Ajker Patrika

আন্তর্জাতিক বাজারে কমছে তেলের দাম, ট্রাম্পের নীতিসহ নেপথ্যে যেসব কারণ

ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক তেল বাজারে আজ মঙ্গলবারও দরপতন অব্যাহত আছে। এর পেছনে প্রধান কারণ ছিল—তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর জোট ওপেক প্লাসের পরিকল্পিত উৎপাদন বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত এবং যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে কানাডা, মেক্সিকো ও চীনের ওপর শুল্ক আরোপের প্রভাব। একই সঙ্গে বেইজিংও পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছে, যা বাজারে উদ্বেগ বাড়িয়েছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজ মঙ্গলবার গ্রিনিচ মান সময় সকাল ৮টা ২৭ মিনিটে অপরিশোধিত ব্রেন্টের দাম আরও ৯০ সেন্ট বা ১ দশমিক ২৬ শতাংশ কমে ব্যারেলপ্রতি ৭০ দশমিক ৭২ ডলারে দাঁড়ায়। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট দর ৭৯ সেন্ট বা ১ দশমিক ১৬ শতাংশ কমে ব্যারেলপ্রতি ৬৭ দশমিক ৫৮ ডলারে নেমে আসে।

বিনিয়োগ প্ল্যাটফর্ম ফিলিপ নোভার পণ্য বিশ্লেষক ড্যারেন লিম বলেন, ‘তেলের দামের বর্তমান নিম্নমুখী প্রবণতার মূল কারণ ওপেক প্লাস জোটের উৎপাদন বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত এবং যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক ব্যবস্থা।’ তিনি আরও বলেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তও বাজারকে প্রভাবিত করেছে। গত সপ্তাহে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে হোয়াইট হাউসে বিতর্কের পর ট্রাম্প ইউক্রেনকে দেওয়া সব সামরিক সহায়তা স্থগিত করেছেন।

জ্বালানি রপ্তানিকারক দেশগুলোর সংস্থা ওপেক প্লাস গতকাল সোমবার ঘোষণা দেয় যে, আগামী এপ্রিল থেকে দৈনিক ১ লাখ ৩৮ হাজার ব্যারেল তেল উৎপাদন বাড়ানো হবে। ২০২২ সালের পর এটাই হবে তাদের প্রথম উৎপাদন বৃদ্ধি। এই বিষয়ে লিম বলেন, ‘এ সিদ্ধান্তের মাধ্যমে আগের উৎপাদন কাটছাঁট ধাপে ধাপে প্রত্যাহার করা হচ্ছে, তবে এর ফলে বাজারে অতিরিক্ত সরবরাহ নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।’

আজ মঙ্গলবার গ্রিনিচ মান সময় সকাল ৫টা ১ মিনিট থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক ব্যবস্থা কার্যকর হয়েছে। কানাডা ও মেক্সিকো থেকে আমদানির ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে, পাশাপাশি কানাডার জ্বালানি পণ্যে ১০ শতাংশ শুল্ক বসানো হয়েছে। চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক দ্বিগুণ করে ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২০ শতাংশ করা হয়েছে।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, এই শুল্ক ব্যবস্থা অর্থনৈতিক কার্যক্রম ও জ্বালানির চাহিদায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে, যা তেলের দামের ওপর আরও চাপ সৃষ্টি করবে। বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিএমআই এই বিষয়ে এক নোটে লিখেছে, ‘মার্কিন প্রশাসনের সাম্প্রতিক নীতি পরিবর্তনগুলোর প্রভাব মূল্যায়ন করতে হিমশিম খাচ্ছে বাজার। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বড় নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক ব্যবস্থা।’

যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক কার্যকর হওয়ার পরপরই চীন পাল্টা ব্যবস্থা নেয়। দেশটি মার্কিন কৃষিপণ্য ও খাদ্যপণ্যের ওপর ১০ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছে এবং ২৫টি মার্কিন প্রতিষ্ঠানকে রপ্তানি ও বিনিয়োগ নিষেধাজ্ঞার আওতায় এনেছে।

তেলের দামের ওপর আরেকটি চাপ সৃষ্টি করেছে ট্রাম্পের ইউক্রেনকে দেওয়া সামরিক সহায়তা স্থগিতের সিদ্ধান্ত। বাজার এই ঘটনাকে ওয়াশিংটন ও কিয়েভের দূরত্ব বৃদ্ধির ইঙ্গিত হিসেবে দেখছে, যা ইউক্রেন যুদ্ধ শিথিল হওয়ার সম্ভাবনার ইঙ্গিত দিতে পারে। এর ফলে রাশিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা শিথিল হলে বাজারে আরও তেল আসতে পারে।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হোয়াইট হাউস পররাষ্ট্র ও অর্থ মন্ত্রণালয়কে এমন নিষেধাজ্ঞার তালিকা প্রস্তুত করতে বলেছে, যা মস্কোর সঙ্গে আলোচনার সময় পর্যালোচনা করা হতে পারে।

আরেক বিনিয়োগ কোম্পানি আইজি গ্রুপের বাজার বিশ্লেষক টনি সাইকামোর বলেন, ‘তেলের বাজারের জন্য পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠছে। যুক্তরাষ্ট্রের ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা স্থগিতের খবরে মনে করা হচ্ছে, রাশিয়ার তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হতে পারে।’

সাইকামোর আরও বলেন, ‘এই ঘোষণাগুলো এমন সময়ে এসেছে, যখন যুক্তরাষ্ট্র কানাডা, মেক্সিকো ও চীনের ওপর নতুন শুল্ক আরোপ করেছে। এতে বাণিজ্য যুদ্ধের আশঙ্কা বেড়েছে। ফলে তেলের বাজারে বিরতি নেওয়ার কোনো সুযোগই থাকছে না।’

তবে গোল্ডম্যান স্যাচের বিশ্লেষকেরা গতকাল সোমবার এক নোটে উল্লেখ করেন, জ্বালানি তেলের বাজার রাশিয়ার তেল সরবরাহ নিষেধাজ্ঞার চেয়ে ওপেক প্লাসের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার কারণে বেশি সীমিত রয়েছে। ফলে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করলেও রাশিয়ার রপ্তানি উল্লেখযোগ্য হারে বাড়বে না।

ব্যাংকটি আরও সতর্ক করে বলেছে, প্রত্যাশার চেয়ে বেশি সরবরাহ এবং যুক্তরাষ্ট্রে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের দুর্বলতা ও শুল্ক বৃদ্ধির ফলে চাহিদার ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে, যা তেলের দামের পূর্বাভাসে নিম্নমুখী ঝুঁকি সৃষ্টি করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তর্কে জড়ানো চিকিৎসককে বরখাস্তের নির্দেশ ডিজির

সবকিছু প্রস্তুত হচ্ছে, তারেক রহমান ফিরবেন যেকোনো সময়: আমীর খসরু

শেখ হাসিনা যত দিন ইচ্ছা ভারতে থাকতে পারবেন কি—জবাবে যা বললেন জয়শঙ্কর

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত, মেডিকেল বোর্ডের সবুজসংকেতের অপেক্ষা

কর্মী নেবে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, নেই বয়সসীমা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

লভ্যাংশ নেবেন না ৩৯ কোম্পানির উদ্যোক্তা, পরিচালক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
লভ্যাংশ নেবেন না ৩৯ কোম্পানির উদ্যোক্তা, পরিচালক

২০২৪-২৫ অর্থবছরে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ৩৯টি কোম্পানি শুধু সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। এসব প্রতিষ্ঠানে উদ্যোক্তা, পরিচালকদের বড় বিনিয়োগ থাকলেও এবারের লভ্যাংশ থেকে তাঁরা নিজেদের অংশ নেবেন না।

সংশ্লিষ্টদের মতে, সাধারণ বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা ও বাজারে আস্থা ধরে রাখতে উদ্যোক্তাদের এ সিদ্ধান্ত ইতিবাচক।

তবে অনেকেই মনে করেন, কোম্পানিগুলোর আর্থিক সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও পরিচালকেরা লভ্যাংশ না নেওয়ার পেছনে অন্যান্য সুবিধা পাওয়ার বিষয়টি জড়িত থাকতে পারে।

বিনিয়োগকারী ও বাজারসংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, উদ্যোক্তা, পরিচালকেরা তালিকাভুক্ত কোম্পানি থেকে নানা সুবিধা ভোগ করেন। গৃহস্থালি খরচ, বাজার, কর্মচারী বা বুয়ার বেতনসহ বিভিন্ন ব্যয় প্রতিষ্ঠান বহন করে থাকে। ফলে লভ্যাংশ না নেওয়ার বিষয়টি তাঁদের জন্য বড় ত্যাগ নয়; অন্য সুবিধা থেকেই তা পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়।

ডিএসই পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন বলেন, বাধ্যবাধকতা না থাকলে অনেক কোম্পানি হয়তো নগদ লভ্যাংশই দিত না। শুধু বোনাস দিয়ে ক্যাটাগরি বজায় রাখার চেষ্টা করত।

বর্তমানে লভ্যাংশ ঘোষণায় নগদ দেওয়ার ক্ষেত্রে কড়াকড়ি রয়েছে। কৃত্রিমভাবে মুনাফা বাড়িয়ে বোনাস শেয়ার দেওয়া গেলেও নগদ দেওয়ার সুযোগ কম। এ কারণে সক্ষমতার অভাব থাকা অনেক প্রতিষ্ঠান শুধু সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে বলে মনে করছেন বাজারসংশ্লিষ্টরা।

এক কোম্পানির সচিব নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, অনেক কোম্পানির মালিকপক্ষ নিজেরাই শেয়ারের ব্যবসা করেন। বাস্তবে মুনাফা কম হলেও আর্থিক প্রতিবেদন প্রস্তুতের সময় তা বেশি দেখান। ফলে হিসাব অনুযায়ী লভ্যাংশ দেওয়ার সক্ষমতা দেখা গেলেও বাস্তবে তা থাকে না। তাই উদ্যোক্তা-পরিচালকদের বাদ দিয়ে শুধু সাধারণ বিনিয়োগকারীদের নগদ লভ্যাংশ দেওয়া হয়।

শীর্ষ পাঁচের কে কত লভ্যাংশ দেবে

সবচেয়ে বেশি নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে ওরিয়ন ইনফিউশন। ১ টাকা ৭১ পয়সা ইপিএসের বিপরীতে কোম্পানি সাধারণ বিনিয়োগকারীদের নগদ লভ্যাংশ দেবে ২০ শতাংশ বা ২ টাকা। অর্থাৎ ইপিএসের চেয়ে বেশি লভ্যাংশ দেবে। বাকি টাকা রিজার্ভ থেকে দেওয়া হবে।

সোনালি লাইফের ইপিএস হয়েছে ১ টাকা ৭৩ পয়সা। কোম্পানি লভ্যাংশ দেবে ১৫ শতাংশ বা ১ টাকা ৫০ পয়সা।

নাভানা ফার্মা মুনাফার বড় একটা অংশ কোম্পানিতে রেখে দিতে চায়। কোম্পানির ইপিএস হয়েছে সাড়ে ৪ টাকা; কিন্তু লভ্যাংশ দেবে ১৪ শতাংশ বা ১ টাকা ৪০ পয়সা করে।

ফাইন ফুডসও মুনাফার বড় একটা অংশ রিজার্ভে রাখতে চায়। ৪ টাকা ১৮ পয়সা ইপিএসের বিপরীতে লভ্যাংশ দেবে ১৪ শতাংশ বা ১ টাকা ৪০ পয়সা।

এমকে ফুটওয়্যার ১ টাকা ৮৩ পয়সার বিপরীতে ১২ শতাংশ বা ১ টাকা ২০ পয়সা লভ্যাংশ দেবে। এ ছাড়া ৩৪টি কোম্পানি কেবল শেয়ারহোল্ডারদের নগদ লভ্যাংশ দেবে।

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র আবুল কালাম বলেন, লভ্যাংশ ঘোষণার এখতিয়ার কোম্পানির নিজের। আইনের বরখেলাপ না হলে এবং বিনিয়োগকারীর স্বার্থ ক্ষুণ্ন না হলে নিয়ন্ত্রক সংস্থা এসব বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তর্কে জড়ানো চিকিৎসককে বরখাস্তের নির্দেশ ডিজির

সবকিছু প্রস্তুত হচ্ছে, তারেক রহমান ফিরবেন যেকোনো সময়: আমীর খসরু

শেখ হাসিনা যত দিন ইচ্ছা ভারতে থাকতে পারবেন কি—জবাবে যা বললেন জয়শঙ্কর

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত, মেডিকেল বোর্ডের সবুজসংকেতের অপেক্ষা

কর্মী নেবে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, নেই বয়সসীমা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দাম কমাতে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ১৩
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

পেঁয়াজের দাম কমাতে আমদানির অনুমোদন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কৃষি ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। আগামীকাল রোববার থেকে আমদানিকারকেরা কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে আমদানির অনুমতিপত্র (আইপি) নিতে পারবে বলে নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

গত তিন দিনের ব্যবধানে দেশের বাজারে খুচরা ও পাইকারিতে পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ২৫-৩০ টাকা বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

আজ শনিবার অনলাইনে এক জরুরি বৈঠক করে কৃষি ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এতে দুই মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। পরে কৃষিসচিব কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ উইংকে আইপি দেওয়ার নির্দেশনা দেয়।

এই উইংয়ের অতিরিক্ত উপপরিচালক (আমদানি) বনি আমিন খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আজ বৈঠকের পর আমাদের আইপি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। মোট ৫০ জন আমদানিকারককে আইপি দেওয়া হবে। প্রতিজন ৩০ টন করে আমদানি করতে পারবে। সাধারণত আমদানি করতে তিন মাস সময় পাওয়া যায়।’

তিনি বলেন, ‘আমরা রোববার সকাল ১০টায় সার্ভার খুলে দেব। তারপর ৫০ জন হলে আবার সার্ভার বন্ধ করে দেব। অনেকটা ট্রেনের টিকিটের মতো। আমাদের কাছে সাড়ে তিন হাজার আবেদন ছিল। যা আমরা ফেরত দিয়েছিলাম। মূলত তাদের মধ্য থেকেই এই আবেদন নেওয়া হবে।’

গত নভেম্বরের শুরুতে হঠাৎ পেঁয়াজের দাম বাড়ে। ওই সময় এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজিতে ৪০ টাকা বেড়ে ৮০-৯০ টাকার পেঁয়াজ ১২০-১৩০ টাকায় ওঠে।

তখন বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দাম না কমলে পেঁয়াজ আমদানি করার কথা জানিয়েছিল। এরপর কিছুটা কমে সর্বোচ্চ ১২০ টাকা দরে পেঁয়াজ বিক্রি হয়। তবে শেষ পর্যন্ত কৃষি মন্ত্রণালয়ের আপত্তির মুখে পেঁয়াজ আমদানি করা হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তর্কে জড়ানো চিকিৎসককে বরখাস্তের নির্দেশ ডিজির

সবকিছু প্রস্তুত হচ্ছে, তারেক রহমান ফিরবেন যেকোনো সময়: আমীর খসরু

শেখ হাসিনা যত দিন ইচ্ছা ভারতে থাকতে পারবেন কি—জবাবে যা বললেন জয়শঙ্কর

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত, মেডিকেল বোর্ডের সবুজসংকেতের অপেক্ষা

কর্মী নেবে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, নেই বয়সসীমা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভারতীয় রুপি এশিয়ার সবচেয়ে দুর্বল মুদ্রায় পরিণত হলো যেভাবে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৯: ৩৯
ভারতীয় রুপি ও মার্কিন ডলার। ছবি: সংগৃহিত
ভারতীয় রুপি ও মার্কিন ডলার। ছবি: সংগৃহিত

মার্কিন ডলারের বিপরীতে ভারতীয় রুপির মূল্য এখন ইতিহাসের সর্বনিম্ন অবস্থানে আছে। এই মুদ্রামান আরও নিম্নমুখী হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বছর ধরেই রুপির দরপতন অব্যাহত ছিল। এখন এর মান কমেছে ৫ শতাংশেরও বেশি। যা এই মুদ্রাকে এশিয়ার সবচেয়ে দুর্বল মুদ্রায় পরিণত করেছে।

আর রুপির দরপতনে সবচেয়ে বড় আঘাতটি এসেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৫০ শতাংশ শুল্ক থেকে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি হলে রুপির এই পতন ঠেকানোর একটি সম্ভাবনা ছিল কিন্তু সেই চুক্তিও অধরা রয়ে গেছে।

তবে এর প্রধান কারণ হলো ভারতের শেয়ারবাজার। ১৯৯৩ সালের পর থেকে ইন্ডিয়ান স্টক মার্কেট অন্যান্য বাজারগুলোর তুলনায় সবচেয়ে বেশি পিছিয়ে রয়েছে। এই বছর এমএসসিআই ইন্ডিয়া সূচকের ডলার রিটার্ন ছিল মাত্র ২.৫ শতাংশ, যেখানে বৃহত্তর উদীয়মান বাজার ইনডেক্সের রিটার্ন দাঁড়িয়েছে ২৭.৭ শতাংশে।

এই ব্যবধানের ফলে বিদেশি পোর্টফোলিও বিনিয়োগকারীরা দেশের বাজার থেকে তুলে নিয়েছে ১৬ বিলিয়ন ডলার। আর সেগুলো বিনিয়োগ করেছে ভালো পারফর্ম করা বাজারগুলোতে।

রুপির নিম্নমুখী অবস্থানে যারা কিছুটা হলেও লাভবান হয়েছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন রপ্তানিকারকেরা। মার্কিন চড়া শুল্কের কারণে তারা ক্ষতির মুখে পড়েছিলেন। রুপির দরপতন তাদের কিছুটা স্বস্তি দিয়েছে।

ভারতের প্রযুক্তিখাতের শেয়ার কয়েকটি ত্রৈমাসিক ধরে একটি সীমিত পরিসরে আটকে ছিল। তা এই সপ্তাহে সামান্য ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। এছাড়া আর কোনো ইতিবাচক দিক চোখে পড়ে না।

গত সপ্তাহে প্রকাশিত তথ্য বলছে, ভারতের চলতি হিসাবের ঘাটতি কিছুটা কমলেও পণ্য বাণিজ্যের ঘাটতি অক্টোবর মাসে দাঁড়িয়েছে রেকর্ড ৪১.৭ বিলিয়ন ডলারে, যা এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ। রুপি আরও নিচে নামতে থাকায় জ্বালানি আমদানি ব্যয় বাড়বে; পাশাপাশি বাড়বে বিদেশি ঋণের খরচও। আর এর প্রভাব পড়বে বিমান, ইলেকট্রনিকস ও অটোমোবাইলের মতো বিভিন্ন খাতের উৎপাদন ব্যয়ে।

এ অবস্থায় বিদেশ ভ্রমণ ও বিদেশে শিক্ষার খরচও ক্রমেই বেড়ে যাচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে ভারতের প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ভি আনন্দ নাগেশ্বরন বলেন, রুপির দরপতন নিয়ে তিনি ‘নিদ্রাহীন রাত’ কাটাচ্ছেন না। স্বল্প মুদ্রাস্ফীতি ও প্রত্যাশার চেয়ে বেশি জিডিপি প্রবৃদ্ধি তাঁকে চিন্তামুক্ত রাখছে। রুপির দুর্বলতা ছিল নরেন্দ্র মোদির প্রথমবারের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থিতার সময় বড় প্রচারণা–ইস্যুগুলোর একটি। ২০১৩ সালে মোদি যখন প্রচার চালাচ্ছিলেন, তখন রুপির বিনিময়মূল্য ছিল ডলারের বিপরীতে ৬০.৫; আর তিনি দায়িত্ব গ্রহণের বছর তা ছিল ৬১। তবে ক্ষমতায় আসার পর মুদ্রার অবমূল্যায়নের অর্থনৈতিক প্রভাবকে তেমন গুরুত্ব দেয়নি মোদি সরকার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তর্কে জড়ানো চিকিৎসককে বরখাস্তের নির্দেশ ডিজির

সবকিছু প্রস্তুত হচ্ছে, তারেক রহমান ফিরবেন যেকোনো সময়: আমীর খসরু

শেখ হাসিনা যত দিন ইচ্ছা ভারতে থাকতে পারবেন কি—জবাবে যা বললেন জয়শঙ্কর

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত, মেডিকেল বোর্ডের সবুজসংকেতের অপেক্ষা

কর্মী নেবে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, নেই বয়সসীমা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাশিয়া-ভেনেজুয়েলাকে মার্কিন হুমকি, সরবরাহ কমার শঙ্কায় ঊর্ধ্বমুখী তেলের দাম

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ৩৫
রাশিয়া ও ভেনেজুয়েলার তেল উৎপাদনেও নজর রেখেছেন বিনিয়োগকারীরা। ছবি: মার্কেটস ডট কম
রাশিয়া ও ভেনেজুয়েলার তেল উৎপাদনেও নজর রেখেছেন বিনিয়োগকারীরা। ছবি: মার্কেটস ডট কম

অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও জ্বালানি চাহিদা বাড়াতে আগামী সপ্তাহে সুদের হার কমাতে পারে মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ। এ সম্ভাবনা থেকে তেলের দাম ১ শতাংশ বেড়ে গত দুই সপ্তাহের মধ্যে সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছেছে। পাশাপাশি, মার্কিন নিষেধাজ্ঞা ও হস্তক্ষেপের কারণে রাশিয়া ও ভেনেজুয়েলা থেকে সরবরাহ সীমিত হয়ে আসতে পারে এ উদ্বেগও রয়েছে।

রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ব্রেন্ট ফিউচার ৪৯ সেন্ট বা ০.৮% বেড়ে ব্যারেলপ্রতি ৬৩.৭৫ ডলারে স্থির হয়েছে। একই সময়ে, যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (WTI) অপরিশোধিত তেল (ক্রুড) ৪১ সেন্ট বা ০.৭% বৃদ্ধি পেয়ে ব্যারেলপ্রতি ৬০.০৮ ডলারে স্থির হয়েছে। এই দুটিই হলো ১৮ নভেম্বরের পর অপরিশোধিত তেলের জন্য সর্বোচ্চ সমাপনী দর।

সাপ্তাহিক হিসাবে, ব্রেন্ট প্রায় ১% এবং WTI প্রায় ৩% বেড়েছে, যা উভয় চুক্তির জন্য ধারাবাহিক দ্বিতীয় সপ্তাহের লাভ নির্দেশ করছে।

যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদন মূল্যায়ন করে ৯-১০ ডিসেম্বর ফেডের হার কমানোর সম্ভাবনার ওপর নতুন করে প্রত্যাশা জানিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।

তিন মাসের ধারাবাহিক শক্তিশালী বৃদ্ধির পর মার্কিন ভোক্তা ব্যয় গত সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝিতে পরিমিতভাবে বেড়েছে। এ থেকে বোঝা যায় তৃতীয় ত্রৈমাসিকের শেষে অর্থনীতিতে গতি কমেছে, কারণ দুর্বল শ্রমবাজার এবং জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান ব্যয় চাহিদা হ্রাস করেছে।

বিশ্বের বৃহত্তম আর্থিক ডেরিভেটিভস এক্সচেঞ্জ অপারেটর সিএমই গ্রুপের ফেডওয়াচ টুল অনুসারে, ব্যবসায়ীরা আগামী সপ্তাহে ফেড ২৫ বেসিস পয়েন্ট হারে সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা ৮৭ শতাংশ হতে পারে বলে মনে করছেন।

এদিকে গতকাল শুক্রবার শীর্ষ চীনা ও যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা ফোনালাপের মাধ্যমে বাণিজ্যবিষয়ক আলোচনা করেছেন, যার মধ্যে তাদের বাণিজ্যযুদ্ধের সমাধানে একটি চুক্তি বাস্তবায়নের চলমান প্রচেষ্টা অন্তর্ভুক্ত ছিল।

অন্য বাণিজ্য-সংক্রান্ত খবর অনুযায়ী, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন যে তিনি মেক্সিকো ও কানাডার নেতাদের সঙ্গে গতকাল বাণিজ্যবিষয়ক আলোচনা করবেন, যাঁদের সঙ্গে তাঁরা ২০২৬ বিশ্বকাপ ড্রয়ের জন্য ওয়াশিংটনে একত্রিত হবেন।

যুক্তরাষ্ট্র ও অন্য দেশের মধ্যে যেকোনো আলোচনার মাধ্যমে বাণিজ্য চাপ কমানো হলে তা অর্থনৈতিক বৃদ্ধি এবং জ্বালানি চাহিদা বাড়াতে সাহায্য করতে পারে।

রাশিয়া ও ভেনেজুয়েলার তেল উৎপাদনেও নজর রেখেছেন বিনিয়োগকারীরা। এই দুটি নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত ওপেক প্লাসের সদস্য দেশ থেকে তেলের সরবরাহ ভবিষ্যতে বাড়বে নাকি কমবে, তা নিয়ে চিন্তায় আছেন তাঁরা।

এই সপ্তাহে তেলের দাম বাড়ার পেছনে আরেকটি কারণ হলো ইউক্রেনে যুদ্ধ নিয়ে মস্কোতে যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনার কোনো গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি না হওয়া।

পিভিএমের তেল বাজার বিশ্লেষক তামাস ভার্গাস বলেছেন, ‘ইউক্রেনীয় শান্তি আলোচনায় অগ্রগতির অভাব একটি তেজি মনোভাব সৃষ্টি করছে, কিন্তু অন্যদিকে, ওপেকের স্থিতিশীল উৎপাদন একটি মন্দার সীমা তৈরি করছে। এই দুটি বিপরীত শক্তি ট্রেডিংকে আপাতদৃষ্টিতে শান্ত করে তুলছে।’

ছয়টি সূত্রের বরাতে রয়টার্স জানায়, রাশিয়াকে ইউক্রেন যুদ্ধে অর্থায়নে সাহায্য করে এমন তেলের রাজস্ব কমাতে গ্রুপ অব সেভেন দেশ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাশিয়ান তেল রপ্তানিতে মূল্যসীমার পরিবর্তে সম্পূর্ণ সামুদ্রিক পরিষেবা নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়ে আলোচনা করছে।

তেল রপ্তানিকারী ওপেক প্লাসের সদস্য দেশগুলোর সংস্থা এবং রাশিয়ার মতো মিত্র দেশগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করে। কোনো চুক্তি যা রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে দিতে পারে বিশ্ববাজারে তেলের সরবরাহ বাড়াতে পারে।

এদিকে গতকাল দিল্লি সফরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে অব্যাহত জ্বালানি সরবরাহের প্রস্তাব দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। দুই দেশই বাণিজ্য ও প্রতিরক্ষা সম্পর্ক সম্প্রসারণে সম্মত হলেও ভারতের কাছ থেকে সতর্ক প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে।

বাণিজ্য-সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, মূল্যের ছাড়ের পরিমাণ বাড়ায় রাষ্ট্রায়ত্ত তেল খাতের প্রতিষ্ঠান ইন্ডিয়ান অয়েল কর্প এবং ভারত পেট্রোলিয়াম কর্প নিষিদ্ধ নয়—এমন সরবরাহকারীদের কাছ থেকে রাশিয়ার তেল লোড করার জন্য জানুয়ারির অর্ডার দিয়েছে।

অন্যদিকে ভেনেজুয়েলার মাদক পাচারকারীদের থামাতে সামরিক হস্তক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যার প্রভাবও পড়ছে বৈশ্বিক তেল বাজারে।

তেল ও গ্যাস বিশ্লেষণ নিয়ে কাজ করা একটি প্রতিষ্ঠান রাইস্টার্ড এনার্জি জানিয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্টের এমন পদক্ষেপ ভেনেজুয়েলার দৈনিক ১১ লাখ ব্যারেল ক্রুড তেল উৎপাদনের জন্য ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে। এই ক্রুড অয়েলের বেশির ভাগই চীনে পাঠানো হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তর্কে জড়ানো চিকিৎসককে বরখাস্তের নির্দেশ ডিজির

সবকিছু প্রস্তুত হচ্ছে, তারেক রহমান ফিরবেন যেকোনো সময়: আমীর খসরু

শেখ হাসিনা যত দিন ইচ্ছা ভারতে থাকতে পারবেন কি—জবাবে যা বললেন জয়শঙ্কর

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত, মেডিকেল বোর্ডের সবুজসংকেতের অপেক্ষা

কর্মী নেবে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, নেই বয়সসীমা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত