অধ্যাপক ডা. সানজিদা শাহরিয়া

আমাদের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো করার জন্য কি সন্তান পৃথিবীতে আনব, নাকি আগেই মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়ন ঘটিয়ে সন্তান জন্ম দেব? এটি খুব কঠিন প্রশ্ন।
একজন মানুষ যখন আমি থেকে আমরা হন, তখন তাঁদের মানসিক স্বাস্থ্যের ক্যানভাসটা বড় হয়ে যায়। একটি প্রচলিত কথা—‘দাম্পত্য সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না বাচ্চা নিয়ে নাও, ঠিক হয়ে যাবে।’
প্রশ্নটা হলো, যেখানে আমরা দুজন মানুষই ভালো থাকতে পারছি না, সেখানে তৃতীয় একজনকে আনলে টানাপোড়েন আরও বাড়বে। কেন সেখানে তৃতীয় একজনকে আনব?
এবার একটু ভেঙে ভেঙে দেখি। প্রথমে দেখি মায়ের ক্ষেত্রে কী হচ্ছে।
প্রেগনেন্সি নিজেই একটি মনোদৈহিক, ক্ষেত্রবিশেষে মনোসামাজিক চাপ। হরমোন পরিবর্তনের কারণে মা ক্রমাগত নিজের শরীর বদলে যেতে দেখছেন। কখনো গর্ভকালীন কখনো-বা গর্ভ-পরবর্তী সময়ে কোনো কোনো নতুন মা বিষণ্নতার শিকার হন। যেটা অ্যান্টিপারটাম বা পোস্টপারটাম ডিপ্রেশন থেকে ক্ষেত্রবিশেষে সাইকোসিস পর্যন্ত হয়ে যায়। এখন স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ভালো না থাকলে এই বিষণ্নতা হলে মায়ের যত্ন হবে না। মায়ের অযত্ন মানে গর্ভস্থ শিশুরও অযত্ন।
গবেষণায় দেখা গেছে, গর্ভাবস্থায় মায়ের বিষণ্নতা এবং উদ্বেগজনিত রোগ থাকলে প্রিম্যাচিওর বেবি, অথবা নির্দিষ্ট সময়ের আগেই সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়া থেকে শিশুর জন্মকালীন ওজন কম হতে পারে। সে জন্য শিশুকে আইসিইউতে রাখতে হতে পারে। এ কারণে শিশুটি পরবর্তীকালে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ এবং হৃদ্রোগের ঝুঁকিতে পড়তে পারে। শুধু তাই নয়, সন্তান প্রসবের পর মায়ের বিষণ্নতা রোগ হলে মা ও শিশু—উভয়ের জন্যই সেটা ক্ষতিকর।
মা সন্তানকে ঠিকমতো বুকের দুধ খাওয়াতে না পারলে মা ও সন্তানের বন্ধন দৃঢ় হয় না। সঠিক পরিচর্যার অভাবে সন্তানটি ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, পুষ্টিহীনতায় ভুগতে পারে। কখনো এটা এত তীব্র হয়ে যায় যে, মা আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। কখনো সন্তানকে আঘাত করেন, মেরেও ফেলেন। কাজেই গর্ভাবস্থায় এবং প্রসব-পরবর্তী এক বছর খুবই গুরুত্বপূর্ণ মায়ের শরীর ও মনের জন্য। মেয়েরা এ অযত্নটা আমৃত্যু মনে রাখেন।
নিউরোসায়েন্স বলে, যে শিশু বাবা-মার সুস্থ স্বাভাবিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক দেখে বড় হবে, সে ভবিষ্যৎ জীবনে মানসিক চাপে পড়লেও নিজের আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। বহু শিশুর ইদানীং কথা বলতে দেরি হচ্ছে। জেনেটিক কারণ বাদে এর পরিবেশগত একটা প্রভাব আছে। বাবা-মায়ের সুসম্পর্ক শিশুর মানসিক, দ্রুত কথা বলা এবং আবেগীয় বিকাশকে ত্বরান্বিত করে। এ রকম পরিবেশে শিশু বড় হলে ইতিবাচক এবং আত্মবিশ্বাসী হবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, নিম্ন এবং মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে মাতৃত্বজনিত বিষণ্নতা রোগের সঙ্গে মনোসামাজিক বিষয় সম্পৃক্ত। যেমন, অস্থিতিশীল দাম্পত্য সম্পর্ক, দাম্পত্য কলহ, মেয়ে সন্তান জন্ম দেওয়ার চাপ, পারিবারিক সহিংসতা, অর্থনৈতিক সংকট ইত্যাদি। করোনা-পরবর্তী সময়ে সবকিছু আরও কঠিন হয়ে উঠেছে।
স্বামী এবং পরিবারের অন্য সদস্যদের বুঝতে হবে যে, শুধু নবাগত সন্তানই নয়, মায়েরও বিশেষ পরিচর্যা ও বিশ্রাম দরকার। নতুন মায়ের বাড়তি যত্নের খেয়াল রাখার দায়িত্ব সব থেকে বেশি বাবার। কিন্তু দেখা যায়, আমাদের সমাজে শিশু জন্মের পর কখনো কখনো মেয়েকে বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। অনেক স্বামী শিশুর কান্নায় ঘুম হবে না ভেবে অন্য রুমে ঘুমান। স্ত্রীরও যে বিশ্রামের প্রয়োজন, সেটা কজন মনে রাখেন? বহু পরকীয়ার জন্ম হয় স্ত্রীর গর্ভাবস্থায়, অথবা স্ত্রী যখন সন্তানকে সময় দিচ্ছেন, সেই অবকাশে। একজন যখন নিজের শরীর ও মন মিশিয়ে সন্তানকে আগলে রাখছেন, তখন অন্যজন কী করছেন? এই আয়নাটি নিজের চোখের সামনে ধরা খুব দরকার।
এখন নারীদের বড় একটি অংশ কর্মজীবী। ক্যারিয়ারের কিছুটা তো বিসর্জন দিতেই হয় সন্তানের জন্মের পর। বাবা-মার যদি বন্ধুত্বের জায়গাটা না থাকে, একজন পেশাজীবী মা অনেক রকম সাহায্য বাবার কাছ থেকে পাবেন না সন্তান হওয়ার পর। কাজেই সন্তান নেওয়ার আগে প্রতিটি মেয়েকে বলব, দুবার ভাবুন।
শিশুর জন্ম হওয়াটা কি শুধু মার জন্যই মানসিক চাপের কাজ?
মোটেও না। নতুন বাবার জন্যও এটি চাপের বিষয়। বাড়তি খরচের চাপ, মায়ের বাড়তি যত্ন—এগুলোর দায়ভার মোটামুটি পুরুষটির। পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ক্ষতি করেছে পুরুষেরও। তার ওপরে সংসারের জোয়াল চাপিয়ে দিয়েছে। এই সংসারের ঘানি আমৃত্যু টানবার চক্রব্যূহ থেকে পুরুষের পালানোর পথ নেই।
যৌথ পরিবারগুলো ভেঙে গেছে। বাবা-মা এবং শিশু নিয়ে তৈরি হচ্ছে একক বা নিউক্লিয়ার পরিবার। উপরন্তু নারী-পুরুষ উভয়কেই জীবনের তাগিদে উপার্জনে নামতে হচ্ছে। শিশু জন্মের পর পারিবারিক ও কর্মক্ষেত্রের চাপে চাকরিজীবী মায়ের মতো একক পরিবারের বাবাও পড়ছেন। একইভাবে অসহিষ্ণুতা, ঘুম কম হওয়া, মনোযোগ কমে যাওয়া, বিষণ্নতায় নতুন মায়ের মতো নতুন বাবাটিও ভুগতে পারেন।
গবেষণা বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি সাতজন মায়ের মধ্যে একজন এবং প্রতি দশজন বাবার মধ্যে একজন শিশু জন্মের পর বিষণ্নতার শিকার হন। ফলে একক পরিবারে নতুন বাবা ও মা দুজনকেই পেশা এবং পরিবারের সঙ্গে সমন্বয় আনতে দীর্ঘ লড়াই করতে হয়। বাংলাদেশে এ ধরনের সচেতনতা বিরল।
ফলে বাবা-মা যদি নিজেদের সমস্যার সমাধান না করেই মনে করেন সন্তান নিলে সমস্যার সমাধান হবে, তাহলে তাদের পুরোনো সমস্যা ধারাবাহিকভাবে চলতেই থাকবে এবং সন্তানটিও নতুন সমস্যার কেন্দ্রবিন্দু হবে।
মনস্তাত্ত্বিকভাবে মায়ের গর্ভকালীন সময় থেকে শুরু করে প্রথম দুই বছর, শিশু যখন কথা বলতে জানে না, যেটাকে প্রিভারবাল স্টেজ বলে, তখন শিশুটি কিন্তু ঠিকই বুঝে যায় যে সে এই পরিবারে খুব আদরের সঙ্গে গৃহীত নয়। ফলে শিশুটি নিজেকে দায়ী করতে থাকে বেড়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে বাবা-মার গন্ডগোলের জন্য। এর ফল শুধু সুদূর প্রসারী।
এই শিশুটি প্রাপ্তবয়স্ক হলেও এই মনস্তাত্ত্বিক ভোগান্তির শিকার হবে। প্রাপ্তবয়স্ক হলে এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটানোর একটি প্রবণতা তার ব্যক্তিগত জীবনে দেখা যেতে পারে। কারণ সে দেখে এসেছে দাম্পত্যে ভালো না থাকা। অবচেতন ভাবে মানুষ যা দেখে তাই অনুকরণ করে। তাহলে কি এর থেকে মুক্তি নেই? অবশ্যই আছে। একমাত্র সচেতনতাই এ সমস্যা থেকে মুক্তির চাবি কাঠি।
দাম্পত্যে মানসিক স্বাস্থ্য ভালো মানে, সে দাম্পত্য সম্পর্কের মধ্যে কষ্ট থাকবে না, দ্বন্দ্ব থাকবে না, তা নয়। এখানে তারা মানসিক দ্বন্দ্বগুলো কীভাবে মোকাবিলা করা যাবে সেই ব্যাকরণটা জানেন। ফলে একটা ভালো মানসিক সম্পর্ক নিয়ে যখন কেউ বাবা-মা হওয়ার পরিকল্পনা করেন, তখন তারা জানেন যে ক্যারিয়ারে কতটুকু কোথায় বিসর্জন দিতে হবে এবং এতে কোন ধরনের সমস্যা আসতে পারে। পরস্পর আলোচনা ও সম্মতির ভিত্তিতে তারা সমস্যাগুলো মোকাবিলা করেন ব্যক্তিগত মর্যাদা অক্ষুণ্ন রেখে।
এখন কেউ একজন বলতেই পারেন, ‘আমাদের সময় তো বাচ্চা নিলেই সব ঠিক হয়ে যেত।’ বিশেষ করে শ্বশুর-শাশুড়ি শ্রেণির। খোঁজ নিলে দেখা যাবে, তখনকার মায়ের অর্থনৈতিক অক্ষমতা, সমাজের লোকে কী বলবে ইত্যাদি ভীতি, তাঁদের সম্পর্কে থেকে যেতে বাধ্য করত। এখন এই বিশ্বায়নের যুগে সেই পারিপার্শ্বিকের পরিবর্তন অনস্বীকার্য।
নতুন একটা জীবনের উন্মেষ ঘটিয়ে সেই জীবনটিকেও বিষাক্ত ডালপালায় ঘিরে ফেলা মোটেও সমাধান নয়। নিজে মানসিকভাবে ভালো না থাকলে কীভাবে সন্তানের যত্ন নেবেন যেখানে শিশুর মনোদৈহিক বিকাশ চমৎকার হবে?
প্লেনে উঠলে নির্দেশনা শোনা যায়, ‘অক্সিজেন মাস্কটা আগে নিজের মুখে নিন, তারপর শিশুকে দিন।’
কাজেই প্রথমে নিজেকে ভালো থাকা শিখতে হবে; নিজের সম্পর্ককে ভালো রাখার জায়গাটায় জোর দিতে হবে, তারপর সন্তানকে পৃথিবীতে আনতে হবে।
ভঙ্গুর সম্পর্কে সন্তানের জন্ম দেওয়া মা, বাবা ও সন্তান তিন পক্ষের জন্যই ভোগান্তির।
লেখক: চিকিৎসক ও কাউন্সেলর, সাইকোথেরাপি প্র্যাকটিশনার, ফিনিক্স ওয়েলনেস সেন্টার, ঢাকা

আমাদের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো করার জন্য কি সন্তান পৃথিবীতে আনব, নাকি আগেই মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়ন ঘটিয়ে সন্তান জন্ম দেব? এটি খুব কঠিন প্রশ্ন।
একজন মানুষ যখন আমি থেকে আমরা হন, তখন তাঁদের মানসিক স্বাস্থ্যের ক্যানভাসটা বড় হয়ে যায়। একটি প্রচলিত কথা—‘দাম্পত্য সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না বাচ্চা নিয়ে নাও, ঠিক হয়ে যাবে।’
প্রশ্নটা হলো, যেখানে আমরা দুজন মানুষই ভালো থাকতে পারছি না, সেখানে তৃতীয় একজনকে আনলে টানাপোড়েন আরও বাড়বে। কেন সেখানে তৃতীয় একজনকে আনব?
এবার একটু ভেঙে ভেঙে দেখি। প্রথমে দেখি মায়ের ক্ষেত্রে কী হচ্ছে।
প্রেগনেন্সি নিজেই একটি মনোদৈহিক, ক্ষেত্রবিশেষে মনোসামাজিক চাপ। হরমোন পরিবর্তনের কারণে মা ক্রমাগত নিজের শরীর বদলে যেতে দেখছেন। কখনো গর্ভকালীন কখনো-বা গর্ভ-পরবর্তী সময়ে কোনো কোনো নতুন মা বিষণ্নতার শিকার হন। যেটা অ্যান্টিপারটাম বা পোস্টপারটাম ডিপ্রেশন থেকে ক্ষেত্রবিশেষে সাইকোসিস পর্যন্ত হয়ে যায়। এখন স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ভালো না থাকলে এই বিষণ্নতা হলে মায়ের যত্ন হবে না। মায়ের অযত্ন মানে গর্ভস্থ শিশুরও অযত্ন।
গবেষণায় দেখা গেছে, গর্ভাবস্থায় মায়ের বিষণ্নতা এবং উদ্বেগজনিত রোগ থাকলে প্রিম্যাচিওর বেবি, অথবা নির্দিষ্ট সময়ের আগেই সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়া থেকে শিশুর জন্মকালীন ওজন কম হতে পারে। সে জন্য শিশুকে আইসিইউতে রাখতে হতে পারে। এ কারণে শিশুটি পরবর্তীকালে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ এবং হৃদ্রোগের ঝুঁকিতে পড়তে পারে। শুধু তাই নয়, সন্তান প্রসবের পর মায়ের বিষণ্নতা রোগ হলে মা ও শিশু—উভয়ের জন্যই সেটা ক্ষতিকর।
মা সন্তানকে ঠিকমতো বুকের দুধ খাওয়াতে না পারলে মা ও সন্তানের বন্ধন দৃঢ় হয় না। সঠিক পরিচর্যার অভাবে সন্তানটি ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, পুষ্টিহীনতায় ভুগতে পারে। কখনো এটা এত তীব্র হয়ে যায় যে, মা আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। কখনো সন্তানকে আঘাত করেন, মেরেও ফেলেন। কাজেই গর্ভাবস্থায় এবং প্রসব-পরবর্তী এক বছর খুবই গুরুত্বপূর্ণ মায়ের শরীর ও মনের জন্য। মেয়েরা এ অযত্নটা আমৃত্যু মনে রাখেন।
নিউরোসায়েন্স বলে, যে শিশু বাবা-মার সুস্থ স্বাভাবিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক দেখে বড় হবে, সে ভবিষ্যৎ জীবনে মানসিক চাপে পড়লেও নিজের আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। বহু শিশুর ইদানীং কথা বলতে দেরি হচ্ছে। জেনেটিক কারণ বাদে এর পরিবেশগত একটা প্রভাব আছে। বাবা-মায়ের সুসম্পর্ক শিশুর মানসিক, দ্রুত কথা বলা এবং আবেগীয় বিকাশকে ত্বরান্বিত করে। এ রকম পরিবেশে শিশু বড় হলে ইতিবাচক এবং আত্মবিশ্বাসী হবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, নিম্ন এবং মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে মাতৃত্বজনিত বিষণ্নতা রোগের সঙ্গে মনোসামাজিক বিষয় সম্পৃক্ত। যেমন, অস্থিতিশীল দাম্পত্য সম্পর্ক, দাম্পত্য কলহ, মেয়ে সন্তান জন্ম দেওয়ার চাপ, পারিবারিক সহিংসতা, অর্থনৈতিক সংকট ইত্যাদি। করোনা-পরবর্তী সময়ে সবকিছু আরও কঠিন হয়ে উঠেছে।
স্বামী এবং পরিবারের অন্য সদস্যদের বুঝতে হবে যে, শুধু নবাগত সন্তানই নয়, মায়েরও বিশেষ পরিচর্যা ও বিশ্রাম দরকার। নতুন মায়ের বাড়তি যত্নের খেয়াল রাখার দায়িত্ব সব থেকে বেশি বাবার। কিন্তু দেখা যায়, আমাদের সমাজে শিশু জন্মের পর কখনো কখনো মেয়েকে বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। অনেক স্বামী শিশুর কান্নায় ঘুম হবে না ভেবে অন্য রুমে ঘুমান। স্ত্রীরও যে বিশ্রামের প্রয়োজন, সেটা কজন মনে রাখেন? বহু পরকীয়ার জন্ম হয় স্ত্রীর গর্ভাবস্থায়, অথবা স্ত্রী যখন সন্তানকে সময় দিচ্ছেন, সেই অবকাশে। একজন যখন নিজের শরীর ও মন মিশিয়ে সন্তানকে আগলে রাখছেন, তখন অন্যজন কী করছেন? এই আয়নাটি নিজের চোখের সামনে ধরা খুব দরকার।
এখন নারীদের বড় একটি অংশ কর্মজীবী। ক্যারিয়ারের কিছুটা তো বিসর্জন দিতেই হয় সন্তানের জন্মের পর। বাবা-মার যদি বন্ধুত্বের জায়গাটা না থাকে, একজন পেশাজীবী মা অনেক রকম সাহায্য বাবার কাছ থেকে পাবেন না সন্তান হওয়ার পর। কাজেই সন্তান নেওয়ার আগে প্রতিটি মেয়েকে বলব, দুবার ভাবুন।
শিশুর জন্ম হওয়াটা কি শুধু মার জন্যই মানসিক চাপের কাজ?
মোটেও না। নতুন বাবার জন্যও এটি চাপের বিষয়। বাড়তি খরচের চাপ, মায়ের বাড়তি যত্ন—এগুলোর দায়ভার মোটামুটি পুরুষটির। পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ক্ষতি করেছে পুরুষেরও। তার ওপরে সংসারের জোয়াল চাপিয়ে দিয়েছে। এই সংসারের ঘানি আমৃত্যু টানবার চক্রব্যূহ থেকে পুরুষের পালানোর পথ নেই।
যৌথ পরিবারগুলো ভেঙে গেছে। বাবা-মা এবং শিশু নিয়ে তৈরি হচ্ছে একক বা নিউক্লিয়ার পরিবার। উপরন্তু নারী-পুরুষ উভয়কেই জীবনের তাগিদে উপার্জনে নামতে হচ্ছে। শিশু জন্মের পর পারিবারিক ও কর্মক্ষেত্রের চাপে চাকরিজীবী মায়ের মতো একক পরিবারের বাবাও পড়ছেন। একইভাবে অসহিষ্ণুতা, ঘুম কম হওয়া, মনোযোগ কমে যাওয়া, বিষণ্নতায় নতুন মায়ের মতো নতুন বাবাটিও ভুগতে পারেন।
গবেষণা বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি সাতজন মায়ের মধ্যে একজন এবং প্রতি দশজন বাবার মধ্যে একজন শিশু জন্মের পর বিষণ্নতার শিকার হন। ফলে একক পরিবারে নতুন বাবা ও মা দুজনকেই পেশা এবং পরিবারের সঙ্গে সমন্বয় আনতে দীর্ঘ লড়াই করতে হয়। বাংলাদেশে এ ধরনের সচেতনতা বিরল।
ফলে বাবা-মা যদি নিজেদের সমস্যার সমাধান না করেই মনে করেন সন্তান নিলে সমস্যার সমাধান হবে, তাহলে তাদের পুরোনো সমস্যা ধারাবাহিকভাবে চলতেই থাকবে এবং সন্তানটিও নতুন সমস্যার কেন্দ্রবিন্দু হবে।
মনস্তাত্ত্বিকভাবে মায়ের গর্ভকালীন সময় থেকে শুরু করে প্রথম দুই বছর, শিশু যখন কথা বলতে জানে না, যেটাকে প্রিভারবাল স্টেজ বলে, তখন শিশুটি কিন্তু ঠিকই বুঝে যায় যে সে এই পরিবারে খুব আদরের সঙ্গে গৃহীত নয়। ফলে শিশুটি নিজেকে দায়ী করতে থাকে বেড়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে বাবা-মার গন্ডগোলের জন্য। এর ফল শুধু সুদূর প্রসারী।
এই শিশুটি প্রাপ্তবয়স্ক হলেও এই মনস্তাত্ত্বিক ভোগান্তির শিকার হবে। প্রাপ্তবয়স্ক হলে এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটানোর একটি প্রবণতা তার ব্যক্তিগত জীবনে দেখা যেতে পারে। কারণ সে দেখে এসেছে দাম্পত্যে ভালো না থাকা। অবচেতন ভাবে মানুষ যা দেখে তাই অনুকরণ করে। তাহলে কি এর থেকে মুক্তি নেই? অবশ্যই আছে। একমাত্র সচেতনতাই এ সমস্যা থেকে মুক্তির চাবি কাঠি।
দাম্পত্যে মানসিক স্বাস্থ্য ভালো মানে, সে দাম্পত্য সম্পর্কের মধ্যে কষ্ট থাকবে না, দ্বন্দ্ব থাকবে না, তা নয়। এখানে তারা মানসিক দ্বন্দ্বগুলো কীভাবে মোকাবিলা করা যাবে সেই ব্যাকরণটা জানেন। ফলে একটা ভালো মানসিক সম্পর্ক নিয়ে যখন কেউ বাবা-মা হওয়ার পরিকল্পনা করেন, তখন তারা জানেন যে ক্যারিয়ারে কতটুকু কোথায় বিসর্জন দিতে হবে এবং এতে কোন ধরনের সমস্যা আসতে পারে। পরস্পর আলোচনা ও সম্মতির ভিত্তিতে তারা সমস্যাগুলো মোকাবিলা করেন ব্যক্তিগত মর্যাদা অক্ষুণ্ন রেখে।
এখন কেউ একজন বলতেই পারেন, ‘আমাদের সময় তো বাচ্চা নিলেই সব ঠিক হয়ে যেত।’ বিশেষ করে শ্বশুর-শাশুড়ি শ্রেণির। খোঁজ নিলে দেখা যাবে, তখনকার মায়ের অর্থনৈতিক অক্ষমতা, সমাজের লোকে কী বলবে ইত্যাদি ভীতি, তাঁদের সম্পর্কে থেকে যেতে বাধ্য করত। এখন এই বিশ্বায়নের যুগে সেই পারিপার্শ্বিকের পরিবর্তন অনস্বীকার্য।
নতুন একটা জীবনের উন্মেষ ঘটিয়ে সেই জীবনটিকেও বিষাক্ত ডালপালায় ঘিরে ফেলা মোটেও সমাধান নয়। নিজে মানসিকভাবে ভালো না থাকলে কীভাবে সন্তানের যত্ন নেবেন যেখানে শিশুর মনোদৈহিক বিকাশ চমৎকার হবে?
প্লেনে উঠলে নির্দেশনা শোনা যায়, ‘অক্সিজেন মাস্কটা আগে নিজের মুখে নিন, তারপর শিশুকে দিন।’
কাজেই প্রথমে নিজেকে ভালো থাকা শিখতে হবে; নিজের সম্পর্ককে ভালো রাখার জায়গাটায় জোর দিতে হবে, তারপর সন্তানকে পৃথিবীতে আনতে হবে।
ভঙ্গুর সম্পর্কে সন্তানের জন্ম দেওয়া মা, বাবা ও সন্তান তিন পক্ষের জন্যই ভোগান্তির।
লেখক: চিকিৎসক ও কাউন্সেলর, সাইকোথেরাপি প্র্যাকটিশনার, ফিনিক্স ওয়েলনেস সেন্টার, ঢাকা
অধ্যাপক ডা. সানজিদা শাহরিয়া

আমাদের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো করার জন্য কি সন্তান পৃথিবীতে আনব, নাকি আগেই মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়ন ঘটিয়ে সন্তান জন্ম দেব? এটি খুব কঠিন প্রশ্ন।
একজন মানুষ যখন আমি থেকে আমরা হন, তখন তাঁদের মানসিক স্বাস্থ্যের ক্যানভাসটা বড় হয়ে যায়। একটি প্রচলিত কথা—‘দাম্পত্য সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না বাচ্চা নিয়ে নাও, ঠিক হয়ে যাবে।’
প্রশ্নটা হলো, যেখানে আমরা দুজন মানুষই ভালো থাকতে পারছি না, সেখানে তৃতীয় একজনকে আনলে টানাপোড়েন আরও বাড়বে। কেন সেখানে তৃতীয় একজনকে আনব?
এবার একটু ভেঙে ভেঙে দেখি। প্রথমে দেখি মায়ের ক্ষেত্রে কী হচ্ছে।
প্রেগনেন্সি নিজেই একটি মনোদৈহিক, ক্ষেত্রবিশেষে মনোসামাজিক চাপ। হরমোন পরিবর্তনের কারণে মা ক্রমাগত নিজের শরীর বদলে যেতে দেখছেন। কখনো গর্ভকালীন কখনো-বা গর্ভ-পরবর্তী সময়ে কোনো কোনো নতুন মা বিষণ্নতার শিকার হন। যেটা অ্যান্টিপারটাম বা পোস্টপারটাম ডিপ্রেশন থেকে ক্ষেত্রবিশেষে সাইকোসিস পর্যন্ত হয়ে যায়। এখন স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ভালো না থাকলে এই বিষণ্নতা হলে মায়ের যত্ন হবে না। মায়ের অযত্ন মানে গর্ভস্থ শিশুরও অযত্ন।
গবেষণায় দেখা গেছে, গর্ভাবস্থায় মায়ের বিষণ্নতা এবং উদ্বেগজনিত রোগ থাকলে প্রিম্যাচিওর বেবি, অথবা নির্দিষ্ট সময়ের আগেই সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়া থেকে শিশুর জন্মকালীন ওজন কম হতে পারে। সে জন্য শিশুকে আইসিইউতে রাখতে হতে পারে। এ কারণে শিশুটি পরবর্তীকালে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ এবং হৃদ্রোগের ঝুঁকিতে পড়তে পারে। শুধু তাই নয়, সন্তান প্রসবের পর মায়ের বিষণ্নতা রোগ হলে মা ও শিশু—উভয়ের জন্যই সেটা ক্ষতিকর।
মা সন্তানকে ঠিকমতো বুকের দুধ খাওয়াতে না পারলে মা ও সন্তানের বন্ধন দৃঢ় হয় না। সঠিক পরিচর্যার অভাবে সন্তানটি ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, পুষ্টিহীনতায় ভুগতে পারে। কখনো এটা এত তীব্র হয়ে যায় যে, মা আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। কখনো সন্তানকে আঘাত করেন, মেরেও ফেলেন। কাজেই গর্ভাবস্থায় এবং প্রসব-পরবর্তী এক বছর খুবই গুরুত্বপূর্ণ মায়ের শরীর ও মনের জন্য। মেয়েরা এ অযত্নটা আমৃত্যু মনে রাখেন।
নিউরোসায়েন্স বলে, যে শিশু বাবা-মার সুস্থ স্বাভাবিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক দেখে বড় হবে, সে ভবিষ্যৎ জীবনে মানসিক চাপে পড়লেও নিজের আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। বহু শিশুর ইদানীং কথা বলতে দেরি হচ্ছে। জেনেটিক কারণ বাদে এর পরিবেশগত একটা প্রভাব আছে। বাবা-মায়ের সুসম্পর্ক শিশুর মানসিক, দ্রুত কথা বলা এবং আবেগীয় বিকাশকে ত্বরান্বিত করে। এ রকম পরিবেশে শিশু বড় হলে ইতিবাচক এবং আত্মবিশ্বাসী হবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, নিম্ন এবং মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে মাতৃত্বজনিত বিষণ্নতা রোগের সঙ্গে মনোসামাজিক বিষয় সম্পৃক্ত। যেমন, অস্থিতিশীল দাম্পত্য সম্পর্ক, দাম্পত্য কলহ, মেয়ে সন্তান জন্ম দেওয়ার চাপ, পারিবারিক সহিংসতা, অর্থনৈতিক সংকট ইত্যাদি। করোনা-পরবর্তী সময়ে সবকিছু আরও কঠিন হয়ে উঠেছে।
স্বামী এবং পরিবারের অন্য সদস্যদের বুঝতে হবে যে, শুধু নবাগত সন্তানই নয়, মায়েরও বিশেষ পরিচর্যা ও বিশ্রাম দরকার। নতুন মায়ের বাড়তি যত্নের খেয়াল রাখার দায়িত্ব সব থেকে বেশি বাবার। কিন্তু দেখা যায়, আমাদের সমাজে শিশু জন্মের পর কখনো কখনো মেয়েকে বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। অনেক স্বামী শিশুর কান্নায় ঘুম হবে না ভেবে অন্য রুমে ঘুমান। স্ত্রীরও যে বিশ্রামের প্রয়োজন, সেটা কজন মনে রাখেন? বহু পরকীয়ার জন্ম হয় স্ত্রীর গর্ভাবস্থায়, অথবা স্ত্রী যখন সন্তানকে সময় দিচ্ছেন, সেই অবকাশে। একজন যখন নিজের শরীর ও মন মিশিয়ে সন্তানকে আগলে রাখছেন, তখন অন্যজন কী করছেন? এই আয়নাটি নিজের চোখের সামনে ধরা খুব দরকার।
এখন নারীদের বড় একটি অংশ কর্মজীবী। ক্যারিয়ারের কিছুটা তো বিসর্জন দিতেই হয় সন্তানের জন্মের পর। বাবা-মার যদি বন্ধুত্বের জায়গাটা না থাকে, একজন পেশাজীবী মা অনেক রকম সাহায্য বাবার কাছ থেকে পাবেন না সন্তান হওয়ার পর। কাজেই সন্তান নেওয়ার আগে প্রতিটি মেয়েকে বলব, দুবার ভাবুন।
শিশুর জন্ম হওয়াটা কি শুধু মার জন্যই মানসিক চাপের কাজ?
মোটেও না। নতুন বাবার জন্যও এটি চাপের বিষয়। বাড়তি খরচের চাপ, মায়ের বাড়তি যত্ন—এগুলোর দায়ভার মোটামুটি পুরুষটির। পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ক্ষতি করেছে পুরুষেরও। তার ওপরে সংসারের জোয়াল চাপিয়ে দিয়েছে। এই সংসারের ঘানি আমৃত্যু টানবার চক্রব্যূহ থেকে পুরুষের পালানোর পথ নেই।
যৌথ পরিবারগুলো ভেঙে গেছে। বাবা-মা এবং শিশু নিয়ে তৈরি হচ্ছে একক বা নিউক্লিয়ার পরিবার। উপরন্তু নারী-পুরুষ উভয়কেই জীবনের তাগিদে উপার্জনে নামতে হচ্ছে। শিশু জন্মের পর পারিবারিক ও কর্মক্ষেত্রের চাপে চাকরিজীবী মায়ের মতো একক পরিবারের বাবাও পড়ছেন। একইভাবে অসহিষ্ণুতা, ঘুম কম হওয়া, মনোযোগ কমে যাওয়া, বিষণ্নতায় নতুন মায়ের মতো নতুন বাবাটিও ভুগতে পারেন।
গবেষণা বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি সাতজন মায়ের মধ্যে একজন এবং প্রতি দশজন বাবার মধ্যে একজন শিশু জন্মের পর বিষণ্নতার শিকার হন। ফলে একক পরিবারে নতুন বাবা ও মা দুজনকেই পেশা এবং পরিবারের সঙ্গে সমন্বয় আনতে দীর্ঘ লড়াই করতে হয়। বাংলাদেশে এ ধরনের সচেতনতা বিরল।
ফলে বাবা-মা যদি নিজেদের সমস্যার সমাধান না করেই মনে করেন সন্তান নিলে সমস্যার সমাধান হবে, তাহলে তাদের পুরোনো সমস্যা ধারাবাহিকভাবে চলতেই থাকবে এবং সন্তানটিও নতুন সমস্যার কেন্দ্রবিন্দু হবে।
মনস্তাত্ত্বিকভাবে মায়ের গর্ভকালীন সময় থেকে শুরু করে প্রথম দুই বছর, শিশু যখন কথা বলতে জানে না, যেটাকে প্রিভারবাল স্টেজ বলে, তখন শিশুটি কিন্তু ঠিকই বুঝে যায় যে সে এই পরিবারে খুব আদরের সঙ্গে গৃহীত নয়। ফলে শিশুটি নিজেকে দায়ী করতে থাকে বেড়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে বাবা-মার গন্ডগোলের জন্য। এর ফল শুধু সুদূর প্রসারী।
এই শিশুটি প্রাপ্তবয়স্ক হলেও এই মনস্তাত্ত্বিক ভোগান্তির শিকার হবে। প্রাপ্তবয়স্ক হলে এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটানোর একটি প্রবণতা তার ব্যক্তিগত জীবনে দেখা যেতে পারে। কারণ সে দেখে এসেছে দাম্পত্যে ভালো না থাকা। অবচেতন ভাবে মানুষ যা দেখে তাই অনুকরণ করে। তাহলে কি এর থেকে মুক্তি নেই? অবশ্যই আছে। একমাত্র সচেতনতাই এ সমস্যা থেকে মুক্তির চাবি কাঠি।
দাম্পত্যে মানসিক স্বাস্থ্য ভালো মানে, সে দাম্পত্য সম্পর্কের মধ্যে কষ্ট থাকবে না, দ্বন্দ্ব থাকবে না, তা নয়। এখানে তারা মানসিক দ্বন্দ্বগুলো কীভাবে মোকাবিলা করা যাবে সেই ব্যাকরণটা জানেন। ফলে একটা ভালো মানসিক সম্পর্ক নিয়ে যখন কেউ বাবা-মা হওয়ার পরিকল্পনা করেন, তখন তারা জানেন যে ক্যারিয়ারে কতটুকু কোথায় বিসর্জন দিতে হবে এবং এতে কোন ধরনের সমস্যা আসতে পারে। পরস্পর আলোচনা ও সম্মতির ভিত্তিতে তারা সমস্যাগুলো মোকাবিলা করেন ব্যক্তিগত মর্যাদা অক্ষুণ্ন রেখে।
এখন কেউ একজন বলতেই পারেন, ‘আমাদের সময় তো বাচ্চা নিলেই সব ঠিক হয়ে যেত।’ বিশেষ করে শ্বশুর-শাশুড়ি শ্রেণির। খোঁজ নিলে দেখা যাবে, তখনকার মায়ের অর্থনৈতিক অক্ষমতা, সমাজের লোকে কী বলবে ইত্যাদি ভীতি, তাঁদের সম্পর্কে থেকে যেতে বাধ্য করত। এখন এই বিশ্বায়নের যুগে সেই পারিপার্শ্বিকের পরিবর্তন অনস্বীকার্য।
নতুন একটা জীবনের উন্মেষ ঘটিয়ে সেই জীবনটিকেও বিষাক্ত ডালপালায় ঘিরে ফেলা মোটেও সমাধান নয়। নিজে মানসিকভাবে ভালো না থাকলে কীভাবে সন্তানের যত্ন নেবেন যেখানে শিশুর মনোদৈহিক বিকাশ চমৎকার হবে?
প্লেনে উঠলে নির্দেশনা শোনা যায়, ‘অক্সিজেন মাস্কটা আগে নিজের মুখে নিন, তারপর শিশুকে দিন।’
কাজেই প্রথমে নিজেকে ভালো থাকা শিখতে হবে; নিজের সম্পর্ককে ভালো রাখার জায়গাটায় জোর দিতে হবে, তারপর সন্তানকে পৃথিবীতে আনতে হবে।
ভঙ্গুর সম্পর্কে সন্তানের জন্ম দেওয়া মা, বাবা ও সন্তান তিন পক্ষের জন্যই ভোগান্তির।
লেখক: চিকিৎসক ও কাউন্সেলর, সাইকোথেরাপি প্র্যাকটিশনার, ফিনিক্স ওয়েলনেস সেন্টার, ঢাকা

আমাদের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো করার জন্য কি সন্তান পৃথিবীতে আনব, নাকি আগেই মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়ন ঘটিয়ে সন্তান জন্ম দেব? এটি খুব কঠিন প্রশ্ন।
একজন মানুষ যখন আমি থেকে আমরা হন, তখন তাঁদের মানসিক স্বাস্থ্যের ক্যানভাসটা বড় হয়ে যায়। একটি প্রচলিত কথা—‘দাম্পত্য সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না বাচ্চা নিয়ে নাও, ঠিক হয়ে যাবে।’
প্রশ্নটা হলো, যেখানে আমরা দুজন মানুষই ভালো থাকতে পারছি না, সেখানে তৃতীয় একজনকে আনলে টানাপোড়েন আরও বাড়বে। কেন সেখানে তৃতীয় একজনকে আনব?
এবার একটু ভেঙে ভেঙে দেখি। প্রথমে দেখি মায়ের ক্ষেত্রে কী হচ্ছে।
প্রেগনেন্সি নিজেই একটি মনোদৈহিক, ক্ষেত্রবিশেষে মনোসামাজিক চাপ। হরমোন পরিবর্তনের কারণে মা ক্রমাগত নিজের শরীর বদলে যেতে দেখছেন। কখনো গর্ভকালীন কখনো-বা গর্ভ-পরবর্তী সময়ে কোনো কোনো নতুন মা বিষণ্নতার শিকার হন। যেটা অ্যান্টিপারটাম বা পোস্টপারটাম ডিপ্রেশন থেকে ক্ষেত্রবিশেষে সাইকোসিস পর্যন্ত হয়ে যায়। এখন স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ভালো না থাকলে এই বিষণ্নতা হলে মায়ের যত্ন হবে না। মায়ের অযত্ন মানে গর্ভস্থ শিশুরও অযত্ন।
গবেষণায় দেখা গেছে, গর্ভাবস্থায় মায়ের বিষণ্নতা এবং উদ্বেগজনিত রোগ থাকলে প্রিম্যাচিওর বেবি, অথবা নির্দিষ্ট সময়ের আগেই সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়া থেকে শিশুর জন্মকালীন ওজন কম হতে পারে। সে জন্য শিশুকে আইসিইউতে রাখতে হতে পারে। এ কারণে শিশুটি পরবর্তীকালে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ এবং হৃদ্রোগের ঝুঁকিতে পড়তে পারে। শুধু তাই নয়, সন্তান প্রসবের পর মায়ের বিষণ্নতা রোগ হলে মা ও শিশু—উভয়ের জন্যই সেটা ক্ষতিকর।
মা সন্তানকে ঠিকমতো বুকের দুধ খাওয়াতে না পারলে মা ও সন্তানের বন্ধন দৃঢ় হয় না। সঠিক পরিচর্যার অভাবে সন্তানটি ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, পুষ্টিহীনতায় ভুগতে পারে। কখনো এটা এত তীব্র হয়ে যায় যে, মা আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। কখনো সন্তানকে আঘাত করেন, মেরেও ফেলেন। কাজেই গর্ভাবস্থায় এবং প্রসব-পরবর্তী এক বছর খুবই গুরুত্বপূর্ণ মায়ের শরীর ও মনের জন্য। মেয়েরা এ অযত্নটা আমৃত্যু মনে রাখেন।
নিউরোসায়েন্স বলে, যে শিশু বাবা-মার সুস্থ স্বাভাবিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক দেখে বড় হবে, সে ভবিষ্যৎ জীবনে মানসিক চাপে পড়লেও নিজের আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। বহু শিশুর ইদানীং কথা বলতে দেরি হচ্ছে। জেনেটিক কারণ বাদে এর পরিবেশগত একটা প্রভাব আছে। বাবা-মায়ের সুসম্পর্ক শিশুর মানসিক, দ্রুত কথা বলা এবং আবেগীয় বিকাশকে ত্বরান্বিত করে। এ রকম পরিবেশে শিশু বড় হলে ইতিবাচক এবং আত্মবিশ্বাসী হবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, নিম্ন এবং মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে মাতৃত্বজনিত বিষণ্নতা রোগের সঙ্গে মনোসামাজিক বিষয় সম্পৃক্ত। যেমন, অস্থিতিশীল দাম্পত্য সম্পর্ক, দাম্পত্য কলহ, মেয়ে সন্তান জন্ম দেওয়ার চাপ, পারিবারিক সহিংসতা, অর্থনৈতিক সংকট ইত্যাদি। করোনা-পরবর্তী সময়ে সবকিছু আরও কঠিন হয়ে উঠেছে।
স্বামী এবং পরিবারের অন্য সদস্যদের বুঝতে হবে যে, শুধু নবাগত সন্তানই নয়, মায়েরও বিশেষ পরিচর্যা ও বিশ্রাম দরকার। নতুন মায়ের বাড়তি যত্নের খেয়াল রাখার দায়িত্ব সব থেকে বেশি বাবার। কিন্তু দেখা যায়, আমাদের সমাজে শিশু জন্মের পর কখনো কখনো মেয়েকে বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। অনেক স্বামী শিশুর কান্নায় ঘুম হবে না ভেবে অন্য রুমে ঘুমান। স্ত্রীরও যে বিশ্রামের প্রয়োজন, সেটা কজন মনে রাখেন? বহু পরকীয়ার জন্ম হয় স্ত্রীর গর্ভাবস্থায়, অথবা স্ত্রী যখন সন্তানকে সময় দিচ্ছেন, সেই অবকাশে। একজন যখন নিজের শরীর ও মন মিশিয়ে সন্তানকে আগলে রাখছেন, তখন অন্যজন কী করছেন? এই আয়নাটি নিজের চোখের সামনে ধরা খুব দরকার।
এখন নারীদের বড় একটি অংশ কর্মজীবী। ক্যারিয়ারের কিছুটা তো বিসর্জন দিতেই হয় সন্তানের জন্মের পর। বাবা-মার যদি বন্ধুত্বের জায়গাটা না থাকে, একজন পেশাজীবী মা অনেক রকম সাহায্য বাবার কাছ থেকে পাবেন না সন্তান হওয়ার পর। কাজেই সন্তান নেওয়ার আগে প্রতিটি মেয়েকে বলব, দুবার ভাবুন।
শিশুর জন্ম হওয়াটা কি শুধু মার জন্যই মানসিক চাপের কাজ?
মোটেও না। নতুন বাবার জন্যও এটি চাপের বিষয়। বাড়তি খরচের চাপ, মায়ের বাড়তি যত্ন—এগুলোর দায়ভার মোটামুটি পুরুষটির। পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ক্ষতি করেছে পুরুষেরও। তার ওপরে সংসারের জোয়াল চাপিয়ে দিয়েছে। এই সংসারের ঘানি আমৃত্যু টানবার চক্রব্যূহ থেকে পুরুষের পালানোর পথ নেই।
যৌথ পরিবারগুলো ভেঙে গেছে। বাবা-মা এবং শিশু নিয়ে তৈরি হচ্ছে একক বা নিউক্লিয়ার পরিবার। উপরন্তু নারী-পুরুষ উভয়কেই জীবনের তাগিদে উপার্জনে নামতে হচ্ছে। শিশু জন্মের পর পারিবারিক ও কর্মক্ষেত্রের চাপে চাকরিজীবী মায়ের মতো একক পরিবারের বাবাও পড়ছেন। একইভাবে অসহিষ্ণুতা, ঘুম কম হওয়া, মনোযোগ কমে যাওয়া, বিষণ্নতায় নতুন মায়ের মতো নতুন বাবাটিও ভুগতে পারেন।
গবেষণা বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি সাতজন মায়ের মধ্যে একজন এবং প্রতি দশজন বাবার মধ্যে একজন শিশু জন্মের পর বিষণ্নতার শিকার হন। ফলে একক পরিবারে নতুন বাবা ও মা দুজনকেই পেশা এবং পরিবারের সঙ্গে সমন্বয় আনতে দীর্ঘ লড়াই করতে হয়। বাংলাদেশে এ ধরনের সচেতনতা বিরল।
ফলে বাবা-মা যদি নিজেদের সমস্যার সমাধান না করেই মনে করেন সন্তান নিলে সমস্যার সমাধান হবে, তাহলে তাদের পুরোনো সমস্যা ধারাবাহিকভাবে চলতেই থাকবে এবং সন্তানটিও নতুন সমস্যার কেন্দ্রবিন্দু হবে।
মনস্তাত্ত্বিকভাবে মায়ের গর্ভকালীন সময় থেকে শুরু করে প্রথম দুই বছর, শিশু যখন কথা বলতে জানে না, যেটাকে প্রিভারবাল স্টেজ বলে, তখন শিশুটি কিন্তু ঠিকই বুঝে যায় যে সে এই পরিবারে খুব আদরের সঙ্গে গৃহীত নয়। ফলে শিশুটি নিজেকে দায়ী করতে থাকে বেড়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে বাবা-মার গন্ডগোলের জন্য। এর ফল শুধু সুদূর প্রসারী।
এই শিশুটি প্রাপ্তবয়স্ক হলেও এই মনস্তাত্ত্বিক ভোগান্তির শিকার হবে। প্রাপ্তবয়স্ক হলে এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটানোর একটি প্রবণতা তার ব্যক্তিগত জীবনে দেখা যেতে পারে। কারণ সে দেখে এসেছে দাম্পত্যে ভালো না থাকা। অবচেতন ভাবে মানুষ যা দেখে তাই অনুকরণ করে। তাহলে কি এর থেকে মুক্তি নেই? অবশ্যই আছে। একমাত্র সচেতনতাই এ সমস্যা থেকে মুক্তির চাবি কাঠি।
দাম্পত্যে মানসিক স্বাস্থ্য ভালো মানে, সে দাম্পত্য সম্পর্কের মধ্যে কষ্ট থাকবে না, দ্বন্দ্ব থাকবে না, তা নয়। এখানে তারা মানসিক দ্বন্দ্বগুলো কীভাবে মোকাবিলা করা যাবে সেই ব্যাকরণটা জানেন। ফলে একটা ভালো মানসিক সম্পর্ক নিয়ে যখন কেউ বাবা-মা হওয়ার পরিকল্পনা করেন, তখন তারা জানেন যে ক্যারিয়ারে কতটুকু কোথায় বিসর্জন দিতে হবে এবং এতে কোন ধরনের সমস্যা আসতে পারে। পরস্পর আলোচনা ও সম্মতির ভিত্তিতে তারা সমস্যাগুলো মোকাবিলা করেন ব্যক্তিগত মর্যাদা অক্ষুণ্ন রেখে।
এখন কেউ একজন বলতেই পারেন, ‘আমাদের সময় তো বাচ্চা নিলেই সব ঠিক হয়ে যেত।’ বিশেষ করে শ্বশুর-শাশুড়ি শ্রেণির। খোঁজ নিলে দেখা যাবে, তখনকার মায়ের অর্থনৈতিক অক্ষমতা, সমাজের লোকে কী বলবে ইত্যাদি ভীতি, তাঁদের সম্পর্কে থেকে যেতে বাধ্য করত। এখন এই বিশ্বায়নের যুগে সেই পারিপার্শ্বিকের পরিবর্তন অনস্বীকার্য।
নতুন একটা জীবনের উন্মেষ ঘটিয়ে সেই জীবনটিকেও বিষাক্ত ডালপালায় ঘিরে ফেলা মোটেও সমাধান নয়। নিজে মানসিকভাবে ভালো না থাকলে কীভাবে সন্তানের যত্ন নেবেন যেখানে শিশুর মনোদৈহিক বিকাশ চমৎকার হবে?
প্লেনে উঠলে নির্দেশনা শোনা যায়, ‘অক্সিজেন মাস্কটা আগে নিজের মুখে নিন, তারপর শিশুকে দিন।’
কাজেই প্রথমে নিজেকে ভালো থাকা শিখতে হবে; নিজের সম্পর্ককে ভালো রাখার জায়গাটায় জোর দিতে হবে, তারপর সন্তানকে পৃথিবীতে আনতে হবে।
ভঙ্গুর সম্পর্কে সন্তানের জন্ম দেওয়া মা, বাবা ও সন্তান তিন পক্ষের জন্যই ভোগান্তির।
লেখক: চিকিৎসক ও কাউন্সেলর, সাইকোথেরাপি প্র্যাকটিশনার, ফিনিক্স ওয়েলনেস সেন্টার, ঢাকা

গুলিবিদ্ধ হয়ে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক। গুলিতে তাঁর মস্তিষ্ক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং তাঁর ফুসফুসেও আঘাত রয়েছে। তাঁকে কনজারভেটিভ ম্যানেজমেন্টে অর্থাৎ অস্ত্রোপচার ছাড়া নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে...
১৫ ঘণ্টা আগে
ডিসেম্বর মানেই হাড়কাঁপানো শীত। আর শীত মানেই খাবারের উৎসব। খেজুরের রস, পিঠা পায়েসের কমতি হয় না এ ঋতুতে। কনকনে ঠান্ডার বিপক্ষে যুদ্ধে আমাদের প্রধান হাতিয়ার খাবার। তবে সঠিক খাবার বাছাই করা না গেলে হিতে বিপরীত হতে পারে।
১ দিন আগে
চিকিৎসাবিজ্ঞানে সব বন্ধ্যত্বের ৩০ থেকে ৪০ শতাংশের জন্য পুরুষের সমস্যা দায়ী। এ ছাড়া পুরুষের বীর্যে শুক্রাণুর সংখ্যা কমে গেলে, শুক্রাণুর গতি কম থাকলে কিংবা একেবারেই শুক্রাণু না পাওয়া গেলে এবং স্বামী-স্ত্রী নিয়মিত সহবাসের পরও যদি এক বছরের মধ্যে গর্ভধারণ না হয়, তাহলে সেটিকে বলা হয় পুরুষ বন্ধ্যত্ব।
১ দিন আগে
শীতকাল মানেই শুষ্ক, ঠান্ডা আবহাওয়া এবং তার সঙ্গে রোগজীবাণুর সহজ সংক্রমণ। এ সময় প্রধানত ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াজনিত শ্বাসতন্ত্রের রোগগুলো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে আমাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কিছুটা দুর্বল হয় এবং বদ্ধ জায়গায় মানুষ কাছাকাছি থাকায় রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে।
১ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

গুলিবিদ্ধ হয়ে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক। গুলিতে তাঁর মস্তিষ্ক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং তাঁর ফুসফুসেও আঘাত রয়েছে। তাঁকে কনজারভেটিভ ম্যানেজমেন্টে অর্থাৎ অস্ত্রোপচার ছাড়া নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড।
১৪ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে এভারকেয়ার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ হাদির জন্য যে মেডিকেল বোর্ড গঠন করেছে, তাতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন হাসপাতালটির আইসিইউ ও ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. মো. জাফর ইকবাল।

এভারকেয়ার হাসপাতালের পরিচালক (মেডিকেল সার্ভিসেস) ডা. আরিফ মাহমুদ আজ শনিবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক। আমরা মেডিকেল বোর্ড গঠন করে চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছি। এই মুহূর্তে মিডিয়া ব্রিফের চেয়ে তার চিকিৎসার দিকেই আমাদের মনোযোগ বেশি। তার ভাই তাকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য নেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। আমরা আমাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করব। হাদির বর্তমান অবস্থা তার পরিবারকে আমরা ব্রিফ করেছি।’
মেডিকেল বোর্ডের পর্যবেক্ষণ ও সিদ্ধান্ত তুলে ধরে এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে বলা হয়, রোগীর মস্তিষ্ক ‘মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত’ হয়েছে। তাকে কনজারভেটিভ ম্যানেজমেন্টে রাখা হয়েছে। ব্রেন প্রোটেকশন প্রটোকল (স্ট্রোক বা মস্তিষ্কের আঘাতের পর মস্তিষ্ককে আরও ক্ষতি থেকে বাঁচাতে বিশেষ চিকিৎসা পদ্ধতি ও যত্ন) অনুসরণ করে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহায়তা চালু থাকবে। শারীরিক অবস্থা কিছুটা স্থিতিশীল হলে আবার ব্রেনের সিটি স্ক্যান করা হতে পারে। হাদির ফুসফুসেও আঘাত রয়েছে। চেস্ট ড্রেইন টিউব (বুকের ভেতর থেকে বাতাস, রক্ত বা অন্যান্য তরল বের করতে ব্যবহৃত নমনীয় নল) দিয়ে অল্প পরিমাণ রক্ত নির্গত হওয়ায় তা চালু রাখা হয়েছে। ফুসফুসে সংক্রমণ ও এআরডিএস (তীব্র শ্বাসকষ্ট সিন্ড্রোম ফুসফুসের একটি গুরুতর অবস্থা) প্রতিরোধে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করে ভেন্টিলেটর সাপোর্ট অব্যাহত রাখা হবে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, হাদির কিডনির কার্যক্ষমতা ফিরে এসেছে। এটি বজায় রাখতে পূর্বনির্ধারিত ফ্লুইড ব্যালেন্স (শরীরে প্রবেশ করা তরল এবং শরীর থেকে বেরিয়ে যাওয়া তরলের মধ্যকার ভারসাম্য) যথাযথভাবে চালিয়ে যাওয়া হবে। পূর্বে শরীরে রক্ত জমাট বাঁধা ও রক্তক্ষরণের মধ্যে অসামঞ্জস্যতা (ডিআইসি) দেখা দিলেও তা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এ অবস্থা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী রক্ত ও রক্তজাত উপাদান সঞ্চালন অব্যাহত থাকবে।
মেডিকেল বোর্ড জানিয়েছে, হাদির মস্তিষ্কের নিচের অংশ বা গুরুমস্তিষ্কে আঘাতের (ব্রেন স্টেম ইনজুরি) কারণে রোগীর অবস্থা অত্যন্ত সংবেদনশীল; রক্তচাপ ও হৃৎস্পন্দনের ওঠানামা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে বর্তমানে যে সাপোর্ট দেওয়া হচ্ছে, তা চলমান থাকবে। যেকোনো মুহূর্তে পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটতে পারে। তাই রোগীকে কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসে রাখা হয়েছে। হৃৎস্পন্দন বিপজ্জনকভাবে কমে গেলে তাৎক্ষণিকভাবে টেম্পোরারি পেসমেকার (হৃদপিণ্ডের স্পন্দনের ধীরগতি বা অনিয়মিত গতি ঠিক রাখতে অস্থায়ী চিকিৎসা যন্ত্র) স্থাপনের জন্য সংশ্লিষ্ট টিম সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে।
মেডিকেল বোর্ডের বৈঠকের পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, গুলিবিদ্ধ ওসমান হাদির শরীরে আপাতত নতুন কোনো অস্ত্রোপচার বা হস্তক্ষেপ করা হবে না, পর্যবেক্ষণভিত্তিক চিকিৎসাই চলবে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার, রেডিওলজি, আইসিইউ, অ্যানেস্থেশিয়া, নিউরোসার্জারি ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের চিকিৎসক ও সাপোর্টিভ স্টাফদের অসাধারণ ও মানবিক অবদানের জন্য মেডিকেল বোর্ড তাদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে।
হাসপাতালে ভিড় না করতে; কোনো ধরনের অনুমানভিত্তিক বা বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার না করে মেডিকেল বোর্ডের প্রতি আস্থা রাখতে এবং রোগীর ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও মর্যাদা রক্ষায় সবাইকে সহযোগিতা করার অনুরোধ জানিয়েছে মেডিকেল বোর্ড।
শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগরে ওসমান হাদিকে গুলি করে দুর্বৃত্তরা। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে সন্ধ্যার পর তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন।
হাদির শারীরিক অবস্থার বিষয়ে শুক্রবার রাতে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়) অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান বলেন, বাম কানের ওপর দিয়ে ঢুকে ডান দিক দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া বুলেট হাদির মস্তিষ্কের কাণ্ড বা ব্রেন স্টেম পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, যা চিকিৎসাবিজ্ঞানে ‘ম্যাসিভ ব্রেন ইনজুরি’ হিসেবে বিবেচিত।
তিনি জানান, আগামী ৭২ ঘণ্টা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং এ অবস্থায় কোনো ধরনের নতুন ইন্টারভেনশন করা হবে না। হাদি বর্তমানে ‘খুবই ক্রিটিক্যাল’ অবস্থায় রয়েছেন এবং তাকে আপাতত কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসে রাখা হয়েছে। তবে চিকিৎসকেরা এখনও আশার কোনো নিশ্চয়তা দিতে পারছেন না।

গুলিবিদ্ধ হয়ে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক। গুলিতে তাঁর মস্তিষ্ক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং তাঁর ফুসফুসেও আঘাত রয়েছে। তাঁকে কনজারভেটিভ ম্যানেজমেন্টে অর্থাৎ অস্ত্রোপচার ছাড়া নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড।
১৪ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে এভারকেয়ার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ হাদির জন্য যে মেডিকেল বোর্ড গঠন করেছে, তাতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন হাসপাতালটির আইসিইউ ও ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. মো. জাফর ইকবাল।

এভারকেয়ার হাসপাতালের পরিচালক (মেডিকেল সার্ভিসেস) ডা. আরিফ মাহমুদ আজ শনিবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক। আমরা মেডিকেল বোর্ড গঠন করে চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছি। এই মুহূর্তে মিডিয়া ব্রিফের চেয়ে তার চিকিৎসার দিকেই আমাদের মনোযোগ বেশি। তার ভাই তাকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য নেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। আমরা আমাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করব। হাদির বর্তমান অবস্থা তার পরিবারকে আমরা ব্রিফ করেছি।’
মেডিকেল বোর্ডের পর্যবেক্ষণ ও সিদ্ধান্ত তুলে ধরে এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে বলা হয়, রোগীর মস্তিষ্ক ‘মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত’ হয়েছে। তাকে কনজারভেটিভ ম্যানেজমেন্টে রাখা হয়েছে। ব্রেন প্রোটেকশন প্রটোকল (স্ট্রোক বা মস্তিষ্কের আঘাতের পর মস্তিষ্ককে আরও ক্ষতি থেকে বাঁচাতে বিশেষ চিকিৎসা পদ্ধতি ও যত্ন) অনুসরণ করে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহায়তা চালু থাকবে। শারীরিক অবস্থা কিছুটা স্থিতিশীল হলে আবার ব্রেনের সিটি স্ক্যান করা হতে পারে। হাদির ফুসফুসেও আঘাত রয়েছে। চেস্ট ড্রেইন টিউব (বুকের ভেতর থেকে বাতাস, রক্ত বা অন্যান্য তরল বের করতে ব্যবহৃত নমনীয় নল) দিয়ে অল্প পরিমাণ রক্ত নির্গত হওয়ায় তা চালু রাখা হয়েছে। ফুসফুসে সংক্রমণ ও এআরডিএস (তীব্র শ্বাসকষ্ট সিন্ড্রোম ফুসফুসের একটি গুরুতর অবস্থা) প্রতিরোধে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করে ভেন্টিলেটর সাপোর্ট অব্যাহত রাখা হবে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, হাদির কিডনির কার্যক্ষমতা ফিরে এসেছে। এটি বজায় রাখতে পূর্বনির্ধারিত ফ্লুইড ব্যালেন্স (শরীরে প্রবেশ করা তরল এবং শরীর থেকে বেরিয়ে যাওয়া তরলের মধ্যকার ভারসাম্য) যথাযথভাবে চালিয়ে যাওয়া হবে। পূর্বে শরীরে রক্ত জমাট বাঁধা ও রক্তক্ষরণের মধ্যে অসামঞ্জস্যতা (ডিআইসি) দেখা দিলেও তা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এ অবস্থা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী রক্ত ও রক্তজাত উপাদান সঞ্চালন অব্যাহত থাকবে।
মেডিকেল বোর্ড জানিয়েছে, হাদির মস্তিষ্কের নিচের অংশ বা গুরুমস্তিষ্কে আঘাতের (ব্রেন স্টেম ইনজুরি) কারণে রোগীর অবস্থা অত্যন্ত সংবেদনশীল; রক্তচাপ ও হৃৎস্পন্দনের ওঠানামা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে বর্তমানে যে সাপোর্ট দেওয়া হচ্ছে, তা চলমান থাকবে। যেকোনো মুহূর্তে পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটতে পারে। তাই রোগীকে কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসে রাখা হয়েছে। হৃৎস্পন্দন বিপজ্জনকভাবে কমে গেলে তাৎক্ষণিকভাবে টেম্পোরারি পেসমেকার (হৃদপিণ্ডের স্পন্দনের ধীরগতি বা অনিয়মিত গতি ঠিক রাখতে অস্থায়ী চিকিৎসা যন্ত্র) স্থাপনের জন্য সংশ্লিষ্ট টিম সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে।
মেডিকেল বোর্ডের বৈঠকের পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, গুলিবিদ্ধ ওসমান হাদির শরীরে আপাতত নতুন কোনো অস্ত্রোপচার বা হস্তক্ষেপ করা হবে না, পর্যবেক্ষণভিত্তিক চিকিৎসাই চলবে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার, রেডিওলজি, আইসিইউ, অ্যানেস্থেশিয়া, নিউরোসার্জারি ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের চিকিৎসক ও সাপোর্টিভ স্টাফদের অসাধারণ ও মানবিক অবদানের জন্য মেডিকেল বোর্ড তাদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে।
হাসপাতালে ভিড় না করতে; কোনো ধরনের অনুমানভিত্তিক বা বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার না করে মেডিকেল বোর্ডের প্রতি আস্থা রাখতে এবং রোগীর ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও মর্যাদা রক্ষায় সবাইকে সহযোগিতা করার অনুরোধ জানিয়েছে মেডিকেল বোর্ড।
শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগরে ওসমান হাদিকে গুলি করে দুর্বৃত্তরা। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে সন্ধ্যার পর তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন।
হাদির শারীরিক অবস্থার বিষয়ে শুক্রবার রাতে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়) অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান বলেন, বাম কানের ওপর দিয়ে ঢুকে ডান দিক দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া বুলেট হাদির মস্তিষ্কের কাণ্ড বা ব্রেন স্টেম পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, যা চিকিৎসাবিজ্ঞানে ‘ম্যাসিভ ব্রেন ইনজুরি’ হিসেবে বিবেচিত।
তিনি জানান, আগামী ৭২ ঘণ্টা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং এ অবস্থায় কোনো ধরনের নতুন ইন্টারভেনশন করা হবে না। হাদি বর্তমানে ‘খুবই ক্রিটিক্যাল’ অবস্থায় রয়েছেন এবং তাকে আপাতত কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসে রাখা হয়েছে। তবে চিকিৎসকেরা এখনও আশার কোনো নিশ্চয়তা দিতে পারছেন না।

আমাদের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো করার জন্য কি সন্তান পৃথিবীতে আনব, নাকি আগেই মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়ন ঘটিয়ে সন্তান জন্ম দেব? এটি খুব কঠিন প্রশ্ন...
০৯ আগস্ট ২০২২
ডিসেম্বর মানেই হাড়কাঁপানো শীত। আর শীত মানেই খাবারের উৎসব। খেজুরের রস, পিঠা পায়েসের কমতি হয় না এ ঋতুতে। কনকনে ঠান্ডার বিপক্ষে যুদ্ধে আমাদের প্রধান হাতিয়ার খাবার। তবে সঠিক খাবার বাছাই করা না গেলে হিতে বিপরীত হতে পারে।
১ দিন আগে
চিকিৎসাবিজ্ঞানে সব বন্ধ্যত্বের ৩০ থেকে ৪০ শতাংশের জন্য পুরুষের সমস্যা দায়ী। এ ছাড়া পুরুষের বীর্যে শুক্রাণুর সংখ্যা কমে গেলে, শুক্রাণুর গতি কম থাকলে কিংবা একেবারেই শুক্রাণু না পাওয়া গেলে এবং স্বামী-স্ত্রী নিয়মিত সহবাসের পরও যদি এক বছরের মধ্যে গর্ভধারণ না হয়, তাহলে সেটিকে বলা হয় পুরুষ বন্ধ্যত্ব।
১ দিন আগে
শীতকাল মানেই শুষ্ক, ঠান্ডা আবহাওয়া এবং তার সঙ্গে রোগজীবাণুর সহজ সংক্রমণ। এ সময় প্রধানত ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াজনিত শ্বাসতন্ত্রের রোগগুলো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে আমাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কিছুটা দুর্বল হয় এবং বদ্ধ জায়গায় মানুষ কাছাকাছি থাকায় রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে।
১ দিন আগেমো. ইকবাল হোসেন

ডিসেম্বর মানেই হাড়কাঁপানো শীত। আর শীত মানেই খাবারের উৎসব। খেজুরের রস, পিঠা পায়েসের কমতি হয় না এ ঋতুতে। কনকনে ঠান্ডার বিপক্ষে যুদ্ধে আমাদের প্রধান হাতিয়ার খাবার। তবে সঠিক খাবার বাছাই করা না গেলে হিতে বিপরীত হতে পারে।
মানুষের শরীরের গঠন অন্যান্য প্রাণীর চেয়ে কিছুটা ভিন্ন। পৃথিবীর বেশির ভাগ প্রাণীর চেয়ে মানুষের খাদ্যাভ্যাস ভিন্ন। আমাদের শরীরের প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গের জন্য আলাদা পুষ্টির প্রয়োজন হয়। যেমন চোখের যত্নে ভিটামিন এ, ত্বকের যত্নে ভিটামিন বি, হাড়ের যত্নে ভিটামিন ডি ইত্যাদি। এসব চাহিদা পূরণ করে খাবার খেলে শরীরে সুখের হরমোনের নিঃসরণ বেড়ে যায় এবং আমাদের সুখানুভূতি হয়, মন শান্ত থাকে।
মন ভালো রাখার অন্যতম হরমোন ডোপামিন। এটি নিঃসরণে খাবারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। আমাদের অন্ত্রে ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা যত বাড়বে, ডোপামিনের নিঃসরণও তত বাড়বে। তাই অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বাড়াতে গুড ফ্যাট বা ভালো চর্বিসমৃদ্ধ, গাঁজানো এবং আঁশসমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে।
সে ক্ষেত্রে চমৎকার খাবার হতে পারে শীতকালীন বিভিন্ন শাকসবজি। শিমের বিচি, মটরশুঁটি, বরবটিসহ অন্যান্য শাকসবজি ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বাড়াতে চমৎকার কাজ করে। এ ছাড়া সামুদ্রিক মাছ, মাছের তেল, অলিভ অয়েল, টক দই ইত্যাদি খাবারও পর্যাপ্ত খেতে হবে। আঁশের উৎস হিসেবে লালশাক, পালংশাক, সবুজ শাক খেতে হবে। ভাজাপোড়া, প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং ডুবোতেলে ভাজা খাবার যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে।
আমাদের মন ভালো রাখার আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ হরমোন হচ্ছে সেরোটোনিন। ৯০ শতাংশ সেরোটোনিন উৎপন্ন হয় অন্ত্রের এন্টেরোক্রমাফিন কোষের এন্টেরিক নার্ভাস সিস্টেম থেকে। এ জন্য অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখা বেশি জরুরি। অন্ত্রের পেশি নড়াচড়ায় সেরোটোনিন সাহায্য করে। মাত্র ১ শতাংশ সেরোটোনিন মস্তিষ্কে নিঃসৃত হয়। এই ১ শতাংশ সেরোটোনিন মুড, ঘুম, স্মৃতি, ক্ষুধা, মন ভালো থাকা ইত্যাদির ওপর প্রভাব বিস্তার করে। ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, আয়রন এবং আঁশসমৃদ্ধ খাবার, ভিটামিন বি-১২ এবং ভিটামিন ডি সেরোটোনিনের নিঃসরণ বাড়ায়। খাবারের পাশাপাশি রাতে ভালো ঘুম সেরোটোনিনের নিঃসরণ বাড়িয়ে দেয়। সে ক্ষেত্রে পরিমিত রেডমিট, ব্রকলি, বাঁধাকপি, শিম, গাজরসহ সব ধরনের শীতকালীন সবজি এবং শীতের মিষ্টি রোদ দারুণ কাজ করে।
এ ছাড়া অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি গুণসমৃদ্ধ খাবার, যেমন দারুচিনি, লবঙ্গ, হলুদ, ফ্ল্যাক্স সিড, চিয়া সিড খাদ্যতালিকায় যোগ করতে হবে।
শীতে শরীরে ব্যথার প্রকোপ কিছুটা হলেও বেড়ে যায়। তবে এন্ডোরফিন নামক হরমোন প্রাকৃতিকভাবে ব্যথা উপশম করে। শারীরিক বা মানসিকভাবে আহত হলে এন্ডোরফিন সক্রিয় হয়ে আমাদের ব্যথা নিরাময় করে। অতিরিক্ত ওজন, বিষণ্নতা, উচ্চ রক্তচাপ এন্ডোরফিনের নিঃসরণ কমিয়ে দেয়। তবে কিছু খাবার আছে; যেগুলো খেলে এন্ডোরফিন হরমোনের নিঃসরণ বাড়ে। ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ খাবারগুলো শরীরে ভিটামিন সি-এর চাহিদা পূরণের পাশাপাশি এন্ডোরফিন নিঃসরণে সহযোগিতা করে। তাই শীতে মন ভালো রাখতে পর্যাপ্ত পাতিলেবু, মোসাম্বি, পেয়ারা, কলা, জাম্বুরা ও কমলা খেতে হবে।
এর পাশাপাশি টমেটো, কাঁচা মরিচ, ক্যাপসিকাম ও পালংশাক শরীরের প্রয়োজনীয় ভিটামিন সি-এর জোগান দিতে পারে; সঙ্গে মেটায় আঁশ, পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়ামের ঘাটতিও।
এ ছাড়া শীতকালীন প্রায় সব শাকসবজি অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরপুর এবং ক্যানসার প্রতিরোধী গুণসমৃদ্ধ। এগুলো যদি নিয়মিত খাওয়া যায়, তাহলে শরীরে বাড়ে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা। শীতকালীন পালংশাক, গাজর, টমেটো, বিটরুট, ক্যাপসিকাম, ব্রকলি হয়ে উঠতে পারে সুস্থ থাকার অন্যতম হাতিয়ার। শীতকালীন সবজি ভালো কোলেস্টেরল বাড়িয়ে দিতে এবং খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে অত্যন্ত উপযোগী। তাই শীতকালে সুস্থতার অন্যতম চাবিকাঠি হতে পারে এসব সবজি।
আমাদের শরীরের অবহেলিত অঙ্গ ক্ষুদ্রান্ত্র। আমরা বিভিন্ন রকমের অস্বাস্থ্যকর খাবার খাই। সেসবের প্রভাব পড়ে ক্ষুদ্রান্ত্রের ওপর। এসব অস্বাস্থ্যকর খাবারের ফলে আমাদের ক্ষুদ্রান্ত্রের ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা কমতে থাকে।
ফলে গ্যাসের সমস্যা, ফ্যাটি লিভার, কোলেস্টেরল, কোষ্ঠকাঠিন্য বা কিডনি সমস্যার ঝুঁকি বাড়ে। আবার বিভিন্ন ধরনের ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবেও কমে যায় এসব ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা। তাই সুস্থ থাকতে এবং মন ভালো রাখতে শীতকাল হতে পারে আপনার জীবনের সেরা সময়।
খাবার খাওয়ার পাশাপাশি আরও কিছু বিষয় বিবেচনায় রাখতে হবে—
পুষ্টিবিদ ও জ্যেষ্ঠ পুষ্টি কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল

ডিসেম্বর মানেই হাড়কাঁপানো শীত। আর শীত মানেই খাবারের উৎসব। খেজুরের রস, পিঠা পায়েসের কমতি হয় না এ ঋতুতে। কনকনে ঠান্ডার বিপক্ষে যুদ্ধে আমাদের প্রধান হাতিয়ার খাবার। তবে সঠিক খাবার বাছাই করা না গেলে হিতে বিপরীত হতে পারে।
মানুষের শরীরের গঠন অন্যান্য প্রাণীর চেয়ে কিছুটা ভিন্ন। পৃথিবীর বেশির ভাগ প্রাণীর চেয়ে মানুষের খাদ্যাভ্যাস ভিন্ন। আমাদের শরীরের প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গের জন্য আলাদা পুষ্টির প্রয়োজন হয়। যেমন চোখের যত্নে ভিটামিন এ, ত্বকের যত্নে ভিটামিন বি, হাড়ের যত্নে ভিটামিন ডি ইত্যাদি। এসব চাহিদা পূরণ করে খাবার খেলে শরীরে সুখের হরমোনের নিঃসরণ বেড়ে যায় এবং আমাদের সুখানুভূতি হয়, মন শান্ত থাকে।
মন ভালো রাখার অন্যতম হরমোন ডোপামিন। এটি নিঃসরণে খাবারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। আমাদের অন্ত্রে ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা যত বাড়বে, ডোপামিনের নিঃসরণও তত বাড়বে। তাই অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বাড়াতে গুড ফ্যাট বা ভালো চর্বিসমৃদ্ধ, গাঁজানো এবং আঁশসমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে।
সে ক্ষেত্রে চমৎকার খাবার হতে পারে শীতকালীন বিভিন্ন শাকসবজি। শিমের বিচি, মটরশুঁটি, বরবটিসহ অন্যান্য শাকসবজি ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বাড়াতে চমৎকার কাজ করে। এ ছাড়া সামুদ্রিক মাছ, মাছের তেল, অলিভ অয়েল, টক দই ইত্যাদি খাবারও পর্যাপ্ত খেতে হবে। আঁশের উৎস হিসেবে লালশাক, পালংশাক, সবুজ শাক খেতে হবে। ভাজাপোড়া, প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং ডুবোতেলে ভাজা খাবার যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে।
আমাদের মন ভালো রাখার আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ হরমোন হচ্ছে সেরোটোনিন। ৯০ শতাংশ সেরোটোনিন উৎপন্ন হয় অন্ত্রের এন্টেরোক্রমাফিন কোষের এন্টেরিক নার্ভাস সিস্টেম থেকে। এ জন্য অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখা বেশি জরুরি। অন্ত্রের পেশি নড়াচড়ায় সেরোটোনিন সাহায্য করে। মাত্র ১ শতাংশ সেরোটোনিন মস্তিষ্কে নিঃসৃত হয়। এই ১ শতাংশ সেরোটোনিন মুড, ঘুম, স্মৃতি, ক্ষুধা, মন ভালো থাকা ইত্যাদির ওপর প্রভাব বিস্তার করে। ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, আয়রন এবং আঁশসমৃদ্ধ খাবার, ভিটামিন বি-১২ এবং ভিটামিন ডি সেরোটোনিনের নিঃসরণ বাড়ায়। খাবারের পাশাপাশি রাতে ভালো ঘুম সেরোটোনিনের নিঃসরণ বাড়িয়ে দেয়। সে ক্ষেত্রে পরিমিত রেডমিট, ব্রকলি, বাঁধাকপি, শিম, গাজরসহ সব ধরনের শীতকালীন সবজি এবং শীতের মিষ্টি রোদ দারুণ কাজ করে।
এ ছাড়া অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি গুণসমৃদ্ধ খাবার, যেমন দারুচিনি, লবঙ্গ, হলুদ, ফ্ল্যাক্স সিড, চিয়া সিড খাদ্যতালিকায় যোগ করতে হবে।
শীতে শরীরে ব্যথার প্রকোপ কিছুটা হলেও বেড়ে যায়। তবে এন্ডোরফিন নামক হরমোন প্রাকৃতিকভাবে ব্যথা উপশম করে। শারীরিক বা মানসিকভাবে আহত হলে এন্ডোরফিন সক্রিয় হয়ে আমাদের ব্যথা নিরাময় করে। অতিরিক্ত ওজন, বিষণ্নতা, উচ্চ রক্তচাপ এন্ডোরফিনের নিঃসরণ কমিয়ে দেয়। তবে কিছু খাবার আছে; যেগুলো খেলে এন্ডোরফিন হরমোনের নিঃসরণ বাড়ে। ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ খাবারগুলো শরীরে ভিটামিন সি-এর চাহিদা পূরণের পাশাপাশি এন্ডোরফিন নিঃসরণে সহযোগিতা করে। তাই শীতে মন ভালো রাখতে পর্যাপ্ত পাতিলেবু, মোসাম্বি, পেয়ারা, কলা, জাম্বুরা ও কমলা খেতে হবে।
এর পাশাপাশি টমেটো, কাঁচা মরিচ, ক্যাপসিকাম ও পালংশাক শরীরের প্রয়োজনীয় ভিটামিন সি-এর জোগান দিতে পারে; সঙ্গে মেটায় আঁশ, পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়ামের ঘাটতিও।
এ ছাড়া শীতকালীন প্রায় সব শাকসবজি অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরপুর এবং ক্যানসার প্রতিরোধী গুণসমৃদ্ধ। এগুলো যদি নিয়মিত খাওয়া যায়, তাহলে শরীরে বাড়ে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা। শীতকালীন পালংশাক, গাজর, টমেটো, বিটরুট, ক্যাপসিকাম, ব্রকলি হয়ে উঠতে পারে সুস্থ থাকার অন্যতম হাতিয়ার। শীতকালীন সবজি ভালো কোলেস্টেরল বাড়িয়ে দিতে এবং খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে অত্যন্ত উপযোগী। তাই শীতকালে সুস্থতার অন্যতম চাবিকাঠি হতে পারে এসব সবজি।
আমাদের শরীরের অবহেলিত অঙ্গ ক্ষুদ্রান্ত্র। আমরা বিভিন্ন রকমের অস্বাস্থ্যকর খাবার খাই। সেসবের প্রভাব পড়ে ক্ষুদ্রান্ত্রের ওপর। এসব অস্বাস্থ্যকর খাবারের ফলে আমাদের ক্ষুদ্রান্ত্রের ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা কমতে থাকে।
ফলে গ্যাসের সমস্যা, ফ্যাটি লিভার, কোলেস্টেরল, কোষ্ঠকাঠিন্য বা কিডনি সমস্যার ঝুঁকি বাড়ে। আবার বিভিন্ন ধরনের ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবেও কমে যায় এসব ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা। তাই সুস্থ থাকতে এবং মন ভালো রাখতে শীতকাল হতে পারে আপনার জীবনের সেরা সময়।
খাবার খাওয়ার পাশাপাশি আরও কিছু বিষয় বিবেচনায় রাখতে হবে—
পুষ্টিবিদ ও জ্যেষ্ঠ পুষ্টি কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল

আমাদের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো করার জন্য কি সন্তান পৃথিবীতে আনব, নাকি আগেই মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়ন ঘটিয়ে সন্তান জন্ম দেব? এটি খুব কঠিন প্রশ্ন...
০৯ আগস্ট ২০২২
গুলিবিদ্ধ হয়ে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক। গুলিতে তাঁর মস্তিষ্ক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং তাঁর ফুসফুসেও আঘাত রয়েছে। তাঁকে কনজারভেটিভ ম্যানেজমেন্টে অর্থাৎ অস্ত্রোপচার ছাড়া নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে...
১৫ ঘণ্টা আগে
চিকিৎসাবিজ্ঞানে সব বন্ধ্যত্বের ৩০ থেকে ৪০ শতাংশের জন্য পুরুষের সমস্যা দায়ী। এ ছাড়া পুরুষের বীর্যে শুক্রাণুর সংখ্যা কমে গেলে, শুক্রাণুর গতি কম থাকলে কিংবা একেবারেই শুক্রাণু না পাওয়া গেলে এবং স্বামী-স্ত্রী নিয়মিত সহবাসের পরও যদি এক বছরের মধ্যে গর্ভধারণ না হয়, তাহলে সেটিকে বলা হয় পুরুষ বন্ধ্যত্ব।
১ দিন আগে
শীতকাল মানেই শুষ্ক, ঠান্ডা আবহাওয়া এবং তার সঙ্গে রোগজীবাণুর সহজ সংক্রমণ। এ সময় প্রধানত ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াজনিত শ্বাসতন্ত্রের রোগগুলো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে আমাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কিছুটা দুর্বল হয় এবং বদ্ধ জায়গায় মানুষ কাছাকাছি থাকায় রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে।
১ দিন আগেডা. অবন্তি ঘোষ

চিকিৎসাবিজ্ঞানে সব বন্ধ্যত্বের ৩০ থেকে ৪০ শতাংশের জন্য পুরুষের সমস্যা দায়ী। এ ছাড়া পুরুষের বীর্যে শুক্রাণুর সংখ্যা কমে গেলে, শুক্রাণুর গতি কম থাকলে কিংবা একেবারেই শুক্রাণু না পাওয়া গেলে এবং স্বামী-স্ত্রী নিয়মিত সহবাসের পরও যদি এক বছরের মধ্যে গর্ভধারণ না হয়, তাহলে সেটিকে বলা হয় পুরুষ বন্ধ্যত্ব।
বীর্য পরীক্ষার পর শুক্রাণুর সংখ্যা, গতি, আকৃতি, পরিমাণ ইত্যাদি
দেখা হয়।
চিকিৎসা নির্ভর করে সমস্যা কেমন এবং কোন স্তরে রয়েছে, তার ওপর। সাধারণভাবে চিকিৎসা কয়েকটি ধাপে করা হয়।
শুক্রাণুর সংখ্যা ও গতি উন্নত করতে কিছু পুষ্টি উপাদান এবং ভিটামিন দেওয়া হয়, যেমন:
ওষুধ শুরুর পর রোগীকে তিন মাস পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। কারণ, নতুন শুক্রাণু তৈরিতে প্রায় ৭৫ দিন লাগে।
ওষুধে উন্নতি হলে স্বামী-স্ত্রী স্বাভাবিক পদ্ধতিতে গর্ভধারণের চেষ্টা করতে পারেন। প্রয়োজনে স্ত্রীকে ডিম্বাণু উৎপাদন বাড়ানোর ওষুধ দেওয়া হয়।
ভেরিকোসিল কিংবা শুক্রনালির ব্লকেজ থাকলে সার্জারির প্রয়োজন হতে পারে।
যাঁদের বীর্যে একেবারেই শুক্রাণু পাওয়া যায় না, যাকে অ্যাজোস্পার্মিয়া বলা হয়, তাঁদের ক্ষেত্রে অণ্ডকোষ থেকে সরাসরি শুক্রাণু সংগ্রহ করে আইসিএসআই করাই সবচেয়ে কার্যকর।
গাইনি, প্রসূতি ও বন্ধ্যাত্ব রোগ বিশেষজ্ঞ, আলোক হেলথকেয়ার, মিরপুর-১০

চিকিৎসাবিজ্ঞানে সব বন্ধ্যত্বের ৩০ থেকে ৪০ শতাংশের জন্য পুরুষের সমস্যা দায়ী। এ ছাড়া পুরুষের বীর্যে শুক্রাণুর সংখ্যা কমে গেলে, শুক্রাণুর গতি কম থাকলে কিংবা একেবারেই শুক্রাণু না পাওয়া গেলে এবং স্বামী-স্ত্রী নিয়মিত সহবাসের পরও যদি এক বছরের মধ্যে গর্ভধারণ না হয়, তাহলে সেটিকে বলা হয় পুরুষ বন্ধ্যত্ব।
বীর্য পরীক্ষার পর শুক্রাণুর সংখ্যা, গতি, আকৃতি, পরিমাণ ইত্যাদি
দেখা হয়।
চিকিৎসা নির্ভর করে সমস্যা কেমন এবং কোন স্তরে রয়েছে, তার ওপর। সাধারণভাবে চিকিৎসা কয়েকটি ধাপে করা হয়।
শুক্রাণুর সংখ্যা ও গতি উন্নত করতে কিছু পুষ্টি উপাদান এবং ভিটামিন দেওয়া হয়, যেমন:
ওষুধ শুরুর পর রোগীকে তিন মাস পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। কারণ, নতুন শুক্রাণু তৈরিতে প্রায় ৭৫ দিন লাগে।
ওষুধে উন্নতি হলে স্বামী-স্ত্রী স্বাভাবিক পদ্ধতিতে গর্ভধারণের চেষ্টা করতে পারেন। প্রয়োজনে স্ত্রীকে ডিম্বাণু উৎপাদন বাড়ানোর ওষুধ দেওয়া হয়।
ভেরিকোসিল কিংবা শুক্রনালির ব্লকেজ থাকলে সার্জারির প্রয়োজন হতে পারে।
যাঁদের বীর্যে একেবারেই শুক্রাণু পাওয়া যায় না, যাকে অ্যাজোস্পার্মিয়া বলা হয়, তাঁদের ক্ষেত্রে অণ্ডকোষ থেকে সরাসরি শুক্রাণু সংগ্রহ করে আইসিএসআই করাই সবচেয়ে কার্যকর।
গাইনি, প্রসূতি ও বন্ধ্যাত্ব রোগ বিশেষজ্ঞ, আলোক হেলথকেয়ার, মিরপুর-১০

আমাদের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো করার জন্য কি সন্তান পৃথিবীতে আনব, নাকি আগেই মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়ন ঘটিয়ে সন্তান জন্ম দেব? এটি খুব কঠিন প্রশ্ন...
০৯ আগস্ট ২০২২
গুলিবিদ্ধ হয়ে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক। গুলিতে তাঁর মস্তিষ্ক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং তাঁর ফুসফুসেও আঘাত রয়েছে। তাঁকে কনজারভেটিভ ম্যানেজমেন্টে অর্থাৎ অস্ত্রোপচার ছাড়া নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে...
১৫ ঘণ্টা আগে
ডিসেম্বর মানেই হাড়কাঁপানো শীত। আর শীত মানেই খাবারের উৎসব। খেজুরের রস, পিঠা পায়েসের কমতি হয় না এ ঋতুতে। কনকনে ঠান্ডার বিপক্ষে যুদ্ধে আমাদের প্রধান হাতিয়ার খাবার। তবে সঠিক খাবার বাছাই করা না গেলে হিতে বিপরীত হতে পারে।
১ দিন আগে
শীতকাল মানেই শুষ্ক, ঠান্ডা আবহাওয়া এবং তার সঙ্গে রোগজীবাণুর সহজ সংক্রমণ। এ সময় প্রধানত ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াজনিত শ্বাসতন্ত্রের রোগগুলো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে আমাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কিছুটা দুর্বল হয় এবং বদ্ধ জায়গায় মানুষ কাছাকাছি থাকায় রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে।
১ দিন আগেডা. কাকলী হালদার

শীতকাল মানেই শুষ্ক, ঠান্ডা আবহাওয়া এবং তার সঙ্গে রোগজীবাণুর সহজ সংক্রমণ। এ সময় প্রধানত ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াজনিত শ্বাসতন্ত্রের রোগগুলো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে আমাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কিছুটা দুর্বল হয় এবং বদ্ধ জায়গায় মানুষ কাছাকাছি থাকায় রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে।
সাধারণ সর্দি-কাশি: রাইনোভাইরাস দিয়ে সংক্রমণ হলে হাঁচি, নাক দিয়ে পানি পড়া এবং হালকা গলাব্যথা পর্যন্ত হতে পারে।
ইনফ্লুয়েঞ্জা: ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের সংক্রমণ হলে সাধারণ সর্দির চেয়ে গুরুতর সমস্যা দেখা যায়। এর লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে উচ্চ জ্বর, শরীর ও পেশিতে প্রচণ্ড ব্যথা, ক্লান্তি এবং গাঢ় কাশি।
রেসপিরেটরি সিনসিশিয়াল ভাইরাস বা আরএসভি: এটি শিশুদের মধ্যে ব্রঙ্কিওলাইটিসের মতো গুরুতর শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ ঘটায়।
এ ধরনের রোগ নিউমোনিয়া অথবা স্ট্রেপটোকক্কাসজনিত গলাব্যথার মতো কিছু ক্ষেত্রে গুরুতর ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের দিকে মোড় নিতে পারে, যা অ্যান্টিবায়োটিকের মাধ্যমে চিকিৎসার প্রয়োজন হয়।
সংক্রমণ এড়াতে এবং রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে কিছু সহজ পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে। যেমন—
ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা: নিয়মিত সাবান ও পানি দিয়ে খাওয়ার আগে, টয়লেট ব্যবহারের পরে, হাঁচি-কাশি দেওয়ার পরে, অপরিচ্ছন্ন কিছু স্পর্শ করার পর হাত ধোয়া জরুরি। হাঁচি-কাশির সময় রুমাল বা টিস্যু ব্যবহার করা এবং ব্যবহৃত টিস্যু নির্দিষ্ট স্থানে ফেলা উচিত।
পুষ্টিকর খাবার খাওয়া এবং পানি পান করা: পর্যাপ্ত ভিটামিন ‘সি’সমৃদ্ধ ফল; যেমন লেবু, কমলা, আমলকী ইত্যাদি এবং শাকসবজি খেয়ে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে হবে। পানিশূন্যতা এড়াতে হালকা গরম পানি পান করুন।
উষ্ণতা বজায় রাখা: কান, মাথা ও গলা ঢেকে গরম জামাকাপড় পরুন। ঘর উষ্ণ রাখুন এবং সরাসরি ঠান্ডা বাতাস এড়িয়ে চলুন।
ভিড় এড়িয়ে চলা: অসুস্থতা চলাকালে যেকোনো ভিড় অথবা জনসমাগমপূর্ণ স্থানে যাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
টিকা নেওয়া: শিশু, বয়স্ক বা দীর্ঘমেয়াদি রোগীদের মতো ঝুঁকিপূর্ণ মানুষ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ইনফ্লুয়েঞ্জা এবং নিউমোনিয়ার টিকা নিতে পারেন।
সহকারী অধ্যাপক, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ।

শীতকাল মানেই শুষ্ক, ঠান্ডা আবহাওয়া এবং তার সঙ্গে রোগজীবাণুর সহজ সংক্রমণ। এ সময় প্রধানত ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াজনিত শ্বাসতন্ত্রের রোগগুলো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে আমাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কিছুটা দুর্বল হয় এবং বদ্ধ জায়গায় মানুষ কাছাকাছি থাকায় রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে।
সাধারণ সর্দি-কাশি: রাইনোভাইরাস দিয়ে সংক্রমণ হলে হাঁচি, নাক দিয়ে পানি পড়া এবং হালকা গলাব্যথা পর্যন্ত হতে পারে।
ইনফ্লুয়েঞ্জা: ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের সংক্রমণ হলে সাধারণ সর্দির চেয়ে গুরুতর সমস্যা দেখা যায়। এর লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে উচ্চ জ্বর, শরীর ও পেশিতে প্রচণ্ড ব্যথা, ক্লান্তি এবং গাঢ় কাশি।
রেসপিরেটরি সিনসিশিয়াল ভাইরাস বা আরএসভি: এটি শিশুদের মধ্যে ব্রঙ্কিওলাইটিসের মতো গুরুতর শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ ঘটায়।
এ ধরনের রোগ নিউমোনিয়া অথবা স্ট্রেপটোকক্কাসজনিত গলাব্যথার মতো কিছু ক্ষেত্রে গুরুতর ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের দিকে মোড় নিতে পারে, যা অ্যান্টিবায়োটিকের মাধ্যমে চিকিৎসার প্রয়োজন হয়।
সংক্রমণ এড়াতে এবং রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে কিছু সহজ পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে। যেমন—
ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা: নিয়মিত সাবান ও পানি দিয়ে খাওয়ার আগে, টয়লেট ব্যবহারের পরে, হাঁচি-কাশি দেওয়ার পরে, অপরিচ্ছন্ন কিছু স্পর্শ করার পর হাত ধোয়া জরুরি। হাঁচি-কাশির সময় রুমাল বা টিস্যু ব্যবহার করা এবং ব্যবহৃত টিস্যু নির্দিষ্ট স্থানে ফেলা উচিত।
পুষ্টিকর খাবার খাওয়া এবং পানি পান করা: পর্যাপ্ত ভিটামিন ‘সি’সমৃদ্ধ ফল; যেমন লেবু, কমলা, আমলকী ইত্যাদি এবং শাকসবজি খেয়ে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে হবে। পানিশূন্যতা এড়াতে হালকা গরম পানি পান করুন।
উষ্ণতা বজায় রাখা: কান, মাথা ও গলা ঢেকে গরম জামাকাপড় পরুন। ঘর উষ্ণ রাখুন এবং সরাসরি ঠান্ডা বাতাস এড়িয়ে চলুন।
ভিড় এড়িয়ে চলা: অসুস্থতা চলাকালে যেকোনো ভিড় অথবা জনসমাগমপূর্ণ স্থানে যাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
টিকা নেওয়া: শিশু, বয়স্ক বা দীর্ঘমেয়াদি রোগীদের মতো ঝুঁকিপূর্ণ মানুষ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ইনফ্লুয়েঞ্জা এবং নিউমোনিয়ার টিকা নিতে পারেন।
সহকারী অধ্যাপক, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ।

আমাদের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো করার জন্য কি সন্তান পৃথিবীতে আনব, নাকি আগেই মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়ন ঘটিয়ে সন্তান জন্ম দেব? এটি খুব কঠিন প্রশ্ন...
০৯ আগস্ট ২০২২
গুলিবিদ্ধ হয়ে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক। গুলিতে তাঁর মস্তিষ্ক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং তাঁর ফুসফুসেও আঘাত রয়েছে। তাঁকে কনজারভেটিভ ম্যানেজমেন্টে অর্থাৎ অস্ত্রোপচার ছাড়া নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে...
১৫ ঘণ্টা আগে
ডিসেম্বর মানেই হাড়কাঁপানো শীত। আর শীত মানেই খাবারের উৎসব। খেজুরের রস, পিঠা পায়েসের কমতি হয় না এ ঋতুতে। কনকনে ঠান্ডার বিপক্ষে যুদ্ধে আমাদের প্রধান হাতিয়ার খাবার। তবে সঠিক খাবার বাছাই করা না গেলে হিতে বিপরীত হতে পারে।
১ দিন আগে
চিকিৎসাবিজ্ঞানে সব বন্ধ্যত্বের ৩০ থেকে ৪০ শতাংশের জন্য পুরুষের সমস্যা দায়ী। এ ছাড়া পুরুষের বীর্যে শুক্রাণুর সংখ্যা কমে গেলে, শুক্রাণুর গতি কম থাকলে কিংবা একেবারেই শুক্রাণু না পাওয়া গেলে এবং স্বামী-স্ত্রী নিয়মিত সহবাসের পরও যদি এক বছরের মধ্যে গর্ভধারণ না হয়, তাহলে সেটিকে বলা হয় পুরুষ বন্ধ্যত্ব।
১ দিন আগে