Ajker Patrika
সাক্ষাৎকার

আমাদের তো মিউজিক ইন্ডাস্ট্রিই কখনো ছিল না

হামিন আহমেদ

১৭ জুলাই প্রকাশিত হলো ওয়ারফেজের পলাশ নূরের ফিচারিংয়ে ‘খুঁজি তোমায়’ শিরোনামের গান। এতে কণ্ঠ দিয়েছেন মাইলসের হামিন আহমেদ। মাইলস ব্যান্ডের দলপ্রধানের পাশাপাশি বাংলাদেশ মিউজিক্যাল ব্যান্ড অ্যাসোসিয়েশনের (বামবা) সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন হামিন। নতুন গান, মাইলসের ব্যস্ততা আর বাংলাদেশের ব্যান্ড মিউজিকের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে হামিন আহমেদের সঙ্গে কথা বলেছেন এম এস রানা

এম এস রানা
আপডেট : ১৯ জুলাই ২০২৫, ০৯: ১০

খুঁজি তোমায় গানে ওয়ারফেজের পলাশ নূর এবং মাইলস থেকে আপনি ও ড্রামার সৈয়দ জিয়াউর রহমান তূর্য অংশ নিয়েছেন। এটা কি ব্যান্ডের কোলাবোরেশন নাকি শিল্পীদের?

এটা আসলে ব্যান্ড সদস্যদের নিয়ে একটা কোলাবোরেশন হয়েছে। পলাশ আমার খুব ঘনিষ্ঠ। তার কাজ আমার ভালো লাগে। রুটনোট প্রোডাকশনের ইমরান আসিফও আমার ঘনিষ্ঠ। পলাশের রিকোয়েস্টে গানটা করা। পলাশের লেখা ও সুর খুব ভালো। গানটা শোনার পর আমার পছন্দ হয়। আমি সম্মতি জানাই। এরপর আমরা একসঙ্গে বসি। সিদ্ধান্ত নিই, ভিডিওটি গাজী শুভ্রকে করতে হবে। সব মিলিয়ে গানটি শুরু হলো, আমি ভয়েস দিলাম, গিটার বাজালাম। এরপর আমরা যুক্তরাষ্ট্র সফরে চলে গেলাম। এর মধ্যে পলাশ তার অংশগুলো কমপ্লিট করল, ভয়েস দিল, গিটার বাজাল। আমি ট্যুরে থাকলেও ফোনে কথা হতো, পরিকল্পনা হতো। এভাবে গানটি তৈরি হলো।

তূর্যর ড্রামিং করা কীভাবে?

তূর্যর ড্রামিং পার্টও শর্ট নোটিশে। তূর্যকে জানালাম যে আমাদের এমন একটা গান হচ্ছে, তুই ড্রামসটা বাজিয়ে দে। সেই শর্ট নোটিশে সে ড্রামিং পার্টটা করল। সব মিলিয়ে খুব সুন্দর একটা গান হয়েছে।

রুটনোট প্রোডাকশনের তো এটি প্রথম প্রোডাকশন?

হ্যাঁ। রুটনোট চাইছে এক্সক্লুসিভ কাজ করতে। আমিও মনে করি, এই সময়ে আনপ্রেডিক্টেবল কিছু কাজ হওয়া উচিত। যেটা রুটনোট করতে চাইছে।

গানটির ভয়েস রেকর্ডিং কবে হয়েছে এবং ভিডিও কবে শুট করেছেন?

ভয়েস রেকর্ডিং হয়েছে মার্চ-এপ্রিলে। এপ্রিলের শেষ দিকে হয়েছে ভিডিও শুট। মজার ব্যাপার হলো, আমি আর তূর্য একসঙ্গে শুটিং করেছি, আর পলাশের অংশটা আলাদা শুটিং হয়েছে। কারণ, আমাদের যুক্তরাষ্ট্র ট্যুরের সময় চলে এসেছিল, কিন্তু পলাশ তখনও শুটিংয়ের জন্য সময় দিতে পারছিল না। আমরা যুক্তরাষ্ট্রে চলে যাওয়ার পর পলাশ তার অংশের শুটিং করেছে। যদিও ভিডিও দেখে সেটা বোঝার উপায় নেই। মনে হবে একসঙ্গেই শুটিং হয়েছে। খুব ভালো ভিডিও হয়েছে।

ব্যান্ডশিল্পীদের নিয়ে এ ধরনের আরও কোলাবোরেশন করার পরিকল্পনা আছে কি?

অবশ্যই আছে। এখন নানা ধরনের গান হচ্ছে। কিন্তু মানুষ পিওর মিউজিক শুনতে চায়।

একসময় ব্যান্ডের প্রচুর গান হতো। গানে অনেক ইনভেস্ট হতো। কিন্তু সেটা হঠাৎ করে যেন থেমে গেল। কেন এমনটি হলো?

অনেকে মিউজিক ইন্ডাস্ট্রির কথা বলে, কিন্তু আমাদের তো মিউজিক ইন্ডাস্ট্রিই কখনো ছিল না। পাটুয়াটুলীর কিছু প্রতিষ্ঠান আমাদের গানের জনপ্রিয়তার সুবাদে অ্যালবাম প্রকাশ করত। কিন্তু যখন গানের মার্কেট একটা প্রফেশনাল ইন্ডাস্ট্রির শেপ নেওয়ার জন্য মুখিয়ে ছিল, যখন একটা প্রফেশনাল স্ট্রাকচার দরকার হয়ে পড়ল, তখন সেটা হলো না। একটা ইন্ডাস্ট্রির জন্য যেসব কন্ডিশন প্রয়োজন হয়, নিয়ম মানতে হয়, তার তোয়াক্কা করা হলো না। কার কী অধিকার, তা ফলো করা হলো না। ফলে শিল্পীদের গান প্রকাশ হলো, কিন্তু ইন্ডাস্ট্রি বলতে কিছু দাঁড়াল না। এরপর ডিজিটাল মাধ্যম চলে এল। এখন তো ইন্টারন্যাশনাল ডিজিটাল স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মগুলো ছাড়া গান প্রকাশ করা হয় না। তাতে কী হলো, আমাদের এখানে মিউজিকের কোনো ইন্ডাস্ট্রি তৈরি হলো না।

মাইলসের বর্তমান অবস্থা কী? কী করছে মাইলস এখন?

ঘটনাচক্রে হোক বা ভাগ্যের জোরে বলেন, আমরা কিন্তু সংগীত পরিবার থেকে এসেছি। আমার আর শাফিনের পারিবারিক ব্যাকগ্রাউন্ড রয়েছে। আমাদের বাবা (কমল দাশগুপ্ত), মা (ফিরোজা বেগম) সংগীতের দুই কিংবদন্তি, মানাম আহমেদের বাবা (মনসুর আহমেদ) এ দেশের একজন বিশিষ্ট সংগীতজ্ঞ ছিলেন। মাইলসের একটা অসম্ভব শক্তির জায়গা হলো গান বানানো। আমরা বসলেই গান হয়ে যায়। কিন্তু গত ১০ বছরে আমরা কোনো গান রিলিজ করিনি। ভেবে দেখেন, এটা কী ধরনের ড্যামেজ একজন শিল্পীর জন্য। আমি, আমরা কোনো ইনসেনটিভ পাইনি। একজন প্রতিষ্ঠিত শিল্পী, একটা প্রতিষ্ঠিত ব্যান্ডের জন্য যদি কোনো ইনসেনটিভ না থাকে, তাহলে তারা গান করবে কোন ভরসায়। তবে, আমাদের বেশ কিছু গান তৈরি হয়েছে। ইচ্ছা রয়েছে সময় সুযোগমতো গানগুলো নিয়ে অ্যালবাম প্রকাশ করার।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র সফর করে এলেন। কেমন হলো সফর?

বরাবরের মতো অসাধারণ ট্যুর হয়েছে। মাইলস বাংলাদেশের প্রথম ব্যান্ড, যে ১৯৯৬ সাল থেকে ইউএস ট্যুর করছে। মাইলসের ৪৬ বছরের ক্যারিয়ারে ফোবানার একটি শো ছাড়া প্রতিটি ট্যুরে একক শো করা হয়েছে। আগামী বছর মাইলসের ইউএস ট্যুরের ৩০ বছর পূর্তি হবে। আমরা এবার যুক্তরাষ্ট্রের ১০টি শহরে শো করেছি। একই রকম উন্মাদনা। আগামী অক্টোবরে অস্ট্রেলিয়া যাচ্ছি। সেখান থেকে ফিরে আগামী বছর এপ্রিলে তিন মাসের জন্য কানাডা ট্যুরে যাব। দেশেও কনসার্ট করছি।

বামবার সভাপতি হিসেবে বাংলাদেশে ব্যান্ডসংগীতের বর্তমান অবস্থা নিয়ে আপনার পর্যবেক্ষণ কী?

বাংলাদেশে এখন সংগীত নিয়ে যা হচ্ছে, তাতে খুব আশঙ্কার বিষয় রয়েছে। মিউজিক নিয়ে যে টানাটানি হয়, এটা নিয়ে আমার প্রশ্ন রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে শো হবে, কিন্তু কর্তৃপক্ষ তা চাইছে না। সম্প্রতি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাশেজ ব্যান্ডের একটা শো হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু সেটা হতে দিল না, সেখানে কাওয়ালি বা ওই ধরনের শো হলো। এমন পরিস্থিতি তো স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে দেখিনি। সব ধরণের কার্যক্রম চলছে, শুধু মিউজিক নিয়ে খুবই কম শো হচ্ছে। এটা অনাকাঙ্ক্ষিত। আমরা এসব চাই না। আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। সময় এলে আমাদের অবস্থান জানাব।

আগের মতো ওপেন এয়ার কনসার্ট হচ্ছে না। যা-ও হচ্ছে, সেখানে বিদেশি শিল্পীদের প্রাধান্য দেখা যায়, দেশি ব্যান্ড বা শিল্পীদের অবহেলিত মনে হয়। বামবার পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে কি?

একটা সময় পর্যন্ত ভারতের শিল্পী এসে এ দেশ সয়লাব হয়ে গেল; অথচ মাইলস, জেমস বা এলআরবির মতো ব্যান্ড যে ওই দেশের মেইনস্ট্রিমে ঢুকে গেল, একপর্যায়ে সেটা বন্ধ করে দিল, তা নিয়ে কেউ কোনো কথা বলল না। এরপর দেখছি পাকিস্তানি শিল্পীরা আসতে শুরু করলেন। আমি ব্যক্তিগতভাবে কোনো শিল্পীর এ দেশে আসা নিয়ে বিরোধিতা করছি না। আরও বড় আর্টিস্ট আসুক, কোল্ড প্লে আসুক। এমন পরিস্থিতি হোক যে আমরা আর্মি স্টেডিয়ামে কোল্ড প্লের পরিবেশনা দেখতে পারি। কিন্তু আমরা যেটা করি, সবকিছু নিয়ে অতিরিক্ত করি। নিজের দেশের ব্যাপারটা সাইডলাইন করে সমপর্যায়ের বিদেশি শিল্পীদের হাইলাইট করি। আমার অভিযোগ হচ্ছে, তাঁদের যখন আনেন, বাজেটের কোনো সমস্যা হয় না; অথচ মাইলসের মতো ব্যান্ড যখন শো করতে যায়, স্টেডিয়াম ভরে যায় দর্শনার্থী দিয়ে, তখন কেন বাজেট নিয়ে সমস্যা হয়?

বামবা এ বিষয়ে কী পদক্ষেপ নিয়েছে বা নিচ্ছে?

বামবা পদক্ষেপ নেবে। কিন্তু আমরা যখন আর্মি স্টেডিয়ামের মতো একটা ভেন্যু তিনবার কনফার্ম করার পরও শো করতে পারি না, তখন কী পরিমাণ ম্যাসাকার হয়? বামবা যেটা করে, সেটাই করছে। ম্যাচিউরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে পরিস্থিতি কোন দিকে যাচ্ছে। সময় সুযোগ বুঝে পদক্ষেপ নেবে বামবা। এ বিষয়ে সরকারের পূর্ণ সহযোগিতা কামনা করি। সরকারের সহযোগিতা নিয়ে আমরা সংগীতের উন্নয়নে, শিল্পীদের উন্নয়নে কাজ করতে চাই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নতুন বছরের শুরুতে আসছে ইমনের সিনেমা

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
মামনুন ইমন। ছবি: সংগৃহীত
মামনুন ইমন। ছবি: সংগৃহীত

গত বছরের শেষের দিকে সরকারি অনুদানে নির্মিত ‘ময়নার চর’ সিনেমায় চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন মামনুন ইমন। শুটিং হয়েছিল লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চর আলেকজান্ডারে। শুটিং ও সম্পাদনা শেষে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির জন্য প্রস্তুত সিনেমাটি। নতুন বছরের শুরুতেই মুক্তি পাবে ময়নার চর।

পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান বাবু জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন বোর্ড থেকে বিনা কর্তনে ছাড়পত্র পেয়েছে ময়নার চর। সবকিছু ঠিক থাকলে জানুয়ারিতে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে সিনেমাটি। মোস্তাফিজুর রহমান বাবু বলেন, ‘ময়নার চর মুক্তি নিয়ে সিনেমার প্রযোজক-অভিনয়শিল্পীদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আমরা চাইছি জাতীয় নির্বাচনের আগে সিনেমাটি মুক্তি দিতে। কারণ এরপর রোজা শুরু হবে। আর ঈদের সময় সিনেমা মুক্তির হিড়িক দেখা যায়। সবকিছু ঠিক থাকলে ১৬ জানুয়ারি মুক্তির সম্ভাব্য তারিখ পরিকল্পনা করা হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যেই আনুষ্ঠানিকভাবে মুক্তির তারিখ ঘোষণা করা হবে।’

সিনেমার গল্প নিয়ে নির্মাতা বলেন, ‘চর এলাকার মানুষের জীবনের নানা রকম টানাপোড়েন নিয়ে সিনেমার গল্প। একটি খুনের ঘটনা নিয়ে এগিয়ে চলে গল্প। পর্দায় গল্পটি সঠিকভাবে তুলে ধরতে প্রত্যন্ত অঞ্চলে শুটিং করা হয়েছে। সব কলাকুশলী অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। আশা করছি দর্শক সেটা পর্দায় দেখতে পারবে।’

অভিনেতা মামনুন ইমন এখন আছেন যুক্তরাষ্ট্রে। সেখান থেকে এই সিনেমার মুক্তির খবর শুনে দারুণ খুশি তিনি। জানালেন, ময়নার চরের জন্য অভিনেতা হিসেবে নতুন করে এক্সপেরিমেন্ট করেছেন তিনি।

ইমন বলেন, ‘সিনেমায় আমার অভিনীত চরিত্রের নাম কাশেম। একেবারে প্রত্যন্ত চরে শীতের মধ্যে শুটিং করেছিলাম। সরকারি অনুদানের স্ক্রিপ্টে সর্বোচ্চ মার্কস পাওয়া সিনেমাগুলোর মধ্যে ময়নার চর একটি। এত কষ্টের কাজটি যেহেতু কোনো ধরনের আপত্তি বা কর্তন ছাড়াই চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন বোর্ড থেকে অনুমতি পেয়েছে, খবরটি শুনে নিজের মধ্যে অনেক শান্তি লাগছে।’

শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা জানিয়ে ইমন বলেন, ‘এই সিনেমার গল্পটি আমাদের দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের। শুটিংও হয়েছে ওই রকম এলাকায়। ছবির মতোই সুন্দর লোকেশন। চারপাশে নদী। এর মধ্যে চর পড়ছে। অল্প কিছু মানুষের বসতি, বিদ্যুতের ব্যবস্থা নেই। আধুনিক সুযোগ-সুবিধা না থাকলেও সেখানকার মানুষের জীবনযাপন আমাকে মুগ্ধ করেছে।’

ময়নার চর সিনেমায় ইমনের বিপরীতে রয়েছেন সুস্মি রহমান। সহপ্রযোজনায় রয়েছেন সুমন পারভেজ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এ সপ্তাহের সিনেমা

দেশে মুক্তি পেল হলিউডের দুই সিনেমা

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
‘অ্যানাকোন্ডা’ সিনেমার পোস্টার
‘অ্যানাকোন্ডা’ সিনেমার পোস্টার

বড়দিন উপলক্ষে ২৫ ডিসেম্বর দেশের সিনেপ্লেক্সে মুক্তি পেয়েছে দুটি হলিউড সিনেমা। ‘অ্যানাকোন্ডা’ সিরিজের নতুন সিনেমার পাশাপাশি দেখা যাচ্ছে অ্যানিমেশ সিনেমা ‘দ্য স্পঞ্জবব মুভি: সার্চ ফর স্কয়ারপ্যান্টস’।

অ্যানাকোন্ডা

১৯৯৭ সালে মুক্তি পাওয়া অ্যাকশন অ্যাডভেঞ্চার হরর সিনেমা ‘অ্যানাকোন্ডা’ বেশ আলোচনা সৃষ্টি করেছিল। বক্স অফিসে সাফল্য পায় ভয়ঙ্কর সাপের এই সিনেমা। ২০০৪ সালে এর সিক্যুয়েল ‘অ্যানাকোন্ডাস: দ্য হান্ট ফর দ্য ব্লাড অর্কিড’ মুক্তি পায়। পরবর্তী সময়ে আরও দুটি সিনেমা মুক্তি পায়। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে রিবুট তৈরির ঘোষণা দেয় সনি পিকচার্স। সে অনুযায়ী নির্মিত হয় অ্যাকশন কমেডি সিনেমা ‘অ্যানাকোন্ডা’।

গতকাল ২৫ ডিসেম্বর মুক্তি পেয়েছে সিনেমাটি। ১৯৯৭ সালের অ্যানাকোন্ডা সিনেমার মেটা-রিবুট এটি। তবে মূল সিনেমার সরাসরি রিমেক নয়, মেটা-রিবুট কমেডি-থ্রিলার হিসেবে তৈরি হয়েছে। গল্পের মূল চরিত্র ডগ এবং গ্রিফ তাদের জীবনের মিডলাইফ ক্রাইসিস কাটিয়ে উঠতে চায়। সিদ্ধান্ত নেয়, তাদের শৈশবের প্রিয় সিনেমা অ্যানাকোন্ডা রিমেক করার। ছোট বাজেটের একটি সিনেমা বানাতে আমাজন জঙ্গলে যাত্রা শুরু করে তারা। কিন্তু শুটিং শুরু হওয়ার পর তাদের সামনে আসে নানা রকম সংকট। আবহাওয়া এবং পরিবেশগত সমস্যার সঙ্গে লড়াই তো আছেই, সেই সঙ্গে বাড়তি বিপদ হিসেবে তারা সত্যিই মুখোমুখি হয় বিশাল এক অ্যানাকোন্ডার। টম গোর্মিকানের পরিচালনায় এতে অভিনয় করেছেন পল রুড, জ্যাক ব্ল্যাক, স্টিভ জ্যান, থান্ডিওয়ে নিউটন, ড্যানিয়েলা মেলচিওর, সেলটন মেলো প্রমুখ।

দ্য স্পঞ্জবব মুভি: সার্চ ফর স্কয়ারপ্যান্টস

দ্য স্পঞ্জবব স্কয়ারপ্যান্টস সিরিজের নতুন সিনেমা ‘দ্য স্পঞ্জবব মুভি: সার্চ ফর স্কয়ারপ্যান্টস’। ১৯ ডিসেম্বর মুক্তি পেয়েছে এই সিনেমা। গতকাল থেকে দেখা যাচ্ছে দেশের হলে।

দ্য স্পঞ্জবব স্কয়ারপ্যান্টস একটি জনপ্রিয় অ্যানিমেটেড সিরিজ ও চরিত্র, যা একটি হলুদ স্পঞ্জসদৃশ প্রাণীর মজার কাণ্ডকারখানা নিয়ে তৈরি। সে বিকিনি বটম শহরে তার পোষা শামুক গ্যারির সঙ্গে একটি আনারসের মধ্যে থাকে এবং ক্রাস্টি ক্র্যাবে কাজ করে। এই সিনেমায় সে ফ্লাইং ডাচম্যানের মুখোমুখি হয় এবং সমুদ্রের গভীরে অ্যাডভেঞ্চার করে। স্পঞ্জববকে তার হারিয়ে যাওয়া পোষা প্রাণী গ্যারির সন্ধানে সমুদ্রের গভীরে এক মহাকাশযানে যেতে হয়, যেখানে সে ফ্লাইং ডাসম্যানের মতো ভিলেনদের মোকাবিলা করে। মুক্তির পর দর্শকদের ভালো সাড়া পেয়েছে সিনেমাটি। বক্স অফিসে সাফল্যের পাশাপাশি সমালোচকদের প্রশংসা কুড়াচ্ছে সিনেমাটি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এ সপ্তাহের ওটিটি

‘ফেলুদা’, ‘স্ট্রেঞ্জার থিংস’সহ মুক্তির তালিকায় যেসব সিনেমা-সিরিজ

প্রতি সপ্তাহে নতুন সিনেমা বা ওয়েব সিরিজের জন্য দর্শকদের নজর থাকে ওটিটি প্ল্যাটফর্মে। এ সপ্তাহেও মুক্তি পাচ্ছে নানা দেশের, নানা ভাষার কনটেন্ট। বাছাই করা এমন কিছু কনটেন্টের খোঁজ থাকছে এ প্রতিবেদনে।

বিনোদন ডেস্ক, ঢাকা
‘ফেলুদার গোয়েন্দাগিরি: রয়েল বেঙ্গল রহস্য’ সিরিজের দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত
‘ফেলুদার গোয়েন্দাগিরি: রয়েল বেঙ্গল রহস্য’ সিরিজের দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত

ফেলুদার গোয়েন্দাগিরি: রয়েল বেঙ্গল রহস্য (বাংলা সিরিজ)

  • মুক্তি: হইচই (২৪ ডিসেম্বর)
  • অভিনয়: টোটা রায়চৌধুরী, অনির্বাণ চক্রবর্তী, চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তী
  • গল্পসংক্ষেপ: মহীতোষ সিংহ রায়ের আমন্ত্রণে ফেলুদা ও তোপসেকে নিয়ে লালমোহন গাঙ্গুলি ওরফে জটায়ু ভুটানের কাছাকাছি এক জঙ্গলের পাশে তার বাড়িতে যান। তাদের যাওয়ার কিছুদিন পর মহীতোষের সহকারী তড়িত মারা যায়। তার মৃতদেহ জঙ্গলে পাওয়া যায়। পুলিশ তদন্ত করে জানায়, বাঘের আক্রমণে মৃত্যু হয়েছে তার। কিন্তু খুনের জায়গায় ফেলুদা রক্তমিশ্রিত একটি তরবারি খুঁজে পান। ঘটনার আসল রহস্য খুঁজতে শুরু করে ফেলুদা।

রিভলবার রিতা (তামিল সিনেমা)

  • মুক্তি: নেটফ্লিক্স (২৬ ডিসেম্বর)
  • অভিনয়: কীর্তি সুরেশ, রাধিকা শরৎকুমার, সুনীল
  • গল্পসংক্ষেপ: গত নভেম্বরে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছিল জে কে চন্দ্রু পরিচালিত তামিল সিনেমা ‘রিভলবার রিতা’। সিনেমাটি এবার দেখা যাবে ওটিটিতে। এক নারীর ব্যাগ চুরি হওয়ার পর চোরের পিছু ধাওয়া করে সে। গল্প ভিন্ন দিকে মোড় নেয়, যখন সেই ব্যাগে একটি অস্ত্র খুঁজে পাওয়া যায়।

স্ট্রেঞ্জার থিংস: সিজন ৫ ভলিউম ২ (ইংরেজি সিরিজ)

  • অভিনয়: উইনোনা রাইডার, ডেভিড হারবার, মিলি ববি ব্রাউন
  • মুক্তি: নেটফ্লিক্স (২৬ ডিসেম্বর)
  • গল্পসংক্ষেপ: গত ২৭ নভেম্বর এসেছিল ‘স্ট্রেঞ্জার থিংস’ সিরিজের শেষ সিজনের প্রথম চারটি পর্ব। এবার এসেছে আরও চার পর্ব। বাকিগুলো আসবে ইংরেজি নববর্ষে। এবারের কাহিনি ১৯৮৭ সালের শরৎকালের। সামরিক কোয়ারেন্টাইনে বন্ধ হয়ে গেছে পুরো হকিন্স। ভেকনা উধাও, তার খোঁজ চলছে। সরকারের নজরদারি বাড়তে থাকায় ইলেভেনকে আবারও লুকিয়ে থাকতে হচ্ছে।

নোবডি ২ (ইংরেজি সিনেমা)

  • অভিনয়: বব ওডেনকার্ক, কনি নেইলসেন, জন অর্টিজ
  • মুক্তি: জিও হটস্টার (২২ ডিসেম্বর)
  • গল্পসংক্ষেপ: ২০২১ সালে মুক্তি পাওয়া ‘নোবডি’ সিনেমার সিক্যুয়েল এটি। প্রথম পর্বের মতো এবারও হাচ ম্যানসেল চরিত্রে অভিনয় করেছেন বব ওডেনকার্ক। এবার পরিবার নিয়ে থিম পার্কে ছুটি কাটাতে গিয়ে স্থানীয় অপরাধীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। প্রথম সিনেমার মতো এটিও অ্যাকশন ও কমেডিতে ভরা এক কাহিনি।

এক দিওয়ানে কি দিওয়ানিয়ত (হিন্দি সিনেমা)

  • অভিনয়: হর্ষবর্ধন রেনে, সোনম বাজওয়া, শাদ রান্ধাওয়া
  • মুক্তি: জি ফাইভ (২৬ ডিসেম্বর)
  • গল্পসংক্ষেপ: মিলাপ জাভেরি পরিচালিত এই সিনেমায় ভালোবাসার অন্ধকার দিক ফুটে উঠেছে। হর্ষবর্ধন রেনেকে দেখা যাবে বিক্রমাদিত্য ভোঁসলে চরিত্রে, যিনি একজন শক্তিশালী রাজনীতিক। সোনম বাজওয়া অভিনয় করেছেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী অ্যাডা রণধাওয়া চরিত্রে। অ্যাডার প্রেমে পড়ে বিক্রমাদিত্য। কিন্তু অ্যাডা তাকে প্রত্যাখ্যান করলে প্রেম কীভাবে বিপজ্জনক আর জেদে পরিণত হয়—এটাই গল্পের মূল উপজীব্য।
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজ টিএসসিতে চতুর্দশ সঞ্জীব উৎসব

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
সঞ্জীব চৌধুরী । ছবি : সংগৃহীত
সঞ্জীব চৌধুরী । ছবি : সংগৃহীত

প্রয়াত সংগীতশিল্পী সঞ্জীব চৌধুরীর জন্মদিন ২৫ ডিসেম্বর। প্রতিবছরের এই দিনে তাঁর স্মরণে সঞ্জীব উৎসবের আয়োজন করেন তরুণ সংগীতপ্রেমীরা। সে ধারাবাহিকতায় আজ বিকেল ৫টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি প্রাঙ্গণে অবস্থিত সঞ্জীব চত্বরে অনুষ্ঠিত হবে চতুর্দশ সঞ্জীব উৎসব

উৎসবটি আয়োজন করেছে আজব কারখানা। সঞ্জীব চৌধুরীর অমর সৃষ্টিকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার উদ্দেশ্যে উৎসবটি প্রতিবছর আয়োজিত হয়ে আসছে। দীর্ঘ পরিক্রমায় এটি দেশের সংগীতপ্রেমীদের জন্য একটি অনন্য মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। এবারের আয়োজনে গাইবেন জয় শাহরিয়ার, সন্ধি, সভ্যতা, সাহস মোস্তাফিজ, সুহৃদ স্বাগত, ফারাহ্‌দীবা তাসনীম, রাজেশ মজুমদার, রিহান রিজুয়ান প্রমুখ। আয়োজন তত্ত্বাবধানে রয়েছে সঞ্জীব উৎসব উদ্‌যাপন পর্ষদ। সহযোগিতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক সংসদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ব্যান্ড সোসাইটি।

আয়োজক ও সংগীতশিল্পী জয় শাহরিয়ার বলেন, ‘আমরা সঞ্জীবদার গান শুনে বড় হয়েছি। তাঁর গান শুধু বিনোদন নয়, সঞ্জীবদার একটা দর্শন ছিল। আমরা যারা সিংগার-সংরাইটার হিসেবে সেই দর্শনকে ধারণ করি, এটা তাদেরই সম্মিলিত আয়োজন। যাতে সঞ্জীবদার গান-দর্শন পরবর্তী প্রজন্মের কাছে ছড়িয়ে যায়।’

সঞ্জীব চৌধুরী ছিলেন একাধারে শিল্পী, লেখক ও সাংবাদিক। সঞ্জীব চৌধুরী ও বাপ্পা মজুমদার মিলে গড়ে তুলেছিলেন দলছুট ব্যান্ড। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ছাত্র ছিলেন তিনি। সংবাদমাধ্যমে কাজের পাশাপাশি চালিয়ে গেছেন সংগীত ও সাহিত্যের চর্চা। ‘আমি তোমাকেই বলে দেব’, ‘রঙ্গিলা’, ‘সমুদ্রসন্তান’, ‘জোছনাবিহার’, ‘তোমার ভাঁজ খোল’, ‘চাঁদের জন্য গান’, ‘স্বপ্নবাজি’, ‘বায়োস্কোপ’সহ অনেক জনপ্রিয় গানের সঙ্গে জড়িয়ে আছে সঞ্জীব চৌধুরীর নাম। ২০০৭ সালের ১৯ নভেম্বর ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সঞ্জীব চৌধুরী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত