Ajker Patrika

প্রকল্প শেষ না হতেই পাইপ বদল, খরচ ১৫০ কোটি

  • প্রকল্পের পাইপ কেনাকাটায় অনিয়মের অভিযোগ ছিল।
  • চীনের আদালতে ঘুষ লেনদেনের কথা স্বীকারও করেছে পাইপ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান
  • খালের নিচে বসানো পাইপ পরিবর্তনের নামে খরচ বৃদ্ধির উদ্যোগ।
তোফাজ্জল হোসেন রুবেল, ঢাকা 
আপডেট : ১৩ মার্চ ২০২৫, ১৩: ৪০
প্রকল্প শেষ না হতেই পাইপ বদল, খরচ ১৫০ কোটি

অনিয়ম যেন পিছু ছাড়ছে না ঢাকা ওয়াসার গন্ধবপুর পানি শোধনাগার প্রকল্পে। কমবেশি ৩ হাজার ৯৪ কোটি টাকার এই প্রকল্পের কাজ এখনো চলমান।

মূল প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৮০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ২৩ কিলোমিটার পানি সরবরাহের পাইপ কিনে বসানো হয়েছিল আগেই। এ পাইপ কেনাকাটায় উঠেছে অনিয়মের অভিযোগ। চীনের একটি আদালতে সংশ্লিষ্টদের মোটা অঙ্কের ঘুষ দেওয়ার কথা স্বীকারও করেছে পাইপ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান। এবার খালের তলদেশে বসানো এসব নিম্নমানের পাইপ কিছুটা পরিবর্তনের নামে আরও দেড়শ কোটি টাকা খরচ করা হচ্ছে। এক কিলোমিটার পাইপ পরিবর্তন করতে উঠেপড়ে লেগেছেন প্রকল্প পরিচালক (পিডি) ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠান। এজন্য টাকা চেয়ে চিঠিও দেওয়া হয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ফজলুল রহমান আজকের পত্রিকা’কে বলেন, ‘গন্ধবপুর পানি শোধনাগার প্রকল্পে পাইপ পরিবর্তন বা পণ্ড ক্রসিংয়ের জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সুপারিশে পিডি ৮০ কোটি টাকার মতো চেয়েছেন। এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি এখনো। তবে একটুকু বলতে পারি; আমি এখানে কোনো টাকা দিতে পারব না—তা জানিয়ে দিয়েছি। যদি প্রকল্পের টাকা থেকে কাজ করতে পারে, তাহলে করুক।’

ঢাকা ওয়াসা সূত্রে জানা যায়, ঢাকা ওয়াসার ‘পরিবেশবান্ধব, টেকসই ও গণমুখী পানি ব্যবস্থাপনা’ প্রকল্পের যে অংশে এক কিলোমিটার পাইপ পরিবর্তন করার কথা বলা হচ্ছে সেটি প্যাকেজ-১ এর আরডব্লিউপি অংশের আওতায় আছে। বর্তমানে খালের এ অংশে বসানো হয়েছে ‘ডাকটাইল আয়রন’ পাইপ। তা পরিবর্তন করে সেখানে ‘কার্বন স্টিল’ পাইপ বসানো হচ্ছে। এই পাইপ পরিবর্তনে ৮ দশমিক ১ মিলিয়ন ডলার ব্যয় বৃদ্ধির জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠান একটি প্রস্তাব দিয়েছে। এ প্রস্তাব প্রকল্প পরিচালকের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার বিভাগে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়।

এ নিয়ে ওয়াসার একাধিক কর্মকর্তা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, একটি প্রকল্পে পাইপ বসানো হয়েছে মোট ২৩ কিলোমিটার। সেখানে মাঝপথ থেকে এক কিলোমিটার পরিবর্তন করা হচ্ছে। যে অংশটুকু পাইপ পরিবর্তনের কথা বলা হচ্ছে, তা খালের অংশ। প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার আগেই এ পাইপ কীভাবে ‘ড্যামেজ’ বা খারাপ হলো? সেই বিষয়ে আগে তদন্ত হওয়া দরকার।

জানতে চাইলে দুদক সংস্কার কমিশনের প্রধান ও ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান গতকাল বুধবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এটা কারও মামার বাড়ির আবদার না। জনগণের অর্থে পরিচালিত প্রকল্প, জনস্বার্থে বাস্তবায়িত হবে। কারও খেয়ালখুশিমতো বরাদ্দ চাইবে, সেটা তো হতে পারে না।’

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী পুরো ২৩ কিলোমিটার পাইপের চুক্তি মোতাবেক গুণগত মান নিশ্চিত সাপেক্ষে সরবরাহকারী মূল অনুমোদিত মূল্য প্রাপ্য হবে। এমনকি যদি যথানিয়মে চুক্তি সম্পাদিত হয়ে থাকে, তবে সরবরাহ পরবর্তী নির্ধারিত মেয়াদের জন্য রক্ষণাবেক্ষণের দায়ও সরবরাহকারীর। অতএব ডেলিভারির আগে কোনো যুক্তিতেই অতিরিক্ত বরাদ্দ যৌক্তিক হতে পারে না। যদি কোনো কারণে স্থাপিত পাইপ পরিবর্তন করতে হয় তার ব্যয় সরবরাহকারীর বহন করতে হবে। এর দায় সরকার গ্রহণ করতে পারে না। এ ক্ষেত্রে অতিরিক্ত খরচের জন্য নতুন কোনো বরাদ্দের প্রস্তাব সরকার অনুমোদন দিলে তা প্রশ্নবিদ্ধ হবে।’

ওয়াসার কর্মকর্তারা জানান, ওয়াসার এ বিশাল বাজেটের প্রকল্পটিকে তিনটি প্যাকেজে ভাগ করে সংস্থাটি। এর মধ্যে একটি প্যাকেজের দরপত্রের মূল্য ৩ হাজার ৯৪ কোটি টাকা। সেখানে রয়েছে পানি সরবরাহের জন্য পাইপ কেনাকাটা। আর এ অংশে শুরুতেই অনিয়ম হয়েছে। চুক্তি করা প্রতিষ্ঠান থেকে পানির পাইপ কেনার পরিবর্তে অনভিজ্ঞ প্রতিষ্ঠান থেকে নিম্নমানের পাইপ কেনা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সংক্ষুব্ধ চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আদালতে অভিযোগ দিলে তা প্রমাণিত হয়।

কর্মকর্তাদের দাবি, প্রকল্পটিতে কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে ‘সুয়েজ অ্যান্ড এটিভি ভেনেওলিয়া’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে। ১৬০০ মিলিমিটার ব্যাসের মোট ২৩ কিলোমিটার পাইপ বসানোর জন্য ‘সুয়েজ অ্যান্ড এটিভি ভেনেওলিয়া’ নামের প্রতিষ্ঠানটি ফ্রান্সের সেন্ট গোবিন, জাপানের কুবোট এবং চীনের শিংশিং নামের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়। নিয়ম অনুযায়ী তিনটি প্রতিষ্ঠানের যেকোনো একটি থেকে পাইপ নিতে পারবে ঠিকাদার। পরে চীনের শিংশিং-এর কাছ থেকে অর্ধেক পাইপ নিয়ে বাকি অর্ধেক পাইপ কম দামে শ্যানডং গুয়োমিং নামের প্রতিষ্ঠান থেকে নেওয়া হয়। বিষয়টি জানতে পেরে শিংশিং নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চীনের আদালতে অভিযোগ দেন। এরপর শ্যানডং গুয়োমিং চীনের আদালতকে জানায়, তারা এ কাজটি পেতে সংশ্লিষ্টদের কমবেশি ৬৫ কোটি টাকা দিয়েছে। তবে এই ‘৬৫ কোটি টাকা’ সার্ভিস চার্জ নামে উল্লেখ করেন। যদিও প্রকল্প প্রস্তাবনায় (ডিপিপি) এ ধরনের সার্ভিস চার্জ নামে কিছু নেই।

এসব বিষয়ে জানতে প্রকল্প পরিচালক ওয়াহিদুল ইসলাম মুরাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিস্তারিত শুনে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বদলি নিয়ে ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ শিক্ষক নেতার

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। ছবি: সংগৃহীত ক্যাটা: সারা দেশ, ময়মনসিংহ
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। ছবি: সংগৃহীত ক্যাটা: সারা দেশ, ময়মনসিংহ

সহকর্মী এবং নিজের বদলি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক লাইভে এসে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। তিনি বলেন, ‘আমাকে সাড়ে ৪০০ মাইল দূরে বদলি করা হয়েছে। এতে আমি বিচলিত নই।’

আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ফেসবুক লাইভে এসে আবুল কাশেম বলেন, ‘আমার মতো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের তিন দফা দাবি আদায়ের নেতৃত্ব দেওয়া শতাধিক শিক্ষককে বদলি করা হয়েছে পার্শ্ববর্তী জেলা এবং বিভাগে। আরও অনেককে বদলি করা হতে পারে। এ নিয়ে কেউ বিচলিত হবেন না। প্রয়োজনে আইনি লড়াইয়ে যাব। তবে আন্দোলন থেকে সরে আসব না। আপনাদের পাশে রয়েছি। অবিলম্বে আরও কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা আসবে। সে জন্য যদি জেলেও যেতে হয়, প্রস্তুত রয়েছি।’

এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেমের সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া মেলেনি।

৪ ডিসেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (পলিসি ও অপারেশন) মাহফুজা খাতুন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার চানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেমকে বরিশাল সদরের চরবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আমনের বাম্পার ফলনেও মুখে হাসি নেই কৃষকের, বাজারে ধানের দাম কমায় হতাশা

মাহিদুল ইসলাম, মৌলভীবাজার
জমির ধান কাটছেন কৃষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
জমির ধান কাটছেন কৃষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

মৌলভীবাজারের চলতি মৌসুমে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফসল ঘরে তুলতে দিনরাত ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কৃষকেরা। তবে বাজারে ধানের দাম কম হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন তাঁরা। কৃষকদের অভিযোগ, বাজারে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ধানের দাম কমিয়ে দিয়েছেন। তাই ফলন ভালো হওয়ার পরও বাজারে ধানের যথার্থ মূল্য না পাওয়ায় লোকসানে পড়ছেন তাঁরা।

কৃষকেরা জানান, চলতি আমন মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের ফলন অনেক ভালো হয়েছে। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ধানের দাম অনেক কম। গত বছর বাজারে যেখানে ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকায় প্রতি মণ ধান বিক্রি হয়েছে, এই বছর মাঝারি শুকনা ধান ৯০০ ও শুকনা ধান ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বীজতলা থেকে শুরু করে ফসল ঘরে তোলার আগপর্যন্ত অনেক শ্রম ও টাকা খরচ করতে হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ৯৮ হাজার ২০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ করা হয়েছে। এর থেকে ৪ লাখ ৪১ হাজার ৯০ টন ধান উৎপাদন হবে। আর এই ধান থেকে ২ লাখ ৯৫ হাজার ৫৩০ মেট্রিক টন চাল পাওয়া যাবে। ইতিমধ্যে ৬৫ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে। আমন ধানের শতভাগ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ ধান ঘরে তুলতে পারবেন কৃষকেরা।

বাজারে আমন ধানের দাম কম হলেও সরকারিভাবে ভালো দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস সূত্রে জানা গেছে, সরকারিভাবে প্রতি কেজি আমন ধান ৩৪ টাকা মূল্যে ৭৯০ টন, সেদ্ধ চাল ৫০ টাকা কেজি মূল্যে ২ হাজার ৬৭৭ টন ও আতপ চাল ৪৯ টাকা কেজি মূল্যে ৫ হাজার ৬৪৬ টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

জেলার কমলগঞ্জ, রাজনগর, কুলাউড়া ও সদর উপজেলার আমনখেত ঘুরে দেখা যায়, কৃষকেরা পাকা আমন ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত। অনেক এলাকায় দ্রুত সময়ে কম্বাইন হারভেস্টারের মাধ্যমে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ একসঙ্গে সেরে নিচ্ছেন কৃষকেরা। এতে সময়, খরচ ও কষ্ট কম করতে হচ্ছে। আবার কেউ কাজের লোক এনে ধান কেটে ফসলের মাঠেই মাড়াই করে সেদ্ধ দিচ্ছেন। অনেক কৃষক মাঠের মধ্যে রাত জেগে ধান সেদ্ধ করছেন। তবে সবকিছু ঠিক থাকলেও ধানের দাম কম থাকায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন কৃষকেরা।

কমলগঞ্জ উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়ন কৃষক আনোয়ার খান বলেন, ‘গত বছর আমাদের ধান একেবারেই হয়নি। এ বছর অনেক ভালো ধান হয়েছে। প্রত্যাশার চেয়ে বেশি ফলন হয়েছে। তবে বাজারে ধানের দাম অনেক কম। প্রতি মণ ধান মাত্র ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কৃষিতে আগের চেয়ে অনেক বেশি খরচ বেড়েছে। সে তুলনায় ধানের দাম বাড়েনি।’

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) মিলন কান্তি চাকমা বলেন, ‘আমাদের ধান-চাল সংগ্রহের কার্যক্রম ২০ নভেম্বর শুরু হয়েছে; চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। সরকারিভাবে ধানের দাম গত বছরের তুলনায় কেজিপ্রতি ১ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। একটা সময় আমরা ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারতাম না; তবে এখন ধান-চালের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়। আশা করি, চলতি মৌসুমে আমাদের লক্ষ্য পূরণ হবে।’

মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. জালাল উদ্দীন বলেন, ‘জেলায় এ বছর খুব ভালো আমন ধান হয়েছে। কৃষকেরা অত্যন্ত উৎসাহ নিয়ে ধান ঘরে তুলছেন। আশা করি, আগামী সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ ধান কাটা হয়ে যাবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও দিনের বেলা কুয়াশা না থাকায় সহজে কৃষকেরা ধান কাটা, মাড়াই ও সেদ্ধ করতে পারছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস

পঞ্চগড় প্রতিনিধি
হালকা কুয়াশায় ঢাকা চারদিক। ছবি: আজকের পত্রিকা
হালকা কুয়াশায় ঢাকা চারদিক। ছবি: আজকের পত্রিকা

উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা পঞ্চগড়ে ধীরে ধীরে নামতে শুরু করেছে তাপমাত্রার পারদ। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯২ শতাংশ।

গত কয়েক দিন পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ১৩ ডিগ্রির ঘরে থাকছে। ফলে বাড়ছে শীতের প্রকোপ। আজ শুক্রবার সকালে পঞ্চগড় সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, হালকা কুয়াশায় ঢাকা চারদিক। সুনসান নীরবতায় গরম কাপড় পরে প্রয়োজনীয় কাজে বের হয়েছে লোকজন। কেউ কেউ মাঠে করছেন হালচাষ। এরই মধ্যে পূর্ব আকাশে সূর্য দেখা দিলেও নেই প্রখর রোদ।

পঞ্চগড় সদর উপজেলার তালমা এলাকার গৃহবধূ নাজমা বেগম বলেন, ‘সকাল-বিকেল খুব ঠান্ডা পড়ে। ঘর থেকে বের হলেই যেন বাতাসে শরীর কেঁপে ওঠে। বাচ্চাদের নিয়ে সবচেয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। ঠান্ডা লাগলে হাসপাতালে যেতে হয় বারবার।’

একই এলাকার দিনমজুর মিজানুর রহমান বলেন, ‘শীতে কাজ পাওয়া কষ্ট হয়ে গেছে। সকালে কুয়াশায় কিছু দেখা যায় না, হাত-পা জমে থাকে। ঠান্ডায় শরীর ঠিকমতো সাড়া না দেওয়ায় কাজের গতি কমে গেছে।’

স্কুলছাত্রী তানজিলা আক্তার বলে, ‘সকালে কলেজ ও প্রাইভেটে যেতে খুব সমস্যা হয়। ঠান্ডা এমন যে হাতে গ্লাভস ছাড়া সাইকেল চালানো যায় না। শীত যেমন বাড়ছে, তেমনি অসুস্থ হওয়ার ভয়ও বাড়ছে।’

জেলার আশপাশ এলাকায় বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগী। এতে শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। সর্দি-কাশি, জ্বর, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও হঠাৎ তাপমাত্রা পরিবর্তনজনিত অ্যালার্জিতে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।

চিকিৎসকেরা বলছেন, দিন-রাতের তাপমাত্রার এই বড় পার্থক্য শরীরের ওপর চাপ ফেলে। বিশেষ করে শিশু, বয়স্ক ও দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন মানুষ বেশি ঝুঁকিতে থাকে। তাই সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ চিকিৎসকের।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় জানান, শীত ধীরে ধীরে নামছে। আজ ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে। সামনে শীত আরও তীব্র হতে পারে। শৈত্যপ্রবাহের আশঙ্কা রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গলায় রশি পেঁচানো নছিমনচালকের লাশ উদ্ধার

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
ডোবায় নছিমনচালকের লাশ পাওয়া যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ডোবায় নছিমনচালকের লাশ পাওয়া যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ওমর আলী শেখ (৫০) নামের এক নছিমনচালকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে মোবারকগঞ্জ চিনিকল ফার্মের সড়কের ডোবা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। পুলিশের ধারণ, নছিমনচালককে কুপিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।

নিহত ওমর আলী কালীগঞ্জ উপজেলার বারোবাজার হাটবেলাটপুর গ্রামের ছাত্তার শেখের ছেলে।

বারোবাজারের ইসমাইল নামের এক শ্রমিক বলেন, ‘আমরা একসঙ্গে বারোবাজারে শ্রমিকের কাজ করতাম। কিছুদিন আগে ওমর আলী নছিমন কিনেছে। সে বারোবাজারের মাছের ভাড়া টানে। সকালে তার মোবাইলে ফোন দিলে রিসিভ হচ্ছিল না। পরে জানতে পারি, তাকে হত্যা করা হয়েছে।’

কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম জানান, সকালে ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির গলায় ধারালো অস্ত্রের কাটা দাগ রয়েছে। এ ছাড়া রশি দিয়ে তাঁর গলা পেঁচানো। ধারণা করা হচ্ছে, তাঁকে কুপিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যা করে ফেলে রেখে গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত