Ajker Patrika

ধীরে হাঁটলে মস্তিষ্ক ছোট হয়, আয়ু কমে: গবেষণা

বিবিসি
আপডেট : ১১ জুন ২০২৫, ১৭: ৪৭
গবেষণায় দেখা গেছে, যাঁরা ধীরে হাঁটেন, তাঁদের মস্তিষ্ক তুলনামূলকভাবে ছোট হয়। ছবি: আজকে পত্রিকা
গবেষণায় দেখা গেছে, যাঁরা ধীরে হাঁটেন, তাঁদের মস্তিষ্ক তুলনামূলকভাবে ছোট হয়। ছবি: আজকে পত্রিকা

আপনি প্রতিদিন কতটা দ্রুত হাঁটেন—এই সাধারণ অভ্যাস জানাতে পারে আপনার মস্তিষ্ক কতটা দ্রুত বুড়িয়ে যাচ্ছে। গবেষণায় দেখা গেছে, যাঁরা ধীরে হাঁটেন, তাঁদের মস্তিষ্ক তুলনামূলকভাবে ছোট হয় এবং মস্তিষ্কের গুরুত্বপূর্ণ কাঠামোয় ভিন্নতা থাকে।

দৃশ্যত সাধারণ মনে হলেও আপনি যখন দোকানে যান, পার্কে হাঁটেন বা বাসস্টপেজে পৌঁছান, সেই হাঁটার গতি শরীর ও মনের ভেতরের অবস্থা জানাতে পারে। এমনকি আপনি কত বছর বাঁচবেন, হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার আশঙ্কা বা হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টিও ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারে আপনার হাঁটার গতি। এটি ব্যবহার করে জানা যেতে পারে, আপনার কগনিটিভ বা মানসিক ক্ষমতা কোন গতিতে কমছে।

এই হাঁটার গতি পরিমাপকে বলা হয় ‘ওয়াকিং স্পিড টেস্ট’। এটি নির্ধারণ করে, একজন ব্যক্তি দৈনন্দিন কাজকর্ম কতটা স্বচ্ছন্দে করতে পারছেন। এটি দুর্বলতা শনাক্তের পাশাপাশি স্ট্রোকের পর মস্তিষ্কের পুনর্বাসন কেমন হবে, সেটিও অনুমান করতে পারে।

বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাঁটার গতি ধীর হওয়া স্বাভাবিক হলেও যদি হঠাৎ এই গতি কমে যায়, তবে তা হতে পারে শরীরে বড় ধরনের কোনো সমস্যা বা দুর্বলতার ইঙ্গিত।

‘গতি কমে গেলে বুঝতে হবে, কিছু একটা ঘটছে’

হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ক্রিস্টিনা ডিয়েলি-কনরাইট বলেন, ‘যখন কারও হাঁটার গতি কমে আসে, তখন প্রায়ই দেখা যায়, তা শরীরের ভেতরের কোনো দুর্বলতার সঙ্গে সম্পর্কিত।’

‘সম্ভবত সেই ব্যক্তি কোনো দীর্ঘমেয়াদি রোগে ভুগছেন, ফলে তাঁর চলাফেরা কমে গেছে বা তিনি স্থবির হয়ে পড়েছেন। এর ফলে পেশিশক্তি ও অস্থিসন্ধির সচলতা কমে যায়, যা পরে আরও স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে,’ বলেন কনরাইট।

গবেষণায় দেখা গেছে, যাঁরা ধীরে হাঁটেন, তাঁদের মস্তিষ্ক তুলনামূলকভাবে ছোট হয়। ছবি: আজকে পত্রিকা
গবেষণায় দেখা গেছে, যাঁরা ধীরে হাঁটেন, তাঁদের মস্তিষ্ক তুলনামূলকভাবে ছোট হয়। ছবি: আজকে পত্রিকা

সহজ এক পরীক্ষা

এই হাঁটার গতি মাপতে প্রয়োজন শুধু একটি স্টপওয়াচ ও দূরত্ব মাপার একটি সরঞ্জাম। বাইরে বেশি জায়গা থাকলে ১০ মিটার হাঁটার পরীক্ষাটি করা যায়। প্রথমে ৫ মিটার পথ মেপে নিন, এরপর আরেকটি ১০ মিটার। ৫ মিটার পথ হেঁটে গতি নির্ধারণ করুন, এরপর ১০ মিটার পথ স্বাভাবিক গতিতে হাঁটুন। সময় নিয়ে গতি হিসাব করুন—১০ মিটারকে সময় দিয়ে ভাগ করুন।

আপনি যদি বাসায় থাকেন এবং জায়গা সীমিত থাকলে ৪ মিটার হাঁটার পরীক্ষাও করা যায়। ১ মিটার বাড়তি পথ রেখে ৪ মিটার হাঁটার সময় নিন। এরপর ৪ মিটারকে সময় দিয়ে ভাগ করে গতি নির্ধারণ করুন।

আপনি কোন গোষ্ঠীতে পড়েন

গড় হাঁটার গতি সাধারণত বয়স ও লিঙ্গ অনুযায়ী ভিন্ন হয়—

৪০–৪৯ বছর: নারী–১.৩৯ মিটার/সেকেন্ড, পুরুষ–১.৪৩ মিটার/সেকেন্ড

৫০–৫৯ বছর: নারী–১.৩১ মিটার/সেকেন্ড, পুরুষ–১.৪৩ মিটার/সেকেন্ড

৬০–৬৯ বছর: নারী–১.২৪ মিটার/সেকেন্ড, পুরুষ–১.৪৩ মিটার/সেকেন্ড

৭০–৭৯ বছর: নারী–১.১৩ মিটার/সেকেন্ড, পুরুষ–১.২৬ মিটার/সেকেন্ড

৮০–৮৯ বছর: নারী–০.৯৪ মিটার/সেকেন্ড, পুরুষ–০.৯৭ মিটার/সেকেন্ড

আপনার ফোনে থাকা অ্যাপ, যেমন Walkmeter, MapMyWalk, Strava কিংবা Google Fit দিয়ে হাঁটার গতি নির্ধারণ করা যায়। এসব অ্যাপ জিপিএস ব্যবহার করে দূরত্ব ও সময় হিসাব করে গতি বের করে।

গবেষণায় দেখা গেছে, বয়সভিত্তিক হাঁটার গতি থেকে ভবিষ্যতের আয়ু অনুমান করা সম্ভব। যুক্তরাষ্ট্রের পিটসবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সী ৩৪ হাজার মানুষের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, যাঁদের হাঁটার গতি সবচেয়ে কম, ৭৫ বছর বয়সে তাঁদের ১০ বছর বাঁচার সম্ভাবনা মাত্র ১৯ শতাংশ। অথচ যাঁরা দ্রুত হাঁটেন, তাঁদের ক্ষেত্রে এই সম্ভাবনা ৮৭ শতাংশ।

একটা ব্যাখ্যা হতে পারে, যাঁরা আগে থেকেই অসুস্থ, তাঁরা কম চলাফেরা করেন। কিন্তু ২০০৯ সালে ফ্রান্সের এক গবেষণায় দেখা গেছে, এমনকি সুস্থ ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সী মানুষের মধ্যেও যাঁদের গতি ধীর, তাঁদের হৃদ্‌রোগে মৃত্যুর ঝুঁকি ছিল তিন গুণ বেশি।

গবেষণায় দেখা গেছে, যাঁরা ধীরে হাঁটেন, তাঁদের মস্তিষ্ক তুলনামূলকভাবে ছোট হয়। ছবি: আজকে পত্রিকা
গবেষণায় দেখা গেছে, যাঁরা ধীরে হাঁটেন, তাঁদের মস্তিষ্ক তুলনামূলকভাবে ছোট হয়। ছবি: আজকে পত্রিকা

‘হাঁটা আসলে একসঙ্গে অনেক কিছু’

ডিউক বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান ও স্নায়ুবিজ্ঞান বিভাগের গবেষক লাইন রাসমুসেন বলেন, ‘হাঁটা যতটা সহজ মনে হয়, বাস্তবে তা নয়। এ ক্ষেত্রে হাড়-মাংসপেশি, চোখ, হৃদ্‌যন্ত্র, ফুসফুস ও মস্তিষ্ক—সবকিছুকে একসঙ্গে কাজ করতে হয়।’

তাঁর মতে, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরের এসব কার্যকারিতা কমে যায়। তাই ধীরগতিতে হাঁটা বয়সজনিত সার্বিক অবক্ষয়ের ইঙ্গিত হতে পারে।

এমনকি শুধু প্রবীণদের ক্ষেত্রেই নয়, বরং মাঝবয়সীদের ক্ষেত্রেও এটি প্রযোজ্য। ২০১৯ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ৪৫ বছর বয়সেও হাঁটার গতি জানিয়ে দিতে পারে শরীর ও মস্তিষ্ক কতটা দ্রুত বার্ধক্যের দিকে এগোচ্ছে।

‘তিন বছর বয়সের মেধা জানিয়ে দেয় ৪৫ বছরে হাঁটার গতি’

নিউজিল্যান্ডের ডানিডিন শহরে ১৯৭২–৭৩ সালে জন্ম নেওয়া ১ হাজারের বেশি মানুষকে নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি এক গবেষণা করা হয়। এই গবেষণায় ৯০৪ জনের মধ্যে দেখা গেছে, যাঁদের হাঁটার গতি ধীর, তাঁদের ফুসফুস, দাঁত ও রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা তুলনামূলকভাবে দুর্বল। এমনকি উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরল, কম কার্ডিও ফিটনেসের মতো বার্ধক্যের বলিরেখা বেশি দেখা গেছে। তাঁদের মুষ্টিশক্তিও দুর্বল ছিল এবং চেয়ার থেকে উঠতেও সমস্যা হচ্ছিল।

ব্রেইন স্ক্যানে দেখা গেছে, ধীরগতির হাঁটার সঙ্গে ছোট মস্তিষ্ক, পাতলা নিউকোর্টেক্স এবং অতিরিক্ত হোয়াইট ম্যাটার যুক্ত। এমনকি তাঁদের মুখাবয়বও অন্যদের তুলনায় বেশি বয়সী মনে হয়েছে।

গবেষকেরা আরও দেখেছেন, এই পার্থক্য অনেক আগে থেকেই ছিল। তিন বছর বয়সে বুদ্ধিমত্তা, ভাষা এবং শরীরের গতি নিয়ে করা পরীক্ষাগুলোর ফলাফল দিয়েই ৪৫ বছরে হাঁটার গতির পূর্বাভাস দেওয়া গিয়েছিল।

রাসমুসেন বলেন, ‘সবচেয়ে অবাক হয়েছি এই দেখে যে ৪৫ বছর বয়সে একজন কীভাবে হাঁটছেন, তা জানিয়ে দিচ্ছে তাঁর শৈশবের মানসিক সক্ষমতা!’

সমাধান হাতের নাগালে

তবে নিজেরা ধীরগতিতে হাঁটাহাঁটি করেন বলে যাঁদের মনে হয়, তাঁদের হতাশ হওয়ার কিছু নেই। হাঁটার গতি বাড়ানো সম্ভব। ক্যানসার রোগীদের নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে ডিয়েলি-কনরাইট দেখেছেন, হাঁটার সময় ও গতি প্রতি তিন-চার সপ্তাহ পর বাড়ালে ধীরে ধীরে তা উন্নত হয়।

তিনি বলেন, ‘যেকোনো সুযোগে হাঁটা দরকার। এটি স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’ তাঁর পরামর্শ, গন্তব্যে যাওয়ার সময় গাড়ি কিছুটা দূরে পার্ক করুন, বন্ধুদের সঙ্গে হাঁটার পরিকল্পনা করুন কিংবা পোষা প্রাণী নিয়ে বের হন।

‘বিশেষ করে যাঁরা বসে কাজ করেন, তাঁদের হাঁটার বিরতি নেওয়া জরুরি। এমনকি বাথরুমে যাওয়ার জন্য হলেও পাঁচ মিনিট হাঁটুন বা আশপাশে ছোট একটি চক্কর দিন—তাতে উপকার মিলবেই,’ বলেন ডিয়েলি-কনরাইট।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৩০০ ফুট সড়কে প্রবেশ করেছে তারেক রহমানের গাড়িবহর, কানায় কানায় পূর্ণ চারপাশ

পিরোজপুর-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন সাবেক ভিপি মাহমুদ হোসেন

‎টঙ্গীতে যৌথ বাহিনীর অভিযানে জুলাই যোদ্ধা তাহরিমা গ্রেপ্তার

বিমানবন্দরে পরিবারের সঙ্গে আবেগাপ্লুত তারেক রহমান

বৃশ্চিক রাশির জাতক তারেক রহমান: আগামী ৭ দিন কেমন যাবে, জ্যোতিষশাস্ত্র কী বলছে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কিডনি রোগীর বন্ধু কামরুল

  • নিজের হাতে ২০০০তম কিডনি প্রতিস্থাপন।
  • নিজে কোনো পারিশ্রমিক নেন না ডা. কামরুল।
  • কিডনি প্রতিস্থাপন ২ লাখ ১৫ হাজার টাকায়।
মুহাম্মাদ শফিউল্লাহ, ঢাকা
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ২৫
অধ্যাপক কামরুল ইসলাম।
অধ্যাপক কামরুল ইসলাম।

বাংলাদেশে যেখানে কিডনি প্রতিস্থাপন এখনো সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে, সেখানে অসহায় ও দরিদ্র রোগীদের শেষ ভরসা হয়ে উঠেছেন কিডনির শল্যচিকিৎসক অধ্যাপক কামরুল ইসলাম। দেশে যত কিডনি প্রতিস্থাপিত হয়, সেগুলোর একটি বড় অংশই করেন তিনি। নিজের প্রতিষ্ঠিত সেন্টার ফর কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি (সিকেডি) হাসপাতালে গতকাল মঙ্গলবার তিনি ২০০০তম কিডনি প্রতিস্থাপন সম্পন্ন করেছেন। ব্যয়বহুল এই শল্য-চিকিৎসায় নিজে কোনো পারিশ্রমিক নেন না ২০২২ সালে স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত এই চিকিৎসক।

কিডনি ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুসারে, বাংলাদেশে কিডনি রোগের পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। প্রায় ২ কোটি মানুষ কিডনির কোনো না কোনো সমস্যায় ভুগছেন। দেশে প্রতি ঘণ্টায় প্রায় পাঁচজন রোগীর মৃত্যু হচ্ছে কিডনি অকেজো হয়ে। কিডনি প্রতিস্থাপন সীমিত এবং ডায়ালাইসিস ব্যয়বহুল। ফলে অধিকাংশ রোগী চিকিৎসা না পেয়ে মারা যান। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত ও চিকিৎসা নিলে ৬০ শতাংশ রোগীর জীবন রক্ষা সম্ভব।

কামরুল ইসলামের জন্ম ১৯৬৫ সালে। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে বোর্ডের মেধাতালিকায় যথাক্রমে ১৫তম ও ১০তম স্থান লাভ করেছিলেন তিনি। এরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজের ৪০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী হিসেবে ১৯৯০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত মেডিকেল কলেজের মধ্যে সম্মিলিত এমবিবিএস পরীক্ষায় প্রথম স্থান অর্জন করে স্বর্ণপদক পান। এরপর ১৯৯৫ সালে এফসিপিএস, ২০০০ সালে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইউরোলজিতে এমএস এবং ২০০৩ সালে ইংল্যান্ডের রয়েল কলেজ থেকে এফআরসিএস ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি।

ডা. কামরুলের কর্মজীবন শুরু ১৯৯৩ সালে, বিসিএসের মাধ্যমে স্বাস্থ্য ক্যাডারে যোগ দিয়ে। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি হাসপাতালে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি এবং ২০০৭ সালে প্রথম সফল কিডনি প্রতিস্থাপন সম্পন্ন করেন। ২০১১ সালে সরকারি চাকরি ছেড়ে বেসরকারি একটি মেডিকেল কলেজে অধ্যাপক পদে দায়িত্ব নেন। পরে ২০১৪ সালে নিজ উদ্যোগে রাজধানীর শ্যামলীতে সিকেডি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন।

সিকেডি সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে ডা. কামরুলের নেতৃত্বে সপ্তাহে ছয়টি কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়। কিডনি দাতা ও গ্রহীতার জন্য একই সঙ্গে দুটি কক্ষে অস্ত্রোপচার চলে। প্রতিটি অস্ত্রোপচারে সাধারণত ১০-১২ জন চিকিৎসক অংশ নেন। যাঁদের মধ্যে থাকেন অবেদনবিদ, কিডনি বিশেষজ্ঞ, ইউরোলজির শল্যচিকিৎসকসহ অন্যান্য বিশেষজ্ঞ, পাশাপাশি নার্স ও টেকনোলজিস্ট।

ডা. কামরুল বলেন, সিকেডিতে প্রতিদিন গড়ে একটি কিডনি প্রতিস্থাপিত হয়। প্রতিটি অস্ত্রোপচারে ১০-১২ জন চিকিৎসক কাজ করেন। তিনি নিজে পারিশ্রমিক নেন না, তবে অস্ত্রোপচারে আনুষঙ্গিক খরচ থাকে। তাঁর হাসপাতালে কিডনি প্রতিস্থাপনের প্যাকেজ এখন ২ লাখ ১৫ হাজার টাকা। যার মধ্যে অস্ত্রোপচার, ওষুধ, আইসিইউ এবং অন্যান্য খরচ অন্তর্ভুক্ত। কিডনি দাতা সাধারণত ৩ থেকে ৭ দিন এবং কিডনি গ্রহীতা ৭ থেকে ১০ দিন হাসপাতালে থাকেন।

হাসপাতালের অন্যান্য সার্জারি ও চিকিৎসাসেবার আয়ের অর্থে কিডনি প্রতিস্থাপনের খরচের পুরো প্রক্রিয়া চালানো হয়। সেখানে প্রতিদিন ৭-১২টি কিডনি স্টোন সার্জারি, কিডনি ক্যানসার, প্রস্টেট ক্যানসারসহ অন্যান্য সার্জারি করা হয়। হাসপাতালে বর্তমানে চিকিৎসক, নার্স, টেকনোলজিস্টসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা চার শতাধিক। আউটডোরে প্রতিদিন ২৫০-৩০০ রোগী, ইনডোরে প্রায় ১০০ রোগী সেবা নেন। ১০০ শয্যার হাসপাতালটিতে আরও ৫০ শয্যা বাড়ানোর জন্য আবেদন করা হয়েছে।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে সিকেডি হাসপাতালে কিডনি প্রতিস্থাপন করেছেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাসিন্দা মাইনুল রহমান। ৪৪ বছর বয়সী এই ব্যবসায়ীর কিডনি অকেজো হয়ে গেলে স্ত্রীর দেওয়া কিডনি নিয়ে তাঁর শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়। ডা. কামরুল ইসলাম এই অস্ত্রোপচার করেন।

কিডনি প্রতিস্থাপনে সিকেডি হাসপাতাল সোয়া দুই লাখ টাকা নিয়েছে জানিয়ে মাইনুল রহমান গতকাল সন্ধ্যায় আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সিকেডি হাসপাতাল যদি অন্য হাসপাতালের মতো খরচ নিত, তাহলে আমরা তা বহন করতে পারতাম না। এখন প্রতি মাসে ফলোআপ চিকিৎসা প্রয়োজন হয়। সেখানে গেলে সবকিছু বিনা মূল্যে পাওয়া যায়। পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও চিকিৎসকের ফি দিতে হয় না।’

এর আগে ২০২৩ সালের অক্টোবরে স্ত্রীর দেওয়া কিডনি নিজের শরীরে প্রতিস্থাপন করেন নারায়ণগঞ্জের ৩৭ বছর বয়সী আবু বকর। তিনি বলেন, ‘ডা. কামরুল স্যার খুবই মানবিক। আমরা খরচের ভয়ে চিকিৎসায় যেতে চাইনি। তিনি কয়েকবার ফোন করে আমাদের খোঁজ নিয়েছেন, তিনি কিডনি বসিয়ে দিয়েছেন।’

ডা. কামরুল জানান, কিডনি প্রতিস্থাপন করা রোগীরা বাসায় গেলে প্রথম এক থেকে দুই বছর অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হয়; বিশেষ করে ওষুধ ঠিকমতো না খাওয়া, সময়মতো ডোজ না নেওয়া এবং অনিয়মিত জীবনধারা ঝুঁকি বাড়ায়। আবার রোগীরা খরচের ভয়ে ফলোআপ চিকিৎসায় আসতে চান না। ফলে তাঁদের এসব চিকিৎসা আজীবন বিনা মূল্যে করেন তিনি।

ডা. কামরুলের স্ত্রীও একজন চিকিৎসক। তিনি বর্তমানে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত। তাঁদের তিন মেয়ে। বড় মেয়ে শিক্ষানবিশ চিকিৎসক, মেজ মেয়ে এমবিবিএস অধ্যয়ন করছেন।

নিজের প্রতিষ্ঠিত সিকেডি হাসপাতালকে ‘বড় গাছের মতো’ দেখেন ডা. কামরুল ইসলাম। যেখানে আয়ের একটি অংশ দরিদ্র রোগী ও কিডনি প্রতিস্থাপনে ব্যয় করা হয়। তিনি বলেন, ‘মানুষকে নিখুঁত চিকিৎসা দেওয়া আমার কর্তব্য। আমি কিডনি রোগীদের খরচ হাসপাতালের অন্যান্য আয়ের মাধ্যমে বহন করি। এটি যেকোনো হাসপাতালই করতে পারে এবং এর জন্য লোকসান হয়; তা কিন্তু নয়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৩০০ ফুট সড়কে প্রবেশ করেছে তারেক রহমানের গাড়িবহর, কানায় কানায় পূর্ণ চারপাশ

পিরোজপুর-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন সাবেক ভিপি মাহমুদ হোসেন

‎টঙ্গীতে যৌথ বাহিনীর অভিযানে জুলাই যোদ্ধা তাহরিমা গ্রেপ্তার

বিমানবন্দরে পরিবারের সঙ্গে আবেগাপ্লুত তারেক রহমান

বৃশ্চিক রাশির জাতক তারেক রহমান: আগামী ৭ দিন কেমন যাবে, জ্যোতিষশাস্ত্র কী বলছে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কবিরাজিসহ প্রথাগত চিকিৎসার কার্যকারিতা খতিয়ে দেখছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ৪৭
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

আফ্রিকায় ভেষজ চিকিৎসকেরা ক্ষত বা ব্যথা উপশমে গাছগাছড়া সংগ্রহ করছেন; চীনে আকুপাংচার বিশেষজ্ঞরা সুচ ব্যবহার করে মাইগ্রেন সারাচ্ছেন; আবার ভারতে যোগীরা ধ্যানচর্চা করছেন—এ ধরনের প্রথাগত চিকিৎসা পদ্ধতিগুলো ক্রমেই কার্যকর প্রমাণিত হচ্ছে এবং এগুলো আরও বেশি মনোযোগ ও গবেষণার দাবি রাখে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) এক কর্মকর্তা।

ডব্লিউএইচওর গ্লোবাল ট্র্যাডিশনাল মেডিসিন সেন্টারের প্রধান ডা. শ্যামা কুরুবিল্লার মতে, ঐতিহাসিকভাবে পর্যাপ্ত বৈজ্ঞানিক প্রমাণের অভাবের কারণে যেসব প্রথাগত চিকিৎসা পদ্ধতিকে অনেক সময় অবহেলা করা হয়েছে, আধুনিক প্রযুক্তি ও বিনিয়োগ বাড়লে সেই ধারণা বদলাতে পারে।

দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরের শুরুতে বিভিন্ন দেশ সম্মত হয়েছে যে আগামী এক দশকের জন্য ডব্লিউএইচও একটি নতুন বৈশ্বিক প্রথাগত চিকিৎসা কৌশল গ্রহণ করবে।

এই কৌশলের লক্ষ্য—প্রমাণভিত্তিকভাবে স্বাস্থ্য ও কল্যাণে প্রথাগত, পরিপূরক ও সমন্বিত চিকিৎসার সম্ভাবনাময় অবদানকে কাজে লাগানো।

এই কৌশলের আওতায় প্রথাগত চিকিৎসা পদ্ধতির জন্য শক্তিশালী প্রমাণভিত্তি তৈরি, চিকিৎসা ও চিকিৎসকদের নিয়ন্ত্রণ কাঠামো গড়ে তোলা এবং প্রয়োজন অনুযায়ী এসব পদ্ধতিকে আধুনিক জৈব-চিকিৎসাভিত্তিক স্বাস্থ্যব্যবস্থার সঙ্গে একীভূত করার পরিকল্পনা রয়েছে।

কুরুবিল্লা বলেন, ‘এটা ভীষণ রোমাঞ্চকর। আমি বলছি না, আমরা এখনই জানি—কোনটা কাজ করে আর কোনটা করে না। তবে এ মুহূর্তে বিষয়টি জানার বড় সুযোগ তৈরি হয়েছে।’

প্রথাগত চিকিৎসা বলতে এমন স্বাস্থ্য ও সুস্থতার ব্যবস্থাকে বোঝায়, যেগুলোর উদ্ভব আধুনিক বায়োমেডিসিনের আগেই হয়েছে। এসব চিকিৎসা পদ্ধতির ধরন নানাবিধ—ভেষজ চা থেকে শুরু করে ভারতের আয়ুর্বেদিক চিকিৎসাব্যবস্থা পর্যন্ত।

কুরুবিল্লা বলেন, শত শত বছর ধরে চলে আসা এসব পদ্ধতির মধ্যে অনেকগুলোরই বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, জিনোমিক্স ও মস্তিষ্ক স্ক্যানসহ আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে এখন সেগুলো নতুনভাবে অনুসন্ধান করা সম্ভব।

তাঁর মতে, প্রথাগত চিকিৎসা গ্রহণের ক্ষেত্রে থাইল্যান্ড ভালো উদাহরণ। দেশটিতে গবেষকেরা প্রথাগত চিকিৎসা পদ্ধতি পর্যবেক্ষণ ও নথিবদ্ধ করছেন এবং ভেষজ চিকিৎসাকে প্রয়োজনীয় ওষুধের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছেন। গত মে মাসে থাইল্যান্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় পেশির ব্যথা ও কোষ্ঠকাঠিন্যসহ কিছু রোগের ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের আধুনিক ওষুধের বদলে প্রথাগত চিকিৎসা ব্যবহারের সুপারিশ করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৩০০ ফুট সড়কে প্রবেশ করেছে তারেক রহমানের গাড়িবহর, কানায় কানায় পূর্ণ চারপাশ

পিরোজপুর-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন সাবেক ভিপি মাহমুদ হোসেন

‎টঙ্গীতে যৌথ বাহিনীর অভিযানে জুলাই যোদ্ধা তাহরিমা গ্রেপ্তার

বিমানবন্দরে পরিবারের সঙ্গে আবেগাপ্লুত তারেক রহমান

বৃশ্চিক রাশির জাতক তারেক রহমান: আগামী ৭ দিন কেমন যাবে, জ্যোতিষশাস্ত্র কী বলছে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শীতে খিচুড়ি কেন খাবেন

ফিচার ডেস্ক
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ১৮
শীতে খিচুড়ি কেন খাবেন

শীতের সকাল কিংবা সন্ধ্যায় ধোঁয়া ওঠা এক বাটি খিচুড়ির চেয়ে আরামদায়ক আর কী হতে পারে। খিচুড়ি শুধু একটি খাবার নয়। শীতকাল মানে আরাম করে হরেক রকমের সবজি দিয়ে রান্না করা খিচুড়ি খাওয়া। এতে যেমন মন ভরে, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর এ খাবার রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। এ ছাড়া এটি শরীরে বিভিন্ন উপাদানের ভারসাম্য বজায় রাখতেও সহায়ক। শীতকালীন ক্লান্তি দূর করতে এবং ঋতু পরিবর্তনের অসুস্থতা থেকে বাঁচতে খিচুড়ি একটি আদর্শ খাবার। এটি সহজে হজম হয়।

কেন খাবেন খিচুড়ি

পুষ্টিবিদদের পরামর্শ অনুযায়ী, খিচুড়ির প্রতিটি উপাদান আমাদের শরীরের জন্য বিশেষভাবে উপকারী। এতে থাকা চাল থেকে পাওয়া যায় পর্যাপ্ত শর্করা ও শক্তি। ডাল জোগায় প্রোটিন ও আঁশ, যা হজমে বিশেষভাবে সাহায্য করে। ঘি শরীরের তাপমাত্রা ধরে রাখতে এবং পুষ্টি শোষণে সহায়ক। হলুদে থাকা কারকিউমিন ব্যথানাশক হিসেবে কাজ করে এবং আদা সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে শরীর উষ্ণ রাখে। খিচুড়িতে সবজি যোগ করলে আঁশের মাত্রা বাড়ে। গোলমরিচ ও জিরার মতো মসলা বিপাক প্রক্রিয়া উন্নত করে। এ ছাড়া সাবুদানার খিচুড়ি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। এ ছাড়া এটি তাৎক্ষণিক শক্তি জোগাতে কার্যকর।

mog-dal

মুগ ডালের খিচুড়ি

চাল ও মুগ ডালের মিশেলে তৈরি এই খিচুড়ি যেমন সহজপাচ্য, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর। এর বিশেষত্বের চাবিকাঠি লুকিয়ে রয়েছে মসলায়। একেবারে হলুদ, লবণ, জিরা অথবা ধনেগুঁড়ার মতো সাধারণ কিছু মসলা দিয়ে এটি রান্না করা হয়। এটা রান্নার সময় মুগ ডালের সঙ্গে চালও ভেজে নিতে পারেন। এতে মুগ ডালের একটা ভিন্ন গন্ধ পাওয়া যাবে। হলুদের পরিবর্তে এতে ব্যবহার করতে পারেন সবুজ মুগডাল।

উপকারিতা: শরীর উষ্ণ রাখে এবং দীর্ঘক্ষণ শক্তি জোগায়।

khichuri

সবজি খিচুড়ি

গাজর, মটরশুঁটি, ফুলকপি, আলু, টমেটো ইত্যাদি শীতের সবজি দিয়ে তৈরি রান্না করা সবজি খিচুড়ি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। এর সঙ্গে শীতে পাওয়া যায় এমন প্রায় সব শাক ও সবজি যোগ করতে হবে। সবজিগুলো ছোট টুকরা করে কেটে নিতে হবে।

যে সবজিগুলো সেদ্ধ হতে বেশি সময় নেয়, সেগুলো আগে ভেজে নিন অথবা প্রেশার কুকারে দিন। এরপর তেল বা ঘিতে জিরা, তেজপাতা ও অন্যান্য মসলা দিয়ে পেঁয়াজ, আদা, রসুন ভাজার পর সবজিগুলো হালকা ভেজে নিন। ভেজে রাখা সবজি, চাল, ডাল ও পানি দিয়ে প্রেশার কুকারে বা হাঁড়িতে রান্না করুন। নরম খিচুড়ি চাইলে পানি বেশি দিতে পারেন। শেষ মুহূর্তে পালংসহ অন্য নরম শাক এতে যোগ করতে পারেন।

উপকারিতা: এটি অন্যান্য উপকারের সঙ্গে কোষ্ঠকাঠিন্য কমায় এবং দ্রুত শক্তি পুনরুদ্ধার করে।

তিল-খিচুড়ি

তিল খিচুড়ি

ঠান্ডা পাহাড়ি অঞ্চলে শীতের প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে এই খিচুড়ি অত্যন্ত জনপ্রিয়। চাল, মাষকলাইয়ের ডাল এবং তিল এর প্রধান উপকরণ। রান্নার আগে চাল ও ডাল ভিজিয়ে রাখা হয়। তিল হালকা ভেজে গুঁড়া করে নেওয়া হয়। তিল থেকে পাওয়া স্বাস্থ্যকর চর্বি ও খনিজ উপাদান শীতের দিনে শরীরের জন্য খুবই উপকারী। জিরা, হিং, হলুদ এবং লাল মরিচ গুঁড়ার সুগন্ধি মিশ্রণ এতে অনন্য স্বাদ যোগ করে। খাঁটি ঘি অথবা তেল-মসলার ফোড়ন দিয়ে এটি রান্না করা হয়। প্রোটিন, চর্বি এবং মিনারেলসমৃদ্ধ এই খাবার শীত জয়ের এক অমোঘ হাতিয়ার হতে পারে।

উপকারিতা: এটি শরীরে তাৎক্ষণিক শক্তি জোগানোর পাশাপাশি দীর্ঘক্ষণ শরীর গরম রাখতে সাহায্য করে।

আমলকীর-খিচুড়ি

আমলকী খিচুড়ি

সচরাচর খাওয়া হয় এমন কোনো খিচুড়ি খেতে না চাইলে রান্না করতে পারেন আমলকী খিচুড়ি। এটি কোনো সাধারণ খাবার নয়। এ খিচুড়ি রান্না করা হয় চাল, খোসা ছাড়ানো কালো মাষকলাইয়ের ডাল এবং তাজা আমলকী দিয়ে। নরম ধরনের এ খিচুড়ির স্বাদ ও সুগন্ধ বাড়াতে রান্নায় জিরা, হিং, হলুদ ও লাল মরিচের গুঁড়া ব্যবহার করতে পারেন। এগুলো এতে রাজকীয় স্বাদ যোগ করবে। সবশেষে ঘি বা তেলের সুগন্ধি ফোড়ন এই খিচুড়িকে করে তোলে আরও সুস্বাদু। কেউ চাইলে এই খিচুড়ির পুষ্টিমান আরও বাড়াতে বিভিন্ন ধরনের ঋতুভিত্তিক সবজি যোগ করতে পারেন। শীতের এই উৎসবের দিনগুলোতে শরীর সতেজ রাখতে এবং রসনা তৃপ্তিতে আমলকী খিচুড়ি হতে পারে আপনার সেরা পছন্দ।

উপকারিতা: এটি শরীরে শক্তি জোগানোর পাশাপাশি হজমশক্তি এবং রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়। এ ছাড়া শরীর ডিটক্সে সহায়তা করে, হজম প্রক্রিয়া উন্নত হয়, গ্যাস্ট্রিক কমায়, কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায় এবং ওজন কমাতে সহায়ক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৩০০ ফুট সড়কে প্রবেশ করেছে তারেক রহমানের গাড়িবহর, কানায় কানায় পূর্ণ চারপাশ

পিরোজপুর-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন সাবেক ভিপি মাহমুদ হোসেন

‎টঙ্গীতে যৌথ বাহিনীর অভিযানে জুলাই যোদ্ধা তাহরিমা গ্রেপ্তার

বিমানবন্দরে পরিবারের সঙ্গে আবেগাপ্লুত তারেক রহমান

বৃশ্চিক রাশির জাতক তারেক রহমান: আগামী ৭ দিন কেমন যাবে, জ্যোতিষশাস্ত্র কী বলছে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

এই শীতে কেন খাবেন তেজপাতা ও লবঙ্গ চা

আলমগীর আলম
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ০৪
এই শীতে কেন খাবেন তেজপাতা ও লবঙ্গ চা

তেজপাতা ও লবঙ্গ—উভয়ই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। এতে রয়েছে শক্তিশালী প্রদাহবিরোধী ও ব্যাকটেরিয়ারোধী গুণাবলি, যা শরীরের ভেতরে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম। তবে এই চা সাধারণত সবার জন্য নিরাপদ হলেও গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মায়েদের এটি পান করা থেকে বিরত থাকা উচিত।

১. হজমশক্তি বৃদ্ধিতে: বদহজমের সমস্যায় ভুগলে তেজপাতা দারুণ মুক্তি দিতে পারে। অন্যদিকে, লবঙ্গ এনজাইম নিঃসরণ বাড়িয়ে হজমপ্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত এবং পেটের অস্বস্তি দূর করে।

২. ব্যথা ও প্রদাহ উপশমে: আর্থ্রাইটিসের মতো রোগে যাঁরা ভোগেন, তাঁদের জন্য এই চা অত্যন্ত উপকারী। ইউরিক অ্যাসিডের ব্যথা কমাতে এবং শরীরের বিভিন্ন অংশের প্রদাহ বা ফোলা ভাব রোধে তেজপাতা ও লবঙ্গ লড়তে সাহায্য করে।

৩. রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে: লবঙ্গে থাকা অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া

ও ভাইরাসের বিরুদ্ধে কাজ করে। এর সঙ্গে তেজপাতা যুক্ত হলে শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বহুগুণ বেড়ে যায়, যা বিশেষ করে ঠান্ডা ও ফ্লু মৌসুমে সুরক্ষা দেয়।

৪. দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি কমাতে: এই চা শরীরে ক্ষতিকর ফ্রি র‍্যাডিক্যালের বিরুদ্ধে লড়াই করে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমায়। ফলে হৃদ্‌রোগ এবং নির্দিষ্ট কিছু ক্যানসারের ঝুঁকি কমে পায়।

৫. দাঁত ও মাড়ির সুরক্ষায়: লবঙ্গ তেল দাঁতের জন্য উপকারী হিসেবে স্বীকৃত। নিয়মিত লবঙ্গ চা পান করলে মাড়ি ও দাঁত সুস্থ রাখা সম্ভব।

তেজপাতা ও লবঙ্গ চা তৈরি করবেন যেভাবে

উপকরণ সংগ্রহ করা এবং এই চা তৈরি করার প্রক্রিয়া অত্যন্ত সহজ—

উপকরণ: ৩-৪টি শুকনো তেজপাতা, ৫-৬টি আস্ত লবঙ্গ এবং ৪ কাপ পানি। স্বাদ বাড়াতে মধু বা লেবু ব্যবহার করতে পারেন।

প্রণালি: প্রথমে একটি পাত্রে পানি ফুটিয়ে নিতে হবে। তাতে তেজপাতা ও লবঙ্গ দিয়ে চুলার আঁচ কমিয়ে দিন। ১৫ মিনিট মিশ্রণটি সেদ্ধ করার পর চুলা নিভিয়ে আরও ৫ মিনিট পাত্রটি ঢেকে রেখে দিন। এরপর ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে তেজপাতা ও লবঙ্গ ফেলে দিয়ে পানি আলাদা করে নিন। স্বাদ অনুযায়ী মধু কিংবা লেবুর রস মিশিয়ে পান করুন।

সেবনবিধি ও সতর্কতা

ভালো ফল পেতে প্রতিদিন এক কাপ এই চা-পান করা ভালো; বিশেষ করে খাবারের পর এটি পান করলে হজমশক্তি বাড়াতে সবচেয়ে ভালো কাজ করে।

লেখক: খাদ্য পথ্য ও আকুপ্রেশার বিশেষজ্ঞ, প্রধান নির্বাহী, প্রাকৃতিক নিরাময় কেন্দ্র

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৩০০ ফুট সড়কে প্রবেশ করেছে তারেক রহমানের গাড়িবহর, কানায় কানায় পূর্ণ চারপাশ

পিরোজপুর-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন সাবেক ভিপি মাহমুদ হোসেন

‎টঙ্গীতে যৌথ বাহিনীর অভিযানে জুলাই যোদ্ধা তাহরিমা গ্রেপ্তার

বিমানবন্দরে পরিবারের সঙ্গে আবেগাপ্লুত তারেক রহমান

বৃশ্চিক রাশির জাতক তারেক রহমান: আগামী ৭ দিন কেমন যাবে, জ্যোতিষশাস্ত্র কী বলছে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত