Ajker Patrika

সিনেমা বানিয়ে সর্বস্ব খুইয়েছেন ফ্রান্সিস ফোর্ড কপোলা

বিনোদন ডেস্ক
ফ্রান্সিস ফোর্ড কপোলা। ছবি: সংগৃহীত
ফ্রান্সিস ফোর্ড কপোলা। ছবি: সংগৃহীত

৬০ বছরের ক্যারিয়ারে এতটা খারাপ সময় হয়তো কখনো আসেনি ফ্রান্সিস ফোর্ড কপোলার। ‘দ্য গডফাদার’, ‘দ্য কনভারসেশন’, ‘অ্যাপোক্যালিপস নাউ’ সিনেমাগুলো দিয়ে বিশ্ব চলচ্চিত্রে কিংবদন্তির মর্যাদা পেয়েছেন এই হলিউড নির্মাতা। তাঁর অনেক বছরের ইচ্ছা ছিল, ‘মেগালোপলিস’ নামে একটি সিনেমা বানাবেন। নিজের গাঁটের পয়সা খরচ করে বানানো সিনেমাটি মুক্তি পায় ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে। কিন্তু এত বছরের ক্যারিয়ারে কখনো যা হয়নি, সেটাই ঘটে। বক্স অফিসে একেবারে ডাহা ফেল!

মেগালোপলিস তৈরি করতে ফ্রান্সিস ফোর্ড কপোলার খরচ হয় ১২০ মিলিয়ন ডলার। কিন্তু বক্স অফিস থেকে ফেরত আসে মাত্র ১৪ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার। এক সিনেমার পেছনে এত অর্থ খরচ করে এবং লগ্নি হারিয়ে বলতে গেলে পথে বসেছেন কপোলা। সর্বস্ব খুইয়ে এখন চোখে অন্ধকার দেখছেন। এই বিপুল ক্ষতি পোষাতে নিজের কাছে অবশিষ্ট যা কিছু আছে, তা-ই বিক্রি করছেন।

গত অক্টোবরের শেষের দিকে নিজের দামি ঘড়িগুলো নিলামে তুলেছেন কপোলা। তাঁর ব্যক্তিগত সংগ্রহে ছিল বিলাসবহুল অনেক ঘড়ি, যার মধ্যে একটির দামই ১ মিলিয়ন ডলারের ওপরে। নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, নিজের সংগ্রহ থেকে সাতটি ঘড়ি বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কপোলা। আগামী ৬ ও ৭ ডিসেম্বরে নিউইয়র্কের ফিলিপস অকশন হাউসে বিক্রির জন্য নিলামে তোলা হবে ঘড়িগুলো। এর মধ্যে সবচেয়ে দামি ঘড়িটি তিনি আগলে রেখেছিলেন প্রায় আট বছর। নিজেই ডিজাইন করেছিলেন ঘড়িটি। এত শখের ঘড়ি ছাড়াও কপোলাকে বিক্রি করতে হয়েছে তাঁর কেনা একটি দ্বীপ।

৮ নভেম্বর হলিউড রিপোর্টার জানিয়েছে, মধ্য আমেরিকার বেলিজে একটি দ্বীপ কিনেছিলেন কপোলা। কোরাল কে নামের ওই দ্বীপটি আয়তনে ৮ মাইল লম্বা। মাঝে মাঝে অবকাশ যাপনে সেখানে যেতেন নির্মাতা। নিজের খুবই পছন্দের দ্বীপটি ১ দশমিক ৮ মিলিয়ন ডলারে বিক্রি করেছেন কপোলা।

গডফাদার সিনেমা দিয়ে প্রথম সাফল্য পেয়েছিলেন ফ্রান্সিস ফোর্ড কপোলা। পরবর্তী সময়ে সিনেমা বানানোর পাশাপাশি রিসোর্ট, লাইফস্টাইল ব্র্যান্ডসহ বিভিন্ন ধরনের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন। এর মাধ্যমে বিপুল সম্পদের অধিকারী হন। তবে মেগালোপলিস বানাতে গিয়ে নিজের সব সঞ্চয় হারিয়েছেন। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমার হাতে এখন কোনো টাকা নেই। কারণ, মেগালোপলিস বানাতে গিয়ে নিজের সব অর্থ বিনিয়োগ করেছিলাম। আরও কিছু ঋণ নিয়েছিলাম। সবই চলে গেছে। এই ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে ১৫-২০ বছর লাগবে। কিন্তু সেই সময়টা আমার হাতে নেই।’

সায়েন্স ফিকশন গল্পের সিনেমা মেগালোপলিস তৈরি হয়েছে রোমান সাম্রাজ্যের পটভূমিতে। এতে অভিনয় করেছেন অ্যাডাম ড্রাইভার, জন ভয়েট, জিয়ানকার্লো এসপোসিতো, নাথালি ইমানুয়েল, ডাস্টিন হফম্যান প্রমুখ। মুক্তির পর কিছু সমালোচকের প্রশংসা পেলেও বেশির ভাগই সমালোচনার তিরে বিদ্ধ করেছেন কপোলাকে। সবচেয়ে বাজে সিনেমা হিসেবে গোল্ডেন রাস্পবেরি পুরস্কারও দেওয়া হয়েছে পাঁচবার অস্কারজয়ী এই নির্মাতাকে।

তবে এই অপমানেও দমে যাননি কপোলা। নিজের এই পরিস্থিতিকে তুলনা করছেন ফরাসি নির্মাতা জ্যাজ টাটির সঙ্গে। ১৯৬৭ সালে ‘প্লেটাইম’ বানিয়ে তাঁকেও দেউলিয়া হতে হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে সর্বকালের অন্যতম সেরা সিনেমা হিসেবে বিবেচিত হয়েছিল প্লেটাইম। কপোলাও আশা করছেন, মেগালোপলিসও হয়তো ভবিষ্যতে দর্শকদের প্রশংসা পাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিএনপির আপত্তি তোলা দুই অধ্যাদেশে উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদন

লন্ডনে চিকিৎসা যাত্রায় খালেদা জিয়ার সফরসঙ্গী ১৪ জন, তালিকায় ছয় চিকিৎসক ও দুই এসএসএফ

ভারতে পা রাখলেন পুতিন, নিয়ম ভেঙে ‘কোলাকুলি’ করলেন মোদি

ঢাকার তিনটিসহ আরও ২৮ আসনে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা বাকি থাকল

মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা—জনসংখ্যার তীব্র সংকটে ইউক্রেন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ