জাহীদ রেজা নূর

ভেবেছিলাম দেশের বিভিন্ন স্থানে ছাত্রলীগের সদস্যদের বেশুমার অনৈতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে লিখব। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রী নির্যাতনের বিভীষিকার জন্ম দিয়েছে যারা, তাদের পরিচয় ছাত্রলীগ। স্থানীয়ভাবে নানা অপকর্মের সঙ্গে ছাত্রলীগের সদস্যদের নাম উঠে আসছে। ছাত্রলীগের সদস্যদের এই নৈতিক পতনের কারণ খুঁজতে হবে তাদের আদর্শহীনতার মধ্যে। যে ঐতিহ্য ও সংগ্রামের ইতিহাস রয়েছে এই ছাত্রসংগঠনটির এবং যে সংগ্রাম ও ইতিহাসের জন্ম দিয়েছে আওয়ামী লীগ, সেই ঐতিহ্য, ইতিহাস, সংগ্রাম সম্পর্কে ধারণা থাকলে তারা এই সব অপকর্ম করে বেড়াতে পারত না। মুশকিল হলো, এখন ছাত্ররাজনীতি বা রাজনীতি করতে হলে আদর্শের চেয়ে পেশিশক্তি বা ট্যাঁক-শক্তির প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। ফলে দলের মধ্যে আদর্শের চেয়ে ক্ষমতা প্রদর্শনের প্রবণতা বাড়ছে। বাংলাদেশের যেকোনো রাজনৈতিক দলের ও ছাত্রসংগঠনের মধ্যে নৈতিকতা কমে যাচ্ছে, কমে যাচ্ছে পড়াশোনা, কমে যাচ্ছে সাধারণ জনগণের সঙ্গে সংলগ্নতা। তাতে যা হওয়ার ছিল, সেটাই ঘটেছে।
এ বিষয়টি নিয়ে যখন লিখতে বসেছি, তখন হঠাৎ করে তাজউদ্দীন আহমদের ছেলে বাংলাদেশের একসময়ের প্রতিমন্ত্রী ও সংসদ সদস্য সোহেল তাজের একটি ফেসবুক মন্তব্য চোখে পড়ল। ফেসবুকে সোহেল তাজের উত্থাপিত বিষয়টি খুবই সংগত। বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের জন্মবার্ষিকীতে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ফেসবুকে একটি পোস্ট আশা করেছিলেন তিনি। পরে আওয়ামী লীগের ফেসবুক পেজে তাজউদ্দীন আহমদকে নিয়ে একটি পোস্ট দেওয়া হয়। সোহেল তাজের স্ট্যাটাসের উত্তরে একটা ব্যাখ্যাও দেওয়া হয়।
সোহেল তাজের মন্তব্যের পর আওয়ামী লীগ তাদের ফেসবুক পেজে তাজউদ্দীন আহমদকে স্মরণ করেছে, তাতে তাজউদ্দীন আহমদের শুধু নয়, দল হিসেবে আওয়ামী লীগেরও সম্মান বাড়ল। দলের একজন শক্তিমান সদস্য, যিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পার্শ্বচর ছিলেন, তাঁকে ঠিকভাবে স্মরণ করা হলে নতুন প্রজন্ম আমাদের সংগ্রামের ইতিহাসের একজন মূল চরিত্রের সঙ্গেও পরিচিত হতে পারে, এ কথা ভুলে গেলে চলবে কী করে?
সংকটটা এই নয় যে প্রশ্নটা শুধু তাজউদ্দীন আহমদকে নিয়ে উঠে আবার হারিয়ে যাবে।
আমাদের দেশে রাজনীতি হয়ে গেছে ব্যক্তিকেন্দ্রিক। মুখে বলছি গণতন্ত্র আমাদের চালিকাশক্তি, অথচ কাজের সময় গণতান্ত্রিক পথটা বেছে নিচ্ছি না। এই সংকট প্রতিটি রাজনৈতিক দলেই রয়েছে। দলের চেয়ে ব্যক্তি বড় হয়ে গেলে কী ধরনের সর্বনাশ হয়, তা আমরা সোভিয়েত ইউনিয়নের অভিজ্ঞতা থেকে জেনেছি। লেনিনকে সেখানে প্রায় ঈশ্বর বানিয়ে ফেলা হয়েছিল। এমনকি পাঠ্যপুস্তকের যেকোনো বিষয়েই লেনিন কী বলেছেন, তা নিয়ে আলোচনা ছিল। সেই আলোচনা আবার পরীক্ষাতেও আসত। যেকোনো কিছুরই বাহুল্য জনমনে বিতৃষ্ণার জন্ম দেয়। ভেবে দেখতে হবে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকেও কেউ যেন সেভাবে ব্যবহার করতে না পারে। আশার দিক, বহু তাঁবেদার মানুষ পদ্মা সেতুর নাম রাখতে বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে। প্রধানমন্ত্রী সে ভাবনার কোনো মূল্য না দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন, তিনি তেলবাজি পছন্দ করেন না।
দুই.
১৯৬৬ সালে ছয় দফা আন্দোলনের মাধ্যমেই মূলত শেখ মুজিবুর রহমান এ দেশের রাজনীতিতে একমেবাদ্বিতীয়ম হয়ে ওঠেন। তিনি ছিলেন একজন ক্যারিশমাটিক লিডার। ষাটের দশকে বাঘা বাঘা সব আন্তর্জাতিকতাবাদী-সাম্যবাদী অথবা ইসলামি নেতাদের অগ্রাহ্য করে বাংলার জনগণ তাদের মুক্তিদাতা হিসেবে বেছে নিয়েছিল শেখ মুজিবুর রহমানকে। ছয় দফার ব্যাপারে আপসহীন থেকে শেখ মুজিবুর রহমান যখন একের পর এক বক্তৃতা করছিলেন, তখন নিজের ভাবনাগুলোকে স্পষ্ট করে তুলে ধরছিলেন তিনি। এ সময় যাঁরা রাজনীতি, অর্থনীতি, সাংবাদিকতা, সংস্কৃতি পরিমণ্ডলে বাঙালির এই জাগরণ নিয়ে শেখ মুজিবুর রহমানের পাশে ছিলেন, তাঁদের মূল্যায়ন করা না হলে বঙ্গবন্ধুকে ঠিকভাবে তুলে ধরা যাবে না। বঙ্গবন্ধু কী করে পুরো জাতির নয়নের মণি হয়ে উঠলেন, সেটা তো খুঁজতে হবে সেই সময়ের প্রেক্ষাপটে, সেই সময়ের মানুষদের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর মিথস্ক্রিয়ার মধ্যে। নইলে মূল্যায়নটা হবে ভারসাম্যহীন।
বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ পাঠ করলেই বোঝা যায়, তিনি নিজ দলের, অন্য দলের নেতা-কর্মীদের কতটা সম্মান করতেন। বঙ্গবন্ধুর রক্তের মধ্যেই ছিল, অন্যকে সম্মান করলে নিজে সম্মানিত হওয়া যায়। নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করতে হলে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদেরও নেমে পড়তে হবে বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথে। অন্য যেকোনো পথ পরিত্যাজ্য।
তিন.
দলীয় মূল্যায়নের ক্ষেত্রে এ ধরনের সংকট কাটিয়ে ওঠার জন্য কী পদক্ষেপ নিতে পারে কোনো রাজনৈতিক দল? তারা দলের শুভাকাঙ্ক্ষী অথবা সদস্যদের অবদান তুলে ধরতে পারে। ছয় দফা প্রচারের জন্য ইত্তেফাক যে ভূমিকা পালন করেছে, তার তুলনা পাওয়া ভার। সম্পাদকীয় পাতায় তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার লেখা উপসম্পাদকীয় এবং বার্তা সম্পাদক সিরাজুদ্দীন হোসেনের নিউজ ট্রিটমেন্ট মিলেই ছয় দফা আন্দোলন পৌঁছে গেছে জনগণের দ্বারে। সত্তরের নির্বাচনের সময় মানিক মিয়া আর বেঁচে ছিলেন না। তখন আওয়ামী লীগের রাজনীতি প্রচারের ভার বহন করেছেন শেখ মুজিবুর রহমানের বন্ধু সিরাজুদ্দীন হোসেন। সে সময়কার ইত্তেফাকের নিউজ ট্রিটমেন্ট দেখলেই বিষয়টি স্পষ্ট হবে। এই দুজন অকুতোভয় সাংবাদিকের কি মূল্যায়ন হয়েছে আওয়ামী লীগে? তাঁরা দলীয় চাঁদা দেওয়া আওয়ামী লীগার ছিলেন না বটে, কিন্তু হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর দেখানো পথেই তাঁরা চলেছেন। বলা বাহুল্য, মানিক মিয়া, শেখ মুজিবুর রহমান এবং সিরাজুদ্দীন হোসেন কখনোই সোহরাওয়ার্দীর দেখানো পথ থেকে সরে দাঁড়াননি। নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতির পক্ষেই সোচ্চার ছিলেন তাঁরা।
‘সোনার বাংলা শ্মশান কেন’ স্লোগানকে যুক্তিনিষ্ঠভাবে তুলে ধরার জন্য যে অর্থনীতিবিদেরা তাঁদের মেধা খাটিয়েছেন, তাঁদেরই-বা স্মরণ করা হবে না কেন? পাকিস্তানের দুই অংশে যে অর্থনৈতিক বৈষম্য ফুটে উঠেছিল, সে বৈষম্যের কথা দৃঢ়ভাবে বলার জন্য দরকার ছিল তথ্য-উপাত্তসহ তার প্রমাণ। সে কাজটাই তো করেছিলেন নূরুল ইসলাম, রেহমান সোবহান, আনিসুর রহমান প্রমুখ। সে সময় তাঁরা কীভাবে বঙ্গবন্ধুর পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন, সে কথা স্মরণ না করে কি বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করা যাবে?
রাজনীতির মাঠে জেলহত্যার শিকার চার নেতার কথা কি ভোলা উচিত হবে? মুক্তিযুদ্ধের সময় নানা ধরনের বিরোধিতার মুখেও সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, ক্যাপ্টেন মনসুর আলী এবং কামারুজ্জামানের দৃঢ়তাপূর্ণ নেতৃত্বকে স্মরণ করা হলে কারও কোনো ক্ষতি তো হওয়ার কথা নয়।
আর ছাত্রনেতাদের কথা? ছয় দফার কারণে আওয়ামী লীগের নেতারা যখন জেলে বন্দী, তখন ছাত্রনেতারাই তো এগিয়ে নিয়ে গেছেন এই আন্দোলন। মাজহারুল হক বাকী, আবদুর রউফ, খালেদ মোহাম্মদ আলী, তোফায়েল আহমেদ, নূরে আলম সিদ্দিকী, আ স ম আবদুর রব, আবদুল কুদ্দুস মাখন, শাজাহান সিরাজদের অবদানও কম নয়। আওয়ামী লীগের আমেনা বেগম তখন রেখেছিলেন দৃঢ় ভূমিকা। তবে ১৯৬৬ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত সময়ে ছাত্রনেতারা যে অবদান রেখেছেন, মুক্তভাবেই তা স্মরণ করা উচিত। মুক্তিযুদ্ধের পর তাঁদের অনেকেই আওয়ামী লীগ বা ছাত্রলীগ ত্যাগ করলেও সেই ঐতিহাসিক সময়ে তাঁদের ভূমিকার নিরপেক্ষ আলোচনা হওয়াই সংগত। কেন ছাত্রলীগের চারজন নেতাকে চার খলিফা বলা শুরু করল মানুষ, সেটাও তো বিবেচনায় আনা দরকার।
অন্যদিকে সিরাজুল আলম খানের মতো এত বড় সংগঠক, বঙ্গবন্ধুও যাঁকে আমলে নিতেন, তাঁর হঠকারী ভূমিকার কথাও তো সঠিক ইতিহাসের স্বার্থে তুলে আনতে হবে। তাঁকে নিয়েও আলোচনা হতে হবে দলীয় সভায়। আলোচনা হতে হবে শেখ ফজলুল হক মণিকে নিয়েও।
চার.
কীভাবে কাজটা করা সম্ভব?
আওয়ামী লীগ এখন অনেক বড় দল। দলের গবেষণা সেলও নিশ্চয়ই অনেক গুণী মানুষদের নিয়ে গঠিত। তাঁরাই বিভিন্ন সময় ইতিহাসের স্বরূপ সন্ধানে সেমিনারের আয়োজন করতে পারেন। প্রকাশ করতে পারেন বই, যা হয়ে উঠতে পারে ঐতিহাসিক দলিল। তৈরি করাতে পারেন তথ্যচিত্র।
যে কাজগুলো করার কথা বললাম, সেগুলো করার সময় মনে রাখতে হবে, ইতিহাসের সমর্থন ছাড়া কোনো তথ্য যেন সেখানে জায়গা না পায়। আমরা আমাদের অভিজ্ঞতায় দেখেছি, ইতিহাস বিকৃত করেও কেউ কেউ কোনো তথ্য প্রমাণ করার চেষ্টা করেন। পরবর্তীকালে সঠিক তথ্য জানা গেলে ওই একটি বিকৃত তথ্যের কারণেই পুরো প্রয়াসটা ব্যর্থ হয়ে যায়।
যাঁকে নিয়ে সেমিনার করা হবে কিংবা যাঁকে নিয়ে বই লেখা হবে বা তথ্যচিত্র তৈরি করা হবে, তাঁকেই যেন ওই প্রয়াসের মূল ব্যক্তি করা হয়।
এই কাজগুলো দলের শুভাকাঙ্ক্ষীদের যেমন তুলে ধরবে, তেমনি বুঝতে দেবে, বঙ্গবন্ধু তাঁর আরাধ্য পথে এগিয়ে যেতে পেরেছেন ঠিক মানুষদের, ঠিক সময়ে কাছে পেয়েছিলেন বলেই। এ কথা মেনে নিয়ে যখন আমরা ইতিহাসচর্চা করতে যাব, তখন ইতিহাসের অনেক জটিল জটও খুলে যাবে দ্রুত। তখন আর সোহেল তাজের মতো ফেসবুকে এ রকম স্ট্যাটাস দিতে হবে না।
লেখক: উপসম্পাদক, আজকের পত্রিকা

ভেবেছিলাম দেশের বিভিন্ন স্থানে ছাত্রলীগের সদস্যদের বেশুমার অনৈতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে লিখব। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রী নির্যাতনের বিভীষিকার জন্ম দিয়েছে যারা, তাদের পরিচয় ছাত্রলীগ। স্থানীয়ভাবে নানা অপকর্মের সঙ্গে ছাত্রলীগের সদস্যদের নাম উঠে আসছে। ছাত্রলীগের সদস্যদের এই নৈতিক পতনের কারণ খুঁজতে হবে তাদের আদর্শহীনতার মধ্যে। যে ঐতিহ্য ও সংগ্রামের ইতিহাস রয়েছে এই ছাত্রসংগঠনটির এবং যে সংগ্রাম ও ইতিহাসের জন্ম দিয়েছে আওয়ামী লীগ, সেই ঐতিহ্য, ইতিহাস, সংগ্রাম সম্পর্কে ধারণা থাকলে তারা এই সব অপকর্ম করে বেড়াতে পারত না। মুশকিল হলো, এখন ছাত্ররাজনীতি বা রাজনীতি করতে হলে আদর্শের চেয়ে পেশিশক্তি বা ট্যাঁক-শক্তির প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। ফলে দলের মধ্যে আদর্শের চেয়ে ক্ষমতা প্রদর্শনের প্রবণতা বাড়ছে। বাংলাদেশের যেকোনো রাজনৈতিক দলের ও ছাত্রসংগঠনের মধ্যে নৈতিকতা কমে যাচ্ছে, কমে যাচ্ছে পড়াশোনা, কমে যাচ্ছে সাধারণ জনগণের সঙ্গে সংলগ্নতা। তাতে যা হওয়ার ছিল, সেটাই ঘটেছে।
এ বিষয়টি নিয়ে যখন লিখতে বসেছি, তখন হঠাৎ করে তাজউদ্দীন আহমদের ছেলে বাংলাদেশের একসময়ের প্রতিমন্ত্রী ও সংসদ সদস্য সোহেল তাজের একটি ফেসবুক মন্তব্য চোখে পড়ল। ফেসবুকে সোহেল তাজের উত্থাপিত বিষয়টি খুবই সংগত। বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের জন্মবার্ষিকীতে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ফেসবুকে একটি পোস্ট আশা করেছিলেন তিনি। পরে আওয়ামী লীগের ফেসবুক পেজে তাজউদ্দীন আহমদকে নিয়ে একটি পোস্ট দেওয়া হয়। সোহেল তাজের স্ট্যাটাসের উত্তরে একটা ব্যাখ্যাও দেওয়া হয়।
সোহেল তাজের মন্তব্যের পর আওয়ামী লীগ তাদের ফেসবুক পেজে তাজউদ্দীন আহমদকে স্মরণ করেছে, তাতে তাজউদ্দীন আহমদের শুধু নয়, দল হিসেবে আওয়ামী লীগেরও সম্মান বাড়ল। দলের একজন শক্তিমান সদস্য, যিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পার্শ্বচর ছিলেন, তাঁকে ঠিকভাবে স্মরণ করা হলে নতুন প্রজন্ম আমাদের সংগ্রামের ইতিহাসের একজন মূল চরিত্রের সঙ্গেও পরিচিত হতে পারে, এ কথা ভুলে গেলে চলবে কী করে?
সংকটটা এই নয় যে প্রশ্নটা শুধু তাজউদ্দীন আহমদকে নিয়ে উঠে আবার হারিয়ে যাবে।
আমাদের দেশে রাজনীতি হয়ে গেছে ব্যক্তিকেন্দ্রিক। মুখে বলছি গণতন্ত্র আমাদের চালিকাশক্তি, অথচ কাজের সময় গণতান্ত্রিক পথটা বেছে নিচ্ছি না। এই সংকট প্রতিটি রাজনৈতিক দলেই রয়েছে। দলের চেয়ে ব্যক্তি বড় হয়ে গেলে কী ধরনের সর্বনাশ হয়, তা আমরা সোভিয়েত ইউনিয়নের অভিজ্ঞতা থেকে জেনেছি। লেনিনকে সেখানে প্রায় ঈশ্বর বানিয়ে ফেলা হয়েছিল। এমনকি পাঠ্যপুস্তকের যেকোনো বিষয়েই লেনিন কী বলেছেন, তা নিয়ে আলোচনা ছিল। সেই আলোচনা আবার পরীক্ষাতেও আসত। যেকোনো কিছুরই বাহুল্য জনমনে বিতৃষ্ণার জন্ম দেয়। ভেবে দেখতে হবে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকেও কেউ যেন সেভাবে ব্যবহার করতে না পারে। আশার দিক, বহু তাঁবেদার মানুষ পদ্মা সেতুর নাম রাখতে বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে। প্রধানমন্ত্রী সে ভাবনার কোনো মূল্য না দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন, তিনি তেলবাজি পছন্দ করেন না।
দুই.
১৯৬৬ সালে ছয় দফা আন্দোলনের মাধ্যমেই মূলত শেখ মুজিবুর রহমান এ দেশের রাজনীতিতে একমেবাদ্বিতীয়ম হয়ে ওঠেন। তিনি ছিলেন একজন ক্যারিশমাটিক লিডার। ষাটের দশকে বাঘা বাঘা সব আন্তর্জাতিকতাবাদী-সাম্যবাদী অথবা ইসলামি নেতাদের অগ্রাহ্য করে বাংলার জনগণ তাদের মুক্তিদাতা হিসেবে বেছে নিয়েছিল শেখ মুজিবুর রহমানকে। ছয় দফার ব্যাপারে আপসহীন থেকে শেখ মুজিবুর রহমান যখন একের পর এক বক্তৃতা করছিলেন, তখন নিজের ভাবনাগুলোকে স্পষ্ট করে তুলে ধরছিলেন তিনি। এ সময় যাঁরা রাজনীতি, অর্থনীতি, সাংবাদিকতা, সংস্কৃতি পরিমণ্ডলে বাঙালির এই জাগরণ নিয়ে শেখ মুজিবুর রহমানের পাশে ছিলেন, তাঁদের মূল্যায়ন করা না হলে বঙ্গবন্ধুকে ঠিকভাবে তুলে ধরা যাবে না। বঙ্গবন্ধু কী করে পুরো জাতির নয়নের মণি হয়ে উঠলেন, সেটা তো খুঁজতে হবে সেই সময়ের প্রেক্ষাপটে, সেই সময়ের মানুষদের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর মিথস্ক্রিয়ার মধ্যে। নইলে মূল্যায়নটা হবে ভারসাম্যহীন।
বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ পাঠ করলেই বোঝা যায়, তিনি নিজ দলের, অন্য দলের নেতা-কর্মীদের কতটা সম্মান করতেন। বঙ্গবন্ধুর রক্তের মধ্যেই ছিল, অন্যকে সম্মান করলে নিজে সম্মানিত হওয়া যায়। নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করতে হলে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদেরও নেমে পড়তে হবে বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথে। অন্য যেকোনো পথ পরিত্যাজ্য।
তিন.
দলীয় মূল্যায়নের ক্ষেত্রে এ ধরনের সংকট কাটিয়ে ওঠার জন্য কী পদক্ষেপ নিতে পারে কোনো রাজনৈতিক দল? তারা দলের শুভাকাঙ্ক্ষী অথবা সদস্যদের অবদান তুলে ধরতে পারে। ছয় দফা প্রচারের জন্য ইত্তেফাক যে ভূমিকা পালন করেছে, তার তুলনা পাওয়া ভার। সম্পাদকীয় পাতায় তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার লেখা উপসম্পাদকীয় এবং বার্তা সম্পাদক সিরাজুদ্দীন হোসেনের নিউজ ট্রিটমেন্ট মিলেই ছয় দফা আন্দোলন পৌঁছে গেছে জনগণের দ্বারে। সত্তরের নির্বাচনের সময় মানিক মিয়া আর বেঁচে ছিলেন না। তখন আওয়ামী লীগের রাজনীতি প্রচারের ভার বহন করেছেন শেখ মুজিবুর রহমানের বন্ধু সিরাজুদ্দীন হোসেন। সে সময়কার ইত্তেফাকের নিউজ ট্রিটমেন্ট দেখলেই বিষয়টি স্পষ্ট হবে। এই দুজন অকুতোভয় সাংবাদিকের কি মূল্যায়ন হয়েছে আওয়ামী লীগে? তাঁরা দলীয় চাঁদা দেওয়া আওয়ামী লীগার ছিলেন না বটে, কিন্তু হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর দেখানো পথেই তাঁরা চলেছেন। বলা বাহুল্য, মানিক মিয়া, শেখ মুজিবুর রহমান এবং সিরাজুদ্দীন হোসেন কখনোই সোহরাওয়ার্দীর দেখানো পথ থেকে সরে দাঁড়াননি। নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতির পক্ষেই সোচ্চার ছিলেন তাঁরা।
‘সোনার বাংলা শ্মশান কেন’ স্লোগানকে যুক্তিনিষ্ঠভাবে তুলে ধরার জন্য যে অর্থনীতিবিদেরা তাঁদের মেধা খাটিয়েছেন, তাঁদেরই-বা স্মরণ করা হবে না কেন? পাকিস্তানের দুই অংশে যে অর্থনৈতিক বৈষম্য ফুটে উঠেছিল, সে বৈষম্যের কথা দৃঢ়ভাবে বলার জন্য দরকার ছিল তথ্য-উপাত্তসহ তার প্রমাণ। সে কাজটাই তো করেছিলেন নূরুল ইসলাম, রেহমান সোবহান, আনিসুর রহমান প্রমুখ। সে সময় তাঁরা কীভাবে বঙ্গবন্ধুর পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন, সে কথা স্মরণ না করে কি বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করা যাবে?
রাজনীতির মাঠে জেলহত্যার শিকার চার নেতার কথা কি ভোলা উচিত হবে? মুক্তিযুদ্ধের সময় নানা ধরনের বিরোধিতার মুখেও সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, ক্যাপ্টেন মনসুর আলী এবং কামারুজ্জামানের দৃঢ়তাপূর্ণ নেতৃত্বকে স্মরণ করা হলে কারও কোনো ক্ষতি তো হওয়ার কথা নয়।
আর ছাত্রনেতাদের কথা? ছয় দফার কারণে আওয়ামী লীগের নেতারা যখন জেলে বন্দী, তখন ছাত্রনেতারাই তো এগিয়ে নিয়ে গেছেন এই আন্দোলন। মাজহারুল হক বাকী, আবদুর রউফ, খালেদ মোহাম্মদ আলী, তোফায়েল আহমেদ, নূরে আলম সিদ্দিকী, আ স ম আবদুর রব, আবদুল কুদ্দুস মাখন, শাজাহান সিরাজদের অবদানও কম নয়। আওয়ামী লীগের আমেনা বেগম তখন রেখেছিলেন দৃঢ় ভূমিকা। তবে ১৯৬৬ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত সময়ে ছাত্রনেতারা যে অবদান রেখেছেন, মুক্তভাবেই তা স্মরণ করা উচিত। মুক্তিযুদ্ধের পর তাঁদের অনেকেই আওয়ামী লীগ বা ছাত্রলীগ ত্যাগ করলেও সেই ঐতিহাসিক সময়ে তাঁদের ভূমিকার নিরপেক্ষ আলোচনা হওয়াই সংগত। কেন ছাত্রলীগের চারজন নেতাকে চার খলিফা বলা শুরু করল মানুষ, সেটাও তো বিবেচনায় আনা দরকার।
অন্যদিকে সিরাজুল আলম খানের মতো এত বড় সংগঠক, বঙ্গবন্ধুও যাঁকে আমলে নিতেন, তাঁর হঠকারী ভূমিকার কথাও তো সঠিক ইতিহাসের স্বার্থে তুলে আনতে হবে। তাঁকে নিয়েও আলোচনা হতে হবে দলীয় সভায়। আলোচনা হতে হবে শেখ ফজলুল হক মণিকে নিয়েও।
চার.
কীভাবে কাজটা করা সম্ভব?
আওয়ামী লীগ এখন অনেক বড় দল। দলের গবেষণা সেলও নিশ্চয়ই অনেক গুণী মানুষদের নিয়ে গঠিত। তাঁরাই বিভিন্ন সময় ইতিহাসের স্বরূপ সন্ধানে সেমিনারের আয়োজন করতে পারেন। প্রকাশ করতে পারেন বই, যা হয়ে উঠতে পারে ঐতিহাসিক দলিল। তৈরি করাতে পারেন তথ্যচিত্র।
যে কাজগুলো করার কথা বললাম, সেগুলো করার সময় মনে রাখতে হবে, ইতিহাসের সমর্থন ছাড়া কোনো তথ্য যেন সেখানে জায়গা না পায়। আমরা আমাদের অভিজ্ঞতায় দেখেছি, ইতিহাস বিকৃত করেও কেউ কেউ কোনো তথ্য প্রমাণ করার চেষ্টা করেন। পরবর্তীকালে সঠিক তথ্য জানা গেলে ওই একটি বিকৃত তথ্যের কারণেই পুরো প্রয়াসটা ব্যর্থ হয়ে যায়।
যাঁকে নিয়ে সেমিনার করা হবে কিংবা যাঁকে নিয়ে বই লেখা হবে বা তথ্যচিত্র তৈরি করা হবে, তাঁকেই যেন ওই প্রয়াসের মূল ব্যক্তি করা হয়।
এই কাজগুলো দলের শুভাকাঙ্ক্ষীদের যেমন তুলে ধরবে, তেমনি বুঝতে দেবে, বঙ্গবন্ধু তাঁর আরাধ্য পথে এগিয়ে যেতে পেরেছেন ঠিক মানুষদের, ঠিক সময়ে কাছে পেয়েছিলেন বলেই। এ কথা মেনে নিয়ে যখন আমরা ইতিহাসচর্চা করতে যাব, তখন ইতিহাসের অনেক জটিল জটও খুলে যাবে দ্রুত। তখন আর সোহেল তাজের মতো ফেসবুকে এ রকম স্ট্যাটাস দিতে হবে না।
লেখক: উপসম্পাদক, আজকের পত্রিকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

যাঁরা রাজনীতি, অর্থনীতি, সাংবাদিকতা, সংস্কৃতি পরিমণ্ডলে বাঙালির এই জাগরণ নিয়ে শেখ মুজিবুর রহমানের পাশে ছিলেন, তাঁদের মূল্যায়ন করা না হলে বঙ্গবন্ধুকে ঠিকভাবে তুলে ধরা যাবে না...
২৫ জুলাই ২০২২
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

যাঁরা রাজনীতি, অর্থনীতি, সাংবাদিকতা, সংস্কৃতি পরিমণ্ডলে বাঙালির এই জাগরণ নিয়ে শেখ মুজিবুর রহমানের পাশে ছিলেন, তাঁদের মূল্যায়ন করা না হলে বঙ্গবন্ধুকে ঠিকভাবে তুলে ধরা যাবে না...
২৫ জুলাই ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

যাঁরা রাজনীতি, অর্থনীতি, সাংবাদিকতা, সংস্কৃতি পরিমণ্ডলে বাঙালির এই জাগরণ নিয়ে শেখ মুজিবুর রহমানের পাশে ছিলেন, তাঁদের মূল্যায়ন করা না হলে বঙ্গবন্ধুকে ঠিকভাবে তুলে ধরা যাবে না...
২৫ জুলাই ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

যাঁরা রাজনীতি, অর্থনীতি, সাংবাদিকতা, সংস্কৃতি পরিমণ্ডলে বাঙালির এই জাগরণ নিয়ে শেখ মুজিবুর রহমানের পাশে ছিলেন, তাঁদের মূল্যায়ন করা না হলে বঙ্গবন্ধুকে ঠিকভাবে তুলে ধরা যাবে না...
২৫ জুলাই ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫