মুহাম্মাদ শফিউল্লাহ, ঢাকা

বেশ কয়েক বছর ধরে দেশে ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত রোগ জনস্বাস্থ্যের জন্য উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এতে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলে আসছেন, মশা নির্মূল ও মশাবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য অন্যান্য ব্যবস্থা ও কৌশলের পাশাপাশি মশা পরীক্ষা এবং গবেষণাগারও প্রয়োজন। এতে করে স্থানীয় প্রজাতির মশার জিনগত বৈশিষ্ট্য, আচরণ ইত্যাদি বোঝার মাধ্যমে মশা নির্মূল ও রোগের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ সহজ হবে। তবে এ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টিতে সরকারের অগ্রাধিকার নেই বলে মন্তব্য করেছেন কীটতত্ত্ব ও রোগতত্ত্ববিদেরা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বিশ্বে সাড়ে ৩ হাজারের বেশি প্রজাতির মশা রয়েছে, যার মধ্যে ১০০ প্রজাতি মানবদেহে অন্তত ২০টি প্রাণঘাতী রোগ ছড়াতে সক্ষম। বাংলাদেশে ঠিক কত প্রজাতির মশা রয়েছে, তার সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি সরকার বা বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে। তবে বাংলাদেশে বর্তমানে মশা ও মাছিবাহিত নয়টি মারাত্মক রোগ দেখা যাচ্ছে বলে উল্লেখ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও), স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগ এবং সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)। তাদের তথ্য অনুযায়ী, এডিস মশা ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, লিম্ফ্যাটিক ফাইলেরিয়াসিস, জিকা; অ্যানোফিলিস মশা লিম্ফ্যাটিক ফাইলেরিয়াসিস, ম্যালেরিয়া; কিউলেক্স মশা জাপানিজ এনকেফালাইটিস, লিম্ফ্যাটিক ফাইলেরিয়াসিস, ওয়েস্ট নাইল ফিভার ও ফাইলেরিয়া এবং স্যান্ডফ্লাই নামের একধরনের মাছি কালাজ্বরের বাহক হিসেবে কাজ করে।
আমেরিকান মসকিউটো কন্ট্রোল অ্যাসোসিয়েশনের (এএমসিএ) তথ্যমতে, পৃথিবীর অন্য যেকোনো জীবের তুলনায় মশা মানুষের জন্য বেশি দুর্ভোগ সৃষ্টি করে। বিশ্বে বছরে ১০ লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হয় মশাবাহিত রোগের কারণে।
বাড়ছে রোগের প্রাদুর্ভাব
দেশে বর্তমানে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া এবং চিকুনগুনিয়া রোগের প্রকোপ বেশি। ২০২৩ সালে বাংলাদেশে ডেঙ্গুকে জনস্বাস্থ্যের জন্য উদ্বেগের বলে অভিহিত করেছে ডব্লিউএইচও। সরকারের তথ্য বলছে, দেশে ডেঙ্গুর সংক্রমণ ক্রমেই ঊর্ধ্বমুখী। সাম্প্রতিককালে দেশের সব অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে একসময় মূলত রাজধানী ঢাকায় সীমাবদ্ধ থাকা রোগটি। প্রথম ডেঙ্গু রোগের সরকারি পরিসংখ্যান পাওয়া যায় ২০০০ সালে। ২০১৯ সালে শহর ও গ্রাম উভয় স্থানে ছড়িয়ে পড়ে ডেঙ্গু। ইউরোপীয় ইউনিয়নের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (ইসিডিসি) ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ এখন ডেঙ্গুতে বিশ্বে সর্বোচ্চ মৃত্যু হারের দেশ।
ডেঙ্গুর মতোই জিকা এবং চিকুনগুনিয়াও ছড়ায় এডিস মশার মাধ্যমে। দেশে ২০০৮ সালে প্রথম চিকুনগুনিয়া শনাক্ত হয়। ২০১৭ সালে দেশজুড়ে ভাইরাল এ রোগ ছড়িয়ে পড়ে। দেশে জিকাও শনাক্ত হয়েছে।
ম্যালেরিয়া রোগ ছড়ায় স্ত্রী অ্যানোফিলিস মশার মাধ্যমে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, ২০০৭-২৪ সাল পর্যন্ত দেশে ৬ লাখ ১ হাজার মানুষ ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে মারা গেছে ৬৬৩ জন। চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ ও রংপুর বিভাগের ১৩ জেলায় ম্যালেরিয়ার সংক্রমণ ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। কিউলেক্স মশার দুটি প্রজাতি ও ম্যানসোনিয়া মশা দেশের অন্তত ৩৪টি জেলায় ফাইলেরিয়া বা গোদরোগ ছড়াচ্ছে। ১৯৯৩ সাল থেকে পাওয়া যাচ্ছে কালাজ্বরের রোগী। দেশে প্রথম জাপানিজ এনকেফালাইটিস রোগী শনাক্ত হয় ১৯৭৭ সালে। ওয়েস্ট নাইল ভাইরাসবাহিত জ্বরের সংক্রমণও শনাক্ত হয়েছে।
নেই পরীক্ষা বা গবেষণায় গুরুত্ব
মশাবাহিত রোগ বছরের পর বছর ভোগালেও এটি মোকাবিলায় সমন্বিত ও পূর্ণাঙ্গ সামর্থ্য গড়ে তোলা হচ্ছে না। অন্তত সিকি শতাব্দী ধরে কখনো কখনো প্রাণঘাতী হয়ে ওঠা ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। রোগের ধরন পরিবর্তন, মশকনিধন কর্মসূচির ত্রুটি ও ব্যর্থতা, জনসচেতনার প্রকট অভাবসহ বিভিন্ন কারণে ডেঙ্গুর দৌরাত্ম্য না কমে বরং বাড়ছে। মশা জনস্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকিগুলোর মধ্যে একটি উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা ভেক্টর ডিজিজ কন্ট্রোল ইন্টারন্যাশনাল (ভিডিসিআই) বলেছে, মশা নির্মূলে কার্যকর ব্যবস্থাপনা, মশার ক্রিয়াকলাপ, মশার প্রজননের ক্রমবর্ধমান গতিশীলতা ও কীটনাশক নিয়ে বিস্তৃত পদক্ষেপ নিতে হলে বৈজ্ঞানিক পরীক্ষাগারে গবেষণা জরুরি। অস্ট্রেলিয়ার কিউআইএমআর বার্গোফার (সাবেক কুইন্সল্যান্ড ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল রিসার্চ), যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিন ও ব্রাজিলের ওসওয়াল্ডো ক্রুজ ইনস্টিটিউটও বলছে, রোগপ্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের জন্য মশার পরীক্ষাগার গুরুত্বপূর্ণ। মশাবাহিত রোগে আক্রান্তের হার বেশি এমনসব অঞ্চল থেকে মশা সংগ্রহ করে গবেষণা করতে হবে। মশার জীববিজ্ঞান, আচরণ, প্রজাতি, বহনকারী ভাইরাসের পরিবর্তন বা রূপান্তর, মশার ঘনত্ব, প্রজাতি শনাক্তকরণ, কীটনাশকের কার্যকারিতা এবং রোগের সংক্রমণের গতি-প্রকৃতি নিয়ে গবেষণা করা প্রয়োজন।
কিন্তু অনেক দেশেই মশার মতো রোগের বাহক অর্থাৎ ‘ভেক্টর’ নিয়ন্ত্রণে পরীক্ষাগার থাকলেও বাংলাদেশে মতো মশাবহুল দেশে তা নেই। অথচ কীটতত্ত্ববিদেরা বলছেন, মশাবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব তেমন নেই, এমন অনেক দেশেও সমন্বিত পরীক্ষাগার রয়েছে। যেখানে মশার ধরন, মশার জীববিজ্ঞান, প্রজনন, কীটনাশক, ভাইরাস বা পরজীবী নিয়ে নিয়মিত গবেষণা করা হয়। বাংলাদেশে মশার বেড়ে ওঠা ও পরিপক্বতা অর্জন, জীবাণুর সঙ্গে সম্পর্ক ইত্যাদি পরিবর্তন হচ্ছে। এ নিয়ে গবেষণা প্রয়োজন; কিন্তু তার ব্যবস্থা নেই।
জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের (নিপসম) কীটতত্ত্ব বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মো. গোলাম ছারোয়ার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আবহাওয়ার সঙ্গে মশার অভিযোজন, বহনকারী ভাইরাসের রূপান্তর, ভাইরাসের স্বভাবের কোনো পরিবর্তন হচ্ছে কি না তা জানতে গবেষণা প্রয়োজন। মশা ধ্বংসকারী কীটনাশকের কার্যকারিতা পরীক্ষা করতে হবে। কিন্তু গবেষণার প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা, কারিগরি দক্ষতা ও ব্যবস্থাপনার অভাবে মশাকে নির্মূল করা যাচ্ছে না। সরকারের উদ্যোগ নেই। দীর্ঘদিন চেষ্টা করেও নিপসমে একটি মশা পরীক্ষাগার করা যায়নি।’
পরীক্ষাগারের বিষয়টি সরকারের অগ্রাধিকারে দেখা যাচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন কীটতত্ত্ববিদ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার। তিনি বলেন, ‘মশা ও রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষাগার থাকা প্রয়োজন। ভেক্টর নিয়ন্ত্রণ পরীক্ষাগার করার জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগকে ২০১৯ সালে অর্গানোগ্রামসহ রূপরেখা দিয়েছিলাম। সরকারের আগ্রহ দেখা যায়নি।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বক্তব্য
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলেছে, মশা নির্মূলে প্রজননস্থল খুঁজে তা ধ্বংস করা এবং জনসচেতনতা সৃষ্টির কাজ স্থানীয় সরকার বিভাগের। মশা নিয়ে গবেষণা করবে স্থানীয় সরকার বা প্রাণিসম্পদ বিভাগ। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ করে রোগীর চিকিৎসার সব কাজ। যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাণিবিদ্যা বিভাগ রয়েছে, সেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণাগার থাকবে। তাদের সঙ্গে স্থানীয় সরকার সম্পৃক্ত হবে। প্রয়োজন হলে স্বাস্থ্যসেবাও সম্পৃক্ত হবে।
রোগ নিয়ে গবেষণা নিয়মিত হচ্ছে উল্লেখ করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাপক হালিমুর রশিদ বলেন, ‘মশার জন্য দেশে পরীক্ষাগার নেই। তবে আইইডিসিআরসহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গু নিয়ে গবেষণা হচ্ছে।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবু জাফর বলেন, মশা নিয়ে বৃহৎ অর্থে গবেষণাগার নেই। তবে আইইডিসিআর, আইসিডিডিআরবিসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গু, কীট, টিকা নিয়ে গবেষণা হচ্ছে। রোগীর নমুনার ওপর অধিকতর গবেষণাও হচ্ছে।

বেশ কয়েক বছর ধরে দেশে ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত রোগ জনস্বাস্থ্যের জন্য উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এতে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলে আসছেন, মশা নির্মূল ও মশাবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য অন্যান্য ব্যবস্থা ও কৌশলের পাশাপাশি মশা পরীক্ষা এবং গবেষণাগারও প্রয়োজন। এতে করে স্থানীয় প্রজাতির মশার জিনগত বৈশিষ্ট্য, আচরণ ইত্যাদি বোঝার মাধ্যমে মশা নির্মূল ও রোগের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ সহজ হবে। তবে এ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টিতে সরকারের অগ্রাধিকার নেই বলে মন্তব্য করেছেন কীটতত্ত্ব ও রোগতত্ত্ববিদেরা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বিশ্বে সাড়ে ৩ হাজারের বেশি প্রজাতির মশা রয়েছে, যার মধ্যে ১০০ প্রজাতি মানবদেহে অন্তত ২০টি প্রাণঘাতী রোগ ছড়াতে সক্ষম। বাংলাদেশে ঠিক কত প্রজাতির মশা রয়েছে, তার সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি সরকার বা বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে। তবে বাংলাদেশে বর্তমানে মশা ও মাছিবাহিত নয়টি মারাত্মক রোগ দেখা যাচ্ছে বলে উল্লেখ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও), স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগ এবং সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)। তাদের তথ্য অনুযায়ী, এডিস মশা ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, লিম্ফ্যাটিক ফাইলেরিয়াসিস, জিকা; অ্যানোফিলিস মশা লিম্ফ্যাটিক ফাইলেরিয়াসিস, ম্যালেরিয়া; কিউলেক্স মশা জাপানিজ এনকেফালাইটিস, লিম্ফ্যাটিক ফাইলেরিয়াসিস, ওয়েস্ট নাইল ফিভার ও ফাইলেরিয়া এবং স্যান্ডফ্লাই নামের একধরনের মাছি কালাজ্বরের বাহক হিসেবে কাজ করে।
আমেরিকান মসকিউটো কন্ট্রোল অ্যাসোসিয়েশনের (এএমসিএ) তথ্যমতে, পৃথিবীর অন্য যেকোনো জীবের তুলনায় মশা মানুষের জন্য বেশি দুর্ভোগ সৃষ্টি করে। বিশ্বে বছরে ১০ লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হয় মশাবাহিত রোগের কারণে।
বাড়ছে রোগের প্রাদুর্ভাব
দেশে বর্তমানে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া এবং চিকুনগুনিয়া রোগের প্রকোপ বেশি। ২০২৩ সালে বাংলাদেশে ডেঙ্গুকে জনস্বাস্থ্যের জন্য উদ্বেগের বলে অভিহিত করেছে ডব্লিউএইচও। সরকারের তথ্য বলছে, দেশে ডেঙ্গুর সংক্রমণ ক্রমেই ঊর্ধ্বমুখী। সাম্প্রতিককালে দেশের সব অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে একসময় মূলত রাজধানী ঢাকায় সীমাবদ্ধ থাকা রোগটি। প্রথম ডেঙ্গু রোগের সরকারি পরিসংখ্যান পাওয়া যায় ২০০০ সালে। ২০১৯ সালে শহর ও গ্রাম উভয় স্থানে ছড়িয়ে পড়ে ডেঙ্গু। ইউরোপীয় ইউনিয়নের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (ইসিডিসি) ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ এখন ডেঙ্গুতে বিশ্বে সর্বোচ্চ মৃত্যু হারের দেশ।
ডেঙ্গুর মতোই জিকা এবং চিকুনগুনিয়াও ছড়ায় এডিস মশার মাধ্যমে। দেশে ২০০৮ সালে প্রথম চিকুনগুনিয়া শনাক্ত হয়। ২০১৭ সালে দেশজুড়ে ভাইরাল এ রোগ ছড়িয়ে পড়ে। দেশে জিকাও শনাক্ত হয়েছে।
ম্যালেরিয়া রোগ ছড়ায় স্ত্রী অ্যানোফিলিস মশার মাধ্যমে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, ২০০৭-২৪ সাল পর্যন্ত দেশে ৬ লাখ ১ হাজার মানুষ ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে মারা গেছে ৬৬৩ জন। চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ ও রংপুর বিভাগের ১৩ জেলায় ম্যালেরিয়ার সংক্রমণ ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। কিউলেক্স মশার দুটি প্রজাতি ও ম্যানসোনিয়া মশা দেশের অন্তত ৩৪টি জেলায় ফাইলেরিয়া বা গোদরোগ ছড়াচ্ছে। ১৯৯৩ সাল থেকে পাওয়া যাচ্ছে কালাজ্বরের রোগী। দেশে প্রথম জাপানিজ এনকেফালাইটিস রোগী শনাক্ত হয় ১৯৭৭ সালে। ওয়েস্ট নাইল ভাইরাসবাহিত জ্বরের সংক্রমণও শনাক্ত হয়েছে।
নেই পরীক্ষা বা গবেষণায় গুরুত্ব
মশাবাহিত রোগ বছরের পর বছর ভোগালেও এটি মোকাবিলায় সমন্বিত ও পূর্ণাঙ্গ সামর্থ্য গড়ে তোলা হচ্ছে না। অন্তত সিকি শতাব্দী ধরে কখনো কখনো প্রাণঘাতী হয়ে ওঠা ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। রোগের ধরন পরিবর্তন, মশকনিধন কর্মসূচির ত্রুটি ও ব্যর্থতা, জনসচেতনার প্রকট অভাবসহ বিভিন্ন কারণে ডেঙ্গুর দৌরাত্ম্য না কমে বরং বাড়ছে। মশা জনস্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকিগুলোর মধ্যে একটি উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা ভেক্টর ডিজিজ কন্ট্রোল ইন্টারন্যাশনাল (ভিডিসিআই) বলেছে, মশা নির্মূলে কার্যকর ব্যবস্থাপনা, মশার ক্রিয়াকলাপ, মশার প্রজননের ক্রমবর্ধমান গতিশীলতা ও কীটনাশক নিয়ে বিস্তৃত পদক্ষেপ নিতে হলে বৈজ্ঞানিক পরীক্ষাগারে গবেষণা জরুরি। অস্ট্রেলিয়ার কিউআইএমআর বার্গোফার (সাবেক কুইন্সল্যান্ড ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল রিসার্চ), যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিন ও ব্রাজিলের ওসওয়াল্ডো ক্রুজ ইনস্টিটিউটও বলছে, রোগপ্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের জন্য মশার পরীক্ষাগার গুরুত্বপূর্ণ। মশাবাহিত রোগে আক্রান্তের হার বেশি এমনসব অঞ্চল থেকে মশা সংগ্রহ করে গবেষণা করতে হবে। মশার জীববিজ্ঞান, আচরণ, প্রজাতি, বহনকারী ভাইরাসের পরিবর্তন বা রূপান্তর, মশার ঘনত্ব, প্রজাতি শনাক্তকরণ, কীটনাশকের কার্যকারিতা এবং রোগের সংক্রমণের গতি-প্রকৃতি নিয়ে গবেষণা করা প্রয়োজন।
কিন্তু অনেক দেশেই মশার মতো রোগের বাহক অর্থাৎ ‘ভেক্টর’ নিয়ন্ত্রণে পরীক্ষাগার থাকলেও বাংলাদেশে মতো মশাবহুল দেশে তা নেই। অথচ কীটতত্ত্ববিদেরা বলছেন, মশাবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব তেমন নেই, এমন অনেক দেশেও সমন্বিত পরীক্ষাগার রয়েছে। যেখানে মশার ধরন, মশার জীববিজ্ঞান, প্রজনন, কীটনাশক, ভাইরাস বা পরজীবী নিয়ে নিয়মিত গবেষণা করা হয়। বাংলাদেশে মশার বেড়ে ওঠা ও পরিপক্বতা অর্জন, জীবাণুর সঙ্গে সম্পর্ক ইত্যাদি পরিবর্তন হচ্ছে। এ নিয়ে গবেষণা প্রয়োজন; কিন্তু তার ব্যবস্থা নেই।
জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের (নিপসম) কীটতত্ত্ব বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মো. গোলাম ছারোয়ার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আবহাওয়ার সঙ্গে মশার অভিযোজন, বহনকারী ভাইরাসের রূপান্তর, ভাইরাসের স্বভাবের কোনো পরিবর্তন হচ্ছে কি না তা জানতে গবেষণা প্রয়োজন। মশা ধ্বংসকারী কীটনাশকের কার্যকারিতা পরীক্ষা করতে হবে। কিন্তু গবেষণার প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা, কারিগরি দক্ষতা ও ব্যবস্থাপনার অভাবে মশাকে নির্মূল করা যাচ্ছে না। সরকারের উদ্যোগ নেই। দীর্ঘদিন চেষ্টা করেও নিপসমে একটি মশা পরীক্ষাগার করা যায়নি।’
পরীক্ষাগারের বিষয়টি সরকারের অগ্রাধিকারে দেখা যাচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন কীটতত্ত্ববিদ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার। তিনি বলেন, ‘মশা ও রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষাগার থাকা প্রয়োজন। ভেক্টর নিয়ন্ত্রণ পরীক্ষাগার করার জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগকে ২০১৯ সালে অর্গানোগ্রামসহ রূপরেখা দিয়েছিলাম। সরকারের আগ্রহ দেখা যায়নি।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বক্তব্য
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলেছে, মশা নির্মূলে প্রজননস্থল খুঁজে তা ধ্বংস করা এবং জনসচেতনতা সৃষ্টির কাজ স্থানীয় সরকার বিভাগের। মশা নিয়ে গবেষণা করবে স্থানীয় সরকার বা প্রাণিসম্পদ বিভাগ। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ করে রোগীর চিকিৎসার সব কাজ। যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাণিবিদ্যা বিভাগ রয়েছে, সেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণাগার থাকবে। তাদের সঙ্গে স্থানীয় সরকার সম্পৃক্ত হবে। প্রয়োজন হলে স্বাস্থ্যসেবাও সম্পৃক্ত হবে।
রোগ নিয়ে গবেষণা নিয়মিত হচ্ছে উল্লেখ করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাপক হালিমুর রশিদ বলেন, ‘মশার জন্য দেশে পরীক্ষাগার নেই। তবে আইইডিসিআরসহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গু নিয়ে গবেষণা হচ্ছে।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবু জাফর বলেন, মশা নিয়ে বৃহৎ অর্থে গবেষণাগার নেই। তবে আইইডিসিআর, আইসিডিডিআরবিসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গু, কীট, টিকা নিয়ে গবেষণা হচ্ছে। রোগীর নমুনার ওপর অধিকতর গবেষণাও হচ্ছে।
মুহাম্মাদ শফিউল্লাহ, ঢাকা

বেশ কয়েক বছর ধরে দেশে ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত রোগ জনস্বাস্থ্যের জন্য উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এতে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলে আসছেন, মশা নির্মূল ও মশাবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য অন্যান্য ব্যবস্থা ও কৌশলের পাশাপাশি মশা পরীক্ষা এবং গবেষণাগারও প্রয়োজন। এতে করে স্থানীয় প্রজাতির মশার জিনগত বৈশিষ্ট্য, আচরণ ইত্যাদি বোঝার মাধ্যমে মশা নির্মূল ও রোগের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ সহজ হবে। তবে এ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টিতে সরকারের অগ্রাধিকার নেই বলে মন্তব্য করেছেন কীটতত্ত্ব ও রোগতত্ত্ববিদেরা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বিশ্বে সাড়ে ৩ হাজারের বেশি প্রজাতির মশা রয়েছে, যার মধ্যে ১০০ প্রজাতি মানবদেহে অন্তত ২০টি প্রাণঘাতী রোগ ছড়াতে সক্ষম। বাংলাদেশে ঠিক কত প্রজাতির মশা রয়েছে, তার সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি সরকার বা বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে। তবে বাংলাদেশে বর্তমানে মশা ও মাছিবাহিত নয়টি মারাত্মক রোগ দেখা যাচ্ছে বলে উল্লেখ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও), স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগ এবং সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)। তাদের তথ্য অনুযায়ী, এডিস মশা ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, লিম্ফ্যাটিক ফাইলেরিয়াসিস, জিকা; অ্যানোফিলিস মশা লিম্ফ্যাটিক ফাইলেরিয়াসিস, ম্যালেরিয়া; কিউলেক্স মশা জাপানিজ এনকেফালাইটিস, লিম্ফ্যাটিক ফাইলেরিয়াসিস, ওয়েস্ট নাইল ফিভার ও ফাইলেরিয়া এবং স্যান্ডফ্লাই নামের একধরনের মাছি কালাজ্বরের বাহক হিসেবে কাজ করে।
আমেরিকান মসকিউটো কন্ট্রোল অ্যাসোসিয়েশনের (এএমসিএ) তথ্যমতে, পৃথিবীর অন্য যেকোনো জীবের তুলনায় মশা মানুষের জন্য বেশি দুর্ভোগ সৃষ্টি করে। বিশ্বে বছরে ১০ লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হয় মশাবাহিত রোগের কারণে।
বাড়ছে রোগের প্রাদুর্ভাব
দেশে বর্তমানে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া এবং চিকুনগুনিয়া রোগের প্রকোপ বেশি। ২০২৩ সালে বাংলাদেশে ডেঙ্গুকে জনস্বাস্থ্যের জন্য উদ্বেগের বলে অভিহিত করেছে ডব্লিউএইচও। সরকারের তথ্য বলছে, দেশে ডেঙ্গুর সংক্রমণ ক্রমেই ঊর্ধ্বমুখী। সাম্প্রতিককালে দেশের সব অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে একসময় মূলত রাজধানী ঢাকায় সীমাবদ্ধ থাকা রোগটি। প্রথম ডেঙ্গু রোগের সরকারি পরিসংখ্যান পাওয়া যায় ২০০০ সালে। ২০১৯ সালে শহর ও গ্রাম উভয় স্থানে ছড়িয়ে পড়ে ডেঙ্গু। ইউরোপীয় ইউনিয়নের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (ইসিডিসি) ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ এখন ডেঙ্গুতে বিশ্বে সর্বোচ্চ মৃত্যু হারের দেশ।
ডেঙ্গুর মতোই জিকা এবং চিকুনগুনিয়াও ছড়ায় এডিস মশার মাধ্যমে। দেশে ২০০৮ সালে প্রথম চিকুনগুনিয়া শনাক্ত হয়। ২০১৭ সালে দেশজুড়ে ভাইরাল এ রোগ ছড়িয়ে পড়ে। দেশে জিকাও শনাক্ত হয়েছে।
ম্যালেরিয়া রোগ ছড়ায় স্ত্রী অ্যানোফিলিস মশার মাধ্যমে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, ২০০৭-২৪ সাল পর্যন্ত দেশে ৬ লাখ ১ হাজার মানুষ ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে মারা গেছে ৬৬৩ জন। চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ ও রংপুর বিভাগের ১৩ জেলায় ম্যালেরিয়ার সংক্রমণ ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। কিউলেক্স মশার দুটি প্রজাতি ও ম্যানসোনিয়া মশা দেশের অন্তত ৩৪টি জেলায় ফাইলেরিয়া বা গোদরোগ ছড়াচ্ছে। ১৯৯৩ সাল থেকে পাওয়া যাচ্ছে কালাজ্বরের রোগী। দেশে প্রথম জাপানিজ এনকেফালাইটিস রোগী শনাক্ত হয় ১৯৭৭ সালে। ওয়েস্ট নাইল ভাইরাসবাহিত জ্বরের সংক্রমণও শনাক্ত হয়েছে।
নেই পরীক্ষা বা গবেষণায় গুরুত্ব
মশাবাহিত রোগ বছরের পর বছর ভোগালেও এটি মোকাবিলায় সমন্বিত ও পূর্ণাঙ্গ সামর্থ্য গড়ে তোলা হচ্ছে না। অন্তত সিকি শতাব্দী ধরে কখনো কখনো প্রাণঘাতী হয়ে ওঠা ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। রোগের ধরন পরিবর্তন, মশকনিধন কর্মসূচির ত্রুটি ও ব্যর্থতা, জনসচেতনার প্রকট অভাবসহ বিভিন্ন কারণে ডেঙ্গুর দৌরাত্ম্য না কমে বরং বাড়ছে। মশা জনস্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকিগুলোর মধ্যে একটি উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা ভেক্টর ডিজিজ কন্ট্রোল ইন্টারন্যাশনাল (ভিডিসিআই) বলেছে, মশা নির্মূলে কার্যকর ব্যবস্থাপনা, মশার ক্রিয়াকলাপ, মশার প্রজননের ক্রমবর্ধমান গতিশীলতা ও কীটনাশক নিয়ে বিস্তৃত পদক্ষেপ নিতে হলে বৈজ্ঞানিক পরীক্ষাগারে গবেষণা জরুরি। অস্ট্রেলিয়ার কিউআইএমআর বার্গোফার (সাবেক কুইন্সল্যান্ড ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল রিসার্চ), যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিন ও ব্রাজিলের ওসওয়াল্ডো ক্রুজ ইনস্টিটিউটও বলছে, রোগপ্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের জন্য মশার পরীক্ষাগার গুরুত্বপূর্ণ। মশাবাহিত রোগে আক্রান্তের হার বেশি এমনসব অঞ্চল থেকে মশা সংগ্রহ করে গবেষণা করতে হবে। মশার জীববিজ্ঞান, আচরণ, প্রজাতি, বহনকারী ভাইরাসের পরিবর্তন বা রূপান্তর, মশার ঘনত্ব, প্রজাতি শনাক্তকরণ, কীটনাশকের কার্যকারিতা এবং রোগের সংক্রমণের গতি-প্রকৃতি নিয়ে গবেষণা করা প্রয়োজন।
কিন্তু অনেক দেশেই মশার মতো রোগের বাহক অর্থাৎ ‘ভেক্টর’ নিয়ন্ত্রণে পরীক্ষাগার থাকলেও বাংলাদেশে মতো মশাবহুল দেশে তা নেই। অথচ কীটতত্ত্ববিদেরা বলছেন, মশাবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব তেমন নেই, এমন অনেক দেশেও সমন্বিত পরীক্ষাগার রয়েছে। যেখানে মশার ধরন, মশার জীববিজ্ঞান, প্রজনন, কীটনাশক, ভাইরাস বা পরজীবী নিয়ে নিয়মিত গবেষণা করা হয়। বাংলাদেশে মশার বেড়ে ওঠা ও পরিপক্বতা অর্জন, জীবাণুর সঙ্গে সম্পর্ক ইত্যাদি পরিবর্তন হচ্ছে। এ নিয়ে গবেষণা প্রয়োজন; কিন্তু তার ব্যবস্থা নেই।
জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের (নিপসম) কীটতত্ত্ব বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মো. গোলাম ছারোয়ার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আবহাওয়ার সঙ্গে মশার অভিযোজন, বহনকারী ভাইরাসের রূপান্তর, ভাইরাসের স্বভাবের কোনো পরিবর্তন হচ্ছে কি না তা জানতে গবেষণা প্রয়োজন। মশা ধ্বংসকারী কীটনাশকের কার্যকারিতা পরীক্ষা করতে হবে। কিন্তু গবেষণার প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা, কারিগরি দক্ষতা ও ব্যবস্থাপনার অভাবে মশাকে নির্মূল করা যাচ্ছে না। সরকারের উদ্যোগ নেই। দীর্ঘদিন চেষ্টা করেও নিপসমে একটি মশা পরীক্ষাগার করা যায়নি।’
পরীক্ষাগারের বিষয়টি সরকারের অগ্রাধিকারে দেখা যাচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন কীটতত্ত্ববিদ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার। তিনি বলেন, ‘মশা ও রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষাগার থাকা প্রয়োজন। ভেক্টর নিয়ন্ত্রণ পরীক্ষাগার করার জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগকে ২০১৯ সালে অর্গানোগ্রামসহ রূপরেখা দিয়েছিলাম। সরকারের আগ্রহ দেখা যায়নি।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বক্তব্য
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলেছে, মশা নির্মূলে প্রজননস্থল খুঁজে তা ধ্বংস করা এবং জনসচেতনতা সৃষ্টির কাজ স্থানীয় সরকার বিভাগের। মশা নিয়ে গবেষণা করবে স্থানীয় সরকার বা প্রাণিসম্পদ বিভাগ। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ করে রোগীর চিকিৎসার সব কাজ। যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাণিবিদ্যা বিভাগ রয়েছে, সেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণাগার থাকবে। তাদের সঙ্গে স্থানীয় সরকার সম্পৃক্ত হবে। প্রয়োজন হলে স্বাস্থ্যসেবাও সম্পৃক্ত হবে।
রোগ নিয়ে গবেষণা নিয়মিত হচ্ছে উল্লেখ করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাপক হালিমুর রশিদ বলেন, ‘মশার জন্য দেশে পরীক্ষাগার নেই। তবে আইইডিসিআরসহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গু নিয়ে গবেষণা হচ্ছে।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবু জাফর বলেন, মশা নিয়ে বৃহৎ অর্থে গবেষণাগার নেই। তবে আইইডিসিআর, আইসিডিডিআরবিসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গু, কীট, টিকা নিয়ে গবেষণা হচ্ছে। রোগীর নমুনার ওপর অধিকতর গবেষণাও হচ্ছে।

বেশ কয়েক বছর ধরে দেশে ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত রোগ জনস্বাস্থ্যের জন্য উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এতে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলে আসছেন, মশা নির্মূল ও মশাবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য অন্যান্য ব্যবস্থা ও কৌশলের পাশাপাশি মশা পরীক্ষা এবং গবেষণাগারও প্রয়োজন। এতে করে স্থানীয় প্রজাতির মশার জিনগত বৈশিষ্ট্য, আচরণ ইত্যাদি বোঝার মাধ্যমে মশা নির্মূল ও রোগের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ সহজ হবে। তবে এ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টিতে সরকারের অগ্রাধিকার নেই বলে মন্তব্য করেছেন কীটতত্ত্ব ও রোগতত্ত্ববিদেরা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বিশ্বে সাড়ে ৩ হাজারের বেশি প্রজাতির মশা রয়েছে, যার মধ্যে ১০০ প্রজাতি মানবদেহে অন্তত ২০টি প্রাণঘাতী রোগ ছড়াতে সক্ষম। বাংলাদেশে ঠিক কত প্রজাতির মশা রয়েছে, তার সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি সরকার বা বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে। তবে বাংলাদেশে বর্তমানে মশা ও মাছিবাহিত নয়টি মারাত্মক রোগ দেখা যাচ্ছে বলে উল্লেখ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও), স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগ এবং সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)। তাদের তথ্য অনুযায়ী, এডিস মশা ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, লিম্ফ্যাটিক ফাইলেরিয়াসিস, জিকা; অ্যানোফিলিস মশা লিম্ফ্যাটিক ফাইলেরিয়াসিস, ম্যালেরিয়া; কিউলেক্স মশা জাপানিজ এনকেফালাইটিস, লিম্ফ্যাটিক ফাইলেরিয়াসিস, ওয়েস্ট নাইল ফিভার ও ফাইলেরিয়া এবং স্যান্ডফ্লাই নামের একধরনের মাছি কালাজ্বরের বাহক হিসেবে কাজ করে।
আমেরিকান মসকিউটো কন্ট্রোল অ্যাসোসিয়েশনের (এএমসিএ) তথ্যমতে, পৃথিবীর অন্য যেকোনো জীবের তুলনায় মশা মানুষের জন্য বেশি দুর্ভোগ সৃষ্টি করে। বিশ্বে বছরে ১০ লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হয় মশাবাহিত রোগের কারণে।
বাড়ছে রোগের প্রাদুর্ভাব
দেশে বর্তমানে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া এবং চিকুনগুনিয়া রোগের প্রকোপ বেশি। ২০২৩ সালে বাংলাদেশে ডেঙ্গুকে জনস্বাস্থ্যের জন্য উদ্বেগের বলে অভিহিত করেছে ডব্লিউএইচও। সরকারের তথ্য বলছে, দেশে ডেঙ্গুর সংক্রমণ ক্রমেই ঊর্ধ্বমুখী। সাম্প্রতিককালে দেশের সব অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে একসময় মূলত রাজধানী ঢাকায় সীমাবদ্ধ থাকা রোগটি। প্রথম ডেঙ্গু রোগের সরকারি পরিসংখ্যান পাওয়া যায় ২০০০ সালে। ২০১৯ সালে শহর ও গ্রাম উভয় স্থানে ছড়িয়ে পড়ে ডেঙ্গু। ইউরোপীয় ইউনিয়নের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (ইসিডিসি) ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ এখন ডেঙ্গুতে বিশ্বে সর্বোচ্চ মৃত্যু হারের দেশ।
ডেঙ্গুর মতোই জিকা এবং চিকুনগুনিয়াও ছড়ায় এডিস মশার মাধ্যমে। দেশে ২০০৮ সালে প্রথম চিকুনগুনিয়া শনাক্ত হয়। ২০১৭ সালে দেশজুড়ে ভাইরাল এ রোগ ছড়িয়ে পড়ে। দেশে জিকাও শনাক্ত হয়েছে।
ম্যালেরিয়া রোগ ছড়ায় স্ত্রী অ্যানোফিলিস মশার মাধ্যমে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, ২০০৭-২৪ সাল পর্যন্ত দেশে ৬ লাখ ১ হাজার মানুষ ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে মারা গেছে ৬৬৩ জন। চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ ও রংপুর বিভাগের ১৩ জেলায় ম্যালেরিয়ার সংক্রমণ ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। কিউলেক্স মশার দুটি প্রজাতি ও ম্যানসোনিয়া মশা দেশের অন্তত ৩৪টি জেলায় ফাইলেরিয়া বা গোদরোগ ছড়াচ্ছে। ১৯৯৩ সাল থেকে পাওয়া যাচ্ছে কালাজ্বরের রোগী। দেশে প্রথম জাপানিজ এনকেফালাইটিস রোগী শনাক্ত হয় ১৯৭৭ সালে। ওয়েস্ট নাইল ভাইরাসবাহিত জ্বরের সংক্রমণও শনাক্ত হয়েছে।
নেই পরীক্ষা বা গবেষণায় গুরুত্ব
মশাবাহিত রোগ বছরের পর বছর ভোগালেও এটি মোকাবিলায় সমন্বিত ও পূর্ণাঙ্গ সামর্থ্য গড়ে তোলা হচ্ছে না। অন্তত সিকি শতাব্দী ধরে কখনো কখনো প্রাণঘাতী হয়ে ওঠা ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। রোগের ধরন পরিবর্তন, মশকনিধন কর্মসূচির ত্রুটি ও ব্যর্থতা, জনসচেতনার প্রকট অভাবসহ বিভিন্ন কারণে ডেঙ্গুর দৌরাত্ম্য না কমে বরং বাড়ছে। মশা জনস্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকিগুলোর মধ্যে একটি উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা ভেক্টর ডিজিজ কন্ট্রোল ইন্টারন্যাশনাল (ভিডিসিআই) বলেছে, মশা নির্মূলে কার্যকর ব্যবস্থাপনা, মশার ক্রিয়াকলাপ, মশার প্রজননের ক্রমবর্ধমান গতিশীলতা ও কীটনাশক নিয়ে বিস্তৃত পদক্ষেপ নিতে হলে বৈজ্ঞানিক পরীক্ষাগারে গবেষণা জরুরি। অস্ট্রেলিয়ার কিউআইএমআর বার্গোফার (সাবেক কুইন্সল্যান্ড ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল রিসার্চ), যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিন ও ব্রাজিলের ওসওয়াল্ডো ক্রুজ ইনস্টিটিউটও বলছে, রোগপ্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের জন্য মশার পরীক্ষাগার গুরুত্বপূর্ণ। মশাবাহিত রোগে আক্রান্তের হার বেশি এমনসব অঞ্চল থেকে মশা সংগ্রহ করে গবেষণা করতে হবে। মশার জীববিজ্ঞান, আচরণ, প্রজাতি, বহনকারী ভাইরাসের পরিবর্তন বা রূপান্তর, মশার ঘনত্ব, প্রজাতি শনাক্তকরণ, কীটনাশকের কার্যকারিতা এবং রোগের সংক্রমণের গতি-প্রকৃতি নিয়ে গবেষণা করা প্রয়োজন।
কিন্তু অনেক দেশেই মশার মতো রোগের বাহক অর্থাৎ ‘ভেক্টর’ নিয়ন্ত্রণে পরীক্ষাগার থাকলেও বাংলাদেশে মতো মশাবহুল দেশে তা নেই। অথচ কীটতত্ত্ববিদেরা বলছেন, মশাবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব তেমন নেই, এমন অনেক দেশেও সমন্বিত পরীক্ষাগার রয়েছে। যেখানে মশার ধরন, মশার জীববিজ্ঞান, প্রজনন, কীটনাশক, ভাইরাস বা পরজীবী নিয়ে নিয়মিত গবেষণা করা হয়। বাংলাদেশে মশার বেড়ে ওঠা ও পরিপক্বতা অর্জন, জীবাণুর সঙ্গে সম্পর্ক ইত্যাদি পরিবর্তন হচ্ছে। এ নিয়ে গবেষণা প্রয়োজন; কিন্তু তার ব্যবস্থা নেই।
জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের (নিপসম) কীটতত্ত্ব বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মো. গোলাম ছারোয়ার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আবহাওয়ার সঙ্গে মশার অভিযোজন, বহনকারী ভাইরাসের রূপান্তর, ভাইরাসের স্বভাবের কোনো পরিবর্তন হচ্ছে কি না তা জানতে গবেষণা প্রয়োজন। মশা ধ্বংসকারী কীটনাশকের কার্যকারিতা পরীক্ষা করতে হবে। কিন্তু গবেষণার প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা, কারিগরি দক্ষতা ও ব্যবস্থাপনার অভাবে মশাকে নির্মূল করা যাচ্ছে না। সরকারের উদ্যোগ নেই। দীর্ঘদিন চেষ্টা করেও নিপসমে একটি মশা পরীক্ষাগার করা যায়নি।’
পরীক্ষাগারের বিষয়টি সরকারের অগ্রাধিকারে দেখা যাচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন কীটতত্ত্ববিদ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার। তিনি বলেন, ‘মশা ও রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষাগার থাকা প্রয়োজন। ভেক্টর নিয়ন্ত্রণ পরীক্ষাগার করার জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগকে ২০১৯ সালে অর্গানোগ্রামসহ রূপরেখা দিয়েছিলাম। সরকারের আগ্রহ দেখা যায়নি।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বক্তব্য
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলেছে, মশা নির্মূলে প্রজননস্থল খুঁজে তা ধ্বংস করা এবং জনসচেতনতা সৃষ্টির কাজ স্থানীয় সরকার বিভাগের। মশা নিয়ে গবেষণা করবে স্থানীয় সরকার বা প্রাণিসম্পদ বিভাগ। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ করে রোগীর চিকিৎসার সব কাজ। যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাণিবিদ্যা বিভাগ রয়েছে, সেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণাগার থাকবে। তাদের সঙ্গে স্থানীয় সরকার সম্পৃক্ত হবে। প্রয়োজন হলে স্বাস্থ্যসেবাও সম্পৃক্ত হবে।
রোগ নিয়ে গবেষণা নিয়মিত হচ্ছে উল্লেখ করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাপক হালিমুর রশিদ বলেন, ‘মশার জন্য দেশে পরীক্ষাগার নেই। তবে আইইডিসিআরসহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গু নিয়ে গবেষণা হচ্ছে।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবু জাফর বলেন, মশা নিয়ে বৃহৎ অর্থে গবেষণাগার নেই। তবে আইইডিসিআর, আইসিডিডিআরবিসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গু, কীট, টিকা নিয়ে গবেষণা হচ্ছে। রোগীর নমুনার ওপর অধিকতর গবেষণাও হচ্ছে।

ওজন কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া যেমন কঠিন, সেই সিদ্ধান্তে দীর্ঘদিন অটল থাকা অনেকের ক্ষেত্রে আরও কঠিন। সঠিক অনুপ্রেরণা না থাকলে ওজন কমানো শুরু করাই কঠিন হয়ে পড়ে। আর শুরু করলেও মাঝপথে থেমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। তবে কিছু বাস্তবসম্মত কৌশল অনুসরণ করলে ওজন কমানোর লক্ষ্য অর্জন সহজ হতে পারে।
৬ ঘণ্টা আগে
থাইরয়েড হরমোন আমাদের গলার সামনে থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত একধরনের হরমোন কিংবা প্রাণরস। এটি গলার সামনে থেকে নিঃসৃত হলেও সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে এবং পুরো শরীরে কাজ করে।
৬ ঘণ্টা আগে
সুষম খাবারের ৬টি উপাদানের অন্যতম ভিটামিন ও খনিজ লবণ। এগুলো আমাদের শরীরের চালিকাশক্তির অন্যতম উপাদান হিসেবে বিবেচিত। শরীরের একেকটি অঙ্গের সুরক্ষায় একেক ধরনের ভিটামিন প্রয়োজন হয়। যেমন চুল ও চোখের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘এ’, ত্বকের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘বি’ ও ‘সি’, হাড় ও দাঁতের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘ডি’ প্রয়োজন হয়।
৭ ঘণ্টা আগে
ঝাঁকির কারণে শিশুর মস্তিষ্কে আঘাত বা শেকেন বেবি সিনড্রোম হলো শিশু নির্যাতনের একটি মারাত্মক ও জীবনঘাতী রূপ। এটি প্রধানত ২ বছরের কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে দেখা যায়। এই অবস্থায় শিশুকে জোরে জোরে ঝাঁকানোর ফলে মস্তিষ্ক, চোখ ও ঘাড়ে গুরুতর আঘাত সৃষ্টি হয়, যদিও বাহ্যিকভাবে অনেক সময় কোনো...
৮ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক

ওজন কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া যেমন কঠিন, সেই সিদ্ধান্তে দীর্ঘদিন অটল থাকা অনেকের ক্ষেত্রে আরও কঠিন। সঠিক অনুপ্রেরণা না থাকলে ওজন কমানো শুরু করাই কঠিন হয়ে পড়ে। আর শুরু করলেও মাঝপথে থেমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। তবে কিছু বাস্তবসম্মত কৌশল অনুসরণ করলে ওজন কমানোর লক্ষ্য অর্জন সহজ হতে পারে।
নিজেকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি না ভাঙা
ওজন কমানোর ক্ষেত্রে নিজের সঙ্গে বোঝাপড়া বেশ ভূমিকা রাখতে পারে। কেউ কেউ লিখিত পরিকল্পনা বা অ্যাপের মাধ্যমে প্রতিদিনের লক্ষ্য ঠিক করেন। আবার কেউ জিমের সদস্যপদ বা ব্যায়াম ক্লাসে ভর্তি হয়ে নিজেকে দায়বদ্ধ করে তোলেন। এতে মাঝপথে হাল ছেড়ে দেওয়ার প্রবণতা কমে।
জীবনযাপনের সঙ্গে মানানসই পরিকল্পনা বেছে নেওয়া
যে ডায়েট বা ব্যায়াম পরিকল্পনা দীর্ঘদিন মেনে চলা সম্ভব নয়, তা এড়িয়ে চলা ভালো। অতিরিক্ত কঠোর নিয়ম অথবা সবকিছু একেবারে বাদ দেওয়ার মানসিকতা অনেক সময় উল্টো ফল বয়ে আনে। বরং ক্যালরি নিয়ন্ত্রণ, খাবারের পরিমাণ কমানো, অতি প্রক্রিয়াজাত খাবার কম খাওয়া এবং বেশি করে ফল ও সবজি অন্তর্ভুক্ত করার মতো অভ্যাসগুলো দীর্ঘ মেয়াদে উপকারী।
পছন্দের ব্যায়াম খোঁজা
ওজন কমাতে শারীরিক কার্যকলাপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে যে ব্যায়াম আপনার ভালো লাগে না, তা বেশি দিন চালিয়ে যাওয়া কঠিন। হাঁটা, সাঁতার, নাচ, সাইক্লিং কিংবা জিম—যে ধরনের ব্যায়াম উপভোগ করেন, সেটিই বেছে নেওয়া ভালো।
যে বিষয়গুলো অনুপ্রেরণা জোগায়
ওজন কমানোর পুরো যাত্রায় শুধু শেষ লক্ষ্যের দিকে তাকিয়ে থাকলে হতাশা আসতে পারে। তাই ছোট ছোট প্রক্রিয়াগত লক্ষ্য ঠিক করা জরুরি। যেমন সপ্তাহে নির্দিষ্ট কয়েক দিন ব্যায়াম করা বা প্রতিটি খাবারে সবজি রাখা। এসব লক্ষ্য পূরণ হলে আত্মবিশ্বাস বাড়ে। নিজের অগ্রগতি লিখে রাখাও গুরুত্বপূর্ণ। খাবার ও দৈনন্দিন অভ্যাসের হিসাব রাখলে কোথায় ভুল হচ্ছে কিংবা কোন অভ্যাস ওজন বাড়াচ্ছে, তা সহজে ধরা পড়ে।
সামাজিক সহায়তা এবং ইতিবাচক মনোভাব
পরিবার ও বন্ধুদের নিজের লক্ষ্য জানালে তারা মানসিক সমর্থন দিতে পারে। কেউ কেউ ওজন কমানোর সঙ্গী পেলে আরও অনুপ্রাণিত বোধ করে। পাশাপাশি নিজের সঙ্গে ইতিবাচকভাবে কথা বলা এবং পরিবর্তনের প্রতি দৃঢ় মনোভাব রাখা গুরুত্বপূর্ণ।
বাধা এলে যা করতে হবে
জীবনে নানা ধরনের চাপ এবং সামাজিক অনুষ্ঠানের কারণে পরিকল্পনা ভেস্তে যেতে পারে। এ ধরনের পরিস্থিতির জন্য আগেই মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকলে আবার সঠিক পথে ফেরা সহজ হয়। নিখুঁত হওয়ার চেষ্টা না করে নিজের ভুল মেনে নেওয়া এবং নিজেকে ক্ষমা করাও অনুপ্রেরণা ধরে রাখতে সহায়ক।
ওজন কমানোর ক্ষেত্রে অনুপ্রেরণাই সবচেয়ে বড় শক্তি। সবার অনুপ্রেরণার উৎস এক নয়। তাই নিজের জন্য কার্যকর পদ্ধতি খুঁজে নেওয়াই হলো মূল চাবিকাঠি।
তবে ধৈর্য ধরুন, ছোট ছোট সাফল্য উদ্যাপন করুন
এবং প্রয়োজনে সাহায্য চাইতে সংকোচ করবেন না। সঠিক পরিকল্পনা ও সমর্থন থাকলে ওজন কমানোর লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব।
সূত্র: হেলথ লাইন

ওজন কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া যেমন কঠিন, সেই সিদ্ধান্তে দীর্ঘদিন অটল থাকা অনেকের ক্ষেত্রে আরও কঠিন। সঠিক অনুপ্রেরণা না থাকলে ওজন কমানো শুরু করাই কঠিন হয়ে পড়ে। আর শুরু করলেও মাঝপথে থেমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। তবে কিছু বাস্তবসম্মত কৌশল অনুসরণ করলে ওজন কমানোর লক্ষ্য অর্জন সহজ হতে পারে।
নিজেকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি না ভাঙা
ওজন কমানোর ক্ষেত্রে নিজের সঙ্গে বোঝাপড়া বেশ ভূমিকা রাখতে পারে। কেউ কেউ লিখিত পরিকল্পনা বা অ্যাপের মাধ্যমে প্রতিদিনের লক্ষ্য ঠিক করেন। আবার কেউ জিমের সদস্যপদ বা ব্যায়াম ক্লাসে ভর্তি হয়ে নিজেকে দায়বদ্ধ করে তোলেন। এতে মাঝপথে হাল ছেড়ে দেওয়ার প্রবণতা কমে।
জীবনযাপনের সঙ্গে মানানসই পরিকল্পনা বেছে নেওয়া
যে ডায়েট বা ব্যায়াম পরিকল্পনা দীর্ঘদিন মেনে চলা সম্ভব নয়, তা এড়িয়ে চলা ভালো। অতিরিক্ত কঠোর নিয়ম অথবা সবকিছু একেবারে বাদ দেওয়ার মানসিকতা অনেক সময় উল্টো ফল বয়ে আনে। বরং ক্যালরি নিয়ন্ত্রণ, খাবারের পরিমাণ কমানো, অতি প্রক্রিয়াজাত খাবার কম খাওয়া এবং বেশি করে ফল ও সবজি অন্তর্ভুক্ত করার মতো অভ্যাসগুলো দীর্ঘ মেয়াদে উপকারী।
পছন্দের ব্যায়াম খোঁজা
ওজন কমাতে শারীরিক কার্যকলাপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে যে ব্যায়াম আপনার ভালো লাগে না, তা বেশি দিন চালিয়ে যাওয়া কঠিন। হাঁটা, সাঁতার, নাচ, সাইক্লিং কিংবা জিম—যে ধরনের ব্যায়াম উপভোগ করেন, সেটিই বেছে নেওয়া ভালো।
যে বিষয়গুলো অনুপ্রেরণা জোগায়
ওজন কমানোর পুরো যাত্রায় শুধু শেষ লক্ষ্যের দিকে তাকিয়ে থাকলে হতাশা আসতে পারে। তাই ছোট ছোট প্রক্রিয়াগত লক্ষ্য ঠিক করা জরুরি। যেমন সপ্তাহে নির্দিষ্ট কয়েক দিন ব্যায়াম করা বা প্রতিটি খাবারে সবজি রাখা। এসব লক্ষ্য পূরণ হলে আত্মবিশ্বাস বাড়ে। নিজের অগ্রগতি লিখে রাখাও গুরুত্বপূর্ণ। খাবার ও দৈনন্দিন অভ্যাসের হিসাব রাখলে কোথায় ভুল হচ্ছে কিংবা কোন অভ্যাস ওজন বাড়াচ্ছে, তা সহজে ধরা পড়ে।
সামাজিক সহায়তা এবং ইতিবাচক মনোভাব
পরিবার ও বন্ধুদের নিজের লক্ষ্য জানালে তারা মানসিক সমর্থন দিতে পারে। কেউ কেউ ওজন কমানোর সঙ্গী পেলে আরও অনুপ্রাণিত বোধ করে। পাশাপাশি নিজের সঙ্গে ইতিবাচকভাবে কথা বলা এবং পরিবর্তনের প্রতি দৃঢ় মনোভাব রাখা গুরুত্বপূর্ণ।
বাধা এলে যা করতে হবে
জীবনে নানা ধরনের চাপ এবং সামাজিক অনুষ্ঠানের কারণে পরিকল্পনা ভেস্তে যেতে পারে। এ ধরনের পরিস্থিতির জন্য আগেই মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকলে আবার সঠিক পথে ফেরা সহজ হয়। নিখুঁত হওয়ার চেষ্টা না করে নিজের ভুল মেনে নেওয়া এবং নিজেকে ক্ষমা করাও অনুপ্রেরণা ধরে রাখতে সহায়ক।
ওজন কমানোর ক্ষেত্রে অনুপ্রেরণাই সবচেয়ে বড় শক্তি। সবার অনুপ্রেরণার উৎস এক নয়। তাই নিজের জন্য কার্যকর পদ্ধতি খুঁজে নেওয়াই হলো মূল চাবিকাঠি।
তবে ধৈর্য ধরুন, ছোট ছোট সাফল্য উদ্যাপন করুন
এবং প্রয়োজনে সাহায্য চাইতে সংকোচ করবেন না। সঠিক পরিকল্পনা ও সমর্থন থাকলে ওজন কমানোর লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব।
সূত্র: হেলথ লাইন

বেশ কয়েক বছর ধরে দেশে ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত রোগ জনস্বাস্থ্যের জন্য উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এতে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলে আসছেন, মশা নির্মূল ও মশাবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য অন্যান্য ব্যবস্থা ও কৌশলের পাশাপাশি মশা পরীক্ষা এবং গবেষণাগারও প্রয়োজন।
১৪ জুলাই ২০২৫
থাইরয়েড হরমোন আমাদের গলার সামনে থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত একধরনের হরমোন কিংবা প্রাণরস। এটি গলার সামনে থেকে নিঃসৃত হলেও সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে এবং পুরো শরীরে কাজ করে।
৬ ঘণ্টা আগে
সুষম খাবারের ৬টি উপাদানের অন্যতম ভিটামিন ও খনিজ লবণ। এগুলো আমাদের শরীরের চালিকাশক্তির অন্যতম উপাদান হিসেবে বিবেচিত। শরীরের একেকটি অঙ্গের সুরক্ষায় একেক ধরনের ভিটামিন প্রয়োজন হয়। যেমন চুল ও চোখের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘এ’, ত্বকের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘বি’ ও ‘সি’, হাড় ও দাঁতের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘ডি’ প্রয়োজন হয়।
৭ ঘণ্টা আগে
ঝাঁকির কারণে শিশুর মস্তিষ্কে আঘাত বা শেকেন বেবি সিনড্রোম হলো শিশু নির্যাতনের একটি মারাত্মক ও জীবনঘাতী রূপ। এটি প্রধানত ২ বছরের কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে দেখা যায়। এই অবস্থায় শিশুকে জোরে জোরে ঝাঁকানোর ফলে মস্তিষ্ক, চোখ ও ঘাড়ে গুরুতর আঘাত সৃষ্টি হয়, যদিও বাহ্যিকভাবে অনেক সময় কোনো...
৮ ঘণ্টা আগেডা. মো. মাজহারুল হক তানিম

থাইরয়েড হরমোন আমাদের গলার সামনে থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত একধরনের হরমোন কিংবা প্রাণরস। এটি গলার সামনে থেকে নিঃসৃত হলেও সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে এবং পুরো শরীরে কাজ করে।
হাইপোথাইরয়েডিজমের লক্ষণ
শীতকালীন সবজি খাওয়ায় সতর্কতা
কাবেজ জাতীয় সবজি; যেমন ফুলকপি, বাঁধাকপি, লেটুসপাতায় থাকে গয়ট্রোজেন নামে একধরনের উপাদান। এটি থাইরয়েড হরমোন তৈরিতে বাধা দিয়ে থাকে। তাই যাঁদের হাইপোথাইরয়েড আছে, তাঁদের এসব সবজি কাঁচা অবস্থায় খাওয়া যাবে না। কিন্তু রান্না করে অল্প খাওয়া যাবে।
শীতকালে থাইরয়েড রোগীদের হরমোনের চাহিদা বেড়ে যায়। তাই অতিরিক্ত দুর্বল লাগে, ঠান্ডা ভাব এবং কাজের গতি ধীর হতে পারে।
শীতকালে থাইরয়েড রোগীদের করণীয়
গরম থাকার চেষ্টা করুন: জ্যাকেট কিংবা কম্বল ইত্যাদির মতো গরম কাপড় ব্যবহার করতে হবে। গরম খাবার বেশি খেতে হবে; যেমন স্যুপ কিংবা চা।
ভিটামিন ‘ডি’ বাড়ান: সকাল ৯ থেকে ১০টার দিকে রোদে থাকার চেষ্টা করুন। ভিটামিন ‘ডি’ লেভেল বেশি কম থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শে ভিটামিন ‘ডি’ সাপ্লিমেন্ট নিতে পারেন।
খাদ্যাভ্যাস: পর্যাপ্ত পানি পান করুন। ভিটামিন ‘সি ও বি’ সমৃদ্ধ এবং প্রোটিনযুক্ত খাবার বেশি খেতে হবে। প্রক্রিয়াজাত খাবার কম খান।
মন নিয়ন্ত্রণ করুন: মুড সুইং খুবই সাধারণ বিষয় থাইরয়েড রোগীদের জন্য। তাই নিজের মন নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এ ছাড়া প্রফুল্ল থাকার চেষ্টা করুন, কর্মঠ থাকুন, দুশ্চিন্তা ঝেড়ে ফেলুন। প্রয়োজনে লাইট থেরাপি নিতে পারেন।
শীতে থাইরয়েড রোগীদের ত্বকের যত্ন
থাইরয়েড রোগীদের ত্বক স্বভাবতই শুষ্ক থাকে। শীতকালে তা আরও শুষ্ক হয়ে ওঠে। তাই শীতকালে গোসলের পর ময়শ্চারাইজার, লোশন কিংবা ক্রিম নিয়মিত ব্যবহার করুন। ত্বকে চুলকানি অথবা র্যাশ থাকলে চর্ম ও যৌন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেবেন।
নিয়মিত ফলোআপ
৩ থেকে ৬ মাস পরপর আপনার হরমোন ও থাইরয়েড, বিশেষত এন্ডোক্রাইনোলজিস্টের পরামর্শ নিন। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধের মাত্রা কম কিংবা বেশি করা যাবে না।
এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট, ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হাসপাতাল, কাকরাইল, ঢাকা

থাইরয়েড হরমোন আমাদের গলার সামনে থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত একধরনের হরমোন কিংবা প্রাণরস। এটি গলার সামনে থেকে নিঃসৃত হলেও সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে এবং পুরো শরীরে কাজ করে।
হাইপোথাইরয়েডিজমের লক্ষণ
শীতকালীন সবজি খাওয়ায় সতর্কতা
কাবেজ জাতীয় সবজি; যেমন ফুলকপি, বাঁধাকপি, লেটুসপাতায় থাকে গয়ট্রোজেন নামে একধরনের উপাদান। এটি থাইরয়েড হরমোন তৈরিতে বাধা দিয়ে থাকে। তাই যাঁদের হাইপোথাইরয়েড আছে, তাঁদের এসব সবজি কাঁচা অবস্থায় খাওয়া যাবে না। কিন্তু রান্না করে অল্প খাওয়া যাবে।
শীতকালে থাইরয়েড রোগীদের হরমোনের চাহিদা বেড়ে যায়। তাই অতিরিক্ত দুর্বল লাগে, ঠান্ডা ভাব এবং কাজের গতি ধীর হতে পারে।
শীতকালে থাইরয়েড রোগীদের করণীয়
গরম থাকার চেষ্টা করুন: জ্যাকেট কিংবা কম্বল ইত্যাদির মতো গরম কাপড় ব্যবহার করতে হবে। গরম খাবার বেশি খেতে হবে; যেমন স্যুপ কিংবা চা।
ভিটামিন ‘ডি’ বাড়ান: সকাল ৯ থেকে ১০টার দিকে রোদে থাকার চেষ্টা করুন। ভিটামিন ‘ডি’ লেভেল বেশি কম থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শে ভিটামিন ‘ডি’ সাপ্লিমেন্ট নিতে পারেন।
খাদ্যাভ্যাস: পর্যাপ্ত পানি পান করুন। ভিটামিন ‘সি ও বি’ সমৃদ্ধ এবং প্রোটিনযুক্ত খাবার বেশি খেতে হবে। প্রক্রিয়াজাত খাবার কম খান।
মন নিয়ন্ত্রণ করুন: মুড সুইং খুবই সাধারণ বিষয় থাইরয়েড রোগীদের জন্য। তাই নিজের মন নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এ ছাড়া প্রফুল্ল থাকার চেষ্টা করুন, কর্মঠ থাকুন, দুশ্চিন্তা ঝেড়ে ফেলুন। প্রয়োজনে লাইট থেরাপি নিতে পারেন।
শীতে থাইরয়েড রোগীদের ত্বকের যত্ন
থাইরয়েড রোগীদের ত্বক স্বভাবতই শুষ্ক থাকে। শীতকালে তা আরও শুষ্ক হয়ে ওঠে। তাই শীতকালে গোসলের পর ময়শ্চারাইজার, লোশন কিংবা ক্রিম নিয়মিত ব্যবহার করুন। ত্বকে চুলকানি অথবা র্যাশ থাকলে চর্ম ও যৌন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেবেন।
নিয়মিত ফলোআপ
৩ থেকে ৬ মাস পরপর আপনার হরমোন ও থাইরয়েড, বিশেষত এন্ডোক্রাইনোলজিস্টের পরামর্শ নিন। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধের মাত্রা কম কিংবা বেশি করা যাবে না।
এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট, ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হাসপাতাল, কাকরাইল, ঢাকা

বেশ কয়েক বছর ধরে দেশে ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত রোগ জনস্বাস্থ্যের জন্য উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এতে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলে আসছেন, মশা নির্মূল ও মশাবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য অন্যান্য ব্যবস্থা ও কৌশলের পাশাপাশি মশা পরীক্ষা এবং গবেষণাগারও প্রয়োজন।
১৪ জুলাই ২০২৫
ওজন কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া যেমন কঠিন, সেই সিদ্ধান্তে দীর্ঘদিন অটল থাকা অনেকের ক্ষেত্রে আরও কঠিন। সঠিক অনুপ্রেরণা না থাকলে ওজন কমানো শুরু করাই কঠিন হয়ে পড়ে। আর শুরু করলেও মাঝপথে থেমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। তবে কিছু বাস্তবসম্মত কৌশল অনুসরণ করলে ওজন কমানোর লক্ষ্য অর্জন সহজ হতে পারে।
৬ ঘণ্টা আগে
সুষম খাবারের ৬টি উপাদানের অন্যতম ভিটামিন ও খনিজ লবণ। এগুলো আমাদের শরীরের চালিকাশক্তির অন্যতম উপাদান হিসেবে বিবেচিত। শরীরের একেকটি অঙ্গের সুরক্ষায় একেক ধরনের ভিটামিন প্রয়োজন হয়। যেমন চুল ও চোখের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘এ’, ত্বকের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘বি’ ও ‘সি’, হাড় ও দাঁতের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘ডি’ প্রয়োজন হয়।
৭ ঘণ্টা আগে
ঝাঁকির কারণে শিশুর মস্তিষ্কে আঘাত বা শেকেন বেবি সিনড্রোম হলো শিশু নির্যাতনের একটি মারাত্মক ও জীবনঘাতী রূপ। এটি প্রধানত ২ বছরের কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে দেখা যায়। এই অবস্থায় শিশুকে জোরে জোরে ঝাঁকানোর ফলে মস্তিষ্ক, চোখ ও ঘাড়ে গুরুতর আঘাত সৃষ্টি হয়, যদিও বাহ্যিকভাবে অনেক সময় কোনো...
৮ ঘণ্টা আগেমো. ইকবাল হোসেন

সুষম খাবারের ৬টি উপাদানের অন্যতম ভিটামিন ও খনিজ লবণ। এগুলো আমাদের শরীরের চালিকাশক্তির অন্যতম উপাদান হিসেবে বিবেচিত। শরীরের একেকটি অঙ্গের সুরক্ষায় একেক ধরনের ভিটামিন প্রয়োজন হয়। যেমন চুল ও চোখের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘এ’, ত্বকের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘বি’ ও ‘সি’, হাড় ও দাঁতের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘ডি’ প্রয়োজন হয়। আবার ত্বক, চুল ও প্রজননতন্ত্রের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘ই’-এর ভূমিকা অনেক বেশি। এ ছাড়া শরীরের বিভিন্ন রকমের পেশি এবং স্নায়ুতন্ত্রের সুরক্ষায় খনিজ লবণের ভূমিকা অনেক বেশি।
এই ভিটামিন ও খনিজ লবণগুলো আমরা প্রধানত শাকসবজি ও ফলমূল থেকে পেয়ে থাকি। কিন্তু কিছু অসাবধানতার ফলে শাকসবজি ও ফলমূলের পুষ্টির একটা বড় অংশ হারিয়ে যায়।
আমরা ঐতিহ্যগতভাবে শাকসবজি কাটার পর পানি দিয়ে কয়েকবার ধুয়ে থাকি। এতে পানিতে দ্রবণীয় ভিটামিন ‘বি ও সি’ পানির সঙ্গে মিশে শাকসবজির বাইরে চলে যায়। ফলে আমরা ওই শাকসবজি থেকে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ লবণ পাই না। তাই সেগুলো কাটা বা খোসা ছাড়ানোর আগে ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। এতে ময়লা পরিষ্কারের পাশাপাশি সব পুষ্টিগুণ অক্ষুণ্ন থাকবে। শাকসবজি কাটার আগে বঁটি, ছুরি বা গ্রেটারও খুব ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে।
শাকসবজি রান্নার নামে দীর্ঘ সময় আগুনের তাপে রাখা যাবে না। অল্প তাপেই শাকসবজিতে থাকা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া বা জীবাণু মারা যায়। এগুলো যত কম সময় সেদ্ধ করা হবে, তত বেশি পুষ্টিগুণ অক্ষুণ্ণ থাকবে। যেমন দীর্ঘ সময় ধরে রান্না করলে শাকসবজির প্রায় ৫০ শতাংশ পটাশিয়াম নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু এটি শরীরের জন্য অতিপ্রয়োজনীয় খনিজ। ফলে অল্প আঁচে ভাপানো শাকসবজি খাওয়া ভালো।
প্রতিটি শাকসবজির নিজস্ব রং বজায় রেখে রান্না করলে তার পুষ্টিগুণ বেশি বজায় থাকবে। যেমন গাজর রান্নার পর লাল রং, শিম রান্নার পর সবুজ রং কিংবা ফুলকপির সাদা রং বজায় থাকতে হবে। রান্না করতে গিয়ে শাকসবজির রং যত নষ্ট হবে, তার পুষ্টিগুণ তত বেশি নষ্ট হবে।
অনেক সময় রাতে শাকসবজি কেটে রেখে দেওয়া হয় সকালে রান্না করার জন্য। অথবা সকালে কেটে রাখি দুপুরে রান্না করার জন্য। এভাবে দীর্ঘ সময় কেটে রেখে দিলে শাকসবজির কাটা অংশ বাতাসের সংস্পর্শে এসে জারণ-বিজারণ বিক্রিয়ার মাধ্যমে পুষ্টিগুণ নষ্ট করে। এভাবে কেটে রাখা শাকসবজিতে বিষক্রিয়াও হতে পারে। তাই এর সঠিক পুষ্টিগুণ বজায় রাখতে রাতে কেটে না রেখে রান্নার আগে কেটে দ্রুত রান্না করুন।
শাকসবজি কাটার কাজে ধারালো বঁটি অথবা ছুরি ব্যবহার করতে হবে। ভোঁতা বঁটি বা ছুরি দিয়ে এগুলো কাটার পর অনেক প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান নষ্ট হতে পারে। এ ছাড়া ভোঁতা বঁটি বা ছুরি দিয়ে কেটে রাখা শাকসবজিতে দ্রুত ব্যাকটেরিয়া কিংবা ছত্রাকের আক্রমণ হতে পারে।
সবজি ছোট টুকরা করে না কেটে যথাসম্ভব বড় টুকরা করে কাটবেন। ছোট টুকরা করে কাটলে তাপে বেশি পরিমাণে পুষ্টিগুণ নষ্ট হতে পারে। কিন্তু টুকরা বড় রাখলে বেশি তাপে রান্নায়ও ভেতরের পুষ্টিগুণ সহজে নষ্ট হয় না।
গাজর, পটোল, লাউ, শসা, মিষ্টিকুমড়ার মতো সবজিগুলো খোসাসহ রান্না করতে হবে। এসব সবজির খোসায়ও অনেক ভিটামিন ও মিনারেল থাকে।
শাকসবজি ভাজা ভাজা না করে রান্না করে খেলে বেশি পুষ্টিগুণ পাওয়া যায়। প্রথমত ভাজা করতে হলে খুব ছোট টুকরা করে কাটতে হয়। দ্বিতীয়ত ভাজি করতে হলে দীর্ঘ সময় তাপে রাখতে হয়। এই দুটি বিষয় শাকসবজির পুষ্টিগুণ অনেক কমিয়ে দেয়। তাই এগুলো ঝোল করে রান্না করে খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে।
জ্যেষ্ঠ পুষ্টি কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল

সুষম খাবারের ৬টি উপাদানের অন্যতম ভিটামিন ও খনিজ লবণ। এগুলো আমাদের শরীরের চালিকাশক্তির অন্যতম উপাদান হিসেবে বিবেচিত। শরীরের একেকটি অঙ্গের সুরক্ষায় একেক ধরনের ভিটামিন প্রয়োজন হয়। যেমন চুল ও চোখের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘এ’, ত্বকের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘বি’ ও ‘সি’, হাড় ও দাঁতের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘ডি’ প্রয়োজন হয়। আবার ত্বক, চুল ও প্রজননতন্ত্রের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘ই’-এর ভূমিকা অনেক বেশি। এ ছাড়া শরীরের বিভিন্ন রকমের পেশি এবং স্নায়ুতন্ত্রের সুরক্ষায় খনিজ লবণের ভূমিকা অনেক বেশি।
এই ভিটামিন ও খনিজ লবণগুলো আমরা প্রধানত শাকসবজি ও ফলমূল থেকে পেয়ে থাকি। কিন্তু কিছু অসাবধানতার ফলে শাকসবজি ও ফলমূলের পুষ্টির একটা বড় অংশ হারিয়ে যায়।
আমরা ঐতিহ্যগতভাবে শাকসবজি কাটার পর পানি দিয়ে কয়েকবার ধুয়ে থাকি। এতে পানিতে দ্রবণীয় ভিটামিন ‘বি ও সি’ পানির সঙ্গে মিশে শাকসবজির বাইরে চলে যায়। ফলে আমরা ওই শাকসবজি থেকে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ লবণ পাই না। তাই সেগুলো কাটা বা খোসা ছাড়ানোর আগে ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। এতে ময়লা পরিষ্কারের পাশাপাশি সব পুষ্টিগুণ অক্ষুণ্ন থাকবে। শাকসবজি কাটার আগে বঁটি, ছুরি বা গ্রেটারও খুব ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে।
শাকসবজি রান্নার নামে দীর্ঘ সময় আগুনের তাপে রাখা যাবে না। অল্প তাপেই শাকসবজিতে থাকা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া বা জীবাণু মারা যায়। এগুলো যত কম সময় সেদ্ধ করা হবে, তত বেশি পুষ্টিগুণ অক্ষুণ্ণ থাকবে। যেমন দীর্ঘ সময় ধরে রান্না করলে শাকসবজির প্রায় ৫০ শতাংশ পটাশিয়াম নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু এটি শরীরের জন্য অতিপ্রয়োজনীয় খনিজ। ফলে অল্প আঁচে ভাপানো শাকসবজি খাওয়া ভালো।
প্রতিটি শাকসবজির নিজস্ব রং বজায় রেখে রান্না করলে তার পুষ্টিগুণ বেশি বজায় থাকবে। যেমন গাজর রান্নার পর লাল রং, শিম রান্নার পর সবুজ রং কিংবা ফুলকপির সাদা রং বজায় থাকতে হবে। রান্না করতে গিয়ে শাকসবজির রং যত নষ্ট হবে, তার পুষ্টিগুণ তত বেশি নষ্ট হবে।
অনেক সময় রাতে শাকসবজি কেটে রেখে দেওয়া হয় সকালে রান্না করার জন্য। অথবা সকালে কেটে রাখি দুপুরে রান্না করার জন্য। এভাবে দীর্ঘ সময় কেটে রেখে দিলে শাকসবজির কাটা অংশ বাতাসের সংস্পর্শে এসে জারণ-বিজারণ বিক্রিয়ার মাধ্যমে পুষ্টিগুণ নষ্ট করে। এভাবে কেটে রাখা শাকসবজিতে বিষক্রিয়াও হতে পারে। তাই এর সঠিক পুষ্টিগুণ বজায় রাখতে রাতে কেটে না রেখে রান্নার আগে কেটে দ্রুত রান্না করুন।
শাকসবজি কাটার কাজে ধারালো বঁটি অথবা ছুরি ব্যবহার করতে হবে। ভোঁতা বঁটি বা ছুরি দিয়ে এগুলো কাটার পর অনেক প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান নষ্ট হতে পারে। এ ছাড়া ভোঁতা বঁটি বা ছুরি দিয়ে কেটে রাখা শাকসবজিতে দ্রুত ব্যাকটেরিয়া কিংবা ছত্রাকের আক্রমণ হতে পারে।
সবজি ছোট টুকরা করে না কেটে যথাসম্ভব বড় টুকরা করে কাটবেন। ছোট টুকরা করে কাটলে তাপে বেশি পরিমাণে পুষ্টিগুণ নষ্ট হতে পারে। কিন্তু টুকরা বড় রাখলে বেশি তাপে রান্নায়ও ভেতরের পুষ্টিগুণ সহজে নষ্ট হয় না।
গাজর, পটোল, লাউ, শসা, মিষ্টিকুমড়ার মতো সবজিগুলো খোসাসহ রান্না করতে হবে। এসব সবজির খোসায়ও অনেক ভিটামিন ও মিনারেল থাকে।
শাকসবজি ভাজা ভাজা না করে রান্না করে খেলে বেশি পুষ্টিগুণ পাওয়া যায়। প্রথমত ভাজা করতে হলে খুব ছোট টুকরা করে কাটতে হয়। দ্বিতীয়ত ভাজি করতে হলে দীর্ঘ সময় তাপে রাখতে হয়। এই দুটি বিষয় শাকসবজির পুষ্টিগুণ অনেক কমিয়ে দেয়। তাই এগুলো ঝোল করে রান্না করে খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে।
জ্যেষ্ঠ পুষ্টি কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল

বেশ কয়েক বছর ধরে দেশে ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত রোগ জনস্বাস্থ্যের জন্য উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এতে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলে আসছেন, মশা নির্মূল ও মশাবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য অন্যান্য ব্যবস্থা ও কৌশলের পাশাপাশি মশা পরীক্ষা এবং গবেষণাগারও প্রয়োজন।
১৪ জুলাই ২০২৫
ওজন কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া যেমন কঠিন, সেই সিদ্ধান্তে দীর্ঘদিন অটল থাকা অনেকের ক্ষেত্রে আরও কঠিন। সঠিক অনুপ্রেরণা না থাকলে ওজন কমানো শুরু করাই কঠিন হয়ে পড়ে। আর শুরু করলেও মাঝপথে থেমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। তবে কিছু বাস্তবসম্মত কৌশল অনুসরণ করলে ওজন কমানোর লক্ষ্য অর্জন সহজ হতে পারে।
৬ ঘণ্টা আগে
থাইরয়েড হরমোন আমাদের গলার সামনে থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত একধরনের হরমোন কিংবা প্রাণরস। এটি গলার সামনে থেকে নিঃসৃত হলেও সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে এবং পুরো শরীরে কাজ করে।
৬ ঘণ্টা আগে
ঝাঁকির কারণে শিশুর মস্তিষ্কে আঘাত বা শেকেন বেবি সিনড্রোম হলো শিশু নির্যাতনের একটি মারাত্মক ও জীবনঘাতী রূপ। এটি প্রধানত ২ বছরের কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে দেখা যায়। এই অবস্থায় শিশুকে জোরে জোরে ঝাঁকানোর ফলে মস্তিষ্ক, চোখ ও ঘাড়ে গুরুতর আঘাত সৃষ্টি হয়, যদিও বাহ্যিকভাবে অনেক সময় কোনো...
৮ ঘণ্টা আগেডা. মো. আরমান হোসেন রনি

ঝাঁকির কারণে শিশুর মস্তিষ্কে আঘাত বা শেকেন বেবি সিনড্রোম হলো শিশু নির্যাতনের একটি মারাত্মক ও জীবনঘাতী রূপ। এটি প্রধানত ২ বছরের কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে দেখা যায়। এই অবস্থায় শিশুকে জোরে জোরে ঝাঁকানোর ফলে মস্তিষ্ক, চোখ ও ঘাড়ে গুরুতর আঘাত সৃষ্টি হয়, যদিও বাহ্যিকভাবে অনেক সময় কোনো আঘাতের চিহ্ন না-ও থাকতে পারে।
কারণ
শিশুর অতিরিক্ত কান্না, বিরক্তি কিংবা অস্থিরতার কারণে অভিভাবক বা পরিচর্যাকারীর রাগ এ ঘটনার জন্য বিশেষভাবে দায়ী। এই অবস্থায় শিশুকে ঝাঁকালে তাদের ঘাড়ের পেশি দুর্বল হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়।
এ ছাড়া মাথা শরীরের তুলনায় বড় হওয়ায় ঝাঁকানোর সময় তা সামনে-পেছনে দ্রুত নড়াচড়া করে। ফলে মস্তিষ্ক খুলির ভেতরে আঘাতপ্রাপ্ত হয় এবং রক্তনালিগুলো ছিঁড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
কী ঘটে
শিশুকে জোরে ঝাঁকানোর ফলে তিনটি প্রধান ক্ষতি হয়—
মস্তিষ্কে আঘাত: মস্তিষ্ক ও খুলির মাঝখানে থাকা রক্তনালি ছিঁড়ে গিয়ে রক্তক্ষরণ হয়।
চোখে আঘাত: ভিট্রিওরেটিনাল ট্র্যাকশনের কারণে মাল্টিলেয়ার্ড রেটিনায় রক্তক্ষরণ হয়, যা শেকেন বেবি সিনড্রোমের একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ।
ঘাড় ও স্পাইনাল ইনজুরি: সার্ভাইক্যাল স্পাইনের ক্ষতি ও মস্তিষ্কে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দিতে পারে।
লক্ষণ
শেকেন বেবি সিনড্রোমে আক্রান্ত শিশুর লক্ষণগুলো হালকা থেকে গুরুতর হতে পারে। সাধারণ লক্ষণগুলো হলো:
অতিরিক্ত কান্না বা অস্বাভাবিক নিস্তেজ হয়ে যাওয়া
চোখের পরীক্ষায় দেখা যায়—
রোগনির্ণয়
শেকেন বেবি সিনড্রোম মূলত ক্লিনিক্যাল ডায়াগনোসিস। তবে নিশ্চিত করার জন্য—
চিকিৎসা
এর চিকিৎসা একটি মাল্টিডিসিপ্লিনারি অ্যাপ্রোচের মাধ্যমে করা হয়—
চিকিৎসকের আইনগত ও নৈতিক দায়িত্ব
শেকেন বেবি সিনড্রোম একটি শিশু নির্যাতনজনিত অপরাধ। তাই চিকিৎসকের দায়িত্ব শুধু চিকিৎসা করা নয়, বরং—
চক্ষুবিশেষজ্ঞ ও সার্জন, জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, শেরেবাংলা নগর, ঢাকা।

ঝাঁকির কারণে শিশুর মস্তিষ্কে আঘাত বা শেকেন বেবি সিনড্রোম হলো শিশু নির্যাতনের একটি মারাত্মক ও জীবনঘাতী রূপ। এটি প্রধানত ২ বছরের কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে দেখা যায়। এই অবস্থায় শিশুকে জোরে জোরে ঝাঁকানোর ফলে মস্তিষ্ক, চোখ ও ঘাড়ে গুরুতর আঘাত সৃষ্টি হয়, যদিও বাহ্যিকভাবে অনেক সময় কোনো আঘাতের চিহ্ন না-ও থাকতে পারে।
কারণ
শিশুর অতিরিক্ত কান্না, বিরক্তি কিংবা অস্থিরতার কারণে অভিভাবক বা পরিচর্যাকারীর রাগ এ ঘটনার জন্য বিশেষভাবে দায়ী। এই অবস্থায় শিশুকে ঝাঁকালে তাদের ঘাড়ের পেশি দুর্বল হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়।
এ ছাড়া মাথা শরীরের তুলনায় বড় হওয়ায় ঝাঁকানোর সময় তা সামনে-পেছনে দ্রুত নড়াচড়া করে। ফলে মস্তিষ্ক খুলির ভেতরে আঘাতপ্রাপ্ত হয় এবং রক্তনালিগুলো ছিঁড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
কী ঘটে
শিশুকে জোরে ঝাঁকানোর ফলে তিনটি প্রধান ক্ষতি হয়—
মস্তিষ্কে আঘাত: মস্তিষ্ক ও খুলির মাঝখানে থাকা রক্তনালি ছিঁড়ে গিয়ে রক্তক্ষরণ হয়।
চোখে আঘাত: ভিট্রিওরেটিনাল ট্র্যাকশনের কারণে মাল্টিলেয়ার্ড রেটিনায় রক্তক্ষরণ হয়, যা শেকেন বেবি সিনড্রোমের একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ।
ঘাড় ও স্পাইনাল ইনজুরি: সার্ভাইক্যাল স্পাইনের ক্ষতি ও মস্তিষ্কে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দিতে পারে।
লক্ষণ
শেকেন বেবি সিনড্রোমে আক্রান্ত শিশুর লক্ষণগুলো হালকা থেকে গুরুতর হতে পারে। সাধারণ লক্ষণগুলো হলো:
অতিরিক্ত কান্না বা অস্বাভাবিক নিস্তেজ হয়ে যাওয়া
চোখের পরীক্ষায় দেখা যায়—
রোগনির্ণয়
শেকেন বেবি সিনড্রোম মূলত ক্লিনিক্যাল ডায়াগনোসিস। তবে নিশ্চিত করার জন্য—
চিকিৎসা
এর চিকিৎসা একটি মাল্টিডিসিপ্লিনারি অ্যাপ্রোচের মাধ্যমে করা হয়—
চিকিৎসকের আইনগত ও নৈতিক দায়িত্ব
শেকেন বেবি সিনড্রোম একটি শিশু নির্যাতনজনিত অপরাধ। তাই চিকিৎসকের দায়িত্ব শুধু চিকিৎসা করা নয়, বরং—
চক্ষুবিশেষজ্ঞ ও সার্জন, জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, শেরেবাংলা নগর, ঢাকা।

বেশ কয়েক বছর ধরে দেশে ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত রোগ জনস্বাস্থ্যের জন্য উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এতে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলে আসছেন, মশা নির্মূল ও মশাবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য অন্যান্য ব্যবস্থা ও কৌশলের পাশাপাশি মশা পরীক্ষা এবং গবেষণাগারও প্রয়োজন।
১৪ জুলাই ২০২৫
ওজন কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া যেমন কঠিন, সেই সিদ্ধান্তে দীর্ঘদিন অটল থাকা অনেকের ক্ষেত্রে আরও কঠিন। সঠিক অনুপ্রেরণা না থাকলে ওজন কমানো শুরু করাই কঠিন হয়ে পড়ে। আর শুরু করলেও মাঝপথে থেমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। তবে কিছু বাস্তবসম্মত কৌশল অনুসরণ করলে ওজন কমানোর লক্ষ্য অর্জন সহজ হতে পারে।
৬ ঘণ্টা আগে
থাইরয়েড হরমোন আমাদের গলার সামনে থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত একধরনের হরমোন কিংবা প্রাণরস। এটি গলার সামনে থেকে নিঃসৃত হলেও সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে এবং পুরো শরীরে কাজ করে।
৬ ঘণ্টা আগে
সুষম খাবারের ৬টি উপাদানের অন্যতম ভিটামিন ও খনিজ লবণ। এগুলো আমাদের শরীরের চালিকাশক্তির অন্যতম উপাদান হিসেবে বিবেচিত। শরীরের একেকটি অঙ্গের সুরক্ষায় একেক ধরনের ভিটামিন প্রয়োজন হয়। যেমন চুল ও চোখের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘এ’, ত্বকের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘বি’ ও ‘সি’, হাড় ও দাঁতের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘ডি’ প্রয়োজন হয়।
৭ ঘণ্টা আগে