এ কে এম শামসুদ্দিন

বছর ঘুরে ডিসেম্বর মাস এলেই যেন মুক্তিযুদ্ধের সেই অগ্নিঝরা দিনগুলোর কথা মনে পড়ে যায়। চোখের কোণে ভেসে ওঠে আবেগতাড়িত দুর্বিষহ ঘটনার সব দৃশ্যাবলি। ডিসেম্বর হলো বাঙালির আবেগের মাস, বিজয়ের মাস; বিশেষ করে আমরা যাঁরা এখনো বেঁচে আছি, তাঁরা অনেকেই স্মৃতিকাতর হয়ে পড়ি।
মার্চের অসহযোগ আন্দোলন থেকে শুরু করে ডিসেম্বরের চূড়ান্ত বিজয় অবধি এমন অনেক ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এখনো অনেকে বেঁচে আছেন। তাঁদের কাছে ডিসেম্বর মানেই এক অবিস্মরণীয় বিজয়ের গল্পগাথা। তবে এ বিজয় এত সহজে আসেনি। লাখো শহীদের রক্তে সিক্ত এ দেশের প্রতিটি ধূলিকণা যেন তারই সাক্ষ্য দেয়। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, ৬ দফা, উনসত্তরের ১১ দফা ও গণ-আন্দোলন এবং একাত্তরের মার্চে অসহযোগ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে যে সশস্ত্র স্বাধীনতাযুদ্ধ শুরু হয়েছিল, তার পরিসমাপ্তি ঘটে ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয়ের মধ্য দিয়ে।
একাত্তরের ১ মার্চ। বেলা ঠিক ১টা বেজে ৫ মিনিট। আসন্ন জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত ঘোষণা করেন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খান। জাতীয় পরিষদ অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত ঘোষণার পরপরই ঢাকা শহরজুড়ে রাস্তায় নেমে আসে বিক্ষুব্ধ মানুষ। দোকানপাট সব বন্ধ হয়ে যায়। শহরের পাড়া-মহল্লা থেকে ছাত্র-জনতা মিছিল বের করে এর প্রতিবাদ জানায়। কেবল বেসরকারিই নয়, সরকারি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও রাস্তায় নেমে আসেন। মুহূর্তে মিছিলের নগরীতে পরিণত হয় ঢাকা শহর। এসব মিছিল এসে জড়ো হতে থাকে হোটেল পূর্বাণীর সামনে। হোটেল পূর্বাণীতে চলছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের বৈঠক। যেখানে ৬ দফা দাবির ওপর ভিত্তি করে শাসনতন্ত্রের খসড়া প্রণয়নের কাজ চলছিল। বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয় পরিষদের অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিতের ঘোষণার তীব্র সমালোচনা করেন। বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘বাংলার মানুষ প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের এই সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখ্যান করেছে।’ তিনি ২ মার্চ ঢাকায় এবং ৩ মার্চ বেলা ২টা পর্যন্ত দেশের অন্যান্য জেলায় হরতাল পালনের আহ্বান জানান। একই সঙ্গে ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে জনসভার ঘোষণা দেন এবং ওই জনসভাতেই পরবর্তী পরিপূর্ণ কর্মসূচির ঘোষণা দেবেন বলে জানান।
কার্যত বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের পর থেকেই সমগ্র দেশ পাকিস্তানের হাতছাড়া হয়ে যায়। দেশ তখন বঙ্গবন্ধুর নির্দেশেই পরিচালিত হতে থাকে। এ অবস্থায় ইয়াহিয়া খান বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে বৈঠক করতে বাধ্য হন। তবে সেটা ছিল সম্পূর্ণ প্রহসনের বৈঠক। সময়ক্ষেপণ করে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে সৈন্য সমাবেশ করাই ছিল জান্তাগোষ্ঠীর মূল উদ্দেশ্য। দিনের পর দিন বৈঠক করে ২৫ মার্চ সন্ধ্যায় ইয়াহিয়া খান চোরের মতো পাকিস্তানে পালিয়ে যান। এরপর সেদিন মধ্যরাত থেকেই ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। দখলদার বাহিনীর ভারী অস্ত্রের গোলার শব্দে রাতের নীরবতা ভেঙে চারদিক ভয়ংকর করে তোলে।
২৫ মার্চের ক্র্যাকডাউনের পর মুক্তিবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের ক্রমাগত অভিযানে পাকিস্তানি হানাদাররা পর্যুদস্ত হতে থাকে। বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়ক, ব্রিজ, কালভার্ট, রেললাইন, বিদ্যুৎকেন্দ্র ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ধ্বংসের মাধ্যমে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রায় সব যোগাযোগব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন করে দেয়। ফলে তাদের হেডকোয়ার্টার্স থেকে ফ্রন্ট লাইনে অবস্থানরত ব্যাটালিয়নগুলোতে যুদ্ধ সরঞ্জাম ও লজিস্টিক সরবরাহব্যবস্থা প্রায় ভেঙে পড়ে। এমন পরিস্থিতিতে চূড়ান্ত যুদ্ধ শুরুর প্রস্তুতি হিসেবে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ কমান্ড গঠন করা হয় এবং ৩ ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনীর অবস্থানের ওপর আক্রমণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের চূড়ান্ত পর্বের সূচনা হয়। মুক্তিযুদ্ধের প্রতিটি সেক্টরে, মুক্তিযোদ্ধা ও স্থানীয় বাঙালিদের সর্বাত্মক সহযোগিতায় যৌথবাহিনী সাফল্যের মুখ দেখতে শুরু করে। ফলে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনী ক্রমেই কোণঠাসা হয়ে পড়ে। শেষ পর্যন্ত এই যুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটে ১৬ ডিসেম্বর যৌথ বাহিনীর কাছে দখলদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে।
অথচ একশ্রেণির মানুষ এখনো বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধকে ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধ বলে থাকে; বিশেষ করে ভারতে এই ধারণার ব্যাপক প্রচার আছে। সে দেশের নতুন প্রজন্ম বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ বলেই জানেন। ভারতে চলচ্চিত্র থেকে শুরু করে গল্প-উপন্যাসেও একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকে সেভাবেই তুলে ধরা হয়, যা ইতিহাসের সত্যকে অস্বীকার করার শামিল। এ কথা সত্য যে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে ভারতের ত্যাগ ও অসামান্য অবদানের কথা সর্বকালেই কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণীয়। যুদ্ধে যে কয়েক হাজার ভারতীয় সেনাসদস্য নিহত হয়েছেন, তাঁদের সেই সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের কথাও চিরস্মরণীয়। তাঁদের সহযোগিতা ছাড়া এত দ্রুত এ দেশকে শত্রুমুক্ত করা হয়তো সম্ভব হতো না। শরণার্থীদের আশ্রয় ও খাদ্যের ব্যবস্থা, অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষিত করেছে।
তবে এ যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের কৃতিত্বকে খাটো করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। এমনকি ৩ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত পর্ব শুরুর পর এর চালিকাশক্তির নিয়ন্ত্রণও ভারতের হাতে ছিল। তারপরও মূল চালিকাশক্তি বা যুদ্ধের নেতৃত্ব যাদের হাতেই থাকুক না কেন, মুক্তিবাহিনীর প্রত্যক্ষ সহযোগিতা ছাড়া যৌথ বাহিনীর পক্ষে এত দ্রুত ঢাকা পৌঁছানো সম্ভব হতো না। বক্সিং প্রতিযোগিতায় ছোটখাটো আঘাতে প্রতিপক্ষ যেমন দুর্বল হয়ে পড়ে, শরীরে তখন তেমন প্রতিরোধ শক্তি থাকে না। এমন দুর্বল মুহূর্তে যদি সুযোগসন্ধানী কোনো শক্ত পাঞ্চ করা যায়, তাহলে প্রতিপক্ষ সহজেই ধরাশায়ী হতে বাধ্য। ৯ মাসের যুদ্ধেও মুক্তিযোদ্ধাদের অপারেশনে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর অবস্থাও তা-ই হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত পর্বে এসে শক্ত সেই পাঞ্চটি মেরেছিল মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর সমন্বয়ে গড়া যৌথ বাহিনী।
ফলে পাকিস্তানি হানাদাররা এত সহজেই হার মেনে নিতে বাধ্য হয়। হানাদার বাহিনীর জনবল, ভারী অস্ত্রের অবস্থান, শত্রুর শক্ত ও দুর্বল দিক, প্রতিরক্ষা অবস্থানের বিন্যাস এবং শত্রুদের মনোবল ইত্যাদি সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করে ভারতীয় বাহিনীকে সরবরাহের কাজটিও করেছিলেন মুক্তিবাহিনীর সদস্যরা, যা ভারতীয় জেনারেলদের রণকৌশল নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ সহায়ক ভূমিকা পালন করেছিল। ফলে একের পর এক সামরিক অভিযানে সাফল্য এসেছে। আর মুক্তিবাহিনীর সক্রিয় সহযোগিতা ছাড়া ভারতীয় সেনাবাহিনীর পক্ষে মাত্র ১৩ দিনে ঢাকায় পৌঁছানো সম্ভব হতো না। দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, দেশে ও বিদেশে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে যৌথ বাহিনীর চূড়ান্ত অভিযানে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ভূমিকা নিয়ে যত আলোচনা হয়, সেই সব আলোচনায় মুক্তিবাহিনীর ভূমিকা তেমন গুরুত্বের সঙ্গে উচ্চারিত হয় না।
এ-সম্পর্কে ভারতীয় ২০ মাউন্টেইন ডিভিশনের জেনারেল অফিসার কমান্ডিং মেজর জেনারেল লচমন সিংয়ের স্বীকারোক্তি প্রণিধানযোগ্য। ১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর বগুড়া অভিমুখে অগ্রাভিযানকালে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের করতোয়া নদীর তীরে পাকিস্তানের ৩২ বেলুচ ও ৩২ পাঞ্জাব রেজিমেন্টের বিরুদ্ধে নদী ক্রস করে একটি সফল অভিযান সম্পর্কে বলতে গিয়ে জেনারেল লচমন সিং তাঁর ‘ইন্ডিয়ান সর্ড স্ট্রাইকস ইন ইস্ট পাকিস্তান’ বইয়ের ১২৫ ও ১২৬ পৃষ্ঠায় লিখেছেন, ‘মুক্তিবাহিনী নদীর ক্রস সাইট সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছিল বলেই আমরা সহজে শত্রুকে পরাস্ত করতে পেরেছিলাম। যুদ্ধের প্রথম থেকেই মুক্তিযোদ্ধারা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন, বিশেষ করে এই অভিযানে। যেসব মুক্তিযোদ্ধা দক্ষতার সঙ্গে আমাদের গাইড করেছেন, তাঁদের ক্রস সাইট ও গোবিন্দগঞ্জে যাওয়ার পথ সম্পর্কে বেশ ভালো জ্ঞান ছিল।
এ জন্য নদী পার হতে শত্রু মোকাবিলা করতে হয়নি এবং পথে কোনো দুর্ঘটনাও ঘটেনি।’ ভারতের ইস্টার্ন আর্মির তৎকালীন চিফ অব স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল জ্যাক জেকব তাঁর ‘সারেন্ডার অ্যাট ঢাকা বার্থ অব এ নেশন’ বইয়ের ৯৪ পৃষ্ঠায় মুক্তিযোদ্ধাদের কৃতিত্ব বর্ণনা করতে গিয়ে লিখেছেন, ‘পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ফোর্স ও গেরিলাদের অব্যাহত সাফল্যই ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের মূল নিয়ামক। এই যোদ্ধারা পাকিস্তানি সৈনিকদের মনোবল ভেঙে দিয়ে এমন প্রতিকূল পরিস্থিতি তৈরি করেছিলেন, শেষ
পর্যন্ত তারা বাধ্য হয়েছিল নির্দিষ্ট সুরক্ষিত স্থানে অবস্থান করতে, যা চূড়ান্ত পর্বের যুদ্ধে সাফল্য এনে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল। বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে অবশ্যই তাদের কৃতিত্ব দিতে হবে।’
জেনারেল জেকব ও লচমন সিংয়ের মন্তব্য থেকে সহজেই বোঝা যায়, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে যারাই ‘ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধ’ বলে প্রচার করার চেষ্টা করুক না কেন, এই যুদ্ধে পাকিস্তানকে এত সহজে পরাস্ত করা সম্ভব হতো না, যদি আমাদের অকুতোভয় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ সহযোগিতা ও অংশগ্রহণ না থাকত।
এ ধরনের অপপ্রচার বন্ধ হওয়া উচিত। এ কারণে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস সংরক্ষণ করা জরুরি। মুক্তিযুদ্ধকে স্রেফ ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধ বলা বন্ধ করতে হবে। এ ব্যাপারে সরকারকেই বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে। দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, স্বাধীনতার এত বছর পরও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস এভাবেই বিকৃতি হচ্ছে, যার অবসান হওয়া উচিত। একই সঙ্গে রাজনৈতিক স্বার্থে মুক্তিযুদ্ধকে কুক্ষিগত করা থেকে বিরত থাকতে হবে। মুক্তিযুদ্ধে যার যার অবদানের স্বীকৃতি দিয়ে ইতিহাসের সঠিক স্থানে তাঁদের জায়গা করে দিতে হবে। বিজয়ের এ মাসে এটিই হোক আমাদের অঙ্গীকার।
এ কে এম শামসুদ্দিন, অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল

বছর ঘুরে ডিসেম্বর মাস এলেই যেন মুক্তিযুদ্ধের সেই অগ্নিঝরা দিনগুলোর কথা মনে পড়ে যায়। চোখের কোণে ভেসে ওঠে আবেগতাড়িত দুর্বিষহ ঘটনার সব দৃশ্যাবলি। ডিসেম্বর হলো বাঙালির আবেগের মাস, বিজয়ের মাস; বিশেষ করে আমরা যাঁরা এখনো বেঁচে আছি, তাঁরা অনেকেই স্মৃতিকাতর হয়ে পড়ি।
মার্চের অসহযোগ আন্দোলন থেকে শুরু করে ডিসেম্বরের চূড়ান্ত বিজয় অবধি এমন অনেক ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এখনো অনেকে বেঁচে আছেন। তাঁদের কাছে ডিসেম্বর মানেই এক অবিস্মরণীয় বিজয়ের গল্পগাথা। তবে এ বিজয় এত সহজে আসেনি। লাখো শহীদের রক্তে সিক্ত এ দেশের প্রতিটি ধূলিকণা যেন তারই সাক্ষ্য দেয়। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, ৬ দফা, উনসত্তরের ১১ দফা ও গণ-আন্দোলন এবং একাত্তরের মার্চে অসহযোগ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে যে সশস্ত্র স্বাধীনতাযুদ্ধ শুরু হয়েছিল, তার পরিসমাপ্তি ঘটে ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয়ের মধ্য দিয়ে।
একাত্তরের ১ মার্চ। বেলা ঠিক ১টা বেজে ৫ মিনিট। আসন্ন জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত ঘোষণা করেন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খান। জাতীয় পরিষদ অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত ঘোষণার পরপরই ঢাকা শহরজুড়ে রাস্তায় নেমে আসে বিক্ষুব্ধ মানুষ। দোকানপাট সব বন্ধ হয়ে যায়। শহরের পাড়া-মহল্লা থেকে ছাত্র-জনতা মিছিল বের করে এর প্রতিবাদ জানায়। কেবল বেসরকারিই নয়, সরকারি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও রাস্তায় নেমে আসেন। মুহূর্তে মিছিলের নগরীতে পরিণত হয় ঢাকা শহর। এসব মিছিল এসে জড়ো হতে থাকে হোটেল পূর্বাণীর সামনে। হোটেল পূর্বাণীতে চলছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের বৈঠক। যেখানে ৬ দফা দাবির ওপর ভিত্তি করে শাসনতন্ত্রের খসড়া প্রণয়নের কাজ চলছিল। বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয় পরিষদের অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিতের ঘোষণার তীব্র সমালোচনা করেন। বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘বাংলার মানুষ প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের এই সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখ্যান করেছে।’ তিনি ২ মার্চ ঢাকায় এবং ৩ মার্চ বেলা ২টা পর্যন্ত দেশের অন্যান্য জেলায় হরতাল পালনের আহ্বান জানান। একই সঙ্গে ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে জনসভার ঘোষণা দেন এবং ওই জনসভাতেই পরবর্তী পরিপূর্ণ কর্মসূচির ঘোষণা দেবেন বলে জানান।
কার্যত বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের পর থেকেই সমগ্র দেশ পাকিস্তানের হাতছাড়া হয়ে যায়। দেশ তখন বঙ্গবন্ধুর নির্দেশেই পরিচালিত হতে থাকে। এ অবস্থায় ইয়াহিয়া খান বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে বৈঠক করতে বাধ্য হন। তবে সেটা ছিল সম্পূর্ণ প্রহসনের বৈঠক। সময়ক্ষেপণ করে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে সৈন্য সমাবেশ করাই ছিল জান্তাগোষ্ঠীর মূল উদ্দেশ্য। দিনের পর দিন বৈঠক করে ২৫ মার্চ সন্ধ্যায় ইয়াহিয়া খান চোরের মতো পাকিস্তানে পালিয়ে যান। এরপর সেদিন মধ্যরাত থেকেই ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। দখলদার বাহিনীর ভারী অস্ত্রের গোলার শব্দে রাতের নীরবতা ভেঙে চারদিক ভয়ংকর করে তোলে।
২৫ মার্চের ক্র্যাকডাউনের পর মুক্তিবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের ক্রমাগত অভিযানে পাকিস্তানি হানাদাররা পর্যুদস্ত হতে থাকে। বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়ক, ব্রিজ, কালভার্ট, রেললাইন, বিদ্যুৎকেন্দ্র ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ধ্বংসের মাধ্যমে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রায় সব যোগাযোগব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন করে দেয়। ফলে তাদের হেডকোয়ার্টার্স থেকে ফ্রন্ট লাইনে অবস্থানরত ব্যাটালিয়নগুলোতে যুদ্ধ সরঞ্জাম ও লজিস্টিক সরবরাহব্যবস্থা প্রায় ভেঙে পড়ে। এমন পরিস্থিতিতে চূড়ান্ত যুদ্ধ শুরুর প্রস্তুতি হিসেবে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ কমান্ড গঠন করা হয় এবং ৩ ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনীর অবস্থানের ওপর আক্রমণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের চূড়ান্ত পর্বের সূচনা হয়। মুক্তিযুদ্ধের প্রতিটি সেক্টরে, মুক্তিযোদ্ধা ও স্থানীয় বাঙালিদের সর্বাত্মক সহযোগিতায় যৌথবাহিনী সাফল্যের মুখ দেখতে শুরু করে। ফলে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনী ক্রমেই কোণঠাসা হয়ে পড়ে। শেষ পর্যন্ত এই যুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটে ১৬ ডিসেম্বর যৌথ বাহিনীর কাছে দখলদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে।
অথচ একশ্রেণির মানুষ এখনো বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধকে ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধ বলে থাকে; বিশেষ করে ভারতে এই ধারণার ব্যাপক প্রচার আছে। সে দেশের নতুন প্রজন্ম বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ বলেই জানেন। ভারতে চলচ্চিত্র থেকে শুরু করে গল্প-উপন্যাসেও একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকে সেভাবেই তুলে ধরা হয়, যা ইতিহাসের সত্যকে অস্বীকার করার শামিল। এ কথা সত্য যে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে ভারতের ত্যাগ ও অসামান্য অবদানের কথা সর্বকালেই কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণীয়। যুদ্ধে যে কয়েক হাজার ভারতীয় সেনাসদস্য নিহত হয়েছেন, তাঁদের সেই সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের কথাও চিরস্মরণীয়। তাঁদের সহযোগিতা ছাড়া এত দ্রুত এ দেশকে শত্রুমুক্ত করা হয়তো সম্ভব হতো না। শরণার্থীদের আশ্রয় ও খাদ্যের ব্যবস্থা, অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষিত করেছে।
তবে এ যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের কৃতিত্বকে খাটো করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। এমনকি ৩ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত পর্ব শুরুর পর এর চালিকাশক্তির নিয়ন্ত্রণও ভারতের হাতে ছিল। তারপরও মূল চালিকাশক্তি বা যুদ্ধের নেতৃত্ব যাদের হাতেই থাকুক না কেন, মুক্তিবাহিনীর প্রত্যক্ষ সহযোগিতা ছাড়া যৌথ বাহিনীর পক্ষে এত দ্রুত ঢাকা পৌঁছানো সম্ভব হতো না। বক্সিং প্রতিযোগিতায় ছোটখাটো আঘাতে প্রতিপক্ষ যেমন দুর্বল হয়ে পড়ে, শরীরে তখন তেমন প্রতিরোধ শক্তি থাকে না। এমন দুর্বল মুহূর্তে যদি সুযোগসন্ধানী কোনো শক্ত পাঞ্চ করা যায়, তাহলে প্রতিপক্ষ সহজেই ধরাশায়ী হতে বাধ্য। ৯ মাসের যুদ্ধেও মুক্তিযোদ্ধাদের অপারেশনে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর অবস্থাও তা-ই হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত পর্বে এসে শক্ত সেই পাঞ্চটি মেরেছিল মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর সমন্বয়ে গড়া যৌথ বাহিনী।
ফলে পাকিস্তানি হানাদাররা এত সহজেই হার মেনে নিতে বাধ্য হয়। হানাদার বাহিনীর জনবল, ভারী অস্ত্রের অবস্থান, শত্রুর শক্ত ও দুর্বল দিক, প্রতিরক্ষা অবস্থানের বিন্যাস এবং শত্রুদের মনোবল ইত্যাদি সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করে ভারতীয় বাহিনীকে সরবরাহের কাজটিও করেছিলেন মুক্তিবাহিনীর সদস্যরা, যা ভারতীয় জেনারেলদের রণকৌশল নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ সহায়ক ভূমিকা পালন করেছিল। ফলে একের পর এক সামরিক অভিযানে সাফল্য এসেছে। আর মুক্তিবাহিনীর সক্রিয় সহযোগিতা ছাড়া ভারতীয় সেনাবাহিনীর পক্ষে মাত্র ১৩ দিনে ঢাকায় পৌঁছানো সম্ভব হতো না। দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, দেশে ও বিদেশে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে যৌথ বাহিনীর চূড়ান্ত অভিযানে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ভূমিকা নিয়ে যত আলোচনা হয়, সেই সব আলোচনায় মুক্তিবাহিনীর ভূমিকা তেমন গুরুত্বের সঙ্গে উচ্চারিত হয় না।
এ-সম্পর্কে ভারতীয় ২০ মাউন্টেইন ডিভিশনের জেনারেল অফিসার কমান্ডিং মেজর জেনারেল লচমন সিংয়ের স্বীকারোক্তি প্রণিধানযোগ্য। ১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর বগুড়া অভিমুখে অগ্রাভিযানকালে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের করতোয়া নদীর তীরে পাকিস্তানের ৩২ বেলুচ ও ৩২ পাঞ্জাব রেজিমেন্টের বিরুদ্ধে নদী ক্রস করে একটি সফল অভিযান সম্পর্কে বলতে গিয়ে জেনারেল লচমন সিং তাঁর ‘ইন্ডিয়ান সর্ড স্ট্রাইকস ইন ইস্ট পাকিস্তান’ বইয়ের ১২৫ ও ১২৬ পৃষ্ঠায় লিখেছেন, ‘মুক্তিবাহিনী নদীর ক্রস সাইট সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছিল বলেই আমরা সহজে শত্রুকে পরাস্ত করতে পেরেছিলাম। যুদ্ধের প্রথম থেকেই মুক্তিযোদ্ধারা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন, বিশেষ করে এই অভিযানে। যেসব মুক্তিযোদ্ধা দক্ষতার সঙ্গে আমাদের গাইড করেছেন, তাঁদের ক্রস সাইট ও গোবিন্দগঞ্জে যাওয়ার পথ সম্পর্কে বেশ ভালো জ্ঞান ছিল।
এ জন্য নদী পার হতে শত্রু মোকাবিলা করতে হয়নি এবং পথে কোনো দুর্ঘটনাও ঘটেনি।’ ভারতের ইস্টার্ন আর্মির তৎকালীন চিফ অব স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল জ্যাক জেকব তাঁর ‘সারেন্ডার অ্যাট ঢাকা বার্থ অব এ নেশন’ বইয়ের ৯৪ পৃষ্ঠায় মুক্তিযোদ্ধাদের কৃতিত্ব বর্ণনা করতে গিয়ে লিখেছেন, ‘পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ফোর্স ও গেরিলাদের অব্যাহত সাফল্যই ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের মূল নিয়ামক। এই যোদ্ধারা পাকিস্তানি সৈনিকদের মনোবল ভেঙে দিয়ে এমন প্রতিকূল পরিস্থিতি তৈরি করেছিলেন, শেষ
পর্যন্ত তারা বাধ্য হয়েছিল নির্দিষ্ট সুরক্ষিত স্থানে অবস্থান করতে, যা চূড়ান্ত পর্বের যুদ্ধে সাফল্য এনে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল। বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে অবশ্যই তাদের কৃতিত্ব দিতে হবে।’
জেনারেল জেকব ও লচমন সিংয়ের মন্তব্য থেকে সহজেই বোঝা যায়, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে যারাই ‘ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধ’ বলে প্রচার করার চেষ্টা করুক না কেন, এই যুদ্ধে পাকিস্তানকে এত সহজে পরাস্ত করা সম্ভব হতো না, যদি আমাদের অকুতোভয় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ সহযোগিতা ও অংশগ্রহণ না থাকত।
এ ধরনের অপপ্রচার বন্ধ হওয়া উচিত। এ কারণে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস সংরক্ষণ করা জরুরি। মুক্তিযুদ্ধকে স্রেফ ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধ বলা বন্ধ করতে হবে। এ ব্যাপারে সরকারকেই বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে। দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, স্বাধীনতার এত বছর পরও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস এভাবেই বিকৃতি হচ্ছে, যার অবসান হওয়া উচিত। একই সঙ্গে রাজনৈতিক স্বার্থে মুক্তিযুদ্ধকে কুক্ষিগত করা থেকে বিরত থাকতে হবে। মুক্তিযুদ্ধে যার যার অবদানের স্বীকৃতি দিয়ে ইতিহাসের সঠিক স্থানে তাঁদের জায়গা করে দিতে হবে। বিজয়ের এ মাসে এটিই হোক আমাদের অঙ্গীকার।
এ কে এম শামসুদ্দিন, অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

বছর ঘুরে ডিসেম্বর মাস এলেই যেন মুক্তিযুদ্ধের সেই অগ্নিঝরা দিনগুলোর কথা মনে পড়ে যায়। চোখের কোণে ভেসে ওঠে আবেগতাড়িত দুর্বিষহ ঘটনার সব দৃশ্যাবলি। ডিসেম্বর হলো বাঙালির আবেগের মাস, বিজয়ের মাস; বিশেষ করে আমরা যাঁরা এখনো বেঁচে আছি, তাঁরা অনেকেই স্মৃতিকাতর হয়ে পড়ি।
০৯ ডিসেম্বর ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

বছর ঘুরে ডিসেম্বর মাস এলেই যেন মুক্তিযুদ্ধের সেই অগ্নিঝরা দিনগুলোর কথা মনে পড়ে যায়। চোখের কোণে ভেসে ওঠে আবেগতাড়িত দুর্বিষহ ঘটনার সব দৃশ্যাবলি। ডিসেম্বর হলো বাঙালির আবেগের মাস, বিজয়ের মাস; বিশেষ করে আমরা যাঁরা এখনো বেঁচে আছি, তাঁরা অনেকেই স্মৃতিকাতর হয়ে পড়ি।
০৯ ডিসেম্বর ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

বছর ঘুরে ডিসেম্বর মাস এলেই যেন মুক্তিযুদ্ধের সেই অগ্নিঝরা দিনগুলোর কথা মনে পড়ে যায়। চোখের কোণে ভেসে ওঠে আবেগতাড়িত দুর্বিষহ ঘটনার সব দৃশ্যাবলি। ডিসেম্বর হলো বাঙালির আবেগের মাস, বিজয়ের মাস; বিশেষ করে আমরা যাঁরা এখনো বেঁচে আছি, তাঁরা অনেকেই স্মৃতিকাতর হয়ে পড়ি।
০৯ ডিসেম্বর ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

বছর ঘুরে ডিসেম্বর মাস এলেই যেন মুক্তিযুদ্ধের সেই অগ্নিঝরা দিনগুলোর কথা মনে পড়ে যায়। চোখের কোণে ভেসে ওঠে আবেগতাড়িত দুর্বিষহ ঘটনার সব দৃশ্যাবলি। ডিসেম্বর হলো বাঙালির আবেগের মাস, বিজয়ের মাস; বিশেষ করে আমরা যাঁরা এখনো বেঁচে আছি, তাঁরা অনেকেই স্মৃতিকাতর হয়ে পড়ি।
০৯ ডিসেম্বর ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫