Ajker Patrika

সব চেষ্টা—আকুতি বিফলে, মায়ের কোলে মৃত সাজিদ

  • দুই বছরের শিশু সাজিদ গর্তে পড়ে যায় বুধবার দুপুরে।
  • উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সাজিদকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আপডেট : ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩: ৩৫
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহীর তানোরে শিশু সাজিদ যে গর্তে পড়ে গিয়েছিল, সেই গর্তের গভীরতা ছিল ৩০-৩৫ ফুট। এমনটা বলা হচ্ছিল এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে। তবে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত প্রায় ৪৫ ফুট পর্যন্ত খোঁড়া হয়। তখনো মেলে না সাজিদের সন্ধান। তবে থামেনি উদ্ধারকাজ। অবশেষে রাত ৯টার দিকে তার সন্ধান মেলে। ৩২ ঘণ্টা পর সাজিদের লাশ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস।

গত বুধবার তানোর উপজেলার কোয়েলহাট পূর্বপাড়া গ্রামে গভীর নলকূপের জন্য খনন করা ওই গর্তে পড়ে যায় সাজিদ। এরপর বেলা ২টা ৫ মিনিটে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী দল উদ্ধার অভিযান শুরু করে। অভিযানে একে একে যোগ দেয় আটটি ইউনিট। উদ্ধারকাজ শেষে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘রাত ৯টায় শিশুটিকে আমরা উদ্ধার করেছি। পরে শিশুটিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে। তার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে চিকিৎসকেরা জানাবেন।’

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পথেও ফায়ার সার্ভিস আশা করেছিল, সাজিদ বেঁচে আছে। তবে স্বাস্থ্য পরীক্ষার খবর আসে, সে আর বেঁচে নেই।

সাজিদ যে গর্তে পড়ে গিয়েছিল, সেটির ব্যাসার্ধ ছিল ৮ ইঞ্চি। সরু গর্তে অক্সিজেন পাঠানো সম্ভব না হওয়ায় বন্ধ করে দেওয়া হয় অক্সিজেন সরবরাহ। এতে খানিকটা হতাশ হয়ে পড়েন উদ্ধারকর্মীরা। তবে আশার আলো নিভে গেলেও কয়েক হাজার মানুষ অপেক্ষা করে ঘটনাস্থলে।

গতকাল সন্ধ্যা ৬টার দিকে সাংবাদিকদের সামনে এসে চোখের ভাষা লুকোতে পারেননি ফায়ার সার্ভিসের অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স বিভাগের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী। জানান, গর্তে ক্যামেরা নামিয়ে দেখেছেন—৩০ ফুটের পর জমে আছে মাটি আর খড়ের স্তূপ। স্থানীয়রা শিশুটিকে তোলার চেষ্টা করতে গিয়ে অজান্তেই সেসব ঠেলে দিয়েছেন ভেতরে।

শিশু সাজিদের বাড়ি রাজশাহীর তানোর উপজেলার কোয়েলহাট পূর্বপাড়ায়। বাবা রাকিবুল ইসলাম, মা রুনা খাতুন। সন্তানটিকে একবার দেখা, বুকে জড়িয়ে ধরার আশায় ছিলেন তাঁরা। সাজিদের মা রুনা খাতুন দুপুরে ঘরে বসে ছিলেন। বললেন, ‘কছির উদ্দিন তিন জায়গা খুঁড়েছিল...দুই বছর ধরে গর্ত বন্ধ না করে রেখেছিল। কেন রেখেছিল? আমি তার বিচার চাই...কছিরের শাস্তি চাই।’

শিশুটি যে গর্তে পড়ে গেছে, সেটিসহ পাশে একই জায়গায় আরও দুই জায়গায় গভীর নলকূপের জন্য গর্ত করেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা ও জমির মালিক কছির উদ্দিন। পানি না পেয়ে সব গর্তই খোলা ফেলে রেখেছিলেন দুই বছর ধরে। আর সেই অবহেলার বলি হলো দুই বছরের সাজিদ। লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী জানান, গর্তটি খোঁড়া হয়েছিল ৯০ ফুট পর্যন্ত।

এত গভীরতা পর্যন্ত খনন করতে হয়নি ফায়ার সার্ভিসকে। রাত ৯টায় উদ্ধারকাজ শেষ হয়। শেষ হয় শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান। সাজিদের সন্ধান মিলল ঠিকই। তবে মৃত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

ব্রিটেনে নাগরিকত্ব হারানোর ঝুঁকিতে কোটি মুসলিম, বেশির ভাগই বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তানের

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

আজকের রাশিফল: চায়ের বিল না দেওয়া বন্ধুদের সাহায্য করুন, সন্ধ্যার দিকে ভালো খবর

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ