Ajker Patrika

তুরস্কে বসে চলছে জঙ্গি তৎপরতা

রাশেদ নিজাম ও শাহরিয়ার হাসান
আপডেট : ০১ জুলাই ২০২১, ০৮: ১২
তুরস্কে বসে চলছে জঙ্গি তৎপরতা

ঢাকা: ঠিক পাঁচ বছর আগে বাংলাদেশের মানুষ দেখেছিল পথভ্রষ্টের বিকৃত এক রূপ। এই দেশেরই একদল তরুণ ভুলপথের দীক্ষা নিয়ে হামলা চালিয়েছিল গুলশানের ৭৯ নম্বর সড়কের ৫ নম্বর বাড়িতে অবস্থিত হোলি আর্টিজান বেকারিতে।

২০১৬ সালের ১ জুলাই রাত পৌনে ৯টার দিকে জঙ্গিদের নৃশংস সেই হামলায় দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ ২২ জন নিহত হন, যাঁদের বেশির ভাগ ছিলেন বিদেশি নাগরিক। 
হোলি আর্টিজানের পর জঙ্গি দমনে জোরেশোরে অভিযানে নামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো। পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) বিভাগ গত ৫ বছরে ৫৪৬ জন বিভিন্ন সংগঠনের জঙ্গিদের গ্রেপ্তার করেছে। অন্তত ২০টি অভিযানে মারা গেছেন ৬৩ জন জঙ্গি।

প্রতিষ্ঠার পর থেকে ২ হাজার ৫৫১ জন জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। শুধু হোলি আর্টিজান হামলা–পরবর্তী সময়ে তাদের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে ১ হাজার ৪১৬ জন।

বাহিনীটির কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন ১৬ জন। এ ছাড়া অ্যান্টিটেররিজম ইউনিট (এটিইউ) গত ২ বছরে ৭১টি অভিযান চালিয়ে ১১৯ জন জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করেছে।

তাহলে কি একেবারেই নিয়ন্ত্রণে জঙ্গিরা? উগ্রবাদীদের নিয়ে একটি গোয়েন্দা সংস্থার সবশেষ প্রতিবেদন অবশ্য বলছে ভিন্ন কথা। দেশে যেকোনো স্থানে বড় ধরনের হামলা করে আবারও আলোচনায় আসতে চায় আইএস মতাদর্শের জঙ্গি সংগঠন নব্য জেএমবি। এ জন্য তারা এঁকেছে স্বল্পমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি হামলার পরিকল্পনার ছক। চলতি বছরেই পুলিশের ওপর শক্তিশালী আইইডি (ইমপ্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) বিস্ফোরণ ঘটানোর মধ্য দিয়ে এ কার্যক্রম শুরু করতে চেয়েছিল তারা। কিন্তু পুলিশের তৎপরতায় তা সম্ভব হয়নি। তবে নতুন নতুন পরিকল্পনা আটছে নিষিদ্ধঘোষিত এই সংগঠনটি। জঙ্গিদের বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে করা একটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে মিলেছে এসব তথ্য।

সংগঠনটির নতুন আমির নিজেদের অর্থায়নে তৈরি ড্রোন দিয়ে দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলার পাশাপাশি কথিত ইসলামবিদ্বেষী নেতা, বিশেষ করে আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীদের লক্ষ্য করে হামলা করার পরিকল্পনা করেছেন।

গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২০ সালের শেষের দিকে নব্য জেএমবির হাল ধরেছেন মাহাদী হাসান জন। যাঁর সাংগঠনিক নাম আবুল আব্বাস আল বাঙালি। তিনি তুরস্কের ইস্তাম্বুল থেকে যাবতীয় সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। তবে সামরিক প্রধান হিসেবে কাজ করছেন দেশে অবস্থান করা আবু আহসান হাবিব আল বাঙালি ওরফে লায়ন, যিনি পাঁচ সদস্যের শুরা বোর্ডেরও প্রধান। সর্বোচ্চে এ বোর্ডের অন্য সদস্যরা হলেন রফিক রুহাম (বাংলার মুখপাত্র), আবু দুজানা আল বাঙালি, আবু আদনান আল বাঙালি, আবু উনাইস আল বাঙালি।

জঙ্গিদের এসব পরিকল্পনা নিয়ে ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম ও ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) বিভাগের প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জঙ্গিদের যত পরিকল্পনায় থাকুক না কেন, তাদের সব কার্যক্রম আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে। তা ছাড়া অনলাইননির্ভর এই জঙ্গিদের এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক কোনো সংগঠনের যোগাযোগের তথ্য আমাদের কাছে নেই।’ 

নব্য জেএমবির পরিকল্পনা নিষিদ্ধঘোষিত এই জঙ্গি সংগঠনের আমির হিসেবে নিযুক্ত হওয়ার পর আবুল আব্বাস আল বাঙালি বেশ কিছু হামলার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন। কোনো একটি হামলা সফল করে নিজেদের সক্ষমতা জানান দিতে চায় নব্য জেএমবি। অর্থসংকটের কারণে তা বাস্তবায়নে বিলম্ব হচ্ছে। তবে গোয়েন্দাদের শঙ্কা, অদূরভবিষ্যতে তারা এই হামলা চালাতে পারে।


গোয়েন্দা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, পরিকল্পনাগুলোর মধ্যে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর হামলা করে সাংগঠনিক কাজে নিহত ও গ্রেপ্তার হওয়া সদস্যদের প্রতিশোধ নেওয়া, সংগঠনের অর্থায়নে ড্রোন তৈরি করে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলা করা,  তথাকথিত ইসলামবিদ্বেষী নেতা বিশেষ করে আওয়ামী লীগের কর্মীদের টার্গেট করে হামলা করা, কেবল নেটওয়ার্ক সিস্টেম হ্যাক করে জঙ্গিদের দাওয়াত প্রচার চালানো, খ্রিষ্টান মিশনারি গির্জা, হিন্দু-বৌদ্ধ ধর্মের বিশেষ ব্যক্তি, দরবারি আলেম (সরকারি বেতনভুক্ত), এনজিওকর্মীদের টার্গেট করে হামলা করা। তা ছাড়া দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র কেনার পরিকল্পনার কথাও এই প্রতিবেদনে এসেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, জঙ্গিরা ২০২২ সালের মধ্যে ঘাঁটি প্রস্তুত করে ২০২৩ সালে বাংলাদেশের কোনো একটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঘাঁটিতে হামলা করতে চায়। ২০২৪ সালের রমজান মাসের মধ্যে আরাকানে (মিয়ানমার) হিজরত করে সেখানের কোনো সামরিক ঘাঁটিতে হামলার মধ্য দিয়ে প্রকাশ্যে আসারও পরিকল্পনা করেছে তারা।


সিটিটিসির উপকমিশনার পর্যায়ের এক কর্মকর্তা বলেন, চলতি বছরের ১৭ মে নিষিদ্ধ এই জঙ্গি সংগঠনের সামরিক শাখার ‘ইদাত সেল’ নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড মোড়ে পুলিশ ট্রাফিক রুমের সামনে একটি শক্তিশালী আইইডি বিস্ফোরণ ঘটানোর চেষ্টা করে। কিন্তু সে উদ্যোগ সফল হয়নি। পরবর্তী সময়ে ডিএমপির বোম ডিসপোজাল ইউনিট সেটি নিষ্ক্রিয় করে দেয়। সংগঠনটির সামরিক শাখার সদস্যরা ঢাকা ও ঢাকার আশপাশের জেলায় এমন বেশ কয়েকটি হামলার প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।

র‍্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের দাবি, দেশে জঙ্গিদের এ মুহূর্তে বড় কোনো হামলার সক্ষমতা নেই। জঙ্গিদের চেয়ে র‍্যাব এগিয়ে রয়েছে। আন্তর্জাতিক কোনো জঙ্গিগোষ্ঠীর সঙ্গে দেশের জঙ্গিদের যোগসূত্র নিয়ে গোয়েন্দাদের কাছে কোনো তথ্য নেই।

র‍্যাবের মহাপরিচালক আরও বলেন, তাঁদের ভূমিকার কারণে উগ্রবাদে জড়িত ১৬ জন তরুণ–তরুণী স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছেন। সবার পুনর্বাসনের চেষ্টা চলছে। অভিভাবকদের অনুরোধ করে তিনি বলেন, ‘আপনার সন্তান কোথায় কী করছে, মোবাইল ফোনে কী দেখছে, সেটি আপনাদের নজর দিতে হবে।’

অপ্রচলিত ও আধুনিক অ্যাপে যোগাযোগ বার্তা, ছবি ও ভিডিও আদান–প্রদানের জন্য সর্বাধুনিক সব মাধ্যম ব্যবহার করছে জঙ্গিরা। তারা ভাইবার, হোয়াটসঅ্যাপের মতো বার্তা আদান–প্রদান মাধ্যমগুলো একেবারেই বাদ দিয়েছে। টেলিগ্রাম, সিগন্যালের পাশাপাশি টাম টাম, জেল্লো, রকেট, উইকার মি ও প্লাস মেসেঞ্জার এখন তাদের যোগাযোগের বড় মাধ্যম। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ এড়াতে অপ্রচলিত এবং নতুন এসব অ্যাপ ব্যবহারের মূল কারণ। ভিসিএম নামে একটি করপোরেট বার্তা আদান–প্রদানের মাধ্যমেরও খোঁজ পেয়েছেন গোয়েন্দারা। 

যোগাযোগের জন্য জেলখানা নিরাপদ জঙ্গিরা আপাতত জেলখানাকেই নিরাপদ যোগাযোগের জায়গা বলে মনে করছেন। সংগঠনের আমির আবুল আব্বাস আল বাঙালি, শুরা সদস্য আবু রুহাম ও আবু আহসান হাবীবের সঙ্গে কারাগারে থাকা সংগঠনের সদস্যদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, বাইরে থেকে তাঁরা নিয়মিত জেলে থাকা সদস্যদের কাছে বিকাশ, নগদসহ বিভিন্ন মাধ্যমে অর্থ পাঠান। শুরা সদস্য আবু রুহাম তাঁর পরিচিত লোক দিয়ে নানা কৌশলে বন্দী জঙ্গিদের কাছে অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল পৌঁছে দেন এবং বিভিন্ন নিরাপদ অ্যাপস (টেলিগ্রাম, সিগন্যাল)–এর মাধ্যমে যোগাযোগ করেন। কারাগারে বসে মোবাইল ব্যবহার করছেন এমন দুজন জঙ্গির নাম উঠে আসে গোয়েন্দাদের তদন্তে। তাঁরা হলেন এমডি সাদ, আবু রাহিক (খালেদ)। 
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে শতভাগ নিশ্চিত উত্তর দিতে পারেননি আইজি প্রিজন্স ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মোমিনুর রহমান মামুন। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করি জঙ্গিদের হাতে কোনোভাবেই যেন মোবাইল ফোন না পৌঁছায়। কোনো কারারক্ষী কিংবা কর্মকর্তা যদি এ প্রক্রিয়ায় যুক্ত থাকেন, কঠোর শাস্তির আওতায় আসবেন। দ্রুত তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উগ্রবাদ মোকাবিলায় সুপারিশ কারাগারে আরও নজরদারি বৃদ্ধি করা এবং জামিনে থাকা উগ্রবাদীদের ওপর নজরদারি বাড়াতে সুপারিশ করা হয়েছে গোয়েন্দা প্রতিবেদনে। বলা হয়, পার্বত্য অঞ্চলে পুলিশি তৎপরতা বাড়াতে হবে এবং সন্দেহভাজনদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করতে হবে। মিয়ানমার সীমান্তে পুলিশের নজরদারি বাড়াতে পরামর্শ দিয়েছেন গোয়েন্দারা। পাশাপাশি উগ্রবাদবিরোধী কার্যক্রম ও সামাজিক আন্দোলন বেগবান করা দরকার বলেও মত দেওয়া হয়।

নিরাপত্তা বিশ্লেষক, অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আলী শিকদারের মতে, সরাসরি আক্রমণে হয়তো জঙ্গিরা এখন যাচ্ছে না। কিন্তু তারা নতুন কৌশল তৈরি করে রাখছে। আমাদের বাহিনীগুলো সেভাবে নিজেদের প্রস্তুতি নিচ্ছে কি না সেটা দেখতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গণভোটে ‘হ্যাঁ’ ভোট চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা

ফ্ল্যাটের ভেতর অন্তঃকোন্দলে এনসিপির মোতালেবকে গুলি, মাদক ও গুলির খোসা উদ্ধার: পুলিশ

দল বিলুপ্ত করে বিএনপিতে যোগ দিলেন এহসানুল হুদা

বেনজীরের ফ্ল্যাট থেকে জব্দ ২৪৬ ধরনের মালামাল প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে

খুলনায় এনসিপি নেতা গুলিবিদ্ধের ঘটনায় তরুণী আটক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ডেভিল হান্ট-২: এক দিনে আরও ৬৯৮ জন গ্রেপ্তার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ডেভিল হান্ট-২: এক দিনে আরও ৬৯৮ জন গ্রেপ্তার

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।

পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২৮ হাজার ৭৬৬টি মোটরসাইকেল ও ৪৩ হাজার ৩৫২টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিকালে ২৯১টি অবৈধ মোটরসাইকেল আটক করা হয়।

অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ‘ফ্যাসিস্টদের’ দমনে ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে দেশজুড়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ নামে বিশেষ অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গণভোটে ‘হ্যাঁ’ ভোট চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা

ফ্ল্যাটের ভেতর অন্তঃকোন্দলে এনসিপির মোতালেবকে গুলি, মাদক ও গুলির খোসা উদ্ধার: পুলিশ

দল বিলুপ্ত করে বিএনপিতে যোগ দিলেন এহসানুল হুদা

বেনজীরের ফ্ল্যাট থেকে জব্দ ২৪৬ ধরনের মালামাল প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে

খুলনায় এনসিপি নেতা গুলিবিদ্ধের ঘটনায় তরুণী আটক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাদিকে গুলির ঘটনায় সন্দেহভাজন ফয়সাল ওরফে দাউদ কে, মাস্ক পরা ব্যক্তিটিই কি তিনি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩: ০৫
হাদি হত্যা মামলায় প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদ। ছবি: সংগৃহীত
হাদি হত্যা মামলায় প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদ। ছবি: সংগৃহীত

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।

হাদিকে গুলির ঘটনায় মাস্ক পরা দুই তরুণ জড়িত বলে তাঁর সহযোদ্ধাদের সন্দেহ। তাঁদের দাবি, কয়েকদিন ধরে দুই তরুণ মাস্ক পরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হাদির সঙ্গে গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। বার বার তাঁদের মাস্ক খুলতে বলা হলেও তাঁরা রাজি হননি। হাদিঘনিষ্ঠদের সন্দেহ, এই তরুণরা হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর গতিবিধি বোঝার জন্য তাঁর সঙ্গে যুক্ত হন।

দুজনের মধ্যে মাস্ক পরা একজন হাদির পাশে বসে আছে— এমন একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই তাকে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ হিসেবে দেখিয়েছেন। তবে মাস্ক করা এই তরুণই যে হাদিকে গুলি করেছেন, কিংবা এই তরুণই যে ফয়সাল, তা নিশ্চিত করে বলছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে শনাক্ত একজনের ছবি প্রকাশ করে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

ডিএমপির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের হামলায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেফতারে রাজধানীতে জোর অভিযান পরিচালনা করছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ছবির ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা গেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তাকে হন্য হয়ে খুঁজছে। উক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে কোন তথ্য থাকলে বা তার সন্ধান পেলে দ্রুত নিম্নলিখিত মোবাইল নম্বর অথবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশকে জানানোর জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।’

পুলিশের বিবৃতিতে এই তরুণের নাম উল্লেখ করা না হলেও ছবি দেখে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলে আন্দাজ করা যায়। এই তরুণকেও আগে হাদীর সঙ্গে দেখা গেছে। তবে গত কয়েকদিন ধরে হাদির সঙ্গে গণসংযোগে থাকা মাস্ক পরা তরুণটিই ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ এমন কোনো তথ্য পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ৯ ডিসেম্বর বাংলামোটর এলাকায় হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়ে হাদির পাশে বসে আলোচনা শুনেছিলেন ফয়সাল করিম। সেই আলোচনার ছবিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।

ফয়সাল করিম নামের তরুণ কার্যক্রমনিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধঘোষিত সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য হন। তাঁর পুরো নাম ফয়সাল করিম দাউদ খান।

নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ওসমান হাদি। হাদিকে বহনকারী রিকশাকে অনুসরণ করে পেছন দিকে থেকে মোটরসাইকেলে এসে তাঁকে গুলি করে চলে যায় আততায়ীরা। হাদি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার নামে ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁর সঙ্গে ফয়সাল করিমের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেই ছবিগুলোতে থাকা ফয়সাল করিমের সঙ্গে মাস্ক পরা ব্যক্তির চেহারার কিছুটা সাদৃশ্য আছে। সেকারণে গুলি ছোড়ার ঘটনায় তাঁকে সন্দেহ করা হচ্ছে।

এর মধ্যেই দুপুরে ডিএমপি সন্দেহভাজনকে শনাক্তের কথা জানায় এবং ওসমান হাদিকে গুলি করা ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

গত ৯ ডিসেম্বর বাংলামোটর এলাকায় হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়ে হাদির পাশে বসে আলোচনা শুনেছিলেন ফয়সাল করিম।
গত ৯ ডিসেম্বর বাংলামোটর এলাকায় হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়ে হাদির পাশে বসে আলোচনা শুনেছিলেন ফয়সাল করিম।

আলোচিত ফয়সাল করিম কে?

পেশাদারদের যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে ফয়সাল করিমের নামে প্রোফাইল আছে। সেখানে তিনি নিজেকে অ্যাপল সফট আইটি, ওয়াইসিইউ টেকনোলজি ও এনলিস্ট ওয়ার্ক নামে তিন প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, ফয়সাল করিম ২০১৩ সালে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটারবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। পরে আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমবিএ করেছেন বলে সেখানে উল্লেখ রয়েছে।

২০২৪ সালে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের দমনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা–কর্মীদের সঙ্গে মাঠে ছিলেন বলে ছাত্রলীগের সূত্র জানিয়েছে।

ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় নাম আসার পর ফয়সাল করিমের সঙ্গে আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশের দুইবারের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতার ছবি ফেসবুকে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে হাদির সঙ্গে ঢাকা–৮ আসনে গণসংযোগ এবং বাংলামোটরে হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের আড্ডায় ফয়সালের অংশ নেওয়ার ছবিও ভাইরাল হয়েছে। অনেকে ধারণা করছেন, ফয়সাল করিম ওসমান হাদিকে বেশ কিছুদিন ধরে অনুসরণ করছিলেন।

২০১৬ সালে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সহযোগিতা ও সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ‘ব্যাটল অব ৭১’ নামে একটি কম্পিউটার গেম তৈরি করেছিল ফয়সাল করিমের মালিকানাধীন ওয়াইসিইউ টেকনোলজি লিমিটেড। সে বছরের নভেম্বরে ওই গেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসিসের তৎকালীন সভাপতি এবং পরে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও উপস্থিত ছিলেন।

২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘আসনভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা ও সমন্বয়ক কমিটি’ করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ঢাকা–১২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এই আসনের সমন্বয়ক কমিটির সদস্য ছিলেন ফয়সাল করিম।

অভ্যুত্থানের অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার ফয়সালের দ্রুত জামিন নিয়ে প্রশ্ন সবার

জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার আদাবরের বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটি এলাকায় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া স্কুলের চতুর্থ তলায় অফিসে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আদাবর থানার মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফয়সাল করিম।

মামলা হওয়ার কিছুদিন পর ৭ নভেম্বর আদাবর এলাকা থেকে ফয়সাল করিমকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। তাঁর কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও পাঁচটি গুলিও উদ্ধার করা হয়। ওই মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান ফয়সাল করিম। জামিনের সময়সীমা বাড়াতে গত ১২ আগস্ট আবারও আবেদন করলে হাইকোর্ট নতুন করে তাঁর এক বছরের জামিন মঞ্জুর করেন।

জামিনে থাকা অবস্থায় এবার তাঁর বিরুদ্ধে ওসমান হাদিকে গুলি করার অভিযোগ এল। এত অল্প সময়ের মধ্যে তিনি কীভাবে জামিন পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারণ, কোনো অপরাধমূলক কাজের প্রমাণ না থাকলেও অভ্যুত্থানের পর শুধু মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা সভা করায় গ্রেপ্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিকের জামিন বারবার নাকচ করা হয়েছিল। আর এ রকম লুটের ঘটনায় দুটি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে এতো দ্রুত জামিন দেওয়া হলো কীভাবে, সেই প্রশ্ন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন আলোচনা–সমালোচনায় সরব।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গণভোটে ‘হ্যাঁ’ ভোট চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা

ফ্ল্যাটের ভেতর অন্তঃকোন্দলে এনসিপির মোতালেবকে গুলি, মাদক ও গুলির খোসা উদ্ধার: পুলিশ

দল বিলুপ্ত করে বিএনপিতে যোগ দিলেন এহসানুল হুদা

বেনজীরের ফ্ল্যাট থেকে জব্দ ২৪৬ ধরনের মালামাল প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে

খুলনায় এনসিপি নেতা গুলিবিদ্ধের ঘটনায় তরুণী আটক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খুনের পর মোবাইল, ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট, ‘গৃহকর্মী আয়েশা’র পরিচয় মেলেনি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ৫৭
ছবি: সিসিটিভির ফুটেজ থেকে নেওয়া
ছবি: সিসিটিভির ফুটেজ থেকে নেওয়া

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় করা হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।

স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় গতকাল মামলাটি করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রকিবুজ্জামান তালুকদার। গতকাল সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।

এজাহারে বাদী আজিজুল লিখেছেন, তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। মোহাম্মদপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন। চার দিন আগে উল্লিখিত আসামি তাঁর বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে তিনি (আজিজুল) তাঁর কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থলে থাকাকালে তিনি তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।

পরে তিনি বেলা ১১টার দিকে বাসায় আসেন। এসে দেখতে পান, তাঁর স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা। স্ত্রী রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন আর মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা। মেয়ে গুরুতর অবস্থায় বাসার প্রধান ফটকে পড়ে আছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে তিনি দ্রুত তাকে উদ্ধার করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশিকের মাধ্যমে মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।

মামলায় আজিজুল আরও লিখেছেন, তিনি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন। এতে তিনি দেখতে পান, আসামি সকাল ৭টা ৫১ মিনিটের সময় কাজ করার জন্য বাসায় আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আসামি তাঁর (বাদী) মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যান আসামি।

মামলায় বাদী লিখেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, অজ্ঞাত কারণে আসামি তাঁর (বাদী) স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেন।

মা-মেয়ে হত্যার আসামিকে শনাক্ত করা যায়নি। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ জানায়, গৃহকর্মীর পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গণভোটে ‘হ্যাঁ’ ভোট চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা

ফ্ল্যাটের ভেতর অন্তঃকোন্দলে এনসিপির মোতালেবকে গুলি, মাদক ও গুলির খোসা উদ্ধার: পুলিশ

দল বিলুপ্ত করে বিএনপিতে যোগ দিলেন এহসানুল হুদা

বেনজীরের ফ্ল্যাট থেকে জব্দ ২৪৬ ধরনের মালামাল প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে

খুলনায় এনসিপি নেতা গুলিবিদ্ধের ঘটনায় তরুণী আটক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সৌদি আরবে অপহরণ, ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি দেশে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

সৌদি আরবে এক প্রবাসী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) ধাপে ধাপে মোট ৩৫ লাখ টাকা পাঠালে সৌদি আরবের রিয়াদে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা।

গত মঙ্গলবার অপহরণকারী এই চক্রের বাংলাদেশি সদস্য মো. জিয়াউর রহমানকে (৪২) মাগুরার শালিখা থানার হরিপুর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।

গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।

চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মো. রাসেল নামের ওই প্রবাসীকে অপহরণের পর সে মাসের ২১ তারিখে তাঁর শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলাটি সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে।

মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. রাসেল ২০ বছর ধরে রিয়াদে ব্যবসা করছেন। ১২ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁকে অপহরণ করে তাঁর বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমু ও ভিওআইপিতে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। কয়েক ধাপে টাকা পাঠানোর পর তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গণভোটে ‘হ্যাঁ’ ভোট চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা

ফ্ল্যাটের ভেতর অন্তঃকোন্দলে এনসিপির মোতালেবকে গুলি, মাদক ও গুলির খোসা উদ্ধার: পুলিশ

দল বিলুপ্ত করে বিএনপিতে যোগ দিলেন এহসানুল হুদা

বেনজীরের ফ্ল্যাট থেকে জব্দ ২৪৬ ধরনের মালামাল প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে

খুলনায় এনসিপি নেতা গুলিবিদ্ধের ঘটনায় তরুণী আটক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত