
আজকের পত্রিকা: জিডিপি অনুযায়ী, শিক্ষা খাতে গত বছরের তুলনায় বরাদ্দ কমেছে। সরকারের শিক্ষার প্রতি বিরূপতার কারণ কী?
কামরুল হাসান মামুন: প্রথম কথা হলো, শিক্ষাকে সরকার কীভাবে দেখে? বাজেটকে তিন ভাগে ব্যাখ্যা করা যায়। প্রথমত, মোট বাজেটের কত শতাংশ? দ্বিতীয়ত, টাকার পরিমাণ কত? তৃতীয়ত, জিডিপির কত শতাংশ? আমরা হাত বা গজ দিয়ে শাড়ি মাপি। শিক্ষাটা কোন স্কেলে মাপব? সারা বিশ্বে এবং ইউনেসকোর পরামর্শমতে, শিক্ষা খাতে বরাদ্দ মাপতে হবে জিডিপি দিয়ে। এবার বাজেটে শিক্ষা খাতে টাকার অঙ্কে বরাদ্দ বেড়েছে। কিন্তু টাকার মানও কমেছে। আমার বেতন ২০১৫ সালের হিসাব মতে, এখন ডলারে হিসাব করলে ৩০০ ডলার কমে গেছে; অর্থাৎ টাকার অঙ্কে বাড়লেও বাজারের ঊর্ধ্বমুখী কারণে টাকার মান কমে গেছে।
গত বছর ১ ডলার ছিল ৮৩ টাকা আর এখন ১২০ টাকা। তাহলে টাকার অঙ্কে বাড়লেও লাভ নেই। এখন যদি বলি টাকার অঙ্কে বেড়েছে মানে বরাদ্দ বেড়েছে, তাহলে কথাটা সঠিক নয়।আবার মানুষকে ধোঁকা দেওয়ার জন্য শিক্ষাকে প্রযুক্তি খাতের সঙ্গে মিলিয়ে বলা হয়।
প্রযুক্তি হলো সম্পূর্ণ স্বাধীন মন্ত্রণালয়। চার বছর আগে ২ দশমিক ১৮ শতাংশ শিক্ষায় বরাদ্দ ছিল। সেটা ক্রমান্বয়ে কমতে কমতে এবার ১ দশমিক ৬৯ শতাংশ হয়েছে। গতবার ছিল ১ দশমিক ৭৬ শতাংশ। তারপরও দেখা গেছে, গতবার মন্ত্রণালয় সব টাকা খরচ করেনি। এ রকম ঘটনায় আমার সন্দেহ হয়েছিল, এটা জাস্টিফাই করার জন্য যে এত টাকা এ খাতে দরকার নেই।
বরাদ্দের অধিকাংশ টাকা কাঠামোগত উন্নয়ন ও বেতনে চলে যায়। আর আমাদের দেশে শিক্ষকদের সবচেয়ে কম বেতন দেওয়া হয়।কয়েক দিন আগে পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশে প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন সর্বনিম্ন। যদি বলি আমরা নেপাল, ভুটান ও পাকিস্তান থেকে উন্নত। এটাই কি তার নমুনা? সুতরাং এ বছর শিক্ষা খাতে বরাদ্দ হলো জাতির সঙ্গে প্রতারণা।
একটা দেশ উন্নত হয় শিক্ষা দিয়ে। আমরা যদি ভালো প্রযুক্তিবিদ, বিজ্ঞানী, ডাক্তার ও জ্ঞানী তৈরি করতে পারি, তাহলে দেশের অবস্থা পরিবর্তিত হয়ে যাবে। আমরা যদি মানুষ তৈরি না করে শুধু অবকাঠামো উন্নয়নের দিকে নজর দিই, সেটা কোনো সঠিক কাজ হবে না। আমরা আমাদের মূল জায়গাটাতেই হাত দিইনি। যখন অবকাঠামো উন্নয়নের দিকে নজর দিই, সেটা থেকে বোঝা যায় সরকার সত্যিকার শিক্ষার প্রতি আগ্রহী নয়। তা যদি না হয়, তাহলে সরকার কেন শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়ায় না?
আজকের পত্রিকা: ইউনেসকোর পরামর্শ, একটি দেশের মোট জিডিপির ৬ শতাংশ শিক্ষা খাতে ব্যয় করা উচিত। কিন্তু সরকার এ বরাদ্দ দেয় না কেন?
কামরুল হাসান মামুন: শিক্ষার মান উন্নয়নের প্রধান চাবিকাঠি কী? যদি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষককে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে আসা হয় আর বিপরীতভাবে এখানকার শিক্ষককে ওখানে নিয়ে যাওয়া হয়, তখন কিন্তু ঢাকায় হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে যাবে। তখন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মান অনেক ওপরে চলে যাবে। এ কথা দিয়ে বোঝাতে চাইছি, যেকোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মান আসলে শিক্ষকদের মান দিয়ে বাড়ে। আর শিক্ষকদের মান আমরা কীভাবে বাড়াতে পারি? এ জন্য শিক্ষকতা পেশাকে উন্নত করতে হবে। বাংলাদেশের প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষকদের পদ হলো রাষ্ট্রের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীর পর্যায়ে। আর তাঁরা এ পর্যায়ের কর্মচারীর মতো বেতন পান; অর্থাৎ যাঁরা অফিস-আদালতে কেরানির কাজ করেন, সেই লেভেলে শিক্ষকদের বেতন দেওয়া হয়। তাহলে ওই লেভেলে বেতন দিলে এ রকম বাজেটেই যথেষ্ট।
এ রাষ্ট্র তো চায় না শিক্ষকতা পেশাটা আরও উন্নত হোক। কারণ, এ পেশা যত উন্নত হবে, তত ভালো কারিগর পাব এবং ভালো কারিগর পেলে আমরা ভালো মানুষ তৈরি করতে পারব। যখন শিক্ষিত ও সচেতন মানুষ তৈরি হবে, তখন বড় দলগুলো তাদের পার্টির সমাবেশ করার জন্য ট্রাকে করে মানুষ আনতে পারবে না। আসলে সরকার চায় এ দেশের মানুষ প্রকৃত শিক্ষায় মানুষ না হোক। এ কারণে এত কম পরিমাণ বরাদ্দ দেয়। তার মানে কম বেতনে কোনোমতে চালিয়ে নেওয়া।
ভিয়েতনামে যেভাবে বৈদেশিক মুদ্রা বাড়ছে, সেভাবে তো আমাদের দেশে বাড়ছে না। ১২ বছর আগে সে দেশের একটি বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে এক হাজারের মধ্যে ছিল না। কিন্তু এখন সেটা পাঁচ শর মধ্যে চলে এসেছে। কারণ, তারা ১০ বছর ধরে জিডিপির ৪ দশমিক ৫ শতাংশের বেশি বরাদ্দ দিয়েছে এখাতে।
এ জন্য আমরা র্যাঙ্কিংয়ে ও শিক্ষায় ভালো করতে পারছি না। আর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে জাতীয় প্রতারণা করছি। যেখানে অনার্স ও মাস্টার্স পড়ানোর জন্য ভালো শিক্ষক নেই, সেখানে আমরা এসব পড়াচ্ছি। কোনোরকমে এক-দুজন শিক্ষক দিয়ে চালিয়ে নেওয়া হচ্ছে। তাই সত্যিকারের শিক্ষাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হলে এই বরাদ্দ দিয়ে হবে না। আমাদের জনসংখ্যাকে জনসম্পদে পরিণত করার একটা উপায় হলো শিক্ষা।
আজকের পত্রিকা: শিক্ষা বাজেটের বরাদ্দ কোন খাতে ব্যয় হলে, আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়ন হবে?
কামরুল হাসান মামুন: এটা হলো লিডারশিপের বিষয়; সরকার যখন ফিলোসফিক্যালি ভাববে, আমরা শিক্ষাব্যবস্থাকে ঠিক করতে চাই। প্রথম অগ্রাধিকার পাবে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়ানো। দ্বিতীয় অগ্রাধিকার পাবে, শিক্ষকদের স্বতন্ত্র বেতন স্কেল দেওয়া। আর বরাদ্দের বড় অংশ যাবে বেতনে। এমন বেতন দিতে হবে, যাতে শিক্ষকদের প্রাইভেট পড়াতে না হয়। ফলে শিক্ষকেরা পুরো মনোযোগ দিয়ে ক্লাসে পড়াতে পারবেন।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো শিক্ষকতা পেশাটাকে আকর্ষণীয় করতে হবে। বিসিএস পরীক্ষা দিয়ে কোনো শিক্ষার্থী যখন শিক্ষা ক্যাডার পান, তখন তাঁকে অনেকেই অভিনন্দন জানায় না। আর তিনি ও তাঁর মা-বাবাও খুশি হন না। পরেরবার আবার পরীক্ষা দেন প্রশাসন, পুলিশ বা ট্যাক্স ক্যাডার পাওয়ার জন্য। যাঁরা ভালো ছাত্র, তাঁরা এ পেশায় আসতে চান না।
এ জন্য আকর্ষণীয় বেতন স্কেল দিতে হবে। আমাদের দেশের হাজার হাজার ছেলেমেয়ে বিদেশে যায়, কিন্তু ভালো বেতন দিলে তারা সেখান থেকে চলে আসতে উৎসাহিত হবে। তারা কিন্তু বিদেশে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। বিশ্বের অনেক দেশের সরকার কোটি কোটি টাকা খরচ করে বিদেশে পিএইচডি করানোর জন্য পাঠায়। আর আমাদের ছেলেমেয়েরা বৃত্তি নিয়ে বিদেশে পড়তে যায়। আমরা যদি এ পেশা উন্নত করি, তাহলে তারা চলে আসবে। আর আমরা বাড়তি টাকা খরচ না করে রেডিমেড মানুষ পাব। বিদেশে পড়া ছেলেমেয়েরা যখন দেশে চলে আসবে, সেটাকে ‘ব্রেইন গেইন’ বলা হয়। আমাদের এখন ব্রেইন ড্রেন হচ্ছে। এটাকে রিভার্স করতে হবে। আমরা যদি ব্রেইন গেইন করতে পারি, তাহলে মাত্র পাঁচ বছর লাগবে এ দেশের চেহারা পরিবর্তন করতে।
আজকের পত্রিকা: নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। এ জন্য শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ জরুরি। শিক্ষক প্রশিক্ষণের প্রতি এত অবহেলা কেন?
কামরুল হাসান মামুন: আমাদের শিক্ষাক্রমে ইংরেজি মাধ্যমে যে সিলেবাস আছে, সেটা মোটামুটি ইংল্যান্ডের সমপর্যায়ের। আমাদের ছেলেমেয়েদের প্রাইভেট ও কোচিংয়ে পড়তে হয়। ইংল্যান্ডে কিন্তু এসব করতে হয় না। কারণ, সেখানে সেই মানের শিক্ষক থাকার ফলে ক্লাসেই সব পড়া হয়ে যায়। আর আমাদের দেশে ভালো মানের বেতন না দেওয়ার কারণে ভালো মানের শিক্ষক নেই। সে কারণে ক্লাসে পড়াশোনা ঠিকমতো হয় না। শিক্ষকেরা ফাঁকিবাজি করেন।
শিক্ষাক্রম হলো একটা আবরণ। মোড়ক পরিবর্তন করলে ভেতরের পণ্যের কোনো পরিবর্তন হয় না। সে কারণে শুধু শিক্ষাক্রম করলে হবে না। আগে ভালো মানের শিক্ষকের ব্যবস্থা করতে হবে। তারপর আসে প্রশিক্ষণের ব্যাপার। যেমন আমি যদি একটা রিকশাওয়ালাকে যতই ভালো মানের প্রশিক্ষণ দিই না কেন, তাঁর দ্বারা ভালো মানের শিক্ষা পাওয়া সম্ভব হবে না।
প্রথম কথা হলো, শুরুতেই মেধাবীদের এ পেশায় আনতে হবে। তারপর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রশিক্ষণ হলো সেকেন্ডারি ব্যাপার। আমাদের দেশে এখন যা করা হচ্ছে, তারা বুঝতেই পারে না শিক্ষাকে কীভাবে সত্যিকার লাইনে আনতে হবে। তারা মনে করে, কারিকুলাম পরিবর্তন করলেই শিক্ষার উন্নয়ন হবে। কারিকুলাম পরিবর্তন হলো প্রজেক্টের মতো। এখানে অনেক লোক যুক্ত থাকবেন, কোটি কোটি টাকার লেনদেন হবে। গত ১০-২০ বছরে বাংলা মাধ্যমে কারিকুলাম ও পরীক্ষা পদ্ধতি নিয়ে যে পরীক্ষা-নিরীক্ষা হলো এবং শিক্ষার্থীদের যেভাবে গিনিপিক বানানো হলো, এটা একটা নজিরবিহীন ঘটনা। যেহেতু এটাতে লাখ লাখ শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রভাব পড়ে, এ জন্য পৃথিবীর কোনো দেশে কারিকুলাম ও পরীক্ষা পদ্ধতি সহজে পরিবর্তন করতে চায় না। সর্বোচ্চ ৫ থেকে ১০ শতাংশ করা হয়।
পৃথিবীতে এমন কোনো দেশ নেই যেখানে শতভাগ পরিবর্তন হয়েছে। কারণ এই পরিবর্তনের ফলে শিক্ষার্থীর কী ধরনের ক্ষতি হবে, আমরা সেটা জানি না। পরিবর্তন করতে হয় অল্প অল্প করে; যাতে ক্ষতিটা পুষিয়ে নেওয়া যায়। কার মাথা থেকে এ ধরনের অদ্ভুত ভাবনা এল যে পুরো কারিকুলাম ও পরীক্ষা পদ্ধতি পরিবর্তন করতে হবে! পৃথিবীর কোনো দেশে এ রকম উদাহরণ নেই।
আজকের পত্রিকা: সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
কামরুল হাসান মামুন: আপনাকেও ধন্যবাদ।

আজকের পত্রিকা: জিডিপি অনুযায়ী, শিক্ষা খাতে গত বছরের তুলনায় বরাদ্দ কমেছে। সরকারের শিক্ষার প্রতি বিরূপতার কারণ কী?
কামরুল হাসান মামুন: প্রথম কথা হলো, শিক্ষাকে সরকার কীভাবে দেখে? বাজেটকে তিন ভাগে ব্যাখ্যা করা যায়। প্রথমত, মোট বাজেটের কত শতাংশ? দ্বিতীয়ত, টাকার পরিমাণ কত? তৃতীয়ত, জিডিপির কত শতাংশ? আমরা হাত বা গজ দিয়ে শাড়ি মাপি। শিক্ষাটা কোন স্কেলে মাপব? সারা বিশ্বে এবং ইউনেসকোর পরামর্শমতে, শিক্ষা খাতে বরাদ্দ মাপতে হবে জিডিপি দিয়ে। এবার বাজেটে শিক্ষা খাতে টাকার অঙ্কে বরাদ্দ বেড়েছে। কিন্তু টাকার মানও কমেছে। আমার বেতন ২০১৫ সালের হিসাব মতে, এখন ডলারে হিসাব করলে ৩০০ ডলার কমে গেছে; অর্থাৎ টাকার অঙ্কে বাড়লেও বাজারের ঊর্ধ্বমুখী কারণে টাকার মান কমে গেছে।
গত বছর ১ ডলার ছিল ৮৩ টাকা আর এখন ১২০ টাকা। তাহলে টাকার অঙ্কে বাড়লেও লাভ নেই। এখন যদি বলি টাকার অঙ্কে বেড়েছে মানে বরাদ্দ বেড়েছে, তাহলে কথাটা সঠিক নয়।আবার মানুষকে ধোঁকা দেওয়ার জন্য শিক্ষাকে প্রযুক্তি খাতের সঙ্গে মিলিয়ে বলা হয়।
প্রযুক্তি হলো সম্পূর্ণ স্বাধীন মন্ত্রণালয়। চার বছর আগে ২ দশমিক ১৮ শতাংশ শিক্ষায় বরাদ্দ ছিল। সেটা ক্রমান্বয়ে কমতে কমতে এবার ১ দশমিক ৬৯ শতাংশ হয়েছে। গতবার ছিল ১ দশমিক ৭৬ শতাংশ। তারপরও দেখা গেছে, গতবার মন্ত্রণালয় সব টাকা খরচ করেনি। এ রকম ঘটনায় আমার সন্দেহ হয়েছিল, এটা জাস্টিফাই করার জন্য যে এত টাকা এ খাতে দরকার নেই।
বরাদ্দের অধিকাংশ টাকা কাঠামোগত উন্নয়ন ও বেতনে চলে যায়। আর আমাদের দেশে শিক্ষকদের সবচেয়ে কম বেতন দেওয়া হয়।কয়েক দিন আগে পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশে প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন সর্বনিম্ন। যদি বলি আমরা নেপাল, ভুটান ও পাকিস্তান থেকে উন্নত। এটাই কি তার নমুনা? সুতরাং এ বছর শিক্ষা খাতে বরাদ্দ হলো জাতির সঙ্গে প্রতারণা।
একটা দেশ উন্নত হয় শিক্ষা দিয়ে। আমরা যদি ভালো প্রযুক্তিবিদ, বিজ্ঞানী, ডাক্তার ও জ্ঞানী তৈরি করতে পারি, তাহলে দেশের অবস্থা পরিবর্তিত হয়ে যাবে। আমরা যদি মানুষ তৈরি না করে শুধু অবকাঠামো উন্নয়নের দিকে নজর দিই, সেটা কোনো সঠিক কাজ হবে না। আমরা আমাদের মূল জায়গাটাতেই হাত দিইনি। যখন অবকাঠামো উন্নয়নের দিকে নজর দিই, সেটা থেকে বোঝা যায় সরকার সত্যিকার শিক্ষার প্রতি আগ্রহী নয়। তা যদি না হয়, তাহলে সরকার কেন শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়ায় না?
আজকের পত্রিকা: ইউনেসকোর পরামর্শ, একটি দেশের মোট জিডিপির ৬ শতাংশ শিক্ষা খাতে ব্যয় করা উচিত। কিন্তু সরকার এ বরাদ্দ দেয় না কেন?
কামরুল হাসান মামুন: শিক্ষার মান উন্নয়নের প্রধান চাবিকাঠি কী? যদি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষককে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে আসা হয় আর বিপরীতভাবে এখানকার শিক্ষককে ওখানে নিয়ে যাওয়া হয়, তখন কিন্তু ঢাকায় হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে যাবে। তখন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মান অনেক ওপরে চলে যাবে। এ কথা দিয়ে বোঝাতে চাইছি, যেকোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মান আসলে শিক্ষকদের মান দিয়ে বাড়ে। আর শিক্ষকদের মান আমরা কীভাবে বাড়াতে পারি? এ জন্য শিক্ষকতা পেশাকে উন্নত করতে হবে। বাংলাদেশের প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষকদের পদ হলো রাষ্ট্রের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীর পর্যায়ে। আর তাঁরা এ পর্যায়ের কর্মচারীর মতো বেতন পান; অর্থাৎ যাঁরা অফিস-আদালতে কেরানির কাজ করেন, সেই লেভেলে শিক্ষকদের বেতন দেওয়া হয়। তাহলে ওই লেভেলে বেতন দিলে এ রকম বাজেটেই যথেষ্ট।
এ রাষ্ট্র তো চায় না শিক্ষকতা পেশাটা আরও উন্নত হোক। কারণ, এ পেশা যত উন্নত হবে, তত ভালো কারিগর পাব এবং ভালো কারিগর পেলে আমরা ভালো মানুষ তৈরি করতে পারব। যখন শিক্ষিত ও সচেতন মানুষ তৈরি হবে, তখন বড় দলগুলো তাদের পার্টির সমাবেশ করার জন্য ট্রাকে করে মানুষ আনতে পারবে না। আসলে সরকার চায় এ দেশের মানুষ প্রকৃত শিক্ষায় মানুষ না হোক। এ কারণে এত কম পরিমাণ বরাদ্দ দেয়। তার মানে কম বেতনে কোনোমতে চালিয়ে নেওয়া।
ভিয়েতনামে যেভাবে বৈদেশিক মুদ্রা বাড়ছে, সেভাবে তো আমাদের দেশে বাড়ছে না। ১২ বছর আগে সে দেশের একটি বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে এক হাজারের মধ্যে ছিল না। কিন্তু এখন সেটা পাঁচ শর মধ্যে চলে এসেছে। কারণ, তারা ১০ বছর ধরে জিডিপির ৪ দশমিক ৫ শতাংশের বেশি বরাদ্দ দিয়েছে এখাতে।
এ জন্য আমরা র্যাঙ্কিংয়ে ও শিক্ষায় ভালো করতে পারছি না। আর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে জাতীয় প্রতারণা করছি। যেখানে অনার্স ও মাস্টার্স পড়ানোর জন্য ভালো শিক্ষক নেই, সেখানে আমরা এসব পড়াচ্ছি। কোনোরকমে এক-দুজন শিক্ষক দিয়ে চালিয়ে নেওয়া হচ্ছে। তাই সত্যিকারের শিক্ষাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হলে এই বরাদ্দ দিয়ে হবে না। আমাদের জনসংখ্যাকে জনসম্পদে পরিণত করার একটা উপায় হলো শিক্ষা।
আজকের পত্রিকা: শিক্ষা বাজেটের বরাদ্দ কোন খাতে ব্যয় হলে, আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়ন হবে?
কামরুল হাসান মামুন: এটা হলো লিডারশিপের বিষয়; সরকার যখন ফিলোসফিক্যালি ভাববে, আমরা শিক্ষাব্যবস্থাকে ঠিক করতে চাই। প্রথম অগ্রাধিকার পাবে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়ানো। দ্বিতীয় অগ্রাধিকার পাবে, শিক্ষকদের স্বতন্ত্র বেতন স্কেল দেওয়া। আর বরাদ্দের বড় অংশ যাবে বেতনে। এমন বেতন দিতে হবে, যাতে শিক্ষকদের প্রাইভেট পড়াতে না হয়। ফলে শিক্ষকেরা পুরো মনোযোগ দিয়ে ক্লাসে পড়াতে পারবেন।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো শিক্ষকতা পেশাটাকে আকর্ষণীয় করতে হবে। বিসিএস পরীক্ষা দিয়ে কোনো শিক্ষার্থী যখন শিক্ষা ক্যাডার পান, তখন তাঁকে অনেকেই অভিনন্দন জানায় না। আর তিনি ও তাঁর মা-বাবাও খুশি হন না। পরেরবার আবার পরীক্ষা দেন প্রশাসন, পুলিশ বা ট্যাক্স ক্যাডার পাওয়ার জন্য। যাঁরা ভালো ছাত্র, তাঁরা এ পেশায় আসতে চান না।
এ জন্য আকর্ষণীয় বেতন স্কেল দিতে হবে। আমাদের দেশের হাজার হাজার ছেলেমেয়ে বিদেশে যায়, কিন্তু ভালো বেতন দিলে তারা সেখান থেকে চলে আসতে উৎসাহিত হবে। তারা কিন্তু বিদেশে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। বিশ্বের অনেক দেশের সরকার কোটি কোটি টাকা খরচ করে বিদেশে পিএইচডি করানোর জন্য পাঠায়। আর আমাদের ছেলেমেয়েরা বৃত্তি নিয়ে বিদেশে পড়তে যায়। আমরা যদি এ পেশা উন্নত করি, তাহলে তারা চলে আসবে। আর আমরা বাড়তি টাকা খরচ না করে রেডিমেড মানুষ পাব। বিদেশে পড়া ছেলেমেয়েরা যখন দেশে চলে আসবে, সেটাকে ‘ব্রেইন গেইন’ বলা হয়। আমাদের এখন ব্রেইন ড্রেন হচ্ছে। এটাকে রিভার্স করতে হবে। আমরা যদি ব্রেইন গেইন করতে পারি, তাহলে মাত্র পাঁচ বছর লাগবে এ দেশের চেহারা পরিবর্তন করতে।
আজকের পত্রিকা: নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। এ জন্য শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ জরুরি। শিক্ষক প্রশিক্ষণের প্রতি এত অবহেলা কেন?
কামরুল হাসান মামুন: আমাদের শিক্ষাক্রমে ইংরেজি মাধ্যমে যে সিলেবাস আছে, সেটা মোটামুটি ইংল্যান্ডের সমপর্যায়ের। আমাদের ছেলেমেয়েদের প্রাইভেট ও কোচিংয়ে পড়তে হয়। ইংল্যান্ডে কিন্তু এসব করতে হয় না। কারণ, সেখানে সেই মানের শিক্ষক থাকার ফলে ক্লাসেই সব পড়া হয়ে যায়। আর আমাদের দেশে ভালো মানের বেতন না দেওয়ার কারণে ভালো মানের শিক্ষক নেই। সে কারণে ক্লাসে পড়াশোনা ঠিকমতো হয় না। শিক্ষকেরা ফাঁকিবাজি করেন।
শিক্ষাক্রম হলো একটা আবরণ। মোড়ক পরিবর্তন করলে ভেতরের পণ্যের কোনো পরিবর্তন হয় না। সে কারণে শুধু শিক্ষাক্রম করলে হবে না। আগে ভালো মানের শিক্ষকের ব্যবস্থা করতে হবে। তারপর আসে প্রশিক্ষণের ব্যাপার। যেমন আমি যদি একটা রিকশাওয়ালাকে যতই ভালো মানের প্রশিক্ষণ দিই না কেন, তাঁর দ্বারা ভালো মানের শিক্ষা পাওয়া সম্ভব হবে না।
প্রথম কথা হলো, শুরুতেই মেধাবীদের এ পেশায় আনতে হবে। তারপর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রশিক্ষণ হলো সেকেন্ডারি ব্যাপার। আমাদের দেশে এখন যা করা হচ্ছে, তারা বুঝতেই পারে না শিক্ষাকে কীভাবে সত্যিকার লাইনে আনতে হবে। তারা মনে করে, কারিকুলাম পরিবর্তন করলেই শিক্ষার উন্নয়ন হবে। কারিকুলাম পরিবর্তন হলো প্রজেক্টের মতো। এখানে অনেক লোক যুক্ত থাকবেন, কোটি কোটি টাকার লেনদেন হবে। গত ১০-২০ বছরে বাংলা মাধ্যমে কারিকুলাম ও পরীক্ষা পদ্ধতি নিয়ে যে পরীক্ষা-নিরীক্ষা হলো এবং শিক্ষার্থীদের যেভাবে গিনিপিক বানানো হলো, এটা একটা নজিরবিহীন ঘটনা। যেহেতু এটাতে লাখ লাখ শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রভাব পড়ে, এ জন্য পৃথিবীর কোনো দেশে কারিকুলাম ও পরীক্ষা পদ্ধতি সহজে পরিবর্তন করতে চায় না। সর্বোচ্চ ৫ থেকে ১০ শতাংশ করা হয়।
পৃথিবীতে এমন কোনো দেশ নেই যেখানে শতভাগ পরিবর্তন হয়েছে। কারণ এই পরিবর্তনের ফলে শিক্ষার্থীর কী ধরনের ক্ষতি হবে, আমরা সেটা জানি না। পরিবর্তন করতে হয় অল্প অল্প করে; যাতে ক্ষতিটা পুষিয়ে নেওয়া যায়। কার মাথা থেকে এ ধরনের অদ্ভুত ভাবনা এল যে পুরো কারিকুলাম ও পরীক্ষা পদ্ধতি পরিবর্তন করতে হবে! পৃথিবীর কোনো দেশে এ রকম উদাহরণ নেই।
আজকের পত্রিকা: সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
কামরুল হাসান মামুন: আপনাকেও ধন্যবাদ।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

ড. কামরুল হাসান মামুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক। তিনি লন্ডনের ব্রুনেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ওআরএস স্কলারশিপ নিয়ে পিএইচডি করেন। জার্মানির বিখ্যাত হামবোল্ট ফেলোশিপ নিয়ে পটসডাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পোস্ট ডক্টরাল গবেষক হিসেবে কাজ করেন।
৩০ জুন ২০২৪
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

ড. কামরুল হাসান মামুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক। তিনি লন্ডনের ব্রুনেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ওআরএস স্কলারশিপ নিয়ে পিএইচডি করেন। জার্মানির বিখ্যাত হামবোল্ট ফেলোশিপ নিয়ে পটসডাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পোস্ট ডক্টরাল গবেষক হিসেবে কাজ করেন।
৩০ জুন ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ড. কামরুল হাসান মামুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক। তিনি লন্ডনের ব্রুনেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ওআরএস স্কলারশিপ নিয়ে পিএইচডি করেন। জার্মানির বিখ্যাত হামবোল্ট ফেলোশিপ নিয়ে পটসডাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পোস্ট ডক্টরাল গবেষক হিসেবে কাজ করেন।
৩০ জুন ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

ড. কামরুল হাসান মামুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক। তিনি লন্ডনের ব্রুনেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ওআরএস স্কলারশিপ নিয়ে পিএইচডি করেন। জার্মানির বিখ্যাত হামবোল্ট ফেলোশিপ নিয়ে পটসডাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পোস্ট ডক্টরাল গবেষক হিসেবে কাজ করেন।
৩০ জুন ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫