Ajker Patrika

দ্য ৫ এএম ক্লাব থেকে শিক্ষা

এম এম মুজাহিদ উদ্দীন
আপডেট : ১২ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬: ৩১
দ্য ৫ এএম ক্লাব থেকে শিক্ষা

বিশ্ববিখ্যাত লেখক রবিন শর্মার লেখা অন্যতম একটি বই হলো দ্য ৫ এএম ক্লাব। ‘দ্য ৫ এএম ক্লাব’ বইটিতে লেখক চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন আমাদের উৎপাদনশীলতা, সৃজনশীলতা, কর্মক্ষমতা, নেতৃত্বের গুণাবলি এবং সর্বোপরি ব্যক্তিগত জীবনের সুখ-সমৃদ্ধি বৃদ্ধিতে ভোর ৫টায় ঘুম থেকে ওঠার গুরুত্ব কতখানি। বইয়ের শিক্ষাগুলো তুলে ধরেছেন এম এম মুজাহিদ উদ্দীন

ভোরে ঘুম থেকে উঠুন

দ্য ৫ এএম ক্লাব বইয়ের সবচেয়ে বড় শিক্ষা হলো ভোর ৫টার সময় ঘুম থেকে ওঠা। এটা একটা সফল এবং প্রাকৃতিক অভ্যাস। যাঁরা ভোর ৫টায় ঘুম থেকে ওঠেন, তাঁরা অন্য যাঁরা দেরিতে ঘুম থেকে ওঠেন তাঁদের চেয়ে বেশি সময় হাতে পান। সেই অতিরিক্ত সময় জীবনের অগ্রগতির কাজে ব্যয়ের সুযোগ তৈরি হয়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো ভোর ৫টা থেকে সকাল ৮টার মধ্যে সম্পন্ন করার কথা বলা হয়েছে বইটিতে। ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠলে জীবনে ডিসিপ্লিনের সেন্স তৈরি হয়; যা একটা মানুষকে সফলতার দিকে নিয়ে যায়।

রুটিন অনুযায়ী দিন শুরু করুন

বইটির লেখক শর্মা বলেছেন, শুধু ভোর ৫টায় ঘুম থেকে ওঠা আপনাকে সফল করে তুলবে না, বরং আপনি কীভাবে সকালের সময়টা ব্যয় করতে চান, তাও গুরুত্বপূর্ণ। তার ২০/২০/২০ সূত্র অনুসারে, আপনাকে ২০ মিনিট শারীরিক, ২০ মিনিট মানসিক আর ২০ মিনিট আত্মিক উন্নতির জন্য ব্যয় করতে হবে। শারীরিক উন্নতি করতে হলে ব্যায়াম করতে হবে। মানসিক উন্নতির মধ্যে জার্নালিং, ইবাদত, ধ্যান বা শান্ত চিন্তাভাবনা অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। আর আত্মিক উন্নতির কার্যক্রমগুলোর মধ্যে আপনার জীবনের লক্ষ্যগুলো পর্যালোচনা করা, পত্রিকা বা বই পড়া অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।

সঠিক ঘুম চক্রের ভূমিকা

বইটিতে রবিন শর্মা ইঙ্গিত দিয়েছেন, এই জগৎ ধীরে ধীরে নিদ্রাহীনতার মধ্যে ডুবে যাচ্ছে। মানুষ প্রায়ই কঠোর পরিশ্রম আর সাফল্যকে সারা রাত জেগে থাকার এবং নিজের ধৈর্যের পরীক্ষার ধারণার সঙ্গে জুড়িয়ে দিয়ে ভুল করেন। রাতে দেরিতে ঘুমান আবার সকালে দেরিতে ঘুম থেকে ওঠেন। ফলে শরীর, মন ঠিক থাকে না এবং কাজে ব্যাঘাত ঘটে। বইটিতে লেখক ঘুমের চক্রের যত্ন নেওয়ার এবং ভোর ৫টায় জীবন শুরু করার প্রয়োজনীয়তার ওপর আলোকপাত করেছেন।

নতুন অভ্যাস তৈরিতে হাল ছাড়বেন না

কখনো কখনো ভোর ৫টায় ঘুম থেকে ওঠা অসম্ভব বলে মনে হতে পারে। আপনার কষ্ট হতে পারে। তবে হাল ছেড়ে দেওয়া আপনার উচিত হবে না। অন্য যেকোনো নতুন অভ্যাসের মতো, এই রুটিনে অভ্যস্ত হতে সময় লাগবে। যেকোনো নতুন অভ্যাস রাতারাতি তৈরি হয় না। বইয়ের লেখক রবিন শর্মা উল্লেখ করেছেন, মানুষের মস্তিষ্ক পরিবর্তনের জন্য তৈরি করা হয়েছে। বিজ্ঞান অনুসারে একটি নতুন অভ্যাস তৈরি করতে প্রায় ৬৬ দিন লাগে। ৬৬ দিন একটানা ভোর ৫টায় ঘুম থেকে উঠুন। দেখবেন এটি আপনার অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেছে।

বিভ্রান্তি এড়িয়ে চলুন

আমাদের জীবনে চলার পথে বা কাজ করার ক্ষেত্রে নানা রকম বিভ্রান্তি এসে বাগড়া দেয়। কিন্তু কাজে সফল হতে হলে বিভ্রান্তি এড়িয়ে চলতে হবে। বর্তমান যুগ হলো প্রযুক্তির। ডিজিটাল যুগ। এই যুগে ডিজিটাল ডিভাইস আমাদের প্রায়ই বিভ্রান্তি তৈরি করে। প্রায়ই আপনার সকালকে নিজের মতো ব্যবহার করার পথে এবং আপনাকে পর্যাপ্ত বিশ্রাম পেতে বাধা দেয়। বইটি সোশ্যাল মিডিয়া, ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্যের দ্বারা বিভ্রান্তি এড়াতে আপনার সকালের সময়কে প্রযুক্তিমুক্ত রাখার পরামর্শ দিয়েছে।

নিজের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করুন

রবিন শর্মা একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জনের জন্য নিজেকে প্রতিশ্রুতি দেওয়ার কথা বলেছেন। তবে শুধু প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষান্ত থাকলেই চলবে না, বরং প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। অনেক সময় মানুষ তাঁদের প্রতিশ্রুতিতে অটল থাকতে বা বলকে ঘুরিয়ে দিতে ব্যর্থ হয়। কাঙ্ক্ষিত ফল না পাওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ এটি। তাই যত বাধাই আসুক না কেন, নিজের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করুন। প্রতিশ্রুতির ওপর অটল থাকুন।

জীবনে সঠিক ভারসাম্য খুঁজে পাওয়ার ক্ষমতা

মানুষ প্রায়ই যেকোনো জিনিস বোঝার জন্য সঠিক মানসিকতা অর্জনের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন। কিন্তু বইটি কয়েক ধাপ এগিয়ে মানুষের স্বাধীন মন ও আত্মার ধারণার পরিচয় দেয়।

বইটিতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে– শরীর, মন ও আত্মাকে সুন্দর ও সতেজ রাখতে জীবনের সবকিছুতে ভারসাম্য খুঁজে নিতে হবে। যখন জীবনে সবকিছুতে একটা ভারসাম্য থাকবে, তখন শরীর, মন ও আত্মা সুন্দর থাকবে। আর আমরাও সুখী থাকব। আমাদের সাফল্যের সম্ভাবনাও বেড়ে যাবে।

পরিবর্তনের শিল্প

বইটি আত্মপ্রতিফলনে দক্ষতা অর্জনের প্রয়োজনীয়তার ওপর আলোকপাত করেছে। কেউ হয়তো ভাবতে পারেন, এর উদ্দেশ্য কী? এই রুটিনের পেছনে ধারণাটি হলো ভুলগুলো প্রতিফলিত করা, শেখা এবং পরিবর্তন হওয়া। পরিবর্তন একটি চলমান প্রক্রিয়া। তাই আপনার প্রতিদিন নিজের আরও ভালো উন্নতির চেষ্টা করা উচিত। ঘুম থেকে ওঠার পর আপনার যে কাজগুলো করা উচিত, তার মধ্যে একটি হলো আপনার কর্ম এবং আগের দিনের বাদ পড়া সুযোগগুলোর দিকে ফিরে তাকানো। সে অনুযায়ী নতুন দিনটি অতিবাহিত করা।

নেতৃত্ব দেওয়া মানে সেবা করা

রবিন শর্মা বলেছেন, সেবার হাতিয়ার হওয়াই প্রকৃত শক্তি। চারপাশের অন্যদের জীবনকে সাহায্য ও উন্নত করার জন্য নিজের জীবনকে একটি মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা আপনার মাঝে সত্যিকারের অনুপ্রেরণা আনতে পারে। মানুষের সেবা করার মাধ্যমে আপনি নেতা হয়ে উঠতে পারেন। আশপাশের মানুষকে সেবা করুন। তাহলে আপনার মনে প্রশান্তি থাকবে। মানুষ আপনাকে সম্মান করবে। মানুষের প্রিয়পাত্র হয়ে উঠবেন।

স্বপ্নে অটল থাকুন

যাই হোক না কেন আপনার স্বপ্নে অটল থাকুন। আপনার স্বপ্ন থেকে কখনো পিছপা হবেন না। আপনি যখন বড় স্বপ্ন দেখবেন, তখন মানুষ আপনাকে নিয়ে ঠাট্টা করবে এবং আপনাকে নিয়ে হাসবে। নিজের সম্পর্কে সন্দেহ থাকাটা স্বাভাবিক। কিন্তু তা সত্ত্বেও, আপনাকে প্রথম পয়েন্টে ফিরে যেতে হবে এবং আবার শুরু করতে হবে। জীবনে যত বাধাই আসুক না কেন, স্বপ্নের সঙ্গে কমপ্রোমাইজ করবেন না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

প্রতিষ্ঠার ১৫ বছর পর বুটেক্সে প্রথম সমাবর্তন

শেফাক মাহমুদ, বুটেক্স
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুটেক্স) অনুষ্ঠিত হলো সমাবর্তন। শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং অভিভাবকদের মধ্যে ছিল উৎসবমুখর পরিবেশ।

সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার। অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হংকং পলিটেকনিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. জুংগাই ওয়াং। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ।

সমাবর্তনে মোট ৪,১২৬ জন শিক্ষার্থীকে গ্র্যাজুয়েশন ও পোস্টগ্র্যাজুয়েশন ডিগ্রি প্রদান করা হয়। এর মধ্যে ৬০ জন মাস্টার্স, ১৯৪ জন এমবিএ এবং বুটেক্স অধিভুক্ত কলেজসমূহ থেকে ১,২৫০ জন গ্র্যাজুয়েট ডিগ্রি অর্জন করেছেন। কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফলের জন্য ৪১ জন শিক্ষার্থীকে গোল্ড মেডেল প্রদান করা হয়।

শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার বলেন, "আজকের এই সমাবর্তন শুধু বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে নয়, দেশের বস্ত্রশিল্পের গবেষণা ও উন্নয়নের ক্ষেত্রেও একটি যুগান্তকারী অর্জন। এই আয়োজনের মাধ্যমে আমরা এমন একটি প্রতিষ্ঠানের পরিপক্কতার সাক্ষী হচ্ছি, যা অল্প সময়ের মধ্যেই দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখতে সক্ষম দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তুলছে। এটি কেবল শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত সাফল্য নয়; বরং ভবিষ্যতের আরও অসংখ্য তরুণকে অনুপ্রাণিত করবে।"

ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ বলেন, "আমাদের বৈদেশিক আয়ের বড় অংশ আসে টেক্সটাইল ও অ্যাপারেল পণ্য থেকে। এই গুরুত্বপূর্ণ শিল্পের জন্য দক্ষ মানবসম্পদ সরবরাহে বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় অগ্রণী ভূমিকা রেখে চলেছে। তাই মনে রাখতে হবে—দেশ ও জাতি আজ তোমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। চলার পথ সহজ নয়; সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। তবে মনে রেখো, তোমাদের প্রতিটি সিদ্ধান্ত ও কাজের প্রভাব শুধু নিজেই নয়, পরিবার, সমাজ এবং দেশের ওপরও পড়বে।"

হংকং পলিটেকনিক বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ার অধ্যাপক ড. জুংগাই ওয়াং বলেন, “প্রাচীনকাল থেকে এশীয় এই উপমহাদেশ বস্ত্রশিল্পে বিশ্বজুড়ে সুপরিচিত। ঢাকার মসলিন ছিল বিশ্বের সর্বোৎকৃষ্ট তুলা বস্ত্র—যার কোমলতা ও মান আজও অতুলনীয়। ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় আজও বাংলাদেশের টেক্সটাইল ও অ্যাপারেল খাত বিশ্ববাজারে শক্ত অবস্থান তৈরি করেছে। দেশের ৫০ বিলিয়ন ডলারের তৈরি পোশাক শিল্পের মেরুদণ্ড হিসেবে গড়ে ওঠা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েটদের প্রতি জানাই আন্তরিক অভিনন্দন। টেক্সটাইল ও অ্যাপারেলের প্রতি আগ্রহ ও নিষ্ঠা নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলবে এবং দেশসেবার সুযোগ তৈরি করবে। এই সমাবর্তন শুধু একটি ডিগ্রি অর্জনের অনুষ্ঠান নয়—এটি আরও বড় একটি উত্তরাধিকার বহনের আনুষ্ঠানিক সূচনা।"

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. জুলহাস উদ্দিন বলেন, "মোট ৪,১২৬ জন গ্র্যাজুয়েট আজ তাদের ডিগ্রি গ্রহণ করছেন। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, এই সকল গ্র্যাজুয়েট দেশ ও জাতির কল্যাণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবেন। আমাদের শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে দেশের টেক্সটাইল শিল্পে দক্ষতা ও সুনামের সঙ্গে অবদান রেখে আসছে। এর পাশাপাশি ২৫০ জনেরও বেশি শিক্ষার্থী উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করে কর্মসংস্থান ও অর্থনীতিতে ভূমিকা রেখেছেন। আজকের এই সমাবর্তন শুধু একটি অর্জন নয়, বরং দায়িত্ব ও অঙ্গীকারের সূচনা। সততা, অধ্যবসায় এবং শিক্ষার ধারাবাহিক চর্চাকে জীবন ও কর্মের মূলমন্ত্র হিসেবে ধারণ করে নিজেদের জ্ঞান ও দক্ষতা দিয়ে সমাজ, দেশ ও মানবকল্যাণে আত্মনিয়োগ করার আহ্বান জানাই।"

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মধ্য জানুয়ারির আগেই শিক্ষার্থীদের হাতে শতভাগ বই পৌঁছাবে: শিক্ষা উপদেষ্টা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজধানীর মতিঝিলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) কার্যালয়ে আজ রোববার আয়োজিত অনুষ্ঠান। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজধানীর মতিঝিলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) কার্যালয়ে আজ রোববার আয়োজিত অনুষ্ঠান। ছবি: আজকের পত্রিকা

আগামী জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ের আগেই শতভাগ নতুন বই শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে যাবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা উপদেষ্টা চৌধুরী রফিকুল আবরার (সি আর আবরার)।

রাজধানীর মতিঝিলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) কার্যালয়ে আজ রোববার আয়োজিত ‘নতুন পাঠ্যবইয়ের সফট কপি অনলাইনে আপলোডকরণ উদ্বোধন’ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান। সেখানে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যবইয়ের অনলাইন ভার্সন বা পিডিএফ কপি প্রকাশ করা হয়।

শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, শিক্ষা কার্যক্রম আগামী বছরের জানুয়ারির মাঝামাঝি থেকে শুরু হবে। তার আগেই অলমোস্ট হান্ড্রেড পার্সেন্ট (প্রায় শতভাগ) বই পৌঁছে যাবে।

আগামী বছরের শুরুতে শিক্ষার্থীদের সবাই সব বিষয়ের নতুন পাঠ্যবই হাতে পাবে না বলে সম্প্রতি কয়েকটি পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে অভিযোগ করা হয়।

এর সমালোচনা করে সি আর আবরার বলেন, ‘এখানে পত্রপত্রিকায় বিভিন্ন সময়ে রিপোর্ট (প্রতিবেদন) হয়েছে, যথার্থ রিপোর্ট হয়েছে। আবার কিছু কিছু রিপোর্ট আমি বলব, সেগুলো খুব যে একটা সৎ উদ্দেশ্যে হয়েছিল, সেটা না।’

নতুন বই নিয়ে অভিযোগের জবাব শিক্ষা প্রশাসন কাজের মাধ্যমে দেবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

উপদেষ্টা বলেন, ‘বিভিন্ন রকমের স্বার্থগোষ্ঠী এখানে কাজ করেছে এবং আমরা এখানে সেগুলো সয়েছি। এগুলো আমরা কোশ্চেন করিনি, কনটেস্ট করিনি। আমরা মনে করেছি, শেষ বিচারে আমরা কতটুকু নির্ভুল ও মানসম্পন্ন বই দিতে পারব, দ্যাট উইল বি আলটিমেট টেস্ট।’

বই ছাপানোর সময় বেশি লাগার কারণও অনুষ্ঠানে ব্যাখ্যা করেন সি আর আবরার।

বিভিন্ন প্রেসে অভিযান চালিয়ে ‘মানহীন’ বই ধ্বংস করা হয়েছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের প্রক্রিয়ার মধ্যে যেন কোনো ভুল না থাকে, এ জন্য রিটেন্ডার করতে হয়েছে। বিভিন্ন রকমের চিন্তাভাবনা ছিল, সেগুলো আমাদের নিরসন করতে হয়েছে।’

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানাসহ শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও এনসিটিবির কর্মকর্তারা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সমুদ্রের বাতাসে স্বাস্থ্যের বার্তা

ক্যাম্পাস ডেস্ক 
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ৪৫
সমুদ্রের বাতাসে স্বাস্থ্যের বার্তা

কক্সবাজারের সোনারপাড়া মেরিন ড্রাইভ সড়কে সম্প্রতি এক বর্ণাঢ্য ম্যারাথন অনুষ্ঠিত হয়েছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল এবং বিদেশ থেকে মোট ৫০০ জন দৌড়বিদ এই আয়োজনে অংশ নেন।

ভোর ৬টায় উখিয়ার সোনারপাড়া বিচ পয়েন্ট থেকে শুরু হয়ে দৌড়টি শেষ হয় সকাল ৭টায় তারকা মানের হোটেল অর্কিড ব্লুতে। পুরুষ ক্যাটাগরিতে চ্যাম্পিয়ন হন মোহাম্মদ সায়েদ (০১৫৯), প্রথম রানারআপ তারেক (০৪৫৬) এবং দ্বিতীয় রানারআপ আশিক (০১৬০)। নারীদের বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হন বিদেশি প্রতিযোগী জোহানা (০২৩৯), প্রথম রানারআপ আভা (০০৬৫) এবং দ্বিতীয় রানারআপ কুজো (০০৮৭)।

ম্যারাথন আয়োজন করে শিক্ষার্থীদের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হাসিঘর ফাউন্ডেশন। অনুষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন উপদেষ্টা এ এইচ সেলিম উল্লাহ, প্রতিষ্ঠাতা ও কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইয়াসিন সিকদার, উখিয়া শাখার সভাপতি পিএম মোবারক, ইনস্টিটিউশনাল অ্যাফেয়ার্স উইংয়ের সিডিসিও শাইফুল ইসলাম শিহাব, উবায়েদ উল্লাহ শুভ, শাকিবুল ইসলাম, সাইয়েদ মোবারক, মেহেদী হাসান, শাহরিয়ার তানভীর রিফাত, আর জে রাফি, আবুল কাশেমসহ সংগঠনের অন্য সদস্যরা।

সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ ইয়াসিন সিকদার বলেন, ‘বিপুল সাড়া পাওয়ায় আমরা খুবই আনন্দিত। এই আয়োজনের মূল লক্ষ্য তরুণদের মাদক থেকে দূরে রাখা এবং স্বাস্থ্যসচেতন হওয়ার প্রতি উদ্বুদ্ধ করা।’

ম্যারাথনের সমাপ্তির পর অংশগ্রহণকারীরা আরও এরূপ আয়োজনের আহ্বান জানিয়েছেন। আয়োজকেরা জানান, আগামী বছরও তাঁরা একটি নতুন ম্যারাথন আয়োজনের চেষ্টা করবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

এআইইউবিতে সাইবার গেমিং ফেস্ট

ক্যাম্পাস ডেস্ক 
এআইইউবিতে সাইবার গেমিং ফেস্ট

আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ (এআইইউবি) কম্পিউটার ক্লাবের (এসিসি) আয়োজনে এবং অফিস অব স্টুডেন্ট অ্যাফেয়ার্সের সহযোগিতায় এআইইউবি সাইবার গেমিং ফেস্ট ২০২৫ সফলভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। চার দিনব্যাপী এই আয়োজনে দেশের বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু শিক্ষার্থী অংশ নেন।

উদ্বোধনী ও বিভিন্ন পর্বের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এআইইউবির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রহমান, প্রক্টর অধ্যাপক ড. মঞ্জুর এইচ খান, অফিস অব স্টুডেন্ট অ্যাফেয়ার্সের বিশেষ সহকারী ও সহযোগী অধ্যাপক অভিজিৎ ভৌমিক, সহকারী অধ্যাপক এবং বিশেষ সহকারী মো. মাজেদ-উল-হক এবং প্রভাষক ও বিশেষ সহকারী এস এম আবদুল্লাহ শাফি।

অনলাইন ও অন-ক্যাম্পাস প্রতিযোগিতার সমন্বয়ে আয়োজিত এই উৎসবে এআইইউবি ক্যাম্পাস পরিণত হয় এক প্রাণবন্ত ও প্রতিযোগিতামূলক গেমিং অঙ্গনে। পাবজি মোবাইল প্রতিযোগিতার অনলাইন কোয়ালিফায়ার পর্বে ৫১টি দল অংশ নেয়। সেখান থেকে ৩২টি দল সেমিফাইনালে এবং পরবর্তী সময়ে ১৬টি দল ক্যাম্পাস ফাইনালে উত্তীর্ণ হয়। চূড়ান্ত দিনে অনুষ্ঠিত চারটি উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচ শেষে ব্ল্যাকবিয়ার্ড পাইরেটস চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে।

ভ্যালোরান্ট বিভাগে অনলাইন লোয়ার-ব্র্যাকেট পর্ব ও ক্যাম্পাসে ল্যান ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। লোয়ার-ব্র্যাকেট থেকে উঠে এসে অলস্টারস দল গ্র্যান্ড ফাইনালে ন্যাক্সআর ই-স্পোর্টসের মুখোমুখি হয়। তিন ম্যাচের রুদ্ধশ্বাস ফাইনালে শেষ পর্যন্ত অলস্টারস চ্যাম্পিয়নশিপ নিশ্চিত করে।

এ ছাড়া উৎসবে মোবাইল লেজেন্ডস: ব্যাঙ ব্যাঙ (এমএলবিবি), এফসি ২৫ এবং ই-ফুটবল প্রতিযোগিতাও অনুষ্ঠিত হয়। এমএলবিবি বিভাগে ভাইপার স্ট্রাইকার্স, এফসি ২৫ বিভাগে নিও, ই-ফুটবল একক বিভাগে শাওন শান্ত এবং দলীয় বিভাগে পিএনজি বট চ্যাম্পিয়ন হয়।

সমাপনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এআইইউবির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান ও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য মিস নাদিয়া আনোয়ার, উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম এবং উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রহমান। বক্তারা আয়োজনের ব্যাপ্তি, পেশাদার ব্যবস্থাপনা এবং প্রতিযোগিতামূলক গেমিংয়ের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের দক্ষতা ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বৃদ্ধির গুরুত্ব তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠান শেষে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কারের অর্থ ও ক্রেস্ট বিতরণ করা হয়। পাশাপাশি তিনজন সেরা ক্যাম্পাস অ্যাম্বাসেডর এবং এআইইউবি ফটোগ্রাফি ক্লাব, এআইইউবি ই-স্পোর্টস ক্লাব ও এআইইউবি পারফর্মিং আর্টস ক্লাবকে বিশেষ সম্মাননা দেওয়া হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত