ফ্যাক্টচেক ডেস্ক
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে গত জুলাইয়ে দেশজুড়ে শুরু হয় আন্দোলন। একসময় এটি রূপ নেয় সরকার পতনের আন্দোলনে। এ আন্দোলনের সময় সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব ছিলেন অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া। আন্দোলনের অংশ হিসেবে ফেসবুক প্রোফাইল করেছিলেন লাল। ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানের মুখে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশত্যাগের খবর ফেসবুকে পোস্ট করে স্রষ্টার প্রশংসা করেছিলেন। রাজধানীর শাহবাগে গিয়ে নিজের ছবি পোস্ট করেছিলেন। অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে তাঁর ফেসবুক পোস্ট দাবিতে একটি দীর্ঘ পোস্টের স্ক্রিনশট ভাইরাল হয়েছে।
পোস্টটিতে লেখা, ‘বাংলাদেশের সর্বস্তরের জনগণ, ছাত্র জনতা ভাই ও বোনেরা–আসসালামু আলাইকুম। আজকে কিছু কথা বলতে চাই। হয়তো আপনাদের ভালো নাও লাগতে পারে। কিন্তু আমি নিরুপায়। আর চুপ করে থাকতে চাই না। ৫ আগস্ট আমরা যেই আশা নিয়ে দ্বিতীয় স্বাধীনতার জন্য উদ্যাপন করেছিলাম, সত্যিই কি আমরা সেই স্বাধীনতা পেয়েছি? আমরা তো ছাত্র জনতার পক্ষে, সারা বাংলার মানুষের কথা চিন্তা করে রাস্তায় নেমেছিলাম। আমরা তো কোন নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের পক্ষে রাস্তায় নামিনি। ছাত্র জনতার আন্দোলনের নামে কি আমাদের তাহলে ধোঁকা দেওয়া হলো? একজন সমন্বয়ককে দেখলাম স্বীকার করে নিল বিপ্লব সফল করতে মেট্রোরেলে আগুন দেওয়া, পুলিশ হত্যা করা এসব তাদের পূর্বপরিকল্পিত ছিল।’

পোস্টটিতে আরও লেখা, ‘আমার তো এখন সন্দেহ হচ্ছে এত এত ছাত্র নিহত হল, বারান্দায়, বাসার ছাদে নিষ্পাপ শিশুগুলো হত্যার স্বীকার হলো, এসব কি সত্যিই পুলিশের গুলিতেই হয়েছিল? নাকি দেশবিরোধী কোন অপশক্তির চক্রান্ত ছিল এগুলো? আজকের পরিস্থিতিতে আমরা কথা বলতে পারছি না। সামান্য ফেসবুকের একটি পোস্ট দু’তিনবার করে কাটাছেঁড়া করতে হয়। শিল্পকলা একাডেমিতে আমার কলিগদের ওপর আক্রমণ করা হলো। এসব নিয়ে অনেকেই বলতে চাচ্ছে কিন্তু মুখ খোলার সাহস পাচ্ছে না। ২০১০ থেকে আজ পর্যন্ত বাংলা নাটকে সবচেয়ে সুবিধাভোগী অভিনেত্রী মেহজাবিন চৌধুরী নিজ শহরে যেতে পারছে না মৌলবাদীদের কারণে। তিনিও তো আমার মতো নতুন স্বাধীনতার পক্ষে ছিলেন। আমার তো মনে পরে না তিনি কবে পরাধীন ছিলেন। আজ আমরা যাদের স্বৈরাচারী বলছি সত্যিই কি তারা স্বৈরাচারী ছিল?’
পোস্টটিতে দাবি করা হয় শবনম লিখেছেন, ‘গত ১৫ বছরে কখনো তো আমাকে কোন পোস্ট ডিলেট করতে হয়নি। কেউ জয় বাংলা ধ্বনি দিলে তাকে নির্বিচারে মারা হচ্ছে।’ জয় বাংলা’ তো শুধু আওয়ামী লীগের স্লোগান না। এটা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকলের স্লোগান। আমরাই আওয়ামী লীগকে সুযোগ করে দিয়েছি জয় বাংলা স্লোগান তাদের রাজনৈতিক স্লোগান করতে। একজন মুক্তিযোদ্ধাও আজকে মৌলবাদীদের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না। এই সরকার দ্রব্যমূল্যের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারছে না। নারীরা আজ জনসম্মুখে লাঞ্ছনার স্বীকার হচ্ছে, অথচ নারীবাদীরা চুপ। দেশে এখন আইনের নামে চলছে দুঃশাসন। পরিশেষে বলতে চাই, সত্যিই আমরা আগেই ভালো ছিলাম। এই দেশ আমাদের। দেশকে রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদেরই।’
পোস্টটির স্ক্রিনশট ও লিখিত রূপ ফেসবুকে বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট ও পেজ থেকে শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, পোস্টটি দিয়ে শবনম ফারিয়া পরে ডিলিট করেছেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপকমিটির সদস্য সাবরিনা চৌধুরী নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় এমন দাবিতে স্ক্রিনশটটি পোস্ট করে লেখেন, ‘Sabnam Faria কিছুক্ষণ আগে একটা পোস্ট করলেন ৫ মিনিট পর ডিলিট করে দিলেন।’
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি আল আমিন রহমান প্রায় একই সময়ে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে স্ক্রিনশটটি পোস্ট করে লিখেন, ‘অভিনেত্রী Sabnam Faria. কার ভয়ে কিসের ভয়ে তার পোস্ট ডিলেট করলেন? ডিজিএফআইয়ের ভয় নাই, কথিত আয়না ঘর নাই, তাহলে কিসের ভয়ে তার এই পোস্ট ডিলেট করলেন? ষড়যন্ত্রের সত্য অবশ্যই বের হয়ে আসবে।’
দুটি পোস্টেই দেখা যাচ্ছে, শবনম ফারিয়া কথিত স্ট্যাটাসটি ৬ মিনিট আগে দিয়েছেন। পোস্টটিতে রিয়েকশন ৩৩৪ টি, কমেন্ট ৪৯টি ও শেয়ার ৭ টি।

শবনম ফারিয়া এমন কোনো পোস্ট কি আসলেই দিয়েছিলেন? দাবিটির সত্যতা যাচাই করে দেখেছে আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগ।
দাবি অনুযায়ী, পোস্টটি ছয় মিনিট ছিল, এ সময়ের মধ্যেই তিন শতাধিক রিয়েকশন পড়েছে, শেয়ারও হয়েছে ৭ টি। তাই স্বাভাবিকভাবেই পোস্টটির ভিন্ন ভিন্ন সময়ের অন্তত আরও কিছু স্ক্রিনশট এবং লিংকযুক্ত শেয়ার পোস্টও পাওয়া যেত। কিন্তু দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে অনুসন্ধানে কথিত স্ট্যাটাসটির কেবল ভাইরাল হওয়া স্ক্রিনশটটিই পাওয়া যায় এবং কোনো শেয়ার পোস্টও পাওয়া যায়নি।
আবার এমন কিছু অ্যাকাউন্ট থেকে কথিত স্ক্রিনশটটি ভাইরাল হয়েছে, যেসব অ্যাকাউন্ট থেকে ইতিপূর্বে বিভিন্ন মিথ্যা, বিকৃত তথ্য শেয়ার করা হয়েছে। যেমন, সুশান্ত দাস গুপ্ত নামের একটি ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে কথিত স্ক্রিনশটটি পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখা হয়, ‘চারদিকে ফেইক জিনিসের ছড়াছড়ি। এইডাও নাকি ফেইক।’
এই পেজেই যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে ট্রাম্পের জয়ের পর তাঁকে ‘মেসিয়াহ’ উল্লেখ করে বাংলাদেশের বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস অভিনন্দন জানিয়েছেন দাবিতে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পোস্ট করা হয়। পরে আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগের অনুসন্ধানে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া বলে জানা যায়। আবার এই মাসের শুরুতেই ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং যুক্তরাষ্ট্রের আর্মি প্যাসিফিকের মধ্যে ল্যান্ড ফোর্সেস টকস’ এর একটি ছবি শেয়ার করে সুশান্ত দাস গুপ্তের অ্যাকাউন্ট থেকে লেখা হয়, ‘ডিল ডান?’ ‘সেন্ট মার্টিন গন?’

পরে অন্তর্বর্তী সরকারের ‘সিএ প্রেস উইং ফ্যাক্টস’ জানিয়েছে, সেন্ট মার্টিন কোনো দেশের কাছে লিজ দেওয়ার পরিকল্পনা নেই। সিএ প্রেস উইং ফ্যাক্টস আরও জানায়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং যুক্তরাষ্ট্রের আর্মি প্যাসিফিকের মধ্যে ল্যান্ড ফোর্সেস টকস কয়েক বছর ধরে চলছে। এর সপ্তম আসর গত বছরের (২০২৩ সাল) ১৪ থেকে ১৬ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াইয়ের ফোর্ট শ্যাফটারে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এই টকসের সঙ্গে সেন্ট মার্টিনকে জড়িয়ে কোনো ধরনের পোস্ট নিছক গুজব।
কথিত স্ক্রিনশটটি নিয়ে শবনম ফারিয়া কী বলছেন
ফেসবুকে ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থান ও সাম্প্রতিক বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে কথিত স্ক্রিনশটটি ভাইরাল হওয়ার পর আজ সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট দেন শবনম ফারিয়া। পোস্টটিতে তিনি জানান, কথিত স্ক্রিনশটের পোস্টটি তাঁর করা নয়, এটি এডিটেড।
পোস্টে শবনম ফারিয়া লিখেন, ‘Attention Attention: আমি গত ৩ দিন ধরে জ্বরে আক্রান্ত। আমি কোনো স্ট্যাটাস পোস্ট করিনি কোনো বিষয়ে। বিশেষ ভাবে রাজনীতি বিষয়ক! এই পোস্ট সম্পূর্ণ এডিটেড। এইটার সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। আপনাদের অবস্থা এত খারাপ যে এখন এডিট করে অন্যদের নামে পোস্ট চালায় নিজেদের কথা বলতে হচ্ছে!!!’
পোস্টটিতে তিনি আরও লিখেন, ‘আমি এই পোস্ট দিয়েছি ভেবে যারা খুশি তারা প্লিজ খুশি হইয়েন না। আবার লিখসে ১৫ বছরে নাকি কোনো পোস্ট ডিলিট করতে হয় নাই! গত ১৫ বছরে কয়েক হাজার পোস্ট ডিলিট করতে হয়েছে! স্ট্যাটাস দেয়ার ৫ মিনিটে কল চলে আসতো, “আপা ডিলিট করেন, সমস্যা হবে”, অন্যদের মতো তেল মারি নাই দেখে কোনো সুযোগ–সুবিধাও পাই নাই! আমার আলোও আসে নাই। আর এমন কোনো স্টেটমেন্ট দিলে সেইটা রাখার সাহসও রাখি।’
প্রসঙ্গত, শবনম ফারিয়ার সাম্প্রতিক সময়ের বেশ কিছু পোস্ট থেকেও প্রতীয়মান হয়, তাঁর নামে গত রাত থেকে ভাইরাল হওয়া স্ক্রিনশটটি এডিটেড।
যেমন, গত ৪ নভেম্বর (সোমবার) একটি পোস্টে শবনম ফারিয়া লিখেন, ‘রাজনীতি বিষয়ক আমি ভেবেছিলাম আর কোনো মন্তব্য করবো না, কিন্তু শেষবার একটা কথা বলে বন্ধ করবো। গতকাল কিছু পোলাপানের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অ্যাকটিভিটিস দেখে মনে হলো, হেলমেট পরে রাস্তাঘাটে আর মারামারি না করতে পারার ফ্রাস্ট্রেশন মানুষের কমেন্ট বক্সে এসে কমেন্টে আঙুল দিয়ে মারামারি করে সেইটা কমানোর চেষ্টা করছে আজকাল! ভাই এইসব ফালতু নোংরা কমেন্ট না করলে অন্তত সিম্পেথি পাইতেন, আপনারা যে শুধু খুনি/চোরদের দোষর না, মানসিকভাবেও কত নোংরা সেইটা কমেন্টগুলো পড়ার পরেই বুঝা গেলো।’
ফারিয়া আরও লেখেন, ‘খারাপ সময়ে মানুষ আরো ডাউন টু আর্থ হয়! আর আপনারা দল বেঁধে আরো এরোগ্যান্সি দেখাচ্ছেন! এই অ্যারোগেন্স এর জন্যই আজকে আপনাদের এই অবস্থা! মানুষ না খেয়ে থাকলেও আপনাদের সমর্থন করবে না!’
৭ মার্চের ভাষণ নিয়ে গত ১৭ অক্টোবর করা একটি পোস্টে শবনম ফারিয়া লিখেন, ‘আমি সত্যিকার অর্থেই রাজনীতি বুঝি না, কিন্তু নাগরিক হিসাবে আমি আমার মনের ভাব প্রকাশের স্বাধীনতা চেয়েছি সব সময়, ভুলকে ভুল বলার আর ঠিক কে ঠিক বলতে চেয়েছি, অনেকের মতো এই দেশের ভবিষ্যৎ নাই বলে কখনো দেশ ছেড়ে চলে যেতে চাইনি। আমি বর্তমান যে “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার “আছে তাদের নিয়ে যারপরনাই নাই আশাবাদী ছিলাম, ছিলাম বললেও ভুল হবে, এখনো আছি। কিন্তু স্বভাবত ভাবেই আমি অল্পে হতাশ হওয়া মানুষ দেখে সম্ভবত আজকাল মাঝে মাঝে একটু হতাশ লাগে।’

পোস্টে ৭ মার্চের ভাষণ নিয়ে লেখেন, ‘৭ ই মার্চের ভাষণ আমার কাছে কোনো পলিটিক্যাল ঘটনা না বরং বাংলাদেশ সৃষ্টির ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন বলে আমি মনে করি। ইতিহাস মুছে দেয়ার মতো কাজ আমরা ফাসিস্টদের কাছ থেকে মেনে নিলেও “এই সময়ে” এই সরকারের কাছ থেকে এই ধরনের বিষয়কে গুরুত্ব দেয়ার মতো পদক্ষেপ আমি আশা করি না! বরং দ্রব্যমূল্যের যে লাগামহীন দাম বাড়ছে সেইটার জন্য সরকারের এই মুহূর্তে আরও সিগনিফিকেন্ট অ্যাটেনশন দেওয়া সব চেয়ে বেশি জরুরি বলে আমি মনে করি! আমরা যারা কোনো ধরনের রাজনীতির সঙ্গে প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে জড়িত না, তাদের এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে অনেক আশা প্রত্যাশা। আমি বিশ্বাস করি তারা চাইলে এই দেশের অনেক অনেক পজিটিভ পরিবর্তন করতে পারবে।’
পোস্টের শেষে তিনি লেখেন, ‘এইযে আজকে এই স্ট্যাটাসটা লিখলাম, গত ১৫ / ১৬ বছরে এমন কিছু লেখার সাহস পাইনি, এখন পেয়েছি, সেইটাই বা কম কিসের?’
উল্লেখ্য, গত অক্টোবরে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ, ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসসহ আটটি জাতীয় দিবস উদ্যাপন বা পালন না করার সিদ্ধান্ত নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। ১৭ অক্টোবর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক আদেশে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।
আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগের সার্বিক অনুসন্ধানে প্রতীয়মান হয়, ফেসবুকে ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থান ও সাম্প্রতিক বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে কথিত স্ক্রিনশটটি এডিটেড।

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে গত জুলাইয়ে দেশজুড়ে শুরু হয় আন্দোলন। একসময় এটি রূপ নেয় সরকার পতনের আন্দোলনে। এ আন্দোলনের সময় সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব ছিলেন অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া। আন্দোলনের অংশ হিসেবে ফেসবুক প্রোফাইল করেছিলেন লাল। ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানের মুখে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশত্যাগের খবর ফেসবুকে পোস্ট করে স্রষ্টার প্রশংসা করেছিলেন। রাজধানীর শাহবাগে গিয়ে নিজের ছবি পোস্ট করেছিলেন। অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে তাঁর ফেসবুক পোস্ট দাবিতে একটি দীর্ঘ পোস্টের স্ক্রিনশট ভাইরাল হয়েছে।
পোস্টটিতে লেখা, ‘বাংলাদেশের সর্বস্তরের জনগণ, ছাত্র জনতা ভাই ও বোনেরা–আসসালামু আলাইকুম। আজকে কিছু কথা বলতে চাই। হয়তো আপনাদের ভালো নাও লাগতে পারে। কিন্তু আমি নিরুপায়। আর চুপ করে থাকতে চাই না। ৫ আগস্ট আমরা যেই আশা নিয়ে দ্বিতীয় স্বাধীনতার জন্য উদ্যাপন করেছিলাম, সত্যিই কি আমরা সেই স্বাধীনতা পেয়েছি? আমরা তো ছাত্র জনতার পক্ষে, সারা বাংলার মানুষের কথা চিন্তা করে রাস্তায় নেমেছিলাম। আমরা তো কোন নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের পক্ষে রাস্তায় নামিনি। ছাত্র জনতার আন্দোলনের নামে কি আমাদের তাহলে ধোঁকা দেওয়া হলো? একজন সমন্বয়ককে দেখলাম স্বীকার করে নিল বিপ্লব সফল করতে মেট্রোরেলে আগুন দেওয়া, পুলিশ হত্যা করা এসব তাদের পূর্বপরিকল্পিত ছিল।’

পোস্টটিতে আরও লেখা, ‘আমার তো এখন সন্দেহ হচ্ছে এত এত ছাত্র নিহত হল, বারান্দায়, বাসার ছাদে নিষ্পাপ শিশুগুলো হত্যার স্বীকার হলো, এসব কি সত্যিই পুলিশের গুলিতেই হয়েছিল? নাকি দেশবিরোধী কোন অপশক্তির চক্রান্ত ছিল এগুলো? আজকের পরিস্থিতিতে আমরা কথা বলতে পারছি না। সামান্য ফেসবুকের একটি পোস্ট দু’তিনবার করে কাটাছেঁড়া করতে হয়। শিল্পকলা একাডেমিতে আমার কলিগদের ওপর আক্রমণ করা হলো। এসব নিয়ে অনেকেই বলতে চাচ্ছে কিন্তু মুখ খোলার সাহস পাচ্ছে না। ২০১০ থেকে আজ পর্যন্ত বাংলা নাটকে সবচেয়ে সুবিধাভোগী অভিনেত্রী মেহজাবিন চৌধুরী নিজ শহরে যেতে পারছে না মৌলবাদীদের কারণে। তিনিও তো আমার মতো নতুন স্বাধীনতার পক্ষে ছিলেন। আমার তো মনে পরে না তিনি কবে পরাধীন ছিলেন। আজ আমরা যাদের স্বৈরাচারী বলছি সত্যিই কি তারা স্বৈরাচারী ছিল?’
পোস্টটিতে দাবি করা হয় শবনম লিখেছেন, ‘গত ১৫ বছরে কখনো তো আমাকে কোন পোস্ট ডিলেট করতে হয়নি। কেউ জয় বাংলা ধ্বনি দিলে তাকে নির্বিচারে মারা হচ্ছে।’ জয় বাংলা’ তো শুধু আওয়ামী লীগের স্লোগান না। এটা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকলের স্লোগান। আমরাই আওয়ামী লীগকে সুযোগ করে দিয়েছি জয় বাংলা স্লোগান তাদের রাজনৈতিক স্লোগান করতে। একজন মুক্তিযোদ্ধাও আজকে মৌলবাদীদের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না। এই সরকার দ্রব্যমূল্যের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারছে না। নারীরা আজ জনসম্মুখে লাঞ্ছনার স্বীকার হচ্ছে, অথচ নারীবাদীরা চুপ। দেশে এখন আইনের নামে চলছে দুঃশাসন। পরিশেষে বলতে চাই, সত্যিই আমরা আগেই ভালো ছিলাম। এই দেশ আমাদের। দেশকে রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদেরই।’
পোস্টটির স্ক্রিনশট ও লিখিত রূপ ফেসবুকে বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট ও পেজ থেকে শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, পোস্টটি দিয়ে শবনম ফারিয়া পরে ডিলিট করেছেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপকমিটির সদস্য সাবরিনা চৌধুরী নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় এমন দাবিতে স্ক্রিনশটটি পোস্ট করে লেখেন, ‘Sabnam Faria কিছুক্ষণ আগে একটা পোস্ট করলেন ৫ মিনিট পর ডিলিট করে দিলেন।’
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি আল আমিন রহমান প্রায় একই সময়ে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে স্ক্রিনশটটি পোস্ট করে লিখেন, ‘অভিনেত্রী Sabnam Faria. কার ভয়ে কিসের ভয়ে তার পোস্ট ডিলেট করলেন? ডিজিএফআইয়ের ভয় নাই, কথিত আয়না ঘর নাই, তাহলে কিসের ভয়ে তার এই পোস্ট ডিলেট করলেন? ষড়যন্ত্রের সত্য অবশ্যই বের হয়ে আসবে।’
দুটি পোস্টেই দেখা যাচ্ছে, শবনম ফারিয়া কথিত স্ট্যাটাসটি ৬ মিনিট আগে দিয়েছেন। পোস্টটিতে রিয়েকশন ৩৩৪ টি, কমেন্ট ৪৯টি ও শেয়ার ৭ টি।

শবনম ফারিয়া এমন কোনো পোস্ট কি আসলেই দিয়েছিলেন? দাবিটির সত্যতা যাচাই করে দেখেছে আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগ।
দাবি অনুযায়ী, পোস্টটি ছয় মিনিট ছিল, এ সময়ের মধ্যেই তিন শতাধিক রিয়েকশন পড়েছে, শেয়ারও হয়েছে ৭ টি। তাই স্বাভাবিকভাবেই পোস্টটির ভিন্ন ভিন্ন সময়ের অন্তত আরও কিছু স্ক্রিনশট এবং লিংকযুক্ত শেয়ার পোস্টও পাওয়া যেত। কিন্তু দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে অনুসন্ধানে কথিত স্ট্যাটাসটির কেবল ভাইরাল হওয়া স্ক্রিনশটটিই পাওয়া যায় এবং কোনো শেয়ার পোস্টও পাওয়া যায়নি।
আবার এমন কিছু অ্যাকাউন্ট থেকে কথিত স্ক্রিনশটটি ভাইরাল হয়েছে, যেসব অ্যাকাউন্ট থেকে ইতিপূর্বে বিভিন্ন মিথ্যা, বিকৃত তথ্য শেয়ার করা হয়েছে। যেমন, সুশান্ত দাস গুপ্ত নামের একটি ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে কথিত স্ক্রিনশটটি পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখা হয়, ‘চারদিকে ফেইক জিনিসের ছড়াছড়ি। এইডাও নাকি ফেইক।’
এই পেজেই যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে ট্রাম্পের জয়ের পর তাঁকে ‘মেসিয়াহ’ উল্লেখ করে বাংলাদেশের বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস অভিনন্দন জানিয়েছেন দাবিতে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পোস্ট করা হয়। পরে আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগের অনুসন্ধানে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া বলে জানা যায়। আবার এই মাসের শুরুতেই ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং যুক্তরাষ্ট্রের আর্মি প্যাসিফিকের মধ্যে ল্যান্ড ফোর্সেস টকস’ এর একটি ছবি শেয়ার করে সুশান্ত দাস গুপ্তের অ্যাকাউন্ট থেকে লেখা হয়, ‘ডিল ডান?’ ‘সেন্ট মার্টিন গন?’

পরে অন্তর্বর্তী সরকারের ‘সিএ প্রেস উইং ফ্যাক্টস’ জানিয়েছে, সেন্ট মার্টিন কোনো দেশের কাছে লিজ দেওয়ার পরিকল্পনা নেই। সিএ প্রেস উইং ফ্যাক্টস আরও জানায়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং যুক্তরাষ্ট্রের আর্মি প্যাসিফিকের মধ্যে ল্যান্ড ফোর্সেস টকস কয়েক বছর ধরে চলছে। এর সপ্তম আসর গত বছরের (২০২৩ সাল) ১৪ থেকে ১৬ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াইয়ের ফোর্ট শ্যাফটারে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এই টকসের সঙ্গে সেন্ট মার্টিনকে জড়িয়ে কোনো ধরনের পোস্ট নিছক গুজব।
কথিত স্ক্রিনশটটি নিয়ে শবনম ফারিয়া কী বলছেন
ফেসবুকে ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থান ও সাম্প্রতিক বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে কথিত স্ক্রিনশটটি ভাইরাল হওয়ার পর আজ সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট দেন শবনম ফারিয়া। পোস্টটিতে তিনি জানান, কথিত স্ক্রিনশটের পোস্টটি তাঁর করা নয়, এটি এডিটেড।
পোস্টে শবনম ফারিয়া লিখেন, ‘Attention Attention: আমি গত ৩ দিন ধরে জ্বরে আক্রান্ত। আমি কোনো স্ট্যাটাস পোস্ট করিনি কোনো বিষয়ে। বিশেষ ভাবে রাজনীতি বিষয়ক! এই পোস্ট সম্পূর্ণ এডিটেড। এইটার সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। আপনাদের অবস্থা এত খারাপ যে এখন এডিট করে অন্যদের নামে পোস্ট চালায় নিজেদের কথা বলতে হচ্ছে!!!’
পোস্টটিতে তিনি আরও লিখেন, ‘আমি এই পোস্ট দিয়েছি ভেবে যারা খুশি তারা প্লিজ খুশি হইয়েন না। আবার লিখসে ১৫ বছরে নাকি কোনো পোস্ট ডিলিট করতে হয় নাই! গত ১৫ বছরে কয়েক হাজার পোস্ট ডিলিট করতে হয়েছে! স্ট্যাটাস দেয়ার ৫ মিনিটে কল চলে আসতো, “আপা ডিলিট করেন, সমস্যা হবে”, অন্যদের মতো তেল মারি নাই দেখে কোনো সুযোগ–সুবিধাও পাই নাই! আমার আলোও আসে নাই। আর এমন কোনো স্টেটমেন্ট দিলে সেইটা রাখার সাহসও রাখি।’
প্রসঙ্গত, শবনম ফারিয়ার সাম্প্রতিক সময়ের বেশ কিছু পোস্ট থেকেও প্রতীয়মান হয়, তাঁর নামে গত রাত থেকে ভাইরাল হওয়া স্ক্রিনশটটি এডিটেড।
যেমন, গত ৪ নভেম্বর (সোমবার) একটি পোস্টে শবনম ফারিয়া লিখেন, ‘রাজনীতি বিষয়ক আমি ভেবেছিলাম আর কোনো মন্তব্য করবো না, কিন্তু শেষবার একটা কথা বলে বন্ধ করবো। গতকাল কিছু পোলাপানের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অ্যাকটিভিটিস দেখে মনে হলো, হেলমেট পরে রাস্তাঘাটে আর মারামারি না করতে পারার ফ্রাস্ট্রেশন মানুষের কমেন্ট বক্সে এসে কমেন্টে আঙুল দিয়ে মারামারি করে সেইটা কমানোর চেষ্টা করছে আজকাল! ভাই এইসব ফালতু নোংরা কমেন্ট না করলে অন্তত সিম্পেথি পাইতেন, আপনারা যে শুধু খুনি/চোরদের দোষর না, মানসিকভাবেও কত নোংরা সেইটা কমেন্টগুলো পড়ার পরেই বুঝা গেলো।’
ফারিয়া আরও লেখেন, ‘খারাপ সময়ে মানুষ আরো ডাউন টু আর্থ হয়! আর আপনারা দল বেঁধে আরো এরোগ্যান্সি দেখাচ্ছেন! এই অ্যারোগেন্স এর জন্যই আজকে আপনাদের এই অবস্থা! মানুষ না খেয়ে থাকলেও আপনাদের সমর্থন করবে না!’
৭ মার্চের ভাষণ নিয়ে গত ১৭ অক্টোবর করা একটি পোস্টে শবনম ফারিয়া লিখেন, ‘আমি সত্যিকার অর্থেই রাজনীতি বুঝি না, কিন্তু নাগরিক হিসাবে আমি আমার মনের ভাব প্রকাশের স্বাধীনতা চেয়েছি সব সময়, ভুলকে ভুল বলার আর ঠিক কে ঠিক বলতে চেয়েছি, অনেকের মতো এই দেশের ভবিষ্যৎ নাই বলে কখনো দেশ ছেড়ে চলে যেতে চাইনি। আমি বর্তমান যে “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার “আছে তাদের নিয়ে যারপরনাই নাই আশাবাদী ছিলাম, ছিলাম বললেও ভুল হবে, এখনো আছি। কিন্তু স্বভাবত ভাবেই আমি অল্পে হতাশ হওয়া মানুষ দেখে সম্ভবত আজকাল মাঝে মাঝে একটু হতাশ লাগে।’

পোস্টে ৭ মার্চের ভাষণ নিয়ে লেখেন, ‘৭ ই মার্চের ভাষণ আমার কাছে কোনো পলিটিক্যাল ঘটনা না বরং বাংলাদেশ সৃষ্টির ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন বলে আমি মনে করি। ইতিহাস মুছে দেয়ার মতো কাজ আমরা ফাসিস্টদের কাছ থেকে মেনে নিলেও “এই সময়ে” এই সরকারের কাছ থেকে এই ধরনের বিষয়কে গুরুত্ব দেয়ার মতো পদক্ষেপ আমি আশা করি না! বরং দ্রব্যমূল্যের যে লাগামহীন দাম বাড়ছে সেইটার জন্য সরকারের এই মুহূর্তে আরও সিগনিফিকেন্ট অ্যাটেনশন দেওয়া সব চেয়ে বেশি জরুরি বলে আমি মনে করি! আমরা যারা কোনো ধরনের রাজনীতির সঙ্গে প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে জড়িত না, তাদের এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে অনেক আশা প্রত্যাশা। আমি বিশ্বাস করি তারা চাইলে এই দেশের অনেক অনেক পজিটিভ পরিবর্তন করতে পারবে।’
পোস্টের শেষে তিনি লেখেন, ‘এইযে আজকে এই স্ট্যাটাসটা লিখলাম, গত ১৫ / ১৬ বছরে এমন কিছু লেখার সাহস পাইনি, এখন পেয়েছি, সেইটাই বা কম কিসের?’
উল্লেখ্য, গত অক্টোবরে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ, ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসসহ আটটি জাতীয় দিবস উদ্যাপন বা পালন না করার সিদ্ধান্ত নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। ১৭ অক্টোবর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক আদেশে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।
আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগের সার্বিক অনুসন্ধানে প্রতীয়মান হয়, ফেসবুকে ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থান ও সাম্প্রতিক বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে কথিত স্ক্রিনশটটি এডিটেড।

সম্প্রতি আজকের পত্রিকার নাম ও ফটোকার্ড ব্যবহার করে ‘হরেকৃষ্ণ হরিবোল, দাঁড়িপাল্লা টেনে তোলঃ পরওয়ার’ শিরোনামে একটি ভুয়া ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।
০৩ নভেম্বর ২০২৫
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাতের রাস্তার মাঝখানে এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি এক হাতে একটি স্বচ্ছ বোতল, অপর হাতে বাঘের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি বাঘটির মুখে বোতল গুঁজে দিতেও দেখা যায় তাঁকে।
০২ নভেম্বর ২০২৫
বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যানকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল যুক্ত বাংলাদেশের মানচিত্রসংবলিত পতাকা উপহার দিয়েছেন বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের দাবি সম্পূর্ণ অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত বলে জানিয়েছে সিএ (প্রধান উপদেষ্টা) ফ্যাক্ট চেক।
২৮ অক্টোবর ২০২৫
একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
১৩ আগস্ট ২০২৫আজকের পত্রিকা ডেস্ক

সম্প্রতি আজকের পত্রিকার নাম ও ফটোকার্ড ব্যবহার করে ‘হরেকৃষ্ণ হরিবোল, দাঁড়িপাল্লা টেনে তোলঃ পরওয়ার’ শিরোনামে একটি ভুয়া ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। এটি একটি সম্পূর্ণ ভুয়া ফটোকার্ড।
আজকের পত্রিকা কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করছে, এই ধরনের কোনো খবর আজকের পত্রিকাতে কখনোই প্রকাশিত হয়নি। ফটোকার্ডটিতে আজকের পত্রিকার লোগো ব্যবহার করা হলেও এর ভেতরের খবর ও শিরোনাম সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।
আজকের পত্রিকা সর্বদা সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
বর্তমান সময়ে এ ধরনের ভুয়া ফটোকার্ড ও খবর নিয়ে পাঠকদের সচেতনতা জরুরি। যেকোনো সন্দেহজনক খবর যাচাই করার জন্য অনুরোধ রইল।

সম্প্রতি আজকের পত্রিকার নাম ও ফটোকার্ড ব্যবহার করে ‘হরেকৃষ্ণ হরিবোল, দাঁড়িপাল্লা টেনে তোলঃ পরওয়ার’ শিরোনামে একটি ভুয়া ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। এটি একটি সম্পূর্ণ ভুয়া ফটোকার্ড।
আজকের পত্রিকা কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করছে, এই ধরনের কোনো খবর আজকের পত্রিকাতে কখনোই প্রকাশিত হয়নি। ফটোকার্ডটিতে আজকের পত্রিকার লোগো ব্যবহার করা হলেও এর ভেতরের খবর ও শিরোনাম সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।
আজকের পত্রিকা সর্বদা সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
বর্তমান সময়ে এ ধরনের ভুয়া ফটোকার্ড ও খবর নিয়ে পাঠকদের সচেতনতা জরুরি। যেকোনো সন্দেহজনক খবর যাচাই করার জন্য অনুরোধ রইল।
আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপকমিটির সদস্য সাবরিনা চৌধুরী নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় এমন দাবিতে স্ক্রিনশটটি পোস্ট করে লেখেন, ‘Sabnam Faria কিছুক্ষণ আগে একটা পোস্ট করলেন ৫ মিনিট পর ডিলিট করে দিলেন।’
১৩ নভেম্বর ২০২৪
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাতের রাস্তার মাঝখানে এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি এক হাতে একটি স্বচ্ছ বোতল, অপর হাতে বাঘের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি বাঘটির মুখে বোতল গুঁজে দিতেও দেখা যায় তাঁকে।
০২ নভেম্বর ২০২৫
বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যানকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল যুক্ত বাংলাদেশের মানচিত্রসংবলিত পতাকা উপহার দিয়েছেন বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের দাবি সম্পূর্ণ অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত বলে জানিয়েছে সিএ (প্রধান উপদেষ্টা) ফ্যাক্ট চেক।
২৮ অক্টোবর ২০২৫
একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
১৩ আগস্ট ২০২৫ফ্যাক্টচেক ডেস্ক

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাতে রাস্তার মাঝখানে এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি এক হাতে একটি স্বচ্ছ বোতল, অপর হাতে বাঘের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি বাঘটির মুখে বোতল গুঁজে দিতেও দেখা যায় তাঁকে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে এই ভিডিও শেয়ার করে দাবি করছেন, একটি সিসিটিভি ফুটেজ। ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, ঘটনাটি ভারতের মধ্যপ্রদেশের পেঞ্চ এলাকার। ওই ব্যক্তি দেশীয় মদ পান করে মাতাল হয়ে রাস্তায় বেরিয়েছিলেন। তিনি এতটা মাতাল ছিলেন যে বাঘকেও মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করেন। বাঘ অবশ্য তাঁর হাতে মদ্যপানে রাজি হয়নি! পরে ওই বাঘটিকে উদ্ধার করে বন বিভাগ। বাঘটি ওই ব্যক্তির কোনো ক্ষতি করেনি।

ভিডিওটি দেখে অনেকেই বিস্মিত ও উদ্বিগ্ন—কেউ বিশ্বাস করেছেন, এটি বাস্তব কোনো ঘটনা; কেউ আবার মনে করছেন, এটি নিছকই কৃত্রিম ভিডিও। কিন্তু সত্যিটা কী? দ্য কুইন্টের সাংবাদিক অভিষেক আনন্দ ও ফ্যাক্টচেকিং সংস্থা বুম বিষয়টি অনুসন্ধান করে প্রকৃত ঘটনা প্রকাশ করেছে।
বুম ভিডিওটি নিয়ে বিভিন্ন কিওয়ার্ড দিয়ে এ-সম্পর্কিত প্রতিবেদন অনুসন্ধান করেছে, কিন্তু কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে এমন ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। এরপর তারা সরাসরি মধ্যপ্রদেশের সেওনি জেলার পুলিশ কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করে। দ্য কুইন্ট ও বুমকে সেওনি জেলার পুলিশ সুপারের দপ্তর থেকে স্পষ্ট জানানো হয়—তাদের জানামতে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।
পেঞ্চ টাইগার রিজার্ভের উপপরিচালক রাজনীশ সিংহের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি যাচাই করা হয়। তিনি বলেন, ভিডিওটির সঙ্গে পেঞ্চ এলাকার কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি আরও ব্যাখ্যা দেন, বনের বাঘের সঙ্গে এমন ঘনিষ্ঠভাবে মানুষের যোগাযোগ সম্ভব নয়, যদি না বাঘটিকে বন্দী করে দীর্ঘদিন ধরে পোষ মানানো হয়। তাঁর ভাষায়, ‘বনের বাঘ কখনো এমন আচরণ করে না, এটা বাস্তবে সম্ভব নয়।’
ভিডিওর সন্দেহজনক দিক বা ভিজ্যুয়াল অসংগতি
বুম ভিডিওটির একটি উচ্চমানের সংস্করণ সংগ্রহ করে তাতে কিছু অস্বাভাবিক দিক লক্ষ করে। দেখা যায়, ভিডিওটির পটভূমির দৃশ্যে কিছু অস্পষ্ট বস্তু নড়াচড়া করছে, যা বাস্তব ভিডিওর মতো স্বাভাবিক নয়।
বাঘের মাথায় হাত রাখা ব্যক্তির আঙুলগুলো বিকৃতভাবে বাঁকানো, যেন সফটওয়্যারে তৈরি কৃত্রিম ছায়া। এমনকি হাতে থাকা বোতলের মুখ কখনো দেখা যায়, আবার মিলিয়ে যায়—এই ভিজ্যুয়াল অসংগতিগুলো ইঙ্গিত দেয়, এটি ধারণকৃত কোনো ফুটেজ নয়। সব মিলিয়ে ভিডিওটির একাধিক ফ্রেমে গ্রাফিক বিকৃতি স্পষ্ট।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর বিশ্লেষণ
এরপর ভিডিওটি পরীক্ষা করা হয় ডিপফেক-ও-মিটার নামের একটি উন্নত টুলে। এটি তৈরি করেছে ইউনিভার্সিটি অব বাফেলোর মিডিয়া ফরেনসিকস ল্যাব। এই টুল ভিডিওটির বিভিন্ন অংশ বিশ্লেষণ করে দেখায়, এতে ‘উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক নির্মাণের চিহ্ন’ রয়েছে।

এরপর বুম তাদের অংশীদার ডিপফেক অ্যানালাইসিস ইউনিটের সাহায্য নেয়। তারা ভিডিওটি পরীক্ষা করে ‘Is It AI’ এবং ‘AI Or Not’—নামক দুটি আলাদা টুলে। উভয় টুলের বিশ্লেষণে দেখা যায়, ভিডিওটি এআই দিয়ে নির্মিত হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৬৯ শতাংশ।
এই ফলাফল অনুযায়ী বিশেষজ্ঞরা বলেন, ভিডিওর মানুষের সঙ্গে প্রাণীর মিথস্ক্রিয়া এবং আলো-ছায়ার ত্রুটি স্পষ্ট করে দিচ্ছে এটি আসল নয়, বরং জেনারেটিভ এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে বানানো একটি দৃশ্য।
ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর বহু ব্যবহারকারী এটিকে সত্যি বলে বিশ্বাস করেছেন। কিছু পোস্টে দাবি করা হয়েছে, ভিডিওর ওই ব্যক্তির নাম রাজু পাতিল। ৫২ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি একজন দিনমজুর। তিনি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় রাস্তায় বাঘটিকে আদর করছিলেন এবং আশ্চর্যজনকভাবে অক্ষত অবস্থায় রয়ে গেছেন।
একাধিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শনাক্তকরণ টুলের ফলাফল এবং প্রশাসনিক যাচাই মিলিয়ে নিশ্চিতভাবে বলা যায়—ভিডিওটি বাস্তব নয়, বরং এআই প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি একটি কৃত্রিম দৃশ্য। পেঞ্চ টাইগার রিজার্ভের উপপরিচালক রাজনীশ সিংহও সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘এই ভিডিওর কোনো অংশই পেঞ্চের নয়। এটি সম্পূর্ণ ভুয়া।’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাতে রাস্তার মাঝখানে এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি এক হাতে একটি স্বচ্ছ বোতল, অপর হাতে বাঘের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি বাঘটির মুখে বোতল গুঁজে দিতেও দেখা যায় তাঁকে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে এই ভিডিও শেয়ার করে দাবি করছেন, একটি সিসিটিভি ফুটেজ। ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, ঘটনাটি ভারতের মধ্যপ্রদেশের পেঞ্চ এলাকার। ওই ব্যক্তি দেশীয় মদ পান করে মাতাল হয়ে রাস্তায় বেরিয়েছিলেন। তিনি এতটা মাতাল ছিলেন যে বাঘকেও মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করেন। বাঘ অবশ্য তাঁর হাতে মদ্যপানে রাজি হয়নি! পরে ওই বাঘটিকে উদ্ধার করে বন বিভাগ। বাঘটি ওই ব্যক্তির কোনো ক্ষতি করেনি।

ভিডিওটি দেখে অনেকেই বিস্মিত ও উদ্বিগ্ন—কেউ বিশ্বাস করেছেন, এটি বাস্তব কোনো ঘটনা; কেউ আবার মনে করছেন, এটি নিছকই কৃত্রিম ভিডিও। কিন্তু সত্যিটা কী? দ্য কুইন্টের সাংবাদিক অভিষেক আনন্দ ও ফ্যাক্টচেকিং সংস্থা বুম বিষয়টি অনুসন্ধান করে প্রকৃত ঘটনা প্রকাশ করেছে।
বুম ভিডিওটি নিয়ে বিভিন্ন কিওয়ার্ড দিয়ে এ-সম্পর্কিত প্রতিবেদন অনুসন্ধান করেছে, কিন্তু কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে এমন ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। এরপর তারা সরাসরি মধ্যপ্রদেশের সেওনি জেলার পুলিশ কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করে। দ্য কুইন্ট ও বুমকে সেওনি জেলার পুলিশ সুপারের দপ্তর থেকে স্পষ্ট জানানো হয়—তাদের জানামতে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।
পেঞ্চ টাইগার রিজার্ভের উপপরিচালক রাজনীশ সিংহের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি যাচাই করা হয়। তিনি বলেন, ভিডিওটির সঙ্গে পেঞ্চ এলাকার কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি আরও ব্যাখ্যা দেন, বনের বাঘের সঙ্গে এমন ঘনিষ্ঠভাবে মানুষের যোগাযোগ সম্ভব নয়, যদি না বাঘটিকে বন্দী করে দীর্ঘদিন ধরে পোষ মানানো হয়। তাঁর ভাষায়, ‘বনের বাঘ কখনো এমন আচরণ করে না, এটা বাস্তবে সম্ভব নয়।’
ভিডিওর সন্দেহজনক দিক বা ভিজ্যুয়াল অসংগতি
বুম ভিডিওটির একটি উচ্চমানের সংস্করণ সংগ্রহ করে তাতে কিছু অস্বাভাবিক দিক লক্ষ করে। দেখা যায়, ভিডিওটির পটভূমির দৃশ্যে কিছু অস্পষ্ট বস্তু নড়াচড়া করছে, যা বাস্তব ভিডিওর মতো স্বাভাবিক নয়।
বাঘের মাথায় হাত রাখা ব্যক্তির আঙুলগুলো বিকৃতভাবে বাঁকানো, যেন সফটওয়্যারে তৈরি কৃত্রিম ছায়া। এমনকি হাতে থাকা বোতলের মুখ কখনো দেখা যায়, আবার মিলিয়ে যায়—এই ভিজ্যুয়াল অসংগতিগুলো ইঙ্গিত দেয়, এটি ধারণকৃত কোনো ফুটেজ নয়। সব মিলিয়ে ভিডিওটির একাধিক ফ্রেমে গ্রাফিক বিকৃতি স্পষ্ট।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর বিশ্লেষণ
এরপর ভিডিওটি পরীক্ষা করা হয় ডিপফেক-ও-মিটার নামের একটি উন্নত টুলে। এটি তৈরি করেছে ইউনিভার্সিটি অব বাফেলোর মিডিয়া ফরেনসিকস ল্যাব। এই টুল ভিডিওটির বিভিন্ন অংশ বিশ্লেষণ করে দেখায়, এতে ‘উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক নির্মাণের চিহ্ন’ রয়েছে।

এরপর বুম তাদের অংশীদার ডিপফেক অ্যানালাইসিস ইউনিটের সাহায্য নেয়। তারা ভিডিওটি পরীক্ষা করে ‘Is It AI’ এবং ‘AI Or Not’—নামক দুটি আলাদা টুলে। উভয় টুলের বিশ্লেষণে দেখা যায়, ভিডিওটি এআই দিয়ে নির্মিত হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৬৯ শতাংশ।
এই ফলাফল অনুযায়ী বিশেষজ্ঞরা বলেন, ভিডিওর মানুষের সঙ্গে প্রাণীর মিথস্ক্রিয়া এবং আলো-ছায়ার ত্রুটি স্পষ্ট করে দিচ্ছে এটি আসল নয়, বরং জেনারেটিভ এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে বানানো একটি দৃশ্য।
ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর বহু ব্যবহারকারী এটিকে সত্যি বলে বিশ্বাস করেছেন। কিছু পোস্টে দাবি করা হয়েছে, ভিডিওর ওই ব্যক্তির নাম রাজু পাতিল। ৫২ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি একজন দিনমজুর। তিনি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় রাস্তায় বাঘটিকে আদর করছিলেন এবং আশ্চর্যজনকভাবে অক্ষত অবস্থায় রয়ে গেছেন।
একাধিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শনাক্তকরণ টুলের ফলাফল এবং প্রশাসনিক যাচাই মিলিয়ে নিশ্চিতভাবে বলা যায়—ভিডিওটি বাস্তব নয়, বরং এআই প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি একটি কৃত্রিম দৃশ্য। পেঞ্চ টাইগার রিজার্ভের উপপরিচালক রাজনীশ সিংহও সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘এই ভিডিওর কোনো অংশই পেঞ্চের নয়। এটি সম্পূর্ণ ভুয়া।’
আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপকমিটির সদস্য সাবরিনা চৌধুরী নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় এমন দাবিতে স্ক্রিনশটটি পোস্ট করে লেখেন, ‘Sabnam Faria কিছুক্ষণ আগে একটা পোস্ট করলেন ৫ মিনিট পর ডিলিট করে দিলেন।’
১৩ নভেম্বর ২০২৪
সম্প্রতি আজকের পত্রিকার নাম ও ফটোকার্ড ব্যবহার করে ‘হরেকৃষ্ণ হরিবোল, দাঁড়িপাল্লা টেনে তোলঃ পরওয়ার’ শিরোনামে একটি ভুয়া ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।
০৩ নভেম্বর ২০২৫
বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যানকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল যুক্ত বাংলাদেশের মানচিত্রসংবলিত পতাকা উপহার দিয়েছেন বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের দাবি সম্পূর্ণ অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত বলে জানিয়েছে সিএ (প্রধান উপদেষ্টা) ফ্যাক্ট চেক।
২৮ অক্টোবর ২০২৫
একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
১৩ আগস্ট ২০২৫ফ্যাক্টচেক ডেস্ক

বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যানকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল যুক্ত বাংলাদেশের মানচিত্রসংবলিত পতাকা উপহার দিয়েছেন বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের দাবি সম্পূর্ণ অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত বলে জানিয়েছে সিএ (প্রধান উপদেষ্টা) ফ্যাক্ট চেক।
ভারতের সংবাদমাধ্যমটি গতকাল এক প্রতিবেদনে দাবি করে, পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যান জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জাকে এমন একটি পতাকা উপহার দিয়েছেন অধ্যাপক ইউনূস, যেখানে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল বাংলাদেশের মানচিত্রের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।
সিএ ফ্যাক্ট চেক জানায়, প্রকৃতপক্ষে অধ্যাপক ইউনূস উপহার দিয়েছেন ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ নামে একটি চিত্রসংকলন—যেখানে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীদের আঁকা রঙিন গ্রাফিতি ও দেয়ালচিত্র সংকলিত হয়েছে।
‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন প্রকাশিত একটি সচিত্র দলিল, যেখানে ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগে অর্জিত বিপ্লবের ইতিহাস ফুটে উঠেছে।
গ্রাফিতি সংকলনের প্রচ্ছদে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ আবু সাইদের পিছনে রক্তরাঙ্গা বাংলাদেশের মানচিত্র প্রদর্শিত হয়েছে।
প্রচ্ছদে দৃশ্যমান মানচিত্রটি গ্রাফিতি হিসেবে অঙ্কিত হওয়ায় বাংলাদেশের মূল মানচিত্রের পরিমাপের কিছুটা হেরফের হয়েছে বলে কারো কাছে মনে হতে পারে। কিন্তু ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের কোনো অংশ গ্রাফিতি মানচিত্রটিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে বলে দাবি করাটা সম্পূর্ণ অসত্য এবং কল্পনাপ্রসূত। বাংলাদেশের মানচিত্রের সাথে উল্লেখিত গ্রাফিতিতে দৃশ্যমান মানচিত্রের তুলনামূলক বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, অঙ্কিত মানচিত্রটিতে বাংলাদেশের প্রকৃত মানচিত্র প্রায় হুবহুভাবেই প্রতিফলিত হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা এর আগেও একই গ্রাফিতি সংকলন ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ জাতিসংঘের মহাসচিব, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোসহ বিশ্ব নেতাদের উপহার দিয়েছেন।

বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যানকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল যুক্ত বাংলাদেশের মানচিত্রসংবলিত পতাকা উপহার দিয়েছেন বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের দাবি সম্পূর্ণ অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত বলে জানিয়েছে সিএ (প্রধান উপদেষ্টা) ফ্যাক্ট চেক।
ভারতের সংবাদমাধ্যমটি গতকাল এক প্রতিবেদনে দাবি করে, পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যান জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জাকে এমন একটি পতাকা উপহার দিয়েছেন অধ্যাপক ইউনূস, যেখানে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল বাংলাদেশের মানচিত্রের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।
সিএ ফ্যাক্ট চেক জানায়, প্রকৃতপক্ষে অধ্যাপক ইউনূস উপহার দিয়েছেন ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ নামে একটি চিত্রসংকলন—যেখানে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীদের আঁকা রঙিন গ্রাফিতি ও দেয়ালচিত্র সংকলিত হয়েছে।
‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন প্রকাশিত একটি সচিত্র দলিল, যেখানে ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগে অর্জিত বিপ্লবের ইতিহাস ফুটে উঠেছে।
গ্রাফিতি সংকলনের প্রচ্ছদে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ আবু সাইদের পিছনে রক্তরাঙ্গা বাংলাদেশের মানচিত্র প্রদর্শিত হয়েছে।
প্রচ্ছদে দৃশ্যমান মানচিত্রটি গ্রাফিতি হিসেবে অঙ্কিত হওয়ায় বাংলাদেশের মূল মানচিত্রের পরিমাপের কিছুটা হেরফের হয়েছে বলে কারো কাছে মনে হতে পারে। কিন্তু ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের কোনো অংশ গ্রাফিতি মানচিত্রটিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে বলে দাবি করাটা সম্পূর্ণ অসত্য এবং কল্পনাপ্রসূত। বাংলাদেশের মানচিত্রের সাথে উল্লেখিত গ্রাফিতিতে দৃশ্যমান মানচিত্রের তুলনামূলক বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, অঙ্কিত মানচিত্রটিতে বাংলাদেশের প্রকৃত মানচিত্র প্রায় হুবহুভাবেই প্রতিফলিত হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা এর আগেও একই গ্রাফিতি সংকলন ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ জাতিসংঘের মহাসচিব, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোসহ বিশ্ব নেতাদের উপহার দিয়েছেন।
আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপকমিটির সদস্য সাবরিনা চৌধুরী নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় এমন দাবিতে স্ক্রিনশটটি পোস্ট করে লেখেন, ‘Sabnam Faria কিছুক্ষণ আগে একটা পোস্ট করলেন ৫ মিনিট পর ডিলিট করে দিলেন।’
১৩ নভেম্বর ২০২৪
সম্প্রতি আজকের পত্রিকার নাম ও ফটোকার্ড ব্যবহার করে ‘হরেকৃষ্ণ হরিবোল, দাঁড়িপাল্লা টেনে তোলঃ পরওয়ার’ শিরোনামে একটি ভুয়া ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।
০৩ নভেম্বর ২০২৫
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাতের রাস্তার মাঝখানে এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি এক হাতে একটি স্বচ্ছ বোতল, অপর হাতে বাঘের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি বাঘটির মুখে বোতল গুঁজে দিতেও দেখা যায় তাঁকে।
০২ নভেম্বর ২০২৫
একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
১৩ আগস্ট ২০২৫ফ্যাক্টচেক ডেস্ক

একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। মর্মান্তিক ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দাবি করা হয়, প্যাসিফিক ব্লু মেরিন পার্কে ‘জেসিকা র্যাডক্লিফ’ নামে একজন প্রশিক্ষককে একটি অরকা আক্রমণ করে হত্যা করেছে।
ভিডিওটি টিকটক, ফেসবুক এবং এক্সে ভাইরাল হয়েছে। তবে, একাধিক ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা নিশ্চিত করেছে যে, এই ভিডিওটি সম্পূর্ণ বানোয়াট এবং এর কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই।
ভিডিওতে যা দেখানো হয়েছে
ভাইরাল হওয়া ক্লিপটিতে দেখা যায়, একজন তরুণী একটি অরকার পিঠে দাঁড়িয়ে নাচছেন। দর্শকেরা তখন উল্লাস করছিল। কিন্তু কিছুক্ষণ পর হঠাৎ অরকাটি ওই তরুণীকে আক্রমণ করে পানির নিচে টেনে নিয়ে যায়। ভিডিওটি শেয়ার করা অনেক ব্যবহারকারী দাবি করেছেন, পানির নিচে নিয়ে যাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ওই তরুণীর মৃত্যু হয়।
ঘটনা বা প্রশিক্ষকের কোনো প্রমাণ নেই
ভিডিওটি ব্যাপকভাবে শেয়ার হওয়া সত্ত্বেও, জেসিকা র্যাডক্লিফ নামে একজন প্রশিক্ষক অরকার আক্রমণে মারা গেছেন—এই দাবির পক্ষে কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কর্তৃপক্ষ, মেরিন পার্ক এবং প্রতিষ্ঠিত সংবাদমাধ্যমগুলো জেসিকা র্যাডক্লিফের অস্তিত্ব বা এমন কোনো ঘটনার রেকর্ড খুঁজে পায়নি। দ্য স্টার পত্রিকার মতে, ভিডিওটি কাল্পনিক; এমনকি ভিডিওতে থাকা কণ্ঠস্বরগুলোও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি বলে মনে করা হচ্ছে।
অন্যান্য প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, এমন দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে সাধারণত যে ধরনের আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়, এই ঘটনায় তার কোনোটিই পাওয়া যায়নি। ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুসারে, ভিডিওর মধ্যে পানির অস্বাভাবিক গতিবিধি এবং অদ্ভুত বিরতিও নিশ্চিত করে যে এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। এমনকি ভিডিওতে যে পার্কের নাম বলা হয়েছে, সেটিও ভুয়া।

সম্পূর্ণভাবে এআই-নির্মিত
ফোর্বস ম্যাগাজিন ক্লিপটিকে ‘একটি প্রতারণা’ বলে চিহ্নিত করেছে। তারা উল্লেখ করেছে, এমন একটি মর্মান্তিক ঘটনা যদি সত্যিই ঘটতো, তাহলে তা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে শিরোনাম হতো। ভিডিওর দৃশ্য এবং শব্দ সম্ভবত চাঞ্চল্যকর প্রভাব তৈরির জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা টুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। দ্য ইকোনমিক টাইমস উল্লেখ করেছে, এই গল্পের চরিত্র এবং নাম কোনো যাচাইযোগ্য রেকর্ডের সঙ্গে মেলে না। ফলে বলা যেতে পারে যে, পুরো গল্পটি বানোয়াট।
সত্যিকারের দুর্ঘটনার সঙ্গে মিল
এই ধরনের প্রতারণামূলক ভিডিওগুলোতে কিছুটা সত্যের ওপর ভিত্তি করে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের চেষ্টা করা হয়। ভিডিওটি ২০১০ সালে সি ওয়ার্ল্ডে ডন ব্রাঞ্চেউ এবং ২০০৯ সালে অ্যালেক্সিস মার্টিনেজ-এর বাস্তব জীবনের মৃত্যুর ঘটনা স্মরণ করিয়ে দেয়। উভয় প্রশিক্ষকই অরকার আক্রমণে মারা যান। কিন্তু এই ঘটনাগুলো জেসিকা র্যাডক্লিফের গল্পের মতো নয়, কারণ সেগুলো নথিভুক্ত এবং কর্তৃপক্ষের তরফে নিশ্চিত করা হয়েছে।
কেন এই ধরনের প্রতারণা ভাইরাল হয়
বিশেষজ্ঞরা বলেন, একটি ভিডিওর আবেগপূর্ণ তীব্রতা এবং বাস্তবসম্মত উৎপাদন কৌশল এটি ভাইরাল হতে সাহায্য করে। এই ধরনের ক্লিপগুলো বুদ্ধিমান সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণীদের বন্দী করে রাখার নৈতিকতা নিয়ে মানুষের গভীর উদ্বেগগুলোকে কাজে লাগায়। একই সঙ্গে, এগুলো চাঞ্চল্যকর বিষয়বস্তু ব্যবহার করে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে ফ্যাক্টচেকিং হলেও ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যায়।
কথিত জেসিকা র্যাডক্লিফকে নিয়ে অরকার আক্রমণের ভিডিওটি একটি সম্পূর্ণ বানোয়াট। এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি। এই নামে কোনো প্রশিক্ষকের অস্তিত্বেরও কোনো প্রমাণ নেই।

একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। মর্মান্তিক ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দাবি করা হয়, প্যাসিফিক ব্লু মেরিন পার্কে ‘জেসিকা র্যাডক্লিফ’ নামে একজন প্রশিক্ষককে একটি অরকা আক্রমণ করে হত্যা করেছে।
ভিডিওটি টিকটক, ফেসবুক এবং এক্সে ভাইরাল হয়েছে। তবে, একাধিক ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা নিশ্চিত করেছে যে, এই ভিডিওটি সম্পূর্ণ বানোয়াট এবং এর কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই।
ভিডিওতে যা দেখানো হয়েছে
ভাইরাল হওয়া ক্লিপটিতে দেখা যায়, একজন তরুণী একটি অরকার পিঠে দাঁড়িয়ে নাচছেন। দর্শকেরা তখন উল্লাস করছিল। কিন্তু কিছুক্ষণ পর হঠাৎ অরকাটি ওই তরুণীকে আক্রমণ করে পানির নিচে টেনে নিয়ে যায়। ভিডিওটি শেয়ার করা অনেক ব্যবহারকারী দাবি করেছেন, পানির নিচে নিয়ে যাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ওই তরুণীর মৃত্যু হয়।
ঘটনা বা প্রশিক্ষকের কোনো প্রমাণ নেই
ভিডিওটি ব্যাপকভাবে শেয়ার হওয়া সত্ত্বেও, জেসিকা র্যাডক্লিফ নামে একজন প্রশিক্ষক অরকার আক্রমণে মারা গেছেন—এই দাবির পক্ষে কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কর্তৃপক্ষ, মেরিন পার্ক এবং প্রতিষ্ঠিত সংবাদমাধ্যমগুলো জেসিকা র্যাডক্লিফের অস্তিত্ব বা এমন কোনো ঘটনার রেকর্ড খুঁজে পায়নি। দ্য স্টার পত্রিকার মতে, ভিডিওটি কাল্পনিক; এমনকি ভিডিওতে থাকা কণ্ঠস্বরগুলোও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি বলে মনে করা হচ্ছে।
অন্যান্য প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, এমন দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে সাধারণত যে ধরনের আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়, এই ঘটনায় তার কোনোটিই পাওয়া যায়নি। ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুসারে, ভিডিওর মধ্যে পানির অস্বাভাবিক গতিবিধি এবং অদ্ভুত বিরতিও নিশ্চিত করে যে এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। এমনকি ভিডিওতে যে পার্কের নাম বলা হয়েছে, সেটিও ভুয়া।

সম্পূর্ণভাবে এআই-নির্মিত
ফোর্বস ম্যাগাজিন ক্লিপটিকে ‘একটি প্রতারণা’ বলে চিহ্নিত করেছে। তারা উল্লেখ করেছে, এমন একটি মর্মান্তিক ঘটনা যদি সত্যিই ঘটতো, তাহলে তা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে শিরোনাম হতো। ভিডিওর দৃশ্য এবং শব্দ সম্ভবত চাঞ্চল্যকর প্রভাব তৈরির জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা টুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। দ্য ইকোনমিক টাইমস উল্লেখ করেছে, এই গল্পের চরিত্র এবং নাম কোনো যাচাইযোগ্য রেকর্ডের সঙ্গে মেলে না। ফলে বলা যেতে পারে যে, পুরো গল্পটি বানোয়াট।
সত্যিকারের দুর্ঘটনার সঙ্গে মিল
এই ধরনের প্রতারণামূলক ভিডিওগুলোতে কিছুটা সত্যের ওপর ভিত্তি করে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের চেষ্টা করা হয়। ভিডিওটি ২০১০ সালে সি ওয়ার্ল্ডে ডন ব্রাঞ্চেউ এবং ২০০৯ সালে অ্যালেক্সিস মার্টিনেজ-এর বাস্তব জীবনের মৃত্যুর ঘটনা স্মরণ করিয়ে দেয়। উভয় প্রশিক্ষকই অরকার আক্রমণে মারা যান। কিন্তু এই ঘটনাগুলো জেসিকা র্যাডক্লিফের গল্পের মতো নয়, কারণ সেগুলো নথিভুক্ত এবং কর্তৃপক্ষের তরফে নিশ্চিত করা হয়েছে।
কেন এই ধরনের প্রতারণা ভাইরাল হয়
বিশেষজ্ঞরা বলেন, একটি ভিডিওর আবেগপূর্ণ তীব্রতা এবং বাস্তবসম্মত উৎপাদন কৌশল এটি ভাইরাল হতে সাহায্য করে। এই ধরনের ক্লিপগুলো বুদ্ধিমান সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণীদের বন্দী করে রাখার নৈতিকতা নিয়ে মানুষের গভীর উদ্বেগগুলোকে কাজে লাগায়। একই সঙ্গে, এগুলো চাঞ্চল্যকর বিষয়বস্তু ব্যবহার করে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে ফ্যাক্টচেকিং হলেও ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যায়।
কথিত জেসিকা র্যাডক্লিফকে নিয়ে অরকার আক্রমণের ভিডিওটি একটি সম্পূর্ণ বানোয়াট। এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি। এই নামে কোনো প্রশিক্ষকের অস্তিত্বেরও কোনো প্রমাণ নেই।
আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপকমিটির সদস্য সাবরিনা চৌধুরী নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় এমন দাবিতে স্ক্রিনশটটি পোস্ট করে লেখেন, ‘Sabnam Faria কিছুক্ষণ আগে একটা পোস্ট করলেন ৫ মিনিট পর ডিলিট করে দিলেন।’
১৩ নভেম্বর ২০২৪
সম্প্রতি আজকের পত্রিকার নাম ও ফটোকার্ড ব্যবহার করে ‘হরেকৃষ্ণ হরিবোল, দাঁড়িপাল্লা টেনে তোলঃ পরওয়ার’ শিরোনামে একটি ভুয়া ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।
০৩ নভেম্বর ২০২৫
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাতের রাস্তার মাঝখানে এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি এক হাতে একটি স্বচ্ছ বোতল, অপর হাতে বাঘের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি বাঘটির মুখে বোতল গুঁজে দিতেও দেখা যায় তাঁকে।
০২ নভেম্বর ২০২৫
বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যানকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল যুক্ত বাংলাদেশের মানচিত্রসংবলিত পতাকা উপহার দিয়েছেন বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের দাবি সম্পূর্ণ অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত বলে জানিয়েছে সিএ (প্রধান উপদেষ্টা) ফ্যাক্ট চেক।
২৮ অক্টোবর ২০২৫