Ajker Patrika

‘রেহানা মরিয়ম নূর’ দেখার আগে ভাবুন

আশিকুর রিমেল
আপডেট : ২০ নভেম্বর ২০২১, ১১: ৪৬
‘রেহানা মরিয়ম নূর’ দেখার আগে ভাবুন

অপরাধ কী? একটা ঘটনাই তো? সে ঠিক আছে। কিন্তু ঘটনায় কর্তা থাকে, থাকে বিধেয়। আর কিছু কি থাকে? থাকে। পৃথিবীর নিয়মে ‘পর্যবেক্ষক’ ছাড়া তো ঘটনাই নেই। তাহলে ঘটনার সঙ্গে কে জড়ায়, কীভাবে জড়ায়? যদি ঘটনা অপরাধই হয়, তবে ভুক্তভোগী কি শুধু ঘটনার সক্রিয় সত্তা কেবল, নাকি এর সঙ্গে দ্রষ্টাও জড়িয়ে পড়ে? দ্রষ্টা নিজেও কি ভুক্তভোগী হয়ে ওঠে না? এই তাবৎ প্রশ্ন নিয়ে তালগোল পাকিয়ে গেলে একটু বড় শ্বাস নিন। 

তারপর ভাবুন একটা সিনেমা আপনার সামনে অথবা আপনি তার সামনে। আর তার নাম—‘রেহানা মরিয়ম নূর’। সম্পূর্ণ বাংলাদেশে ধারণকৃত একটি স্বাধীন চলচ্চিত্র। যোগ্যতা তো বটেই, অর্জনের খাতার দিকে তাকালেই সিনেমাটির নাম গর্ব করে বলতে হবে। দেশের চলচ্চিত্রাঙ্গনে যখন মৌলিক নির্মাণ নিয়ে হাপিত্যেশ চলছে, তখন কান চলচ্চিত্র উৎসবে জায়গা করে নেওয়া সিনেমা নিয়ে আলাদা করে কথা বলার দাবি এমনিতেই ওঠে। 

এমনিতে পুরস্কার না জেতা পর্যন্ত কোনো নির্মাণ নিয়ে বাংলাদেশে তেমন আলোচনার রেওয়াজ নেই। এই বিচারেও রেহানা মরিয়ম নূর আলোচনার দাবিটি জানিয়ে রেখেছে জোরেশোরে। কান চলচ্চিত্র উৎসবে প্রথমবারের মতো আঁ সেরতাঁ র‍্যগা বিভাগে প্রদর্শনের সুযোগ পাওয়া ছাড়াও হংকং এশিয়ান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের নিউ ট্যালেন্ট অ্যাওয়ার্ড জয় করেছে ‘রেহানা’। ঝুলিতে রয়েছে এশিয়া প্যাসিফিক স্ক্রিন অ্যাওয়ার্ডসে (অ্যাপসা) গ্র্যান্ড জুরি ও সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার। আর এসব এড়িয়ে গিয়ে শুধু নির্মাণ হিসেবে দেখলেও আলোচনাটি করতে হবে। কারণটি উন্মোচিত হবে ক্রমশ। 

তবে, আপনি যদি ভেবে থাকেন অনেক আলোচনা-সমালোচনা শুনেছি এই সিনেমা নিয়ে; যাই দেখে আসি, তাহলে আপনি ফেঁসেছেন। শুধু তাঁরাই নন, যাঁরা সিনেমাটি খুব বুঝতে যাবেন; তাঁরা তো বটেই, এমনকি নিছক বিনোদনের জন্য যাঁরা যাবেন, তারাও বিরক্ত হওয়ার আশঙ্কাটা সবচেয়ে বেশি। বিষয়টি আসলে বিরক্তিরও নয়, উদ্বেগের, মানসিক চাপের! খুব চলতি কথায় বোঝাতে ‘বিরক্ত’ই বলছি। 

কিন্তু কী কারণ? সে প্রসঙ্গে একটু পরে আসছি! আগে এই প্রশ্নের উত্তর আপনার জানা আছে কি না, একটু ভেবে দেখুন তো! 

একটি ঘটনা! কেউ দেখেনি! তাই বলে কি তা ঘটেনি? আবার যদি এমন হয়, সেই ঘটনার সাক্ষী শুধু আপনিই, তাহলে ঘটনাটি প্রমাণের জন্য কি আপনি একাই যথেষ্ট? অন্যদিকে আপসেরও ঢের সুযোগ আছে! আপনি কি আপস করবেন? যদি ঘটনাটি আপনার পাশেই বারবার ঘটে যাওয়া একটি অন্যায় হয়, তবুও? আর যদি আপস না-ই করেন, তাহলে কেনই-বা করবেন না, ভেবেছেন? 

আপাতত ভাবনাটা থাক। এসব না ভাবলেও চলবে। কারণ, সিনেমাটিই আপনাকে সঙ্গে করে এই ভাবনার মধ্যে দিয়ে নিয়ে যাবে। আপনি যে সিনেমাটি দেখতে যাচ্ছেন, তার নাম ‘রেহানা মরিয়ম নূর’। আপনি জানেন যে, এই নামের একটি চরিত্রের সঙ্গে আপনার পরিচয় ঘটবেই। এবং সেটি অবশ্যই প্রধান চরিত্র হবে। 

রেহানা মরিয়ম নূর সিনেমার একটি দৃশ্য

হয়েছেও তাই। সিনেমাটির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত রেহানার সঙ্গেই চলতে হয় দর্শকদের। চিত্রনাট্য ও দৃশ্যায়ন দেখে অনায়াসে বলা যায় সিনেমাটির নামকরণ সার্থক হয়েছে। অন্তত এ বিষয়ে আপনার দ্বিমত থাকার সম্ভাবনা একেবারেই কম। আপনি ভীষণ রাগী বা জেদি হলে তো কথাই নেই, প্রথম দৃশ্য ও ডায়ালগ থেকেই আপনি রেহানা মরিয়ম নূর হয়ে উঠবেন। বলে নেওয়া ভালো, নারী-পুরুষের ভেদে নয়, আপনার জীবনে ঘটে যাওয়া পরিস্থিতির অভিজ্ঞতা থেকেই আপনি নূরের সঙ্গে মিশে যাবেন। একজন ব্যক্তির স্বাভাবিক আচার-আচরণের মধ্যেই সে প্রবণতা রয়েছে। আর রাগ, জেদ কম থাকলেও সমস্যা নেই; ক্যামেরা তো আছেই। মুভিং মোডে সব সময় আপনাকে নিয়ে যাবে রেহানার সঙ্গে। চরিত্রের সঙ্গে সংযোগ ঘটতে যা লাগে, তাই। ক্যামেরার কাজ প্রশংসার দাবি রাখে। চরিত্রের সঙ্গে ক্যামেরার দৌড় আপনাকেও হাঁপিয়ে তুলতে পারে। 

যদিও ক্যামেরা মুভিং শটে আমাদের দেশের আরেক নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী নির্মিত চলচ্চিত্র, টেলিছবিতে দেখে আমরা খানিকটা অভ্যস্ত হয়ে উঠেছি। সে কথায় না যাই। 

একটা কথা বলুন তো, আপনার কি মনে হয় একশ্রেণির মেয়েই থাকে, যারা আসলে ধর্ষণ হওয়ার যোগ্য? ধর্ষণের জন্য একশ্রেণির নারীই থাকে? থাক আপনাকে আর এসব প্রশ্ন করে বিব্রত করতে চাই না! এসব প্রশ্ন এবং উত্তর সিনেমার গল্পের মধ্যে পেয়ে যাবেন হয়তো। শুধু আপনার নিজের অভিজ্ঞতাটুকু যোগ হবে। 

তা ছাড়া এখনই সিনেমার গল্প তো আর বলে দিতে পারি না। আজও দেশের ১০টি প্রেক্ষাগৃহে চলছে সিনেমাটি; একটু খুঁজলেই সেই তালিকা পেয়ে যাবেন। সিনেমার দলের বাইরে, বিশেষত নির্মাতার বাইরে প্রত্যেকেই আমরা দর্শক। রেহানা মরিয়মের গল্পটা দেখে-শুনে, বুঝতে চেষ্টা করতে পারি, মন্তব্যও করতে পারি। এ ছাড়া আরেকটু সাহস থাকলে কোনো চরিত্রকে ধারণ করার শিক্ষাটিও নিয়ে নিতে পারি! 

কিন্তু এই মুহূর্তে গল্প বলা, উঁহু; আবার পরে কখনো বিস্তর গল্প করা যাবে। তবে হ্যাঁ, সিনেমাটিতে যে বিষয়গুলো এড়িয়ে গেলে রেহানা মরিয়মকে বুঝতে কিঞ্চিৎ দূরত্ব থেকে যাবে, বড়জোর সেগুলোর বিষয়ে ব্যক্তিগত কিছু মন্তব্য তুলে ধরা যেতে পারে। 

রেহানা মরিয়ম নূর সিনেমার পোস্টাররেহানা মরিয়ম অন্য চরিত্রগুলোর নিরাপদ আশ্রয়, যেখানে তার একান্ত নিজের বলতে কোনো সময় নেই। অন্য চরিত্রগুলোর প্রতি শুধু নিরলস দায়িত্ব পালন করে চলেছেন। মানুষের বাইরে স্রষ্টার ইবাদতে নামাজ পড়েন তিনি। কিন্তু তাঁর সঙ্গে সম্পৃক্ত চরিত্রগুলোর ভয়, দুশ্চিন্তা, অহংকার, হুমকি, অসহায়ত্ব তাঁকে পুরোটা সময় মানসিক চাপে রাখে। চলতি কথায় ‘বিরক্ত’ করে। যুগের পর যুগ ধরে চলে আসা, আমাদের চারপাশেই বারবার ঘটে যাওয়া একটা প্রবৃত্তির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ করতে গিয়ে ক্ষুব্ধ, জেদি, বাধ্য, বিধ্বস্ত, দুঃখী, আহত, আনন্দিত করে মরিয়মকে। বিশেষ করে সিনেমাটিতে ঘটনার সঙ্গে শব্দ ধারণ, দরজার শব্দ, পানির শব্দ, এমনকি নিশ্বাসের শব্দ ভীষণ প্রভাবিত করেছে। 

শুরুতেই বলেছি, দর্শক ‘বিরক্ত’ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি! কারণ, সিনেমাটিতে আপনি যে চরিত্রের সঙ্গে মিশে যাচ্ছেন, তার সময়টা এভাবেই কাটছে! 

ক্রমে আপনার কাছে স্পষ্ট হয়ে উঠবে রেহানার রাগ ও জেদের অন্যতম কারণগুলো। সিনেমাটি শেষে যদি আপনি বিরক্ত হন এবং চারপাশের কোথাও এর প্রভাব পড়তে দেখেন, তাহলে বুঝে নেবেন নির্মাতা সফল হয়েছেন। সে হিসেবে কমই ভুল হবে যে, নির্মাতা আপনাকে বিরক্তই করতে চেয়েছিলেন! 

গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় জানানো খুব জরুরি। সেটি হলো রেহানা মরিয়ম নূর সিনেমাটির অন্যতম প্রধান চরিত্র তার মেয়ে। মা ও মেয়ে—উভয়ের সঙ্গেই রয়েছে ‘বাহির’ থেকে দরজা আটকে যাওয়ার দৃশ্য! একটু খেয়াল রাখবেন, দরজার ভেতর-বাহির এই বন্দী-মুক্তি খেলায় কোনো রহস্য লুকিয়ে নেই তো! 

চলতি মাসের ১২ তারিখ থেকে মুক্তি পাওয়া সিনেমাটি এখনো চলছে। এদিকে কিছুদিনের মধ্যেই ছবিটি পাইরেসি হওয়ারও অভিযোগ উঠেছে। এ কথা বলা মুশকিল যে, কে কোন মাধ্যমে দেখবেন। তবে সিনেমা হলে বসে সিনেমা দেখার আনন্দটা আসলেই অন্য রকম। 

শেষ কথা। কথা নয় ঠিক। আচ্ছা, #metoo আন্দোলনের কথা আপনাদের মনে আছে? রেহানা মরিয়ম নূর দেখতে দেখতে এ নিয়ে বলতে বা লিখতে গিয়ে এ প্রশ্নই মাথায় আসছে কেবল। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ছয় বছর পর অংশুর পরিচালনায় সুনেরাহ, আরশের সঙ্গে তোলা ছবি নিয়ে গুঞ্জন

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
ছয় বছর পর অংশুর পরিচালনায় সুনেরাহ, আরশের সঙ্গে তোলা ছবি নিয়ে গুঞ্জন
সুনেরাহ বিনতে কামাল। ছবি: সংগৃহীত

২০১৯ সালে তানিম রহমান অংশুর পরিচালনায় ‘ন’ডরাই’ সিনেমা দিয়ে বড় পর্দায় অভিষেক হয় সুনেরাহ বিনতে কামালের। প্রথম সিনেমাতেই বাজিমাত করেন অভিনেত্রী। সেরা অভিনেত্রী হিসেবে জেতেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। এরপর ওটিটি, সিনেমা ও টিভি নাটকে নিয়মিত কাজ করলেও তানিম রহমান অংশুর পরিচালনায় আর দেখা যায়নি সুনেরাহকে। ছয় বছর পর আবার এই পরিচালকের নির্দেশনায় কাজ করছেন তিনি।

নতুন এই কাজের শুটিং করতে ১৮ ডিসেম্বর নেপালে যান সুনেরাহ। গতকাল শেষ হয়েছে শুটিং। গতকাল তানিম রহমান অংশুর সঙ্গে তোলা শুটিংয়ের একটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করে অভিনেত্রী লেখেন, ‘কিছু একটা হচ্ছে। ছয় বছর পর একসঙ্গে আমরা কাজ করছি। সবাইকে দেখানোর অপেক্ষায়।’

নতুন এই কাজ নিয়ে জানতে যোগাযোগ করা হয় সুনেরাহর সঙ্গে। নেপাল থেকে খুদেবার্তায় সুনেরাহ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দারুণ ইন্টারেস্টিং একটা কাজ করছি। এখানে আমাকে এমন চরিত্রে দেখা যাবে, যেমনটা আগে কখনো দেখা যায়নি।’

এটি ওটিটি কনটেন্ট নাকি সিনেমা, সে বিষয়ে এখনই কিছু জানাতে রাজি নন সুনেরাহ। বললেন, ‘কাজটি কোথায় দেখা যাবে এ নিয়ে এখনই কিছু বলতে চাইছি না। আশা করছি শিগগির দর্শক কাজটি দেখতে পারবে।’

আরশের সঙ্গে সুনেরাহ বিনতে কামাল
আরশের সঙ্গে সুনেরাহ বিনতে কামাল

শুটিং অভিজ্ঞতা জানিয়ে সুনেরাহ বলেন, ‘খুব ঠান্ডার মধ্যে শুটিং করতে হচ্ছে। আমরা যেখানে শুটিং করছি, সেখানে মাইনাস ডিগ্রি। প্রথমবার এ রকম আবহাওয়াতে শুটিং করলাম। সব মিলিয়ে ভয়ংকর অভিজ্ঞতা। কিন্তু কাজটি খুব ভালো হয়েছে।’

অন্যদিকে, ২২ ডিসেম্বর ভিন্ন একটি ছবি পোস্ট করেন সুনেরাহ। অভিনেতা আরশ খানের সঙ্গে তোলা ছবিটিতে দেখা যায়, সমুদ্রপারে আরশ ও সুনেরাহ দুজন দুজনকে জড়িয়ে ধরে হাসছেন। মুহূর্তেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয় ছবিটি। অনেকেই দাবি করেন, এই ছবি দিয়ে আরশের সঙ্গে প্রেমের গুঞ্জন স্বীকার করলেন সুনেরাহ। অনেকে তাঁদের শুভকামনা জানান।

বরাবরের মতো এবারও প্রেমের গুঞ্জন উড়িয়ে দিলেন সুনেরাহ। জানালেন এই ছবিতে নেটিজেনদের শুভেচ্ছাবার্তা তাঁকে বিস্মিত করেছে। আরও জানালেন থাইল্যান্ডে শুটিংয়ের সময় তোলা হয়েছিল ভাইরাল হওয়া ছবিটি। থাইল্যান্ডে ওই সময় একসঙ্গে ছয়টি নাটকের শুটিংয়ে গিয়েছিলেন তাঁরা। এই ছবিটি ভালো লাগায় সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন সুনেরাহ। এর বাইরে কিছু না।

নাটক, ওটিটি ও সিনেমা—সব মাধ্যমেই ব্যস্ত সময় পার করছেন সুনেরাহ। টিভি ও ইউটিউবে নিয়মিত প্রকাশ পাচ্ছে তাঁর অভিনীত নাটক। গত মাস থেকে প্রচার শুরু হয়েছে সুনেরাহর প্রথম ধারাবাহিক ‘এটা আমাদেরই গল্প’। সম্প্রতি শেষ করেছেন আরাফাত মহসিন নিধি পরিচালিত একটি সিরিজের শুটিং। এ ছাড়া মুক্তির অপেক্ষায় আছে রুবাইয়াত হোসেনের সিনেমা ‘দ্য ডিফিকাল্ট ব্রাইড’। এতে সুনেরাহর সহশিল্পী আজমেরী হক বাঁধন, রিকিতা নন্দিনী শিমু।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বড়দিন উপলক্ষে শিল্পকলায় বিশেষ আয়োজন

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
এফ মাইনর ব্যান্ডের সদস্যরা। ছবি: সংগৃহীত
এফ মাইনর ব্যান্ডের সদস্যরা। ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশ গড়ে তোলার অগ্রযাত্রায় ঈদ, বৌদ্ধপূর্ণিমা, দুর্গাপূজা উপলক্ষে সাংস্কৃতিক আয়োজনের ধারাবাহিকতায় এবার বড়দিন উপলক্ষে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে আয়োজন করা হচ্ছে বিশেষ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। আগামীকাল খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব বড়দিন। এ উপলক্ষে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির ব্যবস্থাপনায় আজ ২৪ ডিসেম্বর বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণের নন্দনমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে এই সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা। বড়দিনকে ঘিরে শান্তি, সম্প্রীতি ও মানবিক মূল্যবোধে মানুষের জীবনকে আলোকিত করার প্রয়াসে আয়োজিত সাংস্কৃতিক সন্ধ্যায় থাকছে সংগীত, ক্যারল সং ও কীর্তন পরিবেশনা।

অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করবেন তেজগাঁও চার্চ কয়‌্যার শিল্পীরা। পরিবেশনায় অংশ নেবেন ক্রিস্টোফার গ‌োমেজ, দিলীপ মন্ডল, বিজয় গোমেজ, রে‌ক্সোনা মন্ডল, জয়া গ‌োমেজ, বিভা গ‌োমেজ, সুভাষ পি‌রিচ প্রমুখ। সংগীত পরিবেশন করবেন জুলিয়েট সুস্মিতা বাড়ৈ। ব্যান্ডসংগীত নিয়ে মঞ্চে আসবে ব্যান্ড গেৎশিমানী ওরশিপ ও এফ মাইনর। অনুষ্ঠানটি সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

উল্লেখ্য, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির ব্যবস্থাপনায় পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গত ৩০ মার্চ একাডেমির নন্দনমঞ্চে চাঁদরাতের আনন্দ অনুষ্ঠান, বৌদ্ধপূর্ণিমা উপলক্ষে ১০ মে একাডেমির নন্দনমঞ্চসহ ৬টি জেলায় সাংস্কৃতিক উৎসব, পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ৬ জুন নন্দনমঞ্চে আনন্দ উৎসব, শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে ৩০ সেপ্টেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এবং ১ অক্টোবর একাডেমির নন্দনমঞ্চে দুই দিনব্যাপী শারদীয় সাংস্কৃতিক উৎসবের আয়োজন করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ট্রেলারেই ঝড় তুলল নোলানের ‘দ্য ওডিসি’

বিনোদন ডেস্ক
ওডিসিয়াস চরিত্রে ম্যাট ডেমন। ছবি: সংগৃহীত
ওডিসিয়াস চরিত্রে ম্যাট ডেমন। ছবি: সংগৃহীত

‘ওপেনহাইমার’ সিনেমার সাফল্যের পর ক্রিস্টোফার নোলান নজর দিয়েছেন গ্রিক মহাকাব্যে। গ্রিক কবি হোমারের ‘দ্য ওডিসি’ মহাকাব্য তুলে আনছেন পর্দায়। হাজার হাজার বছর ধরে যে গল্প মানুষ মনে রেখেছে, যেসব চরিত্র রহস্য-রোমান্সের অনুভূতি জাগিয়েছে; সেই গল্প ও চরিত্ররা কতটা জীবন্ত হয়ে ধরা পড়বে ক্যামেরায়, তা নিয়ে দর্শকদের কৌতূহল ছিল। অবশেষে দ্য ওডিসির ট্রেলার প্রকাশ করল ইউনিভার্সাল পিকচার্স। প্রায় দুই মিনিটের এ ট্রেলার রীতিমতো ঝড় তুলেছে বিশ্বজুড়ে। এ যেন সত্যিই এক মহাকাব্যিক নির্মাণ!

দ্য ওডিসি তৈরি হয়েছে ওডিসিয়াসের নিজ ভূমিতে ফেরার রোমহর্ষক সংগ্রাম নিয়ে। গ্রিসের এক ছোট দ্বীপ ইথাকার রাজা ছিলেন ওডিসিয়াস। ট্রোজান যুদ্ধ শুরু হলে ওডিসিয়াসকে সেই যুদ্ধে অংশ নিতে হয়। একটানা ১০ বছর চলে সেই যুদ্ধ। যুদ্ধ শেষে দেশে ফেরার পথে ঝড়ের মুখে পড়ে দল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে ওডিসিয়াস। পথভ্রষ্ট হয়ে সে সাগরের মধ্যে ঘুরতে ঘুরতে বিভিন্ন দ্বীপে বিভিন্ন ধরনের মানুষ, জন্তু-জানোয়ার এবং দেব-দেবীর মুখোমুখি হয়। ভয়ংকর সব বাধার মুখে পড়ে। কিন্তু নিজের বুদ্ধি, সাহস এবং শক্তি দিয়ে সকল বিপদ পেরিয়ে প্রায় ২০ বছর পর বিজয়ী হিসেবে নিজ দেশে ফেরে ওডিসিয়াস।

দ্য ওডিসির ট্রেলারের শুরুতেই দেখা যায় ট্রয় যুদ্ধের ময়দানে পড়ে থাকা শত শত সমাধির দৃশ্য। বাড়ি ফেরার জন্য সৈন্য বাহিনী নিয়ে রওনা দেয় ওডিসিয়াস। বিপৎসংকুল সমুদ্রযাত্রা, পথে শত্রুদের হানা, কখনো তীব্র ঝড়, ভুল দ্বীপে গিয়ে ওঠা, নতুন নতুন বিপদ—সবকিছুই ক্যামেরায় নিখুঁতভাবে তুলে এনেছেন ক্রিস্টোফার নোলান!

সিনেমার মুখ্য চরিত্র ওডিসিয়াসের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন ম্যাট ডেমন। ট্রেলারের প্রায় পুরোটা জুড়ে তাঁর উপস্থিতি। কয়েক ঝলক দেখা গেল ওডিসিয়াসের ছেলে টেলিমাকাস চরিত্রে টম হল্যান্ড এবং ওডিসিয়াসের স্ত্রী পেনেলোপের চরিত্রে অ্যান হ্যাথাওয়েকে। আরও অভিনয় করেছেন রবার্ট প্যাটিনসন, জেন্ডায়া, শার্লিজ থেরন, মিয়া গোথ, বেনি সাফডি, জন বার্নথাল প্রমুখ। তবে ট্রেলারে তাঁদের দেখা যায়নি।

দ্য ওডিসি সিনেমায় সর্বাধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন আইম্যাক্স ক্যামেরা ব্যবহার করেছেন ক্রিস্টোফার নোলান। ২০ লাখ ফুট ফিল্ম খরচ করেছেন গল্পটি তুলে আনতে।

বহুল প্রতীক্ষিত সিনেমাটি বিশ্বজুড়ে মুক্তি পাবে ২০২৬ সালের ১৭ জুলাই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শত পর্বে ধারাবাহিক ‘তেল ছাড়া পরোটা’

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
শত পর্বে ধারাবাহিক ‘তেল ছাড়া পরোটা’

গত আগস্টে মাছরাঙা টেলিভিশনে প্রচার শুরু হয় ধারাবাহিক নাটক ‘তেল ছাড়া পরোটা’। সমাজের নীতিবান ও নীতিহীন মানুষের গল্পে ধারাবাহিকটি রচনা ও পরিচালনা করেছেন কচি খন্দকার। দেখতে দেখতে শত পর্বের মাইলফলকের সামনে দাঁড়িয়ে নাটকটি। আজ রাত ৮টায় প্রচার হবে তেল ছাড়া পরোটা ধারাবাহিকের ১০০তম পর্ব।

তেল ছাড়া পরোটা নাটকের গল্পে দেখা যায় একটি পরিবার একসময় তিলের খাজার ব্যবসা করত। এখন তারা রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ক্ষমতাবানদের তোষামোদ করে বিশাল ব্যবসা গড়ে তুলেছে। তাদের ব্যবসা সরিষার তেল, নারকেল তেলের। এমনকি জ্বালানি তেল পেট্রলের ব্যবসাও আছে। তাদের কোম্পানির নাম তিলের খাজা অয়েল মিল কোম্পানি লিমিটেড। অন্যদিকে, রয়েছে আরেক পরিবার, যারা সহজ-সরল জীবনযাপনে অভ্যস্ত। তোষামোদ নয়, তারা নিজেদের নীতিতেই বিশ্বাসী। এই দুই পরিবারের মধ্যকার সাংস্কৃতিক, নৈতিক ও সামাজিক সংঘাত নিয়েই এগিয়ে যায় নাটকের কাহিনি।

নির্মাতা বলেন, ‘সমাজে একদল মানুষ আছে, যারা বিশ্বাস করে, উন্নতি করতে হলে সমাজে যারা ক্ষমতাবান, তাদের তেল দিয়ে চলতে হয়। অন্যদিকে আরেক দল মানুষ আছে, যারা কাউকে তোষামোদ করতে পছন্দ করে না। এসব কারণে অনেক প্রতিভাবান হারিয়ে যাচ্ছে। বিষয়টি মানুষ হিসেবে আমাকে যন্ত্রণা দেয়। সেই যন্ত্রণা থেকে গল্পের শুরু। এরপর নানাভাবে পরিস্থিতি অনুযায়ী গল্প এগিয়ে গেছে।’

নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন মারজুক রাসেল, চাষী আলম, সালহা খানম নাদিয়া, মুসাফির সৈয়দ বাচ্চু, কচি খন্দকার, রোবেনা রেজা জুঁই, সুজাত শিমুল, অনিক, আব্দুল্লাহ রানা, মিলি বাসার প্রমুখ।

গত মাসে নির্মাতা কচি খন্দকার জানিয়েছিলেন, ১০০ পর্ব থেকে ধারাবাহিকের গল্পে আসবে নতুন চমক। সেই চমকের অংশ হিসেবে ধারাবাহিকে যুক্ত হবেন অভিনেতা মোশাররফ করিম। এতে মোশাররফ করিমকে দেখা যাবে তেল কোম্পানির মালিকানা হারিয়ে সংগ্রাম করা এক চরিত্রে। মূলত তেল কোম্পানি থেকে তাঁর অংশ দখল হয়ে যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত