Ajker Patrika

ফ্যাক্টচেক /অন্ধকারে রাস্তায় পড়ে জখম তরুণী, ভাইরাল ভিডিওটির ঘটনাস্থল বাংলাদেশ নয়

ফ্যাক্টচেক ডেস্ক  
আপডেট : ২৮ জানুয়ারি ২০২৫, ২০: ৫৪
কক্সবাজারের টেকনাফ সমুদ্র সৈকতে এক তরুণীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করার দাবিতে ছড়িয়ে পড়া পোস্ট। ছবি: স্ক্রিনশট
কক্সবাজারের টেকনাফ সমুদ্র সৈকতে এক তরুণীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করার দাবিতে ছড়িয়ে পড়া পোস্ট। ছবি: স্ক্রিনশট

কক্সবাজারের টেকনাফ সমুদ্র সৈকতে এক তরুণীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়েছে— এমন দাবিতে একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওটির ক্যাপশনে দাবি করা হচ্ছে, ভিডিওতে থাকা তরুণী পর্যটক ছিলেন। তাঁর গাড়ি থামিয়ে ছিনতাই ও পরে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়। এরপর মুখে ছুরি দিয়ে আঘাত করে রাস্তায় ফেলে চলে যায় দুর্বৃত্তরা।

‘মহেশখালী নতুন বার্তা’ নামের ফেসবুক পেজ থেকে গত শনিবার (২৫ জানুয়ারি) রাত ১১টার দিকে এই দাবিতে পোস্টটি করা হয়। পোস্টে ছবির ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, ‘টেকনাফ সমুদ্র সৈকতে এক তরুণী কে গন ধর্ষন একটি ফেইসবুক পোস্ট জানা যায় উনি টুরিস্ট ছিলেন, গাড়ি থামিয়ে ছিনতাই করে পরে গণধর্ষন এর পর ওর মুখে চুরি আঘাট করা হয়। এর পর রাস্তায় এভাবে ফেলে চলে যায়। আমরা কোন দেশে বসবাস করছি, এসব দেখতে দেখতে আমরা কি অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি। ঐ সব জারজ সন্তানদের কি মা-বোন নেই। আমাদের সমাজ ব্যবস্থা কি আদো ঠিক হবে না...! আল্লাহ আমাদের সকল মা-বোনদের হেফাজত করুন। আমিন।’ (বানান অপরিবর্তিত)

একই ভিডিও দেশের অন্য একাধিক জেলার ঘটনা দাবিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। এর মধ্যে আছে— মুন্সিগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জফরিদপুর জেলা।

এ ছাড়া স্থানের নাম উল্লেখ না করেও একাধিক ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ও পেজ থেকে ভিডিওটি পোস্ট করা হয়েছে। বেশিরভাগ পোস্টের ক্যাপশনে লেখা, ‘আইয়্যেমে জাহেলিয়া যুগকে হার মানিয়েছে, দিনের শুরুটাই হয় এখন লা*শ দিয়ে আর শেষটা হয় ধ*র্ষ*ণ দিয়ে।’ (বানান অপরিবর্তিত)

একই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়া এক্স– এও ছড়িয়েছে।

এসব পোস্টের মধ্যে মেহেদী হাসান নামে (Mehedi Hasan) নামে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে গত শনিবার রাত ৯টার দিকে পোস্ট করা ভিডিওটি বেশি ছড়িয়ে পড়েছে। এই অ্যাকাউন্টটির অ্যাবাউট সেকশনে নিষিদ্ধ সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সদস্য বলে পরিচয় দেওয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার রাত ৮টা পর্যন্ত ওই ভিডিওটি প্রায় ১ লাখ ৯০ হাজারবার দেখা হয়েছে এবং পোস্টটি শেয়ার হয়েছে ৪৭৮। এতে কমেন্ট পড়েছে ২৪১টি। এসব কমেন্টে অনেকে ভিডিওটি ভারতের উল্লেখ করেছেন। আবার অনেকে বাংলাদেশের ভেবে মন্তব্য করেছেন। মো. ইয়ামিন ইয়ামিন ভূঁইয়া (Md Eamin Eamin Bhuyen) নামে একটি অ্যাকাউন্ট থেকে লেখা হয়েছে, ‘এই গুলো কিছু না আমাদের এই দেশ সব কিছু সম্ভব।’ (বানান অপরিবর্তিত)

ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ইট বিছানো রাস্তার মাঝখানে একজন তরুণী রক্তাক্ত অবস্থায় দুই পা ভাঁজ করে বসে আছেন। চারপাশ অন্ধকার, শুধু তরুণীর গায়ের ওপর আলো পড়েছে।

ভিডিওটিতে অনেক মানুষকে কথা বলতে শোনা যায়। তাঁরা বাংলায় কথা বলছেন। তরুণীটি কথা বলার চেষ্টা করছেন, কিন্তু খুবই অস্পষ্ট। একজন তরুণীকে জিজ্ঞেস করেন, ‘তোমার বাড়ি কোথায়?’ তরুণীটির কথা এতোটাই জড়িয়ে যাচ্ছে যে জবাবটি বোঝা যায়নি। তবে পাশ থেকে আরেকজনকে বলতে শোনা যায়, ‘মুন্সিপাড়া?’

এদিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ভিডিও দেখে রক্তাক্ত তরুণীকে নিজের মেয়ে দাবি করেছেন ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার কাউলিবেড়া ইউনিয়নের পশ্চিম কাউলিবেড়া গ্রামের মাছ ব্যবসায়ী তারা মিয়া। গত মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) কাউকে না বলে মেয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় বলে জানান তিনি। এর থেকে তারা মিয়ার কিশোরী মেয়ে নিখোঁজ। গত বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) তিনি ভাঙ্গা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। এ বিষয়ে আজকের পত্রিকায় আজকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

ভিডিওটির কিছু কি–ফ্রেম নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করা হলে শাহ পরান (shahaporan) নামে একটি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে পোস্ট করা একই ভিডিও পাওয়া যায়। পোস্টটি গত ২৪ জানুয়ারি পোস্ট করা হয়। ভাইরাল ভিডিও সংক্রান্ত সম্ভাব্য প্রথম পোস্ট এটি।

রাস্তায় রক্তাক্ত অবস্থায় আহত আহত নারীর ভিডিওর সঙ্গে শাহ পরান (shahaporan) নামে ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টের ভিডিওর সাদৃশ্য। ছবি: স্ক্রিনশট
রাস্তায় রক্তাক্ত অবস্থায় আহত আহত নারীর ভিডিওর সঙ্গে শাহ পরান (shahaporan) নামে ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টের ভিডিওর সাদৃশ্য। ছবি: স্ক্রিনশট

ক্যাপশনে ইংরেজিতে লেখা, সড়ক দুর্ঘটনার কারণে এই নারীর এমন অবস্থা হয়েছে।

শাহ পরান (shahaporan) নামে ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টটির অ্যাবাউট সেকশনের তথ্য অনুযায়ী, এটি ভারত থেকে পরিচালিত হয়।

ওপরে উল্লেখিত কোনো পোস্টেই তথ্যের সূত্র উল্লেখ করা হয়নি। এমনকি ওই তরুণীর পরিচয়ও উল্লেখ করা হয়নি।

এসব তথ্যসূত্রে গুগলে সার্চ করে ‘Vision 18 বাংলা’ নামে একটি ফেসবুক পেজে গত ২৪ জানুয়ারি পোস্ট করা একটি ভিডিও প্রতিবেদন পাওয়া যায়। প্রতিবেদনে দেখানো হয়, মাঠের মাঝ দিয়ে যাওয়ার ইট বিছানো একটি রাস্তার পাশে ক্রাইম সিন ঘিরে রাখছে পুলিশ। সেখান থেকে পুলিশকে আলামত সংগ্রহ করতেও দেখা যায়। অদূরে উৎসুক জনতা। ভিডিও প্রতিবেদনটির ৩ মিনিট থেকে শুরু করে ৩ মিনিট ৫০ সেকেন্ড পর্যন্ত একটি ফুটেজ জুড়ে দেওয়া হয়েছে যেখানে দেখা যাচ্ছে, অন্ধকারে ইট বিছানো রাস্তার ওপর এক নারী রক্তাক্ত অবস্থায় কাত হয়ে শুয়ে আছেন। সামান্য নড়ানড়া করছেন। মুখের অংশটি ব্লার করা। নারীর পোশাকের সঙ্গে ভাইরাল ভিডিওটির তরুণীর পোশাকের মিল রয়েছে।

রাস্তায় রক্তাক্ত অবস্থায় আহত আহত নারীর ভিডিওর সঙ্গে ‘Vision 18 বাংলা’ নামে ফেসবুক পেজের ভিডিওর সাদৃশ্য। ছবি: স্ক্রিনশট
রাস্তায় রক্তাক্ত অবস্থায় আহত আহত নারীর ভিডিওর সঙ্গে ‘Vision 18 বাংলা’ নামে ফেসবুক পেজের ভিডিওর সাদৃশ্য। ছবি: স্ক্রিনশট

ক্যাপশন থেকে জানা যায়, ঘটনাস্থল ভারতের পশিমবঙ্গ রাজ্যের দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগর বিধানসভা আসনের বকুলতলা পুলিশ স্টেশনের আওতাধীন নিমপিঠ। গত মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) দিবাগত গভীর রাতে মায়াহউরি পঞ্চায়েতের আনন্দপুর রথতলা এলাকায় ইটের রাস্তায় একজন টোটো চালক (অটোরিকশা চালক) এই নারীকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় লোকজনকে ডাকেন। এরপর পুলিশকে খবর দিলে তারা নারীকে নিমপীঠ গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক নারীকে মৃত ঘোষণা করেন।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে জানানো হয়েছে, নারীর শরীরে অস্ত্রের কোপ ছিল। বিশেষ করে মুখের এক দিক থেঁতলানো। বেশ কয়েকটি দাঁত ভাঙা। জখম থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণেই নারীর মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। পুলিশ তাঁর পরিচয় জানার চেষ্টা করছে।

এসব তথ্যসূত্রে সার্চ করে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম জি২৪ঘণ্টায় ২২ জানুয়ারি প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়।

প্রতিবেদনটিতে ‘Vision 18 বাংলা’ নামে ফেসবুক পেজের ওই ভিডিও প্রতিবেদন ও ক্যাপশনে উল্লেখিত একই তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া একই তথ্যে নিউজ ১৮, ইটিভি ভারত, সংবাদ প্রতিদিনসহ একাধিক সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। কোনো প্রতিবেদনেই ওই নারীর পরিচয় উল্লেখ নেই।

সুতরাং, টেকনাফ সমুদ্র সৈকতে তরুণীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের দাবিতে বাংলাদেশে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি প্রকৃতপক্ষে, ভারতের পশিমবঙ্গ রাজ্যের জয়নগরের বকুলতলা থানা এলাকার।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা [email protected]
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আজকের পত্রিকার নামে ছড়িয়ে পড়া এই ফটোকার্ডটি ভুয়া

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ০৯: ২১
আজকের পত্রিকার নামে ছড়িয়ে পড়া এই ফটোকার্ডটি ভুয়া

সম্প্রতি আজকের পত্রিকার নাম ও ফটোকার্ড ব্যবহার করে ‘হরেকৃষ্ণ হরিবোল, দাঁড়িপাল্লা টেনে তোলঃ পরওয়ার’ শিরোনামে একটি ভুয়া ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। এটি একটি সম্পূর্ণ ভুয়া ফটোকার্ড।

আজকের পত্রিকা কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করছে, এই ধরনের কোনো খবর আজকের পত্রিকাতে কখনোই প্রকাশিত হয়নি। ফটোকার্ডটিতে আজকের পত্রিকার লোগো ব্যবহার করা হলেও এর ভেতরের খবর ও শিরোনাম সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।

আজকের পত্রিকা সর্বদা সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

বর্তমান সময়ে এ ধরনের ভুয়া ফটোকার্ড ও খবর নিয়ে পাঠকদের সচেতনতা জরুরি। যেকোনো সন্দেহজনক খবর যাচাই করার জন্য অনুরোধ রইল।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা [email protected]
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মধ্যরাতে মাঝরাস্তায় বাঘকে মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করছে মাতাল—ভাইরাল ভিডিওটি ফেক

ফ্যাক্টচেক  ডেস্ক
আপডেট : ১১ নভেম্বর ২০২৫, ১৬: ৫৪
মধ্যরাতে মাঝরাস্তায় বাঘকে মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করছে মাতাল—ভাইরাল ভিডিওটি ফেক

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাতে রাস্তার মাঝখানে এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি এক হাতে একটি স্বচ্ছ বোতল, অপর হাতে বাঘের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি বাঘটির মুখে বোতল গুঁজে দিতেও দেখা যায় তাঁকে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে এই ভিডিও শেয়ার করে দাবি করছেন, একটি সিসিটিভি ফুটেজ। ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, ঘটনাটি ভারতের মধ্যপ্রদেশের পেঞ্চ এলাকার। ওই ব্যক্তি দেশীয় মদ পান করে মাতাল হয়ে রাস্তায় বেরিয়েছিলেন। তিনি এতটা মাতাল ছিলেন যে বাঘকেও মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করেন। বাঘ অবশ্য তাঁর হাতে মদ্যপানে রাজি হয়নি! পরে ওই বাঘটিকে উদ্ধার করে বন বিভাগ। বাঘটি ওই ব্যক্তির কোনো ক্ষতি করেনি।

বাঘকে বোতল থেকে মদ খাওয়ার দাবি করা ভিডিওর ক্যাপশন, যেখান থেকেই গুজব ছড়িয়ে পড়ে। ছবি: সংগৃহীত
বাঘকে বোতল থেকে মদ খাওয়ার দাবি করা ভিডিওর ক্যাপশন, যেখান থেকেই গুজব ছড়িয়ে পড়ে। ছবি: সংগৃহীত

ভিডিওটি দেখে অনেকেই বিস্মিত ও উদ্বিগ্ন—কেউ বিশ্বাস করেছেন, এটি বাস্তব কোনো ঘটনা; কেউ আবার মনে করছেন, এটি নিছকই কৃত্রিম ভিডিও। কিন্তু সত্যিটা কী? দ্য কুইন্টের সাংবাদিক অভিষেক আনন্দ ও ফ্যাক্টচেকিং সংস্থা বুম বিষয়টি অনুসন্ধান করে প্রকৃত ঘটনা প্রকাশ করেছে।

বুম ভিডিওটি নিয়ে বিভিন্ন কিওয়ার্ড দিয়ে এ-সম্পর্কিত প্রতিবেদন অনুসন্ধান করেছে, কিন্তু কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে এমন ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। এরপর তারা সরাসরি মধ্যপ্রদেশের সেওনি জেলার পুলিশ কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করে। দ্য কুইন্ট ও বুমকে সেওনি জেলার পুলিশ সুপারের দপ্তর থেকে স্পষ্ট জানানো হয়—তাদের জানামতে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।

পেঞ্চ টাইগার রিজার্ভের উপপরিচালক রাজনীশ সিংহের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি যাচাই করা হয়। তিনি বলেন, ভিডিওটির সঙ্গে পেঞ্চ এলাকার কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি আরও ব্যাখ্যা দেন, বনের বাঘের সঙ্গে এমন ঘনিষ্ঠভাবে মানুষের যোগাযোগ সম্ভব নয়, যদি না বাঘটিকে বন্দী করে দীর্ঘদিন ধরে পোষ মানানো হয়। তাঁর ভাষায়, ‘বনের বাঘ কখনো এমন আচরণ করে না, এটা বাস্তবে সম্ভব নয়।’

ভিডিওর সন্দেহজনক দিক বা ভিজ্যুয়াল অসংগতি

বুম ভিডিওটির একটি উচ্চমানের সংস্করণ সংগ্রহ করে তাতে কিছু অস্বাভাবিক দিক লক্ষ করে। দেখা যায়, ভিডিওটির পটভূমির দৃশ্যে কিছু অস্পষ্ট বস্তু নড়াচড়া করছে, যা বাস্তব ভিডিওর মতো স্বাভাবিক নয়।

বাঘের মাথায় হাত রাখা ব্যক্তির আঙুলগুলো বিকৃতভাবে বাঁকানো, যেন সফটওয়্যারে তৈরি কৃত্রিম ছায়া। এমনকি হাতে থাকা বোতলের মুখ কখনো দেখা যায়, আবার মিলিয়ে যায়—এই ভিজ্যুয়াল অসংগতিগুলো ইঙ্গিত দেয়, এটি ধারণকৃত কোনো ফুটেজ নয়। সব মিলিয়ে ভিডিওটির একাধিক ফ্রেমে গ্রাফিক বিকৃতি স্পষ্ট।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর বিশ্লেষণ

এরপর ভিডিওটি পরীক্ষা করা হয় ডিপফেক-ও-মিটার নামের একটি উন্নত টুলে। এটি তৈরি করেছে ইউনিভার্সিটি অব বাফেলোর মিডিয়া ফরেনসিকস ল্যাব। এই টুল ভিডিওটির বিভিন্ন অংশ বিশ্লেষণ করে দেখায়, এতে ‘উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক নির্মাণের চিহ্ন’ রয়েছে।

এআই টুল দিয়ে ভিডিওটির কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি হওয়ার প্রমাণ পরীক্ষার ফলাফল। ছবি: সংগৃহীত
এআই টুল দিয়ে ভিডিওটির কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি হওয়ার প্রমাণ পরীক্ষার ফলাফল। ছবি: সংগৃহীত

এরপর বুম তাদের অংশীদার ডিপফেক অ্যানালাইসিস ইউনিটের সাহায্য নেয়। তারা ভিডিওটি পরীক্ষা করে ‘Is It AI’ এবং ‘AI Or Not’—নামক দুটি আলাদা টুলে। উভয় টুলের বিশ্লেষণে দেখা যায়, ভিডিওটি এআই দিয়ে নির্মিত হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৬৯ শতাংশ।

এই ফলাফল অনুযায়ী বিশেষজ্ঞরা বলেন, ভিডিওর মানুষের সঙ্গে প্রাণীর মিথস্ক্রিয়া এবং আলো-ছায়ার ত্রুটি স্পষ্ট করে দিচ্ছে এটি আসল নয়, বরং জেনারেটিভ এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে বানানো একটি দৃশ্য।

ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর বহু ব্যবহারকারী এটিকে সত্যি বলে বিশ্বাস করেছেন। কিছু পোস্টে দাবি করা হয়েছে, ভিডিওর ওই ব্যক্তির নাম রাজু পাতিল। ৫২ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি একজন দিনমজুর। তিনি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় রাস্তায় বাঘটিকে আদর করছিলেন এবং আশ্চর্যজনকভাবে অক্ষত অবস্থায় রয়ে গেছেন।

একাধিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শনাক্তকরণ টুলের ফলাফল এবং প্রশাসনিক যাচাই মিলিয়ে নিশ্চিতভাবে বলা যায়—ভিডিওটি বাস্তব নয়, বরং এআই প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি একটি কৃত্রিম দৃশ্য। পেঞ্চ টাইগার রিজার্ভের উপপরিচালক রাজনীশ সিংহও সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘এই ভিডিওর কোনো অংশই পেঞ্চের নয়। এটি সম্পূর্ণ ভুয়া।’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা [email protected]
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পাকিস্তানি জেনারেলকে ‘ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলযুক্ত বাংলাদেশের পতাকা উপহারে’র দাবি নিয়ে যা বলল সিএ ফ্যাক্ট চেক

ফ্যাক্টচেক  ডেস্ক
আপডেট : ১১ নভেম্বর ২০২৫, ১৭: ০৩
ছবি : সিএ ফ্যাক্ট চেকিং
ছবি : সিএ ফ্যাক্ট চেকিং

বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যানকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল যুক্ত বাংলাদেশের মানচিত্রসংবলিত পতাকা উপহার দিয়েছেন বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের দাবি সম্পূর্ণ অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত বলে জানিয়েছে সিএ (প্রধান উপদেষ্টা) ফ্যাক্ট চেক।

ভারতের সংবাদমাধ্যমটি গতকাল এক প্রতিবেদনে দাবি করে, পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যান জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জাকে এমন একটি পতাকা উপহার দিয়েছেন অধ্যাপক ইউনূস, যেখানে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল বাংলাদেশের মানচিত্রের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।

সিএ ফ্যাক্ট চেক জানায়, প্রকৃতপক্ষে অধ্যাপক ইউনূস উপহার দিয়েছেন ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ নামে একটি চিত্রসংকলন—যেখানে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীদের আঁকা রঙিন গ্রাফিতি ও দেয়ালচিত্র সংকলিত হয়েছে।

‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন প্রকাশিত একটি সচিত্র দলিল, যেখানে ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগে অর্জিত বিপ্লবের ইতিহাস ফুটে উঠেছে।

গ্রাফিতি সংকলনের প্রচ্ছদে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ আবু সাইদের পিছনে রক্তরাঙ্গা বাংলাদেশের মানচিত্র প্রদর্শিত হয়েছে।

প্রচ্ছদে দৃশ্যমান মানচিত্রটি গ্রাফিতি হিসেবে অঙ্কিত হওয়ায় বাংলাদেশের মূল মানচিত্রের পরিমাপের কিছুটা হেরফের হয়েছে বলে কারো কাছে মনে হতে পারে। কিন্তু ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের কোনো অংশ গ্রাফিতি মানচিত্রটিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে বলে দাবি করাটা সম্পূর্ণ অসত্য এবং কল্পনাপ্রসূত। বাংলাদেশের মানচিত্রের সাথে উল্লেখিত গ্রাফিতিতে দৃশ্যমান মানচিত্রের তুলনামূলক বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, অঙ্কিত মানচিত্রটিতে বাংলাদেশের প্রকৃত মানচিত্র প্রায় হুবহুভাবেই প্রতিফলিত হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা এর আগেও একই গ্রাফিতি সংকলন ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ জাতিসংঘের মহাসচিব, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোসহ বিশ্ব নেতাদের উপহার দিয়েছেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা [email protected]
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অরকার আক্রমণে তরুণী প্রশিক্ষকের মৃত্যু, ভাইরাল ভিডিওটি সম্পর্কে যা জানা গেল

ফ্যাক্টচেক  ডেস্ক
আপডেট : ১১ নভেম্বর ২০২৫, ১৬: ৫৮
ভাইরাল ভিডিওটির দৃশ্য। ছবি: স্ক্রিনশট
ভাইরাল ভিডিওটির দৃশ্য। ছবি: স্ক্রিনশট

একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। মর্মান্তিক ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দাবি করা হয়, প্যাসিফিক ব্লু মেরিন পার্কে ‘জেসিকা র‍্যাডক্লিফ’ নামে একজন প্রশিক্ষককে একটি অরকা আক্রমণ করে হত্যা করেছে।

ভিডিওটি টিকটক, ফেসবুক এবং এক্সে ভাইরাল হয়েছে। তবে, একাধিক ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা নিশ্চিত করেছে যে, এই ভিডিওটি সম্পূর্ণ বানোয়াট এবং এর কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই।

ভিডিওতে যা দেখানো হয়েছে

ভাইরাল হওয়া ক্লিপটিতে দেখা যায়, একজন তরুণী একটি অরকার পিঠে দাঁড়িয়ে নাচছেন। দর্শকেরা তখন উল্লাস করছিল। কিন্তু কিছুক্ষণ পর হঠাৎ অরকাটি ওই তরুণীকে আক্রমণ করে পানির নিচে টেনে নিয়ে যায়। ভিডিওটি শেয়ার করা অনেক ব্যবহারকারী দাবি করেছেন, পানির নিচে নিয়ে যাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ওই তরুণীর মৃত্যু হয়।

ঘটনা বা প্রশিক্ষকের কোনো প্রমাণ নেই

ভিডিওটি ব্যাপকভাবে শেয়ার হওয়া সত্ত্বেও, জেসিকা র‍্যাডক্লিফ নামে একজন প্রশিক্ষক অরকার আক্রমণে মারা গেছেন—এই দাবির পক্ষে কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কর্তৃপক্ষ, মেরিন পার্ক এবং প্রতিষ্ঠিত সংবাদমাধ্যমগুলো জেসিকা র‍্যাডক্লিফের অস্তিত্ব বা এমন কোনো ঘটনার রেকর্ড খুঁজে পায়নি। দ্য স্টার পত্রিকার মতে, ভিডিওটি কাল্পনিক; এমনকি ভিডিওতে থাকা কণ্ঠস্বরগুলোও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি বলে মনে করা হচ্ছে।

অন্যান্য প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, এমন দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে সাধারণত যে ধরনের আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়, এই ঘটনায় তার কোনোটিই পাওয়া যায়নি। ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুসারে, ভিডিওর মধ্যে পানির অস্বাভাবিক গতিবিধি এবং অদ্ভুত বিরতিও নিশ্চিত করে যে এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। এমনকি ভিডিওতে যে পার্কের নাম বলা হয়েছে, সেটিও ভুয়া।

এক্স-এ ছড়িয়ে পড়া ভিডিও। ছবি: স্ক্রিনশট
এক্স-এ ছড়িয়ে পড়া ভিডিও। ছবি: স্ক্রিনশট

সম্পূর্ণভাবে এআই-নির্মিত

ফোর্বস ম্যাগাজিন ক্লিপটিকে ‘একটি প্রতারণা’ বলে চিহ্নিত করেছে। তারা উল্লেখ করেছে, এমন একটি মর্মান্তিক ঘটনা যদি সত্যিই ঘটতো, তাহলে তা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে শিরোনাম হতো। ভিডিওর দৃশ্য এবং শব্দ সম্ভবত চাঞ্চল্যকর প্রভাব তৈরির জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা টুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। দ্য ইকোনমিক টাইমস উল্লেখ করেছে, এই গল্পের চরিত্র এবং নাম কোনো যাচাইযোগ্য রেকর্ডের সঙ্গে মেলে না। ফলে বলা যেতে পারে যে, পুরো গল্পটি বানোয়াট।

সত্যিকারের দুর্ঘটনার সঙ্গে মিল

এই ধরনের প্রতারণামূলক ভিডিওগুলোতে কিছুটা সত্যের ওপর ভিত্তি করে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের চেষ্টা করা হয়। ভিডিওটি ২০১০ সালে সি ওয়ার্ল্ডে ডন ব্রাঞ্চেউ এবং ২০০৯ সালে অ্যালেক্সিস মার্টিনেজ-এর বাস্তব জীবনের মৃত্যুর ঘটনা স্মরণ করিয়ে দেয়। উভয় প্রশিক্ষকই অরকার আক্রমণে মারা যান। কিন্তু এই ঘটনাগুলো জেসিকা র‍্যাডক্লিফের গল্পের মতো নয়, কারণ সেগুলো নথিভুক্ত এবং কর্তৃপক্ষের তরফে নিশ্চিত করা হয়েছে।

কেন এই ধরনের প্রতারণা ভাইরাল হয়

বিশেষজ্ঞরা বলেন, একটি ভিডিওর আবেগপূর্ণ তীব্রতা এবং বাস্তবসম্মত উৎপাদন কৌশল এটি ভাইরাল হতে সাহায্য করে। এই ধরনের ক্লিপগুলো বুদ্ধিমান সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণীদের বন্দী করে রাখার নৈতিকতা নিয়ে মানুষের গভীর উদ্বেগগুলোকে কাজে লাগায়। একই সঙ্গে, এগুলো চাঞ্চল্যকর বিষয়বস্তু ব্যবহার করে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে ফ্যাক্টচেকিং হলেও ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যায়।

কথিত জেসিকা র‍্যাডক্লিফকে নিয়ে অরকার আক্রমণের ভিডিওটি একটি সম্পূর্ণ বানোয়াট। এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি। এই নামে কোনো প্রশিক্ষকের অস্তিত্বেরও কোনো প্রমাণ নেই।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা [email protected]
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত