Ajker Patrika

কার্বন ডাই-অক্সাইডকে পাথরে পরিণত করে ত্বিন ফলের গাছ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৮ জুলাই ২০২৫, ২৩: ৪৬
ত্বীন ফলের গাছ বাতাস থেকে শোষিত কার্বন-ডাই-অক্সাইড দিয়ে ক্যালসিয়াম অক্সালেট নামক ক্ষুদ্র স্ফটিক তৈরি করে। ছবি: সংগৃহীত
ত্বীন ফলের গাছ বাতাস থেকে শোষিত কার্বন-ডাই-অক্সাইড দিয়ে ক্যালসিয়াম অক্সালেট নামক ক্ষুদ্র স্ফটিক তৈরি করে। ছবি: সংগৃহীত

পরিবেশ রক্ষায় গাছের ভূমিকা আমরা সবাই জানি। তবে কিছু গাছ শুধু বাতাস থেকে কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ করেই থেমে থাকে না, তারা এই গ্যাসকে রীতিমতো পাথরে পরিণত করে! সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা আফ্রিকার কেনিয়ার সামবুরু অঞ্চলে এমনই তিন প্রজাতির ত্বিন ফলের গাছ (ডুমুরজাতীয় গাছ) খুঁজে পেয়েছেন, যেগুলো তাদের কাণ্ডে ও গুঁড়িতে চুনাপাথর (লাইমস্টোন) তৈরি করে কার্বন ধরে রাখে। এটি জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব কমাতে পরিবেশবান্ধব একটি টেকসই পদ্ধতির সম্ভাবনা দেখাচ্ছে।

এই গবেষণা আন্তর্জাতিক একদল বিজ্ঞানী পরিচালনা করেছেন। দলটি কেনিয়া, সুইজারল্যান্ড, অস্ট্রিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকদের নিয়ে গঠিত। গবেষণাটি উপস্থাপন করা হয় প্রাগে অনুষ্ঠিত গোল্ডসমিট ভূরসায়ন সম্মেলনে।

গবেষণায় কেনিয়ার সামবুরু কাউন্টিতে জন্মানো তিনটি ডুমুর প্রজাতির গাছ নিয়ে কাজ করা হয়েছে। এই গাছগুলো এমন একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করে, যাকে বলা হয় ‘অক্সালেট-কার্বোনেট পথ’ (oxalate-carbonate pathway)। কিছু উদ্ভিদে আগে থেকেই এই প্রক্রিয়া দেখা গেলেও ফলদ গাছের মধ্যে এটি খুব একটা দেখা যায় না।

সাধারণত সব গাছই কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ করে এবং পাতায়, কাণ্ডে ও শিকড়ে জৈব কার্বন (organic carbon) আকারে জমা রাখে। এ কারণেই বনায়নকে কার্বন হ্রাসের উপায় হিসেবে দেখা হয়। তবে ত্বিন ফলের গাছ আরও এক ধাপ এগিয়ে।

তারা বাতাস থেকে শোষিত কার্বন ডাই-অক্সাইড দিয়ে ক্যালসিয়াম অক্সালেট নামক ক্ষুদ্র স্ফটিক তৈরি করে। পরবর্তী সময়ে গাছের কাণ্ড বা গুঁড়ি পচে গেলে কিছু ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক এগুলোকে রূপান্তর করে ক্যালসিয়াম কার্বোনেটে।

সুইজারল্যান্ডের জুরিখ বিশ্ববিদ্যালয়ের জৈব রসায়নবিদ মাইক রোলি বলেন, ‘আমরা আগেও জানতাম কিছু গাছ কার্বন থেকে ক্যালসিয়াম অক্সালেট তৈরি করে, যা পরে মাটি ও জীবাণুর সাহায্যে রূপ নেয় ক্যালসিয়াম কার্বোনেটে অর্থাৎ চুনাপাথরে। তবে এর জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব কমাতে এটি কত ভূমিকা রাখতে পারে, তা এত দিন নজর এড়িয়েছে।’

এই গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত ছিল তিনটি ডুমুরগাছ: Ficus wakefieldii, Ficus natalensis ও Ficus glumosa। এর মধ্যে Ficus wakefieldii গাছটি সবচেয়ে বেশি হারে কার্বন জমাতে সক্ষম বলে গবেষকেরা জানিয়েছেন।

তিনটি প্রজাতির মধ্যে Ficus wakefieldii সবচেয়ে দক্ষতার সঙ্গে কার্বন শুষে ক্যালসিয়াম কার্বোনেটে রূপান্তর করে। এখন গবেষকেরা এ গাছের জলের চাহিদা, ফল উৎপাদনের ক্ষমতা এবং বিভিন্ন পরিবেশে কার্বন ধারণের হার নিয়ে আরও গবেষণা চালাবেন।

গাছ মারা গেলে সাধারণ জৈব কার্বন সহজে আবার বাতাসে ফিরে যেতে পারে, তবে ক্যালসিয়াম কার্বোনেট অনেক স্থায়ী এবং এটি মাটিতে দীর্ঘকাল ধরে কার্বন আটকে রাখতে পারে। তাই পরিবেশগত দিক থেকে এদের গুরুত্ব অনেক। মাইক রোলি বলেন, ‘যদি আমরা বনে বা কৃষিভিত্তিক বনায়নের জন্য গাছ লাগাতে চাই, তাহলে এমন ফলদ বৃক্ষ নির্বাচন করাই ভালো, যারা জৈব ও অজৈব দুভাবেই কার্বন ধরে রাখতে পারে।’

গবেষকেরা জানান, এসব ডুমুরগাছ কেনিয়ার শুষ্ক ও আগ্নেয়গিরির পাশে মাটিতে ভালোভাবে বেড়ে ওঠে। এই পরিবেশে চুনাপাথরের গঠন পর্যবেক্ষণ করা অপেক্ষাকৃত সহজ। তবে আর্দ্র এলাকায়ও একই প্রক্রিয়া ঘটতে পারে।

স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে অত্যাধুনিক ইমেজিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিজ্ঞানীরা দেখতে পান, ক্যালসিয়াম কার্বোনেট শুধু গাছের বাইরের অংশেই নয়, ভেতরের কাঠেও জমা হয়। এতে গাছের চারপাশের মাটি আরও ক্ষারধর্মী (alkaline) হয়ে ওঠে, যা অন্যান্য উদ্ভিদের পুষ্টি গ্রহণে সহায়তা করে।

যদিও এই গবেষণা মূলত শুষ্ক অঞ্চলের গাছ নিয়ে করা হয়েছে, বিজ্ঞানীরা বলছেন, আর্দ্র এলাকায়ও এই প্রক্রিয়া কার্যকর হতে পারে। কারণ, অনেক গাছই ক্যালসিয়াম অক্সালেট তৈরি করে এবং এই প্রক্রিয়ায় সহায়ক জীবাণুগুলোও পৃথিবীর নানা প্রান্তে বিস্তৃত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকায় সকালে তাপমাত্রা ১৩.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ০০
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

সকাল থেকে আজ ঢাকার আকাশে কিছুটা রোদের দেখা মিলেছে। তবে শীত আগের দিনের মতোই পড়েছে।

বেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে তাপমাত্রা সামান্য বাড়লেও ঘন কুয়াশা পড়তে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

গতকাল মঙ্গলবার সকালে তাপমাত্রা ছিল ১৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে, আজ একই সময়ে সেটি হয়েছে ১৩ দশমিক ৭।

আজ সকাল ৭টায় ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজ সকাল ৬টায় রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা ছিল ১৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৮৫ শতাংশ।

পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়, ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় দুপুর পর্যন্ত আবহাওয়া থাকতে পারে শুষ্ক। আকাশ কুয়াশাচ্ছন্ন থাকতে পারে। এ সময় উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৮ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। আজ সূর্যাস্ত ৫টা ২২ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় ৬টা ৪১ মিনিটে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শীতের দাপট আজও থাকবে, পড়বে ঘন কুয়াশা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
তাপমাত্রা খুব বেশি কমলেও আজ রোববার সকাল থেকে রাজধানী ঢাকার আকাশ কুয়াশাচ্ছন্ন। দেখা মেলেনি সূর্যের আলো। ছবি: আজকের পত্রিকা
তাপমাত্রা খুব বেশি কমলেও আজ রোববার সকাল থেকে রাজধানী ঢাকার আকাশ কুয়াশাচ্ছন্ন। দেখা মেলেনি সূর্যের আলো। ছবি: আজকের পত্রিকা

সারা দেশসহ রাজধানী ঢাকায় আজও রয়েছে শীতের দাপট। হাড়কাঁপানো এই শীতের সঙ্গে পড়েছে ঘন কুয়াশা। দেখা নেই সূর্যের। আজ মঙ্গলবার সারা দিন এমন আবহাওয়াই থাকবে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ ঢাকায় দিনের তাপমাত্রা সাধারণত অপরিবর্তিত থাকতে পারে। সেই সঙ্গে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে।

গতকাল সোমবার সকাল ৬টায় তাপমাত্রা ছিল ১৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে, আজ একই সময়ে সেটি কমে হয়েছে ১৩ দশমিক ৯।

আজ সকাল ৭টায় ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজ সকাল ৬টায় রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা ছিল ১৩ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৩ শতাংশ।

পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়, ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় দুপুর পর্যন্ত আবহাওয়া প্রধানত থাকতে পারে শুষ্ক। আকাশ অস্থায়ীভাবে মেঘলা থাকতে পারে। এ সময় উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। আজ সূর্যাস্ত ৫টা ২২ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় ৬টা ৪১ মিনিটে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজ শীত আরও বাড়বে, কাটছে না কুয়াশার চাদর

  • তিন দিন ধরে সূর্যের দেখা মিলছে না ঢাকাসহ প্রায় সারা দেশে।
  • কুয়াশায় ঢাকা থেকে দক্ষিণাঞ্চলে লঞ্চ চলাচল বন্ধ।
  • ঠান্ডা-কুয়াশায় বীজতলা নিয়ে শঙ্কায় কৃষক।
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ৪১
দেশজুড়ে বইছে তীব্র শীত। কনকনে ঠান্ডায় কাবু সাধারণ মানুষ। একটু উষ্ণতার জন্য রাজধানীর সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল এলাকায় আগুন পোহাচ্ছেন মাঝিরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
দেশজুড়ে বইছে তীব্র শীত। কনকনে ঠান্ডায় কাবু সাধারণ মানুষ। একটু উষ্ণতার জন্য রাজধানীর সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল এলাকায় আগুন পোহাচ্ছেন মাঝিরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বেশির ভাগ এলাকায় তিন দিন ধরে সূর্যের যেন দেখা নেই। কনকনে শীতে কাবু মানুষ। আর ঘন কুয়াশায় সড়ক, নৌ ও আকাশপথে যোগাযোগ বেশ ব্যাহত হচ্ছে।

এই অবস্থায় আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, আজ মঙ্গলবার সারা দেশে রাত ও দিনের তাপমাত্রা আরও কমতে পারে। তবে আগামীকাল বুধবার ও পরদিন বৃহস্পতিবার তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। আর শুক্রবার অপরিবর্তিত থাকতে পারে তাপমাত্রা।

টানা তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে এবার বোরো বীজতলাসহ ফসল নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকেরা। দেশের বিভিন্ন জেলায় বর্তমানে বোরো বীজতলা তৈরির মৌসুম চললেও কম তাপমাত্রা ও সূর্যের আলো না থাকায় অনেক এলাকায় বীজতলা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় নানা চেষ্টা চালালেও কাঙ্ক্ষিত সুফল মিলছে না।

গত রোববারের মতো গতকালও দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলায়। এদিন সেখানে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। নিকলী আবহাওয়া কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক আক্তারুজ্জামান ফারুক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

রাজধানীতে আগের দুই দিনের মতো গতকালও সারা দিনে সূর্যের দেখা পায়নি মানুষ। গতকাল সকাল ৬টায় ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার তাপমাত্রা ছিল ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর মধ্যে সন্ধ্যার পর বৃষ্টির মতো ঝিরঝির করে ঝরতে থাকে শিশির। এতে ভয়ানক কষ্টের মধ্যে পড়েছে ছিন্নমূল মানুষ।

ঘন কুয়াশা আরও ঘনীভূত হওয়ার আশঙ্কায় রাজধানীর সদরঘাট থেকে চাঁদপুরসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন রুটে সব ধরনের লঞ্চ চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়। গতকাল বিকেল সাড়ে ৫টা থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে বলে জানান বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শাহাদাত হোসেন।

সারা দেশে গ্রামাঞ্চলে শীতের প্রভাব পড়েছে ফসলি জমিসহ বোরো বীজতলায়। কৃষি বিভাগ ও কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তীব্র শীত ও কুয়াশার কারণে সৃষ্ট ‘কোল্ড ইনজুরি’-তে নাবি বীজতলার চারা পচে যাচ্ছে। এতে চলতি মৌসুমে বোরো আবাদে চারার সংকটের আশঙ্কা করছেন চাষিরা।

নওগাঁর মান্দা উপজেলা, যশোরের শার্শা, সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ, রংপুর জেলার আট উপজেলা, পঞ্চগড়, দিনাজপুরসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের কৃষকেরা বোরো বীজতলা নিয়ে দুশ্চিন্তার কথা বলেছেন।

ঘন কুয়াশা ও হাড়কাঁপানো শীতে জনজীবনও বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। টানা তিন দিন ধরে সূর্যের দেখা না মেলায় শিশির বৃষ্টির মতো ঝরছে। নওগাঁর মান্দা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় দেখা গেছে, কোল্ড ইনজুরি থেকে রক্ষার জন্য কৃষকেরা বোরো ধানের বীজতলা পলিথিন দিয়ে ঢেকে দিচ্ছেন। যেসব বীজতলা ঢেকে রাখা হয়নি, সেগুলোর চারা হলুদ ও বিবর্ণ হয়ে গেছে।

মান্দার নাড়াডাঙ্গা গ্রামের কৃষক আফজাল হোসেন বলেন, ‘এক সপ্তাহ আগে তৈরি করা বীজতলায় সবে চারা উঠতে শুরু করেছে। কিন্তু কয়েক দিন ধরে সূর্যের আলো না থাকায় দুশ্চিন্তায় আছি। পরিস্থিতি এভাবে চললে পলিথিন দিয়ে বীজতলা ঢেকে দিতে হবে, এতে বাড়তি খরচ পড়বে।’

মান্দা উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, বিরূপ আবহাওয়া অব্যাহত থাকলে রোপণের সময় চারার সংকট দেখা দিতে পারে। এ কারণে কৃষকদের বীজতলা পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

এদিকে ঘন কুয়াশার কারণে দিনের অধিকাংশ সময় সড়কে যানবাহনকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে। প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন না। এতে হাটবাজারে ক্রেতার উপস্থিতি কমে গেছে। বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষ, বিশেষ করে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও চার্জার ভ্যানচালকেরা।

নওগাঁর বদলগাছী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের পর্যবেক্ষক হামিদুল হক জানান, পৌষ মাসের মাঝামাঝি সময় চলছে। সামনের দিনগুলোতে শীতের তীব্রতা আরও বাড়তে পারে। চলতি মাসেই এ অঞ্চলে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে। সোমবার বহির্বিভাগে ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত ৩৫৬ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। এদের মধ্যে শিশু ও বয়স্ক রোগীর সংখ্যা বেশি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শীতে কাঁপছে সারা দেশ, রাতে তাপমাত্রা আরও কমবে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
যশোরে টানা দুইদিন সূর্যের দেখা নেই। ছবি: আজকের পত্রিকা
যশোরে টানা দুইদিন সূর্যের দেখা নেই। ছবি: আজকের পত্রিকা

মাঘ মাস আসতে এখনো অনেক বাকি। আজ সোমবার কেবল ১৪ পৌষ। তবে এখনই হাড়কাঁপানো শীত পড়েছে দেশজুড়ে। আজ সকাল ৬টায় দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল কিশোরগঞ্জের নিকলীতে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় রাজধানী ঢাকায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ রাতে সারা দেশেই তাপমাত্রা আরও কমতে পারে।

আজ সকাল ৯টা আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারা দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকতে পারে।

পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজ সকালে দেশের বিভাগীয় শহরগুলোর মধ্যে রাজশাহীতে তাপমাত্রা ছিল ১২ দশমিক ৪, রংপুরে ১৩, ময়মনসিংহে ১৩ দশমিক ৬, সিলেটে ১৪ দশমিক ৫, চট্টগ্রামে ১৫ দশমিক ৭ এবং খুলনা ও বরিশালে ১৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

কুয়াশার কারণে দেশজুড়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিঘ্ন হতে পারে উল্লেখ করে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ঘন কুয়াশার কারণে বিমান চলাচল, অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন এবং সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা সাময়িকভাবে ব্যাহত হতে পারে।

এ ছাড়া সারা দেশে আজ রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ার কারণে দেশের অনেক জায়গায় শীতের অনুভূতি অব্যাহত থাকতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত