বিভুরঞ্জন সরকার

নতুন নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে রাষ্ট্রপতি নিয়োগ দিয়েছেন সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব কাজী হাবিবুল আউয়ালকে। অন্য চার নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগ পেয়েছেন জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আলমগীর, আনিছুর রহমান, অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ বেগম রাশিদা সুলতানা ও অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহসান হাবীব খান। শপথ গ্রহণের পর নতুন কমিশন কার্যভারও গ্রহণ করেছে। এই কমিশনের অধীনেই দেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার চ্যালেঞ্জ সামনে রেখে কমিশন কাজ শুরু করেছে।
এবারই প্রথম আইনের ভিত্তিতে কমিশন গঠন করা হলেও এই কমিশন নিয়ে রাজনৈতিক মহলে বিতর্ক আছে, পক্ষে-বিপক্ষে মত আছে। রাষ্ট্রপতি আইন অনুযায়ী একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করেছিলেন। ছয় সদস্যদের অনুসন্ধান কমিটি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং বিশিষ্ট নাগরিকদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছে। তাঁদের কাছ থেকে নাম নিয়েছে, পরামর্শ গ্রহণ করেছে। বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া তিন শতাধিক নাম থেকে যাচাই-বাছাই করে ১০ জনের নাম অনুসন্ধান কমিটি রাষ্ট্রপতির কাছে জমা দেওয়ার পর সেখান থেকেই ৫ জনকে চূড়ান্ত নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
তবে শুরু থেকেই এই প্রক্রিয়ার বাইরে আছে সরকার ও আওয়ামী লীগের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিএনপি। বিএনপি আছে বর্জন-প্রক্রিয়ায়। দলটি রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনা বর্জন করেছে। অনুসন্ধান কমিটি বর্জন করেছে। কমিশন গঠনের জন্য নাম প্রস্তাব করাও বর্জন করেছে। কমিশন গঠনের পর তা নিয়ে মন্তব্য করাও বর্জন করেছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তাঁদের মাথাব্যথা নির্বাচন কমিশন নিয়ে নয়, তাঁদের মাথাব্যথা নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে।
বিএনপির এই মাথাব্যথা দূর হওয়ার আশু কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। কারণ, তারা বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আবার সরকারও নির্বাচনকালীন সরকারের প্রশ্নে তাদের শক্ত বিরোধী অবস্থানের কারণে সংবিধান থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধানই বাতিল করে দিয়েছে। এখন পর্যন্ত এটাই বিধান যে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে সরকার ক্ষমতায় আছে, সেই সরকারের অধীনে এবং নবগঠিত নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধানেই আগামী নির্বাচন হবে। বিএনপি খোয়াব দেখছে সরকার পতনের। সরকার পতনের সময় নাকি এসে গেছে! এই খোয়াবনামা অবশ্য বিএনপি বছরের পর বছর ধরে বয়ান করে চলেছে।
বিএনপি সবকিছু বর্জনের ধারায় থাকলেও তাদের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী অবশ্য নির্বাচন কমিশন গঠন-প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়েছেন। অনুসন্ধান কমিটির সঙ্গে সংলাপে বিএনপি-দরদি আরও কয়েকজনের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীও। তিনি সেখানে তাঁর নানা পরামর্শ দিয়েছেন, পছন্দের ৮ জনের নামের তালিকাও দিয়েছেন। নির্বাচন কমিশন গঠনের পর জানা যায়, প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পাওয়া কাজী হাবিবুল আউয়ালের নাম ছিল ডা. জাফরুল্লাহর তালিকায়। তাঁর তালিকা থেকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ করায় জাফরুল্লাহ চৌধুরী সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি বিএনপিকে অনুরোধ করেছেন তারা যেন নির্বাচন কমিশনকে মেনে নেয়।
নির্বাচন কমিশন গঠন ইস্যুতে ডা. জাফরুল্লাহর ভূমিকায় বড় বিপাকে পড়েছে বিএনপি। ডা. জাফরুল্লাহ যে তাদের লোক নন, তাঁকেও যে বিএনপি বর্জনের তালিকায় তুলেছে, নির্বাচন কমিশন গঠন-প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার আগে তা দলটি প্রকাশ করেনি। নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনারের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করায় এবং বিএনপিকে অবস্থান পরিবর্তনের পরামর্শ দেওয়ার পর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ঘোষণা দিয়ে বলতে হয়েছে, ‘ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর সঙ্গে বিএনপির কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি নির্বাচন কমিশনের প্রশংসা করতে পারেন, সেটা তাঁর ব্যক্তিগত বিষয় কিন্তু বিএনপিকে কোনো মতামত দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন না। তিনি বিএনপির কেউ নন।’
তাহলে তিনি কার? এত দিন যে বিএনপির সভা-সমাবেশে উপস্থিত হয়ে ডা. জাফরুল্লাহ তাদের হয়ে সরকারের মুণ্ডুপাত করে আসছেন, সেটা বিএনপি কেন মেনে নিয়েছে? তখন তাঁকে বর্জনের প্রশ্ন আসেনি কেন? এক নির্বাচন কমিশন ইস্যুতে সরকারের সঙ্গে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর পছন্দের মিল হওয়ায় বিএনপি তাঁকে বর্জন করল? তাহলে কেউ কেউ যেটা মনে করেন, বর্তমান সরকারের কট্টর সমালোচক হওয়ার গুণেই তিনি বিএনপির শুভাকাঙ্ক্ষীর তালিকাভুক্ত হয়েছিলেন, সেটাই সত্য? ‘শত্রুর শত্রু বন্ধু’ এই তত্ত্ব মেনে বিএনপি তাঁকে কোলে তুলে নেচেছিল?
২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নামে যে জোট গঠিত হয়েছিল, তার পেছনে জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বড় ভূমিকা দৃশ্যমান ছিল। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে মিলে বিএনপি ওই নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল। নির্বাচনে শোচনীয় পরাজয় ঘটার পর জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট কার্যত অস্তিত্বহীন হয়ে পড়লেও জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে নিষ্ক্রিয় দেখা যায়নি। তিনি তাঁর অবস্থানও বদলাননি। তিনি নিয়মিতভাবে সরকারবিরোধী নানা অনুষ্ঠানে সরব আছেন।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে একটি ফিল্ড হাসপাতাল গড়ে আহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসায় সহায়তা দিয়ে একটি ব্যতিক্রমী ভূমিকা পালন করায় তাঁর প্রতি অনেকেরই সহানুভূতি, সমর্থন ও দুর্বলতা আছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও তাঁকে পছন্দ করতেন। জাফরুল্লাহ চৌধুরী নিজেই এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, সাভারে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের জন্য জমি দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু। ‘গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র’ নামটিও বঙ্গবন্ধুর দেওয়া। অথচ কোনো এক অজ্ঞাত কারণে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সরকারের প্রতি জাফরুল্লাহ চৌধুরীর চরম বিরূপতা রয়েছে। অবশ্য ২০১৬ সালে এক সাক্ষাৎকারে তিনি নিজেকে শেখ হাসিনারও শুভানুধ্যায়ী বলে দাবি করেছিলেন। কিন্তু বাস্তবে তার কোনো প্রতিফলন দেখা না গেলেও শেখ হাসিনার সরকার ছাড়া আর সব সরকারের শুভানুধ্যায়ীর ভূমিকায় তাঁকে দেখা গেছে। দেশের দুই সেনাশাসক জিয়াউর রহমান এবং এইচ এম এরশাদের সঙ্গেও তাঁর ঘনিষ্ঠতা ছিল। এরশাদ আমলে জাতীয় ওষুধনীতি প্রণয়ন করে তিনি গণতান্ত্রিক-প্রগতিশীল মহলে নিন্দিত ও সমালোচিত হয়েছিলেন।
নিরপেক্ষ অবস্থানের নামে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী অনেক সময় এমন সব কথা বলেন, যা প্রকৃতপক্ষে আমাদের গৌরবের মুক্তিযুদ্ধের নীতি-আদর্শের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। তিনি একদিকে নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা বলে গর্ব করেন, অন্যদিকে স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকারদের পক্ষে অবস্থান নেন। আওয়ামী লীগ এবং শেখ হাসিনার সমালোচনায় তিনি নির্দয় হলেও বিএনপির সমালোচনায় খুবই সদয়। তিনি কখনো কখনো বিএনপিকে যেসব পরামর্শ দিয়ে থাকেন, তার কোনোটাই বিএনপি শোনার গরজ বোধ করে না। তারেক রহমানকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করার সমালোচনা করে এবং তারেক-কন্যা জাইমাকে বিএনপির রাজনীতির জন্য প্রস্তুত করার পরামর্শ দিয়ে তিনি বিএনপির কিছুটা বিরাগভাজন হয়েছেন। কিছু দিন আগে বিএনপির নেতাদের ‘চাকর-বাকর’ বলেও তিনি অনেকের চক্ষুশূল হয়েছেন। কিন্তু সবশেষে তিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের প্রতি আস্থা পোষণ করে প্রকাশ্যে কথা বলে বিএনপির কাছে বোঝা হয়ে উঠেছেন। এই ‘বোঝা’ বিএনপি আবার ঘাড়ে তুলে নেবে কি না, সেটাই
এখন দেখার বিষয়।
তবে আওয়ামী লীগের পছন্দের নির্বাচন কমিশনের বিরোধিতা করে, বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্তে বিএনপি শেষ পর্যন্ত
অটল থাকলে কী হবে? বিএনপিকে নির্বাচনে আনার জন্য, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য সরকার তথা আওয়ামী লীগ কি নমনীয় হবে, ছাড় দেবে? সরকার কি আসলে অবস্থান বদল করার মতো বিশেষ কোনো চাপে আছে?
নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল নিয়োগ পাওয়ার পর থেকে অনেক কথা বলছেন। তবে গুরুত্বপূর্ণ কথা যেটা বলেছেন তা হলো, ভোটের মাঠে নির্বাচন কমিশন একা সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি করতে পারে না। নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা অসীম নয়। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা দরকার।
রাজনৈতিক নেতৃত্বের মধ্যে যদি ন্যূনতম সমঝোতা না থাকে, তাহলে সিইসি হিসেবে তিনি মুরব্বির ভূমিকা নিতে পারবেন না।
কিন্তু রাজনৈতিক দলের মধ্যে সমঝোতা, বিশেষ করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে সমঝোতা হওয়ার কোনো লক্ষণ কি কেউ দেখছেন? আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে, আবারও ক্ষমতায় ফিরতে চায়। বিএনপি আছে ক্ষমতার বাইরে, ফিরতে চায় ক্ষমতায়। ক্ষমতায় থেকে চাওয়া আর ক্ষমতার বাইরে থেকে চাওয়ার মধ্যে আকাশ-পাতাল প্রার্থক্য আছে। এই প্রার্থক্য দূর করার জাদুর কাঠি কি কারও সন্ধানে আছে?
লেখক:বিভুরঞ্জন সরকার,সহকারী সম্পাদক, আজকের পত্রিকা

নতুন নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে রাষ্ট্রপতি নিয়োগ দিয়েছেন সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব কাজী হাবিবুল আউয়ালকে। অন্য চার নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগ পেয়েছেন জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আলমগীর, আনিছুর রহমান, অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ বেগম রাশিদা সুলতানা ও অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহসান হাবীব খান। শপথ গ্রহণের পর নতুন কমিশন কার্যভারও গ্রহণ করেছে। এই কমিশনের অধীনেই দেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার চ্যালেঞ্জ সামনে রেখে কমিশন কাজ শুরু করেছে।
এবারই প্রথম আইনের ভিত্তিতে কমিশন গঠন করা হলেও এই কমিশন নিয়ে রাজনৈতিক মহলে বিতর্ক আছে, পক্ষে-বিপক্ষে মত আছে। রাষ্ট্রপতি আইন অনুযায়ী একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করেছিলেন। ছয় সদস্যদের অনুসন্ধান কমিটি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং বিশিষ্ট নাগরিকদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছে। তাঁদের কাছ থেকে নাম নিয়েছে, পরামর্শ গ্রহণ করেছে। বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া তিন শতাধিক নাম থেকে যাচাই-বাছাই করে ১০ জনের নাম অনুসন্ধান কমিটি রাষ্ট্রপতির কাছে জমা দেওয়ার পর সেখান থেকেই ৫ জনকে চূড়ান্ত নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
তবে শুরু থেকেই এই প্রক্রিয়ার বাইরে আছে সরকার ও আওয়ামী লীগের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিএনপি। বিএনপি আছে বর্জন-প্রক্রিয়ায়। দলটি রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনা বর্জন করেছে। অনুসন্ধান কমিটি বর্জন করেছে। কমিশন গঠনের জন্য নাম প্রস্তাব করাও বর্জন করেছে। কমিশন গঠনের পর তা নিয়ে মন্তব্য করাও বর্জন করেছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তাঁদের মাথাব্যথা নির্বাচন কমিশন নিয়ে নয়, তাঁদের মাথাব্যথা নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে।
বিএনপির এই মাথাব্যথা দূর হওয়ার আশু কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। কারণ, তারা বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আবার সরকারও নির্বাচনকালীন সরকারের প্রশ্নে তাদের শক্ত বিরোধী অবস্থানের কারণে সংবিধান থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধানই বাতিল করে দিয়েছে। এখন পর্যন্ত এটাই বিধান যে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে সরকার ক্ষমতায় আছে, সেই সরকারের অধীনে এবং নবগঠিত নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধানেই আগামী নির্বাচন হবে। বিএনপি খোয়াব দেখছে সরকার পতনের। সরকার পতনের সময় নাকি এসে গেছে! এই খোয়াবনামা অবশ্য বিএনপি বছরের পর বছর ধরে বয়ান করে চলেছে।
বিএনপি সবকিছু বর্জনের ধারায় থাকলেও তাদের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী অবশ্য নির্বাচন কমিশন গঠন-প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়েছেন। অনুসন্ধান কমিটির সঙ্গে সংলাপে বিএনপি-দরদি আরও কয়েকজনের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীও। তিনি সেখানে তাঁর নানা পরামর্শ দিয়েছেন, পছন্দের ৮ জনের নামের তালিকাও দিয়েছেন। নির্বাচন কমিশন গঠনের পর জানা যায়, প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পাওয়া কাজী হাবিবুল আউয়ালের নাম ছিল ডা. জাফরুল্লাহর তালিকায়। তাঁর তালিকা থেকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ করায় জাফরুল্লাহ চৌধুরী সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি বিএনপিকে অনুরোধ করেছেন তারা যেন নির্বাচন কমিশনকে মেনে নেয়।
নির্বাচন কমিশন গঠন ইস্যুতে ডা. জাফরুল্লাহর ভূমিকায় বড় বিপাকে পড়েছে বিএনপি। ডা. জাফরুল্লাহ যে তাদের লোক নন, তাঁকেও যে বিএনপি বর্জনের তালিকায় তুলেছে, নির্বাচন কমিশন গঠন-প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার আগে তা দলটি প্রকাশ করেনি। নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনারের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করায় এবং বিএনপিকে অবস্থান পরিবর্তনের পরামর্শ দেওয়ার পর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ঘোষণা দিয়ে বলতে হয়েছে, ‘ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর সঙ্গে বিএনপির কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি নির্বাচন কমিশনের প্রশংসা করতে পারেন, সেটা তাঁর ব্যক্তিগত বিষয় কিন্তু বিএনপিকে কোনো মতামত দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন না। তিনি বিএনপির কেউ নন।’
তাহলে তিনি কার? এত দিন যে বিএনপির সভা-সমাবেশে উপস্থিত হয়ে ডা. জাফরুল্লাহ তাদের হয়ে সরকারের মুণ্ডুপাত করে আসছেন, সেটা বিএনপি কেন মেনে নিয়েছে? তখন তাঁকে বর্জনের প্রশ্ন আসেনি কেন? এক নির্বাচন কমিশন ইস্যুতে সরকারের সঙ্গে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর পছন্দের মিল হওয়ায় বিএনপি তাঁকে বর্জন করল? তাহলে কেউ কেউ যেটা মনে করেন, বর্তমান সরকারের কট্টর সমালোচক হওয়ার গুণেই তিনি বিএনপির শুভাকাঙ্ক্ষীর তালিকাভুক্ত হয়েছিলেন, সেটাই সত্য? ‘শত্রুর শত্রু বন্ধু’ এই তত্ত্ব মেনে বিএনপি তাঁকে কোলে তুলে নেচেছিল?
২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নামে যে জোট গঠিত হয়েছিল, তার পেছনে জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বড় ভূমিকা দৃশ্যমান ছিল। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে মিলে বিএনপি ওই নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল। নির্বাচনে শোচনীয় পরাজয় ঘটার পর জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট কার্যত অস্তিত্বহীন হয়ে পড়লেও জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে নিষ্ক্রিয় দেখা যায়নি। তিনি তাঁর অবস্থানও বদলাননি। তিনি নিয়মিতভাবে সরকারবিরোধী নানা অনুষ্ঠানে সরব আছেন।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে একটি ফিল্ড হাসপাতাল গড়ে আহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসায় সহায়তা দিয়ে একটি ব্যতিক্রমী ভূমিকা পালন করায় তাঁর প্রতি অনেকেরই সহানুভূতি, সমর্থন ও দুর্বলতা আছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও তাঁকে পছন্দ করতেন। জাফরুল্লাহ চৌধুরী নিজেই এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, সাভারে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের জন্য জমি দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু। ‘গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র’ নামটিও বঙ্গবন্ধুর দেওয়া। অথচ কোনো এক অজ্ঞাত কারণে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সরকারের প্রতি জাফরুল্লাহ চৌধুরীর চরম বিরূপতা রয়েছে। অবশ্য ২০১৬ সালে এক সাক্ষাৎকারে তিনি নিজেকে শেখ হাসিনারও শুভানুধ্যায়ী বলে দাবি করেছিলেন। কিন্তু বাস্তবে তার কোনো প্রতিফলন দেখা না গেলেও শেখ হাসিনার সরকার ছাড়া আর সব সরকারের শুভানুধ্যায়ীর ভূমিকায় তাঁকে দেখা গেছে। দেশের দুই সেনাশাসক জিয়াউর রহমান এবং এইচ এম এরশাদের সঙ্গেও তাঁর ঘনিষ্ঠতা ছিল। এরশাদ আমলে জাতীয় ওষুধনীতি প্রণয়ন করে তিনি গণতান্ত্রিক-প্রগতিশীল মহলে নিন্দিত ও সমালোচিত হয়েছিলেন।
নিরপেক্ষ অবস্থানের নামে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী অনেক সময় এমন সব কথা বলেন, যা প্রকৃতপক্ষে আমাদের গৌরবের মুক্তিযুদ্ধের নীতি-আদর্শের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। তিনি একদিকে নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা বলে গর্ব করেন, অন্যদিকে স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকারদের পক্ষে অবস্থান নেন। আওয়ামী লীগ এবং শেখ হাসিনার সমালোচনায় তিনি নির্দয় হলেও বিএনপির সমালোচনায় খুবই সদয়। তিনি কখনো কখনো বিএনপিকে যেসব পরামর্শ দিয়ে থাকেন, তার কোনোটাই বিএনপি শোনার গরজ বোধ করে না। তারেক রহমানকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করার সমালোচনা করে এবং তারেক-কন্যা জাইমাকে বিএনপির রাজনীতির জন্য প্রস্তুত করার পরামর্শ দিয়ে তিনি বিএনপির কিছুটা বিরাগভাজন হয়েছেন। কিছু দিন আগে বিএনপির নেতাদের ‘চাকর-বাকর’ বলেও তিনি অনেকের চক্ষুশূল হয়েছেন। কিন্তু সবশেষে তিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের প্রতি আস্থা পোষণ করে প্রকাশ্যে কথা বলে বিএনপির কাছে বোঝা হয়ে উঠেছেন। এই ‘বোঝা’ বিএনপি আবার ঘাড়ে তুলে নেবে কি না, সেটাই
এখন দেখার বিষয়।
তবে আওয়ামী লীগের পছন্দের নির্বাচন কমিশনের বিরোধিতা করে, বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্তে বিএনপি শেষ পর্যন্ত
অটল থাকলে কী হবে? বিএনপিকে নির্বাচনে আনার জন্য, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য সরকার তথা আওয়ামী লীগ কি নমনীয় হবে, ছাড় দেবে? সরকার কি আসলে অবস্থান বদল করার মতো বিশেষ কোনো চাপে আছে?
নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল নিয়োগ পাওয়ার পর থেকে অনেক কথা বলছেন। তবে গুরুত্বপূর্ণ কথা যেটা বলেছেন তা হলো, ভোটের মাঠে নির্বাচন কমিশন একা সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি করতে পারে না। নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা অসীম নয়। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা দরকার।
রাজনৈতিক নেতৃত্বের মধ্যে যদি ন্যূনতম সমঝোতা না থাকে, তাহলে সিইসি হিসেবে তিনি মুরব্বির ভূমিকা নিতে পারবেন না।
কিন্তু রাজনৈতিক দলের মধ্যে সমঝোতা, বিশেষ করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে সমঝোতা হওয়ার কোনো লক্ষণ কি কেউ দেখছেন? আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে, আবারও ক্ষমতায় ফিরতে চায়। বিএনপি আছে ক্ষমতার বাইরে, ফিরতে চায় ক্ষমতায়। ক্ষমতায় থেকে চাওয়া আর ক্ষমতার বাইরে থেকে চাওয়ার মধ্যে আকাশ-পাতাল প্রার্থক্য আছে। এই প্রার্থক্য দূর করার জাদুর কাঠি কি কারও সন্ধানে আছে?
লেখক:বিভুরঞ্জন সরকার,সহকারী সম্পাদক, আজকের পত্রিকা
বিভুরঞ্জন সরকার

নতুন নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে রাষ্ট্রপতি নিয়োগ দিয়েছেন সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব কাজী হাবিবুল আউয়ালকে। অন্য চার নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগ পেয়েছেন জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আলমগীর, আনিছুর রহমান, অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ বেগম রাশিদা সুলতানা ও অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহসান হাবীব খান। শপথ গ্রহণের পর নতুন কমিশন কার্যভারও গ্রহণ করেছে। এই কমিশনের অধীনেই দেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার চ্যালেঞ্জ সামনে রেখে কমিশন কাজ শুরু করেছে।
এবারই প্রথম আইনের ভিত্তিতে কমিশন গঠন করা হলেও এই কমিশন নিয়ে রাজনৈতিক মহলে বিতর্ক আছে, পক্ষে-বিপক্ষে মত আছে। রাষ্ট্রপতি আইন অনুযায়ী একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করেছিলেন। ছয় সদস্যদের অনুসন্ধান কমিটি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং বিশিষ্ট নাগরিকদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছে। তাঁদের কাছ থেকে নাম নিয়েছে, পরামর্শ গ্রহণ করেছে। বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া তিন শতাধিক নাম থেকে যাচাই-বাছাই করে ১০ জনের নাম অনুসন্ধান কমিটি রাষ্ট্রপতির কাছে জমা দেওয়ার পর সেখান থেকেই ৫ জনকে চূড়ান্ত নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
তবে শুরু থেকেই এই প্রক্রিয়ার বাইরে আছে সরকার ও আওয়ামী লীগের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিএনপি। বিএনপি আছে বর্জন-প্রক্রিয়ায়। দলটি রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনা বর্জন করেছে। অনুসন্ধান কমিটি বর্জন করেছে। কমিশন গঠনের জন্য নাম প্রস্তাব করাও বর্জন করেছে। কমিশন গঠনের পর তা নিয়ে মন্তব্য করাও বর্জন করেছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তাঁদের মাথাব্যথা নির্বাচন কমিশন নিয়ে নয়, তাঁদের মাথাব্যথা নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে।
বিএনপির এই মাথাব্যথা দূর হওয়ার আশু কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। কারণ, তারা বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আবার সরকারও নির্বাচনকালীন সরকারের প্রশ্নে তাদের শক্ত বিরোধী অবস্থানের কারণে সংবিধান থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধানই বাতিল করে দিয়েছে। এখন পর্যন্ত এটাই বিধান যে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে সরকার ক্ষমতায় আছে, সেই সরকারের অধীনে এবং নবগঠিত নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধানেই আগামী নির্বাচন হবে। বিএনপি খোয়াব দেখছে সরকার পতনের। সরকার পতনের সময় নাকি এসে গেছে! এই খোয়াবনামা অবশ্য বিএনপি বছরের পর বছর ধরে বয়ান করে চলেছে।
বিএনপি সবকিছু বর্জনের ধারায় থাকলেও তাদের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী অবশ্য নির্বাচন কমিশন গঠন-প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়েছেন। অনুসন্ধান কমিটির সঙ্গে সংলাপে বিএনপি-দরদি আরও কয়েকজনের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীও। তিনি সেখানে তাঁর নানা পরামর্শ দিয়েছেন, পছন্দের ৮ জনের নামের তালিকাও দিয়েছেন। নির্বাচন কমিশন গঠনের পর জানা যায়, প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পাওয়া কাজী হাবিবুল আউয়ালের নাম ছিল ডা. জাফরুল্লাহর তালিকায়। তাঁর তালিকা থেকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ করায় জাফরুল্লাহ চৌধুরী সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি বিএনপিকে অনুরোধ করেছেন তারা যেন নির্বাচন কমিশনকে মেনে নেয়।
নির্বাচন কমিশন গঠন ইস্যুতে ডা. জাফরুল্লাহর ভূমিকায় বড় বিপাকে পড়েছে বিএনপি। ডা. জাফরুল্লাহ যে তাদের লোক নন, তাঁকেও যে বিএনপি বর্জনের তালিকায় তুলেছে, নির্বাচন কমিশন গঠন-প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার আগে তা দলটি প্রকাশ করেনি। নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনারের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করায় এবং বিএনপিকে অবস্থান পরিবর্তনের পরামর্শ দেওয়ার পর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ঘোষণা দিয়ে বলতে হয়েছে, ‘ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর সঙ্গে বিএনপির কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি নির্বাচন কমিশনের প্রশংসা করতে পারেন, সেটা তাঁর ব্যক্তিগত বিষয় কিন্তু বিএনপিকে কোনো মতামত দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন না। তিনি বিএনপির কেউ নন।’
তাহলে তিনি কার? এত দিন যে বিএনপির সভা-সমাবেশে উপস্থিত হয়ে ডা. জাফরুল্লাহ তাদের হয়ে সরকারের মুণ্ডুপাত করে আসছেন, সেটা বিএনপি কেন মেনে নিয়েছে? তখন তাঁকে বর্জনের প্রশ্ন আসেনি কেন? এক নির্বাচন কমিশন ইস্যুতে সরকারের সঙ্গে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর পছন্দের মিল হওয়ায় বিএনপি তাঁকে বর্জন করল? তাহলে কেউ কেউ যেটা মনে করেন, বর্তমান সরকারের কট্টর সমালোচক হওয়ার গুণেই তিনি বিএনপির শুভাকাঙ্ক্ষীর তালিকাভুক্ত হয়েছিলেন, সেটাই সত্য? ‘শত্রুর শত্রু বন্ধু’ এই তত্ত্ব মেনে বিএনপি তাঁকে কোলে তুলে নেচেছিল?
২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নামে যে জোট গঠিত হয়েছিল, তার পেছনে জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বড় ভূমিকা দৃশ্যমান ছিল। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে মিলে বিএনপি ওই নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল। নির্বাচনে শোচনীয় পরাজয় ঘটার পর জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট কার্যত অস্তিত্বহীন হয়ে পড়লেও জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে নিষ্ক্রিয় দেখা যায়নি। তিনি তাঁর অবস্থানও বদলাননি। তিনি নিয়মিতভাবে সরকারবিরোধী নানা অনুষ্ঠানে সরব আছেন।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে একটি ফিল্ড হাসপাতাল গড়ে আহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসায় সহায়তা দিয়ে একটি ব্যতিক্রমী ভূমিকা পালন করায় তাঁর প্রতি অনেকেরই সহানুভূতি, সমর্থন ও দুর্বলতা আছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও তাঁকে পছন্দ করতেন। জাফরুল্লাহ চৌধুরী নিজেই এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, সাভারে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের জন্য জমি দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু। ‘গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র’ নামটিও বঙ্গবন্ধুর দেওয়া। অথচ কোনো এক অজ্ঞাত কারণে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সরকারের প্রতি জাফরুল্লাহ চৌধুরীর চরম বিরূপতা রয়েছে। অবশ্য ২০১৬ সালে এক সাক্ষাৎকারে তিনি নিজেকে শেখ হাসিনারও শুভানুধ্যায়ী বলে দাবি করেছিলেন। কিন্তু বাস্তবে তার কোনো প্রতিফলন দেখা না গেলেও শেখ হাসিনার সরকার ছাড়া আর সব সরকারের শুভানুধ্যায়ীর ভূমিকায় তাঁকে দেখা গেছে। দেশের দুই সেনাশাসক জিয়াউর রহমান এবং এইচ এম এরশাদের সঙ্গেও তাঁর ঘনিষ্ঠতা ছিল। এরশাদ আমলে জাতীয় ওষুধনীতি প্রণয়ন করে তিনি গণতান্ত্রিক-প্রগতিশীল মহলে নিন্দিত ও সমালোচিত হয়েছিলেন।
নিরপেক্ষ অবস্থানের নামে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী অনেক সময় এমন সব কথা বলেন, যা প্রকৃতপক্ষে আমাদের গৌরবের মুক্তিযুদ্ধের নীতি-আদর্শের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। তিনি একদিকে নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা বলে গর্ব করেন, অন্যদিকে স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকারদের পক্ষে অবস্থান নেন। আওয়ামী লীগ এবং শেখ হাসিনার সমালোচনায় তিনি নির্দয় হলেও বিএনপির সমালোচনায় খুবই সদয়। তিনি কখনো কখনো বিএনপিকে যেসব পরামর্শ দিয়ে থাকেন, তার কোনোটাই বিএনপি শোনার গরজ বোধ করে না। তারেক রহমানকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করার সমালোচনা করে এবং তারেক-কন্যা জাইমাকে বিএনপির রাজনীতির জন্য প্রস্তুত করার পরামর্শ দিয়ে তিনি বিএনপির কিছুটা বিরাগভাজন হয়েছেন। কিছু দিন আগে বিএনপির নেতাদের ‘চাকর-বাকর’ বলেও তিনি অনেকের চক্ষুশূল হয়েছেন। কিন্তু সবশেষে তিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের প্রতি আস্থা পোষণ করে প্রকাশ্যে কথা বলে বিএনপির কাছে বোঝা হয়ে উঠেছেন। এই ‘বোঝা’ বিএনপি আবার ঘাড়ে তুলে নেবে কি না, সেটাই
এখন দেখার বিষয়।
তবে আওয়ামী লীগের পছন্দের নির্বাচন কমিশনের বিরোধিতা করে, বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্তে বিএনপি শেষ পর্যন্ত
অটল থাকলে কী হবে? বিএনপিকে নির্বাচনে আনার জন্য, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য সরকার তথা আওয়ামী লীগ কি নমনীয় হবে, ছাড় দেবে? সরকার কি আসলে অবস্থান বদল করার মতো বিশেষ কোনো চাপে আছে?
নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল নিয়োগ পাওয়ার পর থেকে অনেক কথা বলছেন। তবে গুরুত্বপূর্ণ কথা যেটা বলেছেন তা হলো, ভোটের মাঠে নির্বাচন কমিশন একা সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি করতে পারে না। নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা অসীম নয়। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা দরকার।
রাজনৈতিক নেতৃত্বের মধ্যে যদি ন্যূনতম সমঝোতা না থাকে, তাহলে সিইসি হিসেবে তিনি মুরব্বির ভূমিকা নিতে পারবেন না।
কিন্তু রাজনৈতিক দলের মধ্যে সমঝোতা, বিশেষ করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে সমঝোতা হওয়ার কোনো লক্ষণ কি কেউ দেখছেন? আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে, আবারও ক্ষমতায় ফিরতে চায়। বিএনপি আছে ক্ষমতার বাইরে, ফিরতে চায় ক্ষমতায়। ক্ষমতায় থেকে চাওয়া আর ক্ষমতার বাইরে থেকে চাওয়ার মধ্যে আকাশ-পাতাল প্রার্থক্য আছে। এই প্রার্থক্য দূর করার জাদুর কাঠি কি কারও সন্ধানে আছে?
লেখক:বিভুরঞ্জন সরকার,সহকারী সম্পাদক, আজকের পত্রিকা

নতুন নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে রাষ্ট্রপতি নিয়োগ দিয়েছেন সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব কাজী হাবিবুল আউয়ালকে। অন্য চার নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগ পেয়েছেন জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আলমগীর, আনিছুর রহমান, অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ বেগম রাশিদা সুলতানা ও অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহসান হাবীব খান। শপথ গ্রহণের পর নতুন কমিশন কার্যভারও গ্রহণ করেছে। এই কমিশনের অধীনেই দেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার চ্যালেঞ্জ সামনে রেখে কমিশন কাজ শুরু করেছে।
এবারই প্রথম আইনের ভিত্তিতে কমিশন গঠন করা হলেও এই কমিশন নিয়ে রাজনৈতিক মহলে বিতর্ক আছে, পক্ষে-বিপক্ষে মত আছে। রাষ্ট্রপতি আইন অনুযায়ী একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করেছিলেন। ছয় সদস্যদের অনুসন্ধান কমিটি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং বিশিষ্ট নাগরিকদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছে। তাঁদের কাছ থেকে নাম নিয়েছে, পরামর্শ গ্রহণ করেছে। বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া তিন শতাধিক নাম থেকে যাচাই-বাছাই করে ১০ জনের নাম অনুসন্ধান কমিটি রাষ্ট্রপতির কাছে জমা দেওয়ার পর সেখান থেকেই ৫ জনকে চূড়ান্ত নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
তবে শুরু থেকেই এই প্রক্রিয়ার বাইরে আছে সরকার ও আওয়ামী লীগের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিএনপি। বিএনপি আছে বর্জন-প্রক্রিয়ায়। দলটি রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনা বর্জন করেছে। অনুসন্ধান কমিটি বর্জন করেছে। কমিশন গঠনের জন্য নাম প্রস্তাব করাও বর্জন করেছে। কমিশন গঠনের পর তা নিয়ে মন্তব্য করাও বর্জন করেছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তাঁদের মাথাব্যথা নির্বাচন কমিশন নিয়ে নয়, তাঁদের মাথাব্যথা নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে।
বিএনপির এই মাথাব্যথা দূর হওয়ার আশু কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। কারণ, তারা বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আবার সরকারও নির্বাচনকালীন সরকারের প্রশ্নে তাদের শক্ত বিরোধী অবস্থানের কারণে সংবিধান থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধানই বাতিল করে দিয়েছে। এখন পর্যন্ত এটাই বিধান যে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে সরকার ক্ষমতায় আছে, সেই সরকারের অধীনে এবং নবগঠিত নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধানেই আগামী নির্বাচন হবে। বিএনপি খোয়াব দেখছে সরকার পতনের। সরকার পতনের সময় নাকি এসে গেছে! এই খোয়াবনামা অবশ্য বিএনপি বছরের পর বছর ধরে বয়ান করে চলেছে।
বিএনপি সবকিছু বর্জনের ধারায় থাকলেও তাদের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী অবশ্য নির্বাচন কমিশন গঠন-প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়েছেন। অনুসন্ধান কমিটির সঙ্গে সংলাপে বিএনপি-দরদি আরও কয়েকজনের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীও। তিনি সেখানে তাঁর নানা পরামর্শ দিয়েছেন, পছন্দের ৮ জনের নামের তালিকাও দিয়েছেন। নির্বাচন কমিশন গঠনের পর জানা যায়, প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পাওয়া কাজী হাবিবুল আউয়ালের নাম ছিল ডা. জাফরুল্লাহর তালিকায়। তাঁর তালিকা থেকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ করায় জাফরুল্লাহ চৌধুরী সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি বিএনপিকে অনুরোধ করেছেন তারা যেন নির্বাচন কমিশনকে মেনে নেয়।
নির্বাচন কমিশন গঠন ইস্যুতে ডা. জাফরুল্লাহর ভূমিকায় বড় বিপাকে পড়েছে বিএনপি। ডা. জাফরুল্লাহ যে তাদের লোক নন, তাঁকেও যে বিএনপি বর্জনের তালিকায় তুলেছে, নির্বাচন কমিশন গঠন-প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার আগে তা দলটি প্রকাশ করেনি। নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনারের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করায় এবং বিএনপিকে অবস্থান পরিবর্তনের পরামর্শ দেওয়ার পর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ঘোষণা দিয়ে বলতে হয়েছে, ‘ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর সঙ্গে বিএনপির কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি নির্বাচন কমিশনের প্রশংসা করতে পারেন, সেটা তাঁর ব্যক্তিগত বিষয় কিন্তু বিএনপিকে কোনো মতামত দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন না। তিনি বিএনপির কেউ নন।’
তাহলে তিনি কার? এত দিন যে বিএনপির সভা-সমাবেশে উপস্থিত হয়ে ডা. জাফরুল্লাহ তাদের হয়ে সরকারের মুণ্ডুপাত করে আসছেন, সেটা বিএনপি কেন মেনে নিয়েছে? তখন তাঁকে বর্জনের প্রশ্ন আসেনি কেন? এক নির্বাচন কমিশন ইস্যুতে সরকারের সঙ্গে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর পছন্দের মিল হওয়ায় বিএনপি তাঁকে বর্জন করল? তাহলে কেউ কেউ যেটা মনে করেন, বর্তমান সরকারের কট্টর সমালোচক হওয়ার গুণেই তিনি বিএনপির শুভাকাঙ্ক্ষীর তালিকাভুক্ত হয়েছিলেন, সেটাই সত্য? ‘শত্রুর শত্রু বন্ধু’ এই তত্ত্ব মেনে বিএনপি তাঁকে কোলে তুলে নেচেছিল?
২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নামে যে জোট গঠিত হয়েছিল, তার পেছনে জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বড় ভূমিকা দৃশ্যমান ছিল। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে মিলে বিএনপি ওই নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল। নির্বাচনে শোচনীয় পরাজয় ঘটার পর জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট কার্যত অস্তিত্বহীন হয়ে পড়লেও জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে নিষ্ক্রিয় দেখা যায়নি। তিনি তাঁর অবস্থানও বদলাননি। তিনি নিয়মিতভাবে সরকারবিরোধী নানা অনুষ্ঠানে সরব আছেন।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে একটি ফিল্ড হাসপাতাল গড়ে আহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসায় সহায়তা দিয়ে একটি ব্যতিক্রমী ভূমিকা পালন করায় তাঁর প্রতি অনেকেরই সহানুভূতি, সমর্থন ও দুর্বলতা আছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও তাঁকে পছন্দ করতেন। জাফরুল্লাহ চৌধুরী নিজেই এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, সাভারে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের জন্য জমি দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু। ‘গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র’ নামটিও বঙ্গবন্ধুর দেওয়া। অথচ কোনো এক অজ্ঞাত কারণে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সরকারের প্রতি জাফরুল্লাহ চৌধুরীর চরম বিরূপতা রয়েছে। অবশ্য ২০১৬ সালে এক সাক্ষাৎকারে তিনি নিজেকে শেখ হাসিনারও শুভানুধ্যায়ী বলে দাবি করেছিলেন। কিন্তু বাস্তবে তার কোনো প্রতিফলন দেখা না গেলেও শেখ হাসিনার সরকার ছাড়া আর সব সরকারের শুভানুধ্যায়ীর ভূমিকায় তাঁকে দেখা গেছে। দেশের দুই সেনাশাসক জিয়াউর রহমান এবং এইচ এম এরশাদের সঙ্গেও তাঁর ঘনিষ্ঠতা ছিল। এরশাদ আমলে জাতীয় ওষুধনীতি প্রণয়ন করে তিনি গণতান্ত্রিক-প্রগতিশীল মহলে নিন্দিত ও সমালোচিত হয়েছিলেন।
নিরপেক্ষ অবস্থানের নামে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী অনেক সময় এমন সব কথা বলেন, যা প্রকৃতপক্ষে আমাদের গৌরবের মুক্তিযুদ্ধের নীতি-আদর্শের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। তিনি একদিকে নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা বলে গর্ব করেন, অন্যদিকে স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকারদের পক্ষে অবস্থান নেন। আওয়ামী লীগ এবং শেখ হাসিনার সমালোচনায় তিনি নির্দয় হলেও বিএনপির সমালোচনায় খুবই সদয়। তিনি কখনো কখনো বিএনপিকে যেসব পরামর্শ দিয়ে থাকেন, তার কোনোটাই বিএনপি শোনার গরজ বোধ করে না। তারেক রহমানকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করার সমালোচনা করে এবং তারেক-কন্যা জাইমাকে বিএনপির রাজনীতির জন্য প্রস্তুত করার পরামর্শ দিয়ে তিনি বিএনপির কিছুটা বিরাগভাজন হয়েছেন। কিছু দিন আগে বিএনপির নেতাদের ‘চাকর-বাকর’ বলেও তিনি অনেকের চক্ষুশূল হয়েছেন। কিন্তু সবশেষে তিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের প্রতি আস্থা পোষণ করে প্রকাশ্যে কথা বলে বিএনপির কাছে বোঝা হয়ে উঠেছেন। এই ‘বোঝা’ বিএনপি আবার ঘাড়ে তুলে নেবে কি না, সেটাই
এখন দেখার বিষয়।
তবে আওয়ামী লীগের পছন্দের নির্বাচন কমিশনের বিরোধিতা করে, বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্তে বিএনপি শেষ পর্যন্ত
অটল থাকলে কী হবে? বিএনপিকে নির্বাচনে আনার জন্য, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য সরকার তথা আওয়ামী লীগ কি নমনীয় হবে, ছাড় দেবে? সরকার কি আসলে অবস্থান বদল করার মতো বিশেষ কোনো চাপে আছে?
নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল নিয়োগ পাওয়ার পর থেকে অনেক কথা বলছেন। তবে গুরুত্বপূর্ণ কথা যেটা বলেছেন তা হলো, ভোটের মাঠে নির্বাচন কমিশন একা সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি করতে পারে না। নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা অসীম নয়। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা দরকার।
রাজনৈতিক নেতৃত্বের মধ্যে যদি ন্যূনতম সমঝোতা না থাকে, তাহলে সিইসি হিসেবে তিনি মুরব্বির ভূমিকা নিতে পারবেন না।
কিন্তু রাজনৈতিক দলের মধ্যে সমঝোতা, বিশেষ করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে সমঝোতা হওয়ার কোনো লক্ষণ কি কেউ দেখছেন? আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে, আবারও ক্ষমতায় ফিরতে চায়। বিএনপি আছে ক্ষমতার বাইরে, ফিরতে চায় ক্ষমতায়। ক্ষমতায় থেকে চাওয়া আর ক্ষমতার বাইরে থেকে চাওয়ার মধ্যে আকাশ-পাতাল প্রার্থক্য আছে। এই প্রার্থক্য দূর করার জাদুর কাঠি কি কারও সন্ধানে আছে?
লেখক:বিভুরঞ্জন সরকার,সহকারী সম্পাদক, আজকের পত্রিকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

নতুন নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে রাষ্ট্রপতি নিয়োগ দিয়েছেন সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব কাজী হাবিবুল আউয়ালকে। অন্য চার নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগ পেয়েছেন জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আলমগীর, আনিছুর রহমান, অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ বেগম রাশিদা সুলতানা ও অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহসান
০৬ মার্চ ২০২২
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

নতুন নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে রাষ্ট্রপতি নিয়োগ দিয়েছেন সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব কাজী হাবিবুল আউয়ালকে। অন্য চার নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগ পেয়েছেন জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আলমগীর, আনিছুর রহমান, অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ বেগম রাশিদা সুলতানা ও অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহসান
০৬ মার্চ ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

নতুন নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে রাষ্ট্রপতি নিয়োগ দিয়েছেন সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব কাজী হাবিবুল আউয়ালকে। অন্য চার নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগ পেয়েছেন জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আলমগীর, আনিছুর রহমান, অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ বেগম রাশিদা সুলতানা ও অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহসান
০৬ মার্চ ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

নতুন নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে রাষ্ট্রপতি নিয়োগ দিয়েছেন সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব কাজী হাবিবুল আউয়ালকে। অন্য চার নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগ পেয়েছেন জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আলমগীর, আনিছুর রহমান, অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ বেগম রাশিদা সুলতানা ও অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহসান
০৬ মার্চ ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫