
আজকের পত্রিকা: জুলাই অভ্যুত্থানের পর থেকে সংবিধান সংস্কারের প্রসঙ্গ উঠেছে। আমাদের সংবিধান সংস্কার কেন জরুরি?
হাসনাত কাইয়ুম: অভ্যুত্থানের অনেক আগে থেকে আমরা এ কথাটি বলে আসছি। বাংলাদেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সংকট যা-ই বলুন না কেন, সব সংকটের শিকড়ের ব্যাপার হলো সংবিধানের ক্ষমতাকাঠামো। এ সংবিধান যেসব লক্ষ্য-উদ্দেশ্যকে নির্ধারণ করেছিল, একাত্তর সালের মুক্তিযুদ্ধের যে ঘোষণাপত্র ছিল—সবকিছুর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে আছে এ ক্ষমতাকাঠামো। বাংলাদেশের সংবিধানের মূল নীতি মূলত চারটি। এর বাইরে আরও অনেক নীতি আছে। নতুন রাষ্ট্র পত্তনের যে দর্শন ও লক্ষ্য-উদ্দেশ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল, সেসব বাস্তবায়নের জন্য যে ধরনের ক্ষমতাকাঠামো দরকার, সংবিধানে আছে তার বিপরীত। সংবিধানের মূলনীতিতে ‘গণতন্ত্র’-এর কথা বলা হয়েছে, কিন্তু রাষ্ট্রের সব ক্ষমতা এক ব্যক্তি বা একটি পদে সোপর্দ করা হয়েছে। সেখানে কোনো ধরনের জবাবদিহির ব্যবস্থা রাখা হয়নি।
আরেক মূলনীতি হিসেবে ‘সমাজতন্ত্র’ আছে। তবে লুণ্ঠন, চাঁদাবাজি, লুটপাট, পাচার—সবকিছু করা যাবে, কিন্তু কেউ এতে বাধা দিতে পারবে না। সে জন্য আমরা বলছি, বাংলাদেশের মানুষের যে আকাঙ্ক্ষা ছিল, মুক্তিযুদ্ধের যে অঙ্গীকার ছিল, সেটা বাস্তবায়ন করতে হলে সংবিধানের ক্ষমতাকাঠামোকে যেভাবে বিন্যস্ত করা হয়েছে, সেটাকে পরিবর্তন করে মুক্তিযুদ্ধের আশা-আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন-উপযোগী ক্ষমতাকাঠামো গড়ে তুলতে হবে। বিগত ৫৩ বছরে এটা করা হয়নি। জনগণ বহু আন্দোলন করেছে, বিজয়ী হয়েছে কিন্তু বিজয়ের ফল বেহাত হয়ে গেছে। জনগণের সম্পদ, স্বাধীনতা, সম্মান লুণ্ঠিত হয়েছে। এর সবই হয়েছে আইনের মাধ্যমে, সংবিধানের ক্ষমতা দিয়ে। তাই সংবিধানের এই অন্যায্য ক্ষমতাকে পরিবর্তন করতে হবে। সংবিধান সংশোধন করে করা যাবে না, আবার এটা করার জন্য আপাতত পুরো সংবিধান ফেলে দেওয়ারও দরকার নেই। সংবিধানের ক্ষমতা অংশটাকে আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের উপযোগী করে পুনর্বিন্যাস করলেই চলে। এ পরিবর্তন করাটাকেই আমরা সংবিধানের সংস্কার বলি। এটাই এখানকার মানুষের সমস্যা সমাধানের পথে প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
আজকের পত্রিকা: অগণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার উত্থানের মূলে সংবিধান। অন্যদিকে ৭২-এর সংবিধানে ফেরত যাওয়ার কথাও কোনো কোনো দল বা ব্যক্তি বলে থাকেন। সংবিধান নিয়ে এই ভিন্ন ভিন্ন অবস্থান সম্পর্কে আপনার মতামত কী?
হাসনাত কাইয়ুম: এগুলো পুরোনো তর্ক। আমরা আমাদের ‘সংবিধান পর্যালোচনা’ বইয়ে এসব বক্তব্যের অসারতা দেখিয়েছি। দেশের যে নির্বাচনব্যবস্থা, সেটা ’৭২ সাল থেকেই কাজ করছে না। যে ক্ষমতায় থাকবে, তার মতো করেই নির্বাচনটা হবে। আর ’৭২-এর সংবিধানে ফিরে গেলে তো ১২৩ (৩) অক্ষতই থাকবে। এ বিধানটা হলো, যে ক্ষমতায় থাকবে, তারা ক্ষমতায় থেকে নির্বাচন করতে পারবে। যে ক্ষমতায় থাকে, তার কাছে রাষ্ট্রের সব ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত থাকে। এভাবে হলে তো নির্বাচনের কোনো অর্থ থাকে না। ’৭২-এর সংবিধানে ফেরত গেলে যদি এ সমস্যার সমাধান হতো, তাহলে আমাদের কোনো আপত্তি থাকত না। এ তর্কটা তার প্রাসঙ্গিকতা হারিয়ে ফেলেছে।যাঁরা একসময় এ আন্দোলনটা করতেন, তাঁরাই সেখান থেকে সরে এসেছেন। ড. কামাল হোসেন নিজেই স্বীকার করেছেন, এ সংবিধানের পরিবর্তন দরকার।
আজকের পত্রিকা: বাংলাদেশের সংবিধানে কী কী গুরুতর ত্রুটি আছে, যেগুলো রাষ্ট্র-চরিত্রকে স্বৈরাচারী ও গণবিরোধী করে তুলছে বারবার?
হাসনাত কাইয়ুম: আপাতত তিনটা বিষয় নিয়ে কথা বলা যায়। কেউ স্বৈরতন্ত্রী মানে, তাঁর ইচ্ছাই তন্ত্র, তিনি যা মনস্থ করেন তা-ই করতে পারেন, আইন-কানুন তেমন করেই তৈরি হয় বা থাকে, তাঁকে কৃতকর্মের জন্য কারও কাছে জবাবদিহি করতে হয় না। সারা পৃথিবীতে যেসব দেশে ন্যূনতম গণতন্ত্র আছে, সেসব দেশে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা বদলের একটা পদ্ধতি থাকে, সেটা নির্বাচন। কিন্তু বাংলাদেশে যাতে নির্বাচনের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতার হাতবদল হতে না পারে, সে ব্যবস্থা সাংবিধানিকভাবেই করা হয়েছে ১৯৭২ সাল থেকে।বিষয়টা এ রকম না যে সেটা এরশাদ ক্ষমতায় এসে করে দিয়েছেন। এটা সাংবিধানিক কাঠামোর মাধ্যমেই করা হয়েছে।
এ সংবিধানে প্রধানমন্ত্রীর জবাবদিহির কোনো ব্যবস্থা নেই। প্রধানমন্ত্রীকে ‘ইমপিচ’ বা অপসারণ করার কোনো ব্যবস্থা সংবিধানের কোথাও নেই। ৭০ অনুচ্ছেদে বরং উল্টোটা আছে, প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধাচরণ করলে, বিরুদ্ধে ভোট দিলে, সেই ব্যক্তির সংসদ সদস্য পদ বাতিল হয়ে যাবে। এই যে ক্ষমতার কেন্দ্রীভবন—বিচার বিভাগ, আইন বিভাগ বা সংসদ এবং প্রশাসন বা সরকার, এই তিনটাকে যখন একজনের ইচ্ছাধীন করা হয়, যেসব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান আছে সেগুলোও যখন বন্দী করা হয়, তখন এই ক্ষমতাই স্বেচ্ছাচারিতার জন্ম দেয়, গণতন্ত্র বিকাশের পথে প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়ায়। জবাবদিহিহীন, ক্ষমতার কেন্দ্রীভবন সবকিছুই বাধা। বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী সংবিধানের ঊর্ধ্বে, সংবিধান তাঁর অধীনে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় কেউ সংবিধান বা আইনের ঊর্ধ্বে থাকতে পারেন না। থাকলে দেশে কোনো প্রতিষ্ঠান থাকতে পারে না। প্রধানমন্ত্রীর হাতে যদি তিন ভাগের দুই ভাগ সংসদ সদস্য থাকেন, তাহলে তাঁর কতটা ক্ষমতা—সেটা তিনি নিজেও জানেন না। তাঁর যখন যেটা ইচ্ছে, তিনি তখন সেটা করতে পারবেন। এ ধরনের ক্ষমতাতন্ত্র কখনো গণতন্ত্রের সঙ্গে যেতে পারে না। এভাবে একজনের কাছে ক্ষমতা দেওয়া, যেটা ’৭২ সাল থেকে চলে আসছে, বাংলাদেশের রাজনীতির মূল সংকটের প্রাণভোমরা এটাই।
আজকের পত্রিকা: শুধু কি সংবিধানের সংস্কার করলেই সমস্যার সমাধান হবে, নাকি রাজনৈতিক দলেরও সংস্কার দরকার।
হাসনাত কাইয়ুম: অবশ্যই রাজনৈতিক দলেরও সংস্কার দরকার। সেই সঙ্গে রাষ্ট্র পরিচালনার আইনকানুনসহ অনেক কিছুর সংস্কার দরকার। কিন্তু আমাদের কোনো না কোনো পয়েন্ট থেকে শুরু করতে হবে এবং সে শুরুটা এমন হতে হবে, যেটা অন্যান্য সংস্কারের পথকে সহজ ও সুগম করবে। যেহেতু ক্ষমতার বৈধ এবং লিখিত উৎস হলো সংবিধান, সেহেতু সংবিধান দিয়েই সংস্কার শুরু করতে হবে। আগে রাজনৈতিক দলের সংস্কার করে, সংবিধান সংস্কারে পৌঁছা কঠিন হবে বা প্রায় অসম্ভব এই কারণে যে সংবিধান তথা রাষ্ট্র বা সরকার একপদকেন্দ্রিক থাকলে সেই রাষ্ট্র বা সরকার পরিচালনা করতে একপদকেন্দ্রিক দলই লাগবে, দল গণতান্ত্রিক হলে তারা সরকার টিকিয়ে রাখতে পারবে না। বাংলাদেশে যেসব রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় ছিল, রাষ্ট্রে এক ব্যক্তি যেমন প্রধান, তেমনি সেসব দলেও এক ব্যক্তিই প্রধান। অবশ্যই রাজনৈতিক দলের সংস্কার লাগবে।
আজকের পত্রিকা: রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন প্রতিষ্ঠার প্রথম থেকে রাষ্ট্র ও সংবিধান সংস্কারের কথা বলে আসছে। অন্যদের সংস্কারের সঙ্গে আপনাদের সংস্কারের পার্থক্য কোথায়?
হাসনাত কাইয়ুম: আমরা আসলে পার্থক্যের জায়গায় কাউকে দেখতে চাই না। আমরা দীর্ঘদিন একা একাই বলে আসছি। এখন দেশের বেশির ভাগ মানুষ বলছেন। আমরা এত দিন শুধু রাষ্ট্রের সংস্কারের প্রয়োজনের কথা বলে আসছি, এখন দেশবাসী সেই প্রয়োজনটা উপলব্ধি করছেন এবং প্রয়োজনীয়তা মেনে নিয়ে সংস্কার করার দাবি তুলছেন। কিন্তু রাষ্ট্রের কোন কোন ক্ষেত্র সংস্কার করতে হবে এবং কোন পথে সংস্কার করা হলে সেটা টিকে থাকবে—এই বিষয়গুলো নিয়ে তেমন আলোচনা হয়নি, তাই এ বিষয়ে ঐকমত্যও গড়ে ওঠেনি।যখন অধিকাংশ মানুষ এ দিকগুলো নিয়ে আলোচনা করবে, ঐকমত্যে পৌঁছাবে, তখনই সেটা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে। সমাজের মধ্যে এ আলাপটা ছড়িয়ে পড়ুক। আর এই আলাপটা করার জন্য বাংলাদেশে এখন একটা উর্বর পরিবেশ তৈরি হয়েছে।
আজকের পত্রিকা: সংবিধান সংশোধনে আপনার পরামর্শ কী?
হাসনাত কাইয়ুম: আমরা সংশোধন চাইছি না, সংস্কার চাইছি এ কারণে যে আমরা ত্রয়োদশ সংশোধনীর অভিজ্ঞতা পর্যবেক্ষণ করেছি। দীর্ঘ আন্দোলনে বিজয়ী হওয়ার পরে সংবিধান সংশোধন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা যুক্ত করা হলো। কিন্তু বিষয়টা উচ্চ আদালতে নেওয়ার পর বলা হলো, এই সংশোধনী সংবিধানের মূল চেতনার পরিপন্থী এবং তা বাতিল করা হলো। এখানে একটা টেকনিক্যাল সমস্যা আছে, মানে কত দূর পর্যন্ত পরিবর্তন হলে সেটা সংশোধনী হয় আর কত দূর পর্যন্ত পরিবর্তন করলে সেটাকে পরিবর্তন বলে, এটা নির্ধারণের ক্ষমতা আদালতের হাতে। এ ধরনের এখতিয়ারের দোহাই দিয়ে আমাদের অনেক রক্তদানের মধ্য দিয়ে যে ত্রয়োদশ সংশোধনী আনা হয়েছিল, সেটাকে নাই করে দেওয়া হয়েছে।
সে জন্য আমরা বলি, যেভাবে প্রধানমন্ত্রীকে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, রাষ্ট্রপতিকে ক্ষমতাহীন করা হয়েছে এবং সংসদকে যেভাবে ক্ষমতাহীন করা হয়েছে, অ্যাটর্নি জেনারেল এবং বিচার বিভাগকে প্রধানমন্ত্রীর অধীনে আনা হয়েছে কিংবা রাষ্ট্রের বিভিন্ন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে নির্বাহী বিভাগের অধীনে নিয়ে আসা হয়েছে—এ বিষয়গুলোকে আর সংশোধনীর মাধ্যমে ঠিক করা যাবে না। এটার জন্য সংস্কার লাগবে। এ জন্য আমাদের প্রস্তাব হচ্ছে দুটি। এক. জরুরি ভিত্তিতে সংস্কার করার জন্য টাস্কফোর্স গঠন করতে হবে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, বাংলাদেশের নির্বাচন কীভাবে হবে? তার জন্য একটা টাস্কফোর্স হতে পারে। বাংলাদেশের সংসদ বা আইন বিভাগ কীভাবে পরিবর্তিত হবে, তা নির্ধারণের জন্য একটা টাস্কফোর্স গঠিত হতে পারে। যে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে এটা গঠিত হবে, তাঁরা একটা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মতামত দেবেন।
দুই. পাশাপাশি সরকার আর একটা বা একাধিক কমিশন গঠন করতে পারে। যারা বাংলাদেশে যত রাজনৈতিক দল আছে, অরাজনৈতিক সংগঠন আছে এবং বিভিন্ন জাতি, গোষ্ঠী, ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষ আছে, তাদের সকলের সঙ্গে আলোচনা করে—বাংলাদেশকে তারা কীভাবে দেখতে চায়, তারা বাংলাদেশের কাছে কী চায় এবং কী চায় না—এসব মতামত সংগ্রহ করবে। টাস্কফোর্স বা বিশেষজ্ঞ মতামতের সঙ্গে জনগণের আকাঙ্ক্ষা মিলিয়ে দেখলে, পর্যালোচনা করলে একটা ন্যূনতম ঐকমত্য বের হয়ে আসবে। সে ঐকমত্য ধরে সরকার একটা সংস্কার রূপরেখা তৈরি করতে পারে। জনগণের কাছ থেকে পাওয়া সংস্কারের এই রূপরেখা বাস্তবায়নের জন্য, সরকার ‘সংস্কার পরিষদ’ বা ‘রিফর্ম এসেম্বলি’র একটা নির্বাচন ঘোষণা করতে পারে। নির্বাচিতরা এসে জনগণের সেইসব আকাঙ্ক্ষাকে সংবিধানের
ভাষায় লিপিবদ্ধ করে গণভোটে অনুমোদন করিয়ে নিলেই এ সংস্কারটি বিশ্বজুড়ে গ্রহণযোগ্য এবং দেশের মধ্যে দীর্ঘজীবী হতে পারে।
সংস্কারকৃত সংবিধানে জাতীয় নির্বাচনের যে বিধান করা হবে, সে বিধান অনুযায়ী নির্বাচনের আয়োজন করে নির্বাচিতদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হলে বাংলাদেশ সত্যিকার অর্থেই একটি সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক ন্যায়বিচারের রাষ্ট্র হওয়ার পথে নতুন যাত্রা করতে পারে।
আজকের পত্রিকা: সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
হাসনাত কাইয়ুম: আপনাকেও ধন্যবাদ।

আজকের পত্রিকা: জুলাই অভ্যুত্থানের পর থেকে সংবিধান সংস্কারের প্রসঙ্গ উঠেছে। আমাদের সংবিধান সংস্কার কেন জরুরি?
হাসনাত কাইয়ুম: অভ্যুত্থানের অনেক আগে থেকে আমরা এ কথাটি বলে আসছি। বাংলাদেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সংকট যা-ই বলুন না কেন, সব সংকটের শিকড়ের ব্যাপার হলো সংবিধানের ক্ষমতাকাঠামো। এ সংবিধান যেসব লক্ষ্য-উদ্দেশ্যকে নির্ধারণ করেছিল, একাত্তর সালের মুক্তিযুদ্ধের যে ঘোষণাপত্র ছিল—সবকিছুর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে আছে এ ক্ষমতাকাঠামো। বাংলাদেশের সংবিধানের মূল নীতি মূলত চারটি। এর বাইরে আরও অনেক নীতি আছে। নতুন রাষ্ট্র পত্তনের যে দর্শন ও লক্ষ্য-উদ্দেশ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল, সেসব বাস্তবায়নের জন্য যে ধরনের ক্ষমতাকাঠামো দরকার, সংবিধানে আছে তার বিপরীত। সংবিধানের মূলনীতিতে ‘গণতন্ত্র’-এর কথা বলা হয়েছে, কিন্তু রাষ্ট্রের সব ক্ষমতা এক ব্যক্তি বা একটি পদে সোপর্দ করা হয়েছে। সেখানে কোনো ধরনের জবাবদিহির ব্যবস্থা রাখা হয়নি।
আরেক মূলনীতি হিসেবে ‘সমাজতন্ত্র’ আছে। তবে লুণ্ঠন, চাঁদাবাজি, লুটপাট, পাচার—সবকিছু করা যাবে, কিন্তু কেউ এতে বাধা দিতে পারবে না। সে জন্য আমরা বলছি, বাংলাদেশের মানুষের যে আকাঙ্ক্ষা ছিল, মুক্তিযুদ্ধের যে অঙ্গীকার ছিল, সেটা বাস্তবায়ন করতে হলে সংবিধানের ক্ষমতাকাঠামোকে যেভাবে বিন্যস্ত করা হয়েছে, সেটাকে পরিবর্তন করে মুক্তিযুদ্ধের আশা-আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন-উপযোগী ক্ষমতাকাঠামো গড়ে তুলতে হবে। বিগত ৫৩ বছরে এটা করা হয়নি। জনগণ বহু আন্দোলন করেছে, বিজয়ী হয়েছে কিন্তু বিজয়ের ফল বেহাত হয়ে গেছে। জনগণের সম্পদ, স্বাধীনতা, সম্মান লুণ্ঠিত হয়েছে। এর সবই হয়েছে আইনের মাধ্যমে, সংবিধানের ক্ষমতা দিয়ে। তাই সংবিধানের এই অন্যায্য ক্ষমতাকে পরিবর্তন করতে হবে। সংবিধান সংশোধন করে করা যাবে না, আবার এটা করার জন্য আপাতত পুরো সংবিধান ফেলে দেওয়ারও দরকার নেই। সংবিধানের ক্ষমতা অংশটাকে আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের উপযোগী করে পুনর্বিন্যাস করলেই চলে। এ পরিবর্তন করাটাকেই আমরা সংবিধানের সংস্কার বলি। এটাই এখানকার মানুষের সমস্যা সমাধানের পথে প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
আজকের পত্রিকা: অগণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার উত্থানের মূলে সংবিধান। অন্যদিকে ৭২-এর সংবিধানে ফেরত যাওয়ার কথাও কোনো কোনো দল বা ব্যক্তি বলে থাকেন। সংবিধান নিয়ে এই ভিন্ন ভিন্ন অবস্থান সম্পর্কে আপনার মতামত কী?
হাসনাত কাইয়ুম: এগুলো পুরোনো তর্ক। আমরা আমাদের ‘সংবিধান পর্যালোচনা’ বইয়ে এসব বক্তব্যের অসারতা দেখিয়েছি। দেশের যে নির্বাচনব্যবস্থা, সেটা ’৭২ সাল থেকেই কাজ করছে না। যে ক্ষমতায় থাকবে, তার মতো করেই নির্বাচনটা হবে। আর ’৭২-এর সংবিধানে ফিরে গেলে তো ১২৩ (৩) অক্ষতই থাকবে। এ বিধানটা হলো, যে ক্ষমতায় থাকবে, তারা ক্ষমতায় থেকে নির্বাচন করতে পারবে। যে ক্ষমতায় থাকে, তার কাছে রাষ্ট্রের সব ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত থাকে। এভাবে হলে তো নির্বাচনের কোনো অর্থ থাকে না। ’৭২-এর সংবিধানে ফেরত গেলে যদি এ সমস্যার সমাধান হতো, তাহলে আমাদের কোনো আপত্তি থাকত না। এ তর্কটা তার প্রাসঙ্গিকতা হারিয়ে ফেলেছে।যাঁরা একসময় এ আন্দোলনটা করতেন, তাঁরাই সেখান থেকে সরে এসেছেন। ড. কামাল হোসেন নিজেই স্বীকার করেছেন, এ সংবিধানের পরিবর্তন দরকার।
আজকের পত্রিকা: বাংলাদেশের সংবিধানে কী কী গুরুতর ত্রুটি আছে, যেগুলো রাষ্ট্র-চরিত্রকে স্বৈরাচারী ও গণবিরোধী করে তুলছে বারবার?
হাসনাত কাইয়ুম: আপাতত তিনটা বিষয় নিয়ে কথা বলা যায়। কেউ স্বৈরতন্ত্রী মানে, তাঁর ইচ্ছাই তন্ত্র, তিনি যা মনস্থ করেন তা-ই করতে পারেন, আইন-কানুন তেমন করেই তৈরি হয় বা থাকে, তাঁকে কৃতকর্মের জন্য কারও কাছে জবাবদিহি করতে হয় না। সারা পৃথিবীতে যেসব দেশে ন্যূনতম গণতন্ত্র আছে, সেসব দেশে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা বদলের একটা পদ্ধতি থাকে, সেটা নির্বাচন। কিন্তু বাংলাদেশে যাতে নির্বাচনের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতার হাতবদল হতে না পারে, সে ব্যবস্থা সাংবিধানিকভাবেই করা হয়েছে ১৯৭২ সাল থেকে।বিষয়টা এ রকম না যে সেটা এরশাদ ক্ষমতায় এসে করে দিয়েছেন। এটা সাংবিধানিক কাঠামোর মাধ্যমেই করা হয়েছে।
এ সংবিধানে প্রধানমন্ত্রীর জবাবদিহির কোনো ব্যবস্থা নেই। প্রধানমন্ত্রীকে ‘ইমপিচ’ বা অপসারণ করার কোনো ব্যবস্থা সংবিধানের কোথাও নেই। ৭০ অনুচ্ছেদে বরং উল্টোটা আছে, প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধাচরণ করলে, বিরুদ্ধে ভোট দিলে, সেই ব্যক্তির সংসদ সদস্য পদ বাতিল হয়ে যাবে। এই যে ক্ষমতার কেন্দ্রীভবন—বিচার বিভাগ, আইন বিভাগ বা সংসদ এবং প্রশাসন বা সরকার, এই তিনটাকে যখন একজনের ইচ্ছাধীন করা হয়, যেসব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান আছে সেগুলোও যখন বন্দী করা হয়, তখন এই ক্ষমতাই স্বেচ্ছাচারিতার জন্ম দেয়, গণতন্ত্র বিকাশের পথে প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়ায়। জবাবদিহিহীন, ক্ষমতার কেন্দ্রীভবন সবকিছুই বাধা। বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী সংবিধানের ঊর্ধ্বে, সংবিধান তাঁর অধীনে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় কেউ সংবিধান বা আইনের ঊর্ধ্বে থাকতে পারেন না। থাকলে দেশে কোনো প্রতিষ্ঠান থাকতে পারে না। প্রধানমন্ত্রীর হাতে যদি তিন ভাগের দুই ভাগ সংসদ সদস্য থাকেন, তাহলে তাঁর কতটা ক্ষমতা—সেটা তিনি নিজেও জানেন না। তাঁর যখন যেটা ইচ্ছে, তিনি তখন সেটা করতে পারবেন। এ ধরনের ক্ষমতাতন্ত্র কখনো গণতন্ত্রের সঙ্গে যেতে পারে না। এভাবে একজনের কাছে ক্ষমতা দেওয়া, যেটা ’৭২ সাল থেকে চলে আসছে, বাংলাদেশের রাজনীতির মূল সংকটের প্রাণভোমরা এটাই।
আজকের পত্রিকা: শুধু কি সংবিধানের সংস্কার করলেই সমস্যার সমাধান হবে, নাকি রাজনৈতিক দলেরও সংস্কার দরকার।
হাসনাত কাইয়ুম: অবশ্যই রাজনৈতিক দলেরও সংস্কার দরকার। সেই সঙ্গে রাষ্ট্র পরিচালনার আইনকানুনসহ অনেক কিছুর সংস্কার দরকার। কিন্তু আমাদের কোনো না কোনো পয়েন্ট থেকে শুরু করতে হবে এবং সে শুরুটা এমন হতে হবে, যেটা অন্যান্য সংস্কারের পথকে সহজ ও সুগম করবে। যেহেতু ক্ষমতার বৈধ এবং লিখিত উৎস হলো সংবিধান, সেহেতু সংবিধান দিয়েই সংস্কার শুরু করতে হবে। আগে রাজনৈতিক দলের সংস্কার করে, সংবিধান সংস্কারে পৌঁছা কঠিন হবে বা প্রায় অসম্ভব এই কারণে যে সংবিধান তথা রাষ্ট্র বা সরকার একপদকেন্দ্রিক থাকলে সেই রাষ্ট্র বা সরকার পরিচালনা করতে একপদকেন্দ্রিক দলই লাগবে, দল গণতান্ত্রিক হলে তারা সরকার টিকিয়ে রাখতে পারবে না। বাংলাদেশে যেসব রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় ছিল, রাষ্ট্রে এক ব্যক্তি যেমন প্রধান, তেমনি সেসব দলেও এক ব্যক্তিই প্রধান। অবশ্যই রাজনৈতিক দলের সংস্কার লাগবে।
আজকের পত্রিকা: রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন প্রতিষ্ঠার প্রথম থেকে রাষ্ট্র ও সংবিধান সংস্কারের কথা বলে আসছে। অন্যদের সংস্কারের সঙ্গে আপনাদের সংস্কারের পার্থক্য কোথায়?
হাসনাত কাইয়ুম: আমরা আসলে পার্থক্যের জায়গায় কাউকে দেখতে চাই না। আমরা দীর্ঘদিন একা একাই বলে আসছি। এখন দেশের বেশির ভাগ মানুষ বলছেন। আমরা এত দিন শুধু রাষ্ট্রের সংস্কারের প্রয়োজনের কথা বলে আসছি, এখন দেশবাসী সেই প্রয়োজনটা উপলব্ধি করছেন এবং প্রয়োজনীয়তা মেনে নিয়ে সংস্কার করার দাবি তুলছেন। কিন্তু রাষ্ট্রের কোন কোন ক্ষেত্র সংস্কার করতে হবে এবং কোন পথে সংস্কার করা হলে সেটা টিকে থাকবে—এই বিষয়গুলো নিয়ে তেমন আলোচনা হয়নি, তাই এ বিষয়ে ঐকমত্যও গড়ে ওঠেনি।যখন অধিকাংশ মানুষ এ দিকগুলো নিয়ে আলোচনা করবে, ঐকমত্যে পৌঁছাবে, তখনই সেটা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে। সমাজের মধ্যে এ আলাপটা ছড়িয়ে পড়ুক। আর এই আলাপটা করার জন্য বাংলাদেশে এখন একটা উর্বর পরিবেশ তৈরি হয়েছে।
আজকের পত্রিকা: সংবিধান সংশোধনে আপনার পরামর্শ কী?
হাসনাত কাইয়ুম: আমরা সংশোধন চাইছি না, সংস্কার চাইছি এ কারণে যে আমরা ত্রয়োদশ সংশোধনীর অভিজ্ঞতা পর্যবেক্ষণ করেছি। দীর্ঘ আন্দোলনে বিজয়ী হওয়ার পরে সংবিধান সংশোধন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা যুক্ত করা হলো। কিন্তু বিষয়টা উচ্চ আদালতে নেওয়ার পর বলা হলো, এই সংশোধনী সংবিধানের মূল চেতনার পরিপন্থী এবং তা বাতিল করা হলো। এখানে একটা টেকনিক্যাল সমস্যা আছে, মানে কত দূর পর্যন্ত পরিবর্তন হলে সেটা সংশোধনী হয় আর কত দূর পর্যন্ত পরিবর্তন করলে সেটাকে পরিবর্তন বলে, এটা নির্ধারণের ক্ষমতা আদালতের হাতে। এ ধরনের এখতিয়ারের দোহাই দিয়ে আমাদের অনেক রক্তদানের মধ্য দিয়ে যে ত্রয়োদশ সংশোধনী আনা হয়েছিল, সেটাকে নাই করে দেওয়া হয়েছে।
সে জন্য আমরা বলি, যেভাবে প্রধানমন্ত্রীকে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, রাষ্ট্রপতিকে ক্ষমতাহীন করা হয়েছে এবং সংসদকে যেভাবে ক্ষমতাহীন করা হয়েছে, অ্যাটর্নি জেনারেল এবং বিচার বিভাগকে প্রধানমন্ত্রীর অধীনে আনা হয়েছে কিংবা রাষ্ট্রের বিভিন্ন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে নির্বাহী বিভাগের অধীনে নিয়ে আসা হয়েছে—এ বিষয়গুলোকে আর সংশোধনীর মাধ্যমে ঠিক করা যাবে না। এটার জন্য সংস্কার লাগবে। এ জন্য আমাদের প্রস্তাব হচ্ছে দুটি। এক. জরুরি ভিত্তিতে সংস্কার করার জন্য টাস্কফোর্স গঠন করতে হবে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, বাংলাদেশের নির্বাচন কীভাবে হবে? তার জন্য একটা টাস্কফোর্স হতে পারে। বাংলাদেশের সংসদ বা আইন বিভাগ কীভাবে পরিবর্তিত হবে, তা নির্ধারণের জন্য একটা টাস্কফোর্স গঠিত হতে পারে। যে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে এটা গঠিত হবে, তাঁরা একটা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মতামত দেবেন।
দুই. পাশাপাশি সরকার আর একটা বা একাধিক কমিশন গঠন করতে পারে। যারা বাংলাদেশে যত রাজনৈতিক দল আছে, অরাজনৈতিক সংগঠন আছে এবং বিভিন্ন জাতি, গোষ্ঠী, ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষ আছে, তাদের সকলের সঙ্গে আলোচনা করে—বাংলাদেশকে তারা কীভাবে দেখতে চায়, তারা বাংলাদেশের কাছে কী চায় এবং কী চায় না—এসব মতামত সংগ্রহ করবে। টাস্কফোর্স বা বিশেষজ্ঞ মতামতের সঙ্গে জনগণের আকাঙ্ক্ষা মিলিয়ে দেখলে, পর্যালোচনা করলে একটা ন্যূনতম ঐকমত্য বের হয়ে আসবে। সে ঐকমত্য ধরে সরকার একটা সংস্কার রূপরেখা তৈরি করতে পারে। জনগণের কাছ থেকে পাওয়া সংস্কারের এই রূপরেখা বাস্তবায়নের জন্য, সরকার ‘সংস্কার পরিষদ’ বা ‘রিফর্ম এসেম্বলি’র একটা নির্বাচন ঘোষণা করতে পারে। নির্বাচিতরা এসে জনগণের সেইসব আকাঙ্ক্ষাকে সংবিধানের
ভাষায় লিপিবদ্ধ করে গণভোটে অনুমোদন করিয়ে নিলেই এ সংস্কারটি বিশ্বজুড়ে গ্রহণযোগ্য এবং দেশের মধ্যে দীর্ঘজীবী হতে পারে।
সংস্কারকৃত সংবিধানে জাতীয় নির্বাচনের যে বিধান করা হবে, সে বিধান অনুযায়ী নির্বাচনের আয়োজন করে নির্বাচিতদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হলে বাংলাদেশ সত্যিকার অর্থেই একটি সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক ন্যায়বিচারের রাষ্ট্র হওয়ার পথে নতুন যাত্রা করতে পারে।
আজকের পত্রিকা: সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
হাসনাত কাইয়ুম: আপনাকেও ধন্যবাদ।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

হাসনাত কাইয়ুম সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এবং রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক। হাওরের মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলন করতে গিয়ে কারাবন্দী হয়েছেন। তিনি বাংলাদেশ জেলে ফেডারেশনের প্রতিষ্ঠাতা |
০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

হাসনাত কাইয়ুম সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এবং রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক। হাওরের মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলন করতে গিয়ে কারাবন্দী হয়েছেন। তিনি বাংলাদেশ জেলে ফেডারেশনের প্রতিষ্ঠাতা |
০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

হাসনাত কাইয়ুম সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এবং রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক। হাওরের মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলন করতে গিয়ে কারাবন্দী হয়েছেন। তিনি বাংলাদেশ জেলে ফেডারেশনের প্রতিষ্ঠাতা |
০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

হাসনাত কাইয়ুম সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এবং রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক। হাওরের মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলন করতে গিয়ে কারাবন্দী হয়েছেন। তিনি বাংলাদেশ জেলে ফেডারেশনের প্রতিষ্ঠাতা |
০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫