Ajker Patrika

চাঁদপুরে হেফাজতে নির্যাতন, ৪ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা

চাঁদপুর প্রতিনিধি
চাঁদপুরে হেফাজতে নির্যাতন, ৪ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ থানায় পুলিশি হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ এনে অজ্ঞাতনামা চার পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী ও ডাকাতি মামলার আসামি মো. খোকন (৩৯)। গত শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) তিনি ফরিদগঞ্জ থানায় মামলাটি করেন।

এর আগে ফরিদগঞ্জ থানায় গত ২৮ নভেম্বর চাঞ্চল্যকর ডাকাতি মামলায় আসামির দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গ্রহণকালে পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় ফরিদগঞ্জ আমলি আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট শাহাদাতুল হাসান আল মুরাদ নির্যাতনের ঘটনায় মামলা করার নির্দেশ দেন।

আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেন চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নাজির ফখরুদ্দিন আহমেদ স্বপন।

মামলার কাগজপত্র পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের অধীন ফরিদগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট একটি ডাকাতি মামলায় (জি আর নং-৩১৫/২৫) ১৬ ডিসেম্বর তিনজন অজ্ঞাতনামা আসামিকে হাজির করা হয়। তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবিরের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এজাহারে অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবে উল্লেখিত খোকনের দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ডের সময় আসামি পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের বিস্তারিত বর্ণনা দেন।

আসামির গ্রেপ্তারের সময় গ্রেপ্তারের স্মারকপত্রে আসামি সুস্থ ও পুলিশ ফরওয়ার্ডিংয়ে কোনো জখমের উল্লেখ না থাকায় ম্যাজিস্ট্রেট আসামিকে পরীক্ষা করে নির্যাতনের অভিযোগ তাৎক্ষণিকভাবে লিপিবদ্ধ করেন। একই সঙ্গে নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন অনুযায়ী সাত কার্যদিবসের মধ্যে চাঁদপুরের পুলিশ সুপারকে মামলা দায়েরের নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে আসামিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মেডিকেল পরীক্ষার জন্য সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ককে নির্দেশ দেন।

যার পরিপ্রেক্ষিতে ১৭ ডিসেম্বর চাঁদপুর সদর হাসপাতাল থেকে আসামিকে পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দেন চিকিৎসক রানা সাহা ও আসিবুল হাসান চৌধুরী। হাসপাতালের মেডিকেল পরীক্ষার প্রতিবেদনে দেখা যায়, আসামির উভয় পায়ের ঊরুর ওপর একাধিক নীলাফুলা জখম রয়েছে। যদিও চিকিৎসা সনদে উল্লেখ করা হয়, আসামির বর্ণনামতে এই জখম প্রায় চার দিন আগের।

এদিকে আদালতের মামলা করার নির্দেশের পর ২৩ ডিসেম্বর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হাজীগঞ্জ সার্কেল) মুকুর চাকমা ঘটনার গুরুত্ব ও স্পর্শকাতরতার কথা উল্লেখ করে ১৫ দিনের তদন্তের সময় প্রার্থনা করেন। তবে ম্যাজিস্ট্রেট সময় বিবেচনা না করে তাৎক্ষণিকভাবে মামলা করার আগের আদেশ বহাল রাখেন।

আদালতের আদেশ পর্যালোচনায় দেখা যায়, নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধসমূহ আমলযোগ্য। ফলে আইনানুযায়ী এ ধরনের অপরাধে মামলা করা ছাড়া তদন্ত পরিচালনার কোনো সুযোগ নেই।

সর্বশেষ ২৭ ডিসেম্বর আদালতের নির্দেশ মোতাবেক ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হেলাল উদ্দিন নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে মামলা করেন। ওই মামলার তদন্ত করার দায়িত্ব দেওয়া হয় থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আরিফ ইফতেখারকে।

মামলার বাদী মো. খোকন ফরিদগঞ্জ উপজেলার গুপ্টি সরদার বাড়ির শাহজাহানের ছেলে। বিভিন্ন অপরাধে ফরিদগঞ্জ থানায় চার মামলার আসামি খোকন। সর্বশেষ গত রোববার (২৮ নভেম্বর) ডাকাতির ঘটনায় ফরিদগঞ্জ থানায় অজ্ঞাতনামা সাতজনকে আসামি করে মামলা করেন উপজেলার গুপ্টি পূর্ব ইউনিয়নের সাইসাঙ্গা গ্রামের মিজি বাড়ির রহিম বাদশার স্ত্রী পেয়ারা বেগম। ওই মামলায় গ্রেপ্তার হন আসামি খোকন।

এ বিষয়ে চাঁদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. রবিউল হাসান বলেন, আদালতের আদেশের পর ফরিদগঞ্জ থানায় মামলা হয়েছে। মামলাটি তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালেদা জিয়াকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, চুনারুঘাটে ‘চিতল মুখলিছ’কে গণপিটুনি

খালেদা জিয়ার ৩ আসনে এখন কী হবে, জানাল নির্বাচন কমিশন

‘ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি’ বিএনপি প্রার্থীর মনোনয়নপত্র গ্রহণ না করতে ব্যাংকের চিঠি

খালেদা জিয়ার সঙ্গে শৈশবের স্মৃতি জানালেন সংগীতশিল্পী পুতুল

রুমিন ফারহানাসহ আরও যাঁদের বহিষ্কার করল বিএনপি

এলাকার খবর
Loading...