নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্তের প্রতিবেশী মিয়ানমার বা তার পাশে থাইল্যান্ডের মতো বাংলাদেশেও বড় ধরনের ভূমিকম্প হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এমন ভূমিকম্প হলে রাজধানী ঢাকায় ভয়াবহ বিপর্যয় হবে বলে নতুন করে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বলছেন, রাজধানী ঢাকা ছাড়াও চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও সিলেট অঞ্চল ভূমিকম্পের উচ্চঝুঁকির মুখে রয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে, গত তিন মাসে বাংলাদেশের আশপাশে মৃদু ও মাঝারি মাত্রার ৩০টির বেশি ভূমিকম্প হয়েছে। আর গত ১৫ বছরে ছোট-বড় ভূমিকম্প হয়েছে দুই শর বেশি। এটি আশঙ্কাজনক। চলতি মার্চ মাসেই দেশে কয়েকবার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। এসব ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল মিয়ানমার, ভারত ও নেপাল।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণকেন্দ্রের প্রধান আবহাওয়াবিদ রোবায়েত কবির আজকের পত্রিকাকে বলেন, বাংলাদেশ পৃথিবীর অন্যতম ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা। অতীতে এখানে অনেক ভূমিকম্প হয়েছে। তবে এক শ বছরের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশ ও আশপাশে খুব বড় ভূমিকম্প হয়নি। সাধারণত একটি বড় ভূমিকম্পের এক শ-দেড় শ বছর পর আরেকটি হয়। তাই আশঙ্কা করছি, যেকোনো সময় আমাদের দেশে বড় ভূমিকম্প হতে পারে।’
ভূত্ত্বের অনেক গভীরে রয়েছে সুবিশাল কিছু পাথরের খণ্ড, যা টেকটোনিক প্লেট নামে পরিচিত। এ প্লেটগুলো স্থির নয়; বরং সঞ্চরণশীল। অতি ধীরে নড়ার সময় একপর্যায়ে এগুলোর পরস্পরের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ কারণেই ভূমিকম্প হয়ে থাকে।
ভূতত্ত্ব বিশেষজ্ঞদের তথ্য অনুসারে, বাংলাদেশ ইন্ডিয়া, বার্মা ও এশিয়ান এই তিনটি প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থিত। এসব প্লেটের সংযোগস্থলে অনেক বছর আগে বড় ভূমিকম্প হয়েছিল। তখন থেকে এই অংশে আবার বিপুল পরিমাণ শক্তি জমা হয়েছে। সেই শক্তি যদি একসঙ্গে বের হয়, তাহলে রিখটার স্কেলে ৮ মাত্রার ওপরে ভূমিকম্প হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ও ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ সৈয়দ হুমায়ুন আখতার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বাংলাদেশে বড় ভূমিকম্প হলে এটা হবে ব্যাপক জীবনহানিকর। কারণ, ভূমিকম্পের উৎসস্থল হবে ঢাকার খুব কাছে। এ শহরের দালানকোঠা অধিকাংশ অপরিকল্পিতভাবে নির্মাণ করা হয়েছে। ঢাকার নিচে ৫ মাত্রার ভূমিকম্প হলেও তার ক্ষয়ক্ষতি হবে সাংঘাতিক। আর কাছাকাছি ৮ মাত্রার ভূমিকম্প হলে ঢাকার অবস্থা কী হবে, তা কল্পনারও বাইরে।’
সৈয়দ হুমায়ুন আখতার বলেন, ঢাকা শহরের ১ শতাংশ ভবনও যদি ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাহলে দুই লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হবে। আরও ৮-১০ লাখ মানুষ মানবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়বে। তখন এত বড় উদ্ধারকাজের জন্য যথেষ্ট দক্ষ লোকবলও পাওয়া যাবে না। কোন এলাকায় ক্ষয়ক্ষতি বেশি হয়েছে, তা নিরূপণ করাও কঠিন হবে।
বড় ভূমিকম্পের ক্ষেত্রে শহরজুড়ে থাকা গ্যাসলাইন থেকে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড হতে পারে বলেও সতর্ক করে দিয়ে আসছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, ঢাকার অনেক বহুতল ভবনই সরকারি ভবন নির্মাণ বিধিমালা যথাযথভাবে না মেনে নির্মিত। এসব ভবন শক্তিশালী ভূমিকম্পের ধাক্কা সামলাতে সক্ষম নয়। এ ছাড়া সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রায় সব বহুতল ফ্ল্যাটবাড়ির নিচে গ্যারেজ তৈরি করার প্রবণতা নিয়ে প্রকৌশলী ও ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ও বাংলাদেশ আর্থকোয়েক সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা সেক্রেটারি ড. মেহেদী আহমেদ আনসারী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গ্যারেজগুলো ভবনের নিচে করা হয়, যা ঝুঁকিপূর্ণ। ৯৯ শতাংশ ভবনেই যেভাবে গ্যারেজ করা হয়, তাতে এর কাঠামো দুর্বল হয়ে যায়। আজকাল কিছু ভবনের ছাদে সুইমিংপুলও তৈরি করা হচ্ছে। এটিও ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। ভূমিকম্প সহনশীল করেও ছাদে সুইমিংপুল নির্মাণ করা সম্ভব। কিন্তু বাংলাদেশের ভবনগুলোতে কতটা নিয়ম মেনে তা করা হচ্ছে, কে জানে?’
বিশেষজ্ঞদের তাগিদ
ভূতত্ত্ববিদ হুমায়ুন আখতার বলেন, স্বল্প মেয়াদে পরিকল্পনা করলে খুব কম টাকায় ভূমিকম্পের সময় ও তার পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলার প্রস্তুতি নেওয়া সম্ভব। তিনি বলেন, ‘ভূমিকম্পের সময় এবং তা ঘটার সময় করণীয় কী তা মানুষের মধ্যে ব্যাপকভাবে প্রচার করতে হবে। এর জন্য দরকার সরকারের সঠিক পরিকল্পনা ও সদিচ্ছা। তবে সরকারের দায়িত্বশীলদের নজর সাধারণত থাকে কেবল উদ্ধারকাজে। কারণ সেখানে কোটি কোটি টাকা আছে, কমিশন আছে।’
নগর-পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, বাংলাদেশ বড় ভূমিকম্পের উচ্চঝুঁকিতে রয়েছে। এমন ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় রাষ্ট্রীয় প্রস্তুতি খুবই দুর্বল পর্যায়ে রয়েছে। ভূমিকম্প সহনশীল অবকাঠামো তৈরিতে রাজউকসহ দায়িত্বশীল সংস্থাগুলোর কাগজ-কলমে কার্যক্রম থাকলেও, বাস্তবে সক্ষমতা নেই।
সরকারের প্রস্তুতির বিষয়ে জানতে চাইলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের পরিচালক নিতাই চন্দ্র দে সরকার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ভূমিকম্পের বিষয়ে জাতীয় পর্যায়ে একটি কমিটি রয়েছে। দেশের নগর এলাকার ৪৮ হাজার স্বেচ্ছাসেবককে প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিসের পরামর্শ
মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডে প্রাণঘাতী দুটি শক্তিশালী ভূমিকম্পের পরিপ্রেক্ষিতে দেশের কর্তৃপক্ষ ও নাগরিকদের ভূমিকম্প বিষয়ে প্রস্তুতির জন্য ৯টি পরামর্শ দিয়েছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর। এগুলোর মধ্যে রয়েছে জাতীয় বিল্ডিং কোড ২০২০ মেনে ভূমিকম্পপ্রতিরোধী ভবন নির্মাণ, ঝুঁকিপূর্ণ ও পুরোনো ভবনের সংস্কার, অগ্নিনিরাপত্তা ও ইউটিলিটি লাইন সুরক্ষায় ব্যবস্থা নেওয়া, নিয়মিত ভূমিকম্পবিষয়ক মহড়া ও সচেতনতা কার্যক্রম চালানো, জরুরি ফোন নম্বর সংরক্ষণ ও দৃশ্যমান স্থানে টাঙানো, স্বেচ্ছাসেবীর প্রশিক্ষণ গ্রহণ ইত্যাদি। বাড়িতে পারিবারিক পর্যায়ে প্রস্তুতি হিসেবে প্রয়োজনীয় কিছু জরুরি সরঞ্জাম যেমন টর্চ, রেডিও, শুকনো খাবার, পানি, জরুরি ওষুধ, ফার্স্ট এইড বক্স, বাঁশি ইত্যাদি হাতের কাছে তৈরি রাখা। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য বা সহযোগিতার জন্য ফায়ার সার্ভিসের হটলাইন নম্বরে (১০২) যোগাযোগের আহ্বান জানানো হয়েছে।
আঘাত থেকে রক্ষা পেতে শক্ত হেলমেট এবং ধ্বংসস্তূপ ভেঙে বের হতে বড় হাতুড়ি ও রড কাটার উপযোগী করাত রাখারও পরামর্শ দিয়ে থাকেন দুর্যোগ মোকাবিলায় অভিজ্ঞজনেরা।

দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্তের প্রতিবেশী মিয়ানমার বা তার পাশে থাইল্যান্ডের মতো বাংলাদেশেও বড় ধরনের ভূমিকম্প হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এমন ভূমিকম্প হলে রাজধানী ঢাকায় ভয়াবহ বিপর্যয় হবে বলে নতুন করে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বলছেন, রাজধানী ঢাকা ছাড়াও চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও সিলেট অঞ্চল ভূমিকম্পের উচ্চঝুঁকির মুখে রয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে, গত তিন মাসে বাংলাদেশের আশপাশে মৃদু ও মাঝারি মাত্রার ৩০টির বেশি ভূমিকম্প হয়েছে। আর গত ১৫ বছরে ছোট-বড় ভূমিকম্প হয়েছে দুই শর বেশি। এটি আশঙ্কাজনক। চলতি মার্চ মাসেই দেশে কয়েকবার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। এসব ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল মিয়ানমার, ভারত ও নেপাল।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণকেন্দ্রের প্রধান আবহাওয়াবিদ রোবায়েত কবির আজকের পত্রিকাকে বলেন, বাংলাদেশ পৃথিবীর অন্যতম ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা। অতীতে এখানে অনেক ভূমিকম্প হয়েছে। তবে এক শ বছরের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশ ও আশপাশে খুব বড় ভূমিকম্প হয়নি। সাধারণত একটি বড় ভূমিকম্পের এক শ-দেড় শ বছর পর আরেকটি হয়। তাই আশঙ্কা করছি, যেকোনো সময় আমাদের দেশে বড় ভূমিকম্প হতে পারে।’
ভূত্ত্বের অনেক গভীরে রয়েছে সুবিশাল কিছু পাথরের খণ্ড, যা টেকটোনিক প্লেট নামে পরিচিত। এ প্লেটগুলো স্থির নয়; বরং সঞ্চরণশীল। অতি ধীরে নড়ার সময় একপর্যায়ে এগুলোর পরস্পরের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ কারণেই ভূমিকম্প হয়ে থাকে।
ভূতত্ত্ব বিশেষজ্ঞদের তথ্য অনুসারে, বাংলাদেশ ইন্ডিয়া, বার্মা ও এশিয়ান এই তিনটি প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থিত। এসব প্লেটের সংযোগস্থলে অনেক বছর আগে বড় ভূমিকম্প হয়েছিল। তখন থেকে এই অংশে আবার বিপুল পরিমাণ শক্তি জমা হয়েছে। সেই শক্তি যদি একসঙ্গে বের হয়, তাহলে রিখটার স্কেলে ৮ মাত্রার ওপরে ভূমিকম্প হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ও ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ সৈয়দ হুমায়ুন আখতার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বাংলাদেশে বড় ভূমিকম্প হলে এটা হবে ব্যাপক জীবনহানিকর। কারণ, ভূমিকম্পের উৎসস্থল হবে ঢাকার খুব কাছে। এ শহরের দালানকোঠা অধিকাংশ অপরিকল্পিতভাবে নির্মাণ করা হয়েছে। ঢাকার নিচে ৫ মাত্রার ভূমিকম্প হলেও তার ক্ষয়ক্ষতি হবে সাংঘাতিক। আর কাছাকাছি ৮ মাত্রার ভূমিকম্প হলে ঢাকার অবস্থা কী হবে, তা কল্পনারও বাইরে।’
সৈয়দ হুমায়ুন আখতার বলেন, ঢাকা শহরের ১ শতাংশ ভবনও যদি ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাহলে দুই লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হবে। আরও ৮-১০ লাখ মানুষ মানবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়বে। তখন এত বড় উদ্ধারকাজের জন্য যথেষ্ট দক্ষ লোকবলও পাওয়া যাবে না। কোন এলাকায় ক্ষয়ক্ষতি বেশি হয়েছে, তা নিরূপণ করাও কঠিন হবে।
বড় ভূমিকম্পের ক্ষেত্রে শহরজুড়ে থাকা গ্যাসলাইন থেকে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড হতে পারে বলেও সতর্ক করে দিয়ে আসছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, ঢাকার অনেক বহুতল ভবনই সরকারি ভবন নির্মাণ বিধিমালা যথাযথভাবে না মেনে নির্মিত। এসব ভবন শক্তিশালী ভূমিকম্পের ধাক্কা সামলাতে সক্ষম নয়। এ ছাড়া সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রায় সব বহুতল ফ্ল্যাটবাড়ির নিচে গ্যারেজ তৈরি করার প্রবণতা নিয়ে প্রকৌশলী ও ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ও বাংলাদেশ আর্থকোয়েক সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা সেক্রেটারি ড. মেহেদী আহমেদ আনসারী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গ্যারেজগুলো ভবনের নিচে করা হয়, যা ঝুঁকিপূর্ণ। ৯৯ শতাংশ ভবনেই যেভাবে গ্যারেজ করা হয়, তাতে এর কাঠামো দুর্বল হয়ে যায়। আজকাল কিছু ভবনের ছাদে সুইমিংপুলও তৈরি করা হচ্ছে। এটিও ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। ভূমিকম্প সহনশীল করেও ছাদে সুইমিংপুল নির্মাণ করা সম্ভব। কিন্তু বাংলাদেশের ভবনগুলোতে কতটা নিয়ম মেনে তা করা হচ্ছে, কে জানে?’
বিশেষজ্ঞদের তাগিদ
ভূতত্ত্ববিদ হুমায়ুন আখতার বলেন, স্বল্প মেয়াদে পরিকল্পনা করলে খুব কম টাকায় ভূমিকম্পের সময় ও তার পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলার প্রস্তুতি নেওয়া সম্ভব। তিনি বলেন, ‘ভূমিকম্পের সময় এবং তা ঘটার সময় করণীয় কী তা মানুষের মধ্যে ব্যাপকভাবে প্রচার করতে হবে। এর জন্য দরকার সরকারের সঠিক পরিকল্পনা ও সদিচ্ছা। তবে সরকারের দায়িত্বশীলদের নজর সাধারণত থাকে কেবল উদ্ধারকাজে। কারণ সেখানে কোটি কোটি টাকা আছে, কমিশন আছে।’
নগর-পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, বাংলাদেশ বড় ভূমিকম্পের উচ্চঝুঁকিতে রয়েছে। এমন ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় রাষ্ট্রীয় প্রস্তুতি খুবই দুর্বল পর্যায়ে রয়েছে। ভূমিকম্প সহনশীল অবকাঠামো তৈরিতে রাজউকসহ দায়িত্বশীল সংস্থাগুলোর কাগজ-কলমে কার্যক্রম থাকলেও, বাস্তবে সক্ষমতা নেই।
সরকারের প্রস্তুতির বিষয়ে জানতে চাইলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের পরিচালক নিতাই চন্দ্র দে সরকার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ভূমিকম্পের বিষয়ে জাতীয় পর্যায়ে একটি কমিটি রয়েছে। দেশের নগর এলাকার ৪৮ হাজার স্বেচ্ছাসেবককে প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিসের পরামর্শ
মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডে প্রাণঘাতী দুটি শক্তিশালী ভূমিকম্পের পরিপ্রেক্ষিতে দেশের কর্তৃপক্ষ ও নাগরিকদের ভূমিকম্প বিষয়ে প্রস্তুতির জন্য ৯টি পরামর্শ দিয়েছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর। এগুলোর মধ্যে রয়েছে জাতীয় বিল্ডিং কোড ২০২০ মেনে ভূমিকম্পপ্রতিরোধী ভবন নির্মাণ, ঝুঁকিপূর্ণ ও পুরোনো ভবনের সংস্কার, অগ্নিনিরাপত্তা ও ইউটিলিটি লাইন সুরক্ষায় ব্যবস্থা নেওয়া, নিয়মিত ভূমিকম্পবিষয়ক মহড়া ও সচেতনতা কার্যক্রম চালানো, জরুরি ফোন নম্বর সংরক্ষণ ও দৃশ্যমান স্থানে টাঙানো, স্বেচ্ছাসেবীর প্রশিক্ষণ গ্রহণ ইত্যাদি। বাড়িতে পারিবারিক পর্যায়ে প্রস্তুতি হিসেবে প্রয়োজনীয় কিছু জরুরি সরঞ্জাম যেমন টর্চ, রেডিও, শুকনো খাবার, পানি, জরুরি ওষুধ, ফার্স্ট এইড বক্স, বাঁশি ইত্যাদি হাতের কাছে তৈরি রাখা। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য বা সহযোগিতার জন্য ফায়ার সার্ভিসের হটলাইন নম্বরে (১০২) যোগাযোগের আহ্বান জানানো হয়েছে।
আঘাত থেকে রক্ষা পেতে শক্ত হেলমেট এবং ধ্বংসস্তূপ ভেঙে বের হতে বড় হাতুড়ি ও রড কাটার উপযোগী করাত রাখারও পরামর্শ দিয়ে থাকেন দুর্যোগ মোকাবিলায় অভিজ্ঞজনেরা।
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্তের প্রতিবেশী মিয়ানমার বা তার পাশে থাইল্যান্ডের মতো বাংলাদেশেও বড় ধরনের ভূমিকম্প হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এমন ভূমিকম্প হলে রাজধানী ঢাকায় ভয়াবহ বিপর্যয় হবে বলে নতুন করে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বলছেন, রাজধানী ঢাকা ছাড়াও চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও সিলেট অঞ্চল ভূমিকম্পের উচ্চঝুঁকির মুখে রয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে, গত তিন মাসে বাংলাদেশের আশপাশে মৃদু ও মাঝারি মাত্রার ৩০টির বেশি ভূমিকম্প হয়েছে। আর গত ১৫ বছরে ছোট-বড় ভূমিকম্প হয়েছে দুই শর বেশি। এটি আশঙ্কাজনক। চলতি মার্চ মাসেই দেশে কয়েকবার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। এসব ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল মিয়ানমার, ভারত ও নেপাল।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণকেন্দ্রের প্রধান আবহাওয়াবিদ রোবায়েত কবির আজকের পত্রিকাকে বলেন, বাংলাদেশ পৃথিবীর অন্যতম ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা। অতীতে এখানে অনেক ভূমিকম্প হয়েছে। তবে এক শ বছরের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশ ও আশপাশে খুব বড় ভূমিকম্প হয়নি। সাধারণত একটি বড় ভূমিকম্পের এক শ-দেড় শ বছর পর আরেকটি হয়। তাই আশঙ্কা করছি, যেকোনো সময় আমাদের দেশে বড় ভূমিকম্প হতে পারে।’
ভূত্ত্বের অনেক গভীরে রয়েছে সুবিশাল কিছু পাথরের খণ্ড, যা টেকটোনিক প্লেট নামে পরিচিত। এ প্লেটগুলো স্থির নয়; বরং সঞ্চরণশীল। অতি ধীরে নড়ার সময় একপর্যায়ে এগুলোর পরস্পরের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ কারণেই ভূমিকম্প হয়ে থাকে।
ভূতত্ত্ব বিশেষজ্ঞদের তথ্য অনুসারে, বাংলাদেশ ইন্ডিয়া, বার্মা ও এশিয়ান এই তিনটি প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থিত। এসব প্লেটের সংযোগস্থলে অনেক বছর আগে বড় ভূমিকম্প হয়েছিল। তখন থেকে এই অংশে আবার বিপুল পরিমাণ শক্তি জমা হয়েছে। সেই শক্তি যদি একসঙ্গে বের হয়, তাহলে রিখটার স্কেলে ৮ মাত্রার ওপরে ভূমিকম্প হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ও ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ সৈয়দ হুমায়ুন আখতার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বাংলাদেশে বড় ভূমিকম্প হলে এটা হবে ব্যাপক জীবনহানিকর। কারণ, ভূমিকম্পের উৎসস্থল হবে ঢাকার খুব কাছে। এ শহরের দালানকোঠা অধিকাংশ অপরিকল্পিতভাবে নির্মাণ করা হয়েছে। ঢাকার নিচে ৫ মাত্রার ভূমিকম্প হলেও তার ক্ষয়ক্ষতি হবে সাংঘাতিক। আর কাছাকাছি ৮ মাত্রার ভূমিকম্প হলে ঢাকার অবস্থা কী হবে, তা কল্পনারও বাইরে।’
সৈয়দ হুমায়ুন আখতার বলেন, ঢাকা শহরের ১ শতাংশ ভবনও যদি ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাহলে দুই লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হবে। আরও ৮-১০ লাখ মানুষ মানবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়বে। তখন এত বড় উদ্ধারকাজের জন্য যথেষ্ট দক্ষ লোকবলও পাওয়া যাবে না। কোন এলাকায় ক্ষয়ক্ষতি বেশি হয়েছে, তা নিরূপণ করাও কঠিন হবে।
বড় ভূমিকম্পের ক্ষেত্রে শহরজুড়ে থাকা গ্যাসলাইন থেকে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড হতে পারে বলেও সতর্ক করে দিয়ে আসছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, ঢাকার অনেক বহুতল ভবনই সরকারি ভবন নির্মাণ বিধিমালা যথাযথভাবে না মেনে নির্মিত। এসব ভবন শক্তিশালী ভূমিকম্পের ধাক্কা সামলাতে সক্ষম নয়। এ ছাড়া সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রায় সব বহুতল ফ্ল্যাটবাড়ির নিচে গ্যারেজ তৈরি করার প্রবণতা নিয়ে প্রকৌশলী ও ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ও বাংলাদেশ আর্থকোয়েক সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা সেক্রেটারি ড. মেহেদী আহমেদ আনসারী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গ্যারেজগুলো ভবনের নিচে করা হয়, যা ঝুঁকিপূর্ণ। ৯৯ শতাংশ ভবনেই যেভাবে গ্যারেজ করা হয়, তাতে এর কাঠামো দুর্বল হয়ে যায়। আজকাল কিছু ভবনের ছাদে সুইমিংপুলও তৈরি করা হচ্ছে। এটিও ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। ভূমিকম্প সহনশীল করেও ছাদে সুইমিংপুল নির্মাণ করা সম্ভব। কিন্তু বাংলাদেশের ভবনগুলোতে কতটা নিয়ম মেনে তা করা হচ্ছে, কে জানে?’
বিশেষজ্ঞদের তাগিদ
ভূতত্ত্ববিদ হুমায়ুন আখতার বলেন, স্বল্প মেয়াদে পরিকল্পনা করলে খুব কম টাকায় ভূমিকম্পের সময় ও তার পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলার প্রস্তুতি নেওয়া সম্ভব। তিনি বলেন, ‘ভূমিকম্পের সময় এবং তা ঘটার সময় করণীয় কী তা মানুষের মধ্যে ব্যাপকভাবে প্রচার করতে হবে। এর জন্য দরকার সরকারের সঠিক পরিকল্পনা ও সদিচ্ছা। তবে সরকারের দায়িত্বশীলদের নজর সাধারণত থাকে কেবল উদ্ধারকাজে। কারণ সেখানে কোটি কোটি টাকা আছে, কমিশন আছে।’
নগর-পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, বাংলাদেশ বড় ভূমিকম্পের উচ্চঝুঁকিতে রয়েছে। এমন ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় রাষ্ট্রীয় প্রস্তুতি খুবই দুর্বল পর্যায়ে রয়েছে। ভূমিকম্প সহনশীল অবকাঠামো তৈরিতে রাজউকসহ দায়িত্বশীল সংস্থাগুলোর কাগজ-কলমে কার্যক্রম থাকলেও, বাস্তবে সক্ষমতা নেই।
সরকারের প্রস্তুতির বিষয়ে জানতে চাইলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের পরিচালক নিতাই চন্দ্র দে সরকার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ভূমিকম্পের বিষয়ে জাতীয় পর্যায়ে একটি কমিটি রয়েছে। দেশের নগর এলাকার ৪৮ হাজার স্বেচ্ছাসেবককে প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিসের পরামর্শ
মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডে প্রাণঘাতী দুটি শক্তিশালী ভূমিকম্পের পরিপ্রেক্ষিতে দেশের কর্তৃপক্ষ ও নাগরিকদের ভূমিকম্প বিষয়ে প্রস্তুতির জন্য ৯টি পরামর্শ দিয়েছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর। এগুলোর মধ্যে রয়েছে জাতীয় বিল্ডিং কোড ২০২০ মেনে ভূমিকম্পপ্রতিরোধী ভবন নির্মাণ, ঝুঁকিপূর্ণ ও পুরোনো ভবনের সংস্কার, অগ্নিনিরাপত্তা ও ইউটিলিটি লাইন সুরক্ষায় ব্যবস্থা নেওয়া, নিয়মিত ভূমিকম্পবিষয়ক মহড়া ও সচেতনতা কার্যক্রম চালানো, জরুরি ফোন নম্বর সংরক্ষণ ও দৃশ্যমান স্থানে টাঙানো, স্বেচ্ছাসেবীর প্রশিক্ষণ গ্রহণ ইত্যাদি। বাড়িতে পারিবারিক পর্যায়ে প্রস্তুতি হিসেবে প্রয়োজনীয় কিছু জরুরি সরঞ্জাম যেমন টর্চ, রেডিও, শুকনো খাবার, পানি, জরুরি ওষুধ, ফার্স্ট এইড বক্স, বাঁশি ইত্যাদি হাতের কাছে তৈরি রাখা। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য বা সহযোগিতার জন্য ফায়ার সার্ভিসের হটলাইন নম্বরে (১০২) যোগাযোগের আহ্বান জানানো হয়েছে।
আঘাত থেকে রক্ষা পেতে শক্ত হেলমেট এবং ধ্বংসস্তূপ ভেঙে বের হতে বড় হাতুড়ি ও রড কাটার উপযোগী করাত রাখারও পরামর্শ দিয়ে থাকেন দুর্যোগ মোকাবিলায় অভিজ্ঞজনেরা।

দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্তের প্রতিবেশী মিয়ানমার বা তার পাশে থাইল্যান্ডের মতো বাংলাদেশেও বড় ধরনের ভূমিকম্প হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এমন ভূমিকম্প হলে রাজধানী ঢাকায় ভয়াবহ বিপর্যয় হবে বলে নতুন করে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বলছেন, রাজধানী ঢাকা ছাড়াও চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও সিলেট অঞ্চল ভূমিকম্পের উচ্চঝুঁকির মুখে রয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে, গত তিন মাসে বাংলাদেশের আশপাশে মৃদু ও মাঝারি মাত্রার ৩০টির বেশি ভূমিকম্প হয়েছে। আর গত ১৫ বছরে ছোট-বড় ভূমিকম্প হয়েছে দুই শর বেশি। এটি আশঙ্কাজনক। চলতি মার্চ মাসেই দেশে কয়েকবার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। এসব ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল মিয়ানমার, ভারত ও নেপাল।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণকেন্দ্রের প্রধান আবহাওয়াবিদ রোবায়েত কবির আজকের পত্রিকাকে বলেন, বাংলাদেশ পৃথিবীর অন্যতম ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা। অতীতে এখানে অনেক ভূমিকম্প হয়েছে। তবে এক শ বছরের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশ ও আশপাশে খুব বড় ভূমিকম্প হয়নি। সাধারণত একটি বড় ভূমিকম্পের এক শ-দেড় শ বছর পর আরেকটি হয়। তাই আশঙ্কা করছি, যেকোনো সময় আমাদের দেশে বড় ভূমিকম্প হতে পারে।’
ভূত্ত্বের অনেক গভীরে রয়েছে সুবিশাল কিছু পাথরের খণ্ড, যা টেকটোনিক প্লেট নামে পরিচিত। এ প্লেটগুলো স্থির নয়; বরং সঞ্চরণশীল। অতি ধীরে নড়ার সময় একপর্যায়ে এগুলোর পরস্পরের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ কারণেই ভূমিকম্প হয়ে থাকে।
ভূতত্ত্ব বিশেষজ্ঞদের তথ্য অনুসারে, বাংলাদেশ ইন্ডিয়া, বার্মা ও এশিয়ান এই তিনটি প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থিত। এসব প্লেটের সংযোগস্থলে অনেক বছর আগে বড় ভূমিকম্প হয়েছিল। তখন থেকে এই অংশে আবার বিপুল পরিমাণ শক্তি জমা হয়েছে। সেই শক্তি যদি একসঙ্গে বের হয়, তাহলে রিখটার স্কেলে ৮ মাত্রার ওপরে ভূমিকম্প হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ও ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ সৈয়দ হুমায়ুন আখতার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বাংলাদেশে বড় ভূমিকম্প হলে এটা হবে ব্যাপক জীবনহানিকর। কারণ, ভূমিকম্পের উৎসস্থল হবে ঢাকার খুব কাছে। এ শহরের দালানকোঠা অধিকাংশ অপরিকল্পিতভাবে নির্মাণ করা হয়েছে। ঢাকার নিচে ৫ মাত্রার ভূমিকম্প হলেও তার ক্ষয়ক্ষতি হবে সাংঘাতিক। আর কাছাকাছি ৮ মাত্রার ভূমিকম্প হলে ঢাকার অবস্থা কী হবে, তা কল্পনারও বাইরে।’
সৈয়দ হুমায়ুন আখতার বলেন, ঢাকা শহরের ১ শতাংশ ভবনও যদি ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাহলে দুই লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হবে। আরও ৮-১০ লাখ মানুষ মানবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়বে। তখন এত বড় উদ্ধারকাজের জন্য যথেষ্ট দক্ষ লোকবলও পাওয়া যাবে না। কোন এলাকায় ক্ষয়ক্ষতি বেশি হয়েছে, তা নিরূপণ করাও কঠিন হবে।
বড় ভূমিকম্পের ক্ষেত্রে শহরজুড়ে থাকা গ্যাসলাইন থেকে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড হতে পারে বলেও সতর্ক করে দিয়ে আসছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, ঢাকার অনেক বহুতল ভবনই সরকারি ভবন নির্মাণ বিধিমালা যথাযথভাবে না মেনে নির্মিত। এসব ভবন শক্তিশালী ভূমিকম্পের ধাক্কা সামলাতে সক্ষম নয়। এ ছাড়া সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রায় সব বহুতল ফ্ল্যাটবাড়ির নিচে গ্যারেজ তৈরি করার প্রবণতা নিয়ে প্রকৌশলী ও ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ও বাংলাদেশ আর্থকোয়েক সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা সেক্রেটারি ড. মেহেদী আহমেদ আনসারী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গ্যারেজগুলো ভবনের নিচে করা হয়, যা ঝুঁকিপূর্ণ। ৯৯ শতাংশ ভবনেই যেভাবে গ্যারেজ করা হয়, তাতে এর কাঠামো দুর্বল হয়ে যায়। আজকাল কিছু ভবনের ছাদে সুইমিংপুলও তৈরি করা হচ্ছে। এটিও ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। ভূমিকম্প সহনশীল করেও ছাদে সুইমিংপুল নির্মাণ করা সম্ভব। কিন্তু বাংলাদেশের ভবনগুলোতে কতটা নিয়ম মেনে তা করা হচ্ছে, কে জানে?’
বিশেষজ্ঞদের তাগিদ
ভূতত্ত্ববিদ হুমায়ুন আখতার বলেন, স্বল্প মেয়াদে পরিকল্পনা করলে খুব কম টাকায় ভূমিকম্পের সময় ও তার পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলার প্রস্তুতি নেওয়া সম্ভব। তিনি বলেন, ‘ভূমিকম্পের সময় এবং তা ঘটার সময় করণীয় কী তা মানুষের মধ্যে ব্যাপকভাবে প্রচার করতে হবে। এর জন্য দরকার সরকারের সঠিক পরিকল্পনা ও সদিচ্ছা। তবে সরকারের দায়িত্বশীলদের নজর সাধারণত থাকে কেবল উদ্ধারকাজে। কারণ সেখানে কোটি কোটি টাকা আছে, কমিশন আছে।’
নগর-পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, বাংলাদেশ বড় ভূমিকম্পের উচ্চঝুঁকিতে রয়েছে। এমন ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় রাষ্ট্রীয় প্রস্তুতি খুবই দুর্বল পর্যায়ে রয়েছে। ভূমিকম্প সহনশীল অবকাঠামো তৈরিতে রাজউকসহ দায়িত্বশীল সংস্থাগুলোর কাগজ-কলমে কার্যক্রম থাকলেও, বাস্তবে সক্ষমতা নেই।
সরকারের প্রস্তুতির বিষয়ে জানতে চাইলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের পরিচালক নিতাই চন্দ্র দে সরকার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ভূমিকম্পের বিষয়ে জাতীয় পর্যায়ে একটি কমিটি রয়েছে। দেশের নগর এলাকার ৪৮ হাজার স্বেচ্ছাসেবককে প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিসের পরামর্শ
মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডে প্রাণঘাতী দুটি শক্তিশালী ভূমিকম্পের পরিপ্রেক্ষিতে দেশের কর্তৃপক্ষ ও নাগরিকদের ভূমিকম্প বিষয়ে প্রস্তুতির জন্য ৯টি পরামর্শ দিয়েছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর। এগুলোর মধ্যে রয়েছে জাতীয় বিল্ডিং কোড ২০২০ মেনে ভূমিকম্পপ্রতিরোধী ভবন নির্মাণ, ঝুঁকিপূর্ণ ও পুরোনো ভবনের সংস্কার, অগ্নিনিরাপত্তা ও ইউটিলিটি লাইন সুরক্ষায় ব্যবস্থা নেওয়া, নিয়মিত ভূমিকম্পবিষয়ক মহড়া ও সচেতনতা কার্যক্রম চালানো, জরুরি ফোন নম্বর সংরক্ষণ ও দৃশ্যমান স্থানে টাঙানো, স্বেচ্ছাসেবীর প্রশিক্ষণ গ্রহণ ইত্যাদি। বাড়িতে পারিবারিক পর্যায়ে প্রস্তুতি হিসেবে প্রয়োজনীয় কিছু জরুরি সরঞ্জাম যেমন টর্চ, রেডিও, শুকনো খাবার, পানি, জরুরি ওষুধ, ফার্স্ট এইড বক্স, বাঁশি ইত্যাদি হাতের কাছে তৈরি রাখা। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য বা সহযোগিতার জন্য ফায়ার সার্ভিসের হটলাইন নম্বরে (১০২) যোগাযোগের আহ্বান জানানো হয়েছে।
আঘাত থেকে রক্ষা পেতে শক্ত হেলমেট এবং ধ্বংসস্তূপ ভেঙে বের হতে বড় হাতুড়ি ও রড কাটার উপযোগী করাত রাখারও পরামর্শ দিয়ে থাকেন দুর্যোগ মোকাবিলায় অভিজ্ঞজনেরা।

রৌদ্রোজ্জ্বল ঢাকায় আজ শুক্রবার ছুটির দিনে সকালে হালকা কুয়াশার দেখা মিলেছে। তবে হাড়কাঁপানো শীত না পড়লেও বইছে মিষ্টি হিমেল বাতাস। আজ সারা দিন রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চলে আকাশ পরিষ্কার থাকবে, আবহাওয়াও থাকবে শুষ্ক।
১ ঘণ্টা আগে
আজ বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ৬টা। সূর্যের আলো যখন পুরোপুরি ফুটে ওঠেনি, ঠিক তখনই ভূমিকম্পে আবারও কেঁপে উঠল রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চল। রিখটার স্কেলে এই ভূকম্পনের মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ১। উৎপত্তিস্থল ঢাকা থেকে ৩৮ কিলোমিটার দূরে নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলার পাটুয়ারপাড় এলাকা।
২১ ঘণ্টা আগে
শুষ্ক মৌসুমের শুরু থেকেই ভারত উপমহাদেশের তিন প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশের প্রধান প্রধান শহরগুলো বিশ্বের দূষিত শহর তালিকায় শুরুর দশের মধ্যে অবস্থান করছে। এর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই এ তালিকায় শীর্ষে ছিল ভারতের দিল্লি।
২১ ঘণ্টা আগে
রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় ছিল ১৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা গতকাল ছিল ১৭ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দিনের বেলা আজকের এই তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
১ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

রৌদ্রোজ্জ্বল ঢাকায় আজ শুক্রবার সকালে হালকা কুয়াশার দেখা মিলেছে। তবে হাড়কাঁপানো শীত না পড়লেও বইছে মিষ্টি হিমেল বাতাস। আজ সারা দিন রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চলে আকাশ পরিষ্কার থাকবে, আবহাওয়াও থাকবে শুষ্ক।
আজ সকাল ৭টায় ঢাকা ও আশপাশ এলাকার আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সকাল ৬টায় রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৮৯ শতাংশ। এদিন দুপুর পর্যন্ত ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার ওপর দিয়ে উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে।
আজ ঢাকায় সূর্যাস্তের সময় সন্ধ্যা ৫টা ১১ মিনিটে, আগামীকাল সূর্যাস্ত ৬টা ২৮ মিনিটে।

রৌদ্রোজ্জ্বল ঢাকায় আজ শুক্রবার সকালে হালকা কুয়াশার দেখা মিলেছে। তবে হাড়কাঁপানো শীত না পড়লেও বইছে মিষ্টি হিমেল বাতাস। আজ সারা দিন রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চলে আকাশ পরিষ্কার থাকবে, আবহাওয়াও থাকবে শুষ্ক।
আজ সকাল ৭টায় ঢাকা ও আশপাশ এলাকার আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সকাল ৬টায় রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৮৯ শতাংশ। এদিন দুপুর পর্যন্ত ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার ওপর দিয়ে উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে।
আজ ঢাকায় সূর্যাস্তের সময় সন্ধ্যা ৫টা ১১ মিনিটে, আগামীকাল সূর্যাস্ত ৬টা ২৮ মিনিটে।

দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্তের প্রতিবেশী মিয়ানমার বা তার পাশে থাইল্যান্ডের মতো বাংলাদেশেও বড় ধরনের ভূমিকম্প হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এমন ভূমিকম্প হলে রাজধানী ঢাকায় ভয়াবহ বিপর্যয় হবে বলে নতুন করে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
৩০ মার্চ ২০২৫
আজ বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ৬টা। সূর্যের আলো যখন পুরোপুরি ফুটে ওঠেনি, ঠিক তখনই ভূমিকম্পে আবারও কেঁপে উঠল রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চল। রিখটার স্কেলে এই ভূকম্পনের মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ১। উৎপত্তিস্থল ঢাকা থেকে ৩৮ কিলোমিটার দূরে নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলার পাটুয়ারপাড় এলাকা।
২১ ঘণ্টা আগে
শুষ্ক মৌসুমের শুরু থেকেই ভারত উপমহাদেশের তিন প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশের প্রধান প্রধান শহরগুলো বিশ্বের দূষিত শহর তালিকায় শুরুর দশের মধ্যে অবস্থান করছে। এর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই এ তালিকায় শীর্ষে ছিল ভারতের দিল্লি।
২১ ঘণ্টা আগে
রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় ছিল ১৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা গতকাল ছিল ১৭ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দিনের বেলা আজকের এই তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
১ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

আজ বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ৬টা। সূর্যের আলো যখন পুরোপুরি ফুটে ওঠেনি, ঠিক তখনই ভূমিকম্পে আবারও কেঁপে উঠল রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চল। রিখটার স্কেলে এই ভূকম্পনের মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ১। উৎপত্তিস্থল ঢাকা থেকে ৩৮ কিলোমিটার দূরে নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলার পাটুয়ারপাড় এলাকা।
আর এই ভূকম্পনেই আতঙ্কিত হয়ে ওঠে ঢাকার নগরজীবন থেকে শুরু করে সারা দেশের মানুষ। আতঙ্কিত হয়ে ওঠাই স্বাভাবিক। কারণ, এক-দুবার নয়, মাত্র ১৪ দিনে বাংলাদেশে একাধিকবার ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে। এর মধ্যে চারটি ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল নরসিংদী, গাজীপুরের মতো ঢাকার আশপাশের অঞ্চল ছিল বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আর সবচেয়ে বড় ভূমিকম্পটি হয় গত ২১ নভেম্বর। ওই দিন ৫ দশমিক ৭ মাত্রার এক ভূমিকম্পে ঢাকাসহ সারা দেশ কেঁপে উঠেছিল।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর বাংলাদেশেই উৎপত্তিস্থল ছিল পাঁচটি ভূমিকম্পের। এর প্রথমটি ছিল ২১ নভেম্বরের ঠিক দুই মাস আগে ২১ সেপ্টেম্বর। এদিন ৪ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। এর উৎপত্তি হয় সিলেটের ছাতকে।
এরপরের ভূমিকম্প ছিল ২১ নভেম্বর, মাত্রা ৫ দশমিক ৭। পরদিন ২২ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬টা ৬ মিনিটে ৪ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল নরসিংদী জেলার কালীগঞ্জ। এর ৫ দিন পর, ২৭ নভেম্বর বিকেল সোয়া ৪টায় ৪ মাত্রার ভূমিকম্প হয়, উৎপত্তিস্থল ঢাকার পাশের জেলা গাজীপুরের টঙ্গীর ঢালাদিয়া এলাকা।
কতবার ভূকম্পন হলো
তবে বারবার ভূমিকম্প কেবল বাংলাদেশেই নয়, সীমান্তঘেঁষা মিয়ানমার, ভারত, নেপাল, এমনকি চীনের তিব্বত সীমান্তেও ঘন ঘন ভূমিকম্প হচ্ছে। চলতি বছরের ১১ মাসে এই অঞ্চলে ২৮৫ বার ভূমিকম্প হয়েছে। এর কোনোটিই ৪ মাত্রার নিচে ছিল না।
গত সোমবার ১ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে মিয়ানমারের ফালামে মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প হয়। ফলে চট্টগ্রাম অঞ্চল থেকেও এটি অনুভূত হয়েছে। ঢাকার আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্র থেকে উৎপত্তিস্থলের দূরত্ব ছিল ৪৩১ কিলোমিটার। ওই ভূমিকম্প বাংলাদেশ সময় রাত ১২টা ৫৫ মিনিট ১৬ সেকেন্ডে অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৯।
বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে বিবিসি বাংলা জানিয়েছে, টেকটোনিক প্লেটে বাংলাদেশের যে অবস্থান, তাতে দুটো প্লেটের সংযোগস্থল রয়েছে, পশ্চিমে ইন্ডিয়ান প্লেট আর পূর্ব দিকে বার্মা প্লেট। আর বাংলাদেশের উত্তর দিকে আছে ইউরেশিয়ান প্লেট।

ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের সাবেক অধ্যাপক সৈয়দ হুমায়ুন আখতার বিবিসি বাংলাকে বলেন, ভারতীয় প্লেটটি ধীরে ধীরে পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে বার্মা প্লেটের নিচে, অর্থাৎ চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রামের নিচে তলিয়ে যাচ্ছে। আর এই তলিয়ে যাওয়ার কারণে একটা সাবডাকশন জোনের তৈরি হয়েছে।
হুমায়ুন আখতার আরও বলেন, ‘এই জোনের ব্যাপ্তি সিলেট থেকে টেকনাফ পর্যন্ত বিস্তৃত। পুরো চট্টগ্রাম অঞ্চল এর মধ্যে পড়েছে। এখানে বিভিন্ন সেগমেন্ট আছে। আমাদের এই সেগমেন্টে ৮.২ থেকে ৯ মাত্রার শক্তি জমা হয়ে আছে। এটা বের হতেই হবে।’ তাঁর মতে, ‘এখানে প্লেট লকড হয়ে ছিল। এর অতি সামান্য ক্ষুদ্রাংশ খুলল বলেই শুক্রবারের ভূমিকম্প হয়েছে। এটিই ধারণা দেয় যে সামনে বড় ভূমিকম্প আমাদের দ্বারপ্রান্তে আছে।’
আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ
তবে ভূমিকম্প নিয়ে উৎকণ্ঠিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন ভূতত্ত্ববিদ ও ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরা। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) মো. মমিনুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, এখন যেসব ভূকম্পন, সেগুলো হলো ২১ নভেম্বর ভূমিকম্পের ‘আফটার শক’।
২০১১ সালের ১১ মার্চ জাপানের হনশু দ্বীপের টোহুকু অঞ্চলে ৯ মাত্রার ভূমিকম্প এবং এর জেরে সৃষ্ট সুনামির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ওই ঘটনার পর কেবল ৬ মাত্রারই ৪৫০ বার আফটার শক হয়েছিল জাপানে। আরও অসংখ্যবার ছোট ছোট আফটার শক হয়েছিল তখন।
ভূকম্পনবিদ্যার গবেষক মমিনুল ইসলাম আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে ২১ নভেম্বরের পর একাধিকবার আফটার শক হচ্ছে। এই আফটার শক বহুদিন ধরে হতে পারে, কমপক্ষে আরও তিন মাস হতে পারে। ২ মাত্রার নিচের ভূকম্পনগুলো আমাদের (বাংলাদেশে) সিস্টেমে ধরা পড়ে না।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ৬টা। সূর্যের আলো যখন পুরোপুরি ফুটে ওঠেনি, ঠিক তখনই ভূমিকম্পে আবারও কেঁপে উঠল রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চল। রিখটার স্কেলে এই ভূকম্পনের মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ১। উৎপত্তিস্থল ঢাকা থেকে ৩৮ কিলোমিটার দূরে নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলার পাটুয়ারপাড় এলাকা।
আর এই ভূকম্পনেই আতঙ্কিত হয়ে ওঠে ঢাকার নগরজীবন থেকে শুরু করে সারা দেশের মানুষ। আতঙ্কিত হয়ে ওঠাই স্বাভাবিক। কারণ, এক-দুবার নয়, মাত্র ১৪ দিনে বাংলাদেশে একাধিকবার ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে। এর মধ্যে চারটি ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল নরসিংদী, গাজীপুরের মতো ঢাকার আশপাশের অঞ্চল ছিল বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আর সবচেয়ে বড় ভূমিকম্পটি হয় গত ২১ নভেম্বর। ওই দিন ৫ দশমিক ৭ মাত্রার এক ভূমিকম্পে ঢাকাসহ সারা দেশ কেঁপে উঠেছিল।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর বাংলাদেশেই উৎপত্তিস্থল ছিল পাঁচটি ভূমিকম্পের। এর প্রথমটি ছিল ২১ নভেম্বরের ঠিক দুই মাস আগে ২১ সেপ্টেম্বর। এদিন ৪ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। এর উৎপত্তি হয় সিলেটের ছাতকে।
এরপরের ভূমিকম্প ছিল ২১ নভেম্বর, মাত্রা ৫ দশমিক ৭। পরদিন ২২ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬টা ৬ মিনিটে ৪ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল নরসিংদী জেলার কালীগঞ্জ। এর ৫ দিন পর, ২৭ নভেম্বর বিকেল সোয়া ৪টায় ৪ মাত্রার ভূমিকম্প হয়, উৎপত্তিস্থল ঢাকার পাশের জেলা গাজীপুরের টঙ্গীর ঢালাদিয়া এলাকা।
কতবার ভূকম্পন হলো
তবে বারবার ভূমিকম্প কেবল বাংলাদেশেই নয়, সীমান্তঘেঁষা মিয়ানমার, ভারত, নেপাল, এমনকি চীনের তিব্বত সীমান্তেও ঘন ঘন ভূমিকম্প হচ্ছে। চলতি বছরের ১১ মাসে এই অঞ্চলে ২৮৫ বার ভূমিকম্প হয়েছে। এর কোনোটিই ৪ মাত্রার নিচে ছিল না।
গত সোমবার ১ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে মিয়ানমারের ফালামে মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প হয়। ফলে চট্টগ্রাম অঞ্চল থেকেও এটি অনুভূত হয়েছে। ঢাকার আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্র থেকে উৎপত্তিস্থলের দূরত্ব ছিল ৪৩১ কিলোমিটার। ওই ভূমিকম্প বাংলাদেশ সময় রাত ১২টা ৫৫ মিনিট ১৬ সেকেন্ডে অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৯।
বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে বিবিসি বাংলা জানিয়েছে, টেকটোনিক প্লেটে বাংলাদেশের যে অবস্থান, তাতে দুটো প্লেটের সংযোগস্থল রয়েছে, পশ্চিমে ইন্ডিয়ান প্লেট আর পূর্ব দিকে বার্মা প্লেট। আর বাংলাদেশের উত্তর দিকে আছে ইউরেশিয়ান প্লেট।

ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের সাবেক অধ্যাপক সৈয়দ হুমায়ুন আখতার বিবিসি বাংলাকে বলেন, ভারতীয় প্লেটটি ধীরে ধীরে পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে বার্মা প্লেটের নিচে, অর্থাৎ চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রামের নিচে তলিয়ে যাচ্ছে। আর এই তলিয়ে যাওয়ার কারণে একটা সাবডাকশন জোনের তৈরি হয়েছে।
হুমায়ুন আখতার আরও বলেন, ‘এই জোনের ব্যাপ্তি সিলেট থেকে টেকনাফ পর্যন্ত বিস্তৃত। পুরো চট্টগ্রাম অঞ্চল এর মধ্যে পড়েছে। এখানে বিভিন্ন সেগমেন্ট আছে। আমাদের এই সেগমেন্টে ৮.২ থেকে ৯ মাত্রার শক্তি জমা হয়ে আছে। এটা বের হতেই হবে।’ তাঁর মতে, ‘এখানে প্লেট লকড হয়ে ছিল। এর অতি সামান্য ক্ষুদ্রাংশ খুলল বলেই শুক্রবারের ভূমিকম্প হয়েছে। এটিই ধারণা দেয় যে সামনে বড় ভূমিকম্প আমাদের দ্বারপ্রান্তে আছে।’
আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ
তবে ভূমিকম্প নিয়ে উৎকণ্ঠিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন ভূতত্ত্ববিদ ও ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরা। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) মো. মমিনুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, এখন যেসব ভূকম্পন, সেগুলো হলো ২১ নভেম্বর ভূমিকম্পের ‘আফটার শক’।
২০১১ সালের ১১ মার্চ জাপানের হনশু দ্বীপের টোহুকু অঞ্চলে ৯ মাত্রার ভূমিকম্প এবং এর জেরে সৃষ্ট সুনামির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ওই ঘটনার পর কেবল ৬ মাত্রারই ৪৫০ বার আফটার শক হয়েছিল জাপানে। আরও অসংখ্যবার ছোট ছোট আফটার শক হয়েছিল তখন।
ভূকম্পনবিদ্যার গবেষক মমিনুল ইসলাম আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে ২১ নভেম্বরের পর একাধিকবার আফটার শক হচ্ছে। এই আফটার শক বহুদিন ধরে হতে পারে, কমপক্ষে আরও তিন মাস হতে পারে। ২ মাত্রার নিচের ভূকম্পনগুলো আমাদের (বাংলাদেশে) সিস্টেমে ধরা পড়ে না।

দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্তের প্রতিবেশী মিয়ানমার বা তার পাশে থাইল্যান্ডের মতো বাংলাদেশেও বড় ধরনের ভূমিকম্প হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এমন ভূমিকম্প হলে রাজধানী ঢাকায় ভয়াবহ বিপর্যয় হবে বলে নতুন করে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
৩০ মার্চ ২০২৫
রৌদ্রোজ্জ্বল ঢাকায় আজ শুক্রবার ছুটির দিনে সকালে হালকা কুয়াশার দেখা মিলেছে। তবে হাড়কাঁপানো শীত না পড়লেও বইছে মিষ্টি হিমেল বাতাস। আজ সারা দিন রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চলে আকাশ পরিষ্কার থাকবে, আবহাওয়াও থাকবে শুষ্ক।
১ ঘণ্টা আগে
শুষ্ক মৌসুমের শুরু থেকেই ভারত উপমহাদেশের তিন প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশের প্রধান প্রধান শহরগুলো বিশ্বের দূষিত শহর তালিকায় শুরুর দশের মধ্যে অবস্থান করছে। এর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই এ তালিকায় শীর্ষে ছিল ভারতের দিল্লি।
২১ ঘণ্টা আগে
রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় ছিল ১৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা গতকাল ছিল ১৭ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দিনের বেলা আজকের এই তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
১ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

শুষ্ক মৌসুমের শুরু থেকেই ভারত উপমহাদেশের তিন প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশের প্রধান প্রধান শহরগুলো বিশ্বের দূষিত শহর তালিকায় শুরুর দশের মধ্যে অবস্থান করছে। এর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই এ তালিকায় শীর্ষে ছিল ভারতের দিল্লি। আজ বৃহস্পতিবার দিল্লিকে পেছনে ফেলে এ শীর্ষ দূষিত শহর হলো ঢাকা।
বায়ুমান নিয়ে কাজ করা সুইস প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের দূষিত শহর তালিকার ১২৭টি দেশের মধ্যে আজ ঢাকার অবস্থান ১ম। আজ সকাল ১০টার রেকর্ড অনুযায়ী ঢাকার বায়ুমান আজ ২৯৬, যা খুব অস্বাস্থ্যকর বাতাসের নির্দেশক।
ঢাকার যেসব এলাকায় বায়ু দূষণ সবচেয়ে বেশি— পল্লবী দক্ষিণ, কল্যাণপুর, বেজ এজওয়াটার আউটডোর, ইস্টার্ন হাউজিং ও গ্রেস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল।
ঢাকার নিম্নমানের বাতাসের প্রধান কারণ হলো পিএম ২.৫ বা সূক্ষ্ম কণা। এই অতিক্ষুদ্র কণাগুলো, যাদের ব্যাস ২.৫ মাইক্রোমিটারের চেয়েও কম, ফুসফুসের গভীরে প্রবেশ করে রক্তপ্রবাহে মিশে যেতে পারে। এর ফলে হাঁপানি (অ্যাজমা) বৃদ্ধি, ব্রঙ্কাইটিস এবং হৃদ্রোগের মতো শ্বাসযন্ত্র ও হৃদ্যন্ত্রের গুরুতর অসুস্থতার ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়।
বাতাসের এই বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে করণীয়
অত্যন্ত সংবেদনশীল গোষ্ঠী: শিশু, বয়স্ক, হৃদ্রোগ বা শ্বাসকষ্টের রোগীরা সব ধরনের ঘরের বাইরে না যাওয়াই ভালো।
সাধারণ সুস্থ ব্যক্তি: তাদের উচিত বাইরে কাটানো সময় সীমিত করা এবং শারীরিক পরিশ্রমের কাজ এড়িয়ে চলা।
যদি বাইরে বের হতে হয়, তবে অবশ্যই দূষণ রোধে কার্যকর মাস্ক ব্যবহার করুন।
ঘরের ভেতরের বাতাস পরিষ্কার রাখতে এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করুন এবং দূষিত বাতাস প্রবেশ ঠেকাতে জানালা ও দরজা বন্ধ রাখুন।
দূষিত বায়ুর শহর তালিকায় শীর্ষ পাঁচে থাকা অন্য শহরগুলো হলো— ভারতের দিল্লি ও কলকাতা, পাকিস্তানের লাহোর ও কাতারের দোহা। শহরগুলোর বায়ুমান যথাক্রমে ২৭৮, ২৩৩, ১৯৯ ও ১৮৯।
বাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউ এয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস। বেশি মাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদ্রোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।
বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১-১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১-১৫০ এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।
বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতি বছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।
দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।
পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।

শুষ্ক মৌসুমের শুরু থেকেই ভারত উপমহাদেশের তিন প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশের প্রধান প্রধান শহরগুলো বিশ্বের দূষিত শহর তালিকায় শুরুর দশের মধ্যে অবস্থান করছে। এর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই এ তালিকায় শীর্ষে ছিল ভারতের দিল্লি। আজ বৃহস্পতিবার দিল্লিকে পেছনে ফেলে এ শীর্ষ দূষিত শহর হলো ঢাকা।
বায়ুমান নিয়ে কাজ করা সুইস প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের দূষিত শহর তালিকার ১২৭টি দেশের মধ্যে আজ ঢাকার অবস্থান ১ম। আজ সকাল ১০টার রেকর্ড অনুযায়ী ঢাকার বায়ুমান আজ ২৯৬, যা খুব অস্বাস্থ্যকর বাতাসের নির্দেশক।
ঢাকার যেসব এলাকায় বায়ু দূষণ সবচেয়ে বেশি— পল্লবী দক্ষিণ, কল্যাণপুর, বেজ এজওয়াটার আউটডোর, ইস্টার্ন হাউজিং ও গ্রেস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল।
ঢাকার নিম্নমানের বাতাসের প্রধান কারণ হলো পিএম ২.৫ বা সূক্ষ্ম কণা। এই অতিক্ষুদ্র কণাগুলো, যাদের ব্যাস ২.৫ মাইক্রোমিটারের চেয়েও কম, ফুসফুসের গভীরে প্রবেশ করে রক্তপ্রবাহে মিশে যেতে পারে। এর ফলে হাঁপানি (অ্যাজমা) বৃদ্ধি, ব্রঙ্কাইটিস এবং হৃদ্রোগের মতো শ্বাসযন্ত্র ও হৃদ্যন্ত্রের গুরুতর অসুস্থতার ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়।
বাতাসের এই বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে করণীয়
অত্যন্ত সংবেদনশীল গোষ্ঠী: শিশু, বয়স্ক, হৃদ্রোগ বা শ্বাসকষ্টের রোগীরা সব ধরনের ঘরের বাইরে না যাওয়াই ভালো।
সাধারণ সুস্থ ব্যক্তি: তাদের উচিত বাইরে কাটানো সময় সীমিত করা এবং শারীরিক পরিশ্রমের কাজ এড়িয়ে চলা।
যদি বাইরে বের হতে হয়, তবে অবশ্যই দূষণ রোধে কার্যকর মাস্ক ব্যবহার করুন।
ঘরের ভেতরের বাতাস পরিষ্কার রাখতে এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করুন এবং দূষিত বাতাস প্রবেশ ঠেকাতে জানালা ও দরজা বন্ধ রাখুন।
দূষিত বায়ুর শহর তালিকায় শীর্ষ পাঁচে থাকা অন্য শহরগুলো হলো— ভারতের দিল্লি ও কলকাতা, পাকিস্তানের লাহোর ও কাতারের দোহা। শহরগুলোর বায়ুমান যথাক্রমে ২৭৮, ২৩৩, ১৯৯ ও ১৮৯।
বাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউ এয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস। বেশি মাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদ্রোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।
বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১-১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১-১৫০ এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।
বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতি বছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।
দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।
পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।

দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্তের প্রতিবেশী মিয়ানমার বা তার পাশে থাইল্যান্ডের মতো বাংলাদেশেও বড় ধরনের ভূমিকম্প হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এমন ভূমিকম্প হলে রাজধানী ঢাকায় ভয়াবহ বিপর্যয় হবে বলে নতুন করে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
৩০ মার্চ ২০২৫
রৌদ্রোজ্জ্বল ঢাকায় আজ শুক্রবার ছুটির দিনে সকালে হালকা কুয়াশার দেখা মিলেছে। তবে হাড়কাঁপানো শীত না পড়লেও বইছে মিষ্টি হিমেল বাতাস। আজ সারা দিন রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চলে আকাশ পরিষ্কার থাকবে, আবহাওয়াও থাকবে শুষ্ক।
১ ঘণ্টা আগে
আজ বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ৬টা। সূর্যের আলো যখন পুরোপুরি ফুটে ওঠেনি, ঠিক তখনই ভূমিকম্পে আবারও কেঁপে উঠল রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চল। রিখটার স্কেলে এই ভূকম্পনের মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ১। উৎপত্তিস্থল ঢাকা থেকে ৩৮ কিলোমিটার দূরে নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলার পাটুয়ারপাড় এলাকা।
২১ ঘণ্টা আগে
রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় ছিল ১৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা গতকাল ছিল ১৭ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দিনের বেলা আজকের এই তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
১ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় ছিল ১৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা গতকাল ছিল ১৭ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দিনের বেলা এই তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
আজ সকাল ৭টায় পরবর্তী ছয় ঘণ্টার আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার পূর্বাভাসে এসব কথা বলা হয়েছে।
পূর্বাভাসের তথ্য অনুযায়ী, আজ সকাল ৬টায় ঢাকায় তাপমাত্রা ছিল ১৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৮১ শতাংশ।
এ ছাড়া আজ দুপুর পর্যন্ত ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার আকাশ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা থাকতে পারে। আবহাওয়া প্রায় শুষ্ক থাকবে। দিনের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়েছে, আজ দুপুর পর্যন্ত ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার ওপর দিয়ে উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে।
আজ ঢাকায় সূর্যাস্তের সময় সন্ধ্যা ৫টা ১১ মিনিটে, আগামীকাল সূর্যাস্ত ৬টা ২৭ মিনিটে।

রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় ছিল ১৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা গতকাল ছিল ১৭ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দিনের বেলা এই তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
আজ সকাল ৭টায় পরবর্তী ছয় ঘণ্টার আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার পূর্বাভাসে এসব কথা বলা হয়েছে।
পূর্বাভাসের তথ্য অনুযায়ী, আজ সকাল ৬টায় ঢাকায় তাপমাত্রা ছিল ১৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৮১ শতাংশ।
এ ছাড়া আজ দুপুর পর্যন্ত ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার আকাশ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা থাকতে পারে। আবহাওয়া প্রায় শুষ্ক থাকবে। দিনের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়েছে, আজ দুপুর পর্যন্ত ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার ওপর দিয়ে উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে।
আজ ঢাকায় সূর্যাস্তের সময় সন্ধ্যা ৫টা ১১ মিনিটে, আগামীকাল সূর্যাস্ত ৬টা ২৭ মিনিটে।

দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্তের প্রতিবেশী মিয়ানমার বা তার পাশে থাইল্যান্ডের মতো বাংলাদেশেও বড় ধরনের ভূমিকম্প হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এমন ভূমিকম্প হলে রাজধানী ঢাকায় ভয়াবহ বিপর্যয় হবে বলে নতুন করে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
৩০ মার্চ ২০২৫
রৌদ্রোজ্জ্বল ঢাকায় আজ শুক্রবার ছুটির দিনে সকালে হালকা কুয়াশার দেখা মিলেছে। তবে হাড়কাঁপানো শীত না পড়লেও বইছে মিষ্টি হিমেল বাতাস। আজ সারা দিন রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চলে আকাশ পরিষ্কার থাকবে, আবহাওয়াও থাকবে শুষ্ক।
১ ঘণ্টা আগে
আজ বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ৬টা। সূর্যের আলো যখন পুরোপুরি ফুটে ওঠেনি, ঠিক তখনই ভূমিকম্পে আবারও কেঁপে উঠল রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চল। রিখটার স্কেলে এই ভূকম্পনের মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ১। উৎপত্তিস্থল ঢাকা থেকে ৩৮ কিলোমিটার দূরে নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলার পাটুয়ারপাড় এলাকা।
২১ ঘণ্টা আগে
শুষ্ক মৌসুমের শুরু থেকেই ভারত উপমহাদেশের তিন প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশের প্রধান প্রধান শহরগুলো বিশ্বের দূষিত শহর তালিকায় শুরুর দশের মধ্যে অবস্থান করছে। এর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই এ তালিকায় শীর্ষে ছিল ভারতের দিল্লি।
২১ ঘণ্টা আগে