রুশা চৌধুরী

বাঙালির জীবনাচরণে নানান উপযোগের কথা বলতে গেলে একটা বিষয় না বললে খুব ফাঁক থেকে যাবে, সেটা হচ্ছে ‘প্রবচন’, যা বাংলার এক অমূল্য রত্নভান্ডার। এখানে ধর্ম নেই, বৈষম্য নেই, ঝগড়া নেই, রাজনীতি নেই। যা আছে তা যেন শুধু সবার সঙ্গে মিলিয়ে দেওয়ার, মিশে থাকার চেষ্টা।
সেই যে ছেলেবেলায় শোনা, ‘দশে মিলে করি কাজ, হারি জিতি নাহি লাজ’ বাক্যটি—এই লাজহীনতার কথা বলা বাক্যটির মাঝে যে সাম্যের কথা, তা যুগে যুগে মনে-মগজে নিয়েই বাঙালি পথ চলে। তবু হুজুগে বাঙালিকে অবধারিতভাবে বলা যায়, ‘একে তো নাচুনি বুড়ি, তার ওপরে ঢোলের বাড়ি!’ ঢোল কে বাজাল তা না জেনে চিরকাল ‘চিলে কাক নিয়েছে’ শোনা রোমান্টিক বাঙালি অদৃশ্য চিলের খোঁজ করে গেছে, যাবে।
আর বাস্তব জগতে আখের গোছাতে ব্যস্ত হতে হতে বলেছে, ‘তেলা মাথায় ঢালো তেল, রুক্ষ মাথায় ভাঙো বেল।’ কেন এই কথা? ‘বেলতলায়’ যাওয়া যে বাঙালির অমোঘ নিয়তি! এই বাঙালিই আবার একসময় জোর গলায় ঠিক বলে বসে, ‘ছায়া ভালো ছাতার তল, বল ভালো নিজের বল।’ কেন? আরে ভাই, যতই রাগ-হিংসা আর ক্ষোভ থাকুক না কেন, বাঙালি যে ভীষণ বন্ধুবৎসলও। তাই তো বন্ধুর জন্য সে ঠিকই বলে উঠবে, ‘যদি থাকে বন্ধুতে মন, গাঙ সাঁতরাইতে কতক্ষণ?’
হাজার বছর আগে এক অতি বিদুষী নারী এমন অনেক অনেক প্রবচনে বাঙালির জীবনচিত্র এঁকে গেছেন। বলে গেছেন জ্যোতির্বিজ্ঞান, দর্শন, এমনকি দৈনন্দিন জীবনাচরণের সরল কথাগুলো। তাঁর নাম খনা। জীবনাচরণের কোন বিষয়টা বাদ গিয়েছিল তাঁর সুতীক্ষ্ণ ধীশক্তি থেকে—যদি ভাবতে যাই ঠিক ঠিক ফেল মারতে হবে! বাংলার ঋতুবৈচিত্র্যের সঙ্গে পারিপার্শ্বিকের সম্পর্ক নিয়ে তিনি বলেছিলেন অসংখ্য প্রবচন, যা আজও বিজ্ঞানের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারে।
‘যদি বর্ষে মাঘের শেষ, ধন্যি রাজার পুণ্যি দেশ’ বা ‘যদি হয় চৈতে বৃষ্টি, তবে হবে ধানের সৃষ্টি’, আবার ‘চৈত্রে দিয়া মাটি, বৈশাখে কর পরিপাটি’...আরও আছে—‘ব্যাঙ ডাকে ঘন ঘন শীঘ্র হবে বর্ষা জানো’, ‘আউশ ধানের চাষ লাগে তিন মাস’, ‘খনায় বলে শোনো ভাই, তুলায় তুলা অধিক পাই’। খনা আরও বলেছিলেন, ‘জ্যৈষ্ঠে খরা, আষাঢ়ে ভরা, শস্যের ভার সহে ধরা’, ‘আষাঢ়ে পনের শ্রাবণে পুরো, ধান লাগাও যত পারো’, ‘তিন শাওনে পান, এক আশবিনে ধান’।
প্রখর তাপদাহে আকাশের দিকে তাকিয়ে প্রাচীন লোকটি যখন বলে, ‘গাছে গাছে আগুন জ্বলে, বৃষ্টি হবে খনায় বলে’, চোখে ভাসে এক সাহসী-সত্য-একাকী নারীর কথা! জীবনের সার সত্য অকাতরে বলে দেওয়ার জন্য প্রিয় আপনজন যাঁর জিভ কেটে দিয়েছিল! তবু তিনি থামেননি। বলে গেছেন তাঁর কথা, যা আজও আমাদের ভাষা-সংস্কৃতিকে আলো করে রেখেছে। এ যেন বাঙালির এক যাদুবাস্তবতা!
বাস্তুশাস্ত্রের নিয়মনীতির কথাও সেই হাজার বছর আগে বলে গেছিলেন তিনি। তাই তো বর্তে থাকা বাঙালির কানে আজও সেই বাক্য বাজে, ‘উত্তর দুয়ারি ঘরের রাজা/দক্ষিণ দুয়ারি তাহার প্রজা/পূর্ব দুয়ারির খাজনা নাই/পশ্চিম দুয়ারির মুখে ছাই!’ কী অনন্য! পৃথিবীর বড় বড় স্থাপত্যবিদও স্বীকার করতে বাধ্য হবেন এমন কঠিন সত্যকে। এই খনাই বলে গেছেন, ‘মঙ্গলে ঊষা, বুধে পা, যেথা ইচ্ছা সেথা যা।’ আলো-বাতাসহীন অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ থেকে আলোর দিকে ডাক দিয়ে বলেছিলেন, ‘আলো হাওয়া বেঁধো না, রোগ ভোগে মোরো না।’ আবার এমন কিছু চিরকালীন কথা বলেছেন যাতে বাঙালির কিছু সনাতন চরিত্র ফুটে ওঠে—‘পরের বাড়ির পিঠা খাইতে বড়ই মিঠা’, ‘মেয়ে নষ্ট ঘাটে, ছেলে নষ্ট হাটে’, ‘ভাত দেওয়ার মুরোদ নাই, কিল দেবার গোঁসাই’, ‘নদীর জল ঘোলাও ভালো, জাতের মেয়ে কালোও ভালো’, ‘নিজের বেলায় আটিগাটি, পরের বেলায় চিমটি কাটি’। প্রতিটা বাক্যেই যেন আবহমান বাঙালির এক চেনা চেহারা দেখা যায়।
এর সবটা হয়তো ভালো না, তবু সত্যি। আর এখানেই মিলে যায় ঐতিহ্য আর চিরকালের বাঙালিয়ানা। কৃষিনির্ভর দেশটির আমজনতার কথা ফুটে ওঠে এমন হাজারো বাক্যে, যেগুলোর পালন আজও হয় এই বঙ্গীয় দেশের গ্রামগঞ্জে। ‘চালায় চালায় কুমড়ো পাতা, লক্ষ্মী বলে আছি তথা’—এই কথায় ধর্মের সঙ্গে কোনো আড়ি নেই। ‘ষোলো চাষে মুলা, তার অর্ধেকে তুলা/তার অর্ধেকে ধান, তার অর্ধেকে পান/খনার বচন মিথ্যা হয় না কদাচন।’ আজও এইসব কথা মিথ্যে হয়ে যায়নি, সেই যে বলে গেছেন—‘কাঁচায় না নোয়ালে বাঁশ, পাকলে করে টাশ টাশ!’
এখনো গ্রামের বুড়ি মায়ের থেকে শোনা কথাটা সত্য, ‘কলা রুয়ে না কেটো পাত, তাতেই কাপড় তাতেই ভাত’, ‘তাল বাড়ে ঝোপে, খেজুর বাড়ে কোপে’, ‘পটল বুনলে ফাগুনে, ফলন বাড়ে দ্বিগুণে’, ‘গাছহাছালি ঘন সবে না, গাছ হবে তার ফল হবে না’, ‘খনা ডেকে বল যান, রোদে ধান, ছায়ায় পান’। কী অনির্বচনীয় সব প্রবচন যা হাজার বছর পরেও একদম সত্যি হয়ে আছে!
রান্নাঘরের পাকা রাঁধুনি বহু হাত পুড়িয়ে-ভাত পুড়িয়ে যা শিখেছে সেই বিদ্যাটাও তিনি বলে গেছিলেন সেই কবে—‘যত জ্বালে ব্যাঞ্জন মিষ্ট, তত জ্বালে ভাত নষ্ট’, ‘সোমে ও বুধে না দিও হাত, ধার করিয়া খাইও ভাত’।
স্বাস্থ্য সচেতন আমজনতা আজও মেনে চলে, ‘বারো মাসে বারো ফল, না খেলে যায় রসাতল’, ‘ফল খেয়ে না খেও জল, তাতেই বাড়বে দেহের বল’। এতেও যদি কেউ ফল আর জল মিশিয়ে ফেলে তবে কেউ আবার বলে ওঠেন, ‘ফল খেয়ে জল খায়, যম বলে আয় আয়’।
ডাক্তার বদ্যি আর কী করবেন! এত কথার পরেও আবার মনে এল, ‘সকালে শোয়, সকালে ওঠে, তার বাড়ি না বৈদ্য ঢোকে’।
আহা! সবকিছুই তো জেনেশুনে বড় হয়েছিলাম, তবু কেন এত বিস্মরণ! কেন শুধু ভুলে যেতে বলা হয় আমাদের অমূল্য অখণ্ড ঐতিহ্যের কথা? সবশেষে তাই আবার বলি, ‘যে না শোনে খনার বচন, সংসারে তার চিরপচন’।
বালাইষাট...আমাদের সন্তান আমাদের দেশে চিরকাল মাথা উঁচু করে দুধে-ভাতে বাঁচুক নিজের ঐতিহ্য অন্তরে ধারণা করে।
লেখক: আবৃত্তিশিল্পী

বাঙালির জীবনাচরণে নানান উপযোগের কথা বলতে গেলে একটা বিষয় না বললে খুব ফাঁক থেকে যাবে, সেটা হচ্ছে ‘প্রবচন’, যা বাংলার এক অমূল্য রত্নভান্ডার। এখানে ধর্ম নেই, বৈষম্য নেই, ঝগড়া নেই, রাজনীতি নেই। যা আছে তা যেন শুধু সবার সঙ্গে মিলিয়ে দেওয়ার, মিশে থাকার চেষ্টা।
সেই যে ছেলেবেলায় শোনা, ‘দশে মিলে করি কাজ, হারি জিতি নাহি লাজ’ বাক্যটি—এই লাজহীনতার কথা বলা বাক্যটির মাঝে যে সাম্যের কথা, তা যুগে যুগে মনে-মগজে নিয়েই বাঙালি পথ চলে। তবু হুজুগে বাঙালিকে অবধারিতভাবে বলা যায়, ‘একে তো নাচুনি বুড়ি, তার ওপরে ঢোলের বাড়ি!’ ঢোল কে বাজাল তা না জেনে চিরকাল ‘চিলে কাক নিয়েছে’ শোনা রোমান্টিক বাঙালি অদৃশ্য চিলের খোঁজ করে গেছে, যাবে।
আর বাস্তব জগতে আখের গোছাতে ব্যস্ত হতে হতে বলেছে, ‘তেলা মাথায় ঢালো তেল, রুক্ষ মাথায় ভাঙো বেল।’ কেন এই কথা? ‘বেলতলায়’ যাওয়া যে বাঙালির অমোঘ নিয়তি! এই বাঙালিই আবার একসময় জোর গলায় ঠিক বলে বসে, ‘ছায়া ভালো ছাতার তল, বল ভালো নিজের বল।’ কেন? আরে ভাই, যতই রাগ-হিংসা আর ক্ষোভ থাকুক না কেন, বাঙালি যে ভীষণ বন্ধুবৎসলও। তাই তো বন্ধুর জন্য সে ঠিকই বলে উঠবে, ‘যদি থাকে বন্ধুতে মন, গাঙ সাঁতরাইতে কতক্ষণ?’
হাজার বছর আগে এক অতি বিদুষী নারী এমন অনেক অনেক প্রবচনে বাঙালির জীবনচিত্র এঁকে গেছেন। বলে গেছেন জ্যোতির্বিজ্ঞান, দর্শন, এমনকি দৈনন্দিন জীবনাচরণের সরল কথাগুলো। তাঁর নাম খনা। জীবনাচরণের কোন বিষয়টা বাদ গিয়েছিল তাঁর সুতীক্ষ্ণ ধীশক্তি থেকে—যদি ভাবতে যাই ঠিক ঠিক ফেল মারতে হবে! বাংলার ঋতুবৈচিত্র্যের সঙ্গে পারিপার্শ্বিকের সম্পর্ক নিয়ে তিনি বলেছিলেন অসংখ্য প্রবচন, যা আজও বিজ্ঞানের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারে।
‘যদি বর্ষে মাঘের শেষ, ধন্যি রাজার পুণ্যি দেশ’ বা ‘যদি হয় চৈতে বৃষ্টি, তবে হবে ধানের সৃষ্টি’, আবার ‘চৈত্রে দিয়া মাটি, বৈশাখে কর পরিপাটি’...আরও আছে—‘ব্যাঙ ডাকে ঘন ঘন শীঘ্র হবে বর্ষা জানো’, ‘আউশ ধানের চাষ লাগে তিন মাস’, ‘খনায় বলে শোনো ভাই, তুলায় তুলা অধিক পাই’। খনা আরও বলেছিলেন, ‘জ্যৈষ্ঠে খরা, আষাঢ়ে ভরা, শস্যের ভার সহে ধরা’, ‘আষাঢ়ে পনের শ্রাবণে পুরো, ধান লাগাও যত পারো’, ‘তিন শাওনে পান, এক আশবিনে ধান’।
প্রখর তাপদাহে আকাশের দিকে তাকিয়ে প্রাচীন লোকটি যখন বলে, ‘গাছে গাছে আগুন জ্বলে, বৃষ্টি হবে খনায় বলে’, চোখে ভাসে এক সাহসী-সত্য-একাকী নারীর কথা! জীবনের সার সত্য অকাতরে বলে দেওয়ার জন্য প্রিয় আপনজন যাঁর জিভ কেটে দিয়েছিল! তবু তিনি থামেননি। বলে গেছেন তাঁর কথা, যা আজও আমাদের ভাষা-সংস্কৃতিকে আলো করে রেখেছে। এ যেন বাঙালির এক যাদুবাস্তবতা!
বাস্তুশাস্ত্রের নিয়মনীতির কথাও সেই হাজার বছর আগে বলে গেছিলেন তিনি। তাই তো বর্তে থাকা বাঙালির কানে আজও সেই বাক্য বাজে, ‘উত্তর দুয়ারি ঘরের রাজা/দক্ষিণ দুয়ারি তাহার প্রজা/পূর্ব দুয়ারির খাজনা নাই/পশ্চিম দুয়ারির মুখে ছাই!’ কী অনন্য! পৃথিবীর বড় বড় স্থাপত্যবিদও স্বীকার করতে বাধ্য হবেন এমন কঠিন সত্যকে। এই খনাই বলে গেছেন, ‘মঙ্গলে ঊষা, বুধে পা, যেথা ইচ্ছা সেথা যা।’ আলো-বাতাসহীন অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ থেকে আলোর দিকে ডাক দিয়ে বলেছিলেন, ‘আলো হাওয়া বেঁধো না, রোগ ভোগে মোরো না।’ আবার এমন কিছু চিরকালীন কথা বলেছেন যাতে বাঙালির কিছু সনাতন চরিত্র ফুটে ওঠে—‘পরের বাড়ির পিঠা খাইতে বড়ই মিঠা’, ‘মেয়ে নষ্ট ঘাটে, ছেলে নষ্ট হাটে’, ‘ভাত দেওয়ার মুরোদ নাই, কিল দেবার গোঁসাই’, ‘নদীর জল ঘোলাও ভালো, জাতের মেয়ে কালোও ভালো’, ‘নিজের বেলায় আটিগাটি, পরের বেলায় চিমটি কাটি’। প্রতিটা বাক্যেই যেন আবহমান বাঙালির এক চেনা চেহারা দেখা যায়।
এর সবটা হয়তো ভালো না, তবু সত্যি। আর এখানেই মিলে যায় ঐতিহ্য আর চিরকালের বাঙালিয়ানা। কৃষিনির্ভর দেশটির আমজনতার কথা ফুটে ওঠে এমন হাজারো বাক্যে, যেগুলোর পালন আজও হয় এই বঙ্গীয় দেশের গ্রামগঞ্জে। ‘চালায় চালায় কুমড়ো পাতা, লক্ষ্মী বলে আছি তথা’—এই কথায় ধর্মের সঙ্গে কোনো আড়ি নেই। ‘ষোলো চাষে মুলা, তার অর্ধেকে তুলা/তার অর্ধেকে ধান, তার অর্ধেকে পান/খনার বচন মিথ্যা হয় না কদাচন।’ আজও এইসব কথা মিথ্যে হয়ে যায়নি, সেই যে বলে গেছেন—‘কাঁচায় না নোয়ালে বাঁশ, পাকলে করে টাশ টাশ!’
এখনো গ্রামের বুড়ি মায়ের থেকে শোনা কথাটা সত্য, ‘কলা রুয়ে না কেটো পাত, তাতেই কাপড় তাতেই ভাত’, ‘তাল বাড়ে ঝোপে, খেজুর বাড়ে কোপে’, ‘পটল বুনলে ফাগুনে, ফলন বাড়ে দ্বিগুণে’, ‘গাছহাছালি ঘন সবে না, গাছ হবে তার ফল হবে না’, ‘খনা ডেকে বল যান, রোদে ধান, ছায়ায় পান’। কী অনির্বচনীয় সব প্রবচন যা হাজার বছর পরেও একদম সত্যি হয়ে আছে!
রান্নাঘরের পাকা রাঁধুনি বহু হাত পুড়িয়ে-ভাত পুড়িয়ে যা শিখেছে সেই বিদ্যাটাও তিনি বলে গেছিলেন সেই কবে—‘যত জ্বালে ব্যাঞ্জন মিষ্ট, তত জ্বালে ভাত নষ্ট’, ‘সোমে ও বুধে না দিও হাত, ধার করিয়া খাইও ভাত’।
স্বাস্থ্য সচেতন আমজনতা আজও মেনে চলে, ‘বারো মাসে বারো ফল, না খেলে যায় রসাতল’, ‘ফল খেয়ে না খেও জল, তাতেই বাড়বে দেহের বল’। এতেও যদি কেউ ফল আর জল মিশিয়ে ফেলে তবে কেউ আবার বলে ওঠেন, ‘ফল খেয়ে জল খায়, যম বলে আয় আয়’।
ডাক্তার বদ্যি আর কী করবেন! এত কথার পরেও আবার মনে এল, ‘সকালে শোয়, সকালে ওঠে, তার বাড়ি না বৈদ্য ঢোকে’।
আহা! সবকিছুই তো জেনেশুনে বড় হয়েছিলাম, তবু কেন এত বিস্মরণ! কেন শুধু ভুলে যেতে বলা হয় আমাদের অমূল্য অখণ্ড ঐতিহ্যের কথা? সবশেষে তাই আবার বলি, ‘যে না শোনে খনার বচন, সংসারে তার চিরপচন’।
বালাইষাট...আমাদের সন্তান আমাদের দেশে চিরকাল মাথা উঁচু করে দুধে-ভাতে বাঁচুক নিজের ঐতিহ্য অন্তরে ধারণা করে।
লেখক: আবৃত্তিশিল্পী
রুশা চৌধুরী

বাঙালির জীবনাচরণে নানান উপযোগের কথা বলতে গেলে একটা বিষয় না বললে খুব ফাঁক থেকে যাবে, সেটা হচ্ছে ‘প্রবচন’, যা বাংলার এক অমূল্য রত্নভান্ডার। এখানে ধর্ম নেই, বৈষম্য নেই, ঝগড়া নেই, রাজনীতি নেই। যা আছে তা যেন শুধু সবার সঙ্গে মিলিয়ে দেওয়ার, মিশে থাকার চেষ্টা।
সেই যে ছেলেবেলায় শোনা, ‘দশে মিলে করি কাজ, হারি জিতি নাহি লাজ’ বাক্যটি—এই লাজহীনতার কথা বলা বাক্যটির মাঝে যে সাম্যের কথা, তা যুগে যুগে মনে-মগজে নিয়েই বাঙালি পথ চলে। তবু হুজুগে বাঙালিকে অবধারিতভাবে বলা যায়, ‘একে তো নাচুনি বুড়ি, তার ওপরে ঢোলের বাড়ি!’ ঢোল কে বাজাল তা না জেনে চিরকাল ‘চিলে কাক নিয়েছে’ শোনা রোমান্টিক বাঙালি অদৃশ্য চিলের খোঁজ করে গেছে, যাবে।
আর বাস্তব জগতে আখের গোছাতে ব্যস্ত হতে হতে বলেছে, ‘তেলা মাথায় ঢালো তেল, রুক্ষ মাথায় ভাঙো বেল।’ কেন এই কথা? ‘বেলতলায়’ যাওয়া যে বাঙালির অমোঘ নিয়তি! এই বাঙালিই আবার একসময় জোর গলায় ঠিক বলে বসে, ‘ছায়া ভালো ছাতার তল, বল ভালো নিজের বল।’ কেন? আরে ভাই, যতই রাগ-হিংসা আর ক্ষোভ থাকুক না কেন, বাঙালি যে ভীষণ বন্ধুবৎসলও। তাই তো বন্ধুর জন্য সে ঠিকই বলে উঠবে, ‘যদি থাকে বন্ধুতে মন, গাঙ সাঁতরাইতে কতক্ষণ?’
হাজার বছর আগে এক অতি বিদুষী নারী এমন অনেক অনেক প্রবচনে বাঙালির জীবনচিত্র এঁকে গেছেন। বলে গেছেন জ্যোতির্বিজ্ঞান, দর্শন, এমনকি দৈনন্দিন জীবনাচরণের সরল কথাগুলো। তাঁর নাম খনা। জীবনাচরণের কোন বিষয়টা বাদ গিয়েছিল তাঁর সুতীক্ষ্ণ ধীশক্তি থেকে—যদি ভাবতে যাই ঠিক ঠিক ফেল মারতে হবে! বাংলার ঋতুবৈচিত্র্যের সঙ্গে পারিপার্শ্বিকের সম্পর্ক নিয়ে তিনি বলেছিলেন অসংখ্য প্রবচন, যা আজও বিজ্ঞানের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারে।
‘যদি বর্ষে মাঘের শেষ, ধন্যি রাজার পুণ্যি দেশ’ বা ‘যদি হয় চৈতে বৃষ্টি, তবে হবে ধানের সৃষ্টি’, আবার ‘চৈত্রে দিয়া মাটি, বৈশাখে কর পরিপাটি’...আরও আছে—‘ব্যাঙ ডাকে ঘন ঘন শীঘ্র হবে বর্ষা জানো’, ‘আউশ ধানের চাষ লাগে তিন মাস’, ‘খনায় বলে শোনো ভাই, তুলায় তুলা অধিক পাই’। খনা আরও বলেছিলেন, ‘জ্যৈষ্ঠে খরা, আষাঢ়ে ভরা, শস্যের ভার সহে ধরা’, ‘আষাঢ়ে পনের শ্রাবণে পুরো, ধান লাগাও যত পারো’, ‘তিন শাওনে পান, এক আশবিনে ধান’।
প্রখর তাপদাহে আকাশের দিকে তাকিয়ে প্রাচীন লোকটি যখন বলে, ‘গাছে গাছে আগুন জ্বলে, বৃষ্টি হবে খনায় বলে’, চোখে ভাসে এক সাহসী-সত্য-একাকী নারীর কথা! জীবনের সার সত্য অকাতরে বলে দেওয়ার জন্য প্রিয় আপনজন যাঁর জিভ কেটে দিয়েছিল! তবু তিনি থামেননি। বলে গেছেন তাঁর কথা, যা আজও আমাদের ভাষা-সংস্কৃতিকে আলো করে রেখেছে। এ যেন বাঙালির এক যাদুবাস্তবতা!
বাস্তুশাস্ত্রের নিয়মনীতির কথাও সেই হাজার বছর আগে বলে গেছিলেন তিনি। তাই তো বর্তে থাকা বাঙালির কানে আজও সেই বাক্য বাজে, ‘উত্তর দুয়ারি ঘরের রাজা/দক্ষিণ দুয়ারি তাহার প্রজা/পূর্ব দুয়ারির খাজনা নাই/পশ্চিম দুয়ারির মুখে ছাই!’ কী অনন্য! পৃথিবীর বড় বড় স্থাপত্যবিদও স্বীকার করতে বাধ্য হবেন এমন কঠিন সত্যকে। এই খনাই বলে গেছেন, ‘মঙ্গলে ঊষা, বুধে পা, যেথা ইচ্ছা সেথা যা।’ আলো-বাতাসহীন অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ থেকে আলোর দিকে ডাক দিয়ে বলেছিলেন, ‘আলো হাওয়া বেঁধো না, রোগ ভোগে মোরো না।’ আবার এমন কিছু চিরকালীন কথা বলেছেন যাতে বাঙালির কিছু সনাতন চরিত্র ফুটে ওঠে—‘পরের বাড়ির পিঠা খাইতে বড়ই মিঠা’, ‘মেয়ে নষ্ট ঘাটে, ছেলে নষ্ট হাটে’, ‘ভাত দেওয়ার মুরোদ নাই, কিল দেবার গোঁসাই’, ‘নদীর জল ঘোলাও ভালো, জাতের মেয়ে কালোও ভালো’, ‘নিজের বেলায় আটিগাটি, পরের বেলায় চিমটি কাটি’। প্রতিটা বাক্যেই যেন আবহমান বাঙালির এক চেনা চেহারা দেখা যায়।
এর সবটা হয়তো ভালো না, তবু সত্যি। আর এখানেই মিলে যায় ঐতিহ্য আর চিরকালের বাঙালিয়ানা। কৃষিনির্ভর দেশটির আমজনতার কথা ফুটে ওঠে এমন হাজারো বাক্যে, যেগুলোর পালন আজও হয় এই বঙ্গীয় দেশের গ্রামগঞ্জে। ‘চালায় চালায় কুমড়ো পাতা, লক্ষ্মী বলে আছি তথা’—এই কথায় ধর্মের সঙ্গে কোনো আড়ি নেই। ‘ষোলো চাষে মুলা, তার অর্ধেকে তুলা/তার অর্ধেকে ধান, তার অর্ধেকে পান/খনার বচন মিথ্যা হয় না কদাচন।’ আজও এইসব কথা মিথ্যে হয়ে যায়নি, সেই যে বলে গেছেন—‘কাঁচায় না নোয়ালে বাঁশ, পাকলে করে টাশ টাশ!’
এখনো গ্রামের বুড়ি মায়ের থেকে শোনা কথাটা সত্য, ‘কলা রুয়ে না কেটো পাত, তাতেই কাপড় তাতেই ভাত’, ‘তাল বাড়ে ঝোপে, খেজুর বাড়ে কোপে’, ‘পটল বুনলে ফাগুনে, ফলন বাড়ে দ্বিগুণে’, ‘গাছহাছালি ঘন সবে না, গাছ হবে তার ফল হবে না’, ‘খনা ডেকে বল যান, রোদে ধান, ছায়ায় পান’। কী অনির্বচনীয় সব প্রবচন যা হাজার বছর পরেও একদম সত্যি হয়ে আছে!
রান্নাঘরের পাকা রাঁধুনি বহু হাত পুড়িয়ে-ভাত পুড়িয়ে যা শিখেছে সেই বিদ্যাটাও তিনি বলে গেছিলেন সেই কবে—‘যত জ্বালে ব্যাঞ্জন মিষ্ট, তত জ্বালে ভাত নষ্ট’, ‘সোমে ও বুধে না দিও হাত, ধার করিয়া খাইও ভাত’।
স্বাস্থ্য সচেতন আমজনতা আজও মেনে চলে, ‘বারো মাসে বারো ফল, না খেলে যায় রসাতল’, ‘ফল খেয়ে না খেও জল, তাতেই বাড়বে দেহের বল’। এতেও যদি কেউ ফল আর জল মিশিয়ে ফেলে তবে কেউ আবার বলে ওঠেন, ‘ফল খেয়ে জল খায়, যম বলে আয় আয়’।
ডাক্তার বদ্যি আর কী করবেন! এত কথার পরেও আবার মনে এল, ‘সকালে শোয়, সকালে ওঠে, তার বাড়ি না বৈদ্য ঢোকে’।
আহা! সবকিছুই তো জেনেশুনে বড় হয়েছিলাম, তবু কেন এত বিস্মরণ! কেন শুধু ভুলে যেতে বলা হয় আমাদের অমূল্য অখণ্ড ঐতিহ্যের কথা? সবশেষে তাই আবার বলি, ‘যে না শোনে খনার বচন, সংসারে তার চিরপচন’।
বালাইষাট...আমাদের সন্তান আমাদের দেশে চিরকাল মাথা উঁচু করে দুধে-ভাতে বাঁচুক নিজের ঐতিহ্য অন্তরে ধারণা করে।
লেখক: আবৃত্তিশিল্পী

বাঙালির জীবনাচরণে নানান উপযোগের কথা বলতে গেলে একটা বিষয় না বললে খুব ফাঁক থেকে যাবে, সেটা হচ্ছে ‘প্রবচন’, যা বাংলার এক অমূল্য রত্নভান্ডার। এখানে ধর্ম নেই, বৈষম্য নেই, ঝগড়া নেই, রাজনীতি নেই। যা আছে তা যেন শুধু সবার সঙ্গে মিলিয়ে দেওয়ার, মিশে থাকার চেষ্টা।
সেই যে ছেলেবেলায় শোনা, ‘দশে মিলে করি কাজ, হারি জিতি নাহি লাজ’ বাক্যটি—এই লাজহীনতার কথা বলা বাক্যটির মাঝে যে সাম্যের কথা, তা যুগে যুগে মনে-মগজে নিয়েই বাঙালি পথ চলে। তবু হুজুগে বাঙালিকে অবধারিতভাবে বলা যায়, ‘একে তো নাচুনি বুড়ি, তার ওপরে ঢোলের বাড়ি!’ ঢোল কে বাজাল তা না জেনে চিরকাল ‘চিলে কাক নিয়েছে’ শোনা রোমান্টিক বাঙালি অদৃশ্য চিলের খোঁজ করে গেছে, যাবে।
আর বাস্তব জগতে আখের গোছাতে ব্যস্ত হতে হতে বলেছে, ‘তেলা মাথায় ঢালো তেল, রুক্ষ মাথায় ভাঙো বেল।’ কেন এই কথা? ‘বেলতলায়’ যাওয়া যে বাঙালির অমোঘ নিয়তি! এই বাঙালিই আবার একসময় জোর গলায় ঠিক বলে বসে, ‘ছায়া ভালো ছাতার তল, বল ভালো নিজের বল।’ কেন? আরে ভাই, যতই রাগ-হিংসা আর ক্ষোভ থাকুক না কেন, বাঙালি যে ভীষণ বন্ধুবৎসলও। তাই তো বন্ধুর জন্য সে ঠিকই বলে উঠবে, ‘যদি থাকে বন্ধুতে মন, গাঙ সাঁতরাইতে কতক্ষণ?’
হাজার বছর আগে এক অতি বিদুষী নারী এমন অনেক অনেক প্রবচনে বাঙালির জীবনচিত্র এঁকে গেছেন। বলে গেছেন জ্যোতির্বিজ্ঞান, দর্শন, এমনকি দৈনন্দিন জীবনাচরণের সরল কথাগুলো। তাঁর নাম খনা। জীবনাচরণের কোন বিষয়টা বাদ গিয়েছিল তাঁর সুতীক্ষ্ণ ধীশক্তি থেকে—যদি ভাবতে যাই ঠিক ঠিক ফেল মারতে হবে! বাংলার ঋতুবৈচিত্র্যের সঙ্গে পারিপার্শ্বিকের সম্পর্ক নিয়ে তিনি বলেছিলেন অসংখ্য প্রবচন, যা আজও বিজ্ঞানের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারে।
‘যদি বর্ষে মাঘের শেষ, ধন্যি রাজার পুণ্যি দেশ’ বা ‘যদি হয় চৈতে বৃষ্টি, তবে হবে ধানের সৃষ্টি’, আবার ‘চৈত্রে দিয়া মাটি, বৈশাখে কর পরিপাটি’...আরও আছে—‘ব্যাঙ ডাকে ঘন ঘন শীঘ্র হবে বর্ষা জানো’, ‘আউশ ধানের চাষ লাগে তিন মাস’, ‘খনায় বলে শোনো ভাই, তুলায় তুলা অধিক পাই’। খনা আরও বলেছিলেন, ‘জ্যৈষ্ঠে খরা, আষাঢ়ে ভরা, শস্যের ভার সহে ধরা’, ‘আষাঢ়ে পনের শ্রাবণে পুরো, ধান লাগাও যত পারো’, ‘তিন শাওনে পান, এক আশবিনে ধান’।
প্রখর তাপদাহে আকাশের দিকে তাকিয়ে প্রাচীন লোকটি যখন বলে, ‘গাছে গাছে আগুন জ্বলে, বৃষ্টি হবে খনায় বলে’, চোখে ভাসে এক সাহসী-সত্য-একাকী নারীর কথা! জীবনের সার সত্য অকাতরে বলে দেওয়ার জন্য প্রিয় আপনজন যাঁর জিভ কেটে দিয়েছিল! তবু তিনি থামেননি। বলে গেছেন তাঁর কথা, যা আজও আমাদের ভাষা-সংস্কৃতিকে আলো করে রেখেছে। এ যেন বাঙালির এক যাদুবাস্তবতা!
বাস্তুশাস্ত্রের নিয়মনীতির কথাও সেই হাজার বছর আগে বলে গেছিলেন তিনি। তাই তো বর্তে থাকা বাঙালির কানে আজও সেই বাক্য বাজে, ‘উত্তর দুয়ারি ঘরের রাজা/দক্ষিণ দুয়ারি তাহার প্রজা/পূর্ব দুয়ারির খাজনা নাই/পশ্চিম দুয়ারির মুখে ছাই!’ কী অনন্য! পৃথিবীর বড় বড় স্থাপত্যবিদও স্বীকার করতে বাধ্য হবেন এমন কঠিন সত্যকে। এই খনাই বলে গেছেন, ‘মঙ্গলে ঊষা, বুধে পা, যেথা ইচ্ছা সেথা যা।’ আলো-বাতাসহীন অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ থেকে আলোর দিকে ডাক দিয়ে বলেছিলেন, ‘আলো হাওয়া বেঁধো না, রোগ ভোগে মোরো না।’ আবার এমন কিছু চিরকালীন কথা বলেছেন যাতে বাঙালির কিছু সনাতন চরিত্র ফুটে ওঠে—‘পরের বাড়ির পিঠা খাইতে বড়ই মিঠা’, ‘মেয়ে নষ্ট ঘাটে, ছেলে নষ্ট হাটে’, ‘ভাত দেওয়ার মুরোদ নাই, কিল দেবার গোঁসাই’, ‘নদীর জল ঘোলাও ভালো, জাতের মেয়ে কালোও ভালো’, ‘নিজের বেলায় আটিগাটি, পরের বেলায় চিমটি কাটি’। প্রতিটা বাক্যেই যেন আবহমান বাঙালির এক চেনা চেহারা দেখা যায়।
এর সবটা হয়তো ভালো না, তবু সত্যি। আর এখানেই মিলে যায় ঐতিহ্য আর চিরকালের বাঙালিয়ানা। কৃষিনির্ভর দেশটির আমজনতার কথা ফুটে ওঠে এমন হাজারো বাক্যে, যেগুলোর পালন আজও হয় এই বঙ্গীয় দেশের গ্রামগঞ্জে। ‘চালায় চালায় কুমড়ো পাতা, লক্ষ্মী বলে আছি তথা’—এই কথায় ধর্মের সঙ্গে কোনো আড়ি নেই। ‘ষোলো চাষে মুলা, তার অর্ধেকে তুলা/তার অর্ধেকে ধান, তার অর্ধেকে পান/খনার বচন মিথ্যা হয় না কদাচন।’ আজও এইসব কথা মিথ্যে হয়ে যায়নি, সেই যে বলে গেছেন—‘কাঁচায় না নোয়ালে বাঁশ, পাকলে করে টাশ টাশ!’
এখনো গ্রামের বুড়ি মায়ের থেকে শোনা কথাটা সত্য, ‘কলা রুয়ে না কেটো পাত, তাতেই কাপড় তাতেই ভাত’, ‘তাল বাড়ে ঝোপে, খেজুর বাড়ে কোপে’, ‘পটল বুনলে ফাগুনে, ফলন বাড়ে দ্বিগুণে’, ‘গাছহাছালি ঘন সবে না, গাছ হবে তার ফল হবে না’, ‘খনা ডেকে বল যান, রোদে ধান, ছায়ায় পান’। কী অনির্বচনীয় সব প্রবচন যা হাজার বছর পরেও একদম সত্যি হয়ে আছে!
রান্নাঘরের পাকা রাঁধুনি বহু হাত পুড়িয়ে-ভাত পুড়িয়ে যা শিখেছে সেই বিদ্যাটাও তিনি বলে গেছিলেন সেই কবে—‘যত জ্বালে ব্যাঞ্জন মিষ্ট, তত জ্বালে ভাত নষ্ট’, ‘সোমে ও বুধে না দিও হাত, ধার করিয়া খাইও ভাত’।
স্বাস্থ্য সচেতন আমজনতা আজও মেনে চলে, ‘বারো মাসে বারো ফল, না খেলে যায় রসাতল’, ‘ফল খেয়ে না খেও জল, তাতেই বাড়বে দেহের বল’। এতেও যদি কেউ ফল আর জল মিশিয়ে ফেলে তবে কেউ আবার বলে ওঠেন, ‘ফল খেয়ে জল খায়, যম বলে আয় আয়’।
ডাক্তার বদ্যি আর কী করবেন! এত কথার পরেও আবার মনে এল, ‘সকালে শোয়, সকালে ওঠে, তার বাড়ি না বৈদ্য ঢোকে’।
আহা! সবকিছুই তো জেনেশুনে বড় হয়েছিলাম, তবু কেন এত বিস্মরণ! কেন শুধু ভুলে যেতে বলা হয় আমাদের অমূল্য অখণ্ড ঐতিহ্যের কথা? সবশেষে তাই আবার বলি, ‘যে না শোনে খনার বচন, সংসারে তার চিরপচন’।
বালাইষাট...আমাদের সন্তান আমাদের দেশে চিরকাল মাথা উঁচু করে দুধে-ভাতে বাঁচুক নিজের ঐতিহ্য অন্তরে ধারণা করে।
লেখক: আবৃত্তিশিল্পী

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

বাঙালির জীবনাচরণে নানান উপযোগের কথা বলতে গেলে একটা বিষয় না বললে খুব ফাঁক থেকে যাবে, সেটা হচ্ছে ‘প্রবচন’, যা বাংলার এক অমূল্য রত্নভান্ডার। এখানে ধর্ম নেই, বৈষম্য নেই, ঝগড়া নেই, রাজনীতি নেই।
০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

বাঙালির জীবনাচরণে নানান উপযোগের কথা বলতে গেলে একটা বিষয় না বললে খুব ফাঁক থেকে যাবে, সেটা হচ্ছে ‘প্রবচন’, যা বাংলার এক অমূল্য রত্নভান্ডার। এখানে ধর্ম নেই, বৈষম্য নেই, ঝগড়া নেই, রাজনীতি নেই।
০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

বাঙালির জীবনাচরণে নানান উপযোগের কথা বলতে গেলে একটা বিষয় না বললে খুব ফাঁক থেকে যাবে, সেটা হচ্ছে ‘প্রবচন’, যা বাংলার এক অমূল্য রত্নভান্ডার। এখানে ধর্ম নেই, বৈষম্য নেই, ঝগড়া নেই, রাজনীতি নেই।
০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

বাঙালির জীবনাচরণে নানান উপযোগের কথা বলতে গেলে একটা বিষয় না বললে খুব ফাঁক থেকে যাবে, সেটা হচ্ছে ‘প্রবচন’, যা বাংলার এক অমূল্য রত্নভান্ডার। এখানে ধর্ম নেই, বৈষম্য নেই, ঝগড়া নেই, রাজনীতি নেই।
০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫