Ajker Patrika

নাইজেরিয়ায় জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির প্রতিবাদ করে গ্রেপ্তার ২৯ শিশু, পেতে পারে মৃত্যুদণ্ডও

জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি ও প্রশাসনিক অদক্ষতার প্রতিবাদে নাইজেরিয়াতে বিক্ষোভ। ছবি: এএফপি
জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি ও প্রশাসনিক অদক্ষতার প্রতিবাদে নাইজেরিয়াতে বিক্ষোভ। ছবি: এএফপি

নাইজেরিয়ায় জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির প্রতিবাদ বিক্ষোভে অংশ নেওয়ায় কঠোর শাস্তির মুখে ২৯টি শিশু। আইন অনুযায়ী আদালত তাদের মৃত্যুদণ্ডও দিতে পারেন। গত শুক্রবার তাদের আদালতে হাজির করা হয়। ক্লান্তির কারণে চার শিশু আদালতেই অজ্ঞান হয়ে পড়ে। আদালত তাদের কোনো বক্তব্য নিতে পারেনি।

বার্তা সংস্থা এপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মোট ৭৬ জন প্রতিবাদকারীর বিরুদ্ধে ১০টি অপরাধমূলক অভিযোগ আনা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে: রাষ্ট্রদ্রোহ, সম্পদ ধ্বংস, জনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত করা এবং বিদ্রোহ। অভিযোগে বলা হয়েছে, অভিযুক্তদের মধ্যে শিশুদের বয়স ১৪ থেকে ১৭ বছরের মধ্যে।

নাইজেরিয়াতে জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির কারণে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বেশ কয়েকটি গণবিক্ষোভ হয়েছে। গত আগস্টে এক বিক্ষোভে অন্তত ২০ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত এবং শত শত লোক গ্রেপ্তার হয়।

১৯৭০–এর দশকে নাইজেরিয়ায় মৃত্যুদণ্ডের বিধান চালু করা হয়। তবে ২০১৬ সাল থেকে দেশিতে কোনো মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়নি।

আবুজা ভিত্তিক ব্যক্তিগত আইনজীবী অ্যাকিনতায়ো বালোগুন এপিকে বলেন, শিশু অধিকার আইনে কোনো শিশুকে অপরাধী হিসেবে গণ্য করা বা মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার অনুমতি নেই। তাই ফেডারেল আদালতে শিশুদের নেওয়াই ভুল, যদি না সরকার প্রমাণ করতে পারে যে তাদের বয়স ১৯ বছরের বেশি।

আদালত শেষ পর্যন্ত প্রত্যেক আসামির জন্য ১০ মিলিয়ন নাইরা (৫ হাজার ৯০০ ডলার) জামানতে জামিন মঞ্জুর করেছেন। সেই সঙ্গে কঠোর শর্ত আরোপ করেছে যা এখনো পূরণ করা হয়নি বলে জানান শিশুদের আইনজীবী মার্শাল আবুবকর।

আবুবকর বলেন, একটি রাষ্ট্রের দায়িত্ব হচ্ছে শিশুদের শিক্ষিত করা, অথচ তারা সেই শিশুদের শাস্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই শিশুরা ৯০ দিন ধরে কোনো খাবার ছাড়াই বন্দী অবস্থায় ছিল বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

সুশাসন নিয়ে কাজ করা নাগরিক সংগঠন ‘ইনাফ ইজ ইনাফ’–এর নির্বাহী পরিচালক ইয়েমি আদামোলেকুন বলেন, শিশুদের বিচারের আওতায় আনার কোনো অধিকার নেই কর্তৃপক্ষের। নাইজেরিয়ার প্রধান বিচারপতির লজ্জা হওয়া উচিত, যেখানে তিনি একজন নারী এবং মা।

আফ্রিকার শীর্ষ তেল উৎপাদনকারী হওয়া সত্ত্বেও নাইজেরিয়া বিশ্বের অন্যতম দরিদ্র দেশ। ব্যাপক দুর্নীতির কারণে দেশটির সরকারি কর্মকর্তাদের জীবনযাত্রার মান সাধারণ জনগণের চেয়ে অনেক উচ্চ। চিকিৎসা পেশার কর্মীরা প্রায়ই কম বেতনের প্রতিবাদে ধর্মঘট করেন।

দেশটির রাজনীতিক ও আইনপ্রণেতারা, যাদের প্রায়ই দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়, আফ্রিকার মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেতন পান। এমনকি প্রেসিডেন্টের স্ত্রী—যার পদের বিষয়ে সংবিধানে উল্লেখ নেই—তাঁকেও রাজস্ব থেকে বিলাসবহুল গাড়ি এবং অন্যান্য সুবিধা দেওয়া হয়।

নাইজেরিয়ার জনসংখ্যা ২১ কোটির বেশি—যা আফ্রিকার মধ্যে সবচেয়ে বেশি—বিশ্বে সবচেয়ে বেশি ক্ষুধা পীড়িত মানুষও এখানে বেশি। সরকারও কর্মসংস্থান তৈরিতে হিমশিম খাচ্ছে। বর্তমান দেশটির মূল্যস্ফীতির হার ২৮ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ এবং নাইরা মুদ্রার মান ডলারের বিপরীতে রেকর্ড সর্বনিম্নে পৌঁছেছে।

গত বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের খাদ্য সংস্থার (এফএও) একটি প্রতিবেদনে নাইজেরিয়াকে ‘অত্যন্ত উদ্বেগজনক হটস্পট’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, যেখানে বিপুলসংখ্যক মানুষ তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার মুখোমুখি হচ্ছে বা হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

নাহিদকে শুভকামনা জানিয়ে সরে গেলেন জামায়াতের আতিক

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা এনসিপি নেত্রী মনজিলা ঝুমার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ইসরায়েলের সঙ্গে পূর্ব ভূমধ্যসাগরে প্রতিরক্ষা জোট শক্তিশালী করছে গ্রিস ও সাইপ্রাস

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
২২ ডিসেম্বর জেরুজালেমে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, গ্রিক প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিৎসোটাকিস ও সাইপ্রাসের প্রেসিডেন্ট নিকোস ক্রিস্টোডোলিডেসের শীর্ষ বৈঠকে এই জোটের ভিত্তি স্থাপিত হয়। ছবি: রয়টার্সের সৌজন্যে
২২ ডিসেম্বর জেরুজালেমে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, গ্রিক প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিৎসোটাকিস ও সাইপ্রাসের প্রেসিডেন্ট নিকোস ক্রিস্টোডোলিডেসের শীর্ষ বৈঠকে এই জোটের ভিত্তি স্থাপিত হয়। ছবি: রয়টার্সের সৌজন্যে

পূর্ব ভূমধ্যসাগরে নিজেদের সামরিক ও কৌশলগত অবস্থান আরও সুসংহত করতে ইসরায়েলের সঙ্গে যৌথ বিমান ও নৌ মহড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে গ্রিস ও সাইপ্রাস। আজ সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) গ্রিসের সামরিক কর্মকর্তা ও নির্ভরযোগ্য একটি সূত্রের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্সসহ বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৬ সাল থেকে এই তিন দেশ আরও নিবিড় প্রতিরক্ষা সহযোগিতায় লিপ্ত হবে। এ বিষয়টিকে লোহিতসাগর ও পূর্ব ভূমধ্যসাগরে তুরস্কের ক্রমবর্ধমান প্রভাব মোকাবিলায় একটি শক্তিশালী আঞ্চলিক বলয় হিসেবে দেখা হচ্ছে।

এর আগে গত সপ্তাহে সাইপ্রাসে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে তিন দেশের জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তারা ২০২৬ সালের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ সামরিক সহযোগিতা কর্মসূচি স্বাক্ষর করেন। এরপর জেরুজালেমে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, গ্রিক প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিৎসোটাকিস এবং সাইপ্রাসের প্রেসিডেন্ট নিকোস ক্রিস্টোডোলিডেসের শীর্ষ বৈঠকে এই জোটের ভিত্তি স্থাপিত হয়।

জোটে সিদ্ধান্ত হয়, আগামী দিনে ইসরায়েল পরিচালিত ‘নোবেল দিনা’ (Noble Dina) নামক নৌ মহড়ায় বড় আকারে যোগ দেবে গ্রিস ও সাইপ্রাস। এসব মহড়ায় ইসরায়েল তাদের আধুনিক সামরিক প্রযুক্তি ও যুদ্ধকৌশল গ্রিস ও সাইপ্রাসের কাছে তুলে ধরবে। বিশেষ করে সাইবার নিরাপত্তা ও ড্রোন মোকাবিলা করার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য বিনিময় করা হবে।

এমনও গুঞ্জন রয়েছে, এই তিন দেশ মিলে প্রায় ২ হাজার ৫০০ সদস্যের একটি যৌথ ‘র‍্যাপিড রেসপন্স ফোর্স’ গঠনের পরিকল্পনা করছে, যা ভূমধ্যসাগরের গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি ও অবকাঠামো রক্ষা করবে।

এদিকে গ্রিস তুরস্কের সঙ্গে আকাশপথ ও সমুদ্রসীমা নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধের প্রেক্ষাপটে বিশাল এক প্রতিরক্ষা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। ইসরায়েলের ‘আয়রন ডোম’-এর আদলে গ্রিস ৩.৫ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে একটি বহুমুখী আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা গড়ে তুলছে। এর মাধ্যমে ড্রোন ও ব্যালিস্টিক মিসাইল ঠেকানো সম্ভব হবে।

চলতি মাসেই গ্রিসের পার্লামেন্ট ইসরায়েলের এলবিট সিস্টেমস থেকে ৩৬টি ‘পালস’ রকেট আর্টিলারি সিস্টেম কেনার অনুমোদন দিয়েছে, যার মূল্য প্রায় ৭৫০ মিলিয়ন ডলার। এ ছাড়া গ্রিস তাদের পুরোনো রুশ নির্মিত এস-৩০০ ও টর-এম১ মিসাইল সিস্টেম বদলে ইসরায়েলি প্রযুক্তিতে সজ্জিত হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে।

তবে ইসরায়েলের সঙ্গে এই গভীর সামরিক সখ্যতা নিয়ে সাইপ্রাসের প্রধান বিরোধী দল (কমিউনিস্ট একেইএল) উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তাদের মতে, ফিলিস্তিন ইস্যু ও আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতার মধ্যে ইসরায়েলের সঙ্গে যুক্ত হওয়া সাইপ্রাসের নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি বয়ে আনতে পারে।

অনেকেই মনে করছেন, এই জোট শুধু সামরিক নয়, বরং ভূমধ্যসাগরের বিশাল গ্যাসক্ষেত্রগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখার এক ভূরাজনৈতিক কৌশল। তুরস্ক এই জোটকে তাদের স্বার্থের পরিপন্থী হিসেবে সতর্ক করেছে, যার ফলে ভবিষ্যতের দিনগুলোতে এই অঞ্চলে সামরিক উত্তেজনা আরও বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

নাহিদকে শুভকামনা জানিয়ে সরে গেলেন জামায়াতের আতিক

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা এনসিপি নেত্রী মনজিলা ঝুমার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের ইঙ্গিত দেখলেন ৪০ যুদ্ধ কভার করা বিবিসি সাংবাদিক

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০: ৩১
ছবি: বিবিসি
ছবি: বিবিসি

বিশ্বজুড়ে চার দশকের বেশি সময় ধরে যুদ্ধ ও সংঘাত কভার করা বিবিসির সাংবাদিক জন সিম্পসন বলেছেন, তাঁর দীর্ঘ পেশাগত জীবনে ২০২৫ সালের মতো উদ্বেগজনক বছর তিনি আর দেখেননি। ১৯৬০-এর দশক থেকে শুরু করে স্নায়ুযুদ্ধের চূড়ান্ত সময় ও এর পতন—সবই তিনি দেখেছেন। কিন্তু তাঁর মতে, চলতি বছরটি শুধু একাধিক বড় যুদ্ধের কারণে নয়, বরং এর ভূরাজনৈতিক প্রভাবের কারণে ইতিহাসে আলাদা হয়ে উঠেছে।

ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি যে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দিকে গড়াতে পারে, সে বিষয়ে আগেই সতর্ক করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। প্রায় ৬০ বছর ধরে যুদ্ধ পর্যবেক্ষণের অভিজ্ঞতা থেকে সিম্পসনও মনে করেন—এই আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। ন্যাটোভুক্ত দেশগুলো আশঙ্কা করছে, পশ্চিমা বিশ্বের যোগাযোগব্যবস্থা সচল রাখা সমুদ্রতলের কেবলগুলো কেটে দিতে পারে রাশিয়া। একই সঙ্গে ন্যাটো দেশগুলোর প্রতিরক্ষাব্যবস্থার ওপর রুশ ড্রোন নজরদারি ও সাইবার হামলার অভিযোগও উঠেছে।

পশ্চিমা দেশগুলোর অভিযোগ, রাশিয়ার গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বিদেশে আশ্রয় নেওয়া ভিন্নমতাবলম্বীদের হত্যাচেষ্টা চালাচ্ছে। ২০১৮ সালে যুক্তরাজ্যের সলসবেরিতে সাবেক রুশ গোয়েন্দা সের্গেই স্ক্রিপালের ওপর বিষপ্রয়োগের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে, এই হামলার অনুমোদন রাশিয়ার সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে দেওয়া হয়েছিল। অর্থাৎ, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনই এই হত্যাচেষ্টার অনুমোদন দিয়েছিলেন।

২০২৫ সালে বিশ্ব তিনটি বড় যুদ্ধে বিপর্যস্ত। এর মধ্যে জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, শুধু ইউক্রেনে প্রায় ১৪ হাজার বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছে। আর ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজায় হামাসের হামলার পর ইসরায়েলের পাল্টা অভিযানে এখন পর্যন্ত ৭০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যা ৩০ হাজার ছাড়িয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। অন্যদিকে, সুদানে দুই সামরিক গোষ্ঠীর গৃহযুদ্ধে গত দুই বছরে দেড় লাখের বেশি মানুষ মারা গেছে এবং ঘরছাড়া হয়েছে প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজায় যুদ্ধবিরতির মধ্যস্থতা করলেও সিম্পসনের মতে, এই যুদ্ধের স্থায়ী সমাধান এখনো হয়নি। তবে তিনি মনে করেন, ইউক্রেন যুদ্ধের গুরুত্ব অন্য সব সংঘাতের চেয়েও আলাদা। কারণ এটি সরাসরি বৈশ্বিক শান্তি ও শক্তির ভারসাম্যকে চ্যালেঞ্জ করছে।

সিম্পসনের বিশ্লেষণে উঠে এসেছে, ইউরোপ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহ কমে যাওয়া এবং ‘একঘরে’ নীতির দিকে ঝুঁকে পড়ার সুযোগ নিচ্ছে রাশিয়া। ২০২৬ সালে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে। একই সঙ্গে চীন-তাইওয়ান প্রশ্নেও উত্তেজনা বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

সব মিলিয়ে জন সিম্পসনের মতে, ভবিষ্যতের তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ হয়তো সরাসরি পারমাণবিক অস্ত্রের সংঘর্ষ হবে না; বরং কূটনৈতিক চাপ, সামরিক চালচিত্র ও ক্ষমতার লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে ধীরে ধীরে বিশ্বকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে—যার পরিণতি হবে আরও ভয়াবহ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

নাহিদকে শুভকামনা জানিয়ে সরে গেলেন জামায়াতের আতিক

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা এনসিপি নেত্রী মনজিলা ঝুমার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ট্রাম্প-জেলেনস্কির বৈঠকে যুদ্ধ বন্ধে অগ্রগতি হলেও দনবাস ইস্যু এখনো অমীমাংসিত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ফ্লোরিডার মার-এ-লাগোতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ছবি: রয়টার্সের সৌজন্যে
ফ্লোরিডার মার-এ-লাগোতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ছবি: রয়টার্সের সৌজন্যে

ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে ফ্লোরিডার মার-এ-লাগোতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার (২৮ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত দুই ঘণ্টার এই বৈঠকে শান্তিচুক্তির ক্ষেত্রে ‘উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি’ হয়েছে বলে দুই নেতাই দাবি করেছেন। তবে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, পূর্ব ইউক্রেনের দনবাসের নিয়ন্ত্রণ এবং স্থায়ী যুদ্ধবিরতির মতো কিছু ‘জটিল ইস্যু’ এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে।

বৈঠকের পর আজ সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) জেলেনস্কি জানান, শান্তি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে ১৫ বছরের নিরাপত্তা গ্যারান্টির প্রস্তাব দিয়েছে। অন্যদিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দাবি করেছেন, নিরাপত্তা-সংক্রান্ত বিষয়ে ঐকমত্য প্রায় ৯৫ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছেছে।

জেলেনস্কি বলেছেন, খসড়া নথিতে যুক্তরাষ্ট্র ১৫ বছরের মেয়াদে নিরাপত্তা গ্যারান্টির প্রস্তাব দিয়েছে। তবে ইউক্রেন এই মেয়াদ ৩০ থেকে ৫০ বছর করার দাবি জানাচ্ছে, যাতে ভবিষ্যতে রাশিয়ার আক্রমণ স্থায়ীভাবে ঠেকানো যায়। এদিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইউরোপীয় দেশগুলোকেও এই নিরাপত্তা প্রচেষ্টায় বড় ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।

তবে বর্তমানে সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে দনবাস (দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক) অঞ্চল। রাশিয়া এই পুরো অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ চায়। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই ইস্যুটিকে ‘অমীমাংসিত’ বললেও দাবি করেছেন, তাঁরা সমস্যা সমাধানের খুব কাছাকাছি আছেন।

জেলেনস্কি প্রস্তাব দিয়েছেন, যেকোনো শান্তি পরিকল্পনা চূড়ান্ত করার আগে ইউক্রেনে একটি গণভোট হওয়া উচিত। আর এই ভোটের জন্য কমপক্ষে ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি প্রয়োজন। তবে ক্রেমলিন এই ধরনের অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে।

এদিকে জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকের ঠিক আগে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দীর্ঘ এক ঘণ্টা টেলিফোনে কথা বলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পুতিন ও ট্রাম্প একমত হয়েছেন, ইউক্রেন ও ইউরোপের প্রস্তাবিত অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি শুধু সংঘাতকেই দীর্ঘায়িত করবে।

পুতিন দাবি করেছেন, ইউক্রেনকে দনবাস, ঝাপোরিঝিয়া ও খেরসন থেকে সৈন্য সরিয়ে নিতে হবে এবং ন্যাটোতে যোগদানের আশা ত্যাগ করতে হবে।

জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকের পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে একটি ‘ত্রিপক্ষীয় আলোচনার’ ইঙ্গিত দিয়েছেন। আগামী জানুয়ারি মাসে হোয়াইট হাউসে ইউরোপীয় নেতাদের উপস্থিতিতে ইউক্রেনীয় প্রতিনিধিদল এবং মার্কিন প্রতিনিধিদের মধ্যে এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।

এদিকে আলোচনার মধ্যেও ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে পাল্টাপাল্টি ড্রোন হামলা অব্যাহত রয়েছে। রোববার রাতে রাশিয়া ইউক্রেনের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে ২৫টি ড্রোন হামলা চালায়, যার মধ্যে ২১টি ভূপাতিত করার দাবি করেছে কিয়েভ। অন্যদিকে রাশিয়া ব্রায়ানস্ক অঞ্চলে ৮৯টি ইউক্রেনীয় ইউএভি প্রতিহত করার কথা জানিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

নাহিদকে শুভকামনা জানিয়ে সরে গেলেন জামায়াতের আতিক

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা এনসিপি নেত্রী মনজিলা ঝুমার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মেক্সিকোতে যাত্রীবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে ১৩ জনের মৃত্যু, আহত শতাধিক

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ৪৯
মেক্সিকোর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ওয়াহাকা রাজ্যে একটি যাত্রীবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত হয়। ছবি: বিবিসি
মেক্সিকোর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ওয়াহাকা রাজ্যে একটি যাত্রীবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত হয়। ছবি: বিবিসি

মেক্সিকোতে যাত্রীবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে অন্তত ১৩ জন নিহত ও ১০০ জন আহত হয়েছেন। দেশটির নৌবাহিনীর বরাতে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ওয়াহাকা রাজ্যে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নৌবাহিনী জানিয়েছে, মেক্সিকো উপসাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরের মধ্যবর্তী রুটে চলাচল করে ওই ট্রেন। ট্রেনটিতে ২৪১ জন যাত্রী ও ৯ জন ক্রু ছিলেন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে ৩৬ জনকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

কর্তৃপক্ষ জানায়, নিজান্দা শহরের কাছে একটি বাঁক ঘোরার সময় ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়।

ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন মেক্সিকোর অ্যাটর্নি জেনারেল।

মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লাউডিয়া শেইনবাউম বলেন, আহত ব্যক্তিদের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তিনি আরও জানান, নেভির সেক্রেটারিসহ সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাচ্ছেন।

দুর্ঘটনাস্থল থেকে প্রকাশিত ছবিতে দেখা গেছে, উদ্ধারকর্মীরা লাইনচ্যুত ট্রেন থেকে যাত্রীদের নামতে সহায়তা করছেন। ট্রেনটি রেললাইন থেকে ছিটকে পড়ে আংশিকভাবে একটি খাদের পাশে কাত হয়ে যায়।

নৌবাহিনী জানিয়েছে, প্রশান্ত মহাসাগরের বন্দর সালিনা ক্রুজকে উপসাগরীয় উপকূলের কোয়াটজাকোয়ালকোসের সঙ্গে যুক্ত করা ‘ইন্টারওশেনিক’ (Interoceanic) ট্রেনটিতে দুটি লোকোমোটিভ ও চারটি যাত্রীবাহী বগি ছিল। মেক্সিকোর নৌবাহিনী দেশটির রেলওয়ে নেটওয়ার্ক পরিচালনা করে।

ওয়াহাকা রাজ্যের গভর্নর সলোমোন জারা ক্রুজ এক বিবৃতিতে দুর্ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেন। তিনি জানান, ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় রাজ্য সরকার ফেডারেল সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছে।

আঞ্চলিক অর্থনীতি চাঙা করতে সাবেক প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেস ম্যানুয়েল লোপেজ ওব্রাদরের উদ্যোগে দুই বছর আগে ইন্টারওশেনিক রেলসংযোগটি উদ্বোধন করা হয়েছিল।

আটলান্টিক মহাসাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরের মধ্যবর্তী দূরত্ব কমিয়ে আনতে তেহুয়ান্তেপেক ইস্থমাস এলাকাজুড়ে রেল যোগাযোগ আধুনিকায়নের লক্ষ্যে অঞ্চলটিকে একটি কৌশলগত বাণিজ্য করিডোরে রূপ দিতে চেয়েছে মেক্সিকো সরকার। এর অংশ হিসেবে বন্দর, রেলপথ ও শিল্প অবকাঠামো সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। এই রেল পরিষেবাটি দক্ষিণ মেক্সিকোতে যাত্রী ও পণ্যবাহী রেল যোগাযোগ বৃদ্ধি এবং আঞ্চলিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের একটি বড় অংশ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

নাহিদকে শুভকামনা জানিয়ে সরে গেলেন জামায়াতের আতিক

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা এনসিপি নেত্রী মনজিলা ঝুমার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত