খায়রুল বাসার নির্ঝর, ঢাকা

উত্তমকুমারের নামটা রেখেছিলেন তাঁর দাদামশাই, মানে তাঁর মায়ের বাবা। তিনি এসে মেয়েকে বললেন, ‘চপলা শোন, আমি তোর ছেলের নাম রাখলুম উত্তম।’ মেট্রো ছবির এক সাধারণ অপারেটর সাতকড়ি চট্টোপাধ্যায়, উত্তমের বাবা, ছেলের এমন নামে খুব খুশি হলেও মোটেই ভালো লাগেনি তাঁর মা চপলা দেবীর। কিন্তু বাবার মুখের ওপর কথা তিনি কখনো বলতে পারেননি, তাই সেদিনও চুপ থেকে মেনে নিয়েছিলেন ‘উত্তম’ নামটিই।
নানাবাড়ি আহেরীটোলায়, যেখানে উত্তম জন্মেছিলেন, সেখানে প্রতি চার বছর অন্তর এক সাধুপুরুষ আসতেন। গুরুদেব বলতেন তাঁকে সবাই। উত্তমের বয়স তখন মাত্র তিন মাস। তেল মাখিয়ে ছাদে শুইয়ে রাখা হয়েছে। সেই গুরুদেব এলেন। এসেই হাঁক ছাড়লেন, ‘কই, তোর ছেলে কই?’ দোলনার কাছে এগিয়ে গেলেন। শিশু উত্তম হেসে উঠল। গালভরা হাসি। তা দেখে ‘গুরুদেব’ বললেন, ‘এই হাসিতে তোর ছেলে একদিন সবাইকে ভোলাবে।’
শৈশব পেরিয়ে কৈশোরে তখন উত্তম। মাথায় ঢোকে যাত্রার পোকা। উত্তমকুমার লিখেছেন, ‘পাড়ার মধ্যে মাঝে মাঝে যাত্রার আসর বসত। সেই যাত্রাই একদিন ভালো লাগল আমার।’ পড়া ফেলে, পালিয়ে, প্রতি সন্ধ্যায় জানালায় উঁকি দিয়ে যাত্রার রিহার্সেল দেখতে না পারলে অস্থির লাগে উত্তমের। একদিন ধরা পড়ে গেলেন দিদির কাছে।
ছোটবেলায় উত্তমের সঙ্গী ছিলেন সেই দিদি। নাম পুতুল। খুকিদি বলে ডাকতেন উত্তম। খুকিদি জিজ্ঞেস করলেন, ‘রোজ রোজ কোথায় যাস রে?’ চেপে গেলেন উত্তম, ‘সে একটা ভারী মজার জায়গায় যাই।’ দিদিকে অভিনয়ও করে দেখালেন এত দিন লুকিয়ে লুকিয়ে রিহার্সেল দেখে যতটা শিখেছেন। উত্তম লিখেছেন, ‘সে যেন আমার যাত্রা-শেখার মধ্যে একটা আনন্দ খুঁজে পেল। চোখ পাকিয়ে মুখ ঘুরিয়ে বলল, তুই যাত্রা করবি, বেশ মজা হবে, না রে?’
উত্তমের অভিনয়ের প্রথম স্বীকৃতি দিয়েছিলেন যিনি, সেই খুকিদি, শেষ পর্যন্ত উত্তমের সাফল্য দেখে যেতে পারেননি। একদিন ঘরে ফিরে শুনলেন, খুকিদির খুব জ্বর। টাইফয়েড। বুকের ভেতরটা হু হু করে উঠল উত্তমের। কাছে গেলেন। কানের কাছে মুখ নিয়ে ক্ষীণ কণ্ঠে খুকিদি বললেন, ‘কাউকে বলিনি তুই যাত্রা শিখছিস। যাত্রা শেখ, বেশ মজা হবে। আমি ভালো হয়ে উঠলে কেমন শিখলি দেখাবি, কেমন?’
দেখানো আর হয়নি। যাত্রা, থিয়েটার, সিনেমা, দেশজোড়া খ্যাতি—উত্তমের কিছুই দেখা হয়নি খুকিদির। কয়েক দিন টাইফয়েডে ভুগে দিদি তাঁর পাড়ি জমান ওপারে। খুকিদির এই মৃত্যু কোনো দিন ভুলতে পারেননি উত্তমকুমার। এ ঘটনা উত্তমকুমার লিখেছেন তাঁর স্মৃতিকথা ‘আমার আমি’তে।

উত্তমকুমারের নামটা রেখেছিলেন তাঁর দাদামশাই, মানে তাঁর মায়ের বাবা। তিনি এসে মেয়েকে বললেন, ‘চপলা শোন, আমি তোর ছেলের নাম রাখলুম উত্তম।’ মেট্রো ছবির এক সাধারণ অপারেটর সাতকড়ি চট্টোপাধ্যায়, উত্তমের বাবা, ছেলের এমন নামে খুব খুশি হলেও মোটেই ভালো লাগেনি তাঁর মা চপলা দেবীর। কিন্তু বাবার মুখের ওপর কথা তিনি কখনো বলতে পারেননি, তাই সেদিনও চুপ থেকে মেনে নিয়েছিলেন ‘উত্তম’ নামটিই।
নানাবাড়ি আহেরীটোলায়, যেখানে উত্তম জন্মেছিলেন, সেখানে প্রতি চার বছর অন্তর এক সাধুপুরুষ আসতেন। গুরুদেব বলতেন তাঁকে সবাই। উত্তমের বয়স তখন মাত্র তিন মাস। তেল মাখিয়ে ছাদে শুইয়ে রাখা হয়েছে। সেই গুরুদেব এলেন। এসেই হাঁক ছাড়লেন, ‘কই, তোর ছেলে কই?’ দোলনার কাছে এগিয়ে গেলেন। শিশু উত্তম হেসে উঠল। গালভরা হাসি। তা দেখে ‘গুরুদেব’ বললেন, ‘এই হাসিতে তোর ছেলে একদিন সবাইকে ভোলাবে।’
শৈশব পেরিয়ে কৈশোরে তখন উত্তম। মাথায় ঢোকে যাত্রার পোকা। উত্তমকুমার লিখেছেন, ‘পাড়ার মধ্যে মাঝে মাঝে যাত্রার আসর বসত। সেই যাত্রাই একদিন ভালো লাগল আমার।’ পড়া ফেলে, পালিয়ে, প্রতি সন্ধ্যায় জানালায় উঁকি দিয়ে যাত্রার রিহার্সেল দেখতে না পারলে অস্থির লাগে উত্তমের। একদিন ধরা পড়ে গেলেন দিদির কাছে।
ছোটবেলায় উত্তমের সঙ্গী ছিলেন সেই দিদি। নাম পুতুল। খুকিদি বলে ডাকতেন উত্তম। খুকিদি জিজ্ঞেস করলেন, ‘রোজ রোজ কোথায় যাস রে?’ চেপে গেলেন উত্তম, ‘সে একটা ভারী মজার জায়গায় যাই।’ দিদিকে অভিনয়ও করে দেখালেন এত দিন লুকিয়ে লুকিয়ে রিহার্সেল দেখে যতটা শিখেছেন। উত্তম লিখেছেন, ‘সে যেন আমার যাত্রা-শেখার মধ্যে একটা আনন্দ খুঁজে পেল। চোখ পাকিয়ে মুখ ঘুরিয়ে বলল, তুই যাত্রা করবি, বেশ মজা হবে, না রে?’
উত্তমের অভিনয়ের প্রথম স্বীকৃতি দিয়েছিলেন যিনি, সেই খুকিদি, শেষ পর্যন্ত উত্তমের সাফল্য দেখে যেতে পারেননি। একদিন ঘরে ফিরে শুনলেন, খুকিদির খুব জ্বর। টাইফয়েড। বুকের ভেতরটা হু হু করে উঠল উত্তমের। কাছে গেলেন। কানের কাছে মুখ নিয়ে ক্ষীণ কণ্ঠে খুকিদি বললেন, ‘কাউকে বলিনি তুই যাত্রা শিখছিস। যাত্রা শেখ, বেশ মজা হবে। আমি ভালো হয়ে উঠলে কেমন শিখলি দেখাবি, কেমন?’
দেখানো আর হয়নি। যাত্রা, থিয়েটার, সিনেমা, দেশজোড়া খ্যাতি—উত্তমের কিছুই দেখা হয়নি খুকিদির। কয়েক দিন টাইফয়েডে ভুগে দিদি তাঁর পাড়ি জমান ওপারে। খুকিদির এই মৃত্যু কোনো দিন ভুলতে পারেননি উত্তমকুমার। এ ঘটনা উত্তমকুমার লিখেছেন তাঁর স্মৃতিকথা ‘আমার আমি’তে।

বছরজুড়েই বিভিন্ন অঙ্গনের শিল্পীদের প্রয়াণ শোকাহত করেছে সংস্কৃতি অঙ্গনের মানুষকে। ২০২৫ সালে প্রয়াত শিল্পীদের খবর এই প্রতিবেদনে।
১০ ঘণ্টা আগে
বছরজুড়ে চলচ্চিত্রের জগতে ঘটেছে কাঙ্ক্ষিত ও অনাকাঙ্ক্ষিত নানা ঘটনা। আজকের পত্রিকার পাঠকদের জন্য নির্বাচিত পাঁচটি আলোচিত ঘটনার খবর।
১০ ঘণ্টা আগে
২০২৫ সালে অনেক তারকা যেমন বিয়ের পিঁড়িতে বসেছেন, তেমনি এসেছে বিবাহবিচ্ছেদের খবর। তারকাদের বিয়ে ও বিচ্ছেদের খবর নিয়ে এই প্রতিবেদন।
১০ ঘণ্টা আগে
সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রয়াণে শোকের ছায়া নেমেছে দেশে। শোকাহত দেশের সাংস্কৃতিক ব্যক্তিরাও। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট দিয়ে নিজেদের অনুভূতি জানিয়েছেন তাঁরা। অনেকেই করেছেন স্মৃতিচারণা। শোক জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান।
১৭ ঘণ্টা আগে