Ajker Patrika

‘অমন পরিশীলিত সুরেলা কণ্ঠের দেখা মেলা ভার’

আপডেট : ১১ এপ্রিল ২০২১, ২০: ৫৭
‘অমন পরিশীলিত সুরেলা কণ্ঠের দেখা মেলা ভার’

রবীন্দ্রনাথের গানে আজন্ম নিবেদিত এক শিল্পীর নাম মিতা হক। রবীন্দ্রনাথের গানই ছিল যার জীবনের একমাত্র ব্রত। রবীন্দ্রসংগীতের অমিয় ধারায় নিজেকে সিক্ত করার পাশাপাশি পরবর্তী প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের মাঝেও ছড়িয়ে দিয়েছেন তার সংগীতলব্ধ জ্ঞান। নিরলস চেষ্টা ও অদম্য ইচ্ছাশক্তিকে আঁকড়ে ধরে সংগীত সাধনায় নিমগ্ন উজ্জ্বলতম এই নক্ষত্র হারিয়ে গেলেন চিরতরে।

রোববার (১১ এপ্রিল) চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তার নিকট স্বজন তারকারা স্মৃতিকাতর..

রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা । ছবি: সংগৃহীতরেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা

ভোরেই একজন কল দিয়ে বিষণ্ণ খবরটা জানালেন। আচমকা কল আর খবরটা পেয়ে আমি কোন কথা বলতে পারছিলাম না। কল রেখে শুয়ে রইলাম আরো কিছুক্ষণ। তারপর উঠে বাসার সবাইকে জানালাম। আমাদের পথচলাটা একসঙ্গে, আর হঠাৎ করেই সেটা থেমে গেল? মেনে নিতে পারছি না। মিতা আর আমার পড়াশোনা একই জায়গায়। শান্তিনিকেতন। বিষয়ও একই কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তাকে প্রথমে আমি চিনি ওয়াহিদ ভাইয়ের মেয়ে হিসেবে। সেই শুরু। এরপর তো দেশে ফিরে এলাম। মিতা ব্যস্ত হয়ে গেল রবীন্দ্রসংগীতে। আমিও তাই। সাংগঠনিকভাবে তিনি কাজ করে চললেন। তবে এই জায়গায় আমাদের যোগাযোগটা কম হলো। কারণ মিতা ছায়ানট ও রবীন্দ্র সম্মিলন পরিষদ নিয়ে কাজ করছিলেন। আমি গান ও পরবর্তী সময়ে সংগঠন সুরের ধারা নিয়ে ব্যস্ত হলাম। এরপর বহু কাজ করে গেছেন মিতা। বহু অনুষ্ঠানে আমরা একমঞ্চে দাঁড়িয়েছি, শিল্পী হিসেবে।

মনে আছে, ২০১৭ সালে চ্যানেল আই রবীন্দ্র উৎসবে তাকে আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয়। সেখানে আমিও ছিলাম। আজীবন সম্মান জানানোর মতোই ছিলেন তিনি। তার এই অসময়ে চলে যাওয়াটা সত্যিই কষ্টের। আমার চেয়ে বয়সে বছর পাঁচ ছোট হবে। আমিও করোনা পজিটিভ ছিলাম, এখন সুস্থ। ও ধাক্কাটা সামলে উঠতে পারল না। দীর্ঘদিন অসুস্থও ছিল, অবশেষে আমাদের ছেড়ে চলে গেল। আর যাওয়াটা এমন একটা সময়ে শেষ দেখা পাওয়ারও সুযোগ নেই। প্রার্থনা করি, এভাবে যেন আর কাউকে না হারাই।

শিমুল ইউসুফ । ছবি: সংগৃহীতশিমুল ইউসুফ

মিতার কন্ঠে সর্বশেষ যখন ‘যে রাতে মোর দুয়ার গুলি ভাঙলো ঝড়ে’ শুনছিলাম, আমি তখন ওর পিঠে মাথা গুজে অঝোর ধারায় কাঁদছিলাম। পৃথিবীতে ওর মতো করে ‘সার্থক জনম আমার জন্মেছি এই দেশে’ আর কেউ কোনদিন গাইতে পারবেনা। দর্শক সারিতে বসে ওর গান শুনতাম, আর চোখ ভিজে আসতো। এত আবেগ এত ভালভাসা সেই গানে। হায় মিতা আমাদের রাজনৈতিক ক্রান্তিকালে অমন উৎকন্ঠা নিয়ে আর কেউ ফোন করে জিজ্ঞেস করবেনা ‘শিমূল দি বাচ্চুভাই কে সাবধানে রাখো’। ওর অমৃত কন্ঠস্বর হয়তো ঈশ্বরকেও মুগ্ধ করেছে। তাই ওকে আমাদের কাছ থেকে নিয়ে গেল না ফেরার দেশে। কিন্তু আমার বুকে বেঁচে থাকবে যতদিন আমি বাঁচবো। মিতা আর যুব (খালেদ খান)-কে নিয়ে আমার স্মৃতির ভাণ্ডার কোনদিন ফুরাবে না।

নিমা রহমান । ছবি: সংগৃহীতনিমা রহমান

মিতা আমার প্রাণের বন্ধু। ওর গান শুনতে শুনতে একসময় আমি ঘুমাতে যেতাম। ঘুম থেকে উঠতাম ওর গান শুনতে শুনতে। রবীন্দ্র দর্শনকে ধারণ করেই মিতা বড় হয়েছে। পরচর্চা করেছে, নেতিবাচক কিছু বলেছে তা আমি কখনো শুনিনি। রবীন্দ্র চর্চা ওকে একজন শুদ্ধ মানুষ হিসেবেই গড়ে তুলেছে। অমলিন একটা মানুষ ছিল। কখনোই কারো পেছনে কোন দোষ বলতেন না। ও নাকি কারো দোষই খুঁজে পেত না। মিতা সরল মনের মানুষ ছিলেন। আমার পারিবারিক বন্ধু। ওর মেয়ে জয়ীতা আমার ছেলের আরিকের সবচেয়ে কাছের বন্ধু। একসঙ্গে বড় হয়েছে ওরা। জয়ীতা বাবা মা দুজনকেই হারাল, আমি তারিক আছি ওর জন্য। আমরা নিজের সন্তানের মতো ওকে স্নেহ করি।

তপন মাহমুদ । ছবি: সংগৃহীততপন মাহমুদ

মিতাকে আমি কম হলেও ৩৫ বছর আগে থেকে জানি। লালমাটিয়া গার্লস কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। বার্ষিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন। আমি সেখানে গিয়েছিলাম বিচারক হিসেবে। একটা রবীন্দ্রসঙ্গীত গাইলেন। প্রথম হলেন। এত সুন্দর কণ্ঠ যে আজও ভুলিনি। অনুষ্ঠান শেষে ওর পরিচয়ও জানলাম সেদিন। আমাদের বহু অনুষ্ঠানে মিতাকে নিয়ে এই স্মৃতিটা আমি বলতাম। এটা বলতে আমার ভীষণ ভালো লাগত। আস্তে আস্তে তিনি গানে জোরালোভাবে সম্পৃক্ত হলেন। তারপরই আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা পেলেন। আমি অস্ট্রেলিয়াতে থাকলেও আমাদের যোগাযোগ ছিল। বয়সে আমার অনেক ছোট। কাজ করতে করতে সম্পর্কটা ভাইবোন ও বন্ধুর মতো হয়ে গিয়েছিল। আমি আপনি করেই বলতাম। শেষ হয়ে গেল সব।

নাসির উদ্দিন ইউসুফ । ছবি: সংগৃহীতনাসির উদ্দিন ইউসুফ

আহা! অমন পরিশীলিত সুরেলা কণ্ঠের দেখা মেলা ভার। আর মিলবে কিনা জানি না। জীবন ও শিল্পের এমন শুদ্ধতম মিলন কালেভদ্রে ঘটে। আনন্দের মাঝেই জীবন উথলিয়া ওঠে একথা মিতাকে দেখলেই মনে হতো। দু:খকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়ে জীবনের আনন্দে শিশুর মত করতালি দিতো। এইতো মাত্র সাতদিন আগে হাসপাতাল থেকে ফোনে চিৎকার করে বলে- বাচ্চুভাই, আমারতো এইখানে ভাল্লাগেনা, ভাল্লাগেনা, ভাল্লাগেনা। আমারে বাসায় নিয়ে যায়না কেন! তার দু'তিনদিন পর কন্যা জয়ীতা ও সন্তানসম শাহীন ওদের করোনামুক্ত মাকে কেরাণীগঞ্জের বাসায় নিয়ে যায়। কিন্তু পরশু হঠৎই শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে আবারো হাসপাতাল।আর আজ প্রত্যুষে আমার কন্যা এশা ও পুত্রবৎ সাকি হাসপাতাল থেকে ফিরে জানালো ‘মিতামা’ মারা গেছে। আমি নির্বাক। নিস্তব্ধতায় নিমজ্জিত হই। ভাবি মিতার মত জীবনকে ভালেবাসতে আমি কাউকে দেখিনি। এমনভাবে কাউকে জীবন উদযাপন করতে দেখিনি। শত কষ্ট-দু:খের মাঝে কলকলিয়ে এভাবে হাসতেও দেখিনি কাউকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার প্রয়াণে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া

সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রয়াণে শোকের ছায়া নেমেছে দেশে। শোকাহত দেশের সাংস্কৃতিক ব্যক্তিরাও। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট দিয়ে নিজেদের অনুভূতি জানিয়েছেন তাঁরা। অনেকেই করেছেন স্মৃতিচারণা। শোক জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান।

বিনোদন ডেস্ক
বেগম খালেদা জিয়া।	ছবি: সংগৃহীত
বেগম খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত

তাঁর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে

—হানিফ সংকেত, নির্মাতা ও উপস্থাপক

সর্বজন শ্রদ্ধেয় তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া আমাদের ছেড়ে চিরবিদায় নিয়েছেন। তাঁর মৃত্যুতে জাতি হারিয়েছে একজন অভিভাবক। দেশ ও জাতির কল্যাণে তাঁর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। তাঁর মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাঁকে জান্নাতুল ফিরদাউস নসিব করুন। তাঁর শোকাবহ পরিবারের সকল সদস্যের প্রতি গভীর সমবেদনা।

আমার হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে

—মনির খান, সংগীতশিল্পী

২০১১ সালে আমি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেলাম, তখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। হাতে পুরস্কার ও গলায় মেডেল পরিয়ে দিয়ে বলেছিলেন, ‘তোমাকে অনেক দূর যেতে হবে।’ একপর্যায়ে তিনি আমাকে জাসাসের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংস্কৃতিক কমিটির সহসংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক বানালেন। সেই সুবাদে ম্যাডামের সঙ্গে দেখা হতো, কথা হতো। উনি বিভিন্ন পরামর্শ দিতেন, নির্দেশনা দিতেন কীভাবে কাজ করতে হবে।

বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুর সংবাদ শুনে হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে আমার, কোনোভাবেই মানতে পারছি না। কিছু চলে যাওয়া পাহাড় সমান বেদনার। অনেকবার তিনি মৃত্যুর দ্বারপ্রান্ত থেকে ফিরে এসেছেন। বারবার এসেছে তাঁর বিদেশে যাওয়ার প্রসঙ্গ। উনি প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, ‘এ দেশের মাটি ও মানুষ ছাড়া বিদেশের মাটিতে আমার কোনো ঠিকানা নেই। দেশের মানুষের অন্তরেই আমার বসবাস। এখানেই আমার মৃত্যু হবে, এই মাটিতেই আমার কবর হবে।’ তাঁর কথাই সত্য হলো।

তিনি দেশপ্রেমের উৎকৃষ্ট উদাহরণ

—কনকচাঁপা, সংগীতশিল্পী

চলে গেলেন স্মরণকালের সর্বশ্রেষ্ঠ আপসহীন অবিসংবাদিত নেতা বেগম খালেদা জিয়া। বারবার তাঁর নামের সঙ্গে উচ্চারিত হয় ‘আপসহীন’। তিনি অন্যায়, মিথ্যাচার, স্বৈরচারিতার কাছে মাথা নত করেননি। দেশের মানুষের মায়ায় তিনি সংসার, সন্তান, আরাম-আয়েশি বিলাসী জীবন—কিছুর তোয়াক্কা করেন নাই। আফসোস, একটা মিথ্যা মামলার কারণে তিনি সুন্দরভাবে জীবনের সমাপ্তি টানতে পারলেন না। জেলখানায় তাঁর জীবন কীভাবে কেটেছে তা ভেবে গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠত। অথচ তিনি থাকতেন নির্ভার! এ জন্যই তিনি অকুতোভয় জীবনযোদ্ধা, মৃত্যুঞ্জয়ী মহামানবী। তাঁর স্পষ্ট উচ্চারণ ছিল, ‘জীবনে যা কিছু হয়ে যাক এই দেশ, এই দেশের মানুষ ছেড়ে আমি কোথাও যাব না।’ দেশপ্রেমের উৎকৃষ্ট উদাহরণ তিনি, তিনিই প্রকৃত রাজনীতিবিদ এবং খাঁটি দেশনেতা। আমাদের দুঃখ রাখার জায়গা নেই যে আমরা তাঁকে সঠিক মর্যাদা দিতে পারিনি।

বড় দুঃসময়ে বিদায় নিলেন তিনি

—জয়া আহসান, অভিনেত্রী

বেগম খালেদা জিয়া বড় দুঃসময়ে বিদায় নিলেন। সামনে নির্বাচন আর গণতন্ত্রের জন্য মানুষ অপেক্ষা করছে। তাঁর উপস্থিতির মূল্যই ছিল অসামান্য। রাজনীতিতে মত-পথের বিরোধ থাকবে। কিন্তু সামরিক শাসনবিরোধী এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে বেগম জিয়া ছিলেন প্রধান একটি চরিত্র, সাহসে ও নেতৃত্বে উজ্জ্বল। তাঁর সঙ্গে দেশের দীর্ঘ রাজনৈতিক আন্দোলনের একটি অধ্যায় শেষ হলো। তাঁর আত্মা চির প্রশান্তি লাভ করুক।

শত প্রতিকূলতায়ও মর্যাদা ও ধীর-স্থিরতায় নিজেকে ধারণ করেছেন তিনি

—আজমেরী হক বাঁধন, অভিনেত্রী

আমাদের জাতির রাজনৈতিক ইতিহাসে বেগম খালেদা জিয়া ছিলেন একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। তাঁর নেতৃত্ব ও দীর্ঘদিনের জনসেবা বাংলাদেশের ওপর স্থায়ী ছাপ রেখে গেছে। তিনি অসাধারণ এক জীবন যাপন করেছেন। নানা প্রতিকূলতার মাঝেও যে মর্যাদা ও ধীর-স্থিরতায় নিজেকে ধারণ করেছেন তিনি, তা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তিনি অত্যন্ত দৃঢ়তা ও সহনশীলতার পরিচয় দিয়েছেন। জাতি তাঁকে সম্মান, কৃতজ্ঞতা ও শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে।

তাঁর প্রয়াণে দেশ ও জাতির বিশাল ক্ষতি হয়ে গেল

—বেবী নাজনীন, সংগীতশিল্পী

বেগম খালেদা জিয়া দেশ এবং মানুষের জন্য যে ত্যাগ স্বীকার করেছেন, রাজনীতির ইতিহাসে তা নজিরবিহীন। তাঁর মৃত্যুতে দেশ ও জাতির বিশাল ক্ষতি হয়ে গেল। তাঁকে হারানোর দুঃখ মানুষের মনে সব সময় বিরাজমান থাকবে।

খালেদা জিয়া হলো একটা ইনস্টিটিউশন। তাঁর সঙ্গে থেকে অনেকে অনেক কিছু শিখেছে। তিনি বাংলাদেশের মানুষের অভিভাবক ছিলেন। দলের নেতা-কর্মীদের হাতে-কলমে শিখিয়েছেন কীভাবে রাজনীতি করতে হয়। আমারও হাতেখড়ি তিনিই দিয়েছেন।

তাঁর সঙ্গে আমার অনেক স্মৃতি। আমার মতো তাঁর কাছাকাছি আর কেউ হয়তো থাকেনি। উনি জেলে যাওয়ার আগে আমার সঙ্গে দেখা হয়েছিল। খুব আদর ও স্নেহ করে বলেছিলেন, ‘ভালো থেকো, নিজের যত্ন নিও। তোমরা দেশ বাঁচাও এবং দেশের মানুষ বাঁচাও।’

এই অন্তিম যাত্রায় তিনি যেমন মানুষের দোয়া নিয়ে গেছেন, তেমনি দেশের মানুষের জন্য রেখে গেছেন আশীর্বাদ, যা আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণে মানুষের মাঝে গণতান্ত্রিক শক্তি হয়ে কাজ করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ফিরে দেখা /হিট সিনেমার সংখ্যা বেড়েছে

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ২০
‘বরবাদ’ সিনেমার পোস্টার। ছবি: সংগৃহীত
‘বরবাদ’ সিনেমার পোস্টার। ছবি: সংগৃহীত

‘মধ্যবিত্ত’ দিয়ে বছর শুরু, ‘খিলাড়ি’ দিয়ে বছর শেষ। সব মিলিয়ে ২০২৫ সালে মুক্তি পেয়েছে ৪৬টি বাংলা সিনেমা। কিন্তু আলোচনা তৈরি করতে পেরেছে কয়টি, সেটাই বড় প্রশ্ন। দুই ঈদ ছাড়া ইদানীং বাংলা সিনেমা দেখতে প্রেক্ষাগৃহে দর্শকের দীর্ঘ লাইন চোখে পড়ে না। নির্মাতারাও চান যেকোনো উৎসবে সিনেমা আনতে। ফলে পুরো বছর সিনেমার খরায় ভুগতে থাকে প্রেক্ষাগৃহগুলো।

এই সংকট কিছুটা হলেও পূরণ করেছে সরকারি অনুদানের এবং স্বাধীন নির্মাতাদের কম বাজেটের সিনেমাগুলো। এ বছর যত সিনেমা মুক্তি পেয়েছে, বেশির ভাগই এ ধরনের। অনেক বছর ধরে আটকে থাকা সিনেমা মুক্তির হিড়িক ছিল বছরজুড়ে, বিশেষ করে সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বরে। প্রচার ছাড়া অনেকটা দায়সারাভাবে মুক্তি দেওয়া এসব সিনেমা নিয়ে দর্শকদের মধ্যে আগ্রহ তো ছিলই না, নির্মাতারাও তাঁদের কাজ পৌঁছে দিতে অত গরজ দেখাননি। যেন অনেক দিনের বোঝা কাঁধ থেকে নামাতে পেরে দায়মুক্ত হয়েছেন তাঁরা! ‘মেকাপ’, ‘রিকশা গার্ল’, ‘জলে জ্বলে তারা’, ‘ময়না’, ‘অন্তরাত্মা’, ‘অন্যদিন’, ‘জলরঙ’, ‘নন্দিনী’, ‘স্বপ্নে দেখা রাজকন্যা’, ‘মন যে বোঝে না’সহ ১৯টি সিনেমা আছে এ তালিকায়।

২০২৪ সালের সঙ্গে তুলনা টানলে এ বছর ঢালিউডে হিট সিনেমার সংখ্যা বেড়েছে। শাকিবের ‘তুফান’ই ছিল গত বছরের একমাত্র ব্যবসাসফল সিনেমা। তবে ২০২৫ সালে পাঁচটির বেশি সিনেমা দর্শকদের হলমুখী করতে পেরেছে। যদিও বড় বাজেট, বড় তারকা আর বড় ক্যানভাসের সিনেমাগুলোই সব মনোযোগ কেড়ে নেয়। চলচ্চিত্রের মতো গ্ল্যামারাস ইন্ডাস্ট্রিতে জনপ্রিয়তা আর টাকার উদ্‌যাপনই স্বাভাবিক। যে কারণে, এ বছরও শাকিব খানের ‘বরবাদ’, ‘তাণ্ডব’ এবং আফরান নিশোর ‘দাগি’কে কেন্দ্র করে ব্যাপক আলোচনা ও প্রত্যাশা ছিল। বরবাদ হিট হলেও অন্য দুটি প্রত্যাশিত ব্যবসা করতে পারেনি।

তবে একটা অভূতপূর্ব পরিবর্তন লক্ষ করা গেছে বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে এবার। বড় বাজেট আর বড় আলোচনাকে টেক্কা দিয়ে শীর্ষে উঠে এসেছে তুলনায় কম বাজেটের কিছু সিনেমা। প্রমাণ করেছে, তারকার চেয়ে গল্পের শক্তি বেশি। রোজার ঈদে যেমন বরবাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করেছে মোশাররফ করিমের ‘চক্কর ৩০২’ ও সিয়ামের ‘জংলি’, তেমনি কোরবানির ঈদে তান্ডবকে পেছনে ফেলে দিয়েছে জাহিদ হাসানের ‘উৎসব’। নভেম্বরে মুক্তি পাওয়া ‘দেলুপি’ হলে অতটা দর্শক টানতে না পারলেও ভালো প্রচেষ্টা হিসেবে প্রশংসিত হয়েছে।

বিদেশের ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে প্রশংসা পাওয়া ‘সাবা’, ‘বাড়ির নাম শাহানা’, ‘ফেরেশতে’, ‘রিকশা গার্ল’ সিনেমাগুলো দেশে মুক্তির পর সমালোচকদের মনোযোগ পেয়েছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সবচেয়ে বড় সাফল্য এনে দিয়েছে ‘আলী’। ৭৮তম কান চলচ্চিত্র উৎসবের স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র বিভাগে প্রথমবার স্পেশাল মেনশন পুরস্কার জিতে নেয় আদনান আল রাজীব পরিচালিত সিনেমাটি। কান উৎসবে এই জয়ের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পরিসরে বাংলা সিনেমার পরিচিতি আরও বেড়েছে। এই অর্জন উৎসাহিত করেছে দেশের তরুণ নির্মাতাদের।

তবে চলচ্চিত্র যাদের রুটি-রুজি, তাঁদের জন্য বছরটা খুব সুখকর ছিল না। শিল্পী থেকে কলাকুশলীরা বছরের একটা লম্বা সময় বেকার কাটাতে বাধ্য হয়েছেন। কারণ, নতুন সিনেমার ঘোষণা এসেছে কম, শুটিংয়ের রমরমা তেমন ছিল না। নতুন বছরে এই অবস্থা বদলে যাবে, চলচ্চিত্রপাড়া আবারও ব্যস্ত হবে—এটাই প্রত্যাশা।

নির্মাতা আদনান আল রাজীব
নির্মাতা আদনান আল রাজীব

আলোচিত ঘটনা

  • মে মাসে থাইল্যান্ডে যাওয়ার উদ্দেশে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গেলে নুসরাত ফারিয়াকে আটক করা হয়। পরবর্তী সময়ে তাঁকে জুলাই অভ্যুত্থানের একটি হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এক দিন জেলে থাকার পর জামিনে মুক্তি পান এই নায়িকা।
  • গত এপ্রিলে গৃহকর্মীকে মারধরের অভিযোগ ওঠে চিত্রনায়িকা পরীমণির বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী পিংকি আক্তার তাঁর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেন। তবে পরীমনি জানান, তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ পুরোটাই ভিত্তিহীন, মিথ্যা এবং ষড়যন্ত্রমূলক।
  • অনেকেই শাকিব খানকে মেগাস্টার বলে সম্বোধন করেন। তবে শাকিব খানের নামের আগে এই শব্দচয়ন নিয়ে আপত্তিও রয়েছে অনেকের। গত জুনে এক সাক্ষাৎকারে শাকিবের নামের আগে ব্যবহার করা মেগাস্টার শব্দটি নিয়ে নিজের আপত্তির কথা জানান জাহিদ হাসান। এতে শাকিবভক্তদের সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি।
  • মে মাসে ৭৮তম কান চলচ্চিত্র উৎসবের স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র বিভাগে স্পেশাল মেনশন পুরস্কার জিতে নেয় আদনান আল রাজীব পরিচালিত স্বল্পদৈর্ঘ্য সিনেমা ‘আলী’। কান উৎসবে এটি বাংলাদেশের প্রথম পুরস্কার।
  • একাধিক সিনেমায় বাদ পড়ে খবরের শিরোনাম হয়েছেন প্রার্থনা ফারদিন দীঘি। বছরের শুরুতে ফেব্রুয়ারিতে জানা যায় ‘টগর’ সিনেমায় দীঘির জায়গায় নেওয়া হয়েছে পূজা চেরিকে। নির্মাতা আলোক হাসান জানান, পেশাদারি মনোভাবের অভাব থাকায় দীঘিকে বাদ দেওয়া হয়েছে। সেপ্টেম্বরে সরকারি অনুদানের ‘দেনা পাওনা’ সিনেমায় দীঘিকে বাদ দিয়ে নেওয়া হয় সাদিয়া জাহান প্রভাকে।

বিয়ে ও বিচ্ছেদ

  • এ বছর বিয়ের পিঁড়িতে বসেছেন শোবিজের অনেক তারকা। এই তালিকায় আছেন অভিনয়শিল্পী মেহজাবীন চৌধুরী, শবনম ফারিয়া, শামীম হাসান সরকার, জামিল হোসেন, মাইমুনা ফেরদৌস মম, সংগীতশিল্পী তাহসান খান, বাঁধন সরকার পূজা, নির্মাতা অমিতাভ রেজা চৌধুরী, মিজানুর রহমান আরিয়ান ও জাহিম প্রীতম।
  • এ বছর বিচ্ছেদ হয়েছে অনেক তারকার। ১৪ ডিসেম্বর অভিনেতা রাশেদ মামুন অপু জানান, মমরেনাজ মোমোর সঙ্গে ছয় বছর আগে বিচ্ছেদ হয়েছে তাঁর।

২০ ডিসেম্বর অভিনেত্রী আফসানা আরা বিন্দু জানান, ২০২২ সালে ভেঙে গেছে ব্যবসায়ী আসিফ সালাহউদ্দিন মালিকের সঙ্গে তাঁর সংসার।

৩০ ডিসেম্বর সংগীতশিল্পী সালমার সঙ্গে বিচ্ছেদের খবর জানান তাঁর স্বামী সানাউল্লাহ নূরে সাগর।

হারিয়েছি যাঁদের

অঞ্জনা রহমান: ৪ জানুয়ারি না ফেরার দেশে পাড়ি জমান অভিনেত্রী অঞ্জনা রহমান। জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তাঁর।

প্রবীর-মিত্র
প্রবীর-মিত্র

প্রবীর মিত্র: ৫ জানুয়ারি রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান অভিনেতা প্রবীর মিত্র। দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি।

জাহিদুর রহিম অঞ্জন: ২৪ ফেব্রুয়ারি ভারতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান নির্মাতা জাহিদুর রহিম অঞ্জন। কয়েক বছর ধরে লিভারের জটিলতায় ভুগছিলেন অঞ্জন।

সন্‌জিদা খাতুন
সন্‌জিদা খাতুন

সন্‌জীদা খাতুন: ২৫ মার্চ মারা যান বাংলাদেশের সংস্কৃতি অঙ্গনের অগ্রণী ব্যক্তিত্ব, সংগীতজ্ঞ, ছায়ানটের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি সন্‌জীদা খাতুন। তিনি ডায়াবেটিস, নিউমোনিয়া, কিডনি রোগে ভুগছিলেন।

গুলশান আরা আহমেদ: ১৫ এপ্রিল মারা যান ছোট পর্দার অভিনেত্রী গুলশান আরা আহমেদ। হার্ট অ্যাটাক করলে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তাঁর।

মুস্তাফা জামান আব্বাসী: ১০ মে রাজধানীর একটি হাসপাতালে মারা যান সংগীতব্যক্তিত্ব মুস্তাফা জামান আব্বাসী। তিনি বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন।

জীনাত রেহানা: ‘সাগরের তীর থেকে’ গানের নন্দিত কণ্ঠশিল্পী জীনাত রেহানা মারা যান ২ জুলাই। দীর্ঘদিন নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত ছিলেন তিনি।

এ কে রাতুল: জিম করতে গিয়ে ২৭ জুলাই হার্ট অ্যাটাক করে মারা যান মিউজিশিয়ান এ কে রাতুল। তিনি চলচ্চিত্র অভিনেতা জসীমের মেজ ছেলে।

অমরেশ রায় চৌধুরী: ১২ আগস্ট মারা যান একুশে পদকপ্রাপ্ত শাস্ত্রীয় সংগীতশিল্পী অমরেশ রায় চৌধুরী।

ফরিদা পারভীন
ফরিদা পারভীন

ফরিদা পারভীন: ১৩ সেপ্টেম্বর মারা যান লালনসংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীন। দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন তিনি। কিডনি সমস্যা, ডায়াবেটিসসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন।

সেলিম হায়দার: ফিডব্যাক ব্যান্ডের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য গিটারিস্ট সেলিম হায়দার মারা যান ২৭ নভেম্বর। ক্যানসারসহ নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। সংগীত ক্যারিয়ারে ফিডব্যাকসহ বাজিয়েছেন বেশ কয়েকটি ব্যান্ডের সঙ্গে। গত ৩০ বছর রুনা লায়লার সঙ্গেও নিয়মিত বাজিয়েছেন তিনি।

জেনস সুমন: গত ২৮ নভেম্বর হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান সংগীতশিল্পী জেনস সুমন। ১৬ বছরের বিরতি কাটিয়ে গত বছর আবার গানে ফিরেছিলেন ‘একটা চাদর হবে’খ্যাত এই গায়ক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার সঙ্গে শৈশবের স্মৃতি জানালেন সংগীতশিল্পী পুতুল

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫: ৫৩
২০০৪ সালের ১৯ জানুয়ারি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার হাত থেকে নতুন কুঁড়ি ২০০৩-এর দেশাত্মবোধক গানের প্রথম পুরস্কার গ্রহণ করছেন পুতুল। ছবি: সংগৃহীত
২০০৪ সালের ১৯ জানুয়ারি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার হাত থেকে নতুন কুঁড়ি ২০০৩-এর দেশাত্মবোধক গানের প্রথম পুরস্কার গ্রহণ করছেন পুতুল। ছবি: সংগৃহীত

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ ৩০ ডিসেম্বর সকাল ৬টায় মারা গেছেন বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে দেশজুড়ে। শোক জানাচ্ছেন শোবিজের তারকারাও। শোক জানিয়ে খালেদা জিয়ার সঙ্গে শৈশবের স্মৃতি ভাগ করেছেন সংগীতশিল্পী সাজিয়া সুলতানা পুতুল।

খালেদা জিয়াকে প্রথমবার দেখার স্মৃতি জানিয়ে ফেসবুকে পুতুল লেখেন, ‘জীবনে প্রথম তাঁকে দেখেছিলাম শৈশবে; ছুঁয়েছিলাম তাঁর তুলতুলে হাত। কী অভূতপূর্ব সেই অনুভূতি! বিজয়ী হয়ে যত না আনন্দ হয়েছিল, তার চাইতে কোনো অংশে কম ছিল না তাঁকে ছুঁতে পারার আনন্দ। পুরস্কার নিতে নিতে তাকিয়েছিলাম তাঁর চোখ দুটোর দিকে। মনে হয়েছিল এক মোম দিয়ে গড়া মানবী আমার সামনে দাঁড়িয়ে হাসছেন। ধূসর চুল আর শুভ্র শাড়িতে মনে হয়েছিল রাষ্ট্রপ্রধান হতে হলে বোধ হয় এতটাই আভিজাত্য নিজের ভেতর ধারণ করতে হয়।’

বড় হওয়ার পার খালেদা জিয়ার সামনে গান গাওয়ার অভিজ্ঞতা আছে পুতুলের। সেই স্মৃতির কথা জানিয়ে পুতুল লেখেন, ‘বড় হওয়ার পর আবার গান গেয়েছি তাঁর সামনে। তত দিনে সংগীতাঙ্গনে পেশাদার শিল্পী হিসেবে যাত্রা শুরু করেছি। তিনি মঞ্চে বসে, তার ঠিক কয়েক হাত দূরে দাঁড়িয়ে একই মঞ্চে গাইছি। তিনি আদর করেছিলেন সেদিন আমার পরিবেশনা শেষে। বুঝেছিলাম তিনি একজন সংস্কৃতিপ্রেমী প্রধানমন্ত্রী।’

খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে পুতুল লেখেন, ‘একটা অধ্যায়ের শেষ হলো। বাংলাদেশ নামক ভূখণ্ডের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী ওপারে চলে গেছেন, যিনি এ দেশের লাখো তরুণীকে স্বপ্ন দেখিয়েছেন, সাধারণ একজন গৃহবধূ হয়েও আত্মবিশ্বাসের জোরে অসাধারণ হয়ে ওঠা যায়। শুধু অসাধারণ নয়, দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়াও অসম্ভব কিছু নয়। জন্ম থেকে রাজনীতির কেবল দীর্ঘ প্রেক্ষাপট থাকলেই প্রধানমন্ত্রী হওয়া যায়, এই ধারণাকে ভুল প্রমাণ করে নিজের প্রজ্ঞা আর আত্মবিশ্বাস দিয়ে তিনবার তিনি হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। ভালো থাকবেন মাননীয়া। ইতিহাস আপনাকে মনে রাখবে...।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়া বড় দুঃসময়ে বিদায় নিলেন: জয়া আহসান

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫: ১৫
খালেদা জিয়া ও জয়া আহসান। ছবি: সংগৃহীত
খালেদা জিয়া ও জয়া আহসান। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির চেয়ারপারসন ও তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে দেশজুড়ে। শোক জানাচ্ছেন শোবিজের তারকারাও। খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে অভিনেত্রী জয়া আহসান বলেন, খালেদা জিয়া বড় দুঃসময়ে বিদায় নিলেন।

ফেসবুকে জয়া আহসান লেখেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া বড় দুঃসময়ে বিদায় নিলেন। সামনে নির্বাচন আর গণতন্ত্রের জন্য মানুষ অপেক্ষা করছে। তাঁর উপস্থিতির মূল্যই ছিল অসামান্য।’

জয়া আরও লেখেন, ‘রাজনীতিতে মত-পথের বিরোধ থাকবে। কিন্তু সামরিক শাসনবিরোধী এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে বেগম জিয়া ছিলেন প্রধান একটি চরিত্র, সাহসে ও নেতৃত্বে উজ্জ্বল। তাঁর সঙ্গে দেশের দীর্ঘ রাজনৈতিক আন্দোলনের একটি অধ্যায় শেষ হলো। তাঁর আত্মা চিরপ্রশান্তি লাভ করুক।’

গত ২৩ নভেম্বর থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন খালেদা জিয়া। আজ ৩০ ডিসেম্বর সকাল ৬টার মারা যান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত