Ajker Patrika

কংক্রিটের নগরগুলো ‘আগ্নেয়গিরির লাভা’ হয়ে উঠছে যে কারণে

আপডেট : ০১ আগস্ট ২০২৩, ১৭: ২৬
কংক্রিটের নগরগুলো ‘আগ্নেয়গিরির লাভা’ হয়ে উঠছে যে কারণে

যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা অঙ্গরাজ্যের ফিনিক্সের বাসিন্দারা বেশ ভোগান্তির মধ্যেই দিনাতিপাত করছেন। ঘরের বাইরের যা তাপমাত্রা তার চেয়ে সড়ক, ঘরের দেয়াল, ছাদ কয়েকগুণ বেশি উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। কংক্রিটের নগরে ঘরের মেঝে যেন হয়ে উঠেছে আগ্নেয়গিরির লাভা। ফলে হাঁটাচলা তো বটেই, কোথাও বসা কিংবা হাত দেওয়াও বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে।

সম্প্রতি শহরটির চিকিৎসকেরা এমন বেশ কয়েকজন রোগীর চিকিৎসা করেছেন, যারা কিনা তাপমাত্রা বুঝতে না পারার কারণে দেয়াল ও খোলা আকাশের নিচে থাকা স্টিল ও কংক্রিটের সামগ্রী স্পর্শ করে শরীরের কিছু অংশ পুড়িয়ে ফেলেছে। 

বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা অঙ্গরাজ্যের ফিনিক্সে অবস্থিত অ্যারিজোনা বার্ন সেন্টারের পরিচালক ড. কেভিন ফস্টার। গবেষণা করতে গিয়ে তিনি বিচিত্র অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হন। তিনি দেখতে পান, পরিবেশে যে তাপমাত্রা বিরাজ করে, একই সময়ে তার চেয়ে অনেক বেশি তাপমাত্রা বিরাজ করে কংক্রিট নির্মিত কোনো কাঠামোতে। 

বিশ্বজুড়ে তাপমাত্রা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে সিমেন্ট ও কংক্রিট নির্মিত স্থাপনা। একই সঙ্গে তা শহুরে মানুষের স্বাস্থ্যগত ঝুঁকিও বাড়াচ্ছে মারাত্মকভাবে। সিমেন্ট ও কংক্রিটের স্থাপনার কারণেই একটি শহরের তাপমাত্রা এত বেশি বেড়ে যাচ্ছে যে, বিজ্ঞানীরা এই অবস্থাকে ‘উত্তপ্ত নগরদ্বীপ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। সম্প্রতি বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক নিবন্ধে বিষয়টি আলোচনা করা হয়েছে। 

কোনো স্থানের তাপমাত্রা পরিমাপ করার সময় মূলত সেখানকার ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১ মিটার ওপর পর্যন্ত বায়ুর অবস্থা বিবেচনা করা হয়। সে হিসেবে যখন কোনো স্থানের বায়ুর তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, একই সময়ে সেই স্থানের কংক্রিট বা অ্যাসফল্ট পৃষ্ঠের তাপমাত্রা হতে পারে ৬৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত, যা কিনা সহজেই কোনো মানুষের ত্বক ঝলসে দিতে পারে। কিন্তু নতুন গবেষণা থেকে পাওয়া তথ্য বলছে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে এই তাপমাত্রার ব্যবধানটা আরও বেশি হতে পারে। 
 
এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা অঙ্গরাজ্যের ফিনিক্সে অবস্থিত অ্যারিজোনা বার্ন সেন্টারের পরিচালক ড. কেভিন ফস্টারের গবেষণা বলছে, একটি উত্তপ্ত দিনে অ্যাসফল্ট ও কংক্রিটের তাপমাত্রা বেড়ে ৮২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। 

সাধারণত তাপপ্রবাহের সময় বিভিন্ন পৃষ্ঠ সূর্যের আলো থেকে আসা তাপের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ শোষণ করে নেয়। পরে সেই তাপ আশপাশের তাপমাত্রা বাড়ানোর ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। বিশেষ করে বিভিন্ন পৃষ্ঠ শোষণ করা তাপ পরে বাতাসে অবমুক্ত করে সামগ্রিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি করে।

ঘাস বা মাটির মতো কিছু ভেদযোগ্য ও আর্দ্র পৃষ্ঠতল কম তাপ শোষণ করে। বিপরীতে অন্যান্য নির্মাণসামগ্রী যেমন অ্যাসফল্ট বা কংক্রিট সূর্যের শক্তির ৯৫ শতাংশ পর্যন্ত শোষণ করতে সক্ষম। বিষয়টির এখানেই শেষ নয় বরং এই তাপ পরে আবার বায়ুমণ্ডলে ফিরে আসে। 

দ্রুত নগরায়ণ আরও দ্রুত সেই স্থানের তাপমাত্রার প্রকৃতি বদলে দিচ্ছে। যেমন, সাধারণ উন্মুক্ত ভূপৃষ্ঠকে বড় বড় সব দালান ও অ্যাসফল্টের রাস্তা দিয়ে ঢেকে ফেলা হচ্ছে। এর ফলে খোলা বা গ্রামীণ কোনো এলাকার তুলনায় একটি শহর অনেক বেশি উত্তপ্ত হয়ে উঠছে; যেন শহরটি বিচ্ছিন্ন একটি দ্বীপ। বিষয়টি মাথায় নিয়েই বিজ্ঞানীরা এ ধরনের পরিস্থিতির নাম দিয়েছেন ‘উত্তপ্ত নগরদ্বীপ’। এই ‘উত্তপ্ত নগরদ্বীপের’ তাপমাত্রা নগরের ঠিক বাইরের কোনো একটি গ্রামীণ এলাকার তুলনায় অনেক বেশি। 

ইউএস এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশন এজেন্সির মতে, ১০ লাখ বা তার বেশি মানুষের বসবাস রয়েছে এমন একটি শহরের বার্ষিক গড় তাপমাত্রা তার আশপাশের (গ্রামীণ বা উপশহর) এলাকার তুলনায় ১ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসেরও বেশি হতে পারে। এমনকি কোনো কোনো ক্ষেত্রে তাপমাত্রার এই পার্থক্য গ্রামীণ এলাকার তুলনায় ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত হতে পারে। 

শহরগুলোর ‘উত্তপ্ত নগরদ্বীপ’ হয়ে ওঠার বেশ কিছু কারণ রয়েছে। সবুজ এলাকা এবং গাছপালা বাষ্পীভবন (প্রস্বেদন) প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভূপৃষ্ঠের তাপমাত্রা কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই প্রক্রিয়ায় গাছপালা বাতাসে জলীয়বাষ্প ছেড়ে দিয়ে পরিবেশের তাপমাত্রা কমাতে সহায়তা করে।

বিপরীতে শহরের যে গঠন, তার কারণেই প্রচুর পরিমাণ তাপ আটকে দেয়। এ ছাড়া শহরের কংক্রিটের পৃষ্ঠ স্বাভাবিক ভূপৃষ্ঠের তুলনায় অনেক বেশি তাপ শোষণ করে এবং সঞ্চয় করে, যার ফলে আশপাশের তাপমাত্রা আরও বাড়ে। শহরের গাঠনিক বৈশিষ্ট্য—সূর্য থেকে আগত তাপের প্রতিফলন, তাপ নির্গমন এবং তাপ ধারণক্ষমতার কারণে তা ‘উত্তপ্ত নগরদ্বীপ’ হিসেবে পরিণত হওয়ার জন্য আদর্শ বলে বিবেচিত হয়।

ভূপৃষ্ঠের তাপীয় অবস্থা নজরদারি করা স্যাটেলাইটগুলোর চিত্র থেকে দেখা গেছে যে, এলাকার গাঠনিক বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে শহর ও গ্রামীণ এলাকার তাপমাত্রার পার্থক্য স্পষ্ট। যেমন শহরের পার্কগুলোর যে তাপমাত্রা তা শহরের অন্যান্য স্থানের চেয়ে বেশ কম দেখায়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে তা গ্রামীণ এলাকার তাপমাত্রার কাছাকাছিও পৌঁছে যায়। আর তাই প্রচণ্ড গরমের হাত থেকে বাঁচতে বিজ্ঞানীরা বলছেন, শহরে ‘পকেট পার্ক’ বা ছোট আকারের পার্ক ভালো কাজে দিতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২০৯৮ পর্যন্ত কবে কোন দেশ বিশ্বকাপ নেবে—ভবিষ্যদ্বাণী করল গ্রোক এআই

খালেদা জিয়ার রিপোর্ট ভালো, চেষ্টা করছেন কথা বলার: চিকিৎসক

সেই এনায়েত করিমের মামলায় সাংবাদিক শওকত মাহমুদকে গ্রেপ্তার দেখাল ডিবি

সেনাবাহিনীতে সৈনিক পদে যোগদানের বয়সসীমা বাড়ল

১০ ঘণ্টা পর বিটিআরসির অবরোধ তুলে নিলেন মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীরা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঢাকায় তাপমাত্রা কমবে কিনা জানাল আবহাওয়া অধিদপ্তর

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আজ সোমবার ভোরবেলা ঢাকায় পড়েছিল হালকা কুয়াশা। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সোমবার ভোরবেলা ঢাকায় পড়েছিল হালকা কুয়াশা। ছবি: আজকের পত্রিকা

পৌষ মাস আসতে আর মাত্র দিন সাতেক বাকি। কিন্তু রাজধানী ঢাকায় এখনো পুরোপুরি শীতের আমেজ পড়েনি। আজ সোমবার ভোরবেলা ঢাকায় সামান্য কুয়াশার সঙ্গে ছিল হালকা শীত।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আজ সকাল ৭টায় পরবর্তী ৬ ঘণ্টার পূর্বাভাসের তথ্য অনুযায়ী, ঢাকায় আজ সকাল ৬টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৭৪ শতাংশ।

পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়েছে, আজ দুপুর পর্যন্ত ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার ওপর দিয়ে উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৫ থেকে ১০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

আজ ঢাকায় সূর্যাস্তের সময় সন্ধ্যা ৫টা ১১ মিনিটে, আগামীকাল সূর্যাস্ত ৬টা ২৯ মিনিটে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২০৯৮ পর্যন্ত কবে কোন দেশ বিশ্বকাপ নেবে—ভবিষ্যদ্বাণী করল গ্রোক এআই

খালেদা জিয়ার রিপোর্ট ভালো, চেষ্টা করছেন কথা বলার: চিকিৎসক

সেই এনায়েত করিমের মামলায় সাংবাদিক শওকত মাহমুদকে গ্রেপ্তার দেখাল ডিবি

সেনাবাহিনীতে সৈনিক পদে যোগদানের বয়সসীমা বাড়ল

১০ ঘণ্টা পর বিটিআরসির অবরোধ তুলে নিলেন মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীরা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঢাকার বাতাস খুব অস্বাস্থ্যকর, দূষণে শীর্ষে বাগদাদ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ৪৬
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

বায়ুমান নিয়ে কাজ করা সুইস প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের দূষিত শহরের তালিকার ১২৭টি দেশের মধ্যে আজ শনিবার ঢাকার অবস্থান তৃতীয়। আর প্রথম স্থানে আছে ইরাকের শহর বাগদাদ।

আজ সকাল ৯টা ৩০ মিনিটের রেকর্ড অনুযায়ী ঢাকার বায়ুমান ২৫২, যা খুব অস্বাস্থ্যকর বাতাসের নির্দেশক।

আর শীর্ষে থাকা বাগদাদের বায়ুমান ২৬৮, যা খুব অস্বাস্থ্যকর বাতাসের নির্দেশক।

শীর্ষ পাঁচে থাকা অন্য শহরগুলো হলো—ভারতের দিল্লি, পাকিস্তানের লাহোর ও ভারতের কলকাতা। শহরগুলোর বায়ুমান যথাক্রমে ২৫৯, ২০৮ ও ২০৬।

বাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস। বেশি মাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদ্‌রোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।

বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১-১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১-১৫০ এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।

বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতিবছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।

এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।

দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।

পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২০৯৮ পর্যন্ত কবে কোন দেশ বিশ্বকাপ নেবে—ভবিষ্যদ্বাণী করল গ্রোক এআই

খালেদা জিয়ার রিপোর্ট ভালো, চেষ্টা করছেন কথা বলার: চিকিৎসক

সেই এনায়েত করিমের মামলায় সাংবাদিক শওকত মাহমুদকে গ্রেপ্তার দেখাল ডিবি

সেনাবাহিনীতে সৈনিক পদে যোগদানের বয়সসীমা বাড়ল

১০ ঘণ্টা পর বিটিআরসির অবরোধ তুলে নিলেন মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীরা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঢাকায় আজ ছুটির দিনে আবহাওয়া কেমন থাকবে জানা গেল পূর্বাভাসে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ৪৮
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

রৌদ্রোজ্জ্বল ঢাকায় আজ শুক্রবার সকালে হালকা কুয়াশার দেখা মিলেছে। তবে হাড়কাঁপানো শীত না পড়লেও বইছে মিষ্টি হিমেল বাতাস। আজ সারা দিন রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চলে আকাশ পরিষ্কার থাকবে, আবহাওয়াও থাকবে শুষ্ক।

আজ সকাল ৭টায় ঢাকা ও আশপাশ এলাকার আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সকাল ৬টায় রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৮৯ শতাংশ। এদিন দুপুর পর্যন্ত ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার ওপর দিয়ে উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে।

আজ ঢাকায় সূর্যাস্তের সময় সন্ধ্যা ৫টা ১১ মিনিটে, আগামীকাল সূর্যাস্ত ৬টা ২৮ মিনিটে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২০৯৮ পর্যন্ত কবে কোন দেশ বিশ্বকাপ নেবে—ভবিষ্যদ্বাণী করল গ্রোক এআই

খালেদা জিয়ার রিপোর্ট ভালো, চেষ্টা করছেন কথা বলার: চিকিৎসক

সেই এনায়েত করিমের মামলায় সাংবাদিক শওকত মাহমুদকে গ্রেপ্তার দেখাল ডিবি

সেনাবাহিনীতে সৈনিক পদে যোগদানের বয়সসীমা বাড়ল

১০ ঘণ্টা পর বিটিআরসির অবরোধ তুলে নিলেন মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীরা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

২১ নভেম্বরের পর ভূমিকম্পে কতবার কাঁপল বাংলাদেশ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ১৬
নরসিংদীতে ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলের মাটিতে গতকাল ফাটলের নমুনা সংগ্রহ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগ। ছবি: আজকের পত্রিকা
নরসিংদীতে ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলের মাটিতে গতকাল ফাটলের নমুনা সংগ্রহ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগ। ছবি: আজকের পত্রিকা

আজ বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ৬টা। সূর্যের আলো যখন পুরোপুরি ফুটে ওঠেনি, ঠিক তখনই ভূমিকম্পে আবারও কেঁপে উঠল রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চল। রিখটার স্কেলে এই ভূকম্পনের মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ১। উৎপত্তিস্থল ঢাকা থেকে ৩৮ কিলোমিটার দূরে নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলার পাটুয়ারপাড় এলাকা।

আর এই ভূকম্পনেই আতঙ্কিত হয়ে ওঠে ঢাকার নগরজীবন থেকে শুরু করে সারা দেশের মানুষ। আতঙ্কিত হয়ে ওঠাই স্বাভাবিক। কারণ, এক-দুবার নয়, মাত্র ১৪ দিনে বাংলাদেশে একাধিকবার ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে। এর মধ্যে চারটি ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল নরসিংদী, গাজীপুরের মতো ঢাকার আশপাশের অঞ্চল ছিল বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আর সবচেয়ে বড় ভূমিকম্পটি হয় গত ২১ নভেম্বর। ওই দিন ৫ দশমিক ৭ মাত্রার এক ভূমিকম্পে ঢাকাসহ সারা দেশ কেঁপে উঠেছিল।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর বাংলাদেশেই উৎপত্তিস্থল ছিল পাঁচটি ভূমিকম্পের। এর প্রথমটি ছিল ২১ নভেম্বরের ঠিক দুই মাস আগে ২১ সেপ্টেম্বর। এদিন ৪ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। এর উৎপত্তি হয় সিলেটের ছাতকে।

এরপরের ভূমিকম্প ছিল ২১ নভেম্বর, মাত্রা ৫ দশমিক ৭। পরদিন ২২ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬টা ৬ মিনিটে ৪ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল নরসিংদী জেলার কালীগঞ্জ। এর ৫ দিন পর, ২৭ নভেম্বর বিকেল সোয়া ৪টায় ৪ মাত্রার ভূমিকম্প হয়, উৎপত্তিস্থল ঢাকার পাশের জেলা গাজীপুরের টঙ্গীর ঢালাদিয়া এলাকা।

কতবার ভূকম্পন হলো

তবে বারবার ভূমিকম্প কেবল বাংলাদেশেই নয়, সীমান্তঘেঁষা মিয়ানমার, ভারত, নেপাল, এমনকি চীনের তিব্বত সীমান্তেও ঘন ঘন ভূমিকম্প হচ্ছে। চলতি বছরের ১১ মাসে এই অঞ্চলে ২৮৫ বার ভূমিকম্প হয়েছে। এর কোনোটিই ৪ মাত্রার নিচে ছিল না।

গত সোমবার ১ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে মিয়ানমারের ফালামে মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প হয়। ফলে চট্টগ্রাম অঞ্চল থেকেও এটি অনুভূত হয়েছে। ঢাকার আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্র থেকে উৎপত্তিস্থলের দূরত্ব ছিল ৪৩১ কিলোমিটার। ওই ভূমিকম্প বাংলাদেশ সময় রাত ১২টা ৫৫ মিনিট ১৬ সেকেন্ডে অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৯।

বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে বিবিসি বাংলা জানিয়েছে, টেকটোনিক প্লেটে বাংলাদেশের যে অবস্থান, তাতে দুটো প্লেটের সংযোগস্থল রয়েছে, পশ্চিমে ইন্ডিয়ান প্লেট আর পূর্ব দিকে বার্মা প্লেট। আর বাংলাদেশের উত্তর দিকে আছে ইউরেশিয়ান প্লেট।

রাজধানীর পুরান ঢাকায় বংশাল এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ অনেক ভবনের ক্ষতির আশঙ্কা। ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর পুরান ঢাকায় বংশাল এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ অনেক ভবনের ক্ষতির আশঙ্কা। ছবি: সংগৃহীত

ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের সাবেক অধ্যাপক সৈয়দ হুমায়ুন আখতার বিবিসি বাংলাকে বলেন, ভারতীয় প্লেটটি ধীরে ধীরে পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে বার্মা প্লেটের নিচে, অর্থাৎ চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রামের নিচে তলিয়ে যাচ্ছে। আর এই তলিয়ে যাওয়ার কারণে একটা সাবডাকশন জোনের তৈরি হয়েছে।

হুমায়ুন আখতার আরও বলেন, ‘এই জোনের ব্যাপ্তি সিলেট থেকে টেকনাফ পর্যন্ত বিস্তৃত। পুরো চট্টগ্রাম অঞ্চল এর মধ্যে পড়েছে। এখানে বিভিন্ন সেগমেন্ট আছে। আমাদের এই সেগমেন্টে ৮.২ থেকে ৯ মাত্রার শক্তি জমা হয়ে আছে। এটা বের হতেই হবে।’ তাঁর মতে, ‘এখানে প্লেট লকড হয়ে ছিল। এর অতি সামান্য ক্ষুদ্রাংশ খুলল বলেই শুক্রবারের ভূমিকম্প হয়েছে। এটিই ধারণা দেয় যে সামনে বড় ভূমিকম্প আমাদের দ্বারপ্রান্তে আছে।’

আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ

তবে ভূমিকম্প নিয়ে উৎকণ্ঠিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন ভূতত্ত্ববিদ ও ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরা। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) মো. মমিনুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, এখন যেসব ভূকম্পন, সেগুলো হলো ২১ নভেম্বর ভূমিকম্পের ‘আফটার শক’।

২০১১ সালের ১১ মার্চ জাপানের হনশু দ্বীপের টোহুকু অঞ্চলে ৯ মাত্রার ভূমিকম্প এবং এর জেরে সৃষ্ট সুনামির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ওই ঘটনার পর কেবল ৬ মাত্রারই ৪৫০ বার আফটার শক হয়েছিল জাপানে। আরও অসংখ্যবার ছোট ছোট আফটার শক হয়েছিল তখন।

ভূকম্পনবিদ্যার গবেষক মমিনুল ইসলাম আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে ২১ নভেম্বরের পর একাধিকবার আফটার শক হচ্ছে। এই আফটার শক বহুদিন ধরে হতে পারে, কমপক্ষে আরও তিন মাস হতে পারে। ২ মাত্রার নিচের ভূকম্পনগুলো আমাদের (বাংলাদেশে) সিস্টেমে ধরা পড়ে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২০৯৮ পর্যন্ত কবে কোন দেশ বিশ্বকাপ নেবে—ভবিষ্যদ্বাণী করল গ্রোক এআই

খালেদা জিয়ার রিপোর্ট ভালো, চেষ্টা করছেন কথা বলার: চিকিৎসক

সেই এনায়েত করিমের মামলায় সাংবাদিক শওকত মাহমুদকে গ্রেপ্তার দেখাল ডিবি

সেনাবাহিনীতে সৈনিক পদে যোগদানের বয়সসীমা বাড়ল

১০ ঘণ্টা পর বিটিআরসির অবরোধ তুলে নিলেন মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীরা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত