আজকের পত্রিকা ডেস্ক

আফ্রিকার দেশ সিয়েরা লিওনে একাধিক পরিবারে এমন হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, যা তথাকথিত কালো জাদুর সঙ্গে জড়িত বলে মনে করা হচ্ছে। তবে এসব হত্যাকাণ্ডের পেছনে মানবদেহের অংশের অবৈধ ব্যবসার রহস্য উন্মোচন করেছে বিবিসি আফ্রিকা আই।
চার বছর আগে পাপায়ো নামে ১১ বছরের এক কিশোরকে হত্যা করা হয়, কালো জাদুর নামে। তার মা এখনো আশা করে আছেন, একদিন তাঁর ছেলের হত্যার বিচার হবে। সাল্লাই কালোকা নামে ওই নারী বিবিসিকে বলেন, ‘আমি কষ্টে আছি। তারা আমার সন্তানকে হত্যা করেছে, আর এখন শুধু নীরবতা।’
সাল্লাই কালোকা জানান, তাঁর ছেলে মাছ বিক্রির জন্য বাজারে গিয়েছিল, কিন্তু আর ফিরে আসেনি। তিনি আরও বলেন, তাঁর ছেলে পাপায়োকে যখন পাওয়া যায়, তখন দেখা গেছে—শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গপ্রত্যঙ্গ, চোখ এবং এক হাত কেটে নেওয়া হয়েছিল।
পাপায়ো নিখোঁজ হওয়ার দুই সপ্তাহ পর্যন্ত খুঁজেও কোনো সন্ধান পায়নি পরিবার। পরে তাঁর ছিন্নবিচ্ছিন্ন দেহ এক পরিত্যক্ত কুয়া থেকে উদ্ধার করা হয়। সাল্লাই কালোকা বলেন, ‘আমরা সব সময় আমাদের সন্তানদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিই। বিক্রি করতে গেলে কোনো কোনায় যেয়ো না, অজানা কারও দেওয়া উপহার নেওয়ার আগে ভাব। আমাদের দেশে এটা প্রায়ই ঘটে।’
সাল্লাই বলেন, আমার নিজ শহর মাকেনিতে এ ধরনের হত্যা প্রায়ই ঘটে। এরপর আমাদের কালো জাদু বা জুজুর ভয় দেখানো হয়। কিন্তু যথাযথ তদন্ত হয় না। এর উদাহরণ পাপায়োর হত্যাকাণ্ডকে পুলিশ ‘রিচুয়াল কিলিং’ বা কালো জাদুসংক্রান্ত হত্যা হিসেবেও নিশ্চিতও করেনি। এ ধরনের হত্যাকাণ্ডে একজন ব্যক্তির দেহের কোনো একটি নির্দিষ্ট অংশ জুজু অনুশীলনকারীরা তাবিজ বা অন্য জাদুবিদ্যার জন্য ব্যবহার করে।
তারা বড় অঙ্কের অর্থ প্রদানকারী গ্রাহকদের ধন-সম্পদ বা ক্ষমতা অর্জনের প্রতিশ্রুতি দেয়। এসব তান্ত্রিকেরা মূলত তাদের ভুল বোঝায় যে, মানবদেহের অংশ এই তাবিজকে আরও কার্যকর করে। কিন্তু পুলিশ ও অন্যান্য কর্তৃপক্ষ সীমিত সম্পদের কারণে প্রায়ই অপরাধীদের খুঁজে বের করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রমাণ জোগাড় করতে ব্যর্থ হয়। দেশে ৮৯ লাখ মানুষের জন্য শুধু একজন প্যাথলজিস্ট আছে।
সিয়েরা লিওনে কালো জাদুসংক্রান্ত বিশ্বাস এতটা গভীর যে পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যেও অনেকেই এই ধরনের মামলা অনুসরণ করতে ভয় পান। ফলে অধিকাংশ অপরাধ অনুসন্ধানহীন থাকে। তবে বিবিসি আফ্রিকা আই এমন দুজনকে খুঁজে পেয়েছে, যারা নিজেদের জুজু অনুশীলনকারী হিসেবে পরিচয় দেয় এবং হত্যার করা ব্যক্তির দেহ থেকে নির্দিষ্ট অংশ সরবরাহ করতে রাজি ছিলেন।
উভয়ই বলেছিলেন যে, তারা বড় এক নেটওয়ার্কের অংশ। একজন দাবি করেন যে, পশ্চিম আফ্রিকার নানা দেশে তাদের শক্তিশালী গ্রাহক আছে। বিবিসি আফ্রিকা আইয়ের একজন সদস্য ওসমান নাম ব্যবহার করে একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন, যিনি মানব বলি দিয়ে ক্ষমতা অর্জন করতে চান। সেই মতে, তিনি গিনি সীমান্তে কাম্বিয়া জেলার এক প্রত্যন্ত এলাকায় গিয়ে একটি গোপন মন্দিরে জুজু অনুশীলনকারীর সঙ্গে দেখা করেন।
সেই জুজু অনুশীলনকারী নিজেকে কানু বলে পরিচয় দিলেন এবং রাজনীতিবিদদের সঙ্গে তার যোগাযোগ আছে বলেন জানালেন। পুরো সময় লাল রঙের গামছায় তার মুখ ঢাকা ছিল। কানু বলেন, ‘আমি গিনি, সেনেগাল এবং নাইজেরিয়ার কিছু বড় বড় রাজনীতিবিদদের সঙ্গে কাজ করেছি। আমাদের একটি দল আছে। কখনো কখনো নির্বাচনের সময়, রাতে এখানে মানুষ ভিড় করে।’
নির্বাচনের সময়কে অনেকেই বিপজ্জনক মনে করেন। সে সময় অভিভাবকদের সতর্ক থাকতে বলা হয়। কারণ, অপহরণের ঝুঁকি বেড়ে যায়। দ্বিতীয়বার সাক্ষাৎকারে সময় কানু আরও আত্মবিশ্বাসী হয়ে তাঁর ব্যবসার প্রমাণ দেখান। এ সময় তাঁর হাতে একটি মাথার খুলি দেখান। তিনি ওসমানকে বলেন, ‘দেখছ? এটা কোনো একজনের। আমি এটি শুকিয়েছি। এটি একজন মহিলার খুলি। আমি আশা করছি, দু–একদিনের মধ্যেই কেউ এটি নেবে।’
তিনি তাঁর মন্দিরের পেছনের একটি গর্তও দেখিয়ে বললেন, ‘এখানেই আমরা মানবদেহের বিভিন্ন অংশ ঝুলিয়ে রাখি। এখানে হত্যা করি এবং রক্ত নিচে চলে যায়...বড় বড় নেতারা, যখন ক্ষমতা চায়, এখানে আসে। আমি, তারা যা চায় তাদের দেই।’ ওসমান জানান, তিনি নারীর অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ব্যবহার করতে চান রীতি অনুযায়ী। কানু জবাবে বললেন, ‘নারী অঙ্গপ্রত্যঙ্গের দাম ৭ কোটি লিওঁ বা ৩ হাজার ডলার।’ পরে বিবিসি আফ্রিকা আই আর কানুর সঙ্গে দেখা করেনি। কারণ, তাঁরা চায়নি দলের কোনো সদস্য বিপদে পড়ুক। এ ছাড়া, কানু প্রতারক হতে পারে—এমন আশঙ্কাও ছিল। তবে বিবিসি সংগৃহীত যাবতীয় প্রমাণাদি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে।
কিছু জুজু অনুশীলনকারী নিজেদের হার্বালিস্ট বা ভেষজ ওষুধ বিশেষজ্ঞ হিসেবে পরিচয় দেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, সিয়েরা লিওনে ২০২২ সালে মাত্র ১ হাজার নিবন্ধিত ডাক্তার ছিল, কিন্তু আনুমানিক ৪৫ হাজার প্রচলিত ভেষজ চিকিৎসক ছিলেন। দেশের প্রায় সবাই এই ভেষজবিদদের ওপর নির্ভর করেন। তারা মানসিক স্বাস্থ্যের সমস্যাতেও সাহায্য করে। এসব বিশেষজ্ঞ নিজ নিজ মন্দিরে রোগীদের চিকিৎসা করেন, যেখানে মায়াজাল ও আধ্যাত্মিকতার ছোঁয়া থাকে।
সিয়েরা লিওনের কাউন্সিল অব ট্র্যাডিশনাল হিলারসের প্রেসিডেন্ট শেকু তারাওয়ালি নিশ্চিত করেছেন যে, কানুর মতো ‘কালো শক্তির’ জুজু অনুশীলনকারীরা সাধারণ ভেষজ চিকিৎসকদের খ্যাতিকে কলঙ্কিত করছেন।
শেকু তারাওয়ালি বলেন, ‘আমরা আমাদের ভাবমূর্তি পরিষ্কার করতে প্রাণপণ চেষ্টা করছি। সাধারণ মানুষ বোঝে না, তাই তারা আমাদের সবাইকে খারাপ ওঝা-গুনিন বলে ধরে নেয়। একটি পচা মাছ পুরো ঝাঁকটাকে নষ্ট করে ফেলে...আমরা চিকিৎসক, খুনে নই।’
তারাওয়ালি সরকার এবং আরেকটি বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে কাজ করছেন, যাতে রোগীদের চিকিৎসার জন্য একটি প্রথাগত চিকিৎসা ক্লিনিক খোলা যায়। তাঁর বিশ্বাস, ক্ষমতা ও টাকার লোভেই এসব আচারগত হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে থাকা মানুষগুলো প্রভাবশালী। তিনি বলেন, ‘যখন কেউ নেতা হতে চায়...তখন তারা মানুষের শরীর থেকে অঙ্গ কেটে নেয়। ওটাকেই তারা উৎসর্গ হিসেবে ব্যবহার করে। মানুষকে পুড়িয়ে ফেলে, তারপর ছাই দিয়ে শক্তি অর্জন করে। মানুষের চর্বি থেকেও শক্তি নেয়।’
সিয়েরা লিওনে এমন কালো জাদুর কারণে কী পরিমাণ মানুষকে হত্যা করা হয়, তার সঠিক সংখ্যা জানা যায় না। দেশটির বেশির ভাগ মানুষ নিজেদের মুসলিম বা খ্রিষ্টান হিসেবে পরিচয় দেন। যুক্তরাজ্যের অ্যাবারিস্টউইথ ইউনিভার্সিটির গবেষক ইমানুয়েল সারপং ওউসু বলেন, ‘বেশির ভাগ আফ্রিকান দেশেই এমন খুনকে আলাদা কোনো বিভাগ বা উপবিভাগ হিসেবে সরকারি খতিয়ানে নথিভুক্ত করা হয় না। অনেক ঘটনাকে দুর্ঘটনা, বন্য প্রাণীর হামলায় মৃত্যু, আত্মহত্যা বা স্বাভাবিক মৃত্যু হিসেবে ভুলভাবে নথিভুক্ত করা হয়...অধিকাংশ অপরাধী, সম্ভবত ৯০ শতাংশের মতো, ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়।’
বিবিসি আফ্রিকা আই সিয়েরা লিওনের ফ্রি টাউনের উপশহর ওয়াটারলুতে এমন আরেক সন্দেহভাজন দেহাংশ সরবরাহকারীর খোঁজ পায়। ইদারা ছদ্মনামের ওই ব্যক্তি ওসমানকে বলেন, ‘আমি একা নই, আমার অধীনে ২৫০ জনের মতো ওঝা-গুনিন কাজ করে।’
ইদারা আরও বলেন, ‘মানুষের এমন কোনো অঙ্গ নেই, যা আমরা ব্যবহার করি না। আমরা যখন কোনো নির্দিষ্ট অঙ্গ চাই, তখন তারা সেটা এনে দেয়। আমরা কাজ ভাগ করে করি।’ তিনি আরও জানান, তার দলে এমন লোক আছে যারা মানুষ ধরে আনতে খুব পারদর্শী।
ওসমান যখন দ্বিতীয়বা ইদারার সঙ্গে দেখা করেন, তখন তিনি ওসমানকে একটি ভয়েস নোট শোনান। যেখানে ইদারার এক সহযোগীকে বলতে শোনা যায়, তারা প্রতিদিন রাতে শিকার খুঁজতে বেরোতে প্রস্তুত। ওসমান তখন তাকে বলেছিলেন, কাজটা এখনই না করতে। তবে পরে যখন ইদারা ফোন করে জানায় যে, তারা একজন সম্ভাব্য ভিকটিম চিহ্নিত করেছে, তখন বিবিসি বিষয়টি পুলিশ কমিশনার ইব্রাহিম সামাকে জানায়।
কমিশনার ইব্রাহিম সামা অভিযানের সিদ্ধান্ত নেন। তবে জানিয়ে দেন, তারাওয়ালিকে ছাড়া তাঁর বাহিনী অভিযান চালাবে না। কারণ, তারাওয়ালি এমন অভিযানে প্রায়ই পুলিশকে সহায়তা করেন। অভিযানে থাকা সহকারী সুপারিনটেনডেন্ট আলিউ জালো বলেন, ‘যখন আমরা খবর পাই যে কোনো বিপজ্জনক ওঝা একটি মন্দির চালাচ্ছে, তখন আমরা প্রথাগত চিকিৎসকদের সঙ্গে সমন্বয়ে কাজ করি।’ তিনি আরও জানান, কিছু পুলিশ সদস্যের মনে এসব ‘অভিশপ্ত’ ওঝাদের নিয়ে কুসংস্কার আছে। ইদারাকে গ্রেপ্তার করার পর, তারাওয়ালি পুরো জায়গায় তল্লাশি শুরু করেন। তিনি বলেন, সেখানে মানুষের হাড়, মানুষের চুল এবং অন্যান্য হাড় পাওয়া যায়।
দুই বছর আগে ফ্রিটাউনে এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নিখোঁজ হন। পরে তাঁর লাশ পাওয়া যায় ওয়াটারলুর এক গুণিনের মন্দিরের ভেতর পুঁতে রাখা অবস্থায়। ২০২৩ সালের আগস্টে মামলাটি ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে হাই কোর্টে পাঠানো হয়। কিন্তু দুটি সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছেন, মামলাটি এরপর আর এগোয়নি এবং আটক ব্যক্তিরা জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।
বিবিসি আফ্রিকা আই যখন, এই প্রতিবেদন নিয়ে কাজ করছিল, ঠিক সে সময় ২৮ বছর বয়সী কাজিন ফাতমাটা কন্তে নামের এক নারী মাকেনিতে খুন হন। দুই সন্তানের মা ও পেশায় হেয়ারড্রেসার ফাতমাটার লাশ তাঁর জন্মদিনের পরদিনই রাস্তার পাশে ফেলে রাখা অবস্থায় পাওয়া যায়। এক বাসিন্দা জানান, সাম্প্রতিক কয়েক সপ্তাহে ওই এলাকায় আরও দুজনের লাশ পাওয়া গিয়েছিল।
ফাতমাটার সামনের বেশ কয়েকটি দাঁত ছিল ওপড়ানো। এতে স্থানীয়দের বিশ্বাস দৃঢ় হয় যে এটা কালো জাদু চর্চা সংক্রান্ত হত্যাকাণ্ড। ফাতমাটার হত্যার আসল কারণ হয়তো কোনো দিনই জানতে পারা সম্ভব হবে না। পরিবার নিজ খরচে তাঁর লাশ ফ্রিটাউনে পাঠিয়ে ময়নাতদন্ত করায়, কারণ সরকার সেটা বহন করতে পারেনি। কিন্তু ময়নাতদন্তেও কিছু স্পষ্ট বের হয়নি। এখনো কেউ গ্রেপ্তারও হয়নি।
পাপায়োর মায়ের মতোই, সঠিক বিচার না পাওয়ার যন্ত্রণা এবং পুলিশের উদাসীনতা মাকেনির মতো দরিদ্র এলাকায় ভয়ের আবহ আরও গাঢ় করে তুলছে।

আফ্রিকার দেশ সিয়েরা লিওনে একাধিক পরিবারে এমন হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, যা তথাকথিত কালো জাদুর সঙ্গে জড়িত বলে মনে করা হচ্ছে। তবে এসব হত্যাকাণ্ডের পেছনে মানবদেহের অংশের অবৈধ ব্যবসার রহস্য উন্মোচন করেছে বিবিসি আফ্রিকা আই।
চার বছর আগে পাপায়ো নামে ১১ বছরের এক কিশোরকে হত্যা করা হয়, কালো জাদুর নামে। তার মা এখনো আশা করে আছেন, একদিন তাঁর ছেলের হত্যার বিচার হবে। সাল্লাই কালোকা নামে ওই নারী বিবিসিকে বলেন, ‘আমি কষ্টে আছি। তারা আমার সন্তানকে হত্যা করেছে, আর এখন শুধু নীরবতা।’
সাল্লাই কালোকা জানান, তাঁর ছেলে মাছ বিক্রির জন্য বাজারে গিয়েছিল, কিন্তু আর ফিরে আসেনি। তিনি আরও বলেন, তাঁর ছেলে পাপায়োকে যখন পাওয়া যায়, তখন দেখা গেছে—শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গপ্রত্যঙ্গ, চোখ এবং এক হাত কেটে নেওয়া হয়েছিল।
পাপায়ো নিখোঁজ হওয়ার দুই সপ্তাহ পর্যন্ত খুঁজেও কোনো সন্ধান পায়নি পরিবার। পরে তাঁর ছিন্নবিচ্ছিন্ন দেহ এক পরিত্যক্ত কুয়া থেকে উদ্ধার করা হয়। সাল্লাই কালোকা বলেন, ‘আমরা সব সময় আমাদের সন্তানদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিই। বিক্রি করতে গেলে কোনো কোনায় যেয়ো না, অজানা কারও দেওয়া উপহার নেওয়ার আগে ভাব। আমাদের দেশে এটা প্রায়ই ঘটে।’
সাল্লাই বলেন, আমার নিজ শহর মাকেনিতে এ ধরনের হত্যা প্রায়ই ঘটে। এরপর আমাদের কালো জাদু বা জুজুর ভয় দেখানো হয়। কিন্তু যথাযথ তদন্ত হয় না। এর উদাহরণ পাপায়োর হত্যাকাণ্ডকে পুলিশ ‘রিচুয়াল কিলিং’ বা কালো জাদুসংক্রান্ত হত্যা হিসেবেও নিশ্চিতও করেনি। এ ধরনের হত্যাকাণ্ডে একজন ব্যক্তির দেহের কোনো একটি নির্দিষ্ট অংশ জুজু অনুশীলনকারীরা তাবিজ বা অন্য জাদুবিদ্যার জন্য ব্যবহার করে।
তারা বড় অঙ্কের অর্থ প্রদানকারী গ্রাহকদের ধন-সম্পদ বা ক্ষমতা অর্জনের প্রতিশ্রুতি দেয়। এসব তান্ত্রিকেরা মূলত তাদের ভুল বোঝায় যে, মানবদেহের অংশ এই তাবিজকে আরও কার্যকর করে। কিন্তু পুলিশ ও অন্যান্য কর্তৃপক্ষ সীমিত সম্পদের কারণে প্রায়ই অপরাধীদের খুঁজে বের করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রমাণ জোগাড় করতে ব্যর্থ হয়। দেশে ৮৯ লাখ মানুষের জন্য শুধু একজন প্যাথলজিস্ট আছে।
সিয়েরা লিওনে কালো জাদুসংক্রান্ত বিশ্বাস এতটা গভীর যে পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যেও অনেকেই এই ধরনের মামলা অনুসরণ করতে ভয় পান। ফলে অধিকাংশ অপরাধ অনুসন্ধানহীন থাকে। তবে বিবিসি আফ্রিকা আই এমন দুজনকে খুঁজে পেয়েছে, যারা নিজেদের জুজু অনুশীলনকারী হিসেবে পরিচয় দেয় এবং হত্যার করা ব্যক্তির দেহ থেকে নির্দিষ্ট অংশ সরবরাহ করতে রাজি ছিলেন।
উভয়ই বলেছিলেন যে, তারা বড় এক নেটওয়ার্কের অংশ। একজন দাবি করেন যে, পশ্চিম আফ্রিকার নানা দেশে তাদের শক্তিশালী গ্রাহক আছে। বিবিসি আফ্রিকা আইয়ের একজন সদস্য ওসমান নাম ব্যবহার করে একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন, যিনি মানব বলি দিয়ে ক্ষমতা অর্জন করতে চান। সেই মতে, তিনি গিনি সীমান্তে কাম্বিয়া জেলার এক প্রত্যন্ত এলাকায় গিয়ে একটি গোপন মন্দিরে জুজু অনুশীলনকারীর সঙ্গে দেখা করেন।
সেই জুজু অনুশীলনকারী নিজেকে কানু বলে পরিচয় দিলেন এবং রাজনীতিবিদদের সঙ্গে তার যোগাযোগ আছে বলেন জানালেন। পুরো সময় লাল রঙের গামছায় তার মুখ ঢাকা ছিল। কানু বলেন, ‘আমি গিনি, সেনেগাল এবং নাইজেরিয়ার কিছু বড় বড় রাজনীতিবিদদের সঙ্গে কাজ করেছি। আমাদের একটি দল আছে। কখনো কখনো নির্বাচনের সময়, রাতে এখানে মানুষ ভিড় করে।’
নির্বাচনের সময়কে অনেকেই বিপজ্জনক মনে করেন। সে সময় অভিভাবকদের সতর্ক থাকতে বলা হয়। কারণ, অপহরণের ঝুঁকি বেড়ে যায়। দ্বিতীয়বার সাক্ষাৎকারে সময় কানু আরও আত্মবিশ্বাসী হয়ে তাঁর ব্যবসার প্রমাণ দেখান। এ সময় তাঁর হাতে একটি মাথার খুলি দেখান। তিনি ওসমানকে বলেন, ‘দেখছ? এটা কোনো একজনের। আমি এটি শুকিয়েছি। এটি একজন মহিলার খুলি। আমি আশা করছি, দু–একদিনের মধ্যেই কেউ এটি নেবে।’
তিনি তাঁর মন্দিরের পেছনের একটি গর্তও দেখিয়ে বললেন, ‘এখানেই আমরা মানবদেহের বিভিন্ন অংশ ঝুলিয়ে রাখি। এখানে হত্যা করি এবং রক্ত নিচে চলে যায়...বড় বড় নেতারা, যখন ক্ষমতা চায়, এখানে আসে। আমি, তারা যা চায় তাদের দেই।’ ওসমান জানান, তিনি নারীর অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ব্যবহার করতে চান রীতি অনুযায়ী। কানু জবাবে বললেন, ‘নারী অঙ্গপ্রত্যঙ্গের দাম ৭ কোটি লিওঁ বা ৩ হাজার ডলার।’ পরে বিবিসি আফ্রিকা আই আর কানুর সঙ্গে দেখা করেনি। কারণ, তাঁরা চায়নি দলের কোনো সদস্য বিপদে পড়ুক। এ ছাড়া, কানু প্রতারক হতে পারে—এমন আশঙ্কাও ছিল। তবে বিবিসি সংগৃহীত যাবতীয় প্রমাণাদি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে।
কিছু জুজু অনুশীলনকারী নিজেদের হার্বালিস্ট বা ভেষজ ওষুধ বিশেষজ্ঞ হিসেবে পরিচয় দেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, সিয়েরা লিওনে ২০২২ সালে মাত্র ১ হাজার নিবন্ধিত ডাক্তার ছিল, কিন্তু আনুমানিক ৪৫ হাজার প্রচলিত ভেষজ চিকিৎসক ছিলেন। দেশের প্রায় সবাই এই ভেষজবিদদের ওপর নির্ভর করেন। তারা মানসিক স্বাস্থ্যের সমস্যাতেও সাহায্য করে। এসব বিশেষজ্ঞ নিজ নিজ মন্দিরে রোগীদের চিকিৎসা করেন, যেখানে মায়াজাল ও আধ্যাত্মিকতার ছোঁয়া থাকে।
সিয়েরা লিওনের কাউন্সিল অব ট্র্যাডিশনাল হিলারসের প্রেসিডেন্ট শেকু তারাওয়ালি নিশ্চিত করেছেন যে, কানুর মতো ‘কালো শক্তির’ জুজু অনুশীলনকারীরা সাধারণ ভেষজ চিকিৎসকদের খ্যাতিকে কলঙ্কিত করছেন।
শেকু তারাওয়ালি বলেন, ‘আমরা আমাদের ভাবমূর্তি পরিষ্কার করতে প্রাণপণ চেষ্টা করছি। সাধারণ মানুষ বোঝে না, তাই তারা আমাদের সবাইকে খারাপ ওঝা-গুনিন বলে ধরে নেয়। একটি পচা মাছ পুরো ঝাঁকটাকে নষ্ট করে ফেলে...আমরা চিকিৎসক, খুনে নই।’
তারাওয়ালি সরকার এবং আরেকটি বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে কাজ করছেন, যাতে রোগীদের চিকিৎসার জন্য একটি প্রথাগত চিকিৎসা ক্লিনিক খোলা যায়। তাঁর বিশ্বাস, ক্ষমতা ও টাকার লোভেই এসব আচারগত হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে থাকা মানুষগুলো প্রভাবশালী। তিনি বলেন, ‘যখন কেউ নেতা হতে চায়...তখন তারা মানুষের শরীর থেকে অঙ্গ কেটে নেয়। ওটাকেই তারা উৎসর্গ হিসেবে ব্যবহার করে। মানুষকে পুড়িয়ে ফেলে, তারপর ছাই দিয়ে শক্তি অর্জন করে। মানুষের চর্বি থেকেও শক্তি নেয়।’
সিয়েরা লিওনে এমন কালো জাদুর কারণে কী পরিমাণ মানুষকে হত্যা করা হয়, তার সঠিক সংখ্যা জানা যায় না। দেশটির বেশির ভাগ মানুষ নিজেদের মুসলিম বা খ্রিষ্টান হিসেবে পরিচয় দেন। যুক্তরাজ্যের অ্যাবারিস্টউইথ ইউনিভার্সিটির গবেষক ইমানুয়েল সারপং ওউসু বলেন, ‘বেশির ভাগ আফ্রিকান দেশেই এমন খুনকে আলাদা কোনো বিভাগ বা উপবিভাগ হিসেবে সরকারি খতিয়ানে নথিভুক্ত করা হয় না। অনেক ঘটনাকে দুর্ঘটনা, বন্য প্রাণীর হামলায় মৃত্যু, আত্মহত্যা বা স্বাভাবিক মৃত্যু হিসেবে ভুলভাবে নথিভুক্ত করা হয়...অধিকাংশ অপরাধী, সম্ভবত ৯০ শতাংশের মতো, ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়।’
বিবিসি আফ্রিকা আই সিয়েরা লিওনের ফ্রি টাউনের উপশহর ওয়াটারলুতে এমন আরেক সন্দেহভাজন দেহাংশ সরবরাহকারীর খোঁজ পায়। ইদারা ছদ্মনামের ওই ব্যক্তি ওসমানকে বলেন, ‘আমি একা নই, আমার অধীনে ২৫০ জনের মতো ওঝা-গুনিন কাজ করে।’
ইদারা আরও বলেন, ‘মানুষের এমন কোনো অঙ্গ নেই, যা আমরা ব্যবহার করি না। আমরা যখন কোনো নির্দিষ্ট অঙ্গ চাই, তখন তারা সেটা এনে দেয়। আমরা কাজ ভাগ করে করি।’ তিনি আরও জানান, তার দলে এমন লোক আছে যারা মানুষ ধরে আনতে খুব পারদর্শী।
ওসমান যখন দ্বিতীয়বা ইদারার সঙ্গে দেখা করেন, তখন তিনি ওসমানকে একটি ভয়েস নোট শোনান। যেখানে ইদারার এক সহযোগীকে বলতে শোনা যায়, তারা প্রতিদিন রাতে শিকার খুঁজতে বেরোতে প্রস্তুত। ওসমান তখন তাকে বলেছিলেন, কাজটা এখনই না করতে। তবে পরে যখন ইদারা ফোন করে জানায় যে, তারা একজন সম্ভাব্য ভিকটিম চিহ্নিত করেছে, তখন বিবিসি বিষয়টি পুলিশ কমিশনার ইব্রাহিম সামাকে জানায়।
কমিশনার ইব্রাহিম সামা অভিযানের সিদ্ধান্ত নেন। তবে জানিয়ে দেন, তারাওয়ালিকে ছাড়া তাঁর বাহিনী অভিযান চালাবে না। কারণ, তারাওয়ালি এমন অভিযানে প্রায়ই পুলিশকে সহায়তা করেন। অভিযানে থাকা সহকারী সুপারিনটেনডেন্ট আলিউ জালো বলেন, ‘যখন আমরা খবর পাই যে কোনো বিপজ্জনক ওঝা একটি মন্দির চালাচ্ছে, তখন আমরা প্রথাগত চিকিৎসকদের সঙ্গে সমন্বয়ে কাজ করি।’ তিনি আরও জানান, কিছু পুলিশ সদস্যের মনে এসব ‘অভিশপ্ত’ ওঝাদের নিয়ে কুসংস্কার আছে। ইদারাকে গ্রেপ্তার করার পর, তারাওয়ালি পুরো জায়গায় তল্লাশি শুরু করেন। তিনি বলেন, সেখানে মানুষের হাড়, মানুষের চুল এবং অন্যান্য হাড় পাওয়া যায়।
দুই বছর আগে ফ্রিটাউনে এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নিখোঁজ হন। পরে তাঁর লাশ পাওয়া যায় ওয়াটারলুর এক গুণিনের মন্দিরের ভেতর পুঁতে রাখা অবস্থায়। ২০২৩ সালের আগস্টে মামলাটি ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে হাই কোর্টে পাঠানো হয়। কিন্তু দুটি সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছেন, মামলাটি এরপর আর এগোয়নি এবং আটক ব্যক্তিরা জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।
বিবিসি আফ্রিকা আই যখন, এই প্রতিবেদন নিয়ে কাজ করছিল, ঠিক সে সময় ২৮ বছর বয়সী কাজিন ফাতমাটা কন্তে নামের এক নারী মাকেনিতে খুন হন। দুই সন্তানের মা ও পেশায় হেয়ারড্রেসার ফাতমাটার লাশ তাঁর জন্মদিনের পরদিনই রাস্তার পাশে ফেলে রাখা অবস্থায় পাওয়া যায়। এক বাসিন্দা জানান, সাম্প্রতিক কয়েক সপ্তাহে ওই এলাকায় আরও দুজনের লাশ পাওয়া গিয়েছিল।
ফাতমাটার সামনের বেশ কয়েকটি দাঁত ছিল ওপড়ানো। এতে স্থানীয়দের বিশ্বাস দৃঢ় হয় যে এটা কালো জাদু চর্চা সংক্রান্ত হত্যাকাণ্ড। ফাতমাটার হত্যার আসল কারণ হয়তো কোনো দিনই জানতে পারা সম্ভব হবে না। পরিবার নিজ খরচে তাঁর লাশ ফ্রিটাউনে পাঠিয়ে ময়নাতদন্ত করায়, কারণ সরকার সেটা বহন করতে পারেনি। কিন্তু ময়নাতদন্তেও কিছু স্পষ্ট বের হয়নি। এখনো কেউ গ্রেপ্তারও হয়নি।
পাপায়োর মায়ের মতোই, সঠিক বিচার না পাওয়ার যন্ত্রণা এবং পুলিশের উদাসীনতা মাকেনির মতো দরিদ্র এলাকায় ভয়ের আবহ আরও গাঢ় করে তুলছে।
আজকের পত্রিকা ডেস্ক

আফ্রিকার দেশ সিয়েরা লিওনে একাধিক পরিবারে এমন হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, যা তথাকথিত কালো জাদুর সঙ্গে জড়িত বলে মনে করা হচ্ছে। তবে এসব হত্যাকাণ্ডের পেছনে মানবদেহের অংশের অবৈধ ব্যবসার রহস্য উন্মোচন করেছে বিবিসি আফ্রিকা আই।
চার বছর আগে পাপায়ো নামে ১১ বছরের এক কিশোরকে হত্যা করা হয়, কালো জাদুর নামে। তার মা এখনো আশা করে আছেন, একদিন তাঁর ছেলের হত্যার বিচার হবে। সাল্লাই কালোকা নামে ওই নারী বিবিসিকে বলেন, ‘আমি কষ্টে আছি। তারা আমার সন্তানকে হত্যা করেছে, আর এখন শুধু নীরবতা।’
সাল্লাই কালোকা জানান, তাঁর ছেলে মাছ বিক্রির জন্য বাজারে গিয়েছিল, কিন্তু আর ফিরে আসেনি। তিনি আরও বলেন, তাঁর ছেলে পাপায়োকে যখন পাওয়া যায়, তখন দেখা গেছে—শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গপ্রত্যঙ্গ, চোখ এবং এক হাত কেটে নেওয়া হয়েছিল।
পাপায়ো নিখোঁজ হওয়ার দুই সপ্তাহ পর্যন্ত খুঁজেও কোনো সন্ধান পায়নি পরিবার। পরে তাঁর ছিন্নবিচ্ছিন্ন দেহ এক পরিত্যক্ত কুয়া থেকে উদ্ধার করা হয়। সাল্লাই কালোকা বলেন, ‘আমরা সব সময় আমাদের সন্তানদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিই। বিক্রি করতে গেলে কোনো কোনায় যেয়ো না, অজানা কারও দেওয়া উপহার নেওয়ার আগে ভাব। আমাদের দেশে এটা প্রায়ই ঘটে।’
সাল্লাই বলেন, আমার নিজ শহর মাকেনিতে এ ধরনের হত্যা প্রায়ই ঘটে। এরপর আমাদের কালো জাদু বা জুজুর ভয় দেখানো হয়। কিন্তু যথাযথ তদন্ত হয় না। এর উদাহরণ পাপায়োর হত্যাকাণ্ডকে পুলিশ ‘রিচুয়াল কিলিং’ বা কালো জাদুসংক্রান্ত হত্যা হিসেবেও নিশ্চিতও করেনি। এ ধরনের হত্যাকাণ্ডে একজন ব্যক্তির দেহের কোনো একটি নির্দিষ্ট অংশ জুজু অনুশীলনকারীরা তাবিজ বা অন্য জাদুবিদ্যার জন্য ব্যবহার করে।
তারা বড় অঙ্কের অর্থ প্রদানকারী গ্রাহকদের ধন-সম্পদ বা ক্ষমতা অর্জনের প্রতিশ্রুতি দেয়। এসব তান্ত্রিকেরা মূলত তাদের ভুল বোঝায় যে, মানবদেহের অংশ এই তাবিজকে আরও কার্যকর করে। কিন্তু পুলিশ ও অন্যান্য কর্তৃপক্ষ সীমিত সম্পদের কারণে প্রায়ই অপরাধীদের খুঁজে বের করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রমাণ জোগাড় করতে ব্যর্থ হয়। দেশে ৮৯ লাখ মানুষের জন্য শুধু একজন প্যাথলজিস্ট আছে।
সিয়েরা লিওনে কালো জাদুসংক্রান্ত বিশ্বাস এতটা গভীর যে পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যেও অনেকেই এই ধরনের মামলা অনুসরণ করতে ভয় পান। ফলে অধিকাংশ অপরাধ অনুসন্ধানহীন থাকে। তবে বিবিসি আফ্রিকা আই এমন দুজনকে খুঁজে পেয়েছে, যারা নিজেদের জুজু অনুশীলনকারী হিসেবে পরিচয় দেয় এবং হত্যার করা ব্যক্তির দেহ থেকে নির্দিষ্ট অংশ সরবরাহ করতে রাজি ছিলেন।
উভয়ই বলেছিলেন যে, তারা বড় এক নেটওয়ার্কের অংশ। একজন দাবি করেন যে, পশ্চিম আফ্রিকার নানা দেশে তাদের শক্তিশালী গ্রাহক আছে। বিবিসি আফ্রিকা আইয়ের একজন সদস্য ওসমান নাম ব্যবহার করে একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন, যিনি মানব বলি দিয়ে ক্ষমতা অর্জন করতে চান। সেই মতে, তিনি গিনি সীমান্তে কাম্বিয়া জেলার এক প্রত্যন্ত এলাকায় গিয়ে একটি গোপন মন্দিরে জুজু অনুশীলনকারীর সঙ্গে দেখা করেন।
সেই জুজু অনুশীলনকারী নিজেকে কানু বলে পরিচয় দিলেন এবং রাজনীতিবিদদের সঙ্গে তার যোগাযোগ আছে বলেন জানালেন। পুরো সময় লাল রঙের গামছায় তার মুখ ঢাকা ছিল। কানু বলেন, ‘আমি গিনি, সেনেগাল এবং নাইজেরিয়ার কিছু বড় বড় রাজনীতিবিদদের সঙ্গে কাজ করেছি। আমাদের একটি দল আছে। কখনো কখনো নির্বাচনের সময়, রাতে এখানে মানুষ ভিড় করে।’
নির্বাচনের সময়কে অনেকেই বিপজ্জনক মনে করেন। সে সময় অভিভাবকদের সতর্ক থাকতে বলা হয়। কারণ, অপহরণের ঝুঁকি বেড়ে যায়। দ্বিতীয়বার সাক্ষাৎকারে সময় কানু আরও আত্মবিশ্বাসী হয়ে তাঁর ব্যবসার প্রমাণ দেখান। এ সময় তাঁর হাতে একটি মাথার খুলি দেখান। তিনি ওসমানকে বলেন, ‘দেখছ? এটা কোনো একজনের। আমি এটি শুকিয়েছি। এটি একজন মহিলার খুলি। আমি আশা করছি, দু–একদিনের মধ্যেই কেউ এটি নেবে।’
তিনি তাঁর মন্দিরের পেছনের একটি গর্তও দেখিয়ে বললেন, ‘এখানেই আমরা মানবদেহের বিভিন্ন অংশ ঝুলিয়ে রাখি। এখানে হত্যা করি এবং রক্ত নিচে চলে যায়...বড় বড় নেতারা, যখন ক্ষমতা চায়, এখানে আসে। আমি, তারা যা চায় তাদের দেই।’ ওসমান জানান, তিনি নারীর অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ব্যবহার করতে চান রীতি অনুযায়ী। কানু জবাবে বললেন, ‘নারী অঙ্গপ্রত্যঙ্গের দাম ৭ কোটি লিওঁ বা ৩ হাজার ডলার।’ পরে বিবিসি আফ্রিকা আই আর কানুর সঙ্গে দেখা করেনি। কারণ, তাঁরা চায়নি দলের কোনো সদস্য বিপদে পড়ুক। এ ছাড়া, কানু প্রতারক হতে পারে—এমন আশঙ্কাও ছিল। তবে বিবিসি সংগৃহীত যাবতীয় প্রমাণাদি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে।
কিছু জুজু অনুশীলনকারী নিজেদের হার্বালিস্ট বা ভেষজ ওষুধ বিশেষজ্ঞ হিসেবে পরিচয় দেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, সিয়েরা লিওনে ২০২২ সালে মাত্র ১ হাজার নিবন্ধিত ডাক্তার ছিল, কিন্তু আনুমানিক ৪৫ হাজার প্রচলিত ভেষজ চিকিৎসক ছিলেন। দেশের প্রায় সবাই এই ভেষজবিদদের ওপর নির্ভর করেন। তারা মানসিক স্বাস্থ্যের সমস্যাতেও সাহায্য করে। এসব বিশেষজ্ঞ নিজ নিজ মন্দিরে রোগীদের চিকিৎসা করেন, যেখানে মায়াজাল ও আধ্যাত্মিকতার ছোঁয়া থাকে।
সিয়েরা লিওনের কাউন্সিল অব ট্র্যাডিশনাল হিলারসের প্রেসিডেন্ট শেকু তারাওয়ালি নিশ্চিত করেছেন যে, কানুর মতো ‘কালো শক্তির’ জুজু অনুশীলনকারীরা সাধারণ ভেষজ চিকিৎসকদের খ্যাতিকে কলঙ্কিত করছেন।
শেকু তারাওয়ালি বলেন, ‘আমরা আমাদের ভাবমূর্তি পরিষ্কার করতে প্রাণপণ চেষ্টা করছি। সাধারণ মানুষ বোঝে না, তাই তারা আমাদের সবাইকে খারাপ ওঝা-গুনিন বলে ধরে নেয়। একটি পচা মাছ পুরো ঝাঁকটাকে নষ্ট করে ফেলে...আমরা চিকিৎসক, খুনে নই।’
তারাওয়ালি সরকার এবং আরেকটি বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে কাজ করছেন, যাতে রোগীদের চিকিৎসার জন্য একটি প্রথাগত চিকিৎসা ক্লিনিক খোলা যায়। তাঁর বিশ্বাস, ক্ষমতা ও টাকার লোভেই এসব আচারগত হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে থাকা মানুষগুলো প্রভাবশালী। তিনি বলেন, ‘যখন কেউ নেতা হতে চায়...তখন তারা মানুষের শরীর থেকে অঙ্গ কেটে নেয়। ওটাকেই তারা উৎসর্গ হিসেবে ব্যবহার করে। মানুষকে পুড়িয়ে ফেলে, তারপর ছাই দিয়ে শক্তি অর্জন করে। মানুষের চর্বি থেকেও শক্তি নেয়।’
সিয়েরা লিওনে এমন কালো জাদুর কারণে কী পরিমাণ মানুষকে হত্যা করা হয়, তার সঠিক সংখ্যা জানা যায় না। দেশটির বেশির ভাগ মানুষ নিজেদের মুসলিম বা খ্রিষ্টান হিসেবে পরিচয় দেন। যুক্তরাজ্যের অ্যাবারিস্টউইথ ইউনিভার্সিটির গবেষক ইমানুয়েল সারপং ওউসু বলেন, ‘বেশির ভাগ আফ্রিকান দেশেই এমন খুনকে আলাদা কোনো বিভাগ বা উপবিভাগ হিসেবে সরকারি খতিয়ানে নথিভুক্ত করা হয় না। অনেক ঘটনাকে দুর্ঘটনা, বন্য প্রাণীর হামলায় মৃত্যু, আত্মহত্যা বা স্বাভাবিক মৃত্যু হিসেবে ভুলভাবে নথিভুক্ত করা হয়...অধিকাংশ অপরাধী, সম্ভবত ৯০ শতাংশের মতো, ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়।’
বিবিসি আফ্রিকা আই সিয়েরা লিওনের ফ্রি টাউনের উপশহর ওয়াটারলুতে এমন আরেক সন্দেহভাজন দেহাংশ সরবরাহকারীর খোঁজ পায়। ইদারা ছদ্মনামের ওই ব্যক্তি ওসমানকে বলেন, ‘আমি একা নই, আমার অধীনে ২৫০ জনের মতো ওঝা-গুনিন কাজ করে।’
ইদারা আরও বলেন, ‘মানুষের এমন কোনো অঙ্গ নেই, যা আমরা ব্যবহার করি না। আমরা যখন কোনো নির্দিষ্ট অঙ্গ চাই, তখন তারা সেটা এনে দেয়। আমরা কাজ ভাগ করে করি।’ তিনি আরও জানান, তার দলে এমন লোক আছে যারা মানুষ ধরে আনতে খুব পারদর্শী।
ওসমান যখন দ্বিতীয়বা ইদারার সঙ্গে দেখা করেন, তখন তিনি ওসমানকে একটি ভয়েস নোট শোনান। যেখানে ইদারার এক সহযোগীকে বলতে শোনা যায়, তারা প্রতিদিন রাতে শিকার খুঁজতে বেরোতে প্রস্তুত। ওসমান তখন তাকে বলেছিলেন, কাজটা এখনই না করতে। তবে পরে যখন ইদারা ফোন করে জানায় যে, তারা একজন সম্ভাব্য ভিকটিম চিহ্নিত করেছে, তখন বিবিসি বিষয়টি পুলিশ কমিশনার ইব্রাহিম সামাকে জানায়।
কমিশনার ইব্রাহিম সামা অভিযানের সিদ্ধান্ত নেন। তবে জানিয়ে দেন, তারাওয়ালিকে ছাড়া তাঁর বাহিনী অভিযান চালাবে না। কারণ, তারাওয়ালি এমন অভিযানে প্রায়ই পুলিশকে সহায়তা করেন। অভিযানে থাকা সহকারী সুপারিনটেনডেন্ট আলিউ জালো বলেন, ‘যখন আমরা খবর পাই যে কোনো বিপজ্জনক ওঝা একটি মন্দির চালাচ্ছে, তখন আমরা প্রথাগত চিকিৎসকদের সঙ্গে সমন্বয়ে কাজ করি।’ তিনি আরও জানান, কিছু পুলিশ সদস্যের মনে এসব ‘অভিশপ্ত’ ওঝাদের নিয়ে কুসংস্কার আছে। ইদারাকে গ্রেপ্তার করার পর, তারাওয়ালি পুরো জায়গায় তল্লাশি শুরু করেন। তিনি বলেন, সেখানে মানুষের হাড়, মানুষের চুল এবং অন্যান্য হাড় পাওয়া যায়।
দুই বছর আগে ফ্রিটাউনে এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নিখোঁজ হন। পরে তাঁর লাশ পাওয়া যায় ওয়াটারলুর এক গুণিনের মন্দিরের ভেতর পুঁতে রাখা অবস্থায়। ২০২৩ সালের আগস্টে মামলাটি ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে হাই কোর্টে পাঠানো হয়। কিন্তু দুটি সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছেন, মামলাটি এরপর আর এগোয়নি এবং আটক ব্যক্তিরা জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।
বিবিসি আফ্রিকা আই যখন, এই প্রতিবেদন নিয়ে কাজ করছিল, ঠিক সে সময় ২৮ বছর বয়সী কাজিন ফাতমাটা কন্তে নামের এক নারী মাকেনিতে খুন হন। দুই সন্তানের মা ও পেশায় হেয়ারড্রেসার ফাতমাটার লাশ তাঁর জন্মদিনের পরদিনই রাস্তার পাশে ফেলে রাখা অবস্থায় পাওয়া যায়। এক বাসিন্দা জানান, সাম্প্রতিক কয়েক সপ্তাহে ওই এলাকায় আরও দুজনের লাশ পাওয়া গিয়েছিল।
ফাতমাটার সামনের বেশ কয়েকটি দাঁত ছিল ওপড়ানো। এতে স্থানীয়দের বিশ্বাস দৃঢ় হয় যে এটা কালো জাদু চর্চা সংক্রান্ত হত্যাকাণ্ড। ফাতমাটার হত্যার আসল কারণ হয়তো কোনো দিনই জানতে পারা সম্ভব হবে না। পরিবার নিজ খরচে তাঁর লাশ ফ্রিটাউনে পাঠিয়ে ময়নাতদন্ত করায়, কারণ সরকার সেটা বহন করতে পারেনি। কিন্তু ময়নাতদন্তেও কিছু স্পষ্ট বের হয়নি। এখনো কেউ গ্রেপ্তারও হয়নি।
পাপায়োর মায়ের মতোই, সঠিক বিচার না পাওয়ার যন্ত্রণা এবং পুলিশের উদাসীনতা মাকেনির মতো দরিদ্র এলাকায় ভয়ের আবহ আরও গাঢ় করে তুলছে।

আফ্রিকার দেশ সিয়েরা লিওনে একাধিক পরিবারে এমন হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, যা তথাকথিত কালো জাদুর সঙ্গে জড়িত বলে মনে করা হচ্ছে। তবে এসব হত্যাকাণ্ডের পেছনে মানবদেহের অংশের অবৈধ ব্যবসার রহস্য উন্মোচন করেছে বিবিসি আফ্রিকা আই।
চার বছর আগে পাপায়ো নামে ১১ বছরের এক কিশোরকে হত্যা করা হয়, কালো জাদুর নামে। তার মা এখনো আশা করে আছেন, একদিন তাঁর ছেলের হত্যার বিচার হবে। সাল্লাই কালোকা নামে ওই নারী বিবিসিকে বলেন, ‘আমি কষ্টে আছি। তারা আমার সন্তানকে হত্যা করেছে, আর এখন শুধু নীরবতা।’
সাল্লাই কালোকা জানান, তাঁর ছেলে মাছ বিক্রির জন্য বাজারে গিয়েছিল, কিন্তু আর ফিরে আসেনি। তিনি আরও বলেন, তাঁর ছেলে পাপায়োকে যখন পাওয়া যায়, তখন দেখা গেছে—শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গপ্রত্যঙ্গ, চোখ এবং এক হাত কেটে নেওয়া হয়েছিল।
পাপায়ো নিখোঁজ হওয়ার দুই সপ্তাহ পর্যন্ত খুঁজেও কোনো সন্ধান পায়নি পরিবার। পরে তাঁর ছিন্নবিচ্ছিন্ন দেহ এক পরিত্যক্ত কুয়া থেকে উদ্ধার করা হয়। সাল্লাই কালোকা বলেন, ‘আমরা সব সময় আমাদের সন্তানদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিই। বিক্রি করতে গেলে কোনো কোনায় যেয়ো না, অজানা কারও দেওয়া উপহার নেওয়ার আগে ভাব। আমাদের দেশে এটা প্রায়ই ঘটে।’
সাল্লাই বলেন, আমার নিজ শহর মাকেনিতে এ ধরনের হত্যা প্রায়ই ঘটে। এরপর আমাদের কালো জাদু বা জুজুর ভয় দেখানো হয়। কিন্তু যথাযথ তদন্ত হয় না। এর উদাহরণ পাপায়োর হত্যাকাণ্ডকে পুলিশ ‘রিচুয়াল কিলিং’ বা কালো জাদুসংক্রান্ত হত্যা হিসেবেও নিশ্চিতও করেনি। এ ধরনের হত্যাকাণ্ডে একজন ব্যক্তির দেহের কোনো একটি নির্দিষ্ট অংশ জুজু অনুশীলনকারীরা তাবিজ বা অন্য জাদুবিদ্যার জন্য ব্যবহার করে।
তারা বড় অঙ্কের অর্থ প্রদানকারী গ্রাহকদের ধন-সম্পদ বা ক্ষমতা অর্জনের প্রতিশ্রুতি দেয়। এসব তান্ত্রিকেরা মূলত তাদের ভুল বোঝায় যে, মানবদেহের অংশ এই তাবিজকে আরও কার্যকর করে। কিন্তু পুলিশ ও অন্যান্য কর্তৃপক্ষ সীমিত সম্পদের কারণে প্রায়ই অপরাধীদের খুঁজে বের করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রমাণ জোগাড় করতে ব্যর্থ হয়। দেশে ৮৯ লাখ মানুষের জন্য শুধু একজন প্যাথলজিস্ট আছে।
সিয়েরা লিওনে কালো জাদুসংক্রান্ত বিশ্বাস এতটা গভীর যে পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যেও অনেকেই এই ধরনের মামলা অনুসরণ করতে ভয় পান। ফলে অধিকাংশ অপরাধ অনুসন্ধানহীন থাকে। তবে বিবিসি আফ্রিকা আই এমন দুজনকে খুঁজে পেয়েছে, যারা নিজেদের জুজু অনুশীলনকারী হিসেবে পরিচয় দেয় এবং হত্যার করা ব্যক্তির দেহ থেকে নির্দিষ্ট অংশ সরবরাহ করতে রাজি ছিলেন।
উভয়ই বলেছিলেন যে, তারা বড় এক নেটওয়ার্কের অংশ। একজন দাবি করেন যে, পশ্চিম আফ্রিকার নানা দেশে তাদের শক্তিশালী গ্রাহক আছে। বিবিসি আফ্রিকা আইয়ের একজন সদস্য ওসমান নাম ব্যবহার করে একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন, যিনি মানব বলি দিয়ে ক্ষমতা অর্জন করতে চান। সেই মতে, তিনি গিনি সীমান্তে কাম্বিয়া জেলার এক প্রত্যন্ত এলাকায় গিয়ে একটি গোপন মন্দিরে জুজু অনুশীলনকারীর সঙ্গে দেখা করেন।
সেই জুজু অনুশীলনকারী নিজেকে কানু বলে পরিচয় দিলেন এবং রাজনীতিবিদদের সঙ্গে তার যোগাযোগ আছে বলেন জানালেন। পুরো সময় লাল রঙের গামছায় তার মুখ ঢাকা ছিল। কানু বলেন, ‘আমি গিনি, সেনেগাল এবং নাইজেরিয়ার কিছু বড় বড় রাজনীতিবিদদের সঙ্গে কাজ করেছি। আমাদের একটি দল আছে। কখনো কখনো নির্বাচনের সময়, রাতে এখানে মানুষ ভিড় করে।’
নির্বাচনের সময়কে অনেকেই বিপজ্জনক মনে করেন। সে সময় অভিভাবকদের সতর্ক থাকতে বলা হয়। কারণ, অপহরণের ঝুঁকি বেড়ে যায়। দ্বিতীয়বার সাক্ষাৎকারে সময় কানু আরও আত্মবিশ্বাসী হয়ে তাঁর ব্যবসার প্রমাণ দেখান। এ সময় তাঁর হাতে একটি মাথার খুলি দেখান। তিনি ওসমানকে বলেন, ‘দেখছ? এটা কোনো একজনের। আমি এটি শুকিয়েছি। এটি একজন মহিলার খুলি। আমি আশা করছি, দু–একদিনের মধ্যেই কেউ এটি নেবে।’
তিনি তাঁর মন্দিরের পেছনের একটি গর্তও দেখিয়ে বললেন, ‘এখানেই আমরা মানবদেহের বিভিন্ন অংশ ঝুলিয়ে রাখি। এখানে হত্যা করি এবং রক্ত নিচে চলে যায়...বড় বড় নেতারা, যখন ক্ষমতা চায়, এখানে আসে। আমি, তারা যা চায় তাদের দেই।’ ওসমান জানান, তিনি নারীর অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ব্যবহার করতে চান রীতি অনুযায়ী। কানু জবাবে বললেন, ‘নারী অঙ্গপ্রত্যঙ্গের দাম ৭ কোটি লিওঁ বা ৩ হাজার ডলার।’ পরে বিবিসি আফ্রিকা আই আর কানুর সঙ্গে দেখা করেনি। কারণ, তাঁরা চায়নি দলের কোনো সদস্য বিপদে পড়ুক। এ ছাড়া, কানু প্রতারক হতে পারে—এমন আশঙ্কাও ছিল। তবে বিবিসি সংগৃহীত যাবতীয় প্রমাণাদি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে।
কিছু জুজু অনুশীলনকারী নিজেদের হার্বালিস্ট বা ভেষজ ওষুধ বিশেষজ্ঞ হিসেবে পরিচয় দেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, সিয়েরা লিওনে ২০২২ সালে মাত্র ১ হাজার নিবন্ধিত ডাক্তার ছিল, কিন্তু আনুমানিক ৪৫ হাজার প্রচলিত ভেষজ চিকিৎসক ছিলেন। দেশের প্রায় সবাই এই ভেষজবিদদের ওপর নির্ভর করেন। তারা মানসিক স্বাস্থ্যের সমস্যাতেও সাহায্য করে। এসব বিশেষজ্ঞ নিজ নিজ মন্দিরে রোগীদের চিকিৎসা করেন, যেখানে মায়াজাল ও আধ্যাত্মিকতার ছোঁয়া থাকে।
সিয়েরা লিওনের কাউন্সিল অব ট্র্যাডিশনাল হিলারসের প্রেসিডেন্ট শেকু তারাওয়ালি নিশ্চিত করেছেন যে, কানুর মতো ‘কালো শক্তির’ জুজু অনুশীলনকারীরা সাধারণ ভেষজ চিকিৎসকদের খ্যাতিকে কলঙ্কিত করছেন।
শেকু তারাওয়ালি বলেন, ‘আমরা আমাদের ভাবমূর্তি পরিষ্কার করতে প্রাণপণ চেষ্টা করছি। সাধারণ মানুষ বোঝে না, তাই তারা আমাদের সবাইকে খারাপ ওঝা-গুনিন বলে ধরে নেয়। একটি পচা মাছ পুরো ঝাঁকটাকে নষ্ট করে ফেলে...আমরা চিকিৎসক, খুনে নই।’
তারাওয়ালি সরকার এবং আরেকটি বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে কাজ করছেন, যাতে রোগীদের চিকিৎসার জন্য একটি প্রথাগত চিকিৎসা ক্লিনিক খোলা যায়। তাঁর বিশ্বাস, ক্ষমতা ও টাকার লোভেই এসব আচারগত হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে থাকা মানুষগুলো প্রভাবশালী। তিনি বলেন, ‘যখন কেউ নেতা হতে চায়...তখন তারা মানুষের শরীর থেকে অঙ্গ কেটে নেয়। ওটাকেই তারা উৎসর্গ হিসেবে ব্যবহার করে। মানুষকে পুড়িয়ে ফেলে, তারপর ছাই দিয়ে শক্তি অর্জন করে। মানুষের চর্বি থেকেও শক্তি নেয়।’
সিয়েরা লিওনে এমন কালো জাদুর কারণে কী পরিমাণ মানুষকে হত্যা করা হয়, তার সঠিক সংখ্যা জানা যায় না। দেশটির বেশির ভাগ মানুষ নিজেদের মুসলিম বা খ্রিষ্টান হিসেবে পরিচয় দেন। যুক্তরাজ্যের অ্যাবারিস্টউইথ ইউনিভার্সিটির গবেষক ইমানুয়েল সারপং ওউসু বলেন, ‘বেশির ভাগ আফ্রিকান দেশেই এমন খুনকে আলাদা কোনো বিভাগ বা উপবিভাগ হিসেবে সরকারি খতিয়ানে নথিভুক্ত করা হয় না। অনেক ঘটনাকে দুর্ঘটনা, বন্য প্রাণীর হামলায় মৃত্যু, আত্মহত্যা বা স্বাভাবিক মৃত্যু হিসেবে ভুলভাবে নথিভুক্ত করা হয়...অধিকাংশ অপরাধী, সম্ভবত ৯০ শতাংশের মতো, ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়।’
বিবিসি আফ্রিকা আই সিয়েরা লিওনের ফ্রি টাউনের উপশহর ওয়াটারলুতে এমন আরেক সন্দেহভাজন দেহাংশ সরবরাহকারীর খোঁজ পায়। ইদারা ছদ্মনামের ওই ব্যক্তি ওসমানকে বলেন, ‘আমি একা নই, আমার অধীনে ২৫০ জনের মতো ওঝা-গুনিন কাজ করে।’
ইদারা আরও বলেন, ‘মানুষের এমন কোনো অঙ্গ নেই, যা আমরা ব্যবহার করি না। আমরা যখন কোনো নির্দিষ্ট অঙ্গ চাই, তখন তারা সেটা এনে দেয়। আমরা কাজ ভাগ করে করি।’ তিনি আরও জানান, তার দলে এমন লোক আছে যারা মানুষ ধরে আনতে খুব পারদর্শী।
ওসমান যখন দ্বিতীয়বা ইদারার সঙ্গে দেখা করেন, তখন তিনি ওসমানকে একটি ভয়েস নোট শোনান। যেখানে ইদারার এক সহযোগীকে বলতে শোনা যায়, তারা প্রতিদিন রাতে শিকার খুঁজতে বেরোতে প্রস্তুত। ওসমান তখন তাকে বলেছিলেন, কাজটা এখনই না করতে। তবে পরে যখন ইদারা ফোন করে জানায় যে, তারা একজন সম্ভাব্য ভিকটিম চিহ্নিত করেছে, তখন বিবিসি বিষয়টি পুলিশ কমিশনার ইব্রাহিম সামাকে জানায়।
কমিশনার ইব্রাহিম সামা অভিযানের সিদ্ধান্ত নেন। তবে জানিয়ে দেন, তারাওয়ালিকে ছাড়া তাঁর বাহিনী অভিযান চালাবে না। কারণ, তারাওয়ালি এমন অভিযানে প্রায়ই পুলিশকে সহায়তা করেন। অভিযানে থাকা সহকারী সুপারিনটেনডেন্ট আলিউ জালো বলেন, ‘যখন আমরা খবর পাই যে কোনো বিপজ্জনক ওঝা একটি মন্দির চালাচ্ছে, তখন আমরা প্রথাগত চিকিৎসকদের সঙ্গে সমন্বয়ে কাজ করি।’ তিনি আরও জানান, কিছু পুলিশ সদস্যের মনে এসব ‘অভিশপ্ত’ ওঝাদের নিয়ে কুসংস্কার আছে। ইদারাকে গ্রেপ্তার করার পর, তারাওয়ালি পুরো জায়গায় তল্লাশি শুরু করেন। তিনি বলেন, সেখানে মানুষের হাড়, মানুষের চুল এবং অন্যান্য হাড় পাওয়া যায়।
দুই বছর আগে ফ্রিটাউনে এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নিখোঁজ হন। পরে তাঁর লাশ পাওয়া যায় ওয়াটারলুর এক গুণিনের মন্দিরের ভেতর পুঁতে রাখা অবস্থায়। ২০২৩ সালের আগস্টে মামলাটি ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে হাই কোর্টে পাঠানো হয়। কিন্তু দুটি সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছেন, মামলাটি এরপর আর এগোয়নি এবং আটক ব্যক্তিরা জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।
বিবিসি আফ্রিকা আই যখন, এই প্রতিবেদন নিয়ে কাজ করছিল, ঠিক সে সময় ২৮ বছর বয়সী কাজিন ফাতমাটা কন্তে নামের এক নারী মাকেনিতে খুন হন। দুই সন্তানের মা ও পেশায় হেয়ারড্রেসার ফাতমাটার লাশ তাঁর জন্মদিনের পরদিনই রাস্তার পাশে ফেলে রাখা অবস্থায় পাওয়া যায়। এক বাসিন্দা জানান, সাম্প্রতিক কয়েক সপ্তাহে ওই এলাকায় আরও দুজনের লাশ পাওয়া গিয়েছিল।
ফাতমাটার সামনের বেশ কয়েকটি দাঁত ছিল ওপড়ানো। এতে স্থানীয়দের বিশ্বাস দৃঢ় হয় যে এটা কালো জাদু চর্চা সংক্রান্ত হত্যাকাণ্ড। ফাতমাটার হত্যার আসল কারণ হয়তো কোনো দিনই জানতে পারা সম্ভব হবে না। পরিবার নিজ খরচে তাঁর লাশ ফ্রিটাউনে পাঠিয়ে ময়নাতদন্ত করায়, কারণ সরকার সেটা বহন করতে পারেনি। কিন্তু ময়নাতদন্তেও কিছু স্পষ্ট বের হয়নি। এখনো কেউ গ্রেপ্তারও হয়নি।
পাপায়োর মায়ের মতোই, সঠিক বিচার না পাওয়ার যন্ত্রণা এবং পুলিশের উদাসীনতা মাকেনির মতো দরিদ্র এলাকায় ভয়ের আবহ আরও গাঢ় করে তুলছে।

তবে বিশ্লেষক ও সাবেক সামরিক কর্মকর্তারা বলছেন, দক্ষিণ কোরিয়ার দ্রুত অগ্রসরমাণ এই কর্মসূচি চীনকে বিরক্ত করতে পারে এবং জাপানকেও একই ধরনের সক্ষমতা অর্জনের দিকে ঠেলে দিতে পারে।
৮ মিনিট আগে
যে বয়সে শিশুরা বর্ণমালা শেখে, ছত্তিশগড়ের বাস্তার জেলার বাকাওয়ান্দ গ্রামের বাসিন্দা লিসা তখন ভয়কে জানছিলেন। ছয় বছর বয়সেই তাঁর কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয় বাইরের জগতের সব শব্দ। বাড়ির দরজা শুধু খাবারের জন্য খুলত, জীবনের জন্য নয়। ২০ বছর পর কর্তৃপক্ষ যখন তাঁকে খুঁজে পায়, তখন তাঁর চোখে নয়, স্মৃতিতেও...
৪৩ মিনিট আগে
প্রায় বারো ঘণ্টা ধরে যাত্রীরা নিজেদের মালপত্র হাতে পেতে রীতিমতো সংগ্রাম করছেন। খাবার–পানির কোনো ব্যবস্থা নেই, আর ইন্ডিগোর কাউন্টারগুলি ফাঁকা। ভারতের অন্যতম বৃহত্তম বিমান সংস্থা সংস্থা ইন্ডিগোর পরিচালনগত ত্রুটির কারণে পাঁচ শতাধিক ফ্লাইট বাতিল হওয়ায় ভারতের বিমানবন্দরগুলোতে এমন বিশৃঙ্খল দৃশ্য দেখা গেছে
১ ঘণ্টা আগে
গত বছর রোমে অনুষ্ঠিত ইউরোপীয় অ্যাকুয়াটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে ১০ মিটার সিঙ্ক্রো ইভেন্টে সোনা জেতেন ইউক্রেনীয় ডাইভার সোফিয়া লাইসকুন (২৩)। তবে সম্প্রতি আকস্মিকভাবে রাশিয়ার প্রতি আনুগত্য দেখানোর পর তাঁকে চরম শাস্তির মুখে পড়তে হলো। ইউক্রেনীয় ডাইভিং ফেডারেশন (ইউডিএফ) ফেডারেশনের অধীনে পাওয়া তাঁর সমস্ত...
২ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থনের পর দক্ষিণ কোরিয়ার পরমাণুচালিত সাবমেরিন প্রকল্প নতুন গতি পেয়েছে। দীর্ঘদিনের মার্কিন আপত্তি দূর হওয়ায় এই উদ্যোগ এখন এশিয়ার নিরাপত্তাকাঠামো পাল্টে দিতে পারে এবং পানির নিচে নতুন এক অস্ত্র প্রতিযোগিতা উসকে দিতে পারে।
উত্তর কোরিয়াকে মোকাবিলায় বহুদিন ধরে পরমাণুচালিত সাবমেরিনের অভিজাত ক্লাবে যোগ দিতে চেয়েছে সিউল। ট্রাম্পের সম্মতি পাওয়ায় দুই দেশের পারমাণবিক চুক্তির আওতায় জ্বালানির প্রবেশাধিকার মিলেছে, যা এত দিন ছিল বড় বাধা।
তবে বিশ্লেষক ও সাবেক সামরিক কর্মকর্তারা বলছেন, দক্ষিণ কোরিয়ার দ্রুত অগ্রসরমাণ এই কর্মসূচি চীনকে বিরক্ত করতে পারে এবং জাপানকেও একই ধরনের সক্ষমতা অর্জনের দিকে ঠেলে দিতে পারে।
দক্ষিণ কোরিয়ার নৌবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সাবমেরিন ক্যাপ্টেন চোই ইল বলেন, সাবমেরিন অত্যন্ত কার্যকর আক্রমণাত্মক অস্ত্র। তাই এই অঞ্চলে অস্ত্র প্রতিযোগিতা অনিবার্য।
সিউলের যুক্তি, উত্তর কোরিয়ার পানির নিচে থাকা হুমকি, বিশেষ করে সাবমেরিন থেকে নিক্ষেপযোগ্য ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র মোকাবিলায় পরমাণুচালিত সাবমেরিন অপরিহার্য।
দক্ষিণ কোরিয়া অবশ্য বারবার বলছে, পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করবে না তারা।
গত বুধবার ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক থেকে পাওয়া এই চুক্তিকে ‘বড় ধরনের সাফল্য’ হিসেবে অভিহিত করেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে মিউং।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, এটি দেশের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষাব্যবস্থার নমনীয়তা বাড়াবে।
এদিকে উত্তর কোরিয়া দাবি করেছে, তারাও একই ধরনের সক্ষমতা বিকাশে মনোনিবেশ করেছে। রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম গত মার্চে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দেখায়, কিম জং-উন একটি তথাকথিত পরমাণুচালিত সাবমেরিন পরিদর্শন করেছেন।
উত্তর কোরিয়ার কর্মসূচি কতটা এগিয়েছে, তা স্পষ্ট নয়। তবে কিছু বিশ্লেষকের সন্দেহ, পিয়ংইয়ং হয়তো রাশিয়ার সহায়তা পাচ্ছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী বলেছে, তারা বিষয়টি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়া জানিয়েছে, তারা প্রতিরক্ষা সহযোগিতা জোরদার করছে, তবে প্রযুক্তিগত সহযোগিতার বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানায়নি।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থনের পর দক্ষিণ কোরিয়ার পরমাণুচালিত সাবমেরিন প্রকল্প নতুন গতি পেয়েছে। দীর্ঘদিনের মার্কিন আপত্তি দূর হওয়ায় এই উদ্যোগ এখন এশিয়ার নিরাপত্তাকাঠামো পাল্টে দিতে পারে এবং পানির নিচে নতুন এক অস্ত্র প্রতিযোগিতা উসকে দিতে পারে।
উত্তর কোরিয়াকে মোকাবিলায় বহুদিন ধরে পরমাণুচালিত সাবমেরিনের অভিজাত ক্লাবে যোগ দিতে চেয়েছে সিউল। ট্রাম্পের সম্মতি পাওয়ায় দুই দেশের পারমাণবিক চুক্তির আওতায় জ্বালানির প্রবেশাধিকার মিলেছে, যা এত দিন ছিল বড় বাধা।
তবে বিশ্লেষক ও সাবেক সামরিক কর্মকর্তারা বলছেন, দক্ষিণ কোরিয়ার দ্রুত অগ্রসরমাণ এই কর্মসূচি চীনকে বিরক্ত করতে পারে এবং জাপানকেও একই ধরনের সক্ষমতা অর্জনের দিকে ঠেলে দিতে পারে।
দক্ষিণ কোরিয়ার নৌবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সাবমেরিন ক্যাপ্টেন চোই ইল বলেন, সাবমেরিন অত্যন্ত কার্যকর আক্রমণাত্মক অস্ত্র। তাই এই অঞ্চলে অস্ত্র প্রতিযোগিতা অনিবার্য।
সিউলের যুক্তি, উত্তর কোরিয়ার পানির নিচে থাকা হুমকি, বিশেষ করে সাবমেরিন থেকে নিক্ষেপযোগ্য ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র মোকাবিলায় পরমাণুচালিত সাবমেরিন অপরিহার্য।
দক্ষিণ কোরিয়া অবশ্য বারবার বলছে, পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করবে না তারা।
গত বুধবার ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক থেকে পাওয়া এই চুক্তিকে ‘বড় ধরনের সাফল্য’ হিসেবে অভিহিত করেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে মিউং।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, এটি দেশের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষাব্যবস্থার নমনীয়তা বাড়াবে।
এদিকে উত্তর কোরিয়া দাবি করেছে, তারাও একই ধরনের সক্ষমতা বিকাশে মনোনিবেশ করেছে। রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম গত মার্চে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দেখায়, কিম জং-উন একটি তথাকথিত পরমাণুচালিত সাবমেরিন পরিদর্শন করেছেন।
উত্তর কোরিয়ার কর্মসূচি কতটা এগিয়েছে, তা স্পষ্ট নয়। তবে কিছু বিশ্লেষকের সন্দেহ, পিয়ংইয়ং হয়তো রাশিয়ার সহায়তা পাচ্ছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী বলেছে, তারা বিষয়টি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়া জানিয়েছে, তারা প্রতিরক্ষা সহযোগিতা জোরদার করছে, তবে প্রযুক্তিগত সহযোগিতার বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানায়নি।

আফ্রিকার দেশ সিয়েরা লিওনে একাধিক পরিবারে এমন হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, যা তথাকথিত কালো জাদুর সঙ্গে জড়িত বলে মনে করা হচ্ছে। তবে এসব হত্যাকাণ্ডের পেছনে মানবদেহের অংশের অবৈধ ব্যবসার রহস্য উন্মোচন করেছে বিবিসি আফ্রিকা আই
১১ দিন আগে
যে বয়সে শিশুরা বর্ণমালা শেখে, ছত্তিশগড়ের বাস্তার জেলার বাকাওয়ান্দ গ্রামের বাসিন্দা লিসা তখন ভয়কে জানছিলেন। ছয় বছর বয়সেই তাঁর কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয় বাইরের জগতের সব শব্দ। বাড়ির দরজা শুধু খাবারের জন্য খুলত, জীবনের জন্য নয়। ২০ বছর পর কর্তৃপক্ষ যখন তাঁকে খুঁজে পায়, তখন তাঁর চোখে নয়, স্মৃতিতেও...
৪৩ মিনিট আগে
প্রায় বারো ঘণ্টা ধরে যাত্রীরা নিজেদের মালপত্র হাতে পেতে রীতিমতো সংগ্রাম করছেন। খাবার–পানির কোনো ব্যবস্থা নেই, আর ইন্ডিগোর কাউন্টারগুলি ফাঁকা। ভারতের অন্যতম বৃহত্তম বিমান সংস্থা সংস্থা ইন্ডিগোর পরিচালনগত ত্রুটির কারণে পাঁচ শতাধিক ফ্লাইট বাতিল হওয়ায় ভারতের বিমানবন্দরগুলোতে এমন বিশৃঙ্খল দৃশ্য দেখা গেছে
১ ঘণ্টা আগে
গত বছর রোমে অনুষ্ঠিত ইউরোপীয় অ্যাকুয়াটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে ১০ মিটার সিঙ্ক্রো ইভেন্টে সোনা জেতেন ইউক্রেনীয় ডাইভার সোফিয়া লাইসকুন (২৩)। তবে সম্প্রতি আকস্মিকভাবে রাশিয়ার প্রতি আনুগত্য দেখানোর পর তাঁকে চরম শাস্তির মুখে পড়তে হলো। ইউক্রেনীয় ডাইভিং ফেডারেশন (ইউডিএফ) ফেডারেশনের অধীনে পাওয়া তাঁর সমস্ত...
২ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

পৃথিবী যখন খেলায় মত্ত, তখন তিনি বন্দী ছিলেন অন্ধকারে। ছয় বছর বয়সে ঘরবন্দী হওয়া লিসা ২০ বছর পর সেই দরজা পেরিয়ে বাইরে এলেও আলো দেখার ক্ষমতা প্রায় হারিয়ে ফেলেছেন।
কিছু গল্প ক্ষতের মতো করে উন্মোচিত হয়। কিছু শৈশব যেন কোনোদিনই শুরু হয় না। লিসার জীবন তেমনই এক গল্প। নিঃশব্দে হারিয়ে যাওয়া এক শৈশবের, পরিস্থিতিতে মুছে যাওয়া এক শিশুর এবং এক নারীর।
যে বয়সে শিশুরা বর্ণমালা শেখে, ছত্তিশগড়ের বাস্তার জেলার বাকাওয়ান্দ গ্রামের বাসিন্দা লিসা তখন ভয়কে জানছিলেন। ছয় বছর বয়সেই তাঁর কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয় বাইরের জগতের সব শব্দ। বাড়ির দরজা শুধু খাবারের জন্য খুলত, জীবনের জন্য নয়। ২০ বছর পর কর্তৃপক্ষ যখন তাঁকে খুঁজে পায়, তখন তাঁর চোখে নয়, স্মৃতিতেও ছিল শুধু অন্ধকার।
ছায়াই ছিল তাঁর পরিচয়। কথোপকথন বলতে ছিল শুধু দরজার নিচ দিয়ে ঠেলে দেওয়া থালাবাটির শব্দ। দুই দশক ধরে বন্দিদশার পর এখন তিনি নিজের নামে সাড়া দিতেও হিমশিম খান।
লিসার বন্দিত্ব শুরু হয়েছিল না লোহার শিক দিয়ে, না শিকল দিয়ে—শুরু হয়েছিল আতঙ্ক দিয়ে।
২০০০ সালে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময় গ্রামের এক ব্যক্তি তাঁকে হত্যার হুমকি দেন। সেই কথায় আতঙ্ক এত গভীর হয়, তিনি নিজেকে গুটিয়ে ফেলেন নীরবতায়। এরই মধ্যে মারা যান তাঁর মা। কৃষক বাবা হয়ে পড়েন দুর্বল ও আতঙ্কিত। কোনো সহায়তা নেই, নিরাপত্তার কোনো ব্যবস্থা নেই, কারও কাছে ভরসা চাওয়ার নেই। তাই তিনি এমন এক সিদ্ধান্ত নেন, যা মেয়ের জীবনের পরবর্তী ২০ বছর নির্ধারণ করে দেয়।
তিনি মেয়েকে মাটির ঘরে তালাবদ্ধ করে রাখেন। বলেন, অন্ধকারই তাঁকে বিপদ থেকে রক্ষা করবে। জানালাবিহীন একটি ঘরই হয়ে ওঠে তাঁর পৃথিবী। না সূর্যের আলো। না কোনো কথা। না কোনো মানুষের স্পর্শ।
শুধু দরজায় রেখে যাওয়া এক প্লেট খাবার আর প্রতিদিন একটু একটু করে সংকুচিত হয়ে যাওয়া জীবনের প্রতিধ্বনি।
যে ব্যবস্থা তাঁকে রক্ষা করবে ভাবা হয়েছিল, তা-ই শেষমেশ তাঁকে সম্পূর্ণ গ্রাস করে নেয়।
সমাজকল্যাণ দপ্তরের দল যখন কুঁড়েঘরে প্রবেশ করে, তারা দেখতে পায় এক নারীকে, যাঁর দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে আনা প্রায় অসম্ভব।
চিকিৎসকদের মতে, দীর্ঘদিন প্রাকৃতিক আলো থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন থাকার কারণে লিসার দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত ক্ষীণ। তাঁর মানসিক বিকাশও গুরুতরভাবে ব্যাহত হয়েছে। আচরণ বয়সের তুলনায় অনেক কম বয়সী শিশুর মতো। প্রতিটি শব্দে ভয় পান। যেকোনো স্পর্শে চমকে ওঠেন।
উদ্ধারের পর লিসাকে নিয়ে যাওয়া হয় জগদলপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, যেখানে তাঁর শারীরিক ও মানসিক অবস্থার বিস্তারিত পরীক্ষা শুরু হয়। প্রাথমিক রিপোর্ট বলছে, লিসার শৈশব থেমে যায় প্রবল ট্রমায় আর প্রাপ্তবয়স্ক জীবন গঠিত হয়েছে ইন্দ্রিয়ের বঞ্চনায়।
সমাজকল্যাণ দপ্তর পুরো ঘটনায় এরই মধ্যে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করেছে।
কর্তৃপক্ষ লিসার পরিবার ও প্রতিবেশীদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে—কেন তিনি ২০ বছর ধরে বন্দী ছিলেন এবং এই বন্দিত্ব আইনবহির্ভূত আটক হিসেবে বিবেচিত হবে কি না।
জেলার প্রশাসন কর্মকর্তারা বলেন, ‘তদন্ত রিপোর্ট জমা পড়লে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’
এ ছাড়া কর্তৃপক্ষ খতিয়ে দেখছে, লিসার বাবা কি ভয়ে ও অজ্ঞতার কারণে স্কুল, পঞ্চায়েত বা স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে কোনো সাহায্য চাননি?
লিসা বর্তমানে মধ্যপ্রদেশের এক আশ্রমে আছেন, যেখানে সেবাকর্মী ও কাউন্সেলররা তাঁকে নতুন করে জীবন খুঁজে পেতে সহায়তা করছেন।
তথ্যসূত্র: এনডিটিভি

পৃথিবী যখন খেলায় মত্ত, তখন তিনি বন্দী ছিলেন অন্ধকারে। ছয় বছর বয়সে ঘরবন্দী হওয়া লিসা ২০ বছর পর সেই দরজা পেরিয়ে বাইরে এলেও আলো দেখার ক্ষমতা প্রায় হারিয়ে ফেলেছেন।
কিছু গল্প ক্ষতের মতো করে উন্মোচিত হয়। কিছু শৈশব যেন কোনোদিনই শুরু হয় না। লিসার জীবন তেমনই এক গল্প। নিঃশব্দে হারিয়ে যাওয়া এক শৈশবের, পরিস্থিতিতে মুছে যাওয়া এক শিশুর এবং এক নারীর।
যে বয়সে শিশুরা বর্ণমালা শেখে, ছত্তিশগড়ের বাস্তার জেলার বাকাওয়ান্দ গ্রামের বাসিন্দা লিসা তখন ভয়কে জানছিলেন। ছয় বছর বয়সেই তাঁর কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয় বাইরের জগতের সব শব্দ। বাড়ির দরজা শুধু খাবারের জন্য খুলত, জীবনের জন্য নয়। ২০ বছর পর কর্তৃপক্ষ যখন তাঁকে খুঁজে পায়, তখন তাঁর চোখে নয়, স্মৃতিতেও ছিল শুধু অন্ধকার।
ছায়াই ছিল তাঁর পরিচয়। কথোপকথন বলতে ছিল শুধু দরজার নিচ দিয়ে ঠেলে দেওয়া থালাবাটির শব্দ। দুই দশক ধরে বন্দিদশার পর এখন তিনি নিজের নামে সাড়া দিতেও হিমশিম খান।
লিসার বন্দিত্ব শুরু হয়েছিল না লোহার শিক দিয়ে, না শিকল দিয়ে—শুরু হয়েছিল আতঙ্ক দিয়ে।
২০০০ সালে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময় গ্রামের এক ব্যক্তি তাঁকে হত্যার হুমকি দেন। সেই কথায় আতঙ্ক এত গভীর হয়, তিনি নিজেকে গুটিয়ে ফেলেন নীরবতায়। এরই মধ্যে মারা যান তাঁর মা। কৃষক বাবা হয়ে পড়েন দুর্বল ও আতঙ্কিত। কোনো সহায়তা নেই, নিরাপত্তার কোনো ব্যবস্থা নেই, কারও কাছে ভরসা চাওয়ার নেই। তাই তিনি এমন এক সিদ্ধান্ত নেন, যা মেয়ের জীবনের পরবর্তী ২০ বছর নির্ধারণ করে দেয়।
তিনি মেয়েকে মাটির ঘরে তালাবদ্ধ করে রাখেন। বলেন, অন্ধকারই তাঁকে বিপদ থেকে রক্ষা করবে। জানালাবিহীন একটি ঘরই হয়ে ওঠে তাঁর পৃথিবী। না সূর্যের আলো। না কোনো কথা। না কোনো মানুষের স্পর্শ।
শুধু দরজায় রেখে যাওয়া এক প্লেট খাবার আর প্রতিদিন একটু একটু করে সংকুচিত হয়ে যাওয়া জীবনের প্রতিধ্বনি।
যে ব্যবস্থা তাঁকে রক্ষা করবে ভাবা হয়েছিল, তা-ই শেষমেশ তাঁকে সম্পূর্ণ গ্রাস করে নেয়।
সমাজকল্যাণ দপ্তরের দল যখন কুঁড়েঘরে প্রবেশ করে, তারা দেখতে পায় এক নারীকে, যাঁর দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে আনা প্রায় অসম্ভব।
চিকিৎসকদের মতে, দীর্ঘদিন প্রাকৃতিক আলো থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন থাকার কারণে লিসার দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত ক্ষীণ। তাঁর মানসিক বিকাশও গুরুতরভাবে ব্যাহত হয়েছে। আচরণ বয়সের তুলনায় অনেক কম বয়সী শিশুর মতো। প্রতিটি শব্দে ভয় পান। যেকোনো স্পর্শে চমকে ওঠেন।
উদ্ধারের পর লিসাকে নিয়ে যাওয়া হয় জগদলপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, যেখানে তাঁর শারীরিক ও মানসিক অবস্থার বিস্তারিত পরীক্ষা শুরু হয়। প্রাথমিক রিপোর্ট বলছে, লিসার শৈশব থেমে যায় প্রবল ট্রমায় আর প্রাপ্তবয়স্ক জীবন গঠিত হয়েছে ইন্দ্রিয়ের বঞ্চনায়।
সমাজকল্যাণ দপ্তর পুরো ঘটনায় এরই মধ্যে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করেছে।
কর্তৃপক্ষ লিসার পরিবার ও প্রতিবেশীদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে—কেন তিনি ২০ বছর ধরে বন্দী ছিলেন এবং এই বন্দিত্ব আইনবহির্ভূত আটক হিসেবে বিবেচিত হবে কি না।
জেলার প্রশাসন কর্মকর্তারা বলেন, ‘তদন্ত রিপোর্ট জমা পড়লে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’
এ ছাড়া কর্তৃপক্ষ খতিয়ে দেখছে, লিসার বাবা কি ভয়ে ও অজ্ঞতার কারণে স্কুল, পঞ্চায়েত বা স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে কোনো সাহায্য চাননি?
লিসা বর্তমানে মধ্যপ্রদেশের এক আশ্রমে আছেন, যেখানে সেবাকর্মী ও কাউন্সেলররা তাঁকে নতুন করে জীবন খুঁজে পেতে সহায়তা করছেন।
তথ্যসূত্র: এনডিটিভি

আফ্রিকার দেশ সিয়েরা লিওনে একাধিক পরিবারে এমন হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, যা তথাকথিত কালো জাদুর সঙ্গে জড়িত বলে মনে করা হচ্ছে। তবে এসব হত্যাকাণ্ডের পেছনে মানবদেহের অংশের অবৈধ ব্যবসার রহস্য উন্মোচন করেছে বিবিসি আফ্রিকা আই
১১ দিন আগে
তবে বিশ্লেষক ও সাবেক সামরিক কর্মকর্তারা বলছেন, দক্ষিণ কোরিয়ার দ্রুত অগ্রসরমাণ এই কর্মসূচি চীনকে বিরক্ত করতে পারে এবং জাপানকেও একই ধরনের সক্ষমতা অর্জনের দিকে ঠেলে দিতে পারে।
৮ মিনিট আগে
প্রায় বারো ঘণ্টা ধরে যাত্রীরা নিজেদের মালপত্র হাতে পেতে রীতিমতো সংগ্রাম করছেন। খাবার–পানির কোনো ব্যবস্থা নেই, আর ইন্ডিগোর কাউন্টারগুলি ফাঁকা। ভারতের অন্যতম বৃহত্তম বিমান সংস্থা সংস্থা ইন্ডিগোর পরিচালনগত ত্রুটির কারণে পাঁচ শতাধিক ফ্লাইট বাতিল হওয়ায় ভারতের বিমানবন্দরগুলোতে এমন বিশৃঙ্খল দৃশ্য দেখা গেছে
১ ঘণ্টা আগে
গত বছর রোমে অনুষ্ঠিত ইউরোপীয় অ্যাকুয়াটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে ১০ মিটার সিঙ্ক্রো ইভেন্টে সোনা জেতেন ইউক্রেনীয় ডাইভার সোফিয়া লাইসকুন (২৩)। তবে সম্প্রতি আকস্মিকভাবে রাশিয়ার প্রতি আনুগত্য দেখানোর পর তাঁকে চরম শাস্তির মুখে পড়তে হলো। ইউক্রেনীয় ডাইভিং ফেডারেশন (ইউডিএফ) ফেডারেশনের অধীনে পাওয়া তাঁর সমস্ত...
২ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

প্রায় বারো ঘণ্টা ধরে যাত্রীরা নিজেদের মালপত্র হাতে পেতে রীতিমতো সংগ্রাম করছেন। খাবার–পানির কোনো ব্যবস্থা নেই, আর ইন্ডিগোর কাউন্টারগুলি ফাঁকা। ভারতের অন্যতম বৃহত্তম বিমান সংস্থা সংস্থা ইন্ডিগোর পরিচালনগত ত্রুটির কারণে পাঁচ শতাধিক ফ্লাইট বাতিল হওয়ায় ভারতের বিমানবন্দরগুলোতে এমন বিশৃঙ্খল দৃশ্য দেখা গেছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি সরেজমিনে গিয়ে দেখেছে, দিল্লি বিমানবন্দরের টার্মিনালে হাজার হাজার স্যুটকেস পড়ে আছে। বহু যাত্রী মেঝেতে ঘুমিয়ে পড়েছেন, আর কেউ কেউ ক্ষোভে ফেটে পড়ে স্লোগান দিচ্ছিলেন।
এক যাত্রী ইন্ডিগোর এই ব্যর্থতাকে ‘মানসিক অত্যাচার’ বলে অভিহিত করে এনডিটিভিকে জানান, বারো ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও তিনি বিমান সংস্থাটির কাছ থেকে কোনো স্পষ্ট জবাব পাচ্ছেন না। তাঁর কথায়, ‘আমি বারো ঘণ্টার বেশি সময় ধরে এখানে। প্রতিবার তারা বলছেন এক ঘণ্টা দেরি, দু–ঘণ্টা দেরি। আমরা একটা বিয়েতে যাচ্ছিলাম, কিন্তু আমাদের মালপত্র পর্যন্ত হাতে নেই। ইন্ডিগোর কর্মীরা আমাদের কিছু বলছেন না। এই মুহূর্তে এটি সবচেয়ে খারাপ বিমান সংস্থা। আমি বুঝি না কেন তারা নতুন যাত্রী নিচ্ছে আর মালপত্র জমিয়ে রাখছেন।’
আরেক যাত্রী জানালেন যে তিনি গতকাল দুপুর থেকে বিমানবন্দরে অপেক্ষা করছেন। তিনি বলেন, ‘তারা বারবার ফ্লাইট পিছিয়ে দিচ্ছে। ইন্ডিগোর তরফ থেকে আমরা কোনো স্পষ্ট খবর পাচ্ছি না।’ আরেক যাত্রী বলেন, ‘খুবই মানসিক চাপের বিষয় এটা। চৌদ্দ ঘণ্টা ধরে আমি বিমানবন্দরে বসে আছি। খাবার বা অন্য কিছুর জন্য কোনো কুপন নেই। আমার কানেকটিং ফ্লাইটটি বাতিল হয়েছে। যাত্রীরা চিৎকার-চেঁচামেচি করছেন, কিন্তু কর্মীরা কোনো স্পষ্ট জবাব দিচ্ছেন না। এমন জরুরি পরিস্থিতি সামলানোর জন্য কর্মীদের বিন্দুমাত্র প্রশিক্ষণ নেই।’
হায়দরাবাদ বিমানবন্দরসহ অন্যান্য বিমানবন্দরেও একই ধরনের দৃশ্য দেখা গেছে। আটকা পড়া যাত্রীরা ক্ষোভে ফেটে পড়ছিলেন। কারণ তাদের কোনো খাবার বা থাকার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়নি। একদল যাত্রী প্রতিবাদস্বরূপ একটি এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট পর্যন্ত আটকে দিয়েছিলেন।
হায়দরাবাদ বিমানবন্দরের এক যাত্রী বলেন, ‘আমার ফ্লাইট গতকাল (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ছাড়ার কথা ছিল। আমি আমার সহকর্মীকে নিয়ে সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ বিমানবন্দরে পৌঁছাই। আমাদের বলা হয়েছিল যে ফ্লাইট সময়মতো চলবে। এখন আমরা এখানে বারো ঘণ্টার বেশি সময় ধরে আছি। ইন্ডিগো আমাদের কোনো স্পষ্ট ধারণা দেয়নি। তারা শুধু বলে চলেছে, অনির্দিষ্টকালের জন্য দেরি হচ্ছে। আমাদের কোনো স্পষ্ট খবর, খাবার বা পানি দেওয়া হয়নি। ইন্ডিগোর সাড়া একেবারেই যাচ্ছেতাই। এখানে বয়স্ক মানুষ আছেন, যাদের বিশেষ দায়বদ্ধতা আছে, তাদের জন্য কোনো সমাধান নেই। এটা খুবই হাস্যকর।’
গোয়া বিমানবন্দরে একদল যাত্রী হতাশায় ভেঙে পড়েন। এক ভিডিওতে দেখা যায় তারা ইন্ডিগোর কর্মীদের লক্ষ্য করে চিৎকার করছেন। পরিস্থিতি সামলাতে বহু পুলিশ কর্মীকেও সেখানে দেখা যায়। চেন্নাই বিমানবন্দরে শত শত যাত্রী আটকা পড়েছেন। সেখানে সেন্ট্রাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিকিউরিটি ফোর্স (সিআইএসএফ) ইন্ডিগোর যাত্রীদের প্রবেশ করতে বাধা দিয়েছে। বিশাখাপত্তম বিমানবন্দরে কমপক্ষে ঊনপঞ্চাশটি বহির্গমন ও তেতাল্লিশটি ইনকামিং ফ্লাইট বাতিল হয়েছে।
ইন্ডিগোর এই পরিচালনগত ত্রুটি আজ চতুর্থ দিনের মতো চলছে। কুড়ি বছরের পুরোনো এই বিমান সংস্থাটি ক্রু-সংকট ও প্রযুক্তিগত সমস্যাসহ একাধিক কারণে পাঁচ শ পঞ্চাশটিরও বেশি ফ্লাইট বাতিল করার রেকর্ড তৈরি করেছে। এর মধ্যে মুম্বাই বিমানবন্দরে এক শ চারটি, দিল্লি বিমানবন্দরে দু শ পঁচিশটি, বেঙ্গালুরুতে এক শ দু'টি এবং হায়দরাবাদে বিরানব্বইটি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। ভূপাল বিমানবন্দরেও কমপক্ষে পাঁচটি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে।
ইন্ডিগো স্বীকার করেছে যে তারা নতুন নিয়ম অনুযায়ী ক্রু-এর প্রয়োজনীয়তা ভুলভাবে আন্দাজ করেছিল এবং পরিকল্পনায় ঘাটতি ছিল, যার ফলস্বরূপ শীতকালীন আবহাওয়া ও যানজটের সময়ে পর্যাপ্ত ক্রু-এর অভাব দেখা দিয়েছে। বিমান সংস্থাটি সতর্ক করেছে, সময়সূচি স্বাভাবিক করার চেষ্টার অংশ হিসেবে আগামী দুই থেকে তিন দিন পর্যন্ত ফ্লাইট বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তারা জানিয়েছে, আগামী ৮ ডিসেম্বর থেকে তারা আরও বিঘ্ন এড়াতে ফ্লাইট পরিচালন কমিয়ে দেবে।
অন্যদিকে, ইন্ডিগোর সিইও পিটার এলবার্স কর্মীদের বলেছেন যে পরিচালন স্বাভাবিক করা এবং সময়ানুবর্তিতা ফিরিয়ে আনা ‘সহজ লক্ষ্য হবে না।’ বিমান সংস্থাটি গত রাতে তাদের গ্রাহক ও স্টেকহোল্ডারদের কাছে নতুন করে দুঃখ প্রকাশ করেছে। বিবৃতিতে তারা বলেছে, ‘গত দুই দিন ধরে ইন্ডিগোর নেটওয়ার্ক এবং পরিচালন ব্যবস্থায় ব্যাপক বিঘ্ন দেখা দিয়েছে। এই ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত আমাদের সব গ্রাহক এবং শিল্প স্টেকহোল্ডারদের কাছে আমরা আন্তরিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।’ তারা আরও যোগ করেছে, ‘ইন্ডিগো এই বিলম্বের প্রভাব কমাতে এবং স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে নিরলসভাবে ও সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।’

প্রায় বারো ঘণ্টা ধরে যাত্রীরা নিজেদের মালপত্র হাতে পেতে রীতিমতো সংগ্রাম করছেন। খাবার–পানির কোনো ব্যবস্থা নেই, আর ইন্ডিগোর কাউন্টারগুলি ফাঁকা। ভারতের অন্যতম বৃহত্তম বিমান সংস্থা সংস্থা ইন্ডিগোর পরিচালনগত ত্রুটির কারণে পাঁচ শতাধিক ফ্লাইট বাতিল হওয়ায় ভারতের বিমানবন্দরগুলোতে এমন বিশৃঙ্খল দৃশ্য দেখা গেছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি সরেজমিনে গিয়ে দেখেছে, দিল্লি বিমানবন্দরের টার্মিনালে হাজার হাজার স্যুটকেস পড়ে আছে। বহু যাত্রী মেঝেতে ঘুমিয়ে পড়েছেন, আর কেউ কেউ ক্ষোভে ফেটে পড়ে স্লোগান দিচ্ছিলেন।
এক যাত্রী ইন্ডিগোর এই ব্যর্থতাকে ‘মানসিক অত্যাচার’ বলে অভিহিত করে এনডিটিভিকে জানান, বারো ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও তিনি বিমান সংস্থাটির কাছ থেকে কোনো স্পষ্ট জবাব পাচ্ছেন না। তাঁর কথায়, ‘আমি বারো ঘণ্টার বেশি সময় ধরে এখানে। প্রতিবার তারা বলছেন এক ঘণ্টা দেরি, দু–ঘণ্টা দেরি। আমরা একটা বিয়েতে যাচ্ছিলাম, কিন্তু আমাদের মালপত্র পর্যন্ত হাতে নেই। ইন্ডিগোর কর্মীরা আমাদের কিছু বলছেন না। এই মুহূর্তে এটি সবচেয়ে খারাপ বিমান সংস্থা। আমি বুঝি না কেন তারা নতুন যাত্রী নিচ্ছে আর মালপত্র জমিয়ে রাখছেন।’
আরেক যাত্রী জানালেন যে তিনি গতকাল দুপুর থেকে বিমানবন্দরে অপেক্ষা করছেন। তিনি বলেন, ‘তারা বারবার ফ্লাইট পিছিয়ে দিচ্ছে। ইন্ডিগোর তরফ থেকে আমরা কোনো স্পষ্ট খবর পাচ্ছি না।’ আরেক যাত্রী বলেন, ‘খুবই মানসিক চাপের বিষয় এটা। চৌদ্দ ঘণ্টা ধরে আমি বিমানবন্দরে বসে আছি। খাবার বা অন্য কিছুর জন্য কোনো কুপন নেই। আমার কানেকটিং ফ্লাইটটি বাতিল হয়েছে। যাত্রীরা চিৎকার-চেঁচামেচি করছেন, কিন্তু কর্মীরা কোনো স্পষ্ট জবাব দিচ্ছেন না। এমন জরুরি পরিস্থিতি সামলানোর জন্য কর্মীদের বিন্দুমাত্র প্রশিক্ষণ নেই।’
হায়দরাবাদ বিমানবন্দরসহ অন্যান্য বিমানবন্দরেও একই ধরনের দৃশ্য দেখা গেছে। আটকা পড়া যাত্রীরা ক্ষোভে ফেটে পড়ছিলেন। কারণ তাদের কোনো খাবার বা থাকার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়নি। একদল যাত্রী প্রতিবাদস্বরূপ একটি এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট পর্যন্ত আটকে দিয়েছিলেন।
হায়দরাবাদ বিমানবন্দরের এক যাত্রী বলেন, ‘আমার ফ্লাইট গতকাল (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ছাড়ার কথা ছিল। আমি আমার সহকর্মীকে নিয়ে সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ বিমানবন্দরে পৌঁছাই। আমাদের বলা হয়েছিল যে ফ্লাইট সময়মতো চলবে। এখন আমরা এখানে বারো ঘণ্টার বেশি সময় ধরে আছি। ইন্ডিগো আমাদের কোনো স্পষ্ট ধারণা দেয়নি। তারা শুধু বলে চলেছে, অনির্দিষ্টকালের জন্য দেরি হচ্ছে। আমাদের কোনো স্পষ্ট খবর, খাবার বা পানি দেওয়া হয়নি। ইন্ডিগোর সাড়া একেবারেই যাচ্ছেতাই। এখানে বয়স্ক মানুষ আছেন, যাদের বিশেষ দায়বদ্ধতা আছে, তাদের জন্য কোনো সমাধান নেই। এটা খুবই হাস্যকর।’
গোয়া বিমানবন্দরে একদল যাত্রী হতাশায় ভেঙে পড়েন। এক ভিডিওতে দেখা যায় তারা ইন্ডিগোর কর্মীদের লক্ষ্য করে চিৎকার করছেন। পরিস্থিতি সামলাতে বহু পুলিশ কর্মীকেও সেখানে দেখা যায়। চেন্নাই বিমানবন্দরে শত শত যাত্রী আটকা পড়েছেন। সেখানে সেন্ট্রাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিকিউরিটি ফোর্স (সিআইএসএফ) ইন্ডিগোর যাত্রীদের প্রবেশ করতে বাধা দিয়েছে। বিশাখাপত্তম বিমানবন্দরে কমপক্ষে ঊনপঞ্চাশটি বহির্গমন ও তেতাল্লিশটি ইনকামিং ফ্লাইট বাতিল হয়েছে।
ইন্ডিগোর এই পরিচালনগত ত্রুটি আজ চতুর্থ দিনের মতো চলছে। কুড়ি বছরের পুরোনো এই বিমান সংস্থাটি ক্রু-সংকট ও প্রযুক্তিগত সমস্যাসহ একাধিক কারণে পাঁচ শ পঞ্চাশটিরও বেশি ফ্লাইট বাতিল করার রেকর্ড তৈরি করেছে। এর মধ্যে মুম্বাই বিমানবন্দরে এক শ চারটি, দিল্লি বিমানবন্দরে দু শ পঁচিশটি, বেঙ্গালুরুতে এক শ দু'টি এবং হায়দরাবাদে বিরানব্বইটি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। ভূপাল বিমানবন্দরেও কমপক্ষে পাঁচটি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে।
ইন্ডিগো স্বীকার করেছে যে তারা নতুন নিয়ম অনুযায়ী ক্রু-এর প্রয়োজনীয়তা ভুলভাবে আন্দাজ করেছিল এবং পরিকল্পনায় ঘাটতি ছিল, যার ফলস্বরূপ শীতকালীন আবহাওয়া ও যানজটের সময়ে পর্যাপ্ত ক্রু-এর অভাব দেখা দিয়েছে। বিমান সংস্থাটি সতর্ক করেছে, সময়সূচি স্বাভাবিক করার চেষ্টার অংশ হিসেবে আগামী দুই থেকে তিন দিন পর্যন্ত ফ্লাইট বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তারা জানিয়েছে, আগামী ৮ ডিসেম্বর থেকে তারা আরও বিঘ্ন এড়াতে ফ্লাইট পরিচালন কমিয়ে দেবে।
অন্যদিকে, ইন্ডিগোর সিইও পিটার এলবার্স কর্মীদের বলেছেন যে পরিচালন স্বাভাবিক করা এবং সময়ানুবর্তিতা ফিরিয়ে আনা ‘সহজ লক্ষ্য হবে না।’ বিমান সংস্থাটি গত রাতে তাদের গ্রাহক ও স্টেকহোল্ডারদের কাছে নতুন করে দুঃখ প্রকাশ করেছে। বিবৃতিতে তারা বলেছে, ‘গত দুই দিন ধরে ইন্ডিগোর নেটওয়ার্ক এবং পরিচালন ব্যবস্থায় ব্যাপক বিঘ্ন দেখা দিয়েছে। এই ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত আমাদের সব গ্রাহক এবং শিল্প স্টেকহোল্ডারদের কাছে আমরা আন্তরিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।’ তারা আরও যোগ করেছে, ‘ইন্ডিগো এই বিলম্বের প্রভাব কমাতে এবং স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে নিরলসভাবে ও সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।’

আফ্রিকার দেশ সিয়েরা লিওনে একাধিক পরিবারে এমন হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, যা তথাকথিত কালো জাদুর সঙ্গে জড়িত বলে মনে করা হচ্ছে। তবে এসব হত্যাকাণ্ডের পেছনে মানবদেহের অংশের অবৈধ ব্যবসার রহস্য উন্মোচন করেছে বিবিসি আফ্রিকা আই
১১ দিন আগে
তবে বিশ্লেষক ও সাবেক সামরিক কর্মকর্তারা বলছেন, দক্ষিণ কোরিয়ার দ্রুত অগ্রসরমাণ এই কর্মসূচি চীনকে বিরক্ত করতে পারে এবং জাপানকেও একই ধরনের সক্ষমতা অর্জনের দিকে ঠেলে দিতে পারে।
৮ মিনিট আগে
যে বয়সে শিশুরা বর্ণমালা শেখে, ছত্তিশগড়ের বাস্তার জেলার বাকাওয়ান্দ গ্রামের বাসিন্দা লিসা তখন ভয়কে জানছিলেন। ছয় বছর বয়সেই তাঁর কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয় বাইরের জগতের সব শব্দ। বাড়ির দরজা শুধু খাবারের জন্য খুলত, জীবনের জন্য নয়। ২০ বছর পর কর্তৃপক্ষ যখন তাঁকে খুঁজে পায়, তখন তাঁর চোখে নয়, স্মৃতিতেও...
৪৩ মিনিট আগে
গত বছর রোমে অনুষ্ঠিত ইউরোপীয় অ্যাকুয়াটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে ১০ মিটার সিঙ্ক্রো ইভেন্টে সোনা জেতেন ইউক্রেনীয় ডাইভার সোফিয়া লাইসকুন (২৩)। তবে সম্প্রতি আকস্মিকভাবে রাশিয়ার প্রতি আনুগত্য দেখানোর পর তাঁকে চরম শাস্তির মুখে পড়তে হলো। ইউক্রেনীয় ডাইভিং ফেডারেশন (ইউডিএফ) ফেডারেশনের অধীনে পাওয়া তাঁর সমস্ত...
২ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

গত বছর রোমে অনুষ্ঠিত ইউরোপীয় অ্যাকুয়াটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে ১০ মিটার সিঙ্ক্রো ইভেন্টে সোনা জেতেন ইউক্রেনীয় ডাইভার সোফিয়া লাইসকুন (২৩)। তবে সম্প্রতি আকস্মিকভাবে রাশিয়ার প্রতি আনুগত্য দেখানোর পর তাঁকে চরম শাস্তির মুখে পড়তে হলো। ইউক্রেনীয় ডাইভিং ফেডারেশন (ইউডিএফ) ফেডারেশনের অধীনে পাওয়া তাঁর সমস্ত খেতাব, পদক ও পুরস্কার প্রত্যাহার করার দাবি জানিয়েছে।
ইউডিএফ জানিয়েছে, লাইসকুন দেশের ক্রীড়া মহলের কোনো পক্ষকেই তাঁর এই সিদ্ধান্তের কথা জানাননি। তিনি এই গুরুত্বপূর্ণ দলবদলের বিষয়ে ফেডারেশন, কোচিং স্টাফ এমনকি ইউক্রেনের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়কেও অবগত করেননি। তাঁর এই অপ্রত্যাশিত দলবদলের ঘটনায় ফেডারেশন ‘তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা’ জানিয়েছে।
ফেডারেশনের পক্ষ থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে অত্যন্ত কঠোর ভাষায় বলা হয়েছে: ‘এই ধরনের পদক্ষেপ শুধু চূড়ান্তভাবে অগ্রহণযোগ্যই নয়, এগুলো জাতীয় দল এবং ইউক্রেনের মর্যাদার ওপর সরাসরি আঘাত। যে মুহূর্তে পুরো ইউক্রেনীয় দল আন্তর্জাতিক মঞ্চে আমাদের দেশের প্রতিনিধিত্ব করার অধিকারের জন্য নিঃস্বার্থভাবে লড়াই করছে, ঠিক তখনই একজন চ্যাম্পিয়নের এমন পদক্ষেপ পুরো প্রচেষ্টাকেই হেয় করে।’
ইউক্রেনীয় ফেডারেশনের এই সমালোচনার বিপরীতে লাইসকুন তাঁর সিদ্ধান্তের পক্ষে যুক্তি দিয়েছেন। রাশিয়ার সংবাদপত্র ইজভেস্তিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি অভিযোগ করেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইউক্রেনে তিনি তাঁর কোচদের অধীনে আর পেশাদারভাবে ‘উন্নতি’ করতে পারছিলেন না।
লাইসকুন অভিযোগ করেন, তাঁর ইউক্রেনীয় কোচিং স্টাফে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা ‘সবাই জিমন্যাস্ট বা ট্রাম্পোলিন ক্রীড়াবিদ ছিলেন’, এটি আন্তর্জাতিক ডাইভিং-এর মতো বিশেষায়িত খেলার জন্য অনুকূল ছিল না। তাঁর মতে, উপযুক্ত বিশেষজ্ঞের অভাবই তাঁকে দলবদলে উৎসাহিত করেছে।
লাইসকুনের দলবদলের পর ইউক্রেনীয় ডাইভিং ফেডারেশনের নির্বাহী কমিটির এক জরুরি বৈঠক বসে। সেখানে সর্বসম্মতিক্রমে তাৎক্ষণিকভাবে তাঁকে ইউক্রেন জাতীয় দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এর পাশাপাশি, ফেডারেশনের অধীনে সোফিয়া লাইসকুনের অর্জিত সমস্ত খেতাব ও পুরস্কার বাতিল করার মতো কঠিন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। ফেডারেশন জানিয়েছে, তারা আন্তর্জাতিক ক্রীড়া সংস্থাগুলোর কাছে আনুষ্ঠানিক আবেদন জানাবে, যাতে বর্তমান আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী এই ক্রীড়াবিদের ওপর ‘স্পোর্টস কোয়ারেন্টাইন’ আরোপ করা হয়। এর অর্থ হলো, ইউক্রেন চাচ্ছে, লাইসকুন যেন কিছু নির্দিষ্ট সময়ের জন্য আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে না পারে।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের পর রাশিয়া এবং বেলারুশের ক্রীড়াবিদদের ওয়ার্ল্ড অ্যাকুয়াটিক্স ইভেন্টগুলোতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা নিষিদ্ধ ছিল। তবে সেই বিধিনিষেধগুলো সম্প্রতি শিথিল করা হয়েছে। বর্তমানে রুশ এবং বেলারুশীয় ক্রীড়াবিদদের তাঁদের জাতীয় পতাকা বা প্রতীক ছাড়াই নিরপেক্ষ ক্রীড়াবিদ হিসেবে ব্যক্তিগত ইভেন্টগুলোতে অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। আগামী জানুয়ারি থেকে তাঁরা দলগত ইভেন্টেও নিরপেক্ষ ক্রীড়াবিদ হিসেবে অংশ নিতে পারবেন। লাইসকুন-এর এই দলবদল এমন এক সময়ে ঘটল, যখন রাশিয়ার ক্রীড়াবিদেরা ধীরে ধীরে আন্তর্জাতিক ক্রীড়া মঞ্চে ফেরার সুযোগ পাচ্ছেন।

গত বছর রোমে অনুষ্ঠিত ইউরোপীয় অ্যাকুয়াটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে ১০ মিটার সিঙ্ক্রো ইভেন্টে সোনা জেতেন ইউক্রেনীয় ডাইভার সোফিয়া লাইসকুন (২৩)। তবে সম্প্রতি আকস্মিকভাবে রাশিয়ার প্রতি আনুগত্য দেখানোর পর তাঁকে চরম শাস্তির মুখে পড়তে হলো। ইউক্রেনীয় ডাইভিং ফেডারেশন (ইউডিএফ) ফেডারেশনের অধীনে পাওয়া তাঁর সমস্ত খেতাব, পদক ও পুরস্কার প্রত্যাহার করার দাবি জানিয়েছে।
ইউডিএফ জানিয়েছে, লাইসকুন দেশের ক্রীড়া মহলের কোনো পক্ষকেই তাঁর এই সিদ্ধান্তের কথা জানাননি। তিনি এই গুরুত্বপূর্ণ দলবদলের বিষয়ে ফেডারেশন, কোচিং স্টাফ এমনকি ইউক্রেনের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়কেও অবগত করেননি। তাঁর এই অপ্রত্যাশিত দলবদলের ঘটনায় ফেডারেশন ‘তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা’ জানিয়েছে।
ফেডারেশনের পক্ষ থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে অত্যন্ত কঠোর ভাষায় বলা হয়েছে: ‘এই ধরনের পদক্ষেপ শুধু চূড়ান্তভাবে অগ্রহণযোগ্যই নয়, এগুলো জাতীয় দল এবং ইউক্রেনের মর্যাদার ওপর সরাসরি আঘাত। যে মুহূর্তে পুরো ইউক্রেনীয় দল আন্তর্জাতিক মঞ্চে আমাদের দেশের প্রতিনিধিত্ব করার অধিকারের জন্য নিঃস্বার্থভাবে লড়াই করছে, ঠিক তখনই একজন চ্যাম্পিয়নের এমন পদক্ষেপ পুরো প্রচেষ্টাকেই হেয় করে।’
ইউক্রেনীয় ফেডারেশনের এই সমালোচনার বিপরীতে লাইসকুন তাঁর সিদ্ধান্তের পক্ষে যুক্তি দিয়েছেন। রাশিয়ার সংবাদপত্র ইজভেস্তিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি অভিযোগ করেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইউক্রেনে তিনি তাঁর কোচদের অধীনে আর পেশাদারভাবে ‘উন্নতি’ করতে পারছিলেন না।
লাইসকুন অভিযোগ করেন, তাঁর ইউক্রেনীয় কোচিং স্টাফে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা ‘সবাই জিমন্যাস্ট বা ট্রাম্পোলিন ক্রীড়াবিদ ছিলেন’, এটি আন্তর্জাতিক ডাইভিং-এর মতো বিশেষায়িত খেলার জন্য অনুকূল ছিল না। তাঁর মতে, উপযুক্ত বিশেষজ্ঞের অভাবই তাঁকে দলবদলে উৎসাহিত করেছে।
লাইসকুনের দলবদলের পর ইউক্রেনীয় ডাইভিং ফেডারেশনের নির্বাহী কমিটির এক জরুরি বৈঠক বসে। সেখানে সর্বসম্মতিক্রমে তাৎক্ষণিকভাবে তাঁকে ইউক্রেন জাতীয় দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এর পাশাপাশি, ফেডারেশনের অধীনে সোফিয়া লাইসকুনের অর্জিত সমস্ত খেতাব ও পুরস্কার বাতিল করার মতো কঠিন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। ফেডারেশন জানিয়েছে, তারা আন্তর্জাতিক ক্রীড়া সংস্থাগুলোর কাছে আনুষ্ঠানিক আবেদন জানাবে, যাতে বর্তমান আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী এই ক্রীড়াবিদের ওপর ‘স্পোর্টস কোয়ারেন্টাইন’ আরোপ করা হয়। এর অর্থ হলো, ইউক্রেন চাচ্ছে, লাইসকুন যেন কিছু নির্দিষ্ট সময়ের জন্য আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে না পারে।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের পর রাশিয়া এবং বেলারুশের ক্রীড়াবিদদের ওয়ার্ল্ড অ্যাকুয়াটিক্স ইভেন্টগুলোতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা নিষিদ্ধ ছিল। তবে সেই বিধিনিষেধগুলো সম্প্রতি শিথিল করা হয়েছে। বর্তমানে রুশ এবং বেলারুশীয় ক্রীড়াবিদদের তাঁদের জাতীয় পতাকা বা প্রতীক ছাড়াই নিরপেক্ষ ক্রীড়াবিদ হিসেবে ব্যক্তিগত ইভেন্টগুলোতে অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। আগামী জানুয়ারি থেকে তাঁরা দলগত ইভেন্টেও নিরপেক্ষ ক্রীড়াবিদ হিসেবে অংশ নিতে পারবেন। লাইসকুন-এর এই দলবদল এমন এক সময়ে ঘটল, যখন রাশিয়ার ক্রীড়াবিদেরা ধীরে ধীরে আন্তর্জাতিক ক্রীড়া মঞ্চে ফেরার সুযোগ পাচ্ছেন।

আফ্রিকার দেশ সিয়েরা লিওনে একাধিক পরিবারে এমন হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, যা তথাকথিত কালো জাদুর সঙ্গে জড়িত বলে মনে করা হচ্ছে। তবে এসব হত্যাকাণ্ডের পেছনে মানবদেহের অংশের অবৈধ ব্যবসার রহস্য উন্মোচন করেছে বিবিসি আফ্রিকা আই
১১ দিন আগে
তবে বিশ্লেষক ও সাবেক সামরিক কর্মকর্তারা বলছেন, দক্ষিণ কোরিয়ার দ্রুত অগ্রসরমাণ এই কর্মসূচি চীনকে বিরক্ত করতে পারে এবং জাপানকেও একই ধরনের সক্ষমতা অর্জনের দিকে ঠেলে দিতে পারে।
৮ মিনিট আগে
যে বয়সে শিশুরা বর্ণমালা শেখে, ছত্তিশগড়ের বাস্তার জেলার বাকাওয়ান্দ গ্রামের বাসিন্দা লিসা তখন ভয়কে জানছিলেন। ছয় বছর বয়সেই তাঁর কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয় বাইরের জগতের সব শব্দ। বাড়ির দরজা শুধু খাবারের জন্য খুলত, জীবনের জন্য নয়। ২০ বছর পর কর্তৃপক্ষ যখন তাঁকে খুঁজে পায়, তখন তাঁর চোখে নয়, স্মৃতিতেও...
৪৩ মিনিট আগে
প্রায় বারো ঘণ্টা ধরে যাত্রীরা নিজেদের মালপত্র হাতে পেতে রীতিমতো সংগ্রাম করছেন। খাবার–পানির কোনো ব্যবস্থা নেই, আর ইন্ডিগোর কাউন্টারগুলি ফাঁকা। ভারতের অন্যতম বৃহত্তম বিমান সংস্থা সংস্থা ইন্ডিগোর পরিচালনগত ত্রুটির কারণে পাঁচ শতাধিক ফ্লাইট বাতিল হওয়ায় ভারতের বিমানবন্দরগুলোতে এমন বিশৃঙ্খল দৃশ্য দেখা গেছে
১ ঘণ্টা আগে