আজকের পত্রিকা ডেস্ক

অনেক ভারতীয় সুস্বাস্থ্যের আশায় নিজের মূত্র পান করে থাকেন। আবার অনেকে গো-মূত্রও পান করেন। ভারতের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী মোরারজি দেশাই দাবি করতেন, প্রতিদিন এক গ্লাস করে নিজের মূত্রপান অনেক রোগ সারিয়ে তোলে ও দীর্ঘজীবন লাভে সহায়তা করে।
তবে কেবল মোরারজি দেশাইয়ের মতো ভারতীয়রাই নন, পশ্চিমা দুনিয়াতেও নিজের মূত্রপানের বিষয়টি বেশ পরিচিত। জনপ্রিয় টিভি তারকা বেয়ার গ্রিলস বলেন, তিনি বেঁচে থাকার জন্য মূত্রপান করেন। পাশাপাশি, তিনি তাঁর রিয়্যালিটি শো’র প্রতিযোগীদেরও এটি শেখান। মেক্সিকোর বক্সার হুয়ান ম্যানুয়েল মার্কেজ ২০০৯ সালে ফ্লয়েড মেওয়েদারের সঙ্গে লড়াইয়ের প্রশিক্ষণের সময় এই থেরাপি অনুশীলন করেছিলেন। তবে মার্কেজ হেরে গিয়েছিলেন।
সম্প্রতি ভারতের জনপ্রিয় অভিনেতা পরেশ রাওয়ালও মূত্রপান করে আলোচনায় এসেছে। তিনি সম্প্রতি পায়ের চোট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে তাঁকে দেখতে গিয়েছিলেন বলিউডের জনপ্রিয় নায়ক অজয় দেবগনের বাবা বীরু দেবগন। তিনি পরেশ রাওয়ালকে মূত্রপানের পরামর্শ দেন।
এই বিষয়ে পরেশ বলেন, ‘আমার হাঁটুর চোটের কথা জানার পর তিনি (বীরু) আমাকে সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে নিজের মূত্র পান করার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, সব যোদ্ধারা এটা করে। এই অভ্যাস করতে পারলে জীবনে কখনোই আর চোটজনিত কোনো সমস্যা ভোগাতে পারবে না। এ ছাড়া তিনি আমাকে অ্যালকোহল, রেড মিট আর তামাক পরিহারের পরামর্শ দেন।’
পরেশ আরও বলেন, ‘আমি নিজের প্রস্রাব বিয়ারের মতো করে পান করেছি। টানা ১৫ দিন এই পথ্য চলেছে। এরপর চিকিৎসকেরা আমার এক্স–রে রিপোর্ট দেখে একেবারে অবাক হয়ে গিয়েছিলেন!’ তাঁর ভাষ্যমতে, এ চোট সারতে আড়াই মাসের মতো লাগবে বলে জানিয়েছিলেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু মূত্র পানের ফলে সেরে গেছে মাত্র ১৫ দিনে!
যাই হোক, এই তারকারা যে থেরাপি অনুশীলন করেন—তার নাম ইউরোফাজিয়া, যা মূত্র থেরাপি নামেও পরিচিত। এটি হলো প্রস্রাব পানের অভ্যাস। নিজের, অন্যের বা পশুর প্রস্রাব যাই হোক না কেন, মানুষ হাজার হাজার বছর ধরে ওষুধ হিসেবে এটি পান করে আসছে। মূত্র থেরাপির উপকারিতা সম্পর্কে বেশির ভাগ দাবিই ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা বা প্রাচীন লেখার ওপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত, যার কোনো জোরালো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই।
তবে প্রস্রাব পানে বেশ কিছু স্বাস্থ্য ঝুঁকি রয়েছে, যার প্রমাণ পাওয়া যায়। প্রাচীন ভারতীয় আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে হাঁপানি, অ্যালার্জি, বদহজম, ত্বক কুঁচকে যাওয়া এবং এমনকি ক্যানসারের চিকিৎসায়ও প্রস্রাব ব্যবহৃত হতো। রোমান কবি ক্যাটুলাস বিশ্বাস করতেন, প্রস্রাব দাঁত সাদা করতে সাহায্য করে—সম্ভবত এর অ্যামোনিয়া উপাদানের কারণে।
ডায়াবেটিস নির্ণয়ের একটি প্রাথমিক পরীক্ষা হিসেবে ডাক্তাররা প্রস্রাবের স্বাদ নিতেন এটি কতটা মিষ্টি তা জানার জন্য। এখন অবশ্য প্রস্রাবে গ্লুকোজ পরীক্ষার জন্য ইউরিন টেস্ট স্ট্রিপ ব্যবহার করা হয়। ১৯৪৫ সালে ব্রিটিশ নেচারোপ্যাথ জন ডব্লিউ আর্মস্ট্রং ‘দ্য ওয়াটার অব লাইফ: এ ট্রিটিজ অন ইউরিন থেরাপি’ নামে একটি বই প্রকাশ করেন। তিনি দাবি করেন, নিজের প্রস্রাব পান করলে এবং ত্বকে মালিশ করলে বড় ধরনের অসুস্থতাও নিরাময় হতে পারে।
ঐতিহাসিকভাবে, চিকিৎসার বিকল্পের অভাবে অসুস্থতা নিরাময়ে প্রস্রাব পান হয়তো যুক্তিসংগত ছিল। কিন্তু জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রসারের পরও উল্লিখিত প্রস্রাব পানকারী তারকাদের মতো অনেকের মাঝেই আজও এই অভ্যাস প্রচলিত। নাইজেরিয়ায় শিশুদের খিঁচুনির ঘরোয়া চিকিৎসা হিসেবে প্রস্রাব ব্যবহারের খবর পাওয়া গেছে। চায়না ইউরিন থেরাপি অ্যাসোসিয়েশন দাবি করেছে, প্রস্রাব পান করা হলে এবং তা দিয়ে ত্বক ধৌত করা হলে কোষ্ঠকাঠিন্য ও ত্বকের ঘা সারাতে পারে।
শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ বের করে দেওয়ার জন্য প্রস্রাব তৈরি হয়। এর বেশির ভাগটাই পানি (প্রায় ৯৫ শতাংশ) এবং কয়েকটি বর্জ্য পদার্থ—যার মধ্যে যকৃতে প্রোটিন ভাঙার পর তৈরি হওয়া ইউরিয়া (২ শতাংশ), মাংসপেশির শক্তি উৎপাদন প্রক্রিয়ার পর অবশিষ্ট থাকা ক্রিয়েটিনিন এবং লবণ। এখন প্রশ্ন হলো—প্রস্রাব যদি কেবল বর্জ্যই হয়, তাহলে এটি পান করা উপকারী হতে পারে কীভাবে?
কিডনি ছাঁকনির মতো কাজ করে—কেবল বিষাক্ত পদার্থই নয়, শরীরের অপ্রয়োজনীয় সবকিছুই এটি বের করে দেয়। উদাহরণস্বরূপ, শরীরে অতিরিক্ত ভিটামিন যা প্রয়োজন নেই তা প্রস্রাবে পাওয়া যায়। প্রস্রাব পান করার অর্থ হলো—এই ভিটামিন এবং খনিজগুলো নষ্ট না হয়ে পুনর্ব্যবহার হচ্ছে। এ ছাড়া প্রস্রাবে পাওয়া অন্যান্য হরমোন, প্রোটিন এবং অ্যান্টিবডির ক্ষেত্রেও এটি প্রযোজ্য। তবে এক গ্লাস প্রস্রাবে এই পদার্থগুলোর পরিমাণ উপকারী হওয়ার মতো যথেষ্ট নয়, বরং এর চেয়ে ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট বেশি কার্যকর হতে পারে।
মূত্র থেরাপির কিছু সমর্থক বিশ্বাস করেন, এটি অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া প্রতিরোধ করতে এবং অটোইমিউন (স্ব-রোগপ্রতিরোধ) অবস্থা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে। প্রস্রাবে থাকা অ্যান্টিবডিগুলো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে বলে মনে করা হয়।
প্রস্রাব পানের দাবি করা অন্যান্য আধুনিক ব্যবহারের মধ্যে রয়েছে শরীর পরিষ্কার এবং ডিটক্সিফিকেশন। কিছু লোক দাবি করেছেন, নিয়মিত রিসাইকেল করা প্রস্রাব পান করলে প্রস্রাব এবং রক্ত আরও পরিষ্কার হয়, বিষাক্ত পদার্থ দূর হয় এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্য উন্নত হয়। তবে, এই দাবিগুলোর স্বপক্ষে কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই।
কিছু সামাজিক মাধ্যম ইনফ্লুয়েন্সার দাবি করেন, প্রস্রাবের নিরাময় ক্ষমতা আছে এবং এটি পান করলে বা ত্বকে লাগালে ব্রণ ও সংক্রমণের মতো ত্বকের সমস্যা ভালো হয়। আগেই উল্লেখ করা হয়েছে, প্রস্রাবে ইউরিয়া থাকে। আর প্রায়শই ময়েশ্চারাইজার হিসেবে ত্বকের পরিচর্যা পণ্যগুলোতে ইউরিয়া যোগ করা হয়। কিন্তু প্রস্রাবে ইউরিয়ার ঘনত্ব এত বেশি হওয়ার সম্ভাবনা নেই যে এটি কার্যকর হবে।
প্রস্রাবে ডিহাইড্রোপিয়ান্ড্রোস্টেরনও থাকে। এটি শরীরের তৈরি একটি স্টেরয়েড হরমোন যা বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কমে যায়। এটিকে অ্যান্টি-এজিং উপাদান হিসেবে বাজারজাত করা হয়েছে। তবে এর কার্যকারিতা প্রদর্শনের জন্য পর্যাপ্ত তথ্য নেই।
মূত্র থেরাপির কিছু সমর্থক বিশ্বাস করেন, প্রস্রাব জীবাণুমুক্ত। তবে গবেষণায় দেখা গেছে, প্রস্রাবে প্রাকৃতিকভাবেই কম মাত্রায় ব্যাকটেরিয়া থাকে এবং প্রস্রাব শরীর থেকে বের হওয়ার সময় ব্যাকটেরিয়া দিয়ে আরও দূষিত হতে পারে। তাই প্রস্রাব পান করলে অন্ত্রে ব্যাকটেরিয়া এবং বিষাক্ত পদার্থ প্রবেশ করতে পারে এবং পাকস্থলী সংক্রমণের মতো আরও অসুস্থতার কারণ হতে পারে।
প্রস্রাব শরীর থেকে বের হওয়ার পর আরও ঘনীভূত হয়। ফলে কেউ যদি প্রস্রাব পান করে তাহলে কিডনিকে অতিরিক্ত পদার্থ পরিস্রাবণ করার জন্য আরও বেশি কাজ করতে হতে পারে, যা সেগুলোর ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে। এই লবণগুলো প্রক্রিয়াজাত করার জন্য কিডনির পানির প্রয়োজন হয়।
এই অবস্থায় প্রস্রাব পান করার অর্থ হলো—এর থেকে যতটা পানি পাওয়া যায় তার চেয়ে বেশি পানি শরীর থেকে বের হয়ে যায়, যা ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা দ্রুত বাড়ায়। প্রস্রাব পান অনেকটা সমুদ্রের পানি পানের মতো। পেনিসিলিন অ্যান্টিবায়োটিক বা হৃদ্রোগের ওষুধের মতো কিছু ওষুধও প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। ফলে পুনরায় প্রস্রাব পান করার মাধ্যমে এই ওষুধগুলোর বিষাক্ত মাত্রা শরীরে জমা হতে পারে।
মূলধারার চিকিৎসা সমাজ মূত্র থেরাপিকে সমর্থন করে না। কারণ, এর কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। অল্প পরিমাণে প্রস্রাব পান করা সম্ভবত ক্ষতিকর নয়। তবে সুনির্দিষ্ট স্বাস্থ্য সুবিধার জন্য, বৈজ্ঞানিক প্রমাণ রয়েছে এমন অন্যান্য থেরাপি গ্রহণ করাই ভালো।
লেখক: যুক্তরাজ্যের কিংস্টোন ইউনিভার্সিটির ফার্মাসি প্র্যাকটিস বিভাগের জ্যেষ্ঠ প্রভাষক দীপা কামদার। লিখেছেন বিজ্ঞান বিষয়ক সংবাদমাধ্যম দ্য কনভারসেশনে।

অনেক ভারতীয় সুস্বাস্থ্যের আশায় নিজের মূত্র পান করে থাকেন। আবার অনেকে গো-মূত্রও পান করেন। ভারতের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী মোরারজি দেশাই দাবি করতেন, প্রতিদিন এক গ্লাস করে নিজের মূত্রপান অনেক রোগ সারিয়ে তোলে ও দীর্ঘজীবন লাভে সহায়তা করে।
তবে কেবল মোরারজি দেশাইয়ের মতো ভারতীয়রাই নন, পশ্চিমা দুনিয়াতেও নিজের মূত্রপানের বিষয়টি বেশ পরিচিত। জনপ্রিয় টিভি তারকা বেয়ার গ্রিলস বলেন, তিনি বেঁচে থাকার জন্য মূত্রপান করেন। পাশাপাশি, তিনি তাঁর রিয়্যালিটি শো’র প্রতিযোগীদেরও এটি শেখান। মেক্সিকোর বক্সার হুয়ান ম্যানুয়েল মার্কেজ ২০০৯ সালে ফ্লয়েড মেওয়েদারের সঙ্গে লড়াইয়ের প্রশিক্ষণের সময় এই থেরাপি অনুশীলন করেছিলেন। তবে মার্কেজ হেরে গিয়েছিলেন।
সম্প্রতি ভারতের জনপ্রিয় অভিনেতা পরেশ রাওয়ালও মূত্রপান করে আলোচনায় এসেছে। তিনি সম্প্রতি পায়ের চোট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে তাঁকে দেখতে গিয়েছিলেন বলিউডের জনপ্রিয় নায়ক অজয় দেবগনের বাবা বীরু দেবগন। তিনি পরেশ রাওয়ালকে মূত্রপানের পরামর্শ দেন।
এই বিষয়ে পরেশ বলেন, ‘আমার হাঁটুর চোটের কথা জানার পর তিনি (বীরু) আমাকে সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে নিজের মূত্র পান করার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, সব যোদ্ধারা এটা করে। এই অভ্যাস করতে পারলে জীবনে কখনোই আর চোটজনিত কোনো সমস্যা ভোগাতে পারবে না। এ ছাড়া তিনি আমাকে অ্যালকোহল, রেড মিট আর তামাক পরিহারের পরামর্শ দেন।’
পরেশ আরও বলেন, ‘আমি নিজের প্রস্রাব বিয়ারের মতো করে পান করেছি। টানা ১৫ দিন এই পথ্য চলেছে। এরপর চিকিৎসকেরা আমার এক্স–রে রিপোর্ট দেখে একেবারে অবাক হয়ে গিয়েছিলেন!’ তাঁর ভাষ্যমতে, এ চোট সারতে আড়াই মাসের মতো লাগবে বলে জানিয়েছিলেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু মূত্র পানের ফলে সেরে গেছে মাত্র ১৫ দিনে!
যাই হোক, এই তারকারা যে থেরাপি অনুশীলন করেন—তার নাম ইউরোফাজিয়া, যা মূত্র থেরাপি নামেও পরিচিত। এটি হলো প্রস্রাব পানের অভ্যাস। নিজের, অন্যের বা পশুর প্রস্রাব যাই হোক না কেন, মানুষ হাজার হাজার বছর ধরে ওষুধ হিসেবে এটি পান করে আসছে। মূত্র থেরাপির উপকারিতা সম্পর্কে বেশির ভাগ দাবিই ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা বা প্রাচীন লেখার ওপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত, যার কোনো জোরালো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই।
তবে প্রস্রাব পানে বেশ কিছু স্বাস্থ্য ঝুঁকি রয়েছে, যার প্রমাণ পাওয়া যায়। প্রাচীন ভারতীয় আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে হাঁপানি, অ্যালার্জি, বদহজম, ত্বক কুঁচকে যাওয়া এবং এমনকি ক্যানসারের চিকিৎসায়ও প্রস্রাব ব্যবহৃত হতো। রোমান কবি ক্যাটুলাস বিশ্বাস করতেন, প্রস্রাব দাঁত সাদা করতে সাহায্য করে—সম্ভবত এর অ্যামোনিয়া উপাদানের কারণে।
ডায়াবেটিস নির্ণয়ের একটি প্রাথমিক পরীক্ষা হিসেবে ডাক্তাররা প্রস্রাবের স্বাদ নিতেন এটি কতটা মিষ্টি তা জানার জন্য। এখন অবশ্য প্রস্রাবে গ্লুকোজ পরীক্ষার জন্য ইউরিন টেস্ট স্ট্রিপ ব্যবহার করা হয়। ১৯৪৫ সালে ব্রিটিশ নেচারোপ্যাথ জন ডব্লিউ আর্মস্ট্রং ‘দ্য ওয়াটার অব লাইফ: এ ট্রিটিজ অন ইউরিন থেরাপি’ নামে একটি বই প্রকাশ করেন। তিনি দাবি করেন, নিজের প্রস্রাব পান করলে এবং ত্বকে মালিশ করলে বড় ধরনের অসুস্থতাও নিরাময় হতে পারে।
ঐতিহাসিকভাবে, চিকিৎসার বিকল্পের অভাবে অসুস্থতা নিরাময়ে প্রস্রাব পান হয়তো যুক্তিসংগত ছিল। কিন্তু জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রসারের পরও উল্লিখিত প্রস্রাব পানকারী তারকাদের মতো অনেকের মাঝেই আজও এই অভ্যাস প্রচলিত। নাইজেরিয়ায় শিশুদের খিঁচুনির ঘরোয়া চিকিৎসা হিসেবে প্রস্রাব ব্যবহারের খবর পাওয়া গেছে। চায়না ইউরিন থেরাপি অ্যাসোসিয়েশন দাবি করেছে, প্রস্রাব পান করা হলে এবং তা দিয়ে ত্বক ধৌত করা হলে কোষ্ঠকাঠিন্য ও ত্বকের ঘা সারাতে পারে।
শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ বের করে দেওয়ার জন্য প্রস্রাব তৈরি হয়। এর বেশির ভাগটাই পানি (প্রায় ৯৫ শতাংশ) এবং কয়েকটি বর্জ্য পদার্থ—যার মধ্যে যকৃতে প্রোটিন ভাঙার পর তৈরি হওয়া ইউরিয়া (২ শতাংশ), মাংসপেশির শক্তি উৎপাদন প্রক্রিয়ার পর অবশিষ্ট থাকা ক্রিয়েটিনিন এবং লবণ। এখন প্রশ্ন হলো—প্রস্রাব যদি কেবল বর্জ্যই হয়, তাহলে এটি পান করা উপকারী হতে পারে কীভাবে?
কিডনি ছাঁকনির মতো কাজ করে—কেবল বিষাক্ত পদার্থই নয়, শরীরের অপ্রয়োজনীয় সবকিছুই এটি বের করে দেয়। উদাহরণস্বরূপ, শরীরে অতিরিক্ত ভিটামিন যা প্রয়োজন নেই তা প্রস্রাবে পাওয়া যায়। প্রস্রাব পান করার অর্থ হলো—এই ভিটামিন এবং খনিজগুলো নষ্ট না হয়ে পুনর্ব্যবহার হচ্ছে। এ ছাড়া প্রস্রাবে পাওয়া অন্যান্য হরমোন, প্রোটিন এবং অ্যান্টিবডির ক্ষেত্রেও এটি প্রযোজ্য। তবে এক গ্লাস প্রস্রাবে এই পদার্থগুলোর পরিমাণ উপকারী হওয়ার মতো যথেষ্ট নয়, বরং এর চেয়ে ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট বেশি কার্যকর হতে পারে।
মূত্র থেরাপির কিছু সমর্থক বিশ্বাস করেন, এটি অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া প্রতিরোধ করতে এবং অটোইমিউন (স্ব-রোগপ্রতিরোধ) অবস্থা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে। প্রস্রাবে থাকা অ্যান্টিবডিগুলো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে বলে মনে করা হয়।
প্রস্রাব পানের দাবি করা অন্যান্য আধুনিক ব্যবহারের মধ্যে রয়েছে শরীর পরিষ্কার এবং ডিটক্সিফিকেশন। কিছু লোক দাবি করেছেন, নিয়মিত রিসাইকেল করা প্রস্রাব পান করলে প্রস্রাব এবং রক্ত আরও পরিষ্কার হয়, বিষাক্ত পদার্থ দূর হয় এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্য উন্নত হয়। তবে, এই দাবিগুলোর স্বপক্ষে কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই।
কিছু সামাজিক মাধ্যম ইনফ্লুয়েন্সার দাবি করেন, প্রস্রাবের নিরাময় ক্ষমতা আছে এবং এটি পান করলে বা ত্বকে লাগালে ব্রণ ও সংক্রমণের মতো ত্বকের সমস্যা ভালো হয়। আগেই উল্লেখ করা হয়েছে, প্রস্রাবে ইউরিয়া থাকে। আর প্রায়শই ময়েশ্চারাইজার হিসেবে ত্বকের পরিচর্যা পণ্যগুলোতে ইউরিয়া যোগ করা হয়। কিন্তু প্রস্রাবে ইউরিয়ার ঘনত্ব এত বেশি হওয়ার সম্ভাবনা নেই যে এটি কার্যকর হবে।
প্রস্রাবে ডিহাইড্রোপিয়ান্ড্রোস্টেরনও থাকে। এটি শরীরের তৈরি একটি স্টেরয়েড হরমোন যা বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কমে যায়। এটিকে অ্যান্টি-এজিং উপাদান হিসেবে বাজারজাত করা হয়েছে। তবে এর কার্যকারিতা প্রদর্শনের জন্য পর্যাপ্ত তথ্য নেই।
মূত্র থেরাপির কিছু সমর্থক বিশ্বাস করেন, প্রস্রাব জীবাণুমুক্ত। তবে গবেষণায় দেখা গেছে, প্রস্রাবে প্রাকৃতিকভাবেই কম মাত্রায় ব্যাকটেরিয়া থাকে এবং প্রস্রাব শরীর থেকে বের হওয়ার সময় ব্যাকটেরিয়া দিয়ে আরও দূষিত হতে পারে। তাই প্রস্রাব পান করলে অন্ত্রে ব্যাকটেরিয়া এবং বিষাক্ত পদার্থ প্রবেশ করতে পারে এবং পাকস্থলী সংক্রমণের মতো আরও অসুস্থতার কারণ হতে পারে।
প্রস্রাব শরীর থেকে বের হওয়ার পর আরও ঘনীভূত হয়। ফলে কেউ যদি প্রস্রাব পান করে তাহলে কিডনিকে অতিরিক্ত পদার্থ পরিস্রাবণ করার জন্য আরও বেশি কাজ করতে হতে পারে, যা সেগুলোর ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে। এই লবণগুলো প্রক্রিয়াজাত করার জন্য কিডনির পানির প্রয়োজন হয়।
এই অবস্থায় প্রস্রাব পান করার অর্থ হলো—এর থেকে যতটা পানি পাওয়া যায় তার চেয়ে বেশি পানি শরীর থেকে বের হয়ে যায়, যা ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা দ্রুত বাড়ায়। প্রস্রাব পান অনেকটা সমুদ্রের পানি পানের মতো। পেনিসিলিন অ্যান্টিবায়োটিক বা হৃদ্রোগের ওষুধের মতো কিছু ওষুধও প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। ফলে পুনরায় প্রস্রাব পান করার মাধ্যমে এই ওষুধগুলোর বিষাক্ত মাত্রা শরীরে জমা হতে পারে।
মূলধারার চিকিৎসা সমাজ মূত্র থেরাপিকে সমর্থন করে না। কারণ, এর কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। অল্প পরিমাণে প্রস্রাব পান করা সম্ভবত ক্ষতিকর নয়। তবে সুনির্দিষ্ট স্বাস্থ্য সুবিধার জন্য, বৈজ্ঞানিক প্রমাণ রয়েছে এমন অন্যান্য থেরাপি গ্রহণ করাই ভালো।
লেখক: যুক্তরাজ্যের কিংস্টোন ইউনিভার্সিটির ফার্মাসি প্র্যাকটিস বিভাগের জ্যেষ্ঠ প্রভাষক দীপা কামদার। লিখেছেন বিজ্ঞান বিষয়ক সংবাদমাধ্যম দ্য কনভারসেশনে।
আজকের পত্রিকা ডেস্ক

অনেক ভারতীয় সুস্বাস্থ্যের আশায় নিজের মূত্র পান করে থাকেন। আবার অনেকে গো-মূত্রও পান করেন। ভারতের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী মোরারজি দেশাই দাবি করতেন, প্রতিদিন এক গ্লাস করে নিজের মূত্রপান অনেক রোগ সারিয়ে তোলে ও দীর্ঘজীবন লাভে সহায়তা করে।
তবে কেবল মোরারজি দেশাইয়ের মতো ভারতীয়রাই নন, পশ্চিমা দুনিয়াতেও নিজের মূত্রপানের বিষয়টি বেশ পরিচিত। জনপ্রিয় টিভি তারকা বেয়ার গ্রিলস বলেন, তিনি বেঁচে থাকার জন্য মূত্রপান করেন। পাশাপাশি, তিনি তাঁর রিয়্যালিটি শো’র প্রতিযোগীদেরও এটি শেখান। মেক্সিকোর বক্সার হুয়ান ম্যানুয়েল মার্কেজ ২০০৯ সালে ফ্লয়েড মেওয়েদারের সঙ্গে লড়াইয়ের প্রশিক্ষণের সময় এই থেরাপি অনুশীলন করেছিলেন। তবে মার্কেজ হেরে গিয়েছিলেন।
সম্প্রতি ভারতের জনপ্রিয় অভিনেতা পরেশ রাওয়ালও মূত্রপান করে আলোচনায় এসেছে। তিনি সম্প্রতি পায়ের চোট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে তাঁকে দেখতে গিয়েছিলেন বলিউডের জনপ্রিয় নায়ক অজয় দেবগনের বাবা বীরু দেবগন। তিনি পরেশ রাওয়ালকে মূত্রপানের পরামর্শ দেন।
এই বিষয়ে পরেশ বলেন, ‘আমার হাঁটুর চোটের কথা জানার পর তিনি (বীরু) আমাকে সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে নিজের মূত্র পান করার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, সব যোদ্ধারা এটা করে। এই অভ্যাস করতে পারলে জীবনে কখনোই আর চোটজনিত কোনো সমস্যা ভোগাতে পারবে না। এ ছাড়া তিনি আমাকে অ্যালকোহল, রেড মিট আর তামাক পরিহারের পরামর্শ দেন।’
পরেশ আরও বলেন, ‘আমি নিজের প্রস্রাব বিয়ারের মতো করে পান করেছি। টানা ১৫ দিন এই পথ্য চলেছে। এরপর চিকিৎসকেরা আমার এক্স–রে রিপোর্ট দেখে একেবারে অবাক হয়ে গিয়েছিলেন!’ তাঁর ভাষ্যমতে, এ চোট সারতে আড়াই মাসের মতো লাগবে বলে জানিয়েছিলেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু মূত্র পানের ফলে সেরে গেছে মাত্র ১৫ দিনে!
যাই হোক, এই তারকারা যে থেরাপি অনুশীলন করেন—তার নাম ইউরোফাজিয়া, যা মূত্র থেরাপি নামেও পরিচিত। এটি হলো প্রস্রাব পানের অভ্যাস। নিজের, অন্যের বা পশুর প্রস্রাব যাই হোক না কেন, মানুষ হাজার হাজার বছর ধরে ওষুধ হিসেবে এটি পান করে আসছে। মূত্র থেরাপির উপকারিতা সম্পর্কে বেশির ভাগ দাবিই ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা বা প্রাচীন লেখার ওপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত, যার কোনো জোরালো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই।
তবে প্রস্রাব পানে বেশ কিছু স্বাস্থ্য ঝুঁকি রয়েছে, যার প্রমাণ পাওয়া যায়। প্রাচীন ভারতীয় আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে হাঁপানি, অ্যালার্জি, বদহজম, ত্বক কুঁচকে যাওয়া এবং এমনকি ক্যানসারের চিকিৎসায়ও প্রস্রাব ব্যবহৃত হতো। রোমান কবি ক্যাটুলাস বিশ্বাস করতেন, প্রস্রাব দাঁত সাদা করতে সাহায্য করে—সম্ভবত এর অ্যামোনিয়া উপাদানের কারণে।
ডায়াবেটিস নির্ণয়ের একটি প্রাথমিক পরীক্ষা হিসেবে ডাক্তাররা প্রস্রাবের স্বাদ নিতেন এটি কতটা মিষ্টি তা জানার জন্য। এখন অবশ্য প্রস্রাবে গ্লুকোজ পরীক্ষার জন্য ইউরিন টেস্ট স্ট্রিপ ব্যবহার করা হয়। ১৯৪৫ সালে ব্রিটিশ নেচারোপ্যাথ জন ডব্লিউ আর্মস্ট্রং ‘দ্য ওয়াটার অব লাইফ: এ ট্রিটিজ অন ইউরিন থেরাপি’ নামে একটি বই প্রকাশ করেন। তিনি দাবি করেন, নিজের প্রস্রাব পান করলে এবং ত্বকে মালিশ করলে বড় ধরনের অসুস্থতাও নিরাময় হতে পারে।
ঐতিহাসিকভাবে, চিকিৎসার বিকল্পের অভাবে অসুস্থতা নিরাময়ে প্রস্রাব পান হয়তো যুক্তিসংগত ছিল। কিন্তু জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রসারের পরও উল্লিখিত প্রস্রাব পানকারী তারকাদের মতো অনেকের মাঝেই আজও এই অভ্যাস প্রচলিত। নাইজেরিয়ায় শিশুদের খিঁচুনির ঘরোয়া চিকিৎসা হিসেবে প্রস্রাব ব্যবহারের খবর পাওয়া গেছে। চায়না ইউরিন থেরাপি অ্যাসোসিয়েশন দাবি করেছে, প্রস্রাব পান করা হলে এবং তা দিয়ে ত্বক ধৌত করা হলে কোষ্ঠকাঠিন্য ও ত্বকের ঘা সারাতে পারে।
শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ বের করে দেওয়ার জন্য প্রস্রাব তৈরি হয়। এর বেশির ভাগটাই পানি (প্রায় ৯৫ শতাংশ) এবং কয়েকটি বর্জ্য পদার্থ—যার মধ্যে যকৃতে প্রোটিন ভাঙার পর তৈরি হওয়া ইউরিয়া (২ শতাংশ), মাংসপেশির শক্তি উৎপাদন প্রক্রিয়ার পর অবশিষ্ট থাকা ক্রিয়েটিনিন এবং লবণ। এখন প্রশ্ন হলো—প্রস্রাব যদি কেবল বর্জ্যই হয়, তাহলে এটি পান করা উপকারী হতে পারে কীভাবে?
কিডনি ছাঁকনির মতো কাজ করে—কেবল বিষাক্ত পদার্থই নয়, শরীরের অপ্রয়োজনীয় সবকিছুই এটি বের করে দেয়। উদাহরণস্বরূপ, শরীরে অতিরিক্ত ভিটামিন যা প্রয়োজন নেই তা প্রস্রাবে পাওয়া যায়। প্রস্রাব পান করার অর্থ হলো—এই ভিটামিন এবং খনিজগুলো নষ্ট না হয়ে পুনর্ব্যবহার হচ্ছে। এ ছাড়া প্রস্রাবে পাওয়া অন্যান্য হরমোন, প্রোটিন এবং অ্যান্টিবডির ক্ষেত্রেও এটি প্রযোজ্য। তবে এক গ্লাস প্রস্রাবে এই পদার্থগুলোর পরিমাণ উপকারী হওয়ার মতো যথেষ্ট নয়, বরং এর চেয়ে ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট বেশি কার্যকর হতে পারে।
মূত্র থেরাপির কিছু সমর্থক বিশ্বাস করেন, এটি অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া প্রতিরোধ করতে এবং অটোইমিউন (স্ব-রোগপ্রতিরোধ) অবস্থা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে। প্রস্রাবে থাকা অ্যান্টিবডিগুলো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে বলে মনে করা হয়।
প্রস্রাব পানের দাবি করা অন্যান্য আধুনিক ব্যবহারের মধ্যে রয়েছে শরীর পরিষ্কার এবং ডিটক্সিফিকেশন। কিছু লোক দাবি করেছেন, নিয়মিত রিসাইকেল করা প্রস্রাব পান করলে প্রস্রাব এবং রক্ত আরও পরিষ্কার হয়, বিষাক্ত পদার্থ দূর হয় এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্য উন্নত হয়। তবে, এই দাবিগুলোর স্বপক্ষে কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই।
কিছু সামাজিক মাধ্যম ইনফ্লুয়েন্সার দাবি করেন, প্রস্রাবের নিরাময় ক্ষমতা আছে এবং এটি পান করলে বা ত্বকে লাগালে ব্রণ ও সংক্রমণের মতো ত্বকের সমস্যা ভালো হয়। আগেই উল্লেখ করা হয়েছে, প্রস্রাবে ইউরিয়া থাকে। আর প্রায়শই ময়েশ্চারাইজার হিসেবে ত্বকের পরিচর্যা পণ্যগুলোতে ইউরিয়া যোগ করা হয়। কিন্তু প্রস্রাবে ইউরিয়ার ঘনত্ব এত বেশি হওয়ার সম্ভাবনা নেই যে এটি কার্যকর হবে।
প্রস্রাবে ডিহাইড্রোপিয়ান্ড্রোস্টেরনও থাকে। এটি শরীরের তৈরি একটি স্টেরয়েড হরমোন যা বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কমে যায়। এটিকে অ্যান্টি-এজিং উপাদান হিসেবে বাজারজাত করা হয়েছে। তবে এর কার্যকারিতা প্রদর্শনের জন্য পর্যাপ্ত তথ্য নেই।
মূত্র থেরাপির কিছু সমর্থক বিশ্বাস করেন, প্রস্রাব জীবাণুমুক্ত। তবে গবেষণায় দেখা গেছে, প্রস্রাবে প্রাকৃতিকভাবেই কম মাত্রায় ব্যাকটেরিয়া থাকে এবং প্রস্রাব শরীর থেকে বের হওয়ার সময় ব্যাকটেরিয়া দিয়ে আরও দূষিত হতে পারে। তাই প্রস্রাব পান করলে অন্ত্রে ব্যাকটেরিয়া এবং বিষাক্ত পদার্থ প্রবেশ করতে পারে এবং পাকস্থলী সংক্রমণের মতো আরও অসুস্থতার কারণ হতে পারে।
প্রস্রাব শরীর থেকে বের হওয়ার পর আরও ঘনীভূত হয়। ফলে কেউ যদি প্রস্রাব পান করে তাহলে কিডনিকে অতিরিক্ত পদার্থ পরিস্রাবণ করার জন্য আরও বেশি কাজ করতে হতে পারে, যা সেগুলোর ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে। এই লবণগুলো প্রক্রিয়াজাত করার জন্য কিডনির পানির প্রয়োজন হয়।
এই অবস্থায় প্রস্রাব পান করার অর্থ হলো—এর থেকে যতটা পানি পাওয়া যায় তার চেয়ে বেশি পানি শরীর থেকে বের হয়ে যায়, যা ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা দ্রুত বাড়ায়। প্রস্রাব পান অনেকটা সমুদ্রের পানি পানের মতো। পেনিসিলিন অ্যান্টিবায়োটিক বা হৃদ্রোগের ওষুধের মতো কিছু ওষুধও প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। ফলে পুনরায় প্রস্রাব পান করার মাধ্যমে এই ওষুধগুলোর বিষাক্ত মাত্রা শরীরে জমা হতে পারে।
মূলধারার চিকিৎসা সমাজ মূত্র থেরাপিকে সমর্থন করে না। কারণ, এর কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। অল্প পরিমাণে প্রস্রাব পান করা সম্ভবত ক্ষতিকর নয়। তবে সুনির্দিষ্ট স্বাস্থ্য সুবিধার জন্য, বৈজ্ঞানিক প্রমাণ রয়েছে এমন অন্যান্য থেরাপি গ্রহণ করাই ভালো।
লেখক: যুক্তরাজ্যের কিংস্টোন ইউনিভার্সিটির ফার্মাসি প্র্যাকটিস বিভাগের জ্যেষ্ঠ প্রভাষক দীপা কামদার। লিখেছেন বিজ্ঞান বিষয়ক সংবাদমাধ্যম দ্য কনভারসেশনে।

অনেক ভারতীয় সুস্বাস্থ্যের আশায় নিজের মূত্র পান করে থাকেন। আবার অনেকে গো-মূত্রও পান করেন। ভারতের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী মোরারজি দেশাই দাবি করতেন, প্রতিদিন এক গ্লাস করে নিজের মূত্রপান অনেক রোগ সারিয়ে তোলে ও দীর্ঘজীবন লাভে সহায়তা করে।
তবে কেবল মোরারজি দেশাইয়ের মতো ভারতীয়রাই নন, পশ্চিমা দুনিয়াতেও নিজের মূত্রপানের বিষয়টি বেশ পরিচিত। জনপ্রিয় টিভি তারকা বেয়ার গ্রিলস বলেন, তিনি বেঁচে থাকার জন্য মূত্রপান করেন। পাশাপাশি, তিনি তাঁর রিয়্যালিটি শো’র প্রতিযোগীদেরও এটি শেখান। মেক্সিকোর বক্সার হুয়ান ম্যানুয়েল মার্কেজ ২০০৯ সালে ফ্লয়েড মেওয়েদারের সঙ্গে লড়াইয়ের প্রশিক্ষণের সময় এই থেরাপি অনুশীলন করেছিলেন। তবে মার্কেজ হেরে গিয়েছিলেন।
সম্প্রতি ভারতের জনপ্রিয় অভিনেতা পরেশ রাওয়ালও মূত্রপান করে আলোচনায় এসেছে। তিনি সম্প্রতি পায়ের চোট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে তাঁকে দেখতে গিয়েছিলেন বলিউডের জনপ্রিয় নায়ক অজয় দেবগনের বাবা বীরু দেবগন। তিনি পরেশ রাওয়ালকে মূত্রপানের পরামর্শ দেন।
এই বিষয়ে পরেশ বলেন, ‘আমার হাঁটুর চোটের কথা জানার পর তিনি (বীরু) আমাকে সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে নিজের মূত্র পান করার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, সব যোদ্ধারা এটা করে। এই অভ্যাস করতে পারলে জীবনে কখনোই আর চোটজনিত কোনো সমস্যা ভোগাতে পারবে না। এ ছাড়া তিনি আমাকে অ্যালকোহল, রেড মিট আর তামাক পরিহারের পরামর্শ দেন।’
পরেশ আরও বলেন, ‘আমি নিজের প্রস্রাব বিয়ারের মতো করে পান করেছি। টানা ১৫ দিন এই পথ্য চলেছে। এরপর চিকিৎসকেরা আমার এক্স–রে রিপোর্ট দেখে একেবারে অবাক হয়ে গিয়েছিলেন!’ তাঁর ভাষ্যমতে, এ চোট সারতে আড়াই মাসের মতো লাগবে বলে জানিয়েছিলেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু মূত্র পানের ফলে সেরে গেছে মাত্র ১৫ দিনে!
যাই হোক, এই তারকারা যে থেরাপি অনুশীলন করেন—তার নাম ইউরোফাজিয়া, যা মূত্র থেরাপি নামেও পরিচিত। এটি হলো প্রস্রাব পানের অভ্যাস। নিজের, অন্যের বা পশুর প্রস্রাব যাই হোক না কেন, মানুষ হাজার হাজার বছর ধরে ওষুধ হিসেবে এটি পান করে আসছে। মূত্র থেরাপির উপকারিতা সম্পর্কে বেশির ভাগ দাবিই ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা বা প্রাচীন লেখার ওপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত, যার কোনো জোরালো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই।
তবে প্রস্রাব পানে বেশ কিছু স্বাস্থ্য ঝুঁকি রয়েছে, যার প্রমাণ পাওয়া যায়। প্রাচীন ভারতীয় আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে হাঁপানি, অ্যালার্জি, বদহজম, ত্বক কুঁচকে যাওয়া এবং এমনকি ক্যানসারের চিকিৎসায়ও প্রস্রাব ব্যবহৃত হতো। রোমান কবি ক্যাটুলাস বিশ্বাস করতেন, প্রস্রাব দাঁত সাদা করতে সাহায্য করে—সম্ভবত এর অ্যামোনিয়া উপাদানের কারণে।
ডায়াবেটিস নির্ণয়ের একটি প্রাথমিক পরীক্ষা হিসেবে ডাক্তাররা প্রস্রাবের স্বাদ নিতেন এটি কতটা মিষ্টি তা জানার জন্য। এখন অবশ্য প্রস্রাবে গ্লুকোজ পরীক্ষার জন্য ইউরিন টেস্ট স্ট্রিপ ব্যবহার করা হয়। ১৯৪৫ সালে ব্রিটিশ নেচারোপ্যাথ জন ডব্লিউ আর্মস্ট্রং ‘দ্য ওয়াটার অব লাইফ: এ ট্রিটিজ অন ইউরিন থেরাপি’ নামে একটি বই প্রকাশ করেন। তিনি দাবি করেন, নিজের প্রস্রাব পান করলে এবং ত্বকে মালিশ করলে বড় ধরনের অসুস্থতাও নিরাময় হতে পারে।
ঐতিহাসিকভাবে, চিকিৎসার বিকল্পের অভাবে অসুস্থতা নিরাময়ে প্রস্রাব পান হয়তো যুক্তিসংগত ছিল। কিন্তু জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রসারের পরও উল্লিখিত প্রস্রাব পানকারী তারকাদের মতো অনেকের মাঝেই আজও এই অভ্যাস প্রচলিত। নাইজেরিয়ায় শিশুদের খিঁচুনির ঘরোয়া চিকিৎসা হিসেবে প্রস্রাব ব্যবহারের খবর পাওয়া গেছে। চায়না ইউরিন থেরাপি অ্যাসোসিয়েশন দাবি করেছে, প্রস্রাব পান করা হলে এবং তা দিয়ে ত্বক ধৌত করা হলে কোষ্ঠকাঠিন্য ও ত্বকের ঘা সারাতে পারে।
শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ বের করে দেওয়ার জন্য প্রস্রাব তৈরি হয়। এর বেশির ভাগটাই পানি (প্রায় ৯৫ শতাংশ) এবং কয়েকটি বর্জ্য পদার্থ—যার মধ্যে যকৃতে প্রোটিন ভাঙার পর তৈরি হওয়া ইউরিয়া (২ শতাংশ), মাংসপেশির শক্তি উৎপাদন প্রক্রিয়ার পর অবশিষ্ট থাকা ক্রিয়েটিনিন এবং লবণ। এখন প্রশ্ন হলো—প্রস্রাব যদি কেবল বর্জ্যই হয়, তাহলে এটি পান করা উপকারী হতে পারে কীভাবে?
কিডনি ছাঁকনির মতো কাজ করে—কেবল বিষাক্ত পদার্থই নয়, শরীরের অপ্রয়োজনীয় সবকিছুই এটি বের করে দেয়। উদাহরণস্বরূপ, শরীরে অতিরিক্ত ভিটামিন যা প্রয়োজন নেই তা প্রস্রাবে পাওয়া যায়। প্রস্রাব পান করার অর্থ হলো—এই ভিটামিন এবং খনিজগুলো নষ্ট না হয়ে পুনর্ব্যবহার হচ্ছে। এ ছাড়া প্রস্রাবে পাওয়া অন্যান্য হরমোন, প্রোটিন এবং অ্যান্টিবডির ক্ষেত্রেও এটি প্রযোজ্য। তবে এক গ্লাস প্রস্রাবে এই পদার্থগুলোর পরিমাণ উপকারী হওয়ার মতো যথেষ্ট নয়, বরং এর চেয়ে ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট বেশি কার্যকর হতে পারে।
মূত্র থেরাপির কিছু সমর্থক বিশ্বাস করেন, এটি অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া প্রতিরোধ করতে এবং অটোইমিউন (স্ব-রোগপ্রতিরোধ) অবস্থা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে। প্রস্রাবে থাকা অ্যান্টিবডিগুলো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে বলে মনে করা হয়।
প্রস্রাব পানের দাবি করা অন্যান্য আধুনিক ব্যবহারের মধ্যে রয়েছে শরীর পরিষ্কার এবং ডিটক্সিফিকেশন। কিছু লোক দাবি করেছেন, নিয়মিত রিসাইকেল করা প্রস্রাব পান করলে প্রস্রাব এবং রক্ত আরও পরিষ্কার হয়, বিষাক্ত পদার্থ দূর হয় এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্য উন্নত হয়। তবে, এই দাবিগুলোর স্বপক্ষে কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই।
কিছু সামাজিক মাধ্যম ইনফ্লুয়েন্সার দাবি করেন, প্রস্রাবের নিরাময় ক্ষমতা আছে এবং এটি পান করলে বা ত্বকে লাগালে ব্রণ ও সংক্রমণের মতো ত্বকের সমস্যা ভালো হয়। আগেই উল্লেখ করা হয়েছে, প্রস্রাবে ইউরিয়া থাকে। আর প্রায়শই ময়েশ্চারাইজার হিসেবে ত্বকের পরিচর্যা পণ্যগুলোতে ইউরিয়া যোগ করা হয়। কিন্তু প্রস্রাবে ইউরিয়ার ঘনত্ব এত বেশি হওয়ার সম্ভাবনা নেই যে এটি কার্যকর হবে।
প্রস্রাবে ডিহাইড্রোপিয়ান্ড্রোস্টেরনও থাকে। এটি শরীরের তৈরি একটি স্টেরয়েড হরমোন যা বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কমে যায়। এটিকে অ্যান্টি-এজিং উপাদান হিসেবে বাজারজাত করা হয়েছে। তবে এর কার্যকারিতা প্রদর্শনের জন্য পর্যাপ্ত তথ্য নেই।
মূত্র থেরাপির কিছু সমর্থক বিশ্বাস করেন, প্রস্রাব জীবাণুমুক্ত। তবে গবেষণায় দেখা গেছে, প্রস্রাবে প্রাকৃতিকভাবেই কম মাত্রায় ব্যাকটেরিয়া থাকে এবং প্রস্রাব শরীর থেকে বের হওয়ার সময় ব্যাকটেরিয়া দিয়ে আরও দূষিত হতে পারে। তাই প্রস্রাব পান করলে অন্ত্রে ব্যাকটেরিয়া এবং বিষাক্ত পদার্থ প্রবেশ করতে পারে এবং পাকস্থলী সংক্রমণের মতো আরও অসুস্থতার কারণ হতে পারে।
প্রস্রাব শরীর থেকে বের হওয়ার পর আরও ঘনীভূত হয়। ফলে কেউ যদি প্রস্রাব পান করে তাহলে কিডনিকে অতিরিক্ত পদার্থ পরিস্রাবণ করার জন্য আরও বেশি কাজ করতে হতে পারে, যা সেগুলোর ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে। এই লবণগুলো প্রক্রিয়াজাত করার জন্য কিডনির পানির প্রয়োজন হয়।
এই অবস্থায় প্রস্রাব পান করার অর্থ হলো—এর থেকে যতটা পানি পাওয়া যায় তার চেয়ে বেশি পানি শরীর থেকে বের হয়ে যায়, যা ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা দ্রুত বাড়ায়। প্রস্রাব পান অনেকটা সমুদ্রের পানি পানের মতো। পেনিসিলিন অ্যান্টিবায়োটিক বা হৃদ্রোগের ওষুধের মতো কিছু ওষুধও প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। ফলে পুনরায় প্রস্রাব পান করার মাধ্যমে এই ওষুধগুলোর বিষাক্ত মাত্রা শরীরে জমা হতে পারে।
মূলধারার চিকিৎসা সমাজ মূত্র থেরাপিকে সমর্থন করে না। কারণ, এর কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। অল্প পরিমাণে প্রস্রাব পান করা সম্ভবত ক্ষতিকর নয়। তবে সুনির্দিষ্ট স্বাস্থ্য সুবিধার জন্য, বৈজ্ঞানিক প্রমাণ রয়েছে এমন অন্যান্য থেরাপি গ্রহণ করাই ভালো।
লেখক: যুক্তরাজ্যের কিংস্টোন ইউনিভার্সিটির ফার্মাসি প্র্যাকটিস বিভাগের জ্যেষ্ঠ প্রভাষক দীপা কামদার। লিখেছেন বিজ্ঞান বিষয়ক সংবাদমাধ্যম দ্য কনভারসেশনে।

ছয় দফা দাবিতে টানা ষষ্ঠ দিনের মতো আন্দোলন করছেন স্বাস্থ্য সহকারীরা। মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সামনে তাঁদের অবস্থান কর্মসূচি চলছে। শনিবার থেকে সারা দেশের স্বাস্থ্য সহকারীরা ঢাকায় এসে লাগাতার কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন।
১ দিন আগে
বেতনকাঠামোর দশম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে হাসপাতালসহ দেশের সব স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে চার ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেছেন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা। গতকাল বুধবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত তাঁদের এই কর্মসূচির কারণে চরম দুর্ভোগে পড়ে রোগী এবং তাদের স্বজনেরা। গত ৩০ নভেম্বর থেকে...
২ দিন আগে
দেশের সরকারি ও বেসরকারি সব ধরনের হাসপাতালে প্রতিবছরই বাড়ছে সেবাগ্রহণকারীর সংখ্যা। কিন্তু অধিকাংশ চিকিৎসাকেন্দ্রেই শৌচাগারগুলো ব্যবহারের অযোগ্য অথবা ন্যূনতম মানের নয়। ফলে চিকিৎসা নিতে এসে রোগীরা নানা ভোগান্তিতে পড়ছেন। আর প্রতিবন্ধী রোগীদের ক্ষেত্রে এ ভোগান্তি আরও তীব্র।
৩ দিন আগে
দেশে গত এক দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে নতুন আক্রান্ত ৫৬৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

নিয়োগবিধি সংশোধন, বেতনবৈষম্য দূরীকরণ এবং টেকনিক্যাল পদমর্যাদা প্রদানের দাবিতে টানা ষষ্ঠ দিনের মতো আন্দোলন করছেন স্বাস্থ্য সহকারীরা। আজ বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) রাজধানীর মহাখালীর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সামনে দিনভর অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা। আন্দোলনকারীরা ঘোষণা দিয়েছেন, আগামী শনিবার (৬ ডিসেম্বর) থেকে সারা দেশের স্বাস্থ্য সহকারীরা ঢাকায় সমবেত হয়ে লাগাতার কর্মবিরতি পালন করবেন।
গত শনিবার (২৯ নভেম্বর) থেকে শুরু হওয়া কর্মবিরতি প্রথম দুই দিন চলেছিল শহীদ মিনারে। পরে তাঁরা অবস্থান নেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সামনে। বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশনের ব্যানারে এ আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন দেশের ৬৪ জেলার স্বাস্থ্য সহকারী, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও স্বাস্থ্য পরিদর্শকেরা।
এই কর্মসূচির কারণে কয়েক দিন ধরে সারা দেশে ১ লাখ ২০ হাজার অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ফলে টিকা নিতে এসে অনেক মা ও শিশু ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।
স্বাস্থ্য সহকারীদের এ কর্মসূচির কারণে সারা দেশে ১ লাখ ২০ হাজার অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রের সেবা কয়েক দিন ধরে বন্ধ রয়েছে। এতে টিকা নিতে এসে মা ও শিশুরা ফিরে যাচ্ছেন।
স্বাস্থ্য সহকারীদের দাবি, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে বঞ্চিত করে কর্মবিরতিতে যেতে তাঁরা চাননি। কিন্তু দীর্ঘদিনের বঞ্চনা ও কর্তৃপক্ষের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের কারণে তাঁরা আন্দোলনে যেতে বাধ্য হয়েছেন। দীর্ঘ ২৭ বছর ধরে বারবার প্রতিশ্রুতির আশ্বাস মিললেও বাস্তবে কোনো অগ্রগতি হয়নি।
দাবি আদায়ে অনড় অবস্থান জানিয়ে নেতারা বলেন, ‘আমাদের ১৬তম গ্রেড থেকে ১৪তম গ্রেডে উন্নীত করার সরকারি আদেশ জারি না হওয়া পর্যন্ত আমরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করব না। এখন শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি চলছে, প্রয়োজনে আরও কঠোর হতে বাধ্য হব।’

প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে স্বাস্থ্য সহকারীদের নানা বঞ্চনার চিত্রও তুলে ধরে আন্দোলনকারীরা জানান, টিকাদানের আগে মাসজুড়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে রেজিস্ট্রেশন করা, জন্ম-মৃত্যুনিবন্ধন, নবজাতক ও গর্ভবতী মায়ের রেজিস্ট্রেশন, যক্ষ্মা রোগী শনাক্তকরণ, ডটস (সরাসরি পর্যবেক্ষণ থেরাপি) পদ্ধতিতে ওষুধ খাওয়ানো, উঠান বৈঠক, মা সমাবেশসহ বিভিন্ন সেবা তাঁরা দিয়ে থাকেন। সপ্তাহে তিন দিন কমিউনিটি ক্লিনিকে নিয়মিত সেবা দেওয়ার পরও তাঁদের মাসিক ভ্রমণভাতা মাত্র ৬০০ টাকা। আর বেতন মোট ৯ হাজার ৭০০ টাকা।
আন্দোলনকারীদের দাবির মধ্যে রয়েছে, নিয়োগবিধি সংশোধন করে স্নাতক বা সমমানের যোগ্যতা যুক্ত করে ১৪তম গ্রেড প্রদান, ইন-সার্ভিস ডিপ্লোমাধারীদের ১১তম গ্রেডসহ টেকনিক্যাল পদমর্যাদা দেওয়া, ধারাবাহিকভাবে উচ্চতর গ্রেডে পদোন্নতি নিশ্চিত করা, প্রশিক্ষণ ছাড়াই স্নাতক স্কেলে অন্তর্ভুক্ত করা, বেতনস্কেল পুনর্নির্ধারণের সময় টাইম স্কেল বা উচ্চতর স্কেল সংযুক্ত করা এবং ইন-সার্ভিস ডিপ্লোমা (এসআইটি) সম্পন্নকারীদের সমমান স্বীকৃতি প্রদান।
বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় সমন্বয় পরিষদের সদস্যসচিব ফজলুল হক চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। তাঁরা জানিয়েছেন, আমাদের ফাইল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেখানে এখনো বিশ্লেষণ শুরু হয়নি।’
তিনি আরও জানান, ৬৪ জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের সঙ্গে আলোচনা করে আগামী শনিবার থেকে লাগাতার কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. এ বি এম আবু হানিফ আজ সন্ধ্যায় মোবাইল ফোনে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তাদের দাবির বিষয়ে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। আমরা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত করে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। এখানে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ছাড়াও অর্থ মন্ত্রণালয় এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কাজ রয়েছে। সেখানে প্রক্রিয়াগতভাবে কিছুটা সময় লাগছে। গত তিন দিন তারা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সামনে অবস্থান করছে। আমরা কাজ করছি। আমরা আশা করছি, সবকিছু ভালোভাবে সমাধান হবে।’

নিয়োগবিধি সংশোধন, বেতনবৈষম্য দূরীকরণ এবং টেকনিক্যাল পদমর্যাদা প্রদানের দাবিতে টানা ষষ্ঠ দিনের মতো আন্দোলন করছেন স্বাস্থ্য সহকারীরা। আজ বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) রাজধানীর মহাখালীর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সামনে দিনভর অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা। আন্দোলনকারীরা ঘোষণা দিয়েছেন, আগামী শনিবার (৬ ডিসেম্বর) থেকে সারা দেশের স্বাস্থ্য সহকারীরা ঢাকায় সমবেত হয়ে লাগাতার কর্মবিরতি পালন করবেন।
গত শনিবার (২৯ নভেম্বর) থেকে শুরু হওয়া কর্মবিরতি প্রথম দুই দিন চলেছিল শহীদ মিনারে। পরে তাঁরা অবস্থান নেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সামনে। বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশনের ব্যানারে এ আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন দেশের ৬৪ জেলার স্বাস্থ্য সহকারী, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও স্বাস্থ্য পরিদর্শকেরা।
এই কর্মসূচির কারণে কয়েক দিন ধরে সারা দেশে ১ লাখ ২০ হাজার অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ফলে টিকা নিতে এসে অনেক মা ও শিশু ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।
স্বাস্থ্য সহকারীদের এ কর্মসূচির কারণে সারা দেশে ১ লাখ ২০ হাজার অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রের সেবা কয়েক দিন ধরে বন্ধ রয়েছে। এতে টিকা নিতে এসে মা ও শিশুরা ফিরে যাচ্ছেন।
স্বাস্থ্য সহকারীদের দাবি, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে বঞ্চিত করে কর্মবিরতিতে যেতে তাঁরা চাননি। কিন্তু দীর্ঘদিনের বঞ্চনা ও কর্তৃপক্ষের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের কারণে তাঁরা আন্দোলনে যেতে বাধ্য হয়েছেন। দীর্ঘ ২৭ বছর ধরে বারবার প্রতিশ্রুতির আশ্বাস মিললেও বাস্তবে কোনো অগ্রগতি হয়নি।
দাবি আদায়ে অনড় অবস্থান জানিয়ে নেতারা বলেন, ‘আমাদের ১৬তম গ্রেড থেকে ১৪তম গ্রেডে উন্নীত করার সরকারি আদেশ জারি না হওয়া পর্যন্ত আমরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করব না। এখন শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি চলছে, প্রয়োজনে আরও কঠোর হতে বাধ্য হব।’

প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে স্বাস্থ্য সহকারীদের নানা বঞ্চনার চিত্রও তুলে ধরে আন্দোলনকারীরা জানান, টিকাদানের আগে মাসজুড়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে রেজিস্ট্রেশন করা, জন্ম-মৃত্যুনিবন্ধন, নবজাতক ও গর্ভবতী মায়ের রেজিস্ট্রেশন, যক্ষ্মা রোগী শনাক্তকরণ, ডটস (সরাসরি পর্যবেক্ষণ থেরাপি) পদ্ধতিতে ওষুধ খাওয়ানো, উঠান বৈঠক, মা সমাবেশসহ বিভিন্ন সেবা তাঁরা দিয়ে থাকেন। সপ্তাহে তিন দিন কমিউনিটি ক্লিনিকে নিয়মিত সেবা দেওয়ার পরও তাঁদের মাসিক ভ্রমণভাতা মাত্র ৬০০ টাকা। আর বেতন মোট ৯ হাজার ৭০০ টাকা।
আন্দোলনকারীদের দাবির মধ্যে রয়েছে, নিয়োগবিধি সংশোধন করে স্নাতক বা সমমানের যোগ্যতা যুক্ত করে ১৪তম গ্রেড প্রদান, ইন-সার্ভিস ডিপ্লোমাধারীদের ১১তম গ্রেডসহ টেকনিক্যাল পদমর্যাদা দেওয়া, ধারাবাহিকভাবে উচ্চতর গ্রেডে পদোন্নতি নিশ্চিত করা, প্রশিক্ষণ ছাড়াই স্নাতক স্কেলে অন্তর্ভুক্ত করা, বেতনস্কেল পুনর্নির্ধারণের সময় টাইম স্কেল বা উচ্চতর স্কেল সংযুক্ত করা এবং ইন-সার্ভিস ডিপ্লোমা (এসআইটি) সম্পন্নকারীদের সমমান স্বীকৃতি প্রদান।
বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় সমন্বয় পরিষদের সদস্যসচিব ফজলুল হক চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। তাঁরা জানিয়েছেন, আমাদের ফাইল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেখানে এখনো বিশ্লেষণ শুরু হয়নি।’
তিনি আরও জানান, ৬৪ জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের সঙ্গে আলোচনা করে আগামী শনিবার থেকে লাগাতার কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. এ বি এম আবু হানিফ আজ সন্ধ্যায় মোবাইল ফোনে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তাদের দাবির বিষয়ে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। আমরা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত করে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। এখানে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ছাড়াও অর্থ মন্ত্রণালয় এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কাজ রয়েছে। সেখানে প্রক্রিয়াগতভাবে কিছুটা সময় লাগছে। গত তিন দিন তারা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সামনে অবস্থান করছে। আমরা কাজ করছি। আমরা আশা করছি, সবকিছু ভালোভাবে সমাধান হবে।’

এই অবস্থায় প্রস্রাব পান করার অর্থ হলো—এর থেকে যতটা পানি পাওয়া যায় তার চেয়ে বেশি পানি শরীর থেকে বের হয়ে যায়, যা ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা দ্রুত বাড়ায়। প্রস্রাব পান অনেকটা সমুদ্রের পানি পানের মতো। পেনিসিলিন অ্যান্টিবায়োটিক বা হৃদ্রোগের ওষুধের মতো কিছু ওষুধও প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়।
২৮ এপ্রিল ২০২৫
বেতনকাঠামোর দশম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে হাসপাতালসহ দেশের সব স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে চার ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেছেন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা। গতকাল বুধবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত তাঁদের এই কর্মসূচির কারণে চরম দুর্ভোগে পড়ে রোগী এবং তাদের স্বজনেরা। গত ৩০ নভেম্বর থেকে...
২ দিন আগে
দেশের সরকারি ও বেসরকারি সব ধরনের হাসপাতালে প্রতিবছরই বাড়ছে সেবাগ্রহণকারীর সংখ্যা। কিন্তু অধিকাংশ চিকিৎসাকেন্দ্রেই শৌচাগারগুলো ব্যবহারের অযোগ্য অথবা ন্যূনতম মানের নয়। ফলে চিকিৎসা নিতে এসে রোগীরা নানা ভোগান্তিতে পড়ছেন। আর প্রতিবন্ধী রোগীদের ক্ষেত্রে এ ভোগান্তি আরও তীব্র।
৩ দিন আগে
দেশে গত এক দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে নতুন আক্রান্ত ৫৬৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
৩ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

বেতনকাঠামোর দশম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে হাসপাতালসহ দেশের সব স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে চার ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেছেন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা। গতকাল বুধবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত তাঁদের এই কর্মসূচির কারণে চরম দুর্ভোগে পড়ে রোগী এবং তাদের স্বজনেরা। গত ৩০ নভেম্বর থেকে টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা কর্মবিরতি পালন করছেন।
এদিকে দাবি আদায়ে বৃহস্পতিবার কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচিতে যাওয়ার কথা রয়েছে আন্দোলনকারীদের। তবে কঠোর এই কর্মসূচিতে যাওয়ার আগে গতকাল রাতে বৈঠকে বসেছেন আন্দোলনকারীরা। বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, শাটডাউন কর্মসূচি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের কর্মবিরতির কারণে রোগীরা চরম ভোগান্তিতে পড়লেও দাবি আদায়ে দিনভর কঠোর অবস্থানে ছিলেন তাঁরা। কর্মবিরতির সময় হাসপাতালের জরুরি সেবা চালু থাকলেও অনেককে সেবা না পেয়ে চলে যেতে দেখা গেছে।
আন্দোলনরতরা জানান, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের দশম গ্রেড বাস্তবায়নের ফাইল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে আটকে আছে। আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় দীর্ঘদিনেও বিষয়টির সমাধান হয়নি। এর আগে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার, ডিপ্লোমা নার্স ও ডিপ্লোমা কৃষিবিদদের ১১তম গ্রেড থেকে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করা হয়েছে। ফলে দাবি আদায়ে এবার কঠোর কর্মসূচি পালন করছেন তাঁরা।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রতিদিন ১০ হাজারের বেশি মানুষ চিকিৎসাসেবা নিতে যায়। এসব সেবাপ্রার্থীর বড় অংশ ঢাকার বাইরে থেকে আসে। টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের গতকালের কর্মবিরতির কারণে অনেকে চিকিৎসা না পেয়ে চলে যায়।
বিভিন্ন স্থানে দিনভর ভোগান্তি
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে সেবা বন্ধ রেখে চার ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেছেন টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা। এতে ভোগান্তিতে পড়ে হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনেরা।
কর্মবিরতি চলাকালে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের ফার্মেসিতে বিনা মূল্যে সরকারি ওষুধ বিতরণ, রক্ত পরীক্ষা, এক্স-রে, আলট্রাসনোগ্রামসহ রোগনির্ণয়ের বিভিন্ন সেবাকেন্দ্র বন্ধ রয়েছে। এ সময় হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড ও সেবাকেন্দ্রগুলোয় কর্মবিরতির ব্যানার ঝুলছিল। তবে হাসপাতালের অন্যান্য সেবা কার্যক্রম স্বাভাবিক ছিল। চমেক হাসপাতালে রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিং বিভাগের একজন কর্মচারী আজকের পত্রিকাকে বলেন, কর্মবিরতির ফলে এক্স-রে করা সাময়িক বন্ধ ছিল।
একই দাবিতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের সামনে অবস্থান নিয়ে সমাবেশ করেন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা। বুধবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এ কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা। এ সময় আন্দোলনকারীরা বলেন, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার ও নার্সদের মতো তাঁদেরও চাকরিগত মর্যাদা দশম গ্রেডে উন্নীত না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
এ ছাড়া সিরাজগঞ্জ সদরে শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মূল ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে কর্মসূচি পালিত হয়। কর্মবিরতির কারণে হাসপাতালে সব ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং ওষুধ বিতরণ বন্ধ ছিল।
আবদুল্লাহ নামের এক রোগী বলেন, ‘সিটি স্ক্যান করানোর জন্য এসেছিলাম। এসে শুনি, কর্মবিরতি দিয়েছে। এ জন্য ফিরে যাচ্ছি।’
উল্লাপাড়ার আনিসুর নামের এক বৃদ্ধ বলেন, ‘কোমরে ব্যথা। তাই ডাক্তারের কাছে এসেছি। এসে শুনি, দুপুরের আগে চিকিৎসা হবে না।’
একই দাবিতে রাজবাড়ীতে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা চার ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করেছেন। বুধবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এই কর্মবিরতি পালন করেন তাঁরা। কর্মবিরতি কর্মসূচিতে দাবি আদায় না হলে ৪ ডিসেম্বর থেকে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালনের মাধ্যমে হাসপাতাল শাটডাউন ঘোষণার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা।

বেতনকাঠামোর দশম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে হাসপাতালসহ দেশের সব স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে চার ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেছেন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা। গতকাল বুধবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত তাঁদের এই কর্মসূচির কারণে চরম দুর্ভোগে পড়ে রোগী এবং তাদের স্বজনেরা। গত ৩০ নভেম্বর থেকে টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা কর্মবিরতি পালন করছেন।
এদিকে দাবি আদায়ে বৃহস্পতিবার কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচিতে যাওয়ার কথা রয়েছে আন্দোলনকারীদের। তবে কঠোর এই কর্মসূচিতে যাওয়ার আগে গতকাল রাতে বৈঠকে বসেছেন আন্দোলনকারীরা। বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, শাটডাউন কর্মসূচি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের কর্মবিরতির কারণে রোগীরা চরম ভোগান্তিতে পড়লেও দাবি আদায়ে দিনভর কঠোর অবস্থানে ছিলেন তাঁরা। কর্মবিরতির সময় হাসপাতালের জরুরি সেবা চালু থাকলেও অনেককে সেবা না পেয়ে চলে যেতে দেখা গেছে।
আন্দোলনরতরা জানান, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের দশম গ্রেড বাস্তবায়নের ফাইল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে আটকে আছে। আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় দীর্ঘদিনেও বিষয়টির সমাধান হয়নি। এর আগে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার, ডিপ্লোমা নার্স ও ডিপ্লোমা কৃষিবিদদের ১১তম গ্রেড থেকে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করা হয়েছে। ফলে দাবি আদায়ে এবার কঠোর কর্মসূচি পালন করছেন তাঁরা।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রতিদিন ১০ হাজারের বেশি মানুষ চিকিৎসাসেবা নিতে যায়। এসব সেবাপ্রার্থীর বড় অংশ ঢাকার বাইরে থেকে আসে। টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের গতকালের কর্মবিরতির কারণে অনেকে চিকিৎসা না পেয়ে চলে যায়।
বিভিন্ন স্থানে দিনভর ভোগান্তি
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে সেবা বন্ধ রেখে চার ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেছেন টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা। এতে ভোগান্তিতে পড়ে হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনেরা।
কর্মবিরতি চলাকালে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের ফার্মেসিতে বিনা মূল্যে সরকারি ওষুধ বিতরণ, রক্ত পরীক্ষা, এক্স-রে, আলট্রাসনোগ্রামসহ রোগনির্ণয়ের বিভিন্ন সেবাকেন্দ্র বন্ধ রয়েছে। এ সময় হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড ও সেবাকেন্দ্রগুলোয় কর্মবিরতির ব্যানার ঝুলছিল। তবে হাসপাতালের অন্যান্য সেবা কার্যক্রম স্বাভাবিক ছিল। চমেক হাসপাতালে রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিং বিভাগের একজন কর্মচারী আজকের পত্রিকাকে বলেন, কর্মবিরতির ফলে এক্স-রে করা সাময়িক বন্ধ ছিল।
একই দাবিতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের সামনে অবস্থান নিয়ে সমাবেশ করেন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা। বুধবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এ কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা। এ সময় আন্দোলনকারীরা বলেন, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার ও নার্সদের মতো তাঁদেরও চাকরিগত মর্যাদা দশম গ্রেডে উন্নীত না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
এ ছাড়া সিরাজগঞ্জ সদরে শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মূল ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে কর্মসূচি পালিত হয়। কর্মবিরতির কারণে হাসপাতালে সব ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং ওষুধ বিতরণ বন্ধ ছিল।
আবদুল্লাহ নামের এক রোগী বলেন, ‘সিটি স্ক্যান করানোর জন্য এসেছিলাম। এসে শুনি, কর্মবিরতি দিয়েছে। এ জন্য ফিরে যাচ্ছি।’
উল্লাপাড়ার আনিসুর নামের এক বৃদ্ধ বলেন, ‘কোমরে ব্যথা। তাই ডাক্তারের কাছে এসেছি। এসে শুনি, দুপুরের আগে চিকিৎসা হবে না।’
একই দাবিতে রাজবাড়ীতে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা চার ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করেছেন। বুধবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এই কর্মবিরতি পালন করেন তাঁরা। কর্মবিরতি কর্মসূচিতে দাবি আদায় না হলে ৪ ডিসেম্বর থেকে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালনের মাধ্যমে হাসপাতাল শাটডাউন ঘোষণার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা।

এই অবস্থায় প্রস্রাব পান করার অর্থ হলো—এর থেকে যতটা পানি পাওয়া যায় তার চেয়ে বেশি পানি শরীর থেকে বের হয়ে যায়, যা ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা দ্রুত বাড়ায়। প্রস্রাব পান অনেকটা সমুদ্রের পানি পানের মতো। পেনিসিলিন অ্যান্টিবায়োটিক বা হৃদ্রোগের ওষুধের মতো কিছু ওষুধও প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়।
২৮ এপ্রিল ২০২৫
ছয় দফা দাবিতে টানা ষষ্ঠ দিনের মতো আন্দোলন করছেন স্বাস্থ্য সহকারীরা। মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সামনে তাঁদের অবস্থান কর্মসূচি চলছে। শনিবার থেকে সারা দেশের স্বাস্থ্য সহকারীরা ঢাকায় এসে লাগাতার কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন।
১ দিন আগে
দেশের সরকারি ও বেসরকারি সব ধরনের হাসপাতালে প্রতিবছরই বাড়ছে সেবাগ্রহণকারীর সংখ্যা। কিন্তু অধিকাংশ চিকিৎসাকেন্দ্রেই শৌচাগারগুলো ব্যবহারের অযোগ্য অথবা ন্যূনতম মানের নয়। ফলে চিকিৎসা নিতে এসে রোগীরা নানা ভোগান্তিতে পড়ছেন। আর প্রতিবন্ধী রোগীদের ক্ষেত্রে এ ভোগান্তি আরও তীব্র।
৩ দিন আগে
দেশে গত এক দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে নতুন আক্রান্ত ৫৬৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
৩ দিন আগেমুহাম্মাদ শফিউল্লাহ, ঢাকা

দেশের সরকারি ও বেসরকারি সব ধরনের হাসপাতালে প্রতিবছরই বাড়ছে সেবাগ্রহণকারীর সংখ্যা। কিন্তু অধিকাংশ চিকিৎসাকেন্দ্রেই শৌচাগারগুলো ব্যবহারের অযোগ্য অথবা ন্যূনতম মানের নয়। ফলে চিকিৎসা নিতে এসে রোগীরা নানা ভোগান্তিতে পড়ছেন। আর প্রতিবন্ধী রোগীদের ক্ষেত্রে এ ভোগান্তি আরও তীব্র। কারণ হাসপাতালে প্রতিবন্ধী রোগীদের উপযোগী শৌচাগার ১ শতাংশেরও কম।
হাসপাতাল পরিচালনা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিবন্ধীবান্ধব শৌচাগার একটি হাসপাতালের মৌলিক পরিকাঠামোর অংশ হওয়া উচিত। তবে দেশে এ ধরনের সুবিধার মারাত্মক ঘাটতি রয়েছে। বিশেষ করে সরকারি হাসপাতালগুলোতে ঘাটতি বেশি। ফলে রোগীরা শুধু ভোগান্তিতেই পড়ছেন না; বরং গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকিরও সম্মুখীন হচ্ছেন। দীর্ঘ সময় শৌচাগার ব্যবহার করতে না পারার ফলে কিডনি জটিলতা, ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন (মূত্রনালি সংক্রমণ) ও পানিশূন্যতাসহ নানা সমস্যা দেখা দেয়।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও চিকিৎসাবিষয়ক গবেষণা প্রকাশনা সংস্থা পাবলিক লাইব্রেরি অব সায়েন্সের প্লস ওয়ান সাময়িকীতে বাংলাদেশে হাসপাতালের শৌচাগার নিয়ে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ পায়। গবেষণার শিরোনাম ‘ইনঅ্যাডিক্যুইট স্যানিটেশন ইন হেলথকেয়ার ফ্যাসিলিটিজ: অ্যা কম্প্রিহেনসিভ ইভ্যালুয়েশন অব টয়লেটস ইন মেজর হাসপাতাল ইন ঢাকা, বাংলাদেশ’। গবেষণাটি করেছেন অস্ট্রেলিয়া ও বাংলাদেশের নয়জন গবেষক।
গবেষণায় রাজধানীর ১০টি সরকারি ও ২টি বেসরকারি হাসপাতালে মোট ২ হাজার ৪৫৯টি শৌচাগার পর্যবেক্ষণ করা হয়। এর মধ্যে প্রতিবন্ধী রোগীদের উপযোগী শৌচাগারের সংখ্যা মাত্র ১০টি, যা ১ শতাংশেরও কম বা শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ। প্রায় ৯৯ শতাংশ শৌচাগার হুইলচেয়ার ব্যবহারকারী বা চলাফেরায় সীমাবদ্ধ রোগীদের জন্য ব্যবহারযোগ্য নয়। অধিকাংশ শৌচাগারে দরজা সংকীর্ণ, কমোডের উচ্চতা অনুপযুক্ত, গ্র্যাব-বার বা হাতল নেই এবং প্রবেশপথে র্যাম্পের সুবিধাও নেই। ফলে প্রতিবন্ধী রোগীরা শৌচাগার ব্যবহার করতে গিয়ে চরম ভোগান্তি এবং নিরাপত্তাহীনতায় পড়েন।
দেশে ক্যানসার রোগীদের জন্য সর্বোচ্চ সরকারি চিকিৎসা কেন্দ্র জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল ঘুরে এখানকার দুটি ভবনের কোথাও প্রতিবন্ধী রোগীদের জন্য নির্ধারিত শৌচাগার পাওয়া যায়নি।
একইভাবে হৃদরোগ চিকিৎসার জন্য সরকারের বিশেষায়িত চিকিৎসাকেন্দ্র জাতীয় হৃদ্রোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের তিনটি ভবনের কোথাও নেই প্রতিবন্ধী রোগীদের জন্য নির্ধারিত শৌচাগার। তাঁদের জন্য আলাদা শৌচাগার না থাকার কথা স্বীকার করেন এই হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক আব্দুল ওয়াদুদ চৌধুরী। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এখানে ভর্তি রোগীরা বেডসাইড টয়লেট ব্যবহার করেন। বিভিন্ন হাসপাতালের জন্য নতুন যেসব ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে, সেখানে প্রতিবন্ধী রোগীদের জন্য শৌচাগার, হুইলচেয়ার বা শয্যাসহ ওঠানামার জন্য প্রয়োজনীয় র্যাম্প রাখা প্রয়োজন।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান বলেন, ‘সরকারি হাসপাতালে নির্ধারিত শয্যার ২-৩ গুণ রোগী ভর্তি থাকেন। দৈনিক বহির্বিভাগে রোগী আসেন সক্ষমতার ৪-৫ গুণ। স্বাভাবিক রোগীদের জন্য উন্নত শৌচাগারের ব্যবস্থাপনা নেই। প্রতিবন্ধী রোগীদের জন্যও আলাদা শৌচাগার রাখা যায়নি। তবে আমরা এ বিষয়ে পরিকল্পনা করছি।’

দেশের সরকারি ও বেসরকারি সব ধরনের হাসপাতালে প্রতিবছরই বাড়ছে সেবাগ্রহণকারীর সংখ্যা। কিন্তু অধিকাংশ চিকিৎসাকেন্দ্রেই শৌচাগারগুলো ব্যবহারের অযোগ্য অথবা ন্যূনতম মানের নয়। ফলে চিকিৎসা নিতে এসে রোগীরা নানা ভোগান্তিতে পড়ছেন। আর প্রতিবন্ধী রোগীদের ক্ষেত্রে এ ভোগান্তি আরও তীব্র। কারণ হাসপাতালে প্রতিবন্ধী রোগীদের উপযোগী শৌচাগার ১ শতাংশেরও কম।
হাসপাতাল পরিচালনা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিবন্ধীবান্ধব শৌচাগার একটি হাসপাতালের মৌলিক পরিকাঠামোর অংশ হওয়া উচিত। তবে দেশে এ ধরনের সুবিধার মারাত্মক ঘাটতি রয়েছে। বিশেষ করে সরকারি হাসপাতালগুলোতে ঘাটতি বেশি। ফলে রোগীরা শুধু ভোগান্তিতেই পড়ছেন না; বরং গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকিরও সম্মুখীন হচ্ছেন। দীর্ঘ সময় শৌচাগার ব্যবহার করতে না পারার ফলে কিডনি জটিলতা, ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন (মূত্রনালি সংক্রমণ) ও পানিশূন্যতাসহ নানা সমস্যা দেখা দেয়।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও চিকিৎসাবিষয়ক গবেষণা প্রকাশনা সংস্থা পাবলিক লাইব্রেরি অব সায়েন্সের প্লস ওয়ান সাময়িকীতে বাংলাদেশে হাসপাতালের শৌচাগার নিয়ে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ পায়। গবেষণার শিরোনাম ‘ইনঅ্যাডিক্যুইট স্যানিটেশন ইন হেলথকেয়ার ফ্যাসিলিটিজ: অ্যা কম্প্রিহেনসিভ ইভ্যালুয়েশন অব টয়লেটস ইন মেজর হাসপাতাল ইন ঢাকা, বাংলাদেশ’। গবেষণাটি করেছেন অস্ট্রেলিয়া ও বাংলাদেশের নয়জন গবেষক।
গবেষণায় রাজধানীর ১০টি সরকারি ও ২টি বেসরকারি হাসপাতালে মোট ২ হাজার ৪৫৯টি শৌচাগার পর্যবেক্ষণ করা হয়। এর মধ্যে প্রতিবন্ধী রোগীদের উপযোগী শৌচাগারের সংখ্যা মাত্র ১০টি, যা ১ শতাংশেরও কম বা শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ। প্রায় ৯৯ শতাংশ শৌচাগার হুইলচেয়ার ব্যবহারকারী বা চলাফেরায় সীমাবদ্ধ রোগীদের জন্য ব্যবহারযোগ্য নয়। অধিকাংশ শৌচাগারে দরজা সংকীর্ণ, কমোডের উচ্চতা অনুপযুক্ত, গ্র্যাব-বার বা হাতল নেই এবং প্রবেশপথে র্যাম্পের সুবিধাও নেই। ফলে প্রতিবন্ধী রোগীরা শৌচাগার ব্যবহার করতে গিয়ে চরম ভোগান্তি এবং নিরাপত্তাহীনতায় পড়েন।
দেশে ক্যানসার রোগীদের জন্য সর্বোচ্চ সরকারি চিকিৎসা কেন্দ্র জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল ঘুরে এখানকার দুটি ভবনের কোথাও প্রতিবন্ধী রোগীদের জন্য নির্ধারিত শৌচাগার পাওয়া যায়নি।
একইভাবে হৃদরোগ চিকিৎসার জন্য সরকারের বিশেষায়িত চিকিৎসাকেন্দ্র জাতীয় হৃদ্রোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের তিনটি ভবনের কোথাও নেই প্রতিবন্ধী রোগীদের জন্য নির্ধারিত শৌচাগার। তাঁদের জন্য আলাদা শৌচাগার না থাকার কথা স্বীকার করেন এই হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক আব্দুল ওয়াদুদ চৌধুরী। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এখানে ভর্তি রোগীরা বেডসাইড টয়লেট ব্যবহার করেন। বিভিন্ন হাসপাতালের জন্য নতুন যেসব ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে, সেখানে প্রতিবন্ধী রোগীদের জন্য শৌচাগার, হুইলচেয়ার বা শয্যাসহ ওঠানামার জন্য প্রয়োজনীয় র্যাম্প রাখা প্রয়োজন।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান বলেন, ‘সরকারি হাসপাতালে নির্ধারিত শয্যার ২-৩ গুণ রোগী ভর্তি থাকেন। দৈনিক বহির্বিভাগে রোগী আসেন সক্ষমতার ৪-৫ গুণ। স্বাভাবিক রোগীদের জন্য উন্নত শৌচাগারের ব্যবস্থাপনা নেই। প্রতিবন্ধী রোগীদের জন্যও আলাদা শৌচাগার রাখা যায়নি। তবে আমরা এ বিষয়ে পরিকল্পনা করছি।’

এই অবস্থায় প্রস্রাব পান করার অর্থ হলো—এর থেকে যতটা পানি পাওয়া যায় তার চেয়ে বেশি পানি শরীর থেকে বের হয়ে যায়, যা ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা দ্রুত বাড়ায়। প্রস্রাব পান অনেকটা সমুদ্রের পানি পানের মতো। পেনিসিলিন অ্যান্টিবায়োটিক বা হৃদ্রোগের ওষুধের মতো কিছু ওষুধও প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়।
২৮ এপ্রিল ২০২৫
ছয় দফা দাবিতে টানা ষষ্ঠ দিনের মতো আন্দোলন করছেন স্বাস্থ্য সহকারীরা। মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সামনে তাঁদের অবস্থান কর্মসূচি চলছে। শনিবার থেকে সারা দেশের স্বাস্থ্য সহকারীরা ঢাকায় এসে লাগাতার কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন।
১ দিন আগে
বেতনকাঠামোর দশম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে হাসপাতালসহ দেশের সব স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে চার ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেছেন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা। গতকাল বুধবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত তাঁদের এই কর্মসূচির কারণে চরম দুর্ভোগে পড়ে রোগী এবং তাদের স্বজনেরা। গত ৩০ নভেম্বর থেকে...
২ দিন আগে
দেশে গত এক দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে নতুন আক্রান্ত ৫৬৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
৩ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

দেশে গত এক দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে নতুন আক্রান্ত ৫৬৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
এ নিয়ে চলতি বছরের এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ৩৮৬ জনের মৃত্যু হলো। আর আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগী সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৯৫ হাজার ৫৭৭। এর মধ্যে ৬২ দশমিক ৪ শতাংশ পুরুষ এবং ৩৭ দশমিক ৬ শতাংশ নারী।
আজ মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল সোমবার সকাল ৮টা থেকে আজ সকাল ৮টা পর্যন্ত তথ্য জানানো হয়।
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে যে দুজনের মৃত্যু হয়েছে তাঁরা পুরুষ। তাঁদে বয়স যথাক্রমে ৫৫ ও ৬৫ বছর।
চলতি বছর ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে নভেম্বর মাসে। ওই মাসে ১০৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। তার আগে অক্টোবর মাসে ৮০ জন ও সেপ্টেম্বর মাসে ৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর মধ্যে বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৫১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৮২, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৯৫, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ১২৭ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ৮৮ জন, খুলনা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪৩, ময়মনসিংহ বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪৫, রাজশাহী বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৩০, রংপুর বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) তিন ও সিলেট বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) একজন রয়েছে।

দেশে গত এক দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে নতুন আক্রান্ত ৫৬৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
এ নিয়ে চলতি বছরের এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ৩৮৬ জনের মৃত্যু হলো। আর আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগী সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৯৫ হাজার ৫৭৭। এর মধ্যে ৬২ দশমিক ৪ শতাংশ পুরুষ এবং ৩৭ দশমিক ৬ শতাংশ নারী।
আজ মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল সোমবার সকাল ৮টা থেকে আজ সকাল ৮টা পর্যন্ত তথ্য জানানো হয়।
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে যে দুজনের মৃত্যু হয়েছে তাঁরা পুরুষ। তাঁদে বয়স যথাক্রমে ৫৫ ও ৬৫ বছর।
চলতি বছর ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে নভেম্বর মাসে। ওই মাসে ১০৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। তার আগে অক্টোবর মাসে ৮০ জন ও সেপ্টেম্বর মাসে ৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর মধ্যে বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৫১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৮২, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৯৫, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ১২৭ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ৮৮ জন, খুলনা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪৩, ময়মনসিংহ বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪৫, রাজশাহী বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৩০, রংপুর বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) তিন ও সিলেট বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) একজন রয়েছে।

এই অবস্থায় প্রস্রাব পান করার অর্থ হলো—এর থেকে যতটা পানি পাওয়া যায় তার চেয়ে বেশি পানি শরীর থেকে বের হয়ে যায়, যা ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা দ্রুত বাড়ায়। প্রস্রাব পান অনেকটা সমুদ্রের পানি পানের মতো। পেনিসিলিন অ্যান্টিবায়োটিক বা হৃদ্রোগের ওষুধের মতো কিছু ওষুধও প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়।
২৮ এপ্রিল ২০২৫
ছয় দফা দাবিতে টানা ষষ্ঠ দিনের মতো আন্দোলন করছেন স্বাস্থ্য সহকারীরা। মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সামনে তাঁদের অবস্থান কর্মসূচি চলছে। শনিবার থেকে সারা দেশের স্বাস্থ্য সহকারীরা ঢাকায় এসে লাগাতার কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন।
১ দিন আগে
বেতনকাঠামোর দশম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে হাসপাতালসহ দেশের সব স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে চার ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেছেন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা। গতকাল বুধবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত তাঁদের এই কর্মসূচির কারণে চরম দুর্ভোগে পড়ে রোগী এবং তাদের স্বজনেরা। গত ৩০ নভেম্বর থেকে...
২ দিন আগে
দেশের সরকারি ও বেসরকারি সব ধরনের হাসপাতালে প্রতিবছরই বাড়ছে সেবাগ্রহণকারীর সংখ্যা। কিন্তু অধিকাংশ চিকিৎসাকেন্দ্রেই শৌচাগারগুলো ব্যবহারের অযোগ্য অথবা ন্যূনতম মানের নয়। ফলে চিকিৎসা নিতে এসে রোগীরা নানা ভোগান্তিতে পড়ছেন। আর প্রতিবন্ধী রোগীদের ক্ষেত্রে এ ভোগান্তি আরও তীব্র।
৩ দিন আগে