মাহফুজুল ইসলাম, ঢাকা

দেশের মানুষের স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষা, উন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড গতিশীল রাখতে আসছে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) ১৫৪টি প্রকল্প নিচ্ছে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। দুই থেকে সাত বছর মেয়াদি এসব প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় চার লাখ কোটি টাকা। বিপুল অঙ্কের এই ব্যয়ের সিংহভাগই আসবে বিদেশি ঋণ ও অনুদান থেকে। পরিকল্পনা কমিশনের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
আইএমইডির প্রতিবেদনে ১০ খাতে ভাগ করা এই প্রকল্পগুলোর ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লাখ ৮৩ হাজার ৬৯ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকার অর্থায়ন করবে (১২৯টি প্রকল্পে) ৭৮ হাজার ৯৬০ কোটি টাকা। বাকি প্রায় ৩ লাখ কোটি টাকার অর্থ আসবে বিদেশি ঋণ ও অনুদান থেকে।
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ আজকের পত্রিকা’কে বলেন, ‘বিগত সময়ে ঋণ করে প্রকল্পের নামে বরাদ্দ দিয়ে জনগণের টাকা লোপাট হয়েছে। বিদেশেও সেই টাকা পাচার হয়েছে। আমরা প্রকল্পগুলো যাচাই-বাছাই করেছি, যৌক্তিক প্রকল্পগুলো এডিপিতে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য তালিকা করেছি। দেশের অর্থনীতি ও জনকল্যাণে এসব প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়ন জরুরি। তাই প্রকল্পগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।’
এডিপিতে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য নেওয়া প্রকল্পগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় প্রকল্পটি স্বাস্থ্য খাতের। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের আওতায় নেওয়া এই প্রকল্পের নাম ‘৫ম জনস্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর কর্মসূচি’। ১ লাখ ৬ হাজার ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ের এই প্রকল্প বিগত সরকারের সময় নেওয়া। সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষার কথা চিন্তা করে অন্তর্বর্তী সরকার এই প্রকল্প এডিপিতে অন্তর্ভুক্ত করছে। প্রকল্পটির মাধ্যমে স্বাস্থ্য খাতের অধিকাংশ অবকাঠামো, রোগ প্রতিরোধ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা ও সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। এতে অর্থায়ন করছে বিশ্বব্যাংক, এডিবি, পুল ফান্ড এবং এমআইআইবি। প্রকল্পের মেয়াদ জুলাই ২০২৪ থেকে জুন ২০২৯। এর মাধ্যমে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা, হাসপাতালের সেবা ব্যবস্থাপনা, সংক্রামক ও অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ, টিকা ও পুষ্টি কার্যক্রমসহ ৩০টির বেশি বড় কর্মসূচি পরিচালনা করা হবে, যা দেশের স্বাস্থ্য খাতে বড় ভূমিকা রাখবে।
এডিপিতে অন্তর্ভুক্ত হতে যাওয়া আরেকটি বড় প্রকল্প হলো ‘ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট (লাইন-৫) রুট সাউদার্ন’ প্রকল্প। দেশের মানুষের যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়নের লক্ষ্যে বিগত সরকার এই প্রকল্প নিয়েছিল। তখন প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল ৫২ হাজার কোটি টাকা। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন পাওয়া এই প্রকল্প যাচাই-বাছাই করে ব্যয় ৫ হাজার কোটি টাকা কাটছাঁট করা হয়েছে। ফলে প্রকল্পের নতুন ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৭ হাজার ৭২১ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। প্রকল্পটি চলতি বছরের জানুয়ারিতে শুরু হওয়ার কথা ছিল। মেয়াদ শেষ হবে ২০২৭ সালে। প্রকল্পের অর্থায়ন করবে জাইকা।
অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, বৈদেশিক ঋণের বড় ধরনের চাপে রয়েছে সরকার। ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা নির্ণয় করে দাতা সংস্থাগুলো আগের বিভিন্ন প্রকল্পের অর্থছাড় কমিয়ে দিয়েছে। নতুন করে প্রতিশ্রুতিও দিচ্ছে না। এমন অবস্থায় বৈদেশিক ঋণ নিয়ে আরও ১৫৪টি প্রকল্প নেওয়ার অর্থ হচ্ছে অর্থনীতিকে চাপে ফেলা। কারণ, দাতা সংস্থাগুলো বিগত অন্যান্য বছরের তুলনায় দীর্ঘ মেয়াদি ঋণ কম দিচ্ছে। স্বল্প মেয়াদি ঋণ দিয়ে বেশি হারে সুদ নিচ্ছে।
অর্থনীতিবিদ ও বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সাবেক মহাপরিচালক ড. মুস্তফা কে মুজেরী বলেন, বিগত সরকারের সময় নেওয়া অনেক অবকাঠামো প্রকল্প থেকে প্রত্যাশা অনুসারে অর্থনৈতিক সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে এই প্রকল্পগুলোর ঋণের বোঝা বইতে হচ্ছে সরকারকে। নতুন করে এডিপি কিংবা আরএডিপি প্রকল্পে তালিকাভুক্ত করার আগে এসব বিষয় চিন্তা করতে হবে। তা না হলে অর্থনীতির জন্য ভবিষ্যতে বড় বিপদ বয়ে আনবে।
আইএমইডির প্রতিবেদন অনুসারে, ব্যয়ের দিক থেকে তৃতীয় সর্বোচ্চ ব্যয়ের যে প্রকল্প এডিপিভুক্ত হচ্ছে, সেটি হলো ‘বে-টার্মিনালের নৌ-চলাচল অবকাঠামো এবং পশ্চাদ্ভূমি সংযোগ সুবিধাদি উন্নয়ন প্রকল্প’। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে নেওয়া এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১১ হাজার ১৩২ কোটি ৩০ লাখ টাকা। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে ২০২৭ সালের জুন মাসে।
অন্য প্রকল্পগুলোর মধ্যে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে শুরু হওয়া ‘হাটিকুমরুল-বনপাড়া-ঝিনাইদহ মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্প: বনপাড়া-কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ অংশ’ প্রকল্পের ব্যয় ৯ হাজার ৮৯৯ কোটি টাকা। এতে ঋণ সহায়তা করবে এআইআইবি। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে ২০৩১ সালে।
ব্যয়ের দিক থেকে পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) খাতের ‘ক্যাপাসিটি ডেভেলপমেন্ট অব সিভিল সার্ভিস প্রকল্প’। ৬ হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্পে অর্থায়ন করছে জাইকা। চলতি বছরের জুলাই থেকে শুরু হওয়া প্রকল্পটি শেষ হবে ২০২৮ সালের জুন মাসে।
এত প্রকল্প এডিপিভুক্ত হতে যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার দেশের চলমান প্রকল্পগুলো রিভিউ করেছে। প্রকল্পগুলো যাচাই-বাছাই করে যে প্রকল্পগুলোর প্রয়োজন নেই, সেসব প্রকল্প বাতিল করা হয়েছে। বেশ কিছু প্রকল্পের অযৌক্তিক ব্যয় ছিল, সেগুলো বাদ দেওয়া হয়। এই প্রক্রিয়াটা ভালো হয়েছে।
সরকারের নেওয়া প্রকল্পগুলোয় সামাজিক সুরক্ষা খাতের পাশাপাশি কৃষি এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতেরও বরাদ্দ রয়েছে। এগুলো অর্থনৈতিক ও জনকল্যাণের ব্যবহৃত প্রকল্প বলে মনে করেন তিনি।
আইএমইডির প্রতিবেদনে এডিপির প্রকল্পগুলো ১০টি খাতে ভাগ করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে গৃহায়ণ ও কমিউনিটি সুবিধাবলি খাতকে। এই খাতে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে ২৮টি প্রকল্প। এ ছাড়া কৃষিতে ১৫; বিদ্যুৎ ও জ্বালানিতে ২৪; পরিবহন ও যোগাযোগে ১৮; শিক্ষায় ১৬; সাধারণ সরকারি সেবায় ১১; স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়নে ১০; পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদে ৯; শিল্প ও অর্থনৈতিক সেবা খাতে ৬; তথ্যপ্রযুক্তিতে ৫; ধর্ম ও বিনোদনে ৪; স্বাস্থ্যে ৩; জনশৃঙ্খলা ও সুরক্ষায় ৩ এবং সামাজিক সুরক্ষা ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের দুটি করে মোট ৪টি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ এবং যোগাযোগ খাতের চলমান কিছু প্রকল্প ২০২৫-২৬ অর্থবছরের এডিপিতে অন্তর্ভুক্ত হওয়াটা ঠিক আছে বলে জানান বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) চেয়ারম্যান জায়েদি সাত্তার। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, বর্তমানে মেট্রোরেল চলমান রয়েছে, রাজধানীতে মেট্রোরেলের আরেকটি অংশ যোগ হলে তা হবে জনবান্ধব এবং অর্থনীতির জন্য সুখবরের। এটি পরীক্ষিত।
আরও খবর পড়ুন:

দেশের মানুষের স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষা, উন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড গতিশীল রাখতে আসছে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) ১৫৪টি প্রকল্প নিচ্ছে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। দুই থেকে সাত বছর মেয়াদি এসব প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় চার লাখ কোটি টাকা। বিপুল অঙ্কের এই ব্যয়ের সিংহভাগই আসবে বিদেশি ঋণ ও অনুদান থেকে। পরিকল্পনা কমিশনের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
আইএমইডির প্রতিবেদনে ১০ খাতে ভাগ করা এই প্রকল্পগুলোর ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লাখ ৮৩ হাজার ৬৯ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকার অর্থায়ন করবে (১২৯টি প্রকল্পে) ৭৮ হাজার ৯৬০ কোটি টাকা। বাকি প্রায় ৩ লাখ কোটি টাকার অর্থ আসবে বিদেশি ঋণ ও অনুদান থেকে।
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ আজকের পত্রিকা’কে বলেন, ‘বিগত সময়ে ঋণ করে প্রকল্পের নামে বরাদ্দ দিয়ে জনগণের টাকা লোপাট হয়েছে। বিদেশেও সেই টাকা পাচার হয়েছে। আমরা প্রকল্পগুলো যাচাই-বাছাই করেছি, যৌক্তিক প্রকল্পগুলো এডিপিতে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য তালিকা করেছি। দেশের অর্থনীতি ও জনকল্যাণে এসব প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়ন জরুরি। তাই প্রকল্পগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।’
এডিপিতে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য নেওয়া প্রকল্পগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় প্রকল্পটি স্বাস্থ্য খাতের। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের আওতায় নেওয়া এই প্রকল্পের নাম ‘৫ম জনস্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর কর্মসূচি’। ১ লাখ ৬ হাজার ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ের এই প্রকল্প বিগত সরকারের সময় নেওয়া। সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষার কথা চিন্তা করে অন্তর্বর্তী সরকার এই প্রকল্প এডিপিতে অন্তর্ভুক্ত করছে। প্রকল্পটির মাধ্যমে স্বাস্থ্য খাতের অধিকাংশ অবকাঠামো, রোগ প্রতিরোধ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা ও সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। এতে অর্থায়ন করছে বিশ্বব্যাংক, এডিবি, পুল ফান্ড এবং এমআইআইবি। প্রকল্পের মেয়াদ জুলাই ২০২৪ থেকে জুন ২০২৯। এর মাধ্যমে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা, হাসপাতালের সেবা ব্যবস্থাপনা, সংক্রামক ও অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ, টিকা ও পুষ্টি কার্যক্রমসহ ৩০টির বেশি বড় কর্মসূচি পরিচালনা করা হবে, যা দেশের স্বাস্থ্য খাতে বড় ভূমিকা রাখবে।
এডিপিতে অন্তর্ভুক্ত হতে যাওয়া আরেকটি বড় প্রকল্প হলো ‘ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট (লাইন-৫) রুট সাউদার্ন’ প্রকল্প। দেশের মানুষের যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়নের লক্ষ্যে বিগত সরকার এই প্রকল্প নিয়েছিল। তখন প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল ৫২ হাজার কোটি টাকা। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন পাওয়া এই প্রকল্প যাচাই-বাছাই করে ব্যয় ৫ হাজার কোটি টাকা কাটছাঁট করা হয়েছে। ফলে প্রকল্পের নতুন ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৭ হাজার ৭২১ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। প্রকল্পটি চলতি বছরের জানুয়ারিতে শুরু হওয়ার কথা ছিল। মেয়াদ শেষ হবে ২০২৭ সালে। প্রকল্পের অর্থায়ন করবে জাইকা।
অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, বৈদেশিক ঋণের বড় ধরনের চাপে রয়েছে সরকার। ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা নির্ণয় করে দাতা সংস্থাগুলো আগের বিভিন্ন প্রকল্পের অর্থছাড় কমিয়ে দিয়েছে। নতুন করে প্রতিশ্রুতিও দিচ্ছে না। এমন অবস্থায় বৈদেশিক ঋণ নিয়ে আরও ১৫৪টি প্রকল্প নেওয়ার অর্থ হচ্ছে অর্থনীতিকে চাপে ফেলা। কারণ, দাতা সংস্থাগুলো বিগত অন্যান্য বছরের তুলনায় দীর্ঘ মেয়াদি ঋণ কম দিচ্ছে। স্বল্প মেয়াদি ঋণ দিয়ে বেশি হারে সুদ নিচ্ছে।
অর্থনীতিবিদ ও বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সাবেক মহাপরিচালক ড. মুস্তফা কে মুজেরী বলেন, বিগত সরকারের সময় নেওয়া অনেক অবকাঠামো প্রকল্প থেকে প্রত্যাশা অনুসারে অর্থনৈতিক সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে এই প্রকল্পগুলোর ঋণের বোঝা বইতে হচ্ছে সরকারকে। নতুন করে এডিপি কিংবা আরএডিপি প্রকল্পে তালিকাভুক্ত করার আগে এসব বিষয় চিন্তা করতে হবে। তা না হলে অর্থনীতির জন্য ভবিষ্যতে বড় বিপদ বয়ে আনবে।
আইএমইডির প্রতিবেদন অনুসারে, ব্যয়ের দিক থেকে তৃতীয় সর্বোচ্চ ব্যয়ের যে প্রকল্প এডিপিভুক্ত হচ্ছে, সেটি হলো ‘বে-টার্মিনালের নৌ-চলাচল অবকাঠামো এবং পশ্চাদ্ভূমি সংযোগ সুবিধাদি উন্নয়ন প্রকল্প’। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে নেওয়া এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১১ হাজার ১৩২ কোটি ৩০ লাখ টাকা। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে ২০২৭ সালের জুন মাসে।
অন্য প্রকল্পগুলোর মধ্যে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে শুরু হওয়া ‘হাটিকুমরুল-বনপাড়া-ঝিনাইদহ মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্প: বনপাড়া-কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ অংশ’ প্রকল্পের ব্যয় ৯ হাজার ৮৯৯ কোটি টাকা। এতে ঋণ সহায়তা করবে এআইআইবি। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে ২০৩১ সালে।
ব্যয়ের দিক থেকে পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) খাতের ‘ক্যাপাসিটি ডেভেলপমেন্ট অব সিভিল সার্ভিস প্রকল্প’। ৬ হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্পে অর্থায়ন করছে জাইকা। চলতি বছরের জুলাই থেকে শুরু হওয়া প্রকল্পটি শেষ হবে ২০২৮ সালের জুন মাসে।
এত প্রকল্প এডিপিভুক্ত হতে যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার দেশের চলমান প্রকল্পগুলো রিভিউ করেছে। প্রকল্পগুলো যাচাই-বাছাই করে যে প্রকল্পগুলোর প্রয়োজন নেই, সেসব প্রকল্প বাতিল করা হয়েছে। বেশ কিছু প্রকল্পের অযৌক্তিক ব্যয় ছিল, সেগুলো বাদ দেওয়া হয়। এই প্রক্রিয়াটা ভালো হয়েছে।
সরকারের নেওয়া প্রকল্পগুলোয় সামাজিক সুরক্ষা খাতের পাশাপাশি কৃষি এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতেরও বরাদ্দ রয়েছে। এগুলো অর্থনৈতিক ও জনকল্যাণের ব্যবহৃত প্রকল্প বলে মনে করেন তিনি।
আইএমইডির প্রতিবেদনে এডিপির প্রকল্পগুলো ১০টি খাতে ভাগ করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে গৃহায়ণ ও কমিউনিটি সুবিধাবলি খাতকে। এই খাতে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে ২৮টি প্রকল্প। এ ছাড়া কৃষিতে ১৫; বিদ্যুৎ ও জ্বালানিতে ২৪; পরিবহন ও যোগাযোগে ১৮; শিক্ষায় ১৬; সাধারণ সরকারি সেবায় ১১; স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়নে ১০; পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদে ৯; শিল্প ও অর্থনৈতিক সেবা খাতে ৬; তথ্যপ্রযুক্তিতে ৫; ধর্ম ও বিনোদনে ৪; স্বাস্থ্যে ৩; জনশৃঙ্খলা ও সুরক্ষায় ৩ এবং সামাজিক সুরক্ষা ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের দুটি করে মোট ৪টি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ এবং যোগাযোগ খাতের চলমান কিছু প্রকল্প ২০২৫-২৬ অর্থবছরের এডিপিতে অন্তর্ভুক্ত হওয়াটা ঠিক আছে বলে জানান বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) চেয়ারম্যান জায়েদি সাত্তার। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, বর্তমানে মেট্রোরেল চলমান রয়েছে, রাজধানীতে মেট্রোরেলের আরেকটি অংশ যোগ হলে তা হবে জনবান্ধব এবং অর্থনীতির জন্য সুখবরের। এটি পরীক্ষিত।
আরও খবর পড়ুন:
মাহফুজুল ইসলাম, ঢাকা

দেশের মানুষের স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষা, উন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড গতিশীল রাখতে আসছে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) ১৫৪টি প্রকল্প নিচ্ছে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। দুই থেকে সাত বছর মেয়াদি এসব প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় চার লাখ কোটি টাকা। বিপুল অঙ্কের এই ব্যয়ের সিংহভাগই আসবে বিদেশি ঋণ ও অনুদান থেকে। পরিকল্পনা কমিশনের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
আইএমইডির প্রতিবেদনে ১০ খাতে ভাগ করা এই প্রকল্পগুলোর ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লাখ ৮৩ হাজার ৬৯ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকার অর্থায়ন করবে (১২৯টি প্রকল্পে) ৭৮ হাজার ৯৬০ কোটি টাকা। বাকি প্রায় ৩ লাখ কোটি টাকার অর্থ আসবে বিদেশি ঋণ ও অনুদান থেকে।
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ আজকের পত্রিকা’কে বলেন, ‘বিগত সময়ে ঋণ করে প্রকল্পের নামে বরাদ্দ দিয়ে জনগণের টাকা লোপাট হয়েছে। বিদেশেও সেই টাকা পাচার হয়েছে। আমরা প্রকল্পগুলো যাচাই-বাছাই করেছি, যৌক্তিক প্রকল্পগুলো এডিপিতে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য তালিকা করেছি। দেশের অর্থনীতি ও জনকল্যাণে এসব প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়ন জরুরি। তাই প্রকল্পগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।’
এডিপিতে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য নেওয়া প্রকল্পগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় প্রকল্পটি স্বাস্থ্য খাতের। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের আওতায় নেওয়া এই প্রকল্পের নাম ‘৫ম জনস্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর কর্মসূচি’। ১ লাখ ৬ হাজার ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ের এই প্রকল্প বিগত সরকারের সময় নেওয়া। সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষার কথা চিন্তা করে অন্তর্বর্তী সরকার এই প্রকল্প এডিপিতে অন্তর্ভুক্ত করছে। প্রকল্পটির মাধ্যমে স্বাস্থ্য খাতের অধিকাংশ অবকাঠামো, রোগ প্রতিরোধ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা ও সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। এতে অর্থায়ন করছে বিশ্বব্যাংক, এডিবি, পুল ফান্ড এবং এমআইআইবি। প্রকল্পের মেয়াদ জুলাই ২০২৪ থেকে জুন ২০২৯। এর মাধ্যমে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা, হাসপাতালের সেবা ব্যবস্থাপনা, সংক্রামক ও অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ, টিকা ও পুষ্টি কার্যক্রমসহ ৩০টির বেশি বড় কর্মসূচি পরিচালনা করা হবে, যা দেশের স্বাস্থ্য খাতে বড় ভূমিকা রাখবে।
এডিপিতে অন্তর্ভুক্ত হতে যাওয়া আরেকটি বড় প্রকল্প হলো ‘ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট (লাইন-৫) রুট সাউদার্ন’ প্রকল্প। দেশের মানুষের যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়নের লক্ষ্যে বিগত সরকার এই প্রকল্প নিয়েছিল। তখন প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল ৫২ হাজার কোটি টাকা। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন পাওয়া এই প্রকল্প যাচাই-বাছাই করে ব্যয় ৫ হাজার কোটি টাকা কাটছাঁট করা হয়েছে। ফলে প্রকল্পের নতুন ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৭ হাজার ৭২১ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। প্রকল্পটি চলতি বছরের জানুয়ারিতে শুরু হওয়ার কথা ছিল। মেয়াদ শেষ হবে ২০২৭ সালে। প্রকল্পের অর্থায়ন করবে জাইকা।
অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, বৈদেশিক ঋণের বড় ধরনের চাপে রয়েছে সরকার। ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা নির্ণয় করে দাতা সংস্থাগুলো আগের বিভিন্ন প্রকল্পের অর্থছাড় কমিয়ে দিয়েছে। নতুন করে প্রতিশ্রুতিও দিচ্ছে না। এমন অবস্থায় বৈদেশিক ঋণ নিয়ে আরও ১৫৪টি প্রকল্প নেওয়ার অর্থ হচ্ছে অর্থনীতিকে চাপে ফেলা। কারণ, দাতা সংস্থাগুলো বিগত অন্যান্য বছরের তুলনায় দীর্ঘ মেয়াদি ঋণ কম দিচ্ছে। স্বল্প মেয়াদি ঋণ দিয়ে বেশি হারে সুদ নিচ্ছে।
অর্থনীতিবিদ ও বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সাবেক মহাপরিচালক ড. মুস্তফা কে মুজেরী বলেন, বিগত সরকারের সময় নেওয়া অনেক অবকাঠামো প্রকল্প থেকে প্রত্যাশা অনুসারে অর্থনৈতিক সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে এই প্রকল্পগুলোর ঋণের বোঝা বইতে হচ্ছে সরকারকে। নতুন করে এডিপি কিংবা আরএডিপি প্রকল্পে তালিকাভুক্ত করার আগে এসব বিষয় চিন্তা করতে হবে। তা না হলে অর্থনীতির জন্য ভবিষ্যতে বড় বিপদ বয়ে আনবে।
আইএমইডির প্রতিবেদন অনুসারে, ব্যয়ের দিক থেকে তৃতীয় সর্বোচ্চ ব্যয়ের যে প্রকল্প এডিপিভুক্ত হচ্ছে, সেটি হলো ‘বে-টার্মিনালের নৌ-চলাচল অবকাঠামো এবং পশ্চাদ্ভূমি সংযোগ সুবিধাদি উন্নয়ন প্রকল্প’। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে নেওয়া এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১১ হাজার ১৩২ কোটি ৩০ লাখ টাকা। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে ২০২৭ সালের জুন মাসে।
অন্য প্রকল্পগুলোর মধ্যে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে শুরু হওয়া ‘হাটিকুমরুল-বনপাড়া-ঝিনাইদহ মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্প: বনপাড়া-কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ অংশ’ প্রকল্পের ব্যয় ৯ হাজার ৮৯৯ কোটি টাকা। এতে ঋণ সহায়তা করবে এআইআইবি। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে ২০৩১ সালে।
ব্যয়ের দিক থেকে পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) খাতের ‘ক্যাপাসিটি ডেভেলপমেন্ট অব সিভিল সার্ভিস প্রকল্প’। ৬ হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্পে অর্থায়ন করছে জাইকা। চলতি বছরের জুলাই থেকে শুরু হওয়া প্রকল্পটি শেষ হবে ২০২৮ সালের জুন মাসে।
এত প্রকল্প এডিপিভুক্ত হতে যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার দেশের চলমান প্রকল্পগুলো রিভিউ করেছে। প্রকল্পগুলো যাচাই-বাছাই করে যে প্রকল্পগুলোর প্রয়োজন নেই, সেসব প্রকল্প বাতিল করা হয়েছে। বেশ কিছু প্রকল্পের অযৌক্তিক ব্যয় ছিল, সেগুলো বাদ দেওয়া হয়। এই প্রক্রিয়াটা ভালো হয়েছে।
সরকারের নেওয়া প্রকল্পগুলোয় সামাজিক সুরক্ষা খাতের পাশাপাশি কৃষি এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতেরও বরাদ্দ রয়েছে। এগুলো অর্থনৈতিক ও জনকল্যাণের ব্যবহৃত প্রকল্প বলে মনে করেন তিনি।
আইএমইডির প্রতিবেদনে এডিপির প্রকল্পগুলো ১০টি খাতে ভাগ করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে গৃহায়ণ ও কমিউনিটি সুবিধাবলি খাতকে। এই খাতে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে ২৮টি প্রকল্প। এ ছাড়া কৃষিতে ১৫; বিদ্যুৎ ও জ্বালানিতে ২৪; পরিবহন ও যোগাযোগে ১৮; শিক্ষায় ১৬; সাধারণ সরকারি সেবায় ১১; স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়নে ১০; পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদে ৯; শিল্প ও অর্থনৈতিক সেবা খাতে ৬; তথ্যপ্রযুক্তিতে ৫; ধর্ম ও বিনোদনে ৪; স্বাস্থ্যে ৩; জনশৃঙ্খলা ও সুরক্ষায় ৩ এবং সামাজিক সুরক্ষা ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের দুটি করে মোট ৪টি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ এবং যোগাযোগ খাতের চলমান কিছু প্রকল্প ২০২৫-২৬ অর্থবছরের এডিপিতে অন্তর্ভুক্ত হওয়াটা ঠিক আছে বলে জানান বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) চেয়ারম্যান জায়েদি সাত্তার। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, বর্তমানে মেট্রোরেল চলমান রয়েছে, রাজধানীতে মেট্রোরেলের আরেকটি অংশ যোগ হলে তা হবে জনবান্ধব এবং অর্থনীতির জন্য সুখবরের। এটি পরীক্ষিত।
আরও খবর পড়ুন:

দেশের মানুষের স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষা, উন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড গতিশীল রাখতে আসছে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) ১৫৪টি প্রকল্প নিচ্ছে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। দুই থেকে সাত বছর মেয়াদি এসব প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় চার লাখ কোটি টাকা। বিপুল অঙ্কের এই ব্যয়ের সিংহভাগই আসবে বিদেশি ঋণ ও অনুদান থেকে। পরিকল্পনা কমিশনের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
আইএমইডির প্রতিবেদনে ১০ খাতে ভাগ করা এই প্রকল্পগুলোর ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লাখ ৮৩ হাজার ৬৯ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকার অর্থায়ন করবে (১২৯টি প্রকল্পে) ৭৮ হাজার ৯৬০ কোটি টাকা। বাকি প্রায় ৩ লাখ কোটি টাকার অর্থ আসবে বিদেশি ঋণ ও অনুদান থেকে।
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ আজকের পত্রিকা’কে বলেন, ‘বিগত সময়ে ঋণ করে প্রকল্পের নামে বরাদ্দ দিয়ে জনগণের টাকা লোপাট হয়েছে। বিদেশেও সেই টাকা পাচার হয়েছে। আমরা প্রকল্পগুলো যাচাই-বাছাই করেছি, যৌক্তিক প্রকল্পগুলো এডিপিতে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য তালিকা করেছি। দেশের অর্থনীতি ও জনকল্যাণে এসব প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়ন জরুরি। তাই প্রকল্পগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।’
এডিপিতে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য নেওয়া প্রকল্পগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় প্রকল্পটি স্বাস্থ্য খাতের। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের আওতায় নেওয়া এই প্রকল্পের নাম ‘৫ম জনস্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর কর্মসূচি’। ১ লাখ ৬ হাজার ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ের এই প্রকল্প বিগত সরকারের সময় নেওয়া। সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষার কথা চিন্তা করে অন্তর্বর্তী সরকার এই প্রকল্প এডিপিতে অন্তর্ভুক্ত করছে। প্রকল্পটির মাধ্যমে স্বাস্থ্য খাতের অধিকাংশ অবকাঠামো, রোগ প্রতিরোধ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা ও সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। এতে অর্থায়ন করছে বিশ্বব্যাংক, এডিবি, পুল ফান্ড এবং এমআইআইবি। প্রকল্পের মেয়াদ জুলাই ২০২৪ থেকে জুন ২০২৯। এর মাধ্যমে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা, হাসপাতালের সেবা ব্যবস্থাপনা, সংক্রামক ও অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ, টিকা ও পুষ্টি কার্যক্রমসহ ৩০টির বেশি বড় কর্মসূচি পরিচালনা করা হবে, যা দেশের স্বাস্থ্য খাতে বড় ভূমিকা রাখবে।
এডিপিতে অন্তর্ভুক্ত হতে যাওয়া আরেকটি বড় প্রকল্প হলো ‘ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট (লাইন-৫) রুট সাউদার্ন’ প্রকল্প। দেশের মানুষের যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়নের লক্ষ্যে বিগত সরকার এই প্রকল্প নিয়েছিল। তখন প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল ৫২ হাজার কোটি টাকা। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন পাওয়া এই প্রকল্প যাচাই-বাছাই করে ব্যয় ৫ হাজার কোটি টাকা কাটছাঁট করা হয়েছে। ফলে প্রকল্পের নতুন ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৭ হাজার ৭২১ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। প্রকল্পটি চলতি বছরের জানুয়ারিতে শুরু হওয়ার কথা ছিল। মেয়াদ শেষ হবে ২০২৭ সালে। প্রকল্পের অর্থায়ন করবে জাইকা।
অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, বৈদেশিক ঋণের বড় ধরনের চাপে রয়েছে সরকার। ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা নির্ণয় করে দাতা সংস্থাগুলো আগের বিভিন্ন প্রকল্পের অর্থছাড় কমিয়ে দিয়েছে। নতুন করে প্রতিশ্রুতিও দিচ্ছে না। এমন অবস্থায় বৈদেশিক ঋণ নিয়ে আরও ১৫৪টি প্রকল্প নেওয়ার অর্থ হচ্ছে অর্থনীতিকে চাপে ফেলা। কারণ, দাতা সংস্থাগুলো বিগত অন্যান্য বছরের তুলনায় দীর্ঘ মেয়াদি ঋণ কম দিচ্ছে। স্বল্প মেয়াদি ঋণ দিয়ে বেশি হারে সুদ নিচ্ছে।
অর্থনীতিবিদ ও বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সাবেক মহাপরিচালক ড. মুস্তফা কে মুজেরী বলেন, বিগত সরকারের সময় নেওয়া অনেক অবকাঠামো প্রকল্প থেকে প্রত্যাশা অনুসারে অর্থনৈতিক সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে এই প্রকল্পগুলোর ঋণের বোঝা বইতে হচ্ছে সরকারকে। নতুন করে এডিপি কিংবা আরএডিপি প্রকল্পে তালিকাভুক্ত করার আগে এসব বিষয় চিন্তা করতে হবে। তা না হলে অর্থনীতির জন্য ভবিষ্যতে বড় বিপদ বয়ে আনবে।
আইএমইডির প্রতিবেদন অনুসারে, ব্যয়ের দিক থেকে তৃতীয় সর্বোচ্চ ব্যয়ের যে প্রকল্প এডিপিভুক্ত হচ্ছে, সেটি হলো ‘বে-টার্মিনালের নৌ-চলাচল অবকাঠামো এবং পশ্চাদ্ভূমি সংযোগ সুবিধাদি উন্নয়ন প্রকল্প’। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে নেওয়া এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১১ হাজার ১৩২ কোটি ৩০ লাখ টাকা। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে ২০২৭ সালের জুন মাসে।
অন্য প্রকল্পগুলোর মধ্যে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে শুরু হওয়া ‘হাটিকুমরুল-বনপাড়া-ঝিনাইদহ মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্প: বনপাড়া-কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ অংশ’ প্রকল্পের ব্যয় ৯ হাজার ৮৯৯ কোটি টাকা। এতে ঋণ সহায়তা করবে এআইআইবি। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে ২০৩১ সালে।
ব্যয়ের দিক থেকে পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) খাতের ‘ক্যাপাসিটি ডেভেলপমেন্ট অব সিভিল সার্ভিস প্রকল্প’। ৬ হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্পে অর্থায়ন করছে জাইকা। চলতি বছরের জুলাই থেকে শুরু হওয়া প্রকল্পটি শেষ হবে ২০২৮ সালের জুন মাসে।
এত প্রকল্প এডিপিভুক্ত হতে যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার দেশের চলমান প্রকল্পগুলো রিভিউ করেছে। প্রকল্পগুলো যাচাই-বাছাই করে যে প্রকল্পগুলোর প্রয়োজন নেই, সেসব প্রকল্প বাতিল করা হয়েছে। বেশ কিছু প্রকল্পের অযৌক্তিক ব্যয় ছিল, সেগুলো বাদ দেওয়া হয়। এই প্রক্রিয়াটা ভালো হয়েছে।
সরকারের নেওয়া প্রকল্পগুলোয় সামাজিক সুরক্ষা খাতের পাশাপাশি কৃষি এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতেরও বরাদ্দ রয়েছে। এগুলো অর্থনৈতিক ও জনকল্যাণের ব্যবহৃত প্রকল্প বলে মনে করেন তিনি।
আইএমইডির প্রতিবেদনে এডিপির প্রকল্পগুলো ১০টি খাতে ভাগ করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে গৃহায়ণ ও কমিউনিটি সুবিধাবলি খাতকে। এই খাতে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে ২৮টি প্রকল্প। এ ছাড়া কৃষিতে ১৫; বিদ্যুৎ ও জ্বালানিতে ২৪; পরিবহন ও যোগাযোগে ১৮; শিক্ষায় ১৬; সাধারণ সরকারি সেবায় ১১; স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়নে ১০; পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদে ৯; শিল্প ও অর্থনৈতিক সেবা খাতে ৬; তথ্যপ্রযুক্তিতে ৫; ধর্ম ও বিনোদনে ৪; স্বাস্থ্যে ৩; জনশৃঙ্খলা ও সুরক্ষায় ৩ এবং সামাজিক সুরক্ষা ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের দুটি করে মোট ৪টি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ এবং যোগাযোগ খাতের চলমান কিছু প্রকল্প ২০২৫-২৬ অর্থবছরের এডিপিতে অন্তর্ভুক্ত হওয়াটা ঠিক আছে বলে জানান বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) চেয়ারম্যান জায়েদি সাত্তার। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, বর্তমানে মেট্রোরেল চলমান রয়েছে, রাজধানীতে মেট্রোরেলের আরেকটি অংশ যোগ হলে তা হবে জনবান্ধব এবং অর্থনীতির জন্য সুখবরের। এটি পরীক্ষিত।
আরও খবর পড়ুন:

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে আয়োজিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মুফতি ছাঈদ আহমাদ।
৩ ঘণ্টা আগে
শীতের রাত পেরিয়ে ভোরের আলো ফোটার আগেই যশোরের গ্রামাঞ্চলে শুরু হয় ব্যস্ততা। খেজুরগাছের নিচে হাজির হন গাছিরা। আগের বিকেলে কাটা গাছের ‘চোখ’ বেয়ে সারা রাত মাটির হাঁড়িতে জমেছে সুমিষ্ট খেজুর রস।
৯ ঘণ্টা আগে
দেশের ব্যাংকিং খাতের ভেতরে জমে থাকা অনিয়ম, রাজনৈতিক আশ্রয় ও কৃত্রিম হিসাবের পর্দা চলতি বছর যেন একে একে সরে যেতে শুরু করেছে। আর তাতেই সামনে এসেছে এক ভয়াবহ বাস্তবতা। সরকারি ও শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের ভারে এখন কার্যত দিশেহারা।
১৭ ঘণ্টা আগে
ডলার এখন রেমিট্যান্স, রপ্তানি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ—সবকিছুর সঙ্গে জড়িয়ে আছে। তাই বাজারে ডলার হাতছাড়া হওয়ার ভয়ে সবাই চুপ। এই ডলারের সরবরাহ ও দাম স্থিতিশীল রাখার পাশাপাশি পুরো বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য ঠিক রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়মিত বিরতিতে ডলার কিনছে। সেই ধারাবাহিকতায় শুধু চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই
২১ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গতকাল রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে আয়োজিত এই সভায় সভাপতিত্ব করেন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মুফতি ছাঈদ আহমাদ।
সভায় উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মো. ওমর ফারুক খাঁন এবং শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সদস্যসচিব অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আব্দুস সামাদ। এ ছাড়া কাউন্সিলের অন্য সদস্যবৃন্দ সভায় অংশগ্রহণ করেন।

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গতকাল রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে আয়োজিত এই সভায় সভাপতিত্ব করেন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মুফতি ছাঈদ আহমাদ।
সভায় উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মো. ওমর ফারুক খাঁন এবং শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সদস্যসচিব অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আব্দুস সামাদ। এ ছাড়া কাউন্সিলের অন্য সদস্যবৃন্দ সভায় অংশগ্রহণ করেন।

দেশের মানুষের স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষা, উন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড গতিশীল রাখতে আসছে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) ১৫৪টি প্রকল্প নিচ্ছে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। দুই থেকে সাত বছর মেয়াদি এসব প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় চার লাখ কোটি টাকা। বিপুল অঙ্কের এই ব্যয়
১৩ মার্চ ২০২৫
শীতের রাত পেরিয়ে ভোরের আলো ফোটার আগেই যশোরের গ্রামাঞ্চলে শুরু হয় ব্যস্ততা। খেজুরগাছের নিচে হাজির হন গাছিরা। আগের বিকেলে কাটা গাছের ‘চোখ’ বেয়ে সারা রাত মাটির হাঁড়িতে জমেছে সুমিষ্ট খেজুর রস।
৯ ঘণ্টা আগে
দেশের ব্যাংকিং খাতের ভেতরে জমে থাকা অনিয়ম, রাজনৈতিক আশ্রয় ও কৃত্রিম হিসাবের পর্দা চলতি বছর যেন একে একে সরে যেতে শুরু করেছে। আর তাতেই সামনে এসেছে এক ভয়াবহ বাস্তবতা। সরকারি ও শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের ভারে এখন কার্যত দিশেহারা।
১৭ ঘণ্টা আগে
ডলার এখন রেমিট্যান্স, রপ্তানি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ—সবকিছুর সঙ্গে জড়িয়ে আছে। তাই বাজারে ডলার হাতছাড়া হওয়ার ভয়ে সবাই চুপ। এই ডলারের সরবরাহ ও দাম স্থিতিশীল রাখার পাশাপাশি পুরো বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য ঠিক রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়মিত বিরতিতে ডলার কিনছে। সেই ধারাবাহিকতায় শুধু চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই
২১ ঘণ্টা আগেজাহিদ হাসান, যশোর

শীতের রাত পেরিয়ে ভোরের আলো ফোটার আগেই যশোরের গ্রামাঞ্চলে শুরু হয় ব্যস্ততা। খেজুরগাছের নিচে হাজির হন গাছিরা। আগের বিকেলে কাটা গাছের ‘চোখ’ বেয়ে সারা রাত মাটির হাঁড়িতে জমেছে সুমিষ্ট খেজুর রস। ভোরে সেই রস নামিয়ে শুরু হয় আরেক কর্মযজ্ঞ; চুলায় জ্বাল দিয়ে গুড় তৈরির কাজ। বাড়ির নারীরাই মূলত এই প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব দেন। কয়েক ঘণ্টা জ্বালানোর পর তৈরি হয় সুস্বাদু খেজুর গুড় ও পাটালি।
শীত মৌসুম এলেই এমন দৃশ্য দেখা যায় খেজুর গুড়ের জেলা খ্যাত যশোরের প্রায় প্রতিটি গ্রামে। সম্প্রতি যশোরের খেজুর গুড় ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় এর ঐতিহ্যের পাশাপাশি অর্থনৈতিক সম্ভাবনাও নতুন করে সামনে এসেছে।
উৎপাদন ও বাজারের চিত্র
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে যশোরে প্রায় ১২০ কোটি টাকার খেজুর রস ও গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই উৎপাদন গ্রামীণ অর্থনীতির চাকা আরও গতিশীল করবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের।
বর্তমানে খেজুরের কাঁচা রস প্রতি মাটির হাঁড়ি ২০০ থেকে ৪০০ টাকা, দানা গুড় প্রতি কেজি ৩৫০-৪০০ টাকা এবং পাটালি প্রতি কেজি ৪৫০-৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারদর বাড়লেও গাছিরা বলছেন, শ্রম ও ঝুঁকির তুলনায় লাভ সীমিত।
গাছির সংকট বড় চ্যালেঞ্জ
যশোর সদর উপজেলার নওয়াপাড়া গ্রামের গাছি আজিবর প্রায় ৩৫ বছর ধরে খেজুর গাছ কাটছেন। তিনি বলেন, ‘আগে দেড় শ গাছ কাটতাম, এখন বয়সের কারণে ৩৫-৪০টার বেশি পারি না। রস ও গুড়ের দাম বেড়েছে ঠিকই, কিন্তু কাটার মতো গাছ কমে গেছে। আবার গাছ থাকলেও দক্ষ গাছির অভাব। এবার বেশি শীত পড়ায় রসও ভালো নামছে, গুড়ের উৎপাদনও বেশি।’

মনিরামপুর উপজেলার সরসকাটি গ্রামের গাছি অতিয়ারও প্রায় ৪০ বছর ধরে এই পেশায় যুক্ত। তিনি বলেন, এবার ৫০টা গাছ কাটছি। প্রতিদিন ৮-১০ কেজি গুড় তৈরি হয়। কাজটা খুব কষ্টের। তবে শীত মৌসুমে এই আয়েই পুরো বছরের সংসার চলে।
ই-কমার্সে বাড়ছে চাহিদা
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, যশোর জেলায় মোট খেজুরগাছের সংখ্যা ২৩ লাখ ৩০ হাজার ৬৯৫। এগুলোর মধ্যে চলতি মৌসুমে রস আহরণের উপযোগী গাছ রয়েছে ৩ লাখ ৭ হাজার ১৩০টি।
উৎপাদিত গুড় প্রথমে স্থানীয় হাটে বিক্রি হয়, পরে পাইকারদের মাধ্যমে তা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হয়। যশোরের খেজুর গুড় এখন বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। পাশাপাশি ই-কমার্স ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমভিত্তিক উদ্যোক্তাদের হাত ধরে গুড় ও পাটালি সরাসরি ভোক্তার ঘরে পৌঁছানো হচ্ছে। এতে বাজার যেমন সম্প্রসারিত হচ্ছে, তেমনি তৈরি হচ্ছে নতুন কর্মসংস্থান।
কৃষি বিভাগের উদ্যোগ
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোশাররফ হোসেন বলেন, যশোরের খেজুর গুড়ের স্বাদ ও মানের কারণে চাহিদা সব সময় বেশি। এবার শীত বেশি হওয়ায় রসের পরিমাণ ও মান—দুটোই ভালো। চলতি মৌসুমে প্রায় ১২০ কোটি টাকার রস ও গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। নিরাপদ খেজুর রস এবং গুড় উৎপাদনে কৃষকদের পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। উঠান বৈঠকের মাধ্যমে গাছিদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

শীতের রাত পেরিয়ে ভোরের আলো ফোটার আগেই যশোরের গ্রামাঞ্চলে শুরু হয় ব্যস্ততা। খেজুরগাছের নিচে হাজির হন গাছিরা। আগের বিকেলে কাটা গাছের ‘চোখ’ বেয়ে সারা রাত মাটির হাঁড়িতে জমেছে সুমিষ্ট খেজুর রস। ভোরে সেই রস নামিয়ে শুরু হয় আরেক কর্মযজ্ঞ; চুলায় জ্বাল দিয়ে গুড় তৈরির কাজ। বাড়ির নারীরাই মূলত এই প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব দেন। কয়েক ঘণ্টা জ্বালানোর পর তৈরি হয় সুস্বাদু খেজুর গুড় ও পাটালি।
শীত মৌসুম এলেই এমন দৃশ্য দেখা যায় খেজুর গুড়ের জেলা খ্যাত যশোরের প্রায় প্রতিটি গ্রামে। সম্প্রতি যশোরের খেজুর গুড় ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় এর ঐতিহ্যের পাশাপাশি অর্থনৈতিক সম্ভাবনাও নতুন করে সামনে এসেছে।
উৎপাদন ও বাজারের চিত্র
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে যশোরে প্রায় ১২০ কোটি টাকার খেজুর রস ও গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই উৎপাদন গ্রামীণ অর্থনীতির চাকা আরও গতিশীল করবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের।
বর্তমানে খেজুরের কাঁচা রস প্রতি মাটির হাঁড়ি ২০০ থেকে ৪০০ টাকা, দানা গুড় প্রতি কেজি ৩৫০-৪০০ টাকা এবং পাটালি প্রতি কেজি ৪৫০-৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারদর বাড়লেও গাছিরা বলছেন, শ্রম ও ঝুঁকির তুলনায় লাভ সীমিত।
গাছির সংকট বড় চ্যালেঞ্জ
যশোর সদর উপজেলার নওয়াপাড়া গ্রামের গাছি আজিবর প্রায় ৩৫ বছর ধরে খেজুর গাছ কাটছেন। তিনি বলেন, ‘আগে দেড় শ গাছ কাটতাম, এখন বয়সের কারণে ৩৫-৪০টার বেশি পারি না। রস ও গুড়ের দাম বেড়েছে ঠিকই, কিন্তু কাটার মতো গাছ কমে গেছে। আবার গাছ থাকলেও দক্ষ গাছির অভাব। এবার বেশি শীত পড়ায় রসও ভালো নামছে, গুড়ের উৎপাদনও বেশি।’

মনিরামপুর উপজেলার সরসকাটি গ্রামের গাছি অতিয়ারও প্রায় ৪০ বছর ধরে এই পেশায় যুক্ত। তিনি বলেন, এবার ৫০টা গাছ কাটছি। প্রতিদিন ৮-১০ কেজি গুড় তৈরি হয়। কাজটা খুব কষ্টের। তবে শীত মৌসুমে এই আয়েই পুরো বছরের সংসার চলে।
ই-কমার্সে বাড়ছে চাহিদা
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, যশোর জেলায় মোট খেজুরগাছের সংখ্যা ২৩ লাখ ৩০ হাজার ৬৯৫। এগুলোর মধ্যে চলতি মৌসুমে রস আহরণের উপযোগী গাছ রয়েছে ৩ লাখ ৭ হাজার ১৩০টি।
উৎপাদিত গুড় প্রথমে স্থানীয় হাটে বিক্রি হয়, পরে পাইকারদের মাধ্যমে তা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হয়। যশোরের খেজুর গুড় এখন বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। পাশাপাশি ই-কমার্স ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমভিত্তিক উদ্যোক্তাদের হাত ধরে গুড় ও পাটালি সরাসরি ভোক্তার ঘরে পৌঁছানো হচ্ছে। এতে বাজার যেমন সম্প্রসারিত হচ্ছে, তেমনি তৈরি হচ্ছে নতুন কর্মসংস্থান।
কৃষি বিভাগের উদ্যোগ
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোশাররফ হোসেন বলেন, যশোরের খেজুর গুড়ের স্বাদ ও মানের কারণে চাহিদা সব সময় বেশি। এবার শীত বেশি হওয়ায় রসের পরিমাণ ও মান—দুটোই ভালো। চলতি মৌসুমে প্রায় ১২০ কোটি টাকার রস ও গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। নিরাপদ খেজুর রস এবং গুড় উৎপাদনে কৃষকদের পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। উঠান বৈঠকের মাধ্যমে গাছিদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

দেশের মানুষের স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষা, উন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড গতিশীল রাখতে আসছে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) ১৫৪টি প্রকল্প নিচ্ছে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। দুই থেকে সাত বছর মেয়াদি এসব প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় চার লাখ কোটি টাকা। বিপুল অঙ্কের এই ব্যয়
১৩ মার্চ ২০২৫
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে আয়োজিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মুফতি ছাঈদ আহমাদ।
৩ ঘণ্টা আগে
দেশের ব্যাংকিং খাতের ভেতরে জমে থাকা অনিয়ম, রাজনৈতিক আশ্রয় ও কৃত্রিম হিসাবের পর্দা চলতি বছর যেন একে একে সরে যেতে শুরু করেছে। আর তাতেই সামনে এসেছে এক ভয়াবহ বাস্তবতা। সরকারি ও শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের ভারে এখন কার্যত দিশেহারা।
১৭ ঘণ্টা আগে
ডলার এখন রেমিট্যান্স, রপ্তানি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ—সবকিছুর সঙ্গে জড়িয়ে আছে। তাই বাজারে ডলার হাতছাড়া হওয়ার ভয়ে সবাই চুপ। এই ডলারের সরবরাহ ও দাম স্থিতিশীল রাখার পাশাপাশি পুরো বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য ঠিক রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়মিত বিরতিতে ডলার কিনছে। সেই ধারাবাহিকতায় শুধু চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই
২১ ঘণ্টা আগেজয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা

দেশের ব্যাংকিং খাতের ভেতরে জমে থাকা অনিয়ম, রাজনৈতিক আশ্রয় ও কৃত্রিম হিসাবের পর্দা চলতি বছর যেন একে একে সরে যেতে শুরু করেছে। আর তাতেই সামনে এসেছে এক ভয়াবহ বাস্তবতা। সরকারি ও শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের ভারে এখন কার্যত দিশেহারা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর প্রান্তিক শেষে সরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের হার দাঁড়িয়েছে ৪৯ দশমিক ৬৫ শতাংশে, আর ইসলামি ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে তা আরও বেশি—৫৯ দশমিক শূন্য ২ শতাংশে পৌঁছেছে। অর্থাৎ, এই দুটি খাতেই বিতরণ করা ঋণের অর্ধেকের বেশি অনাদায়ি হয়ে পড়েছে। যেখানে বিশেষায়িত ব্যাংকের খেলাপির হার ৪১ দশমিক ৯৫ ও বিদেশি ব্যাংকগুলোর খেলাপির হার মাত্র ৪ দশমিক ৯২ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, শরিয়াহভিত্তিক ১০টি ইসলামি ব্যাংক মোট ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৬০৫ কোটি টাকা ঋণ বিনিয়োগ করেছে। এর মধ্যে খেলাপি হয়েছে ২ লাখ ৮৩ হাজার ৫৫ কোটি টাকা। হিসাব বলছে, প্রতি ১০ টাকার প্রায় ৬ টাকাই এখন আদায় অনিশ্চিত। সেই তুলনায় শরিয়াহসহ দেশীয় বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৪ লাখ ৬৩ হাজার ১৮৫ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৩৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ। এই তুলনাতেই স্পষ্ট, খেলাপির বোঝা এককভাবে সবচেয়ে বেশি ইসলামি ব্যাংকগুলোর ঘাড়েই।
সরকারি ছয় ব্যাংকের অবস্থাও খুব একটা ভিন্ন নয়। এসব ব্যাংকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৫৮ হাজার ৭৯২ কোটি টাকা। মোট বিতরণ করা ঋণের প্রায় অর্ধেকই সেখানে অনাদায়ি। ব্যাংকার ও বিশ্লেষকদের মতে, এই সংকট রাতারাতি তৈরি হয়নি। বছরের পর বছর ধরে দুর্বল তদারকি, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ এবং ইচ্ছাকৃত খেলাপিকে আড়াল করার প্রবণতা ধীরে ধীরে ব্যাংকগুলোকে এই জায়গায় এনে দাঁড় করিয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন মনে করেন, খেলাপি ঋণের এত উচ্চ হার শুধু ব্যাংকিং খাতের ভেতরের সমস্যা নয়, এটি সামগ্রিক অর্থনীতির জন্য বড় ঝুঁকি। ব্যাংকগুলো নতুন ঋণ দিতে পারছে না, বিনিয়োগ কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ছে, শিল্প-কারখানার সম্প্রসারণ থেমে যাচ্ছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে কর্মসংস্থানে। তাঁর মতে, খেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা এবং ঋণ আদায়ে বাস্তবসম্মত উদ্যোগ ছাড়া পরিস্থিতির উন্নতি সম্ভব নয়।
ইসলামি ব্যাংকিং খাতে এস আলম, নাসা ও বেক্সিমকো গ্রুপের নাম বারবার আলোচনায় এসেছে। সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য, দীর্ঘদিন সরকারি মদদে এসব গ্রুপ বিপুল ঋণ নিয়ে খেলাপি হলেও তা আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি পায়নি। এখন সেই বাস্তবতা দিনের আলোর মতো স্পষ্ট।
সামগ্রিকভাবে দেশের ব্যাংকিং খাতের চিত্র আরও উদ্বেগজনক। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ১৮ লাখ ৩ হাজার ৮৪০ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি হয়েছে প্রায় ৬ লাখ ৪৪ হাজার ৫১৫ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৩৫ দশমিক ৭৩ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. মইনুল ইসলাম বলেন, বিগত সরকারের টানা সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে খেলাপি ঋণ কম দেখানোর যে অপচেষ্টা ছিল, তা এখন ভেঙে পড়েছে। সঠিক হিসাব সামনে আসায় হার ৩৬ শতাংশের কাছাকাছি পৌঁছেছে, যা বাস্তবতারই প্রতিফলন। তিনি আবারও শীর্ষ ১০ খেলাপির জন্য আলাদা ট্রাইব্যুনালের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, আগের সরকারের আমলে লুকিয়ে রাখা খেলাপি ঋণ প্রকাশ পাওয়ায় এই হার বেড়েছে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন ঋণ আদায়ে কঠোর নির্দেশনার কারণে আগের তুলনায় আদায় বেড়েছে।

দেশের ব্যাংকিং খাতের ভেতরে জমে থাকা অনিয়ম, রাজনৈতিক আশ্রয় ও কৃত্রিম হিসাবের পর্দা চলতি বছর যেন একে একে সরে যেতে শুরু করেছে। আর তাতেই সামনে এসেছে এক ভয়াবহ বাস্তবতা। সরকারি ও শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের ভারে এখন কার্যত দিশেহারা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর প্রান্তিক শেষে সরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের হার দাঁড়িয়েছে ৪৯ দশমিক ৬৫ শতাংশে, আর ইসলামি ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে তা আরও বেশি—৫৯ দশমিক শূন্য ২ শতাংশে পৌঁছেছে। অর্থাৎ, এই দুটি খাতেই বিতরণ করা ঋণের অর্ধেকের বেশি অনাদায়ি হয়ে পড়েছে। যেখানে বিশেষায়িত ব্যাংকের খেলাপির হার ৪১ দশমিক ৯৫ ও বিদেশি ব্যাংকগুলোর খেলাপির হার মাত্র ৪ দশমিক ৯২ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, শরিয়াহভিত্তিক ১০টি ইসলামি ব্যাংক মোট ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৬০৫ কোটি টাকা ঋণ বিনিয়োগ করেছে। এর মধ্যে খেলাপি হয়েছে ২ লাখ ৮৩ হাজার ৫৫ কোটি টাকা। হিসাব বলছে, প্রতি ১০ টাকার প্রায় ৬ টাকাই এখন আদায় অনিশ্চিত। সেই তুলনায় শরিয়াহসহ দেশীয় বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৪ লাখ ৬৩ হাজার ১৮৫ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৩৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ। এই তুলনাতেই স্পষ্ট, খেলাপির বোঝা এককভাবে সবচেয়ে বেশি ইসলামি ব্যাংকগুলোর ঘাড়েই।
সরকারি ছয় ব্যাংকের অবস্থাও খুব একটা ভিন্ন নয়। এসব ব্যাংকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৫৮ হাজার ৭৯২ কোটি টাকা। মোট বিতরণ করা ঋণের প্রায় অর্ধেকই সেখানে অনাদায়ি। ব্যাংকার ও বিশ্লেষকদের মতে, এই সংকট রাতারাতি তৈরি হয়নি। বছরের পর বছর ধরে দুর্বল তদারকি, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ এবং ইচ্ছাকৃত খেলাপিকে আড়াল করার প্রবণতা ধীরে ধীরে ব্যাংকগুলোকে এই জায়গায় এনে দাঁড় করিয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন মনে করেন, খেলাপি ঋণের এত উচ্চ হার শুধু ব্যাংকিং খাতের ভেতরের সমস্যা নয়, এটি সামগ্রিক অর্থনীতির জন্য বড় ঝুঁকি। ব্যাংকগুলো নতুন ঋণ দিতে পারছে না, বিনিয়োগ কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ছে, শিল্প-কারখানার সম্প্রসারণ থেমে যাচ্ছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে কর্মসংস্থানে। তাঁর মতে, খেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা এবং ঋণ আদায়ে বাস্তবসম্মত উদ্যোগ ছাড়া পরিস্থিতির উন্নতি সম্ভব নয়।
ইসলামি ব্যাংকিং খাতে এস আলম, নাসা ও বেক্সিমকো গ্রুপের নাম বারবার আলোচনায় এসেছে। সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য, দীর্ঘদিন সরকারি মদদে এসব গ্রুপ বিপুল ঋণ নিয়ে খেলাপি হলেও তা আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি পায়নি। এখন সেই বাস্তবতা দিনের আলোর মতো স্পষ্ট।
সামগ্রিকভাবে দেশের ব্যাংকিং খাতের চিত্র আরও উদ্বেগজনক। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ১৮ লাখ ৩ হাজার ৮৪০ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি হয়েছে প্রায় ৬ লাখ ৪৪ হাজার ৫১৫ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৩৫ দশমিক ৭৩ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. মইনুল ইসলাম বলেন, বিগত সরকারের টানা সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে খেলাপি ঋণ কম দেখানোর যে অপচেষ্টা ছিল, তা এখন ভেঙে পড়েছে। সঠিক হিসাব সামনে আসায় হার ৩৬ শতাংশের কাছাকাছি পৌঁছেছে, যা বাস্তবতারই প্রতিফলন। তিনি আবারও শীর্ষ ১০ খেলাপির জন্য আলাদা ট্রাইব্যুনালের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, আগের সরকারের আমলে লুকিয়ে রাখা খেলাপি ঋণ প্রকাশ পাওয়ায় এই হার বেড়েছে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন ঋণ আদায়ে কঠোর নির্দেশনার কারণে আগের তুলনায় আদায় বেড়েছে।

দেশের মানুষের স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষা, উন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড গতিশীল রাখতে আসছে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) ১৫৪টি প্রকল্প নিচ্ছে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। দুই থেকে সাত বছর মেয়াদি এসব প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় চার লাখ কোটি টাকা। বিপুল অঙ্কের এই ব্যয়
১৩ মার্চ ২০২৫
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে আয়োজিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মুফতি ছাঈদ আহমাদ।
৩ ঘণ্টা আগে
শীতের রাত পেরিয়ে ভোরের আলো ফোটার আগেই যশোরের গ্রামাঞ্চলে শুরু হয় ব্যস্ততা। খেজুরগাছের নিচে হাজির হন গাছিরা। আগের বিকেলে কাটা গাছের ‘চোখ’ বেয়ে সারা রাত মাটির হাঁড়িতে জমেছে সুমিষ্ট খেজুর রস।
৯ ঘণ্টা আগে
ডলার এখন রেমিট্যান্স, রপ্তানি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ—সবকিছুর সঙ্গে জড়িয়ে আছে। তাই বাজারে ডলার হাতছাড়া হওয়ার ভয়ে সবাই চুপ। এই ডলারের সরবরাহ ও দাম স্থিতিশীল রাখার পাশাপাশি পুরো বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য ঠিক রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়মিত বিরতিতে ডলার কিনছে। সেই ধারাবাহিকতায় শুধু চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই
২১ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ডলার এখন রেমিট্যান্স, রপ্তানি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ—সবকিছুর সঙ্গে জড়িয়ে আছে। তাই বাজারে ডলার হাতছাড়া হওয়ার ভয়ে সবাই চুপ। এই ডলারের সরবরাহ ও দাম স্থিতিশীল রাখার পাশাপাশি পুরো বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য ঠিক রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়মিত বিরতিতে ডলার কিনছে। সেই ধারাবাহিকতায় শুধু চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ প্রসঙ্গে আজকের পত্রিকাকে জানান, ডিসেম্বর মাসে কেনা ডলারের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি, ৯২ কোটি ডলার এবং চলতি অর্থবছর ধরে মোট কেনা হয়েছে ৩ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন ডলার। জুলাইয়ে প্রথম ডলার কেনা হয়েছিল ৪৮ কোটি ৪০ লাখ ডলার, আগস্টে ৪৫ কোটি ৪০ লাখ, সেপ্টেম্বরেই তা বেড়ে ৯২ কোটি ৯০ লাখে পৌঁছায়। এরপর অক্টোবর ও নভেম্বরে অবশ্য অনেকটাই কমে ১৪ কোটি ২০ লাখ এবং ৫ কোটি ৪০ লাখে নেমে আসে। ডিসেম্বরেই তার বড় উল্লম্ফন ঘটে, কেনার পরিমাণ দাঁড়ায় ৯২ কোটি ১০ লাখ ডলারে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, রেমিট্যান্স বৃদ্ধি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ, ব্যাংকিং চ্যানেলের শক্তিশালীকরণ এবং অনলাইনে আন্তর্জাতিক পণ্যের বাজার মনিটরিংয়ের ফলে বাজারে ডলারের সরবরাহ বেড়েছে। এ ছাড়া ওভার ও আন্ডার ইনভয়েসিং বন্ধ হওয়ায় ব্যবসার আড়ালে ডলার পাচার কমেছে। এসব কারণে ব্যাংকগুলোতে জমে থাকা অতিরিক্ত ডলার ক্রয় করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
আগের অর্থবছরগুলোর সঙ্গে তুলনায় এবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক ক্রেতার ভূমিকায়, যেখানে অতীতের বছরগুলোতে বড় অঙ্কে বিক্রি হতো। ২০২১-২২ অর্থবছরে বিক্রি হয়েছিল ৭ দশমিক ৬ বিলিয়ন, ২০২২-২৩ এ ছিল ১৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন, ২০২৩-২৪ এ ১২ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন এবং ২০২৪-২৫ এ ১ দশমিক ১২৪ বিলিয়ন ডলার। এই পরিবর্তন বাজারে স্থিতিশীলতার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
বর্তমান খোলাবাজারে ডলারের দর ১২৪-১২৫ টাকার মধ্যে, যেখানে গত বছরের এই সময়ে তা ছিল ১৩১ টাকা। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশে পণ্য আমদানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬১ বিলিয়ন ডলার, আগের বছরের তুলনায় ৭ শতাংশ কম। অনলাইনে বাজার নজরদারি এবং ওভার/আন্ডার ইনভয়েসিং নিয়ন্ত্রণে আসায় পণ্যের আড়াল থেকে ডলার পাচারও অনেক কমেছে।
মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডলার ক্রয় বাজারে স্থিতিশীলতা আনার জন্য সময়োপযোগী পদক্ষেপ। এর ফলে আমদানি, বিনিয়োগ ও বাজার ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়ক হয়েছে।’
সব মিলিয়ে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বৃদ্ধি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ, পাচার কমে আসা—সব মিলিয়ে ডলার বাজারে স্বস্তি ফিরিয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন ডলার বিক্রেতা নয়; বরং ক্রেতার ভূমিকায়, যা দেশের বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

ডলার এখন রেমিট্যান্স, রপ্তানি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ—সবকিছুর সঙ্গে জড়িয়ে আছে। তাই বাজারে ডলার হাতছাড়া হওয়ার ভয়ে সবাই চুপ। এই ডলারের সরবরাহ ও দাম স্থিতিশীল রাখার পাশাপাশি পুরো বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য ঠিক রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়মিত বিরতিতে ডলার কিনছে। সেই ধারাবাহিকতায় শুধু চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ প্রসঙ্গে আজকের পত্রিকাকে জানান, ডিসেম্বর মাসে কেনা ডলারের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি, ৯২ কোটি ডলার এবং চলতি অর্থবছর ধরে মোট কেনা হয়েছে ৩ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন ডলার। জুলাইয়ে প্রথম ডলার কেনা হয়েছিল ৪৮ কোটি ৪০ লাখ ডলার, আগস্টে ৪৫ কোটি ৪০ লাখ, সেপ্টেম্বরেই তা বেড়ে ৯২ কোটি ৯০ লাখে পৌঁছায়। এরপর অক্টোবর ও নভেম্বরে অবশ্য অনেকটাই কমে ১৪ কোটি ২০ লাখ এবং ৫ কোটি ৪০ লাখে নেমে আসে। ডিসেম্বরেই তার বড় উল্লম্ফন ঘটে, কেনার পরিমাণ দাঁড়ায় ৯২ কোটি ১০ লাখ ডলারে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, রেমিট্যান্স বৃদ্ধি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ, ব্যাংকিং চ্যানেলের শক্তিশালীকরণ এবং অনলাইনে আন্তর্জাতিক পণ্যের বাজার মনিটরিংয়ের ফলে বাজারে ডলারের সরবরাহ বেড়েছে। এ ছাড়া ওভার ও আন্ডার ইনভয়েসিং বন্ধ হওয়ায় ব্যবসার আড়ালে ডলার পাচার কমেছে। এসব কারণে ব্যাংকগুলোতে জমে থাকা অতিরিক্ত ডলার ক্রয় করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
আগের অর্থবছরগুলোর সঙ্গে তুলনায় এবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক ক্রেতার ভূমিকায়, যেখানে অতীতের বছরগুলোতে বড় অঙ্কে বিক্রি হতো। ২০২১-২২ অর্থবছরে বিক্রি হয়েছিল ৭ দশমিক ৬ বিলিয়ন, ২০২২-২৩ এ ছিল ১৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন, ২০২৩-২৪ এ ১২ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন এবং ২০২৪-২৫ এ ১ দশমিক ১২৪ বিলিয়ন ডলার। এই পরিবর্তন বাজারে স্থিতিশীলতার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
বর্তমান খোলাবাজারে ডলারের দর ১২৪-১২৫ টাকার মধ্যে, যেখানে গত বছরের এই সময়ে তা ছিল ১৩১ টাকা। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশে পণ্য আমদানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬১ বিলিয়ন ডলার, আগের বছরের তুলনায় ৭ শতাংশ কম। অনলাইনে বাজার নজরদারি এবং ওভার/আন্ডার ইনভয়েসিং নিয়ন্ত্রণে আসায় পণ্যের আড়াল থেকে ডলার পাচারও অনেক কমেছে।
মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডলার ক্রয় বাজারে স্থিতিশীলতা আনার জন্য সময়োপযোগী পদক্ষেপ। এর ফলে আমদানি, বিনিয়োগ ও বাজার ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়ক হয়েছে।’
সব মিলিয়ে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বৃদ্ধি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ, পাচার কমে আসা—সব মিলিয়ে ডলার বাজারে স্বস্তি ফিরিয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন ডলার বিক্রেতা নয়; বরং ক্রেতার ভূমিকায়, যা দেশের বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

দেশের মানুষের স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষা, উন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড গতিশীল রাখতে আসছে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) ১৫৪টি প্রকল্প নিচ্ছে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। দুই থেকে সাত বছর মেয়াদি এসব প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় চার লাখ কোটি টাকা। বিপুল অঙ্কের এই ব্যয়
১৩ মার্চ ২০২৫
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে আয়োজিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মুফতি ছাঈদ আহমাদ।
৩ ঘণ্টা আগে
শীতের রাত পেরিয়ে ভোরের আলো ফোটার আগেই যশোরের গ্রামাঞ্চলে শুরু হয় ব্যস্ততা। খেজুরগাছের নিচে হাজির হন গাছিরা। আগের বিকেলে কাটা গাছের ‘চোখ’ বেয়ে সারা রাত মাটির হাঁড়িতে জমেছে সুমিষ্ট খেজুর রস।
৯ ঘণ্টা আগে
দেশের ব্যাংকিং খাতের ভেতরে জমে থাকা অনিয়ম, রাজনৈতিক আশ্রয় ও কৃত্রিম হিসাবের পর্দা চলতি বছর যেন একে একে সরে যেতে শুরু করেছে। আর তাতেই সামনে এসেছে এক ভয়াবহ বাস্তবতা। সরকারি ও শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের ভারে এখন কার্যত দিশেহারা।
১৭ ঘণ্টা আগে