অধ্যাপক ডা. সানজিদা শাহরিয়া

আমাদের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো করার জন্য কি সন্তান পৃথিবীতে আনব, নাকি আগেই মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়ন ঘটিয়ে সন্তান জন্ম দেব? এটি খুব কঠিন প্রশ্ন।
একজন মানুষ যখন আমি থেকে আমরা হন, তখন তাঁদের মানসিক স্বাস্থ্যের ক্যানভাসটা বড় হয়ে যায়। একটি প্রচলিত কথা—‘দাম্পত্য সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না বাচ্চা নিয়ে নাও, ঠিক হয়ে যাবে।’
প্রশ্নটা হলো, যেখানে আমরা দুজন মানুষই ভালো থাকতে পারছি না, সেখানে তৃতীয় একজনকে আনলে টানাপোড়েন আরও বাড়বে। কেন সেখানে তৃতীয় একজনকে আনব?
এবার একটু ভেঙে ভেঙে দেখি। প্রথমে দেখি মায়ের ক্ষেত্রে কী হচ্ছে।
প্রেগনেন্সি নিজেই একটি মনোদৈহিক, ক্ষেত্রবিশেষে মনোসামাজিক চাপ। হরমোন পরিবর্তনের কারণে মা ক্রমাগত নিজের শরীর বদলে যেতে দেখছেন। কখনো গর্ভকালীন কখনো-বা গর্ভ-পরবর্তী সময়ে কোনো কোনো নতুন মা বিষণ্নতার শিকার হন। যেটা অ্যান্টিপারটাম বা পোস্টপারটাম ডিপ্রেশন থেকে ক্ষেত্রবিশেষে সাইকোসিস পর্যন্ত হয়ে যায়। এখন স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ভালো না থাকলে এই বিষণ্নতা হলে মায়ের যত্ন হবে না। মায়ের অযত্ন মানে গর্ভস্থ শিশুরও অযত্ন।
গবেষণায় দেখা গেছে, গর্ভাবস্থায় মায়ের বিষণ্নতা এবং উদ্বেগজনিত রোগ থাকলে প্রিম্যাচিওর বেবি, অথবা নির্দিষ্ট সময়ের আগেই সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়া থেকে শিশুর জন্মকালীন ওজন কম হতে পারে। সে জন্য শিশুকে আইসিইউতে রাখতে হতে পারে। এ কারণে শিশুটি পরবর্তীকালে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ এবং হৃদ্রোগের ঝুঁকিতে পড়তে পারে। শুধু তাই নয়, সন্তান প্রসবের পর মায়ের বিষণ্নতা রোগ হলে মা ও শিশু—উভয়ের জন্যই সেটা ক্ষতিকর।
মা সন্তানকে ঠিকমতো বুকের দুধ খাওয়াতে না পারলে মা ও সন্তানের বন্ধন দৃঢ় হয় না। সঠিক পরিচর্যার অভাবে সন্তানটি ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, পুষ্টিহীনতায় ভুগতে পারে। কখনো এটা এত তীব্র হয়ে যায় যে, মা আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। কখনো সন্তানকে আঘাত করেন, মেরেও ফেলেন। কাজেই গর্ভাবস্থায় এবং প্রসব-পরবর্তী এক বছর খুবই গুরুত্বপূর্ণ মায়ের শরীর ও মনের জন্য। মেয়েরা এ অযত্নটা আমৃত্যু মনে রাখেন।
নিউরোসায়েন্স বলে, যে শিশু বাবা-মার সুস্থ স্বাভাবিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক দেখে বড় হবে, সে ভবিষ্যৎ জীবনে মানসিক চাপে পড়লেও নিজের আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। বহু শিশুর ইদানীং কথা বলতে দেরি হচ্ছে। জেনেটিক কারণ বাদে এর পরিবেশগত একটা প্রভাব আছে। বাবা-মায়ের সুসম্পর্ক শিশুর মানসিক, দ্রুত কথা বলা এবং আবেগীয় বিকাশকে ত্বরান্বিত করে। এ রকম পরিবেশে শিশু বড় হলে ইতিবাচক এবং আত্মবিশ্বাসী হবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, নিম্ন এবং মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে মাতৃত্বজনিত বিষণ্নতা রোগের সঙ্গে মনোসামাজিক বিষয় সম্পৃক্ত। যেমন, অস্থিতিশীল দাম্পত্য সম্পর্ক, দাম্পত্য কলহ, মেয়ে সন্তান জন্ম দেওয়ার চাপ, পারিবারিক সহিংসতা, অর্থনৈতিক সংকট ইত্যাদি। করোনা-পরবর্তী সময়ে সবকিছু আরও কঠিন হয়ে উঠেছে।
স্বামী এবং পরিবারের অন্য সদস্যদের বুঝতে হবে যে, শুধু নবাগত সন্তানই নয়, মায়েরও বিশেষ পরিচর্যা ও বিশ্রাম দরকার। নতুন মায়ের বাড়তি যত্নের খেয়াল রাখার দায়িত্ব সব থেকে বেশি বাবার। কিন্তু দেখা যায়, আমাদের সমাজে শিশু জন্মের পর কখনো কখনো মেয়েকে বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। অনেক স্বামী শিশুর কান্নায় ঘুম হবে না ভেবে অন্য রুমে ঘুমান। স্ত্রীরও যে বিশ্রামের প্রয়োজন, সেটা কজন মনে রাখেন? বহু পরকীয়ার জন্ম হয় স্ত্রীর গর্ভাবস্থায়, অথবা স্ত্রী যখন সন্তানকে সময় দিচ্ছেন, সেই অবকাশে। একজন যখন নিজের শরীর ও মন মিশিয়ে সন্তানকে আগলে রাখছেন, তখন অন্যজন কী করছেন? এই আয়নাটি নিজের চোখের সামনে ধরা খুব দরকার।
এখন নারীদের বড় একটি অংশ কর্মজীবী। ক্যারিয়ারের কিছুটা তো বিসর্জন দিতেই হয় সন্তানের জন্মের পর। বাবা-মার যদি বন্ধুত্বের জায়গাটা না থাকে, একজন পেশাজীবী মা অনেক রকম সাহায্য বাবার কাছ থেকে পাবেন না সন্তান হওয়ার পর। কাজেই সন্তান নেওয়ার আগে প্রতিটি মেয়েকে বলব, দুবার ভাবুন।
শিশুর জন্ম হওয়াটা কি শুধু মার জন্যই মানসিক চাপের কাজ?
মোটেও না। নতুন বাবার জন্যও এটি চাপের বিষয়। বাড়তি খরচের চাপ, মায়ের বাড়তি যত্ন—এগুলোর দায়ভার মোটামুটি পুরুষটির। পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ক্ষতি করেছে পুরুষেরও। তার ওপরে সংসারের জোয়াল চাপিয়ে দিয়েছে। এই সংসারের ঘানি আমৃত্যু টানবার চক্রব্যূহ থেকে পুরুষের পালানোর পথ নেই।
যৌথ পরিবারগুলো ভেঙে গেছে। বাবা-মা এবং শিশু নিয়ে তৈরি হচ্ছে একক বা নিউক্লিয়ার পরিবার। উপরন্তু নারী-পুরুষ উভয়কেই জীবনের তাগিদে উপার্জনে নামতে হচ্ছে। শিশু জন্মের পর পারিবারিক ও কর্মক্ষেত্রের চাপে চাকরিজীবী মায়ের মতো একক পরিবারের বাবাও পড়ছেন। একইভাবে অসহিষ্ণুতা, ঘুম কম হওয়া, মনোযোগ কমে যাওয়া, বিষণ্নতায় নতুন মায়ের মতো নতুন বাবাটিও ভুগতে পারেন।
গবেষণা বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি সাতজন মায়ের মধ্যে একজন এবং প্রতি দশজন বাবার মধ্যে একজন শিশু জন্মের পর বিষণ্নতার শিকার হন। ফলে একক পরিবারে নতুন বাবা ও মা দুজনকেই পেশা এবং পরিবারের সঙ্গে সমন্বয় আনতে দীর্ঘ লড়াই করতে হয়। বাংলাদেশে এ ধরনের সচেতনতা বিরল।
ফলে বাবা-মা যদি নিজেদের সমস্যার সমাধান না করেই মনে করেন সন্তান নিলে সমস্যার সমাধান হবে, তাহলে তাদের পুরোনো সমস্যা ধারাবাহিকভাবে চলতেই থাকবে এবং সন্তানটিও নতুন সমস্যার কেন্দ্রবিন্দু হবে।
মনস্তাত্ত্বিকভাবে মায়ের গর্ভকালীন সময় থেকে শুরু করে প্রথম দুই বছর, শিশু যখন কথা বলতে জানে না, যেটাকে প্রিভারবাল স্টেজ বলে, তখন শিশুটি কিন্তু ঠিকই বুঝে যায় যে সে এই পরিবারে খুব আদরের সঙ্গে গৃহীত নয়। ফলে শিশুটি নিজেকে দায়ী করতে থাকে বেড়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে বাবা-মার গন্ডগোলের জন্য। এর ফল শুধু সুদূর প্রসারী।
এই শিশুটি প্রাপ্তবয়স্ক হলেও এই মনস্তাত্ত্বিক ভোগান্তির শিকার হবে। প্রাপ্তবয়স্ক হলে এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটানোর একটি প্রবণতা তার ব্যক্তিগত জীবনে দেখা যেতে পারে। কারণ সে দেখে এসেছে দাম্পত্যে ভালো না থাকা। অবচেতন ভাবে মানুষ যা দেখে তাই অনুকরণ করে। তাহলে কি এর থেকে মুক্তি নেই? অবশ্যই আছে। একমাত্র সচেতনতাই এ সমস্যা থেকে মুক্তির চাবি কাঠি।
দাম্পত্যে মানসিক স্বাস্থ্য ভালো মানে, সে দাম্পত্য সম্পর্কের মধ্যে কষ্ট থাকবে না, দ্বন্দ্ব থাকবে না, তা নয়। এখানে তারা মানসিক দ্বন্দ্বগুলো কীভাবে মোকাবিলা করা যাবে সেই ব্যাকরণটা জানেন। ফলে একটা ভালো মানসিক সম্পর্ক নিয়ে যখন কেউ বাবা-মা হওয়ার পরিকল্পনা করেন, তখন তারা জানেন যে ক্যারিয়ারে কতটুকু কোথায় বিসর্জন দিতে হবে এবং এতে কোন ধরনের সমস্যা আসতে পারে। পরস্পর আলোচনা ও সম্মতির ভিত্তিতে তারা সমস্যাগুলো মোকাবিলা করেন ব্যক্তিগত মর্যাদা অক্ষুণ্ন রেখে।
এখন কেউ একজন বলতেই পারেন, ‘আমাদের সময় তো বাচ্চা নিলেই সব ঠিক হয়ে যেত।’ বিশেষ করে শ্বশুর-শাশুড়ি শ্রেণির। খোঁজ নিলে দেখা যাবে, তখনকার মায়ের অর্থনৈতিক অক্ষমতা, সমাজের লোকে কী বলবে ইত্যাদি ভীতি, তাঁদের সম্পর্কে থেকে যেতে বাধ্য করত। এখন এই বিশ্বায়নের যুগে সেই পারিপার্শ্বিকের পরিবর্তন অনস্বীকার্য।
নতুন একটা জীবনের উন্মেষ ঘটিয়ে সেই জীবনটিকেও বিষাক্ত ডালপালায় ঘিরে ফেলা মোটেও সমাধান নয়। নিজে মানসিকভাবে ভালো না থাকলে কীভাবে সন্তানের যত্ন নেবেন যেখানে শিশুর মনোদৈহিক বিকাশ চমৎকার হবে?
প্লেনে উঠলে নির্দেশনা শোনা যায়, ‘অক্সিজেন মাস্কটা আগে নিজের মুখে নিন, তারপর শিশুকে দিন।’
কাজেই প্রথমে নিজেকে ভালো থাকা শিখতে হবে; নিজের সম্পর্ককে ভালো রাখার জায়গাটায় জোর দিতে হবে, তারপর সন্তানকে পৃথিবীতে আনতে হবে।
ভঙ্গুর সম্পর্কে সন্তানের জন্ম দেওয়া মা, বাবা ও সন্তান তিন পক্ষের জন্যই ভোগান্তির।
লেখক: চিকিৎসক ও কাউন্সেলর, সাইকোথেরাপি প্র্যাকটিশনার, ফিনিক্স ওয়েলনেস সেন্টার, ঢাকা

আমাদের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো করার জন্য কি সন্তান পৃথিবীতে আনব, নাকি আগেই মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়ন ঘটিয়ে সন্তান জন্ম দেব? এটি খুব কঠিন প্রশ্ন।
একজন মানুষ যখন আমি থেকে আমরা হন, তখন তাঁদের মানসিক স্বাস্থ্যের ক্যানভাসটা বড় হয়ে যায়। একটি প্রচলিত কথা—‘দাম্পত্য সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না বাচ্চা নিয়ে নাও, ঠিক হয়ে যাবে।’
প্রশ্নটা হলো, যেখানে আমরা দুজন মানুষই ভালো থাকতে পারছি না, সেখানে তৃতীয় একজনকে আনলে টানাপোড়েন আরও বাড়বে। কেন সেখানে তৃতীয় একজনকে আনব?
এবার একটু ভেঙে ভেঙে দেখি। প্রথমে দেখি মায়ের ক্ষেত্রে কী হচ্ছে।
প্রেগনেন্সি নিজেই একটি মনোদৈহিক, ক্ষেত্রবিশেষে মনোসামাজিক চাপ। হরমোন পরিবর্তনের কারণে মা ক্রমাগত নিজের শরীর বদলে যেতে দেখছেন। কখনো গর্ভকালীন কখনো-বা গর্ভ-পরবর্তী সময়ে কোনো কোনো নতুন মা বিষণ্নতার শিকার হন। যেটা অ্যান্টিপারটাম বা পোস্টপারটাম ডিপ্রেশন থেকে ক্ষেত্রবিশেষে সাইকোসিস পর্যন্ত হয়ে যায়। এখন স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ভালো না থাকলে এই বিষণ্নতা হলে মায়ের যত্ন হবে না। মায়ের অযত্ন মানে গর্ভস্থ শিশুরও অযত্ন।
গবেষণায় দেখা গেছে, গর্ভাবস্থায় মায়ের বিষণ্নতা এবং উদ্বেগজনিত রোগ থাকলে প্রিম্যাচিওর বেবি, অথবা নির্দিষ্ট সময়ের আগেই সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়া থেকে শিশুর জন্মকালীন ওজন কম হতে পারে। সে জন্য শিশুকে আইসিইউতে রাখতে হতে পারে। এ কারণে শিশুটি পরবর্তীকালে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ এবং হৃদ্রোগের ঝুঁকিতে পড়তে পারে। শুধু তাই নয়, সন্তান প্রসবের পর মায়ের বিষণ্নতা রোগ হলে মা ও শিশু—উভয়ের জন্যই সেটা ক্ষতিকর।
মা সন্তানকে ঠিকমতো বুকের দুধ খাওয়াতে না পারলে মা ও সন্তানের বন্ধন দৃঢ় হয় না। সঠিক পরিচর্যার অভাবে সন্তানটি ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, পুষ্টিহীনতায় ভুগতে পারে। কখনো এটা এত তীব্র হয়ে যায় যে, মা আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। কখনো সন্তানকে আঘাত করেন, মেরেও ফেলেন। কাজেই গর্ভাবস্থায় এবং প্রসব-পরবর্তী এক বছর খুবই গুরুত্বপূর্ণ মায়ের শরীর ও মনের জন্য। মেয়েরা এ অযত্নটা আমৃত্যু মনে রাখেন।
নিউরোসায়েন্স বলে, যে শিশু বাবা-মার সুস্থ স্বাভাবিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক দেখে বড় হবে, সে ভবিষ্যৎ জীবনে মানসিক চাপে পড়লেও নিজের আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। বহু শিশুর ইদানীং কথা বলতে দেরি হচ্ছে। জেনেটিক কারণ বাদে এর পরিবেশগত একটা প্রভাব আছে। বাবা-মায়ের সুসম্পর্ক শিশুর মানসিক, দ্রুত কথা বলা এবং আবেগীয় বিকাশকে ত্বরান্বিত করে। এ রকম পরিবেশে শিশু বড় হলে ইতিবাচক এবং আত্মবিশ্বাসী হবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, নিম্ন এবং মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে মাতৃত্বজনিত বিষণ্নতা রোগের সঙ্গে মনোসামাজিক বিষয় সম্পৃক্ত। যেমন, অস্থিতিশীল দাম্পত্য সম্পর্ক, দাম্পত্য কলহ, মেয়ে সন্তান জন্ম দেওয়ার চাপ, পারিবারিক সহিংসতা, অর্থনৈতিক সংকট ইত্যাদি। করোনা-পরবর্তী সময়ে সবকিছু আরও কঠিন হয়ে উঠেছে।
স্বামী এবং পরিবারের অন্য সদস্যদের বুঝতে হবে যে, শুধু নবাগত সন্তানই নয়, মায়েরও বিশেষ পরিচর্যা ও বিশ্রাম দরকার। নতুন মায়ের বাড়তি যত্নের খেয়াল রাখার দায়িত্ব সব থেকে বেশি বাবার। কিন্তু দেখা যায়, আমাদের সমাজে শিশু জন্মের পর কখনো কখনো মেয়েকে বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। অনেক স্বামী শিশুর কান্নায় ঘুম হবে না ভেবে অন্য রুমে ঘুমান। স্ত্রীরও যে বিশ্রামের প্রয়োজন, সেটা কজন মনে রাখেন? বহু পরকীয়ার জন্ম হয় স্ত্রীর গর্ভাবস্থায়, অথবা স্ত্রী যখন সন্তানকে সময় দিচ্ছেন, সেই অবকাশে। একজন যখন নিজের শরীর ও মন মিশিয়ে সন্তানকে আগলে রাখছেন, তখন অন্যজন কী করছেন? এই আয়নাটি নিজের চোখের সামনে ধরা খুব দরকার।
এখন নারীদের বড় একটি অংশ কর্মজীবী। ক্যারিয়ারের কিছুটা তো বিসর্জন দিতেই হয় সন্তানের জন্মের পর। বাবা-মার যদি বন্ধুত্বের জায়গাটা না থাকে, একজন পেশাজীবী মা অনেক রকম সাহায্য বাবার কাছ থেকে পাবেন না সন্তান হওয়ার পর। কাজেই সন্তান নেওয়ার আগে প্রতিটি মেয়েকে বলব, দুবার ভাবুন।
শিশুর জন্ম হওয়াটা কি শুধু মার জন্যই মানসিক চাপের কাজ?
মোটেও না। নতুন বাবার জন্যও এটি চাপের বিষয়। বাড়তি খরচের চাপ, মায়ের বাড়তি যত্ন—এগুলোর দায়ভার মোটামুটি পুরুষটির। পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ক্ষতি করেছে পুরুষেরও। তার ওপরে সংসারের জোয়াল চাপিয়ে দিয়েছে। এই সংসারের ঘানি আমৃত্যু টানবার চক্রব্যূহ থেকে পুরুষের পালানোর পথ নেই।
যৌথ পরিবারগুলো ভেঙে গেছে। বাবা-মা এবং শিশু নিয়ে তৈরি হচ্ছে একক বা নিউক্লিয়ার পরিবার। উপরন্তু নারী-পুরুষ উভয়কেই জীবনের তাগিদে উপার্জনে নামতে হচ্ছে। শিশু জন্মের পর পারিবারিক ও কর্মক্ষেত্রের চাপে চাকরিজীবী মায়ের মতো একক পরিবারের বাবাও পড়ছেন। একইভাবে অসহিষ্ণুতা, ঘুম কম হওয়া, মনোযোগ কমে যাওয়া, বিষণ্নতায় নতুন মায়ের মতো নতুন বাবাটিও ভুগতে পারেন।
গবেষণা বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি সাতজন মায়ের মধ্যে একজন এবং প্রতি দশজন বাবার মধ্যে একজন শিশু জন্মের পর বিষণ্নতার শিকার হন। ফলে একক পরিবারে নতুন বাবা ও মা দুজনকেই পেশা এবং পরিবারের সঙ্গে সমন্বয় আনতে দীর্ঘ লড়াই করতে হয়। বাংলাদেশে এ ধরনের সচেতনতা বিরল।
ফলে বাবা-মা যদি নিজেদের সমস্যার সমাধান না করেই মনে করেন সন্তান নিলে সমস্যার সমাধান হবে, তাহলে তাদের পুরোনো সমস্যা ধারাবাহিকভাবে চলতেই থাকবে এবং সন্তানটিও নতুন সমস্যার কেন্দ্রবিন্দু হবে।
মনস্তাত্ত্বিকভাবে মায়ের গর্ভকালীন সময় থেকে শুরু করে প্রথম দুই বছর, শিশু যখন কথা বলতে জানে না, যেটাকে প্রিভারবাল স্টেজ বলে, তখন শিশুটি কিন্তু ঠিকই বুঝে যায় যে সে এই পরিবারে খুব আদরের সঙ্গে গৃহীত নয়। ফলে শিশুটি নিজেকে দায়ী করতে থাকে বেড়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে বাবা-মার গন্ডগোলের জন্য। এর ফল শুধু সুদূর প্রসারী।
এই শিশুটি প্রাপ্তবয়স্ক হলেও এই মনস্তাত্ত্বিক ভোগান্তির শিকার হবে। প্রাপ্তবয়স্ক হলে এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটানোর একটি প্রবণতা তার ব্যক্তিগত জীবনে দেখা যেতে পারে। কারণ সে দেখে এসেছে দাম্পত্যে ভালো না থাকা। অবচেতন ভাবে মানুষ যা দেখে তাই অনুকরণ করে। তাহলে কি এর থেকে মুক্তি নেই? অবশ্যই আছে। একমাত্র সচেতনতাই এ সমস্যা থেকে মুক্তির চাবি কাঠি।
দাম্পত্যে মানসিক স্বাস্থ্য ভালো মানে, সে দাম্পত্য সম্পর্কের মধ্যে কষ্ট থাকবে না, দ্বন্দ্ব থাকবে না, তা নয়। এখানে তারা মানসিক দ্বন্দ্বগুলো কীভাবে মোকাবিলা করা যাবে সেই ব্যাকরণটা জানেন। ফলে একটা ভালো মানসিক সম্পর্ক নিয়ে যখন কেউ বাবা-মা হওয়ার পরিকল্পনা করেন, তখন তারা জানেন যে ক্যারিয়ারে কতটুকু কোথায় বিসর্জন দিতে হবে এবং এতে কোন ধরনের সমস্যা আসতে পারে। পরস্পর আলোচনা ও সম্মতির ভিত্তিতে তারা সমস্যাগুলো মোকাবিলা করেন ব্যক্তিগত মর্যাদা অক্ষুণ্ন রেখে।
এখন কেউ একজন বলতেই পারেন, ‘আমাদের সময় তো বাচ্চা নিলেই সব ঠিক হয়ে যেত।’ বিশেষ করে শ্বশুর-শাশুড়ি শ্রেণির। খোঁজ নিলে দেখা যাবে, তখনকার মায়ের অর্থনৈতিক অক্ষমতা, সমাজের লোকে কী বলবে ইত্যাদি ভীতি, তাঁদের সম্পর্কে থেকে যেতে বাধ্য করত। এখন এই বিশ্বায়নের যুগে সেই পারিপার্শ্বিকের পরিবর্তন অনস্বীকার্য।
নতুন একটা জীবনের উন্মেষ ঘটিয়ে সেই জীবনটিকেও বিষাক্ত ডালপালায় ঘিরে ফেলা মোটেও সমাধান নয়। নিজে মানসিকভাবে ভালো না থাকলে কীভাবে সন্তানের যত্ন নেবেন যেখানে শিশুর মনোদৈহিক বিকাশ চমৎকার হবে?
প্লেনে উঠলে নির্দেশনা শোনা যায়, ‘অক্সিজেন মাস্কটা আগে নিজের মুখে নিন, তারপর শিশুকে দিন।’
কাজেই প্রথমে নিজেকে ভালো থাকা শিখতে হবে; নিজের সম্পর্ককে ভালো রাখার জায়গাটায় জোর দিতে হবে, তারপর সন্তানকে পৃথিবীতে আনতে হবে।
ভঙ্গুর সম্পর্কে সন্তানের জন্ম দেওয়া মা, বাবা ও সন্তান তিন পক্ষের জন্যই ভোগান্তির।
লেখক: চিকিৎসক ও কাউন্সেলর, সাইকোথেরাপি প্র্যাকটিশনার, ফিনিক্স ওয়েলনেস সেন্টার, ঢাকা

বাংলাদেশে যেখানে কিডনি প্রতিস্থাপন এখনো সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে, সেখানে অসহায় ও দরিদ্র রোগীদের শেষ ভরসা হয়ে উঠেছেন কিডনির শল্যচিকিৎসক অধ্যাপক কামরুল ইসলাম। দেশে যত কিডনি প্রতিস্থাপিত হয়, সেগুলোর একটি বড় অংশই করেন তিনি। নিজের প্রতিষ্ঠিত সেন্টার ফর কিডনি ডিজিজেস...
২ ঘণ্টা আগে
প্রথাগত চিকিৎসা বলতে এমন স্বাস্থ্য ও সুস্থতার ব্যবস্থাকে বোঝায়, যেগুলোর উদ্ভব আধুনিক বায়োমেডিসিনের আগেই হয়েছে। এসব চিকিৎসা পদ্ধতির ধরন নানাবিধ—ভেষজ চা থেকে শুরু করে ভারতের আয়ুর্বেদিক চিকিৎসাব্যবস্থা পর্যন্ত।
৩ দিন আগে
শীতের সকাল কিংবা সন্ধ্যায় ধোঁয়া ওঠা এক বাটি খিচুড়ির চেয়ে আরামদায়ক আর কী হতে পারে। খিচুড়ি শুধু একটি খাবার নয়। শীতকাল মানে আরাম করে হরেক রকমের সবজি দিয়ে রান্না করা খিচুড়ি খাওয়া। এতে যেমন মন ভরে, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর এ খাবার রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।
৪ দিন আগে
তেজপাতা ও লবঙ্গ—উভয়ই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। এতে রয়েছে শক্তিশালী প্রদাহবিরোধী ও ব্যাকটেরিয়ারোধী গুণাবলি, যা শরীরের ভেতরে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম। তবে এই চা সাধারণত সবার জন্য নিরাপদ হলেও গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মায়েদের এটি পান করা থেকে বিরত থাকা উচিত।
৪ দিন আগেমুহাম্মাদ শফিউল্লাহ, ঢাকা

বাংলাদেশে যেখানে কিডনি প্রতিস্থাপন এখনো সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে, সেখানে অসহায় ও দরিদ্র রোগীদের শেষ ভরসা হয়ে উঠেছেন কিডনির শল্যচিকিৎসক অধ্যাপক কামরুল ইসলাম। দেশে যত কিডনি প্রতিস্থাপিত হয়, সেগুলোর একটি বড় অংশই করেন তিনি। নিজের প্রতিষ্ঠিত সেন্টার ফর কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি (সিকেডি) হাসপাতালে গতকাল মঙ্গলবার তিনি ২০০০তম কিডনি প্রতিস্থাপন সম্পন্ন করেছেন। ব্যয়বহুল এই শল্য-চিকিৎসায় নিজে কোনো পারিশ্রমিক নেন না ২০২২ সালে স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত এই চিকিৎসক।
কিডনি ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুসারে, বাংলাদেশে কিডনি রোগের পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। প্রায় ২ কোটি মানুষ কিডনির কোনো না কোনো সমস্যায় ভুগছেন। দেশে প্রতি ঘণ্টায় প্রায় পাঁচজন রোগীর মৃত্যু হচ্ছে কিডনি অকেজো হয়ে। কিডনি প্রতিস্থাপন সীমিত এবং ডায়ালাইসিস ব্যয়বহুল। ফলে অধিকাংশ রোগী চিকিৎসা না পেয়ে মারা যান। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত ও চিকিৎসা নিলে ৬০ শতাংশ রোগীর জীবন রক্ষা সম্ভব।
কামরুল ইসলামের জন্ম ১৯৬৫ সালে। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে বোর্ডের মেধাতালিকায় যথাক্রমে ১৫তম ও ১০তম স্থান লাভ করেছিলেন তিনি। এরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজের ৪০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী হিসেবে ১৯৯০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত মেডিকেল কলেজের মধ্যে সম্মিলিত এমবিবিএস পরীক্ষায় প্রথম স্থান অর্জন করে স্বর্ণপদক পান। এরপর ১৯৯৫ সালে এফসিপিএস, ২০০০ সালে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইউরোলজিতে এমএস এবং ২০০৩ সালে ইংল্যান্ডের রয়েল কলেজ থেকে এফআরসিএস ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি।
ডা. কামরুলের কর্মজীবন শুরু ১৯৯৩ সালে, বিসিএসের মাধ্যমে স্বাস্থ্য ক্যাডারে যোগ দিয়ে। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি হাসপাতালে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি এবং ২০০৭ সালে প্রথম সফল কিডনি প্রতিস্থাপন সম্পন্ন করেন। ২০১১ সালে সরকারি চাকরি ছেড়ে বেসরকারি একটি মেডিকেল কলেজে অধ্যাপক পদে দায়িত্ব নেন। পরে ২০১৪ সালে নিজ উদ্যোগে রাজধানীর শ্যামলীতে সিকেডি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন।
সিকেডি সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে ডা. কামরুলের নেতৃত্বে সপ্তাহে ছয়টি কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়। কিডনি দাতা ও গ্রহীতার জন্য একই সঙ্গে দুটি কক্ষে অস্ত্রোপচার চলে। প্রতিটি অস্ত্রোপচারে সাধারণত ১০-১২ জন চিকিৎসক অংশ নেন। যাঁদের মধ্যে থাকেন অবেদনবিদ, কিডনি বিশেষজ্ঞ, ইউরোলজির শল্যচিকিৎসকসহ অন্যান্য বিশেষজ্ঞ, পাশাপাশি নার্স ও টেকনোলজিস্ট।
ডা. কামরুল বলেন, সিকেডিতে প্রতিদিন গড়ে একটি কিডনি প্রতিস্থাপিত হয়। প্রতিটি অস্ত্রোপচারে ১০-১২ জন চিকিৎসক কাজ করেন। তিনি নিজে পারিশ্রমিক নেন না, তবে অস্ত্রোপচারে আনুষঙ্গিক খরচ থাকে। তাঁর হাসপাতালে কিডনি প্রতিস্থাপনের প্যাকেজ এখন ২ লাখ ১৫ হাজার টাকা। যার মধ্যে অস্ত্রোপচার, ওষুধ, আইসিইউ এবং অন্যান্য খরচ অন্তর্ভুক্ত। কিডনি দাতা সাধারণত ৩ থেকে ৭ দিন এবং কিডনি গ্রহীতা ৭ থেকে ১০ দিন হাসপাতালে থাকেন।
হাসপাতালের অন্যান্য সার্জারি ও চিকিৎসাসেবার আয়ের অর্থে কিডনি প্রতিস্থাপনের খরচের পুরো প্রক্রিয়া চালানো হয়। সেখানে প্রতিদিন ৭-১২টি কিডনি স্টোন সার্জারি, কিডনি ক্যানসার, প্রস্টেট ক্যানসারসহ অন্যান্য সার্জারি করা হয়। হাসপাতালে বর্তমানে চিকিৎসক, নার্স, টেকনোলজিস্টসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা চার শতাধিক। আউটডোরে প্রতিদিন ২৫০-৩০০ রোগী, ইনডোরে প্রায় ১০০ রোগী সেবা নেন। ১০০ শয্যার হাসপাতালটিতে আরও ৫০ শয্যা বাড়ানোর জন্য আবেদন করা হয়েছে।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে সিকেডি হাসপাতালে কিডনি প্রতিস্থাপন করেছেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাসিন্দা মাইনুল রহমান। ৪৪ বছর বয়সী এই ব্যবসায়ীর কিডনি অকেজো হয়ে গেলে স্ত্রীর দেওয়া কিডনি নিয়ে তাঁর শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়। ডা. কামরুল ইসলাম এই অস্ত্রোপচার করেন।
কিডনি প্রতিস্থাপনে সিকেডি হাসপাতাল সোয়া দুই লাখ টাকা নিয়েছে জানিয়ে মাইনুল রহমান গতকাল সন্ধ্যায় আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সিকেডি হাসপাতাল যদি অন্য হাসপাতালের মতো খরচ নিত, তাহলে আমরা তা বহন করতে পারতাম না। এখন প্রতি মাসে ফলোআপ চিকিৎসা প্রয়োজন হয়। সেখানে গেলে সবকিছু বিনা মূল্যে পাওয়া যায়। পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও চিকিৎসকের ফি দিতে হয় না।’
এর আগে ২০২৩ সালের অক্টোবরে স্ত্রীর দেওয়া কিডনি নিজের শরীরে প্রতিস্থাপন করেন নারায়ণগঞ্জের ৩৭ বছর বয়সী আবু বকর। তিনি বলেন, ‘ডা. কামরুল স্যার খুবই মানবিক। আমরা খরচের ভয়ে চিকিৎসায় যেতে চাইনি। তিনি কয়েকবার ফোন করে আমাদের খোঁজ নিয়েছেন, তিনি কিডনি বসিয়ে দিয়েছেন।’
ডা. কামরুল জানান, কিডনি প্রতিস্থাপন করা রোগীরা বাসায় গেলে প্রথম এক থেকে দুই বছর অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হয়; বিশেষ করে ওষুধ ঠিকমতো না খাওয়া, সময়মতো ডোজ না নেওয়া এবং অনিয়মিত জীবনধারা ঝুঁকি বাড়ায়। আবার রোগীরা খরচের ভয়ে ফলোআপ চিকিৎসায় আসতে চান না। ফলে তাঁদের এসব চিকিৎসা আজীবন বিনা মূল্যে করেন তিনি।
ডা. কামরুলের স্ত্রীও একজন চিকিৎসক। তিনি বর্তমানে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত। তাঁদের তিন মেয়ে। বড় মেয়ে শিক্ষানবিশ চিকিৎসক, মেজ মেয়ে এমবিবিএস অধ্যয়ন করছেন।
নিজের প্রতিষ্ঠিত সিকেডি হাসপাতালকে ‘বড় গাছের মতো’ দেখেন ডা. কামরুল ইসলাম। যেখানে আয়ের একটি অংশ দরিদ্র রোগী ও কিডনি প্রতিস্থাপনে ব্যয় করা হয়। তিনি বলেন, ‘মানুষকে নিখুঁত চিকিৎসা দেওয়া আমার কর্তব্য। আমি কিডনি রোগীদের খরচ হাসপাতালের অন্যান্য আয়ের মাধ্যমে বহন করি। এটি যেকোনো হাসপাতালই করতে পারে এবং এর জন্য লোকসান হয়; তা কিন্তু নয়।’

বাংলাদেশে যেখানে কিডনি প্রতিস্থাপন এখনো সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে, সেখানে অসহায় ও দরিদ্র রোগীদের শেষ ভরসা হয়ে উঠেছেন কিডনির শল্যচিকিৎসক অধ্যাপক কামরুল ইসলাম। দেশে যত কিডনি প্রতিস্থাপিত হয়, সেগুলোর একটি বড় অংশই করেন তিনি। নিজের প্রতিষ্ঠিত সেন্টার ফর কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি (সিকেডি) হাসপাতালে গতকাল মঙ্গলবার তিনি ২০০০তম কিডনি প্রতিস্থাপন সম্পন্ন করেছেন। ব্যয়বহুল এই শল্য-চিকিৎসায় নিজে কোনো পারিশ্রমিক নেন না ২০২২ সালে স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত এই চিকিৎসক।
কিডনি ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুসারে, বাংলাদেশে কিডনি রোগের পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। প্রায় ২ কোটি মানুষ কিডনির কোনো না কোনো সমস্যায় ভুগছেন। দেশে প্রতি ঘণ্টায় প্রায় পাঁচজন রোগীর মৃত্যু হচ্ছে কিডনি অকেজো হয়ে। কিডনি প্রতিস্থাপন সীমিত এবং ডায়ালাইসিস ব্যয়বহুল। ফলে অধিকাংশ রোগী চিকিৎসা না পেয়ে মারা যান। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত ও চিকিৎসা নিলে ৬০ শতাংশ রোগীর জীবন রক্ষা সম্ভব।
কামরুল ইসলামের জন্ম ১৯৬৫ সালে। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে বোর্ডের মেধাতালিকায় যথাক্রমে ১৫তম ও ১০তম স্থান লাভ করেছিলেন তিনি। এরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজের ৪০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী হিসেবে ১৯৯০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত মেডিকেল কলেজের মধ্যে সম্মিলিত এমবিবিএস পরীক্ষায় প্রথম স্থান অর্জন করে স্বর্ণপদক পান। এরপর ১৯৯৫ সালে এফসিপিএস, ২০০০ সালে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইউরোলজিতে এমএস এবং ২০০৩ সালে ইংল্যান্ডের রয়েল কলেজ থেকে এফআরসিএস ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি।
ডা. কামরুলের কর্মজীবন শুরু ১৯৯৩ সালে, বিসিএসের মাধ্যমে স্বাস্থ্য ক্যাডারে যোগ দিয়ে। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি হাসপাতালে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি এবং ২০০৭ সালে প্রথম সফল কিডনি প্রতিস্থাপন সম্পন্ন করেন। ২০১১ সালে সরকারি চাকরি ছেড়ে বেসরকারি একটি মেডিকেল কলেজে অধ্যাপক পদে দায়িত্ব নেন। পরে ২০১৪ সালে নিজ উদ্যোগে রাজধানীর শ্যামলীতে সিকেডি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন।
সিকেডি সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে ডা. কামরুলের নেতৃত্বে সপ্তাহে ছয়টি কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়। কিডনি দাতা ও গ্রহীতার জন্য একই সঙ্গে দুটি কক্ষে অস্ত্রোপচার চলে। প্রতিটি অস্ত্রোপচারে সাধারণত ১০-১২ জন চিকিৎসক অংশ নেন। যাঁদের মধ্যে থাকেন অবেদনবিদ, কিডনি বিশেষজ্ঞ, ইউরোলজির শল্যচিকিৎসকসহ অন্যান্য বিশেষজ্ঞ, পাশাপাশি নার্স ও টেকনোলজিস্ট।
ডা. কামরুল বলেন, সিকেডিতে প্রতিদিন গড়ে একটি কিডনি প্রতিস্থাপিত হয়। প্রতিটি অস্ত্রোপচারে ১০-১২ জন চিকিৎসক কাজ করেন। তিনি নিজে পারিশ্রমিক নেন না, তবে অস্ত্রোপচারে আনুষঙ্গিক খরচ থাকে। তাঁর হাসপাতালে কিডনি প্রতিস্থাপনের প্যাকেজ এখন ২ লাখ ১৫ হাজার টাকা। যার মধ্যে অস্ত্রোপচার, ওষুধ, আইসিইউ এবং অন্যান্য খরচ অন্তর্ভুক্ত। কিডনি দাতা সাধারণত ৩ থেকে ৭ দিন এবং কিডনি গ্রহীতা ৭ থেকে ১০ দিন হাসপাতালে থাকেন।
হাসপাতালের অন্যান্য সার্জারি ও চিকিৎসাসেবার আয়ের অর্থে কিডনি প্রতিস্থাপনের খরচের পুরো প্রক্রিয়া চালানো হয়। সেখানে প্রতিদিন ৭-১২টি কিডনি স্টোন সার্জারি, কিডনি ক্যানসার, প্রস্টেট ক্যানসারসহ অন্যান্য সার্জারি করা হয়। হাসপাতালে বর্তমানে চিকিৎসক, নার্স, টেকনোলজিস্টসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা চার শতাধিক। আউটডোরে প্রতিদিন ২৫০-৩০০ রোগী, ইনডোরে প্রায় ১০০ রোগী সেবা নেন। ১০০ শয্যার হাসপাতালটিতে আরও ৫০ শয্যা বাড়ানোর জন্য আবেদন করা হয়েছে।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে সিকেডি হাসপাতালে কিডনি প্রতিস্থাপন করেছেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাসিন্দা মাইনুল রহমান। ৪৪ বছর বয়সী এই ব্যবসায়ীর কিডনি অকেজো হয়ে গেলে স্ত্রীর দেওয়া কিডনি নিয়ে তাঁর শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়। ডা. কামরুল ইসলাম এই অস্ত্রোপচার করেন।
কিডনি প্রতিস্থাপনে সিকেডি হাসপাতাল সোয়া দুই লাখ টাকা নিয়েছে জানিয়ে মাইনুল রহমান গতকাল সন্ধ্যায় আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সিকেডি হাসপাতাল যদি অন্য হাসপাতালের মতো খরচ নিত, তাহলে আমরা তা বহন করতে পারতাম না। এখন প্রতি মাসে ফলোআপ চিকিৎসা প্রয়োজন হয়। সেখানে গেলে সবকিছু বিনা মূল্যে পাওয়া যায়। পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও চিকিৎসকের ফি দিতে হয় না।’
এর আগে ২০২৩ সালের অক্টোবরে স্ত্রীর দেওয়া কিডনি নিজের শরীরে প্রতিস্থাপন করেন নারায়ণগঞ্জের ৩৭ বছর বয়সী আবু বকর। তিনি বলেন, ‘ডা. কামরুল স্যার খুবই মানবিক। আমরা খরচের ভয়ে চিকিৎসায় যেতে চাইনি। তিনি কয়েকবার ফোন করে আমাদের খোঁজ নিয়েছেন, তিনি কিডনি বসিয়ে দিয়েছেন।’
ডা. কামরুল জানান, কিডনি প্রতিস্থাপন করা রোগীরা বাসায় গেলে প্রথম এক থেকে দুই বছর অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হয়; বিশেষ করে ওষুধ ঠিকমতো না খাওয়া, সময়মতো ডোজ না নেওয়া এবং অনিয়মিত জীবনধারা ঝুঁকি বাড়ায়। আবার রোগীরা খরচের ভয়ে ফলোআপ চিকিৎসায় আসতে চান না। ফলে তাঁদের এসব চিকিৎসা আজীবন বিনা মূল্যে করেন তিনি।
ডা. কামরুলের স্ত্রীও একজন চিকিৎসক। তিনি বর্তমানে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত। তাঁদের তিন মেয়ে। বড় মেয়ে শিক্ষানবিশ চিকিৎসক, মেজ মেয়ে এমবিবিএস অধ্যয়ন করছেন।
নিজের প্রতিষ্ঠিত সিকেডি হাসপাতালকে ‘বড় গাছের মতো’ দেখেন ডা. কামরুল ইসলাম। যেখানে আয়ের একটি অংশ দরিদ্র রোগী ও কিডনি প্রতিস্থাপনে ব্যয় করা হয়। তিনি বলেন, ‘মানুষকে নিখুঁত চিকিৎসা দেওয়া আমার কর্তব্য। আমি কিডনি রোগীদের খরচ হাসপাতালের অন্যান্য আয়ের মাধ্যমে বহন করি। এটি যেকোনো হাসপাতালই করতে পারে এবং এর জন্য লোকসান হয়; তা কিন্তু নয়।’

আমাদের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো করার জন্য কি সন্তান পৃথিবীতে আনব, নাকি আগেই মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়ন ঘটিয়ে সন্তান জন্ম দেব? এটি খুব কঠিন প্রশ্ন...
০৯ আগস্ট ২০২২
প্রথাগত চিকিৎসা বলতে এমন স্বাস্থ্য ও সুস্থতার ব্যবস্থাকে বোঝায়, যেগুলোর উদ্ভব আধুনিক বায়োমেডিসিনের আগেই হয়েছে। এসব চিকিৎসা পদ্ধতির ধরন নানাবিধ—ভেষজ চা থেকে শুরু করে ভারতের আয়ুর্বেদিক চিকিৎসাব্যবস্থা পর্যন্ত।
৩ দিন আগে
শীতের সকাল কিংবা সন্ধ্যায় ধোঁয়া ওঠা এক বাটি খিচুড়ির চেয়ে আরামদায়ক আর কী হতে পারে। খিচুড়ি শুধু একটি খাবার নয়। শীতকাল মানে আরাম করে হরেক রকমের সবজি দিয়ে রান্না করা খিচুড়ি খাওয়া। এতে যেমন মন ভরে, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর এ খাবার রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।
৪ দিন আগে
তেজপাতা ও লবঙ্গ—উভয়ই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। এতে রয়েছে শক্তিশালী প্রদাহবিরোধী ও ব্যাকটেরিয়ারোধী গুণাবলি, যা শরীরের ভেতরে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম। তবে এই চা সাধারণত সবার জন্য নিরাপদ হলেও গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মায়েদের এটি পান করা থেকে বিরত থাকা উচিত।
৪ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

আফ্রিকায় ভেষজ চিকিৎসকেরা ক্ষত বা ব্যথা উপশমে গাছগাছড়া সংগ্রহ করছেন; চীনে আকুপাংচার বিশেষজ্ঞরা সুচ ব্যবহার করে মাইগ্রেন সারাচ্ছেন; আবার ভারতে যোগীরা ধ্যানচর্চা করছেন—এ ধরনের প্রথাগত চিকিৎসা পদ্ধতিগুলো ক্রমেই কার্যকর প্রমাণিত হচ্ছে এবং এগুলো আরও বেশি মনোযোগ ও গবেষণার দাবি রাখে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) এক কর্মকর্তা।
ডব্লিউএইচওর গ্লোবাল ট্র্যাডিশনাল মেডিসিন সেন্টারের প্রধান ডা. শ্যামা কুরুবিল্লার মতে, ঐতিহাসিকভাবে পর্যাপ্ত বৈজ্ঞানিক প্রমাণের অভাবের কারণে যেসব প্রথাগত চিকিৎসা পদ্ধতিকে অনেক সময় অবহেলা করা হয়েছে, আধুনিক প্রযুক্তি ও বিনিয়োগ বাড়লে সেই ধারণা বদলাতে পারে।
দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরের শুরুতে বিভিন্ন দেশ সম্মত হয়েছে যে আগামী এক দশকের জন্য ডব্লিউএইচও একটি নতুন বৈশ্বিক প্রথাগত চিকিৎসা কৌশল গ্রহণ করবে।
এই কৌশলের লক্ষ্য—প্রমাণভিত্তিকভাবে স্বাস্থ্য ও কল্যাণে প্রথাগত, পরিপূরক ও সমন্বিত চিকিৎসার সম্ভাবনাময় অবদানকে কাজে লাগানো।
এই কৌশলের আওতায় প্রথাগত চিকিৎসা পদ্ধতির জন্য শক্তিশালী প্রমাণভিত্তি তৈরি, চিকিৎসা ও চিকিৎসকদের নিয়ন্ত্রণ কাঠামো গড়ে তোলা এবং প্রয়োজন অনুযায়ী এসব পদ্ধতিকে আধুনিক জৈব-চিকিৎসাভিত্তিক স্বাস্থ্যব্যবস্থার সঙ্গে একীভূত করার পরিকল্পনা রয়েছে।
কুরুবিল্লা বলেন, ‘এটা ভীষণ রোমাঞ্চকর। আমি বলছি না, আমরা এখনই জানি—কোনটা কাজ করে আর কোনটা করে না। তবে এ মুহূর্তে বিষয়টি জানার বড় সুযোগ তৈরি হয়েছে।’
প্রথাগত চিকিৎসা বলতে এমন স্বাস্থ্য ও সুস্থতার ব্যবস্থাকে বোঝায়, যেগুলোর উদ্ভব আধুনিক বায়োমেডিসিনের আগেই হয়েছে। এসব চিকিৎসা পদ্ধতির ধরন নানাবিধ—ভেষজ চা থেকে শুরু করে ভারতের আয়ুর্বেদিক চিকিৎসাব্যবস্থা পর্যন্ত।
কুরুবিল্লা বলেন, শত শত বছর ধরে চলে আসা এসব পদ্ধতির মধ্যে অনেকগুলোরই বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, জিনোমিক্স ও মস্তিষ্ক স্ক্যানসহ আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে এখন সেগুলো নতুনভাবে অনুসন্ধান করা সম্ভব।
তাঁর মতে, প্রথাগত চিকিৎসা গ্রহণের ক্ষেত্রে থাইল্যান্ড ভালো উদাহরণ। দেশটিতে গবেষকেরা প্রথাগত চিকিৎসা পদ্ধতি পর্যবেক্ষণ ও নথিবদ্ধ করছেন এবং ভেষজ চিকিৎসাকে প্রয়োজনীয় ওষুধের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছেন। গত মে মাসে থাইল্যান্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় পেশির ব্যথা ও কোষ্ঠকাঠিন্যসহ কিছু রোগের ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের আধুনিক ওষুধের বদলে প্রথাগত চিকিৎসা ব্যবহারের সুপারিশ করেছে।

আফ্রিকায় ভেষজ চিকিৎসকেরা ক্ষত বা ব্যথা উপশমে গাছগাছড়া সংগ্রহ করছেন; চীনে আকুপাংচার বিশেষজ্ঞরা সুচ ব্যবহার করে মাইগ্রেন সারাচ্ছেন; আবার ভারতে যোগীরা ধ্যানচর্চা করছেন—এ ধরনের প্রথাগত চিকিৎসা পদ্ধতিগুলো ক্রমেই কার্যকর প্রমাণিত হচ্ছে এবং এগুলো আরও বেশি মনোযোগ ও গবেষণার দাবি রাখে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) এক কর্মকর্তা।
ডব্লিউএইচওর গ্লোবাল ট্র্যাডিশনাল মেডিসিন সেন্টারের প্রধান ডা. শ্যামা কুরুবিল্লার মতে, ঐতিহাসিকভাবে পর্যাপ্ত বৈজ্ঞানিক প্রমাণের অভাবের কারণে যেসব প্রথাগত চিকিৎসা পদ্ধতিকে অনেক সময় অবহেলা করা হয়েছে, আধুনিক প্রযুক্তি ও বিনিয়োগ বাড়লে সেই ধারণা বদলাতে পারে।
দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরের শুরুতে বিভিন্ন দেশ সম্মত হয়েছে যে আগামী এক দশকের জন্য ডব্লিউএইচও একটি নতুন বৈশ্বিক প্রথাগত চিকিৎসা কৌশল গ্রহণ করবে।
এই কৌশলের লক্ষ্য—প্রমাণভিত্তিকভাবে স্বাস্থ্য ও কল্যাণে প্রথাগত, পরিপূরক ও সমন্বিত চিকিৎসার সম্ভাবনাময় অবদানকে কাজে লাগানো।
এই কৌশলের আওতায় প্রথাগত চিকিৎসা পদ্ধতির জন্য শক্তিশালী প্রমাণভিত্তি তৈরি, চিকিৎসা ও চিকিৎসকদের নিয়ন্ত্রণ কাঠামো গড়ে তোলা এবং প্রয়োজন অনুযায়ী এসব পদ্ধতিকে আধুনিক জৈব-চিকিৎসাভিত্তিক স্বাস্থ্যব্যবস্থার সঙ্গে একীভূত করার পরিকল্পনা রয়েছে।
কুরুবিল্লা বলেন, ‘এটা ভীষণ রোমাঞ্চকর। আমি বলছি না, আমরা এখনই জানি—কোনটা কাজ করে আর কোনটা করে না। তবে এ মুহূর্তে বিষয়টি জানার বড় সুযোগ তৈরি হয়েছে।’
প্রথাগত চিকিৎসা বলতে এমন স্বাস্থ্য ও সুস্থতার ব্যবস্থাকে বোঝায়, যেগুলোর উদ্ভব আধুনিক বায়োমেডিসিনের আগেই হয়েছে। এসব চিকিৎসা পদ্ধতির ধরন নানাবিধ—ভেষজ চা থেকে শুরু করে ভারতের আয়ুর্বেদিক চিকিৎসাব্যবস্থা পর্যন্ত।
কুরুবিল্লা বলেন, শত শত বছর ধরে চলে আসা এসব পদ্ধতির মধ্যে অনেকগুলোরই বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, জিনোমিক্স ও মস্তিষ্ক স্ক্যানসহ আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে এখন সেগুলো নতুনভাবে অনুসন্ধান করা সম্ভব।
তাঁর মতে, প্রথাগত চিকিৎসা গ্রহণের ক্ষেত্রে থাইল্যান্ড ভালো উদাহরণ। দেশটিতে গবেষকেরা প্রথাগত চিকিৎসা পদ্ধতি পর্যবেক্ষণ ও নথিবদ্ধ করছেন এবং ভেষজ চিকিৎসাকে প্রয়োজনীয় ওষুধের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছেন। গত মে মাসে থাইল্যান্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় পেশির ব্যথা ও কোষ্ঠকাঠিন্যসহ কিছু রোগের ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের আধুনিক ওষুধের বদলে প্রথাগত চিকিৎসা ব্যবহারের সুপারিশ করেছে।

আমাদের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো করার জন্য কি সন্তান পৃথিবীতে আনব, নাকি আগেই মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়ন ঘটিয়ে সন্তান জন্ম দেব? এটি খুব কঠিন প্রশ্ন...
০৯ আগস্ট ২০২২
বাংলাদেশে যেখানে কিডনি প্রতিস্থাপন এখনো সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে, সেখানে অসহায় ও দরিদ্র রোগীদের শেষ ভরসা হয়ে উঠেছেন কিডনির শল্যচিকিৎসক অধ্যাপক কামরুল ইসলাম। দেশে যত কিডনি প্রতিস্থাপিত হয়, সেগুলোর একটি বড় অংশই করেন তিনি। নিজের প্রতিষ্ঠিত সেন্টার ফর কিডনি ডিজিজেস...
২ ঘণ্টা আগে
শীতের সকাল কিংবা সন্ধ্যায় ধোঁয়া ওঠা এক বাটি খিচুড়ির চেয়ে আরামদায়ক আর কী হতে পারে। খিচুড়ি শুধু একটি খাবার নয়। শীতকাল মানে আরাম করে হরেক রকমের সবজি দিয়ে রান্না করা খিচুড়ি খাওয়া। এতে যেমন মন ভরে, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর এ খাবার রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।
৪ দিন আগে
তেজপাতা ও লবঙ্গ—উভয়ই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। এতে রয়েছে শক্তিশালী প্রদাহবিরোধী ও ব্যাকটেরিয়ারোধী গুণাবলি, যা শরীরের ভেতরে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম। তবে এই চা সাধারণত সবার জন্য নিরাপদ হলেও গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মায়েদের এটি পান করা থেকে বিরত থাকা উচিত।
৪ দিন আগেফিচার ডেস্ক

শীতের সকাল কিংবা সন্ধ্যায় ধোঁয়া ওঠা এক বাটি খিচুড়ির চেয়ে আরামদায়ক আর কী হতে পারে। খিচুড়ি শুধু একটি খাবার নয়। শীতকাল মানে আরাম করে হরেক রকমের সবজি দিয়ে রান্না করা খিচুড়ি খাওয়া। এতে যেমন মন ভরে, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর এ খাবার রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। এ ছাড়া এটি শরীরে বিভিন্ন উপাদানের ভারসাম্য বজায় রাখতেও সহায়ক। শীতকালীন ক্লান্তি দূর করতে এবং ঋতু পরিবর্তনের অসুস্থতা থেকে বাঁচতে খিচুড়ি একটি আদর্শ খাবার। এটি সহজে হজম হয়।
পুষ্টিবিদদের পরামর্শ অনুযায়ী, খিচুড়ির প্রতিটি উপাদান আমাদের শরীরের জন্য বিশেষভাবে উপকারী। এতে থাকা চাল থেকে পাওয়া যায় পর্যাপ্ত শর্করা ও শক্তি। ডাল জোগায় প্রোটিন ও আঁশ, যা হজমে বিশেষভাবে সাহায্য করে। ঘি শরীরের তাপমাত্রা ধরে রাখতে এবং পুষ্টি শোষণে সহায়ক। হলুদে থাকা কারকিউমিন ব্যথানাশক হিসেবে কাজ করে এবং আদা সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে শরীর উষ্ণ রাখে। খিচুড়িতে সবজি যোগ করলে আঁশের মাত্রা বাড়ে। গোলমরিচ ও জিরার মতো মসলা বিপাক প্রক্রিয়া উন্নত করে। এ ছাড়া সাবুদানার খিচুড়ি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। এ ছাড়া এটি তাৎক্ষণিক শক্তি জোগাতে কার্যকর।

চাল ও মুগ ডালের মিশেলে তৈরি এই খিচুড়ি যেমন সহজপাচ্য, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর। এর বিশেষত্বের চাবিকাঠি লুকিয়ে রয়েছে মসলায়। একেবারে হলুদ, লবণ, জিরা অথবা ধনেগুঁড়ার মতো সাধারণ কিছু মসলা দিয়ে এটি রান্না করা হয়। এটা রান্নার সময় মুগ ডালের সঙ্গে চালও ভেজে নিতে পারেন। এতে মুগ ডালের একটা ভিন্ন গন্ধ পাওয়া যাবে। হলুদের পরিবর্তে এতে ব্যবহার করতে পারেন সবুজ মুগডাল।
উপকারিতা: শরীর উষ্ণ রাখে এবং দীর্ঘক্ষণ শক্তি জোগায়।

গাজর, মটরশুঁটি, ফুলকপি, আলু, টমেটো ইত্যাদি শীতের সবজি দিয়ে তৈরি রান্না করা সবজি খিচুড়ি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। এর সঙ্গে শীতে পাওয়া যায় এমন প্রায় সব শাক ও সবজি যোগ করতে হবে। সবজিগুলো ছোট টুকরা করে কেটে নিতে হবে।
যে সবজিগুলো সেদ্ধ হতে বেশি সময় নেয়, সেগুলো আগে ভেজে নিন অথবা প্রেশার কুকারে দিন। এরপর তেল বা ঘিতে জিরা, তেজপাতা ও অন্যান্য মসলা দিয়ে পেঁয়াজ, আদা, রসুন ভাজার পর সবজিগুলো হালকা ভেজে নিন। ভেজে রাখা সবজি, চাল, ডাল ও পানি দিয়ে প্রেশার কুকারে বা হাঁড়িতে রান্না করুন। নরম খিচুড়ি চাইলে পানি বেশি দিতে পারেন। শেষ মুহূর্তে পালংসহ অন্য নরম শাক এতে যোগ করতে পারেন।
উপকারিতা: এটি অন্যান্য উপকারের সঙ্গে কোষ্ঠকাঠিন্য কমায় এবং দ্রুত শক্তি পুনরুদ্ধার করে।

ঠান্ডা পাহাড়ি অঞ্চলে শীতের প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে এই খিচুড়ি অত্যন্ত জনপ্রিয়। চাল, মাষকলাইয়ের ডাল এবং তিল এর প্রধান উপকরণ। রান্নার আগে চাল ও ডাল ভিজিয়ে রাখা হয়। তিল হালকা ভেজে গুঁড়া করে নেওয়া হয়। তিল থেকে পাওয়া স্বাস্থ্যকর চর্বি ও খনিজ উপাদান শীতের দিনে শরীরের জন্য খুবই উপকারী। জিরা, হিং, হলুদ এবং লাল মরিচ গুঁড়ার সুগন্ধি মিশ্রণ এতে অনন্য স্বাদ যোগ করে। খাঁটি ঘি অথবা তেল-মসলার ফোড়ন দিয়ে এটি রান্না করা হয়। প্রোটিন, চর্বি এবং মিনারেলসমৃদ্ধ এই খাবার শীত জয়ের এক অমোঘ হাতিয়ার হতে পারে।
উপকারিতা: এটি শরীরে তাৎক্ষণিক শক্তি জোগানোর পাশাপাশি দীর্ঘক্ষণ শরীর গরম রাখতে সাহায্য করে।

সচরাচর খাওয়া হয় এমন কোনো খিচুড়ি খেতে না চাইলে রান্না করতে পারেন আমলকী খিচুড়ি। এটি কোনো সাধারণ খাবার নয়। এ খিচুড়ি রান্না করা হয় চাল, খোসা ছাড়ানো কালো মাষকলাইয়ের ডাল এবং তাজা আমলকী দিয়ে। নরম ধরনের এ খিচুড়ির স্বাদ ও সুগন্ধ বাড়াতে রান্নায় জিরা, হিং, হলুদ ও লাল মরিচের গুঁড়া ব্যবহার করতে পারেন। এগুলো এতে রাজকীয় স্বাদ যোগ করবে। সবশেষে ঘি বা তেলের সুগন্ধি ফোড়ন এই খিচুড়িকে করে তোলে আরও সুস্বাদু। কেউ চাইলে এই খিচুড়ির পুষ্টিমান আরও বাড়াতে বিভিন্ন ধরনের ঋতুভিত্তিক সবজি যোগ করতে পারেন। শীতের এই উৎসবের দিনগুলোতে শরীর সতেজ রাখতে এবং রসনা তৃপ্তিতে আমলকী খিচুড়ি হতে পারে আপনার সেরা পছন্দ।
উপকারিতা: এটি শরীরে শক্তি জোগানোর পাশাপাশি হজমশক্তি এবং রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়। এ ছাড়া শরীর ডিটক্সে সহায়তা করে, হজম প্রক্রিয়া উন্নত হয়, গ্যাস্ট্রিক কমায়, কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায় এবং ওজন কমাতে সহায়ক।

শীতের সকাল কিংবা সন্ধ্যায় ধোঁয়া ওঠা এক বাটি খিচুড়ির চেয়ে আরামদায়ক আর কী হতে পারে। খিচুড়ি শুধু একটি খাবার নয়। শীতকাল মানে আরাম করে হরেক রকমের সবজি দিয়ে রান্না করা খিচুড়ি খাওয়া। এতে যেমন মন ভরে, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর এ খাবার রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। এ ছাড়া এটি শরীরে বিভিন্ন উপাদানের ভারসাম্য বজায় রাখতেও সহায়ক। শীতকালীন ক্লান্তি দূর করতে এবং ঋতু পরিবর্তনের অসুস্থতা থেকে বাঁচতে খিচুড়ি একটি আদর্শ খাবার। এটি সহজে হজম হয়।
পুষ্টিবিদদের পরামর্শ অনুযায়ী, খিচুড়ির প্রতিটি উপাদান আমাদের শরীরের জন্য বিশেষভাবে উপকারী। এতে থাকা চাল থেকে পাওয়া যায় পর্যাপ্ত শর্করা ও শক্তি। ডাল জোগায় প্রোটিন ও আঁশ, যা হজমে বিশেষভাবে সাহায্য করে। ঘি শরীরের তাপমাত্রা ধরে রাখতে এবং পুষ্টি শোষণে সহায়ক। হলুদে থাকা কারকিউমিন ব্যথানাশক হিসেবে কাজ করে এবং আদা সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে শরীর উষ্ণ রাখে। খিচুড়িতে সবজি যোগ করলে আঁশের মাত্রা বাড়ে। গোলমরিচ ও জিরার মতো মসলা বিপাক প্রক্রিয়া উন্নত করে। এ ছাড়া সাবুদানার খিচুড়ি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। এ ছাড়া এটি তাৎক্ষণিক শক্তি জোগাতে কার্যকর।

চাল ও মুগ ডালের মিশেলে তৈরি এই খিচুড়ি যেমন সহজপাচ্য, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর। এর বিশেষত্বের চাবিকাঠি লুকিয়ে রয়েছে মসলায়। একেবারে হলুদ, লবণ, জিরা অথবা ধনেগুঁড়ার মতো সাধারণ কিছু মসলা দিয়ে এটি রান্না করা হয়। এটা রান্নার সময় মুগ ডালের সঙ্গে চালও ভেজে নিতে পারেন। এতে মুগ ডালের একটা ভিন্ন গন্ধ পাওয়া যাবে। হলুদের পরিবর্তে এতে ব্যবহার করতে পারেন সবুজ মুগডাল।
উপকারিতা: শরীর উষ্ণ রাখে এবং দীর্ঘক্ষণ শক্তি জোগায়।

গাজর, মটরশুঁটি, ফুলকপি, আলু, টমেটো ইত্যাদি শীতের সবজি দিয়ে তৈরি রান্না করা সবজি খিচুড়ি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। এর সঙ্গে শীতে পাওয়া যায় এমন প্রায় সব শাক ও সবজি যোগ করতে হবে। সবজিগুলো ছোট টুকরা করে কেটে নিতে হবে।
যে সবজিগুলো সেদ্ধ হতে বেশি সময় নেয়, সেগুলো আগে ভেজে নিন অথবা প্রেশার কুকারে দিন। এরপর তেল বা ঘিতে জিরা, তেজপাতা ও অন্যান্য মসলা দিয়ে পেঁয়াজ, আদা, রসুন ভাজার পর সবজিগুলো হালকা ভেজে নিন। ভেজে রাখা সবজি, চাল, ডাল ও পানি দিয়ে প্রেশার কুকারে বা হাঁড়িতে রান্না করুন। নরম খিচুড়ি চাইলে পানি বেশি দিতে পারেন। শেষ মুহূর্তে পালংসহ অন্য নরম শাক এতে যোগ করতে পারেন।
উপকারিতা: এটি অন্যান্য উপকারের সঙ্গে কোষ্ঠকাঠিন্য কমায় এবং দ্রুত শক্তি পুনরুদ্ধার করে।

ঠান্ডা পাহাড়ি অঞ্চলে শীতের প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে এই খিচুড়ি অত্যন্ত জনপ্রিয়। চাল, মাষকলাইয়ের ডাল এবং তিল এর প্রধান উপকরণ। রান্নার আগে চাল ও ডাল ভিজিয়ে রাখা হয়। তিল হালকা ভেজে গুঁড়া করে নেওয়া হয়। তিল থেকে পাওয়া স্বাস্থ্যকর চর্বি ও খনিজ উপাদান শীতের দিনে শরীরের জন্য খুবই উপকারী। জিরা, হিং, হলুদ এবং লাল মরিচ গুঁড়ার সুগন্ধি মিশ্রণ এতে অনন্য স্বাদ যোগ করে। খাঁটি ঘি অথবা তেল-মসলার ফোড়ন দিয়ে এটি রান্না করা হয়। প্রোটিন, চর্বি এবং মিনারেলসমৃদ্ধ এই খাবার শীত জয়ের এক অমোঘ হাতিয়ার হতে পারে।
উপকারিতা: এটি শরীরে তাৎক্ষণিক শক্তি জোগানোর পাশাপাশি দীর্ঘক্ষণ শরীর গরম রাখতে সাহায্য করে।

সচরাচর খাওয়া হয় এমন কোনো খিচুড়ি খেতে না চাইলে রান্না করতে পারেন আমলকী খিচুড়ি। এটি কোনো সাধারণ খাবার নয়। এ খিচুড়ি রান্না করা হয় চাল, খোসা ছাড়ানো কালো মাষকলাইয়ের ডাল এবং তাজা আমলকী দিয়ে। নরম ধরনের এ খিচুড়ির স্বাদ ও সুগন্ধ বাড়াতে রান্নায় জিরা, হিং, হলুদ ও লাল মরিচের গুঁড়া ব্যবহার করতে পারেন। এগুলো এতে রাজকীয় স্বাদ যোগ করবে। সবশেষে ঘি বা তেলের সুগন্ধি ফোড়ন এই খিচুড়িকে করে তোলে আরও সুস্বাদু। কেউ চাইলে এই খিচুড়ির পুষ্টিমান আরও বাড়াতে বিভিন্ন ধরনের ঋতুভিত্তিক সবজি যোগ করতে পারেন। শীতের এই উৎসবের দিনগুলোতে শরীর সতেজ রাখতে এবং রসনা তৃপ্তিতে আমলকী খিচুড়ি হতে পারে আপনার সেরা পছন্দ।
উপকারিতা: এটি শরীরে শক্তি জোগানোর পাশাপাশি হজমশক্তি এবং রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়। এ ছাড়া শরীর ডিটক্সে সহায়তা করে, হজম প্রক্রিয়া উন্নত হয়, গ্যাস্ট্রিক কমায়, কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায় এবং ওজন কমাতে সহায়ক।

আমাদের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো করার জন্য কি সন্তান পৃথিবীতে আনব, নাকি আগেই মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়ন ঘটিয়ে সন্তান জন্ম দেব? এটি খুব কঠিন প্রশ্ন...
০৯ আগস্ট ২০২২
বাংলাদেশে যেখানে কিডনি প্রতিস্থাপন এখনো সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে, সেখানে অসহায় ও দরিদ্র রোগীদের শেষ ভরসা হয়ে উঠেছেন কিডনির শল্যচিকিৎসক অধ্যাপক কামরুল ইসলাম। দেশে যত কিডনি প্রতিস্থাপিত হয়, সেগুলোর একটি বড় অংশই করেন তিনি। নিজের প্রতিষ্ঠিত সেন্টার ফর কিডনি ডিজিজেস...
২ ঘণ্টা আগে
প্রথাগত চিকিৎসা বলতে এমন স্বাস্থ্য ও সুস্থতার ব্যবস্থাকে বোঝায়, যেগুলোর উদ্ভব আধুনিক বায়োমেডিসিনের আগেই হয়েছে। এসব চিকিৎসা পদ্ধতির ধরন নানাবিধ—ভেষজ চা থেকে শুরু করে ভারতের আয়ুর্বেদিক চিকিৎসাব্যবস্থা পর্যন্ত।
৩ দিন আগে
তেজপাতা ও লবঙ্গ—উভয়ই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। এতে রয়েছে শক্তিশালী প্রদাহবিরোধী ও ব্যাকটেরিয়ারোধী গুণাবলি, যা শরীরের ভেতরে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম। তবে এই চা সাধারণত সবার জন্য নিরাপদ হলেও গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মায়েদের এটি পান করা থেকে বিরত থাকা উচিত।
৪ দিন আগেআলমগীর আলম

তেজপাতা ও লবঙ্গ—উভয়ই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। এতে রয়েছে শক্তিশালী প্রদাহবিরোধী ও ব্যাকটেরিয়ারোধী গুণাবলি, যা শরীরের ভেতরে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম। তবে এই চা সাধারণত সবার জন্য নিরাপদ হলেও গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মায়েদের এটি পান করা থেকে বিরত থাকা উচিত।
১. হজমশক্তি বৃদ্ধিতে: বদহজমের সমস্যায় ভুগলে তেজপাতা দারুণ মুক্তি দিতে পারে। অন্যদিকে, লবঙ্গ এনজাইম নিঃসরণ বাড়িয়ে হজমপ্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত এবং পেটের অস্বস্তি দূর করে।
২. ব্যথা ও প্রদাহ উপশমে: আর্থ্রাইটিসের মতো রোগে যাঁরা ভোগেন, তাঁদের জন্য এই চা অত্যন্ত উপকারী। ইউরিক অ্যাসিডের ব্যথা কমাতে এবং শরীরের বিভিন্ন অংশের প্রদাহ বা ফোলা ভাব রোধে তেজপাতা ও লবঙ্গ লড়তে সাহায্য করে।
৩. রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে: লবঙ্গে থাকা অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া
ও ভাইরাসের বিরুদ্ধে কাজ করে। এর সঙ্গে তেজপাতা যুক্ত হলে শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বহুগুণ বেড়ে যায়, যা বিশেষ করে ঠান্ডা ও ফ্লু মৌসুমে সুরক্ষা দেয়।
৪. দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি কমাতে: এই চা শরীরে ক্ষতিকর ফ্রি র্যাডিক্যালের বিরুদ্ধে লড়াই করে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমায়। ফলে হৃদ্রোগ এবং নির্দিষ্ট কিছু ক্যানসারের ঝুঁকি কমে পায়।
৫. দাঁত ও মাড়ির সুরক্ষায়: লবঙ্গ তেল দাঁতের জন্য উপকারী হিসেবে স্বীকৃত। নিয়মিত লবঙ্গ চা পান করলে মাড়ি ও দাঁত সুস্থ রাখা সম্ভব।
উপকরণ সংগ্রহ করা এবং এই চা তৈরি করার প্রক্রিয়া অত্যন্ত সহজ—
উপকরণ: ৩-৪টি শুকনো তেজপাতা, ৫-৬টি আস্ত লবঙ্গ এবং ৪ কাপ পানি। স্বাদ বাড়াতে মধু বা লেবু ব্যবহার করতে পারেন।
প্রণালি: প্রথমে একটি পাত্রে পানি ফুটিয়ে নিতে হবে। তাতে তেজপাতা ও লবঙ্গ দিয়ে চুলার আঁচ কমিয়ে দিন। ১৫ মিনিট মিশ্রণটি সেদ্ধ করার পর চুলা নিভিয়ে আরও ৫ মিনিট পাত্রটি ঢেকে রেখে দিন। এরপর ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে তেজপাতা ও লবঙ্গ ফেলে দিয়ে পানি আলাদা করে নিন। স্বাদ অনুযায়ী মধু কিংবা লেবুর রস মিশিয়ে পান করুন।
ভালো ফল পেতে প্রতিদিন এক কাপ এই চা-পান করা ভালো; বিশেষ করে খাবারের পর এটি পান করলে হজমশক্তি বাড়াতে সবচেয়ে ভালো কাজ করে।
লেখক: খাদ্য পথ্য ও আকুপ্রেশার বিশেষজ্ঞ, প্রধান নির্বাহী, প্রাকৃতিক নিরাময় কেন্দ্র

তেজপাতা ও লবঙ্গ—উভয়ই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। এতে রয়েছে শক্তিশালী প্রদাহবিরোধী ও ব্যাকটেরিয়ারোধী গুণাবলি, যা শরীরের ভেতরে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম। তবে এই চা সাধারণত সবার জন্য নিরাপদ হলেও গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মায়েদের এটি পান করা থেকে বিরত থাকা উচিত।
১. হজমশক্তি বৃদ্ধিতে: বদহজমের সমস্যায় ভুগলে তেজপাতা দারুণ মুক্তি দিতে পারে। অন্যদিকে, লবঙ্গ এনজাইম নিঃসরণ বাড়িয়ে হজমপ্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত এবং পেটের অস্বস্তি দূর করে।
২. ব্যথা ও প্রদাহ উপশমে: আর্থ্রাইটিসের মতো রোগে যাঁরা ভোগেন, তাঁদের জন্য এই চা অত্যন্ত উপকারী। ইউরিক অ্যাসিডের ব্যথা কমাতে এবং শরীরের বিভিন্ন অংশের প্রদাহ বা ফোলা ভাব রোধে তেজপাতা ও লবঙ্গ লড়তে সাহায্য করে।
৩. রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে: লবঙ্গে থাকা অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া
ও ভাইরাসের বিরুদ্ধে কাজ করে। এর সঙ্গে তেজপাতা যুক্ত হলে শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বহুগুণ বেড়ে যায়, যা বিশেষ করে ঠান্ডা ও ফ্লু মৌসুমে সুরক্ষা দেয়।
৪. দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি কমাতে: এই চা শরীরে ক্ষতিকর ফ্রি র্যাডিক্যালের বিরুদ্ধে লড়াই করে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমায়। ফলে হৃদ্রোগ এবং নির্দিষ্ট কিছু ক্যানসারের ঝুঁকি কমে পায়।
৫. দাঁত ও মাড়ির সুরক্ষায়: লবঙ্গ তেল দাঁতের জন্য উপকারী হিসেবে স্বীকৃত। নিয়মিত লবঙ্গ চা পান করলে মাড়ি ও দাঁত সুস্থ রাখা সম্ভব।
উপকরণ সংগ্রহ করা এবং এই চা তৈরি করার প্রক্রিয়া অত্যন্ত সহজ—
উপকরণ: ৩-৪টি শুকনো তেজপাতা, ৫-৬টি আস্ত লবঙ্গ এবং ৪ কাপ পানি। স্বাদ বাড়াতে মধু বা লেবু ব্যবহার করতে পারেন।
প্রণালি: প্রথমে একটি পাত্রে পানি ফুটিয়ে নিতে হবে। তাতে তেজপাতা ও লবঙ্গ দিয়ে চুলার আঁচ কমিয়ে দিন। ১৫ মিনিট মিশ্রণটি সেদ্ধ করার পর চুলা নিভিয়ে আরও ৫ মিনিট পাত্রটি ঢেকে রেখে দিন। এরপর ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে তেজপাতা ও লবঙ্গ ফেলে দিয়ে পানি আলাদা করে নিন। স্বাদ অনুযায়ী মধু কিংবা লেবুর রস মিশিয়ে পান করুন।
ভালো ফল পেতে প্রতিদিন এক কাপ এই চা-পান করা ভালো; বিশেষ করে খাবারের পর এটি পান করলে হজমশক্তি বাড়াতে সবচেয়ে ভালো কাজ করে।
লেখক: খাদ্য পথ্য ও আকুপ্রেশার বিশেষজ্ঞ, প্রধান নির্বাহী, প্রাকৃতিক নিরাময় কেন্দ্র

আমাদের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো করার জন্য কি সন্তান পৃথিবীতে আনব, নাকি আগেই মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়ন ঘটিয়ে সন্তান জন্ম দেব? এটি খুব কঠিন প্রশ্ন...
০৯ আগস্ট ২০২২
বাংলাদেশে যেখানে কিডনি প্রতিস্থাপন এখনো সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে, সেখানে অসহায় ও দরিদ্র রোগীদের শেষ ভরসা হয়ে উঠেছেন কিডনির শল্যচিকিৎসক অধ্যাপক কামরুল ইসলাম। দেশে যত কিডনি প্রতিস্থাপিত হয়, সেগুলোর একটি বড় অংশই করেন তিনি। নিজের প্রতিষ্ঠিত সেন্টার ফর কিডনি ডিজিজেস...
২ ঘণ্টা আগে
প্রথাগত চিকিৎসা বলতে এমন স্বাস্থ্য ও সুস্থতার ব্যবস্থাকে বোঝায়, যেগুলোর উদ্ভব আধুনিক বায়োমেডিসিনের আগেই হয়েছে। এসব চিকিৎসা পদ্ধতির ধরন নানাবিধ—ভেষজ চা থেকে শুরু করে ভারতের আয়ুর্বেদিক চিকিৎসাব্যবস্থা পর্যন্ত।
৩ দিন আগে
শীতের সকাল কিংবা সন্ধ্যায় ধোঁয়া ওঠা এক বাটি খিচুড়ির চেয়ে আরামদায়ক আর কী হতে পারে। খিচুড়ি শুধু একটি খাবার নয়। শীতকাল মানে আরাম করে হরেক রকমের সবজি দিয়ে রান্না করা খিচুড়ি খাওয়া। এতে যেমন মন ভরে, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর এ খাবার রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।
৪ দিন আগে