আজকের পত্রিকা ডেস্ক

বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে কিশোর-কিশোরীরা। গবেষণা বলছে, ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের ১০০ কোটিরও বেশি ১০ থেকে ২৪ বছর বয়সী কিশোর-তরুণ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে থাকবে। এই বয়সীদের মধ্যে এইচআইভি বা এইডস, অকাল গর্ভধারণ, অনিরাপদ যৌনতা, মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা, অপুষ্টি ও দুর্ঘটনার মতো সংকট বেড়ে যাবে। যার অনেকগুলোই প্রতিরোধযোগ্য বা চিকিৎসাযোগ্য হলেও পরিস্থিতির তেমন উন্নতি হবে না বলে আশঙ্কা করছেন গবেষকেরা।
মেডিকেল জার্নাল ল্যানসেটে প্রকাশিত ‘ল্যানসেট কমিশন অন অ্যাডোলেসেন্ট হেলথ অ্যান্ড ওয়েলবিয়িং’-এর দ্বিতীয় প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
গবেষকেরা বলেছেন, বিশ্বে কিশোর-কিশোরীদের স্বাস্থ্য নিয়ে কাজের অগ্রগতি খুবই ধীর এবং অসম। ফলে অনেকে তরুণ বয়সে এসে পেছনে পড়ে যাচ্ছে।
বিশ্বজুড়ে কিশোর-কিশোরীদের স্বাস্থ্য এখন এক সন্ধিক্ষণে এসে দাঁড়িয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন এক গবেষক জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সারা বের্ড।
২০১৬ সালে ল্যানসেট এই বিষয়ে প্রথম প্রতিবেদন করেছিল। নতুন এই প্রতিবেদনটিতে গত ১০ বছরে কিশোর স্বাস্থ্যের পরিবর্তন পর্যালোচনা করা হয়েছে। কিছু ইতিবাচক দিক উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে দেখা গেছে, কিশোরদের মধ্যে ধূমপান ও অ্যালকোহল সেবনের হার কমেছে। বেড়েছে শিক্ষার হার। অনেকেই মাধ্যমিক শেষ করে কলেজে যাচ্ছে। তবে এসব সাফল্য ম্লান হয়ে গেছে নতুন ও বাড়তে থাকা সমস্যার কারণে।
বেড়েছে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা ও স্থূলতা
প্রতিবেদনে দেখা গেছে, কিশোর-কিশোরীদের মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা আরও তীব্র ও ব্যাপক হয়েছে। অন্যদিকে আফ্রিকা ও এশিয়ার কিছু অঞ্চলে কিশোরদের স্থূলতার হার ৮ গুণ বেড়েছে। এর চেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো, কিছু গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে এক দশকেও কোনো অগ্রগতি হয়নি।
সবচেয়ে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি রয়েছে কিশোরদের মানসিক স্বাস্থ্যের। গত ৩০ বছরে তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্য অনেকটাই খারাপের দিকে গেছে। কোভিড-১৯ মহামারিতে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০৩০ সালের মধ্যে মানসিক অসুস্থতা ও আত্মহত্যার কারণে কিশোর প্রজন্ম থেকে হারিয়ে যাচ্ছে ৪ কোটি ২০ লাখ ‘সুস্থ জীবন বছর’, যা ২০১৫ সালের তুলনায় ২০ লাখ বেশি।
এছাড়াও বিশ্বজুড়ে অস্বাভাবিক হারে স্থূলতা বাড়ছে বলে জানিয়েছে ল্যানসেট কমিশন। ২০৩০ সালের মধ্যে উন্নত দেশ, ল্যাটিন আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্যে প্রতি তিনজন কিশোরের একজন অতিরিক্ত ওজনের হতে পারে। বিশ্বজুড়ে অতিরিক্ত ওজনের কিশোরের সংখ্যা ২০১৫ সালে ছিল ৩২ কোটি ১০ লাখ। ২০৩০ সালে তা বেড়ে দাঁড়াতে পারে ৪৬ কোটি ৪০ লাখে।
আরেকটি বড় সমস্যা অ্যানিমিয়া বা রক্তশূন্যতা, বিশেষ করে মেয়েদের মধ্যে এটি বেশি দেখা যাচ্ছে। ল্যানসেটের প্রতিবেদন বলছে, ২০৩০ সালের মধ্যে প্রতি তিনজন কিশোরীর একজন এই রোগে আক্রান্ত হতে পারে। রক্তশূন্যতা ক্লান্তি, শারীরিক বৃদ্ধি ব্যাহত হওয়া এবং গুরুতর ক্ষেত্রে অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ক্ষতির সঙ্গে জড়িত। অথচ এই সমস্যার সমাধানে অগ্রগতি খুব ধীর।
আগামীতে কিশোর স্বাস্থ্য ও কল্যাণে বৈশ্বিক অগ্রগতি নির্ধারণে জনসংখ্যাগত পরিবর্তন মুখ্য ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন ড্রেক্সেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অ্যালেক্স ইজে। তিনি বলেন, ‘আফ্রিকার কিশোর-কিশোরীদের বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব বর্তমানে ২৫ শতাংশের নিচে। ২১০০ সালের মধ্যে তা বেড়ে ৪৬ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে। ফলে আফ্রিকায় কিশোরদের স্বাস্থ্য ও কল্যাণে অগ্রগতি না হলে বৈশ্বিক পর্যায়ে এই বয়সভিত্তিক উন্নয়ন থমকে যাবে।’
জলবায়ু পরিবর্তন ও ডিজিটাল প্রযুক্তির প্রভাব
ল্যানসেট কমিশন বলছে, আগামী কয়েক দশকে কিশোরদের স্বাস্থ্যকে সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত করবে দুটি উদীয়মান বিষয়—জলবায়ু পরিবর্তন ও ডিজিটাল প্রযুক্তি।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব আজকের তরুণেরা ইতিমধ্যেই অনুভব করছে। এই প্রজন্মই প্রথম, যারা গড়ে শিল্পবিপ্লব-পূর্ব সময়ের তুলনায় অন্তত শূন্য দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি তাপমাত্রায় বেড়ে উঠছে।
২১০০ সালের মধ্যে তাপমাত্রা বাড়তে পারে ২ দশমিক ৮ ডিগ্রি পর্যন্ত। এই বাড়তি তাপমাত্রা কিশোরদের জন্য ভয়াবহ ঝুঁকি তৈরি করবে—তাপজনিত অসুস্থতা, খাদ্য ও পানির সংকট, এবং জলবায়ু-জনিত মানসিক সমস্যার মতো নানা সংকট দেখা দেবে।
কমিশনের এক নতুন পর্যালোচনায় উঠে এসেছে, আকস্মিক দুর্যোগ (যেমন ঝড় বা ঘূর্ণিঝড়) ও দীর্ঘমেয়াদি সংকট (যেমন-খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা) কিশোরদের মানসিক স্বাস্থ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। পিটিএসডি (ট্রমাজনিত মানসিক চাপ), উদ্বেগ ও বিষণ্নতার মতো সমস্যাও বাড়ছে।
পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমও এ প্রজন্মের তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্যে ভয়াবহ প্রভাব ফেলছে।
ল্যানসেট কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়, ডিজিটাল জীবন কিশোরদের জন্য এক ধরনের দ্বিমুখী তলোয়ার। একদিকে এটি তরুণদের শেখা, কাজ করা ও স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার নতুন সুযোগ এনে দিচ্ছে। অন্যদিকে, অনেক বাস্তব অভিজ্ঞতা এখন ভার্চুয়াল মাধ্যম দখল করে নিচ্ছে। যদিও গবেষণা এখনো সীমিত, তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের মানসিক প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।
কমিশনের মতে, এখানে ভারসাম্য বজায় রাখা জরুরি। অপ্রয়োজনীয়ভাবে কিশোরদের বিচ্ছিন্ন না করে আগাম প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।
২০১৬ সালে প্রকাশিত ল্যানসেটের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, প্রায় ১০০ কোটি কিশোর-তরুণ এমন দেশে বাস করে যেগুলো ‘বহুমুখী-সংকটপূর্ণ দেশ’। সেসব দেশে তরুণ প্রজন্ম প্রতিদিন নানা স্বাস্থ্যঝুঁকির মুখে পড়ছে। এখন সে সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১১০ কোটিতে। জরুরি পদক্ষেপ না নেওয়া হলে ২০৩০ সালেও এই সংখ্যাটা ১০০ কোটির ওপরেই থাকবে বলে প্রতিবেদনে পূর্বাভাস দেওয়া হয়।
এই সব চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও কিশোরদের স্বাস্থ্য ও কল্যাণে অর্থায়ন যথেষ্ট নয়। বিশ্বের জনসংখ্যার ২৫ শতাংশ হলো কিশোর-কিশোরী। তারা বৈশ্বিক রোগ-ভার বোঝার ৯ শতাংশের সম্মুখীন। তবু তাদের জন্য বরাদ্দ বৈশ্বিক সহায়তা মাত্র ২.৪ শতাংশ।
তরুণদের স্বাস্থ্য ও কল্যাণে বিনিয়োগ ছাড়া ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত রাখা সম্ভব নয় বলে মনে করেন অধ্যাপক সারা বের্ড। তিনি বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই কিশোরদের স্বাস্থ্য ও কল্যাণে বিনিয়োগকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে স্কুলগুলোর ক্ষমতা বাড়ানো এবং কিশোরদের জন্য সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা।’
কমিশনের ভাষ্য, এটি অত্যন্ত দুর্বল বিনিয়োগ কৌশল। তরুণদের ওপর ব্যয় করলে তার ফলাফল শিশুদের প্রাথমিক বয়সে বিনিয়োগের সমান বা কখনো কখনো তার চেয়েও বেশি হতে পারে। তবে বাস্তবে দেখা যায়, অর্থ বরাদ্দ হয় মূলত প্রাপ্তবয়স্ক বা ছোট শিশুদের জন্য। এর পেছনে অন্যতম কারণ, কিশোরদের স্বাস্থ্য নিয়ে বৈশ্বিক ও জাতীয় পর্যায়ে শক্ত নেতৃত্ব ও সমন্বয়ের ঘাটতি।
সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. অ্যারন জেনকিন্স বলেন, ‘মানব কল্যাণের প্রাকৃতিক ভিত্তিকে গুরুত্ব দিয়ে আমাদের দ্বিতীয় ল্যানসেট কমিশন যেভাবে কিশোর স্বাস্থ্য ও কল্যাণ নিয়ে কাজ করেছে, তা আমাকে গভীরভাবে আশাবাদী করেছে। প্রথমবারের মতো আমরা এমন হস্তক্ষেপ চিহ্নিত করছি যা একযোগে কিশোর স্বাস্থ্য, পরিবেশ রক্ষা, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ, জলবায়ু পরিবর্তন প্রতিরোধ এবং সামাজিক ন্যায়ের অগ্রগতি ঘটাতে পারে।’
এই গবেষণায়র বিশেষত্ব হলো, তরুণদের সক্রিয় অংশগ্রহণ। ২৩ থেকে ৩৫ বছর বয়সী ১০ জন ‘ইয়ুথ কমিশনার’ বিভিন্ন খাত যেমন শিক্ষা, সিভিল সোসাইটি ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিত্ব করে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তাদের অভিজ্ঞতা ও নেতৃত্বই কমিশনের চূড়ান্ত সুপারিশকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে। এ ছাড়া, ৩৬টি দেশের ২০০-রও বেশি কিশোর অংশ নিয়েছে ‘ইয়ুথ সলিউশন ল্যাব’-এ। তারা স্বাস্থ্য সংক্রান্ত অগ্রাধিকার ও সমাধান চিহ্নিত করেছে।
কমিশনার ড. শাকিরা চুনারা বলেন, ‘তরুণরা এক দ্রুত পরিবর্তনশীল পৃথিবীতে পথ খুঁজছে। এই কমিশনের মাধ্যমে আমরা তাদের বৈচিত্র্যময় ও উদ্বেগজনক অভিজ্ঞতা শুনেছি। তবে সুযোগও রয়েছে। আমরা দেখেছি, তরুণরা ইতিমধ্যেই সক্রিয় নাগরিক হিসেবে নিজেদের অবস্থান তৈরি করছে, নেতৃত্ব দিচ্ছে, পরিবর্তন আনছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘তরুণ নেতৃত্ব যেভাবে নিজ নিজ সমাজ ও বৈশ্বিক পরিসরে পরিবর্তন আনছে, তা আমাকে গভীরভাবে অনুপ্রাণিত করে। আমাদের প্রজন্মে বিনিয়োগ ও তাদের সঙ্গে সম্পৃক্ততা গড়লে ভবিষ্যতের নেতৃত্ব আরও সুস্থ, সচেতন ও সক্ষম হবে।’

বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে কিশোর-কিশোরীরা। গবেষণা বলছে, ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের ১০০ কোটিরও বেশি ১০ থেকে ২৪ বছর বয়সী কিশোর-তরুণ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে থাকবে। এই বয়সীদের মধ্যে এইচআইভি বা এইডস, অকাল গর্ভধারণ, অনিরাপদ যৌনতা, মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা, অপুষ্টি ও দুর্ঘটনার মতো সংকট বেড়ে যাবে। যার অনেকগুলোই প্রতিরোধযোগ্য বা চিকিৎসাযোগ্য হলেও পরিস্থিতির তেমন উন্নতি হবে না বলে আশঙ্কা করছেন গবেষকেরা।
মেডিকেল জার্নাল ল্যানসেটে প্রকাশিত ‘ল্যানসেট কমিশন অন অ্যাডোলেসেন্ট হেলথ অ্যান্ড ওয়েলবিয়িং’-এর দ্বিতীয় প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
গবেষকেরা বলেছেন, বিশ্বে কিশোর-কিশোরীদের স্বাস্থ্য নিয়ে কাজের অগ্রগতি খুবই ধীর এবং অসম। ফলে অনেকে তরুণ বয়সে এসে পেছনে পড়ে যাচ্ছে।
বিশ্বজুড়ে কিশোর-কিশোরীদের স্বাস্থ্য এখন এক সন্ধিক্ষণে এসে দাঁড়িয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন এক গবেষক জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সারা বের্ড।
২০১৬ সালে ল্যানসেট এই বিষয়ে প্রথম প্রতিবেদন করেছিল। নতুন এই প্রতিবেদনটিতে গত ১০ বছরে কিশোর স্বাস্থ্যের পরিবর্তন পর্যালোচনা করা হয়েছে। কিছু ইতিবাচক দিক উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে দেখা গেছে, কিশোরদের মধ্যে ধূমপান ও অ্যালকোহল সেবনের হার কমেছে। বেড়েছে শিক্ষার হার। অনেকেই মাধ্যমিক শেষ করে কলেজে যাচ্ছে। তবে এসব সাফল্য ম্লান হয়ে গেছে নতুন ও বাড়তে থাকা সমস্যার কারণে।
বেড়েছে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা ও স্থূলতা
প্রতিবেদনে দেখা গেছে, কিশোর-কিশোরীদের মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা আরও তীব্র ও ব্যাপক হয়েছে। অন্যদিকে আফ্রিকা ও এশিয়ার কিছু অঞ্চলে কিশোরদের স্থূলতার হার ৮ গুণ বেড়েছে। এর চেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো, কিছু গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে এক দশকেও কোনো অগ্রগতি হয়নি।
সবচেয়ে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি রয়েছে কিশোরদের মানসিক স্বাস্থ্যের। গত ৩০ বছরে তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্য অনেকটাই খারাপের দিকে গেছে। কোভিড-১৯ মহামারিতে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০৩০ সালের মধ্যে মানসিক অসুস্থতা ও আত্মহত্যার কারণে কিশোর প্রজন্ম থেকে হারিয়ে যাচ্ছে ৪ কোটি ২০ লাখ ‘সুস্থ জীবন বছর’, যা ২০১৫ সালের তুলনায় ২০ লাখ বেশি।
এছাড়াও বিশ্বজুড়ে অস্বাভাবিক হারে স্থূলতা বাড়ছে বলে জানিয়েছে ল্যানসেট কমিশন। ২০৩০ সালের মধ্যে উন্নত দেশ, ল্যাটিন আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্যে প্রতি তিনজন কিশোরের একজন অতিরিক্ত ওজনের হতে পারে। বিশ্বজুড়ে অতিরিক্ত ওজনের কিশোরের সংখ্যা ২০১৫ সালে ছিল ৩২ কোটি ১০ লাখ। ২০৩০ সালে তা বেড়ে দাঁড়াতে পারে ৪৬ কোটি ৪০ লাখে।
আরেকটি বড় সমস্যা অ্যানিমিয়া বা রক্তশূন্যতা, বিশেষ করে মেয়েদের মধ্যে এটি বেশি দেখা যাচ্ছে। ল্যানসেটের প্রতিবেদন বলছে, ২০৩০ সালের মধ্যে প্রতি তিনজন কিশোরীর একজন এই রোগে আক্রান্ত হতে পারে। রক্তশূন্যতা ক্লান্তি, শারীরিক বৃদ্ধি ব্যাহত হওয়া এবং গুরুতর ক্ষেত্রে অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ক্ষতির সঙ্গে জড়িত। অথচ এই সমস্যার সমাধানে অগ্রগতি খুব ধীর।
আগামীতে কিশোর স্বাস্থ্য ও কল্যাণে বৈশ্বিক অগ্রগতি নির্ধারণে জনসংখ্যাগত পরিবর্তন মুখ্য ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন ড্রেক্সেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অ্যালেক্স ইজে। তিনি বলেন, ‘আফ্রিকার কিশোর-কিশোরীদের বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব বর্তমানে ২৫ শতাংশের নিচে। ২১০০ সালের মধ্যে তা বেড়ে ৪৬ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে। ফলে আফ্রিকায় কিশোরদের স্বাস্থ্য ও কল্যাণে অগ্রগতি না হলে বৈশ্বিক পর্যায়ে এই বয়সভিত্তিক উন্নয়ন থমকে যাবে।’
জলবায়ু পরিবর্তন ও ডিজিটাল প্রযুক্তির প্রভাব
ল্যানসেট কমিশন বলছে, আগামী কয়েক দশকে কিশোরদের স্বাস্থ্যকে সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত করবে দুটি উদীয়মান বিষয়—জলবায়ু পরিবর্তন ও ডিজিটাল প্রযুক্তি।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব আজকের তরুণেরা ইতিমধ্যেই অনুভব করছে। এই প্রজন্মই প্রথম, যারা গড়ে শিল্পবিপ্লব-পূর্ব সময়ের তুলনায় অন্তত শূন্য দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি তাপমাত্রায় বেড়ে উঠছে।
২১০০ সালের মধ্যে তাপমাত্রা বাড়তে পারে ২ দশমিক ৮ ডিগ্রি পর্যন্ত। এই বাড়তি তাপমাত্রা কিশোরদের জন্য ভয়াবহ ঝুঁকি তৈরি করবে—তাপজনিত অসুস্থতা, খাদ্য ও পানির সংকট, এবং জলবায়ু-জনিত মানসিক সমস্যার মতো নানা সংকট দেখা দেবে।
কমিশনের এক নতুন পর্যালোচনায় উঠে এসেছে, আকস্মিক দুর্যোগ (যেমন ঝড় বা ঘূর্ণিঝড়) ও দীর্ঘমেয়াদি সংকট (যেমন-খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা) কিশোরদের মানসিক স্বাস্থ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। পিটিএসডি (ট্রমাজনিত মানসিক চাপ), উদ্বেগ ও বিষণ্নতার মতো সমস্যাও বাড়ছে।
পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমও এ প্রজন্মের তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্যে ভয়াবহ প্রভাব ফেলছে।
ল্যানসেট কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়, ডিজিটাল জীবন কিশোরদের জন্য এক ধরনের দ্বিমুখী তলোয়ার। একদিকে এটি তরুণদের শেখা, কাজ করা ও স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার নতুন সুযোগ এনে দিচ্ছে। অন্যদিকে, অনেক বাস্তব অভিজ্ঞতা এখন ভার্চুয়াল মাধ্যম দখল করে নিচ্ছে। যদিও গবেষণা এখনো সীমিত, তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের মানসিক প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।
কমিশনের মতে, এখানে ভারসাম্য বজায় রাখা জরুরি। অপ্রয়োজনীয়ভাবে কিশোরদের বিচ্ছিন্ন না করে আগাম প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।
২০১৬ সালে প্রকাশিত ল্যানসেটের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, প্রায় ১০০ কোটি কিশোর-তরুণ এমন দেশে বাস করে যেগুলো ‘বহুমুখী-সংকটপূর্ণ দেশ’। সেসব দেশে তরুণ প্রজন্ম প্রতিদিন নানা স্বাস্থ্যঝুঁকির মুখে পড়ছে। এখন সে সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১১০ কোটিতে। জরুরি পদক্ষেপ না নেওয়া হলে ২০৩০ সালেও এই সংখ্যাটা ১০০ কোটির ওপরেই থাকবে বলে প্রতিবেদনে পূর্বাভাস দেওয়া হয়।
এই সব চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও কিশোরদের স্বাস্থ্য ও কল্যাণে অর্থায়ন যথেষ্ট নয়। বিশ্বের জনসংখ্যার ২৫ শতাংশ হলো কিশোর-কিশোরী। তারা বৈশ্বিক রোগ-ভার বোঝার ৯ শতাংশের সম্মুখীন। তবু তাদের জন্য বরাদ্দ বৈশ্বিক সহায়তা মাত্র ২.৪ শতাংশ।
তরুণদের স্বাস্থ্য ও কল্যাণে বিনিয়োগ ছাড়া ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত রাখা সম্ভব নয় বলে মনে করেন অধ্যাপক সারা বের্ড। তিনি বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই কিশোরদের স্বাস্থ্য ও কল্যাণে বিনিয়োগকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে স্কুলগুলোর ক্ষমতা বাড়ানো এবং কিশোরদের জন্য সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা।’
কমিশনের ভাষ্য, এটি অত্যন্ত দুর্বল বিনিয়োগ কৌশল। তরুণদের ওপর ব্যয় করলে তার ফলাফল শিশুদের প্রাথমিক বয়সে বিনিয়োগের সমান বা কখনো কখনো তার চেয়েও বেশি হতে পারে। তবে বাস্তবে দেখা যায়, অর্থ বরাদ্দ হয় মূলত প্রাপ্তবয়স্ক বা ছোট শিশুদের জন্য। এর পেছনে অন্যতম কারণ, কিশোরদের স্বাস্থ্য নিয়ে বৈশ্বিক ও জাতীয় পর্যায়ে শক্ত নেতৃত্ব ও সমন্বয়ের ঘাটতি।
সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. অ্যারন জেনকিন্স বলেন, ‘মানব কল্যাণের প্রাকৃতিক ভিত্তিকে গুরুত্ব দিয়ে আমাদের দ্বিতীয় ল্যানসেট কমিশন যেভাবে কিশোর স্বাস্থ্য ও কল্যাণ নিয়ে কাজ করেছে, তা আমাকে গভীরভাবে আশাবাদী করেছে। প্রথমবারের মতো আমরা এমন হস্তক্ষেপ চিহ্নিত করছি যা একযোগে কিশোর স্বাস্থ্য, পরিবেশ রক্ষা, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ, জলবায়ু পরিবর্তন প্রতিরোধ এবং সামাজিক ন্যায়ের অগ্রগতি ঘটাতে পারে।’
এই গবেষণায়র বিশেষত্ব হলো, তরুণদের সক্রিয় অংশগ্রহণ। ২৩ থেকে ৩৫ বছর বয়সী ১০ জন ‘ইয়ুথ কমিশনার’ বিভিন্ন খাত যেমন শিক্ষা, সিভিল সোসাইটি ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিত্ব করে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তাদের অভিজ্ঞতা ও নেতৃত্বই কমিশনের চূড়ান্ত সুপারিশকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে। এ ছাড়া, ৩৬টি দেশের ২০০-রও বেশি কিশোর অংশ নিয়েছে ‘ইয়ুথ সলিউশন ল্যাব’-এ। তারা স্বাস্থ্য সংক্রান্ত অগ্রাধিকার ও সমাধান চিহ্নিত করেছে।
কমিশনার ড. শাকিরা চুনারা বলেন, ‘তরুণরা এক দ্রুত পরিবর্তনশীল পৃথিবীতে পথ খুঁজছে। এই কমিশনের মাধ্যমে আমরা তাদের বৈচিত্র্যময় ও উদ্বেগজনক অভিজ্ঞতা শুনেছি। তবে সুযোগও রয়েছে। আমরা দেখেছি, তরুণরা ইতিমধ্যেই সক্রিয় নাগরিক হিসেবে নিজেদের অবস্থান তৈরি করছে, নেতৃত্ব দিচ্ছে, পরিবর্তন আনছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘তরুণ নেতৃত্ব যেভাবে নিজ নিজ সমাজ ও বৈশ্বিক পরিসরে পরিবর্তন আনছে, তা আমাকে গভীরভাবে অনুপ্রাণিত করে। আমাদের প্রজন্মে বিনিয়োগ ও তাদের সঙ্গে সম্পৃক্ততা গড়লে ভবিষ্যতের নেতৃত্ব আরও সুস্থ, সচেতন ও সক্ষম হবে।’

শীতের সকাল কিংবা সন্ধ্যায় ধোঁয়া ওঠা এক বাটি খিচুড়ির চেয়ে আরামদায়ক আর কী হতে পারে। খিচুড়ি শুধু একটি খাবার নয়। শীতকাল মানে আরাম করে হরেক রকমের সবজি দিয়ে রান্না করা খিচুড়ি খাওয়া। এতে যেমন মন ভরে, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর এ খাবার রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।
১ দিন আগে
তেজপাতা ও লবঙ্গ—উভয়ই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। এতে রয়েছে শক্তিশালী প্রদাহবিরোধী ও ব্যাকটেরিয়ারোধী গুণাবলি, যা শরীরের ভেতরে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম। তবে এই চা সাধারণত সবার জন্য নিরাপদ হলেও গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মায়েদের এটি পান করা থেকে বিরত থাকা উচিত।
২ দিন আগে
ঘুমের ঘোরে হাঁটার কথা আমরা অনেকে শুনেছি। কিন্তু ঘুমের ঘোরে খাওয়ার কথা কি শুনেছেন? চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় স্লিপ-রিলেটেড ইটিং ডিসঅর্ডার। এই উড়িয়ে দেওয়ার মতো ছোট ঘটনা একটি জটিল স্বাস্থ্যগত সমস্যা। এটি আক্রান্ত ব্যক্তি এবং তার পরিবারের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
২ দিন আগে
দীর্ঘদিনের শুকনো কাশি একটি বিরক্তিকর সমস্যা। অনেক সময় সাধারণ সর্দি-জ্বরের পরেও সপ্তাহের পর সপ্তাহ কিংবা কখনো মাসের পর মাস স্থায়ী হতে পারে এ ধরনের কাশি। ফলে দৈনন্দিন কাজে অস্বস্তি, ঘুমের ব্যাঘাত, মানসিক চাপ ও কর্মক্ষমতা কমে যাওয়া ইত্যাদি দেখা দেয়।
২ দিন আগেফিচার ডেস্ক

শীতের সকাল কিংবা সন্ধ্যায় ধোঁয়া ওঠা এক বাটি খিচুড়ির চেয়ে আরামদায়ক আর কী হতে পারে। খিচুড়ি শুধু একটি খাবার নয়। শীতকাল মানে আরাম করে হরেক রকমের সবজি দিয়ে রান্না করা খিচুড়ি খাওয়া। এতে যেমন মন ভরে, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর এ খাবার রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। এ ছাড়া এটি শরীরে বিভিন্ন উপাদানের ভারসাম্য বজায় রাখতেও সহায়ক। শীতকালীন ক্লান্তি দূর করতে এবং ঋতু পরিবর্তনের অসুস্থতা থেকে বাঁচতে খিচুড়ি একটি আদর্শ খাবার। এটি সহজে হজম হয়।
পুষ্টিবিদদের পরামর্শ অনুযায়ী, খিচুড়ির প্রতিটি উপাদান আমাদের শরীরের জন্য বিশেষভাবে উপকারী। এতে থাকা চাল থেকে পাওয়া যায় পর্যাপ্ত শর্করা ও শক্তি। ডাল জোগায় প্রোটিন ও আঁশ, যা হজমে বিশেষভাবে সাহায্য করে। ঘি শরীরের তাপমাত্রা ধরে রাখতে এবং পুষ্টি শোষণে সহায়ক। হলুদে থাকা কারকিউমিন ব্যথানাশক হিসেবে কাজ করে এবং আদা সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে শরীর উষ্ণ রাখে। খিচুড়িতে সবজি যোগ করলে আঁশের মাত্রা বাড়ে। গোলমরিচ ও জিরার মতো মসলা বিপাক প্রক্রিয়া উন্নত করে। এ ছাড়া সাবুদানার খিচুড়ি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। এ ছাড়া এটি তাৎক্ষণিক শক্তি জোগাতে কার্যকর।

চাল ও মুগ ডালের মিশেলে তৈরি এই খিচুড়ি যেমন সহজপাচ্য, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর। এর বিশেষত্বের চাবিকাঠি লুকিয়ে রয়েছে মসলায়। একেবারে হলুদ, লবণ, জিরা অথবা ধনেগুঁড়ার মতো সাধারণ কিছু মসলা দিয়ে এটি রান্না করা হয়। এটা রান্নার সময় মুগ ডালের সঙ্গে চালও ভেজে নিতে পারেন। এতে মুগ ডালের একটা ভিন্ন গন্ধ পাওয়া যাবে। হলুদের পরিবর্তে এতে ব্যবহার করতে পারেন সবুজ মুগডাল।
উপকারিতা: শরীর উষ্ণ রাখে এবং দীর্ঘক্ষণ শক্তি জোগায়।

গাজর, মটরশুঁটি, ফুলকপি, আলু, টমেটো ইত্যাদি শীতের সবজি দিয়ে তৈরি রান্না করা সবজি খিচুড়ি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। এর সঙ্গে শীতে পাওয়া যায় এমন প্রায় সব শাক ও সবজি যোগ করতে হবে। সবজিগুলো ছোট টুকরা করে কেটে নিতে হবে।
যে সবজিগুলো সেদ্ধ হতে বেশি সময় নেয়, সেগুলো আগে ভেজে নিন অথবা প্রেশার কুকারে দিন। এরপর তেল বা ঘিতে জিরা, তেজপাতা ও অন্যান্য মসলা দিয়ে পেঁয়াজ, আদা, রসুন ভাজার পর সবজিগুলো হালকা ভেজে নিন। ভেজে রাখা সবজি, চাল, ডাল ও পানি দিয়ে প্রেশার কুকারে বা হাঁড়িতে রান্না করুন। নরম খিচুড়ি চাইলে পানি বেশি দিতে পারেন। শেষ মুহূর্তে পালংসহ অন্য নরম শাক এতে যোগ করতে পারেন।
উপকারিতা: এটি অন্যান্য উপকারের সঙ্গে কোষ্ঠকাঠিন্য কমায় এবং দ্রুত শক্তি পুনরুদ্ধার করে।

ঠান্ডা পাহাড়ি অঞ্চলে শীতের প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে এই খিচুড়ি অত্যন্ত জনপ্রিয়। চাল, মাষকলাইয়ের ডাল এবং তিল এর প্রধান উপকরণ। রান্নার আগে চাল ও ডাল ভিজিয়ে রাখা হয়। তিল হালকা ভেজে গুঁড়া করে নেওয়া হয়। তিল থেকে পাওয়া স্বাস্থ্যকর চর্বি ও খনিজ উপাদান শীতের দিনে শরীরের জন্য খুবই উপকারী। জিরা, হিং, হলুদ এবং লাল মরিচ গুঁড়ার সুগন্ধি মিশ্রণ এতে অনন্য স্বাদ যোগ করে। খাঁটি ঘি অথবা তেল-মসলার ফোড়ন দিয়ে এটি রান্না করা হয়। প্রোটিন, চর্বি এবং মিনারেলসমৃদ্ধ এই খাবার শীত জয়ের এক অমোঘ হাতিয়ার হতে পারে।
উপকারিতা: এটি শরীরে তাৎক্ষণিক শক্তি জোগানোর পাশাপাশি দীর্ঘক্ষণ শরীর গরম রাখতে সাহায্য করে।

সচরাচর খাওয়া হয় এমন কোনো খিচুড়ি খেতে না চাইলে রান্না করতে পারেন আমলকী খিচুড়ি। এটি কোনো সাধারণ খাবার নয়। এ খিচুড়ি রান্না করা হয় চাল, খোসা ছাড়ানো কালো মাষকলাইয়ের ডাল এবং তাজা আমলকী দিয়ে। নরম ধরনের এ খিচুড়ির স্বাদ ও সুগন্ধ বাড়াতে রান্নায় জিরা, হিং, হলুদ ও লাল মরিচের গুঁড়া ব্যবহার করতে পারেন। এগুলো এতে রাজকীয় স্বাদ যোগ করবে। সবশেষে ঘি বা তেলের সুগন্ধি ফোড়ন এই খিচুড়িকে করে তোলে আরও সুস্বাদু। কেউ চাইলে এই খিচুড়ির পুষ্টিমান আরও বাড়াতে বিভিন্ন ধরনের ঋতুভিত্তিক সবজি যোগ করতে পারেন। শীতের এই উৎসবের দিনগুলোতে শরীর সতেজ রাখতে এবং রসনা তৃপ্তিতে আমলকী খিচুড়ি হতে পারে আপনার সেরা পছন্দ।
উপকারিতা: এটি শরীরে শক্তি জোগানোর পাশাপাশি হজমশক্তি এবং রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়। এ ছাড়া শরীর ডিটক্সে সহায়তা করে, হজম প্রক্রিয়া উন্নত হয়, গ্যাস্ট্রিক কমায়, কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায় এবং ওজন কমাতে সহায়ক।

শীতের সকাল কিংবা সন্ধ্যায় ধোঁয়া ওঠা এক বাটি খিচুড়ির চেয়ে আরামদায়ক আর কী হতে পারে। খিচুড়ি শুধু একটি খাবার নয়। শীতকাল মানে আরাম করে হরেক রকমের সবজি দিয়ে রান্না করা খিচুড়ি খাওয়া। এতে যেমন মন ভরে, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর এ খাবার রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। এ ছাড়া এটি শরীরে বিভিন্ন উপাদানের ভারসাম্য বজায় রাখতেও সহায়ক। শীতকালীন ক্লান্তি দূর করতে এবং ঋতু পরিবর্তনের অসুস্থতা থেকে বাঁচতে খিচুড়ি একটি আদর্শ খাবার। এটি সহজে হজম হয়।
পুষ্টিবিদদের পরামর্শ অনুযায়ী, খিচুড়ির প্রতিটি উপাদান আমাদের শরীরের জন্য বিশেষভাবে উপকারী। এতে থাকা চাল থেকে পাওয়া যায় পর্যাপ্ত শর্করা ও শক্তি। ডাল জোগায় প্রোটিন ও আঁশ, যা হজমে বিশেষভাবে সাহায্য করে। ঘি শরীরের তাপমাত্রা ধরে রাখতে এবং পুষ্টি শোষণে সহায়ক। হলুদে থাকা কারকিউমিন ব্যথানাশক হিসেবে কাজ করে এবং আদা সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে শরীর উষ্ণ রাখে। খিচুড়িতে সবজি যোগ করলে আঁশের মাত্রা বাড়ে। গোলমরিচ ও জিরার মতো মসলা বিপাক প্রক্রিয়া উন্নত করে। এ ছাড়া সাবুদানার খিচুড়ি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। এ ছাড়া এটি তাৎক্ষণিক শক্তি জোগাতে কার্যকর।

চাল ও মুগ ডালের মিশেলে তৈরি এই খিচুড়ি যেমন সহজপাচ্য, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর। এর বিশেষত্বের চাবিকাঠি লুকিয়ে রয়েছে মসলায়। একেবারে হলুদ, লবণ, জিরা অথবা ধনেগুঁড়ার মতো সাধারণ কিছু মসলা দিয়ে এটি রান্না করা হয়। এটা রান্নার সময় মুগ ডালের সঙ্গে চালও ভেজে নিতে পারেন। এতে মুগ ডালের একটা ভিন্ন গন্ধ পাওয়া যাবে। হলুদের পরিবর্তে এতে ব্যবহার করতে পারেন সবুজ মুগডাল।
উপকারিতা: শরীর উষ্ণ রাখে এবং দীর্ঘক্ষণ শক্তি জোগায়।

গাজর, মটরশুঁটি, ফুলকপি, আলু, টমেটো ইত্যাদি শীতের সবজি দিয়ে তৈরি রান্না করা সবজি খিচুড়ি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। এর সঙ্গে শীতে পাওয়া যায় এমন প্রায় সব শাক ও সবজি যোগ করতে হবে। সবজিগুলো ছোট টুকরা করে কেটে নিতে হবে।
যে সবজিগুলো সেদ্ধ হতে বেশি সময় নেয়, সেগুলো আগে ভেজে নিন অথবা প্রেশার কুকারে দিন। এরপর তেল বা ঘিতে জিরা, তেজপাতা ও অন্যান্য মসলা দিয়ে পেঁয়াজ, আদা, রসুন ভাজার পর সবজিগুলো হালকা ভেজে নিন। ভেজে রাখা সবজি, চাল, ডাল ও পানি দিয়ে প্রেশার কুকারে বা হাঁড়িতে রান্না করুন। নরম খিচুড়ি চাইলে পানি বেশি দিতে পারেন। শেষ মুহূর্তে পালংসহ অন্য নরম শাক এতে যোগ করতে পারেন।
উপকারিতা: এটি অন্যান্য উপকারের সঙ্গে কোষ্ঠকাঠিন্য কমায় এবং দ্রুত শক্তি পুনরুদ্ধার করে।

ঠান্ডা পাহাড়ি অঞ্চলে শীতের প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে এই খিচুড়ি অত্যন্ত জনপ্রিয়। চাল, মাষকলাইয়ের ডাল এবং তিল এর প্রধান উপকরণ। রান্নার আগে চাল ও ডাল ভিজিয়ে রাখা হয়। তিল হালকা ভেজে গুঁড়া করে নেওয়া হয়। তিল থেকে পাওয়া স্বাস্থ্যকর চর্বি ও খনিজ উপাদান শীতের দিনে শরীরের জন্য খুবই উপকারী। জিরা, হিং, হলুদ এবং লাল মরিচ গুঁড়ার সুগন্ধি মিশ্রণ এতে অনন্য স্বাদ যোগ করে। খাঁটি ঘি অথবা তেল-মসলার ফোড়ন দিয়ে এটি রান্না করা হয়। প্রোটিন, চর্বি এবং মিনারেলসমৃদ্ধ এই খাবার শীত জয়ের এক অমোঘ হাতিয়ার হতে পারে।
উপকারিতা: এটি শরীরে তাৎক্ষণিক শক্তি জোগানোর পাশাপাশি দীর্ঘক্ষণ শরীর গরম রাখতে সাহায্য করে।

সচরাচর খাওয়া হয় এমন কোনো খিচুড়ি খেতে না চাইলে রান্না করতে পারেন আমলকী খিচুড়ি। এটি কোনো সাধারণ খাবার নয়। এ খিচুড়ি রান্না করা হয় চাল, খোসা ছাড়ানো কালো মাষকলাইয়ের ডাল এবং তাজা আমলকী দিয়ে। নরম ধরনের এ খিচুড়ির স্বাদ ও সুগন্ধ বাড়াতে রান্নায় জিরা, হিং, হলুদ ও লাল মরিচের গুঁড়া ব্যবহার করতে পারেন। এগুলো এতে রাজকীয় স্বাদ যোগ করবে। সবশেষে ঘি বা তেলের সুগন্ধি ফোড়ন এই খিচুড়িকে করে তোলে আরও সুস্বাদু। কেউ চাইলে এই খিচুড়ির পুষ্টিমান আরও বাড়াতে বিভিন্ন ধরনের ঋতুভিত্তিক সবজি যোগ করতে পারেন। শীতের এই উৎসবের দিনগুলোতে শরীর সতেজ রাখতে এবং রসনা তৃপ্তিতে আমলকী খিচুড়ি হতে পারে আপনার সেরা পছন্দ।
উপকারিতা: এটি শরীরে শক্তি জোগানোর পাশাপাশি হজমশক্তি এবং রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়। এ ছাড়া শরীর ডিটক্সে সহায়তা করে, হজম প্রক্রিয়া উন্নত হয়, গ্যাস্ট্রিক কমায়, কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায় এবং ওজন কমাতে সহায়ক।

বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে কিশোর-কিশোরীরা। গবেষণা বলছে, ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের ১০০ কোটিরও বেশি ১০ থেকে ২৪ বছর বয়সী কিশোর-তরুণ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে থাকবে। এই বয়সীদের মধ্যে এইচআইভি বা এইডস, অকাল গর্ভধারণ, অনিরাপদ যৌনতা, মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা, অপুষ্টি ও দুর্ঘটনার মতো সংকট বেড়ে যাবে।
২৩ মে ২০২৫
তেজপাতা ও লবঙ্গ—উভয়ই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। এতে রয়েছে শক্তিশালী প্রদাহবিরোধী ও ব্যাকটেরিয়ারোধী গুণাবলি, যা শরীরের ভেতরে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম। তবে এই চা সাধারণত সবার জন্য নিরাপদ হলেও গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মায়েদের এটি পান করা থেকে বিরত থাকা উচিত।
২ দিন আগে
ঘুমের ঘোরে হাঁটার কথা আমরা অনেকে শুনেছি। কিন্তু ঘুমের ঘোরে খাওয়ার কথা কি শুনেছেন? চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় স্লিপ-রিলেটেড ইটিং ডিসঅর্ডার। এই উড়িয়ে দেওয়ার মতো ছোট ঘটনা একটি জটিল স্বাস্থ্যগত সমস্যা। এটি আক্রান্ত ব্যক্তি এবং তার পরিবারের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
২ দিন আগে
দীর্ঘদিনের শুকনো কাশি একটি বিরক্তিকর সমস্যা। অনেক সময় সাধারণ সর্দি-জ্বরের পরেও সপ্তাহের পর সপ্তাহ কিংবা কখনো মাসের পর মাস স্থায়ী হতে পারে এ ধরনের কাশি। ফলে দৈনন্দিন কাজে অস্বস্তি, ঘুমের ব্যাঘাত, মানসিক চাপ ও কর্মক্ষমতা কমে যাওয়া ইত্যাদি দেখা দেয়।
২ দিন আগেআলমগীর আলম

তেজপাতা ও লবঙ্গ—উভয়ই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। এতে রয়েছে শক্তিশালী প্রদাহবিরোধী ও ব্যাকটেরিয়ারোধী গুণাবলি, যা শরীরের ভেতরে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম। তবে এই চা সাধারণত সবার জন্য নিরাপদ হলেও গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মায়েদের এটি পান করা থেকে বিরত থাকা উচিত।
১. হজমশক্তি বৃদ্ধিতে: বদহজমের সমস্যায় ভুগলে তেজপাতা দারুণ মুক্তি দিতে পারে। অন্যদিকে, লবঙ্গ এনজাইম নিঃসরণ বাড়িয়ে হজমপ্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত এবং পেটের অস্বস্তি দূর করে।
২. ব্যথা ও প্রদাহ উপশমে: আর্থ্রাইটিসের মতো রোগে যাঁরা ভোগেন, তাঁদের জন্য এই চা অত্যন্ত উপকারী। ইউরিক অ্যাসিডের ব্যথা কমাতে এবং শরীরের বিভিন্ন অংশের প্রদাহ বা ফোলা ভাব রোধে তেজপাতা ও লবঙ্গ লড়তে সাহায্য করে।
৩. রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে: লবঙ্গে থাকা অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া
ও ভাইরাসের বিরুদ্ধে কাজ করে। এর সঙ্গে তেজপাতা যুক্ত হলে শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বহুগুণ বেড়ে যায়, যা বিশেষ করে ঠান্ডা ও ফ্লু মৌসুমে সুরক্ষা দেয়।
৪. দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি কমাতে: এই চা শরীরে ক্ষতিকর ফ্রি র্যাডিক্যালের বিরুদ্ধে লড়াই করে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমায়। ফলে হৃদ্রোগ এবং নির্দিষ্ট কিছু ক্যানসারের ঝুঁকি কমে পায়।
৫. দাঁত ও মাড়ির সুরক্ষায়: লবঙ্গ তেল দাঁতের জন্য উপকারী হিসেবে স্বীকৃত। নিয়মিত লবঙ্গ চা পান করলে মাড়ি ও দাঁত সুস্থ রাখা সম্ভব।
উপকরণ সংগ্রহ করা এবং এই চা তৈরি করার প্রক্রিয়া অত্যন্ত সহজ—
উপকরণ: ৩-৪টি শুকনো তেজপাতা, ৫-৬টি আস্ত লবঙ্গ এবং ৪ কাপ পানি। স্বাদ বাড়াতে মধু বা লেবু ব্যবহার করতে পারেন।
প্রণালি: প্রথমে একটি পাত্রে পানি ফুটিয়ে নিতে হবে। তাতে তেজপাতা ও লবঙ্গ দিয়ে চুলার আঁচ কমিয়ে দিন। ১৫ মিনিট মিশ্রণটি সেদ্ধ করার পর চুলা নিভিয়ে আরও ৫ মিনিট পাত্রটি ঢেকে রেখে দিন। এরপর ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে তেজপাতা ও লবঙ্গ ফেলে দিয়ে পানি আলাদা করে নিন। স্বাদ অনুযায়ী মধু কিংবা লেবুর রস মিশিয়ে পান করুন।
ভালো ফল পেতে প্রতিদিন এক কাপ এই চা-পান করা ভালো; বিশেষ করে খাবারের পর এটি পান করলে হজমশক্তি বাড়াতে সবচেয়ে ভালো কাজ করে।
লেখক: খাদ্য পথ্য ও আকুপ্রেশার বিশেষজ্ঞ, প্রধান নির্বাহী, প্রাকৃতিক নিরাময় কেন্দ্র

তেজপাতা ও লবঙ্গ—উভয়ই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। এতে রয়েছে শক্তিশালী প্রদাহবিরোধী ও ব্যাকটেরিয়ারোধী গুণাবলি, যা শরীরের ভেতরে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম। তবে এই চা সাধারণত সবার জন্য নিরাপদ হলেও গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মায়েদের এটি পান করা থেকে বিরত থাকা উচিত।
১. হজমশক্তি বৃদ্ধিতে: বদহজমের সমস্যায় ভুগলে তেজপাতা দারুণ মুক্তি দিতে পারে। অন্যদিকে, লবঙ্গ এনজাইম নিঃসরণ বাড়িয়ে হজমপ্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত এবং পেটের অস্বস্তি দূর করে।
২. ব্যথা ও প্রদাহ উপশমে: আর্থ্রাইটিসের মতো রোগে যাঁরা ভোগেন, তাঁদের জন্য এই চা অত্যন্ত উপকারী। ইউরিক অ্যাসিডের ব্যথা কমাতে এবং শরীরের বিভিন্ন অংশের প্রদাহ বা ফোলা ভাব রোধে তেজপাতা ও লবঙ্গ লড়তে সাহায্য করে।
৩. রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে: লবঙ্গে থাকা অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া
ও ভাইরাসের বিরুদ্ধে কাজ করে। এর সঙ্গে তেজপাতা যুক্ত হলে শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বহুগুণ বেড়ে যায়, যা বিশেষ করে ঠান্ডা ও ফ্লু মৌসুমে সুরক্ষা দেয়।
৪. দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি কমাতে: এই চা শরীরে ক্ষতিকর ফ্রি র্যাডিক্যালের বিরুদ্ধে লড়াই করে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমায়। ফলে হৃদ্রোগ এবং নির্দিষ্ট কিছু ক্যানসারের ঝুঁকি কমে পায়।
৫. দাঁত ও মাড়ির সুরক্ষায়: লবঙ্গ তেল দাঁতের জন্য উপকারী হিসেবে স্বীকৃত। নিয়মিত লবঙ্গ চা পান করলে মাড়ি ও দাঁত সুস্থ রাখা সম্ভব।
উপকরণ সংগ্রহ করা এবং এই চা তৈরি করার প্রক্রিয়া অত্যন্ত সহজ—
উপকরণ: ৩-৪টি শুকনো তেজপাতা, ৫-৬টি আস্ত লবঙ্গ এবং ৪ কাপ পানি। স্বাদ বাড়াতে মধু বা লেবু ব্যবহার করতে পারেন।
প্রণালি: প্রথমে একটি পাত্রে পানি ফুটিয়ে নিতে হবে। তাতে তেজপাতা ও লবঙ্গ দিয়ে চুলার আঁচ কমিয়ে দিন। ১৫ মিনিট মিশ্রণটি সেদ্ধ করার পর চুলা নিভিয়ে আরও ৫ মিনিট পাত্রটি ঢেকে রেখে দিন। এরপর ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে তেজপাতা ও লবঙ্গ ফেলে দিয়ে পানি আলাদা করে নিন। স্বাদ অনুযায়ী মধু কিংবা লেবুর রস মিশিয়ে পান করুন।
ভালো ফল পেতে প্রতিদিন এক কাপ এই চা-পান করা ভালো; বিশেষ করে খাবারের পর এটি পান করলে হজমশক্তি বাড়াতে সবচেয়ে ভালো কাজ করে।
লেখক: খাদ্য পথ্য ও আকুপ্রেশার বিশেষজ্ঞ, প্রধান নির্বাহী, প্রাকৃতিক নিরাময় কেন্দ্র

বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে কিশোর-কিশোরীরা। গবেষণা বলছে, ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের ১০০ কোটিরও বেশি ১০ থেকে ২৪ বছর বয়সী কিশোর-তরুণ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে থাকবে। এই বয়সীদের মধ্যে এইচআইভি বা এইডস, অকাল গর্ভধারণ, অনিরাপদ যৌনতা, মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা, অপুষ্টি ও দুর্ঘটনার মতো সংকট বেড়ে যাবে।
২৩ মে ২০২৫
শীতের সকাল কিংবা সন্ধ্যায় ধোঁয়া ওঠা এক বাটি খিচুড়ির চেয়ে আরামদায়ক আর কী হতে পারে। খিচুড়ি শুধু একটি খাবার নয়। শীতকাল মানে আরাম করে হরেক রকমের সবজি দিয়ে রান্না করা খিচুড়ি খাওয়া। এতে যেমন মন ভরে, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর এ খাবার রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।
১ দিন আগে
ঘুমের ঘোরে হাঁটার কথা আমরা অনেকে শুনেছি। কিন্তু ঘুমের ঘোরে খাওয়ার কথা কি শুনেছেন? চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় স্লিপ-রিলেটেড ইটিং ডিসঅর্ডার। এই উড়িয়ে দেওয়ার মতো ছোট ঘটনা একটি জটিল স্বাস্থ্যগত সমস্যা। এটি আক্রান্ত ব্যক্তি এবং তার পরিবারের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
২ দিন আগে
দীর্ঘদিনের শুকনো কাশি একটি বিরক্তিকর সমস্যা। অনেক সময় সাধারণ সর্দি-জ্বরের পরেও সপ্তাহের পর সপ্তাহ কিংবা কখনো মাসের পর মাস স্থায়ী হতে পারে এ ধরনের কাশি। ফলে দৈনন্দিন কাজে অস্বস্তি, ঘুমের ব্যাঘাত, মানসিক চাপ ও কর্মক্ষমতা কমে যাওয়া ইত্যাদি দেখা দেয়।
২ দিন আগেফিচার ডেস্ক

ঘুমের ঘোরে হাঁটার কথা আমরা অনেকে শুনেছি। কিন্তু ঘুমের ঘোরে খাওয়ার কথা কি শুনেছেন? চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় স্লিপ-রিলেটেড ইটিং ডিসঅর্ডার। এই উড়িয়ে দেওয়ার মতো ছোট ঘটনা একটি জটিল স্বাস্থ্যগত সমস্যা। এটি আক্রান্ত ব্যক্তি এবং তার পরিবারের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
স্লিপ-রিলেটেড ইটিং ডিসঅর্ডার এমন এক সমস্যা, যেখানে আক্রান্ত ব্যক্তি ঘুমের মধ্যে অবচেতন অবস্থায় রান্নাঘরে চলে যায় এবং খাবার খেতে শুরু করে। আশ্চর্যের বিষয় হলো, পরদিন সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর তার এই ঘটনা সম্পর্কে বিন্দুমাত্র স্মৃতি থাকে না। সাধারণত এই সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা প্রায় প্রতি রাতেই এমনটা করে। এক রাতে একাধিকবারও ঘুমের ঘোরে খাওয়ার ঘটনা ঘটতে পারে।
খাদ্যাভ্যাসের বিচিত্র রূপ
এই অবস্থায় আক্রান্ত ব্যক্তির খাওয়ার ওপর কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকে না। গবেষণায় দেখা গেছে, সাধারণত ঘুমের ঘোরে খাওয়ার সময় তিন ধরনের ঘটনা ঘটে।
উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার খাওয়া: আক্রান্ত হওয়া মানুষ সাধারণত ক্যান্ডি, চিপস অথবা কেকের মতো প্রক্রিয়াজাত খাবারের দিকে বেশি ঝুঁকে পড়ে।
অস্বাভাবিক সংমিশ্রণের খাবার খাওয়া: অনেক সময় তারা অত্যন্ত অদ্ভুত ও অস্বাস্থ্যকর খাবারের সংমিশ্রণ তৈরি করে। যেমন সিগারেটে মাখন মাখিয়ে খাওয়া কিংবা অন্য কোনো অখাদ্য বস্তু খাওয়া।
দ্রুততম সময়ে খাবার খাওয়া: বিছানা থেকে রান্নাঘর হয়ে পুনরায় বিছানায় ফিরে আসার পুরো প্রক্রিয়াটি মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যে শেষ হতে পারে। ফলে তারা খুব দ্রুত খাবার খেয়ে ফেলে।
ঝুঁকি ও স্বাস্থ্যগত প্রভাব
এসআরইডির প্রভাব কেবল ঘুমের ব্যাঘাতের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। এটি দীর্ঘ মেয়াদে শরীরের ওপর নেতিবাচক প্রভাব বিস্তার করতে পারে। এসব প্রভাবের মধ্যে আছে—
কেন এমন হয়
এসআরইডির নির্দিষ্ট কোনো একক কারণ না থাকলেও বেশ কিছু বিষয় লক্ষণীয়। যেমন—
ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: বিষণ্নতা বা ঘুমের সমস্যার জন্য ব্যবহৃত কিছু নির্দিষ্ট ওষুধের প্রভাবে এটি হতে পারে।
অন্যান্য রোগ: রেস্টলেস লেগ সিনড্রোম বা অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়ার মতো সমস্যা এর পেছনে থাকতে পারে।
জীবনযাত্রা: অতিরিক্ত মানসিক চাপ, অনিয়মিত ঘুম এবং অ্যালকোহল অথবা মাদক ত্যাগের পরবর্তী সময়ে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।
প্রতিকার ও ব্যবস্থাপনা
এই রহস্যময় সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে সচেতনতা এবং সঠিক চিকিৎসা জরুরি। এর প্রতিকারে যা করা যেতে পারে—
সূত্র: সিএনএন হেলথ, এএসএসএম

ঘুমের ঘোরে হাঁটার কথা আমরা অনেকে শুনেছি। কিন্তু ঘুমের ঘোরে খাওয়ার কথা কি শুনেছেন? চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় স্লিপ-রিলেটেড ইটিং ডিসঅর্ডার। এই উড়িয়ে দেওয়ার মতো ছোট ঘটনা একটি জটিল স্বাস্থ্যগত সমস্যা। এটি আক্রান্ত ব্যক্তি এবং তার পরিবারের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
স্লিপ-রিলেটেড ইটিং ডিসঅর্ডার এমন এক সমস্যা, যেখানে আক্রান্ত ব্যক্তি ঘুমের মধ্যে অবচেতন অবস্থায় রান্নাঘরে চলে যায় এবং খাবার খেতে শুরু করে। আশ্চর্যের বিষয় হলো, পরদিন সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর তার এই ঘটনা সম্পর্কে বিন্দুমাত্র স্মৃতি থাকে না। সাধারণত এই সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা প্রায় প্রতি রাতেই এমনটা করে। এক রাতে একাধিকবারও ঘুমের ঘোরে খাওয়ার ঘটনা ঘটতে পারে।
খাদ্যাভ্যাসের বিচিত্র রূপ
এই অবস্থায় আক্রান্ত ব্যক্তির খাওয়ার ওপর কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকে না। গবেষণায় দেখা গেছে, সাধারণত ঘুমের ঘোরে খাওয়ার সময় তিন ধরনের ঘটনা ঘটে।
উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার খাওয়া: আক্রান্ত হওয়া মানুষ সাধারণত ক্যান্ডি, চিপস অথবা কেকের মতো প্রক্রিয়াজাত খাবারের দিকে বেশি ঝুঁকে পড়ে।
অস্বাভাবিক সংমিশ্রণের খাবার খাওয়া: অনেক সময় তারা অত্যন্ত অদ্ভুত ও অস্বাস্থ্যকর খাবারের সংমিশ্রণ তৈরি করে। যেমন সিগারেটে মাখন মাখিয়ে খাওয়া কিংবা অন্য কোনো অখাদ্য বস্তু খাওয়া।
দ্রুততম সময়ে খাবার খাওয়া: বিছানা থেকে রান্নাঘর হয়ে পুনরায় বিছানায় ফিরে আসার পুরো প্রক্রিয়াটি মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যে শেষ হতে পারে। ফলে তারা খুব দ্রুত খাবার খেয়ে ফেলে।
ঝুঁকি ও স্বাস্থ্যগত প্রভাব
এসআরইডির প্রভাব কেবল ঘুমের ব্যাঘাতের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। এটি দীর্ঘ মেয়াদে শরীরের ওপর নেতিবাচক প্রভাব বিস্তার করতে পারে। এসব প্রভাবের মধ্যে আছে—
কেন এমন হয়
এসআরইডির নির্দিষ্ট কোনো একক কারণ না থাকলেও বেশ কিছু বিষয় লক্ষণীয়। যেমন—
ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: বিষণ্নতা বা ঘুমের সমস্যার জন্য ব্যবহৃত কিছু নির্দিষ্ট ওষুধের প্রভাবে এটি হতে পারে।
অন্যান্য রোগ: রেস্টলেস লেগ সিনড্রোম বা অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়ার মতো সমস্যা এর পেছনে থাকতে পারে।
জীবনযাত্রা: অতিরিক্ত মানসিক চাপ, অনিয়মিত ঘুম এবং অ্যালকোহল অথবা মাদক ত্যাগের পরবর্তী সময়ে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।
প্রতিকার ও ব্যবস্থাপনা
এই রহস্যময় সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে সচেতনতা এবং সঠিক চিকিৎসা জরুরি। এর প্রতিকারে যা করা যেতে পারে—
সূত্র: সিএনএন হেলথ, এএসএসএম

বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে কিশোর-কিশোরীরা। গবেষণা বলছে, ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের ১০০ কোটিরও বেশি ১০ থেকে ২৪ বছর বয়সী কিশোর-তরুণ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে থাকবে। এই বয়সীদের মধ্যে এইচআইভি বা এইডস, অকাল গর্ভধারণ, অনিরাপদ যৌনতা, মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা, অপুষ্টি ও দুর্ঘটনার মতো সংকট বেড়ে যাবে।
২৩ মে ২০২৫
শীতের সকাল কিংবা সন্ধ্যায় ধোঁয়া ওঠা এক বাটি খিচুড়ির চেয়ে আরামদায়ক আর কী হতে পারে। খিচুড়ি শুধু একটি খাবার নয়। শীতকাল মানে আরাম করে হরেক রকমের সবজি দিয়ে রান্না করা খিচুড়ি খাওয়া। এতে যেমন মন ভরে, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর এ খাবার রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।
১ দিন আগে
তেজপাতা ও লবঙ্গ—উভয়ই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। এতে রয়েছে শক্তিশালী প্রদাহবিরোধী ও ব্যাকটেরিয়ারোধী গুণাবলি, যা শরীরের ভেতরে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম। তবে এই চা সাধারণত সবার জন্য নিরাপদ হলেও গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মায়েদের এটি পান করা থেকে বিরত থাকা উচিত।
২ দিন আগে
দীর্ঘদিনের শুকনো কাশি একটি বিরক্তিকর সমস্যা। অনেক সময় সাধারণ সর্দি-জ্বরের পরেও সপ্তাহের পর সপ্তাহ কিংবা কখনো মাসের পর মাস স্থায়ী হতে পারে এ ধরনের কাশি। ফলে দৈনন্দিন কাজে অস্বস্তি, ঘুমের ব্যাঘাত, মানসিক চাপ ও কর্মক্ষমতা কমে যাওয়া ইত্যাদি দেখা দেয়।
২ দিন আগেডা. মো. আব্দুল হাফিজ শাফী

দীর্ঘদিনের শুকনো কাশি একটি বিরক্তিকর সমস্যা। অনেক সময় সাধারণ সর্দি-জ্বরের পরেও সপ্তাহের পর সপ্তাহ কিংবা কখনো মাসের পর মাস স্থায়ী হতে পারে এ ধরনের কাশি। ফলে দৈনন্দিন কাজে অস্বস্তি, ঘুমের ব্যাঘাত, মানসিক চাপ ও কর্মক্ষমতা কমে যাওয়া ইত্যাদি দেখা দেয়। কাশি দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার পেছনে নির্দিষ্ট এবং চিকিৎসাযোগ্য ছয়টি কারণ থাকে।
কফ ভ্যারিয়েন্ট অ্যাজমা
অ্যাজমার একটি বিশেষ ধরন এটি। এতে সাধারণ অ্যাজমার মতো শ্বাসকষ্ট, বুকে চাপ বা সাঁ সাঁ শব্দ না-ও থাকতে পারে; বরং অবিরাম শুকনো কাশিই এর প্রধান এবং অন্যতম উপসর্গ হয়ে দেখা দেয়। এই ধরনের কাশি সাধারণত রাতে বেশি হয় এবং ধুলাবালি, ঠান্ডা বাতাস, ঘরবাড়ির অ্যালার্জেন, এমনকি ঋতু পরিবর্তনের সময় শীতের শুরুতেও উপসর্গ তীব্র হয়ে উঠতে পারে।
উপসর্গ বারবার দেখা দিলে চিকিৎসক শ্বাসক্রিয়া পরীক্ষার মাধ্যমে কারণ নির্ণয় করতে পারেন। স্পাইরোমেট্রি ফুসফুসের ক্ষমতা এবং বায়ুপ্রবাহ পরিমাপ করে, যা হাঁপানি বা ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজের (সিওপিডি) মতো অবস্থা নির্ণয় করতে সাহায্য করতে পারে। প্রয়োজন হলে রোগ নিয়ন্ত্রণে উপযোগী ইনহেলার সাময়িক ব্যবহারের পরামর্শও দেওয়া হয়। সঠিক সময়ে এ রোগ শনাক্ত ও নিয়ন্ত্রণ করা গেলে দীর্ঘ মেয়াদে জটিলতার ঝুঁকি অনেকটা কমে যায়।
পোস্টন্যাসাল ড্রিপ
নাক কিংবা সাইনাসে অতিরিক্ত মিউকাস তৈরি হলে তা ধীরে ধীরে গলার পেছন দিকে গড়িয়ে যায়। এই মিউকাস গলার সংবেদনশীল নার্ভগুলো উত্তেজিত করে। ফলে শুকনো ও বিরক্তিকর কাশি হয়। শোয়ার সময় মিউকাস গলায় জমে বলে এটি রাত ও ভোরে বেশি হয়। তবে ঘুম থেকে ওঠার পরও কাশি দেখা যায়। অ্যালার্জিজনিত হাঁচি-সর্দি, সাইনোসাইটিস, নাকের হাড় বাঁকা হওয়ার সমস্যা, নাক বন্ধ বা ধুলাবালিতে সংবেদনশীলতা যাঁদের আছে, তাঁদের এই সমস্যা বেশি হয়। দীর্ঘস্থায়ী শুকনো কাশির অন্যতম প্রচলিত উৎস এই পোস্টন্যাসাল ড্রিপ।
জিইআরডি
পাকস্থলীর অ্যাসিড ওপরের দিকে উঠে এলে টক ঢেকুর, বুকজ্বালা, গলায় জ্বালাপোড়া এবং সঙ্গে ধারাবাহিক কাশি দেখা দিতে পারে। মসলাদার খাবার, ভাজাপোড়া, চকলেট, কফি, টক খাবার—এসব জিইআরডি বাড়িয়ে তোলে। পাশাপাশি অতিরিক্ত ওজন, ধূমপান বা অতিরিক্ত খাবার খাওয়াও ঝুঁকির মাত্রা বাড়ায়। জিইআরডি নিয়ন্ত্রণে আনলে অনেক ক্ষেত্রে কাশি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়।
ভাইরাল সংক্রমণের পর দীর্ঘস্থায়ী কাশি
অনেক সময় সর্দি-জ্বরের উপসর্গ সেরে গেলেও শ্বাসনালি কিছুদিন অতি সংবেদনশীল থাকে। এর ফলে কাশি স্থায়ী হতে পারে। ঋতু পরিবর্তনের সময় এ সমস্যা বেশি দেখা যায়। সাধারণত বিশেষ চিকিৎসা ছাড়াই ধীরে ধীরে এর উপসর্গ কমে আসে। হালকা গরম পানি দিয়ে গড়গড়া করা এবং আদা, লেবু, মধু, লবঙ্গ বা দারুচিনিযুক্ত গরম চা উপসর্গ কমাতে সহায়তা করে।
ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত এসিই ইনহিবিটর শ্রেণির ওষুধ অনেক রোগীর ক্ষেত্রে শুকনো কাশির কারণ হতে পারে। নিয়মিত কাশির কারণ খুঁজেনা পেলে ওষুধের ইতিহাস পরীক্ষা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এসব ক্ষেত্রে প্রয়োজনে চিকিৎসক বিকল্প ওষুধ বেছে নেন।
ধূমপান
দীর্ঘদিন ধূমপান, বিশেষত প্রতিদিন ২০টি সিগারেট বা ২০ বছর অথবা তার বেশি সময় ধরে ধূমপান ক্রনিক ব্রংকাইটিসের ঝুঁকি বাড়ায়। এতে বছরের বিভিন্ন সময়ে ক্রনিক কাশি ও শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। সময়মতো চিকিৎসা না নিলে এটি গুরুতর অবস্থায় রূপ নিতে পারে। ধূমপান সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করা এ সমস্যা নিয়ন্ত্রণের মূল উপায়।
দীর্ঘস্থায়ী বা অবিরাম কাশি সব সময় গুরুতর রোগের লক্ষণ না হলেও উপেক্ষা করা উচিত নয়। উপসর্গ যদি কয়েক সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হয়, তাহলে কারণ নির্ণয় করার জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
সহকারী অধ্যাপক (ইএনটি), সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

দীর্ঘদিনের শুকনো কাশি একটি বিরক্তিকর সমস্যা। অনেক সময় সাধারণ সর্দি-জ্বরের পরেও সপ্তাহের পর সপ্তাহ কিংবা কখনো মাসের পর মাস স্থায়ী হতে পারে এ ধরনের কাশি। ফলে দৈনন্দিন কাজে অস্বস্তি, ঘুমের ব্যাঘাত, মানসিক চাপ ও কর্মক্ষমতা কমে যাওয়া ইত্যাদি দেখা দেয়। কাশি দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার পেছনে নির্দিষ্ট এবং চিকিৎসাযোগ্য ছয়টি কারণ থাকে।
কফ ভ্যারিয়েন্ট অ্যাজমা
অ্যাজমার একটি বিশেষ ধরন এটি। এতে সাধারণ অ্যাজমার মতো শ্বাসকষ্ট, বুকে চাপ বা সাঁ সাঁ শব্দ না-ও থাকতে পারে; বরং অবিরাম শুকনো কাশিই এর প্রধান এবং অন্যতম উপসর্গ হয়ে দেখা দেয়। এই ধরনের কাশি সাধারণত রাতে বেশি হয় এবং ধুলাবালি, ঠান্ডা বাতাস, ঘরবাড়ির অ্যালার্জেন, এমনকি ঋতু পরিবর্তনের সময় শীতের শুরুতেও উপসর্গ তীব্র হয়ে উঠতে পারে।
উপসর্গ বারবার দেখা দিলে চিকিৎসক শ্বাসক্রিয়া পরীক্ষার মাধ্যমে কারণ নির্ণয় করতে পারেন। স্পাইরোমেট্রি ফুসফুসের ক্ষমতা এবং বায়ুপ্রবাহ পরিমাপ করে, যা হাঁপানি বা ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজের (সিওপিডি) মতো অবস্থা নির্ণয় করতে সাহায্য করতে পারে। প্রয়োজন হলে রোগ নিয়ন্ত্রণে উপযোগী ইনহেলার সাময়িক ব্যবহারের পরামর্শও দেওয়া হয়। সঠিক সময়ে এ রোগ শনাক্ত ও নিয়ন্ত্রণ করা গেলে দীর্ঘ মেয়াদে জটিলতার ঝুঁকি অনেকটা কমে যায়।
পোস্টন্যাসাল ড্রিপ
নাক কিংবা সাইনাসে অতিরিক্ত মিউকাস তৈরি হলে তা ধীরে ধীরে গলার পেছন দিকে গড়িয়ে যায়। এই মিউকাস গলার সংবেদনশীল নার্ভগুলো উত্তেজিত করে। ফলে শুকনো ও বিরক্তিকর কাশি হয়। শোয়ার সময় মিউকাস গলায় জমে বলে এটি রাত ও ভোরে বেশি হয়। তবে ঘুম থেকে ওঠার পরও কাশি দেখা যায়। অ্যালার্জিজনিত হাঁচি-সর্দি, সাইনোসাইটিস, নাকের হাড় বাঁকা হওয়ার সমস্যা, নাক বন্ধ বা ধুলাবালিতে সংবেদনশীলতা যাঁদের আছে, তাঁদের এই সমস্যা বেশি হয়। দীর্ঘস্থায়ী শুকনো কাশির অন্যতম প্রচলিত উৎস এই পোস্টন্যাসাল ড্রিপ।
জিইআরডি
পাকস্থলীর অ্যাসিড ওপরের দিকে উঠে এলে টক ঢেকুর, বুকজ্বালা, গলায় জ্বালাপোড়া এবং সঙ্গে ধারাবাহিক কাশি দেখা দিতে পারে। মসলাদার খাবার, ভাজাপোড়া, চকলেট, কফি, টক খাবার—এসব জিইআরডি বাড়িয়ে তোলে। পাশাপাশি অতিরিক্ত ওজন, ধূমপান বা অতিরিক্ত খাবার খাওয়াও ঝুঁকির মাত্রা বাড়ায়। জিইআরডি নিয়ন্ত্রণে আনলে অনেক ক্ষেত্রে কাশি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়।
ভাইরাল সংক্রমণের পর দীর্ঘস্থায়ী কাশি
অনেক সময় সর্দি-জ্বরের উপসর্গ সেরে গেলেও শ্বাসনালি কিছুদিন অতি সংবেদনশীল থাকে। এর ফলে কাশি স্থায়ী হতে পারে। ঋতু পরিবর্তনের সময় এ সমস্যা বেশি দেখা যায়। সাধারণত বিশেষ চিকিৎসা ছাড়াই ধীরে ধীরে এর উপসর্গ কমে আসে। হালকা গরম পানি দিয়ে গড়গড়া করা এবং আদা, লেবু, মধু, লবঙ্গ বা দারুচিনিযুক্ত গরম চা উপসর্গ কমাতে সহায়তা করে।
ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত এসিই ইনহিবিটর শ্রেণির ওষুধ অনেক রোগীর ক্ষেত্রে শুকনো কাশির কারণ হতে পারে। নিয়মিত কাশির কারণ খুঁজেনা পেলে ওষুধের ইতিহাস পরীক্ষা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এসব ক্ষেত্রে প্রয়োজনে চিকিৎসক বিকল্প ওষুধ বেছে নেন।
ধূমপান
দীর্ঘদিন ধূমপান, বিশেষত প্রতিদিন ২০টি সিগারেট বা ২০ বছর অথবা তার বেশি সময় ধরে ধূমপান ক্রনিক ব্রংকাইটিসের ঝুঁকি বাড়ায়। এতে বছরের বিভিন্ন সময়ে ক্রনিক কাশি ও শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। সময়মতো চিকিৎসা না নিলে এটি গুরুতর অবস্থায় রূপ নিতে পারে। ধূমপান সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করা এ সমস্যা নিয়ন্ত্রণের মূল উপায়।
দীর্ঘস্থায়ী বা অবিরাম কাশি সব সময় গুরুতর রোগের লক্ষণ না হলেও উপেক্ষা করা উচিত নয়। উপসর্গ যদি কয়েক সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হয়, তাহলে কারণ নির্ণয় করার জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
সহকারী অধ্যাপক (ইএনটি), সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে কিশোর-কিশোরীরা। গবেষণা বলছে, ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের ১০০ কোটিরও বেশি ১০ থেকে ২৪ বছর বয়সী কিশোর-তরুণ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে থাকবে। এই বয়সীদের মধ্যে এইচআইভি বা এইডস, অকাল গর্ভধারণ, অনিরাপদ যৌনতা, মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা, অপুষ্টি ও দুর্ঘটনার মতো সংকট বেড়ে যাবে।
২৩ মে ২০২৫
শীতের সকাল কিংবা সন্ধ্যায় ধোঁয়া ওঠা এক বাটি খিচুড়ির চেয়ে আরামদায়ক আর কী হতে পারে। খিচুড়ি শুধু একটি খাবার নয়। শীতকাল মানে আরাম করে হরেক রকমের সবজি দিয়ে রান্না করা খিচুড়ি খাওয়া। এতে যেমন মন ভরে, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর এ খাবার রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।
১ দিন আগে
তেজপাতা ও লবঙ্গ—উভয়ই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। এতে রয়েছে শক্তিশালী প্রদাহবিরোধী ও ব্যাকটেরিয়ারোধী গুণাবলি, যা শরীরের ভেতরে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম। তবে এই চা সাধারণত সবার জন্য নিরাপদ হলেও গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মায়েদের এটি পান করা থেকে বিরত থাকা উচিত।
২ দিন আগে
ঘুমের ঘোরে হাঁটার কথা আমরা অনেকে শুনেছি। কিন্তু ঘুমের ঘোরে খাওয়ার কথা কি শুনেছেন? চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় স্লিপ-রিলেটেড ইটিং ডিসঅর্ডার। এই উড়িয়ে দেওয়ার মতো ছোট ঘটনা একটি জটিল স্বাস্থ্যগত সমস্যা। এটি আক্রান্ত ব্যক্তি এবং তার পরিবারের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
২ দিন আগে