Ajker Patrika

উপেক্ষিত কিশোর-কিশোরীর স্বাস্থ্য, ঝুঁকিতে ১০০ কোটিরও বেশি: গবেষণা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
বিশ্বজুড়ে কিশোর-কিশোরীদের স্বাস্থ্য এখন এক সন্ধিক্ষণে এসে দাঁড়িয়েছে। ছবি: পেক্সেলস
বিশ্বজুড়ে কিশোর-কিশোরীদের স্বাস্থ্য এখন এক সন্ধিক্ষণে এসে দাঁড়িয়েছে। ছবি: পেক্সেলস

বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে কিশোর-কিশোরীরা। গবেষণা বলছে, ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের ১০০ কোটিরও বেশি ১০ থেকে ২৪ বছর বয়সী কিশোর-তরুণ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে থাকবে। এই বয়সীদের মধ্যে এইচআইভি বা এইডস, অকাল গর্ভধারণ, অনিরাপদ যৌনতা, মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা, অপুষ্টি ও দুর্ঘটনার মতো সংকট বেড়ে যাবে। যার অনেকগুলোই প্রতিরোধযোগ্য বা চিকিৎসাযোগ্য হলেও পরিস্থিতির তেমন উন্নতি হবে না বলে আশঙ্কা করছেন গবেষকেরা।

মেডিকেল জার্নাল ল্যানসেটে প্রকাশিত ‘ল্যানসেট কমিশন অন অ্যাডোলেসেন্ট হেলথ অ্যান্ড ওয়েলবিয়িং’-এর দ্বিতীয় প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

গবেষকেরা বলেছেন, বিশ্বে কিশোর-কিশোরীদের স্বাস্থ্য নিয়ে কাজের অগ্রগতি খুবই ধীর এবং অসম। ফলে অনেকে তরুণ বয়সে এসে পেছনে পড়ে যাচ্ছে।

বিশ্বজুড়ে কিশোর-কিশোরীদের স্বাস্থ্য এখন এক সন্ধিক্ষণে এসে দাঁড়িয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন এক গবেষক জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সারা বের্ড।

২০১৬ সালে ল্যানসেট এই বিষয়ে প্রথম প্রতিবেদন করেছিল। নতুন এই প্রতিবেদনটিতে গত ১০ বছরে কিশোর স্বাস্থ্যের পরিবর্তন পর্যালোচনা করা হয়েছে। কিছু ইতিবাচক দিক উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে দেখা গেছে, কিশোরদের মধ্যে ধূমপান ও অ্যালকোহল সেবনের হার কমেছে। বেড়েছে শিক্ষার হার। অনেকেই মাধ্যমিক শেষ করে কলেজে যাচ্ছে। তবে এসব সাফল্য ম্লান হয়ে গেছে নতুন ও বাড়তে থাকা সমস্যার কারণে।

বেড়েছে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা ও স্থূলতা

প্রতিবেদনে দেখা গেছে, কিশোর-কিশোরীদের মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা আরও তীব্র ও ব্যাপক হয়েছে। অন্যদিকে আফ্রিকা ও এশিয়ার কিছু অঞ্চলে কিশোরদের স্থূলতার হার ৮ গুণ বেড়েছে। এর চেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো, কিছু গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে এক দশকেও কোনো অগ্রগতি হয়নি।

সবচেয়ে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি রয়েছে কিশোরদের মানসিক স্বাস্থ্যের। গত ৩০ বছরে তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্য অনেকটাই খারাপের দিকে গেছে। কোভিড-১৯ মহামারিতে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০৩০ সালের মধ্যে মানসিক অসুস্থতা ও আত্মহত্যার কারণে কিশোর প্রজন্ম থেকে হারিয়ে যাচ্ছে ৪ কোটি ২০ লাখ ‘সুস্থ জীবন বছর’, যা ২০১৫ সালের তুলনায় ২০ লাখ বেশি।

এছাড়াও বিশ্বজুড়ে অস্বাভাবিক হারে স্থূলতা বাড়ছে বলে জানিয়েছে ল্যানসেট কমিশন। ২০৩০ সালের মধ্যে উন্নত দেশ, ল্যাটিন আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্যে প্রতি তিনজন কিশোরের একজন অতিরিক্ত ওজনের হতে পারে। বিশ্বজুড়ে অতিরিক্ত ওজনের কিশোরের সংখ্যা ২০১৫ সালে ছিল ৩২ কোটি ১০ লাখ। ২০৩০ সালে তা বেড়ে দাঁড়াতে পারে ৪৬ কোটি ৪০ লাখে।

আরেকটি বড় সমস্যা অ্যানিমিয়া বা রক্তশূন্যতা, বিশেষ করে মেয়েদের মধ্যে এটি বেশি দেখা যাচ্ছে। ল্যানসেটের প্রতিবেদন বলছে, ২০৩০ সালের মধ্যে প্রতি তিনজন কিশোরীর একজন এই রোগে আক্রান্ত হতে পারে। রক্তশূন্যতা ক্লান্তি, শারীরিক বৃদ্ধি ব্যাহত হওয়া এবং গুরুতর ক্ষেত্রে অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ক্ষতির সঙ্গে জড়িত। অথচ এই সমস্যার সমাধানে অগ্রগতি খুব ধীর।

আগামীতে কিশোর স্বাস্থ্য ও কল্যাণে বৈশ্বিক অগ্রগতি নির্ধারণে জনসংখ্যাগত পরিবর্তন মুখ্য ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন ড্রেক্সেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অ্যালেক্স ইজে। তিনি বলেন, ‘আফ্রিকার কিশোর-কিশোরীদের বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব বর্তমানে ২৫ শতাংশের নিচে। ২১০০ সালের মধ্যে তা বেড়ে ৪৬ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে। ফলে আফ্রিকায় কিশোরদের স্বাস্থ্য ও কল্যাণে অগ্রগতি না হলে বৈশ্বিক পর্যায়ে এই বয়সভিত্তিক উন্নয়ন থমকে যাবে।’

জলবায়ু পরিবর্তন ও ডিজিটাল প্রযুক্তির প্রভাব

ল্যানসেট কমিশন বলছে, আগামী কয়েক দশকে কিশোরদের স্বাস্থ্যকে সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত করবে দুটি উদীয়মান বিষয়—জলবায়ু পরিবর্তন ও ডিজিটাল প্রযুক্তি।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব আজকের তরুণেরা ইতিমধ্যেই অনুভব করছে। এই প্রজন্মই প্রথম, যারা গড়ে শিল্পবিপ্লব-পূর্ব সময়ের তুলনায় অন্তত শূন্য দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি তাপমাত্রায় বেড়ে উঠছে।

২১০০ সালের মধ্যে তাপমাত্রা বাড়তে পারে ২ দশমিক ৮ ডিগ্রি পর্যন্ত। এই বাড়তি তাপমাত্রা কিশোরদের জন্য ভয়াবহ ঝুঁকি তৈরি করবে—তাপজনিত অসুস্থতা, খাদ্য ও পানির সংকট, এবং জলবায়ু-জনিত মানসিক সমস্যার মতো নানা সংকট দেখা দেবে।

কমিশনের এক নতুন পর্যালোচনায় উঠে এসেছে, আকস্মিক দুর্যোগ (যেমন ঝড় বা ঘূর্ণিঝড়) ও দীর্ঘমেয়াদি সংকট (যেমন-খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা) কিশোরদের মানসিক স্বাস্থ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। পিটিএসডি (ট্রমাজনিত মানসিক চাপ), উদ্বেগ ও বিষণ্নতার মতো সমস্যাও বাড়ছে।

পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমও এ প্রজন্মের তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্যে ভয়াবহ প্রভাব ফেলছে।

ল্যানসেট কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়, ডিজিটাল জীবন কিশোরদের জন্য এক ধরনের দ্বিমুখী তলোয়ার। একদিকে এটি তরুণদের শেখা, কাজ করা ও স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার নতুন সুযোগ এনে দিচ্ছে। অন্যদিকে, অনেক বাস্তব অভিজ্ঞতা এখন ভার্চুয়াল মাধ্যম দখল করে নিচ্ছে। যদিও গবেষণা এখনো সীমিত, তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের মানসিক প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।

কমিশনের মতে, এখানে ভারসাম্য বজায় রাখা জরুরি। অপ্রয়োজনীয়ভাবে কিশোরদের বিচ্ছিন্ন না করে আগাম প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।

২০১৬ সালে প্রকাশিত ল্যানসেটের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, প্রায় ১০০ কোটি কিশোর-তরুণ এমন দেশে বাস করে যেগুলো ‘বহুমুখী-সংকটপূর্ণ দেশ’। সেসব দেশে তরুণ প্রজন্ম প্রতিদিন নানা স্বাস্থ্যঝুঁকির মুখে পড়ছে। এখন সে সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১১০ কোটিতে। জরুরি পদক্ষেপ না নেওয়া হলে ২০৩০ সালেও এই সংখ্যাটা ১০০ কোটির ওপরেই থাকবে বলে প্রতিবেদনে পূর্বাভাস দেওয়া হয়।

এই সব চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও কিশোরদের স্বাস্থ্য ও কল্যাণে অর্থায়ন যথেষ্ট নয়। বিশ্বের জনসংখ্যার ২৫ শতাংশ হলো কিশোর-কিশোরী। তারা বৈশ্বিক রোগ-ভার বোঝার ৯ শতাংশের সম্মুখীন। তবু তাদের জন্য বরাদ্দ বৈশ্বিক সহায়তা মাত্র ২.৪ শতাংশ।

তরুণদের স্বাস্থ্য ও কল্যাণে বিনিয়োগ ছাড়া ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত রাখা সম্ভব নয় বলে মনে করেন অধ্যাপক সারা বের্ড। তিনি বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই কিশোরদের স্বাস্থ্য ও কল্যাণে বিনিয়োগকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে স্কুলগুলোর ক্ষমতা বাড়ানো এবং কিশোরদের জন্য সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা।’

কমিশনের ভাষ্য, এটি অত্যন্ত দুর্বল বিনিয়োগ কৌশল। তরুণদের ওপর ব্যয় করলে তার ফলাফল শিশুদের প্রাথমিক বয়সে বিনিয়োগের সমান বা কখনো কখনো তার চেয়েও বেশি হতে পারে। তবে বাস্তবে দেখা যায়, অর্থ বরাদ্দ হয় মূলত প্রাপ্তবয়স্ক বা ছোট শিশুদের জন্য। এর পেছনে অন্যতম কারণ, কিশোরদের স্বাস্থ্য নিয়ে বৈশ্বিক ও জাতীয় পর্যায়ে শক্ত নেতৃত্ব ও সমন্বয়ের ঘাটতি।

সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. অ্যারন জেনকিন্স বলেন, ‘মানব কল্যাণের প্রাকৃতিক ভিত্তিকে গুরুত্ব দিয়ে আমাদের দ্বিতীয় ল্যানসেট কমিশন যেভাবে কিশোর স্বাস্থ্য ও কল্যাণ নিয়ে কাজ করেছে, তা আমাকে গভীরভাবে আশাবাদী করেছে। প্রথমবারের মতো আমরা এমন হস্তক্ষেপ চিহ্নিত করছি যা একযোগে কিশোর স্বাস্থ্য, পরিবেশ রক্ষা, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ, জলবায়ু পরিবর্তন প্রতিরোধ এবং সামাজিক ন্যায়ের অগ্রগতি ঘটাতে পারে।’

এই গবেষণায়র বিশেষত্ব হলো, তরুণদের সক্রিয় অংশগ্রহণ। ২৩ থেকে ৩৫ বছর বয়সী ১০ জন ‘ইয়ুথ কমিশনার’ বিভিন্ন খাত যেমন শিক্ষা, সিভিল সোসাইটি ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিত্ব করে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তাদের অভিজ্ঞতা ও নেতৃত্বই কমিশনের চূড়ান্ত সুপারিশকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে। এ ছাড়া, ৩৬টি দেশের ২০০-রও বেশি কিশোর অংশ নিয়েছে ‘ইয়ুথ সলিউশন ল্যাব’-এ। তারা স্বাস্থ্য সংক্রান্ত অগ্রাধিকার ও সমাধান চিহ্নিত করেছে।

কমিশনার ড. শাকিরা চুনারা বলেন, ‘তরুণরা এক দ্রুত পরিবর্তনশীল পৃথিবীতে পথ খুঁজছে। এই কমিশনের মাধ্যমে আমরা তাদের বৈচিত্র্যময় ও উদ্বেগজনক অভিজ্ঞতা শুনেছি। তবে সুযোগও রয়েছে। আমরা দেখেছি, তরুণরা ইতিমধ্যেই সক্রিয় নাগরিক হিসেবে নিজেদের অবস্থান তৈরি করছে, নেতৃত্ব দিচ্ছে, পরিবর্তন আনছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘তরুণ নেতৃত্ব যেভাবে নিজ নিজ সমাজ ও বৈশ্বিক পরিসরে পরিবর্তন আনছে, তা আমাকে গভীরভাবে অনুপ্রাণিত করে। আমাদের প্রজন্মে বিনিয়োগ ও তাদের সঙ্গে সম্পৃক্ততা গড়লে ভবিষ্যতের নেতৃত্ব আরও সুস্থ, সচেতন ও সক্ষম হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

এমবিবিএস ও বিডিএস ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাসের হার ৬৬.৫৭ শতাংশ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৯: ৩৪
এমবিবিএস ও বিডিএস ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাসের হার ৬৬.৫৭ শতাংশ

দেশের সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল এবং ডেন্টাল কলেজে ব্যাচেলর অব মেডিসিন অ্যান্ড ব্যাচেলর অব সার্জারি (এমবিবিএস) ও ব্যাচেলর অব ডেন্টাল সার্জারি (বিডিএস) ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়েছে। পাসের হার ৬৬ দশমিক ৫৭ শতাংশ। ভর্তি পরীক্ষায় সর্বোচ্চ প্রাপ্ত নম্বর ৯১ দশমিক ২৫।

আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে এ ফলাফল স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদপ্তর প্রকাশ করে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়।

মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ভর্তি পরীক্ষায় পাস করা পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৮১ হাজার ৬৪২ জন। তাঁদের মধ্যে পুরুষ পরীক্ষার্থী ৩১ হাজার ১২৮ জন এবং নারী পরীক্ষার্থী ৫০ হাজার ৫১৪ জন। ভর্তি পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর এবং এসএসসি বা সমমান ও এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএ হতে নম্বর যোগ করে অর্জিত স্কোরের ভিত্তিতে মেধা ও পছন্দক্রম অনুযায়ী ৫ হাজার ৬৪৫ জন প্রার্থীকে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত করা হয়েছে।

স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদপ্তর বলছে, সরকারি ৩৭টি মেডিকেল কলেজ, ঢাকা ডেন্টাল কলেজ, আটটি মেডিকেল কলেজ ডেন্টাল ইউনিটসমূহের ৫ হাজার ৬৪৫টি আসনের জন্য নির্বাচিত নারী পরীক্ষার্থী ৩ হাজার ৬০৩ জন ও পুরুষ পরীক্ষার্থী ২ হাজার ৪২ জন।

গত শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত দেশের ১৭টি কেন্দ্র ও ৪৯টি ভেন্যুতে ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস ও বিডিএস কোর্সের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। সরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজগুলোতে আসনসংখ্যা ৫ হাজার ৬৪৫টি; যার মধ্যে এমবিবিএসের ৫ হাজার ১০০ ও বিডিএসের ৫৪৫টি।

বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজগুলোতে আসনসংখ্যা ৭ হাজার ৩৬১টি; যার মধ্যে এমবিসিএসের ৬ হাজার ১ ও বিডিএসের ১ হাজার ৩৬০টি। মোট ১৩ হাজার ৬টি আসনের বিপরীতে এ বছর মোট আবেদনকারী ১ লাখ ২২ হাজার ৬৩২ জন। ভর্তি পরীক্ষায় ১ লাখ ২০ হাজার ৪৪০ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শীতে যেসব খাবার মন শান্ত রাখবে

মো. ইকবাল হোসেন
আপডেট : ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ৫২
শীতে যেসব খাবার মন শান্ত রাখবে

ডিসেম্বর মানেই হাড়কাঁপানো শীত। আর শীত মানেই খাবারের উৎসব। খেজুরের রস, পিঠা পায়েসের কমতি হয় না এ ঋতুতে। কনকনে ঠান্ডার বিপক্ষে যুদ্ধে আমাদের প্রধান হাতিয়ার খাবার। তবে সঠিক খাবার বাছাই করা না গেলে হিতে বিপরীত হতে পারে।

মানুষের শরীরের গঠন অন্যান্য প্রাণীর চেয়ে কিছুটা ভিন্ন। পৃথিবীর বেশির ভাগ প্রাণীর চেয়ে মানুষের খাদ্যাভ্যাস ভিন্ন। আমাদের শরীরের প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গের জন্য আলাদা পুষ্টির প্রয়োজন হয়। যেমন চোখের যত্নে ভিটামিন এ, ত্বকের যত্নে ভিটামিন বি, হাড়ের যত্নে ভিটামিন ডি ইত্যাদি। এসব চাহিদা পূরণ করে খাবার খেলে শরীরে সুখের হরমোনের নিঃসরণ বেড়ে যায় এবং আমাদের সুখানুভূতি হয়, মন শান্ত থাকে।

ডোপামিন হরমোনের জন্য খাবার

মন ভালো রাখার অন্যতম হরমোন ডোপামিন। এটি নিঃসরণে খাবারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। আমাদের অন্ত্রে ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা যত বাড়বে, ডোপামিনের নিঃসরণও তত বাড়বে। তাই অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বাড়াতে গুড ফ্যাট বা ভালো চর্বিসমৃদ্ধ, গাঁজানো এবং আঁশসমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে।

সে ক্ষেত্রে চমৎকার খাবার হতে পারে শীতকালীন বিভিন্ন শাকসবজি। শিমের বিচি, মটরশুঁটি, বরবটিসহ অন্যান্য শাকসবজি ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বাড়াতে চমৎকার কাজ করে। এ ছাড়া সামুদ্রিক মাছ, মাছের তেল, অলিভ অয়েল, টক দই ইত্যাদি খাবারও পর্যাপ্ত খেতে হবে। আঁশের উৎস হিসেবে লালশাক, পালংশাক, সবুজ শাক খেতে হবে। ভাজাপোড়া, প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং ডুবোতেলে ভাজা খাবার যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে।

সেরোটোনিন হরমোনের জন্য খাবার

আমাদের মন ভালো রাখার আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ হরমোন হচ্ছে সেরোটোনিন। ৯০ শতাংশ সেরোটোনিন উৎপন্ন হয় অন্ত্রের এন্টেরোক্রমাফিন কোষের এন্টেরিক নার্ভাস সিস্টেম থেকে। এ জন্য অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখা বেশি জরুরি। অন্ত্রের পেশি নড়াচড়ায় সেরোটোনিন সাহায্য করে। মাত্র ১ শতাংশ সেরোটোনিন মস্তিষ্কে নিঃসৃত হয়। এই ১ শতাংশ সেরোটোনিন মুড, ঘুম, স্মৃতি, ক্ষুধা, মন ভালো থাকা ইত্যাদির ওপর প্রভাব বিস্তার করে। ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, আয়রন এবং আঁশসমৃদ্ধ খাবার, ভিটামিন বি-১২ এবং ভিটামিন ডি সেরোটোনিনের নিঃসরণ বাড়ায়। খাবারের পাশাপাশি রাতে ভালো ঘুম সেরোটোনিনের নিঃসরণ বাড়িয়ে দেয়। সে ক্ষেত্রে পরিমিত রেডমিট, ব্রকলি, বাঁধাকপি, শিম, গাজরসহ সব ধরনের শীতকালীন সবজি এবং শীতের মিষ্টি রোদ দারুণ কাজ করে।

এ ছাড়া অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি গুণসমৃদ্ধ খাবার, যেমন দারুচিনি, লবঙ্গ, হলুদ, ফ্ল্যাক্স সিড, চিয়া সিড খাদ্যতালিকায় যোগ করতে হবে।

এন্ডোরফিন হরমোনের জন্য খাবার

শীতে শরীরে ব্যথার প্রকোপ কিছুটা হলেও বেড়ে যায়। তবে এন্ডোরফিন নামক হরমোন প্রাকৃতিকভাবে ব্যথা উপশম করে। শারীরিক বা মানসিকভাবে আহত হলে এন্ডোরফিন সক্রিয় হয়ে আমাদের ব্যথা নিরাময় করে। অতিরিক্ত ওজন, বিষণ্নতা, উচ্চ রক্তচাপ এন্ডোরফিনের নিঃসরণ কমিয়ে দেয়। তবে কিছু খাবার আছে; যেগুলো খেলে এন্ডোরফিন হরমোনের নিঃসরণ বাড়ে। ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ খাবারগুলো শরীরে ভিটামিন সি-এর চাহিদা পূরণের পাশাপাশি এন্ডোরফিন নিঃসরণে সহযোগিতা করে। তাই শীতে মন ভালো রাখতে পর্যাপ্ত পাতিলেবু, মোসাম্বি, পেয়ারা, কলা, জাম্বুরা ও কমলা খেতে হবে।

এর পাশাপাশি টমেটো, কাঁচা মরিচ, ক্যাপসিকাম ও পালংশাক শরীরের প্রয়োজনীয় ভিটামিন সি-এর জোগান দিতে পারে; সঙ্গে মেটায় আঁশ, পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়ামের ঘাটতিও।

এ ছাড়া শীতকালীন প্রায় সব শাকসবজি অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরপুর এবং ক্যানসার প্রতিরোধী গুণসমৃদ্ধ। এগুলো যদি নিয়মিত খাওয়া যায়, তাহলে শরীরে বাড়ে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা। শীতকালীন পালংশাক, গাজর, টমেটো, বিটরুট, ক্যাপসিকাম, ব্রকলি হয়ে উঠতে পারে সুস্থ থাকার অন্যতম হাতিয়ার। শীতকালীন সবজি ভালো কোলেস্টেরল বাড়িয়ে দিতে এবং খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে অত্যন্ত উপযোগী। তাই শীতকালে সুস্থতার অন্যতম চাবিকাঠি হতে পারে এসব সবজি।

আমাদের শরীরের অবহেলিত অঙ্গ ক্ষুদ্রান্ত্র। আমরা বিভিন্ন রকমের অস্বাস্থ্যকর খাবার খাই। সেসবের প্রভাব পড়ে ক্ষুদ্রান্ত্রের ওপর। এসব অস্বাস্থ্যকর খাবারের ফলে আমাদের ক্ষুদ্রান্ত্রের ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা কমতে থাকে।

ফলে গ্যাসের সমস্যা, ফ্যাটি লিভার, কোলেস্টেরল, কোষ্ঠকাঠিন্য বা কিডনি সমস্যার ঝুঁকি বাড়ে। আবার বিভিন্ন ধরনের ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবেও কমে যায় এসব ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা। তাই সুস্থ থাকতে এবং মন ভালো রাখতে শীতকাল হতে পারে আপনার জীবনের সেরা সময়।

আরও যা মনে রাখবেন

খাবার খাওয়ার পাশাপাশি আরও কিছু বিষয় বিবেচনায় রাখতে হবে—

  • গ্যাস্ট্রিকসহ অন্যান্য ওষুধ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া খাওয়া যাবে না।
  • লাল আটা এবং আঁশসমৃদ্ধ চালের ভাত খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে।
  • ফার্মেন্টেড ফুড; যেমন টক দই বা পান্তা খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে।
  • প্রতিদিন এক বেলা ৩০-৪০ মিনিট হাঁটার অভ্যাস বা ব্যায়াম করতে হবে।
  • সপ্তাহে অন্তত দুই দিন সামুদ্রিক মাছ খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে।
  • অন্তত প্রতি ১৫ দিনে এক দিন কাছাকাছি দূরত্বে ঘুরতে যেতে হবে।
  • রাতে কমপক্ষে ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমাতে হবে।

পুষ্টিবিদ ও জ্যেষ্ঠ পুষ্টি কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পুরুষ বন্ধ্যত্ব: কারণ, লক্ষণ ও চিকিৎসা

ডা. অবন্তি ঘোষ
আপডেট : ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ১৫
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

চিকিৎসাবিজ্ঞানে সব বন্ধ্যত্বের ৩০ থেকে ৪০ শতাংশের জন্য পুরুষের সমস্যা দায়ী। এ ছাড়া পুরুষের বীর্যে শুক্রাণুর সংখ্যা কমে গেলে, শুক্রাণুর গতি কম থাকলে কিংবা একেবারেই শুক্রাণু না পাওয়া গেলে এবং স্বামী-স্ত্রী নিয়মিত সহবাসের পরও যদি এক বছরের মধ্যে গর্ভধারণ না হয়, তাহলে সেটিকে বলা হয় পুরুষ বন্ধ্যত্ব।

জীবনযাপন ও অভ্যাসের কারণ

  • নিয়মিত ধূমপান
  • অ্যালকোহল ও অন্য নেশাজাতীয় দ্রব্য গ্রহণ
  • দীর্ঘ সময় বসে থাকা অথবা কম নড়াচড়া করা
  • অতিরিক্ত ওজন
  • অনিয়মিত ঘুম
  • মানসিক চাপ

শরীরের ভেতরের হরমোন ও শারীরবৃত্তীয় কারণ

  • টেস্টোস্টেরন হরমোনের সমস্যা
  • থাইরয়েড হরমোনের অস্বাভাবিকতা
  • প্রোল্যাকটিন হরমোনের বৃদ্ধি
  • জিনগত সমস্যা

সংক্রমণ ও শারীরিক রোগ

  • ক্ল্যামাইডিয়া বা গনোরিয়া সংক্রমণ
  • অণ্ডকোষের টিউমার
  • ভেরিকোসিল
  • মামস-পরবর্তী অণ্ডকোষের প্রদাহ
  • শুক্রনালির ব্লকেজ

পরিবেশগত কারণ

  • যাঁদের দীর্ঘ সময় গরম পরিবেশে কাজ করতে হয়
  • যাঁরা নিয়মিত গরম পানিতে গোসল করেন

পুরুষ বন্ধ্যত্ব যেভাবে নির্ণয়

বীর্য পরীক্ষার পর শুক্রাণুর সংখ্যা, গতি, আকৃতি, পরিমাণ ইত্যাদি

দেখা হয়।

  • অন্তত তিন দিন সহবাস বন্ধ রেখে নমুনা দিতে হয়
  • প্রথম পরীক্ষার রিপোর্ট খারাপ হলে এক মাস পর আবার পরীক্ষা করা হয়
  • দ্বিতীয় পরীক্ষাও স্বাভাবিক না হলে অণ্ডকোষের আলট্রাসনোগ্রাম এবং হরমোন পরীক্ষা করা হয় এসব পরীক্ষার মাধ্যমে জানা যায় সমস্যা কোথায়, কতটা এবং কোন ধরনের চিকিৎসা প্রয়োজন।

চিকিৎসা

চিকিৎসা নির্ভর করে সমস্যা কেমন এবং কোন স্তরে রয়েছে, তার ওপর। সাধারণভাবে চিকিৎসা কয়েকটি ধাপে করা হয়।

জীবনযাপনের পরিবর্তন

ওষুধ ও পুষ্টিগুণ

শুক্রাণুর সংখ্যা ও গতি উন্নত করতে কিছু পুষ্টি উপাদান এবং ভিটামিন দেওয়া হয়, যেমন:

ওষুধ শুরুর পর রোগীকে তিন মাস পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। কারণ, নতুন শুক্রাণু তৈরিতে প্রায় ৭৫ দিন লাগে।

স্বাভাবিকভাবে গর্ভধারণের চেষ্টা

ওষুধে উন্নতি হলে স্বামী-স্ত্রী স্বাভাবিক পদ্ধতিতে গর্ভধারণের চেষ্টা করতে পারেন। প্রয়োজনে স্ত্রীকে ডিম্বাণু উৎপাদন বাড়ানোর ওষুধ দেওয়া হয়।

বিশেষ চিকিৎসা

  • যদি শুক্রাণুর সংখ্যা বা গতি মাঝারি কম হয়, তাহলে আইইউআই (গর্ভাশয়ে শুক্রাণু প্রবেশ করানো) করা যায়।
  • সংখ্যা খুব কম হলে বা গতি খুব খারাপ হলে আইসিএসআই (শুক্রাণু সরাসরি ডিম্বাণুর মধ্যে প্রবেশ করানো) করা হয়।

অস্ত্রোপচার

ভেরিকোসিল কিংবা শুক্রনালির ব্লকেজ থাকলে সার্জারির প্রয়োজন হতে পারে।

অ্যাজোস্পার্মিয়া হলে করণীয়

যাঁদের বীর্যে একেবারেই শুক্রাণু পাওয়া যায় না, যাকে অ্যাজোস্পার্মিয়া বলা হয়, তাঁদের ক্ষেত্রে অণ্ডকোষ থেকে সরাসরি শুক্রাণু সংগ্রহ করে আইসিএসআই করাই সবচেয়ে কার্যকর।

গাইনি, প্রসূতি ও বন্ধ্যাত্ব রোগ বিশেষজ্ঞ, আলোক হেলথকেয়ার, মিরপুর-১০

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শীতকালীন নানা রোগ থেকে মুক্ত থাকবেন যেভাবে

ডা. কাকলী হালদার
আপডেট : ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫: ২৪
শীতকালীন নানা রোগ থেকে মুক্ত থাকবেন যেভাবে

শীতকাল মানেই শুষ্ক, ঠান্ডা আবহাওয়া এবং তার সঙ্গে রোগজীবাণুর সহজ সংক্রমণ। এ সময় প্রধানত ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াজনিত শ্বাসতন্ত্রের রোগগুলো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে আমাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কিছুটা দুর্বল হয় এবং বদ্ধ জায়গায় মানুষ কাছাকাছি থাকায় রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে।

ভাইরাসজনিত সংক্রমণ

সাধারণ সর্দি-কাশি: রাইনোভাইরাস দিয়ে সংক্রমণ হলে হাঁচি, নাক দিয়ে পানি পড়া এবং হালকা গলাব্যথা পর্যন্ত হতে পারে।

ইনফ্লুয়েঞ্জা: ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের সংক্রমণ হলে সাধারণ সর্দির চেয়ে গুরুতর সমস্যা দেখা যায়। এর লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে উচ্চ জ্বর, শরীর ও পেশিতে প্রচণ্ড ব্যথা, ক্লান্তি এবং গাঢ় কাশি।

রেসপিরেটরি সিনসিশিয়াল ভাইরাস বা আরএসভি: এটি শিশুদের মধ্যে ব্রঙ্কিওলাইটিসের মতো গুরুতর শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ ঘটায়।

ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণ

এ ধরনের রোগ নিউমোনিয়া অথবা স্ট্রেপটোকক্কাসজনিত গলাব্যথার মতো কিছু ক্ষেত্রে গুরুতর ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের দিকে মোড় নিতে পারে, যা অ্যান্টিবায়োটিকের মাধ্যমে চিকিৎসার প্রয়োজন হয়।

রোগ প্রতিরোধের উপায়

সংক্রমণ এড়াতে এবং রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে কিছু সহজ পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে। যেমন—

ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা: নিয়মিত সাবান ও পানি দিয়ে খাওয়ার আগে, টয়লেট ব্যবহারের পরে, হাঁচি-কাশি দেওয়ার পরে, অপরিচ্ছন্ন কিছু স্পর্শ করার পর হাত ধোয়া জরুরি। হাঁচি-কাশির সময় রুমাল বা টিস্যু ব্যবহার করা এবং ব্যবহৃত টিস্যু নির্দিষ্ট স্থানে ফেলা উচিত।

পুষ্টিকর খাবার খাওয়া এবং পানি পান করা: পর্যাপ্ত ভিটামিন ‘সি’সমৃদ্ধ ফল; যেমন লেবু, কমলা, আমলকী ইত্যাদি এবং শাকসবজি খেয়ে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে হবে। পানিশূন্যতা এড়াতে হালকা গরম পানি পান করুন।

উষ্ণতা বজায় রাখা: কান, মাথা ও গলা ঢেকে গরম জামাকাপড় পরুন। ঘর উষ্ণ রাখুন এবং সরাসরি ঠান্ডা বাতাস এড়িয়ে চলুন।

ভিড় এড়িয়ে চলা: অসুস্থতা চলাকালে যেকোনো ভিড় অথবা জনসমাগমপূর্ণ স্থানে যাওয়া থেকে বিরত থাকুন।

টিকা নেওয়া: শিশু, বয়স্ক বা দীর্ঘমেয়াদি রোগীদের মতো ঝুঁকিপূর্ণ মানুষ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ইনফ্লুয়েঞ্জা এবং নিউমোনিয়ার টিকা নিতে পারেন।

সহকারী অধ্যাপক, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত