Ajker Patrika

নাটক দেখাল আমরা কোথায়

রাশেদ নিজাম, ঢাকা
আপডেট : ২৬ জুলাই ২০২১, ১২: ২৮
নাটক দেখাল আমরা কোথায়

‘আল্লাহ অনেক পছন্দের একজনকে আমাকে দিয়েছেন। আমি তাকে লালন-পালন করছি। আমার স্বামীও আমার সন্তানকে সেভাবেই দেখভাল করছে। যে নাটকটি নিয়ে কথা উঠেছে, সেটি নিয়ে আসলে বলার কিছু নাই। যারা এভাবে নাটকের মধ্যে গল্প উপস্থাপন করেছেন, এটা তাঁদের লজ্জা। আমি মনে করি, এখানে লেখকের নিকৃষ্ট মানসিকতার পরিচয় দেওয়া হয়েছে। এখানে সচেতনতার দরকার। আপনারা গণমাধ্যমকর্মী এ ব্যাপারে কীভাবে সচেতনতা বাড়ানো উচিত, সেটা জানেন।’ আজকের পত্রিকার কাছে এভাবেই মনোভাব প্রকাশ করছিলেন মা আসমা রেজা।

গত শনিবার রাত থেকে দেশের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনা চলছে ‘ঘটনা সত্য’ নামের একটি নাটক ঘিরে। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সিএমভি তাদের ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করেছিল নাটকটি। যাতে অভিনয় করেছেন এই সময়ের জনপ্রিয় জুটি আফরান নিশো ও মেহজাবীন চৌধুরী। পরিচালনা করেছেন রুবেল হাসান।

গল্পটি ছিল এমন, পাশাপাশি দুটি ফ্ল্যাটের গাড়িচালক ও গৃহপরিচারিকা মুকুল (নিশো)-বিলকিছ (মেহজাবীন)। বিলকিছ সস্তা-পচা সবজি কিনে আনে বাজার থেকে। ফ্রিজে রাখা খাবার এঁটো করে, বাসায় অন্যের কসমেটিকস ইচ্ছেমতো ব্যবহার করে অপচয় করে। আর মুকুল মিথ্যা বলে, গাড়িতে অন্য যাত্রী বহন করে, লুকিয়ে গাড়ির তেল বিক্রি করে। ঘটনাক্রমে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তারপর বিয়ে ও সন্তান জন্ম হয়। কিন্তু সন্তানটি হয় বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু (স্পেশাল চাইল্ড)। নাটকের শেষে দেখানো হয় তাদের নেতিবাচক কর্মফলের জন্যই এমন শিশুর জন্ম হয়েছে, যা মা-বাবার পাপের ফল।

সবশেষ সরকারি হিসাবে (২০১৩-১৪ সালের জরিপ), দেশে মোট প্রতিবন্ধী মানুষের সংখ্যা প্রায় ২৪ লাখ। যার মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ শিশু। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের হিসাবে, বর্তমানে এ সংখ্যা প্রায় ১৫-১৮ লাখ। মানে মোট জনসংখ্যার প্রায় শূন্য দশমিক ১ শতাংশ শিশু বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন। এদের মধ্যে শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী ছাড়াও দৃষ্টি, শ্রবণ ও বাক্‌প্রতিবন্ধী শিশুও রয়েছে।

গত শনিবার রাত থেকেই ‘ঘটনা সত্য’ নাটকের বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয় সামাজিক মাধ্যমে। প্রতিবন্ধী শিশুদের নিয়ে যারা কাজ করে, এমন বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান প্রতিবাদ শুরু করে; বিশেষ শিশুদের অভিভাবক ও স্বজনেরাও নিজেদের অবস্থানের কথা জানাতে থাকেন।

‘আপনারা যে কাজটা করলেন, আমরা শহরে থাকা বাবা-মায়েরা ম্যানেজ করে চলা শিখে গেছি। কিন্তু যেসব বিশেষ শিশুর বাবা-মা গ্রামে বা মফস্বলে থাকেন, তাঁদের ওপর দিয়ে কী যাবে, বিষয়টি একবারও ভেবেছেন?’ গতকাল ফেসবুক লাইভে এসে এ কথা বলেন আমরিন জামান। তিনি একজন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুর মা। ২০১১ সালে সন্তান জন্ম নেওয়ার পর কী কী ধরনের সামাজিক উপহাস, কটু কথা শুনে ১০ বছর পার হয়েছে, তা-ও তুলে ধরেন আমরিন।

উপস্থাপক ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব আব্দুন নূর তুষার তাঁর ফেসবুক স্ট্যাটাসে তথ্যমন্ত্রীকে ট্যাগ করে দাবি তোলেন সম্প্রচার পর্যবেক্ষণ কমিশনের।

গতকাল ভোর ৪টার দিকেই সিএমভি তাদের ইউটিউব থেকে সরিয়ে নেয় নাটকটি। তবুও সামাজিক মাধ্যমে থামেনি আলোচনা। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান চাইল্ড ফাউন্ডেশন তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে এমন নির্মাণের। এক বিবৃতিতে ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান তাহরিন আমান জানান, এই নাটকের দৃশ্যপটে চরম মিথ্যা এবং কুসংস্কার দেখানো হয়েছে। সংস্থাটির সহপ্রতিষ্ঠাতা আনোয়ারা আনা আমান বলেন, ‘আমরা শুধু প্রতিবাদ জানিয়ে থেমে যাব এমন না, আইনি ব্যবস্থা নিয়েও ভাবছি। মানুষকে এভাবে অপমান করার অধিকার তাদের কেউ দেয়নি।’

সোসাইটি ফর দ্য ওয়েলফেয়ার অব অটিস্টিক চিলড্রেন (সোয়াক), সানিয়াত রহমান অটিজম গ্রুপ, স্মাইলিং চিলড্রেন স্পেশাল স্কুলসহ বিশেষ শিশুদের নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠানগুলো এমন কনটেন্ট বানানোর নিন্দা ও দোষী ব্যক্তিদের শাস্তির দাবি জানিয়েছে সরকারের কাছে।

যা বলছেন নির্মাতারা
সমালোচনার মুখে গতকাল সব গণমাধ্যমে নিজেদের ভুল স্বীকার করে একটি বার্তা পাঠানো হয় প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সিএমভির পক্ষ থেকে। সেখানে বলা হয়, ‘প্রিয় দর্শক, “ঘটনা সত্য” নাটকের নাট্যকার, পরিচালক, প্রযোজক, শিল্পী এবং কলাকুশলীদের পক্ষ থেকে আমরা গভীরভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। আপনাদের অনেকেই জানিয়েছেন, এ নাটকের মাধ্যমে ভুল বার্তা দেওয়া হয়েছে। অভিযোগটির সঙ্গে আমরা সহমত পোষণ করছি। বিষয়টি একেবারেই অনাকাঙ্ক্ষিত।’ ওই বার্তায় আরও বলা হয়, ‘আমরা সঙ্গে সঙ্গেই নাটকটি ইউটিউব থেকে সরিয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নিই। প্রয়োজনীয় সংশোধনের পর নাটকটি পুনরায় আবারও পরবর্তী সময়ে প্রকাশ করা হবে।’

পরিচালক রুবেল হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা গল্পটা অন্যভাবে দেখাতে চেয়েছিলাম। বার্তাটা এভাবে দিতে চাইনি। কাউকে কোনো কষ্ট দেওয়ার আমাদের কোনো ইচ্ছা ছিল না।’

কনটেন্ট সরিয়ে নিলেও মানসিক ধাক্কাটা যাবে না বলে মন্তব্য জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মেখলা সরকারের। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘নাট্যকার হয়তো বলতে চেয়েছেন আপনি যদি কোনো অপকর্ম করেন, সেটা ফিরে আসবে কর্মফল হয়ে। বিশেষ শিশুদের বাবা-মায়েরা ভীষণ সামাজিক চাপে থাকেন। আর এ রকম বিষয় তাঁদের মানসিক ধাক্কাটা আরও বাড়িয়ে দেয়।’

এ বিষয়ে যোগাযোগ করলে সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান বিষয়টিকে দুঃখজনক হিসেবে আখ্যায়িত করেন। বলেন, সরকার যেখানে নানা উদ্যোগ নিচ্ছে কুসংস্কার দূর করার, সেখানে এ যুগে এমন বিষয়বস্তু নিয়ে নাটক নির্মাণ খুবই দুঃখজনক।

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সম্প্রচার) মো. মিজান উল আলম বলেন, আপত্তিকর কোনো কিছু প্রচার হচ্ছে এমন ইউটিউব লিংকে পেলে সরকারের পক্ষ থেকে তা বন্ধ করতে ইউটিউবের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রটারড্যাম উৎসব দিয়ে যাত্রা শুরু ‘রইদ’ ও ‘মাস্টার’ সিনেমার

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

আগামী বছর ২৯ জানুয়ারি নেদারল্যান্ডসের রটারড্যাম শহরে শুরু হবে ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল রটারড্যামের ৫৫তম আসর। এই উৎসব দিয়ে যাত্রা শুরু করছে বাংলাদেশে দুই সিনেমা ‘রইদ’ ও ‘মাস্টার’। উৎসবে প্রিমিয়ার হবে সিনেমা দুটির। রইদ পরিচালনা করেছেন মেজবাউর রহমান সুমন, মাস্টার সিনেমার পরিচালক রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক প্রিমিয়ার হবে গত নভেম্বরে দেশের হলে মুক্তি পাওয়া মোহাম্মদ তাওকীর ইসলামের ‘দেলুপি’।

‘হাওয়া’ দিয়ে চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে অভিষেক হয় মেজবাউর রহমান সুমনের। প্রথম সিনেমাতেই বাজিমাত করেন তিনি। তিন বছর পর তিনি নিয়ে আসছেন দ্বিতীয় সিনেমা রইদ। গত বছর রইদ সিনেমার শুটিং শুরু করেছিলেন সুমন। এতে অভিনয় করছেন মোস্তাফিজ নূর ইমরান, নাজিফা তুষি, গাজী রাকায়েতসহ অনেকে। নির্মাতা জানিয়েছিলেন, সিনেমার বিস্তারিত জানানো হবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণার মাধ্যমে। অবশেষে গতকাল এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ট্রেলার প্রকাশ করে ঘোষণা দেওয়া হলো রইদ সিনেমার। এই সিনেমার প্রদর্শনী শুরু হচ্ছে রটারড্যাম উৎসবে। এরপর মুক্তি দেওয়া হবে দেশের হলে।

রইদ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে টাইগার প্রতিযোগিতা (মূল প্রতিযোগিতা) বিভাগে। নির্মাতা জানান, এই প্রথম বাংলাদেশের কোনো পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমা রটারড্যামের মূল প্রতিযোগিতা বিভাগে আমন্ত্রণ পেয়েছে। এই বিভাগে রইদসহ বিভিন্ন দেশের মোট ১২টি সিনেমা নির্বাচিত হয়েছে। এই সিনেমাগুলো থেকে নির্বাচকেরা বাছাই করবেন উৎসবের সেরা সিনেমা।

রইদ সিনেমার গল্প নিয়ে সুমন বলেন, ‘সাধু, তার পাগল স্ত্রী এবং তাদের বাড়ির পাশের তালগাছকে ঘিরে আবর্তিত এই গল্পে আমরা আদতে আদম ও হাওয়ার আদিম আখ্যানকেই খোঁজার চেষ্টা করেছি। আমরা সেই হাজার বছরের পুরোনো আখ্যানকে বর্তমানে পুনর্নির্মাণ করেছি, তবে সময়ের বর্তমানে নয়, বরং অনুভূতির বর্তমানে। এই সিনেমার প্রতিটি স্তরে জড়িয়ে আছে চিত্রশিল্পী এস এম সুলতানের দেখা গ্রামীণ বাংলার আবহ।’

মোস্তাফিজ নূর ইমরান ও নাজিফা তুষি। ছবি: সংগৃহীত
মোস্তাফিজ নূর ইমরান ও নাজিফা তুষি। ছবি: সংগৃহীত

রইদের গল্প লিখেছেন মেজবাউর রহমান সুমন ও সেলিনা বানু মনি। চিত্রনাট্য করেছেন মেজবাউর রহমান সুমন, জাহিন ফারুক আমিন, সিদ্দিক আহমেদ ও সুকর্ণ শাহেদ ধীমান। সিনেমাটি প্রযোজনা করেছে বঙ্গ, সহপ্রযোজনায় আছে ফেসকার্ড প্রোডাকশন।

এদিকে রাজনৈতিক থ্রিলার ঘরানায় রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত বানিয়েছেন মাস্টার। গত বছর এপ্রিলে শেষ হয়েছিল সরকারি অনুদানে নির্মিত এই সিনেমার শুটিং। মাস্টারের শুটিং-পরবর্তী কাজ হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত ছিলেন পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের শিল্পীরা। একটি উপজেলার স্থানীয় রাজনীতি এই সিনেমার প্রেক্ষাপট। সিনেমাটি প্রতিযোগিতা করবে রটারড্যাম উৎসবের বিগ স্ক্রিন কম্পিটিশন বিভাগে

গল্পে দেখা যাবে, জহির আহমেদ নামের এক শিক্ষক সমাজসেবায় এলাকাবাসীর কাছে জনপ্রিয়। ওই এলাকার উপজেলা নির্বাচনের সময় প্রার্থীর অভাব দেখা দেয়। তখন শিক্ষক জহির আহমেদকে প্রার্থী হিসেবে দেখতে চায় এলাকাবাসী। সবার অনুরোধে ভোটে দাঁড়িয়ে যায় জহির। ভোটে জয় পেয়ে চেয়ারম্যানও হয়। উপজেলার চেয়ারম্যান হওয়ার পর বদলে যায় ওই শিক্ষকের জীবন। জহির আহমেদ চরিত্রে অভিনয় করেছেন নাসির উদ্দিন খান। আরও আছেন আজমেরী হক বাঁধন, জাকিয়া বারী মম, ফজলুর রহমান বাবু, লুৎফর রহমান জর্জ, শরিফ সিরাজ প্রমুখ।

এদিকে রটারড্যাম উৎসবের ‘ব্রাইট ফিউচার’ বিভাগে প্রদর্শিত হবে দেলুপি। এই বিভাগে চলচ্চিত্র নির্মাতাদের বানানো প্রথম ও দ্বিতীয় সিনেমা নির্বাচিত হয়। দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জীবনের ঘটনা, বাস্তবতা আর সম্পর্কের গল্প থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে নির্মিত হয়েছে দেলুপি। অভিনয় করেছেন স্থানীয়রা। গত ৭ নভেম্বর খুলনায় মুক্তি পেয়েছিল দেলুপি। পরের সপ্তাহে দেশব্যাপী মুক্তি পায় সিনেমাটি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ফেব্রুয়ারিতে আরিফিন শুভর ‘জ্যাজ সিটি’, দেখা যাবে ৩ ভাষায়

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
‘জ্যাজ সিটি’ সিরিজে শুভ। ছবি: সংগৃহীত
‘জ্যাজ সিটি’ সিরিজে শুভ। ছবি: সংগৃহীত

ভারতীয় ওটিটি প্ল্যাটফর্ম সনি লিভের ওয়েব সিরিজ ‘জ্যাজ সিটি’তে অভিনয় করেছেন বাংলাদেশের আরিফিন শুভ। এমনটা জানা গিয়েছিল আগেই। গত সেপ্টেম্বরে সনি লিভের প্রমোশনাল ভিডিওতে কয়েক ঝলক দেখা মিলেছিল তাঁর। এবার জানা গেল সিরিজটির মুক্তির তারিখ। গতকাল ট্রেলার প্রকাশ করে ঘোষণা দেওয়া হলো, আগামী বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পাবে জ্যাজ সিটি, দেখা যাবে বাংলা, হিন্দি ও ইংরেজি ভাষায়।

জ্যাজ সিটি পরিচালনা করেছেন সৌমিক সেন। সর্বশেষ তিনি যুক্ত ছিলেন গত বছর মুক্তি পাওয়া জনপ্রিয় হিন্দি সিরিজ ‘জুবিলি’র সঙ্গে। বিক্রমাদিত্য মোতওয়ানের সঙ্গে যৌথভাবে সিরিজটির চিত্রনাট্য লিখেছিলেন সৌমিক। প্রেক্ষাপট ছিল চল্লিশের দশকের শেষের দিকের মুম্বাই শহর ও বলিউডের শুরুর দিকের ঘটনা। জুবিলির মতো নতুন এ সিরিজেও সৌমিক পর্দায় তুলে ধরেছেন পুরোনো প্রেক্ষাপট।

২ মিনিট ৩৬ সেকেন্ডের হিন্দি ভাষার ট্রেলারে দেখা গেল, ১৯৭০-৭১ সালের পশ্চিমবঙ্গের প্রেক্ষাপট। রয়েছে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রসঙ্গও। সেই সময়ে ভারত-পাকিস্তানের দ্বন্দ্বই মোটাদাগে তুলে ধরা হয়েছে এতে। ট্রেলার দেখে সহজেই আন্দাজ করা গেল, জ্যাজ সিটির কেন্দ্রীয় চরিত্রেই আছেন শুভ। তাঁর চরিত্রের নাম জিমি রয়। ট্রেলারে শুভকে হিন্দি ভাষাতেও কথা বলতে শোনা যায়, যা তিনি নিজেই ডাবিং করেছেন। শুভর বিপরীতে দেখা যাবে কলকাতার অভিনেত্রী সৌরসেনী মৈত্রকে। এ ছাড়া আরও আছেন কলকাতা ও হিন্দি সিনেমার একাধিক অভিনেতা।

জ্যাজ সিটি পশ্চিমবঙ্গে আরিফিন শুভর তৃতীয় ওয়েব কনটেন্ট। এর আগে তিনি অভিনয় করেছেন অরিন্দম শীলের ‘উনিশে এপ্রিল’ ও রাহুল মুখার্জির ‘লহু’তে। উনিশে এপ্রিল আলোর মুখ দেখলেও আটকে আছে লহু।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বান্দরবানের ম্রো শিশু ও সম্প্রদায়ের সদস্যদের নিয়ে ‘পাওমুম পার্বণ’

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
বান্দরবানের ম্রো শিশু ও সম্প্রদায়ের সদস্যদের নিয়ে ‘পাওমুম পার্বণ’

বান্দরবানের ম্রো শিশু ও সম্প্রদায়ের সদস্যদের অংশগ্রহণে আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দো ঢাকায় আয়োজন করা হয়েছে সপ্তাহব্যাপী সাংস্কৃতিক উৎসব। আজ থেকে শুরু হওয়া ‘পাওমুম পার্বণ ২০২৫’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠান চলবে ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এই আয়োজন ম্রো ভাষা, শিল্পকলা, সংগীত ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে তুলে ধরার পাশাপাশি রাজধানীতে প্রথমবারের মতো আদিবাসী শিশুদের সৃজনশীল কাজ প্রদর্শনের সুযোগ করে দেবে বলে জানিয়েছে আয়োজকেরা।

লামায় অবস্থিত পাওমুম থারক্লা একটি সম্প্রদায়নির্ভর বিদ্যালয়, যা গত ১০ বছরের বেশি সময় ধরে ম্রো ভাষা, সাংস্কৃতিক চর্চা এবং শিশু শিক্ষার উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। উৎসবে অংশ নেওয়া অনেক শিশুর জন্য এটিই পাহাড়ের বাইরে জীবনের প্রথম অভিজ্ঞতা।

উৎসবে শিশুদের তৈরি শিল্পকর্ম, বাঁশের কারুশিল্প, ফটোগ্রাফি, বুননের প্রদর্শনী, স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র এবং লাইভ পারফরম্যান্স যেমন ম্রো নৃত্য, গান ও ঐতিহ্যবাহী প্লাং বাঁশি উপস্থাপন করা হবে। এ ছাড়া সপ্তাহজুড়ে বিভিন্ন কর্মশালা, গাইডেড ট্যুর এবং সম্প্রদায়ভিত্তিক সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে।

পাওমুম থারক্লার সহপ্রতিষ্ঠাতা শাহরিয়ার পারভেজ বলেন, ‘আমাদের স্কুলটি শুরু হয়েছিল একটি ছোট বাঁশের ঝুপড়িতে, মাত্র কয়েকটি শিশু নিয়ে। গত এক দশকের বেশি সময় ধরে আমরা শিক্ষার মাধ্যমে তাদের ভাষা ও সাংস্কৃতিক পরিচয় রক্ষার কাজ করে যাচ্ছি। পাওমুম পার্বণ ২০২৫ শিশুদের জন্য একটি অনন্য সুযোগ, যাতে তারা পাহাড়ের বাইরে নিজেকে তুলে ধরতে পারে। আমরা সব অংশীদারের প্রতি কৃতজ্ঞ, যারা এই যাত্রাকে সম্ভব করেছেন।’

প্রতিদিন বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত (রোববার বন্ধ) চলবে এই আয়োজন। উৎসবটি সবার জন্য উন্মুক্ত। দর্শকেরা প্রদর্শনী ঘুরে দেখার পাশাপাশি শিশু ও সম্প্রদায়ের সঙ্গে মিশে ম্রো জনগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য উপভোগ করতে পারবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মঞ্চে আসছে ফারুক আহমেদ নির্দেশিত প্রথম নাটক ‘রঙমহাল’

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
ফারুক আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত
ফারুক আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

৪০ বছরের বেশি সময় নাটকের দল ঢাকা থিয়েটারের সঙ্গে যুক্ত অভিনেতা ফারুক আহমেদ। অভিনয় করেছেন দলটির অনেক নাটকে। তবে কখনোই দলটির হয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়নি তাঁর। অবশেষে ঢাকা থিয়েটারের নাট্যনির্দেশক হিসেবে হাজির হচ্ছেন ফারুক আহমেদ। আগামীকাল রাজধানীর বাংলাদেশ মহিলা সমিতির মিলনায়তনে সন্ধ্যা ৭টায় অনুষ্ঠিত হবে তাঁর নির্দেশিত ‘রঙমহাল’ নাটকের উদ্বোধনী প্রদর্শনী। এটি ঢাকা থিয়েটারের ৫৪তম প্রযোজনা।

রঙমহাল নাটকটি রচনা করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রুবাইয়াৎ আহমেদ। মঞ্চ পরিকল্পনায় আছেন অভিনেতা ও নির্মাতা আফজাল হোসেন। বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন নাসরিন নাহার, ফারজানা চুমকি, অনিকেত ইসলাম, তৌকির আলম, রতন, বাদলসহ অনেকে।

মহড়াকক্ষে নাটকের মঞ্চ পরিকল্পক আফজাল হোসেনের সঙ্গে নির্দেশক ফারুক আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত
মহড়াকক্ষে নাটকের মঞ্চ পরিকল্পক আফজাল হোসেনের সঙ্গে নির্দেশক ফারুক আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

রঙমহাল নিয়ে নির্দেশক ফারুক আহমেদ বলেন, ‘খুব ভালো একটা গল্প দেখা যাবে এই নাটকে। একবাক্যে যদি বলি, এটি সমাজের রূপ ও অরূপের আখ্যান। আমি রঙমহাল নাটকটিকে মোরাল প্লে হিসেবে অভিহিত করব। নৈতিক মূল্যবোধের নাটক। দর্শক এ কথার বিচার করবেন। আশা করছি নতুন ও পুরোনোর সম্মিলিত প্রয়াসে রঙমহাল হয়ে উঠবে সাম্প্রতিক সময়ের উল্লেখযোগ্য প্রযোজনা।’

নির্দেশনায় আসতে এত সময় নেওয়ার কারণ জানিয়ে ফারুক আহমেদ বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালে হলের নাট্যসম্পাদক ছিলাম। বেশ কয়েকটি নাটক নির্দেশনা দিয়েছিলাম। তবে ঢাকা থিয়েটারে এই প্রথম। ঢাকা থিয়েটারে অনেক বড় ও গুণী নির্দেশক ছিলেন এবং আছেন। বাচ্চু ভাই, জামিল ভাই, ফরীদি ভাইয়ের মতো মানুষ এখানে নির্দেশনা দিয়েছেন। তাঁদের অসাধারণ সব নাটকে অভিনয় করেছেন গুণী শিল্পীরা। তা ছাড়া ব্যক্তিগত কারণে অনেক দিন সরাসরি থিয়েটার করতে পারিনি। সমস্ত ধাপ পেরিয়ে এখন নাটক নির্দেশনা দিচ্ছি, এটা অনেক বড় প্রাপ্তি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত