Ajker Patrika

প্রকল্প শেষ না হতেই পাইপ বদল, খরচ ১৫০ কোটি

  • প্রকল্পের পাইপ কেনাকাটায় অনিয়মের অভিযোগ ছিল।
  • চীনের আদালতে ঘুষ লেনদেনের কথা স্বীকারও করেছে পাইপ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান
  • খালের নিচে বসানো পাইপ পরিবর্তনের নামে খরচ বৃদ্ধির উদ্যোগ।
তোফাজ্জল হোসেন রুবেল, ঢাকা 
আপডেট : ১৩ মার্চ ২০২৫, ১৩: ৪০
প্রকল্প শেষ না হতেই পাইপ বদল, খরচ ১৫০ কোটি

অনিয়ম যেন পিছু ছাড়ছে না ঢাকা ওয়াসার গন্ধবপুর পানি শোধনাগার প্রকল্পে। কমবেশি ৩ হাজার ৯৪ কোটি টাকার এই প্রকল্পের কাজ এখনো চলমান।

মূল প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৮০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ২৩ কিলোমিটার পানি সরবরাহের পাইপ কিনে বসানো হয়েছিল আগেই। এ পাইপ কেনাকাটায় উঠেছে অনিয়মের অভিযোগ। চীনের একটি আদালতে সংশ্লিষ্টদের মোটা অঙ্কের ঘুষ দেওয়ার কথা স্বীকারও করেছে পাইপ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান। এবার খালের তলদেশে বসানো এসব নিম্নমানের পাইপ কিছুটা পরিবর্তনের নামে আরও দেড়শ কোটি টাকা খরচ করা হচ্ছে। এক কিলোমিটার পাইপ পরিবর্তন করতে উঠেপড়ে লেগেছেন প্রকল্প পরিচালক (পিডি) ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠান। এজন্য টাকা চেয়ে চিঠিও দেওয়া হয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ফজলুল রহমান আজকের পত্রিকা’কে বলেন, ‘গন্ধবপুর পানি শোধনাগার প্রকল্পে পাইপ পরিবর্তন বা পণ্ড ক্রসিংয়ের জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সুপারিশে পিডি ৮০ কোটি টাকার মতো চেয়েছেন। এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি এখনো। তবে একটুকু বলতে পারি; আমি এখানে কোনো টাকা দিতে পারব না—তা জানিয়ে দিয়েছি। যদি প্রকল্পের টাকা থেকে কাজ করতে পারে, তাহলে করুক।’

ঢাকা ওয়াসা সূত্রে জানা যায়, ঢাকা ওয়াসার ‘পরিবেশবান্ধব, টেকসই ও গণমুখী পানি ব্যবস্থাপনা’ প্রকল্পের যে অংশে এক কিলোমিটার পাইপ পরিবর্তন করার কথা বলা হচ্ছে সেটি প্যাকেজ-১ এর আরডব্লিউপি অংশের আওতায় আছে। বর্তমানে খালের এ অংশে বসানো হয়েছে ‘ডাকটাইল আয়রন’ পাইপ। তা পরিবর্তন করে সেখানে ‘কার্বন স্টিল’ পাইপ বসানো হচ্ছে। এই পাইপ পরিবর্তনে ৮ দশমিক ১ মিলিয়ন ডলার ব্যয় বৃদ্ধির জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠান একটি প্রস্তাব দিয়েছে। এ প্রস্তাব প্রকল্প পরিচালকের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার বিভাগে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়।

এ নিয়ে ওয়াসার একাধিক কর্মকর্তা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, একটি প্রকল্পে পাইপ বসানো হয়েছে মোট ২৩ কিলোমিটার। সেখানে মাঝপথ থেকে এক কিলোমিটার পরিবর্তন করা হচ্ছে। যে অংশটুকু পাইপ পরিবর্তনের কথা বলা হচ্ছে, তা খালের অংশ। প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার আগেই এ পাইপ কীভাবে ‘ড্যামেজ’ বা খারাপ হলো? সেই বিষয়ে আগে তদন্ত হওয়া দরকার।

জানতে চাইলে দুদক সংস্কার কমিশনের প্রধান ও ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান গতকাল বুধবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এটা কারও মামার বাড়ির আবদার না। জনগণের অর্থে পরিচালিত প্রকল্প, জনস্বার্থে বাস্তবায়িত হবে। কারও খেয়ালখুশিমতো বরাদ্দ চাইবে, সেটা তো হতে পারে না।’

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী পুরো ২৩ কিলোমিটার পাইপের চুক্তি মোতাবেক গুণগত মান নিশ্চিত সাপেক্ষে সরবরাহকারী মূল অনুমোদিত মূল্য প্রাপ্য হবে। এমনকি যদি যথানিয়মে চুক্তি সম্পাদিত হয়ে থাকে, তবে সরবরাহ পরবর্তী নির্ধারিত মেয়াদের জন্য রক্ষণাবেক্ষণের দায়ও সরবরাহকারীর। অতএব ডেলিভারির আগে কোনো যুক্তিতেই অতিরিক্ত বরাদ্দ যৌক্তিক হতে পারে না। যদি কোনো কারণে স্থাপিত পাইপ পরিবর্তন করতে হয় তার ব্যয় সরবরাহকারীর বহন করতে হবে। এর দায় সরকার গ্রহণ করতে পারে না। এ ক্ষেত্রে অতিরিক্ত খরচের জন্য নতুন কোনো বরাদ্দের প্রস্তাব সরকার অনুমোদন দিলে তা প্রশ্নবিদ্ধ হবে।’

ওয়াসার কর্মকর্তারা জানান, ওয়াসার এ বিশাল বাজেটের প্রকল্পটিকে তিনটি প্যাকেজে ভাগ করে সংস্থাটি। এর মধ্যে একটি প্যাকেজের দরপত্রের মূল্য ৩ হাজার ৯৪ কোটি টাকা। সেখানে রয়েছে পানি সরবরাহের জন্য পাইপ কেনাকাটা। আর এ অংশে শুরুতেই অনিয়ম হয়েছে। চুক্তি করা প্রতিষ্ঠান থেকে পানির পাইপ কেনার পরিবর্তে অনভিজ্ঞ প্রতিষ্ঠান থেকে নিম্নমানের পাইপ কেনা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সংক্ষুব্ধ চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আদালতে অভিযোগ দিলে তা প্রমাণিত হয়।

কর্মকর্তাদের দাবি, প্রকল্পটিতে কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে ‘সুয়েজ অ্যান্ড এটিভি ভেনেওলিয়া’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে। ১৬০০ মিলিমিটার ব্যাসের মোট ২৩ কিলোমিটার পাইপ বসানোর জন্য ‘সুয়েজ অ্যান্ড এটিভি ভেনেওলিয়া’ নামের প্রতিষ্ঠানটি ফ্রান্সের সেন্ট গোবিন, জাপানের কুবোট এবং চীনের শিংশিং নামের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়। নিয়ম অনুযায়ী তিনটি প্রতিষ্ঠানের যেকোনো একটি থেকে পাইপ নিতে পারবে ঠিকাদার। পরে চীনের শিংশিং-এর কাছ থেকে অর্ধেক পাইপ নিয়ে বাকি অর্ধেক পাইপ কম দামে শ্যানডং গুয়োমিং নামের প্রতিষ্ঠান থেকে নেওয়া হয়। বিষয়টি জানতে পেরে শিংশিং নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চীনের আদালতে অভিযোগ দেন। এরপর শ্যানডং গুয়োমিং চীনের আদালতকে জানায়, তারা এ কাজটি পেতে সংশ্লিষ্টদের কমবেশি ৬৫ কোটি টাকা দিয়েছে। তবে এই ‘৬৫ কোটি টাকা’ সার্ভিস চার্জ নামে উল্লেখ করেন। যদিও প্রকল্প প্রস্তাবনায় (ডিপিপি) এ ধরনের সার্ভিস চার্জ নামে কিছু নেই।

এসব বিষয়ে জানতে প্রকল্প পরিচালক ওয়াহিদুল ইসলাম মুরাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিস্তারিত শুনে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কেরানীগঞ্জে মাদ্রাসায় বিস্ফোরণ: সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় রিমান্ডে ৬

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় মাদ্রাসা ভবনে বিস্ফোরণ। ফাইল ছবি
ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় মাদ্রাসা ভবনে বিস্ফোরণ। ফাইল ছবি

ঢাকার কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদে মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ ও বিপুল পরিমাণ বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধারের ঘটনায় ছয়জনকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাহবুবুর রহমান এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

রিমান্ডে নেওয়া ছয়জন হলেন—শাহিন ওরফে আবু বকর ওরফে মুসা, মো. আমিনুর ওরফে দরজি আমিন, মো. শাফিয়ার রহমান ফকির, আছিয়া বেগম (পলাতক আসামি ও ওই মাদ্রাসার পরিচালনার দায়িত্বে থাকা আল আমিনের স্ত্রী), ইয়াসমিন আক্তার ও আসমানী খাতুন ওরফে আসমা। তাঁদের মধ্যে পুরুষদের ৭ দিন করে এবং নারী আসামিদের ৩ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।

হাসনাবাদের চার কক্ষের একটি একতলা বাড়ি ভাড়া নিয়ে পরিচালিত উম্মাল কুরা ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসায় গত শুক্রবার সকালে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হয়। এতে দুটি কক্ষের দেয়াল ও ছাদের একাংশ ধসে পড়ে। আহত হন চারজন। পুলিশ সেখান থেকে ককটেল, রাসায়নিক, বোমা তৈরির বিপুল সরঞ্জাম উদ্ধার করে।

ওই মাদ্রাসার পরিচালক শেখ আল আমিন স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে বাড়িটির একটি কক্ষে থাকতেন। ঘটনার পর থেকে তিনি পলাতক। জেএমবির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে তিনি ২০১৭ ও ২০২০ সালে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন।

মাদ্রাসায় বিস্ফোরণের ঘটনায় পুলিশ শনিবার ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে। এ ঘটনায় দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করে পুলিশ।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক মো. জহুরুল ইসলাম গ্রেপ্তার ছয়জনকে আজ আদালতে হাজির করে প্রত্যেকের ১০ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করেন। শুনানিতে তিনি বলেন, গ্রেপ্তার আসমানী খাতুন এর আগেও জঙ্গিসম্পৃক্ততার অভিযোগে কারাগারে ছিলেন। শাহিনের বিরুদ্ধেও নাশকতার মামলা রয়েছে।

শুনানির সময় কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন আল আমিনের স্ত্রী আছিয়া বেগম। তিনি দাবি করেন, তাঁর স্বামী এক বছর ধরে তাঁর সঙ্গে ছিলেন না। স্বামী তাঁকে নির্যাতন করতেন। স্বামী অপরাধ করে থাকতে পারেন, কিন্তু তাঁরা নির্দোষ। তাঁর (আছিয়ার) ভাইয়ের স্ত্রী আসমানী শুধু তাঁদের দেখতে এসে গ্রেপ্তার হয়েছেন।

এ মামলায় আসমানী খাতুন ছাড়া অন্য আসামিদের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। আসমানীর আইনজীবী আদালতে বলেন, আগের মামলায় কোনো সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি বলেই আসমানী খাতুন খালাস পেয়েছিলেন। এ জন্য তাঁকে এই মামলায় রিমান্ডে নেওয়ার মতো উপাদান নেই। এ ঘটনার সঙ্গেও তাঁর সম্পৃক্ততা নেই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

টাঙ্গাইল-১ আসনে জামায়াতের প্রার্থী পরিবর্তন

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি 
মোহাম্মদ আব্দুল্লাহেল কাফী। ছবি: সংগৃহীত
মোহাম্মদ আব্দুল্লাহেল কাফী। ছবি: সংগৃহীত

টাঙ্গাইল-১ (মধুপুর-ধনবাড়ী) আসনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী পরিবর্তন করা হয়েছে। এই আসনে অধ্যক্ষ মোন্তাজ আলীকে পরিবর্তন করে মোহাম্মদ আব্দুল্লাহেল কাফীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়।

আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) মধুপুর উপজেলা জামায়াতের আমির মো. আবদুল কাদির এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে নির্বাচনী বিধিমালার শর্তের ব্যত্যয় ঘটায় এই পরিবর্তন আনা হয়েছে।

জানা গেছে, টাঙ্গাইল জেলা জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য ও মধুপুর সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মো. মোন্তাজ আলীকে দলের পক্ষ থেকে টাঙ্গাইল-১ (মধুপুর-ধনবাড়ী) আসনে মনোনয়ন দেওয়া হয়। তিনি উভয় উপজেলায় স্থানীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে ব্যাপকভাবে জনসংযোগও করেন। কিন্তু মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করে তা পূরণের সময় নির্বাচনী বিধিমালার শর্ত অনুসরণ করতে গিয়ে বিষয়টি নজরে আসে।

মধুপুর উপজেলা জামায়াতের আমির মো. আবদুল কাদির জানান, নির্বাচনী বিধিমালা অনুসারে সরকারি চাকরিজীবীরা নির্বাচনে অংশ নিতে চাইলে অবসরের তিন বছর সময় অতিবাহিত হতে হয়। কিন্তু অধ্যক্ষ মো. মোন্তাজ আলী মধুপুর সরকারি কলেজ থেকে অবসর নেওয়ার পর তফসিল ঘোষণার দিন পর্যন্ত তাঁর সময় হয়েছে ২ বছর ৭ মাস। এই জটিলতার কারণে মনোনয়নঝুঁকি এড়াতে নতুন প্রার্থী দেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বসুন্ধরা থেকে চীনা নাগরিকের মরদেহ উদ্ধার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজধানীর ভাটারা থানার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি বাসা থেকে এক চীনা নাগরিকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত ব্যক্তির নাম ওয়াং পিং লিউ। তিনি ঢাকায় কেমিক্যালের ব্যবসা করতেন বলে জানা গেছে। বর্তমানে তাঁর মরদেহ এভারকেয়ার হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। পরিবার এলে তাদের চাওয়া অনুযায়ী পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

ডিএমপি সূত্রে জানা যায়, গতকাল শনিবার দুপুরে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার জি-ব্লকের ২৩ নম্বর সড়কের ৭৫৭ নম্বর বাসা থেকে তাঁর মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।

আজ রোববার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গুলশান বিভাগের বাড্ডা জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) মো. আসাদুজ্জামান এ ঘটনার বিষয়ে বলেন, ‘মৃত ওয়াং পিং লিউ একটি ফ্ল্যাটে একাই থাকতেন। তাঁর পরিবার চীনে থাকে। গতকাল তাঁর স্ত্রী তাঁকে ফোনে পাচ্ছিলেন না। এরপর তিনি বিষয়টি বাংলাদেশের চীনা দূতাবাস ও মৃত ওয়াংয়ের ব্যবসায়িক পার্টনারকে জানান। এরপর বাড়িওয়ালা, ব্যবসায়িক পার্টনার ও পুলিশ গিয়ে তাঁকে একটি কক্ষের মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখেন।’

এসি মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘তিনি আগেই মারা গিয়েছিলেন। পরে তাঁকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকেরাও জানান, তিনি অনেক আগেই মারা গেছেন। তবে কী কারণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে, এখনো জানা যায়নি। জানতে পেরেছি, তাঁর ডায়াবেটিসহ আরও কিছু রোগ ছিল। তাঁর শরীরে কোনো জখম পাওয়া যায়নি। আমরা বাড়ির সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। সেখানেও সন্দেহজনক কিছু পাওয়া যায়নি। তবে আমরা বিষয়টি বিস্তারিত তদন্ত করে দেখছি।’

মো. আসাদুজ্জামান আরও বলেন, ‘আজ মৃত চীনা নাগরিকের স্বজনদের ঢাকায় আসার কথা ছিল। তবে রাত ৯টা পর্যন্ত তাঁরা কেউ যোগাযোগ করেননি। দূতাবাসকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। স্বজনেরা এলে তাঁদের চাওয়া অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এদিকে ভাটারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইমাউল হক বলেন, মৃত চীনা নাগরিক দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে ব্যবসা করছেন। তাঁর মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখার চেষ্টা চলছে। পরিবার ময়নাতদন্ত করতে চাইলে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মুনাফিকি না করলে ৮ দলের ঐক্য অটুট থাকবে: ফয়জুল

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
বরিশাল-৫ আসনে সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীমের মনোনয়নপত্র জমা। ছবি: আজকের পত্রিকা
বরিশাল-৫ আসনে সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীমের মনোনয়নপত্র জমা। ছবি: আজকের পত্রিকা

মুনাফিকি না করলে ৮ দলের ঐক্য অটুট থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম। আজ রোববার জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে বরিশাল-৫ আসনের মনোনয়নপত্র জমা শেষে তিনি এই মন্তব্য করেন।

সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ৮ দলের (বর্ধিত হয়ে ১০ দল) এক ব্যালট এক বাক্স নীতি অটল রয়েছে। কেউ যদি মুনাফিকি না করে কিংবা ক্ষমতার লোভে না পড়ে, তাহলে এই ঐক্য অটুট থাকবে।’

জোট ও আসন বণ্টন প্রসঙ্গে ফয়জুল করীম বলেন, ‘অনেকে আমাদের কাছে প্রশ্ন করে, জামায়াত কি আমাদের আসন ছেড়ে দেবে? এটি ভুল প্রশ্ন। এখানে কেউ কাউকে সিট দেবে না। আমরা অ্যালায়েন্স করব। যার যেখানে অবস্থান ভালো, সে সেখানেই নির্বাচন করবে।’

উল্লেখ্য, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এখন পর্যন্ত ৪৭ জন প্রার্থী মোট ৪৯টি মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। তাঁদের মধ্যে দুজন প্রার্থী তিনটি করে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন বলে জানান জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা খায়রুল ইসলাম সুমন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত