জাহাঙ্গীর আলম

নভেল করোনাভাইরাসের নতুন নতুন ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে বিপাকে পড়েছেন বিজ্ঞানীরা। অবিশ্বাস্য কম সময়ের মধ্যে টিকা তৈরির সাফল্য এলেও নতুন ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে এসব টিকার কার্যকারিতা নিয়ে সংশয় কাটছে না। এর মধ্যে আরও নতুন করোনাভাইরাসের মহামারি দুয়ারে কড়া নাড়ছে বলে সতর্ক করছেন বিজ্ঞানীরা। ফলে এমন একটি টিকার সন্ধান চলছে যা এই নতুন করোনাভাইরাসের সব ধরনের ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে মানুষকে আজীবন না হলেও অন্তত দীর্ঘ সময় সুরক্ষা দেবে।
সেই পথে অনেকখানি এগিয়ে গেছেন লিনফা ওয়াং। শুধু তা-ই নয়, এমন টিকা উদ্ভাবন সম্ভব যা সব ধরনের করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে মানুষকে সুরক্ষা দিতে সক্ষম হবে। ওয়াংয়ের গবেষণায় এমন আশার আলোই দেখা দিয়েছে।
২০২০ সালের গোড়ার দিকে কোভিড-১৯ ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে, লিনফা ওয়াং কয়েকটি ধারণা নিয়ে কাজ করতে শুরু করেন। এর মধ্যে একটি হলো পূর্ববর্তী করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব থেকে বেঁচে যাওয়া লোকদের রক্ত পরীক্ষা করা।
ওয়াং একজন ভাইরোলজিস্ট। তিনি ডিউক-এনইউএস মেডিকেল স্কুলে কাজ করেন। ডিউক এবং সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির মধ্যে সহযোগিতায় কয়েক দশক ধরে বাদুড়-বাহিত ভাইরাস নিয়ে গবেষণা করছেন।
ওয়াং দেখিয়েছেন, ২০০৩ সালে ছড়িয়ে পড়া সার্স-কোভ-১ (সার্স নামেই পরিচিত) প্রায় ৮০০ মানুষের প্রাণ নিয়েছিল, সেটি সম্ভবত অশ্বক্ষুরাকৃতির বাদুড় থেকে মানুষের শরীরে সংক্রমিত হয়।
ওয়াংয়ের নতুন তত্ত্বটি ছিল যে, যারা এই এই মূল সার্সে আক্রান্ত হওয়ার পর বেঁচে গিয়েছিলেন তাঁদের শরীরে নিশ্চয় এমন অ্যান্টিবডি রয়েছে যা নতুন সার্স-কোভ-২-এর বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়তা করতে পারে।
প্রাথমিকভাবে ওয়াং শুধু সার্সের পুরোনো সংস্করণের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি আছে এমন লোকদের রক্ত পরীক্ষা করেন। কিন্তু এ বছরের শুরুর দিকে কোভিডের বেশ কয়েকটি ধরন ছড়িয়ে পড়া শুরু হলে তিনি সেই রোগীদের আবার পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেন। এই মুহূর্তে, সিঙ্গাপুরের সার্স থেকে বেঁচে যাওয়া অনেকে কোভিডের টিকা নিয়েছেন।
ওয়াং যা পেয়েছিলেন তা তাঁকে অবাক করেছিল। কোভিড টিকা সার্স সারভাইভারদের শরীরে সুপার-অ্যান্টিবডি তৈরি করেছিল, যা সার্স এবং অন্যান্য করোনাভাইরাস থেকেও তাঁদের সুরক্ষা দিচ্ছে।
পরীক্ষায় দেখা গেছে, ওই আট রোগীর সবার এমন অ্যান্টিবডি ছিল যা টেস্ট-টিউব পরীক্ষায় মানুষকে কখনো সংক্রমিত করেনি এমন পাঁচটি ভিন্ন বাদুড় এবং প্যাঙ্গোলিন (পিঁপড়েভুক/বনরুই) বাহিত করোনাভাইরাস স্ট্রেনকে প্রতিহত করেছে।
গত আগস্টে নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিনে এই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। ওয়াংয়ের গবেষণার ফলাফলগুলো একটি সর্বজনীন করোনাভাইরাস টিকা উদ্ভাবনের সম্ভাবনাকে জোরালো করেছে।
এমন একটা কিছুরই প্রয়োজন তীব্রভাবে অনুভব করছেন সারা দুনিয়ার জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। কারণ মাত্র ২০ বছরে তিনটি নতুন করোনাভাইরাস আবির্ভূত হয়েছে: প্রথমে সার্স, তারপর ২০১২ সালে মার্স আর এখন কোভিড-১৯। এ পরিপ্রেক্ষিতে চলমান কোভিড তো বটেই সম্ভাব্য সব করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব থেকে সুরক্ষা দেবে এমন টিকা তৈরির চেষ্টা বেশ জোরেশোরে চলছে।
সিঙ্গাপুরের সেন্ট্রাল বিজনেস ডিস্ট্রিক্ট থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে বিশাল ল্যাবে এমন টিকারই প্রোটোটাইপ নিয়ে কাজ করছেন ওয়াং। কোভিড-টিকা পাওয়া সার্স সারভাইভারদের মধ্যে যে ধরনের প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়েছে, একই ধরনের বিস্তৃত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করতে পারে এমন টিকা চাইছেন তিনি।
ওয়াংয়ের কৌশলটি হলো- কোভিড স্পাইক প্রোটিন সংবলিত একটি প্রথম ডোজের সঙ্গে হাইব্রিড সার্স প্রোটিন সমৃদ্ধ দ্বিতীয় ডোজের সংমিশ্রণ। যদি এটি কাজ করে, ওয়াং বলেন, ইঁদুরের শরীরে পরিচালিত পরীক্ষাগুলোতে যথেষ্ট ইতিবাচক ফলাফল এসেছে, কোভিড-২ বা সার্স-৩-এর সুরক্ষায় এই টিকা দেওয়া যেতে পারে।
অবশ্য শুধু ওয়াং-ই এমন টিকা নিয়ে কাজ করছেন এমন নয়। সারা বিশ্বে এরই মধ্যে এই প্রকল্পে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছে।
মেলানি স্যাভিল, কোয়ালিশন ফর এপিডেমিক প্রিপারেডনেস ইনোভেশনস-এর টিকা গবেষণা ও উন্নয়নের প্রধান। তিনি বলেন, ‘আমরা এমন কিছু চাই যা বিস্তৃতভাবে প্রতিরক্ষামূলক, যাতে পরেরটি যখন কোনো প্রাণী থেকে মানুষের শরীরে সংক্রমণ ঘটানো শুরু করবে তখন আমাদের হাতে টিকা প্রস্তুত থাকবে।’
অসলো ভিত্তিক অলাভজনক এ প্রতিষ্ঠান আগামী পাঁচ বছরে ‘ব্রড-অ্যাক্টিং করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন’ তৈরি করতে ২০০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করার পরিকল্পনা করেছে।
ওয়েইসম্যান, যিনি ফাইজার এবং মডার্নার মেসেঞ্জার আরএনএ ভ্যাকসিনে ব্যবহৃত মূল প্রযুক্তির পথিকৃৎ, সব ধরনের করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেবে এমন টিকা নিয়ে গবেষণাকারীদের মধ্যে তিনিও রয়েছেন।
গবেষকদের লক্ষ্য হলো- প্রাথমিকভাবে, এই জাতীয় টিকাগুলো কোভিডের মোটামুটি কাছাকাছি ধরনের বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেবে। তবে আরও উচ্চাভিলাষী লক্ষ্য হলো- সাধারণ সর্দির জন্য দায়ী এমন বেশ কয়েকটি স্ট্রেনসহ করোনাভাইরাসের বিস্তৃত প্রজাতি ও ধরনের বিরুদ্ধে সুরক্ষা নিশ্চিত করা।
প্রকৃতিতে সুপ্ত থাকা বাদুড়-বাহিত করোনাভাইরাসগুলোর আধিক্যের কারণে, কোভিডের মতো আরও মহামারির আশঙ্কা করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। ইউএস ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেসের পরিচালক অ্যান্থনি ফাউসিও এ আশঙ্কা থেকে করোনাভাইরাসের সমস্ত পুনরাবৃত্তিকে ঠেকিয়ে দিতে পারবে এমন টিকা উদ্ভাবনের ওপর জোর দিচ্ছেন।
গত সেপ্টেম্বরে ফাউসির সংস্থা হার্ভার্ড, ডিউক এবং উইসকনসিন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের দ্বারা পরিচালিত প্যান-করোনাভাইরাস টিকা নিয়ে গবেষণার জন্য ৩৬ দশমিক ৩ মিলিয়ন ডলার তহবিল ঘোষণা করেছে।
কয়েকটি বায়োটেক কোম্পানির সঙ্গে এক ডজনেরও বেশি একাডেমিক দল এই সমস্যা নিয়ে কাজ করছে। ডিউক এবং ইউএস ইউনিভার্সিটির ল্যাবগুলো এরই মধ্যে সার্স-কোভ-১, সার্স-কোভ-২ এবং এর সংশ্লিষ্ট বাদুড়-বাহিত করোনাভাইরাসসহ শক্তিশালী ক্রস-ভাইরাস (প্রাণী থেকে মানুষে সংক্রমণে সক্ষম) প্রতিরোধ ক্ষমতা প্রদর্শন করে এমন টিকার প্রোটোটাইপ তৈরি করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াল্টার রিড আর্মি ইনস্টিটিউট অব রিসার্চেরও একটি শট রয়েছে যা একাধিক করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেওয়ার সক্ষমতা দেখিয়েছে। এটি এখন মানব শরীরে পরীক্ষার প্রথম ধাপে রয়েছে। এত দূর আগানো প্রথম সারির টিকার মধ্যে এটি অন্যতম।
তবে এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রশ্নের উত্তর এখনো মেলেনি: যেমন, ভাইরাসের কোন অংশগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করতে হবে; কোন প্রযুক্তি সবচেয়ে ভালো কাজ করে এবং টিকাগুলো কতটা বিস্তৃত প্রজাতি ও ভ্যারিয়েন্টে কাজ করবে।
ফাইজার, মডার্না এবং আরও কয়েকটি বড় কোভিড টিকা কোম্পানি এখন পর্যন্ত অবশ্য এ খাতে খুব বেশি বিনিয়োগ করছে না। তারা এটি নিয়ে একাডেমিক গবেষণার চূড়ান্ত দেখার অপেক্ষা করছে। তারা বুস্টার ডোজ নিয়ে ব্যস্ত। তাদের দৃষ্টি নিবদ্ধ এখন ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট প্রতিরোধের উপায় খোঁজায়।
অবশ্য বিজ্ঞানীরা দীর্ঘদিন ধরেই এমন একটি টিকা তৈরির স্বপ্ন দেখছেন যা প্রতি বছর ফ্লুর টিকা নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা দূর করবে। দৃশ্যমান অগ্রগতি অবশ্য এখনো হয়নি। এখানে মূল সমস্যা হলো, মিউটেশনের গতি। ইনফ্লুয়েঞ্জা অত্যন্ত দ্রুত বিকশিত হয়। করোনাভাইরাসগুলো যে গতিতে বিকশিত হয় তা নিয়ে বিতর্ক আছে। তবে মহামারিতে গত দুই বছরে যে পরিমাণ ক্ষতি হয়ে গেছে তাতে বিস্তৃত প্রজাতি ও ভ্যারিয়েন্টে কাজ করবে এমন একটা সমাধান আনতেই হবে। সর্বজনীন টিকা নিয়ে কাজ করছেন ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির স্ট্রাকচারাল বায়োলজিস্ট পামেলা জর্কম্যান। তাঁর মতে, ‘কিছু না করাটা বোকামি হবে।’
এখানে ফ্লু টিকার ইতিহাস অনেকখানি আশা দিতে পারে। ১৯৪০-এর দশকে ইউনিভার্সিটি অব মিশিগানের ভাইরোলজিস্ট থমাস ফ্রান্সিস মার্কিন সেনাবাহিনীর সাহায্যে প্রথম দিকের টিকা তৈরি করেছিলেন। সম্ভাব্য মহামারিতে জনাকীর্ণ ব্যারাকে সেনাদের সুরক্ষা নিয়ে তাঁরা চিন্তিত ছিলেন। ফ্রান্সিস এবং তাঁর উত্তরাধিকারী জোনাস সালক নিষিক্ত মুরগির ডিমে টিকা তৈরি করেছিলেন। এ পদ্ধতি আজও ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। বহু গবেষণায় এগুলো বেশ কার্যকারিতা দেখিয়েছে। ১৯৪৫ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশেষ প্রশিক্ষণ গ্রহণকারী সেনাদের দেওয়া একটি ইনফ্লুয়েঞ্জা বি শট ৮৮ শতাংশ কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। যেখানে বর্তমান এমআরএনএ কোভিড টিকা ৯০ শতাংশের বেশি কার্যকারিতা দেখিয়েছে বলে দাবি করা হয়। ‘ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের ক্রমবর্ধমান ধরনের বিরুদ্ধে কার্যকর প্রতিষেধক দেওয়ার দৃষ্টিভঙ্গি অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক’, ১৯৫৩ সালের একটি প্রকাশনার উপসংহারে এমন কথাই বলেছিলেন থমাস ফ্রান্সিস।
প্রথম দিকের ফ্লু শটগুলো দুটি ভাইরাল স্ট্রেন এবং ১৯৭০-এর দশকে তিনটি এবং শেষ দশকে চারটি স্ট্রেনের বিরুদ্ধে কার্যকর ছিল। কিন্তু টিকার ইতিহাসে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে, চিকিৎসকেরা সঠিকভাবে পরিমাপ করতে পারেননি যে বাস্তব জগতে শটগুলো কীভাবে কাজ করে। আধুনিক ভাইরাল লোড টেস্টের পর কোভিড নির্ণয়ের জন্য পিসিআর পরীক্ষাগুলোর মতো পদ্ধতি ১৯৯০-এর দশকেই ব্যবহার শুরু হয়েছিল। এর মাধ্যমে গবেষকেরা বাস্তব-বিশ্বে ফ্লু টিকার কার্যকারিতা আরও সঠিকভাবে নির্ণয় করতে সক্ষম হচ্ছেন। ফলে ফলাফলগুলো কীভাবে পরিবর্তিত হচ্ছে সেটি ধীরে ধীরে স্পষ্ট হয়ে উঠছে।
বছরের পর বছর ধরে গবেষকেরা আরও আধুনিক, দ্রুত উৎপাদন পদ্ধতি ব্যবহার করে ফ্লু টিকা উদ্ভাবনের প্রক্রিয়া নিয়ে কাজ করেছেন। তবে একটি সর্বজনীন টিকা তৈরির প্রচেষ্টা যা সব স্ট্রেনের বিরুদ্ধে কাজ করবে, ২০০৯ সালে ইনফ্লুয়েঞ্জার এইচ১এন১ (সোয়াইন ফ্লু) সংস্করণ বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ার আগে পর্যন্ত সেভাবে গুরুত্ব পায়নি।
তবে এখানে বড় সমস্যা হচ্ছে, কোনো সংস্থাই এ খাতে বড় বিনিয়োগ নিয়ে এগিয়ে আসছে না। জনসাধারণের প্রয়োজন এবং বাণিজ্যিক বাস্তবতার মধ্যে অন্য অনেক দ্বন্দ্বের মতো, সরকারি এবং অলাভজনক তহবিলের বড় প্রয়োজন এখানেও জরুরি। কোথা থেকে এ অর্থ আসবে তা এখনো স্পষ্ট নয়। শেষ পর্যন্ত দেশগুলো সম্ভাব্য ক্রেতা এবং শটগুলো কেনা ও মজুত করার নিশ্চয়তা না দিলে বেসরকারি ও অলাভজনক প্রতিষ্ঠানগুলো এগোতে পারবে না।

নভেল করোনাভাইরাসের নতুন নতুন ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে বিপাকে পড়েছেন বিজ্ঞানীরা। অবিশ্বাস্য কম সময়ের মধ্যে টিকা তৈরির সাফল্য এলেও নতুন ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে এসব টিকার কার্যকারিতা নিয়ে সংশয় কাটছে না। এর মধ্যে আরও নতুন করোনাভাইরাসের মহামারি দুয়ারে কড়া নাড়ছে বলে সতর্ক করছেন বিজ্ঞানীরা। ফলে এমন একটি টিকার সন্ধান চলছে যা এই নতুন করোনাভাইরাসের সব ধরনের ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে মানুষকে আজীবন না হলেও অন্তত দীর্ঘ সময় সুরক্ষা দেবে।
সেই পথে অনেকখানি এগিয়ে গেছেন লিনফা ওয়াং। শুধু তা-ই নয়, এমন টিকা উদ্ভাবন সম্ভব যা সব ধরনের করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে মানুষকে সুরক্ষা দিতে সক্ষম হবে। ওয়াংয়ের গবেষণায় এমন আশার আলোই দেখা দিয়েছে।
২০২০ সালের গোড়ার দিকে কোভিড-১৯ ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে, লিনফা ওয়াং কয়েকটি ধারণা নিয়ে কাজ করতে শুরু করেন। এর মধ্যে একটি হলো পূর্ববর্তী করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব থেকে বেঁচে যাওয়া লোকদের রক্ত পরীক্ষা করা।
ওয়াং একজন ভাইরোলজিস্ট। তিনি ডিউক-এনইউএস মেডিকেল স্কুলে কাজ করেন। ডিউক এবং সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির মধ্যে সহযোগিতায় কয়েক দশক ধরে বাদুড়-বাহিত ভাইরাস নিয়ে গবেষণা করছেন।
ওয়াং দেখিয়েছেন, ২০০৩ সালে ছড়িয়ে পড়া সার্স-কোভ-১ (সার্স নামেই পরিচিত) প্রায় ৮০০ মানুষের প্রাণ নিয়েছিল, সেটি সম্ভবত অশ্বক্ষুরাকৃতির বাদুড় থেকে মানুষের শরীরে সংক্রমিত হয়।
ওয়াংয়ের নতুন তত্ত্বটি ছিল যে, যারা এই এই মূল সার্সে আক্রান্ত হওয়ার পর বেঁচে গিয়েছিলেন তাঁদের শরীরে নিশ্চয় এমন অ্যান্টিবডি রয়েছে যা নতুন সার্স-কোভ-২-এর বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়তা করতে পারে।
প্রাথমিকভাবে ওয়াং শুধু সার্সের পুরোনো সংস্করণের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি আছে এমন লোকদের রক্ত পরীক্ষা করেন। কিন্তু এ বছরের শুরুর দিকে কোভিডের বেশ কয়েকটি ধরন ছড়িয়ে পড়া শুরু হলে তিনি সেই রোগীদের আবার পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেন। এই মুহূর্তে, সিঙ্গাপুরের সার্স থেকে বেঁচে যাওয়া অনেকে কোভিডের টিকা নিয়েছেন।
ওয়াং যা পেয়েছিলেন তা তাঁকে অবাক করেছিল। কোভিড টিকা সার্স সারভাইভারদের শরীরে সুপার-অ্যান্টিবডি তৈরি করেছিল, যা সার্স এবং অন্যান্য করোনাভাইরাস থেকেও তাঁদের সুরক্ষা দিচ্ছে।
পরীক্ষায় দেখা গেছে, ওই আট রোগীর সবার এমন অ্যান্টিবডি ছিল যা টেস্ট-টিউব পরীক্ষায় মানুষকে কখনো সংক্রমিত করেনি এমন পাঁচটি ভিন্ন বাদুড় এবং প্যাঙ্গোলিন (পিঁপড়েভুক/বনরুই) বাহিত করোনাভাইরাস স্ট্রেনকে প্রতিহত করেছে।
গত আগস্টে নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিনে এই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। ওয়াংয়ের গবেষণার ফলাফলগুলো একটি সর্বজনীন করোনাভাইরাস টিকা উদ্ভাবনের সম্ভাবনাকে জোরালো করেছে।
এমন একটা কিছুরই প্রয়োজন তীব্রভাবে অনুভব করছেন সারা দুনিয়ার জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। কারণ মাত্র ২০ বছরে তিনটি নতুন করোনাভাইরাস আবির্ভূত হয়েছে: প্রথমে সার্স, তারপর ২০১২ সালে মার্স আর এখন কোভিড-১৯। এ পরিপ্রেক্ষিতে চলমান কোভিড তো বটেই সম্ভাব্য সব করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব থেকে সুরক্ষা দেবে এমন টিকা তৈরির চেষ্টা বেশ জোরেশোরে চলছে।
সিঙ্গাপুরের সেন্ট্রাল বিজনেস ডিস্ট্রিক্ট থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে বিশাল ল্যাবে এমন টিকারই প্রোটোটাইপ নিয়ে কাজ করছেন ওয়াং। কোভিড-টিকা পাওয়া সার্স সারভাইভারদের মধ্যে যে ধরনের প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়েছে, একই ধরনের বিস্তৃত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করতে পারে এমন টিকা চাইছেন তিনি।
ওয়াংয়ের কৌশলটি হলো- কোভিড স্পাইক প্রোটিন সংবলিত একটি প্রথম ডোজের সঙ্গে হাইব্রিড সার্স প্রোটিন সমৃদ্ধ দ্বিতীয় ডোজের সংমিশ্রণ। যদি এটি কাজ করে, ওয়াং বলেন, ইঁদুরের শরীরে পরিচালিত পরীক্ষাগুলোতে যথেষ্ট ইতিবাচক ফলাফল এসেছে, কোভিড-২ বা সার্স-৩-এর সুরক্ষায় এই টিকা দেওয়া যেতে পারে।
অবশ্য শুধু ওয়াং-ই এমন টিকা নিয়ে কাজ করছেন এমন নয়। সারা বিশ্বে এরই মধ্যে এই প্রকল্পে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছে।
মেলানি স্যাভিল, কোয়ালিশন ফর এপিডেমিক প্রিপারেডনেস ইনোভেশনস-এর টিকা গবেষণা ও উন্নয়নের প্রধান। তিনি বলেন, ‘আমরা এমন কিছু চাই যা বিস্তৃতভাবে প্রতিরক্ষামূলক, যাতে পরেরটি যখন কোনো প্রাণী থেকে মানুষের শরীরে সংক্রমণ ঘটানো শুরু করবে তখন আমাদের হাতে টিকা প্রস্তুত থাকবে।’
অসলো ভিত্তিক অলাভজনক এ প্রতিষ্ঠান আগামী পাঁচ বছরে ‘ব্রড-অ্যাক্টিং করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন’ তৈরি করতে ২০০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করার পরিকল্পনা করেছে।
ওয়েইসম্যান, যিনি ফাইজার এবং মডার্নার মেসেঞ্জার আরএনএ ভ্যাকসিনে ব্যবহৃত মূল প্রযুক্তির পথিকৃৎ, সব ধরনের করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেবে এমন টিকা নিয়ে গবেষণাকারীদের মধ্যে তিনিও রয়েছেন।
গবেষকদের লক্ষ্য হলো- প্রাথমিকভাবে, এই জাতীয় টিকাগুলো কোভিডের মোটামুটি কাছাকাছি ধরনের বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেবে। তবে আরও উচ্চাভিলাষী লক্ষ্য হলো- সাধারণ সর্দির জন্য দায়ী এমন বেশ কয়েকটি স্ট্রেনসহ করোনাভাইরাসের বিস্তৃত প্রজাতি ও ধরনের বিরুদ্ধে সুরক্ষা নিশ্চিত করা।
প্রকৃতিতে সুপ্ত থাকা বাদুড়-বাহিত করোনাভাইরাসগুলোর আধিক্যের কারণে, কোভিডের মতো আরও মহামারির আশঙ্কা করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। ইউএস ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেসের পরিচালক অ্যান্থনি ফাউসিও এ আশঙ্কা থেকে করোনাভাইরাসের সমস্ত পুনরাবৃত্তিকে ঠেকিয়ে দিতে পারবে এমন টিকা উদ্ভাবনের ওপর জোর দিচ্ছেন।
গত সেপ্টেম্বরে ফাউসির সংস্থা হার্ভার্ড, ডিউক এবং উইসকনসিন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের দ্বারা পরিচালিত প্যান-করোনাভাইরাস টিকা নিয়ে গবেষণার জন্য ৩৬ দশমিক ৩ মিলিয়ন ডলার তহবিল ঘোষণা করেছে।
কয়েকটি বায়োটেক কোম্পানির সঙ্গে এক ডজনেরও বেশি একাডেমিক দল এই সমস্যা নিয়ে কাজ করছে। ডিউক এবং ইউএস ইউনিভার্সিটির ল্যাবগুলো এরই মধ্যে সার্স-কোভ-১, সার্স-কোভ-২ এবং এর সংশ্লিষ্ট বাদুড়-বাহিত করোনাভাইরাসসহ শক্তিশালী ক্রস-ভাইরাস (প্রাণী থেকে মানুষে সংক্রমণে সক্ষম) প্রতিরোধ ক্ষমতা প্রদর্শন করে এমন টিকার প্রোটোটাইপ তৈরি করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াল্টার রিড আর্মি ইনস্টিটিউট অব রিসার্চেরও একটি শট রয়েছে যা একাধিক করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেওয়ার সক্ষমতা দেখিয়েছে। এটি এখন মানব শরীরে পরীক্ষার প্রথম ধাপে রয়েছে। এত দূর আগানো প্রথম সারির টিকার মধ্যে এটি অন্যতম।
তবে এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রশ্নের উত্তর এখনো মেলেনি: যেমন, ভাইরাসের কোন অংশগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করতে হবে; কোন প্রযুক্তি সবচেয়ে ভালো কাজ করে এবং টিকাগুলো কতটা বিস্তৃত প্রজাতি ও ভ্যারিয়েন্টে কাজ করবে।
ফাইজার, মডার্না এবং আরও কয়েকটি বড় কোভিড টিকা কোম্পানি এখন পর্যন্ত অবশ্য এ খাতে খুব বেশি বিনিয়োগ করছে না। তারা এটি নিয়ে একাডেমিক গবেষণার চূড়ান্ত দেখার অপেক্ষা করছে। তারা বুস্টার ডোজ নিয়ে ব্যস্ত। তাদের দৃষ্টি নিবদ্ধ এখন ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট প্রতিরোধের উপায় খোঁজায়।
অবশ্য বিজ্ঞানীরা দীর্ঘদিন ধরেই এমন একটি টিকা তৈরির স্বপ্ন দেখছেন যা প্রতি বছর ফ্লুর টিকা নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা দূর করবে। দৃশ্যমান অগ্রগতি অবশ্য এখনো হয়নি। এখানে মূল সমস্যা হলো, মিউটেশনের গতি। ইনফ্লুয়েঞ্জা অত্যন্ত দ্রুত বিকশিত হয়। করোনাভাইরাসগুলো যে গতিতে বিকশিত হয় তা নিয়ে বিতর্ক আছে। তবে মহামারিতে গত দুই বছরে যে পরিমাণ ক্ষতি হয়ে গেছে তাতে বিস্তৃত প্রজাতি ও ভ্যারিয়েন্টে কাজ করবে এমন একটা সমাধান আনতেই হবে। সর্বজনীন টিকা নিয়ে কাজ করছেন ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির স্ট্রাকচারাল বায়োলজিস্ট পামেলা জর্কম্যান। তাঁর মতে, ‘কিছু না করাটা বোকামি হবে।’
এখানে ফ্লু টিকার ইতিহাস অনেকখানি আশা দিতে পারে। ১৯৪০-এর দশকে ইউনিভার্সিটি অব মিশিগানের ভাইরোলজিস্ট থমাস ফ্রান্সিস মার্কিন সেনাবাহিনীর সাহায্যে প্রথম দিকের টিকা তৈরি করেছিলেন। সম্ভাব্য মহামারিতে জনাকীর্ণ ব্যারাকে সেনাদের সুরক্ষা নিয়ে তাঁরা চিন্তিত ছিলেন। ফ্রান্সিস এবং তাঁর উত্তরাধিকারী জোনাস সালক নিষিক্ত মুরগির ডিমে টিকা তৈরি করেছিলেন। এ পদ্ধতি আজও ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। বহু গবেষণায় এগুলো বেশ কার্যকারিতা দেখিয়েছে। ১৯৪৫ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশেষ প্রশিক্ষণ গ্রহণকারী সেনাদের দেওয়া একটি ইনফ্লুয়েঞ্জা বি শট ৮৮ শতাংশ কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। যেখানে বর্তমান এমআরএনএ কোভিড টিকা ৯০ শতাংশের বেশি কার্যকারিতা দেখিয়েছে বলে দাবি করা হয়। ‘ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের ক্রমবর্ধমান ধরনের বিরুদ্ধে কার্যকর প্রতিষেধক দেওয়ার দৃষ্টিভঙ্গি অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক’, ১৯৫৩ সালের একটি প্রকাশনার উপসংহারে এমন কথাই বলেছিলেন থমাস ফ্রান্সিস।
প্রথম দিকের ফ্লু শটগুলো দুটি ভাইরাল স্ট্রেন এবং ১৯৭০-এর দশকে তিনটি এবং শেষ দশকে চারটি স্ট্রেনের বিরুদ্ধে কার্যকর ছিল। কিন্তু টিকার ইতিহাসে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে, চিকিৎসকেরা সঠিকভাবে পরিমাপ করতে পারেননি যে বাস্তব জগতে শটগুলো কীভাবে কাজ করে। আধুনিক ভাইরাল লোড টেস্টের পর কোভিড নির্ণয়ের জন্য পিসিআর পরীক্ষাগুলোর মতো পদ্ধতি ১৯৯০-এর দশকেই ব্যবহার শুরু হয়েছিল। এর মাধ্যমে গবেষকেরা বাস্তব-বিশ্বে ফ্লু টিকার কার্যকারিতা আরও সঠিকভাবে নির্ণয় করতে সক্ষম হচ্ছেন। ফলে ফলাফলগুলো কীভাবে পরিবর্তিত হচ্ছে সেটি ধীরে ধীরে স্পষ্ট হয়ে উঠছে।
বছরের পর বছর ধরে গবেষকেরা আরও আধুনিক, দ্রুত উৎপাদন পদ্ধতি ব্যবহার করে ফ্লু টিকা উদ্ভাবনের প্রক্রিয়া নিয়ে কাজ করেছেন। তবে একটি সর্বজনীন টিকা তৈরির প্রচেষ্টা যা সব স্ট্রেনের বিরুদ্ধে কাজ করবে, ২০০৯ সালে ইনফ্লুয়েঞ্জার এইচ১এন১ (সোয়াইন ফ্লু) সংস্করণ বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ার আগে পর্যন্ত সেভাবে গুরুত্ব পায়নি।
তবে এখানে বড় সমস্যা হচ্ছে, কোনো সংস্থাই এ খাতে বড় বিনিয়োগ নিয়ে এগিয়ে আসছে না। জনসাধারণের প্রয়োজন এবং বাণিজ্যিক বাস্তবতার মধ্যে অন্য অনেক দ্বন্দ্বের মতো, সরকারি এবং অলাভজনক তহবিলের বড় প্রয়োজন এখানেও জরুরি। কোথা থেকে এ অর্থ আসবে তা এখনো স্পষ্ট নয়। শেষ পর্যন্ত দেশগুলো সম্ভাব্য ক্রেতা এবং শটগুলো কেনা ও মজুত করার নিশ্চয়তা না দিলে বেসরকারি ও অলাভজনক প্রতিষ্ঠানগুলো এগোতে পারবে না।

বাংলাদেশে যেখানে কিডনি প্রতিস্থাপন এখনো সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে, সেখানে অসহায় ও দরিদ্র রোগীদের শেষ ভরসা হয়ে উঠেছেন কিডনির শল্যচিকিৎসক অধ্যাপক কামরুল ইসলাম। দেশে যত কিডনি প্রতিস্থাপিত হয়, সেগুলোর একটি বড় অংশই করেন তিনি। নিজের প্রতিষ্ঠিত সেন্টার ফর কিডনি ডিজিজেস...
১ দিন আগে
প্রথাগত চিকিৎসা বলতে এমন স্বাস্থ্য ও সুস্থতার ব্যবস্থাকে বোঝায়, যেগুলোর উদ্ভব আধুনিক বায়োমেডিসিনের আগেই হয়েছে। এসব চিকিৎসা পদ্ধতির ধরন নানাবিধ—ভেষজ চা থেকে শুরু করে ভারতের আয়ুর্বেদিক চিকিৎসাব্যবস্থা পর্যন্ত।
৪ দিন আগে
শীতের সকাল কিংবা সন্ধ্যায় ধোঁয়া ওঠা এক বাটি খিচুড়ির চেয়ে আরামদায়ক আর কী হতে পারে। খিচুড়ি শুধু একটি খাবার নয়। শীতকাল মানে আরাম করে হরেক রকমের সবজি দিয়ে রান্না করা খিচুড়ি খাওয়া। এতে যেমন মন ভরে, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর এ খাবার রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।
৫ দিন আগে
তেজপাতা ও লবঙ্গ—উভয়ই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। এতে রয়েছে শক্তিশালী প্রদাহবিরোধী ও ব্যাকটেরিয়ারোধী গুণাবলি, যা শরীরের ভেতরে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম। তবে এই চা সাধারণত সবার জন্য নিরাপদ হলেও গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মায়েদের এটি পান করা থেকে বিরত থাকা উচিত।
৫ দিন আগেমুহাম্মাদ শফিউল্লাহ, ঢাকা

বাংলাদেশে যেখানে কিডনি প্রতিস্থাপন এখনো সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে, সেখানে অসহায় ও দরিদ্র রোগীদের শেষ ভরসা হয়ে উঠেছেন কিডনির শল্যচিকিৎসক অধ্যাপক কামরুল ইসলাম। দেশে যত কিডনি প্রতিস্থাপিত হয়, সেগুলোর একটি বড় অংশই করেন তিনি। নিজের প্রতিষ্ঠিত সেন্টার ফর কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি (সিকেডি) হাসপাতালে গতকাল মঙ্গলবার তিনি ২০০০তম কিডনি প্রতিস্থাপন সম্পন্ন করেছেন। ব্যয়বহুল এই শল্য-চিকিৎসায় নিজে কোনো পারিশ্রমিক নেন না ২০২২ সালে স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত এই চিকিৎসক।
কিডনি ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুসারে, বাংলাদেশে কিডনি রোগের পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। প্রায় ২ কোটি মানুষ কিডনির কোনো না কোনো সমস্যায় ভুগছেন। দেশে প্রতি ঘণ্টায় প্রায় পাঁচজন রোগীর মৃত্যু হচ্ছে কিডনি অকেজো হয়ে। কিডনি প্রতিস্থাপন সীমিত এবং ডায়ালাইসিস ব্যয়বহুল। ফলে অধিকাংশ রোগী চিকিৎসা না পেয়ে মারা যান। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত ও চিকিৎসা নিলে ৬০ শতাংশ রোগীর জীবন রক্ষা সম্ভব।
কামরুল ইসলামের জন্ম ১৯৬৫ সালে। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে বোর্ডের মেধাতালিকায় যথাক্রমে ১৫তম ও ১০তম স্থান লাভ করেছিলেন তিনি। এরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজের ৪০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী হিসেবে ১৯৯০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত মেডিকেল কলেজের মধ্যে সম্মিলিত এমবিবিএস পরীক্ষায় প্রথম স্থান অর্জন করে স্বর্ণপদক পান। এরপর ১৯৯৫ সালে এফসিপিএস, ২০০০ সালে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইউরোলজিতে এমএস এবং ২০০৩ সালে ইংল্যান্ডের রয়েল কলেজ থেকে এফআরসিএস ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি।
ডা. কামরুলের কর্মজীবন শুরু ১৯৯৩ সালে, বিসিএসের মাধ্যমে স্বাস্থ্য ক্যাডারে যোগ দিয়ে। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি হাসপাতালে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি এবং ২০০৭ সালে প্রথম সফল কিডনি প্রতিস্থাপন সম্পন্ন করেন। ২০১১ সালে সরকারি চাকরি ছেড়ে বেসরকারি একটি মেডিকেল কলেজে অধ্যাপক পদে দায়িত্ব নেন। পরে ২০১৪ সালে নিজ উদ্যোগে রাজধানীর শ্যামলীতে সিকেডি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন।
সিকেডি সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে ডা. কামরুলের নেতৃত্বে সপ্তাহে ছয়টি কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়। কিডনি দাতা ও গ্রহীতার জন্য একই সঙ্গে দুটি কক্ষে অস্ত্রোপচার চলে। প্রতিটি অস্ত্রোপচারে সাধারণত ১০-১২ জন চিকিৎসক অংশ নেন। যাঁদের মধ্যে থাকেন অবেদনবিদ, কিডনি বিশেষজ্ঞ, ইউরোলজির শল্যচিকিৎসকসহ অন্যান্য বিশেষজ্ঞ, পাশাপাশি নার্স ও টেকনোলজিস্ট।
ডা. কামরুল বলেন, সিকেডিতে প্রতিদিন গড়ে একটি কিডনি প্রতিস্থাপিত হয়। প্রতিটি অস্ত্রোপচারে ১০-১২ জন চিকিৎসক কাজ করেন। তিনি নিজে পারিশ্রমিক নেন না, তবে অস্ত্রোপচারে আনুষঙ্গিক খরচ থাকে। তাঁর হাসপাতালে কিডনি প্রতিস্থাপনের প্যাকেজ এখন ২ লাখ ১৫ হাজার টাকা। যার মধ্যে অস্ত্রোপচার, ওষুধ, আইসিইউ এবং অন্যান্য খরচ অন্তর্ভুক্ত। কিডনি দাতা সাধারণত ৩ থেকে ৭ দিন এবং কিডনি গ্রহীতা ৭ থেকে ১০ দিন হাসপাতালে থাকেন।
হাসপাতালের অন্যান্য সার্জারি ও চিকিৎসাসেবার আয়ের অর্থে কিডনি প্রতিস্থাপনের খরচের পুরো প্রক্রিয়া চালানো হয়। সেখানে প্রতিদিন ৭-১২টি কিডনি স্টোন সার্জারি, কিডনি ক্যানসার, প্রস্টেট ক্যানসারসহ অন্যান্য সার্জারি করা হয়। হাসপাতালে বর্তমানে চিকিৎসক, নার্স, টেকনোলজিস্টসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা চার শতাধিক। আউটডোরে প্রতিদিন ২৫০-৩০০ রোগী, ইনডোরে প্রায় ১০০ রোগী সেবা নেন। ১০০ শয্যার হাসপাতালটিতে আরও ৫০ শয্যা বাড়ানোর জন্য আবেদন করা হয়েছে।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে সিকেডি হাসপাতালে কিডনি প্রতিস্থাপন করেছেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাসিন্দা মাইনুল রহমান। ৪৪ বছর বয়সী এই ব্যবসায়ীর কিডনি অকেজো হয়ে গেলে স্ত্রীর দেওয়া কিডনি নিয়ে তাঁর শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়। ডা. কামরুল ইসলাম এই অস্ত্রোপচার করেন।
কিডনি প্রতিস্থাপনে সিকেডি হাসপাতাল সোয়া দুই লাখ টাকা নিয়েছে জানিয়ে মাইনুল রহমান গতকাল সন্ধ্যায় আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সিকেডি হাসপাতাল যদি অন্য হাসপাতালের মতো খরচ নিত, তাহলে আমরা তা বহন করতে পারতাম না। এখন প্রতি মাসে ফলোআপ চিকিৎসা প্রয়োজন হয়। সেখানে গেলে সবকিছু বিনা মূল্যে পাওয়া যায়। পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও চিকিৎসকের ফি দিতে হয় না।’
এর আগে ২০২৩ সালের অক্টোবরে স্ত্রীর দেওয়া কিডনি নিজের শরীরে প্রতিস্থাপন করেন নারায়ণগঞ্জের ৩৭ বছর বয়সী আবু বকর। তিনি বলেন, ‘ডা. কামরুল স্যার খুবই মানবিক। আমরা খরচের ভয়ে চিকিৎসায় যেতে চাইনি। তিনি কয়েকবার ফোন করে আমাদের খোঁজ নিয়েছেন, তিনি কিডনি বসিয়ে দিয়েছেন।’
ডা. কামরুল জানান, কিডনি প্রতিস্থাপন করা রোগীরা বাসায় গেলে প্রথম এক থেকে দুই বছর অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হয়; বিশেষ করে ওষুধ ঠিকমতো না খাওয়া, সময়মতো ডোজ না নেওয়া এবং অনিয়মিত জীবনধারা ঝুঁকি বাড়ায়। আবার রোগীরা খরচের ভয়ে ফলোআপ চিকিৎসায় আসতে চান না। ফলে তাঁদের এসব চিকিৎসা আজীবন বিনা মূল্যে করেন তিনি।
ডা. কামরুলের স্ত্রীও একজন চিকিৎসক। তিনি বর্তমানে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত। তাঁদের তিন মেয়ে। বড় মেয়ে শিক্ষানবিশ চিকিৎসক, মেজ মেয়ে এমবিবিএস অধ্যয়ন করছেন।
নিজের প্রতিষ্ঠিত সিকেডি হাসপাতালকে ‘বড় গাছের মতো’ দেখেন ডা. কামরুল ইসলাম। যেখানে আয়ের একটি অংশ দরিদ্র রোগী ও কিডনি প্রতিস্থাপনে ব্যয় করা হয়। তিনি বলেন, ‘মানুষকে নিখুঁত চিকিৎসা দেওয়া আমার কর্তব্য। আমি কিডনি রোগীদের খরচ হাসপাতালের অন্যান্য আয়ের মাধ্যমে বহন করি। এটি যেকোনো হাসপাতালই করতে পারে এবং এর জন্য লোকসান হয়; তা কিন্তু নয়।’

বাংলাদেশে যেখানে কিডনি প্রতিস্থাপন এখনো সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে, সেখানে অসহায় ও দরিদ্র রোগীদের শেষ ভরসা হয়ে উঠেছেন কিডনির শল্যচিকিৎসক অধ্যাপক কামরুল ইসলাম। দেশে যত কিডনি প্রতিস্থাপিত হয়, সেগুলোর একটি বড় অংশই করেন তিনি। নিজের প্রতিষ্ঠিত সেন্টার ফর কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি (সিকেডি) হাসপাতালে গতকাল মঙ্গলবার তিনি ২০০০তম কিডনি প্রতিস্থাপন সম্পন্ন করেছেন। ব্যয়বহুল এই শল্য-চিকিৎসায় নিজে কোনো পারিশ্রমিক নেন না ২০২২ সালে স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত এই চিকিৎসক।
কিডনি ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুসারে, বাংলাদেশে কিডনি রোগের পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। প্রায় ২ কোটি মানুষ কিডনির কোনো না কোনো সমস্যায় ভুগছেন। দেশে প্রতি ঘণ্টায় প্রায় পাঁচজন রোগীর মৃত্যু হচ্ছে কিডনি অকেজো হয়ে। কিডনি প্রতিস্থাপন সীমিত এবং ডায়ালাইসিস ব্যয়বহুল। ফলে অধিকাংশ রোগী চিকিৎসা না পেয়ে মারা যান। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত ও চিকিৎসা নিলে ৬০ শতাংশ রোগীর জীবন রক্ষা সম্ভব।
কামরুল ইসলামের জন্ম ১৯৬৫ সালে। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে বোর্ডের মেধাতালিকায় যথাক্রমে ১৫তম ও ১০তম স্থান লাভ করেছিলেন তিনি। এরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজের ৪০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী হিসেবে ১৯৯০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত মেডিকেল কলেজের মধ্যে সম্মিলিত এমবিবিএস পরীক্ষায় প্রথম স্থান অর্জন করে স্বর্ণপদক পান। এরপর ১৯৯৫ সালে এফসিপিএস, ২০০০ সালে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইউরোলজিতে এমএস এবং ২০০৩ সালে ইংল্যান্ডের রয়েল কলেজ থেকে এফআরসিএস ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি।
ডা. কামরুলের কর্মজীবন শুরু ১৯৯৩ সালে, বিসিএসের মাধ্যমে স্বাস্থ্য ক্যাডারে যোগ দিয়ে। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি হাসপাতালে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি এবং ২০০৭ সালে প্রথম সফল কিডনি প্রতিস্থাপন সম্পন্ন করেন। ২০১১ সালে সরকারি চাকরি ছেড়ে বেসরকারি একটি মেডিকেল কলেজে অধ্যাপক পদে দায়িত্ব নেন। পরে ২০১৪ সালে নিজ উদ্যোগে রাজধানীর শ্যামলীতে সিকেডি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন।
সিকেডি সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে ডা. কামরুলের নেতৃত্বে সপ্তাহে ছয়টি কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়। কিডনি দাতা ও গ্রহীতার জন্য একই সঙ্গে দুটি কক্ষে অস্ত্রোপচার চলে। প্রতিটি অস্ত্রোপচারে সাধারণত ১০-১২ জন চিকিৎসক অংশ নেন। যাঁদের মধ্যে থাকেন অবেদনবিদ, কিডনি বিশেষজ্ঞ, ইউরোলজির শল্যচিকিৎসকসহ অন্যান্য বিশেষজ্ঞ, পাশাপাশি নার্স ও টেকনোলজিস্ট।
ডা. কামরুল বলেন, সিকেডিতে প্রতিদিন গড়ে একটি কিডনি প্রতিস্থাপিত হয়। প্রতিটি অস্ত্রোপচারে ১০-১২ জন চিকিৎসক কাজ করেন। তিনি নিজে পারিশ্রমিক নেন না, তবে অস্ত্রোপচারে আনুষঙ্গিক খরচ থাকে। তাঁর হাসপাতালে কিডনি প্রতিস্থাপনের প্যাকেজ এখন ২ লাখ ১৫ হাজার টাকা। যার মধ্যে অস্ত্রোপচার, ওষুধ, আইসিইউ এবং অন্যান্য খরচ অন্তর্ভুক্ত। কিডনি দাতা সাধারণত ৩ থেকে ৭ দিন এবং কিডনি গ্রহীতা ৭ থেকে ১০ দিন হাসপাতালে থাকেন।
হাসপাতালের অন্যান্য সার্জারি ও চিকিৎসাসেবার আয়ের অর্থে কিডনি প্রতিস্থাপনের খরচের পুরো প্রক্রিয়া চালানো হয়। সেখানে প্রতিদিন ৭-১২টি কিডনি স্টোন সার্জারি, কিডনি ক্যানসার, প্রস্টেট ক্যানসারসহ অন্যান্য সার্জারি করা হয়। হাসপাতালে বর্তমানে চিকিৎসক, নার্স, টেকনোলজিস্টসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা চার শতাধিক। আউটডোরে প্রতিদিন ২৫০-৩০০ রোগী, ইনডোরে প্রায় ১০০ রোগী সেবা নেন। ১০০ শয্যার হাসপাতালটিতে আরও ৫০ শয্যা বাড়ানোর জন্য আবেদন করা হয়েছে।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে সিকেডি হাসপাতালে কিডনি প্রতিস্থাপন করেছেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাসিন্দা মাইনুল রহমান। ৪৪ বছর বয়সী এই ব্যবসায়ীর কিডনি অকেজো হয়ে গেলে স্ত্রীর দেওয়া কিডনি নিয়ে তাঁর শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়। ডা. কামরুল ইসলাম এই অস্ত্রোপচার করেন।
কিডনি প্রতিস্থাপনে সিকেডি হাসপাতাল সোয়া দুই লাখ টাকা নিয়েছে জানিয়ে মাইনুল রহমান গতকাল সন্ধ্যায় আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সিকেডি হাসপাতাল যদি অন্য হাসপাতালের মতো খরচ নিত, তাহলে আমরা তা বহন করতে পারতাম না। এখন প্রতি মাসে ফলোআপ চিকিৎসা প্রয়োজন হয়। সেখানে গেলে সবকিছু বিনা মূল্যে পাওয়া যায়। পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও চিকিৎসকের ফি দিতে হয় না।’
এর আগে ২০২৩ সালের অক্টোবরে স্ত্রীর দেওয়া কিডনি নিজের শরীরে প্রতিস্থাপন করেন নারায়ণগঞ্জের ৩৭ বছর বয়সী আবু বকর। তিনি বলেন, ‘ডা. কামরুল স্যার খুবই মানবিক। আমরা খরচের ভয়ে চিকিৎসায় যেতে চাইনি। তিনি কয়েকবার ফোন করে আমাদের খোঁজ নিয়েছেন, তিনি কিডনি বসিয়ে দিয়েছেন।’
ডা. কামরুল জানান, কিডনি প্রতিস্থাপন করা রোগীরা বাসায় গেলে প্রথম এক থেকে দুই বছর অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হয়; বিশেষ করে ওষুধ ঠিকমতো না খাওয়া, সময়মতো ডোজ না নেওয়া এবং অনিয়মিত জীবনধারা ঝুঁকি বাড়ায়। আবার রোগীরা খরচের ভয়ে ফলোআপ চিকিৎসায় আসতে চান না। ফলে তাঁদের এসব চিকিৎসা আজীবন বিনা মূল্যে করেন তিনি।
ডা. কামরুলের স্ত্রীও একজন চিকিৎসক। তিনি বর্তমানে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত। তাঁদের তিন মেয়ে। বড় মেয়ে শিক্ষানবিশ চিকিৎসক, মেজ মেয়ে এমবিবিএস অধ্যয়ন করছেন।
নিজের প্রতিষ্ঠিত সিকেডি হাসপাতালকে ‘বড় গাছের মতো’ দেখেন ডা. কামরুল ইসলাম। যেখানে আয়ের একটি অংশ দরিদ্র রোগী ও কিডনি প্রতিস্থাপনে ব্যয় করা হয়। তিনি বলেন, ‘মানুষকে নিখুঁত চিকিৎসা দেওয়া আমার কর্তব্য। আমি কিডনি রোগীদের খরচ হাসপাতালের অন্যান্য আয়ের মাধ্যমে বহন করি। এটি যেকোনো হাসপাতালই করতে পারে এবং এর জন্য লোকসান হয়; তা কিন্তু নয়।’

গবেষকদের লক্ষ্য হলো- প্রাথমিকভাবে, এই জাতীয় টিকাগুলো কোভিডের মোটামুটি কাছাকাছি ধরনের বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেবে। তবে আরও উচ্চাভিলাষী লক্ষ্য হলো- সাধারণ সর্দির জন্য দায়ী এমন বেশ কয়েকটি স্ট্রেনসহ করোনাভাইরাসের বিস্তৃত প্রজাতি ও ধরনের বিরুদ্ধে সুরক্ষা নিশ্চিত করা।
১৮ ডিসেম্বর ২০২১
প্রথাগত চিকিৎসা বলতে এমন স্বাস্থ্য ও সুস্থতার ব্যবস্থাকে বোঝায়, যেগুলোর উদ্ভব আধুনিক বায়োমেডিসিনের আগেই হয়েছে। এসব চিকিৎসা পদ্ধতির ধরন নানাবিধ—ভেষজ চা থেকে শুরু করে ভারতের আয়ুর্বেদিক চিকিৎসাব্যবস্থা পর্যন্ত।
৪ দিন আগে
শীতের সকাল কিংবা সন্ধ্যায় ধোঁয়া ওঠা এক বাটি খিচুড়ির চেয়ে আরামদায়ক আর কী হতে পারে। খিচুড়ি শুধু একটি খাবার নয়। শীতকাল মানে আরাম করে হরেক রকমের সবজি দিয়ে রান্না করা খিচুড়ি খাওয়া। এতে যেমন মন ভরে, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর এ খাবার রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।
৫ দিন আগে
তেজপাতা ও লবঙ্গ—উভয়ই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। এতে রয়েছে শক্তিশালী প্রদাহবিরোধী ও ব্যাকটেরিয়ারোধী গুণাবলি, যা শরীরের ভেতরে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম। তবে এই চা সাধারণত সবার জন্য নিরাপদ হলেও গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মায়েদের এটি পান করা থেকে বিরত থাকা উচিত।
৫ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

আফ্রিকায় ভেষজ চিকিৎসকেরা ক্ষত বা ব্যথা উপশমে গাছগাছড়া সংগ্রহ করছেন; চীনে আকুপাংচার বিশেষজ্ঞরা সুচ ব্যবহার করে মাইগ্রেন সারাচ্ছেন; আবার ভারতে যোগীরা ধ্যানচর্চা করছেন—এ ধরনের প্রথাগত চিকিৎসা পদ্ধতিগুলো ক্রমেই কার্যকর প্রমাণিত হচ্ছে এবং এগুলো আরও বেশি মনোযোগ ও গবেষণার দাবি রাখে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) এক কর্মকর্তা।
ডব্লিউএইচওর গ্লোবাল ট্র্যাডিশনাল মেডিসিন সেন্টারের প্রধান ডা. শ্যামা কুরুবিল্লার মতে, ঐতিহাসিকভাবে পর্যাপ্ত বৈজ্ঞানিক প্রমাণের অভাবের কারণে যেসব প্রথাগত চিকিৎসা পদ্ধতিকে অনেক সময় অবহেলা করা হয়েছে, আধুনিক প্রযুক্তি ও বিনিয়োগ বাড়লে সেই ধারণা বদলাতে পারে।
দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরের শুরুতে বিভিন্ন দেশ সম্মত হয়েছে যে আগামী এক দশকের জন্য ডব্লিউএইচও একটি নতুন বৈশ্বিক প্রথাগত চিকিৎসা কৌশল গ্রহণ করবে।
এই কৌশলের লক্ষ্য—প্রমাণভিত্তিকভাবে স্বাস্থ্য ও কল্যাণে প্রথাগত, পরিপূরক ও সমন্বিত চিকিৎসার সম্ভাবনাময় অবদানকে কাজে লাগানো।
এই কৌশলের আওতায় প্রথাগত চিকিৎসা পদ্ধতির জন্য শক্তিশালী প্রমাণভিত্তি তৈরি, চিকিৎসা ও চিকিৎসকদের নিয়ন্ত্রণ কাঠামো গড়ে তোলা এবং প্রয়োজন অনুযায়ী এসব পদ্ধতিকে আধুনিক জৈব-চিকিৎসাভিত্তিক স্বাস্থ্যব্যবস্থার সঙ্গে একীভূত করার পরিকল্পনা রয়েছে।
কুরুবিল্লা বলেন, ‘এটা ভীষণ রোমাঞ্চকর। আমি বলছি না, আমরা এখনই জানি—কোনটা কাজ করে আর কোনটা করে না। তবে এ মুহূর্তে বিষয়টি জানার বড় সুযোগ তৈরি হয়েছে।’
প্রথাগত চিকিৎসা বলতে এমন স্বাস্থ্য ও সুস্থতার ব্যবস্থাকে বোঝায়, যেগুলোর উদ্ভব আধুনিক বায়োমেডিসিনের আগেই হয়েছে। এসব চিকিৎসা পদ্ধতির ধরন নানাবিধ—ভেষজ চা থেকে শুরু করে ভারতের আয়ুর্বেদিক চিকিৎসাব্যবস্থা পর্যন্ত।
কুরুবিল্লা বলেন, শত শত বছর ধরে চলে আসা এসব পদ্ধতির মধ্যে অনেকগুলোরই বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, জিনোমিক্স ও মস্তিষ্ক স্ক্যানসহ আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে এখন সেগুলো নতুনভাবে অনুসন্ধান করা সম্ভব।
তাঁর মতে, প্রথাগত চিকিৎসা গ্রহণের ক্ষেত্রে থাইল্যান্ড ভালো উদাহরণ। দেশটিতে গবেষকেরা প্রথাগত চিকিৎসা পদ্ধতি পর্যবেক্ষণ ও নথিবদ্ধ করছেন এবং ভেষজ চিকিৎসাকে প্রয়োজনীয় ওষুধের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছেন। গত মে মাসে থাইল্যান্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় পেশির ব্যথা ও কোষ্ঠকাঠিন্যসহ কিছু রোগের ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের আধুনিক ওষুধের বদলে প্রথাগত চিকিৎসা ব্যবহারের সুপারিশ করেছে।

আফ্রিকায় ভেষজ চিকিৎসকেরা ক্ষত বা ব্যথা উপশমে গাছগাছড়া সংগ্রহ করছেন; চীনে আকুপাংচার বিশেষজ্ঞরা সুচ ব্যবহার করে মাইগ্রেন সারাচ্ছেন; আবার ভারতে যোগীরা ধ্যানচর্চা করছেন—এ ধরনের প্রথাগত চিকিৎসা পদ্ধতিগুলো ক্রমেই কার্যকর প্রমাণিত হচ্ছে এবং এগুলো আরও বেশি মনোযোগ ও গবেষণার দাবি রাখে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) এক কর্মকর্তা।
ডব্লিউএইচওর গ্লোবাল ট্র্যাডিশনাল মেডিসিন সেন্টারের প্রধান ডা. শ্যামা কুরুবিল্লার মতে, ঐতিহাসিকভাবে পর্যাপ্ত বৈজ্ঞানিক প্রমাণের অভাবের কারণে যেসব প্রথাগত চিকিৎসা পদ্ধতিকে অনেক সময় অবহেলা করা হয়েছে, আধুনিক প্রযুক্তি ও বিনিয়োগ বাড়লে সেই ধারণা বদলাতে পারে।
দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরের শুরুতে বিভিন্ন দেশ সম্মত হয়েছে যে আগামী এক দশকের জন্য ডব্লিউএইচও একটি নতুন বৈশ্বিক প্রথাগত চিকিৎসা কৌশল গ্রহণ করবে।
এই কৌশলের লক্ষ্য—প্রমাণভিত্তিকভাবে স্বাস্থ্য ও কল্যাণে প্রথাগত, পরিপূরক ও সমন্বিত চিকিৎসার সম্ভাবনাময় অবদানকে কাজে লাগানো।
এই কৌশলের আওতায় প্রথাগত চিকিৎসা পদ্ধতির জন্য শক্তিশালী প্রমাণভিত্তি তৈরি, চিকিৎসা ও চিকিৎসকদের নিয়ন্ত্রণ কাঠামো গড়ে তোলা এবং প্রয়োজন অনুযায়ী এসব পদ্ধতিকে আধুনিক জৈব-চিকিৎসাভিত্তিক স্বাস্থ্যব্যবস্থার সঙ্গে একীভূত করার পরিকল্পনা রয়েছে।
কুরুবিল্লা বলেন, ‘এটা ভীষণ রোমাঞ্চকর। আমি বলছি না, আমরা এখনই জানি—কোনটা কাজ করে আর কোনটা করে না। তবে এ মুহূর্তে বিষয়টি জানার বড় সুযোগ তৈরি হয়েছে।’
প্রথাগত চিকিৎসা বলতে এমন স্বাস্থ্য ও সুস্থতার ব্যবস্থাকে বোঝায়, যেগুলোর উদ্ভব আধুনিক বায়োমেডিসিনের আগেই হয়েছে। এসব চিকিৎসা পদ্ধতির ধরন নানাবিধ—ভেষজ চা থেকে শুরু করে ভারতের আয়ুর্বেদিক চিকিৎসাব্যবস্থা পর্যন্ত।
কুরুবিল্লা বলেন, শত শত বছর ধরে চলে আসা এসব পদ্ধতির মধ্যে অনেকগুলোরই বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, জিনোমিক্স ও মস্তিষ্ক স্ক্যানসহ আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে এখন সেগুলো নতুনভাবে অনুসন্ধান করা সম্ভব।
তাঁর মতে, প্রথাগত চিকিৎসা গ্রহণের ক্ষেত্রে থাইল্যান্ড ভালো উদাহরণ। দেশটিতে গবেষকেরা প্রথাগত চিকিৎসা পদ্ধতি পর্যবেক্ষণ ও নথিবদ্ধ করছেন এবং ভেষজ চিকিৎসাকে প্রয়োজনীয় ওষুধের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছেন। গত মে মাসে থাইল্যান্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় পেশির ব্যথা ও কোষ্ঠকাঠিন্যসহ কিছু রোগের ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের আধুনিক ওষুধের বদলে প্রথাগত চিকিৎসা ব্যবহারের সুপারিশ করেছে।

গবেষকদের লক্ষ্য হলো- প্রাথমিকভাবে, এই জাতীয় টিকাগুলো কোভিডের মোটামুটি কাছাকাছি ধরনের বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেবে। তবে আরও উচ্চাভিলাষী লক্ষ্য হলো- সাধারণ সর্দির জন্য দায়ী এমন বেশ কয়েকটি স্ট্রেনসহ করোনাভাইরাসের বিস্তৃত প্রজাতি ও ধরনের বিরুদ্ধে সুরক্ষা নিশ্চিত করা।
১৮ ডিসেম্বর ২০২১
বাংলাদেশে যেখানে কিডনি প্রতিস্থাপন এখনো সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে, সেখানে অসহায় ও দরিদ্র রোগীদের শেষ ভরসা হয়ে উঠেছেন কিডনির শল্যচিকিৎসক অধ্যাপক কামরুল ইসলাম। দেশে যত কিডনি প্রতিস্থাপিত হয়, সেগুলোর একটি বড় অংশই করেন তিনি। নিজের প্রতিষ্ঠিত সেন্টার ফর কিডনি ডিজিজেস...
১ দিন আগে
শীতের সকাল কিংবা সন্ধ্যায় ধোঁয়া ওঠা এক বাটি খিচুড়ির চেয়ে আরামদায়ক আর কী হতে পারে। খিচুড়ি শুধু একটি খাবার নয়। শীতকাল মানে আরাম করে হরেক রকমের সবজি দিয়ে রান্না করা খিচুড়ি খাওয়া। এতে যেমন মন ভরে, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর এ খাবার রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।
৫ দিন আগে
তেজপাতা ও লবঙ্গ—উভয়ই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। এতে রয়েছে শক্তিশালী প্রদাহবিরোধী ও ব্যাকটেরিয়ারোধী গুণাবলি, যা শরীরের ভেতরে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম। তবে এই চা সাধারণত সবার জন্য নিরাপদ হলেও গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মায়েদের এটি পান করা থেকে বিরত থাকা উচিত।
৫ দিন আগেফিচার ডেস্ক

শীতের সকাল কিংবা সন্ধ্যায় ধোঁয়া ওঠা এক বাটি খিচুড়ির চেয়ে আরামদায়ক আর কী হতে পারে। খিচুড়ি শুধু একটি খাবার নয়। শীতকাল মানে আরাম করে হরেক রকমের সবজি দিয়ে রান্না করা খিচুড়ি খাওয়া। এতে যেমন মন ভরে, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর এ খাবার রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। এ ছাড়া এটি শরীরে বিভিন্ন উপাদানের ভারসাম্য বজায় রাখতেও সহায়ক। শীতকালীন ক্লান্তি দূর করতে এবং ঋতু পরিবর্তনের অসুস্থতা থেকে বাঁচতে খিচুড়ি একটি আদর্শ খাবার। এটি সহজে হজম হয়।
পুষ্টিবিদদের পরামর্শ অনুযায়ী, খিচুড়ির প্রতিটি উপাদান আমাদের শরীরের জন্য বিশেষভাবে উপকারী। এতে থাকা চাল থেকে পাওয়া যায় পর্যাপ্ত শর্করা ও শক্তি। ডাল জোগায় প্রোটিন ও আঁশ, যা হজমে বিশেষভাবে সাহায্য করে। ঘি শরীরের তাপমাত্রা ধরে রাখতে এবং পুষ্টি শোষণে সহায়ক। হলুদে থাকা কারকিউমিন ব্যথানাশক হিসেবে কাজ করে এবং আদা সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে শরীর উষ্ণ রাখে। খিচুড়িতে সবজি যোগ করলে আঁশের মাত্রা বাড়ে। গোলমরিচ ও জিরার মতো মসলা বিপাক প্রক্রিয়া উন্নত করে। এ ছাড়া সাবুদানার খিচুড়ি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। এ ছাড়া এটি তাৎক্ষণিক শক্তি জোগাতে কার্যকর।

চাল ও মুগ ডালের মিশেলে তৈরি এই খিচুড়ি যেমন সহজপাচ্য, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর। এর বিশেষত্বের চাবিকাঠি লুকিয়ে রয়েছে মসলায়। একেবারে হলুদ, লবণ, জিরা অথবা ধনেগুঁড়ার মতো সাধারণ কিছু মসলা দিয়ে এটি রান্না করা হয়। এটা রান্নার সময় মুগ ডালের সঙ্গে চালও ভেজে নিতে পারেন। এতে মুগ ডালের একটা ভিন্ন গন্ধ পাওয়া যাবে। হলুদের পরিবর্তে এতে ব্যবহার করতে পারেন সবুজ মুগডাল।
উপকারিতা: শরীর উষ্ণ রাখে এবং দীর্ঘক্ষণ শক্তি জোগায়।

গাজর, মটরশুঁটি, ফুলকপি, আলু, টমেটো ইত্যাদি শীতের সবজি দিয়ে তৈরি রান্না করা সবজি খিচুড়ি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। এর সঙ্গে শীতে পাওয়া যায় এমন প্রায় সব শাক ও সবজি যোগ করতে হবে। সবজিগুলো ছোট টুকরা করে কেটে নিতে হবে।
যে সবজিগুলো সেদ্ধ হতে বেশি সময় নেয়, সেগুলো আগে ভেজে নিন অথবা প্রেশার কুকারে দিন। এরপর তেল বা ঘিতে জিরা, তেজপাতা ও অন্যান্য মসলা দিয়ে পেঁয়াজ, আদা, রসুন ভাজার পর সবজিগুলো হালকা ভেজে নিন। ভেজে রাখা সবজি, চাল, ডাল ও পানি দিয়ে প্রেশার কুকারে বা হাঁড়িতে রান্না করুন। নরম খিচুড়ি চাইলে পানি বেশি দিতে পারেন। শেষ মুহূর্তে পালংসহ অন্য নরম শাক এতে যোগ করতে পারেন।
উপকারিতা: এটি অন্যান্য উপকারের সঙ্গে কোষ্ঠকাঠিন্য কমায় এবং দ্রুত শক্তি পুনরুদ্ধার করে।

ঠান্ডা পাহাড়ি অঞ্চলে শীতের প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে এই খিচুড়ি অত্যন্ত জনপ্রিয়। চাল, মাষকলাইয়ের ডাল এবং তিল এর প্রধান উপকরণ। রান্নার আগে চাল ও ডাল ভিজিয়ে রাখা হয়। তিল হালকা ভেজে গুঁড়া করে নেওয়া হয়। তিল থেকে পাওয়া স্বাস্থ্যকর চর্বি ও খনিজ উপাদান শীতের দিনে শরীরের জন্য খুবই উপকারী। জিরা, হিং, হলুদ এবং লাল মরিচ গুঁড়ার সুগন্ধি মিশ্রণ এতে অনন্য স্বাদ যোগ করে। খাঁটি ঘি অথবা তেল-মসলার ফোড়ন দিয়ে এটি রান্না করা হয়। প্রোটিন, চর্বি এবং মিনারেলসমৃদ্ধ এই খাবার শীত জয়ের এক অমোঘ হাতিয়ার হতে পারে।
উপকারিতা: এটি শরীরে তাৎক্ষণিক শক্তি জোগানোর পাশাপাশি দীর্ঘক্ষণ শরীর গরম রাখতে সাহায্য করে।

সচরাচর খাওয়া হয় এমন কোনো খিচুড়ি খেতে না চাইলে রান্না করতে পারেন আমলকী খিচুড়ি। এটি কোনো সাধারণ খাবার নয়। এ খিচুড়ি রান্না করা হয় চাল, খোসা ছাড়ানো কালো মাষকলাইয়ের ডাল এবং তাজা আমলকী দিয়ে। নরম ধরনের এ খিচুড়ির স্বাদ ও সুগন্ধ বাড়াতে রান্নায় জিরা, হিং, হলুদ ও লাল মরিচের গুঁড়া ব্যবহার করতে পারেন। এগুলো এতে রাজকীয় স্বাদ যোগ করবে। সবশেষে ঘি বা তেলের সুগন্ধি ফোড়ন এই খিচুড়িকে করে তোলে আরও সুস্বাদু। কেউ চাইলে এই খিচুড়ির পুষ্টিমান আরও বাড়াতে বিভিন্ন ধরনের ঋতুভিত্তিক সবজি যোগ করতে পারেন। শীতের এই উৎসবের দিনগুলোতে শরীর সতেজ রাখতে এবং রসনা তৃপ্তিতে আমলকী খিচুড়ি হতে পারে আপনার সেরা পছন্দ।
উপকারিতা: এটি শরীরে শক্তি জোগানোর পাশাপাশি হজমশক্তি এবং রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়। এ ছাড়া শরীর ডিটক্সে সহায়তা করে, হজম প্রক্রিয়া উন্নত হয়, গ্যাস্ট্রিক কমায়, কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায় এবং ওজন কমাতে সহায়ক।

শীতের সকাল কিংবা সন্ধ্যায় ধোঁয়া ওঠা এক বাটি খিচুড়ির চেয়ে আরামদায়ক আর কী হতে পারে। খিচুড়ি শুধু একটি খাবার নয়। শীতকাল মানে আরাম করে হরেক রকমের সবজি দিয়ে রান্না করা খিচুড়ি খাওয়া। এতে যেমন মন ভরে, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর এ খাবার রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। এ ছাড়া এটি শরীরে বিভিন্ন উপাদানের ভারসাম্য বজায় রাখতেও সহায়ক। শীতকালীন ক্লান্তি দূর করতে এবং ঋতু পরিবর্তনের অসুস্থতা থেকে বাঁচতে খিচুড়ি একটি আদর্শ খাবার। এটি সহজে হজম হয়।
পুষ্টিবিদদের পরামর্শ অনুযায়ী, খিচুড়ির প্রতিটি উপাদান আমাদের শরীরের জন্য বিশেষভাবে উপকারী। এতে থাকা চাল থেকে পাওয়া যায় পর্যাপ্ত শর্করা ও শক্তি। ডাল জোগায় প্রোটিন ও আঁশ, যা হজমে বিশেষভাবে সাহায্য করে। ঘি শরীরের তাপমাত্রা ধরে রাখতে এবং পুষ্টি শোষণে সহায়ক। হলুদে থাকা কারকিউমিন ব্যথানাশক হিসেবে কাজ করে এবং আদা সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে শরীর উষ্ণ রাখে। খিচুড়িতে সবজি যোগ করলে আঁশের মাত্রা বাড়ে। গোলমরিচ ও জিরার মতো মসলা বিপাক প্রক্রিয়া উন্নত করে। এ ছাড়া সাবুদানার খিচুড়ি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। এ ছাড়া এটি তাৎক্ষণিক শক্তি জোগাতে কার্যকর।

চাল ও মুগ ডালের মিশেলে তৈরি এই খিচুড়ি যেমন সহজপাচ্য, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর। এর বিশেষত্বের চাবিকাঠি লুকিয়ে রয়েছে মসলায়। একেবারে হলুদ, লবণ, জিরা অথবা ধনেগুঁড়ার মতো সাধারণ কিছু মসলা দিয়ে এটি রান্না করা হয়। এটা রান্নার সময় মুগ ডালের সঙ্গে চালও ভেজে নিতে পারেন। এতে মুগ ডালের একটা ভিন্ন গন্ধ পাওয়া যাবে। হলুদের পরিবর্তে এতে ব্যবহার করতে পারেন সবুজ মুগডাল।
উপকারিতা: শরীর উষ্ণ রাখে এবং দীর্ঘক্ষণ শক্তি জোগায়।

গাজর, মটরশুঁটি, ফুলকপি, আলু, টমেটো ইত্যাদি শীতের সবজি দিয়ে তৈরি রান্না করা সবজি খিচুড়ি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। এর সঙ্গে শীতে পাওয়া যায় এমন প্রায় সব শাক ও সবজি যোগ করতে হবে। সবজিগুলো ছোট টুকরা করে কেটে নিতে হবে।
যে সবজিগুলো সেদ্ধ হতে বেশি সময় নেয়, সেগুলো আগে ভেজে নিন অথবা প্রেশার কুকারে দিন। এরপর তেল বা ঘিতে জিরা, তেজপাতা ও অন্যান্য মসলা দিয়ে পেঁয়াজ, আদা, রসুন ভাজার পর সবজিগুলো হালকা ভেজে নিন। ভেজে রাখা সবজি, চাল, ডাল ও পানি দিয়ে প্রেশার কুকারে বা হাঁড়িতে রান্না করুন। নরম খিচুড়ি চাইলে পানি বেশি দিতে পারেন। শেষ মুহূর্তে পালংসহ অন্য নরম শাক এতে যোগ করতে পারেন।
উপকারিতা: এটি অন্যান্য উপকারের সঙ্গে কোষ্ঠকাঠিন্য কমায় এবং দ্রুত শক্তি পুনরুদ্ধার করে।

ঠান্ডা পাহাড়ি অঞ্চলে শীতের প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে এই খিচুড়ি অত্যন্ত জনপ্রিয়। চাল, মাষকলাইয়ের ডাল এবং তিল এর প্রধান উপকরণ। রান্নার আগে চাল ও ডাল ভিজিয়ে রাখা হয়। তিল হালকা ভেজে গুঁড়া করে নেওয়া হয়। তিল থেকে পাওয়া স্বাস্থ্যকর চর্বি ও খনিজ উপাদান শীতের দিনে শরীরের জন্য খুবই উপকারী। জিরা, হিং, হলুদ এবং লাল মরিচ গুঁড়ার সুগন্ধি মিশ্রণ এতে অনন্য স্বাদ যোগ করে। খাঁটি ঘি অথবা তেল-মসলার ফোড়ন দিয়ে এটি রান্না করা হয়। প্রোটিন, চর্বি এবং মিনারেলসমৃদ্ধ এই খাবার শীত জয়ের এক অমোঘ হাতিয়ার হতে পারে।
উপকারিতা: এটি শরীরে তাৎক্ষণিক শক্তি জোগানোর পাশাপাশি দীর্ঘক্ষণ শরীর গরম রাখতে সাহায্য করে।

সচরাচর খাওয়া হয় এমন কোনো খিচুড়ি খেতে না চাইলে রান্না করতে পারেন আমলকী খিচুড়ি। এটি কোনো সাধারণ খাবার নয়। এ খিচুড়ি রান্না করা হয় চাল, খোসা ছাড়ানো কালো মাষকলাইয়ের ডাল এবং তাজা আমলকী দিয়ে। নরম ধরনের এ খিচুড়ির স্বাদ ও সুগন্ধ বাড়াতে রান্নায় জিরা, হিং, হলুদ ও লাল মরিচের গুঁড়া ব্যবহার করতে পারেন। এগুলো এতে রাজকীয় স্বাদ যোগ করবে। সবশেষে ঘি বা তেলের সুগন্ধি ফোড়ন এই খিচুড়িকে করে তোলে আরও সুস্বাদু। কেউ চাইলে এই খিচুড়ির পুষ্টিমান আরও বাড়াতে বিভিন্ন ধরনের ঋতুভিত্তিক সবজি যোগ করতে পারেন। শীতের এই উৎসবের দিনগুলোতে শরীর সতেজ রাখতে এবং রসনা তৃপ্তিতে আমলকী খিচুড়ি হতে পারে আপনার সেরা পছন্দ।
উপকারিতা: এটি শরীরে শক্তি জোগানোর পাশাপাশি হজমশক্তি এবং রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়। এ ছাড়া শরীর ডিটক্সে সহায়তা করে, হজম প্রক্রিয়া উন্নত হয়, গ্যাস্ট্রিক কমায়, কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায় এবং ওজন কমাতে সহায়ক।

গবেষকদের লক্ষ্য হলো- প্রাথমিকভাবে, এই জাতীয় টিকাগুলো কোভিডের মোটামুটি কাছাকাছি ধরনের বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেবে। তবে আরও উচ্চাভিলাষী লক্ষ্য হলো- সাধারণ সর্দির জন্য দায়ী এমন বেশ কয়েকটি স্ট্রেনসহ করোনাভাইরাসের বিস্তৃত প্রজাতি ও ধরনের বিরুদ্ধে সুরক্ষা নিশ্চিত করা।
১৮ ডিসেম্বর ২০২১
বাংলাদেশে যেখানে কিডনি প্রতিস্থাপন এখনো সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে, সেখানে অসহায় ও দরিদ্র রোগীদের শেষ ভরসা হয়ে উঠেছেন কিডনির শল্যচিকিৎসক অধ্যাপক কামরুল ইসলাম। দেশে যত কিডনি প্রতিস্থাপিত হয়, সেগুলোর একটি বড় অংশই করেন তিনি। নিজের প্রতিষ্ঠিত সেন্টার ফর কিডনি ডিজিজেস...
১ দিন আগে
প্রথাগত চিকিৎসা বলতে এমন স্বাস্থ্য ও সুস্থতার ব্যবস্থাকে বোঝায়, যেগুলোর উদ্ভব আধুনিক বায়োমেডিসিনের আগেই হয়েছে। এসব চিকিৎসা পদ্ধতির ধরন নানাবিধ—ভেষজ চা থেকে শুরু করে ভারতের আয়ুর্বেদিক চিকিৎসাব্যবস্থা পর্যন্ত।
৪ দিন আগে
তেজপাতা ও লবঙ্গ—উভয়ই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। এতে রয়েছে শক্তিশালী প্রদাহবিরোধী ও ব্যাকটেরিয়ারোধী গুণাবলি, যা শরীরের ভেতরে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম। তবে এই চা সাধারণত সবার জন্য নিরাপদ হলেও গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মায়েদের এটি পান করা থেকে বিরত থাকা উচিত।
৫ দিন আগেআলমগীর আলম

তেজপাতা ও লবঙ্গ—উভয়ই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। এতে রয়েছে শক্তিশালী প্রদাহবিরোধী ও ব্যাকটেরিয়ারোধী গুণাবলি, যা শরীরের ভেতরে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম। তবে এই চা সাধারণত সবার জন্য নিরাপদ হলেও গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মায়েদের এটি পান করা থেকে বিরত থাকা উচিত।
১. হজমশক্তি বৃদ্ধিতে: বদহজমের সমস্যায় ভুগলে তেজপাতা দারুণ মুক্তি দিতে পারে। অন্যদিকে, লবঙ্গ এনজাইম নিঃসরণ বাড়িয়ে হজমপ্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত এবং পেটের অস্বস্তি দূর করে।
২. ব্যথা ও প্রদাহ উপশমে: আর্থ্রাইটিসের মতো রোগে যাঁরা ভোগেন, তাঁদের জন্য এই চা অত্যন্ত উপকারী। ইউরিক অ্যাসিডের ব্যথা কমাতে এবং শরীরের বিভিন্ন অংশের প্রদাহ বা ফোলা ভাব রোধে তেজপাতা ও লবঙ্গ লড়তে সাহায্য করে।
৩. রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে: লবঙ্গে থাকা অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া
ও ভাইরাসের বিরুদ্ধে কাজ করে। এর সঙ্গে তেজপাতা যুক্ত হলে শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বহুগুণ বেড়ে যায়, যা বিশেষ করে ঠান্ডা ও ফ্লু মৌসুমে সুরক্ষা দেয়।
৪. দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি কমাতে: এই চা শরীরে ক্ষতিকর ফ্রি র্যাডিক্যালের বিরুদ্ধে লড়াই করে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমায়। ফলে হৃদ্রোগ এবং নির্দিষ্ট কিছু ক্যানসারের ঝুঁকি কমে পায়।
৫. দাঁত ও মাড়ির সুরক্ষায়: লবঙ্গ তেল দাঁতের জন্য উপকারী হিসেবে স্বীকৃত। নিয়মিত লবঙ্গ চা পান করলে মাড়ি ও দাঁত সুস্থ রাখা সম্ভব।
উপকরণ সংগ্রহ করা এবং এই চা তৈরি করার প্রক্রিয়া অত্যন্ত সহজ—
উপকরণ: ৩-৪টি শুকনো তেজপাতা, ৫-৬টি আস্ত লবঙ্গ এবং ৪ কাপ পানি। স্বাদ বাড়াতে মধু বা লেবু ব্যবহার করতে পারেন।
প্রণালি: প্রথমে একটি পাত্রে পানি ফুটিয়ে নিতে হবে। তাতে তেজপাতা ও লবঙ্গ দিয়ে চুলার আঁচ কমিয়ে দিন। ১৫ মিনিট মিশ্রণটি সেদ্ধ করার পর চুলা নিভিয়ে আরও ৫ মিনিট পাত্রটি ঢেকে রেখে দিন। এরপর ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে তেজপাতা ও লবঙ্গ ফেলে দিয়ে পানি আলাদা করে নিন। স্বাদ অনুযায়ী মধু কিংবা লেবুর রস মিশিয়ে পান করুন।
ভালো ফল পেতে প্রতিদিন এক কাপ এই চা-পান করা ভালো; বিশেষ করে খাবারের পর এটি পান করলে হজমশক্তি বাড়াতে সবচেয়ে ভালো কাজ করে।
লেখক: খাদ্য পথ্য ও আকুপ্রেশার বিশেষজ্ঞ, প্রধান নির্বাহী, প্রাকৃতিক নিরাময় কেন্দ্র

তেজপাতা ও লবঙ্গ—উভয়ই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। এতে রয়েছে শক্তিশালী প্রদাহবিরোধী ও ব্যাকটেরিয়ারোধী গুণাবলি, যা শরীরের ভেতরে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম। তবে এই চা সাধারণত সবার জন্য নিরাপদ হলেও গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মায়েদের এটি পান করা থেকে বিরত থাকা উচিত।
১. হজমশক্তি বৃদ্ধিতে: বদহজমের সমস্যায় ভুগলে তেজপাতা দারুণ মুক্তি দিতে পারে। অন্যদিকে, লবঙ্গ এনজাইম নিঃসরণ বাড়িয়ে হজমপ্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত এবং পেটের অস্বস্তি দূর করে।
২. ব্যথা ও প্রদাহ উপশমে: আর্থ্রাইটিসের মতো রোগে যাঁরা ভোগেন, তাঁদের জন্য এই চা অত্যন্ত উপকারী। ইউরিক অ্যাসিডের ব্যথা কমাতে এবং শরীরের বিভিন্ন অংশের প্রদাহ বা ফোলা ভাব রোধে তেজপাতা ও লবঙ্গ লড়তে সাহায্য করে।
৩. রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে: লবঙ্গে থাকা অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া
ও ভাইরাসের বিরুদ্ধে কাজ করে। এর সঙ্গে তেজপাতা যুক্ত হলে শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বহুগুণ বেড়ে যায়, যা বিশেষ করে ঠান্ডা ও ফ্লু মৌসুমে সুরক্ষা দেয়।
৪. দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি কমাতে: এই চা শরীরে ক্ষতিকর ফ্রি র্যাডিক্যালের বিরুদ্ধে লড়াই করে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমায়। ফলে হৃদ্রোগ এবং নির্দিষ্ট কিছু ক্যানসারের ঝুঁকি কমে পায়।
৫. দাঁত ও মাড়ির সুরক্ষায়: লবঙ্গ তেল দাঁতের জন্য উপকারী হিসেবে স্বীকৃত। নিয়মিত লবঙ্গ চা পান করলে মাড়ি ও দাঁত সুস্থ রাখা সম্ভব।
উপকরণ সংগ্রহ করা এবং এই চা তৈরি করার প্রক্রিয়া অত্যন্ত সহজ—
উপকরণ: ৩-৪টি শুকনো তেজপাতা, ৫-৬টি আস্ত লবঙ্গ এবং ৪ কাপ পানি। স্বাদ বাড়াতে মধু বা লেবু ব্যবহার করতে পারেন।
প্রণালি: প্রথমে একটি পাত্রে পানি ফুটিয়ে নিতে হবে। তাতে তেজপাতা ও লবঙ্গ দিয়ে চুলার আঁচ কমিয়ে দিন। ১৫ মিনিট মিশ্রণটি সেদ্ধ করার পর চুলা নিভিয়ে আরও ৫ মিনিট পাত্রটি ঢেকে রেখে দিন। এরপর ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে তেজপাতা ও লবঙ্গ ফেলে দিয়ে পানি আলাদা করে নিন। স্বাদ অনুযায়ী মধু কিংবা লেবুর রস মিশিয়ে পান করুন।
ভালো ফল পেতে প্রতিদিন এক কাপ এই চা-পান করা ভালো; বিশেষ করে খাবারের পর এটি পান করলে হজমশক্তি বাড়াতে সবচেয়ে ভালো কাজ করে।
লেখক: খাদ্য পথ্য ও আকুপ্রেশার বিশেষজ্ঞ, প্রধান নির্বাহী, প্রাকৃতিক নিরাময় কেন্দ্র

গবেষকদের লক্ষ্য হলো- প্রাথমিকভাবে, এই জাতীয় টিকাগুলো কোভিডের মোটামুটি কাছাকাছি ধরনের বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেবে। তবে আরও উচ্চাভিলাষী লক্ষ্য হলো- সাধারণ সর্দির জন্য দায়ী এমন বেশ কয়েকটি স্ট্রেনসহ করোনাভাইরাসের বিস্তৃত প্রজাতি ও ধরনের বিরুদ্ধে সুরক্ষা নিশ্চিত করা।
১৮ ডিসেম্বর ২০২১
বাংলাদেশে যেখানে কিডনি প্রতিস্থাপন এখনো সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে, সেখানে অসহায় ও দরিদ্র রোগীদের শেষ ভরসা হয়ে উঠেছেন কিডনির শল্যচিকিৎসক অধ্যাপক কামরুল ইসলাম। দেশে যত কিডনি প্রতিস্থাপিত হয়, সেগুলোর একটি বড় অংশই করেন তিনি। নিজের প্রতিষ্ঠিত সেন্টার ফর কিডনি ডিজিজেস...
১ দিন আগে
প্রথাগত চিকিৎসা বলতে এমন স্বাস্থ্য ও সুস্থতার ব্যবস্থাকে বোঝায়, যেগুলোর উদ্ভব আধুনিক বায়োমেডিসিনের আগেই হয়েছে। এসব চিকিৎসা পদ্ধতির ধরন নানাবিধ—ভেষজ চা থেকে শুরু করে ভারতের আয়ুর্বেদিক চিকিৎসাব্যবস্থা পর্যন্ত।
৪ দিন আগে
শীতের সকাল কিংবা সন্ধ্যায় ধোঁয়া ওঠা এক বাটি খিচুড়ির চেয়ে আরামদায়ক আর কী হতে পারে। খিচুড়ি শুধু একটি খাবার নয়। শীতকাল মানে আরাম করে হরেক রকমের সবজি দিয়ে রান্না করা খিচুড়ি খাওয়া। এতে যেমন মন ভরে, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর এ খাবার রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।
৫ দিন আগে