Ajker Patrika

বাংলাদেশের বনে পাওয়া গেল সংকর হনুমান

ইশতিয়াক হাসান
আপডেট : ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৬: ৪০
বাংলাদেশের বনে পাওয়া গেল সংকর হনুমান

যত দিন যাচ্ছে, বিপর্যস্ত হচ্ছে প্রকৃতি, ঝুঁকিতে পড়ছে বন্যপ্রাণী। আর এটা ঘটছে আমাদের মানুষের অপরিণামদর্শী কর্মকাণ্ডের কারণেই। এর নতুন একটি প্রমাণ মিলেছে সিলেট বিভাগের বনাঞ্চলে। সেখানে চশমাপরা হনুমান ও মুখপোড়া হনুমানের মিশ্র প্রজাতির দলের পাশাপাশি শনাক্ত হয়েছে সংকর হনুমান। এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকলে প্রজাতিগুলোর একটি বা দুটিই বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে ভবিষ্যতে।

সম্প্রতি এ-সংক্রান্ত একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে ‘স্প্রিঞ্জার নেচার’-এর ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব প্রাইমেটোলজিতে।

২০১৮ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত চালানো হয় গবেষণাটি। গবেষণাপত্রটির প্রধান লেখক জার্মান প্রাইমেট সেন্টারের বাংলাদেশি পিএইচডি শিক্ষার্থী এবং আইইউসিএন প্রাইমেট বিশেষজ্ঞ দলের সদস্য তানভীর আহমেদ। মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জের বিভিন্ন বনে হনুমানের ৯৮টি দলের ওপর জরিপ চালান তাঁরা। এ সময় আটটি মিশ্র দলের খোঁজ পান। অর্থাৎ, এগুলোতে চাশমাপরা ও মুখপোড়া দুই জাতের হনুমানই ছিল। এদের মধ্যে তিনটি দলের কয়েকটি প্রাণীর চেহারায় দুই প্রজাতির প্রাণীর মিশ্রণ লক্ষ করেন। কিন্তু সংকরায়ণ নিশ্চিত হওয়ার জন্য জিনগত পরীক্ষা জরুরি। 

গবেষকেরা তিনটি মিশ্র দলের তিনটি সম্ভাব্য সংকর হনুমানকে চিহ্নিত করেন। এটা করা হয় চেহারা, অর্থাৎ শারীরিক বৈশিষ্ট্য দেখে। এদের দুটি ছিল হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে এবং একটি রেমা-কালেঙ্গা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যে। সম্ভাব্য সংকরগুলোর মধ্যে একটি পূর্ণবয়স্ক স্ত্রী হনুমান। গবেষকেরা বুঝতে পারেন, এর একসময় বাচ্চাও ছিল এবং বাচ্চাকে নিয়মিত দুধ পান করাত। বাকি দুটি সম্ভাব্য সংকর হনুমান অপ্রাপ্তবয়স্ক। 

সংকরায়ণের বিষয়টি সম্পর্কে নিশ্চিত হতে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান থেকে সংগৃহীত মলের নমুনার জিনগত পরীক্ষা করা হয় জার্মানির জার্মান প্রাইমেট সেন্টারের গবেষণাগারে। আর এতেই একটি সংকর হনুমানের বিষয়ে নিশ্চিত তথ্য মেলে। ২০২৩ সালে সাতছড়ির একটি মিশ্র দলে জন্মানো এই সংকর হনুমান শিশুর বাবা চশমাপরা হনুমান এবং মা মুখপোড়া হনুমান। এদিকে সংকর বলে অনুমান করা ওই স্ত্রী হনুমানটির আবিষ্কার থেকে ধারণা করা হচ্ছে, অন্তত স্ত্রী সংকর হনুমান বাচ্চাদানেও সক্ষম।

জার্মান প্রাইমেট সেন্টারের গবেষকেরা ছাড়াও ১৫ সদস্যের এই গবেষক দলে আছেন সংযুক্ত আরব আমিরাত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সাবির বিন মুজাফফার, ইসাবেলা ফাউন্ডেশনের প্রধান গবেষক মো. সাবিত হাসান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী, স্থানীয় ইকোগাইড ও বন্যপ্রাণী আলোকচিত্রী। বাংলাদেশ বন বিভাগের অনুমতিতে মাঠ পর্যায়ে গবেষণাটি পরিচালিত হয় ২০১৮ থেকে ২০২৩ সালের অক্টোবর মাস পর্যন্ত। 

রেমা-কালেঙ্গা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যে একটি সংকর হনুমান। ছবিঃ অরিত্র সাত্তারআইইউসিএন লাল তালিকায় চশমাপরা হনুমান বিশ্বব্যাপী বিপন্ন এবং বাংলাদেশে মহাবিপন্ন তালিকাভুক্ত প্রাণী। এদের বিস্তৃতি বাংলাদেশ থেকে ভারত হয়ে মিয়ানমারের ইরাবতী নদী পর্যন্ত। 

এদিকে মুখপোড়া হনুমান বিশ্বব্যাপী সংকটাপন্ন এবং বাংলাদেশে  বিপন্ন তালিকাভুক্ত প্রাণী। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, ভুটান, মিয়ানমার ও চীনের সামান্য কিছু অঞ্চলে পাওয়া যায়। 

বাংলাদেশের সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু পাহাড়ি বনে এ দুই হনুমান প্রজাতির বসবাস। এ ছাড়া মধুপুরের পাতাঝরা বনেও মুখপোড়া হনুমান আছে। বনের লতাপাতা, ফুল-ফল, কীটপতঙ্গ এদের প্রধান খাবার। খাবার গ্রহণ এবং পরবর্তী সময়ে মলের মাধ্যমে বিভিন্ন ফলের বীজ বনে ছড়িয়ে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে হনুমান। অর্থাৎ বনের বিস্তারে ভূমিকা রাখে হনুমান।

গবেষকেরা সিলেট বিভাগের লাউয়াছড়া, সাতছড়ি, রেমা-কালেঙ্গা, রাজকান্দি, পাথারিয়া ও অতোরা সংরক্ষিত বনে হনুমানের এসব দলের ওপর জরিপ করেন। মিশ্র প্রজাতির হনুমানের দলগুলোকে নিয়মিত পর্যবেক্ষণে রাখা হয় প্রায় চার বছর ধরে। 

তানভীর আহমেদ গবেষণার পটভূমি তুলে ধরে জানান, ১৯৯৭-৯৮ সালে চুনারুঘাটের রেমা-কালেঙ্গা বনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মফিজুল কবির পিএইচডি গবেষণার সময় প্রথম চশমাপরা হনুমান ও মুখপোড়া হনুমানের দুটি অস্থায়ী মিশ্র প্রজাতির দলের খোঁজ পান। তবে সেগুলোতে কোনো সংকরের উপস্থিতি ছিল না। প্রায় দুই দশক পর ২০১৭ সালে প্রথমবারের মতো সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে একটি সম্ভাব্য সংকর হনুমান দেখে বিস্মিত হন তাঁরা। এর আগে এ দুই প্রজাতির হনুমান মিলে সংকর হনুমান জন্মানোর কোনো বৈজ্ঞানিক ইতিহাস নেই বলেও জানান তিনি।

তানভীর আহমেদ বলেন, গবেষণায় দেখা যায় লাউয়াছড়া ও সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান এবং রেমা-কালেঙ্গা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যে হনুমানের ঘনত্ব রাজকান্দি, পাথারিয়া ও অতোরা সংরক্ষিত বনের তুলনায় অনেক বেশি। তবে দেশের সুরক্ষিত বনগুলো আকারে ছোট এবং একটি আরেকটি থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন। ফলে প্রাণীগুলো ক্রমেই নির্দিষ্ট অঞ্চলে আবদ্ধ হয়ে পড়ছে এবং জিনগত আদান-প্রদানের সুযোগ কমে যাচ্ছে। 

গবেষণাপত্রটিতে উল্লেখ করা হয়, প্রাইমেটদের মধ্যে সংকরায়ণের ঘটনা একেবারেই কম। এ ধরনের দুটি প্রজাতির বিচরণের এলাকা একই হয়ে গেলে এ ঘটনা ঘটতে পারে। মানুষের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড যেমন বন উজাড়, বনগুলোর মধ্যে সংযোগ নষ্ট, শিকার এবং ফাঁদে ফেলে বন্যপ্রাণী ধরা এদের সংখ্যা কমানোয় ভূমিকা রাখে। এতে এ ধরনের সংকরায়ণের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

গবেষণাপত্রটির প্রধান লেখক তানভীর আহমেদ বলেন, ‘প্রজনন সক্ষম সংকরের অস্তিত্ব বিশেষভাবে উদ্বেগজনক। কারণ দুটি বিপন্ন প্রজাতির মধ্যে জিন প্রবাহ তাদের ভবিষ্যতের জেনেটিক গঠনকে প্রভাবিত করতে পারে বলে ধারণা দেয়।’

এদিকে গবেষক দলের উপদেষ্টা ক্রিস্টিয়ান রোস বলেন, ‘এটি শুধু স্থানীয় সমস্যা নয়। আবাসস্থল ধ্বংস হলে, প্রাণীরা প্রকৃতির নিয়মের বাইরে গিয়ে মিশে যায় এবং মিশ্র দল গঠন করে। এতে সংকরায়ণ ঘটতে পারে। এটি এমনকি একটি বা উভয় প্রজাতির বিলুপ্তি ঘটাতে পারে।’

গবেষণায় আরও দেখা গেছে যে ভালোভাবে সংরক্ষিত বনে সংরক্ষণে কম মনোযোগ দেওয়া বনের তুলনায় হনুমানের সংখ্যার ঘনত্ব বেশি। তবে এই বনগুলো বেশির ভাগই ছোট এবং একটি আরেকটি থেকে বিচ্ছিন্ন। প্রজাতিগুলোর দীর্ঘমেয়াদি বেঁচে থাকা নিশ্চিত করার তুলনায় খণ্ড ভণ্ড বন এগুলো। 

মুখপোড়া চশমাপরা ও চশমাপরা হনুমানের মিশ্র দলে একটি অপ্রাপ্তবয়স্ক সংকর হনুমান। ছবিঃ হারিস দেববর্মা‘বন সংরক্ষণ একটি জাতীয় অগ্রাধিকার হতে হবে। আমরা যদি এখনই ব্যবস্থা না নিই, তাহলে শুধু দুটি বানরের প্রজাতিই নয়, বাংলাদেশের জীববৈচিত্র্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশও হারাতে পারি।’ বলেন তানভীর আহমেদ।

গবেষণার সহলেখক ডিটমার জিনার গোটা বিষয়টির সারসংক্ষেপ তুলে ধরে বলেন, ‘এই গবেষণা আমাদের জাগিয়ে তোলার একটি বার্তা। কার্যকর দীর্ঘমেয়াদি সংরক্ষণ কৌশল বিকাশের জন্য আরও তথ্য প্রয়োজন। আরও গবেষণা আমাদের সংকরায়ণের মাত্রা, মানুষের কর্মকাণ্ডের প্রভাব এবং কীভাবে এর সবচেয়ে খারাপ প্রভাবগুলো প্রতিরোধ করা যায় তা বুঝতে সাহায্য করবে।’

গবেষণাপত্রে উল্লেখ করা হয়, উত্তর-পূর্ব বাংলাদেশ, অর্থাৎ সিলেট বিভাগে এখন ৫০০-এর কম চশমাপরা হনুমান এবং ৬০০ মুখপোড়া হনুমান আছে। অর্থাৎ, এই প্রজাতি রক্ষার সময় দ্রুতই ফুরিয়ে আসছে। 

বেশির ভাগ হনুমানের আবাস্থল মানবসৃষ্ট। কারণ যেমন বনের জমি দখল করে বাড়িঘর নির্মাণ, কৃষিকাজ, কাঠের জন্য উদ্ভিদের চাষাবাদ, গাছ চুরি, অনিয়ন্ত্রিত পর্যটনের কারণে প্রতিনিয়ত ধ্বংস হচ্ছে। তা ছাড়া বন্যপ্রাণীর অবৈধ শিকার-বাণিজ্য, বিদ্যুতায়িত হওয়া ও গাড়িচাপায় মারা যাওয়াসহ নানা কারণে হনুমানের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। 

এদের বেঁচে থাকা তাৎক্ষণিক পদক্ষেপের ওপর নির্ভর করছে বলেও জানানো হয় গবেষণাপত্রে। এর মধ্যে রয়েছে বন সংরক্ষণ এবং খণ্ড বনগুলোর মধ্যে যোগাযোগের জন্য করিডর তৈরি করা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২৪৩ আসনে প্রার্থী দিল জি এম কাদেরের জাপা

‘অনলাইনে জুয়ার টাকা ভাগাভাগি’ নিয়ে খুন হন বগুড়ার সেই ব্যবসায়ী

সূর্যাস্তের আগে স্মৃতিসৌধে পৌঁছাতে পারলেন না তারেক রহমান, তাঁর পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন কেন্দ্রীয় নেতাদের

ছাত্রশিবিরের নতুন সভাপতি সাদ্দাম, সাধারণ সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ

‘প্রশ্ন ফাঁসের’ অভিযোগ ওঠার পর প্রাথমিকের নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শীতের প্রকোপ বাড়ছে: ৭ জেলায় ঘন কুয়াশা ও শৈত্যপ্রবাহ, থাকবে কত দিন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ১৪
চুয়াডাঙ্গায় জেঁকে বসেছে শীত। ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে জনপদ। ছবি: আজকের পত্রিকা
চুয়াডাঙ্গায় জেঁকে বসেছে শীত। ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে জনপদ। ছবি: আজকের পত্রিকা

দেশজুড়ে শীতের দাপট বাড়তে শুরু করেছে। দেশের সাতটি জেলার ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং ঘন কুয়াশার কারণে সড়ক, নৌ ও আকাশপথে যোগাযোগব্যবস্থা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আজ শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

শৈত্যপ্রবাহের কবলে সাত জেলা আবহাওয়া অফিস জানায়, যশোর, চুয়াডাঙ্গা, গোপালগঞ্জ, রাজশাহী, পাবনা, সিরাজগঞ্জ এবং নীলফামারী জেলার ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতি দেশের কোথাও কোথাও আরও কয়েক দিন অব্যাহত থাকতে পারে। কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ার কারণে দেশের অনেক জায়গায় দিনের বেলায়ও হাড়কাঁপানো ঠান্ডার অনুভূতি বজায় থাকবে।

ঘন কুয়াশার সতর্কতা পূর্বাভাস অনুযায়ী, মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারা দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। কোনো কোনো এলাকায় এই কুয়াশা দুপুর পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। ঘন কুয়াশার কারণে বিমান চলাচল, অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন এবং সড়ক যোগাযোগ সাময়িকভাবে ব্যাহত হতে পারে বলে সতর্ক করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

তাপমাত্রা ও বৃষ্টির সম্ভাবনায় আগামী কয়েক দিন সারা দেশের আকাশ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা থাকতে পারে, তবে আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকবে। সারা দেশে রাত ও দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। তবে ২৯ ডিসেম্বর থেকে তাপমাত্রা কিছুটা কমার সম্ভাবনা রয়েছে।

বিভাগীয় শহরগুলোর তাপমাত্রা গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে যশোরে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বিভাগীয় শহরগুলোর মধ্যে ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি, চট্টগ্রামে ১৫ ডিগ্রি, রাজশাহীতে ১০ দশমিক ৪, রংপুরে ১১ দশমিক ২, খুলনায় ১১ দশমিক ২ ডিগ্রি, বরিশালে ১২ দশমিক ৪ এবং সিলেটে ১৪ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।

আবহাওয়াবিদ শাহানাজ সুলতানা জানান, উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে, যার বর্ধিতাংশ উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।

আগামী পাঁচ দিন আবহাওয়ার উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই বলে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২৪৩ আসনে প্রার্থী দিল জি এম কাদেরের জাপা

‘অনলাইনে জুয়ার টাকা ভাগাভাগি’ নিয়ে খুন হন বগুড়ার সেই ব্যবসায়ী

সূর্যাস্তের আগে স্মৃতিসৌধে পৌঁছাতে পারলেন না তারেক রহমান, তাঁর পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন কেন্দ্রীয় নেতাদের

ছাত্রশিবিরের নতুন সভাপতি সাদ্দাম, সাধারণ সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ

‘প্রশ্ন ফাঁসের’ অভিযোগ ওঠার পর প্রাথমিকের নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বায়ুদূষণে শীর্ষে ঢাকা, সতর্ক থাকতে পারেন যেভাবে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

শীতজুড়ে ঢাকার বাতাসের দূষণের মাত্রা বেড়ে যায়। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা আইকিউএয়ারের তথ্য অনুযায়ী, আজ বৃহস্পতিবার বিশ্বের দূষিত শহর তালিকার ১২৭টি দেশের মধ্যে শীর্ষে আছে ঢাকা।

আইকিউএয়ারের সকাল ৮টা ৩০ মিনিটের রেকর্ড অনুযায়ী, ঢাকার এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স স্কোর ২২৫। যা নির্দেশ করে, ঢাকার বাতাসের অবস্থা খুব অস্বাস্থ্যকর।

ঢাকার বেশকিছু স্থানের বাতাসের অবস্থা সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর থেকে খুব অস্বাস্থ্যকর। এর মধ্যে রয়েছে— দক্ষিণ পল্লবী (২৮৩), ইস্টার্ন হাউজিং (২৬০), বেজ এজওয়াটার আউটডোর (২৫১), কল্যাণপুর (২৫০) ও গ্রেস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল (২২২)।

তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ভারতের কলকাতা (২২৫, খুব অস্বাস্থ্যকর), তৃতীয় স্থানে ভারতের দিল্লি (১৯১, সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর), চতুর্থ স্থানে রয়েছে পাকিস্তানের করাচি (১৯০, সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর) এবং পঞ্চম স্থানে রয়েছে কুয়েতের কুয়েত সিটি (১৮০, সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর)।

বাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস। বেশিমাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদ্রোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।

বাতাসের মূল ক্ষতিকারক উপাদান হলো ক্ষুদ্র বস্তুকণা বা পিএম ২.৫। এটি এতই সূক্ষ্ম যে তা ফুসফুসে, এমনকি রক্তপ্রবাহেও প্রবেশ করতে পারে।

বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১-১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১ থেকে ১৫০-এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।

বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতিবছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।

এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।

দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।

পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।

বাতাসের এই বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে করণীয়

অত্যন্ত সংবেদনশীল গোষ্ঠী: শিশু, বয়স্ক, হৃদ্‌রোগ বা শ্বাসকষ্টের রোগীরা সব ধরনের ঘরের বাইরে না যাওয়াই ভালো।

সাধারণ সুস্থ ব্যক্তি: তাদের উচিত বাইরে কাটানো সময় সীমিত করা এবং শারীরিক পরিশ্রমের কাজ এড়িয়ে চলা।

যদি বাইরে বের হতে হয়, তবে অবশ্যই দূষণ রোধে কার্যকর মাস্ক ব্যবহার করুন।

ঘরের ভেতরের বাতাস পরিষ্কার রাখতে এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করুন এবং দূষিত বাতাস প্রবেশ ঠেকাতে জানালা ও দরজা বন্ধ রাখুন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২৪৩ আসনে প্রার্থী দিল জি এম কাদেরের জাপা

‘অনলাইনে জুয়ার টাকা ভাগাভাগি’ নিয়ে খুন হন বগুড়ার সেই ব্যবসায়ী

সূর্যাস্তের আগে স্মৃতিসৌধে পৌঁছাতে পারলেন না তারেক রহমান, তাঁর পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন কেন্দ্রীয় নেতাদের

ছাত্রশিবিরের নতুন সভাপতি সাদ্দাম, সাধারণ সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ

‘প্রশ্ন ফাঁসের’ অভিযোগ ওঠার পর প্রাথমিকের নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মেঘলা ঢাকার আকাশ, কুয়াশার দেখা মিলতে পারে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

সকাল থেকে ঢাকার আকাশে মেঘের আনাগোনা দেখা গেছে। সূর্যের দেখা মেলেনি এই সকালেও। কুয়াশা পড়তে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা থেকে পরবর্তী ৬ ঘণ্টার ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার আবহাওয়া পূর্বাভাসে এ কথা বলা হয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের বুলেটিনে দেখা যায়, আজ সকাল ৬টায় রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা ছিল ১৪ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকার বাতাসে আর্দ্রতা পরিমাপ করা হয়েছে ৭৬ শতাংশ।

আবহাওয়া অধিদপ্তর পূর্বাভাসে জানা যায়, আজ আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। আকাশ অস্থায়ীভাবে মেঘলা থাকতে পারে। এ সময় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা থাকতে পারে।

অধিদপ্তর আরও বলছে, আজ দিনের তাপমাত্রায় তেমন কোনো পরিবর্তন দেখা যাবে না।

এছাড়া বুলেটিনে আরও বলা হয়েছে, এ সময় উত্তর/উত্তরপশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে।

এদিকে গতকাল বুধবার ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর আজকের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৪ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২৪৩ আসনে প্রার্থী দিল জি এম কাদেরের জাপা

‘অনলাইনে জুয়ার টাকা ভাগাভাগি’ নিয়ে খুন হন বগুড়ার সেই ব্যবসায়ী

সূর্যাস্তের আগে স্মৃতিসৌধে পৌঁছাতে পারলেন না তারেক রহমান, তাঁর পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন কেন্দ্রীয় নেতাদের

ছাত্রশিবিরের নতুন সভাপতি সাদ্দাম, সাধারণ সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ

‘প্রশ্ন ফাঁসের’ অভিযোগ ওঠার পর প্রাথমিকের নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শীতে জবুথবু, কুয়াশায় দুর্ঘটনা

  • কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ছে সড়ক-মহাসড়ক, মুন্সিগঞ্জে চারটি যানবাহনের একের পর এক সংঘর্ষ।
  • সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছে খেটে খাওয়া মানুষ, শিশু ও বৃদ্ধরা।
  • বিভিন্ন হাসপাতালে বাড়ছে শীতজনিত রোগে আক্রান্তদের চাপ।
আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ৩৭
ঘন কুয়াশার কারণে একের পর এক সংঘর্ষে তিনটি যাত্রীবাহী বাস ও একটি কাভার্ড ভ্যান ক্ষতিগ্রস্ত। গতকাল ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার কুচিয়ামোড়া কলেজ গেট এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘন কুয়াশার কারণে একের পর এক সংঘর্ষে তিনটি যাত্রীবাহী বাস ও একটি কাভার্ড ভ্যান ক্ষতিগ্রস্ত। গতকাল ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার কুচিয়ামোড়া কলেজ গেট এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঘন কুয়াশা আর কনকনে শীতে থমকে যাচ্ছে স্বাভাবিক জীবন। সকাল গড়িয়ে গেলেও মিলছে না সূর্যের দেখা, কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ছে সড়ক-মহাসড়ক। উত্তরাঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় শীতের প্রকোপে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছে খেটে খাওয়া মানুষ, শিশু ও বৃদ্ধরা। কুয়াশার কারণে ব্যাহত হচ্ছে যান চলাচল, যানবাহনগুলোকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে। এ ছাড়া বাড়ছে শীতজনিত রোগও। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:

পঞ্চগড়ে টানা কুয়াশা ও কনকনে শীতে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছে খেটে খাওয়া মানুষ। অনেকে সকালে কাজে যেতে পারছে না। শীত নিবারণের জন্য বিভিন্ন স্থানে মানুষকে খড়কুটা জ্বালিয়ে আগুন পোহাতে দেখা গেছে। ময়দানদিঘি এলাকার অটোরিকশাচালক কুদ্দুস মিয়া বলেন, কুয়াশার কারণে হেডলাইট জ্বালিয়ে গাড়ি চালাতে হচ্ছে। তারপরও সামনে ঠিকমতো দেখা যায় না। ঠান্ডার কারণে যাত্রীও কমে গেছে। পঞ্চগড় সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক শিশুর বাবা রফিকুল ইসলাম বলেন, কয়েক দিন ধরে ঠান্ডা লেগে জ্বর ও শ্বাসকষ্ট দেখা দিয়েছে। তাই হাসপাতালে এনে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে।

একই হাসপাতালে ভর্তি এক বৃদ্ধ রোগীর ছেলে নজরুল ইসলাম বলেন, শীত পড়ার শুরু থেকেই বাবার কাশি বেড়েছে। ঠান্ডা সহ্য করতে না পেরে অবস্থা খারাপ হলে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। গতকাল বুধবার সকাল ৬টায় তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১০০ শতাংশ।

এদিকে নীলফামারীতে গতকাল সারা দিন দেখা মেলেনি সূর্যের। ভিড় বেড়েছে গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে। এদিকে ঘন কুয়াশার কারণে দৃষ্টিসীমা কমে যাওয়ায় ঢাকা-সৈয়দপুর রুটের ফ্লাইটের সূচি পরিবর্তন করেছে কর্তৃপক্ষ।

সৈয়দপুর বিমানবন্দর আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ লোকমান হোসেন জানান, সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় ঘন কুয়াশার কারণে বিমানবন্দর রানওয়ে এলাকায় দৃষ্টিসীমা ১০০ মিটারের কম ছিল। তিনি আরও জানান, ফ্লাইট ওঠানামা করার জন্য ২ হাজার মিটার দৃষ্টিসীমার প্রয়োজন। এ কারণে চলতি মাসের ৫ তারিখ থেকে নতুন সূচি অনুযায়ী বেলা ১১টায় ফ্লাইট চলাচল শুরু হয়। যা আগে সকাল ৮টায় দিনের প্রথম ফ্লাইট অবতরণ করত সৈয়দপুর বিমানবন্দরে।

জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা লতিফুর রহমান বলেন, সরকারিভাবে ৭৫০টি কম্বল বরাদ্দ দেওয়া আছে। এটি শীতার্তদের তুলনায় অত্যন্ত অপ্রতুল। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নীল রতন দেব বলেন, হাসপাতালে শীতজনিত রোগে বৃদ্ধ ও শিশুরা বেশি চিকিৎসা নিচ্ছে।

গাইবান্ধায় পৌষের শুরুতে হিমেল বাতাসের দাপটে দিন দিন বাড়ছে শীতের প্রকোপ। সকাল হলেই কুয়াশার চাদরে ঢেকে যাচ্ছে চারপাশ। এর সঙ্গে বইছে মৃদু কিন্তু তীব্র শীতল বাতাস, যা মানুষের স্বাভাবিক চলাচলে ভোগান্তি বাড়িয়ে তুলছে। বিশেষ করে সকালের দিকে বাইরে বের হতে কষ্ট হচ্ছে সাধারণ মানুষের। সকালে মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। শীতের এই প্রকোপে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে শিশু, বৃদ্ধ ও নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। ভোর থেকেই কাজে বের হতে হয় দিনমজুর, রিকশাচালক, ভ্যানচালক, কৃষিশ্রমিক ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের। ঠিক সেই সময়েই হিমেল বাতাসের তীব্রতায় শীত অনুভূত হচ্ছে বেশি। অনেকে পর্যাপ্ত গরম কাপড় না থাকায় ঠান্ডাজনিত অসুস্থতায় ভোগার আশঙ্কা করছে। গতকাল গাইবান্ধায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, কম্বল ক্রয়ের জন্য জেলার প্রত্যেক ইউএনওদের ৬ লাখ করে টাকা দেওয়া হয়েছে। তাঁরা কম্বল কিনে বিতরণ করছেন। এ ছাড়া মজুত কিছু কম্বলসহ গতকাল পর্যন্ত জেলায় ২২ হাজার ৬০০ কম্বল বিতরণ করা হয়েছে।

দিনাজপুরে এক সপ্তাহ ধরে তাপমাত্রা ১১ থেকে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করেছে। গতকাল সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল শতকরা ৯৬ শতাংশ। দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সূর্যের দেখা মেলেনি। ঘন কুয়াশায় ঢাকা ছিল পুরো প্রকৃতি। ফলে পৌরশহরে লোকসমাগম ছিল তুলনামূলক কম। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘরের বাইরে বের হচ্ছে না। দিনের বেলা মাঝে মাঝে সূর্যের দেখা মিললেও তেমন তাপ অনুভূত হচ্ছে না। বিকেল থেকে সূর্যাস্ত যাওয়ার পর পরদিন সকাল পর্যন্ত শীতের তীব্রতা থাকছে বেশি। বিশেষ করে রাতের তাপমাত্রা কম থাকছে।

জেলার ফুলবাড়ী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, শীতার্তদের জন্য মন্ত্রণালয় থেকে প্রথম পর্যায়ে ৬ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়ায় সেখান থেকে ৩ লাখ টাকা দিয়ে ৯৫০টি কম্বল কিনে দুস্থ শীতার্তদের মধ্যে বিতরণ করা হচ্ছে। একই সঙ্গে জেলা প্রশাসন থেকে আরও ৩৪০টি কম্বল বরাদ্দ পাওয়া গেছে। সেগুলোও বিতরণ করা হচ্ছে। এরই মধ্যে দ্বিতীয় পর্যায়ে আরও ৩ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। সেই টাকাসহ প্রথম পর্যায়ের অবশিষ্ট ৩ লাখ মোট ৬ লাখ টাকার কম্বল কিনে সেগুলো দুস্থদের মধ্যে বিতরণ করা হবে।

ঘন কুয়াশায় এক্সপ্রেসওয়েতে দুর্ঘটনা

এদিকে ঘন কুয়াশার কারণে মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান অংশে একের পর এক সংঘর্ষে তিনটি যাত্রীবাহী বাস ও একটি কাভার্ড ভ্যান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ঘটনায় কয়েকজন যাত্রী আহত হয়েছে। গতকাল সকাল সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার কেয়াইন ইউনিয়নের কুচিয়ামোড়া কলেজ গেট এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘন কুয়াশায় সামনে দেখতে না পারার কারণে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যানগুলো পরস্পর সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে হাঁসাড়া হাইওয়ে পুলিশের সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করেন। দুর্ঘটনার পর প্রায় আধা ঘণ্টা এক্সপ্রেসওয়েতে যান চলাচল ব্যাহত হয়।

চুয়াডাঙ্গায় ফের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা

এক দিনের ব্যবধানে চুয়াডাঙ্গায় ফের দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। গতকাল সকাল ৯টায় ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এর আগে সোমবারও চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক রাকিবুল হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল বুধবার সকাল ৬টায় ১০ দশমিক ৬ এবং ৯টায় ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৭ শতাংশ। তিনি জানান, আগামী কয়েক দিনে তাপমাত্রা আরও কমতে পারে এবং মাসের শেষের দিকে বা

নতুন বছরের শুরুতে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ওপর দিয়ে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২৪৩ আসনে প্রার্থী দিল জি এম কাদেরের জাপা

‘অনলাইনে জুয়ার টাকা ভাগাভাগি’ নিয়ে খুন হন বগুড়ার সেই ব্যবসায়ী

সূর্যাস্তের আগে স্মৃতিসৌধে পৌঁছাতে পারলেন না তারেক রহমান, তাঁর পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন কেন্দ্রীয় নেতাদের

ছাত্রশিবিরের নতুন সভাপতি সাদ্দাম, সাধারণ সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ

‘প্রশ্ন ফাঁসের’ অভিযোগ ওঠার পর প্রাথমিকের নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত