Ajker Patrika

পৃথিবীর জনসংখ্যা প্রায় ৮০০ কোটি, মানুষ কমছে যেসব দেশে

আপডেট : ১৩ নভেম্বর ২০২২, ০০: ৩৪
পৃথিবীর জনসংখ্যা প্রায় ৮০০ কোটি, মানুষ কমছে যেসব দেশে

৮০০ কোটির মাইলফলক ছুঁতে যাচ্ছে বিশ্বের জনসংখ্যা। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, আগামী ১৫ নভেম্বর ঘটতে যাচ্ছে এই ঘটনা। 

নতুন এই মাইলফলক নিয়ে আলাদা আয়োজন করেছে জাতিসংঘ। বিশ্ব থেকে ক্ষুধা দারিদ্র্য নিরসন এবং বৈচিত্র্যকে উদ্‌যাপনই এবারের প্রতিপাদ্য। 

জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, পৃথিবীর জনসংখ্যা বৃদ্ধিতে এখনো মূলত ভূমিকা রাখছে এশিয়া এবং আফ্রিকা। ২০৩৭ সালে ৯০০ কোটির ঘর ছুঁবে জনসংখ্যা। তখনো মূল ভূমিকা রাখবে এই দুই মহাদেশ। তবে ইউরোপের অবদান থাকবে ঋণাত্মক। কারণ এ মহাদেশে জনসংখ্যা ধারাবাহিকভাবে কমবে। 

৮০০ কোটির মাইলফলকে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখছে ভারত। ১৫ নভেম্বর এই মাইলফলকে ভারত যোগ করবে ১৭ কোটি ৭০ লাখ (৭০০ কোটির পর)। যেখানে চীনের অবদান ৭ কোটি ৩০ লাখ। ২০২৩ সালেও চীন বিশ্বের বৃহত্তম জনসংখ্যার দেশই থাকছে। তবে ৯০০ কোটির মাইলফলকের সময় এ দেশ জনসংখ্যা বৃদ্ধিতে অবদান থাকবে ঋণাত্মক। সে হিসাবে বিশ্বের জনসংখ্যা বৃদ্ধিতে চীনকে পিছে ফেলেছে ভারত। 

এদিকে পৃথিবীর জনসংখ্যার আকারে নতুন মাইলফলকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ এবং ব্যতিক্রম দিক থাকছে। যেমন: 

এবার জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার আগের মাইলফলকের তুলনায় কম। যেখানে ১৯৬৩ সালে বার্ষিক জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ছিল ২ দশমিক ৩ শতাংশ, ২০২২ সালে এসে এ হার দাঁড়িয়েছে দশমিক ৮ শতাংশ। বিভিন্ন দেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার বিভিন্ন। কিছু দেশে বৈশ্বিক হারের চেয়ে বেশি, আবার কোথাও কম, এমনকি কোথাও জনসংখ্যা ক্রমেই সংকুচিত হচ্ছে। 

জনসংখ্যায় শিশুর সংখ্যা তুলনামূলক কম, সেই সঙ্গে মানুষের আয়ু বাড়ছে। মূলত এ কারণেই শিশুর তুলনায় বয়স্ক মানুষের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেশি থাকছে। পাশাপাশি এখন নারীর তুলনায় পুরুষের সংখ্যা বাড়ছে। বর্তমানে বিশ্বে গড়ে ১০০ কন্যাশিশুর জন্মের বিপরীতে পুরুষ শিশুর জন্ম হয় ১০৬। যদিও প্রত্যাশিত আয়ু আবার নারীর বেশি। 

জন্মহার বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন। তবে সব দেশেই এ হার কমছে। কোথাও ঋণাত্মক হয়ে গেছে। ১৯৫০ সালে বিশ্বে প্রতিজন নারীর বিপরীতে জন্ম হতো ৫ শিশুর। সেখানে ২০২২ সালে এটি ২ দশমিক ৩। ২০৫০–এ আরও কমে ২ দশমিক ১–এ নামবে। সেই সঙ্গে একদিকে কম শিশুর জন্ম হচ্ছে, আবার মানুষের আয়ু বাড়ছে। ফলে জনসংখ্যায় বয়স্ক মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। বর্তমানে জনসংখ্যায় শূন্য থেকে ১৪ বছর বয়সী শিশুর হিস্যা ক্রমেই কমছে। 

এরই মধ্যে ৬০ শতাংশের বেশি মানুষ সেসব অঞ্চলে বসবাস করে, যেখানে জন্মহার প্রতিস্থাপন স্তরের নিচে। অর্থাৎ এখানে জন্মহারের তুলনায় মৃত্যু হার বেশি। 

ভারতের মতো কিছু দেশে জন্মহার কম হওয়া সত্ত্বেও মানুষ বাড়ছে। ২০২৩ সালেই ভারত জনসংখ্যা বৃদ্ধিতে চীনকে ছাড়িয়ে যাবে। ভারতে যদিও জন্মহার এরই মধ্যে নারী প্রতি ২ দশমিক ৩–এ নেমে এসেছে। 

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো–আগের তুলনায় মানুষের স্থানান্তর অনেক বেশি এখন। অর্থাৎ অভিবাসন ব্যাপকভাবে বেড়েছে। গড়ে ৩০ জনের ২৯ জন মানুষই জন্মস্থানে (দেশ) থাকেন। তবে অভিবাসী হওয়ার প্রবণতা ক্রমে বাড়ছে। বর্তমানে ২৮ কোটি ১০ লাখ মানুষ জন্মস্থানের বাইরের দেশে থাকছেন। এর জন্য যুদ্ধ, জলবায়ু, সুযোগ–সুবিধা ইত্যাদি কারণ দায়ী। 

বিশ্বের জনসংখ্যা এখন প্রায় ৮০০ কোটি। তবে অনেক দেশেই কমছেআরেকটি বৈশিষ্ট্য সারা বিশ্বের জন্যই বোঝা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। সেটি হলো বয়স্ক মানুষের সংখ্যা বেড়ে যাওয়া। এটি অর্থনীতির জন্যও মোটেও সুখকর বার্তা নয়! ১৯৫০ সালে বৈশ্বিক প্রত্যাশিত গড় আয়ু ছিল ৪৬ দশমিক ৬ বছর। সেখানে ২০১৯ সালে বেড়ে দাঁড়ায় ৭২ দশমিক ৮ বছর। এ ছাড়া ২০২২ সালে ৬৫ বছর বয়সের পর প্রত্যাশিত আয়ু ১৬ দশমিক ৩ বছর, ২০৫০ সালে এই আয়ু বেড়ে হবে ১৯ দশমিক ৮ বছর। যেখানে সব দেশেই জন্মহার দ্রুত কমছে। 

 ৮০০ কোটি জনসংখ্যার হিসাবে দারুণভাবে প্রভাব ফেলেছে দুটি মহামারি। ২০২০ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত কোভিডে মারা গেছেন ১ কোটি ৪৯ জন মানুষ। আর ১৯৮১ সাল থেকে এইডসের মারা গেছেন ৪ কোটি ১ লাখ। 

আর ওপরের পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট, জনসংখ্যা বৃদ্ধিতে অবদান রাখা মূল কেন্দ্রের স্থানান্তর ঘটছে। ভারত জনসংখ্যা বৃদ্ধির ভূমিকায় চীনকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে। 

অবশ্য বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের জনসংখ্যা বৃদ্ধির গতি বিভিন্ন হয়ে যাচ্ছে। ২০২২ সালের অর্ধাংশ পর্যন্ত বিশ্বের অর্ধেক মানুষই বাস করছে এশিয়ায়। বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল এলাকা হলো পূর্ব ও দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়া (২৩০ কোটি)। আর মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়ায় মানুষ আছে ২১০ কোটি। 

ভারত এবং চীন মিলেই মোট জনসংখ্যা ১৪০ কোটির বেশি। তবে চীনের জনসংখ্যা কিন্তু আর বাড়ছে না। ২০২৩ সালের শুরুর দিকেই জনসংখ্যা কমতে শুরু করবে। ভারতে এখনো বছরে দশমিক ৭ শতাংশ হারে মানুষ বাড়ছে। শিগগিরই ভারত বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশে পরিণত হবে। 

অবশ্য ১৯৬০–এর দশক থেকেই পূর্ব ও দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ায় জন্মহার কমছে। ১৯৯০–এর দশকে জনসংখ্যা স্থির হওয়ার পর্যায়ে যায়। যেখানে ২০২২ সালে বৃদ্ধি হার দশমিক ২ শতাংশ। ২০৩০–এর দশকের মাঝামাঝিতে এ অঞ্চলের জনসংখ্যা হবে সর্বোচ্চ প্রায় ২৪০ কোটি। এরপর কমতে থাকবে। 

আর মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়ায় জন্মহার আরও ধীরে কমছে। এ অঞ্চলে বৃদ্ধি হার দশমিক ৯ শতাংশ। ২০৩৭ সালে এ অঞ্চল বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল অঞ্চলে পরিণত হতে পারে। আর জনসংখ্যা বাড়বে ২০৭২ সাল পর্যন্ত, ওই বছর সর্বোচ্চ প্রায় ২৭০ কোটি হবে। 

পূর্ব ও দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ায় জন্মহার দশমিক ২ শতাংশ। সবচেয়ে জনবহুল অঞ্চল এটি। আর সবচেয়ে বেশি জন্মহার সাব–সাহারা আফ্রিকা অঞ্চলে। এখানে জন্মহার এখন ২ দশমিক ৫ শতাংশ। ২০৬০–এর মধ্যে এই অঞ্চল বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল এলাকায় পরিণত হতে পারে। 

অন্যদিকে টানা কয়েক দশক ধরে নিম্ন জন্মহার, সেই সঙ্গে ব্যাপক অভিবাসনের কারণে জনসংখ্যা কমছে কিছু দেশে। পূর্ব ইউরোপের ১৭টি দেশে এই দুই কারণে ১৯৯০ সাল থেকেই জনসংখ্যা কমছে। 

অপরদিকে দক্ষিণ ইউরোপ এবং পূর্ব এশিয়ায় জনসংখ্যা কমতে শুরু করেছে। এর মধ্যে চীনও রয়েছে। আগামী বছর থেকেই চীনে জনসংখ্যা কমতে শুরু করবে। 

 ২০২২ থেকে ২০৫০ সালের মধ্যে ৬১টি দেশে জনসংখ্যা ১ শতাংশের বেশি সংকুচিত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আর বুলগেরিয়া, লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া, সার্বিয়া এবং ইউক্রেনে ২০ শতাংশ বা তারও বেশি সংকুচিত হতে পারে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কে এই আতাউর রহমান বিক্রমপুরী

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

ঋণখেলাপির তালিকায় নাম: রিট খারিজ, নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না মান্না

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মস্কোতে বিস্ফোরণ, দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ নিহত তিন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
মস্কোর ঘটনাস্থলে পুলিশ। ছবি: বিবিসি
মস্কোর ঘটনাস্থলে পুলিশ। ছবি: বিবিসি

রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে এক বিস্ফোরণে দুজন ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা ও আরেকজন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। রাশিয়ার তদন্ত সংস্থাগুলোর বরাতে জানা গেছে, দক্ষিণ মস্কোর ইয়েলেতস্কায়া স্ট্রিট এলাকায় এই বিস্ফোরণটি ঘটেছে স্থানীয় সময় বুধবার ভোরে (২৪ ডিসেম্বর)। ঘটনাস্থলটি সেই জায়গার কাছেই, যেখানে চলতি সপ্তাহের শুরুতে এক রুশ জেনারেল গাড়িবোমা হামলায় নিহত হয়েছিলেন।

রাশিয়ার ইনভেস্টিগেটিভ কমিটির বিবৃতির বরাতে আল-জাজিরা জানিয়েছে, সন্দেহজনক এক ব্যক্তিকে আটকের চেষ্টা করার সময় বিস্ফোরণটি ঘটে। পুলিশ কর্মকর্তারা যখন ওই ব্যক্তির কাছে যান, তখনই একটি বিস্ফোরক ডিভাইস সক্রিয় হয়ে যায়। বিস্ফোরণের ফলে ঘটনাস্থলেই দুই পুলিশ কর্মকর্তা প্রাণ হারান। এ সময় তাঁদের পাশে থাকা আরেকজন ব্যক্তিও বিস্ফোরণে নিহত হন।

নিহত দুই পুলিশ কর্মকর্তার বয়স ছিল ২৪ ও ২৫ বছর। আল-জাজিরার মস্কো প্রতিনিধি ইউলিয়া শাপোভালোভার তথ্য অনুযায়ী, নিহতদের মধ্যে একজনের স্ত্রী ও সন্তান রয়েছে। তিনি বলেন, ‘এটি তাদের পরিবারের জন্য এক ভয়াবহ ট্র্যাজেডি।’ বিস্ফোরণের প্রকৃত উদ্দেশ্য এখনো স্পষ্ট নয় বলে জানিয়েছে রুশ কর্তৃপক্ষ।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বিস্ফোরণের শব্দ ছিল অত্যন্ত শক্তিশালী। কাছাকাছি বসবাসকারী আলেক্সান্ডার নামের এক ব্যক্তি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘একটা ভয়ংকর শব্দ হয়েছিল, কয়েক দিন আগের গাড়ি বিস্ফোরণের মতোই।’ আরেক বাসিন্দা রোজা জানান, বিস্ফোরণের সময় তাঁদের পুরো ভবনটি কেঁপে ওঠে এবং তিনি ঘুম থেকে জেগে ওঠেন।

বিস্ফোরণের পরপরই এলাকাটি ঘিরে ফেলে পুলিশ বাহিনী। রুশ টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ছবিতে দেখা গেছে, ঘটনাস্থলে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। তদন্তকারীরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের হত্যাচেষ্টার অভিযোগ ও বিস্ফোরক পাচারের অভিযোগে একটি মামলা করেছে।

এই বিস্ফোরণটি ঘটেছে সেই এলাকার কাছেই, যেখানে গত সোমবার রুশ জেনারেল ফানিল সারভারভ গাড়ির নিচে পেতে রাখা বিস্ফোরক ডিভাইসের মাধ্যমে নিহত হন। সারভারভ রুশ জেনারেল স্টাফের অপারেশনাল ট্রেনিং বিভাগের প্রধান ছিলেন এবং ইউক্রেনে চলমান সামরিক অভিযানের জন্য সেনাদের প্রশিক্ষণের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

রাশিয়া জেনারেল সারভারভ হত্যার পেছনে ইউক্রেনের গোয়েন্দা সংস্থার সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেছে। তবে ইউক্রেন এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করেনি। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে রাশিয়া ও দখলকৃত ইউক্রেনীয় অঞ্চলে একাধিক বিস্ফোরণের ঘটনায় রুশ সামরিক কর্মকর্তা ও এই যুদ্ধের সমর্থক বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কে এই আতাউর রহমান বিক্রমপুরী

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

ঋণখেলাপির তালিকায় নাম: রিট খারিজ, নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না মান্না

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শানলিউরফা: নবীদের যে নগরে মিলেছে তিন ধর্মের মানুষ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
তুরস্কের শানলিউরফা শহর। ছবি: সিএনএন
তুরস্কের শানলিউরফা শহর। ছবি: সিএনএন

দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্কের শানলিউরফা শহরকে বলা হয় ‘নবীদের নগরী’। সিরিয়া সীমান্ত থেকে মাত্র ৪০ মাইল উত্তরে অবস্থিত এই শহরটি হাজার বছরের ইতিহাস, ধর্মীয় বিশ্বাস ও সংস্কৃতির এক অনন্য সংযোগস্থল। এখানে ইহুদি, খ্রিষ্টান ও ইসলাম—এই তিন একেশ্বরবাদী ধর্মের কাহিনি এসে মিলেছে।

বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে সিএনএন জানিয়েছে, শানলিউরফার পুরোনো শহরের দেরগাহ মসজিদ কমপ্লেক্সে অবস্থিত নীলাভ পানির ‘বালিক্লিগোল’ বা ‘মাছের হ্রদ’। মূলত এখানে আছে দুটি পুকুর। ধর্মীয় মতে, দুটি পুকুরের বড়টিতে নবী ইব্রাহিম (আ.)-কে আগুনে নিক্ষেপ করেছিলেন মেসোপটেমিয়ার রাজা নমরুদ। আল্লাহ তৎক্ষণাৎ ওই আগুনকে পানি এবং জ্বলন্ত কাঠকে মাছে রূপান্তরিত করেছিলেন। এ ছাড়া ‘আইনজেলিহা’ নামের ছোট পুকুরটির নামকরণ করা হয়েছে নমরুদের কন্যা জেলিহার নামে। ইব্রাহিম নবীর প্রতি বিশ্বাসের কারণে এই পুকুরে আগুনে ঝাঁপ দিয়ে জেলিহা প্রাণ হারিয়েছিলেন বলে বিশ্বাস।

দুটি পুকুরই কালো দাগওয়ালা কার্প মাছে ভরা। এগুলোকে পবিত্র মনে করা হয়। তাই এই মাছগুলোকে ধরা বা এগুলোর ক্ষতি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। এই কারণেই বালিক্লিগোল শুধু একটি পর্যটনস্থল নয়, বরং গভীর ধর্মীয় আবেগ ও ইতিহাসের প্রতীক। মাছের গায়ে থাকা কালো দাগগুলোকে আগুনের ছাইয়ের চিহ্ন হিসেবে ধরে নেওয়া হয়।

বালিক্লিগোলে ভেসে বেড়ায় কালো দাগওয়ালা কার্প মাছ। ছবি: সিএনএন
বালিক্লিগোলে ভেসে বেড়ায় কালো দাগওয়ালা কার্প মাছ। ছবি: সিএনএন

ইতিহাসের বিভিন্ন সময়ে শানলিউরফা নানা নামে পরিচিত ছিল। আরামীয়রা একে ডাকত উরহাই, গ্রিক শাসনামলে নাম ছিল এডেসা, আরব বিজয়ের পর নাম হয় রোহা। অটোমানেরা ১৬০৭ সালে এই নগরীর নাম রাখে উরফা। পরে ১৯৮৪ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রতিরোধের স্বীকৃতি হিসেবে যুক্ত হয় ‘শানলি’, অর্থাৎ ‘গৌরবময়’।

এই শহরটি ইব্রাহিম (আ.), আইয়ুব (আ.), নূহ (আ.) ও জেথ্রোর মতো নবীদের সঙ্গে সম্পর্কিত বলে বিশ্বাস করা হয়। পুরোনো শহরের দেরগাহ মসজিদ কমপ্লেক্সে অবস্থিত বালিক্লিগোল মুসলিম তীর্থযাত্রীদের কাছে অত্যন্ত পবিত্র। এখানেই রয়েছে মেভলিদ-ই-হালিল গুহা। বিশ্বাস করা হয়, এখানেই জন্ম হয়েছিল ইব্রাহিম নবীর। নারীরা সন্তান কামনায় ও আরোগ্য লাভের আশায় এই গুহায় আসেন।

তবে শানলিউরফার ইতিহাস শুধু ধর্মগ্রন্থেই সীমাবদ্ধ নয়। শহরটি থেকে ১৪ মাইল দূরেই আছে পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন ধর্মীয় স্থাপনা বা উপাসনালয় হিসেবে চিহ্নিত ‘গ্যোবেকলি তেপে’। প্রায় ১১-১২ হাজার বছরের পুরোনো এই স্থাপনাটি মানবসভ্যতার ধারণাকেই বদলে দিয়েছে। খ্রিষ্টপূর্ব প্রায় ৯৬০০ সালের এই নিওলিথিক স্থাপনাটি কৃষি ও মৃৎশিল্পের আগেই নির্মিত—যা প্রমাণ করে, ধর্মীয় আচার হয়তো সভ্যতার সূচনাতেও গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এখানে পাওয়া টি-আকৃতির স্তম্ভ ও খোদাই করা পশুর ভাস্কর্য বিশ্বব্যাপী বিস্ময় সৃষ্টি করেছে।

পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন ধর্মীয় স্থাপনা বা উপাসনালয় হিসেবে চিহ্নিত ‘গ্যোবেকলি তেপে’। ছবি: সিএনএন
পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন ধর্মীয় স্থাপনা বা উপাসনালয় হিসেবে চিহ্নিত ‘গ্যোবেকলি তেপে’। ছবি: সিএনএন

শানলিউরফা প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে ১০ হাজারের বেশি নিদর্শন। এর মধ্যে ‘উরফা ম্যান’ নামের ১১ হাজার ৫০০ বছরের পুরোনো মানব মূর্তিটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। পাশেই হালেপলিবাহচে মোজাইক জাদুঘর ও কিজিলকয়ুন নেক্রোপলিস শহরের রোমান যুগের ইতিহাস তুলে ধরে।

ইতিহাস ও ধর্মের পাশাপাশি শানলিউরফা খাবার ও আতিথেয়তার জন্যও বিখ্যাত। উরফা কাবাব, পাটলিজান কাবাব, চি কফতে ও শিল্লিক তাতলিসি এখানকার জনপ্রিয় খাবার। স্থানীয়দের সঙ্গে ধীরে চা পান, পুরোনো বাজারে হাঁটা আর ‘সিরা গেসেসি’ নামের সাংস্কৃতিক আড্ডায় অংশ নিলে বোঝা যায়—এই শহর শুধু দেখার নয়, অনুভব করারও।

শানলিউরফা নগরীতে ‘সিরা গেসেসি’ নামে রাতের আড্ডা। ছবি: সিএনএন
শানলিউরফা নগরীতে ‘সিরা গেসেসি’ নামে রাতের আড্ডা। ছবি: সিএনএন

বলা যায়—শানলিউরফা যেন এক জীবন্ত জাদুঘর; যেখানে ধর্ম, ইতিহাস ও মানবসভ্যতার গল্প একসূত্রে গেঁথে পাশাপাশি হাঁটে অতীত ও বর্তমান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কে এই আতাউর রহমান বিক্রমপুরী

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

ঋণখেলাপির তালিকায় নাম: রিট খারিজ, নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না মান্না

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৭ অক্টোবরের দায় এড়াতে ফন্দি খোঁজার দায়িত্ব দিয়েছিলেন নেতানিয়াহু: সাবেক মুখপাত্র

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ছবি: এপির সৌজন্যে
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ছবি: এপির সৌজন্যে

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার পরপরই প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সেই ঘটনার দায় এড়ানোর উপায় খুঁজতে তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগীকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখপাত্র ইলাই ফেল্ডস্টাইন গত সোমবার রাতে ইসরায়েলের ‘কান’ নিউজ চ্যানেলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই বিস্ফোরক দাবি করেছেন।

গোপন নথি ফাঁসের দায়ে বর্তমানে বিচারের মুখোমুখি হওয়া ফেল্ডস্টাইন এই প্রথম সরাসরি নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আনলেন।

ইলাই ফেল্ডস্টাইন জানান, ৭ অক্টোবরের সেই রক্তক্ষয়ী হামলার ঠিক পরেই নেতানিয়াহু তাঁকে ‘প্রথম কাজ’ হিসেবে দিয়েছিলেন—কীভাবে জবাবদিহি বা দায়বদ্ধতার প্রশ্ন থেকে রেহাই পাওয়া যায় তার উপায় বের করা। সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘হামলার পর নেতানিয়াহু আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘‘এখন কী ধরনের সংবাদ প্রচার হচ্ছে? তারা কি এখনো দায়বদ্ধতার কথা বলছে?’’ তাঁকে তখন বেশ আতঙ্কিত দেখাচ্ছিল। নেতানিয়াহু চেয়েছিলেন এমন কিছু বলা হোক, যাতে গণমাধ্যমে তাঁর দায়িত্ব নেওয়ার বিষয়টি নিয়ে যে ঝড় উঠেছে, তা স্তিমিত হয়ে যায়।’

ফেল্ডস্টাইন আরও দাবি করেন, প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ মহল থেকে তাঁকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল যেন যেকোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে ‘দায়বদ্ধতা’ (Responsibility) শব্দটি ব্যবহার না করা হয়।

তবে নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে এই সাক্ষাৎকারকে ‘মিথ্যা ও বানোয়াট’ বলে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। হিব্রু সংবাদমাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়, ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করতে এবং নিজের অপরাধ থেকে মানুষের দৃষ্টি সরাতে এক ব্যক্তি এমন ডাহা মিথ্যা অভিযোগ করছেন।

কে এই ইলাই ফেল্ডস্টাইন

ইলাই ফেল্ডস্টাইন নেতানিয়াহুর অন্যতম ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন। তবে বর্তমানে তিনি দুটি বড় কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত। গোপন নথি ফাঁস—গত আগস্টে গাজায় ছয় জিম্মি নিহতের পর প্রধানমন্ত্রীর ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে একটি জার্মান সংবাদমাধ্যমে সামরিক গোপন তথ্য ফাঁসের অভিযোগে তাঁর বিচার চলছে। কাতারগেট স্ক্যান্ডাল—নেতানিয়াহুর হয়ে কাজ করার সময় কাতারের কাছ থেকে অর্থ নেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত হওয়া দুই ঘনিষ্ঠ সহযোগীর মধ্যে তিনি একজন।

উল্লেখ্য, ৭ অক্টোবরের হামলায় প্রায় ১ হাজার ২০০ ইসরায়েলি নিহত ও ২৫১ জন অপহৃত হয়। এর জবাবে ইসরায়েলের টানা দুই বছরের যুদ্ধে গাজায় এ পর্যন্ত প্রায় ৭১ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের অর্ধেকই নারী ও শিশু।

২০২৩ সালের অক্টোবরে ইসরায়েলে হামাসের হামলাকে ইসরায়েলের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় সামরিক ব্যর্থতা হিসেবে দেখা হয়। অনেকে মনে করেন, এই ব্যর্থতার দায় ঠেকানোর জন্য নেতানিয়াহু বরাবরই স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠনে বাধা দিয়ে আসছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কে এই আতাউর রহমান বিক্রমপুরী

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

ঋণখেলাপির তালিকায় নাম: রিট খারিজ, নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না মান্না

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাংলাদেশের ভিসা স্থগিতে বিপাকে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা, সম্পর্ক স্বাভাবিক করার আহ্বান

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
বাংলাদেশের ভিসা স্থগিতে বিপাকে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা, সম্পর্ক স্বাভাবিক করার আহ্বান

নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশন এবং আগরতলায় সহকারী হাইকমিশনের ভিসা ও কনস্যুলার সেবা স্থগিতের সিদ্ধান্তে কলকাতার আমদানিকারক ও রপ্তানিকারকদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। প্রতিবেশী দেশটির সঙ্গে ব্যবসার ভবিষ্যৎ নিয়ে তারা এখন যথেষ্ট শঙ্কিত। তাই তারা দ্রুত এই সংকট কাটিয়ে উঠতে বাংলাদেশের সঙ্গে সংলাপ ও যোগাযোগ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।

ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, বাংলাদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ তৈরি পোশাক, তুলা, সবজি এবং অন্যান্য কৃষিপণ্য রপ্তানি হয়। বিপরীতে সেখান থেকে আমদানিপণ্য হিসেবে আসে প্রক্রিয়াজাত চামড়া। কাউন্সিল অব লেদার এক্সপোর্টের পূর্বাঞ্চলীয় শাখার আঞ্চলিক কমিটির সদস্য জিয়া নাফিস বলেন, ‘প্রতি বছর কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স এবং কসবা ইন্ডাস্ট্রিয়াল এস্টেটের মাধ্যমে প্রায় ১২৫ কোটি টাকার প্রক্রিয়াজাত চামড়া আমদানি করা হয়। এই চামড়া মূলত ব্যাগ তৈরির কাজে লাগে। এখানকার চামড়ার চেয়ে গুণগত মান আলাদা এবং দাম কিছুটা সস্তা হওয়ায় আমরা সেখান থেকে আমদানি করি।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ যদি ভিসা দেওয়া বন্ধ করে দেয়, তবে আমদানিকারকরা ঠিক তেমনই সমস্যায় পড়বেন, যেমনটা হয়েছিল চীনের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার সময়।’ নাফিসের মতে, চামড়া একটি প্রাকৃতিক পণ্য, তাই এর মান একেক লটে একেক রকম হয়। আমদানির আগে সরাসরি গিয়ে মান যাচাই করা অত্যন্ত জরুরি। ভিসা না থাকলে সশরীরে পণ্য দেখা সম্ভব হবে না, ফলে পণ্যের গুণগত মান নিয়ে ঝুঁকি থেকে যায়। ব্যবসা সচল রাখতে ভ্রমণ প্রক্রিয়া সহজ করা দরকার।

গত সোমবার নিজ কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভের মুখে দিল্লির কূটনৈতিক এলাকায় অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশন এবং আগরতলার মিশন ভিসা ও কনস্যুলার সেবা সাময়িকভাবে স্থগিত করার ঘোষণা দেওয়া হয়। এ সংক্রান্ত নোটিশও টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে।

রপ্তানিকারকরা বলছেন, বাংলাদেশে তৈরি পোশাক রপ্তানির এখন ভরা মৌসুম। ঠিক এই সময়েই এমন স্থগিতাদেশ এল। এক রপ্তানি প্রতিনিধি জানান, ‘ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ অর্থাৎ ঈদ পর্যন্ত পোশাকের চাহিদা খুব বেশি থাকে। কলকাতা বিমানবন্দর থেকে প্রতি সপ্তাহে প্রায় ৬০ টন পোশাক রপ্তানি হয়।’ তিনি আরও জানান, বর্তমানে ইন্ডিগোর একটি কার্গো ফ্লাইট কলকাতা থেকে ঢাকা শুধু পোশাকই নিয়ে যায়, অথচ এখন আরও কার্গো ফ্লাইটের প্রয়োজন ছিল।

বেঙ্গানি কমোডিটিসের পরিচালক এবং ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান এক্সপোর্ট অর্গানাইজেশনসের সাবেক আঞ্চলিক চেয়ারম্যান বিমল বেঙ্গানি জানান, ২০২৪ সালের আগস্ট থেকে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসা কমে গেছে। তিনি বলেন, ‘আমি আগে প্রতি মাসে বাংলাদেশে যেতাম। গত এক বছরে একবারও যাইনি। বাণিজ্য অনেক কমে গেছে। আগে প্রতিদিন পশ্চিমবঙ্গ সীমান্ত দিয়ে ১ হাজার ৬০০ ট্রাক বাংলাদেশে যেত; এখন তা নেমে এসেছে ৮ শতে। সমস্যা মেটানো আর নতুন বাজার খোঁজার জন্য ক্লায়েন্টদের সঙ্গে সরাসরি দেখা করাটা খুব জরুরি।’

বিমল বেঙ্গানি মূলত পোলট্রি ফিড, মসলা এবং অন্যান্য কৃষিপণ্য বাংলাদেশে রপ্তানি করেন। তিনি যোগ করেন, ‘ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্য গড়ে উঠেছে পারস্পরিক আস্থা ও যোগাযোগের ওপর। আমরা নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগকে সম্মান করি, তবে আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত ভিসা সমস্যার সমাধান চাই। ব্যবসায়ী, রোগী এবং শিক্ষার্থীদের যাতায়াত স্বাভাবিক থাকা দুই দেশের অর্থনীতি ও কর্মসংস্থানের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’

এদিকে কলকাতা থেকে ঢাকাগামী যাত্রী কমে যাওয়ার আশঙ্কায় এয়ারলাইনগুলোও চিন্তিত। বাংলাদেশের একটি এয়ারলাইনসের কর্মকর্তা জানান, ‘যাত্রী কমে যাওয়ায় ফ্লাইটের সংখ্যা কমানো হয়েছে। বর্তমানে যেসব ফ্লাইট চলছে তাতে যাত্রী ভালোই আছে, কিন্তু ভিসার ওপর কড়াকড়ি শুরু হলে আমরা বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়ব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কে এই আতাউর রহমান বিক্রমপুরী

আতাউর রহমান বিক্রমপুরী কারাগারে

জুলাই হত্যাকাণ্ডকে ব্যক্তিগত অপরাধ গণ্য করে আ.লীগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ৫ মার্কিন আইনপ্রণেতার

বিএনপিতে রেদোয়ান আহমেদ-ববি হাজ্জাজ, ছেড়ে দিচ্ছে আরও ৮ আসন

ঋণখেলাপির তালিকায় নাম: রিট খারিজ, নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না মান্না

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত