
বিশ্বের ৮ কোটিরও বেশি মানুষ তোতলামি সমস্যায় ভোগেন। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, গায়ক–গীতিকার এড শিরানের মতো ব্যক্তিত্বও রয়েছেন। এমনকি বিজ্ঞানী আইজ্যাক নিউটনও এই সমস্যায় ভুগতেন।
এমন সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিকে এক–একটি শব্দ বা এক–একটি ধ্বনি উচ্চারণের মধ্যে অস্বাভাবিক বিরতি দিতে দেখা যায়। এই সমস্যার কারণে সামাজিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে মানুষ হতাশাগ্রস্ত হতে পারেন। কেউ কেউ অবশ্য মানসিক চাপে পড়েও তোতলান।
ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের ক্লিনিক্যাল স্পিচ ও ভাষা থেরাপিস্ট এলিনা ট্রিপোলিতি বলেন, বেশ বড় সংখ্যক মানুষ এই সমস্যায় আক্রান্ত হলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বিজ্ঞানীরা এখনো ঠিক জানেন না কী কারণে এটি হয়। অন্তত তোতলামির ক্ষেত্রে মস্তিষ্ক কীভাবে কাজ করে তা স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করতে পারে না নিউরোবায়োলজি বা স্নায়ুবিজ্ঞান।
গবেষকদের মতে, এই অবস্থাটি সম্ভবত একাধিক কারণে হতে পারে—যার মধ্যে জিনগত কারণ, মস্তিষ্কের গঠন ও কার্যকারিতার পার্থক্য এবং ব্যক্তির আশপাশের পরিবেশও রয়েছে।
এ ছাড়া স্ট্রোক ও পারকিনসনের মতো রোগে মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হলেও এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।
প্রাপ্তবয়স্ক যাদের তোতলামি রয়েছে, তাঁদের বেশির ভাগেরই ‘ডেভেলপমেন্টাল স্টাটারিং’ বা বাড়ন্ত বয়সের তোতলামি ছিল। এটি সাধারণত ২ থেকে ৫ বছর বয়সের মধ্যে প্রথম শুরু হয়। কিন্তু বড় হওয়ার আগেই ৯০ শতাংশ শিশুর এই সমস্যা দূর হয়। এই ধরনের তোতলামির কারণও ব্যাখ্যা করা কঠিন। যদিও সাম্প্রতিক সময় বেশ কয়েকটি ধারণার কথা বলেছেন বিজ্ঞানীরা।
ডেভেলপমেন্টাল স্টাটারিংয়ের একটি প্রধান কারণ হতে পারে—জিনগত। এই ধরনের তোতলামি প্রায়ই পরিবার থেকে আসে। একজাতীয় যমজদের ওপর করা গবেষণায় দেখা গেছে যে, তোতলামির ৮০ শতাংশেরও বেশি ক্ষেত্রে জিনের ভূমিকা থাকতে পারে।
কয়েকটি ছোট গবেষণা এই তত্ত্বকে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়েছে। গবেষকেরা এমন কিছু নির্দিষ্ট জিন চিহ্নিত করেছেন, যা তোতলামির ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারে। এসব জিনের মধ্যে এমন জিনও রয়েছে, যা কোষের মধ্যে বিভিন্ন উপাদানের চলাচল বা মস্তিষ্কে ডোপামিনের রাসায়নিক নিঃসরণ ও স্থানান্তর নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে জড়িত।
দেখা গেছে, পুরুষেরা নারীদের তুলনায় প্রায় চারগুণ বেশি তোতালামিতে আক্রান্ত। তবে এই পার্থক্যের কারণও বিজ্ঞানীরা এখনো জানেন না। তবে কিছু তত্ত্ব রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া তোতলামি পাওয়া প্রতিরোধে নারীরা বেশি সক্ষম।
যারা তোতলামিতে আক্রান্ত এবং যারা স্বাভাবিকভাবে কথা বলেন, তাঁদের মস্তিষ্কে কিছু সূক্ষ্ম পার্থক্যও দেখা যায়। মস্তিষ্কের ইনফিরিয়র ফ্রন্টাল গাইরাস এবং বাম মোটর কোর্টেক্সে এই পার্থক্য দেখা যায়। এসব অঞ্চল কথা বলার পরিকল্পনা এবং সম্পাদনের জন্য দায়ী।
এ ছাড়া, ২০২৪ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, তোতলামি হয়তো মস্তিষ্কে নিউরন নেটওয়ার্কের কোথাও ব্যাঘাতের কারণে হয়। অ্যামিগডালা, পুটামেন এবং ক্লস্ট্রামকে সংযুক্ত করে এই নেটওয়ার্ক। মস্তিষ্কের এই তিনটি অংশ যথাক্রমে আবেগ ও চলাফেরা নিয়ন্ত্রণ এবং মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশের মধ্যে তথ্য আদান–প্রদানের সঙ্গে জড়িত।
পরিবেশগত কারণও তোতলামিতে প্রভাব ফেলতে পারে। পরিবারের সদস্য বা ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া একজন তোতলা ব্যক্তির উদ্বেগের কারণ হতে পারে, যা তাঁর উপসর্গকে আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।
বছরের পর বছর তোতলামি নিয়ে গবেষণা সীমিত ছিল কারণ বিজ্ঞানীরা অন্য প্রাণীর ওপর এ নিয়ে গবেষণা করতে পারেননি। যেখানে মানুষের বিভিন্ন রোগ নিয়ে গবেষণায় গবেষণাগারে ইঁদুর, গিনিপিগ ইত্যাদি প্রাণীর ওপর পরীক্ষা চালানো যায়। তোতলামিতে তো সেটি সম্ভব নয়। আর গবেষণালব্ধ জ্ঞান ছাড়া লক্ষ্যভিত্তিক চিকিৎসা ঠিক করাও কঠিন হতে পারে।
মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটির কমিউনিকেটিভ সায়েন্সেস ও ডিসঅর্ডারের অধ্যাপক স্কট ইয়্যারাস বলেন, কয়েকটি গবেষণায় তোতলামির কমানোর জন্য ওষুধ ব্যবহার নিয়ে পরীক্ষা–নিরীক্ষা করা হয়েছে। কিন্তু বর্তমান বাজারে এমন কোনো ওষুধ নেই যা এই সমস্যাকে পুরোপুরি নির্মূল করতে পারে।
তিনি আরও বলেন, যে ওষুধগুলো নিয়ে গবেষণা করা হয়েছে, তা কিছু মানুষের জন্য তোতলামি কমাতে সাহায্য করে এটি ঠিক, কিন্তু এটি কোনো প্রতিকার নয়।
থেরাপি কিছু মানুষকে সহজে কথা বলতে সাহায্য করতে পারে। তোতলামিকে সব সময় রোগ হিসেবে না দেখে সমাজকে একে একটি ‘মৌখিক বৈচিত্র্য’ হিসেবে গ্রহণ করলে সেই মানুষদের জীবন অনেক সহজ হয়ে যায়!
তথ্যসূত্র: লাইভ সায়েন্স

বিশ্বের ৮ কোটিরও বেশি মানুষ তোতলামি সমস্যায় ভোগেন। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, গায়ক–গীতিকার এড শিরানের মতো ব্যক্তিত্বও রয়েছেন। এমনকি বিজ্ঞানী আইজ্যাক নিউটনও এই সমস্যায় ভুগতেন।
এমন সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিকে এক–একটি শব্দ বা এক–একটি ধ্বনি উচ্চারণের মধ্যে অস্বাভাবিক বিরতি দিতে দেখা যায়। এই সমস্যার কারণে সামাজিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে মানুষ হতাশাগ্রস্ত হতে পারেন। কেউ কেউ অবশ্য মানসিক চাপে পড়েও তোতলান।
ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের ক্লিনিক্যাল স্পিচ ও ভাষা থেরাপিস্ট এলিনা ট্রিপোলিতি বলেন, বেশ বড় সংখ্যক মানুষ এই সমস্যায় আক্রান্ত হলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বিজ্ঞানীরা এখনো ঠিক জানেন না কী কারণে এটি হয়। অন্তত তোতলামির ক্ষেত্রে মস্তিষ্ক কীভাবে কাজ করে তা স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করতে পারে না নিউরোবায়োলজি বা স্নায়ুবিজ্ঞান।
গবেষকদের মতে, এই অবস্থাটি সম্ভবত একাধিক কারণে হতে পারে—যার মধ্যে জিনগত কারণ, মস্তিষ্কের গঠন ও কার্যকারিতার পার্থক্য এবং ব্যক্তির আশপাশের পরিবেশও রয়েছে।
এ ছাড়া স্ট্রোক ও পারকিনসনের মতো রোগে মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হলেও এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।
প্রাপ্তবয়স্ক যাদের তোতলামি রয়েছে, তাঁদের বেশির ভাগেরই ‘ডেভেলপমেন্টাল স্টাটারিং’ বা বাড়ন্ত বয়সের তোতলামি ছিল। এটি সাধারণত ২ থেকে ৫ বছর বয়সের মধ্যে প্রথম শুরু হয়। কিন্তু বড় হওয়ার আগেই ৯০ শতাংশ শিশুর এই সমস্যা দূর হয়। এই ধরনের তোতলামির কারণও ব্যাখ্যা করা কঠিন। যদিও সাম্প্রতিক সময় বেশ কয়েকটি ধারণার কথা বলেছেন বিজ্ঞানীরা।
ডেভেলপমেন্টাল স্টাটারিংয়ের একটি প্রধান কারণ হতে পারে—জিনগত। এই ধরনের তোতলামি প্রায়ই পরিবার থেকে আসে। একজাতীয় যমজদের ওপর করা গবেষণায় দেখা গেছে যে, তোতলামির ৮০ শতাংশেরও বেশি ক্ষেত্রে জিনের ভূমিকা থাকতে পারে।
কয়েকটি ছোট গবেষণা এই তত্ত্বকে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়েছে। গবেষকেরা এমন কিছু নির্দিষ্ট জিন চিহ্নিত করেছেন, যা তোতলামির ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারে। এসব জিনের মধ্যে এমন জিনও রয়েছে, যা কোষের মধ্যে বিভিন্ন উপাদানের চলাচল বা মস্তিষ্কে ডোপামিনের রাসায়নিক নিঃসরণ ও স্থানান্তর নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে জড়িত।
দেখা গেছে, পুরুষেরা নারীদের তুলনায় প্রায় চারগুণ বেশি তোতালামিতে আক্রান্ত। তবে এই পার্থক্যের কারণও বিজ্ঞানীরা এখনো জানেন না। তবে কিছু তত্ত্ব রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া তোতলামি পাওয়া প্রতিরোধে নারীরা বেশি সক্ষম।
যারা তোতলামিতে আক্রান্ত এবং যারা স্বাভাবিকভাবে কথা বলেন, তাঁদের মস্তিষ্কে কিছু সূক্ষ্ম পার্থক্যও দেখা যায়। মস্তিষ্কের ইনফিরিয়র ফ্রন্টাল গাইরাস এবং বাম মোটর কোর্টেক্সে এই পার্থক্য দেখা যায়। এসব অঞ্চল কথা বলার পরিকল্পনা এবং সম্পাদনের জন্য দায়ী।
এ ছাড়া, ২০২৪ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, তোতলামি হয়তো মস্তিষ্কে নিউরন নেটওয়ার্কের কোথাও ব্যাঘাতের কারণে হয়। অ্যামিগডালা, পুটামেন এবং ক্লস্ট্রামকে সংযুক্ত করে এই নেটওয়ার্ক। মস্তিষ্কের এই তিনটি অংশ যথাক্রমে আবেগ ও চলাফেরা নিয়ন্ত্রণ এবং মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশের মধ্যে তথ্য আদান–প্রদানের সঙ্গে জড়িত।
পরিবেশগত কারণও তোতলামিতে প্রভাব ফেলতে পারে। পরিবারের সদস্য বা ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া একজন তোতলা ব্যক্তির উদ্বেগের কারণ হতে পারে, যা তাঁর উপসর্গকে আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।
বছরের পর বছর তোতলামি নিয়ে গবেষণা সীমিত ছিল কারণ বিজ্ঞানীরা অন্য প্রাণীর ওপর এ নিয়ে গবেষণা করতে পারেননি। যেখানে মানুষের বিভিন্ন রোগ নিয়ে গবেষণায় গবেষণাগারে ইঁদুর, গিনিপিগ ইত্যাদি প্রাণীর ওপর পরীক্ষা চালানো যায়। তোতলামিতে তো সেটি সম্ভব নয়। আর গবেষণালব্ধ জ্ঞান ছাড়া লক্ষ্যভিত্তিক চিকিৎসা ঠিক করাও কঠিন হতে পারে।
মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটির কমিউনিকেটিভ সায়েন্সেস ও ডিসঅর্ডারের অধ্যাপক স্কট ইয়্যারাস বলেন, কয়েকটি গবেষণায় তোতলামির কমানোর জন্য ওষুধ ব্যবহার নিয়ে পরীক্ষা–নিরীক্ষা করা হয়েছে। কিন্তু বর্তমান বাজারে এমন কোনো ওষুধ নেই যা এই সমস্যাকে পুরোপুরি নির্মূল করতে পারে।
তিনি আরও বলেন, যে ওষুধগুলো নিয়ে গবেষণা করা হয়েছে, তা কিছু মানুষের জন্য তোতলামি কমাতে সাহায্য করে এটি ঠিক, কিন্তু এটি কোনো প্রতিকার নয়।
থেরাপি কিছু মানুষকে সহজে কথা বলতে সাহায্য করতে পারে। তোতলামিকে সব সময় রোগ হিসেবে না দেখে সমাজকে একে একটি ‘মৌখিক বৈচিত্র্য’ হিসেবে গ্রহণ করলে সেই মানুষদের জীবন অনেক সহজ হয়ে যায়!
তথ্যসূত্র: লাইভ সায়েন্স

বিশ্বের ৮ কোটিরও বেশি মানুষ তোতলামি সমস্যায় ভোগেন। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, গায়ক–গীতিকার এড শিরানের মতো ব্যক্তিত্বও রয়েছেন। এমনকি বিজ্ঞানী আইজ্যাক নিউটনও এই সমস্যায় ভুগতেন।
এমন সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিকে এক–একটি শব্দ বা এক–একটি ধ্বনি উচ্চারণের মধ্যে অস্বাভাবিক বিরতি দিতে দেখা যায়। এই সমস্যার কারণে সামাজিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে মানুষ হতাশাগ্রস্ত হতে পারেন। কেউ কেউ অবশ্য মানসিক চাপে পড়েও তোতলান।
ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের ক্লিনিক্যাল স্পিচ ও ভাষা থেরাপিস্ট এলিনা ট্রিপোলিতি বলেন, বেশ বড় সংখ্যক মানুষ এই সমস্যায় আক্রান্ত হলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বিজ্ঞানীরা এখনো ঠিক জানেন না কী কারণে এটি হয়। অন্তত তোতলামির ক্ষেত্রে মস্তিষ্ক কীভাবে কাজ করে তা স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করতে পারে না নিউরোবায়োলজি বা স্নায়ুবিজ্ঞান।
গবেষকদের মতে, এই অবস্থাটি সম্ভবত একাধিক কারণে হতে পারে—যার মধ্যে জিনগত কারণ, মস্তিষ্কের গঠন ও কার্যকারিতার পার্থক্য এবং ব্যক্তির আশপাশের পরিবেশও রয়েছে।
এ ছাড়া স্ট্রোক ও পারকিনসনের মতো রোগে মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হলেও এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।
প্রাপ্তবয়স্ক যাদের তোতলামি রয়েছে, তাঁদের বেশির ভাগেরই ‘ডেভেলপমেন্টাল স্টাটারিং’ বা বাড়ন্ত বয়সের তোতলামি ছিল। এটি সাধারণত ২ থেকে ৫ বছর বয়সের মধ্যে প্রথম শুরু হয়। কিন্তু বড় হওয়ার আগেই ৯০ শতাংশ শিশুর এই সমস্যা দূর হয়। এই ধরনের তোতলামির কারণও ব্যাখ্যা করা কঠিন। যদিও সাম্প্রতিক সময় বেশ কয়েকটি ধারণার কথা বলেছেন বিজ্ঞানীরা।
ডেভেলপমেন্টাল স্টাটারিংয়ের একটি প্রধান কারণ হতে পারে—জিনগত। এই ধরনের তোতলামি প্রায়ই পরিবার থেকে আসে। একজাতীয় যমজদের ওপর করা গবেষণায় দেখা গেছে যে, তোতলামির ৮০ শতাংশেরও বেশি ক্ষেত্রে জিনের ভূমিকা থাকতে পারে।
কয়েকটি ছোট গবেষণা এই তত্ত্বকে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়েছে। গবেষকেরা এমন কিছু নির্দিষ্ট জিন চিহ্নিত করেছেন, যা তোতলামির ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারে। এসব জিনের মধ্যে এমন জিনও রয়েছে, যা কোষের মধ্যে বিভিন্ন উপাদানের চলাচল বা মস্তিষ্কে ডোপামিনের রাসায়নিক নিঃসরণ ও স্থানান্তর নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে জড়িত।
দেখা গেছে, পুরুষেরা নারীদের তুলনায় প্রায় চারগুণ বেশি তোতালামিতে আক্রান্ত। তবে এই পার্থক্যের কারণও বিজ্ঞানীরা এখনো জানেন না। তবে কিছু তত্ত্ব রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া তোতলামি পাওয়া প্রতিরোধে নারীরা বেশি সক্ষম।
যারা তোতলামিতে আক্রান্ত এবং যারা স্বাভাবিকভাবে কথা বলেন, তাঁদের মস্তিষ্কে কিছু সূক্ষ্ম পার্থক্যও দেখা যায়। মস্তিষ্কের ইনফিরিয়র ফ্রন্টাল গাইরাস এবং বাম মোটর কোর্টেক্সে এই পার্থক্য দেখা যায়। এসব অঞ্চল কথা বলার পরিকল্পনা এবং সম্পাদনের জন্য দায়ী।
এ ছাড়া, ২০২৪ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, তোতলামি হয়তো মস্তিষ্কে নিউরন নেটওয়ার্কের কোথাও ব্যাঘাতের কারণে হয়। অ্যামিগডালা, পুটামেন এবং ক্লস্ট্রামকে সংযুক্ত করে এই নেটওয়ার্ক। মস্তিষ্কের এই তিনটি অংশ যথাক্রমে আবেগ ও চলাফেরা নিয়ন্ত্রণ এবং মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশের মধ্যে তথ্য আদান–প্রদানের সঙ্গে জড়িত।
পরিবেশগত কারণও তোতলামিতে প্রভাব ফেলতে পারে। পরিবারের সদস্য বা ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া একজন তোতলা ব্যক্তির উদ্বেগের কারণ হতে পারে, যা তাঁর উপসর্গকে আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।
বছরের পর বছর তোতলামি নিয়ে গবেষণা সীমিত ছিল কারণ বিজ্ঞানীরা অন্য প্রাণীর ওপর এ নিয়ে গবেষণা করতে পারেননি। যেখানে মানুষের বিভিন্ন রোগ নিয়ে গবেষণায় গবেষণাগারে ইঁদুর, গিনিপিগ ইত্যাদি প্রাণীর ওপর পরীক্ষা চালানো যায়। তোতলামিতে তো সেটি সম্ভব নয়। আর গবেষণালব্ধ জ্ঞান ছাড়া লক্ষ্যভিত্তিক চিকিৎসা ঠিক করাও কঠিন হতে পারে।
মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটির কমিউনিকেটিভ সায়েন্সেস ও ডিসঅর্ডারের অধ্যাপক স্কট ইয়্যারাস বলেন, কয়েকটি গবেষণায় তোতলামির কমানোর জন্য ওষুধ ব্যবহার নিয়ে পরীক্ষা–নিরীক্ষা করা হয়েছে। কিন্তু বর্তমান বাজারে এমন কোনো ওষুধ নেই যা এই সমস্যাকে পুরোপুরি নির্মূল করতে পারে।
তিনি আরও বলেন, যে ওষুধগুলো নিয়ে গবেষণা করা হয়েছে, তা কিছু মানুষের জন্য তোতলামি কমাতে সাহায্য করে এটি ঠিক, কিন্তু এটি কোনো প্রতিকার নয়।
থেরাপি কিছু মানুষকে সহজে কথা বলতে সাহায্য করতে পারে। তোতলামিকে সব সময় রোগ হিসেবে না দেখে সমাজকে একে একটি ‘মৌখিক বৈচিত্র্য’ হিসেবে গ্রহণ করলে সেই মানুষদের জীবন অনেক সহজ হয়ে যায়!
তথ্যসূত্র: লাইভ সায়েন্স

বিশ্বের ৮ কোটিরও বেশি মানুষ তোতলামি সমস্যায় ভোগেন। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, গায়ক–গীতিকার এড শিরানের মতো ব্যক্তিত্বও রয়েছেন। এমনকি বিজ্ঞানী আইজ্যাক নিউটনও এই সমস্যায় ভুগতেন।
এমন সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিকে এক–একটি শব্দ বা এক–একটি ধ্বনি উচ্চারণের মধ্যে অস্বাভাবিক বিরতি দিতে দেখা যায়। এই সমস্যার কারণে সামাজিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে মানুষ হতাশাগ্রস্ত হতে পারেন। কেউ কেউ অবশ্য মানসিক চাপে পড়েও তোতলান।
ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের ক্লিনিক্যাল স্পিচ ও ভাষা থেরাপিস্ট এলিনা ট্রিপোলিতি বলেন, বেশ বড় সংখ্যক মানুষ এই সমস্যায় আক্রান্ত হলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বিজ্ঞানীরা এখনো ঠিক জানেন না কী কারণে এটি হয়। অন্তত তোতলামির ক্ষেত্রে মস্তিষ্ক কীভাবে কাজ করে তা স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করতে পারে না নিউরোবায়োলজি বা স্নায়ুবিজ্ঞান।
গবেষকদের মতে, এই অবস্থাটি সম্ভবত একাধিক কারণে হতে পারে—যার মধ্যে জিনগত কারণ, মস্তিষ্কের গঠন ও কার্যকারিতার পার্থক্য এবং ব্যক্তির আশপাশের পরিবেশও রয়েছে।
এ ছাড়া স্ট্রোক ও পারকিনসনের মতো রোগে মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হলেও এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।
প্রাপ্তবয়স্ক যাদের তোতলামি রয়েছে, তাঁদের বেশির ভাগেরই ‘ডেভেলপমেন্টাল স্টাটারিং’ বা বাড়ন্ত বয়সের তোতলামি ছিল। এটি সাধারণত ২ থেকে ৫ বছর বয়সের মধ্যে প্রথম শুরু হয়। কিন্তু বড় হওয়ার আগেই ৯০ শতাংশ শিশুর এই সমস্যা দূর হয়। এই ধরনের তোতলামির কারণও ব্যাখ্যা করা কঠিন। যদিও সাম্প্রতিক সময় বেশ কয়েকটি ধারণার কথা বলেছেন বিজ্ঞানীরা।
ডেভেলপমেন্টাল স্টাটারিংয়ের একটি প্রধান কারণ হতে পারে—জিনগত। এই ধরনের তোতলামি প্রায়ই পরিবার থেকে আসে। একজাতীয় যমজদের ওপর করা গবেষণায় দেখা গেছে যে, তোতলামির ৮০ শতাংশেরও বেশি ক্ষেত্রে জিনের ভূমিকা থাকতে পারে।
কয়েকটি ছোট গবেষণা এই তত্ত্বকে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়েছে। গবেষকেরা এমন কিছু নির্দিষ্ট জিন চিহ্নিত করেছেন, যা তোতলামির ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারে। এসব জিনের মধ্যে এমন জিনও রয়েছে, যা কোষের মধ্যে বিভিন্ন উপাদানের চলাচল বা মস্তিষ্কে ডোপামিনের রাসায়নিক নিঃসরণ ও স্থানান্তর নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে জড়িত।
দেখা গেছে, পুরুষেরা নারীদের তুলনায় প্রায় চারগুণ বেশি তোতালামিতে আক্রান্ত। তবে এই পার্থক্যের কারণও বিজ্ঞানীরা এখনো জানেন না। তবে কিছু তত্ত্ব রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া তোতলামি পাওয়া প্রতিরোধে নারীরা বেশি সক্ষম।
যারা তোতলামিতে আক্রান্ত এবং যারা স্বাভাবিকভাবে কথা বলেন, তাঁদের মস্তিষ্কে কিছু সূক্ষ্ম পার্থক্যও দেখা যায়। মস্তিষ্কের ইনফিরিয়র ফ্রন্টাল গাইরাস এবং বাম মোটর কোর্টেক্সে এই পার্থক্য দেখা যায়। এসব অঞ্চল কথা বলার পরিকল্পনা এবং সম্পাদনের জন্য দায়ী।
এ ছাড়া, ২০২৪ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, তোতলামি হয়তো মস্তিষ্কে নিউরন নেটওয়ার্কের কোথাও ব্যাঘাতের কারণে হয়। অ্যামিগডালা, পুটামেন এবং ক্লস্ট্রামকে সংযুক্ত করে এই নেটওয়ার্ক। মস্তিষ্কের এই তিনটি অংশ যথাক্রমে আবেগ ও চলাফেরা নিয়ন্ত্রণ এবং মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশের মধ্যে তথ্য আদান–প্রদানের সঙ্গে জড়িত।
পরিবেশগত কারণও তোতলামিতে প্রভাব ফেলতে পারে। পরিবারের সদস্য বা ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া একজন তোতলা ব্যক্তির উদ্বেগের কারণ হতে পারে, যা তাঁর উপসর্গকে আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।
বছরের পর বছর তোতলামি নিয়ে গবেষণা সীমিত ছিল কারণ বিজ্ঞানীরা অন্য প্রাণীর ওপর এ নিয়ে গবেষণা করতে পারেননি। যেখানে মানুষের বিভিন্ন রোগ নিয়ে গবেষণায় গবেষণাগারে ইঁদুর, গিনিপিগ ইত্যাদি প্রাণীর ওপর পরীক্ষা চালানো যায়। তোতলামিতে তো সেটি সম্ভব নয়। আর গবেষণালব্ধ জ্ঞান ছাড়া লক্ষ্যভিত্তিক চিকিৎসা ঠিক করাও কঠিন হতে পারে।
মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটির কমিউনিকেটিভ সায়েন্সেস ও ডিসঅর্ডারের অধ্যাপক স্কট ইয়্যারাস বলেন, কয়েকটি গবেষণায় তোতলামির কমানোর জন্য ওষুধ ব্যবহার নিয়ে পরীক্ষা–নিরীক্ষা করা হয়েছে। কিন্তু বর্তমান বাজারে এমন কোনো ওষুধ নেই যা এই সমস্যাকে পুরোপুরি নির্মূল করতে পারে।
তিনি আরও বলেন, যে ওষুধগুলো নিয়ে গবেষণা করা হয়েছে, তা কিছু মানুষের জন্য তোতলামি কমাতে সাহায্য করে এটি ঠিক, কিন্তু এটি কোনো প্রতিকার নয়।
থেরাপি কিছু মানুষকে সহজে কথা বলতে সাহায্য করতে পারে। তোতলামিকে সব সময় রোগ হিসেবে না দেখে সমাজকে একে একটি ‘মৌখিক বৈচিত্র্য’ হিসেবে গ্রহণ করলে সেই মানুষদের জীবন অনেক সহজ হয়ে যায়!
তথ্যসূত্র: লাইভ সায়েন্স

ঝাঁকির কারণে শিশুর মস্তিষ্কে আঘাত বা শেকেন বেবি সিনড্রোম হলো শিশু নির্যাতনের একটি মারাত্মক ও জীবনঘাতী রূপ। এটি প্রধানত ২ বছরের কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে দেখা যায়। এই অবস্থায় শিশুকে জোরে জোরে ঝাঁকানোর ফলে মস্তিষ্ক, চোখ ও ঘাড়ে গুরুতর আঘাত সৃষ্টি হয়, যদিও বাহ্যিকভাবে অনেক সময় কোনো...
১৭ মিনিট আগে
আমাদের প্রাত্যহিক কিছু অভ্যাস অজান্তেই শরীরের ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। সুস্থ হার্টের জন্য রান্নাঘরের করা কিছু ভুল এড়িয়ে চলুন। তাহলেই নিয়ন্ত্রণে থাকবে কোলেস্টেরল।
২৩ মিনিট আগে
মানুষের অঙ্গের ঘাটতি মেটাতে শূকর থেকে অঙ্গ প্রতিস্থাপন (জেনোট্রান্সপ্লান্টেশন) ভবিষ্যতে মানুষের দান করা অঙ্গের চেয়ে উন্নত বিকল্প হয়ে উঠতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় ট্রান্সপ্লান্ট সার্জন ড. রবার্ট মন্টগোমারি এই মত দিয়েছেন।
১৩ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশে যেখানে কিডনি প্রতিস্থাপন এখনো সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে, সেখানে অসহায় ও দরিদ্র রোগীদের শেষ ভরসা হয়ে উঠেছেন কিডনির শল্যচিকিৎসক অধ্যাপক কামরুল ইসলাম। দেশে যত কিডনি প্রতিস্থাপিত হয়, সেগুলোর একটি বড় অংশই করেন তিনি। নিজের প্রতিষ্ঠিত সেন্টার ফর কিডনি ডিজিজেস...
৩ দিন আগেডা. মো. আরমান হোসেন রনি

ঝাঁকির কারণে শিশুর মস্তিষ্কে আঘাত বা শেকেন বেবি সিনড্রোম হলো শিশু নির্যাতনের একটি মারাত্মক ও জীবনঘাতী রূপ। এটি প্রধানত ২ বছরের কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে দেখা যায়। এই অবস্থায় শিশুকে জোরে জোরে ঝাঁকানোর ফলে মস্তিষ্ক, চোখ ও ঘাড়ে গুরুতর আঘাত সৃষ্টি হয়, যদিও বাহ্যিকভাবে অনেক সময় কোনো আঘাতের চিহ্ন না-ও থাকতে পারে।
কারণ
শিশুর অতিরিক্ত কান্না, বিরক্তি কিংবা অস্থিরতার কারণে অভিভাবক বা পরিচর্যাকারীর রাগ এ ঘটনার জন্য বিশেষভাবে দায়ী। এই অবস্থায় শিশুকে ঝাঁকালে তাদের ঘাড়ের পেশি দুর্বল হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়।
এ ছাড়া মাথা শরীরের তুলনায় বড় হওয়ায় ঝাঁকানোর সময় তা সামনে-পেছনে দ্রুত নড়াচড়া করে। ফলে মস্তিষ্ক খুলির ভেতরে আঘাতপ্রাপ্ত হয় এবং রক্তনালিগুলো ছিঁড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
কী ঘটে
শিশুকে জোরে ঝাঁকানোর ফলে তিনটি প্রধান ক্ষতি হয়—
মস্তিষ্কে আঘাত: মস্তিষ্ক ও খুলির মাঝখানে থাকা রক্তনালি ছিঁড়ে গিয়ে রক্তক্ষরণ হয়।
চোখে আঘাত: ভিট্রিওরেটিনাল ট্র্যাকশনের কারণে মাল্টিলেয়ার্ড রেটিনায় রক্তক্ষরণ হয়, যা শেকেন বেবি সিনড্রোমের একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ।
ঘাড় ও স্পাইনাল ইনজুরি: সার্ভাইক্যাল স্পাইনের ক্ষতি ও মস্তিষ্কে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দিতে পারে।
লক্ষণ
শেকেন বেবি সিনড্রোমে আক্রান্ত শিশুর লক্ষণগুলো হালকা থেকে গুরুতর হতে পারে। সাধারণ লক্ষণগুলো হলো:
অতিরিক্ত কান্না বা অস্বাভাবিক নিস্তেজ হয়ে যাওয়া
চোখের পরীক্ষায় দেখা যায়—
রোগনির্ণয়
শেকেন বেবি সিনড্রোম মূলত ক্লিনিক্যাল ডায়াগনোসিস। তবে নিশ্চিত করার জন্য—
চিকিৎসা
এর চিকিৎসা একটি মাল্টিডিসিপ্লিনারি অ্যাপ্রোচের মাধ্যমে করা হয়—
চিকিৎসকের আইনগত ও নৈতিক দায়িত্ব
শেকেন বেবি সিনড্রোম একটি শিশু নির্যাতনজনিত অপরাধ। তাই চিকিৎসকের দায়িত্ব শুধু চিকিৎসা করা নয়, বরং—
চক্ষুবিশেষজ্ঞ ও সার্জন, জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, শেরেবাংলা নগর, ঢাকা।

ঝাঁকির কারণে শিশুর মস্তিষ্কে আঘাত বা শেকেন বেবি সিনড্রোম হলো শিশু নির্যাতনের একটি মারাত্মক ও জীবনঘাতী রূপ। এটি প্রধানত ২ বছরের কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে দেখা যায়। এই অবস্থায় শিশুকে জোরে জোরে ঝাঁকানোর ফলে মস্তিষ্ক, চোখ ও ঘাড়ে গুরুতর আঘাত সৃষ্টি হয়, যদিও বাহ্যিকভাবে অনেক সময় কোনো আঘাতের চিহ্ন না-ও থাকতে পারে।
কারণ
শিশুর অতিরিক্ত কান্না, বিরক্তি কিংবা অস্থিরতার কারণে অভিভাবক বা পরিচর্যাকারীর রাগ এ ঘটনার জন্য বিশেষভাবে দায়ী। এই অবস্থায় শিশুকে ঝাঁকালে তাদের ঘাড়ের পেশি দুর্বল হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়।
এ ছাড়া মাথা শরীরের তুলনায় বড় হওয়ায় ঝাঁকানোর সময় তা সামনে-পেছনে দ্রুত নড়াচড়া করে। ফলে মস্তিষ্ক খুলির ভেতরে আঘাতপ্রাপ্ত হয় এবং রক্তনালিগুলো ছিঁড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
কী ঘটে
শিশুকে জোরে ঝাঁকানোর ফলে তিনটি প্রধান ক্ষতি হয়—
মস্তিষ্কে আঘাত: মস্তিষ্ক ও খুলির মাঝখানে থাকা রক্তনালি ছিঁড়ে গিয়ে রক্তক্ষরণ হয়।
চোখে আঘাত: ভিট্রিওরেটিনাল ট্র্যাকশনের কারণে মাল্টিলেয়ার্ড রেটিনায় রক্তক্ষরণ হয়, যা শেকেন বেবি সিনড্রোমের একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ।
ঘাড় ও স্পাইনাল ইনজুরি: সার্ভাইক্যাল স্পাইনের ক্ষতি ও মস্তিষ্কে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দিতে পারে।
লক্ষণ
শেকেন বেবি সিনড্রোমে আক্রান্ত শিশুর লক্ষণগুলো হালকা থেকে গুরুতর হতে পারে। সাধারণ লক্ষণগুলো হলো:
অতিরিক্ত কান্না বা অস্বাভাবিক নিস্তেজ হয়ে যাওয়া
চোখের পরীক্ষায় দেখা যায়—
রোগনির্ণয়
শেকেন বেবি সিনড্রোম মূলত ক্লিনিক্যাল ডায়াগনোসিস। তবে নিশ্চিত করার জন্য—
চিকিৎসা
এর চিকিৎসা একটি মাল্টিডিসিপ্লিনারি অ্যাপ্রোচের মাধ্যমে করা হয়—
চিকিৎসকের আইনগত ও নৈতিক দায়িত্ব
শেকেন বেবি সিনড্রোম একটি শিশু নির্যাতনজনিত অপরাধ। তাই চিকিৎসকের দায়িত্ব শুধু চিকিৎসা করা নয়, বরং—
চক্ষুবিশেষজ্ঞ ও সার্জন, জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, শেরেবাংলা নগর, ঢাকা।

বিশ্বের ৮ কোটিরও বেশি মানুষ তোতলামি সমস্যায় ভোগেন। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, গায়ক–গীতিকার এড শিরানের মতো ব্যক্তিত্বও রয়েছেন। এমনকি বিজ্ঞানী আইজ্যাক নিউটনও এই সমস্যায় ভুগতেন।
১৫ অক্টোবর ২০২৪
আমাদের প্রাত্যহিক কিছু অভ্যাস অজান্তেই শরীরের ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। সুস্থ হার্টের জন্য রান্নাঘরের করা কিছু ভুল এড়িয়ে চলুন। তাহলেই নিয়ন্ত্রণে থাকবে কোলেস্টেরল।
২৩ মিনিট আগে
মানুষের অঙ্গের ঘাটতি মেটাতে শূকর থেকে অঙ্গ প্রতিস্থাপন (জেনোট্রান্সপ্লান্টেশন) ভবিষ্যতে মানুষের দান করা অঙ্গের চেয়ে উন্নত বিকল্প হয়ে উঠতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় ট্রান্সপ্লান্ট সার্জন ড. রবার্ট মন্টগোমারি এই মত দিয়েছেন।
১৩ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশে যেখানে কিডনি প্রতিস্থাপন এখনো সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে, সেখানে অসহায় ও দরিদ্র রোগীদের শেষ ভরসা হয়ে উঠেছেন কিডনির শল্যচিকিৎসক অধ্যাপক কামরুল ইসলাম। দেশে যত কিডনি প্রতিস্থাপিত হয়, সেগুলোর একটি বড় অংশই করেন তিনি। নিজের প্রতিষ্ঠিত সেন্টার ফর কিডনি ডিজিজেস...
৩ দিন আগেফিচার ডেস্ক

আমাদের প্রাত্যহিক কিছু অভ্যাস অজান্তেই শরীরের ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। সুস্থ হার্টের জন্য রান্নাঘরের করা কিছু ভুল এড়িয়ে চলুন। তাহলেই নিয়ন্ত্রণে থাকবে কোলেস্টেরল।
১। স্বাস্থ্যকর তেলও বেশি খেলে ক্যালরি বেড়ে যায়। সরাসরি বোতল থেকে তেল না ঢেলে চামচ মেপে ব্যবহার করুন। ঘি অথবা মাখনের মতো স্যাচুরেটেড চর্বি সীমিত রাখার চেষ্টা করুন।
২। ডুবো তেলে ভাজা খাবার ট্রান্স-চর্বি তৈরি করে, যা হৃদ্রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। ভাজার বদলে বেকিং, গ্রিলিং বা এয়ার-ফ্রাই করার অভ্যাস করুন।
৩। ওটমিল, মটরশুঁটি বা আপেলের মতো দ্রবণীয় ফাইবার রক্তে ক্ষতিকর এলডিএল কোলেস্টেরল শোষণ কমায়। প্রতিদিন অন্তত ১০ গ্রাম অতিরিক্ত ফাইবার হৃদ্রোগের ঝুঁকি ১৭ শতাংশ কমাতে পারে।
৪। অতিরিক্ত চিনি ট্রাইগ্লিসারাইড বাড়ায় এবং অতিরিক্ত লবণ উচ্চ রক্তচাপের কারণ হয়। সস বা ব্রেডের মতো খাবারে লুকিয়ে থাকা চিনির বিষয়ে সতর্ক থাকুন।
৫। চর্বিযুক্ত পাত্রে খাবার রাখা বা পোড়া তেল বারবার ব্যবহার করা ধমনির জন্য ক্ষতিকর। খাবার কাচ বা স্টিলের পাত্রে রাখুন।
৬। পুষ্টিকর খাবারও অতিরিক্ত খেলে ট্রাইগ্লিসারাইড বাড়তে পারে। ছোট প্লেটে পরিমিত খাবার খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করুন।
৭। দোকানের কেনা সস
অথবা ড্রেসিংয়ে প্রচুর চিনি ও সোডিয়াম থাকে। এর বদলে দই, লেবুর রস বা অলিভ অয়েল দিয়ে বাড়িতেই স্বাস্থ্যকর সস তৈরি করুন।
সূত্র: হেলথ শর্টস

আমাদের প্রাত্যহিক কিছু অভ্যাস অজান্তেই শরীরের ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। সুস্থ হার্টের জন্য রান্নাঘরের করা কিছু ভুল এড়িয়ে চলুন। তাহলেই নিয়ন্ত্রণে থাকবে কোলেস্টেরল।
১। স্বাস্থ্যকর তেলও বেশি খেলে ক্যালরি বেড়ে যায়। সরাসরি বোতল থেকে তেল না ঢেলে চামচ মেপে ব্যবহার করুন। ঘি অথবা মাখনের মতো স্যাচুরেটেড চর্বি সীমিত রাখার চেষ্টা করুন।
২। ডুবো তেলে ভাজা খাবার ট্রান্স-চর্বি তৈরি করে, যা হৃদ্রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। ভাজার বদলে বেকিং, গ্রিলিং বা এয়ার-ফ্রাই করার অভ্যাস করুন।
৩। ওটমিল, মটরশুঁটি বা আপেলের মতো দ্রবণীয় ফাইবার রক্তে ক্ষতিকর এলডিএল কোলেস্টেরল শোষণ কমায়। প্রতিদিন অন্তত ১০ গ্রাম অতিরিক্ত ফাইবার হৃদ্রোগের ঝুঁকি ১৭ শতাংশ কমাতে পারে।
৪। অতিরিক্ত চিনি ট্রাইগ্লিসারাইড বাড়ায় এবং অতিরিক্ত লবণ উচ্চ রক্তচাপের কারণ হয়। সস বা ব্রেডের মতো খাবারে লুকিয়ে থাকা চিনির বিষয়ে সতর্ক থাকুন।
৫। চর্বিযুক্ত পাত্রে খাবার রাখা বা পোড়া তেল বারবার ব্যবহার করা ধমনির জন্য ক্ষতিকর। খাবার কাচ বা স্টিলের পাত্রে রাখুন।
৬। পুষ্টিকর খাবারও অতিরিক্ত খেলে ট্রাইগ্লিসারাইড বাড়তে পারে। ছোট প্লেটে পরিমিত খাবার খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করুন।
৭। দোকানের কেনা সস
অথবা ড্রেসিংয়ে প্রচুর চিনি ও সোডিয়াম থাকে। এর বদলে দই, লেবুর রস বা অলিভ অয়েল দিয়ে বাড়িতেই স্বাস্থ্যকর সস তৈরি করুন।
সূত্র: হেলথ শর্টস

বিশ্বের ৮ কোটিরও বেশি মানুষ তোতলামি সমস্যায় ভোগেন। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, গায়ক–গীতিকার এড শিরানের মতো ব্যক্তিত্বও রয়েছেন। এমনকি বিজ্ঞানী আইজ্যাক নিউটনও এই সমস্যায় ভুগতেন।
১৫ অক্টোবর ২০২৪
ঝাঁকির কারণে শিশুর মস্তিষ্কে আঘাত বা শেকেন বেবি সিনড্রোম হলো শিশু নির্যাতনের একটি মারাত্মক ও জীবনঘাতী রূপ। এটি প্রধানত ২ বছরের কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে দেখা যায়। এই অবস্থায় শিশুকে জোরে জোরে ঝাঁকানোর ফলে মস্তিষ্ক, চোখ ও ঘাড়ে গুরুতর আঘাত সৃষ্টি হয়, যদিও বাহ্যিকভাবে অনেক সময় কোনো...
১৭ মিনিট আগে
মানুষের অঙ্গের ঘাটতি মেটাতে শূকর থেকে অঙ্গ প্রতিস্থাপন (জেনোট্রান্সপ্লান্টেশন) ভবিষ্যতে মানুষের দান করা অঙ্গের চেয়ে উন্নত বিকল্প হয়ে উঠতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় ট্রান্সপ্লান্ট সার্জন ড. রবার্ট মন্টগোমারি এই মত দিয়েছেন।
১৩ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশে যেখানে কিডনি প্রতিস্থাপন এখনো সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে, সেখানে অসহায় ও দরিদ্র রোগীদের শেষ ভরসা হয়ে উঠেছেন কিডনির শল্যচিকিৎসক অধ্যাপক কামরুল ইসলাম। দেশে যত কিডনি প্রতিস্থাপিত হয়, সেগুলোর একটি বড় অংশই করেন তিনি। নিজের প্রতিষ্ঠিত সেন্টার ফর কিডনি ডিজিজেস...
৩ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

মানুষের অঙ্গের ঘাটতি মেটাতে শূকর থেকে অঙ্গ প্রতিস্থাপন (জেনোট্রান্সপ্লান্টেশন) ভবিষ্যতে মানুষের দান করা অঙ্গের চেয়ে উন্নত বিকল্প হয়ে উঠতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় ট্রান্সপ্লান্ট সার্জন ড. রবার্ট মন্টগোমারি এই মত দিয়েছেন। তিনি নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটি (এনওয়াইইউ) ল্যাঙ্গোন ট্রান্সপ্লান্ট ইনস্টিটিউটের পরিচালক এবং বর্তমানে জীবিত মানুষের শরীরে শূকরের কিডনি প্রতিস্থাপনের একটি ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
ড. মন্টগোমারি জানান, এই ট্রায়ালের প্রথম প্রতিস্থাপন ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে এবং আগামী জানুয়ারিতে আরেকটি অপারেশন হওয়ার কথা রয়েছে। প্রাথমিকভাবে ছয়জন রোগীর শরীরে জিন-সম্পাদিত (জিন এডিটেড) শূকরের কিডনি প্রতিস্থাপন করা হবে। এসব কিডনিতে ১০টি জিনগত পরিবর্তন আনা হয়েছে, যাতে মানবদেহে অঙ্গ প্রত্যাখ্যানের ঝুঁকি কমে। যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) অনুমোদন দিলে এই ট্রায়াল আরও বিস্তৃত হয়ে ৪৪টি প্রতিস্থাপনে রূপ নিতে পারে।
বিশ্বজুড়ে মানব অঙ্গের তীব্র সংকট রয়েছে। যুক্তরাজ্যের এনএইচএস ব্লাড অ্যান্ড ট্রান্সপ্লান্টের তথ্য অনুযায়ী, শুধু যুক্তরাজ্যেই গত ১০ বছরে ১২ হাজারের বেশি মানুষ অঙ্গ না পেয়ে মারা গেছেন বা অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন। নতুন এই ট্রায়ালে অংশগ্রহণকারীরা এমন রোগী, যাঁরা মানব কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য অনুপযুক্ত অথবা অপেক্ষমাণ তালিকায় থাকলেও পাঁচ বছরের মধ্যে অঙ্গ পাওয়ার আগে মারা যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন।
ড. মন্টগোমারি নিজেও একজন ট্রান্সপ্লান্ট রোগী। বংশগত হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি ২০১৮ সালে হৃদ্যন্ত্র প্রতিস্থাপন করান। তাঁর বাবা ও ভাই একই রোগে মারা যান। তিনি বলেন, মানুষের অঙ্গ কখনো পর্যাপ্ত সংখ্যায় মিলবে না। কিন্তু অঙ্গ প্রতিস্থাপনের জন্য অপেক্ষার বাস্তবতা না বুঝলে এই সংকটের গভীরতা বোঝা যায় না।
মন্টগোমারি মানব অঙ্গের জোগান বাড়াতে ডোমিনো-পেয়ার্ড কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট ও হেপাটাইটিস ‘সি’ আক্রান্ত দাতার অঙ্গ ব্যবহারের মতো উদ্যোগে পথিকৃৎ ভূমিকা রেখেছেন। তবু তাঁর মতে, এসব উদ্যোগ যথেষ্ট নয়। জিন সম্পাদিত শূকর তৈরির প্রযুক্তিই জেনোট্রান্সপ্লান্টেশনকে বাস্তবের কাছাকাছি এনেছে।
ড. মন্টগোমারির ভাষায়, ভবিষ্যতে শূকরের অঙ্গ মানুষের অঙ্গের চেয়ে উন্নত হতে পারে। কারণ, এগুলো ধারাবাহিকভাবে জিনগতভাবে উন্নত করা সম্ভব, যা মানুষের অঙ্গে করা যায় না। এমনকি শূকরের থাইমাস অঙ্গ একসঙ্গে প্রতিস্থাপন করলে রোগীর রোগ প্রতিরোধক্ষমতা এমনভাবে মানিয়ে নিতে পারে, একদিন হয়তো অ্যান্টিরিজেকশন ওষুধের প্রয়োজনীয়তাও কমে যাবে।
মন্টগোমারি জানান, প্রয়োজনে তিনি নিজেও ভবিষ্যতে শূকরের হৃদ্যন্ত্র নিতে আপত্তি করবেন না। তাঁর কথায়, ‘আমার সন্তানেরাও একই জেনেটিক ঝুঁকিতে আছে। আমি চাই, তারা যেন আমাদের চেয়ে বেশি বিকল্প নিয়ে বড় হতে পারে।’

মানুষের অঙ্গের ঘাটতি মেটাতে শূকর থেকে অঙ্গ প্রতিস্থাপন (জেনোট্রান্সপ্লান্টেশন) ভবিষ্যতে মানুষের দান করা অঙ্গের চেয়ে উন্নত বিকল্প হয়ে উঠতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় ট্রান্সপ্লান্ট সার্জন ড. রবার্ট মন্টগোমারি এই মত দিয়েছেন। তিনি নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটি (এনওয়াইইউ) ল্যাঙ্গোন ট্রান্সপ্লান্ট ইনস্টিটিউটের পরিচালক এবং বর্তমানে জীবিত মানুষের শরীরে শূকরের কিডনি প্রতিস্থাপনের একটি ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
ড. মন্টগোমারি জানান, এই ট্রায়ালের প্রথম প্রতিস্থাপন ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে এবং আগামী জানুয়ারিতে আরেকটি অপারেশন হওয়ার কথা রয়েছে। প্রাথমিকভাবে ছয়জন রোগীর শরীরে জিন-সম্পাদিত (জিন এডিটেড) শূকরের কিডনি প্রতিস্থাপন করা হবে। এসব কিডনিতে ১০টি জিনগত পরিবর্তন আনা হয়েছে, যাতে মানবদেহে অঙ্গ প্রত্যাখ্যানের ঝুঁকি কমে। যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) অনুমোদন দিলে এই ট্রায়াল আরও বিস্তৃত হয়ে ৪৪টি প্রতিস্থাপনে রূপ নিতে পারে।
বিশ্বজুড়ে মানব অঙ্গের তীব্র সংকট রয়েছে। যুক্তরাজ্যের এনএইচএস ব্লাড অ্যান্ড ট্রান্সপ্লান্টের তথ্য অনুযায়ী, শুধু যুক্তরাজ্যেই গত ১০ বছরে ১২ হাজারের বেশি মানুষ অঙ্গ না পেয়ে মারা গেছেন বা অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন। নতুন এই ট্রায়ালে অংশগ্রহণকারীরা এমন রোগী, যাঁরা মানব কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য অনুপযুক্ত অথবা অপেক্ষমাণ তালিকায় থাকলেও পাঁচ বছরের মধ্যে অঙ্গ পাওয়ার আগে মারা যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন।
ড. মন্টগোমারি নিজেও একজন ট্রান্সপ্লান্ট রোগী। বংশগত হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি ২০১৮ সালে হৃদ্যন্ত্র প্রতিস্থাপন করান। তাঁর বাবা ও ভাই একই রোগে মারা যান। তিনি বলেন, মানুষের অঙ্গ কখনো পর্যাপ্ত সংখ্যায় মিলবে না। কিন্তু অঙ্গ প্রতিস্থাপনের জন্য অপেক্ষার বাস্তবতা না বুঝলে এই সংকটের গভীরতা বোঝা যায় না।
মন্টগোমারি মানব অঙ্গের জোগান বাড়াতে ডোমিনো-পেয়ার্ড কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট ও হেপাটাইটিস ‘সি’ আক্রান্ত দাতার অঙ্গ ব্যবহারের মতো উদ্যোগে পথিকৃৎ ভূমিকা রেখেছেন। তবু তাঁর মতে, এসব উদ্যোগ যথেষ্ট নয়। জিন সম্পাদিত শূকর তৈরির প্রযুক্তিই জেনোট্রান্সপ্লান্টেশনকে বাস্তবের কাছাকাছি এনেছে।
ড. মন্টগোমারির ভাষায়, ভবিষ্যতে শূকরের অঙ্গ মানুষের অঙ্গের চেয়ে উন্নত হতে পারে। কারণ, এগুলো ধারাবাহিকভাবে জিনগতভাবে উন্নত করা সম্ভব, যা মানুষের অঙ্গে করা যায় না। এমনকি শূকরের থাইমাস অঙ্গ একসঙ্গে প্রতিস্থাপন করলে রোগীর রোগ প্রতিরোধক্ষমতা এমনভাবে মানিয়ে নিতে পারে, একদিন হয়তো অ্যান্টিরিজেকশন ওষুধের প্রয়োজনীয়তাও কমে যাবে।
মন্টগোমারি জানান, প্রয়োজনে তিনি নিজেও ভবিষ্যতে শূকরের হৃদ্যন্ত্র নিতে আপত্তি করবেন না। তাঁর কথায়, ‘আমার সন্তানেরাও একই জেনেটিক ঝুঁকিতে আছে। আমি চাই, তারা যেন আমাদের চেয়ে বেশি বিকল্প নিয়ে বড় হতে পারে।’

বিশ্বের ৮ কোটিরও বেশি মানুষ তোতলামি সমস্যায় ভোগেন। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, গায়ক–গীতিকার এড শিরানের মতো ব্যক্তিত্বও রয়েছেন। এমনকি বিজ্ঞানী আইজ্যাক নিউটনও এই সমস্যায় ভুগতেন।
১৫ অক্টোবর ২০২৪
ঝাঁকির কারণে শিশুর মস্তিষ্কে আঘাত বা শেকেন বেবি সিনড্রোম হলো শিশু নির্যাতনের একটি মারাত্মক ও জীবনঘাতী রূপ। এটি প্রধানত ২ বছরের কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে দেখা যায়। এই অবস্থায় শিশুকে জোরে জোরে ঝাঁকানোর ফলে মস্তিষ্ক, চোখ ও ঘাড়ে গুরুতর আঘাত সৃষ্টি হয়, যদিও বাহ্যিকভাবে অনেক সময় কোনো...
১৭ মিনিট আগে
আমাদের প্রাত্যহিক কিছু অভ্যাস অজান্তেই শরীরের ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। সুস্থ হার্টের জন্য রান্নাঘরের করা কিছু ভুল এড়িয়ে চলুন। তাহলেই নিয়ন্ত্রণে থাকবে কোলেস্টেরল।
২৩ মিনিট আগে
বাংলাদেশে যেখানে কিডনি প্রতিস্থাপন এখনো সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে, সেখানে অসহায় ও দরিদ্র রোগীদের শেষ ভরসা হয়ে উঠেছেন কিডনির শল্যচিকিৎসক অধ্যাপক কামরুল ইসলাম। দেশে যত কিডনি প্রতিস্থাপিত হয়, সেগুলোর একটি বড় অংশই করেন তিনি। নিজের প্রতিষ্ঠিত সেন্টার ফর কিডনি ডিজিজেস...
৩ দিন আগেমুহাম্মাদ শফিউল্লাহ, ঢাকা

বাংলাদেশে যেখানে কিডনি প্রতিস্থাপন এখনো সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে, সেখানে অসহায় ও দরিদ্র রোগীদের শেষ ভরসা হয়ে উঠেছেন কিডনির শল্যচিকিৎসক অধ্যাপক কামরুল ইসলাম। দেশে যত কিডনি প্রতিস্থাপিত হয়, সেগুলোর একটি বড় অংশই করেন তিনি। নিজের প্রতিষ্ঠিত সেন্টার ফর কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি (সিকেডি) হাসপাতালে গতকাল মঙ্গলবার তিনি ২০০০তম কিডনি প্রতিস্থাপন সম্পন্ন করেছেন। ব্যয়বহুল এই শল্য-চিকিৎসায় নিজে কোনো পারিশ্রমিক নেন না ২০২২ সালে স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত এই চিকিৎসক।
কিডনি ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুসারে, বাংলাদেশে কিডনি রোগের পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। প্রায় ২ কোটি মানুষ কিডনির কোনো না কোনো সমস্যায় ভুগছেন। দেশে প্রতি ঘণ্টায় প্রায় পাঁচজন রোগীর মৃত্যু হচ্ছে কিডনি অকেজো হয়ে। কিডনি প্রতিস্থাপন সীমিত এবং ডায়ালাইসিস ব্যয়বহুল। ফলে অধিকাংশ রোগী চিকিৎসা না পেয়ে মারা যান। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত ও চিকিৎসা নিলে ৬০ শতাংশ রোগীর জীবন রক্ষা সম্ভব।
কামরুল ইসলামের জন্ম ১৯৬৫ সালে। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে বোর্ডের মেধাতালিকায় যথাক্রমে ১৫তম ও ১০তম স্থান লাভ করেছিলেন তিনি। এরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজের ৪০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী হিসেবে ১৯৯০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত মেডিকেল কলেজের মধ্যে সম্মিলিত এমবিবিএস পরীক্ষায় প্রথম স্থান অর্জন করে স্বর্ণপদক পান। এরপর ১৯৯৫ সালে এফসিপিএস, ২০০০ সালে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইউরোলজিতে এমএস এবং ২০০৩ সালে ইংল্যান্ডের রয়েল কলেজ থেকে এফআরসিএস ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি।
ডা. কামরুলের কর্মজীবন শুরু ১৯৯৩ সালে, বিসিএসের মাধ্যমে স্বাস্থ্য ক্যাডারে যোগ দিয়ে। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি হাসপাতালে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি এবং ২০০৭ সালে প্রথম সফল কিডনি প্রতিস্থাপন সম্পন্ন করেন। ২০১১ সালে সরকারি চাকরি ছেড়ে বেসরকারি একটি মেডিকেল কলেজে অধ্যাপক পদে দায়িত্ব নেন। পরে ২০১৪ সালে নিজ উদ্যোগে রাজধানীর শ্যামলীতে সিকেডি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন।
সিকেডি সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে ডা. কামরুলের নেতৃত্বে সপ্তাহে ছয়টি কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়। কিডনি দাতা ও গ্রহীতার জন্য একই সঙ্গে দুটি কক্ষে অস্ত্রোপচার চলে। প্রতিটি অস্ত্রোপচারে সাধারণত ১০-১২ জন চিকিৎসক অংশ নেন। যাঁদের মধ্যে থাকেন অবেদনবিদ, কিডনি বিশেষজ্ঞ, ইউরোলজির শল্যচিকিৎসকসহ অন্যান্য বিশেষজ্ঞ, পাশাপাশি নার্স ও টেকনোলজিস্ট।
ডা. কামরুল বলেন, সিকেডিতে প্রতিদিন গড়ে একটি কিডনি প্রতিস্থাপিত হয়। প্রতিটি অস্ত্রোপচারে ১০-১২ জন চিকিৎসক কাজ করেন। তিনি নিজে পারিশ্রমিক নেন না, তবে অস্ত্রোপচারে আনুষঙ্গিক খরচ থাকে। তাঁর হাসপাতালে কিডনি প্রতিস্থাপনের প্যাকেজ এখন ২ লাখ ১৫ হাজার টাকা। যার মধ্যে অস্ত্রোপচার, ওষুধ, আইসিইউ এবং অন্যান্য খরচ অন্তর্ভুক্ত। কিডনি দাতা সাধারণত ৩ থেকে ৭ দিন এবং কিডনি গ্রহীতা ৭ থেকে ১০ দিন হাসপাতালে থাকেন।
হাসপাতালের অন্যান্য সার্জারি ও চিকিৎসাসেবার আয়ের অর্থে কিডনি প্রতিস্থাপনের খরচের পুরো প্রক্রিয়া চালানো হয়। সেখানে প্রতিদিন ৭-১২টি কিডনি স্টোন সার্জারি, কিডনি ক্যানসার, প্রস্টেট ক্যানসারসহ অন্যান্য সার্জারি করা হয়। হাসপাতালে বর্তমানে চিকিৎসক, নার্স, টেকনোলজিস্টসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা চার শতাধিক। আউটডোরে প্রতিদিন ২৫০-৩০০ রোগী, ইনডোরে প্রায় ১০০ রোগী সেবা নেন। ১০০ শয্যার হাসপাতালটিতে আরও ৫০ শয্যা বাড়ানোর জন্য আবেদন করা হয়েছে।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে সিকেডি হাসপাতালে কিডনি প্রতিস্থাপন করেছেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাসিন্দা মাইনুল রহমান। ৪৪ বছর বয়সী এই ব্যবসায়ীর কিডনি অকেজো হয়ে গেলে স্ত্রীর দেওয়া কিডনি নিয়ে তাঁর শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়। ডা. কামরুল ইসলাম এই অস্ত্রোপচার করেন।
কিডনি প্রতিস্থাপনে সিকেডি হাসপাতাল সোয়া দুই লাখ টাকা নিয়েছে জানিয়ে মাইনুল রহমান গতকাল সন্ধ্যায় আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সিকেডি হাসপাতাল যদি অন্য হাসপাতালের মতো খরচ নিত, তাহলে আমরা তা বহন করতে পারতাম না। এখন প্রতি মাসে ফলোআপ চিকিৎসা প্রয়োজন হয়। সেখানে গেলে সবকিছু বিনা মূল্যে পাওয়া যায়। পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও চিকিৎসকের ফি দিতে হয় না।’
এর আগে ২০২৩ সালের অক্টোবরে স্ত্রীর দেওয়া কিডনি নিজের শরীরে প্রতিস্থাপন করেন নারায়ণগঞ্জের ৩৭ বছর বয়সী আবু বকর। তিনি বলেন, ‘ডা. কামরুল স্যার খুবই মানবিক। আমরা খরচের ভয়ে চিকিৎসায় যেতে চাইনি। তিনি কয়েকবার ফোন করে আমাদের খোঁজ নিয়েছেন, তিনি কিডনি বসিয়ে দিয়েছেন।’
ডা. কামরুল জানান, কিডনি প্রতিস্থাপন করা রোগীরা বাসায় গেলে প্রথম এক থেকে দুই বছর অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হয়; বিশেষ করে ওষুধ ঠিকমতো না খাওয়া, সময়মতো ডোজ না নেওয়া এবং অনিয়মিত জীবনধারা ঝুঁকি বাড়ায়। আবার রোগীরা খরচের ভয়ে ফলোআপ চিকিৎসায় আসতে চান না। ফলে তাঁদের এসব চিকিৎসা আজীবন বিনা মূল্যে করেন তিনি।
ডা. কামরুলের স্ত্রীও একজন চিকিৎসক। তিনি বর্তমানে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত। তাঁদের তিন মেয়ে। বড় মেয়ে শিক্ষানবিশ চিকিৎসক, মেজ মেয়ে এমবিবিএস অধ্যয়ন করছেন।
নিজের প্রতিষ্ঠিত সিকেডি হাসপাতালকে ‘বড় গাছের মতো’ দেখেন ডা. কামরুল ইসলাম। যেখানে আয়ের একটি অংশ দরিদ্র রোগী ও কিডনি প্রতিস্থাপনে ব্যয় করা হয়। তিনি বলেন, ‘মানুষকে নিখুঁত চিকিৎসা দেওয়া আমার কর্তব্য। আমি কিডনি রোগীদের খরচ হাসপাতালের অন্যান্য আয়ের মাধ্যমে বহন করি। এটি যেকোনো হাসপাতালই করতে পারে এবং এর জন্য লোকসান হয়; তা কিন্তু নয়।’

বাংলাদেশে যেখানে কিডনি প্রতিস্থাপন এখনো সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে, সেখানে অসহায় ও দরিদ্র রোগীদের শেষ ভরসা হয়ে উঠেছেন কিডনির শল্যচিকিৎসক অধ্যাপক কামরুল ইসলাম। দেশে যত কিডনি প্রতিস্থাপিত হয়, সেগুলোর একটি বড় অংশই করেন তিনি। নিজের প্রতিষ্ঠিত সেন্টার ফর কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি (সিকেডি) হাসপাতালে গতকাল মঙ্গলবার তিনি ২০০০তম কিডনি প্রতিস্থাপন সম্পন্ন করেছেন। ব্যয়বহুল এই শল্য-চিকিৎসায় নিজে কোনো পারিশ্রমিক নেন না ২০২২ সালে স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত এই চিকিৎসক।
কিডনি ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুসারে, বাংলাদেশে কিডনি রোগের পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। প্রায় ২ কোটি মানুষ কিডনির কোনো না কোনো সমস্যায় ভুগছেন। দেশে প্রতি ঘণ্টায় প্রায় পাঁচজন রোগীর মৃত্যু হচ্ছে কিডনি অকেজো হয়ে। কিডনি প্রতিস্থাপন সীমিত এবং ডায়ালাইসিস ব্যয়বহুল। ফলে অধিকাংশ রোগী চিকিৎসা না পেয়ে মারা যান। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত ও চিকিৎসা নিলে ৬০ শতাংশ রোগীর জীবন রক্ষা সম্ভব।
কামরুল ইসলামের জন্ম ১৯৬৫ সালে। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে বোর্ডের মেধাতালিকায় যথাক্রমে ১৫তম ও ১০তম স্থান লাভ করেছিলেন তিনি। এরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজের ৪০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী হিসেবে ১৯৯০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত মেডিকেল কলেজের মধ্যে সম্মিলিত এমবিবিএস পরীক্ষায় প্রথম স্থান অর্জন করে স্বর্ণপদক পান। এরপর ১৯৯৫ সালে এফসিপিএস, ২০০০ সালে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইউরোলজিতে এমএস এবং ২০০৩ সালে ইংল্যান্ডের রয়েল কলেজ থেকে এফআরসিএস ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি।
ডা. কামরুলের কর্মজীবন শুরু ১৯৯৩ সালে, বিসিএসের মাধ্যমে স্বাস্থ্য ক্যাডারে যোগ দিয়ে। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি হাসপাতালে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি এবং ২০০৭ সালে প্রথম সফল কিডনি প্রতিস্থাপন সম্পন্ন করেন। ২০১১ সালে সরকারি চাকরি ছেড়ে বেসরকারি একটি মেডিকেল কলেজে অধ্যাপক পদে দায়িত্ব নেন। পরে ২০১৪ সালে নিজ উদ্যোগে রাজধানীর শ্যামলীতে সিকেডি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন।
সিকেডি সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে ডা. কামরুলের নেতৃত্বে সপ্তাহে ছয়টি কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়। কিডনি দাতা ও গ্রহীতার জন্য একই সঙ্গে দুটি কক্ষে অস্ত্রোপচার চলে। প্রতিটি অস্ত্রোপচারে সাধারণত ১০-১২ জন চিকিৎসক অংশ নেন। যাঁদের মধ্যে থাকেন অবেদনবিদ, কিডনি বিশেষজ্ঞ, ইউরোলজির শল্যচিকিৎসকসহ অন্যান্য বিশেষজ্ঞ, পাশাপাশি নার্স ও টেকনোলজিস্ট।
ডা. কামরুল বলেন, সিকেডিতে প্রতিদিন গড়ে একটি কিডনি প্রতিস্থাপিত হয়। প্রতিটি অস্ত্রোপচারে ১০-১২ জন চিকিৎসক কাজ করেন। তিনি নিজে পারিশ্রমিক নেন না, তবে অস্ত্রোপচারে আনুষঙ্গিক খরচ থাকে। তাঁর হাসপাতালে কিডনি প্রতিস্থাপনের প্যাকেজ এখন ২ লাখ ১৫ হাজার টাকা। যার মধ্যে অস্ত্রোপচার, ওষুধ, আইসিইউ এবং অন্যান্য খরচ অন্তর্ভুক্ত। কিডনি দাতা সাধারণত ৩ থেকে ৭ দিন এবং কিডনি গ্রহীতা ৭ থেকে ১০ দিন হাসপাতালে থাকেন।
হাসপাতালের অন্যান্য সার্জারি ও চিকিৎসাসেবার আয়ের অর্থে কিডনি প্রতিস্থাপনের খরচের পুরো প্রক্রিয়া চালানো হয়। সেখানে প্রতিদিন ৭-১২টি কিডনি স্টোন সার্জারি, কিডনি ক্যানসার, প্রস্টেট ক্যানসারসহ অন্যান্য সার্জারি করা হয়। হাসপাতালে বর্তমানে চিকিৎসক, নার্স, টেকনোলজিস্টসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা চার শতাধিক। আউটডোরে প্রতিদিন ২৫০-৩০০ রোগী, ইনডোরে প্রায় ১০০ রোগী সেবা নেন। ১০০ শয্যার হাসপাতালটিতে আরও ৫০ শয্যা বাড়ানোর জন্য আবেদন করা হয়েছে।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে সিকেডি হাসপাতালে কিডনি প্রতিস্থাপন করেছেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাসিন্দা মাইনুল রহমান। ৪৪ বছর বয়সী এই ব্যবসায়ীর কিডনি অকেজো হয়ে গেলে স্ত্রীর দেওয়া কিডনি নিয়ে তাঁর শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়। ডা. কামরুল ইসলাম এই অস্ত্রোপচার করেন।
কিডনি প্রতিস্থাপনে সিকেডি হাসপাতাল সোয়া দুই লাখ টাকা নিয়েছে জানিয়ে মাইনুল রহমান গতকাল সন্ধ্যায় আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সিকেডি হাসপাতাল যদি অন্য হাসপাতালের মতো খরচ নিত, তাহলে আমরা তা বহন করতে পারতাম না। এখন প্রতি মাসে ফলোআপ চিকিৎসা প্রয়োজন হয়। সেখানে গেলে সবকিছু বিনা মূল্যে পাওয়া যায়। পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও চিকিৎসকের ফি দিতে হয় না।’
এর আগে ২০২৩ সালের অক্টোবরে স্ত্রীর দেওয়া কিডনি নিজের শরীরে প্রতিস্থাপন করেন নারায়ণগঞ্জের ৩৭ বছর বয়সী আবু বকর। তিনি বলেন, ‘ডা. কামরুল স্যার খুবই মানবিক। আমরা খরচের ভয়ে চিকিৎসায় যেতে চাইনি। তিনি কয়েকবার ফোন করে আমাদের খোঁজ নিয়েছেন, তিনি কিডনি বসিয়ে দিয়েছেন।’
ডা. কামরুল জানান, কিডনি প্রতিস্থাপন করা রোগীরা বাসায় গেলে প্রথম এক থেকে দুই বছর অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হয়; বিশেষ করে ওষুধ ঠিকমতো না খাওয়া, সময়মতো ডোজ না নেওয়া এবং অনিয়মিত জীবনধারা ঝুঁকি বাড়ায়। আবার রোগীরা খরচের ভয়ে ফলোআপ চিকিৎসায় আসতে চান না। ফলে তাঁদের এসব চিকিৎসা আজীবন বিনা মূল্যে করেন তিনি।
ডা. কামরুলের স্ত্রীও একজন চিকিৎসক। তিনি বর্তমানে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত। তাঁদের তিন মেয়ে। বড় মেয়ে শিক্ষানবিশ চিকিৎসক, মেজ মেয়ে এমবিবিএস অধ্যয়ন করছেন।
নিজের প্রতিষ্ঠিত সিকেডি হাসপাতালকে ‘বড় গাছের মতো’ দেখেন ডা. কামরুল ইসলাম। যেখানে আয়ের একটি অংশ দরিদ্র রোগী ও কিডনি প্রতিস্থাপনে ব্যয় করা হয়। তিনি বলেন, ‘মানুষকে নিখুঁত চিকিৎসা দেওয়া আমার কর্তব্য। আমি কিডনি রোগীদের খরচ হাসপাতালের অন্যান্য আয়ের মাধ্যমে বহন করি। এটি যেকোনো হাসপাতালই করতে পারে এবং এর জন্য লোকসান হয়; তা কিন্তু নয়।’

বিশ্বের ৮ কোটিরও বেশি মানুষ তোতলামি সমস্যায় ভোগেন। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, গায়ক–গীতিকার এড শিরানের মতো ব্যক্তিত্বও রয়েছেন। এমনকি বিজ্ঞানী আইজ্যাক নিউটনও এই সমস্যায় ভুগতেন।
১৫ অক্টোবর ২০২৪
ঝাঁকির কারণে শিশুর মস্তিষ্কে আঘাত বা শেকেন বেবি সিনড্রোম হলো শিশু নির্যাতনের একটি মারাত্মক ও জীবনঘাতী রূপ। এটি প্রধানত ২ বছরের কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে দেখা যায়। এই অবস্থায় শিশুকে জোরে জোরে ঝাঁকানোর ফলে মস্তিষ্ক, চোখ ও ঘাড়ে গুরুতর আঘাত সৃষ্টি হয়, যদিও বাহ্যিকভাবে অনেক সময় কোনো...
১৭ মিনিট আগে
আমাদের প্রাত্যহিক কিছু অভ্যাস অজান্তেই শরীরের ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। সুস্থ হার্টের জন্য রান্নাঘরের করা কিছু ভুল এড়িয়ে চলুন। তাহলেই নিয়ন্ত্রণে থাকবে কোলেস্টেরল।
২৩ মিনিট আগে
মানুষের অঙ্গের ঘাটতি মেটাতে শূকর থেকে অঙ্গ প্রতিস্থাপন (জেনোট্রান্সপ্লান্টেশন) ভবিষ্যতে মানুষের দান করা অঙ্গের চেয়ে উন্নত বিকল্প হয়ে উঠতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় ট্রান্সপ্লান্ট সার্জন ড. রবার্ট মন্টগোমারি এই মত দিয়েছেন।
১৩ ঘণ্টা আগে