Ajker Patrika

জাকসু নির্বাচন: শিবিরের জয়ে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ও ভোটব্যাংক

মুশফিকুর রিজন, জাবি
আপডেট : ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮: ০৩
জাকসু নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর নবনির্বাচিত ভিপি ও জিএসসহ বিজয়ীদের উচ্ছ্বাস। শনিবার সিনেট ভবনে। নির্বাচনে ২৫টি পদের মধ্যে ২০টিতেই জয় পেয়েছেন শিবির সমর্থিতরা।	ছবি: আজকের পত্রিকা
জাকসু নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর নবনির্বাচিত ভিপি ও জিএসসহ বিজয়ীদের উচ্ছ্বাস। শনিবার সিনেট ভবনে। নির্বাচনে ২৫টি পদের মধ্যে ২০টিতেই জয় পেয়েছেন শিবির সমর্থিতরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে প্রায় নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করেছে ইসলামী ছাত্রশিবির-সমর্থিত ‘সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেল। জাকসুর ২৫টি পদের ২০টি পদেই জয়ী হয়েছেন এই প্যানেলের প্রার্থীরা। এখন শিবিরের এমন বিজয়ের কারণ খুঁজছেন বিশ্লেষকেরা। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মনে করছেন, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ও নির্দিষ্ট ভোটব্যাংক জাকসুতে শিবিরকে এমন জয় এনে দিয়েছে।

গত শনিবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট হলে জাকসুর ফলাফল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনিরুজ্জামান। ফলাফলে দেখা যায়, শীর্ষ চারটি পদের তিনটিতেই জয় পেয়েছেন শিবির-সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থীরা। নির্ধারিত ২৫টি পদের মধ্যে ২০টি পদে শিবির-সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন, ৩টি পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ২টি পদে বাগছাস-সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থীরা জয়লাভ করেছেন।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রসংগঠনগুলোর রাজনৈতিক সহিংসতা নিয়ে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ বিরক্ত হয়ে পড়েছিল। তারা এমন একটি সংগঠনকে ভোট দিতে চেয়েছে, যারা তুলনামূলকভাবে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখবে। শিবির নিজেদের সুশৃঙ্খল ও সংগঠিত দল হিসেবে উপস্থাপন করতে সক্ষম হয়েছে। ফলে অনেক নিরপেক্ষ শিক্ষার্থী শিবিরকেই তাঁদের আস্থার জায়গা হিসেবে বিবেচনা করেছেন।

এ বিষয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘শিবিরের প্যানেল ছাড়া সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে, বিশেষ করে সুইং ভোটারদের কাছে আর কোনো অপশন ছিল না। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন একটা বামবিরোধী সেন্টিমেন্ট চলছে, যার ফলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বামদের ভোট দেয়নি। বাগছাস কিছু কার্যকলাপের কারণে শিক্ষার্থীদের থেকে দূরে সরে গেছে। এ ছাড়া বাদবাকি যে প্যানেল আছে, সেখানে জিতু ভাই ছাড়া সে রকম হেভিওয়েট কোনো প্রার্থী ছিলেন না, যার ফলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা শিবিরের প্যানেলের ওপরই আস্থা রেখেছেন।’

দর্শন বিভাগের অধ্যাপক রায়হান রাইন বলেন, ‘শিবিরের সাংগঠনিক নিষ্ঠা অন্য যেকোনো দলের চেয়ে ভালো। শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগের সন্ত্রাসের রাজনীতি ছাত্রদল মারফত ফিরে আসুক, এটা হয়তো চাননি। দীর্ঘকাল ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ থাকায় বর্তমান শিক্ষার্থীরা শিবিরের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড দেখতে পাননি, হয়তো ভেবেছেন, এরা ধর্মের নামে খারাপ কিছু নিশ্চয়ই করবে না।’

দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা

দীর্ঘ ৩৫ বছর পর গত বছরের নভেম্বরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রকাশ্যে আসে ছাত্রশিবির। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে ছাত্ররাজনীতির বিরুদ্ধে যখন শিক্ষার্থীরা অবস্থান নেন, তখনো হলে হলে কৌশলগত অবস্থান ধরে রাখে শিবির। রাজনৈতিক পরিচয় সামনে না এনে হলগুলোতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নানা কার্যক্রমে যুক্ত থেকেছে তারা। হলে ও ক্যাম্পাসে বিভিন্ন কল্যাণমূলক কাজেও সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা যুক্ত ছিলেন। প্রকাশ্যে রাজনীতি শুরুর পর ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের মধ্যে পবিত্র কোরআন শরিফ বিতরণ, ১৬ ডিসেম্বরে বিজয় দিবস উপলক্ষে কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন, শিক্ষার্থীদের জন্য ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প, শিক্ষার্থী বৃত্তি, শীতের পোশাক বিতরণ, জুলাইয়ে আহত ব্যক্তিদের সম্মাননা, কোরবানির ঈদে শিক্ষার্থীদের জন্য মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন, অসুস্থদের সহায়তা প্রদানসহ নানা কার্যক্রম চালিয়েছে সংগঠনটি। এর মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শিবিরের বিভিন্ন পর্যায়ে নেতা-কর্মীদের যুক্ততা তৈরি হয়, যা নির্বাচনী প্রস্তুতির ক্ষেত্রও তৈরি করে দেয়।

এখন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পেশিশক্তির রাজনীতি বন্ধ আছে, গণরুম-গেস্টরুম সংস্কৃতিও নেই। কোনো রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনের কর্মসূচিতে যাওয়া এখন আর কারও জন্য বাধ্যতামূলক নয়। হল ও ক্যাম্পাসকে ভবিষ্যতেও এ রকম রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখতে শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রচার চালিয়েছে শিবির। এই প্রচারও নির্বাচনে তাদের সহায়তা করেছে।

বিশাল এই জয়ের বিষয়ে শিবিরের নেতাদের মূল্যায়ন হচ্ছে, ব্যক্তিগত পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের খোঁজ রাখা, সংকটে পাশে থেকে সহযোগিতা করাসহ বিভিন্ন কাজে গত এক বছর যুক্ত ছিলেন সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। কিন্তু এ নিয়ে তাঁরা প্রচার চালাতেন না, যা শিক্ষার্থীরা পছন্দ করেছেন। যার ফলে খুব সহজেই শিক্ষার্থীরা শিবিরের প্যানেলে ভোট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

এ বিষয়ে জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী হাফিজুল্লাহ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শিবির দীর্ঘদিন প্রকাশ্যে রাজনীতি না করায় সবার মধ্যেই তাদের নিয়ে একটি আগ্রহ ছিল। গত বছর প্রকাশ্যে আসার পর থেকে শিবির যে কার্যক্রমগুলো পরিচালনা করেছে, সেগুলো তাদের প্রতি একটি ইতিবাচক ধারণার জন্ম দিয়েছে। আর সেটার প্রতিফলন ঘটেছে জাকসুতে।’

সুনির্দিষ্ট ভোটব্যাংক

শিক্ষার্থীরা মনে করেন, শিবিরের জয় নিশ্চিত করেছে শিবিরের নিজস্ব ভোটব্যাংক। ভোটের ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, শিবির প্যানেল থেকে যাঁরা বিজয়ী হয়েছেন, তাঁদের বেশির ভাগের ভোটসংখ্যাই দুই থেকে আড়াই হাজারের মধ্যে ছিল। এর থেকে বেশি ভোট যাঁরা পেয়েছেন, তাঁরা আগে থেকেই বিভিন্ন কার্যক্রমের জন্য ক্যাম্পাসে পরিচিত ছিলেন। সেখান থেকে বলা যায়, শিবিরের প্রায় এক থেকে দেড় হাজারের মতো নিজস্ব ভোট রয়েছে, যাঁরা সংগঠনের বাইরে কাউকে ভোট দেননি। এর বাইরে যে ভোটগুলো এসেছে, তার ছিল বেশির ভাগ সুয়িং ভোটার, যাঁরা অন্য কোনো প্যানেলকে ভরসা করতে না পেরে শিবিরের প্যানেলকে বেশি যোগ্য মনে করেছেন।

এ বিষয়ে পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিকস বিভাগের শিক্ষার্থী তারেক মাহমুদ বলেন, ‘আমার ধারণা, ক্যাম্পাসে শিবির এবং ছাত্রী সংস্থার আনুমানিক এক থেকে দেড় হাজারের মতো প্রকাশ্য এবং অপ্রকাশ্য জনশক্তি রয়েছে, যাদের শতভাগ ভোট কাস্টিং নিশ্চিত করেছে শিবির। সঙ্গে তাবলিগ জামায়াতের মতো ডানপন্থী সংগঠনের ভোটও যুক্ত হয়েছে।’

সুনির্দিষ্ট ভোটব্যাংক থাকার পাশাপাশি এক পদে ছয়-সাতজন করে প্রার্থী থাকায় শিবিরের সুবিধা হয়েছে। এতে ভোট ভাগাভাগির সুবিধা পেয়েছে শিবির।

ফলাফল বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (পুরুষ) পদে যিনি বিজয়ী হয়েছেন, তাঁর থেকে ৩৪৪ ভোট কম পেয়ে দ্বিতীয় হয়েছেন বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) জিয়া উদ্দিন আয়ান। এই পদে জিয়ার দুই ব্যাচমেট ও সংগঠনের আরও একজন বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন। তাঁরা তিনজন মোট ভোট পেয়েছেন ১ হাজার ১৭২টি। এই ভোটগুলো ভাগ না হলে জিয়া উদ্দিন আয়ানের জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা থাকত।

এ বিষয়ে জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মৃধা মো. শিবলী নোমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জাকসু নির্বাচনে যেসব প্যানেল হয়েছিল, সেখানে বেশ কয়েকটি প্যানেলের সুযোগ ছিল সমঝোতার মাধ্যমে একটি প্যানেল করার। সেটি না করায় তাদের ভোটগুলো ভাগ হয়েছে। এদিক থেকে শিবির একটি বড় সুবিধা পেয়েছে বলে মনে হয়।’

ডাকসুর প্রভাব জাকসুতে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের ফলাফল জাকসুতে প্রভাব ফেলেছে বলে মনে করেন শিক্ষার্থীরা। বিশেষ করে মেয়েরা এখানে বেশি প্রভাবিত হয়েছেন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী হাজেরা আলম রুহানা বলেন, ‘ডাকসু নির্বাচনে শিবিরের নিরঙ্কুশ বিজয় জাহাঙ্গীরনগরের ভোটারদের কিছুটা প্রভাবিত করেছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের যাঁরা শিবিরের প্রার্থী ছিলেন, চার-পাঁচজন ছাড়া বাকিদেরকে সবাই ভালোভাবে চিনত না। তবে সার্বিকভাবে শিবিরের যেই ইমেজ তৈরি হয়েছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবির যেভাবে নানান প্রতিকূলতাকে সামলে জনগণের মন জয় করেছে, সে কারণেই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জাকসুতে শিবিরের প্যানেলের ওপর আস্থা রেখেছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জবির ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা আজ, আসনপ্রতি লড়বেন ৪০ জন

  জবি প্রতিনিধি
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক (সম্মান) ও বিবিএ প্রথম বর্ষের ‘সি’ ইউনিটের (বাণিজ্য অনুষদ) ভর্তি পরীক্ষা আজ ২৭ ডিসেম্বর (শনিবার) অনুষ্ঠিত হবে। পরীক্ষা বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এক ঘণ্টা সময়ব্যাপী চলবে।

‎‘সি’ ইউনিটে মোট ৫২০টি আসনের বিপরীতে আবেদন করেছেন ২০ হাজার ৫৩৭ জন শিক্ষার্থী। সে হিসেবে প্রতি আসনের জন্য লড়বেন প্রায় ৪০ জন ভর্তিচ্ছু।

‎এই ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ছাড়াও ঢাকার বাংলাবাজার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং গভর্নমেন্ট মুসলিম হাই স্কুল কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে।

মোট ১০০ নম্বরের পরীক্ষায় ৭২ নম্বর থাকবে এমসিকিউ থেকে এবং বাকি ১৮ নম্বর নির্ধারিত হবে এসএসসি (সমমান) ও এইচএসসি (সমমান) ফলাফলের ভিত্তিতে। পরীক্ষায় ইংরেজি, গাণিতিক বুদ্ধিমত্তা ও হিসাব বিজ্ঞান, ব্যবসায় নীতি ও প্রয়োগ বিষয় থেকে প্রশ্ন থাকবে।

বাণিজ্য অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মঞ্জুর মুর্শেদ ভূঁইয়া বলেন, আমাদের ৫২০টি আসনের বিপরীতে ২০ হাজার ৫৩৭ জন শিক্ষার্থী আবেদন করেছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ ঢাকার আরও তিনটি কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকার বাইরে কোনো কেন্দ্রে পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে না।‎

এর আগে ১৩ ডিসেম্বর ‘ই’ ইউনিটের (চারুকলা অনুষদ) এবং ২৬ ডিসেম্বর ‘এ’ ইউনিটের (বিজ্ঞান অনুষদ) ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

‎উল্লেখ্য, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘ডি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা আগামী ৯ জানুয়ারি বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এবং কলা ও আইন অনুষদভুক্ত ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা আগামী ৩০ জানুয়ারি বেলা ৩টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষা কাল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৯: ৪২
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে বিজ্ঞান ইউনিটের প্রথম বর্ষ আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামের ভর্তি পরীক্ষা আগামীকাল শনিবার বেলা সাড়ে ৩টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে। মোট ১ হাজার ৮৯১টি আসনের বিপরীতে এ বছর ১ লাখ ১৪ হাজার ১১৪ জন শিক্ষার্থী এ পরীক্ষায় অংশ নেবেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং ঢাকার বাইরে সাতটি বিভাগীয় শহরের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর আজ শুক্রবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে।

এতে বলা হয়, ঢাকার বাইরে যে সাতটি কেন্দ্রে ভর্তি পরীক্ষা হবে, সেগুলো হচ্ছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়।

একই দিন মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (এমআইএসটি) ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী যেসব শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্র পরিবর্তন করে ঢাকায় স্থানান্তর করেছেন, তাঁদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুবিধার্থে বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

এ অনুযায়ী ভর্তি পরীক্ষার জন্য এরই মধ্যে মিরপুর ও ফার্মগেট এলাকায় তিনটি অতিরিক্ত কেন্দ্রের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এমআইএসটি থেকে শিক্ষার্থীদের যাতায়াত নিরাপদ ও সুবিধাজনক করতে মেট্রোরেলের সময় ব্যবধান কমানো হয়েছে। এদিন শিক্ষার্থীদের জন্য অতিরিক্ত মেট্রোরেল চলাচল করবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুরোধে এমআইএসটি কর্তৃপক্ষ তাদের স্থাপত্য বিভাগের দ্বিতীয় পর্বের আগামীকালের পরীক্ষাটি এক দিন পিছিয়ে রোববার বেলা ৩টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত করার ব্যবস্থা করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় উপকেন্দ্রে জবির ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত

খুলনা প্রতিনিধি
খুবি উপকেন্দ্রে জবির ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত। ছবি: আজকের পত্রিকা
খুবি উপকেন্দ্রে জবির ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত। ছবি: আজকের পত্রিকা

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় (খুবি) উপকেন্দ্রে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক/স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ‘এ’ ইউনিটের (বিজ্ঞান ও লাইফ অ্যান্ড আর্থ সায়েন্স অনুষদ) ভর্তি পরীক্ষা সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে।

আজ শুক্রবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এ দিন ৩ হাজার ৯৪২ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে উপস্থিতির হার ছিল ৯৫ শতাংশ।

পরীক্ষা চলাকালে খুবির উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. রেজাউল করিম পরীক্ষাকেন্দ্র ও কন্ট্রোল রুমসমূহ পরিদর্শন করেন এবং সার্বিক বিষয়ে খোঁজখবর নেন। তিনি সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন।

এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. হারুনর রশীদ খান, ট্রেজারার প্রফেসর ড. মো. নূরুন্নবী, ছাত্রবিষয়ক পরিচালক প্রফেসর ড. মো. নাজমুস সাদাত, ভর্তি পরীক্ষার ফোকাল পয়েন্ট ও এনভায়রনমেন্ট সায়েন্স ডিসিপ্লিনের প্রধান প্রফেসর ড. মো. মুজিবর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এ ছাড়া কন্ট্রোল রুম ও পরীক্ষাকেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা বিভিন্ন স্কুলের ডিন, ডিসিপ্লিনপ্রধান, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‘প্রশ্ন ফাঁসের’ অভিযোগ ওঠার পর প্রাথমিকের নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

‘প্রশ্নপত্র ফাঁসের’ গুঞ্জনের পর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের আওতাধীন ‘হিসাব সহকারী’ পদের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। এই নিয়োগ পরীক্ষা আজ শুক্রবার বিকেলে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।

আজ শুক্রবার দুপুরে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) মো. মাসুদ হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তি থেকে পরীক্ষা স্থগিতের তথ্য জানা যায়। তবে বিজ্ঞপ্তিতে পরীক্ষা স্থগিতের কোনো কারণ উল্লেখ করা হয়নি।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের আওতাধীন হিসাব সহকারী পদে অনুষ্ঠেয় ২৬ ডিসেম্বর বেলা ৩টা থেকে বিকেল ৪টা ২০ মিনিট পর্যন্ত সময়ের পরীক্ষা অনিবার্য কারণবশত স্থগিত করা হলো। স্থগিত কা পরীক্ষার তারিখ ও সময় পরবর্তীতে জানানো হবে।

জানা গেছে, দুপুরের দিকে এ নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ তোলেন চাকরিপ্রার্থীরা। এমনকি ফাঁস হওয়া প্রশ্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়ে।

ফাঁস হওয়া প্রশ্ন ফেসবুকে দিয়ে মোহাম্মদ সৌরভ নামের একজন লেখেন, প্রশ্ন ফাঁস! প্রাথমিকের ‘হিসাব সহকারী’ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস। বিকেলে এ প্রশ্নেই পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল।

জানতে চাইলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) মো. মাসুদ হোসেন বলেন, প্রশ্নপত্র বণ্টনে অব্যবস্থাপনার কারণে পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত