
আজকের পত্রিকা: চলতি বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ হঠাৎ বেড়ে যাওয়ার কারণ কী?
ড. মো. গোলাম ছারোয়ার: বিগত বছরের তুলনায় এ বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার মূল কারণ হলো, বিভিন্ন ধরনের কীটনাশকের (ইনসেকটিসাইড) যথেচ্ছ ব্যবহার। একটা ব্যাপার আমরা জানি না যে এডিস মশা কতটুকু প্রতিরোধী হয়ে উঠেছে। এর প্রকৃত ব্যাপারটা আমাদের জানা নেই। তবে আমরা পরিষ্কার করে বলতে পারছি যে শুধু রাসায়নিক কীটনাশকের ব্যবহারই করে এসেছি। ইন্টিগ্রেটেড ভেক্টর ম্যানেজমেন্ট (আইভিএম) বা মাল্টিপল অ্যাপ্রোচের ব্যবহার করছি না। যার কারণে এডিস মশার বংশবিস্তার অনেক গুণ বেড়ে গেছে। এর জন্য অবশ্যই পরিবর্তিত পরিস্থিতি ও পরিবেশের দূষণ অবস্থাও দায়ী।
আজকের পত্রিকা: ডেঙ্গু যে দেশে ঢোকে, সেখান থেকে বের হয় না। কিন্তু একে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। আমাদের দেশে দুই যুগের বেশি সময় ধরে এর নিয়ন্ত্রণে কোনো কাজ করা হয়নি কেন?
ড. ছারোয়ার: এটি একটি চমৎকার প্রশ্ন। এ বিষয়টি আমি বারবার বিভিন্ন মিডিয়ায় বলেছি। এর কারণটা হলো, যখন নির্দিষ্ট লেভেলের নিচে মশাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারব, তখনই কিন্তু ডেঙ্গুতে আমাদের মৃত্যুর হার শূন্যতে চলে আসবে। এর জন্য আমাদের মূল যে কাজটা করতে হবে তা হলো, ইন্টিগ্রেটেড ভেক্টর ম্যানেজমেন্ট (আইভিএম) বা মাল্টিপল অ্যাপ্রোচের ব্যবহার। মানে, সমন্বিতভাবে পরিস্থিতিটাকে মোকাবিলা করছি না। আমরা শুধু রাসায়নিকের ব্যবহার করছি। যখন আমরা শুধুই রাসায়নিক ব্যবহার করছি, তখন মশা প্রতিরোধী হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তার অন্যান্য প্রাকৃতিক শত্রুও ধ্বংস হচ্ছে। ফলে মশার লার্ভাকে ধরে খেয়ে ফেলার কোনো প্রাকৃতিক জীব অবশিষ্ট থাকছে না। এমতাবস্থায় মশা অত্যন্ত শক্তিশালী হয়ে দ্বিগুণ উৎসাহে বংশবিস্তার করে চলছে।
মশার যে প্রাকৃতিক শত্রু আছে, যেগুলো কোনো ক্ষতি করবে না, এমন পদ্ধতি আমরা এখন পর্যন্ত যথার্থভাবে ব্যবহার করতে পারিনি। আমরা বারবারই শুধু রাসায়নিক ব্যবহার করছি। আর এই রাসায়নিকটাও অনেক পুরোনো। পাইরোথ্রয়েট ডেল্টামেথ্রিন, মালাথিয়ন ও টেমিফস প্রভৃতি কীটনাশক ঢাকার যে দুই সিটি করপোরেশন ব্যবহার করছে, সেগুলো কিন্তু লার্ভা ও পরিপূর্ণ মশাকে নিয়ন্ত্রণের জন্য আগের মতো কাজ করছে না। সহজ কথায় কেউ যদি অনেক দিন ধরে একই অ্যান্টিবায়োটিক খেয়ে থাকেন, তাহলে তিনি অবশ্যই অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী হবেন।
আজকের পত্রিকা: এ বিষয়টা কেন সিটি করপোরেশন বা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কার্যকর করতে পারছে না?
ড. ছারোয়ার: এ ক্ষেত্রে পরিষ্কার কথা হলো, আমরা দেশে নতুন কোনো অ্যাপ্রোচ ও ধারণাকে এখনো গ্রহণ করতে পারছি না। আরেকটা বিষয়, এখন পর্যন্ত দেশে আধুনিক কোনো ল্যাবরেটরি তৈরি করা হয়নি। যেখানে মশার জৈবিক দমনের জন্য সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম ব্যাকটেরিয়ার ব্যবহার করা যায়, যেখানে আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে পারব। সেটা এখন পর্যন্ত তৈরি করা হয়নি।
দেশের বিভিন্ন উচ্চ শিক্ষা ও গবেষণাপ্রতিষ্ঠান, যেমন জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসাপ্রতিষ্ঠান (নিপসম), বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, আইইডিসিআর ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানে কীটতত্ত্ব বিভাগ আছে। কিন্তু কোথাও মশা এবং এর ভেতরের ভয়ংকর ভাইরাসটির জেনম সিকোয়েন্সিং করার জন্য মলিকুলার ল্যাব নেই। যেখানে গবেষণা এবং গবেষণালব্ধ ফলাফল আমরা প্রয়োগ (ইমপ্লিমেন্ট) করতে পারব। আর এসব কাজ করতে গেলে যে ধরনের লোকবল দরকার তার যথেষ্ট ঘাটতি আছে। এ কারণে সিটি করপোরেশন বা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাজগুলো ততটা কার্যকর হচ্ছে না।
আজকের পত্রিকা: এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশার প্রজনন প্রতিরোধে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের উল্লেখযোগ্য কোনো কর্মসূচি দেখা যায়নি। এ ক্ষেত্রে তারা ব্যর্থ নয় কি?
ড. ছারোয়ার: এখন পর্যন্ত দুই সিটি করপোরেশনের যতজন কীটতত্ত্ববিদের প্রয়োজন ছিল, সেই সংখ্যক লোক সেখানে নেই। কীটতত্ত্ববিদের যে ধরনের অর্গানোগ্রাম থাকার কথা, তারও কোনো পদায়ন করা হয়নি। এটাও একটা বড় ধরনের সমস্যা। যদি আমরা ভারতের দিকে তাকাই তাহলে দেখতে পাব, সেখানে কিন্তু ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করার জন্য আলাদা ইনস্টিটিউট আছে। দুঃখের বিষয়, বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত প্রতিষ্ঠান তো দূরের কথা, গোছানো কোনো অর্গানোগ্রামই তৈরি করা হয়নি।
দেশের এ রকম ভয়াবহ পরিস্থিতিতে সবকিছু ধার করে নিয়ে আসা হচ্ছে। এডিস মশার প্রজনন মৌসুমে লার্ভার পরিমাণ বিপৎসীমা অতিক্রম করছে, তখন বিভিন্ন জায়গা থেকে কীটতত্ত্ববিদদের নিয়ে এসে কিছু পরামর্শ নিয়ে এ কাজগুলো করা হচ্ছে। এ রকম জাতীয় একটা দুর্যোগ মুহূর্তে এভাবে কি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব?আমি যে জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসাপ্রতিষ্ঠানের (নিপসম) কীটতত্ত্ব বিভাগের প্রধান, এখানেও কিন্তু লোকবলের সংকট আছে। এখানে যেমন রিসোর্সের স্বল্পতা আছে, তেমনি রিসোর্স পারসনের স্বল্পতাও আছে। এসব স্বল্পতার কারণেই কিন্তু আমরা এ জায়গাগুলোতে সঠিকভাবে হাত দিতে পারছি না।
আমার মনে হয়, এ রকম পরিস্থিতিতে এ জায়গাগুলোতে আরও বেশি গুরুত্ব দেওয়ার সময় এখন। কাজ করতে হবে ত্বরিত গতিতে। এটা কিন্তু একটা মন্ত্রণালয়ের কাজ নয়। এসব কাজ করার জন্য সমন্বয়টা খুব দরকার। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে সমন্বিতভাবে কাজগুলো করতে হবে। একই সঙ্গে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিভাগের সঙ্গেও যোগাযোগটা রাখতে হবে। কারণ রিসোর্স পারসন তো সে সব জায়গা থেকেই আসবে। যখন আমরা এডিস মশার লার্ভা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য জৈবিক পদ্ধতি ব্যবহার করতে যাব, তখন কিন্তু ল্যাবরেটরিতে দুটি ব্যাকটেরিয়া নিয়ে কাজ করতে হবে। একটির নাম হচ্ছে উলবাকিয়া ব্যাকটেরিয়া, আরেকটির নাম বিটিআই।
উত্তর সিটি করপোরেশন বিটিআই পাউডার কেনার জন্য টেন্ডার আহ্বান করেছে, কিন্তু দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এখন পর্যন্ত এর কোনো উদ্যোগই নেয়নি। বিটিআইকে মশার লার্ভা খাবার হিসেবে ব্যবহার করে। যে পানির মধ্যে লার্ভা থাকে, সেখানে যদি বিটিআই পাউডার দেওয়া হয় তারা সেটা খেয়ে ফেলে। বিটিআই তখন তার শরীরের মধ্যে যে সেল আছে, তাকে ফুটো করে দিয়ে মশার লার্ভাটাকে মেরে ফেলে। মজার ব্যাপার হচ্ছে, মশার লার্ভাটা যখন মরে যায়, তখন মরে যাওয়ার ফলে তার চারপাশে যে অবস্থার সৃষ্টি হয়, তা পরিবেশের কোনো ক্ষতি করে না। আবার ওই পানির মধ্যে যদি অন্য কোনো জীব থাকে, তারও কোনো ক্ষতি করে না এই বিটিআই পাউডার। তখন এটা মশার বংশ বৃদ্ধি মারাত্মকভাবে ব্যাহত করে। এটা একটা পরিবেশবান্ধব পাউডার।
আরেকটা হচ্ছে, আমরা জানি, মশা প্রকৃতিতে থাকবেই। কিন্তু মশার রোগ ছড়ানোর যে ক্ষমতা সেটাকে রোধ করতে হবে। তাদের রোগ ছড়ানোর ক্ষমতা থাকবে না।জীবাণুটি তার শরীরের মধ্যে রোগ ছড়ানোর ক্ষমতা হারিয়ে ফেলবে। সে জন্য উলবাকিয়া ব্যাকটেরিয়ার ব্যবহার ঘটাতে হবে। ল্যাবরেটরিতে এটাকে মশার শরীরের মধ্যে প্রবেশের ব্যবস্থা করতে হবে। এর জন্যই প্রয়োজন বিজ্ঞ কীটতত্ত্ববিদের। আর ল্যাবরেটরিতে তৈরি উলবাকিয়াযুক্ত মশা প্রকৃতিতে ছেড়ে দিতে পারলে কয়েক প্রজন্মের পর আমাদের প্রকৃতিতে শুধু এ ধরনের মশাই বিরাজ করবে। প্রকৃতিতে এ ধরনের মশা থাকলে ডেঙ্গুর যে ভাইরাস থাকবে, সেটা আর আক্রমণ করতে পারবে না। ডেঙ্গু আক্রমণ করতে না পারলে আমাদের এ নিয়ে আর দুশ্চিন্তা করতে হবে না। এই প্রক্রিয়াটা যদি আমাদের দেশে ব্যবহার করা হয়, তাহলে আমরা ডেঙ্গুর মহামারি থেকে রক্ষা পাব।
আজকের পত্রিকা: ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আপনার পরামর্শ কী?
ড. ছারোয়ার: ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের আগে লার্ভা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সে জন্য আগে লার্ভার প্রজনন স্থান শনাক্ত করতে হবে। এই শনাক্তকরণ স্থানটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এটা শনাক্তের পরে সেই নির্দিষ্ট জায়গায় যথার্থভাবে যদি বায়ো কন্ট্রোল পদ্ধতিটা অ্যাপ্লাই করতে পারি, তাহলে সেটা পরিবেশবান্ধব হবে এবং তা নিয়ন্ত্রণে আসবে। শুধু রাসায়নিক কীটনাশক দিয়ে মশাকে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। আমার পরামর্শ হলো, ইন্টিগ্রেটেড ভেক্টর ম্যানেজমেন্ট (আইভিএম) বা মাল্টিপল অ্যাপ্রোচ ব্যবহারের মধ্যে বায়ো কন্ট্রোল পদ্ধতি ব্যবহারের ওপর জোর দিয়ে সাধারণ জনগণকে এর সঙ্গে সম্পৃক্ত ও উদ্বুদ্ধ করতে হবে। এ জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়সহ যেসব প্রতিষ্ঠান ডেঙ্গু নিয়ে কাজ করছে তারাসহ সাধারণ জনগণকে নিয়ে সমন্বিতভাবে কাজটা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে মিডিয়া বড় ধরনের ভূমিকা পালন করবে। আর এর ভয়াবহতা সম্পর্কে সবাইকে সচেতন করতে হবে। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সচেতনতামূলক কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে। সবাইকে এক হয়েই এ কাজ করতে হবে।
আজকের পত্রিকা: আপনাকে ধন্যবাদ সময় দেওয়ার জন্য।
ড. ছারোয়ার: আপনাদেরও ধন্যবাদ।

আজকের পত্রিকা: চলতি বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ হঠাৎ বেড়ে যাওয়ার কারণ কী?
ড. মো. গোলাম ছারোয়ার: বিগত বছরের তুলনায় এ বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার মূল কারণ হলো, বিভিন্ন ধরনের কীটনাশকের (ইনসেকটিসাইড) যথেচ্ছ ব্যবহার। একটা ব্যাপার আমরা জানি না যে এডিস মশা কতটুকু প্রতিরোধী হয়ে উঠেছে। এর প্রকৃত ব্যাপারটা আমাদের জানা নেই। তবে আমরা পরিষ্কার করে বলতে পারছি যে শুধু রাসায়নিক কীটনাশকের ব্যবহারই করে এসেছি। ইন্টিগ্রেটেড ভেক্টর ম্যানেজমেন্ট (আইভিএম) বা মাল্টিপল অ্যাপ্রোচের ব্যবহার করছি না। যার কারণে এডিস মশার বংশবিস্তার অনেক গুণ বেড়ে গেছে। এর জন্য অবশ্যই পরিবর্তিত পরিস্থিতি ও পরিবেশের দূষণ অবস্থাও দায়ী।
আজকের পত্রিকা: ডেঙ্গু যে দেশে ঢোকে, সেখান থেকে বের হয় না। কিন্তু একে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। আমাদের দেশে দুই যুগের বেশি সময় ধরে এর নিয়ন্ত্রণে কোনো কাজ করা হয়নি কেন?
ড. ছারোয়ার: এটি একটি চমৎকার প্রশ্ন। এ বিষয়টি আমি বারবার বিভিন্ন মিডিয়ায় বলেছি। এর কারণটা হলো, যখন নির্দিষ্ট লেভেলের নিচে মশাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারব, তখনই কিন্তু ডেঙ্গুতে আমাদের মৃত্যুর হার শূন্যতে চলে আসবে। এর জন্য আমাদের মূল যে কাজটা করতে হবে তা হলো, ইন্টিগ্রেটেড ভেক্টর ম্যানেজমেন্ট (আইভিএম) বা মাল্টিপল অ্যাপ্রোচের ব্যবহার। মানে, সমন্বিতভাবে পরিস্থিতিটাকে মোকাবিলা করছি না। আমরা শুধু রাসায়নিকের ব্যবহার করছি। যখন আমরা শুধুই রাসায়নিক ব্যবহার করছি, তখন মশা প্রতিরোধী হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তার অন্যান্য প্রাকৃতিক শত্রুও ধ্বংস হচ্ছে। ফলে মশার লার্ভাকে ধরে খেয়ে ফেলার কোনো প্রাকৃতিক জীব অবশিষ্ট থাকছে না। এমতাবস্থায় মশা অত্যন্ত শক্তিশালী হয়ে দ্বিগুণ উৎসাহে বংশবিস্তার করে চলছে।
মশার যে প্রাকৃতিক শত্রু আছে, যেগুলো কোনো ক্ষতি করবে না, এমন পদ্ধতি আমরা এখন পর্যন্ত যথার্থভাবে ব্যবহার করতে পারিনি। আমরা বারবারই শুধু রাসায়নিক ব্যবহার করছি। আর এই রাসায়নিকটাও অনেক পুরোনো। পাইরোথ্রয়েট ডেল্টামেথ্রিন, মালাথিয়ন ও টেমিফস প্রভৃতি কীটনাশক ঢাকার যে দুই সিটি করপোরেশন ব্যবহার করছে, সেগুলো কিন্তু লার্ভা ও পরিপূর্ণ মশাকে নিয়ন্ত্রণের জন্য আগের মতো কাজ করছে না। সহজ কথায় কেউ যদি অনেক দিন ধরে একই অ্যান্টিবায়োটিক খেয়ে থাকেন, তাহলে তিনি অবশ্যই অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী হবেন।
আজকের পত্রিকা: এ বিষয়টা কেন সিটি করপোরেশন বা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কার্যকর করতে পারছে না?
ড. ছারোয়ার: এ ক্ষেত্রে পরিষ্কার কথা হলো, আমরা দেশে নতুন কোনো অ্যাপ্রোচ ও ধারণাকে এখনো গ্রহণ করতে পারছি না। আরেকটা বিষয়, এখন পর্যন্ত দেশে আধুনিক কোনো ল্যাবরেটরি তৈরি করা হয়নি। যেখানে মশার জৈবিক দমনের জন্য সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম ব্যাকটেরিয়ার ব্যবহার করা যায়, যেখানে আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে পারব। সেটা এখন পর্যন্ত তৈরি করা হয়নি।
দেশের বিভিন্ন উচ্চ শিক্ষা ও গবেষণাপ্রতিষ্ঠান, যেমন জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসাপ্রতিষ্ঠান (নিপসম), বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, আইইডিসিআর ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানে কীটতত্ত্ব বিভাগ আছে। কিন্তু কোথাও মশা এবং এর ভেতরের ভয়ংকর ভাইরাসটির জেনম সিকোয়েন্সিং করার জন্য মলিকুলার ল্যাব নেই। যেখানে গবেষণা এবং গবেষণালব্ধ ফলাফল আমরা প্রয়োগ (ইমপ্লিমেন্ট) করতে পারব। আর এসব কাজ করতে গেলে যে ধরনের লোকবল দরকার তার যথেষ্ট ঘাটতি আছে। এ কারণে সিটি করপোরেশন বা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাজগুলো ততটা কার্যকর হচ্ছে না।
আজকের পত্রিকা: এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশার প্রজনন প্রতিরোধে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের উল্লেখযোগ্য কোনো কর্মসূচি দেখা যায়নি। এ ক্ষেত্রে তারা ব্যর্থ নয় কি?
ড. ছারোয়ার: এখন পর্যন্ত দুই সিটি করপোরেশনের যতজন কীটতত্ত্ববিদের প্রয়োজন ছিল, সেই সংখ্যক লোক সেখানে নেই। কীটতত্ত্ববিদের যে ধরনের অর্গানোগ্রাম থাকার কথা, তারও কোনো পদায়ন করা হয়নি। এটাও একটা বড় ধরনের সমস্যা। যদি আমরা ভারতের দিকে তাকাই তাহলে দেখতে পাব, সেখানে কিন্তু ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করার জন্য আলাদা ইনস্টিটিউট আছে। দুঃখের বিষয়, বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত প্রতিষ্ঠান তো দূরের কথা, গোছানো কোনো অর্গানোগ্রামই তৈরি করা হয়নি।
দেশের এ রকম ভয়াবহ পরিস্থিতিতে সবকিছু ধার করে নিয়ে আসা হচ্ছে। এডিস মশার প্রজনন মৌসুমে লার্ভার পরিমাণ বিপৎসীমা অতিক্রম করছে, তখন বিভিন্ন জায়গা থেকে কীটতত্ত্ববিদদের নিয়ে এসে কিছু পরামর্শ নিয়ে এ কাজগুলো করা হচ্ছে। এ রকম জাতীয় একটা দুর্যোগ মুহূর্তে এভাবে কি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব?আমি যে জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসাপ্রতিষ্ঠানের (নিপসম) কীটতত্ত্ব বিভাগের প্রধান, এখানেও কিন্তু লোকবলের সংকট আছে। এখানে যেমন রিসোর্সের স্বল্পতা আছে, তেমনি রিসোর্স পারসনের স্বল্পতাও আছে। এসব স্বল্পতার কারণেই কিন্তু আমরা এ জায়গাগুলোতে সঠিকভাবে হাত দিতে পারছি না।
আমার মনে হয়, এ রকম পরিস্থিতিতে এ জায়গাগুলোতে আরও বেশি গুরুত্ব দেওয়ার সময় এখন। কাজ করতে হবে ত্বরিত গতিতে। এটা কিন্তু একটা মন্ত্রণালয়ের কাজ নয়। এসব কাজ করার জন্য সমন্বয়টা খুব দরকার। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে সমন্বিতভাবে কাজগুলো করতে হবে। একই সঙ্গে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিভাগের সঙ্গেও যোগাযোগটা রাখতে হবে। কারণ রিসোর্স পারসন তো সে সব জায়গা থেকেই আসবে। যখন আমরা এডিস মশার লার্ভা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য জৈবিক পদ্ধতি ব্যবহার করতে যাব, তখন কিন্তু ল্যাবরেটরিতে দুটি ব্যাকটেরিয়া নিয়ে কাজ করতে হবে। একটির নাম হচ্ছে উলবাকিয়া ব্যাকটেরিয়া, আরেকটির নাম বিটিআই।
উত্তর সিটি করপোরেশন বিটিআই পাউডার কেনার জন্য টেন্ডার আহ্বান করেছে, কিন্তু দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এখন পর্যন্ত এর কোনো উদ্যোগই নেয়নি। বিটিআইকে মশার লার্ভা খাবার হিসেবে ব্যবহার করে। যে পানির মধ্যে লার্ভা থাকে, সেখানে যদি বিটিআই পাউডার দেওয়া হয় তারা সেটা খেয়ে ফেলে। বিটিআই তখন তার শরীরের মধ্যে যে সেল আছে, তাকে ফুটো করে দিয়ে মশার লার্ভাটাকে মেরে ফেলে। মজার ব্যাপার হচ্ছে, মশার লার্ভাটা যখন মরে যায়, তখন মরে যাওয়ার ফলে তার চারপাশে যে অবস্থার সৃষ্টি হয়, তা পরিবেশের কোনো ক্ষতি করে না। আবার ওই পানির মধ্যে যদি অন্য কোনো জীব থাকে, তারও কোনো ক্ষতি করে না এই বিটিআই পাউডার। তখন এটা মশার বংশ বৃদ্ধি মারাত্মকভাবে ব্যাহত করে। এটা একটা পরিবেশবান্ধব পাউডার।
আরেকটা হচ্ছে, আমরা জানি, মশা প্রকৃতিতে থাকবেই। কিন্তু মশার রোগ ছড়ানোর যে ক্ষমতা সেটাকে রোধ করতে হবে। তাদের রোগ ছড়ানোর ক্ষমতা থাকবে না।জীবাণুটি তার শরীরের মধ্যে রোগ ছড়ানোর ক্ষমতা হারিয়ে ফেলবে। সে জন্য উলবাকিয়া ব্যাকটেরিয়ার ব্যবহার ঘটাতে হবে। ল্যাবরেটরিতে এটাকে মশার শরীরের মধ্যে প্রবেশের ব্যবস্থা করতে হবে। এর জন্যই প্রয়োজন বিজ্ঞ কীটতত্ত্ববিদের। আর ল্যাবরেটরিতে তৈরি উলবাকিয়াযুক্ত মশা প্রকৃতিতে ছেড়ে দিতে পারলে কয়েক প্রজন্মের পর আমাদের প্রকৃতিতে শুধু এ ধরনের মশাই বিরাজ করবে। প্রকৃতিতে এ ধরনের মশা থাকলে ডেঙ্গুর যে ভাইরাস থাকবে, সেটা আর আক্রমণ করতে পারবে না। ডেঙ্গু আক্রমণ করতে না পারলে আমাদের এ নিয়ে আর দুশ্চিন্তা করতে হবে না। এই প্রক্রিয়াটা যদি আমাদের দেশে ব্যবহার করা হয়, তাহলে আমরা ডেঙ্গুর মহামারি থেকে রক্ষা পাব।
আজকের পত্রিকা: ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আপনার পরামর্শ কী?
ড. ছারোয়ার: ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের আগে লার্ভা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সে জন্য আগে লার্ভার প্রজনন স্থান শনাক্ত করতে হবে। এই শনাক্তকরণ স্থানটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এটা শনাক্তের পরে সেই নির্দিষ্ট জায়গায় যথার্থভাবে যদি বায়ো কন্ট্রোল পদ্ধতিটা অ্যাপ্লাই করতে পারি, তাহলে সেটা পরিবেশবান্ধব হবে এবং তা নিয়ন্ত্রণে আসবে। শুধু রাসায়নিক কীটনাশক দিয়ে মশাকে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। আমার পরামর্শ হলো, ইন্টিগ্রেটেড ভেক্টর ম্যানেজমেন্ট (আইভিএম) বা মাল্টিপল অ্যাপ্রোচ ব্যবহারের মধ্যে বায়ো কন্ট্রোল পদ্ধতি ব্যবহারের ওপর জোর দিয়ে সাধারণ জনগণকে এর সঙ্গে সম্পৃক্ত ও উদ্বুদ্ধ করতে হবে। এ জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়সহ যেসব প্রতিষ্ঠান ডেঙ্গু নিয়ে কাজ করছে তারাসহ সাধারণ জনগণকে নিয়ে সমন্বিতভাবে কাজটা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে মিডিয়া বড় ধরনের ভূমিকা পালন করবে। আর এর ভয়াবহতা সম্পর্কে সবাইকে সচেতন করতে হবে। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সচেতনতামূলক কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে। সবাইকে এক হয়েই এ কাজ করতে হবে।
আজকের পত্রিকা: আপনাকে ধন্যবাদ সময় দেওয়ার জন্য।
ড. ছারোয়ার: আপনাদেরও ধন্যবাদ।

আজকের পত্রিকা: চলতি বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ হঠাৎ বেড়ে যাওয়ার কারণ কী?
ড. মো. গোলাম ছারোয়ার: বিগত বছরের তুলনায় এ বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার মূল কারণ হলো, বিভিন্ন ধরনের কীটনাশকের (ইনসেকটিসাইড) যথেচ্ছ ব্যবহার। একটা ব্যাপার আমরা জানি না যে এডিস মশা কতটুকু প্রতিরোধী হয়ে উঠেছে। এর প্রকৃত ব্যাপারটা আমাদের জানা নেই। তবে আমরা পরিষ্কার করে বলতে পারছি যে শুধু রাসায়নিক কীটনাশকের ব্যবহারই করে এসেছি। ইন্টিগ্রেটেড ভেক্টর ম্যানেজমেন্ট (আইভিএম) বা মাল্টিপল অ্যাপ্রোচের ব্যবহার করছি না। যার কারণে এডিস মশার বংশবিস্তার অনেক গুণ বেড়ে গেছে। এর জন্য অবশ্যই পরিবর্তিত পরিস্থিতি ও পরিবেশের দূষণ অবস্থাও দায়ী।
আজকের পত্রিকা: ডেঙ্গু যে দেশে ঢোকে, সেখান থেকে বের হয় না। কিন্তু একে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। আমাদের দেশে দুই যুগের বেশি সময় ধরে এর নিয়ন্ত্রণে কোনো কাজ করা হয়নি কেন?
ড. ছারোয়ার: এটি একটি চমৎকার প্রশ্ন। এ বিষয়টি আমি বারবার বিভিন্ন মিডিয়ায় বলেছি। এর কারণটা হলো, যখন নির্দিষ্ট লেভেলের নিচে মশাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারব, তখনই কিন্তু ডেঙ্গুতে আমাদের মৃত্যুর হার শূন্যতে চলে আসবে। এর জন্য আমাদের মূল যে কাজটা করতে হবে তা হলো, ইন্টিগ্রেটেড ভেক্টর ম্যানেজমেন্ট (আইভিএম) বা মাল্টিপল অ্যাপ্রোচের ব্যবহার। মানে, সমন্বিতভাবে পরিস্থিতিটাকে মোকাবিলা করছি না। আমরা শুধু রাসায়নিকের ব্যবহার করছি। যখন আমরা শুধুই রাসায়নিক ব্যবহার করছি, তখন মশা প্রতিরোধী হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তার অন্যান্য প্রাকৃতিক শত্রুও ধ্বংস হচ্ছে। ফলে মশার লার্ভাকে ধরে খেয়ে ফেলার কোনো প্রাকৃতিক জীব অবশিষ্ট থাকছে না। এমতাবস্থায় মশা অত্যন্ত শক্তিশালী হয়ে দ্বিগুণ উৎসাহে বংশবিস্তার করে চলছে।
মশার যে প্রাকৃতিক শত্রু আছে, যেগুলো কোনো ক্ষতি করবে না, এমন পদ্ধতি আমরা এখন পর্যন্ত যথার্থভাবে ব্যবহার করতে পারিনি। আমরা বারবারই শুধু রাসায়নিক ব্যবহার করছি। আর এই রাসায়নিকটাও অনেক পুরোনো। পাইরোথ্রয়েট ডেল্টামেথ্রিন, মালাথিয়ন ও টেমিফস প্রভৃতি কীটনাশক ঢাকার যে দুই সিটি করপোরেশন ব্যবহার করছে, সেগুলো কিন্তু লার্ভা ও পরিপূর্ণ মশাকে নিয়ন্ত্রণের জন্য আগের মতো কাজ করছে না। সহজ কথায় কেউ যদি অনেক দিন ধরে একই অ্যান্টিবায়োটিক খেয়ে থাকেন, তাহলে তিনি অবশ্যই অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী হবেন।
আজকের পত্রিকা: এ বিষয়টা কেন সিটি করপোরেশন বা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কার্যকর করতে পারছে না?
ড. ছারোয়ার: এ ক্ষেত্রে পরিষ্কার কথা হলো, আমরা দেশে নতুন কোনো অ্যাপ্রোচ ও ধারণাকে এখনো গ্রহণ করতে পারছি না। আরেকটা বিষয়, এখন পর্যন্ত দেশে আধুনিক কোনো ল্যাবরেটরি তৈরি করা হয়নি। যেখানে মশার জৈবিক দমনের জন্য সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম ব্যাকটেরিয়ার ব্যবহার করা যায়, যেখানে আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে পারব। সেটা এখন পর্যন্ত তৈরি করা হয়নি।
দেশের বিভিন্ন উচ্চ শিক্ষা ও গবেষণাপ্রতিষ্ঠান, যেমন জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসাপ্রতিষ্ঠান (নিপসম), বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, আইইডিসিআর ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানে কীটতত্ত্ব বিভাগ আছে। কিন্তু কোথাও মশা এবং এর ভেতরের ভয়ংকর ভাইরাসটির জেনম সিকোয়েন্সিং করার জন্য মলিকুলার ল্যাব নেই। যেখানে গবেষণা এবং গবেষণালব্ধ ফলাফল আমরা প্রয়োগ (ইমপ্লিমেন্ট) করতে পারব। আর এসব কাজ করতে গেলে যে ধরনের লোকবল দরকার তার যথেষ্ট ঘাটতি আছে। এ কারণে সিটি করপোরেশন বা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাজগুলো ততটা কার্যকর হচ্ছে না।
আজকের পত্রিকা: এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশার প্রজনন প্রতিরোধে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের উল্লেখযোগ্য কোনো কর্মসূচি দেখা যায়নি। এ ক্ষেত্রে তারা ব্যর্থ নয় কি?
ড. ছারোয়ার: এখন পর্যন্ত দুই সিটি করপোরেশনের যতজন কীটতত্ত্ববিদের প্রয়োজন ছিল, সেই সংখ্যক লোক সেখানে নেই। কীটতত্ত্ববিদের যে ধরনের অর্গানোগ্রাম থাকার কথা, তারও কোনো পদায়ন করা হয়নি। এটাও একটা বড় ধরনের সমস্যা। যদি আমরা ভারতের দিকে তাকাই তাহলে দেখতে পাব, সেখানে কিন্তু ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করার জন্য আলাদা ইনস্টিটিউট আছে। দুঃখের বিষয়, বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত প্রতিষ্ঠান তো দূরের কথা, গোছানো কোনো অর্গানোগ্রামই তৈরি করা হয়নি।
দেশের এ রকম ভয়াবহ পরিস্থিতিতে সবকিছু ধার করে নিয়ে আসা হচ্ছে। এডিস মশার প্রজনন মৌসুমে লার্ভার পরিমাণ বিপৎসীমা অতিক্রম করছে, তখন বিভিন্ন জায়গা থেকে কীটতত্ত্ববিদদের নিয়ে এসে কিছু পরামর্শ নিয়ে এ কাজগুলো করা হচ্ছে। এ রকম জাতীয় একটা দুর্যোগ মুহূর্তে এভাবে কি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব?আমি যে জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসাপ্রতিষ্ঠানের (নিপসম) কীটতত্ত্ব বিভাগের প্রধান, এখানেও কিন্তু লোকবলের সংকট আছে। এখানে যেমন রিসোর্সের স্বল্পতা আছে, তেমনি রিসোর্স পারসনের স্বল্পতাও আছে। এসব স্বল্পতার কারণেই কিন্তু আমরা এ জায়গাগুলোতে সঠিকভাবে হাত দিতে পারছি না।
আমার মনে হয়, এ রকম পরিস্থিতিতে এ জায়গাগুলোতে আরও বেশি গুরুত্ব দেওয়ার সময় এখন। কাজ করতে হবে ত্বরিত গতিতে। এটা কিন্তু একটা মন্ত্রণালয়ের কাজ নয়। এসব কাজ করার জন্য সমন্বয়টা খুব দরকার। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে সমন্বিতভাবে কাজগুলো করতে হবে। একই সঙ্গে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিভাগের সঙ্গেও যোগাযোগটা রাখতে হবে। কারণ রিসোর্স পারসন তো সে সব জায়গা থেকেই আসবে। যখন আমরা এডিস মশার লার্ভা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য জৈবিক পদ্ধতি ব্যবহার করতে যাব, তখন কিন্তু ল্যাবরেটরিতে দুটি ব্যাকটেরিয়া নিয়ে কাজ করতে হবে। একটির নাম হচ্ছে উলবাকিয়া ব্যাকটেরিয়া, আরেকটির নাম বিটিআই।
উত্তর সিটি করপোরেশন বিটিআই পাউডার কেনার জন্য টেন্ডার আহ্বান করেছে, কিন্তু দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এখন পর্যন্ত এর কোনো উদ্যোগই নেয়নি। বিটিআইকে মশার লার্ভা খাবার হিসেবে ব্যবহার করে। যে পানির মধ্যে লার্ভা থাকে, সেখানে যদি বিটিআই পাউডার দেওয়া হয় তারা সেটা খেয়ে ফেলে। বিটিআই তখন তার শরীরের মধ্যে যে সেল আছে, তাকে ফুটো করে দিয়ে মশার লার্ভাটাকে মেরে ফেলে। মজার ব্যাপার হচ্ছে, মশার লার্ভাটা যখন মরে যায়, তখন মরে যাওয়ার ফলে তার চারপাশে যে অবস্থার সৃষ্টি হয়, তা পরিবেশের কোনো ক্ষতি করে না। আবার ওই পানির মধ্যে যদি অন্য কোনো জীব থাকে, তারও কোনো ক্ষতি করে না এই বিটিআই পাউডার। তখন এটা মশার বংশ বৃদ্ধি মারাত্মকভাবে ব্যাহত করে। এটা একটা পরিবেশবান্ধব পাউডার।
আরেকটা হচ্ছে, আমরা জানি, মশা প্রকৃতিতে থাকবেই। কিন্তু মশার রোগ ছড়ানোর যে ক্ষমতা সেটাকে রোধ করতে হবে। তাদের রোগ ছড়ানোর ক্ষমতা থাকবে না।জীবাণুটি তার শরীরের মধ্যে রোগ ছড়ানোর ক্ষমতা হারিয়ে ফেলবে। সে জন্য উলবাকিয়া ব্যাকটেরিয়ার ব্যবহার ঘটাতে হবে। ল্যাবরেটরিতে এটাকে মশার শরীরের মধ্যে প্রবেশের ব্যবস্থা করতে হবে। এর জন্যই প্রয়োজন বিজ্ঞ কীটতত্ত্ববিদের। আর ল্যাবরেটরিতে তৈরি উলবাকিয়াযুক্ত মশা প্রকৃতিতে ছেড়ে দিতে পারলে কয়েক প্রজন্মের পর আমাদের প্রকৃতিতে শুধু এ ধরনের মশাই বিরাজ করবে। প্রকৃতিতে এ ধরনের মশা থাকলে ডেঙ্গুর যে ভাইরাস থাকবে, সেটা আর আক্রমণ করতে পারবে না। ডেঙ্গু আক্রমণ করতে না পারলে আমাদের এ নিয়ে আর দুশ্চিন্তা করতে হবে না। এই প্রক্রিয়াটা যদি আমাদের দেশে ব্যবহার করা হয়, তাহলে আমরা ডেঙ্গুর মহামারি থেকে রক্ষা পাব।
আজকের পত্রিকা: ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আপনার পরামর্শ কী?
ড. ছারোয়ার: ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের আগে লার্ভা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সে জন্য আগে লার্ভার প্রজনন স্থান শনাক্ত করতে হবে। এই শনাক্তকরণ স্থানটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এটা শনাক্তের পরে সেই নির্দিষ্ট জায়গায় যথার্থভাবে যদি বায়ো কন্ট্রোল পদ্ধতিটা অ্যাপ্লাই করতে পারি, তাহলে সেটা পরিবেশবান্ধব হবে এবং তা নিয়ন্ত্রণে আসবে। শুধু রাসায়নিক কীটনাশক দিয়ে মশাকে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। আমার পরামর্শ হলো, ইন্টিগ্রেটেড ভেক্টর ম্যানেজমেন্ট (আইভিএম) বা মাল্টিপল অ্যাপ্রোচ ব্যবহারের মধ্যে বায়ো কন্ট্রোল পদ্ধতি ব্যবহারের ওপর জোর দিয়ে সাধারণ জনগণকে এর সঙ্গে সম্পৃক্ত ও উদ্বুদ্ধ করতে হবে। এ জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়সহ যেসব প্রতিষ্ঠান ডেঙ্গু নিয়ে কাজ করছে তারাসহ সাধারণ জনগণকে নিয়ে সমন্বিতভাবে কাজটা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে মিডিয়া বড় ধরনের ভূমিকা পালন করবে। আর এর ভয়াবহতা সম্পর্কে সবাইকে সচেতন করতে হবে। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সচেতনতামূলক কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে। সবাইকে এক হয়েই এ কাজ করতে হবে।
আজকের পত্রিকা: আপনাকে ধন্যবাদ সময় দেওয়ার জন্য।
ড. ছারোয়ার: আপনাদেরও ধন্যবাদ।

আজকের পত্রিকা: চলতি বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ হঠাৎ বেড়ে যাওয়ার কারণ কী?
ড. মো. গোলাম ছারোয়ার: বিগত বছরের তুলনায় এ বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার মূল কারণ হলো, বিভিন্ন ধরনের কীটনাশকের (ইনসেকটিসাইড) যথেচ্ছ ব্যবহার। একটা ব্যাপার আমরা জানি না যে এডিস মশা কতটুকু প্রতিরোধী হয়ে উঠেছে। এর প্রকৃত ব্যাপারটা আমাদের জানা নেই। তবে আমরা পরিষ্কার করে বলতে পারছি যে শুধু রাসায়নিক কীটনাশকের ব্যবহারই করে এসেছি। ইন্টিগ্রেটেড ভেক্টর ম্যানেজমেন্ট (আইভিএম) বা মাল্টিপল অ্যাপ্রোচের ব্যবহার করছি না। যার কারণে এডিস মশার বংশবিস্তার অনেক গুণ বেড়ে গেছে। এর জন্য অবশ্যই পরিবর্তিত পরিস্থিতি ও পরিবেশের দূষণ অবস্থাও দায়ী।
আজকের পত্রিকা: ডেঙ্গু যে দেশে ঢোকে, সেখান থেকে বের হয় না। কিন্তু একে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। আমাদের দেশে দুই যুগের বেশি সময় ধরে এর নিয়ন্ত্রণে কোনো কাজ করা হয়নি কেন?
ড. ছারোয়ার: এটি একটি চমৎকার প্রশ্ন। এ বিষয়টি আমি বারবার বিভিন্ন মিডিয়ায় বলেছি। এর কারণটা হলো, যখন নির্দিষ্ট লেভেলের নিচে মশাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারব, তখনই কিন্তু ডেঙ্গুতে আমাদের মৃত্যুর হার শূন্যতে চলে আসবে। এর জন্য আমাদের মূল যে কাজটা করতে হবে তা হলো, ইন্টিগ্রেটেড ভেক্টর ম্যানেজমেন্ট (আইভিএম) বা মাল্টিপল অ্যাপ্রোচের ব্যবহার। মানে, সমন্বিতভাবে পরিস্থিতিটাকে মোকাবিলা করছি না। আমরা শুধু রাসায়নিকের ব্যবহার করছি। যখন আমরা শুধুই রাসায়নিক ব্যবহার করছি, তখন মশা প্রতিরোধী হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তার অন্যান্য প্রাকৃতিক শত্রুও ধ্বংস হচ্ছে। ফলে মশার লার্ভাকে ধরে খেয়ে ফেলার কোনো প্রাকৃতিক জীব অবশিষ্ট থাকছে না। এমতাবস্থায় মশা অত্যন্ত শক্তিশালী হয়ে দ্বিগুণ উৎসাহে বংশবিস্তার করে চলছে।
মশার যে প্রাকৃতিক শত্রু আছে, যেগুলো কোনো ক্ষতি করবে না, এমন পদ্ধতি আমরা এখন পর্যন্ত যথার্থভাবে ব্যবহার করতে পারিনি। আমরা বারবারই শুধু রাসায়নিক ব্যবহার করছি। আর এই রাসায়নিকটাও অনেক পুরোনো। পাইরোথ্রয়েট ডেল্টামেথ্রিন, মালাথিয়ন ও টেমিফস প্রভৃতি কীটনাশক ঢাকার যে দুই সিটি করপোরেশন ব্যবহার করছে, সেগুলো কিন্তু লার্ভা ও পরিপূর্ণ মশাকে নিয়ন্ত্রণের জন্য আগের মতো কাজ করছে না। সহজ কথায় কেউ যদি অনেক দিন ধরে একই অ্যান্টিবায়োটিক খেয়ে থাকেন, তাহলে তিনি অবশ্যই অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী হবেন।
আজকের পত্রিকা: এ বিষয়টা কেন সিটি করপোরেশন বা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কার্যকর করতে পারছে না?
ড. ছারোয়ার: এ ক্ষেত্রে পরিষ্কার কথা হলো, আমরা দেশে নতুন কোনো অ্যাপ্রোচ ও ধারণাকে এখনো গ্রহণ করতে পারছি না। আরেকটা বিষয়, এখন পর্যন্ত দেশে আধুনিক কোনো ল্যাবরেটরি তৈরি করা হয়নি। যেখানে মশার জৈবিক দমনের জন্য সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম ব্যাকটেরিয়ার ব্যবহার করা যায়, যেখানে আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে পারব। সেটা এখন পর্যন্ত তৈরি করা হয়নি।
দেশের বিভিন্ন উচ্চ শিক্ষা ও গবেষণাপ্রতিষ্ঠান, যেমন জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসাপ্রতিষ্ঠান (নিপসম), বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, আইইডিসিআর ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানে কীটতত্ত্ব বিভাগ আছে। কিন্তু কোথাও মশা এবং এর ভেতরের ভয়ংকর ভাইরাসটির জেনম সিকোয়েন্সিং করার জন্য মলিকুলার ল্যাব নেই। যেখানে গবেষণা এবং গবেষণালব্ধ ফলাফল আমরা প্রয়োগ (ইমপ্লিমেন্ট) করতে পারব। আর এসব কাজ করতে গেলে যে ধরনের লোকবল দরকার তার যথেষ্ট ঘাটতি আছে। এ কারণে সিটি করপোরেশন বা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাজগুলো ততটা কার্যকর হচ্ছে না।
আজকের পত্রিকা: এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশার প্রজনন প্রতিরোধে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের উল্লেখযোগ্য কোনো কর্মসূচি দেখা যায়নি। এ ক্ষেত্রে তারা ব্যর্থ নয় কি?
ড. ছারোয়ার: এখন পর্যন্ত দুই সিটি করপোরেশনের যতজন কীটতত্ত্ববিদের প্রয়োজন ছিল, সেই সংখ্যক লোক সেখানে নেই। কীটতত্ত্ববিদের যে ধরনের অর্গানোগ্রাম থাকার কথা, তারও কোনো পদায়ন করা হয়নি। এটাও একটা বড় ধরনের সমস্যা। যদি আমরা ভারতের দিকে তাকাই তাহলে দেখতে পাব, সেখানে কিন্তু ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করার জন্য আলাদা ইনস্টিটিউট আছে। দুঃখের বিষয়, বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত প্রতিষ্ঠান তো দূরের কথা, গোছানো কোনো অর্গানোগ্রামই তৈরি করা হয়নি।
দেশের এ রকম ভয়াবহ পরিস্থিতিতে সবকিছু ধার করে নিয়ে আসা হচ্ছে। এডিস মশার প্রজনন মৌসুমে লার্ভার পরিমাণ বিপৎসীমা অতিক্রম করছে, তখন বিভিন্ন জায়গা থেকে কীটতত্ত্ববিদদের নিয়ে এসে কিছু পরামর্শ নিয়ে এ কাজগুলো করা হচ্ছে। এ রকম জাতীয় একটা দুর্যোগ মুহূর্তে এভাবে কি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব?আমি যে জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসাপ্রতিষ্ঠানের (নিপসম) কীটতত্ত্ব বিভাগের প্রধান, এখানেও কিন্তু লোকবলের সংকট আছে। এখানে যেমন রিসোর্সের স্বল্পতা আছে, তেমনি রিসোর্স পারসনের স্বল্পতাও আছে। এসব স্বল্পতার কারণেই কিন্তু আমরা এ জায়গাগুলোতে সঠিকভাবে হাত দিতে পারছি না।
আমার মনে হয়, এ রকম পরিস্থিতিতে এ জায়গাগুলোতে আরও বেশি গুরুত্ব দেওয়ার সময় এখন। কাজ করতে হবে ত্বরিত গতিতে। এটা কিন্তু একটা মন্ত্রণালয়ের কাজ নয়। এসব কাজ করার জন্য সমন্বয়টা খুব দরকার। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে সমন্বিতভাবে কাজগুলো করতে হবে। একই সঙ্গে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিভাগের সঙ্গেও যোগাযোগটা রাখতে হবে। কারণ রিসোর্স পারসন তো সে সব জায়গা থেকেই আসবে। যখন আমরা এডিস মশার লার্ভা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য জৈবিক পদ্ধতি ব্যবহার করতে যাব, তখন কিন্তু ল্যাবরেটরিতে দুটি ব্যাকটেরিয়া নিয়ে কাজ করতে হবে। একটির নাম হচ্ছে উলবাকিয়া ব্যাকটেরিয়া, আরেকটির নাম বিটিআই।
উত্তর সিটি করপোরেশন বিটিআই পাউডার কেনার জন্য টেন্ডার আহ্বান করেছে, কিন্তু দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এখন পর্যন্ত এর কোনো উদ্যোগই নেয়নি। বিটিআইকে মশার লার্ভা খাবার হিসেবে ব্যবহার করে। যে পানির মধ্যে লার্ভা থাকে, সেখানে যদি বিটিআই পাউডার দেওয়া হয় তারা সেটা খেয়ে ফেলে। বিটিআই তখন তার শরীরের মধ্যে যে সেল আছে, তাকে ফুটো করে দিয়ে মশার লার্ভাটাকে মেরে ফেলে। মজার ব্যাপার হচ্ছে, মশার লার্ভাটা যখন মরে যায়, তখন মরে যাওয়ার ফলে তার চারপাশে যে অবস্থার সৃষ্টি হয়, তা পরিবেশের কোনো ক্ষতি করে না। আবার ওই পানির মধ্যে যদি অন্য কোনো জীব থাকে, তারও কোনো ক্ষতি করে না এই বিটিআই পাউডার। তখন এটা মশার বংশ বৃদ্ধি মারাত্মকভাবে ব্যাহত করে। এটা একটা পরিবেশবান্ধব পাউডার।
আরেকটা হচ্ছে, আমরা জানি, মশা প্রকৃতিতে থাকবেই। কিন্তু মশার রোগ ছড়ানোর যে ক্ষমতা সেটাকে রোধ করতে হবে। তাদের রোগ ছড়ানোর ক্ষমতা থাকবে না।জীবাণুটি তার শরীরের মধ্যে রোগ ছড়ানোর ক্ষমতা হারিয়ে ফেলবে। সে জন্য উলবাকিয়া ব্যাকটেরিয়ার ব্যবহার ঘটাতে হবে। ল্যাবরেটরিতে এটাকে মশার শরীরের মধ্যে প্রবেশের ব্যবস্থা করতে হবে। এর জন্যই প্রয়োজন বিজ্ঞ কীটতত্ত্ববিদের। আর ল্যাবরেটরিতে তৈরি উলবাকিয়াযুক্ত মশা প্রকৃতিতে ছেড়ে দিতে পারলে কয়েক প্রজন্মের পর আমাদের প্রকৃতিতে শুধু এ ধরনের মশাই বিরাজ করবে। প্রকৃতিতে এ ধরনের মশা থাকলে ডেঙ্গুর যে ভাইরাস থাকবে, সেটা আর আক্রমণ করতে পারবে না। ডেঙ্গু আক্রমণ করতে না পারলে আমাদের এ নিয়ে আর দুশ্চিন্তা করতে হবে না। এই প্রক্রিয়াটা যদি আমাদের দেশে ব্যবহার করা হয়, তাহলে আমরা ডেঙ্গুর মহামারি থেকে রক্ষা পাব।
আজকের পত্রিকা: ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আপনার পরামর্শ কী?
ড. ছারোয়ার: ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের আগে লার্ভা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সে জন্য আগে লার্ভার প্রজনন স্থান শনাক্ত করতে হবে। এই শনাক্তকরণ স্থানটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এটা শনাক্তের পরে সেই নির্দিষ্ট জায়গায় যথার্থভাবে যদি বায়ো কন্ট্রোল পদ্ধতিটা অ্যাপ্লাই করতে পারি, তাহলে সেটা পরিবেশবান্ধব হবে এবং তা নিয়ন্ত্রণে আসবে। শুধু রাসায়নিক কীটনাশক দিয়ে মশাকে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। আমার পরামর্শ হলো, ইন্টিগ্রেটেড ভেক্টর ম্যানেজমেন্ট (আইভিএম) বা মাল্টিপল অ্যাপ্রোচ ব্যবহারের মধ্যে বায়ো কন্ট্রোল পদ্ধতি ব্যবহারের ওপর জোর দিয়ে সাধারণ জনগণকে এর সঙ্গে সম্পৃক্ত ও উদ্বুদ্ধ করতে হবে। এ জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়সহ যেসব প্রতিষ্ঠান ডেঙ্গু নিয়ে কাজ করছে তারাসহ সাধারণ জনগণকে নিয়ে সমন্বিতভাবে কাজটা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে মিডিয়া বড় ধরনের ভূমিকা পালন করবে। আর এর ভয়াবহতা সম্পর্কে সবাইকে সচেতন করতে হবে। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সচেতনতামূলক কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে। সবাইকে এক হয়েই এ কাজ করতে হবে।
আজকের পত্রিকা: আপনাকে ধন্যবাদ সময় দেওয়ার জন্য।
ড. ছারোয়ার: আপনাদেরও ধন্যবাদ।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

অধ্যাপক ড. মো. গোলাম ছারোয়ার জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসাপ্রতিষ্ঠানের (নিপসম) কীটতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান। সম্প্রতি তিনি ডেঙ্গুর ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার কারণ এবং এ থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার উপায়
০৯ জুলাই ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

অধ্যাপক ড. মো. গোলাম ছারোয়ার জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসাপ্রতিষ্ঠানের (নিপসম) কীটতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান। সম্প্রতি তিনি ডেঙ্গুর ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার কারণ এবং এ থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার উপায়
০৯ জুলাই ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

অধ্যাপক ড. মো. গোলাম ছারোয়ার জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসাপ্রতিষ্ঠানের (নিপসম) কীটতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান। সম্প্রতি তিনি ডেঙ্গুর ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার কারণ এবং এ থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার উপায়
০৯ জুলাই ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

অধ্যাপক ড. মো. গোলাম ছারোয়ার জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসাপ্রতিষ্ঠানের (নিপসম) কীটতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান। সম্প্রতি তিনি ডেঙ্গুর ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার কারণ এবং এ থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার উপায়
০৯ জুলাই ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫