জাহীদ রেজা নূর

লেখাটা যখন শুরু করেছি, তখনো হাতের কাছে পরিচয় প্রকাশিত হয়, এমন সব ডকুমেন্ট আমার হাতে রাখতে হচ্ছিল। যদিও দেখাতেই হবে কাউকে, এমন নয়, কিন্তু যেকোনো সময় পুলিশ এসে পরিচয়পত্র চাইতে পারে। সাবওয়েতে চলার সময় অহরহই ঘোষণা দেওয়া হয়, যে কারও ব্যাগ যেকোনো মুহূর্তে পুলিশ এসে পরীক্ষা করতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক থেকে রওনা দিয়ে ঢাকা পর্যন্ত পথেও পাসপোর্ট আর বোর্ডিং পাস খুবই জরুরি। ঢাকায় এসে পড়লে পরিচয়পত্রটা আর ততটা দরকার হয় না। এখনো আমাদের দেশের সব মানুষ তার জাতীয় পরিচয়পত্র পায়নি।
লেখাটা যখন শুরু করেছি, এর একটু পরেই নিউইয়র্কের জেএফকে বিমানবন্দর থেকে দুবাইয়ের উদ্দেশে আমাদের প্লেন উড়বে। ইমিগ্রেশন পার হয়ে একটি ভালো জায়গা বেছে নিয়ে লিখছি। প্লেনে চেক-ইন থেকে শুরু করে পরবর্তী কয়েকটি ধাপ পার হতে কোনো সমস্যা হয়নি আমার। কোনো প্রশ্নেরও সামনে পড়তে হয়নি। লাগেজের ওজন ঠিক ছিল বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা সে বিষয়ে কোনো প্রশ্নও তোলেননি।
কথাগুলো তুললাম এই কারণে যে, আমাদের শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে ওড়ার সময় কোনো না কোনো সংকটে পড়তে হয়। এ রকম বেশ কিছু বিরক্তিকর অভিজ্ঞতার কথা আশপাশের পরিচিত মানুষদের কাছ থেকেই শুনেছি। ইমিগ্রেশন পার হওয়ার পরও হঠাৎ করে এমন কোনো কর্মকর্তা এসে হাজির হয়ে এমন সব উদ্ভট প্রশ্ন করেন, যা শুধু বিরক্তিকর নয়, অপমানজনকও বটে।
কাগজপত্র ঠিকঠাক থাকলে এবং কোনো দুরভিসন্ধি না থাকলে যাত্রীর জন্য বিমানবন্দর এলাকা তো হওয়া উচিত সবচেয়ে নিরাপদ জায়গা। সেখানে যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের সবার জন্য যাত্রী হচ্ছেন ‘কাস্টমার’। কাস্টমারের সঙ্গে ব্যবহার কেমন হওয়া উচিত, সে শিক্ষা আমাদের বিমানবন্দরে কর্মরত মানুষদের ঠিকভাবে শেখানো হয় কি না, সে প্রশ্ন আছে।
শাহজালাল বিমানবন্দরে এখন বিভিন্ন ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের নির্দিষ্ট লাউঞ্জ ব্যবহারের ব্যবস্থা হয়েছে। খেয়াল করলেই দেখবেন, সেই সব লাউঞ্জে কার্ডধারী যাত্রীদের সঙ্গে যে ব্যবহার করা হয়, তাতে যাত্রী ভাবতেই পারেন যে তাঁকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। সেখানে খাবার-দাবারেরও ভালো ব্যবস্থা থাকে। কিন্তু যিনি সেই সুযোগ পাচ্ছেন না, তাঁর জন্য অর্থের বিনিময়ে যেসব খাবারের ব্যবস্থা আছে, তা কতটা উপাদেয় এবং কতটা ‘ফ্রেশ’, এ নিয়ে প্রশ্ন আছে। বিক্রেতার দেহভাষা কতটা আন্তরিক, সেটাও দেখার ব্যাপার।
আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যিনি প্রবেশ করেছেন ভিন্ন কোনো দেশে যাওয়ার জন্য, তাঁর যাত্রা নিরাপদ করার জন্য বিমানবন্দরে অবস্থিত প্রতিটি সংস্থারই যে দায়িত্ব আছে, সে কথা বোঝে কজন?
২. ঢাকায় বিমানবন্দরে নামলেই কিছু মানুষ এগিয়ে আসেন সাহায্য লাগবে কি না, জানতে। নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে তাঁরা লাগেজ ওঠানো-নামানোর কাজ করে থাকেন; অর্থাৎ এই মানুষদের সাহায্যে বিভিন্ন বিমানের চেক-ইনের জায়গা পর্যন্ত পৌঁছে যাওয়া যায়। এতে করে কিছু সমস্যারও সৃষ্টি হয়। কখনো কখনো সারি বা কিউ ভেঙে তাঁরা ঢুকে পড়েন এবং অন্যের বিরক্তির কারণ হয়।
এটা কতটা আইনি সেবা, সেটা আমার জানা নেই। আর কোনো এয়ারপোর্টে নগদ অর্থের বিনিময়ে এ ধরনের সাহায্যকারীদের আমি দেখিনি; বরং বিমান কর্তৃপক্ষকে আগে থেকে বলা হলে হুইলচেয়ার সার্ভিস রয়েছে দেশের প্রায় সব বিমানবন্দরেই। কিন্তু বাঙালি যাত্রীদের ভেতর একটা অদ্ভুত প্রবণতা দেখছি। হাঁটাচলা করার সামর্থ্য থাকলেও কেউ কেউ বিমান থেকে নামার পর হুইলচেয়ারে করে যাচ্ছেন। এই প্রবণতা মোটেই সুরুচির পরিচায়ক নয়।
এখন বিমানের আইল সিটগুলোর বেশির ভাগই আগে থেকে তাঁদের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়। ফলে সাধারণ যাত্রীদের পক্ষে আইল সিট পাওয়া কঠিন ব্যাপার। দিনে দিনে এই সমস্যা বাড়ছে।
৩. ঢাকা থেকে বিমানে ওঠার পর কিংবা বিমানে ঢাকায় যাওয়ার সময় সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দেখা দেয় রেস্টরুম বা টয়লেট ব্যবহার। যেকোনো বিমানযাত্রীকে অবশ্যই রেস্টরুম ব্যবহারের নিয়মকানুন জানতে হবে। কীভাবে তা ব্যবহার করা যায়, তা জানার ব্যবস্থা থাকা চাই। আমাদের বিদেশযাত্রী বাঙালিদের অনেকেই জানেন না কীভাবে টয়লেট ব্যবহার করতে হয়। ফলে তাঁদের অনেকেই টয়লেট ব্যবহার করার পর তা পরিষ্কার করার কথা মাথায় রাখেন না।
বিমানবালাদের অপরিসীম ধৈর্যই কেবল পরবর্তী যাত্রীর টয়লেটে যাওয়াকে বিড়ম্বনাহীন করে তোলে। আমি খেয়াল করে দেখেছি, কোনো যাত্রী যখন টয়লেট ব্যবহার করেছেন অথচ ফ্ল্যাশ করেননি, তখন এই বিমানবালাদের চেহারার অবস্থা। খুবই লজ্জা লাগে তখন। আমার মনে হয়, আকাশপথে ভ্রমণকারীর জন্য টয়লেট ব্যবহারের নিয়মকানুন জানা খুবই জরুরি।
আমরা যে ‘হাইজিন’ মেনে চলার ব্যাপারে উদাসীন, এটা এরও একটা উদাহরণ। আমাদের শহরের রাস্তাঘাটে যেসব শৌচাগার আছে, কিংবা স্টেডিয়ামের মতো জায়গায় যেসব শৌচাগার রয়েছে, সেগুলো ব্যবহারের সময় যে উদাসীনতার দেখা পেয়েছি, তাতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারেও আমাদের উদাসীনতার একটা আভাস পাওয়া যায়। এরই একটা রূপ দেখা যায় বিমানের টয়লেটে।
৪. দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়ার পর যখন ল্যান্ডিংয়ের সময় হয়, তখন বিমানে এক বিতিকিচ্ছি অবস্থার সৃষ্টি হয়। বিমান ল্যান্ড করার পরপরই যাত্রীরা যেভাবে সিট ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে যান, তাতে মনে হয়, বাস থেমেছে আর তক্ষুনি বাস থেকে না নামলে চালক বাসটা বুঝি আবার ছেড়ে দেবেন। যতক্ষণ পর্যন্ত সিটবেল্ট বেঁধে রাখার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত সিটে বসে থাকাই নিয়ম। কিন্তু তা মানছে কে?
তবে অবশ্যই বলতে হবে, এটা একটা স্বাভাবিক প্রবণতা। বিমান মাটি ছোঁয়ার পরপরই মাথার ওপরে যে ব্যাগটি রয়েছে, সেটা নামানোর প্রবণতা সবারই থাকে। এ পর্যন্ত না হয় মানলাম, সব ঠিক আছে। কিন্তু সামনের যাত্রীকে টপকে সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য রাস্তাও যখন কেউ খোঁজে, তখন সতর্ক হতে হয় এবং তখনই কেবল মনে হয়, নিয়মভঙ্গের প্রবণতা যাদের রয়েছে, তাদের মধ্যে আমরা বাংলার মানুষেরা অনেক দূর এগিয়ে আছি।
শুধু কি তাই? এয়ারপোর্টের কাস্টমস বা ইমিগ্রেশনে যে অফিসারটি বসে আছেন, তাঁর দেহভাষার মধ্যে এমন কিছু থাকতে হবে, যাতে বোঝা যায়, তিনি ‘স্বাগত’ জানাচ্ছেন। বিভিন্ন দেশের ইমিগ্রেশন পার হওয়ার সময় পাসপোর্টে সিল দেওয়ার কালে তাঁদের অনেকেই বলেন, ‘ওয়েলকাম টু...।’ কিন্তু হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন অফিসারদের চেহারায় ক্লান্তি আর গোমড়া মুখ দেখার অভিজ্ঞতাই বেশি। শনিবার বিকেলে যখন আমাদের প্লেন ল্যান্ড করল ঢাকায়, তখনো ইমিগ্রেশন অফিসারদের মুখগুলো হাস্যরসহীন।
আমার পাসপোর্ট যখন চেক করা হচ্ছে, তখন বেশ জোর দিয়েই বললাম, ‘আপনাদের মুখগুলো এমন গোমড়া কেন? আমরা যারা বাইরে থেকে আসছি, আপনাদের দিকে তাকালে মনে হয়, আমরা যেন কোনো অপরাধ করে এসেছি। অথচ আপনাদের চেহারায় হাসি থাকলে আমাদের মনও প্রফুল্ল হয়ে ওঠে।’
আমার এ কথায় আশপাশের তিন-চারজন ইমিগ্রেশন অফিসারের মুখে হাসি ফুটে ওঠে। তাঁদের একজন বলেন, ‘আমরাও তো হাসতে চাই। কিন্তু এমন সব ব্যাপার আছে, যেগুলো আমাদের হাসতে দেয় না।’ কী সে সব ব্যাপার, তা জানার সুযোগ আমার হয়নি। তবে তা জানা থাকা দরকার।
বিমানবন্দর হয়ে যাঁরা দেশের বাইরে যাচ্ছেন, তাঁদের ভ্রমণ নিরাপদ ও স্বস্তিকর করে তোলাটাই বিমানবন্দরে সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মূল কাজ হওয়া উচিত। কর্মী বা কর্মকর্তার দেহভাষায় একটা স্বতঃস্ফূর্ত উচ্ছলতা না থাকলে তা কোনো সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান হয়ে উঠতে পারে না। আমাদের বিমানবন্দরের গোমড়া পরিবেশ থেকে উত্তরণের জন্য প্রতিটি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানকেই আন্তরিক হতে হবে।
আর যাত্রীদের কথাও বলা দরকার। সম্প্রতি একজন যাত্রী প্রায় ১৬টি পোশাক পরে তাতে ৪ কোটি টাকার বেশি সোনার গুঁড়া নিয়ে এসেছেন। তিনি ধরা পড়ার পরপরই আমরা এসেছি বলে গ্রিন লাইন দিয়ে বের হওয়ার সময়ও দেখলাম স্যুটকেস চেক করা হচ্ছে। মাইকে ঘোষণা করা হচ্ছে, যদি কারও কাছে ১০০ গ্রামের বেশি স্বর্ণ থাকে, তাহলে তা ডিক্লেয়ার করতে হবে। নইলে প্রচলিত শাস্তি দেওয়া হবে।
হতে পারে, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে যে প্লেনগুলো ঢাকায় আসে, তার যাত্রীদের অনেকেই হয়তো নিয়ম ভেঙে অতিরিক্ত স্বর্ণ নিয়ে আসেন। কিন্তু সেটা রোধ করতে হলে সেবাদানকারী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকেও যতটা সৎ ও উদ্ভাবনশক্তির অধিকারী হতে হবে, তা তারা হতে পেরেছে কি?
এখানে এমন কিছু সমস্যার প্রসঙ্গ উঠে এসেছে, যা সহজে নিরাময়যোগ্য নয়। সমস্যাগুলোর সমাধানের জন্য বিমানবন্দরে কাজ করার মাজেজাটা বোঝা দরকার। এ ব্যাপারে আমরা যে খুবই উদাসীন, সেটা প্রতিবার বিমানবন্দরের অভিজ্ঞতা থেকেই বুঝতে পারি।
লেখক: উপসম্পাদক, আজকের পত্রিকা

লেখাটা যখন শুরু করেছি, তখনো হাতের কাছে পরিচয় প্রকাশিত হয়, এমন সব ডকুমেন্ট আমার হাতে রাখতে হচ্ছিল। যদিও দেখাতেই হবে কাউকে, এমন নয়, কিন্তু যেকোনো সময় পুলিশ এসে পরিচয়পত্র চাইতে পারে। সাবওয়েতে চলার সময় অহরহই ঘোষণা দেওয়া হয়, যে কারও ব্যাগ যেকোনো মুহূর্তে পুলিশ এসে পরীক্ষা করতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক থেকে রওনা দিয়ে ঢাকা পর্যন্ত পথেও পাসপোর্ট আর বোর্ডিং পাস খুবই জরুরি। ঢাকায় এসে পড়লে পরিচয়পত্রটা আর ততটা দরকার হয় না। এখনো আমাদের দেশের সব মানুষ তার জাতীয় পরিচয়পত্র পায়নি।
লেখাটা যখন শুরু করেছি, এর একটু পরেই নিউইয়র্কের জেএফকে বিমানবন্দর থেকে দুবাইয়ের উদ্দেশে আমাদের প্লেন উড়বে। ইমিগ্রেশন পার হয়ে একটি ভালো জায়গা বেছে নিয়ে লিখছি। প্লেনে চেক-ইন থেকে শুরু করে পরবর্তী কয়েকটি ধাপ পার হতে কোনো সমস্যা হয়নি আমার। কোনো প্রশ্নেরও সামনে পড়তে হয়নি। লাগেজের ওজন ঠিক ছিল বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা সে বিষয়ে কোনো প্রশ্নও তোলেননি।
কথাগুলো তুললাম এই কারণে যে, আমাদের শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে ওড়ার সময় কোনো না কোনো সংকটে পড়তে হয়। এ রকম বেশ কিছু বিরক্তিকর অভিজ্ঞতার কথা আশপাশের পরিচিত মানুষদের কাছ থেকেই শুনেছি। ইমিগ্রেশন পার হওয়ার পরও হঠাৎ করে এমন কোনো কর্মকর্তা এসে হাজির হয়ে এমন সব উদ্ভট প্রশ্ন করেন, যা শুধু বিরক্তিকর নয়, অপমানজনকও বটে।
কাগজপত্র ঠিকঠাক থাকলে এবং কোনো দুরভিসন্ধি না থাকলে যাত্রীর জন্য বিমানবন্দর এলাকা তো হওয়া উচিত সবচেয়ে নিরাপদ জায়গা। সেখানে যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের সবার জন্য যাত্রী হচ্ছেন ‘কাস্টমার’। কাস্টমারের সঙ্গে ব্যবহার কেমন হওয়া উচিত, সে শিক্ষা আমাদের বিমানবন্দরে কর্মরত মানুষদের ঠিকভাবে শেখানো হয় কি না, সে প্রশ্ন আছে।
শাহজালাল বিমানবন্দরে এখন বিভিন্ন ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের নির্দিষ্ট লাউঞ্জ ব্যবহারের ব্যবস্থা হয়েছে। খেয়াল করলেই দেখবেন, সেই সব লাউঞ্জে কার্ডধারী যাত্রীদের সঙ্গে যে ব্যবহার করা হয়, তাতে যাত্রী ভাবতেই পারেন যে তাঁকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। সেখানে খাবার-দাবারেরও ভালো ব্যবস্থা থাকে। কিন্তু যিনি সেই সুযোগ পাচ্ছেন না, তাঁর জন্য অর্থের বিনিময়ে যেসব খাবারের ব্যবস্থা আছে, তা কতটা উপাদেয় এবং কতটা ‘ফ্রেশ’, এ নিয়ে প্রশ্ন আছে। বিক্রেতার দেহভাষা কতটা আন্তরিক, সেটাও দেখার ব্যাপার।
আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যিনি প্রবেশ করেছেন ভিন্ন কোনো দেশে যাওয়ার জন্য, তাঁর যাত্রা নিরাপদ করার জন্য বিমানবন্দরে অবস্থিত প্রতিটি সংস্থারই যে দায়িত্ব আছে, সে কথা বোঝে কজন?
২. ঢাকায় বিমানবন্দরে নামলেই কিছু মানুষ এগিয়ে আসেন সাহায্য লাগবে কি না, জানতে। নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে তাঁরা লাগেজ ওঠানো-নামানোর কাজ করে থাকেন; অর্থাৎ এই মানুষদের সাহায্যে বিভিন্ন বিমানের চেক-ইনের জায়গা পর্যন্ত পৌঁছে যাওয়া যায়। এতে করে কিছু সমস্যারও সৃষ্টি হয়। কখনো কখনো সারি বা কিউ ভেঙে তাঁরা ঢুকে পড়েন এবং অন্যের বিরক্তির কারণ হয়।
এটা কতটা আইনি সেবা, সেটা আমার জানা নেই। আর কোনো এয়ারপোর্টে নগদ অর্থের বিনিময়ে এ ধরনের সাহায্যকারীদের আমি দেখিনি; বরং বিমান কর্তৃপক্ষকে আগে থেকে বলা হলে হুইলচেয়ার সার্ভিস রয়েছে দেশের প্রায় সব বিমানবন্দরেই। কিন্তু বাঙালি যাত্রীদের ভেতর একটা অদ্ভুত প্রবণতা দেখছি। হাঁটাচলা করার সামর্থ্য থাকলেও কেউ কেউ বিমান থেকে নামার পর হুইলচেয়ারে করে যাচ্ছেন। এই প্রবণতা মোটেই সুরুচির পরিচায়ক নয়।
এখন বিমানের আইল সিটগুলোর বেশির ভাগই আগে থেকে তাঁদের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়। ফলে সাধারণ যাত্রীদের পক্ষে আইল সিট পাওয়া কঠিন ব্যাপার। দিনে দিনে এই সমস্যা বাড়ছে।
৩. ঢাকা থেকে বিমানে ওঠার পর কিংবা বিমানে ঢাকায় যাওয়ার সময় সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দেখা দেয় রেস্টরুম বা টয়লেট ব্যবহার। যেকোনো বিমানযাত্রীকে অবশ্যই রেস্টরুম ব্যবহারের নিয়মকানুন জানতে হবে। কীভাবে তা ব্যবহার করা যায়, তা জানার ব্যবস্থা থাকা চাই। আমাদের বিদেশযাত্রী বাঙালিদের অনেকেই জানেন না কীভাবে টয়লেট ব্যবহার করতে হয়। ফলে তাঁদের অনেকেই টয়লেট ব্যবহার করার পর তা পরিষ্কার করার কথা মাথায় রাখেন না।
বিমানবালাদের অপরিসীম ধৈর্যই কেবল পরবর্তী যাত্রীর টয়লেটে যাওয়াকে বিড়ম্বনাহীন করে তোলে। আমি খেয়াল করে দেখেছি, কোনো যাত্রী যখন টয়লেট ব্যবহার করেছেন অথচ ফ্ল্যাশ করেননি, তখন এই বিমানবালাদের চেহারার অবস্থা। খুবই লজ্জা লাগে তখন। আমার মনে হয়, আকাশপথে ভ্রমণকারীর জন্য টয়লেট ব্যবহারের নিয়মকানুন জানা খুবই জরুরি।
আমরা যে ‘হাইজিন’ মেনে চলার ব্যাপারে উদাসীন, এটা এরও একটা উদাহরণ। আমাদের শহরের রাস্তাঘাটে যেসব শৌচাগার আছে, কিংবা স্টেডিয়ামের মতো জায়গায় যেসব শৌচাগার রয়েছে, সেগুলো ব্যবহারের সময় যে উদাসীনতার দেখা পেয়েছি, তাতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারেও আমাদের উদাসীনতার একটা আভাস পাওয়া যায়। এরই একটা রূপ দেখা যায় বিমানের টয়লেটে।
৪. দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়ার পর যখন ল্যান্ডিংয়ের সময় হয়, তখন বিমানে এক বিতিকিচ্ছি অবস্থার সৃষ্টি হয়। বিমান ল্যান্ড করার পরপরই যাত্রীরা যেভাবে সিট ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে যান, তাতে মনে হয়, বাস থেমেছে আর তক্ষুনি বাস থেকে না নামলে চালক বাসটা বুঝি আবার ছেড়ে দেবেন। যতক্ষণ পর্যন্ত সিটবেল্ট বেঁধে রাখার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত সিটে বসে থাকাই নিয়ম। কিন্তু তা মানছে কে?
তবে অবশ্যই বলতে হবে, এটা একটা স্বাভাবিক প্রবণতা। বিমান মাটি ছোঁয়ার পরপরই মাথার ওপরে যে ব্যাগটি রয়েছে, সেটা নামানোর প্রবণতা সবারই থাকে। এ পর্যন্ত না হয় মানলাম, সব ঠিক আছে। কিন্তু সামনের যাত্রীকে টপকে সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য রাস্তাও যখন কেউ খোঁজে, তখন সতর্ক হতে হয় এবং তখনই কেবল মনে হয়, নিয়মভঙ্গের প্রবণতা যাদের রয়েছে, তাদের মধ্যে আমরা বাংলার মানুষেরা অনেক দূর এগিয়ে আছি।
শুধু কি তাই? এয়ারপোর্টের কাস্টমস বা ইমিগ্রেশনে যে অফিসারটি বসে আছেন, তাঁর দেহভাষার মধ্যে এমন কিছু থাকতে হবে, যাতে বোঝা যায়, তিনি ‘স্বাগত’ জানাচ্ছেন। বিভিন্ন দেশের ইমিগ্রেশন পার হওয়ার সময় পাসপোর্টে সিল দেওয়ার কালে তাঁদের অনেকেই বলেন, ‘ওয়েলকাম টু...।’ কিন্তু হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন অফিসারদের চেহারায় ক্লান্তি আর গোমড়া মুখ দেখার অভিজ্ঞতাই বেশি। শনিবার বিকেলে যখন আমাদের প্লেন ল্যান্ড করল ঢাকায়, তখনো ইমিগ্রেশন অফিসারদের মুখগুলো হাস্যরসহীন।
আমার পাসপোর্ট যখন চেক করা হচ্ছে, তখন বেশ জোর দিয়েই বললাম, ‘আপনাদের মুখগুলো এমন গোমড়া কেন? আমরা যারা বাইরে থেকে আসছি, আপনাদের দিকে তাকালে মনে হয়, আমরা যেন কোনো অপরাধ করে এসেছি। অথচ আপনাদের চেহারায় হাসি থাকলে আমাদের মনও প্রফুল্ল হয়ে ওঠে।’
আমার এ কথায় আশপাশের তিন-চারজন ইমিগ্রেশন অফিসারের মুখে হাসি ফুটে ওঠে। তাঁদের একজন বলেন, ‘আমরাও তো হাসতে চাই। কিন্তু এমন সব ব্যাপার আছে, যেগুলো আমাদের হাসতে দেয় না।’ কী সে সব ব্যাপার, তা জানার সুযোগ আমার হয়নি। তবে তা জানা থাকা দরকার।
বিমানবন্দর হয়ে যাঁরা দেশের বাইরে যাচ্ছেন, তাঁদের ভ্রমণ নিরাপদ ও স্বস্তিকর করে তোলাটাই বিমানবন্দরে সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মূল কাজ হওয়া উচিত। কর্মী বা কর্মকর্তার দেহভাষায় একটা স্বতঃস্ফূর্ত উচ্ছলতা না থাকলে তা কোনো সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান হয়ে উঠতে পারে না। আমাদের বিমানবন্দরের গোমড়া পরিবেশ থেকে উত্তরণের জন্য প্রতিটি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানকেই আন্তরিক হতে হবে।
আর যাত্রীদের কথাও বলা দরকার। সম্প্রতি একজন যাত্রী প্রায় ১৬টি পোশাক পরে তাতে ৪ কোটি টাকার বেশি সোনার গুঁড়া নিয়ে এসেছেন। তিনি ধরা পড়ার পরপরই আমরা এসেছি বলে গ্রিন লাইন দিয়ে বের হওয়ার সময়ও দেখলাম স্যুটকেস চেক করা হচ্ছে। মাইকে ঘোষণা করা হচ্ছে, যদি কারও কাছে ১০০ গ্রামের বেশি স্বর্ণ থাকে, তাহলে তা ডিক্লেয়ার করতে হবে। নইলে প্রচলিত শাস্তি দেওয়া হবে।
হতে পারে, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে যে প্লেনগুলো ঢাকায় আসে, তার যাত্রীদের অনেকেই হয়তো নিয়ম ভেঙে অতিরিক্ত স্বর্ণ নিয়ে আসেন। কিন্তু সেটা রোধ করতে হলে সেবাদানকারী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকেও যতটা সৎ ও উদ্ভাবনশক্তির অধিকারী হতে হবে, তা তারা হতে পেরেছে কি?
এখানে এমন কিছু সমস্যার প্রসঙ্গ উঠে এসেছে, যা সহজে নিরাময়যোগ্য নয়। সমস্যাগুলোর সমাধানের জন্য বিমানবন্দরে কাজ করার মাজেজাটা বোঝা দরকার। এ ব্যাপারে আমরা যে খুবই উদাসীন, সেটা প্রতিবার বিমানবন্দরের অভিজ্ঞতা থেকেই বুঝতে পারি।
লেখক: উপসম্পাদক, আজকের পত্রিকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

লেখাটা যখন শুরু করেছি, তখনো হাতের কাছে পরিচয় প্রকাশিত হয়, এমন সব ডকুমেন্ট আমার হাতে রাখতে হচ্ছিল। যদিও দেখাতেই হবে কাউকে, এমন নয়, কিন্তু যেকোনো সময় পুলিশ এসে পরিচয়পত্র চাইতে পারে।
২৭ মে ২০২৪
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

লেখাটা যখন শুরু করেছি, তখনো হাতের কাছে পরিচয় প্রকাশিত হয়, এমন সব ডকুমেন্ট আমার হাতে রাখতে হচ্ছিল। যদিও দেখাতেই হবে কাউকে, এমন নয়, কিন্তু যেকোনো সময় পুলিশ এসে পরিচয়পত্র চাইতে পারে।
২৭ মে ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

লেখাটা যখন শুরু করেছি, তখনো হাতের কাছে পরিচয় প্রকাশিত হয়, এমন সব ডকুমেন্ট আমার হাতে রাখতে হচ্ছিল। যদিও দেখাতেই হবে কাউকে, এমন নয়, কিন্তু যেকোনো সময় পুলিশ এসে পরিচয়পত্র চাইতে পারে।
২৭ মে ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

লেখাটা যখন শুরু করেছি, তখনো হাতের কাছে পরিচয় প্রকাশিত হয়, এমন সব ডকুমেন্ট আমার হাতে রাখতে হচ্ছিল। যদিও দেখাতেই হবে কাউকে, এমন নয়, কিন্তু যেকোনো সময় পুলিশ এসে পরিচয়পত্র চাইতে পারে।
২৭ মে ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫