয়েও উদ্বেগ জানিয়েছে কমিটি। আগে নিষিদ্ধ থাকা জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন ফিরে পাওয়া এবং নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ তৈরি হওয়াকে কমিটি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে।
অন্যদিকে, ঢাকার অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী লীগের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, যার ফলে দলটি নির্বাচনে অংশ নিতে পারছে না। কমিটি মনে করে, আওয়ামী লীগকে বাইরে রেখে নির্বাচন হলে এর ‘গ্রহণযোগ্যতা’ নিয়ে প্রশ্ন উঠবে।
তথ্যসূত্র: এনডিটিভি

বিশ্বের অনেক দেশেই বিশেষ করে স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা আছে। বিনা ভাড়া বা অর্ধেক ভাড়ায় তারা যাতায়াত করতে পারে। অনেক দেশে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য আলাদা রাস্তা পর্যন্ত আছে।
০১ ডিসেম্বর ২০২১
কম্বোডিয়ার সীমান্তবর্তী শহর পোইপেতের কাছে একটি রসদ কেন্দ্র লক্ষ্য করে বোমা হামলা চালিয়েছে থাইল্যান্ড। পোইপেত শহরটি থাই-কম্বোডিয়া সীমান্তের সবচেয়ে বড় স্থলবন্দর এবং ক্যাসিনোর জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। সাম্প্রতিক সীমান্ত সংঘর্ষ থামার কোনো লক্ষণ না দেখানোর মধ্যেই এই হামলার ঘটনা ঘটল।
৪ ঘণ্টা আগে
২০২৫ সালে উত্তর কোরিয়ার হ্যাকাররা রেকর্ড পরিমাণ ক্রিপ্টোকারেন্সি চুরি করেছে। ব্লকচেইন তথ্য বিশ্লেষণ প্ল্যাটফর্ম ‘চেইনঅ্যানালিসিস’-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে—চলতি বছরে দেশটি অন্তত ২ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার মূল্যের ডিজিটাল সম্পদ হাতিয়ে নিয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৫১ শতাংশ বেশি।
৬ ঘণ্টা আগে
অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই বিচে ইহুদি উৎসবকে লক্ষ্য করে ভয়াবহ বন্দুক হামলার পর দেশটিতে ঘৃণামূলক বক্তব্য ও উগ্রবাদ দমনে কঠোর আইন প্রণয়নের ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ। গত ১৪ ডিসেম্বর ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের হানুক্কাহ উৎসবের প্রথম দিন উপলক্ষে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে দুই বন্দুকধারীর গুলিতে
৭ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

২০২৫ সালে উত্তর কোরিয়ার হ্যাকাররা রেকর্ড পরিমাণ ক্রিপ্টোকারেন্সি চুরি করেছে। ব্লকচেইন তথ্য বিশ্লেষণ প্ল্যাটফর্ম ‘চেইনঅ্যানালিসিস’-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে—চলতি বছরে দেশটি অন্তত ২ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার মূল্যের ডিজিটাল সম্পদ হাতিয়ে নিয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৫১ শতাংশ বেশি। একই সঙ্গে বৈশ্বিক পর্যায়ে সংঘটিত সব ধরনের ক্রিপটো সেবা-সংক্রান্ত হ্যাকিং ঘটনার ৭৬ শতাংশের জন্য উত্তর কোরিয়া দায়ী—ইতিহাসে যা সর্বোচ্চ।
প্রতিবেদন অনুযায়ী—বিভিন্ন ক্রিপটো এক্সচেঞ্জ, কাস্টডিয়ান এবং ওয়েব ৩ প্রতিষ্ঠানে অনুপ্রবেশ এই রেকর্ড চুরির পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে উত্তর কোরিয়ার আইটি কর্মীরা। এসব কর্মী প্রাথমিকভাবে ভেতরে প্রবেশাধিকার তৈরি করে এবং পরে বড় পরিসরের চুরির পথ সুগম করে তোলে। চেইনঅ্যানালিসিস বলছে, এই কৌশল হ্যাকারদের দ্রুত ও কার্যকরভাবে বড় অঙ্কের সম্পদ হাতাতে সহায়তা করছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) নিক্কেই এশিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালে ক্রিপটো চুরির মোট পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩.৪ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে গত ফেব্রুয়ারিতে বিখ্যাত ক্রিপটো এক্সচেঞ্জ বাইবিটে সংঘটিত এক হামলাতেই ১.৫ বিলিয়ন ডলার চুরি হয়ে যায়। বিশ্লেষকদের মতে, এই হামলার পেছনে ছিল উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা পাওয়া হ্যাকার গ্রুপ ‘লাজারাস’।
চুরি করা অর্থ পাচারের জন্য উত্তর কোরিয়ার হ্যাকাররা প্রায়ই চীনের কিছু সেবার ওপর নির্ভর করে। চেইনঅ্যানালিসিস-এর জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান অ্যান্ড্রু ফিয়ারম্যান জানান, এসব চীনা মানি লন্ডারিং নেটওয়ার্ক ইচ্ছাকৃতভাবে অবৈধ অর্থ সাদা করতে সহায়তা করে।
আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে উত্তর কোরিয়া বৈদেশিক আর্থিক ব্যবস্থায় সহজে লেনদেন করতে পারে না। জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার আরোপিত নিষেধাজ্ঞা দেশটিকে সামরিক ও অস্ত্র কর্মসূচির অর্থ জোগাড়ে অবৈধ পথ বেছে নিতে বাধ্য করেছে। গবেষকদের মতে, একসময় আদর্শগত উদ্দেশ্যে সাইবার হামলা চালালেও এখন উত্তর কোরিয়ার হ্যাকিং কার্যক্রমের মূল লক্ষ্য হচ্ছে আর্থিক লাভ নিশ্চিত করা।

২০২৫ সালে উত্তর কোরিয়ার হ্যাকাররা রেকর্ড পরিমাণ ক্রিপ্টোকারেন্সি চুরি করেছে। ব্লকচেইন তথ্য বিশ্লেষণ প্ল্যাটফর্ম ‘চেইনঅ্যানালিসিস’-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে—চলতি বছরে দেশটি অন্তত ২ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার মূল্যের ডিজিটাল সম্পদ হাতিয়ে নিয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৫১ শতাংশ বেশি। একই সঙ্গে বৈশ্বিক পর্যায়ে সংঘটিত সব ধরনের ক্রিপটো সেবা-সংক্রান্ত হ্যাকিং ঘটনার ৭৬ শতাংশের জন্য উত্তর কোরিয়া দায়ী—ইতিহাসে যা সর্বোচ্চ।
প্রতিবেদন অনুযায়ী—বিভিন্ন ক্রিপটো এক্সচেঞ্জ, কাস্টডিয়ান এবং ওয়েব ৩ প্রতিষ্ঠানে অনুপ্রবেশ এই রেকর্ড চুরির পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে উত্তর কোরিয়ার আইটি কর্মীরা। এসব কর্মী প্রাথমিকভাবে ভেতরে প্রবেশাধিকার তৈরি করে এবং পরে বড় পরিসরের চুরির পথ সুগম করে তোলে। চেইনঅ্যানালিসিস বলছে, এই কৌশল হ্যাকারদের দ্রুত ও কার্যকরভাবে বড় অঙ্কের সম্পদ হাতাতে সহায়তা করছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) নিক্কেই এশিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালে ক্রিপটো চুরির মোট পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩.৪ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে গত ফেব্রুয়ারিতে বিখ্যাত ক্রিপটো এক্সচেঞ্জ বাইবিটে সংঘটিত এক হামলাতেই ১.৫ বিলিয়ন ডলার চুরি হয়ে যায়। বিশ্লেষকদের মতে, এই হামলার পেছনে ছিল উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা পাওয়া হ্যাকার গ্রুপ ‘লাজারাস’।
চুরি করা অর্থ পাচারের জন্য উত্তর কোরিয়ার হ্যাকাররা প্রায়ই চীনের কিছু সেবার ওপর নির্ভর করে। চেইনঅ্যানালিসিস-এর জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান অ্যান্ড্রু ফিয়ারম্যান জানান, এসব চীনা মানি লন্ডারিং নেটওয়ার্ক ইচ্ছাকৃতভাবে অবৈধ অর্থ সাদা করতে সহায়তা করে।
আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে উত্তর কোরিয়া বৈদেশিক আর্থিক ব্যবস্থায় সহজে লেনদেন করতে পারে না। জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার আরোপিত নিষেধাজ্ঞা দেশটিকে সামরিক ও অস্ত্র কর্মসূচির অর্থ জোগাড়ে অবৈধ পথ বেছে নিতে বাধ্য করেছে। গবেষকদের মতে, একসময় আদর্শগত উদ্দেশ্যে সাইবার হামলা চালালেও এখন উত্তর কোরিয়ার হ্যাকিং কার্যক্রমের মূল লক্ষ্য হচ্ছে আর্থিক লাভ নিশ্চিত করা।

বিশ্বের অনেক দেশেই বিশেষ করে স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা আছে। বিনা ভাড়া বা অর্ধেক ভাড়ায় তারা যাতায়াত করতে পারে। অনেক দেশে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য আলাদা রাস্তা পর্যন্ত আছে।
০১ ডিসেম্বর ২০২১
কম্বোডিয়ার সীমান্তবর্তী শহর পোইপেতের কাছে একটি রসদ কেন্দ্র লক্ষ্য করে বোমা হামলা চালিয়েছে থাইল্যান্ড। পোইপেত শহরটি থাই-কম্বোডিয়া সীমান্তের সবচেয়ে বড় স্থলবন্দর এবং ক্যাসিনোর জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। সাম্প্রতিক সীমান্ত সংঘর্ষ থামার কোনো লক্ষণ না দেখানোর মধ্যেই এই হামলার ঘটনা ঘটল।
৪ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি ১৯৭১ সালের স্বাধীনতাযুদ্ধের পর ভারতের জন্য ‘সবচেয়ে বড় কৌশলগত চ্যালেঞ্জ’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কংগ্রেস নেতা শশী থারুরের নেতৃত্বে ভারতের একটি সংসদীয় কমিটি সরকারকে দেওয়া এক প্রতিবেদনে এই সতর্কবার্তা দিয়েছে। কমিটি জানিয়েছে, বাংলাদেশে পরিস্থিতি হয়তো ‘বিশৃঙ্খলা...
৫ ঘণ্টা আগে
অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই বিচে ইহুদি উৎসবকে লক্ষ্য করে ভয়াবহ বন্দুক হামলার পর দেশটিতে ঘৃণামূলক বক্তব্য ও উগ্রবাদ দমনে কঠোর আইন প্রণয়নের ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ। গত ১৪ ডিসেম্বর ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের হানুক্কাহ উৎসবের প্রথম দিন উপলক্ষে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে দুই বন্দুকধারীর গুলিতে
৭ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই বিচে ইহুদি উৎসবকে লক্ষ্য করে ভয়াবহ বন্দুক হামলার পর দেশটিতে ঘৃণামূলক বক্তব্য ও উগ্রবাদ দমনে কঠোর আইন প্রণয়নের ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ। গত ১৪ ডিসেম্বর ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের হানুক্কাহ উৎসবের প্রথম দিন উপলক্ষে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে দুই বন্দুকধারীর গুলিতে অন্তত ১৫ জন নিহত হন। এই হামলাকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে উদ্বেগ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
ক্যানবেরায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রধানমন্ত্রী অ্যালবানিজ বলেন, নতুন আইন মূলত যারা ঘৃণা, বিভাজন ও উগ্রবাদ ছড়ায়—তাদের লক্ষ্য করেই আনা হবে। তিনি জানান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীকে এমন ব্যক্তিদের ভিসা বাতিল বা প্রত্যাখ্যানের ক্ষমতা দেওয়া হবে, যারা ঘৃণামূলক বক্তব্য প্রচার করে। পাশাপাশি শিক্ষা ব্যবস্থায় ইহুদিবিদ্বেষ প্রতিরোধ, মোকাবিলা ও যথাযথ প্রতিক্রিয়া নিশ্চিত করতে একটি বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করা হবে।
প্রস্তাবিত আইনের আওতায় সহিংসতা উসকে দেওয়া ধর্মীয় বক্তা ও নেতাদের জন্য শাস্তির বিধান ছাড়াও ‘অ্যাগ্রাভেটেড হেট স্পিচ’ নামে অপরাধের একটি নতুন সংজ্ঞা সংযোজন করা হবে। অনলাইনে হুমকি ও হয়রানির ক্ষেত্রে শাস্তি নির্ধারণে বিদ্বেষ ছড়ানোনে গুরুতর উপাদান হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। অ্যালবানিজ বলেন, ‘প্রত্যেক ইহুদি অস্ট্রেলিয়ানের নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ ও সম্মানিত বোধ করার অধিকার রয়েছে।’
এই হামলার পর দেশটিতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। নিউ সাউথ ওয়েলস পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) দক্ষিণ-পশ্চিম সিডনিতে সাতজনকে আটক করা হয়েছে, যাদের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য সহিংস কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনার তথ্য পাওয়া গিয়েছিল। তবে পুলিশ বলছে, বন্ডাই হামলার সঙ্গে এই ঘটনার সরাসরি কোনো যোগসূত্র পাওয়া যায়নি।
এদিকে সরকারের ঘোষণাকে স্বাগত জানালেও কিছু সংগঠন উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ইহুদি কাউন্সিল অব অস্ট্রেলিয়া জানিয়েছে, বন্দুক নিয়ন্ত্রণ ও অনলাইনে বিদ্বেষ ছড়ানোর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ প্রশংসনীয় হলেও, কিছু প্রস্তাব ইসরায়েলপন্থী লবির পুরোনো দাবির সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ, যা সহিংস উগ্রবাদ দমনের চেয়ে মতপ্রকাশ সীমিত করতে পারে। সংগঠনটির নির্বাহী কর্মকর্তা ড. ম্যাক্স কাইজার সতর্ক করে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় বা সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানে মতাদর্শিক নজরদারি চালানো হলে তা ইহুদিদের নিরাপত্তা বাড়ানোর বদলে আরও ঝুঁকিতে ফেলতে পারে।’
এদিকে প্রধানমন্ত্রী স্বীকার করেছেন, গত ৭ অক্টোবর হামাসের ইসরায়েল আক্রমণের পর থেকে অস্ট্রেলিয়ায় ইহুদিবিদ্বেষ রোধে সরকার আরও কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারত। তিনি বলেন, ‘আমার দায়িত্ব শুধু ভুল স্বীকার করা নয়, জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করাও।’

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই বিচে ইহুদি উৎসবকে লক্ষ্য করে ভয়াবহ বন্দুক হামলার পর দেশটিতে ঘৃণামূলক বক্তব্য ও উগ্রবাদ দমনে কঠোর আইন প্রণয়নের ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ। গত ১৪ ডিসেম্বর ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের হানুক্কাহ উৎসবের প্রথম দিন উপলক্ষে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে দুই বন্দুকধারীর গুলিতে অন্তত ১৫ জন নিহত হন। এই হামলাকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে উদ্বেগ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
ক্যানবেরায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রধানমন্ত্রী অ্যালবানিজ বলেন, নতুন আইন মূলত যারা ঘৃণা, বিভাজন ও উগ্রবাদ ছড়ায়—তাদের লক্ষ্য করেই আনা হবে। তিনি জানান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীকে এমন ব্যক্তিদের ভিসা বাতিল বা প্রত্যাখ্যানের ক্ষমতা দেওয়া হবে, যারা ঘৃণামূলক বক্তব্য প্রচার করে। পাশাপাশি শিক্ষা ব্যবস্থায় ইহুদিবিদ্বেষ প্রতিরোধ, মোকাবিলা ও যথাযথ প্রতিক্রিয়া নিশ্চিত করতে একটি বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করা হবে।
প্রস্তাবিত আইনের আওতায় সহিংসতা উসকে দেওয়া ধর্মীয় বক্তা ও নেতাদের জন্য শাস্তির বিধান ছাড়াও ‘অ্যাগ্রাভেটেড হেট স্পিচ’ নামে অপরাধের একটি নতুন সংজ্ঞা সংযোজন করা হবে। অনলাইনে হুমকি ও হয়রানির ক্ষেত্রে শাস্তি নির্ধারণে বিদ্বেষ ছড়ানোনে গুরুতর উপাদান হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। অ্যালবানিজ বলেন, ‘প্রত্যেক ইহুদি অস্ট্রেলিয়ানের নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ ও সম্মানিত বোধ করার অধিকার রয়েছে।’
এই হামলার পর দেশটিতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। নিউ সাউথ ওয়েলস পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) দক্ষিণ-পশ্চিম সিডনিতে সাতজনকে আটক করা হয়েছে, যাদের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য সহিংস কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনার তথ্য পাওয়া গিয়েছিল। তবে পুলিশ বলছে, বন্ডাই হামলার সঙ্গে এই ঘটনার সরাসরি কোনো যোগসূত্র পাওয়া যায়নি।
এদিকে সরকারের ঘোষণাকে স্বাগত জানালেও কিছু সংগঠন উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ইহুদি কাউন্সিল অব অস্ট্রেলিয়া জানিয়েছে, বন্দুক নিয়ন্ত্রণ ও অনলাইনে বিদ্বেষ ছড়ানোর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ প্রশংসনীয় হলেও, কিছু প্রস্তাব ইসরায়েলপন্থী লবির পুরোনো দাবির সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ, যা সহিংস উগ্রবাদ দমনের চেয়ে মতপ্রকাশ সীমিত করতে পারে। সংগঠনটির নির্বাহী কর্মকর্তা ড. ম্যাক্স কাইজার সতর্ক করে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় বা সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানে মতাদর্শিক নজরদারি চালানো হলে তা ইহুদিদের নিরাপত্তা বাড়ানোর বদলে আরও ঝুঁকিতে ফেলতে পারে।’
এদিকে প্রধানমন্ত্রী স্বীকার করেছেন, গত ৭ অক্টোবর হামাসের ইসরায়েল আক্রমণের পর থেকে অস্ট্রেলিয়ায় ইহুদিবিদ্বেষ রোধে সরকার আরও কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারত। তিনি বলেন, ‘আমার দায়িত্ব শুধু ভুল স্বীকার করা নয়, জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করাও।’

বিশ্বের অনেক দেশেই বিশেষ করে স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা আছে। বিনা ভাড়া বা অর্ধেক ভাড়ায় তারা যাতায়াত করতে পারে। অনেক দেশে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য আলাদা রাস্তা পর্যন্ত আছে।
০১ ডিসেম্বর ২০২১
কম্বোডিয়ার সীমান্তবর্তী শহর পোইপেতের কাছে একটি রসদ কেন্দ্র লক্ষ্য করে বোমা হামলা চালিয়েছে থাইল্যান্ড। পোইপেত শহরটি থাই-কম্বোডিয়া সীমান্তের সবচেয়ে বড় স্থলবন্দর এবং ক্যাসিনোর জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। সাম্প্রতিক সীমান্ত সংঘর্ষ থামার কোনো লক্ষণ না দেখানোর মধ্যেই এই হামলার ঘটনা ঘটল।
৪ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি ১৯৭১ সালের স্বাধীনতাযুদ্ধের পর ভারতের জন্য ‘সবচেয়ে বড় কৌশলগত চ্যালেঞ্জ’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কংগ্রেস নেতা শশী থারুরের নেতৃত্বে ভারতের একটি সংসদীয় কমিটি সরকারকে দেওয়া এক প্রতিবেদনে এই সতর্কবার্তা দিয়েছে। কমিটি জানিয়েছে, বাংলাদেশে পরিস্থিতি হয়তো ‘বিশৃঙ্খলা...
৫ ঘণ্টা আগে
২০২৫ সালে উত্তর কোরিয়ার হ্যাকাররা রেকর্ড পরিমাণ ক্রিপ্টোকারেন্সি চুরি করেছে। ব্লকচেইন তথ্য বিশ্লেষণ প্ল্যাটফর্ম ‘চেইনঅ্যানালিসিস’-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে—চলতি বছরে দেশটি অন্তত ২ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার মূল্যের ডিজিটাল সম্পদ হাতিয়ে নিয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৫১ শতাংশ বেশি।
৬ ঘণ্টা আগে