Ajker Patrika

‘সামাজিক দায়বদ্ধতা খুব জরুরি’

মীর রাকিব হাসান
আপডেট : ১১ আগস্ট ২০২১, ১১: ৩৫
‘সামাজিক দায়বদ্ধতা খুব জরুরি’

আজকের পত্রিকা: জন্মদিন নিয়ে বিশেষ কোনো পরিকল্পনা আছে?
নিমা: এই করোনার মধ্যে সুস্থ আছি—এটাই বড় পাওয়া। বিশেষ কোনো পরিকল্পনা নেই। পরিবারের সঙ্গে আছি, তাদের সঙ্গেই এই দিনে ভালো সময় কাটানোর চেষ্টা করব।

আজকের পত্রিকা: শৈশবের জন্মদিনগুলো কীভাবে কাটাতেন?
নিমা: শৈশবে খুব ধুমধাম করে জন্মদিন পালন হতো। আমার জন্মদিনগুলো বেশির ভাগ সময়ই নাটকের দলের সঙ্গে কাটত। আমাদের বাসায় রীতি আছে, আমরা আগের দিন রাতে কেক কাটি। সেটা প্রতিবারই হয়। জানাই থাকে কেক কাটা হবে। আমার জন্মদিন সব সময়ই আয়োজন করে উদ্‌যাপনের চেষ্টা করি। আগে থেকেই আমার জন্মদিন নিয়ে বলতে থাকি, আমার জন্মদিন জন্মদিন। তারিক ও ছেলে আরিক মিলে ব্যবস্থা করে, সারপ্রাইজ রাখার চেষ্টা করে। কিন্তু আমি এত এক্সাইটেড থাকি যে ওদের সারপ্রাইজের খবরও জেনে যাই।

আজকের পত্রিকা: জন্মদিন নিয়ে বিশেষ কোনো স্মৃতি মনে পড়ে?
নিমা: ছোটবেলার একটা ঘটনা খুব মনে পড়ে জন্মদিন আসলেই। তখন আমার বয়স ছয় কি সাত বছর। বিটিভির নাটকের শুটিংয়ে ব্যস্ত ছিলাম। বলা হলো, সেদিন আমার জন্মদিনে কোনো আয়োজন করা হবে না। সবাই অনেক ব্যস্ত। আমার তো ভীষণ মন খারাপ হলো। তখন সুবর্ণার বাবা গোলাম মুস্তাফা সাহেব জিজ্ঞেস করলেন, ‘কী হলো, তোমার মন খারাপ কেন?’ তাঁকে জানালাম যে আজ আমার জন্মদিন। কিন্তু কোনো আয়োজন করতে পারছি না। উনি আফসোস করে উহু, আহা বললেন। উনি লাঞ্চের সময় পূর্বাণী হোটেলে খেতে যেতেন। সেখান থেকে উনি একটা কেক নিয়ে আসেন। আমার মা খাবার আনিয়ে বড় আয়োজন করে ফেললেন। সেদিনের সেই মানুষগুলো অনেকেই আমাদের মাঝে নেই। কিন্তু স্মৃতিগুলো রয়েই গেছে।

আজকের পত্রিকা: জন্ম ও বেড়ে ওঠা নিয়ে বলুন…
নিমা: জন্ম ঢাকাতেই। হলি ফ্যামিলি হসপিটালে। তখনকার দিনে হলি ফ্যামিলি হসপিটালে জন্ম হওয়া একটা বড় ব্যাপার। তখন নতুন হয়েছে হলি ফ্যামিলি হসপিটাল। বাবা জুট বিজনেস করতেন। বলতে পারি ধনার্ঢ্য পরিবারেই আমার জন্ম। বাবা পাকিস্তান আমলেই জুটের প্রথম সারির ব্যবসায়ী ছিলেন। নানা হচ্ছেন কবি গোলাম মোস্তফা। মোস্তফা মনোয়ার আমার মামা। একদিকে ব্যবসায়িক পরিবারের, অন্যদিকে কালচারাল। দুটো বিষয় দেখেই বড় হওয়া। তবে আজকের অবস্থানে আসার জন্য সবচেয়ে বড় ভূমিকা আমার মায়ের। খুব কালচারাল মাইন্ডের ছিলেন তিনি। মায়ের কাছ থেকেই প্রথমে কবিতা, ছড়াগান—এগুলো শিখি। মা–ই আমাকে নাটকে নিয়ে আসেন। স্টেজে নাটক করতে দেন। হাত ধরে শিল্প–সংস্কৃতির জগতে ওনার সঙ্গে হেঁটেছি।

আজকের পত্রিকা: বর্তমানে কাজের ব্যস্ততা কী নিয়ে?
নিমা: এখন বড় ব্যস্ততা ‘গুলশান এভিনিউ’–এর দ্বিতীয় সিজন নিয়ে। আমার পরিচালনায় ধারাবাহিকটি প্রচার হবে বাংলাভিশনে। যখন লকডাউন থাকছে না তখন শুটিং করছি। বাসায় বসে স্ক্রিপ্ট কারেকশন করছি। লকডাউনের কারণেই একটু দেরি হয়ে গেল। মাস খানেকের মধ্যেই প্রচারে আসবে ধারাবাহিকটি। দর্শক চাইলে এবারও আগের মতো লম্বা ধারাবাহিক করার ইচ্ছে আছে। এবারের অন্যতম চমক এর পাত্র-পাত্রী। বেশির ভাগ অভিনেতাই নতুন। গল্পেও চমক আছে। গুলশানের একটা বাসায় শুটিং করছি। বেশ বড় রকমের আয়োজন বলতে পারেন।

আজকের পত্রিকা: বাংলাদেশের চ্যানেলগুলোতে ডেইলি সোপ খুব একটা জনপ্রিয় হচ্ছে না কেন?
নিমা: কারণ, আমরা অতটা সিরিয়াস না। আমরা গল্পটাকে সিরিয়াসলি নিচ্ছি না। অভিনয়টাকে সিরিয়াসলি নিচ্ছি না। হয়তো অভিনয় সিরিয়াসলি নিচ্ছি গল্প ভালো হচ্ছে না। কলকাতায় তো সবাই চাকরির মতো কাজ করে। প্রত্যেক দিন ওদের শুটিং থাকে। একটা গল্পের মধ্যে বসবাস করে। আমাদের তো সেটা হয় না। সিরিয়াস হতে হলে সবাই মিলে কাজটা করতে হবে। বিভিন্ন মাধ্যমে যখন ছোট ছোট কনটেন্ট হচ্ছে, তখন টেলিভিশনের দর্শক ধরে রাখার জন্য মানসম্মত ডেইলি সোপ খুব জরুরি।

আজকের পত্রিকা: মঞ্চের খবর কী?
নিমা: মঞ্চ নিয়ে এখন কিছুই বলা যায় না। এই মুহূর্তে অনলাইনে কিছু ক্লাস নিয়েছি। কিছু ওয়ার্কশপ করার চেষ্টা করেছি। আসলে মঞ্চের কাজ অনলাইনে হয় না। মঞ্চের মজাটা মঞ্চেই। করোনা চলে গেলে আমরা আবার ফিরব।

আজকের পত্রিকা: অবসর কাটছে কীভাবে?
নিমা: বাসায় থাকি। পরিবারের জন্য রান্নাবান্না করি। গান শুনি। ঘুম আমার খুব প্রিয়। পুরোনো বন্ধুদের সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ হয়। বেশির ভাগই বিদেশে আছে। ওদের সঙ্গে কথা বললেও ভালো সময় কাটে। সেটা রেগুলার মেইনটেইন করার চেষ্টা করি। রোজ তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা না হলে মনে হয় কী যেন হলো না।

আজকের পত্রিকা: এই সময়ে মিডিয়ার অনেককেই নিয়ে নানা কথা উঠছে। এমনটা কেন হচ্ছে বলে মনে করেন?
নিমা: সামাজিক দায়বদ্ধতা জরুরি। আমি যে সমাজে বাস করি, সেই সমাজে আমার কাজটা কতটা নেতিবাচক ইমপেক্ট ফেলবে—তা নিয়ে যদি দায়বদ্ধতা না থাকে তাহলে তো শিল্পী হতে পারব না। শুধু শিল্পী কেন, সব পেশার মানুষেরই এই বোধটুকু থাকা উচিত। তা ছাড়া ডিসিপ্লিন মেইনটেইন করতে হয়। আমি মনে করি সেটাও একজন শিল্পীর বড় হওয়ার অন্যতম শর্ত। চর্চাও করতে হয়। রাতারাতি শিল্পী হওয়া যায় না। শিল্পী হতে হলে বেসিক কিছু গুণ থাকাও জরুরি। ব্যাকগ্রাউন্ডেরও একটা বিষয় আছে।

আজকের পত্রিকা: সেটা কেমন?
নিমা: আমরা কাজ করছি সেই ছোট থেকে। পাশাপাশি পড়াশোনাতেও কিন্তু বেশ সিরিয়াস ছিলাম। পরিবারও একটা বিষয়। আমরা কী করতে পারি, কতটা করতে পারি—সে বিষয়ে পরিবার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আমরা যখন শুরু করেছি, ভালো ভালো পরিবার থেকে মেয়েরা সংস্কৃতিজগতে আসত। সংস্কৃতিজগতে আসতে হলেই মনে হতো আমার জানাশোনা থাকতে হবে। মেধাবী মানুষেরা ছিলেন, তাঁদের সঙ্গে দুইকথা বলতে গেলে তো নিজেরও সেভাবে প্রস্তুতি থাকতে হতো। সেই শিক্ষাটা খুব ম্যাটার করে। এখনকার দিনে অনেকেই আসছে যাদের ব্যাকগ্রাউন্ড নিয়ে, জানাশোনা নিয়ে সন্দিহান। শুধু সৌন্দর্য মেইনটেইন করলেই হবে না। অনেক বই পড়তে হতো আমাদের। ওয়ার্কশপ করতে হতো। এগুলো তো এখন হয় না। পড়াশোনাটা তো একটা বিশাল ব্যাপার।

আজকের পত্রিকা: আপনাকে বাংলাদেশে ‘লাইফস্টাইল শো’–এর পাইওনিয়র বলা হয়। বর্তমান সময়ে শোগুলো কীভাবে দেখছেন?
নিমা: আমার করা ‘আমাদের কথা’ ভেঙেই এখন অনেক রকম শো হচ্ছে। রান্না, রূপচর্চা, ঘর সাজানো, সেলিব্রেটিদের সাক্ষাৎকার, এক্সারসাইজ—সব একসঙ্গে নিয়ে শো করেছি। এখনকার সময়ে আমরা মনে হয় ঠিক ধরতে পারছি না কোন জায়গাটা ধরলে সাকসেসফুল হবে। রিসার্চ দরকার প্রচুর। অনেক প্রোগ্রাম দরকার নেই। একটা ভালো প্রোগ্রাম হলেও একটা টেলিভিশন হিট হয়ে যেতে পারে। তাই সময় নিয়ে সেটা করা দরকার। আমরা অনেক বিষয়েই গড্ডলিকা প্রবাহে গা ভাসাচ্ছি।

আজকের পত্রিকা: পরিবার নিয়ে কিছু জানতে চাচ্ছি…
নিমা: পরিবারে আড্ডাটা খুব জরুরি। আমাদের পরিবারে নিয়মিত আড্ডা হয়। সংস্কৃতির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আড্ডা হয়। আমার পুত্রবধূ এগনেস র‍্যাচেল প্যারিস প্রিয়াংকা নাচের মেয়ে। ছেলে ফিল্ম বানায়। তারিক আনাম সাহেব তো আছেনই। এরা এগুলোর সঙ্গে রেগুলার আছেন। আমি সেখানে একটু চুপচাপই থাকি। ওদের সঙ্গে আড্ডায় বাইরের দুনিয়াটা এখন দেখতে পাই। এই আড্ডাটা আমাদের পরিবারের প্রাণ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

তিন বছর পর বিচ্ছেদের খবর দিলেন বিন্দু

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
বিন্দু। ছবি: সংগৃহীত
বিন্দু। ছবি: সংগৃহীত

২০১৪ সালে ব্যবসায়ী আসিফ সালাহউদ্দিন মালিককে বিয়ে করেন অভিনেত্রী আফসান আরা বিন্দু। বিয়ের পর শোবিজ থেকে পুরোপুরি নিজেকে গুটিয়ে নেন তিনি। অভিনয় ছেড়ে হয়ে ওঠেন সংসারী। বিয়ের চার বছর পর গুঞ্জন রটে, সংসার ভেঙেছে বিন্দুর। তবে বিচ্ছেদ নিয়ে তখন কোনো কথা বলেননি বিন্দু কিংবা তাঁর স্বামী। অবশেষে নিজের বিচ্ছেদের বিষয়টি নিশ্চিত করলেন অভিনেত্রী। সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বিন্দু জানান, ২০২২ সালে বিচ্ছেদ হয়েছে তাঁর।

২০২২ সালে বিচ্ছেদ হলেও ২০১৭ সাল থেকেই স্বামীর সঙ্গে সেপারেশনে ছিলেন বিন্দু। পাঁচ বছর পর তাঁরা চূড়ান্তভাবে বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন। বিন্দু বলেন, ‘অনেকেই মনে করেন, আমি এখনো বিবাহিত। কিন্তু না, আমার বিচ্ছেদ হয়ে গেছে। আমার সংসারের জার্নিটা অনেক ছোট ছিল।’

বিচ্ছেদের কারণ জানিয়ে বিন্দু বলেন, ‘আলাদা হওয়ার জন্য অনেক সময় বড় কারণ থাকে, বড় ঘটনা ঘটে। অনেক সময় আবার তেমন কোনো কারণও দরকার হয় না। আমার এই জার্নিতে আরও একজন মানুষ জড়িত। তারও ব্যক্তিগত জীবন আছে। বিচ্ছেদ নিয়ে কোনো ব্যাখ্যা দিয়ে তাকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলতে চাই না।’

২০০৬ সালে লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতা দিয়ে শোবিজে যাত্রা শুরু হয় বিন্দুর। অল্প দিনেই হয়ে ওঠেন মিডিয়ার নিয়মিত মুখ। অভিনয় থেকে বিরতি নেওয়ার আগে ২০১৪ সালের শুধু কোরবানির ঈদেই প্রচারিত হয় তাঁর অভিনীত ৫২টি নাটক। ছোট পর্দার পাশাপাশি বিন্দু অভিনয় করেছেন সিনেমাতেও।

ক্যারিয়ারের শুরুতে আরিফিন শুভর সঙ্গে জুটি বেঁধে অনেক নাটকে অভিনয় করেছেন তিনি। পর্দায় তাঁদের জুটি অনেক জনপ্রিয় ছিল। অনস্ক্রিন কেমেস্ট্রির প্রভাব পড়েছিল দুজনের বাস্তব জীবনেও। একসময় শুভর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান বিন্দু। সেই প্রেমের কথা স্বীকারও করেছেন অভিনেত্রী। কেন তাঁদের সম্পর্ক ভেঙে গিয়েছিল? বিন্দুর সংক্ষিপ্ত জবাব, ‘এর উত্তর আমার কাছে নেই। দুটি মানুষের জার্নি যে একসঙ্গে একই গন্তব্যে শেষ হবে, এমন তো কোনো কথা নেই।’

প্রায় এক দশকের বিরতি কাটিয়ে ২০২৩ সালে ‘উনিশ ২০’ ওয়েব ফিল্ম দিয়ে অভিনয়ে ফেরেন বিন্দু। মিজানুর রহমান আরিয়ানের পরিচালনায় এতে বিন্দুর বিপরীতে ছিলেন সেই আরিফিন শুভই। তবে এরপর আর কোনো কাজে দেখা যায়নি বিন্দুকে। তবে তিনি নিয়মিত অভিনয় করতে চান। বিন্দু বলেন, ‘শিল্পী হিসেবে কাজ করতে প্রস্তুত। এখন আমাকে নিয়ে কাজ করার চিন্তা, আমার পেছনে ইনভেস্ট করার বিষয়গুলো ভাবতে হবে। এমন ধরনের কাজ করতে চাই, যেগুলো এখনো করিনি। আমি চাই, নির্মাতারা আমাকে নিয়ে এমনভাবে ভাবুক, যেমনটা আগে ভাবা হয়নি।’

অভিনয় ছেড়ে দিয়ে বছর পাঁচেক আগে ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়েছেন বিন্দু। গুলশানে রয়েছে তাঁর একটি বুটিক হাউস। ‘আফসান বিন্দু ডিজাইনার স্টুডিও’ নামের এ ব্র্যান্ডের পোশাক বিন্দু নিজেই ডিজাইন করেন। ২০২০ সালে যখন প্রতিষ্ঠানটি শুরু করেন বিন্দু, তখন তাঁর কর্মীর সংখ্যা ছিল মাত্র একজন। তবে এখন তাঁর সঙ্গে ১৫ জন কাজ করেন বলে জানিয়েছেন অভিনেত্রী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‘ইত্যাদি’র নতুন পর্ব এবার চুয়াডাঙ্গায়

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’র দৃশ্য
ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’র দৃশ্য

নব্বইয়ের দশক থেকে স্টুডিওর চারদেয়ালের বাইরে বেরিয়ে শিকড়ের সন্ধানে দেশের নানা প্রান্তে শুটিং করা হচ্ছে ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ইত্যাদির। তারই ধারাবাহিকতায় ইত্যাদির নতুন পর্ব ধারণ করা হয়েছে ইতিহাস ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ প্রাচীন জনপদ চুয়াডাঙ্গায়।

এবারের ইত্যাদির মঞ্চ নির্মাণ করা হয়েছিল ব্রিটিশ আমলে তৈরি শতাধিক বছরের প্রাচীন হাজারদুয়ারি নামে খ্যাত ঐতিহ্যবাহী স্কুল নাটুদা মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে। এবারের পর্বে গান রয়েছে দুটি। একটি গান গেয়েছেন লোকসংগীতশিল্পী বিউটি ও পান্থ কানাই। গানটির কথা লিখেছেন মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান, সংগীতায়োজন করেছেন মেহেদী।

এ ছাড়া অনুষ্ঠানের শুরুতে চুয়াডাঙ্গার কৃষ্টিকথা ও ইতিহাসগাথা নিয়ে রয়েছে শাহ আলম সনির কথায় একটি পরিচিতিমূলক গানের সঙ্গে নৃত্য। গানটির সুর করেছেন হানিফ সংকেত, সংগীতায়োজন করেছেন মেহেদী। পরিবেশন করেছেন স্থানীয় নৃত্যশিল্পীরা। এ ছাড়া ইত্যাদির নতুন পর্বে থাকছে চুয়াডাঙ্গা নিয়ে কয়েকটি প্রতিবেদন। রয়েছে চুয়াডাঙ্গা জেলার ইতিহাস-ঐতিহ্যসহ এর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান-স্থাপনার ওপর একটি তথ্যভিত্তিক প্রতিবেদন।

ইত্যাদির নিয়মিত আয়োজন চিঠিপত্র পর্বে উঠে এসেছে চুয়াডাঙ্গার একজন ব্যতিক্রমী ছড়াকারের গল্প। আরও রয়েছে সামাজিক অসংগতি ও সমসাময়িক প্রসঙ্গনির্ভর নাটিকা। দানের নামে ফটোসেশন, সংসারের ভারে স্বপ্নভঙ্গ, মিষ্টি নিয়ে অনাসৃষ্টি, ইংরেজির দাপটে অসহায় বাংলা ভাষা, বোঝা না বোঝার বোঝা, স্টাইলিশ আইকনের বিপত্তি, লোম বাছতে কম্বল উজাড়সহ কয়েকটি নাট্যাংশে অভিনয় করেছেন সোলায়মান খোকা, সুভাশিষ ভৌমিক, আবদুল্লাহ রানা, আমিন আজাদ, কাজী আসাদ, মুকিত জাকারিয়া, আনোয়ার শাহী, শাহেদ আলী, জামিল হোসেন, আনন্দ খালেদ, তারিক স্বপন, আবু হেনা রনি প্রমুখ।

ইত্যাদির এই পর্ব দেখা যাবে ২৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ টেলিভিশনে রাত ৮টার বাংলা সংবাদের পর। ইত্যাদি রচনা, পরিচালনা ও উপস্থাপনা করেছেন হানিফ সংকেত। নির্মাণ করেছে ফাগুন অডিও ভিশন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‘মহাশূন্যে সাইকেল’ নাটকের চার দিনে সাত প্রদর্শনী

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
‘মহাশূন্যে সাইকেল’ নাটকের দৃশ্য
‘মহাশূন্যে সাইকেল’ নাটকের দৃশ্য

গত বছর ডিসেম্বরে মঞ্চে এসেছিল অনুস্বর নাট্যদলের নাটক ‘মহাশূন্যে সাইকেল’। বাংলাদেশ মহিলা সমিতিতে পাঁচ দিনে নাটকটির আটটি প্রদর্শনী হয়েছিল। বছর ঘুরে আবারও মহিলা সমিতির নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তনে মহাশূন্যে সাইকেল নাটকের প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে অনুস্বর। ২৪ থেকে ২৭ ডিসেম্বর টানা চার দিন দেখা যাবে নাটকের সাতটি প্রদর্শনী।

কথাসাহিত্যিক শাহাদুজ্জামানের লেখা একই শিরোনামের গল্প অবলম্বনে এর নাট্যরূপ দিয়েছেন লেখক নিজে। নির্দেশনায় সাইফ সুমন। ২৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় দেখা যাবে মহাশূন্যে সাইকেল। ২৫ থেকে ২৭ ডিসেম্বর প্রতিদিন বিকেল ৫টা ও সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় মঞ্চস্থ হবে আরও ছয়টি প্রদর্শনী।

নাট্যকার শাহাদুজ্জামান বলেন, ‘আমরা কিছু কথা অনেকের সঙ্গে বলি, কিছু কথা নির্দিষ্ট মানুষের সঙ্গে বলি আর কিছু কথা শুধু নিজের সঙ্গে বলি। যেকোনো ক্রান্তির সময় নিজের সঙ্গে এই বোঝাপড়ার মাত্রা এবং ব্যাপ্তি সম্ভবত বেড়ে যায়। মহাশূন্যে সাইকেলের মূল ভাবনাটা এ রকম। গত বছর এই গল্পের নাট্যরূপ দিই। একজন ব্যক্তি নিজেকে দুই ভাগ করে তার এই দুই সত্তার সঙ্গে মঞ্চে কথোপকথন করছে। দর্শক হিসেবে একজন ব্যক্তির এই একান্ত বিভক্ত সত্তার ভেতরে এই কথোপকথন দেখার ভেতরে একটা গোপন কৌতূহল হয়তো আছে। কিংবা নিজের সঙ্গে মিলিয়ে নেওয়ার আনন্দ আছে।’

নির্দেশক সাইফ সুমন বলেন, ‘ভোগবাদিতা আর ব্যক্তিস্বার্থের কারণে মানুষ এখন প্রতিনিয়তই পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে। পরিবার, বন্ধু, সমাজ থেকে ক্রমেই বিচ্ছিন্ন হচ্ছি আমরা। কখনো কখনো মানুষের মধ্যে বাস্তবের চেয়ে কল্পনা বা অলৌকিক জগৎ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। পরিবারের সঙ্গে থেকেও একা অনুভব করে। সেই কথাই বলার চেষ্টা হয়েছে নাটকে।’

মহাশূন্যে সাইকেল নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন মোহাম্মদ বারী, এস আর সম্পদ, প্রশান্ত হালদার, নুরুজ্জামান সরকার, রীমা প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নতুন লুকে চমকে দিলেন কিয়ারা আদভানি

বিনোদন ডেস্ক
কিয়ারা আদভানি। ছবি: সংগৃহীত
কিয়ারা আদভানি। ছবি: সংগৃহীত

‘কেজিএফ’ সিনেমার দুই পর্বের ব্যাপক সাফল্যের পর কন্নড় সুপারস্টার ইয়াশ যুক্ত হয়েছেন মালয়ালম নির্মাতা গিতু মোহনদাসের সিনেমায়। ‘টক্সিক: আ ফেয়ারিটেল ফর গ্রোনআপস’ নামের কন্নড় ভাষার এ সিনেমায় প্রথমবারের মতো ইয়াশের নায়িকা হয়েছেন কিয়ারা আদভানি। টক্সিকে কিয়ারার চরিত্রের নাম নাদিয়া। গতকাল প্রকাশ করা হয়েছে এ সিনেমায় কিয়ারার চরিত্রের লুক।

শোবিজে কিয়ারার এক যুগ হতে চলেছে। ২০১৪ সালে ‘ফুগলি’ দিয়ে যাত্রা শুরুর পর এ পর্যন্ত ২০টির মতো সিনেমায় অভিনয় করেছেন। প্রতিটিতেই দেখা দিয়েছেন বৈচিত্র্যময় চরিত্রে। তবে টক্সিকে কিয়ারার চরিত্রটি যে একেবারেই আলাদা হতে চলেছে, সে আভাস পাওয়া গেল সদ্য মুক্তি পাওয়া ফার্স্ট লুক পোস্টারে। এতে তাঁকে দেখা যাবে একজন সার্কাসশিল্পী হিসেবে।

ফার্স্ট লুক পোস্টারে আলো ঝলমলে সার্কাসের সেটে অফ-শোল্ডার ভেলভেট গাউন পরে দাঁড়িয়ে আছে কিয়ারা অভিনীত নাদিয়া চরিত্রটি। চোখে-মুখে বিষণ্নতা, ক্লান্তির ছাপ। সার্কাসের মঞ্চে জাঁকজমক আবহে নৃত্যরত যে শিল্পীকে দেখা যায় দর্শকের সামনে, তার মনের ভেতরে অনেক সময় চলে দুঃখের দোলাচল। ভেতরে জমাট কষ্ট নিয়েই হাসিমুখে দর্শকের সামনে পারফর্ম করে তারা। টক্সিকের পোস্টারে তেমনটাই ধরা পড়েছে। এমনই এক জটিল চরিত্র নিয়ে দর্শকের সামনে আসবেন কিয়ারা।

ভিএন প্রোডাকশন এবং মনস্টার মাইন্ড ক্রিয়েশনসের ব্যানারে নির্মিত বিগ-বাজেট সিনেমা টক্সিক মুক্তি পাবে ২০২৬ সালের ১৯ মার্চ। দক্ষিণি মেগাস্টার যশ ও কিয়ারার এই নতুন রসায়ন বড় পর্দায় দেখার জন্য এখন থেকেই অপেক্ষায় অনুরাগীরা। এতে আরও অভিনয় করেছেন নয়নতারা, তারা সুতারিয়া, হুমা কুরেশি, অক্ষয় ওবেরয় প্রমুখ।

ইংরেজি ও কন্নড়—দুই ভাষাতেই টক্সিক সিনেমার শুটিং করা হয়েছে। পাশাপাশি হিন্দি, তেলুগু, তামিল, মালয়ালমসহ বিভিন্ন ভাষায় ডাব করা হবে। এতে কিয়ারার পারফরম্যান্স নিয়ে নির্মাতা গিতু মোহনদাস বলেন, ‘কিছু পারফরম্যান্স শুধু পর্দায় নয়, প্রভাব ফেলে শিল্পীর জীবনেও। টক্সিক সিনেমায় কিয়ারা যা করেছে, তার কোনো তুলনা হয় না। সিনেমাটি নিয়ে আমাদের প্রথম আলাপের মুহূর্ত থেকেই তিনি চরিত্রটির প্রতি নিজেকে সম্পূর্ণ সমর্পণ করেছেন। তিনি শুধু নাদিয়া চরিত্রে অভিনয় করেননি, নিজেও চরিত্রটির মতো করেই যাপন করেছেন।’

প্রসঙ্গত, বলিউডের তারকা দম্পতি কিয়ারা আদভানি ও সিদ্ধার্থ মালহোত্রার সংসারে নতুন সদস্য এসেছে গত ১৫ জুলাই। এখন সন্তানকে নিয়েই পুরো সময়টা কাটছে অভিনেত্রীর। আর একটু একটু করে নিচ্ছেন আবার শোবিজে ফেরার প্রস্তুতি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত